- সূরার নাম: সূরা বাইয়ানা
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা বাইয়ানা
আয়াতঃ 098.001
আহলে-কিতাব ও মুশরেকদের মধ্যে যারা কাফের ছিল, তারা প্রত্যাবর্তন করত না যতক্ষণ না তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ আসত।
Those who disbelieve from among the people of the Scripture (Jews and Christians) and among Al-Mushrikûn, were not going to leave (their disbelief) until there came to them clear evidence.
لَمْ يَكُنِ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ وَالْمُشْرِكِينَ مُنفَكِّينَ حَتَّى تَأْتِيَهُمُ الْبَيِّنَةُ
Lam yakuni allatheena kafaroo min ahli alkitabi waalmushrikeena munfakkeena hatta ta/tiyahumu albayyinatu
YUSUFALI: Those who reject (Truth), among the People of the Book and among the Polytheists, were not going to depart (from their ways) until there should come to them Clear Evidence,-
PICKTHAL: Those who disbelieve among the People of the Scripture and the idolaters could not have left off (erring) till the clear proof came unto them,
SHAKIR: Those who disbelieved from among the followers of the Book and the polytheists could not have separated (from the faithful) until there had come to them the clear evidence:
KHALIFA: Those who disbelieved among the people of the scripture, as well as the idol worshipers, insist on their ways, despite the proof given to them.
================
সূরা বাইয়্যিনাহ বা সুস্পষ্ট প্রমাণ – ৯৮
৮ আয়াত, ১ রুকু, মাদানী
[দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা ও সার সংক্ষেপ : এই সূরাটি সম্ভবতঃ প্রাথমিক মাদানী সূরা অথবা শেষদিকে অবতীর্ণ মক্কী সূরা।
এই সূরার বিষয়বস্তু পূর্বের সূরার ধারাবাহিকতা স্বরূপ। কদরের রাত্রি প্রকৃতপক্ষেই মানুষের জন্য রহমত স্বরূপ। কিন্তু যারা সত্যকে প্রত্যাখান করে ; আল্লাহ্র বাণী তাদের হৃদয়ে কোন রেখাপাত করতে পারে না। এ বাণীর স্বপক্ষে যত যুক্তিই থাকুক না কেন, বক্তব্য যত সুষ্পষ্টই হোক না কেন তা সত্য প্রত্যাখানকারীদের হৃদয়ে রেখাপাত করে না ; সত্যের আলোর প্রবেশ ঘটে না।
সূরা বাইয়ানা বা সুস্পষ্ট প্রমাণ – ৯৮
৮ আয়াত, ১ রুকু, মাদানী
[দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। কিতাবীদের ৬২২১ মধ্যে এবং মুশরিকদের মধ্যে ৬২২২ যারা [ সত্যকে] অস্বীকার করেছিলো, তারা [তাদের পথ ] পরিত্যাগ করবে না,যতক্ষণ না তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসবে ৬২২৩
৬২২১। কিতাবী জাতি দ্বারা ইহুদী ও খৃশ্চিয়ানদের বুঝানো হয়েছে। এই দুই জাতিই আল্লাহ্র কিতাব লাভ করে এবং তাঁদের নবুয়তের ধারাতেই শেষ নবীর আগমন ঘটে। তাদের শেষ নবীর আগমন বার্তা পূর্বাহ্নেই দান করা হয়েছে। ইহুদীদের কিতাবে বলা হয়েছে, ” যে হযরত মুসার ন্যায় রাসুল প্রেরণ করা হবে। “The Lord thy God will raise up unto thee a prophet from the midst of thee , of thy brethren, like unto me, unto ye shall hearken.” [Deut xviii : 15]। হযরত ঈসা শেষ নবীর আগমন উল্লেখ করে তাঁর নাম পর্যন্ত বলেছেন। [John xiv : 16 ; xv : 26 and xv : 7]। দেখুন কোরাণের [ ৬১ : ৬ ] আয়াতের টিকা ৫৪৩৮। কিতাবী জাতিরা তাদের কিতাবের শিক্ষাকে ভুলে গিয়েছিলো ফলে তারা ধর্মের সাধারণ সত্যগুলি থেকে দূরে সরে যায় এবং বিভ্রান্তির বেড়াজালে জড়িয়ে পড়ে। তারা তাদের ভ্রান্ত পথকে ত্যাগ করবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের কিতাবে বর্ণিত অঙ্গীকারের রাসুল তাদের মাঝে আবির্ভূত হন। কিন্তু যখন প্রতিশ্রুত নবী হযরত মুহম্মদ (সা) এর আগমন ঘটলো পৃথিবীতে, তারা তাঁকে প্রত্যাখান করলো। কারণ তারা কখনও প্রকৃত সত্যের অন্বেষণ করে নাই। তারা নিজেদের মনগড়া, তত্ব ও তথ্য নিয়েই খুশী ছিলো।
মন্তুব্যঃ নৈতিক অবক্ষয় ও সত্য বিচ্যুতির কবল থেকে রক্ষা কল্পে মানুষের চারিদিকে যে আবেস্টন সৃষ্টি বা প্রতিরক্ষা ব্যুহ রচনা করে, তাকেই ধর্ম বলা হয়। কিন্তু যারা সত্য থেকে বিচ্যুত হয়, তারা ধর্মের মূল বিষয়কে ত্যাগ করে সংস্কার ও আনুষ্ঠানিকতার উপরে অধিক গুরুত্ব আরোপ করে এবং একেই ধর্ম বলে মনে করে। কারণ তা তাদের নিজস্ব ইচ্ছা এবং প্রাধান্যকে স্বীকৃতি দেয়।
৬২২২। প্যাগান আরবদের মুশরিক বলা হয়েছে। এরা পূর্বাহ্নে কোনরূপ কিতাব প্রাপ্ত হয় নাই। কিন্তু তাদের নিকট যখন সুস্পষ্ট প্রমাণ উত্থাপন করা হলো, তাদের উচিত ছিলো বিশ্বাস করা। কিন্তু তা না করে তারা মহানবীকে ও তাঁর শিক্ষাকে প্রত্যাখান করে। কারণ তারাও প্রকৃত সত্যের সন্ধানী ছিলো না। তারাও ছিলো নিজস্ব ধ্যান ধারণার পূঁজারী।
৬২২৩। সুস্পষ্ট প্রমাণ দ্বারা পবিত্র মহানবীকে বুঝানো হয়েছে। শেষ নবীর ব্যক্তিত্ব,চরিত্র, শিক্ষা কর্মজীবন সব কিছুই হচ্ছে তাঁর নবুয়তের সুস্পষ্ট প্রমাণ।
আয়াতঃ 098.002
অর্থাৎ আল্লাহর একজন রসূল, যিনি আবৃত্তি করতেন পবিত্র সহীফা,
A Messenger (Muhammad (Peace be upon him)) from Allâh, reciting (the Qur’ân) purified pages [purified from Al-Bâtil (falsehood, etc.)].
رَسُولٌ مِّنَ اللَّهِ يَتْلُو صُحُفًا مُّطَهَّرَةً
Rasoolun mina Allahi yatloo suhufan mutahharatan
YUSUFALI: An messenger from Allah, rehearsing scriptures kept pure and holy:
PICKTHAL: A messenger from Allah, reading purified pages
SHAKIR: An messenger from Allah, reciting pure pages,
KHALIFA: A messenger from GOD is reciting to them sacred instructions.
২। আল্লাহ্র নিকট থেকে এক রাসুল, যে আবৃত্তি করে, পূত পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ। ৬২২৪, ৬২২৫
৬২২৪। দেখুন [ ২ : ১৫১ ] আয়াত।
৬২২৫। দেখুন [ ৮০ : ১৩ – ১৬ ] আয়াত।
আয়াতঃ 098.003
যাতে আছে, সঠিক বিষয়বস্তু।
Containing correct and straight laws from Allâh.
فِيهَا كُتُبٌ قَيِّمَةٌ
Feeha kutubun qayyimatun
YUSUFALI: Wherein are laws (or decrees) right and straight.
PICKTHAL: Containing correct scriptures.
SHAKIR: Wherein are all the right ordinances.
KHALIFA: In them there are valuable teachings.
৩। সেখানে আছে সঠিক বিধান। ৬২২৬
৬২২৬। ‘Qaiyim’ এই শব্দটি যে ভাবের প্রকাশ করে তা হলো : বক্রতার বিপরীতে সোজা, নিয়মবর্হিভূতের বিপরীত ভাব হলো আদর্শ, অস্থায়ী ও সাময়িকের বিপরীত ভাব চিরস্থায়ী ইত্যাদি। দেখুন সূরা [ ৯ : ৩৬ ] ; [ ১২ : ৪০ ] ইত্যাদি আয়াত সমূহ।
আয়াতঃ 098.004
অপর কিতাব প্রাপ্তরা যে বিভ্রান্ত হয়েছে, তা হয়েছে তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পরেই।
And the people of the Scripture (Jews and Christians) differed not until after there came to them clear evidence. (i.e. Prophet Muhammad (Peace be upon him) and whatever was revealed to him).
وَمَا تَفَرَّقَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ إِلَّا مِن بَعْدِ مَا جَاءتْهُمُ الْبَيِّنَةُ
Wama tafarraqa allatheena ootoo alkitaba illa min baAAdi ma jaat-humu albayyinatu
YUSUFALI: Nor did the People of the Book make schisms, until after there came to them Clear Evidence.
PICKTHAL: Nor were the People of the Scripture divided until after the clear proof came unto them.
SHAKIR: And those who were given the Book did not become divided except after clear evidence had come to them.
KHALIFA: In fact, those who received the scripture did not dispute until the proof was given to them.
৪। যাদের কিতাব দেয়া হয়েছিলো, তারা তো [ ধর্মে ] বিভক্ত হলো তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর। ৬২২৭
৬২২৭। মোশরেক আরবদের অপেক্ষা কিতাবী জাতিদের দায়িত্ব অনেক বেশী। কারণ আল্লাহ্ তাদের পূর্বাহ্নেই প্রত্যাদেশ বা কিতাবের দ্বারা সহজ সরল পথের নির্দ্দেশনা দান করেছেন এবং আদর্শ ধর্মের প্রতি আহ্বান করেছেন এবং সেই ধর্মের উপযুক্ত হওয়ার শিক্ষা দান করেছেন। কিন্তু তবুও যখন সুস্পষ্ট প্রমাণ এলো অর্থাৎ বিশ্বনবীর মাধ্যমে ইসলামের আবির্ভাব ঘটলো,এ সব কিতাবী জাতিরাই অধিক বাঁধার সৃষ্টি করেছিলো। এই সহজ, সরল এবং আদর্শ ধর্ম কি যা সকল অস্পষ্টতা, অসাড় আনুষ্ঠানিকতা দূর করেছিলো ? এই ধর্মের মূল বিষয়কে তিনটি মুল নীতির মাধ্যমে পরবর্তী আয়াতে উপস্থাপন করা হয়েছে যা শ্বাসত সত্য। দেখুন পরবর্তী টিকা।
আয়াতঃ 098.005
তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর এবাদত করবে, নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম।
And they were commanded not, but that they should worship Allâh, and worship none but Him Alone (abstaining from ascribing partners to Him), and perform As-Salât (Iqâmat-as-Salât) and give Zakât: and that is the right religion.
وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاء وَيُقِيمُوا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ وَذَلِكَ دِينُ الْقَيِّمَةِ
Wama omiroo illa liyaAAbudoo Allaha mukhliseena lahu alddeena hunafaa wayuqeemoo alssalata wayu/too alzzakata wathalika deenu alqayyimati
YUSUFALI: And they have been commanded no more than this: To worship Allah, offering Him sincere devotion, being true (in faith); to establish regular prayer; and to practise regular charity; and that is the Religion Right and Straight.
PICKTHAL: And they are ordered naught else than to serve Allah, keeping religion pure for Him, as men by nature upright, and to establish worship and to pay the poor-due. That is true religion.
SHAKIR: And they were not enjoined anything except that they should serve Allah, being sincere to Him in obedience, upright, and keep up prayer and pay the poor-rate, and that is the right religion.
KHALIFA: All that was asked of them was to worship GOD, devoting the religion absolutely to Him alone, observe the contact prayers (Salat), and give the obligatory charity (Zakat). Such is the perfect religion.
৫। তাদের এ ব্যতীত আর কিছু আদেশ দেয়া হয় নাই ৬২২৮, যে তারা একান্ত অনুগত ভাবে সত্য [ বিশ্বাসে ] ৬২২৯ আল্লাহ্র এবাদত করবে; নিয়মিত নামাজ প্রতিষ্ঠা করবে এবং যাকাত দেবে এবং এটাই হলো সঠিক ও সরল দ্বীন। ৬২৩০
৬২২৮। ইসলামের তিনটি শ্বাসত মূলনীতি হলো :
১) বিশুদ্ধ চিত্তে বিশ্বস্ততার সাথে একনিষ্ঠ ভাবে আল্লাহ্র ‘এবাদত ‘ করা।
২) সালাত কায়েম করা ও
৩) যাকাত দান করা।
উপরের তিনটি দিক নির্দ্দেশনা ইসলামের মূল ভিত্তি। ১) প্রথমটিতে বলা হয়েছে ‘এবাদত ‘ করতে আনুগত্যের সাথে বিশুদ্ধ চিত্তে। এবাদত শব্দের অর্থ অনেক ব্যপক। এবাদত অর্থাৎ আল্লাহ্ যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকা, যা করতে আদেশ দিয়েছেন তা পালন করা। অর্থাৎ আত্মসংযমের মাধ্যমে আত্মার বিশুদ্ধতা রক্ষা করা। আত্মার বিশুদ্ধতার জন্য দেখুন [ ৮০ : ৩ ] ; [৯১ : ৯-১০] আয়াত সমূহ। রোজা হচ্ছে আত্মসংযমের অন্যতম প্রধান উপায়। আত্মসংযমের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি সম্ভব। সুতারাং ইসলামের অন্যতম পিলার হচ্ছে রোজা।
সালাতের মাধ্যমে আল্লাহ্র নৈকট্য অন্বেষণ করা হয়, যাকে বলা হয় ইসলামের অন্যতম পিলার।
যাকাত হচ্ছে বাধ্যতামূলক দান বা সৎ কাজ ইসলামের অন্যতম পিলার। যাকাত ছাড়াও ইসলাম সৎকাজে উৎসাহিত করে থাকে। ঈমানের আলো ব্যক্তির চরিত্রে ও ব্যক্তিত্বে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে উপরের তিনটি প্রধান নীতিমালা অনুসরণের মাধ্যমে।
ইসলাম ৫ টি স্তম্ভের উপরে প্রতিষ্ঠিত যথা : ১) ঈমান বা আল্লাহ্র একত্বের প্রতি অটল বিশ্বাস, ২) সালাত, ৩) রোজা,৪) যাকাত ৫) হজ্ব [ সামর্থ অনুযায়ী ]।
রোজা – আত্মশুদ্ধির প্রতীক [৯১ : ৫ – ৭ ] ; [ ৮০ : ৩ ]। আত্মসংযম ও সততা হবে তাকওয়ার মানদন্ড। দেখুন [৮৭: ১৪] ও টিকা ৬০৯২।
সালাত – আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভের উপায়।
যাকাত – সৎ কাজের প্রতীক।
হজ্ব – বিশ্ব মুসলিম ভাতৃত্বের বা উম্মার প্রতীক যা সামর্থের উপরে নির্ভরশীল।
এই -ই হচ্ছে সহজ, সরল ধর্ম।
৬২২৯। ‘Hanif’ দেখুন [ ২ : ১৩৫ ] আয়াতের টিকা ১৩৪।
৬২৩০। দেখুন উপরের টিকা ৬২২৬।
আয়াতঃ 098.006
আহলে-কিতাব ও মুশরেকদের মধ্যে যারা কাফের, তারা জাহান্নামের আগুনে স্থায়ীভাবে থাকবে। তারাই সৃষ্টির অধম।
Verily, those who disbelieve (in the religion of Islâm, the Qur’ân and Prophet Muhammad (Peace be upon him)) from among the people of the Scripture (Jews and Christians) and Al-Mushrikûn will abide in the Fire of Hell. They are the worst of creatures.
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ وَالْمُشْرِكِينَ فِي نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا أُوْلَئِكَ هُمْ شَرُّ الْبَرِيَّةِ
Inna allatheena kafaroo min ahli alkitabi waalmushrikeena fee nari jahannama khalideena feeha ola-ika hum sharru albariyyati
YUSUFALI: Those who reject (Truth), among the People of the Book and among the Polytheists, will be in Hell-Fire, to dwell therein (for aye). They are the worst of creatures.
PICKTHAL: Lo! those who disbelieve, among the People of the Scripture and the idolaters, will abide in fire of hell. They are the worst of created beings.
SHAKIR: Surely those who disbelieve from among the followers of the Book and the polytheists shall be in the fire of hell, abiding therein; they are the worst of men.
KHALIFA: Those who disbelieved among the people of the scripture, and the idol worshipers, have incurred the fire of Gehenna forever. They are the worst creatures.
৬। কিতাবধারী ও মুশরেকদের মধ্যে যারা [ সত্যকে ] প্রত্যাখান করে, এরাই জাহান্নামের অগ্নিতে স্থায়ী ভাবে বসবাস করবে। সৃষ্টির মাঝে ওরা সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট জীব। ৬২৩১
৬২৩১। আল্লাহ্র মানুষকে ভালো -মন্দ, সত্য মিথ্যা, ন্যায় -অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা দান করেছেন। এই ক্ষমতা থাকা সত্বেও যদি কেউ ন্যায় ও সত্যকে প্রত্যাখান করে এবং স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির অপব্যবহার করে, তবে সে পশুরও অধম। প্রতিটি কাজেরই কর্মফল বিদ্যমান। তাদেরও এই স্বেচ্ছাচারিতার জন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে হোক না তারা ইব্রাহীমের অনুসারী বা পোপ বা যাজক শ্রেণীকে অর্থ দিয়ে দায়মুক্ত হওয়া ব্যক্তি, বা নাস্তিক বা মোশরেক আরব। আল্লাহ্র চোখে বংশ বা কূল বা জাতির বা বর্ণের কোন পক্ষপাতিত্ব নাই। আল্লাহ্ নিকট সেই সর্বাপেক্ষা সম্মানীয় যে সৎ চরিত্রের অধিকারী ও সৎগুণসম্পন্ন ব্যক্তি।
আয়াতঃ 098.007
যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারাই সৃষ্টির সেরা।
Verily, those who believe [in the Oneness of Allâh, and in His Messenger Muhammad (Peace be upon him)) including all obligations ordered by Islâm] and do righteous good deeds, they are the best of creatures.
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أُوْلَئِكَ هُمْ خَيْرُ الْبَرِيَّةِ
Inna allatheena amanoo waAAamiloo alssalihati ola-ika hum khayru albariyyati
YUSUFALI: Those who have faith and do righteous deeds,- they are the best of creatures.
PICKTHAL: (And) lo! those who believe and do good works are the best of created beings.
SHAKIR: (As for) those who believe and do good, surely they are the -best of men.
KHALIFA: Those who believed and led a righteous life are the best creatures.
৭। যাদের ঈমান আছে ও সৎ কাজ করে, সৃষ্টির মধ্যে তারা সর্বোৎকৃষ্ট জীব। ৬২৩২
৬২৩২। এই আয়াতটি পূর্বের আয়াতের বিপরীত ভাবকে প্রকাশ করে। মানুষের মধ্যে যারা আল্লাহ্র একত্বে বিশ্বাসী এবং সৎ কর্মশীল, তারাই তাদের পৃথিবীর শিক্ষানবীশকালকে সফলতার সাথে অতিক্রম করতে পারে। তাদের মনুষ্য জীবন সার্থক।
আয়াতঃ 098.008
তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে তাদের প্রতিদান চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার তলদেশে নির্ঝরিণী প্রবাহিত। তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এটা তার জন্যে, যে তার পালনকর্তাকে ভয় কর।
Their reward with their Lord is ’Adn (Eden) Paradise (Gardens of Eternity), underneath which rivers flow, they will abide therein forever, Allâh Well-Pleased with them, and they with Him. That is for him who fears his Lord.
جَزَاؤُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ جَنَّاتُ عَدْنٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا رَّضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ ذَلِكَ لِمَنْ خَشِيَ رَبَّهُ
Jazaohum AAinda rabbihim jannatu AAadnin tajree min tahtiha al-anharu khalideena feeha abadan radiya Allahu AAanhum waradoo AAanhu thalika liman khashiya rabbahu
YUSUFALI: Their reward is with Allah: Gardens of Eternity, beneath which rivers flow; they will dwell therein for ever; Allah well pleased with them, and they with Him: all this for such as fear their Lord and Cherisher.
PICKTHAL: Their reward is with their Lord: Gardens of Eden underneath which rivers flow, wherein they dwell for ever. Allah hath pleasure in them and they have pleasure in Him. This is (in store) for him who feareth his Lord.
SHAKIR: Their reward with their Lord is gardens of perpetuity beneath which rivers flow, abiding therein for ever; Allah is well pleased with them and they are well pleased with Him; that is for him who fears his Lord.
KHALIFA: Their reward at their Lord is the gardens of Eden with flowing streams, wherein they abide forever. GOD is pleased with them, and they are pleased with Him. Such is the reward for those who reverence their Lord.
৮। তাদের পুরষ্কার আছে আল্লাহ্র নিকটে – অনন্ত জান্নাত, পাদদেশে যার নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরদিন বাস করবে। আল্লাহ্ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট, তারাও তাঁর প্রতি ৬২৩৩। এগুলি তাদেরই জন্য যারা তাদের আপন প্রভু ও প্রতিপালককে ভয় করে ৬২৩৪।
৬২৩৩। মানব জীবনের প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জন করা। এই আয়াতে বলা হয়েছে যে এই সন্তুষ্টি পারস্পরিক। সেই সর্বাপেক্ষা ভাগ্যবান এবং তারই আত্মা পার্থিব চাওয়া পাওয়ার উপরে উঠে মুক্তি লাভে সক্ষম হবে যে আল্লাহ্র ইচ্ছার নিকট সম্পূর্ণ আত্মসমর্পন করবে।
৬২৩৪। আল্লাহকে ভয় করার অর্থ, আল্লাহ্র আইন ভংগ করে আল্লাহ্কে অসন্তুষ্ট করার ভয় এবং এমন কিছু করা যা আল্লাহ্র ইচ্ছার বিরুদ্ধে যায় এবং আল্লাহ্র ক্রোধের ভয় বা আল্লাহ্র ভালোবাসা হারানোর ভয়। এরূপ ভয় হচ্ছে ভালোবাসারই প্রতিরূপ। কারণ প্রিয়জনের মনঃকষ্ট ও ভালোবাসা হারানোর ভয়ে তারা থাকেন ব্যকুল, শাস্তির ভয়ে নয়। এ ভাবেই তাদের হৃদয়ে আল্লাহ্র কল্যাণ ও মঙ্গল স্পর্শের সচেতনতা সৃষ্টি হয় যা বান্দার জন্য অমূল্য সম্পদ।