হাদিস ২৭৫
ইসহাক ইবনে নাসর রহ…….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : বনী ইসরাঈলের লোকেরা নগ্ন হয়ে একে অপরকে দেখা অবস্থায় গোসল করত। কিন্তু মূসা আ. একাকী গোসল করতেন। এতে বনী ইসরাঈলের লোকেরা বলাবলি করছিল, আল্লাহর কসম, মূসা আ. ‘কোষবৃদ্ধি’ রোগের কারণেই আমাদের সাথে গোসল করেন না। একবার মূসা আ. একটা পাথরের উপর কাপড় রেখে গোসল করছিলেন। পাথরটা তাঁর কাপড় নিয়ে পালাতে লাগল। তখন মূসা আ. পাথর! আমার কাপড় দাও। পাথর ! আমার কাপড় দাও” বলে পেছনে পেছনে ছুটলেন। এদিকে বনী ইসরাঈল মূসা আ. এর দিকে তাকাল। তখন তারা বলল, আল্লাহর কসম মূসার কোন রোগ নেই। মূসা আ. পাথর থেকে কাপড় নিয়ে পরলেন এবং পাথরটাকে পিটাতে লাগলেন। আবু হুরায়রা রা. বলেন : আল্লাহর কসম, পাথরটিতে ছয় কিংবা সাতটা পিটুনীর দাগ পড়ে গেল।
হাদিস ২৭৬
আবদুল্লাহ ইব্ন মুসলিম (র.)……উম্মে হানি বিনত আবু তালিব (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি মক্কা বিজয়ের বছর রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর কাছে গিয়ে তাঁকে গোসলরত অবস্থায় দেখলাম, ফাতিমা (রা) তাঁকে পর্দা করে রেখেছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইনি কে? আমি বললামঃ আমি উম্মে হানি।
হাদিস ২৭৭
আবাদন রহ…….মায়মূনা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য পর্দা করেছিলাম আর তিনি জানাবাতের গোসল করছিলেন। তিনি দু’হাত ধুইলেন। তারপর ডান হাত দিয়ে বাম হাতে পানি নিয়ে লজ্জাস্থান এবং যেখানে কিছু লেগেছিল তা ধুয়ে ফেললেন। তারপর মাটিতে বা দেওয়ালে হাত ঘষলেন এবং দু’পা ছাড়া সালাতের উযূর মতই উযূ করলেন। তারপর তাঁর সমস্ত শরীরে পানি প্রবাহিত করলেন। তারপর একটু সরে গিয়ে দু’পা ধুইলেন। আবু আওয়ান রহ. ও ইবনে ফুযাইল রহ ‘পর্দা করা’ এর ব্যাপারটি এই হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস ২৭৮
আবদুল্লাহ্ ইবনে ইউসুফ রহ………উম্মুল মু’মিনীন উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : আবু তালহা রা. এর স্ত্রী উম্মে সুলায়ম রা. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে এসে বললেন : ইয়া রাসূলুল্লাহ্ ! আল্লাহ্ তা’আলা হকের ব্যাপারে লজ্জা করেন না। স্ত্রীলোকের ইহতিলাম (স্বপ্নদোষ) হলে কি গোসল ফরয হবে ? নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : হাঁ, যদি তারা বীর্য দেখে।
হাদিস ২৭৯ – জুনুবী ব্যক্তির ঘাম, মুসলিম অপবিত্র নয়
আলী ইবনে আবদুল্লাহ্ রহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : তাঁর সঙ্গে মদীনার কোন এক পথে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দেখা হলো। আবু হুরায়রা রা. তখন জানাবাতের অবস্থায় ছিলেন। তিনি বলেন, আমি নিজেকে নাপাক মনে করে সরে পড়লাম। পরে আবু হুরায়রা রা. গোসল করে এলেন। পুনরায় সাক্ষাত হলে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন : হে আবু হুরায়রা ! কোথায় ছিলে ? আবু হুরায়রা রা. বললেন , আমি জানাবাতের অবস্থায় আপনার সঙ্গে বসা সমীচীন মনে করিনি। তিনি বললেন : সুবহানাল্লাহ্ ! মু’মিন নাপাক হয় না।
হাদিস ২৮০
আবদুল আ’লা রহ……..আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই রাতে পর্যায়ক্রমে তাঁর স্ত্রীদের সাঙ্গে মিলিত হতেন। তখন তাঁর নয়জন স্ত্রী ছিলেন।
হাদিস ২৮১
আয়্যাশ রহ……. আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমার সঙ্গে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাক্ষাত হলো, তখন আমি জুনুবী ছিলাম। তিনি আমার হাত ধরলেন, আমি তাঁর সঙ্গে চললাম। এক স্থানে তিনি বলে পড়লেন। তখন আমি সরে পড়ে বাসস্থানে এসে গোসল করলাম। আবার তাঁর কাছে গিয়ে তাকে বসা অবস্থায় পেলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন : আবু হুরায়রা ! কোথায় ছিলে ? আমি তাকে (ঘটনা) বললাম।
হাদিস ২৮২ – জুনুবী ব্যক্তির গোসলের আগে উযূ করে ঘরে অবস্থান করা
আবু নু’আয়ম রহ. আবু সালামা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি আয়িশা রা.কে জিজ্ঞাসা করলাম : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি জানাবাতের অবস্থায় ঘুমাতেন ? তিনি বললেন : হাঁ, তবে তিনি উযূ করে নিতেন।
হাদিস ২৮৩ – জুনুবীর নিদ্রা
কুতাইবা ইবনে সা’ঈদ রহ……..উমর ইবনে খাত্তাব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলেন : আমাদের কেউ জানাবাতের অবস্থায় ঘুমাতে পারবে কি ? তিনি বললেন : হাঁ, উযূ করে নিলে জানাবাতের অবস্থায়ও ঘুমাতে পারে।
হাদিস ২৮৪ – জুনুবী উযূ করে ঘুমাবে
ইয়াহইয়া ইবনে বুকায়র রহ……আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জানাবাতের অবস্থায় ঘুমাতে ইচ্ছা করতেন তখন তিনি লজ্জাস্থান ধুয়ে সালাতের মত উযূ করতেন।
হাদিস ২৮৫
মূসা ইবনে ইসমা’ঈল রহ……….আবদুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : উমর রা. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলেন : আমাদের কেউ জুনুবী অবস্থায় ঘুমাতে পারবে কি ? তিনি বললেন : হাঁ, যদি উযূ করে নেয়।
হাদিস ২৮৬
আবদুল্লাহ্ ইবনে ইউসুফ রহ…….আবদুল্লাহ্ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : উমর ইবনুল খাত্তাব রা. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললেন, রাত্রে কোন সময় তাঁর জানাবাতের গোসল ফরয হয় (তখন কি করতে হবে ?) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন : উযূ করবে, লজ্জাস্থান ধুয়ে নিবে, তারপর ঘুমাবে।