- সূরার নাম: সূরা যিলযাল
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা যিলযাল
আয়াতঃ 099.001
যখন পৃথিবী তার কম্পনে প্রকম্পিত হবে,
When the earth is shaken with its (final) earthquake.
إِذَا زُلْزِلَتِ الْأَرْضُ زِلْزَالَهَا
Itha zulzilati al-ardu zilzalaha
YUSUFALI: When the earth is shaken to her (utmost) convulsion,
PICKTHAL: When Earth is shaken with her (final) earthquake
SHAKIR: When the earth is shaken with her (violent) shaking,
KHALIFA: When the earth is severely quaked.
===============
সূরা যিল্যাল বা প্রকম্পন – ৯৯
৮ আয়াত, ১ রুকু, মাদানী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা ও সার সংক্ষেপ : এই সূরাটি পূর্বের সূরার ন্যায়। এটি একটি প্রাথমিক মাদানী সূরা। আবার অনেকে মনে করেন এটা বিলম্বে প্রাপ্ত মক্কী সূরা।
রোজ কেয়ামতের প্রাক্কালে যখন ন্যায় ও সত্যের পটভূমিতে নূতন পৃথিবী সৃষ্টি করা হবে সে সময়ে এই পুরাতন পৃথিবী প্রচন্ডভাবে প্রকম্পিত হবে। বর্তমান পৃথিবীর সব কিছু সমূলে উৎপাটিত হবে এবং পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। সেই প্রবল কম্পনের সামান্য নমুনা আমরা ভূমিকম্পের সময়ে দেখতে পাই। কেয়ামত কালের কম্পনের ফলে পৃথিবীর অভ্যন্তরের সকল লুক্কায়িত বস্তু বের হয়ে পড়বে।
সূরা যিল্যাল বা প্রকম্পন – ৯৯
৮ আয়াত, ১ রুকু, মাদানী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। যখন পৃথিবী প্রকম্পিত হবে [ ভয়ানক ভাবে ] ৬২৩৫।
৬২৩৫। সাধারণ মানুষের নিকট প্রচন্ড ভূমিকম্প এক অত্যন্ত ভয়াবহ ঘটনা। এর ফলে সুউচ্চ প্রাসাদ মূহুর্তের মধ্যে ধূলিস্যাৎ হয়ে পড়ে। পৃথিবীর বর্হিভাগ চৌচির হয়ে ফেটে পড়ে ও অভ্যন্তর ভাগের বিভিন্ন পদার্থ বের হয়ে আসে। ভুমিকম্পের আকস্মিকতা, উৎপত্তি, মানুষের অজানা এবং এর ধ্বংস করার ক্ষমতার ভয়াবহতা মানুষকে ভয়ে বিহ্বল করে দেয়। এ হলো পৃথিবীর সামান্য ভূমিকম্পের বিবরণ। কিন্তু কেয়ামতে যে ভুকম্পন হবে তার তীব্রতা ও ধ্বংসযজ্ঞ কল্পনা করাও মানুষের পক্ষে অসাধ্য। তবে পৃথিবীর সামান্য ভূমিকম্পন থেকে মানুষ কেয়ামতের দিনের ভূকম্পনের সামান্য কিছু ধারণা করতে পারে।
আয়াতঃ 099.002
যখন সে তার বোঝা বের করে দেবে।
And when the earth throws out its burdens,
وَأَخْرَجَتِ الْأَرْضُ أَثْقَالَهَا
Waakhrajati al-ardu athqalaha
YUSUFALI: And the earth throws up her burdens (from within),
PICKTHAL: And Earth yieldeth up her burdens,
SHAKIR: And the earth brings forth her burdens,
KHALIFA: And the earth ejects its loads.
২। এবং পৃথিবী তার বোঝাসমূহ বের করে দেবে, ৬২৩৬
৬২৩৬। যদি ভূকম্পনের সাথে আগ্নেগিরির আগ্নেয়পাত ঘটে, তবে বড় বড় শিলাখন্ড ও গলিত উত্তপ্ত লাভার স্রোত ভূগর্ভ থেকে উৎক্ষিপ্ত হতে থাকে। এগুলির উৎক্ষেপন থেকে মনে হয় যে, এগুলি বের করে দেয়ার জন্য পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগ ব্যগ্র, এরা হচ্ছে পৃথিবীর জন্য বোঝা স্বরূপ। যাবতীয় খনিজ পদার্থ, অথবা ধনরত্ন যা মানুষ গোপনে পুঁতে রেখেছিলো সব কিছু মাটির অতল থেকে বের হয়ে আসে। কিন্তু কেয়ামতে যে প্রচন্ড ভূকম্পন ঘটবে তাতে পৃথিবীতে অদ্যাবধি যত মৃতদেহকে কবর দেয়া হয়েছে, সব বের হয়ে আসবে এবং তাদেরকে কবরের অন্ধকার থেকে দিনের আলোতে প্রকাশ করা হবে। প্রকৃত সত্যের ভিত্তিতে তাদের বিচার অনুষ্ঠিত হবে।
আয়াতঃ 099.003
এবং মানুষ বলবে, এর কি হল ?
And man will say: ”What is the matter with it?”
وَقَالَ الْإِنسَانُ مَا لَهَا
Waqala al-insanu ma laha
YUSUFALI: And man cries (distressed): ‘What is the matter with her?’-
PICKTHAL: And man saith: What aileth her?
SHAKIR: And man says: What has befallen her?
KHALIFA: The human will wonder: “What is happening?”
৩। এবং মানুষ [দুর্দ্দশায় ] চীৎকার করে বলবে, ” ইহার [ পৃথিবীর ] কি হলো ? ” ৬২৩৭
৬২৩৭। সেদিনের ভয়াবহতা দর্শনে মানুষ হয়ে পড়বে হতভম্ব। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় তার কণ্ঠরোধ হওয়ার অবস্থা হবে।
আয়াতঃ 099.004
সেদিন সে তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে,
That Day it will declare its information (about all what happened over it of good or evil).
يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا
Yawma-ithin tuhaddithu akhbaraha
YUSUFALI: On that Day will she declare her tidings:
PICKTHAL: That day she will relate her chronicles,
SHAKIR: On that day she shall tell her news,
KHALIFA: On that day, it will tell its news.
৪। সেদিন সে তার বৃত্তান্ত ঘোষণা করবে।
৫। কারণ তোমার প্রভু তাকে সেভাবেই অনুপ্রাণীত করবেন ৬২৩৮।
৬২৩৮। এই আয়াতে বলা হয়েছে পৃথিবীকে সেদিন ব্যক্তিত্বে রূপান্তরিত করা হবে। পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে সত্যি তবে পৃথিবীতে সৃষ্টির আদি থেকে যত কাজ করা হয়েছে সব কিছু পৃথিবী প্রকাশ করে দেবে দিবালোকের ন্যায়। কারণ আল্লাহ্ পৃথিবীকে সেই আদেশ দান করবেন যার ফলে পৃথিবীর মাঝে নিজেকে প্রকাশ করার ‘প্রেরণা’ জন্মলাভ করবে। তাকে হুকুম করা হবে সকল প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করার জন্য। দেখুন [ ১৬ : ৬৮ ] আয়াত ও টিকা নং ২০৯৭। আল্লাহ্, ‘ প্রেরণা ‘ দান করলে ভাষাহীন জীবও আত্মপ্রকাশের ক্ষমতা রাখে।
আয়াতঃ 099.005
কারণ, আপনার পালনকর্তা তাকে আদেশ করবেন।
Because your Lord has inspired it.
بِأَنَّ رَبَّكَ أَوْحَى لَهَا
Bi-anna rabbaka awha laha
YUSUFALI: For that thy Lord will have given her inspiration.
PICKTHAL: Because thy Lord inspireth her.
SHAKIR: Because your Lord had inspired her.
KHALIFA: That your Lord has commanded it.
৪। সেদিন সে তার বৃত্তান্ত ঘোষণা করবে।
৫। কারণ তোমার প্রভু তাকে সেভাবেই অনুপ্রাণীত করবেন ৬২৩৮।
৬২৩৮। এই আয়াতে বলা হয়েছে পৃথিবীকে সেদিন ব্যক্তিত্বে রূপান্তরিত করা হবে। পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে সত্যি তবে পৃথিবীতে সৃষ্টির আদি থেকে যত কাজ করা হয়েছে সব কিছু পৃথিবী প্রকাশ করে দেবে দিবালোকের ন্যায়। কারণ আল্লাহ্ পৃথিবীকে সেই আদেশ দান করবেন যার ফলে পৃথিবীর মাঝে নিজেকে প্রকাশ করার ‘প্রেরণা’ জন্মলাভ করবে। তাকে হুকুম করা হবে সকল প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করার জন্য। দেখুন [ ১৬ : ৬৮ ] আয়াত ও টিকা নং ২০৯৭। আল্লাহ্, ‘ প্রেরণা ‘ দান করলে ভাষাহীন জীবও আত্মপ্রকাশের ক্ষমতা রাখে।
আয়াতঃ 099.006
সেদিন মানুষ বিভিন্ন দলে প্রকাশ পাবে, যাতে তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম দেখানো হয়।
That Day mankind will proceed in scattered groups that they may be shown their deeds.
يَوْمَئِذٍ يَصْدُرُ النَّاسُ أَشْتَاتًا لِّيُرَوْا أَعْمَالَهُمْ
Yawma-ithin yasduru alnnasu ashtatan liyuraw aAAmalahum
YUSUFALI: On that Day will men proceed in companies sorted out, to be shown the deeds that they (had done).
PICKTHAL: That day mankind will issue forth in scattered groups to be shown their deeds.
SHAKIR: On that day men shall come forth in sundry bodies that they may be shown their works.
KHALIFA: On that day, the people will issue from every direction, to be shown their works.
৬। সেদিন [ ভালো ও মন্দ ] মানুষ নিজেদের আমলনামা দেখার জন্য বাছাই করা [ বিভিন্ন ] দলে অগ্রসর হবে, ৬২৩৯
৬২৩৯। এই পৃথিবীতে ভালো ও মন্দ পরস্পর মিশে থাকে। কিন্তু বিচার দিবসের প্রাক্কালে ভালোকে মন্দ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করা হবে। ভালোরা হবে এক শ্রেণী এবং মন্দরা হবে অন্য শ্রেণী। প্রত্যেক দল তাদের বিচারের জন্য অপেক্ষা করবে। প্রত্যেক দলকে তাদের কৃতকর্মকে দেখানো হবে, পৃথিবীতে তারা যা করেছে, যা চিন্তা করেছে, যা বলেছে অর্থাৎ জীবনের খুঁটিনাটি প্রতিটি ঘটনা সবই সিনেমার মত তাদের দৃষ্টিতে ভাস্বর হবে। তাদের কোন গোপন কাজ বা চিন্তা সেদিন গোপন থাকবে না। প্রতিটি কাজ চিন্তা, কথা, আচরণ তা প্রকাশ্য হোক বা অপ্রকাশ্য হোক সব কিছুর হিসাব নেয়া হবে। সেই সাথে এ কথাও বলা হয়েছে তাদের কাজের হিসাব তাদের দেখানো হবে।
আয়াতঃ 099.007
অতঃপর কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখতে পাবে
So whosoever does good equal to the weight of an atom (or a small ant), shall see it.
فَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ
Faman yaAAmal mithqala tharratin khayran yarahu
YUSUFALI: Then shall anyone who has done an atom’s weight of good, see it!
PICKTHAL: And whoso doeth good an atom’s weight will see it then,
SHAKIR: So. he who has done an atom’s weight of good shall see it
KHALIFA: Whoever does an atom’s weight of good will see it.
৭। কেহ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে সে তা দেখবে,
৮। এবং কেহ অণু পরিমাণ পাপ করলে সে তাও দেখবে। ৬২৪০
৬২৪০। ‘Zarrat’ পরমাণু সম ওজন। অর্থাৎ পৃথিবীতে আমরা যাকে সর্বাপেক্ষা ক্ষুদ্র ওজন মনে করি। বলা হয়েছে যে ভালো বা মন্দ যাই-ই মানুষ এই পৃথিবীতে করবে তা সেদিন সে দেখতে পারবে ও স্মরণ করতে পারবে। ভালো কাজের গুরুত্ব বুঝানোর জন্য বলা হয়েছে যে, অণু সমান সৎ কাজ করলেও আল্লাহ্র নিকট তা হারিয়ে যাবে না। এ ভাবেই আল্লাহ্ সৎকর্মশীলদের পুরষ্কৃত করবেন।
আয়াতঃ 099.008
এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখতে পাবে।
And whosoever does evil equal to the weight of an atom (or a small ant), shall see it.
وَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ
Waman yaAAmal mithqala tharratin sharran yarahu
YUSUFALI: And anyone who has done an atom’s weight of evil, shall see it.
PICKTHAL: And whoso doeth ill an atom’s weight will see it then.
SHAKIR: And he who has done an atom’s weight of evil shall see it.
KHALIFA: And whoever does an atom’s weight of evil will see it.
৭। কেহ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে সে তা দেখবে,
৮। এবং কেহ অণু পরিমাণ পাপ করলে সে তাও দেখবে। ৬২৪০
৬২৪০। ‘Zarrat’ পরমাণু সম ওজন। অর্থাৎ পৃথিবীতে আমরা যাকে সর্বাপেক্ষা ক্ষুদ্র ওজন মনে করি। বলা হয়েছে যে ভালো বা মন্দ যাই-ই মানুষ এই পৃথিবীতে করবে তা সেদিন সে দেখতে পারবে ও স্মরণ করতে পারবে। ভালো কাজের গুরুত্ব বুঝানোর জন্য বলা হয়েছে যে, অণু সমান সৎ কাজ করলেও আল্লাহ্র নিকট তা হারিয়ে যাবে না। এ ভাবেই আল্লাহ্ সৎকর্মশীলদের পুরষ্কৃত করবেন।