বুখারি হাদিস ১৬৫
আবুল ইয়ামান (র)… ‘উসমান ইবনে ‘আফফান (রা)- এর আযাদকৃত গোলাম হুমরান (র) থেকে বর্ণিতঃ তিনি ‘উসমান (রা)- কে উযূর পানি আনাতে দেখলেন। তারপর তিনি সে পাত্র থেকে উভয় হাতের উপর পানি ঢেলে তা তিনবার ধুয়ে ফেললেন। এরপর তাঁর ডান হাত পানিতে ঢুকালেন। এরপর কুলি করলেন এবং নাকে পানি দিয়ে নাক ঝেরে ফেললেন। এরপর তাঁর মুখমণ্ডল তিনবার এবং উভয় হাত কুনই পর্যন্ত তিনবার ধুলেন, এরপর মাথা মাসেহ করলেন। এরপর প্রত্যেক পা তিনবার ধোয়ার পর বললেনঃ আমি নবী কে আমার এ উযূর ন্যায় উয়ূ করতে দেখেছি এবং রাসূলুল্লাহ বলেছেনঃ ‘যে ব্যক্তি আমার এ উযূর ন্যায় উযূ করে দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করবে এবং তার মধ্য কোন বাজে খেয়াল মনে আনবে না, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর অতিতের সব গুনাহ মাফ করে দিবেন।’
বুখারি হাদিস ১৬৬
আদম ইবন আবূ ইয়াস (র)… মুহাম্মদ ইবন যিয়াদ (র) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা (রা) আমাদের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। লোকেরা সে সময় পাত্র থেকে উযূ করছিল। তখন তাঁকে বলতে শুনেছি, তোমারা উত্তমরূপে উযূ কর। কারন আবুল কাসিম বলেছেনঃ পায়ের গোড়ালীগুলোর জন্য জাহান্নামের শাস্তি রয়েছে।
বুখারি হাদিস ১৬৭
‘আবদুল ইবন ইউসুফ (র)… ‘উবায়দ ইবন জুরায়জ (র) থেকে বর্ণিতঃ তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘উমর (রা)- কে বললেন, ‘হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আমি আপনাকে এমন চারটি কাজ করতে দেখি, যা আপনার অন্য কোন সঙ্গীকে করতে দেখিনা।’ তিনি বললেন, ‘ইবন জুরায়জ, সেগুলো কি?’ তিনি বললেন, আমি দেখি, (১) আপনি তাওয়াফ করার সময় রুকনে ইয়ামানী দুটি ব্যতীত অন্য রুকন স্পর্শ করেন না। (২) আপনি ‘সিবতী’ (পশমবিহীন) চপ্পল পরিধান করেন; (৩) আপনি (কাপড়ে) হলুদ রং ব্যবহার করেন এবং (৪) আপনি যখন মক্কায় থাকেন লোকে চাঁদ দেখে ইহরাম বাঁধে; কিন্তু আপনি তারবিয়ার দিন (৮ ই যিলহজ্জ) না এলে ইহরাম বাঁধেন না। ‘আবদুল্লাহ (রা) বললেনঃ রুকনের কথা যা বলেছ, তা এজন্য করি যে আমি রাসূলুল্লাহ কে ইয়ামানী রুকনদ্বয় ছাড়া আর কোনটি স্পর্শ করতে দেখিনি। আর ‘সিবতী’ চপ্পল, আমি রসূলুল্লাহ কে পশমবিহীন চপ্পল পরতে এবং তা পরিহিত অবস্থায় উযূ করতে দেখেছি, তাই আমি তা করতে ভালবাসি। আর হলুদ রং, আমি রাসূলুল্লাহ কে তা দিয়ে কাপড় রঙিন করতে দেখেছি, তাই আমিও তা দিয়ে রঙিন করতে ভালবাসি। আর ইহরাম, রাসূলুল্লাহ কে নিয়ে তাঁর সওয়ারি রওনা না হওয়া পর্যন্ত আমি তাঁকে ইহরাম বাঁধতে দেখিনি।
বুখারি হাদিস ১৬৮
মুসাদ্দাদ (র)… উম্মু আতিয়্যা (র) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী তাঁর কন্যা [যয়নাব (রা)] কে গোসল করানোর সময় তাঁদের বলেছিলেনঃ তোমরা তার ডানদিক এবং উযূর স্থান থেকে শুরু কর।
বুখারি হাদিস ১৬৯
হাফস ইবন ‘উমর (র)… ‘আয়িশা (র) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী জুতা পরা, চুল আঁচড়ানো এবং পবিত্রতা অর্জন করা তথা প্রত্যেক কাজই ডান দিক থেকে শুরু করতে ভালবাসতেন।
বুখারি হাদিস ১৭০
‘আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (র)… আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ কে দেখলাম, তখন আসরের সালাতের সময় হয়ে গিয়েছিল। আর লোকজন অযূর পানি তালশ করতে লাগল কিন্তু পেলনা। তারপর রাসূলুল্লাহ এর কাছে কিছু পানি আনা হল। রাসূলুল্লাহ সে পাত্রে তাঁর হাত রাখলেন এবং লোকজনকে সে পাত্র থেকে উযূ করতে বললেন। আনাস (রা) বলেন, সে সময় আমি দেখলাম, তাঁর আঙ্গুলের নীচ থেকে পানি উথলে উঠছে। এমনকি তাঁদের শেষ ব্যক্তি পর্যন্ত তা দেয়ে উযূ করল।
বুখারি হাদিস ১৭১
মালিক ইবন ইসমা‘ঈল (র)… ইবন সীরীন (র) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি আবীদা (র) কে বললাম, আমাদের কাছে নবী এর কেশ রয়েছে যা আমরা আনাস (রা) এর কাছ থেকে কিংবা আনাস (রা) এর পরিবারের কাছ থেকে পেয়েছি। তিনি বললেন, তাঁর একটি কেশ আমার কাছে থাকাটা দুনিয়া এবং দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তা পাওয়ার চাইতে বেশী পছন্দনীয়।
বুখারি হাদিস ১৭২
মুহাম্মদ ইবন ‘আবদুর রহীম (র)… আনাস (র) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ তাঁর মাথা মুড়িয়ে ফেললে আবূ তালহা (রা) –ই প্রথম তাঁর কেশ সংগ্রহ করেন।
বুখারি হাদিস ১৭৩
‘আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (র)… আবূ হুরায়রা (র) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ বলেছেন, তোমাদের কারো পাত্রে যদি কুকুর পান করে তবে তা সাতবার ধুইবে।
বুখারি হাদিস ১৭৪
ইসহাক (র)… আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী বলেছেন, (পূর্ব যুগে) এক ব্যক্তি একটি কুকুরকে পিপাসার তাড়নায় ভিজা মাটি চাটতে দেখতে পাল। তখন সে ব্যক্তি তাঁর মোজা নিল এবং কুকুরটির জন্য কুয়া থেকে পানি এনে দিতে লাগল। এভাবে সে ওর তৃষ্ণা মিটাল। আল্লাহ এর বিনিময় দিলেন এবং তাকে জান্নাতে দাখিল করলেন।
আহমদ ইবন শাবীব (র)…আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সা)-এর যামানায় কুকুর মসজিদের ভিতর দিয়া আসা-যাওয়া করত অথচ এজন্য তাঁরা কোথাও পানি ছিটিয়ে দিতেন না।
বুখারি হাদিস ১৭৫
হাফস ইবন ‘উমর (রা)… ‘আদী ইবন হাতিম (রা) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর সম্পর্কে) নবী কে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি বললেন, তুমি যখন তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর শিকার করতে ছেড়ে দাও, তখন সে হত্যা করলে তা তুমি খেতে পার। আর সে তার কিছু অংশ খেয়ে ফেললে তুমি তা খাবে না। কারণ সে তা নিজের জন্যই ধরেছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কখনো কখনো আমি আমার কুকুর (শিকারে) পাঠিয়ে দেই, এরপর তার সাথে অন্য এক কুকুরও দেখতে পাই (এমতাবস্থায় শিকারকৃত প্রানীর কি হুকুম)? তিনি বললেন, তাহলে খেও না। কারন তুমি বিসমিল্লাহ বলেছ কেবল তোমার কুকুরের বেলায়, অন্য কুকুরের বলায় বিসমিল্লাহ বলনি।