হাদিস ৪৮২
ইসমাঈল ইবনে মুনযির (র)…… নাফি (র) থেকে বর্ণিত, আবদুল্লাহ (রা) যখন কা’বা শরীফে প্রবেশ করতেন তখন সামনের দিকে চলতে থাকতেন এবং দরজা পেছনে রাখতেন। এভাবে এগিয়ে গিয়ে যেখানে তাঁর ও দেয়ালের মাঝে প্রায় তিন হাত পরিমাণ ব্যবধান থাকতো, সেখানে তিনি সালাত আদায় করতেন। তিনি সে স্থানেই সালাত আদায় করতে চাইতেন, যেখানে নবী (সা) সালাত আদায় করিয়েছিলেন বলে বিলাল (রা) তাঁকে খবর দিয়েছিলেন। তিনি বলেন: কা’বা ঘরের যে-কোন প্রান্তে ইচ্ছা, সালাত আদায় করায় আমাদের কারো কোন দোষ নেই।
হাদিস ৪৮৩
মুহাম্মদ ইবনে আবূ বকর মুকাদ্দামী বসরী (র)…… ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (সা) তাঁর উটনীকে সামনে রেখে সালাত আদায় করতেন। (রাবী রাফি (র) বলেন:)আমি (আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা) কে) জিজ্ঞাসা করলাম: যখন সওয়ারী নড়াচড়া করতো তখন (তিনি কি করতেন)? তিনি বলেন: তিনি তখন হাওদা নিয়ে সোজা করে নিজের সামনে রাখতেন, আর তার শেষাংশের দিকে সালাত আদায় করতেন। (নাফি (র) বলেন:) ইবনে উমর (রা)-ও এরূপ করতেন।
হাদিস ৪৮৪
উসমান ইবনে আবূ শায়বা (র)…… আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: তোমরা আমাদেরকে কুকুর, গাধার সমান করে ফেলেছ! আমি নিজে এ অবস্থায় ছিলাম যে, আমি চৌকির উপর শুয়ে থাকতাম আর নবী (সা) এসে চৌকির মাঝ বরাবর দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতেন। এভাবে আমি সামনে থাকা পছন্দ করতাম না। তাই আমি চৌকির পায়ের দিকে সরে গিয়ে চুপি চুপি নিজের থেকে বেরিয়ে পড়তাম।
হাদিস ৪৮৫
আবূ মা’মার (র) ও আদম ইবনে আবূ ইয়াস (র)…… আবূ সালেহ সম্মান (র) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি আবূ সা’ঈদ খুদরী (রা) কে দেখেছি। তিনি জুমু’আর দিন লোকদের জন্য সুতরা হিসাবে কোন কিছু সামনে রেখে সালাত আদায় করছিলেন। আবূ মু’আইত গোত্রের এক যুবক তাঁর সামনে দিয়ে যেতে চাইল। আবূ সা’ঈদ খুদরী (রা) তার বুকে ধাক্কা মারলেন। যুবকটি লক্ষ্য করে দেখলো যে তাঁর সামনে দিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন পথ নেই। এজন্য সে পুনরায় তাঁর সামনে দিয়ে যেতে চাইল। এবার আবূ সা’ঈদ খুদরী (রা) প্রথম বারের চাইতে জোরে ধাক্কা দিলেন। ফলে আবূ সা’ঈদ (রা) তিরস্কার করে সে মারওয়ানের কাছে গিয়ে আবূ সা’ঈদ (রা)-এর ব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করল। এদিকে তার পরপরই আবূ সা’ঈদ (রা)-ও মারওয়ানের কাছে গেলেন। মারওয়ান তাঁকে বললেন: হে আবূ সা’ঈদ! তোমার এই ভাতিজার কি ঘটেছে? তিনি জবাব দিলেন: আমি নবী (সা) কে বলতে শুনেছি যে, তোমাদের কেউ যদি লোকদের জন্য সামনে সুতরা রেখে সালাত আদায় করে, আর কেউ যদি তার সামনে দিয়ে যেতে চায়, তাহলে যেন সে তাকে বাধা দেয়। সে যদি না মানে, তবে সে ব্যক্তি (মুসল্লী) যেন তার সাথে মুকাবিলা করে, কারণ সে শয়তান।
হাদিস ৪৮৬
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (র)…… বুসর ইবনে সা’ঈদ (র) থেকে বর্ণিত যে, যায়েদ ইবনে খালিদ (রা) তাঁকে আবূ জুহায়ম (রা) এর কাছে পাঠালেন, যেন তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন যে, মুসল্লীর সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী সম্পর্কে তিনি রাসূলুল্লাহ (সা) থেকে কি শুনেছেন। তখন আবূ জুহায়ম (রা) বললেন: রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: যদি মুসল্লীর সামনে অতিক্রমকারী জানতো এটা তার কত বড় অপরাধ, তাহলে সে মুসল্লীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করার চাইতে চল্লিশ দিন/মাস।বছর দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম মনে করতো। আবুন-নাযর (র) বলেন: আমার জানা নেই তিনি কি চল্লিশ দিন বা চল্লিশ মাস বা চল্লিশ বছর বলেছেন।
হাদিস ৪৮৭
ইসমা’ঈল ইবনে খলীল (র)…… আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত, একবার তাঁর সামনে সালাত নষ্টকারী জিনিসের আলোচনা করা হল। লোকেরা বললোঃ কুকুর, গাধা ও মহিলা সালাত নষ্ট করে দেয়। আয়িশা (রা) বললেন: তোমরা আমাদের কুকুরের সমান করে দিয়েছ! আমি নবী (সা) কে দেখেছি, সালাত আদায় করেছেন আর আমি তাঁর ও কিবলার মাঝে চৌকির উপর কাত হয়ে শুয়ে থাকতাম। কোন কোন সময় আমার বের হওয়ার দরকার হতো এবং তাঁর সামনের দিকে যাওয়া অপছন্দ করতাম। এজন্যে আমি চুপি চুপি সরে পড়তাম। আ’মাশ (র) আয়িশা (রা) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস ৪৮৮
মুসাদ্দাদ (র)…… আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: নবী (সা) সালাত আদায় করতেন আর আমি তখন তাঁর বিছানায় আড়াআড়ি ভাবে শুয়ে থাকতাম। বিতর পড়ার সময় তিনি আমাকেও জাগাতেন, তখন আমিও বিতর পড়তাম।
হাদিস ৪৮৯
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (র)…… নবী (সা) এর সধর্মিণী আয়িশা (রা) থেক বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ (সা) এর সামনে শুয়ে থাকতাম আর আমার পা দুটো তাঁর কিবলার দিকে। তিনি যখন সিজদা করতেন তখন আমাকে টোকা দিতেন, আর আমি আমার পা সরিয়ে নিতাম। তিনি দাঁড়িয়ে গেলে পুনরায় পা দুটো প্রসারিত করে দিতাম। আয়িশা (রা) বলেন তখন ঘরে কোন বাতি ছিল না।
হাদিস ৪৯০
উমর ইবনে হাফস (র)…… আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত, তাঁর সামনে সালাত নষ্টকারী, কুকুর, গাধা ও সম্বন্ধে আলোচনা চলছিল। আয়িশা (রা) বললেন: তোমরা আমাদেরকে গাধা ও কুকুরের সাথে তুলনা করছ? আল্লাহর কসম! আমি নবী (সা) কে সালাত আদায় করতে দেখেছি। তখন আমি চৌকির উপরে তাঁর ও কিবলার মাঝখানে শায়িত ছিলাম। আমার প্রয়োজন হলে আমি উঠে বসা পছন্দ করতাম না। কেননা, তাতে নবী (সা) এর কষ্ট হতে পারে। আমি তাঁর পায়ের পাশ দিয়ে চুপে চুপে বের হয়ে পড়তাম।