হাদিস ১৪১
‘আবদুল্লাহ ইবন মাসলামা (র)… উসামা ইবন যায়দ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ ‘আরাফার ময়দান থকে রওয়ানা হলেন। গিরিপথে গিয়ে তিনি সওয়ারি থেকে নেমে পেশাব করলেন। এরপর উযূ করলেন কিন্তু উত্তমরূপে করলেন না। আমি বললাম, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ! সালাত আদায় করবেন কি?’ তিনি বললেনঃ ‘সালাতের স্থান তোমার সামনে।’ তারপর তিনি আবার সওয়ার হলেন। এরপর মুযদালিফায় এসে সওয়ারি থেকে নেমে উযূ করলেন। এবার পূর্ণরূপে উযূ করলেন। তখন সালাতের জন্য ইকামাত দেওয়া হল। তিনি মাগরিবের সালাত আদায় করলেন। তারপর সকলে তাঁদের অবতরণ স্থলে নিজ নিজ উট বসিয়ে দিল। পুনরায় ঈশার ইকামাত দেওয়া হল। তিনি ঈশার সালাত আদায় করলেন এবং উভয় সালাতের মধ্য অন্য কোন সালাত আদায় করলেন না।
হাদিস ১৪২
মুহাম্মদ ইবন ‘আবদুর রহীম (র)… ইবন ‘আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি উযূ করলেন এবং তাঁর মুখমণ্ডল খুলেন। এক আঁজলা পানি দিয়ে কুলি করলেন এবং নাকে পানি দিলেন। এরপর আর এক আঁজলা পানি দিয়ে এরূপ করলেন অর্থ্যাত আরেক হাতের সাথে মিলিয়ে মুখমণ্ডল ধুলেন। এরপর আর এক আঁজলা পানি দিয়ে ডান হাত ধুলেন। এরপর আর এক আঁজলা পানি দিয়ে বাম হাত ধুলেন। এরপর মাথা মসেহ করলেন। এরপর আর এক আঁজলা পানি দিয়ে ডান পায়ের উপর ঢেলে দিয়ে তা ধুয়ে ফেললেন। এরপর আর এক আঁজলা পানি দিয়ে বাম পা ধুলেন। তারপর বললেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ কে এভাবে উযূ করতে দেখেছিল’
হাদিস ১৪৩
‘আলী ইবন ‘আবদুল্লাহ (র)… ইবন ‘আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম বলেছেন, তোমাদের কেউ তাঁর স্ত্রীর সাথে মিলনের পূর্বে যদি বল, (আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি। আল্লহ! তুমি আমাদেরকে শয়তান থেকে দূরে রাখ এবং যা আমাদেরকে দান করবে তাকেও শয়তান থেকে দূরে রাখ)- তারপর (এ মিলনের দ্বারা) তাদের কিসমতে কোন সন্তান থাকলে শয়তান তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
হাদিস ১৪৪
আদম (র)… আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী যখন প্রকৃতির ডাকে শৌচাগারে যেতেন তখন বলতেন, (হে আল্লাহ! আমি মন্দ কাজ ও শয়তান থেকে আপনার শরণ নিচ্ছি।)” ইবন ‘আর’আর (র) শু‘বা (র) সূত্রেও অনুরূপ বর্ণনা করেন। গুনদার (র) শু‘বা (র) থেকে বর্ণনা করেন, (যখন শৌচাগারে যেতেন)। মূসা (র) হাম্মাদ (র) থেকে বর্ণনা করেন, ‘যখন প্রবেশ করার ইচ্ছা করতেন।’
হাদিস ১৪৫
‘আবদুল্লাহ ইবন মুহাম্মদ (র)… ইবন ‘আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, একবার নবী শৌচাগারে গেলেন, তখন আমি তাঁর জন্য উযূর পানি রাখলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ ‘এটা কে রেখেছে?’ তাঁকে জানানো হলে তিনি বলেন, ‘ইয়া আল্লাহ! আপনি তাকে দীনের জ্ঞান দান করুন।’
হাদিস ১৪৬
আদম (র)… আবূ আইয়ূব আনসারী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন শৌচাগারে যায়, তখন সে যেন কিবলার দিকে মুখ না করে এবং তার পিঠও না করে, বরং তোমরা পূর্ব দিক এবং পশ্চিম দিকে ফিরে বসবে (এই নির্দেশ মদীনার বাসিন্দাদের জন্য)।
হাদিস ১৪৭
‘আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (র)… ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘উমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘লোকে বলে মল-মূত্র ত্যাগের সময় কিবলার দিকে এবং বায়তুল মুকাদ্দাসের দেকে মুখ করে বসবে না।’ ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘উমর (রা) বলেন, ‘আমি এক দিন আমাদের ঘরের ছাদের উপর উঠলাম। তারপর রাসূলুল্লাহ কে দেখলাম বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে দুই ইটের উপর তাঁর প্রয়োজনে বসেছেন। তিনি [ওয়াসি (র)- কে] বললেন, তুমি বোধ হয় তাদের মধ্যে শামিল, যারা নিতম্বের ওপর ভর করে সালাত আদায় করে। আমি বললাম, ‘আল্লাহর কসম! আমি জানি না।’ মালিক (র) বলেন, (নিতম্বের উপর ভর করার অর্থ হল) যারা সালাত আদায় করে এবং মাটি থেকে নিতম্ব না তুলে সিজদা করে।
হাদিস ১৪৮
ইয়াহইয়া ইবন বুকায়র (র)… ‘আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত, নবী করীম – এর পত্নীগণ রাতের বেলায় প্রাকৃতিক প্রয়োজনে খোলা ময়দানে যেতেন। আর ‘উমর (রা) নবী – কে বলতেন, ‘আপনার সহধর্মিণীগণকে পর্দায় রাখুন।’ কিন্তু রাসূলুল্লাহ তা করেন নি। এক রাতে ঈশার সময় নবী- এর পত্নী সাওদা বিনত যাম‘আ (রা) প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বের হলেন। তিনি ছিলেন দীর্ঘকায়া। ‘উমর (রা) তাঁকে ডেকে বললেন, ‘হে সাওদা! আমি কিন্তু আপনাকে চিনে ফেলেছি।’ পর্দার হুকুম নাযিল হওয়ার আগ্রহে তিনি এ কথা বলেছিলেন। তারপর আল্লাহ তা‘আলা পর্দার হুকুম নাযিল করেন।
হাদিস ১৪৯
‘যাকারিয়্যা (র)…‘আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত, নবী বলেন, ‘তোমাদের প্রয়োজনের জন্য বের হবার অনুমতি দেয়া হয়েছে।’ হিশাম (র) বলেন, অর্থ প্রাকৃতিক প্রয়োজনে।
হাদিস ১৫০
ইবরাহীম ইবন মুনযির (র)… ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘উমর (রা) থেকে বর্ণিত, নবী বলেন, ‘আমি আমার বিশেষ এক প্রয়োজনে হাফসা (রা) – এর ঘরের ছাদে উঠলাম। তখন দেখলাম, রাসূলুল্লাহ কিবলার দিকে পিঠ দিয়ে শাম-এর দিকে মুখ করে তাঁর প্রয়োজনে বসেছেন।’
হাদিস ১৫১
ইয়াকূব ইবন ইবরাহীম (র)… আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ ‘একদিন আমি আমাদের ঘরের উপর উঠলাম। আমি দেখলাম, রাসূলুল্লাহ দু ইটের উপর বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বসেছেন।