হাদিস ৩৭০
‘আলী ইবন ‘আবদুল্লাহ (র)……আবূ হাযিম (র) থেকে বর্ণিত যে, লোকেরা সাহল ইবন সা’দ (রা)-কে জিজ্ঞাসা করলঃ (নবী (সঃ) –এর ) মিম্বর কিসের তৈরি ছিল? তিনি বললেনঃ এ বিষয়ে আমার চাইতে জ্ঞাত আর কেউ নেই। তা ছিল গাবা নামক স্থানের ঝাউগাছের কাঠ দিয়ে তৈরী। অমুক মহিলার আযাদকৃত দাস অমুক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সঃ) –এর জন্য তা তিরী করেছিলেন। তা পুরোপুরি তৈরী ও স্থাপিত হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁর উপর দাড়িয়ে কিব্লার দিকে মুখ করে তাকবীর বললেন। লোকেরা তাঁর পেছনে দাঁড়িয়ে গেলেন। তারপর তিনি কিরাআর পড়লেন ও রুকূতে গেলেন। সকলেই তাঁর পেছনে রুকূতে গেলেন। তারপর তিনি মাথা তুলে পেছনে সরে গিয়ে মাটিতে সিজদা করলেন। এ হল মিম্বরের ইতিহাস। আবূ ‘আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (র) বলেনঃ ‘আলী ইবন ‘আবদুল্লাহ (র) বলেছেন যে, আমাকে আহমদ ইবন হাম্বল (র) এ হাদীস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন এবং বলেছিলেনঃ আমার ধারনা, নবী (সঃ) সবচাইতে উঁচু স্থানে ছিলেন। সুতরাং ইমামের মুক্তাদীরের চাইতে উঁচু স্থানে দাঁড়ানোতে কোন দোষ নেই।
‘আলী ইবন ‘আবদুল্লাহ (র) বলেনঃ আমি আহমদ ইবন হাম্বল (র)-কে বললামঃ সুফিয়ান ইবন ‘উয়ায়না (র)-কে এ বিষয়ে বহুবার প্রশ্ন করা হয়েছে, আপনি তাঁর কাছে এ বিষয়ে কিছু শোনেন নি? তিনি জবাব দিলেনঃ না।
হাদিস ৩৭১
মুহাম্মদ ইবন ‘আবদুর রহীম (র)……আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) একবার ঘোড়া থেকে পরে গেলেন, এতে তাঁর পায়ের ‘গোছায়’ অথবা (রাবী বলেছেন) ‘কাঁধে’ আঘাত পান। তিনি তাঁর স্ত্রীদের থেকে এক মাসের জন্ন্যে পৃথক হয়ে থাকেন। তখন তিনি ঘরের উপরের কক্ষে অবস্থান করেন যার সিড়ি ছিল খেজুর গাছের কান্ডের তৈরী। সাহাবীগণ তাঁকে দেখতে এলেন, তিনি তাঁদের নিয়ে বসে সালাত আদায় করলেন, আর তাঁর ছিল দাঁড়ানো। সালাম ফিরিয়ে তিনি বললেনঃ ইমাম এজন্যে যে মুক্তাদীরা তার অনুসরণ করবে।* সুতরাং ইমাম তাকবীর বললে তোমরাও তাকবীর বলবে, তিনি রুকু করলে তোমরাও রুকু করবে। তিনি সিজদা দিলে তোমরাও করবে। ইমাম দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলে তোমরাও দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবে। তারপর ঊনত্রিশ দিন পূর্ণ হলে তিনি নেমে আসলেন। তখন লোকেরা বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সঃ), আপনি তো এক মাসের শপথ করেছিলেন। তিনি বললেনঃ এ মাস ঊনত্রিশ দিনের।
*রাসূলুল্লাহ (সঃ) –এর আখেরী আমলের দ্বারা ওযরবশতঃ ইমাম বসে সালাত আদায় করলে মুক্তাদীগণেরও বসে সালাত আদায় করার হুকুম রচিত হয়ে গিয়েছে। (উমদাতুল ক্বারী ৪খ. পৃ. ১০৬)
হাদিস ৩৭২
মুসাদ্দাদ (র)……মায়মূনা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন সালাত আদায় করতেন তখন হায়েয অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও আমি তাঁর বরাবর বসে থাকতাম। কখনো কখনো তিনি সিজদা করার সময় তাঁর কাপড় আমার গায়ে লাগতো। আর তিনি ছোট চাটায়ের উপর সালাত আদায় করতেন।
হাদিস ৩৭৩
‘আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (র)……আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত যে, তাঁর দাদী মুলায়কাহ (রা) রাসূলুল্লাহ (সঃ) –কে খাওয়ার দাওয়াত দিলেন, যা তাঁর জন্যই তৈরী করেছিলেন। তিনি তা থেকে খেলেন, এরপর বললেনঃ উঠ, তোমাদের নিয়ে আমি সালাত আদায় করি। আনাস (রা) বলেনঃ আমি আমাদের একটি চাটাই আনার জন্য উঠলাম, তা অধিক ব্যাবহার এ কাল হয়ে গিয়েছিল। তাই আমি সেটি পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিলাম।তারপর রাসূলুল্লাহ (সঃ) সালাতের জন্য দাঁড়ালেন। আমি ও একজন ইয়াতীম বালক (যুমায়রা) তাঁর পেছনে দাঁড়ালাম আর বৃদ্ধা দাদী আমার পেছনে ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমাদের নিয়ে দু’রাক’আত সালাত আদায় করলেন। তারপর তিনি চলে গেলেন।
হাদিস ৩৭৪
আবুল ওলীদ (র)……মায়মূনা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নবী (সঃ) ছোট চাটায়ের উপর সালাত আদায় করতেন।
আনাস ইবন মালিক (রা) নিজের বিছানায় সালাত আদায় করতেন। আনাস (রা) বলেনঃ আমরা নবী (সঃ) –এর সঙ্গে সালাত আদায় করতাম। আমাদের কেউ কেউ নিজ কাপড়ের উপর সিজদা করতো।
হাদিস ৩৭৫
ইসমা’ঈল (র)……নবী (সঃ) –এর স্ত্রী ‘আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ) –এর সামনে ঘুমাতাম, আমার পা দু’খানা তাঁর কিবলার দিকে ছিল। তিনি সিজদায় গেলে আমার পায়ে মৃদু চাপ দিতেন, তখন আমি পা দু’খানা সঙ্কুচিত করতাম। আর তিনি দাঁড়িয়ে গেলে আমি পা দু’খানা সপ্রসারিত করতাম। তিনি বলেনঃ সে সময় ঘরগুলতে বাতি ছিল না।
হাদিস ৩৭৬
ইয়াহইয়া ইবন বুকায়র (র)……’আয়িশা (রা) ‘উরওয়া (রা)-কে বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) সালাত আদায় করতেন আর তিনি [আয়িশা (রা)] রাসূলুল্লাহ (সঃ) ও তাঁর কিবলার মধ্যে পারিবারিক বিছানায় জানাযার মত আড়াআড়িভাবে শুয়ে থাকতেন।
হাদিস ৩৭৭
‘আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (র)……’উরওয়া (র) থেকে বর্ণিত যে, নবী (সঃ) সালাত আদায় করতেন, আর ;আয়িশা (রা) তাঁর ও তাঁর কিবলার মাঝাখানে তাঁদের বিছানায় শুয়ে থাকতেন।
হাদিস ৩৭৮
আবুল অলীদ হিশাম ইবন ‘আবদুল মালিক (র)……আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, আমারা নবী (সঃ) –এর সাথে সালাত আদায় করতাম। আমাদের কেউ কেউ সিজদার সময় অধিক গরমের কারণে কাপড়ের প্রান্ত সিজদার স্থানে রাখতো।