- সূরার নাম: সূরা আসর
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা আসর
আয়াতঃ 103.001
কসম যুগের (সময়ের),
By Al-’Asr (the time).
وَالْعَصْرِ
WaalAAasri
YUSUFALI: By (the Token of) Time (through the ages),
PICKTHAL: By the declining day,
SHAKIR: I swear by the time,
KHALIFA: By the afternoon.
=====================
সূরা আসর বা মহাকাল – ১০৩
৩ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময় পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভুমিকা ও সার সংক্ষেপ : এই মক্কী সূরাতে মহাকালের শপথ করা হয়েছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দান করে যে মন্দের শেষ পরিণতি সব সময়ে মন্দই হবে। কিন্তু যারা ঈমান আনে এবং আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য সৎ কাজ করে এবং পূত পবিত্র জীবন যাপন করে ও অন্যকেও সত্য ও ধৈর্যের উপদেশ দান করে তাদের শেষ পরিণতি মঙ্গলময়। দেখুন ৯৫ নং সূরার বিষয়বস্তু।
সূরা আসর বা মহাকাল – ১০৩
৩ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময় পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। মহাকালের শপথ ৬২৬২ ;
৬২৬২। ‘Al-Asr’ এর অর্থ দ্বিবিধ হতে পারে : ১) মহাকাল – যা আদি অনন্ত কাল ব্যপী। সেক্ষেত্রে ‘Dahr’ দ্বারা যে বিমূর্ত ভাবকে বোঝানো হয় তাকেই বুঝায়। ২) অথবা এর দ্বারা আসরের সালাতের সময়কে বুঝানো হয়েছে [ দেখুন ২: ২৩৮ আয়াতের টিকা ২৭১ ]।
সময়ের প্রতি আবেদন করা হয়েছে। সময় আল্লাহ্র এক অত্যাচার্য সৃষ্টি। এ সম্বন্ধে সকলেরই ধারণা আছে, তবে কেহই সময়কে সম্পূর্ণরূপে ব্যাখ্যা করতে পারে না। পার্থিব সকল কিছুকে ‘সময়’ ধ্বংস করে দেয়। সময়ের গর্ভে ইতিহাস বিলিন হয়। সময়ের গতির সাথে পাল্লা দেয়ার ক্ষমতা মানুষের নাই। কবির ভাষায়,
“সময় চলিয়া যায়
নদীর স্রোতের প্রায়। ”
এই সময়কে কেউ ধরে রাখতে বা স্তব্ধ করে দিতে সক্ষম নয়, একমাত্র আধ্যাত্মিক জগতই ‘সময়’ কে জয় করতে পারে কারণ আধ্যাত্মিক জগত হচ্ছে আদি অন্তহীন সময়। দেখুন ৩ নং আয়াত যেখানে বলা হয়েছে এই সময়কে সঠিক ভাবে ব্যবহার করে মানুষ ইহকাল ও পরকালেও বিরাট ও বিষ্ময়কর মুনাফা অর্জন করতে পারে। আবার ভ্রান্ত পথে চললে এটাও তার জন্য বিপদজনকও হয়ে যেতে পারে। আসরের সালাতের সময়ের জন্য দেখুন পরবর্তী টিকা।
আয়াতঃ 103.002
নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত;
Verily! Man is in loss,
إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ
Inna al-insana lafee khusrin
YUSUFALI: Verily Man is in loss,
PICKTHAL: Lo! man is a state of loss,
SHAKIR: Most surely man is in loss,
KHALIFA: The human being is utterly lost.
২। মানুষ ক্ষতির মাঝে অবস্থান করছে ৬২৬৩,
৬২৬৩। আসর অর্থাৎ অপরাহ্নের সালাতের সময়। যদি আমরা জীবনের উপমা দিই ব্যবসা বাণিজ্যের কর্মক্ষেত্র স্বরূপ তবেই এই আয়াতটি অর্থবহ হবে। যে মানুষ শুধুমাত্র তার পার্থিব বিষয় বস্তু সম্বন্ধে সতর্ক এবং জাগতিক লাভের জন্যই সবর্দা চেষ্টা করে থাকে সেই হচ্ছে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থ। ব্যবসা বাণিজ্যের যেমন দিন শেষে অপরাহ্নে [ আসরের সময়ে ] হিসাব গ্রহণ করা হয়, ঠিক সেরূপ জীবনের শেষে অপরাহ্নে এ জীবনের হিসাব মিলানো কঠিন হবে। জীবনের শেষ হিসেবে লাভবান হতে পারতো যদি তাদের বিশ্বাস বা ঈমান থাকতো, আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য তারা পূত পবিত্র জীবন যাপন করতো, সৎকাজে নিজেকে নিয়োজিত করতো এবং অন্যকেও সৎ উপদেশ দিত।
আয়াতঃ 103.003
কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের।
Except those who believe (in Islâmic Monotheism) and do righteous good deeds, and recommend one another to the truth (i.e. order one another to perform all kinds of good deeds (Al-Ma’rûf ÇáãÚÑæÝ)which Allâh has ordained, and abstain from all kinds of sins and evil deeds (Al-Munkar ÇáãäßÑ)which Allâh has forbidden), and recommend one another to patience (for the sufferings, harms, and injuries which one may encounter in Allâh’s Cause during preaching His religion of Islâmic Monotheism or Jihâd, etc.).
إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
Illa allatheena amanoo waAAamiloo alssalihati watawasaw bialhaqqi watawasaw bialssabri
YUSUFALI: Except such as have Faith, and do righteous deeds, and (join together) in the mutual teaching of Truth, and of Patience and Constancy.
PICKTHAL: Save those who believe and do good works, and exhort one another to truth and exhort one another to endurance.
SHAKIR: Except those who believe and do good, and enjoin on each other truth, and enjoin on each other patience.
KHALIFA: Except those who believe and lead a righteous life, and exhort one another to uphold the truth, and exhort one another to be steadfast.
৩। তারা ব্যতীত, যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে ৬২৬৪, এবং পরস্পরকে সত্য,ধৈর্য ও দৃঢ়তার উপদেশ দেয়। ৬২৬৫
৬২৬৪। তারাই জীবনের শেষ হিসেবের দিনে ক্ষতিগ্রস্থ হবে না যারা বিশ্বাস বা ঈমান ও সৎকর্মকে বর্ম হিসেবে ধারণ করে থাকে পৃথিবীতে। এই বর্মই তাদের পার্থিব জীবনের ক্লেদাক্ত পরিবেশ থেকে রক্ষা করবে। তাঁর পূত, পবিত্র জীবনই হবে তার আধ্যাত্মিক জগতের উত্তরণের সিড়ি। লক্ষ্য করুণ ঈমান ও সৎকর্ম আত্মসংশোধনের সাথে সর্ম্পকিত।
৬২৬৫। কবির ভাষাতে,
” পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি এ জীবন মন সকলি দাও
তার মত সুখ কোথায় কি আছে আপনার কথা ভুলিয়া যাও।”
কবিতাটি আল্লাহ্র বাণীর প্রতিধ্বনি। যদি কেউ শুধুমাত্র আত্মসুখ ও সমৃদ্ধির জন্য জীবন যাপন করে তবে সে আল্লাহ্ কর্তৃক প্রদত্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিক ভাবে পালন করে না। ব্যক্তিকে আল্লাহ্ যা কিছু ভালো ও নেয়ামত দান করেন সে অবশ্যই তা সকলের সাথে অংশীদারীত্বের ভিত্তিতে ভোগ করবে। বিশেষ ভাবে নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিক জীবনে যদি কোন রহমত সে আল্লাহ্র নিকট থেকে লাভ করে তবে তা প্রচার ও প্রসার করা তার জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়; যেনো তারা সত্যকে প্রত্যক্ষ করতে পারে এবং ধৈর্য্য ও দৃঢ়তার সাথে সেই সত্য পথকে অনুসরণ করার যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। ঝঞাবিক্ষুব্ধ সাগরে সংসার তরণীকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারে ধৈর্য্য,দৃঢ়তা ও অধ্যাবসায় দ্বারা। তাহলে সে [উপদেশদানকারী ] এবং তারা [ উপদেশ গ্রহণকারী ] উভয়েই অমৃত সূধার সন্ধান লাভ করবে আত্মার মাঝে; যা তাদের জন্য বয়ে আনবে প্রগাঢ় প্রশান্তি।