হাদিস ৪৪৮
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (র)…… আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (সা) কয়েকজন অশ্বারোহী মুজাহিদকে নজদের দিকে পাঠালেন। তারা বানূ হানীফা গোত্রের সুমামা ইবনে উসালা নামক এক ব্যক্তিকে নিয়ে এসে তাকে মসজিদের খুঁটির সাথে বেঁধে রাখলেন। নবী (সা) তার কাছে গেলেন এবং বললেন: সুমামাকে ছেড়ে দাও। (ছাড়া পেয়ে) তিনি মসজিদে নববী নিকটে এক খেজুর বাগানে গিয়ে সেখানে গোসল করলেন, এরপর মসজিদে প্রবেশ করে বললেন: “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সা) আল্লাহর রাসূল”।
হাদিস ৪৪৯
যাকারিয়্যা ইবনে ইয়াহইয়া (র)…… আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: খন্দকের যুদ্ধে সা’দ (রা) এর হাতের শিরা যখম হয়েছিল। নবী (সা) মসজিদে (তাঁর জন্য) একটা তাঁবু স্থাপন করলেন। যাতে কাছে থেকে তাঁর দেখাশুনা করতে পারেন। মসজিদে বানূ গিফারেরও একটা তাঁবু ছিল। সা’দ (রা) এর প্রচুর রক্ত তাদের দিকে প্রবাহিত হওয়ায় তারা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন: হে তাঁবুর লোকেরা! তোমাদের তাঁবু থেকে আমাদের দিকে কি প্রবাহিত হচ্ছে? তখন দেখা গেল যে, সা’দের যখম থেকে প্রচুর রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। অবশেষে এতেই তিনি ইনতিকাল করলেন।
হাদিস ৪৫০
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (র)…… উম্মে সালমা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ (সা) এর কাছে(বিদায় হজ্জে) আমার অসুস্থতার কথা জানালাম। তিনি বললেন: সওয়ার হয়ে লোকদের হতে বাইরে থেকে তওয়াফ করে নাও। তখন আমি (সেভাবে) তাওয়াফ করলাম। আর আমি রাসূলুল্লাহ (সা) বায়তুল্লাহর পাশে সালাত আদায় করছিলেন, তিনি “সূরা ওয়াত-তুরি ওয়া কিতাবিম-মাসতূর” তিলাওয়াত করছিলেন।
হাদিস ৪৫১
মুহাম্মদ ইবনুল মুসান্না (র)……আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (সা) এর দু’জন সাহাবী নবী (সা) এর নিকট থেকে অন্ধকার রাতে বের হলেন। তাঁদের একজন আব্বাদ ইবনে বিশর (রা) আর সাহাবী দ্বিতীয় জন সম্পর্কে আমার ধারণা যে, তিনি ছিলেন উসাইদ ইবনে হুযাইর (রা), আর উভয়ের সাথে চেরাগ সদৃশ কিছু ছিল, যা তাঁদের সামনের দিকটাকে আলোকিত করছিল। তাঁরা উভয়ে যখন পৃথক হয়ে গেলেন, তখন প্রত্যেকের সাথে একটা করে রয়ে গেল। অবশেষে এভাবে তাঁরা নিজেদের বাড়ীতে পৌছলেন।
হাদিস ৪৫২
মুহাম্মদ ইবনে সিনান (র)……আবূ সা’ঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: নবী (সা) এক ভাষণে বললেন: আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর বান্দাকে দুনিয়া ও আল্লাহর কাছে যা আছে-এ দুয়ের মধ্যে একটি গ্রহণের ইখতিয়ার দিলেন। তিনি আল্লাহর কাছে যা আছে, তা গ্রহণ করলেন। তখন আবূ বকর (রা) কাঁদতে লাগলেন। আমি মনে মনে ভাবলাম, এই বৃদ্ধ কাঁদছেন কেন? আল্লাহ তাঁর এক বান্দাকে দুনিয়া ও আল্লাহর কাছে রয়েছে, এ দুয়ের একটা গ্রহণ করার এখতিয়ার দিলে তিনি আল্লাহর কাছে যা আছে তা গ্রহণ করেছেন (এতে কাঁদার কি আছে?)। মূলত রাসূলুল্লাহ (সা)-ই ছিলেন সেই বান্দা। আবূ বকর (রা) ছিলেন আমাদের মাঝে সর্বাধিক জ্ঞানী। নবী (সা) বলেন: হে আবূ বকর, তুমি কাঁদবে না। নিজের সাহচর্য ও সম্পদ দিয়ে আমাকে যিনি সবচাইতে বেশী ইহসান করেছেন তিনি আবূ বকর। আমার কোন উম্মতকে যদি আমি খলীল (অন্তরঙ্গ বন্ধু) রূপে গ্রহণ করতাম, তবে তিনি হতেন আবূ বকর। কিন্তু তাঁর সাথে রয়েছে ইসলামের ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্য। আবূ বকরের দরজা ব্যতীত মসজিদের কোন দরজাই রাখা হবে না, সবই বন্ধ করা হবে।
হাদিস ৪৫৩
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ জু’ফী (র) ……ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সা) অন্তিম রোগের সময় এক টুকরা কাপড় মাথায় পেঁচিয়ে বাইরে এসে মিম্বরে বসলেন। আল্লাহর প্রশংসা ও সান সিফাত বর্ণনার পর বলেন: জান-মাল দিয়ে আবূ বকর ইবনে আবূ কুহাফার চাইতে অধিক কেউ আমার প্রতি ইহসান করেনি। আমি আমি কাউকেও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে অবশ্যই আবূ বকরকে গ্রহণ করতাম। তবে ইসলামের বন্ধুত্বই উত্তম।আবূ বকরের দরজা ব্যতীত এই মসজিদের সকল দরজা বন্ধ করে দাও।
হাদিস ৪৫৪
আবূ নু’মান ও কুতায়বা (র)……ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (সা) যখন মক্কায় আসেন তখন উসমান ইবনে তালহা (রা) কে ডাকলেন। তিনি দরজা খুলে দিলে নবী (সা), বিলাল, উসামা ইবনে যায়েদ ও উসমান ইবনে তালহা (রা) ভিতরে গেলেন। তারপর দরজা বন্ধ করে দেয়া হল। তিনি সেখানে কিছুক্ষণ থাকলেন। তারপর সবাই বের হলেন। ইবনে উমর (রা) বলেন: আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে বিলাল (রা) কে (সালাতের কথা) জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বলেন: নবী (সা) ভিতরে সালাত আদায় করেছেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম: কোন স্থানে? তিনি বলেন: দুই স্তম্ভের মাঝামাঝি। ইবনে উমর (রা) বলেন: কয় রাকা’আত আদায় করেছেন তা জিজ্ঞাসা করতে আমি ভুলে গিয়েছিলাম।
হাদিস ৪৫৫
কুতায়বা (র)…… আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সা) কতিপয় অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে নজদ অভিমুখে পাঠালেন। তারা বানূ হানীফা গোত্রের সুমামা ইবনে উসাল নামক এক ব্যক্তিকে নিয়ে এলেন। তারপর তাকে মসজিদের একটি খুঁটির সাথে বেঁধে রাখলেন।
হাদিস ৪৫৬
আলী ইবনে আবদুল্লাহ (র)……সায়িব ইবনে ইয়াযীদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি মসজিদে নববীতে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এমন সময় একজন লোক আমার দিকে একটা কাঁকর নিক্ষেপ করলো। আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে, তিনি উমর ইবনুল খাত্তাব (রা)। তিনি বললেন: যাও, এ দু’জনকে আমার কাছে নিয়ে এস। আমি তাদের নিয়ে তাঁর কাছে এলাম। তিনি বললেন: তোমরা কারা? অথবা তিনি বললেন: তোমরা কোন স্থানের লোক? তারা বললোঃ আমরা তায়েফের অধিবাসী। তিনি বললেন: তোমরা যদি মদিনার লোক হতে, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের কঠোর শাস্তি দিতাম। তোমরা দু’জনে রাসূলুল্লাহ (সা) এর মসজিদে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলছ!