হাদিস ৭
‘উবায়দুল্লাহ্ ইব্ন মূসা (রা) ……….. ইব্ন ‘উমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন, ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি।
১। আল্লাহ ছাড়া ইলাহ্ নেই এবং নিশ্চয় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল-এ কথার সাক্ষ্য দান।
২। সালাত কায়েম করা।
৩। যাকাত দেওয়া।
৪। হজ্জ করা এবং
৫। রমদান এর সিয়াম পালন করা।
৩. পরিচ্ছেদঃ ঈমানের বিষয়সমূহ
আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ “সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে। আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেযগার।”(২:১৭৭)
হাদিস ৮
আবদুল্লাহ ইব্ন জু’ফী (র) …….. আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সাঃ) ইরশাদ করেন, ঈমানের শাখা রয়েছে ষাটের কিছু বেশি। আর লজ্জা ঈমানের একটি শাখা।
৪. পরিচ্ছেদঃ প্রকৃত মুসলমান সে-ই, যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ
হাদিস ৯
আদম ইব্ন ইয়াস (রঃ) …….. আবদুল্লাহ ইব্ন ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, প্রকৃত মুসলিম সে-ই, যার জিহ্বা ও হাত থেকে সকল মুসলিম নিরাপদ থাবে এবং প্রকৃত মুহাজির সে-ই, যে আল্লাহ তা’আলার নিষিদ্ধ কাজ ত্যাগ করে। আবূ আবদুল্লাহ (রঃ) বলেন, আবূ মু’আবিয়া (রঃ) বলেছেন, আমার কাছে দাউদ ইব্ন আবূ হিন্দ (রঃ) ‘আমির (রঃ) সূত্রে বর্ণনা করেছেন; তিনি বলেছেন যে, আমি আবদুল্লাহ্ ইব্ন ‘আমর (রাঃ) কে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি এবং আবদুল আ’লা (রঃ) দাউদ (রঃ) থেকে, দাউদ (রঃ) আমির (রঃ) থেকে, আমির (রঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিস ১০
সা’ঈদ ইব্ন ইয়াহইয়া ইব্ন সা’ঈদ আল উমাবী আল কুরাশী (রঃ) ……….. আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! ইসলামে কোন কাজটি উত্তম? তিনি বললেনঃ যার জিহ্বা ও হাত থেকে মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে।
হাদিস ১১
আমর ইব্ন খালিদ (রঃ) ……… আবদুল্লাহ্ ইব্ন ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)কে জিজ্ঞাসা করল, ইসলামের কোন কাজটি উত্তম? তিনি বললেন, তুমি খাবার খাওয়াবে ও পরিচিত অপরিচিত সবাইকে সালাম করবে।
৭. পরিচ্ছেদঃ নিজের জন্য যা পছন্দনীয়, ভাইয়ের জন্যও তা পছন্দ করা ঈমানের অংশ
হাদিস ১২
মুসাদ্দাদ (রঃ) ও হুসাইন আল মুৎআল্লিম (রঃ) ……… আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য তা-ই পছন্দ করবে, যা নিজের জন্য পছন্দ করে।
৮. পরিচ্ছেদঃ রাসুলুল্লাহকে ভালবাসা ঈমানের অংশ
হাদিস ১৩
আবুল ইয়ামান (রঃ) ……… আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেনঃ সেই পবিত্র সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা ও সন্তানের চেয়ে বেশি প্রিয় হই।
হাদিস ১৪
ইয়া’কুব ইব্ন ইবরাহীম ও আদম (রঃ) ……… আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেনঃ তোমাদের কেউ মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষন না আমি তার কাছে তার পিতা, সন্তান ও সব মানুষের চেয়ে বেশি প্রিয় হই।
৯. পরিচ্ছেদঃ ঈমানের স্বাদ
হাদিস ১৫
মুহাম্মদ ইব্নুল মুসান্না (রঃ)……… আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সাঃ) ইরশাদ করেনঃ তিনটি গুণ যার মধ্যে থাকে, সে ঈমানের স্বাদ পায়ঃ
১। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তার কাছে অন্য সব কিছুর থেকে প্রিয় হওয়া;
২। কাউকে খালিস আল্লাহর জন্যই মুহব্বত করা;
৩। কুফরিতে ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মত অপছন্দ করা।
১০. পরিচ্ছেদঃ আনসারকে ভালবাসা ঈমানের লক্ষণ
হাদিস ১৬
আবুল ওয়ালীদ (রঃ) ……… আনাস ইব্ন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (সাঃ) ইরশাদ করেনঃ ঈমানের চিহ্ন হ’ল আনসারকে ভালবাসা এবং মুনাফেকির চিহ্ন হল আনসারদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা।
১১. পরিচ্ছেদ
হাদিস ১৭
আবুল ইয়ামান (রঃ) ……… ‘আয়িনুল্লাহ ইব্ন আবদুল্লাহ (রঃ) বলেন, বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ও লায়লাতুল ‘আকাবার একজন নকীব ‘উবাদা ইব্নুস সামিত (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পার্শ্বে একজন সাহাবীর উপস্থিতিতে তিনি ইরশাদ করেনঃ তোমরা আমার কাছে এই মর্মে বায়’আত গাহণ কর যে, আল্লাহর সঙ্গে কিছু শরীক করবে না, চুরি করবে না, যিনা করবে না, তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দেবে না এবং নেক কাজে নাফরমানী করবে না। তোমাদের মধ্যে যে তা পূরণ করবে, তার বিনিময় আল্লাহর কাছে। আর কেউ এর কোন একটিতে লিপ্ত হয়ে পড়লে এবং দুনিয়াতে তার শাস্তি পেয়ে গেলে, তবে তা হবে তার জন্য কাফ্ফারা। আর কেউ এর কোন একটিতে লিপ্ত হয়ে পড়লে এবং আল্লাহ তা অপ্রকাশিত রাখলে, তবে তা আল্লাহর ইচ্ছাধীন। তিনি যদি চান, তাকে মাফ করে দেবেন আর যদি চান, তাকে শাস্তি দেবেন। আমরা এর উপর বায়’আত গ্রহণ করলাম।