হাদিস ৩৭৯
আদম ইবন আবূ ইয়াস (র)……আবূ মাসলামা সা’ঈদ ইবন ইয়াযীদ আল-আযদী (র) বলেনঃ আমি আনাস ইবন মালিক (রা)-কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, নবী (সঃ) কি তাঁর না’লাইন (চপ্পল) পরে সালাত আদায় করতেন? তিনি বললেন, হাঁ।
হাদিস ৩৮০
আদম (র)……হাম্মাম ইবন হারিস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি জারীন ইবন ‘আবদুল্লাহ (র)-কে দেখলাম যে, তিনি পেশাব করলেন। তারপর উযূ করলেন আর উভয় মোজার উপরে মাসেহ করলেন। তারপর তিনি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ আমি নবী (সঃ) –কেউ এরুপ করতে দেখেছি। ইবরাহীম (র) বলেনঃ এই হাদীস মুহাদ্দিসীনের কাছে অত্যন্ত পছন্দনীয়। কারণ জারীর (রা) ছিলেন নবী (সঃ) –এর শেষ যুগের ইসলাম গ্রহণকারীদের একজন।
হাদিস ৩৮১
ইসহাক ইবন নাসর (র)……মুগীর ইবন শু’বা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি নবী (সঃ) –কে উযূ করিয়েছি। তিনি উযূর সময় মোজা দু’টির উপর মাসেহ করলেন ও সালাত আদায় করলেন।
হাদিস ৩৮২
সালত ইবন মুহাম্মদ (র)……হুযায়ফা (রা) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি তাঁর রুকু-সিজদা পুরোপুরি আদায় করছিল না। সে যখন সালাত শেষ করলো তখন তাকে হুযায়ফা (রা) বললেনঃ তোমার সালাত ঠিক হয়নি। রাবী বলেনঃ আমার মনে হয় তিনি (হুযায়ফা) এ কথাও বলেছেন, (এ অবস্থায়) তোমার মৃত্যু হলে তা মুহাম্মদ (স) এর তরীকা অনুযায়ী হবে না।
হাদিস ৩৮৩
ইয়াহইয়া ইবন বুকায়র (র)……’আবদুল্লাহ ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত যে, নবী (সঃ) সালাতের সময় উভয় বাহু পৃথক রাখতেন। এমনকি তাঁর বগলের শুভ্রতা প্রকাশ পেতো। লাইস (র) বলেনঃ জা’ফর ইবন রবী’আহ (র) আমার কাছে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস ৩৮৪
‘আমর ইবন ‘আব্বাস (র)…… আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসুলূল্লাহ বলেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের ন্যায় সালাত আদায় করে, আমাদের কিবলামুখী আর আমাদের যবেহ করা প্রানী খায়, সে-ই মুসলিম, যার জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যিম্মাদার। সুতরাং তোমরা আল্লাহর যিম্মাদারীতে খিয়ানত করো না।
হাদিস ৩৮৫
নু’আইম (র)……আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ আমাকে লোকের বিরুদ্ধে জিহাদ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যতক্ষণ না তারা ‘’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’’ স্বীকার করবে। যখন তারা তা স্বীকার করে নেয়, আমাদের মত সালাত আদায় করে, , আমাদের কিবলামুখী আর আমাদের যবেহ করা প্রানী খায়, তখন তাদের জান-মালসমূহ আমাদের জন্য হারাম হয়ে যায়। অবশ্য রক্তের বা সম্পদের দাবীর কথা ভিন্ন। আর তাদের হিসাব আল্লাহর কাছে। ‘আলী ইবন ‘আবদুল্লাহ (র) হুমায়দ (র) সুত্রে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ মায়মূন ইবন সিয়াহ আনাস ইবন মালিক (রা)-কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ হে আবূ হামযাহ, কিসে কিসে মানুষের জান-মাল হারাম হয়? তিনি জবাব দিলেন, যে ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু-র সাক্ষ্য দেয়, আমাদের কেবলামূখী হয়, , আমাদের সালাত আদায় করে, আমাদের যবেহ করা প্রানী খায়, সে-ই মুসলিম। অন্য মুসলমানদের মতই তার অধিকার রয়েছে। আর অন্য মুসলমানদের মতই তার দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। ইবন আবূ মাররাম, ইয়াহইয়া ইবন আয়ূব (র)……আনাস ইবন মালিক (রা) সুত্রে নবী (সঃ) থেকে (অনুরুপ) বর্ণনা করেন।
হাদিস ৩৮৬
‘আলী ইবন ‘আবদুল্লাহ (র)……আবূ আয়্যূব আনসারী (রা০ থেকে বর্ণিত যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ যখন তোমরা পায়খানা করতে যাও, তখন কিবলার দিকে মুখ করবে না কিংবা পিঠ ও দিবে না, বরং তোমরা পূর্বদিকে অথবা পশ্চিম দিকে ফিরে বসবে। আবূ আয়্যূব আনসারী (রা) বলেনঃ আমরা যখন সিরিয়ায় এলাম তখন পায়খানাগুলো কিবলামুখী বানানো পেলাম। আমরা কিছুটা ঘুরে বসতাম এবং আল্লাহ তা’লার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতাম। যুহরী (র) ‘আতা (র) সুত্রে বর্ণনা করেছেন যে, আমি আবূ আয়্যূব (রা)-কে নবী (সঃ) এর নিকট থেকে অনুরুপ বর্ণনা করতে শুনেছি।
হাদিস ৩৮৭
হুমায়দী (র)…… ‘আমর ইবন দীনার (র) বলেনঃ আমরা ইবন ‘উমর (রা) কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম—যে ব্যক্তি উমরার জন্য বায়তুল্লাহর তাওায়াফ করেছেন কিন্তু সাফা-মারওয়া সা’ঈ করে নি, সে কি তাঁর স্ত্রীর সাথে সঙ্গত হতে পারবে? তিনি জবাব দিলেন, নবী (সঃ) এসে সাতবার বায়তুল্লাহর তাওওয়াফ করেছেন, মাকামে ইবরাহীমের কাছে দু’রাক’আত সালাত আদায় করেছেন আর সাফা-মারওয়া সা’ঈ করেছেন। তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। আমরা জাবির ইবন ‘আবদুল্লাহ (রা) কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছি, তিনি বলেছেনঃ সাফা-মারুওায়া সা’ঈ করার আগ পর্যন্ত স্ত্রীর কাছে যাবে না।
হাদিস ৩৮৮
মুসাদ্দাদ (র)……মুজাহিদ (র) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি ‘উমর (রা)-এর নিকট এলেন, এবং বললেনঃ ইনি হলেন রাসূলুল্লাহ (সঃ), তিনি কাবা ঘরে প্রবেশ করেছেন। ইবন ‘উমর বলেন; আমি সেদিকে এগিয়ে গেলাম এবং দেখলাম যে, নবী (সঃ) কা’বা থেকে বেরিয়ে পরেছেন। আমি বিলাল (রা)কে উভয় কপাটের মাঝখানে দাঁড়ানো দেখে জিজ্ঞাসা করলাম, নবী (সঃ) কি কা’বা ঘরের অভ্যন্তরে সালাত আদায় করেছেন? তিনি জবাব দিলেন, হাঁ, কা’বায় প্রবেশ করার সময় তোমার বা দিকের দুই স্তম্ভের মধ্যখানে দুই রাক’আত সালাত আদায় করেছেন। তাঁর পর তিনি বের হলেন এবং কা’বার সামনে দুই রাক’আত সালাত আদায় করেলেন।