- সূরার নাম: সূরা তাকাসূর
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা তাকাসূর
আয়াতঃ 102.001
প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে গাফেল রাখে,
The mutual rivalry for piling up of worldly things diverts you,
أَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ
Alhakumu alttakathuru
YUSUFALI: The mutual rivalry for piling up (the good things of this world) diverts you (from the more serious things),
PICKTHAL: Rivalry in worldly increase distracteth you
SHAKIR: Abundance diverts you,
KHALIFA: You remain preoccupied with hoarding.
============
সূরা তাকাসুর – ১০২
৮ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা ও সার সংক্ষেপ : এই সূরাটি সম্ভবতঃ প্রাথমিক মক্কী সূরার অর্ন্তগত। মানুষের চাওয়া ও পাওয়ার বিশ্বগ্রাসী ক্ষুধার বিরুদ্ধে সাবধান বাণী প্রেরণ করা হয়েছে। মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতা হচ্ছে পার্থিব সম্পদ, ক্ষমতা, ইত্যাদি বিভিন্ন জিনিষের প্রাচুর্যের দ্বারা নিজেকে শক্তিশালী ভাবার প্রবণতা। ফলে এসব জিনিষের প্রতি তাঁর ভূবনগ্রাসী আসক্তি লক্ষ্য করা যায়। নিজেকে বড় ও শক্তিশালী করার প্রবণতা থেকে জন্ম নেয় যে আসক্তি সেই আসক্তির কবলে তার সকল চিন্তা ভাবনা, পরিশ্রম সব কিছুকে সমর্পন করে, পরলোকের বা পারলৌকিক জীবনের জন্য আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য সময় ব্যয় করার সময় তার থাকে না।
সূরা তাকাসুর – ১০২
৮ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। [ ওহে মানব ] পার্থিব সম্পদ বৃদ্ধির প্রতিযোগীতা তোমাদের [ গুরুতর বিষয় থেকে ] অন্যমনষ্ক করে রাখে ৬২৫৭,
৬২৫৭। ধন-সম্পদ,ক্ষমতা, প্রভাব প্রতিপত্তি, এ সবের প্রতি মানুষের আকর্ষণ স্বাভাবিক। কিন্তু মানুষ যখন এগুলির আসক্তিতে ভালো -মন্দ, ন্যায় অন্যায়ের মাঝে পার্থক্যের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে তখনই ব্যক্তির জীবনে বিপর্যয় নেমে আসে। সে বৈধ পন্থা ব্যতীত অবৈধ পন্থার স্মরণাপন্ন হয়। অবৈধ পন্থায় সম্পদ সংগ্রহ করা, ক্ষমতা ও প্রভাব প্রতিপত্তি অর্জন করা এবং আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য ব্যয় না করাই হচ্ছে বিকৃত মানসিকতা যা তাকে পাপের পথে টেনে নিয়ে যায়। এই মানসিকতাতে ব্যক্তিগত ভাবে কেউ আক্রান্ত হতে পারে, আবার একটি জাতি জাতিগত ভাবেও আক্রান্ত হতে পারে। [যেমন বাংলাদেশীরা আক্রান্ত ] এরূপ ক্ষেত্রে মানুষ মোহাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। পৃথিবীতে বাঁচার জন্য এবং পৃথিবীর অন্যান্য জাতির সাথে প্রতিযোগীতার জন্য ধনসম্পদের, প্রভাব -প্রতিপত্তির, ক্ষমতা লাভের প্রয়োজন আছে সত্য, তবে অবৈধ পন্থায় অর্জন কখনও সুফল বয়ে আনবে না। এর পরেও আল্লাহ্ বলেছেন যে, যদি সে অর্জন বৈধ পথেও হয়, তবুও এ সবের জন্য প্রবল আসক্তি মনকে মোহাচ্ছন্ন করে ফেলে, ফলে মনের মাঝে দম্ভ ও অহংকারের জন্ম নেয় এবং প্রবল প্রতিযোগীতার মনোভাব তার সকল চিন্তা ভাবনার রাজ্য দখল করে নেয়। এরূপ ক্ষেত্রে ব্যক্তির সময় থাকে না আল্লাহ্র কথা ভাবার বা পরলোকের কথা চিন্তা করার বা আধ্যাত্মিক উন্নতির চেষ্টা করা। এরূপ ক্ষেত্রেই সতর্ক করা হয়েছে ধন -সম্পদ ও প্রভাব প্রতিপত্তির প্রবল আকাঙ্খার বিরুদ্ধে। এই আকাঙ্খা তীব্র হলে তার থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। আমৃত্যু তাকে এই কামনা ও আসক্তির পিছনে ছুটে বেড়াতে হয়। “সম্পদ বৃদ্ধির প্রতিযোগীতা তোমাদের অন্যমনস্ক করে রাখে।”
আয়াতঃ 102.002
এমনকি, তোমরা কবরস্থানে পৌছে যাও।
Until you visit the graves (i.e. till you die).
حَتَّى زُرْتُمُ الْمَقَابِرَ
Hatta zurtumu almaqabira
YUSUFALI: Until ye visit the graves.
PICKTHAL: Until ye come to the graves.
SHAKIR: Until you come to the graves.
KHALIFA: Until you go to the graves.
২। যতক্ষণ না তোমরা কবরে উপণীত হও ৬২৫৮।
৬২৫৮। এই আয়াতটির অর্থ হচ্ছে মানুষ পার্থিব ধন-সম্পদের পিছনে এতটাই মোহাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে যে মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্তেও সে এই নাগপাশ ছিন্ন করতে পারে না, মৃত্যুর সাথে সাথে যখন তাকে কবরে নীত করা হয়, পৃথিবীর সকল আড়ম্বর পূর্ণ জীবন, জাঁকজমক, ক্ষমতা প্রতিপত্তি সকল কিছুই পিছনে ফেলে রেখে যেতে হয়। সঙ্গে কিছুই নিতে পারে না। এই হচ্ছে বাস্তব সত্য। মৃত্যুর পরেই তার সম্মুখে জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য ধরা পড়বে। তবে কেন মানুষ সময় থাকতে প্রকৃত সত্যকে অনুধাবনের চেষ্টা করে না ?
আয়াতঃ 102.003
এটা কখনও উচিত নয়। তোমরা সত্ত্বরই জেনে নেবে।
Nay! You shall come to know!
كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ
Kalla sawfa taAAlamoona
YUSUFALI: But nay, ye soon shall know (the reality).
PICKTHAL: Nay, but ye will come to know!
SHAKIR: Nay! you shall soon know,
KHALIFA: Indeed, you will find out.
৩। কিন্তু না, শীঘ্রই তোমরা [ বাস্তবতা ] জানতে পারবে।
৪। আবার বলি, তোমরা শীঘ্রই জানতে পারবে।
৫। না, তোমাদের যদি নিশ্চিত জ্ঞান থাকতো; তবে তোমরা [সাবধান ] হতে। ৬২৫৯
৬২৫৯। সূরা [ ৬৯ : ৫১ ] আয়াতের টিকাতে [ ৫৬৭৩ নং ] তিন ধরণের জ্ঞানের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এই শ্রেণীর প্রথমটি হচ্ছে : নিজস্ব যুক্তি,জ্ঞান, বিবেক,বুদ্ধির দ্বারা বা অন্যের নিকট থেকে শুনে যে জ্ঞান অর্জন করা যায়। একে বলে, “Ilm-ul-yaqin”। দ্বিতীয় ধরণ হচ্ছে চাক্ষুস দেখে যে জ্ঞান অর্জন করা যায় একে বলে “Ain-ul-yaqin”। ‘নিশ্চিত জ্ঞান ‘ দ্বারা তৃতীয় ধরণের জ্ঞানের কথা বলা হয়েছে যাকে বলা হয়েছে “Haqq-ul-yaqin” বা নিশ্চিত জ্ঞান যা ভুল ভ্রান্তির উর্দ্ধে।