৩৬। মানুষের জন্য সতর্কবাণী, –
৩৭। তাদের জন্য যারা অগ্রসর হতে চায়, অথবা যারা পিছনে যেতে চায় ; ৫৮০১
৫৮০১। এই আয়াতটির জন্য তিন প্রকারের ব্যাখ্যা প্রযোজ্য হতে পারে।
১) ‘অগ্রসর হতে চায়’ দ্বারা বুঝানো হয়েছে তাদেরই যারা পূণ্যাত্মা মোমেন ব্যক্তি, যারা আল্লাহ্র রাস্তায় অগ্রবর্তী পথিক। ‘পিছনে যেতে চায়’ দ্বারা বুঝানো হয়েছে তাদেরই যারা অগ্রবর্তীদের পশ্চাতে আগমনকারী ব্যক্তি, যারা অবিশ্বাসী এবং যারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ, দয়া, এবং সদয় তত্বাবধানকে প্রত্যাখান করে।
২) দ্বিতীয় ব্যাখ্যা হচ্ছে : এই আয়াত দ্বারা দুধরণের মনের গঠনগত প্রকৃতির বর্ণনা করা হয়েছে। একশ্রেণীর হচ্ছেন তারাই যারা আল্লাহ্র পথে সর্বদা অগ্রদূতের ভূমিকা গ্রহণে আগ্রহী, অন্য শ্রেণী সর্বদা পিছনে থাকতে আগ্রহী। আল্লাহ্র বাণী এই দুই শ্রেণীর জন্যই সমভাবে উম্মুক্ত থাকে। কিন্তু দুই শ্রেণীর জন্যই, তা সমভাবে বিপদজনক। প্রথম শ্রেণীর জন্য বিপদজনক হচ্ছে তাদের অত্যাধিক আত্মবিশ্বাস যা তাদের ভুল পথে চালিত করতে পারে; অর্থাৎ Religious arrogance. দ্বিতীয় শ্রেণীর জন্য বিপদ হচ্ছে তারা তাদের আধ্যাত্মিক জগতের উন্নতির সুযোগ গ্রহণ করতে পারে না।
৩) তৃতীয় ব্যাখ্যা হচ্ছেঃ এই সতর্ক বাণী তাদের জন্যই প্রযোজ্য হবে, যারা সম্মুখে ও পশ্চাতে যখন যেরূপ প্রয়োজন যাতায়াতে ইচ্ছুক, কিন্তু তাদের অলসতা ও নিষ্ক্রিয়তার জন্য তারা তা পারে না। আমাদের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক উন্নতির জন্য স্থবিরতার স্থান নাই, প্রয়োজনে সম্মুখে অগ্রসর হতে হবে আবার কখনও কখনও মিথ্যার কৃষ্ণজাল থেকে পিছিয়ে আসতে হবে। চলমান জীবন প্রবাহের ন্যায় আধ্যাত্মিক জীবন প্রবাহ হবে চলমান। অপরপক্ষে,সর্বাপেক্ষা আশাহীন হচ্ছে সেই ব্যক্তি, যার আধ্যাত্মিক জীবন মৃত। অর্থাৎ সে ন্যায় অন্যায়, সত্য -মিথ্যা, ভালো -মন্দ, ও পাপ পূণ্যের পার্থক্য করতে সক্ষম নয়। ফলে সে ভালোর প্রতি অগ্রসর হওয়া ও পাপ থেকে দূরে সরে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে না।
আয়াতঃ 074.038
প্রত্যেক ব্যক্তি তার কৃতকর্মের জন্য দায়ী;
Every person is a pledge for what he has earned,
كُلُّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ رَهِينَةٌ
Kullu nafsin bima kasabat raheenatun
YUSUFALI: Every soul will be (held) in pledge for its deeds.
PICKTHAL: Every soul is a pledge for its own deeds;
SHAKIR: Every soul is held in pledge for what it earns,
KHALIFA: Every soul is trapped by its sins.
৩৮। প্রতিটি আত্মাকে তার নিজ কৃতকর্মের দায়ে আবদ্ধ করা হবে। ৫৮০২
৫৮০২। দেখুন [ ৫২ : ২১ ] আয়াত। আল্লাহ্র দুনিয়ার নিয়ম হচ্ছে কেহ কারও পাপের বোঝা বহন করবে না। প্রত্যেককে প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তব্যের জন্য দায়ী করা হবে। কোনও সাধু বা পীর বা যাজক সম্প্রদায় কারও পাপ থেকে মুক্তি দিতে অক্ষম। যেমন দেখা যায় হিন্দুদের মাঝে পুরোহিত শ্রেণী, খৃষ্টানদের মধ্যে যাজক শ্রেণী ইত্যাদি যারা নিজেদের পাপীদের পাপ মুক্তির ধারক ও বাহকরূপে নিয়োজিত মনে করে। কিন্তু ইসলামে এরূপ মধ্যবর্তী কোনও শ্রেণী নাই। ইসলামে বান্দার সম্পর্ক সরাসরি আল্লাহ্র সাথে। বান্দার আত্মিক মুক্তি সরাসরি আল্লাহ্র করুণা ও ক্ষমার উপরে নির্ভরশীল। সুতারাং আল্লাহ্র করুণা ও ক্ষমা লাভের জন্য বান্দা সর্বদা সর্বান্তঃকরণে চেষ্টা করে যাবে সৎ ও ন্যায়ের রাস্তায়। যদি সে তা করতে পারে তবে তাঁর আত্মিক মুক্তি ঘটবে এবং পূণ্যাত্মা বা দক্ষিণ পার্শ্বস্থ ব্যক্তিগণের অর্ন্তভূক্ত হবে।
আয়াতঃ 074.039
কিন্তু ডানদিকস্থরা,
Except those on the Right, (i.e. the pious true believers of Islâmic Monotheism);
إِلَّا أَصْحَابَ الْيَمِينِ
Illa as-haba alyameeni
YUSUFALI: Except the Companions of the Right Hand.
PICKTHAL: Save those who will stand on the right hand.
SHAKIR: Except the people of the right hand,
KHALIFA: Except for those on the right.
৩৯। দক্ষিণ পার্শ্বের লোকেরা ব্যতীত ৫৮০৩
৫৮০৩। দেখুন [৫৬ : ৩ ] আয়াতের টিকা ৫২২৩ এবং সূরা [ ৫৬ : ২৭ -৩৮ ] আয়াত। দক্ষিণ পার্শ্বস্থ ব্যক্তিরা হচেছন আল্লাহ্র আর্শীবাদ প্রাপ্ত ব্যক্তি, যারা পরকালে আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভে ধন্য হবেন। তাঁদের এই বিশেষ আনুকুল্য লাভের কারণ তারা আন্তরিকভাবে আল্লাহ্র অনুগ্রহ প্রার্থনা করতেন, ২) আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের জন্য দান করতেন এবং ৩) সর্বদা আল্লাহ্র ন্যায় বিচারে বিশ্বাসী ছিলেন। এগুলি অর্জন করা খুব কঠিন কিছু নয় যে আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভ করতে চায় সেই-ই এ সব অর্জন করতে সক্ষম। এই গুণগুলি কোনটাই স্বতন্ত্র নয় বা বিশেষ বৈশিষ্ট্য মন্ডিত নয়, এগুলি হচ্ছে পরস্পর সর্ম্পক যুক্ত একক গুণ বিশেষ। শেষ বিচারের দিনে পৃথিবীতে কৃতকর্মের হিসাব দাখিলের মাধ্যমে আল্লাহ্র করুণার দ্বারা পূণ্যাত্মাদের আত্মিক মুক্তি ঘটবে।
আয়াতঃ 074.040
তারা থাকবে জান্নাতে এবং পরস্পরে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
In Gardens (Paradise) they will ask one another,