বুখারি হাদিস ১৮৫
‘আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (র)… ইয়াহিয়া আল-মাযিনী (র) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি ‘আবদুল্লাহ ইবন যায়দ (রা)- কে (তিনি আমর ইবন ইয়াহিয়ার দাদা) জিজ্ঞাসা করলঃ আপনি কি আমাদেরকে দেখাতে পারেন, কিভাবে রাসূলুল্লাহ উযূ করতেন? ‘আবদুল্লাহ ইবন যায়দ (রা) বলেনঃ ‘হাঁ।’ তারপর তিনি পানি আনালেন। হাতের উপর সে পানি ঢেলে দু’বার তাঁর হাত ধুইলেন। তারপর কুলি করলেন এবং তিনবার নাকে পানি দিয়ে ঝেড়ে পরিস্কার করলেন। এরপর চেহারা তিনবার ধুইলেন। তারপর দু’ হাত কনুই পর্যন্ত দু’বার করে ধুইলেন। তারপর দু হাত দিয়ে মাথা মসেহ করলেন। অর্থ হাত দু’টি সামনে ও পিছনে নিলেন। মাথার সম্মুখ ভাগ থেকে শুরু করে উভয় হাত গর্দান পর্যন্ত নিলেন। তারপর আবার যেখান থেকে নিয়েছিলেন, সেখানেই ফিরিয়ে আনলেন। তারপর দু’পা ধুইলেন।
বুখারি হাদিস ১৮৬
মূসা (র)… ‘আমর ইবন আবূ হাসান (র) থেকে বর্ণিতঃ তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবন যায়দ (রা)- কে নবী –এর উযূ সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। তখন তিনি এক পাত্র পানি আনালেন এবং তাঁদের (দেখাবার) জন্য নবী –এর মত উযূ করলেন। তিনি পাত্র থেকে দু’হাতে পানি ঢাললেন। তা দিয়ে হাত দুটি তিনবার ধুইলেন। তারপর পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে তিন আঁজলা পানি দিয়ে কুলি করলেন এবং নাকে পানি দিয়ে নাক ঝাড়লেন। তারপর আবার হাত ঢুকালেন। তিনবার তাঁর চেহারা মুবারক ধুইলেন। তারপর আবার হাত ঢুকিয়ে (পানি নিয়ে) দুই হাত কনুই পর্যন্ত দু’বার ধুইলেন। তারপর আবার হাত ঢুকিয়ে উভয় হাত দিয়ে সামনে এবং পেছনে একবার মাথা মসেহ করলেন। তারপর দু’ পা গিরা পর্যন্ত ধুইলেন।
বুখারি হাদিস ১৮৭
আদম (র)… আবূ জুহায়ফা (রা) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একবার দুপুরে নবী আমাদের সামনে বেরিয়ে এলেন। তাঁকে উযূর পানি এনে দেওয়া হল। তখন তিনি উযূ করলেন। লোকে তাঁর উযূর তাঁর উযূর ব্যবহৃত পানি নিয়ে গায়ে মাখতে লাগল। এরপর নবী যোহরের দু’রাক‘আত সালাত আদায় করলেন। আর তাঁর সামনে ছিল একটি লাঠি।
আবূ মূসা (রা) বলেনঃ নবী একটি পাত্র আনালেন যাতে পানি ছিল। তারপর তিনি তার মধ্যে উভয় হাত ও চেহারা মুবারক ধুইলেন এবং তার মধ্যে কুলি করলেন। তারপর তাঁদের দু’জন [আবূ মুসা (রা) ও বিলাল (রা)] –কে বললেন, ‘তোমরা এ থেকে পান কর এবং তোমাদের মুখমণ্ডল ও বুকে ঢাল।’
বুখারি হাদিস ১৮৮
‘আলী ইবন ‘আবদুল্লাহ (র)… মাহমুদ ইবনুর-রবী (রা) থেকে বর্ণত, বর্ণনাকারী বলেনঃ তিনি সে ব্যক্তি, যার মুখমণ্ডলে রাসূলুল্লাহ তাঁদের কুয়া থেকে পানি নিয়ে কুলির পানি দিয়েছিলান। তিনি তখন বালক ছিলেন। ‘উরওয়া (র) মিসওয়া (র) প্রমুখের কাছ থেকে হাদীস বর্ণনা করেন। এ উভয় বর্ণনা একটি অন্যটির সত্যায়ন করে। নবী যখন উযূ করতেন তখন তাঁর ব্যবহৃত পানির উপর তাঁরা (সাহাবায়ে কিরাম) যেন হুমড়ি খেয়ে পড়তেন।
বুখারি হাদিস ১৮৯
‘আবদুর রহমান ইবন ইউনুস (র)… সায়িব ইবন ইয়াযীদ (রা) বলেনঃ আমার খালা আমাকে নিয়ে নবী –এর খিদমতে হাযির হলেন এবং বললেনঃ ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার ভাগ্নে অসুস্থ’। রাসূলুল্লাহ আমার মাথায় হাত বুলালেন এবং বরকতের দু‘আ করলেন। তারপর উযূ করলেন। আমি তাঁর উযূর (অবশিষ্ট) পানি পান করলাম। তারপর তাঁর পেছনে দাঁড়ালাম। তখন আমি তাঁর উভয় কাঁধের মধ্যস্থলে মোহরে নুবূওয়াত দেখতে পেলাম। তা ছিল নওশার ঘুন্টির মত।
বুখারি হাদিস ১৯০
মুসাদ্দাদ (র)… ‘আবদুল্লাহ ইবন যায়দ (রা) থেকে বর্ণত, একবার তিনি পাত্র থেকে উভয় হাতে পানি ঢেলে দু’হাত ধৌত করলেন। তারপর এক আঁজলা পানি দিয়ে (মুখ) ধুইলেন বা কুলি করলেন এবং নাকে পানি দিলান। তিনবার এরূপ করলেন। তারপর দু’ হাত কনুই পর্যন্ত দু’- দু’বার ধুইলেন এবং মাথার সামনের অংশ এবং পেছনের অংশ মসেহ করলেন। আর গিরা পর্যন্ত দু’ পা ধুইলেন। এরপর বললেনঃ “রাসূলুল্লাহ –এর উযূ এরূপ ছিল।”
বুখারি হাদিস ১৯১
সুলায়মান ইবন হারব (র)… ইয়াহইয়া (র) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি একবার ‘আমার ইবন আবূ হাসান (রা) –এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবন যায়দ (রা) – কে নবী – এর উযূ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তারপর তিনি পানির একটি পাত্র আনালেন এবং উযূ করে তাঁদের দেখালেন। তিনি পাত্রটি কাত করে উভয় হাতের উপর পানি ঢেলে তিনবার তা ধুয়ে ফেলেন। তারপর পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকালেন এবং তিন আঁজলা পানি দিয়ে তিনবার করে কুলি করলেন এবং নাকে পানি দিয়ে তা ঝেড়ে ফেললেন। তারপর আবার পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকালেন (এবং পানি দিয়ে) তিনবার মুখমণ্ডল ধুইলেন। তারপর আবার পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকালেন। তাঁর মাথায় হাত দিয়ে সামনে এবং পেছনে মসেহ করলেন। তারপর আবার পাত্রের মধ্যে তাঁর হাত ঢুকালেন এবং উভয় পা ধুইলেন।
বুখারি হাদিস ১৯২
উহায়ব (র) সুত্রে মূসা (র) বর্ণনা করেন যে, মাথা একবার মসেহ করেন।
বুখারি হাদিস ১৯৩
‘আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (র)… ইবন ‘উমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ এর যামানায় পুরুষ এবং মহিলা একত্রে উযূ করতেন।
বুখারি হাদিস ১৯৪
আবুল ওলীদ (র)… জাবির (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমার পীড়িত অবস্থায় একবার রাসূলুল্লাহ আমার খোঁজ-খবর নিতে এলেন। আমি তখন এতই অসুস্থ ছিলাম যে আমার জ্ঞান ছিল না। তারপর তিনি উযূ করলেন এবং তাঁর উযূর পানি আমার ওপর ছিটিয়ে দিলেন। তখন আমার জ্ঞান ফিরে এল। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (আমার) ‘মীরাস’ কে পাবে? আমার একমাত্র ওয়ারিস হল কালালা (অর্থ পিতামাতা ও সন্তান-সন্ততি ছাড়া অন্যেরা)। তখন ফারায়েযের আয়াত নাযিল হল।