হাদিস ৩৮৯
ইসহাক ইবন নসর (র)……ইবন ‘আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ যখন নবী (সঃ) কা’বায় প্রবেশ করেন, তখন তাঁর সকল দিকে দুয়া করেছেন, সালাত আদায় না করেই বেরিয়ে এসেছেন এবং বের হওয়ার পর কা’বার সামনে দু’রাক’আত সালাত আদায় করেছেন, আর বলেছেন, এই কিবলা।
হাদিস ৩৯০
‘আবদুল্লাহ ইবন রাজা’ (র)……বারা’ ইবন ‘আযিব (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সঃ) বায়তুল মুকাদ্দাসমুখী হয়ে ষোল বা সতের মাস সালাত আদায় করেছেন। আর রাসূলুল্লাহ (সঃ) কা’বার দিকে কিবলা করা পছন্দ করতেন। মহান আল্লাহ নাযিল করেনঃ “আকাশের দিকে আপনার বারবার তাকানোকে আমি অবশ্য লক্ষ্য করেছি। (২:১৪৪) তারপর তিনি কাবার দিকে মুখ করেন। আর নির্বোধ লোকেরা –তারা ইয়াহুদী, বলতো, “তারা এ যাবত যে কিবলা অনুসরণ করে আসছিলো, তা থেকে কিসে তাঁদের কে ফিরিয়ে দিল? বলুনঃ (হে নবী (সঃ)) পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা সঠিক পথে পরিচালিত করেন। (২:১৪২)তখন নবী (সঃ) এর সঙ্গে এক ব্যক্তি সালাত আদায় করলেন এবং বেরিয়ে গেলেন। তিনি আসরের সালাতের সময় আনসারগনের এক গোত্রের পাশ দিয়ে যাচ্চছিল। তাঁরা বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করেছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ (তিনি নিজেই) সাক্ষী যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর সঙ্গে তিনি সালাত আদায় করেছেন, আর তিনি (রাসূলুল্লাহ (সঃ)) কা’বার দিকে মুখ করেছেন। তখন সে গোত্রের লোকজন ঘুরে কা’বার দিকে মুখ করলেন।
হাদিস ৩৯১
মুসলিম ইবন ইবরাহীম (র)……জাবির ইবন ‘আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নবী (সঃ) নিজের সাওয়ারীর উপর (নফল) সালাত আদায় করতেন—সওয়ারী তাঁকে নিয়ে যে দিকেই মুখ করত না কেন। কিন্তু যখন ফরয সালাত আদায়ের ইচ্ছা করতেন, তখন নেমে পড়তেন এবং কিবলার দিকে মুখ করতেন।
হাদিস ৩৯২
‘উসমান (র)……আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (সঃ) সালাত আদায় করলেন। রাবী ইবরাহীম (র) বলেনঃ আমার জানা নেই, তিনি বেশী করেছেন বা কম করেছেন। সালাত ফিরানোর পর তাঁকে বলা হলো, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সঃ)! সালাতের মধ্যে নতুন কিছু হয়েছে কি? তিনি বললেনঃ তা কী? তাঁরা বললেনঃ আপনি তো এরুপ এরপ সালাত আদায় করলেন। তিনি তখন তাঁর দু’পা ঘুয়িয়ে কিবলামুখী হলেন। আর দু’টি সিজদা আদায় করলেন। এরপর সালাম ফিরালেন। পরে তিনি আমাদের দিকে ফিরে বললেনঃ যদি সালাত সম্পর্কে নতুন কিছু হতো, তবে অবশ্যই তোমাদের তা জানিয়ে দিতাম। কিন্তু আমি তো তোমাদের মত একজন মানুষ। তোমরা যেমন ভুল করে থাক, আমিও তোমাদের মত ভুলে জাই। আমি কোন সময় ভুলে গেলে তোমরা আমাকে স্মরণ করিয়ে দেবে। তোমাদের কেউ সালাত সম্বন্ধে সন্দেহে পতিত হলে সে যেন নিঃসন্দেহে হওয়ার চেষ্টা করে এবং সে অনুযায়ী সালাত পূর্ণ করে। তারপর সে সালাম ফিরিয়ে সিজদা আদায় করে।
হাদিস ৩৯৩
‘আমার ইবন ‘আওন (র)……আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘উমর (রা) বলেছেনঃ তিনটি বিষয়ে আমার অভিমত আল্লাহর অহির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়েছে।
আমি বলেছিলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সঃ)! আমরা যদি মাকামে ইবরাহীম কে সালাতের স্থান বানাতে পারতাম! তখন এ আয়াত নাযিল হয়ঃ “তোমরা মাকামে ইবরাহীমকে নামাজের স্থান বানাও” (২:১২৫)
(দ্বিতীয়) পর্দার আয়াত, আমি বললামঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ (সঃ)! আপনি যদি আপনার সহদধর্মিনীগনকে পর্দার আদেশ করতেন! কেননা, সৎ ও অসৎ সবাই তাদের সাথে কথা বলে। তখন পর্দার আয়াত নাযিল হয়।
আর একবার নবী (সঃ) এর সহধর্মিণীগণ অভিমান সহকারে তাঁর নিকট উপস্থিত হন। তখন আমি তাদেরকে বললামঃ রাসূলুল্লাহ (সঃ) যদি তোমাদের তালাক দেয়, তাহলে তাঁর রব তাঁকে তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের চাইতে উত্তম স্ত্রী দান করবেন। (৬৬:৫) তখন এ আয়াত নাযিল হয়।
অপর সনদে ইবন আবূ মারয়াম (র)……আনাস (রা) থেকে অনুরুপ বর্ণিত আছে।
হাদিস ৩৯৪
‘আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (র)……’আবদুল্লাহ ইবন ‘উমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ এক সময় লোকেরা কুবা নামক স্থানে ফযরের সালাত আদায় করছিলেন। এমন সময় তাঁদের নিকট এক ব্যক্তি এসে বললেন যে, এ রাতে রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর প্রতি অহি নাযিল হয়েছে। আর তাঁকে কাবামুখী হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই তোমরা কা’বার দিকে মুখ কর। তখন তাঁদের চেহারা ছিল বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে। একথা শুনে তাঁরা কা’বার দিকে মুখ করে নিলেন।
হাদিস ৩৯৫
মুসাদ্দাদ (র)……’আবদুল্লাহ ইবন মাস’উদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একবার নবী (সঃ) যুহরেরে সালাত পাঁচ রাক’আত আদায় করেন। তখন মুসল্লীগন জিজ্ঞাসা করলেনঃ সালাতে কি কিছু বৃদ্ধি করা হয়েছে? তিনি বললেনঃ তা কি? তাঁরা বললেনঃ আপনি যে পাঁচ রাক’আত সালাত আদায় করেছেন। রাবী বলেন, তিনি নিজের পা ঘুরিয়ে (কিবলামুখী হয়ে)দুই সিজদা (সিজদা সাহু) করে নিলেন।
হাদিস ৩৯৬
কুতায়বা (র)……আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত যে, নবী (সঃ) কিবলার দিকে (দেয়ালে) ‘কফ’ দেখলেন। এটা তাঁর কাছে কষ্টদায়ক মনে হলো। এমনকি তাঁর চেহারায় তা ফুটে উঠলো। তিনি উঠে দিয়ে তা হাত দিয়ে পরিষ্কার করলেন। তারপর তিনি বললেনঃ তোমাদের কেউ যখন সালাতে দাঁড়ায় তখন সে তাঁর রবের সাথে একান্তে কথা বলে। অথবা বলেছেন, তাঁর ও কিবলার মাঝখানে তাঁর রব আছেন। কাজেই, তোমাদের কেউ যখন কিবলার দিকে থুথু না ফেলে। বরং সে যেন তাঁর বাম দিকে বা পায়ের নীচে তা ফেলে। তারপর চাদরের আঁচল দিয়ে তিনি তাতে থুথু ফেললেন এবং তাঁর এক অংশের উপর ভাঁজ করলেন এবং বললেনঃ অথবা সে এরুপ থাকবে।