- সূরার নাম: সূরা জ্বিন
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা জ্বিন
আয়াতঃ 072.001
বলুনঃ আমার প্রতি ওহী নাযিল করা হয়েছে যে, জিনদের একটি দল কোরআন শ্রবণ করেছে, অতঃপর তারা বলেছেঃ আমরা বিস্ময়কর কোরআন শ্রবণ করেছি;
Say (O Muhammad SAW): ”It has been revealed to me that a group (from three to ten in number) of jinns listened (to this Qur’ân). They said: ’Verily! We have heard a wonderful Recital (this Qur’ân)!
قُلْ أُوحِيَ إِلَيَّ أَنَّهُ اسْتَمَعَ نَفَرٌ مِّنَ الْجِنِّ فَقَالُوا إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا
Qul oohiya ilayya annahu istamaAAa nafarun mina aljinni faqaloo inna samiAAna qur-anan AAajaban
YUSUFALI: Say: It has been revealed to me that a company of Jinns listened (to the Qur’an). They said, ‘We have really heard a wonderful Recital!
PICKTHAL: Say (O Muhammad): It is revealed unto me that a company of the Jinn gave ear, and they said: Lo! we have heard a marvellous Qur’an,
SHAKIR: Say: It has been revealed to me that a party of the jinn listened, and they said: Surely we have heard a wonderful Quran,
KHALIFA: Say, “I was inspired that a group of jinns listened, then said, `We have heard a wonderful Quran.
১। বল, ” আমার প্রতি প্রত্যাদেশ ৫৭২৭ প্রেরণ করা হয়েছে যে, জিনদের একটি দল ৫৭২৮ [ কুরআন পাঠ ] শুনেছে।” তারা বলেছিলো, ” আমরা তো এক বিস্ময়কর আবৃত্তি শুনেছি। ৫৭২৯
৫৭২৭। ওহী বা প্রত্যাদেশ বিভিন্নভাবে আল্লাহ্ পৃথিবীতে প্রেরণ করে থাকেন। আমাদের নবী হযরত মুহম্মদ মুস্তফা (সা) দিব্য দৃষ্টির সাহায্যে এবং অতিন্দ্রীয় শ্রবণ শক্তির সাহায্যে অদৃশ্য লোকের সকল কিছুই অনুধাবন করতে পারতেন। অদৃশ্যলোকের এরূপ একটি দৃশ্যের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা আছে [ ৪৬ : ২৯- ৩২ ] আয়াতে এবং টিকা নং ৪৮০৯। জ্বিনেরা অবশ্যই অবগত ছিলো পূর্ববর্তী প্রত্যাদেশ যা হযরত মুসার নিকট প্রেরিত হয়েছিলো [ ৪৬ : ৩০ ] এবং এবং ক্রীশ্চানদের ত্রিতত্বের [ ৭২ : ৩ ] ভ্রান্তি সম্পর্কে। জ্বিনদের মাঝেও ভালো এবং মন্দের সংমিশ্রণ আছে। কিন্তু এই আয়াত সমূহে বলা হয়েছে যে তারা আল্লাহ্র একত্বের ধারণাকে শুনতে, বিশ্বাস করতে এবং প্রচার করতে দৃঢ় ভাবে আগ্রহী ছিলো।
৫৭২৮। জ্বিনদের জন্য দেখুন সূরা [ ৬: ১০০] আয়াতের টিকা ৯২৯। সাধারণভাবে জ্বিনদের সম্বন্ধে আমাদের বিশ্বাস যে, তারা আগুনের তৈরী অদৃশ্য প্রাণী। কিন্তু এই আয়াতের অর্থ যদি ব্যাপক অর্থে গ্রহণ করা হয়, তবে জ্বিন শব্দটি প্রযোজ্য হতে পারে আরবের নব আগন্তুকদের সম্বন্ধে যারা নূতন ধর্ম ইসলামের বাণী শুনেছিলো এবং বিশ্বাস করেছিলো তাদের ধারণামতে।
৫৭২৯। পবিত্র কোরআনের বাণী তাদের নিকট বিস্ময়কর বলে প্রতীয়মান হয়। কোরানের বাণীর বিষয়বস্তু, সমসাময়িক মোশরেক আরবদের জীবনযাত্রার পটভূমিতে এই বাণীর গভীরতা সত্যিই বিষ্ময়কর।
আয়াতঃ 072.002
যা সৎপথ প্রদর্শন করে। ফলে আমরা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমরা কখনও আমাদের পালনকর্তার সাথে কাউকে শরীক করব না।
’It guides to the Right Path, and we have believed therein, and we shall never join (in worship) anything with our Lord (Allâh).
يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ فَآمَنَّا بِهِ وَلَن نُّشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا
Yahdee ila alrrushdi faamanna bihi walan nushrika birabbina ahadan
YUSUFALI: ‘It gives guidance to the Right, and we have believed therein: we shall not join (in worship) any (gods) with our Lord.
PICKTHAL: Which guideth unto righteousness, so we believe in it and we ascribe no partner unto our Lord.
SHAKIR: Guiding to the right way, so we believe in it, and we will not set up any one with our Lord:
KHALIFA: ” `It guides to righteousness, and we have believed in it; we will never set up any idols beside our Lord.
২। ” যা সঠিক পথ-নির্দ্দেশ দেয় এবং আমরা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমরা আমাদের প্রভুর সাথে কখনও কাহাকেও শরীক করবো না।
৩। ” এবং নিশ্চয়ই সমুচ্চ আমাদের প্রভুর মর্যদা ; তিনি গ্রহণ করেন নাই কোন পত্নী, না কোন সন্তান। ৫৭৩০
৫৭৩০। এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্ সম্বন্ধে বিভিন্ন অপবাদকে শপথ দ্বারা পরিত্যাগ করা হয়েছে। আল্লাহ্র কোনও পত্নী নাই বা তিনি কোন সন্তানও গ্রহণ করেন নাই।
আয়াতঃ 072.003
এবং আরও বিশ্বাস করি যে, আমাদের পালনকর্তার মহান মর্যাদা সবার উর্ধ্বে। তিনি কোন পত্নী গ্রহণ করেননি এবং তাঁর কোন সন্তান নেই।
’And exalted be the Majesty of our Lord, He has taken neither a wife, nor a son (or offspring or children).
وَأَنَّهُ تَعَالَى جَدُّ رَبِّنَا مَا اتَّخَذَ صَاحِبَةً وَلَا وَلَدًا
Waannahu taAAala jaddu rabbina ma ittakhatha sahibatan wala waladan
YUSUFALI: ‘And Exalted is the Majesty of our Lord: He has taken neither a wife nor a son.
PICKTHAL: And (we believe) that He – exalted be the glory of our Lord! – hath taken neither wife nor son,
SHAKIR: And that He– exalted be the majesty of our Lord– has not taken a consort, nor a son:
KHALIFA: ” `The Most High is our only Lord. He never had a mate, nor a son
২। ” যা সঠিক পথ-নির্দ্দেশ দেয় এবং আমরা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমরা আমাদের প্রভুর সাথে কখনও কাহাকেও শরীক করবো না।
৩। ” এবং নিশ্চয়ই সমুচ্চ আমাদের প্রভুর মর্যদা ; তিনি গ্রহণ করেন নাই কোন পত্নী, না কোন সন্তান। ৫৭৩০
৫৭৩০। এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্ সম্বন্ধে বিভিন্ন অপবাদকে শপথ দ্বারা পরিত্যাগ করা হয়েছে। আল্লাহ্র কোনও পত্নী নাই বা তিনি কোন সন্তানও গ্রহণ করেন নাই।
আয়াতঃ 072.004
আমাদের মধ্যে নির্বোধেরা আল্লাহ তা’আলা সম্পর্কে বাড়াবাড়ির কথাবার্তা বলত।
’And that the foolish among us [i.e. Iblîs (Satan) or the polytheists amongst the jinns] used to utter against Allâh that which was wrong and not right.
وَأَنَّهُ كَانَ يَقُولُ سَفِيهُنَا عَلَى اللَّهِ شَطَطًا
Waannahu kana yaqoolu safeehuna AAala Allahi shatatan
YUSUFALI: ‘There were some foolish ones among us, who used to utter extravagant lies against Allah;
PICKTHAL: And that the foolish one among us used to speak concerning Allah an atrocious lie.
SHAKIR: And that the foolish amongst us used to forge extravagant things against Allah:
KHALIFA: ” `It is the foolish among us who used to utter such nonsense about GOD.
৪। ” আমাদের মধ্যে কিছু নির্বোধ রয়েছে, যারা আল্লাহ্র বিরুদ্ধে অবিবেচনাপ্রসূত মিথ্যা উচ্চারণ করে;
৫। ” অথচ আমরা মনে করতাম, মানুষ এবং জিন্ আল্লাহ্ সম্বন্ধে কখনও মিথ্যা আরোপ করবে না। ৫৭৩১
৫৭৩১। আল্লাহ্র একত্বের ধারণাকে বিকৃত করা মহাপাপ। যদি কেউ আল্লাহ্র সাথে অংশীদার কল্পনা করে মিথ্যা দেব-দেবী পূঁজা করে, তবে সে স্রষ্টার প্রতি তার কর্তব্যে অবহেলা করে থাকে। আল্লাহ্ আমাদের স্রষ্টা, প্রতিপালক, যার কাছে আমাদের পৃথিবীর সকল কাজের হিসাব দাখিল করতে হবে। যদি আমরা দেব-দেবী, বা গ্রহ-নক্ষত্র [ জ্যোতিষ শাস্ত্রে বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে ], বা দেবতারূপে মানুষ পূঁজা [ পীর পূঁজা], অথবা যে কোনও বস্তু বা প্রাণীকে আমরা যদি আল্লাহ্র ক্ষমতার অংশীদার কল্পনা করি, অথবা আমরা যদি আত্মগর্বে নিজ ক্ষমতার মোহে আবিষ্ট হয়ে আত্মপূঁজাতে নিমগ্ন হই, সেক্ষেত্রে আমাদের আত্মিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয়। কারণ স্রষ্টার নিকট আত্মসমর্পনের মাধ্যমে আত্মার মিলন ঘটে পরমাত্মার সাথে যার ফলে আধ্যাত্মিক জগত হয় আলোকিত। আল্লাহ্র হেদায়েতের নূর তার সর্বসত্ত্বাকে উদ্ভাসিত করে তোলে। অপরপক্ষে আল্লাহ্র সাথে অংশীদারিত্ব হচ্ছে সত্যের প্রতি বিদ্রোহের সামিল। যার প্রচন্ড হিংস্রতা আধ্যাত্মিক জগতকে ছিন্ন বিছিন্ন করে দেয়। ফলে আত্মিক শান্তি নষ্ট হয়ে আধ্যাত্মিক জগত অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে।
আয়াতঃ 072.005
অথচ আমরা মনে করতাম, মানুষ ও জিন কখনও আল্লাহ তা’আলা সম্পর্কে মিথ্যা বলতে পারে না।
’And verily, we thought that men and jinns would not utter a lie against Allâh.
وَأَنَّا ظَنَنَّا أَن لَّن تَقُولَ الْإِنسُ وَالْجِنُّ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا
Waanna thananna an lan taqoola al-insu waaljinnu AAala Allahi kathiban
YUSUFALI: ‘But we do think that no man or spirit should say aught that untrue against Allah.
PICKTHAL: And lo! we had supposed that humankind and jinn would not speak a lie concerning Allah –
SHAKIR: And that we thought that men and jinn did not utter a lie against Allah:
KHALIFA: ” `We thought that neither the humans, nor the jinns, could possibly utter lies about GOD.
৪। ” আমাদের মধ্যে কিছু নির্বোধ রয়েছে, যারা আল্লাহ্র বিরুদ্ধে অবিবেচনাপ্রসূত মিথ্যা উচ্চারণ করে;
৫। ” অথচ আমরা মনে করতাম, মানুষ এবং জিন্ আল্লাহ্ সম্বন্ধে কখনও মিথ্যা আরোপ করবে না। ৫৭৩১
৫৭৩১। আল্লাহ্র একত্বের ধারণাকে বিকৃত করা মহাপাপ। যদি কেউ আল্লাহ্র সাথে অংশীদার কল্পনা করে মিথ্যা দেব-দেবী পূঁজা করে, তবে সে স্রষ্টার প্রতি তার কর্তব্যে অবহেলা করে থাকে। আল্লাহ্ আমাদের স্রষ্টা, প্রতিপালক, যার কাছে আমাদের পৃথিবীর সকল কাজের হিসাব দাখিল করতে হবে। যদি আমরা দেব-দেবী, বা গ্রহ-নক্ষত্র [ জ্যোতিষ শাস্ত্রে বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে ], বা দেবতারূপে মানুষ পূঁজা [ পীর পূঁজা], অথবা যে কোনও বস্তু বা প্রাণীকে আমরা যদি আল্লাহ্র ক্ষমতার অংশীদার কল্পনা করি, অথবা আমরা যদি আত্মগর্বে নিজ ক্ষমতার মোহে আবিষ্ট হয়ে আত্মপূঁজাতে নিমগ্ন হই, সেক্ষেত্রে আমাদের আত্মিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয়। কারণ স্রষ্টার নিকট আত্মসমর্পনের মাধ্যমে আত্মার মিলন ঘটে পরমাত্মার সাথে যার ফলে আধ্যাত্মিক জগত হয় আলোকিত। আল্লাহ্র হেদায়েতের নূর তার সর্বসত্ত্বাকে উদ্ভাসিত করে তোলে। অপরপক্ষে আল্লাহ্র সাথে অংশীদারিত্ব হচ্ছে সত্যের প্রতি বিদ্রোহের সামিল। যার প্রচন্ড হিংস্রতা আধ্যাত্মিক জগতকে ছিন্ন বিছিন্ন করে দেয়। ফলে আত্মিক শান্তি নষ্ট হয়ে আধ্যাত্মিক জগত অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে।
আয়াতঃ 072.006
অনেক মানুষ অনেক জিনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা জিনদের আত্নম্ভরিতা বাড়িয়ে দিত।
’And verily, there were men among mankind who took shelter with the masculine among the jinns, but they (jinns) increased them (mankind) in sin and disbelief.
وَأَنَّهُ كَانَ رِجَالٌ مِّنَ الْإِنسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِّنَ الْجِنِّ فَزَادُوهُمْ رَهَقًا
Waannahu kana rijalun mina al-insi yaAAoothoona birijalin mina aljinni fazadoohum rahaqan
YUSUFALI: ‘True, there were persons among mankind who took shelter with persons among the Jinns, but they increased them in folly.
PICKTHAL: And indeed (O Muhammad) individuals of humankind used to invoke the protection of individuals of the jinn, so that they increased them in revolt against Allah);
SHAKIR: And that persons from among men used to seek refuge with persons from among jinn, so they increased them in wrongdoing:
KHALIFA: ” `Human beings used to seek power through jinn beings, but they only afflicted them with a lot of adversity.
৬। ” এটা সত্যি যে, কিছু মানুষ কতক জিনের শরণ নিত, ফলে উহারা জিনদের আত্মম্ভরিতা বাড়িয়ে দিত। ৫৭৩২
৫৭৩২। এই আয়াতের মাধ্যমে বিপথগামী মানুষ ও জ্বিনদের মনঃস্ততঃকে তুলে ধরা হয়েছে। পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে যারা কর্তব্যবিমুখ, অলস ও আরামপ্রিয়। তারা নিজস্ব কর্তব্যকে পরিহার করে সহজেই সব কিছু পেতে আগ্রহী হয়। ফলে তারা আল্লাহ্র প্রতি নির্ভরশীলতার কঠিন পথকে পরিহার করে রহস্যজনক শক্তির আশ্রয় নিতে আগ্রহী হয়ে থাকে। এই আয়াতে বলা হয়েছে তারা জ্বিনদের আশ্রয় গ্রহণ করে থাকে। আমাদের দেশে মাজারে ধর্না দেয়া বা রত্নপাথর ধারণ করা বা ভন্ডপীরের স্মরণাপন্ন হওয়া এই বিকৃত মানসিকতারই অংশ। নিজ কর্তব্যকে এড়িয়ে যাওয়ার এই প্রবণতা সত্যিই নির্বোধের লক্ষণ। কারণ এই পৃথিবীতে এবং পরলোকের জীবনেও সবাইকে স্ব স্ব কর্তব্য কর্মের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। সেই নির্বোধেরাই আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য শক্তির সাহায্য কামনা করে যারা পরলোকের জীবনে আল্লাহ্র বিচার এবং আল্লাহ্র নিকট জবাবদিহিতায় বিশ্বাসী নয়। এই অবিশ্বাসের ফলে তাদের বিবেকের মাঝে সত্যের প্রদীপ নির্বাপিত হয়ে যায় ফলে তাদের আধ্যাত্মিক জগত তমসাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। অপরপক্ষে জ্বিন বা অন্য শক্তি আত্মম্ভরিতা ও আত্মগর্বে স্ফীত হয়ে সৃষ্টির মাঝে তাদের অবস্থানকে ভুলে যায়। যার ফলে তাদেরও অবস্থাও হয় আশ্রয়প্রার্থী মানুষের মত।
আয়াতঃ 072.007
তারা ধারণা করত, যেমন তোমরা মানবেরা ধারণা কর যে, মৃত্যুর পর আল্লাহ তা’আলা কখনও কাউকে পুনরুত্থিত করবেন না।
’And they thought as you thought, that Allâh will not send any Messenger (to mankind or jinns).
وَأَنَّهُمْ ظَنُّوا كَمَا ظَنَنتُمْ أَن لَّن يَبْعَثَ اللَّهُ أَحَدًا
Waannahum thannoo kama thanantum an lan yabAAatha Allahu ahadan
YUSUFALI: ‘And they (came to) think as ye thought, that Allah would not raise up any one (to Judgment).
PICKTHAL: And indeed they supposed, even as ye suppose, that Allah would not raise anyone (from the dead) –
SHAKIR: And that they thought as you think, that Allah would not raise anyone:
KHALIFA: ” `They thought, just like you thought, that GOD would not send another (messenger).
৭। ” ফলে তারা চিন্তা করতে লাগলো, যেরূপ তোমরা করেছিলে, যে আল্লাহ্ কাউকেই [ মৃত্যুর পর] পুনরুত্থিত করবেন না [ বিচারের জন্য ]।
৮। ” এবং আমরা আকাশের রহস্যের জন্য উঁকি মেরেছিলাম কিন্তু আমরা দেখেছিলাম যে, উহা কঠোর প্রহরী ও জ্বলন্ত আগুন দ্বারা পরিপূর্ণ। ৫৭৩৩
৫৭৩৩। দেখুন সূরা [ ১৫ : ১৭- ১৮] আয়াতের টিকা সমূহ ১৯৫১, ১৯৫৩, এবং ১৯৫৪। আরও দেখুন সূরা [ ৬৭ : ৫ ] আয়াতের টিকা ৫৫৬২। এই আয়াতে বলা হয়েছে যে জ্বিনেরা তাদের পাপকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলো এবং অনুতপ্ত হয়েছিলো। তাদের মাঝে যারা মন্দ তারা আল্লাহ্র তথ্য সমূহ আকাশ থেকে চুরি করে জানতে চেয়েছিলো কিন্তু তাদের সেই দুরভিসন্ধি সত্যের সদা জাগ্রত প্রহরীদের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং ফিরে আসে। আকাশের সংবাদ সংগ্রহে তারা বাধা প্রাপ্ত হয় উল্কাপিন্ড দ্বারা।
আয়াতঃ 072.008
আমরা আকাশ পর্যবেক্ষণ করছি, অতঃপর দেখতে পেয়েছি যে, কঠোর প্রহরী ও উল্কাপিন্ড দ্বারা আকাশ পরিপূর্ণ।
’And we have sought to reach the heaven; but found it filled with stern guards and flaming fires.
وَأَنَّا لَمَسْنَا السَّمَاء فَوَجَدْنَاهَا مُلِئَتْ حَرَسًا شَدِيدًا وَشُهُبًا
Waanna lamasna alssamaa fawajadnaha muli-at harasan shadeedan washuhuban
YUSUFALI: ‘And we pried into the secrets of heaven; but we found it filled with stern guards and flaming fires.
PICKTHAL: And (the Jinn who had listened to the Qur’an said): We had sought the heaven but had found it filled with strong warders and meteors.
SHAKIR: And that we sought to reach heaven, but we found it filled with strong guards and flaming stars.
KHALIFA: ” `We touched the heaven and found it filled with formidable guards and projectiles.
৭। ” ফলে তারা চিন্তা করতে লাগলো, যেরূপ তোমরা করেছিলে, যে আল্লাহ্ কাউকেই [ মৃত্যুর পর] পুনরুত্থিত করবেন না [ বিচারের জন্য ]।
৮। ” এবং আমরা আকাশের রহস্যের জন্য উঁকি মেরেছিলাম কিন্তু আমরা দেখেছিলাম যে, উহা কঠোর প্রহরী ও জ্বলন্ত আগুন দ্বারা পরিপূর্ণ। ৫৭৩৩
৫৭৩৩। দেখুন সূরা [ ১৫ : ১৭- ১৮] আয়াতের টিকা সমূহ ১৯৫১, ১৯৫৩, এবং ১৯৫৪। আরও দেখুন সূরা [ ৬৭ : ৫ ] আয়াতের টিকা ৫৫৬২। এই আয়াতে বলা হয়েছে যে জ্বিনেরা তাদের পাপকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলো এবং অনুতপ্ত হয়েছিলো। তাদের মাঝে যারা মন্দ তারা আল্লাহ্র তথ্য সমূহ আকাশ থেকে চুরি করে জানতে চেয়েছিলো কিন্তু তাদের সেই দুরভিসন্ধি সত্যের সদা জাগ্রত প্রহরীদের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং ফিরে আসে। আকাশের সংবাদ সংগ্রহে তারা বাধা প্রাপ্ত হয় উল্কাপিন্ড দ্বারা।
আয়াতঃ 072.009
আমরা আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে সংবাদ শ্রবণার্থে বসতাম। এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে সে জলন্ত উল্কাপিন্ড ওঁৎ পেতে থাকতে দেখে।
’And verily, we used to sit there in stations, to (steal) a hearing, but any who listens now will find a flaming fire watching him in ambush.
وَأَنَّا كُنَّا نَقْعُدُ مِنْهَا مَقَاعِدَ لِلسَّمْعِ فَمَن يَسْتَمِعِ الْآنَ يَجِدْ لَهُ شِهَابًا رَّصَدًا
Waanna kunna naqAAudu minha maqaAAida lilssamAAi faman yastamiAAi al-ana yajid lahu shihaban rasadan
YUSUFALI: ‘We used, indeed, to sit there in (hidden) stations, to (steal) a hearing; but any who listen now will find a flaming fire watching him in ambush.
PICKTHAL: And we used to sit on places (high) therein to listen. But he who listeneth now findeth a flame in wait for him;
SHAKIR: And that we used to sit in some of the sitting-places thereof to steal a hearing, but he who would (try to) listen now would find a flame lying in wait for him:
KHALIFA: ” `We used to sit there in order to spy. Anyone who listens is pursued by a powerful projectile.
৯। ” আর পূর্বে আমরা [ চুরি করে ] সংবাদ শুনবার জন্য, [ গোপন ] ঘাটিতে বসতাম, কিন্তু এখন কেহ শুনতে চেষ্টা করলে ৫৭৩৪, সে তার উপরে নিক্ষেপের জন্য প্রস্তুত জ্বলন্ত আগুনের সম্মুখীন হয়,
৫৭৩৪। এই আয়াতে “এখন কেহ ……………….. ” এই লাইনটিতে “এখন ” শব্দটি দ্বারা কি বুঝাতে চাওয়া হয়েছে ? এই সূরাটি মক্কাতে ইসলামের প্রথম দিকে অবতীর্ণ হয়। ইসলাম পূর্বে মানুষ অদৃশ্য শক্তির কাছে নতি স্বীকারের জন্য অদৃশ্য শক্তিকে সন্তুষ্টি করার জন্য, অদৃশ্য জগতের সংবাদ আহরণের জন্য জ্বিন ও অন্যান্য শক্তির সাহায্য গ্রহণ করতো ও চেষ্টা করতো। এই আয়াতে পরিষ্কার ভাবে ঘোষণা করা হয়েছে যে, পবিত্র কোরাণে সকল সত্যকে পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সুতারাং কোরাণ অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে জ্বিন বা যাজকশ্রেণী বা ভন্ড পীর শ্রেণীর লোকেরা অদৃশ্য জগতের যে সংবাদের দাবীদার ছিলো তার আর কোনও যৌক্তিকতা রইল না। পবিত্র কোরাণ আল্লাহ্র একত্বের বাণীকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে এবং মৃত্যু পরবর্তী জগতের সংবাদ দান করেছে। ; ইসলামের অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে ধর্মের নামে যে সব বিভ্রান্তি,ধূম্রজাল, রহস্য, অলৌকিক কল্প কাহিনী, মিথ্যা প্রচারে তথাকথিত পূণ্যাত্মা নামধারী ভন্ডেরা লিপ্ত ছিলো, ইসলামের আগমনে, কোরাণের আবির্ভাবে মিথ্যার সেই ধূম্রজাল, বা উর্ণনাভ ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কোরাণের এই ঐশ্বরিক ক্ষমতাকেই উল্কাপিন্ডের উপমার সাহায্যে তুলে ধরা হয়েছে। যারা এতদিন যাদুটোনা, বা অন্যান্য উপায়ে অদৃশ্য জগতের সংবাদের জন্য চেষ্টা করতো, তাদের সেই কলুষিত, অন্ধকার জ্ঞানের সময়সীমা শেষ ; কারণ কোরাণের ঐশী আলোকের উজ্জ্বল আভায় যাদু বা অন্যান্য অশুভ শক্তির অন্ধকার ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে কোরাণের উপমা হচ্ছে জ্বলন্ত উল্কাপিন্ডের ন্যায়। যেখানেই ধর্মের নামে যাজকবৃত্তি বা পীরের মাজার বা অলৌকিক কর্মকান্ড বা যাদুটোনার অবতারণা করা হয়, সেখানেই কোরাণের আলো বা জ্ঞান, তা ছিন্ন ভিন্ন করে দেয়। সুতারাং কোরাণ ব্যতীত অন্য কোন জ্ঞান বা শক্তি ইসলাম অনুমোদন করে না।
আয়াতঃ 072.010
আমরা জানি না পৃথিবীবাসীদের অমঙ্গল সাধন করা অভীষ্ট, না তাদের পালনকর্তা তাদের মঙ্গল সাধন করার ইচ্ছা রাখেন।
’And we know not whether evil is intended for those on earth, or whether their Lord intends for them a Right Path.
وَأَنَّا لَا نَدْرِي أَشَرٌّ أُرِيدَ بِمَن فِي الْأَرْضِ أَمْ أَرَادَ بِهِمْ رَبُّهُمْ رَشَدًا
Waanna la nadree asharrun oreeda biman fee al-ardi am arada bihim rabbuhum rashadan
YUSUFALI: ‘And we understand not whether ill is intended to those on earth, or whether their Lord (really) intends to guide them to right conduct.
PICKTHAL: And we know not whether harm is boded unto all who are in the earth, or whether their Lord intendeth guidance for them.
SHAKIR: And that we know not whether evil is meant for those who are on earth or whether their Lord means to bring them good:
KHALIFA: ” `We have no idea if something bad is intended for the inhabitants of Earth, or if their Lord wills to redeem them.
১০। ” এবং আমরা বুঝতে পারি না, যারা পৃথিবীতে আছে তাদের জন্য কোন অমঙ্গলের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে ৫৭৩৫, না তাদের প্রভু [ প্রকৃতই ] তাদের মঙ্গল আকাঙ্খা করেন।
৫৭৩৫। এই আয়াতগুলি জ্বিনদের বক্তব্য। কোরাণের যুগান্তকারী সত্য জ্বিন বা অশুভ শক্তির উপাসনাকারীদের জন্য ছিলো সম্পূর্ণ নূতন। এর উপমা হচ্ছে জ্বলন্ত তরবারীর ন্যায় যা অন্ধকার বা মিথ্যাকে ছিন্ন ভিন্ন করে দেয় এবং সত্যের বাণীকে পৃথিবীর সম্মুখে উদ্ভাসিত করে তোলে। জ্বিনেরা মুক্তকন্ঠে স্বীকার করে যে, তারা জানে না যে, কোরাণের বাণী মানুষের মঙ্গল সাধন করবে, না মানুষ তা প্রত্যাখানের মাধ্যমে নিজের অমঙ্গল ডেকে আনবে। কিন্তু তারা প্রকৃত সত্যকে অনুধাবনে সক্ষম হয়েছিলো যে, যদি কেউ প্রকৃত হেদায়েত কামনা করে তবে কোরাণ হচ্ছে আল্লাহ্র আর্শীবাদ।
আয়াতঃ 072.011
আমাদের কেউ কেউ সৎকর্মপরায়ণ এবং কেউ কেউ এরূপ নয়। আমরা ছিলাম বিভিন্ন পথে বিভক্ত।
’There are among us some that are righteous, and some the contrary; we are groups each having a different way (religious sect, etc.).
وَأَنَّا مِنَّا الصَّالِحُونَ وَمِنَّا دُونَ ذَلِكَ كُنَّا طَرَائِقَ قِدَدًا
Waanna minna alssalihoona waminna doona thalika kunna tara-iqa qidadan
YUSUFALI: ‘There are among us some that are righteous, and some the contrary: we follow divergent paths.
PICKTHAL: And among us there are righteous folk and among us there are far from that. We are sects having different rules.
SHAKIR: And that some of us are good and others of us are below that: we are sects following different ways:
KHALIFA: ” `Some of us are righteous, and some are less than righteous; we follow various paths.
১১। ” আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা পূণ্যাত্মা, এবং অনেকে ইহার ব্যতিক্রম। [ কেননা ] আমরা ছিলাম বিভিন্ন পথের অনুসারী।
১২। ” কিন্তু আমরা মনে করি যে, আমরা পৃথিবীতে কোন প্রকারেই আল্লাহকে ব্যর্থ করতে পারবো না, এবং পলায়ন করেও তাঁকে ব্যর্থ করতে পারবো না। ৫৭৩৬
৫৭৩৬। দেখুন উপরের টিকা। জ্বিনেরা শেষ পর্যন্ত বুঝতে সক্ষম হয়েছিলো যে, আল্লাহ্র বাণী এবং সত্য চির অক্ষয় ও অম্লান এবং তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবেই। আল্লাহ্র উদ্দেশ্যকে পরাভূত করার ক্ষমতা পৃথিবীর কোনও শক্তির নাই। আল্লাহ্র ক্ষমতার আওতার বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা কারও নাই। যে আল্লাহ্র বিরোধিতা করে সে নিজেরই আত্মার ক্ষতি করে। সুতারাং কেন মানুষ আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পন করে শান্তিময় জীবনের সন্ধান লাভ করে না ? কেন তারা বিশ্বাস বা ঈমানের রংএ নিজস্ব জীবনকে রাঙ্গিয়ে তোলে না ?
আয়াতঃ 072.012
আমরা বুঝতে পেরেছি যে, আমরা পৃথিবীতে আল্লাহ তা’আলাকে পরাস্ত করতে পারব না এবং পলায়ন করেও তাকে অপারক করত পরব না।
’And we think that we cannot escape (from the punishment of) Allâh in the earth, nor can we escape (from the punishment) by flight.
وَأَنَّا ظَنَنَّا أَن لَّن نُّعجِزَ اللَّهَ فِي الْأَرْضِ وَلَن نُّعْجِزَهُ هَرَبًا
Wanna thananna an lan nuAAjiza Allaha fee al-ardi walan nuAAjizahu haraban
YUSUFALI: ‘But we think that we can by no means frustrate Allah throughout the earth, nor can we frustrate Him by flight.
PICKTHAL: And we know that we cannot escape from Allah in the earth, nor can we escape by flight.
SHAKIR: And that we know that we cannot escape Allah in the earth, nor can we escape Him by flight:
KHALIFA: ” `We knew full well that we can never run away from GOD on Earth; we can never run away and escape.
১১। ” আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা পূণ্যাত্মা, এবং অনেকে ইহার ব্যতিক্রম। [ কেননা ] আমরা ছিলাম বিভিন্ন পথের অনুসারী।
১২। ” কিন্তু আমরা মনে করি যে, আমরা পৃথিবীতে কোন প্রকারেই আল্লাহকে ব্যর্থ করতে পারবো না, এবং পলায়ন করেও তাঁকে ব্যর্থ করতে পারবো না। ৫৭৩৬
৫৭৩৬। দেখুন উপরের টিকা। জ্বিনেরা শেষ পর্যন্ত বুঝতে সক্ষম হয়েছিলো যে, আল্লাহ্র বাণী এবং সত্য চির অক্ষয় ও অম্লান এবং তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবেই। আল্লাহ্র উদ্দেশ্যকে পরাভূত করার ক্ষমতা পৃথিবীর কোনও শক্তির নাই। আল্লাহ্র ক্ষমতার আওতার বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা কারও নাই। যে আল্লাহ্র বিরোধিতা করে সে নিজেরই আত্মার ক্ষতি করে। সুতারাং কেন মানুষ আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পন করে শান্তিময় জীবনের সন্ধান লাভ করে না ? কেন তারা বিশ্বাস বা ঈমানের রংএ নিজস্ব জীবনকে রাঙ্গিয়ে তোলে না ?
আয়াতঃ 072.013
আমরা যখন সুপথের নির্দেশ শুনলাম, তখন তাতে বিশ্বাস স্থাপন করলাম। অতএব, যে তার পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস করে, সে লোকসান ও জোর-জবরের আশংকা করে না।
’And indeed when we heard the Guidance (this Qur’ân), we believed therein (Islâmic Monotheism), and whosoever believes in his Lord shall have no fear, either of a decrease in the reward of his good deeds or an increase in punishment for his sins.
وَأَنَّا لَمَّا سَمِعْنَا الْهُدَى آمَنَّا بِهِ فَمَن يُؤْمِن بِرَبِّهِ فَلَا يَخَافُ بَخْسًا وَلَا رَهَقًا
Waanna lamma samiAAna alhuda amanna bihi faman yu/min birabbihi fala yakhafu bakhsan wala rahaqan
YUSUFALI: ‘And as for us, since we have listened to the Guidance, we have accepted it: and any who believes in his Lord has no fear, either of a short (account) or of any injustice.
PICKTHAL: And when we heard the guidance, we believed therein, and whoso believeth in his Lord, he feareth neither loss nor oppression.
SHAKIR: And that when we heard the guidance, we believed in it; so whoever believes in his Lord, he should neither fear loss nor being overtaken (by disgrace):
KHALIFA: ” `When we heard the guidance, we believed therein. Anyone who believes in his Lord will never fear any injustice, nor any affliction.
১৩। “যখন আমরা পথ নির্দ্দেশ শুনলাম, আমরা তা গ্রহণ করেছিলাম। যে তার প্রভুকে বিশ্বাস করে তার কোন ক্ষতি ও কোন অন্যায়ের আশংকা থাকবে না। ৫৭৩৭
৫৭৩৭। জগত সংসারে যারা নীতিবান, দেখা যায় তারা তাদের নীতির দরুন সত্যের প্রতি তাদের আনুগত্যের দরুণ, দুনীর্তিকে প্রশ্রয় না দেওয়ার জন্য পৃথিবীর মানদন্ডে তাঁরা ক্ষতির সম্মুখীন হন। অনেক সময়ে আর্থিক ক্ষতি দ্বারা তাদের জীবন বিপর্যস্ত হয়। পৃথিবীর মানদন্ডে তারা বোকা প্রমাণিত হয়ে, হাস্যস্পদে পরিণত হন। আবার অনেকে সত্যের প্রতি আনুগত্যের জন্য অত্যাচারিত ও নির্যাতিত হয়ে থাকেন শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক ভাবে। কিন্তু এসব সত্য পথের পথিকেরা তাতে বিভ্রান্ত বা বিচলিত হন না। তারা এসব fঅত্যাচার ও নির্যাতনকে হাসিমুখে গ্রহণ করে থাকেন। কারণ তারা জানেন যে পৃথিবীর জীবনই জীবনের শেষ কথা নয়। জীবনের শেষ যোগফল নেয়া হবে পরলোকে – যেখানে সব হিসাবের শেষ হিসাব মেলানো হবে। পৃথিবীর আপাতঃ ক্ষতি যেখানে প্রকৃত লাভে পরিণত হবে। এ ভাবেই নীতিবান ব্যক্তি পার্থিব ক্ষতির মাধ্যমে অনন্ত জীবনে প্রকৃত লাভবান হবেন। সে বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ্ প্রকৃত ন্যায়বান। আল্লাহ্র দরবারে কোন অন্যায় নাই, কোন অবিচার তাঁকে স্পর্শ করবে না। তার প্রতিটি সৎ কাজের বা নীতির মূল্য বা পুরষ্কার সে লাভ করবেই।
আয়াতঃ 072.014
আমাদের কিছুসংখ্যক আজ্ঞাবহ এবং কিছুসংখ্যক অন্যায়কারী। যারা আজ্ঞাবহ হয়, তারা সৎপথ বেছে নিয়েছে।
’And of us some are Muslims (who have submitted to Allâh, after listening to this Qur’ân), and of us some are Al-Qâsitûn (disbelievers those who have deviated from the Right Path)’. And whosoever has embraced Islâm (i.e. has become a Muslim by submitting to Allâh), then such have sought the Right Path.”
وَأَنَّا مِنَّا الْمُسْلِمُونَ وَمِنَّا الْقَاسِطُونَ فَمَنْ أَسْلَمَ فَأُوْلَئِكَ تَحَرَّوْا رَشَدًا
Waanna minna almuslimoona waminna alqasitoona faman aslama faola-ika taharraw rashadan
YUSUFALI: ‘Amongst us are some that submit their wills (to Allah), and some that swerve from justice. Now those who submit their wills – they have sought out (the path) of right conduct:
PICKTHAL: And there are among us some who have surrendered (to Allah) and there are among us some who are unjust. And whoso hath surrendered to Allah, such have taken the right path purposefully.
SHAKIR: And that some of us are those who submit, and some of us are the deviators; so whoever submits, these aim at the right way:
KHALIFA: ” `Among us are the submitters, and among us are the compromisers.’ ” As for those who submitted, they are on the right path.
১৪। ” আমাদের মধ্যে কতক নিজেকে [আল্লাহ্র ] নিকট সমর্পন করেছে, এবং কেহ ন্যায় থেকে বিপথে ফিরে গেছে। এখন, যারা আত্মসমর্পনকারী – তারা খুঁজে পেয়েছে সঠিক পথের ঠিকানা। ৫৭৩৮।
৫৭৩৮। এই আয়াতের উপদেশ সার্বজনীন। যারা ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা নয় ধর্মের প্রকৃত হেদায়েতকে অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছে এবং সেই ভাবে আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পন করেছে তারা আধ্যাত্মিক জগতে খুব দ্রুত উন্নতি লাভ করে থাকে। তারাই পৃথিবীতে আল্লাহ্র মনোনীত পথে থেকে উন্নত চারিত্রিক গুণাবলীতে পৃথিবীর অঙ্গন আলোকিত করে থাকেন। যারা আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পন করে থাকে তারা তাদের আত্মার মাঝে, অন্তরের অন্তঃস্থলে আল্লাহ্র নিরাপদ হেফাজতের আশ্বাস লাভ করে থাকেন। এই আশ্বাস বাইরে থেকে দৃষ্টি গোচর নয়, কিন্তু যে বিশ্বস্রষ্টার এই আশ্বাস লাভ করে থাকে তার হৃদয় জানে কি তার নিরাপত্তা। সেই সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ যখন নিরাপত্তাদানকারী হন, তখন তা তুলনাহীন তা ভাষাতে প্রকাশ করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। সুতরাং “যারা আত্মসমর্পনকারী- তারা খুজে পেয়েছে সঠিক পথের ঠিকানা।”
আয়াতঃ 072.015
আর যারা অন্যায়কারী, তারা তো জাহান্নামের ইন্ধন।
And as for the Qâsitûn (disbelievers who deviated from the Right Path), they shall be firewood for Hell,
وَأَمَّا الْقَاسِطُونَ فَكَانُوا لِجَهَنَّمَ حَطَبًا
Waama alqasitoona fakanoo lijahannama hataban
YUSUFALI: ‘But those who swerve,- they are (but) fuel for Hell-fire’-
PICKTHAL: And as for those who are unjust, they are firewood for hell.
SHAKIR: And as to the deviators, they are fuel of hell:
KHALIFA: As for the compromisers, they will be fuel for Gehenna.
১৫। ” কিন্তু যারা বিপথে ফিরে যায়, তারা তো জাহান্নামের ইন্ধন ” – ৫৭৩৯
৫৭৩৯। সীমালংঘনকারী তারাই যারা আল্লাহ্ প্রদত্ত জীবন বিধানকে ত্যাগ করে অন্যায় ও পাপের অন্ধকার পথকে বেছে নিয়েছে। যে অন্যায় ও অসৎ পথে জীবন অতিবাহিত করে তার জন্য আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশের পথ রুদ্ধ। আল্লাহ্র হেদায়েতের নূর এসব আত্মায় প্রবেশ লাভে সক্ষম নয়। এ সব আত্মাই অন্ধকারের যাত্রী যারা নিজের বা পৃথিবীর কারও কোনও উপকার করতে পারে না। এদের কর্ম পরলোকের জন্য কোনও সুকৃতি বহন করে আনে না। এসব আত্মা “জাহান্নামেরই ইন্ধন।”
আয়াতঃ 072.016
আর এই প্রত্যাদেশ করা হয়েছে যে, তারা যদি সত্যপথে কায়েম থাকত, তবে আমি তাদেরকে প্রচুর পানি বর্ষণে সিক্ত করতাম।
If they (non-Muslims) had believed in Allâh, and went on the Right Way (i.e. Islâm) We should surely have bestowed on them water (rain) in abundance.
وَأَلَّوِ اسْتَقَامُوا عَلَى الطَّرِيقَةِ لَأَسْقَيْنَاهُم مَّاء غَدَقًا
Waallawi istaqamoo AAala alttareeqati laasqaynahum maan ghadaqan
YUSUFALI: (And Allah’s Message is): “If they (the Pagans) had (only) remained on the (right) Way, We should certainly have bestowed on them Rain in abundance.
PICKTHAL: If they (the idolaters) tread the right path, We shall give them to drink of water in abundance
SHAKIR: And that if they should keep to the (right) way, We would certainly give them to drink of abundant water,
KHALIFA: If they remain on the right path, we will bless them with abundant water
১৬। [ এবং আল্লাহ্র উপদেশ হলো ] : ” তারা যদি [ কেবলমাত্র ] সৎ পথে থাকতো, তবে আমি তাদের প্রচুর বৃষ্টি দ্বারা সমৃদ্ধ করতাম। ৫৭৪০
৫৭৪০। বৃষ্টি শব্দটি এই আয়াতে প্রতীক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। বৃষ্টি শব্দটি পানির বারতা বহন করে আনে। পানির অপর নাম জীবন। এখানে পানিকে প্রতীক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে আল্লাহ্র সকল নেয়ামতকে প্রকাশ করার জন্য। জগৎ সংসারে আর্থিক, নৈতিক, এবং আধ্যাত্মিক সকল নেয়ামত আল্লাহ্র দান এবং “বৃষ্টি” প্রতীক শব্দটি দ্বারা আল্লাহ্র সকল নেয়ামতকে বোঝানো হয়েছে। এর মাঝে আল্লাহ্র সর্বোচ্চ দান হচ্ছে বান্দার জন্য আধ্যাত্মিক সমৃদ্ধি দান করা। যাকে আল্লাহ্ আধ্যাত্মিক সমৃদ্ধি দান করেছেন তাঁর আত্মার মাঝে জন্মলাভ করে অন্তর্দৃষ্টি, জীবনের বৃহত্তর ব্যপ্তিকে উপলব্ধির ক্ষমতা, বিচক্ষণতা,দূরদৃষ্টি ও সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ইত্যাদি। আল্লাহ্র ইচ্ছার নিকট পরিপূর্ণ আত্মসমর্পনের মাধ্যমে বান্দা এসব দুর্লভ চারিত্রিক গুণাবলীর অধিকারী হয়ে থাকেন যার সাথে পার্থিব সম্পদ বা ক্ষমতার কোনও অংশই তুলনীয় হয় না। বান্দা যখন দৃঢ়ভাবে আল্লাহ্র দেয়া প্রাকৃতিক, নৈতিক, এবং আধ্যাত্মিক আইন বা বিধানকে বা সত্য পথকে একাগ্রভাবে ও কঠোরভাবে জীবনে অনুশীলন করে থাকে, তখনই বান্দার চরিত্র আল্লাহ্র আর্শীবাদে ধন্য হয়। এ কথা স্মরণ রাখতে হবে যে, আল্লাহ্র আর্শীবাদ দুঃখের দুর্গম পথকে পদদলিত করেই লাভ করা যায়, এই হচ্ছে বান্দার জন্য আল্লাহ্র পরীক্ষা। মনে রাখতে হবে পথ [আল্লাহ্র পরীক্ষা ] যত দুর্গম হবে, পথের শেষে মঞ্জিল হবে তত মনোরম, আরামদায়ক। আল্লাহ্ তাঁর অনুগ্রহ দান করে থাকেন পরীক্ষার মাধ্যমে। এই পরীক্ষাতে যে যত সাফল্যলাভ করবে সে তত আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভে ধন্য হবে। বান্দার স্বাভাবিক গুণরাজি, প্রতিভা, দূরদৃষ্টি,অন্তর্দৃষ্টি সকল কিছু নিজস্ব ক্ষুদ্র গন্ডিকে অতিক্রম করে বিশ্বমানবতার বিস্তৃত অংগনে প্রসারিত হবে। তাঁর ভালোবাসা জীবনের ক্ষুদ্র গন্ডীকে অতিক্রম করে বিশ্ব মানবতাতে পরিব্যপ্ত হয়ে যাবে। মানব কল্যাণের জন্য তার নিঃস্বার্থ ভালোবাসা জগত সংসারকে করবে সুরভিত, আলোকিত। যেহেতু তারা আল্লাহ্র বিশেষ অনুগ্রহ ভাজন, সুতারাং যারা অল্প অনুগ্রহ ভাজন তাদের জন্য তাদের নিঃস্বার্থ ভালোবাসার দুয়ার থাকে উন্মুক্ত। যেমন ধনী ব্যক্তির দায়িত্ব থাকে গরীবের জন্য ধন সম্পদ ব্যয় করার।
আয়াতঃ 072.017
যাতে এ ব্যাপারে তাদেরকে পরীক্ষা করি। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তিনি তাকে উদীয়মান আযাবে পরিচালিত করবেন।
That We might try them thereby. And whosoever turns away from the Reminder of his Lord (i.e. this Qur’ân, and practice not its laws and orders), He will cause him to enter in a severe torment (i.e. Hell).
لِنَفْتِنَهُمْ فِيهِ وَمَن يُعْرِضْ عَن ذِكْرِ رَبِّهِ يَسْلُكْهُ عَذَابًا صَعَدًا
Linaftinahum feehi waman yuAArid AAan thikri rabbihi yasluk-hu AAathaban saAAadan
YUSUFALI: “That We might try them by that (means). But if any turns away from the remembrance of his Lord, He will cause him to undergo a severe Penalty.
PICKTHAL: That We may test them thereby, and whoso turneth away from the remembrance of his Lord; He will thrust him into ever-growing torment.
SHAKIR: So that We might try them with respect to it; and whoever turns aside from the reminder of his Lord, He will make him enter into an afflicting chastisement:
KHALIFA: We will surely test them all. As for him who disregards the message of his Lord, He will direct him to ever increasing retribution.
১৭। ” যার দ্বারা আমি তাদের পরীক্ষা করতাম। কিন্তু কেহ যদি তার প্রভুর স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় ৫৭৪১, তিনি তাকে দুঃসহ শাস্তিতে প্রবেশ করাবেন।
৫৭৪১। সম্পদ ও প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আল্লাহ্ বান্দাকে পরীক্ষা করে থাকেন। যারা সম্পদে, সুখে, প্রাচুর্যে সর্ব অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে তারাই মোমেন বান্দা। আল্লাহকে স্মরণ করার অর্থ হচ্ছে আত্মার মাঝে সর্বদা তাঁর উপস্থিতি অনুভব করা। আল্লাহ্র কল্যাণকে উপলব্ধি করা এবং তাঁর হেদায়েতকে অনুসরণ করার মাধ্যমেই আল্লাহকে প্রকৃত পক্ষে স্মরণ করা হয়। যার হৃদয়ে সর্বদা আল্লাহ্র উপস্থিতি বিদ্যমান সে কি কখনও সেই বিশ্বপ্রভুর সম্মুখে পাপে ও মন্দ কাজে লিপ্ত হতে পারে ? যদি কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে আল্লাহ্র হেদায়েতকে অস্বীকার করে এবং পাপ পথে ধাবিত হয়, আল্লাহ্ এরূপ ব্যক্তির উপর থেকে তাঁর আশীর্বাদ বা কল্যাণ যা বান্দার আত্মাকে সমৃদ্ধ করবে তা প্রত্যাহার করে নেন। আল্লাহ্র হেদায়েতের আলো বঞ্চিত হয়ে এসব আত্মা ধীরে ধীরে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। আত্মিক অন্ধকারে নিমজ্জিত আত্মা থাকে ভয়ে, শঙ্কায় আতঙ্কিত, উদ্বেগ দুঃশ্চিন্তাতে হতাশাগ্রস্থ যা দুঃসহ শাস্তি যা দোযখের পূর্বশর্ত। অপরপক্ষে আলোকিত আত্মা বা হেদায়েত প্রাপ্ত আত্মার মাঝে বিরাজ করে সমাহিত প্রশান্তি যা বেহেশতের পূর্বাভাষ।
আয়াতঃ 072.018
এবং এই ওহীও করা হয়েছে যে, মসজিদসমূহ আল্লাহ তা’আলাকে স্মরণ করার জন্য। অতএব, তোমরা আল্লাহ তা’আলার সাথে কাউকে ডেকো না।
And the mosques are for Allâh (Alone), so invoke not anyone along with Allâh.
وَأَنَّ الْمَسَاجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدْعُوا مَعَ اللَّهِ أَحَدًا
Waanna almasajida lillahi fala tadAAoo maAAa Allahi ahadan
YUSUFALI: “And the places of worship are for Allah (alone): So invoke not any one along with Allah;
PICKTHAL: And the places of worship are only for Allah, so pray not unto anyone along with Allah.
SHAKIR: And that the mosques are Allah’s, therefore call not upon any one with Allah:
KHALIFA: The places of worship belong to GOD; do not call on anyone else beside GOD.
১৮। ” এবং মসজিদসমূহ শুধুমাত্র আল্লাহ্র এবাদতের জন্য ৫৭৪২। সুতারাং আল্লাহ্ সাথে তোমরা অন্য কাউকে ডাকবে না।
৫৭৪২। এইটি একটি মক্কী সূরা। ‘মসজিদ’ শব্দটি দ্বারা কাবা শরীফ বা পরবর্তীতে বিভিন্ন মসজিদকেই শুধুমাত্র বোঝায় না। শব্দটির মূল অর্থ হচ্ছে আল্লাহ্র এবাদতের জন্য যে কোনও স্থান বা উপলক্ষ, অথবা আল্লাহ্র কাজে ভক্তিবনতভাবে আত্মসমর্পন অথবা মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বা মেধা মননশক্তি অর্থাৎ আল্লাহ্র এবাদতের জন্য যাই করা হোক না কেন তাকেই এই মসজিদ শব্দটি দ্বারা প্রকাশ করা হয়, এর অর্থ সেজদাও হতে পারে। যে অঙ্গ আল্লাহ্র আনুগত্যের জন্য বিনয়বনত হয় যথা : হস্ত, পদ, ঠোঁট, স্বর উপলব্ধি ইত্যাদি আবার জনসমষ্ঠি একতাবদ্ধভাবে আল্লাহ্র এবাদতে যখন আত্মনিয়োগ করে এ সমস্তই ‘মসজিদ সমূহ ‘ শব্দটি দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে। এই শব্দটি বিভিন্ন ভাবকে প্রকাশ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। যথাঃ
১) মসজিদ দ্বারা এমন স্থানকে বুঝানো হয় যেখানে এক আল্লাহ্ ব্যতীত আর কারও এবাদত হয় না। ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে কাবা শরীফ এক আল্লাহ্র এবাদতের পরিবর্তে বহু দেব দেবীতে পূর্ণ ছিলো।
২) আল্লাহ্র এবাদত হতে হবে আন্তরিক ও একাগ্র। এবাদত যেনো কোনও অবস্থাতেই মিথ্যা দ্বারা কলুষিত না হয় সেজদা হচ্ছে এরূপ এক এবাদত।
৩) আমাদের সকল সমৃদ্ধি ঐশ্বরিক দান। সুতারাং আমাদের সকল কিছুই আল্লাহ্র সেবায় অর্থাৎ তাঁর সৃষ্টির সেবায় নিয়োজিত করতে হবে। সেখানে দম্ভ বা অসার আত্মশ্লাঘার কোন স্থান নাই। অর্থাৎ মসজিদ শব্দটি দ্বারা আল্লাহ্র এবাদতের বিভিন্ন ধারাকে প্রকাশ করা হয়ে থাকে।
আয়াতঃ 072.019
আর যখন আল্লাহ তা’আলার বান্দা তাঁকে ডাকার জন্যে দন্ডায়মান হল, তখন অনেক জিন তার কাছে ভিড় জমাল।
(It has been revealed to me that) When the slave of Allâh (Muhammad SAW) stood up invoking (his Lord Allâh) in prayer to Him they (the jinns) just made round him a dense crowd as if sticking one over the other (in order to listen to the Prophet’s recitation).
وَأَنَّهُ لَمَّا قَامَ عَبْدُ اللَّهِ يَدْعُوهُ كَادُوا يَكُونُونَ عَلَيْهِ لِبَدًا
Waannahu lamma qama AAabdu Allahi yadAAoohu kadoo yakoonoona AAalayhi libadan
YUSUFALI: “Yet when the Devotee of Allah stands forth to invoke Him, they just make round him a dense crowd.”
PICKTHAL: And when the slave of Allah stood up in prayer to Him, they crowded on him, almost stifling.
SHAKIR: And that when the servant of Allah stood up calling upon Him, they wellnigh crowded him (to death).
KHALIFA: When GOD’s servant advocated Him alone, almost all of them banded together to oppose him.
১৯। ” যখন আল্লাহ্র বান্দা [ মুহম্মদ ] ৫৭৪৩, তাঁকে (আল্লাহ্কে) ডাকার জন্য দাঁড়ায়, তারা তার নিকট ভিড় জমালো ৫৭৪৪।”
৫৭৪৩। ” আল্লাহ্র বান্দা ” অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ্ (সা)।
৫৭৪৪। ‘তারা ‘ শব্দটি দ্বারা এই আয়াতে মক্কার মোশরেক কোরাইশদের বুঝানো হয়েছে। রাসুলুল্লাহ্র(সা) সময়ে কাবা শরীফ কোরাইশদের অধিকারে ছিলো। তারা রাসুলের (সা) একেশ্বরবাদ প্রচারে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে অবতীর্ণ হয় এবং একেশ্বরবাদ প্রচারে বিভিন্ন বাঁধার সৃষ্টি করে। তারা সাধারণতঃ রাসুলকে (সা) বাঁধা দেওয়ার জন্য উচ্ছৃঙ্খলভাবে ঘিরে ধরতো এবং তাঁর সাথে এমন ব্যবহার করতো যেনো আল্লাহ্র রাসুল কোনও গর্হিত কাজ করেছেন ; কোনও অপরাধের সাথে জড়িত আছেন। সূরাটি অবতীর্ণ হওয়ার সময়ের প্রেক্ষাপটে আয়াতটির অর্থ উপরে বর্ণনা করা হলো। কিন্তু এই আয়াতটির অর্থ সার্বজনীন – যুগ কাল অতিক্রান্ত। আয়াতটির বিশ্বজনীন অর্থ হলো যুগে যুগে পৃথিবীতে যারা ন্যায় ও সত্যের সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও হবেন তাঁরা সর্বকালে, সর্ব যুগে বাঁধা প্রাপ্ত হবেন পাপী ও অন্যায়কারীদের দ্বারা। সত্যের বাণীর প্রচারকদের একান্ত ও আন্তরিক আহ্বান এসব পাপীদের অন্তর স্পর্শ করবে না। পাপীরা তাদের হাস্যস্পদ করবে, বিভিন্ন দিক থেকে তাদের ব্যঙ্গ করবে, নিন্দা ও অপবাদে জর্জরিত করবে। এসব বাধাদানকারীরা ন্যায় ও সত্যের প্রচারকদের জীবন কন্টকিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাবে। এসব বাঁধার প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে সর্বকালে সর্বযুগে সত্যের সংগ্রামীদের অগ্রসর হতে হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে।
আয়াতঃ 072.020
বলুনঃ আমি তো আমার পালনকর্তাকেই ডাকি এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করি না।
Say (O Muhammad SAW): ”I invoke only my Lord (Allâh Alone), and I associate none as partners along with Him.”
قُلْ إِنَّمَا أَدْعُو رَبِّي وَلَا أُشْرِكُ بِهِ أَحَدًا
Qul innama adAAoo rabbee wala oshriku bihi ahadan
YUSUFALI: Say: “I do no more than invoke my Lord, and I join not with Him any (false god).”
PICKTHAL: Say (unto them, O Muhammad): I pray unto Allah only, and ascribe unto Him no partner.
SHAKIR: Say: I only call upon my Lord, and I do not associate any one with Him.
KHALIFA: Say, “I worship only my Lord; I never set up any idols beside Him.”
রুকু – ২
২০। [ হে মুহম্মদ ] বল : ” আমি আমার প্রভু ব্যতীত কাউকে ডাকি না, আমি তার সাথে কোন [ মিথ্যা উপাস্যের ] শরীক করি না।”
২১। বল, : ” তোমাদের ক্ষতি বা সঠিক পথে পরিচালনার আমার কোন ক্ষমতা নাই ৫৭৪৫”
৫৭৪৫। এই আয়াতটিতে রাসুলকে সম্বোধন করা হয়েছে ‘বল’ শব্দটি দ্বারা। রাসুলকে (সা) বলতে বলা হয়েছে যে, “আমি তোমাদের ব্যক্তিগত বা সামাজিক ভাবে ক্ষতি করার জন্য আগমন করি নাই। বরং আমার ধরাতের আগমন তোমাদের কল্যাণের জন্য। কিন্তু আমি তোমাদের চরিত্রকে সংশোধন করতে পারবো না যতক্ষণ না তোমরা নিজেরা চেষ্টা করে থাক। তোমাদের চরিত্র তখনই সংশোধিত হবে যখন তোমরা তোমাদের বিশ্বাস বা ঈমানকে সংশোধিত করে পবিত্র করার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ কর। অর্থাৎ ঈমানের পথে ধর্মের পথে ব্যক্তিকে আসতে হবে স্ব-ইচ্ছায়। আল্লাহ্র রাসুল (সা) তাদের সেই পথের ঠিকানা দিতে পারেন।
আয়াতঃ 072.021
বলুনঃ আমি তোমাদের ক্ষতি সাধন করার ও সুপথে আনয়ন করার মালিক নই।
Say: ”It is not in my power to cause you harm, or to bring you to the Right Path.”
قُلْ إِنِّي لَا أَمْلِكُ لَكُمْ ضَرًّا وَلَا رَشَدًا
Qul innee la amliku lakum darran wala rashadan
YUSUFALI: Say: “It is not in my power to cause you harm, or to bring you to right conduct.”
PICKTHAL: Say: Lo! I control not hurt nor benefit for you.
SHAKIR: Say: I do not control for you evil or good.
KHALIFA: Say, “I possess no power to harm you, nor to guide you.”
রুকু – ২
২০। [ হে মুহম্মদ ] বল : ” আমি আমার প্রভু ব্যতীত কাউকে ডাকি না, আমি তার সাথে কোন [ মিথ্যা উপাস্যের ] শরীক করি না।”
২১। বল, : ” তোমাদের ক্ষতি বা সঠিক পথে পরিচালনার আমার কোন ক্ষমতা নাই ৫৭৪৫”
৫৭৪৫। এই আয়াতটিতে রাসুলকে সম্বোধন করা হয়েছে ‘বল’ শব্দটি দ্বারা। রাসুলকে (সা) বলতে বলা হয়েছে যে, “আমি তোমাদের ব্যক্তিগত বা সামাজিক ভাবে ক্ষতি করার জন্য আগমন করি নাই। বরং আমার ধরাতের আগমন তোমাদের কল্যাণের জন্য। কিন্তু আমি তোমাদের চরিত্রকে সংশোধন করতে পারবো না যতক্ষণ না তোমরা নিজেরা চেষ্টা করে থাক। তোমাদের চরিত্র তখনই সংশোধিত হবে যখন তোমরা তোমাদের বিশ্বাস বা ঈমানকে সংশোধিত করে পবিত্র করার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ কর। অর্থাৎ ঈমানের পথে ধর্মের পথে ব্যক্তিকে আসতে হবে স্ব-ইচ্ছায়। আল্লাহ্র রাসুল (সা) তাদের সেই পথের ঠিকানা দিতে পারেন।
আয়াতঃ 072.022
বলুনঃ আল্লাহ তা’আলার কবল থেকে আমাকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না এবং তিনি ব্যতীত আমি কোন আশ্রয়স্থল পাব না।
Say (O Muhammad SAW): ”None can protect me from Allâh’s punishment (if I were to disobey Him), nor should I find refuge except in Him.
قُلْ إِنِّي لَن يُجِيرَنِي مِنَ اللَّهِ أَحَدٌ وَلَنْ أَجِدَ مِن دُونِهِ مُلْتَحَدًا
Qul innee lan yujeeranee mina Allahi ahadun walan ajida min doonihi multahadan
YUSUFALI: Say: “No one can deliver me from Allah (If I were to disobey Him), nor should I find refuge except in Him,
PICKTHAL: Say: Lo! none can protect me from Allah, nor can I find any refuge beside Him
SHAKIR: Say: Surely no one can protect me against Allah, nor can I find besides Him any place of refuge:
KHALIFA: Say, “No one can protect me from GOD, nor can I find any other refuge beside Him.
২২। বল, ” [ আমি যদি আল্লাহকে অমান্য করি ], তিনি ব্যতীত কেউ আমাকে রক্ষা করতে পারবে না ৫৭৪৬, তাঁর কাছ ব্যতীত কোন আশ্রয়স্থান পাব না, –
৫৭৪৬। আল্লাহ্ রাসুলকে (সা) বলার জন্য নিম্নরূপ নির্দ্দেশ দান করেছেন, ” আমার কর্ম স্থির করেছেন আল্লাহ্। আমাকে তাঁর বাণী প্রচার করার জন্য মনোনীত করেছেন। যদি আমি তাঁর হুকুমকে অস্বীকার করি, তবে তিনি আমাকে শাস্তি দান করবেন। পৃথিবীর কোন শক্তিই আমাকে সেই শক্তি থেকে রক্ষা করতে পারবে না। আমার সকল বিপদ ও বিপর্যয়ের তিনিই একমাত্র রক্ষাকর্তা। আমাকে অবশ্যই তাঁর বাণী প্রচার করতে হবে; অন্যথায় তিনি আমাকে যে উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেছেন তা অমান্য করা হবে।”
আয়াতঃ 072.023
কিন্তু আল্লাহ তা’আলার বাণী পৌছানো ও তাঁর পয়গাম প্রচার করাই আমার কাজ। যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে অমান্য করে, তার জন্যে রয়েছে জাহান্নামের অগ্নি। তথায় তারা চিরকাল থাকবে।
”(Mine is) but conveyance (of the truth) from Allâh and His Messages (of Islâmic Monotheism), and whosoever disobeys Allâh and His Messenger, then verily, for him is the Fire of Hell, he shall dwell therein forever .”
إِلَّا بَلَاغًا مِّنَ اللَّهِ وَرِسَالَاتِهِ وَمَن يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَإِنَّ لَهُ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا
Illa balaghan mina Allahi warisalatihi waman yaAAsi Allaha warasoolahu fa-inna lahu nara jahannama khalideena feeha abadan
YUSUFALI: “Unless I proclaim what I receive from Allah and His Messages: for any that disobey Allah and His Messenger,- for them is Hell: they shall dwell therein for ever.”
PICKTHAL: (Mine is) but conveyance (of the Truth) from Allah, and His messages; and whoso disobeyeth Allah and His messenger, lo! his is fire of hell, wherein such dwell for ever.
SHAKIR: (It is) only a delivering (of communications) from Allah and His messages; and whoever disobeys Allah and His Messenger surely he shall have the fire of hell to abide therein for a long time.
KHALIFA: “I deliver GOD’s proclamations and messages.” Those who disobey GOD and His messenger incur the fire of Hell, wherein they abide forever.
২৩। ” যদি না আমি আল্লাহ্র পক্ষ থেকে তাঁর যে বাণী গ্রহণ করেছি তা প্রচার করি। যে আল্লাহকে এবং তাঁর রসুলকে অমান্য করে, নিশ্চয়ই তার জন্য আছে জাহান্নাম। সেখানে তারা চিরদিন থাকবে।”
২৪। অবশেষে, যখন তারা [ নিজ চক্ষে ] প্রতিশ্রুত শাস্তিকে প্রত্যক্ষ করবে ৫৭৪৭, তখন তারা বুঝতে পারবে [ তার ] সাহায্যকারী হিসেবে কে দুর্বল এবং সংখ্যার দিক থেকে কম গুরুত্বপূর্ণ।
৫৭৪৭। পরলোকে শেষ বিচারের দিনে প্রতিটি মানুষের জ্ঞানচক্ষু উন্মীলিত করা হবে। সেদিন তারা প্রকৃত সত্যকে উপলব্ধিতে সক্ষম হবে। সেদিন তারা প্রত্যক্ষ করবে যে, আল্লাহ্র বাণী প্রকৃত সত্য – মৃত্যুই জীবনের পরিসমাপ্তি নয়। পার্থিব মৃত্যু শুধুমাত্র নশ্বর দেহের ধ্বংস করে। সেদিন তাদের বোধদয় ঘটবে যে, পৃথিবীতে যাদের মনে করা হতো দুর্বল, পরলোকের জীবনের মূল্যবোধের প্রেক্ষাপটে তারাই হবে শক্তিশালী ও সবল, যাদের জীবনবোধকে পৃথিবীতে কেহই অনুসরণ করতো না, কারণ তাঁরা ছিলেন ন্যায় ও সত্যের অনুসারী। পরলোকের অনন্ত জীবনে তাদের সম্বর্ধনা ও সাহায্যের জন্য তারই সমগোত্রীয় লোকেরা এগিয়ে আসবেন।
আয়াতঃ 072.024
এমনকি যখন তারা প্রতিশ্রুত শাস্তি দেখতে পাবে, তখন তারা জানতে পারবে, কার সাহায্যকারী দূর্বল এবং কার সংখ্যা কম।
Till, when they see that which they are promised, then they will know who it is that is weaker concerning helpers and less important concerning numbers.
حَتَّى إِذَا رَأَوْا مَا يُوعَدُونَ فَسَيَعْلَمُونَ مَنْ أَضْعَفُ نَاصِرًا وَأَقَلُّ عَدَدًا
Hatta itha raaw ma yooAAadoona fasayaAAlamoona man adAAafu nasiran waaqallu AAadadan
YUSUFALI: At length, when they see (with their own eyes) that which they are promised,- then will they know who it is that is weakest in (his) helper and least important in point of numbers.
PICKTHAL: Till (the day) when they shall behold that which they are promised (they may doubt); but then they will know (for certain) who is weaker in allies and less in multitude.
SHAKIR: Until when they see what they are threatened with, then shall they know who is weaker in helpers and fewer in number.
KHALIFA: Once they see what is awaiting them, they will find out who is really weaker in power, and fewer in number.
২৩। ” যদি না আমি আল্লাহ্র পক্ষ থেকে তাঁর যে বাণী গ্রহণ করেছি তা প্রচার করি। যে আল্লাহকে এবং তাঁর রসুলকে অমান্য করে, নিশ্চয়ই তার জন্য আছে জাহান্নাম। সেখানে তারা চিরদিন থাকবে।”
২৪। অবশেষে, যখন তারা [ নিজ চক্ষে ] প্রতিশ্রুত শাস্তিকে প্রত্যক্ষ করবে ৫৭৪৭, তখন তারা বুঝতে পারবে [ তার ] সাহায্যকারী হিসেবে কে দুর্বল এবং সংখ্যার দিক থেকে কম গুরুত্বপূর্ণ।
৫৭৪৭। পরলোকে শেষ বিচারের দিনে প্রতিটি মানুষের জ্ঞানচক্ষু উন্মীলিত করা হবে। সেদিন তারা প্রকৃত সত্যকে উপলব্ধিতে সক্ষম হবে। সেদিন তারা প্রত্যক্ষ করবে যে, আল্লাহ্র বাণী প্রকৃত সত্য – মৃত্যুই জীবনের পরিসমাপ্তি নয়। পার্থিব মৃত্যু শুধুমাত্র নশ্বর দেহের ধ্বংস করে। সেদিন তাদের বোধদয় ঘটবে যে, পৃথিবীতে যাদের মনে করা হতো দুর্বল, পরলোকের জীবনের মূল্যবোধের প্রেক্ষাপটে তারাই হবে শক্তিশালী ও সবল, যাদের জীবনবোধকে পৃথিবীতে কেহই অনুসরণ করতো না, কারণ তাঁরা ছিলেন ন্যায় ও সত্যের অনুসারী। পরলোকের অনন্ত জীবনে তাদের সম্বর্ধনা ও সাহায্যের জন্য তারই সমগোত্রীয় লোকেরা এগিয়ে আসবেন।
আয়াতঃ 072.025
বলুনঃ আমি জানি না তোমাদের প্রতিশ্রুত বিষয় আসন্ন না আমার পালনকর্তা এর জন্যে কোন মেয়াদ স্থির করে রেখেছেন।
Say (O Muhammad SAW): ”I know not whether (the punishment) which you are promised is near or whether my Lord will appoint for it a distant term.
قُلْ إِنْ أَدْرِي أَقَرِيبٌ مَّا تُوعَدُونَ أَمْ يَجْعَلُ لَهُ رَبِّي أَمَدًا
Qul in adree aqareebun ma tooAAadoona am yajAAalu lahu rabbee amadan
YUSUFALI: Say: “I know not whether the (Punishment) which ye are promised is near, or whether my Lord will appoint for it a distant term.
PICKTHAL: Say (O Muhammad, unto the disbelievers): I know not whether that which ye are promised is nigh, or if my Lord hath set a distant term for it.
SHAKIR: Say: I do not know whether that with which you are threatened be nigh or whether my Lord will appoint for it a term:
KHALIFA: Say, “I do not know if what is promised to you will happen soon, or if my Lord will delay it for awhile.”
২৫। বল, ” আমি জানি না, তোমাদের [ শাস্তির ] যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা কি আসন্ন ৫৭৪৮, না আমার প্রভু এর জন্য কোন দীর্ঘ মেয়াদ স্থির করবেন।
৫৭৪৮। কেয়ামত ও শেষ বিচারের দিন অবশ্যই আসবে। কিন্তু সেদিন কবে আসবে সে কথা সঠিকভাবে ভবিষ্যতবাণী করা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। পৃথিবীর সময়ের মাপকাঠিতে সে সময় কত দূর তারও অনুমান করা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। সে সময়ের সঠিক অবস্থান জানেন একমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহ্। এমনকি আল্লাহ্র রাসুলও (সা) অদৃশ্য জগতের সকল সংবাদ সম্বন্ধে অবহিত নন। তিনি ততটুকুই জানেন যতটুকু আল্লাহ্ তাঁকে প্রত্যাদেশের মাধ্যমে অবহিত করেন। দেখুর সূরা [ ৬ : ৫০ ] আয়াত ও টিকা ৪৬৭-৬৮।
আয়াতঃ 072.026
তিনি অদৃশ্যের জ্ঞানী। পরন্ত তিনি অদৃশ্য বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করেন না।
”(He Alone) the All-Knower of the Ghâ’ib (unseen), and He reveals to none His Ghâ’ib (unseen).”
عَالِمُ الْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَى غَيْبِهِ أَحَدًا
AAalimu alghaybi fala yuthhiru AAala ghaybihi ahadan
YUSUFALI: “He (alone) knows the Unseen, nor does He make any one acquainted with His Mysteries,-
PICKTHAL: (He is) the Knower of the Unseen, and He revealeth unto none His secret,
SHAKIR: The Knower of the unseen! so He does not reveal His secrets to any,
KHALIFA: He is the Knower of the future; He does not reveal the future to anyone
২৬। ” তিনিই [ একমাত্র ] অদৃশ্য সম্বন্ধে জানেন। তিনি তাঁর [ অদৃশ্যের ] রহস্য সম্বন্ধে কাউকে অবহিত করেন না ৫৭৪৯, –
৫৭৪৯। অদৃশ্যের রহস্যকে দুটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করা যায়। বস্তু জগতে কোন বস্তু যখন কোন ব্যক্তির নিকট অদৃশ্য থাকে তা নির্ভর করে সময়, স্থান, পরিবেশ, আপেক্ষিক অবস্থানের উপরে। উদাহরণ দিয়ে বুঝানো যায়,যেমন : গত বছর যে গৃহ আমি দেখেছিলাম আজ সেখানে সে গৃহের অবস্থান নাই। কারণ তা ভেঙ্গে ফেলে সুউচ্চ অট্টালিকা নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে সময়ের পার্থক্যের কারণে বস্তুটি দৃষ্টিগোচর নয়। ঢাকাতে বসে আমার পক্ষে নিউইর্য়কের স্ট্যাচু অফ লিবার্টি দর্শন করা সম্ভব নয়, যদিও সেটির অবস্থান নিউইয়র্কে রয়েছে এবং যে কেউ নিউইর্য়কে থেকে তা দর্শন করতে পারে। এখানে স্থানের দূরত্বের কারণে বস্তু অদৃশ্য থেকে যায়। আবার বৃহস্পতি গ্রহটি খালি চোখে দেখা যায় না বা অদৃশ্য থাকে, আবার শক্তিশালী টেলিস্কোপের সাহায্যে তা দৃশ্যমান। এখানে পরিবেশর কারণে বস্তুটি অদৃশ্য থেকে যাচ্ছে। ঠিক সেরূপ হচ্ছে রোজ কেয়ামতের সংবাদ যা চরম অদৃশ্য সংবাদ বা শ্রেষ্ঠ রহস্য অথবা আল্লাহ্র গূঢ় রহস্য যা পৃথিবীর মানুষের পক্ষে জানা বা দেখা কোনভাবেই সম্ভব নয়। মানুষ ততটুকুই জানতে পারবে যতটুকু আল্লাহ্ তাদের জানাতে চান। আল্লাহ্ মানুষকে ততটুকুই জানতে দেন যতটুকু জানা তার জন্য মঙ্গলজনক। এভাবেই আল্লাহ্ তাঁর মনোনীত রাসুল, জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ পয়গম্বর হযরত মুহম্মদ মুস্তফার (সা) মাধ্যমে আমাদের অদৃশ্য জগত বা পরলোকের সংবাদ অবহিত করেছেন। কিন্তু শেষ বিচারের দিনের নির্দ্দিষ্ট দিন ক্ষণ আমাদের অবহিত করা হয় নাই। কারণ তা হলে পৃথিবীর সকল কাজ কর্ম স্তব্ধ হয়ে যেতো। জীবন তার গতিময়তা ও ছন্দ হারিয়ে ফেলতো। কিন্তু আমাদের বলা হয়েছে যে, তা যে কোন মূহুর্তে ঘটতে পারে। সুতারাং আমরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেকে সেই মূহুর্তের জন্য প্রস্তুত করবো। দেখুন পূর্ববতী ও পরবর্তী টিকা সমূহ।
আয়াতঃ 072.027
তাঁর মনোনীত রসূল ব্যতীত। তখন তিনি তার অগ্রে ও পশ্চাতে প্রহরী নিযুক্ত করেন
Except to a Messenger (from mankind) whom He has chosen (He informs him of unseen as much as He likes), and then He makes a band of watching guards (angels) to march before him and behind him.
إِلَّا مَنِ ارْتَضَى مِن رَّسُولٍ فَإِنَّهُ يَسْلُكُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ رَصَدًا
Illa mani irtada min rasoolin fa-innahu yasluku min bayni yadayhi wamin khalfihi rasadan
YUSUFALI: “Except a messenger whom He has chosen: and then He makes a band of watchers march before him and behind him,
PICKTHAL: Save unto every messenger whom He hath chosen, and then He maketh a guard to go before him and a guard behind him
SHAKIR: Except to him whom He chooses as a messenger; for surely He makes a guard to march before him and after him,
KHALIFA: Only to a messenger that He chooses, does He reveal from the past and the future, specific news.
২৭। ” তাঁর মনোনীত রসুল ব্যতীত ৫৭৫০। সেক্ষেত্রে আল্লাহ্ রাসুলের অগ্রে ও পশ্চাতে প্রহরী নিযুক্ত করেন ; ৫৭৫১
৫৭৫০। দেখুন সূরা [ ৩ : ১৭৯ ] আয়াত এবং টিকা ৪৮২। আরও দেখুন উপরের টিকা।
৫৭৫১। এই আয়াতের উপদেশবাণী রহস্যে আবৃত। আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ কোন ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বস্তু নয় যে চোরে চুরি করে নেবে। কিন্তু প্রত্যাদেশের নিরাপত্তা বুঝানোর জন্য বস্তুগত নিরাপত্তার ন্যায় প্রহরীর উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ হচ্ছে অদৃশ্য কায়াহীন এক উপদেশ বাণীর সমারোহ যার স্থান মানুষের অন্তরে। বস্তু জগতে তার স্থান নাই, তবে প্রত্যাদেশের প্রতিফলন ঘটে মনুষ্য সমাজে, মানুষের জীবনে। যুগে যুগে আল্লাহ্ প্রত্যাদেশ প্রেরণ করেছেন মানুষের কল্যাণের জন্য, কিন্তু মানুষের স্বার্থপরতা, হীনমনোবৃত্তি, অজ্ঞতা, পাপিষ্ঠ মন, প্রত্যাদেশের সত্যকে বিকৃত করে ফেলেছে। মানুষের এই নির্বুর্দ্ধিতা ও পাপচক্র থেকে কিভাবে প্রত্যাদেশের পবিত্রতাকে রক্ষা করা যায় ? এই রক্ষা করার উপায়কে মানুষের বোঝার সুবিধার জন্য মানুষের বোধমগ্যতার স্তরে প্রকাশের জন্য মানুষের ভাষায় প্রকাশ করা হয়েছে। প্রত্যাদেশ হচ্ছে মানব সম্প্রদায়ের জন্য অমূল্য সম্পদ। কিভাবে এই অমূল্য সম্পদকে রক্ষা করা যায়? যে কোন অমূল্য সম্পদকে রক্ষা করার উপায়কে বস্তুগত অমূল্য সম্পদের উদাহরণের মাধ্যমে কল্পনা করা যায়। মনে করুন কোন সম্পদ একস্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হচ্ছে। পথের তষ্কর ও ডাকাতদের থেকে তা রক্ষা করার জন্য শক্তিশালী প্রহরীর প্রয়োজন, যারা সম্পদের যাত্রাপথে সম্মুখে ও পশ্চাতে থেকে সম্পদকে সকল দিক থেকে রক্ষা করবে। যখন সম্পদের চালানকে সেটির নির্দ্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানো হয় এবং গ্রহীতাকে মালামালের হিসাব সঠিক ভাবে বুঝিয়ে দেয়া হয়, তখন গ্রহীতা সম্পূর্ণ মালামাল অক্ষত ভাবে প্রাপ্তিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। এই উপমার সাহায্যে আল্লাহ্ আধ্যাত্মিক জগতের জন্য প্রেরিত অমূল্য প্রত্যাদেশ সমূহের পবিত্রতা, অপব্যবহার ও বিকৃতি থেকে রক্ষার প্রকৃত দৃশ্যকে তুলে ধরেছেন।
আল্লাহ্র রাসুল এই পবিত্র বাণীর বাহক। তাঁর প্রহরী হচ্ছে তাঁর আত্মা, বিবেক, ও অন্তর্দৃষ্টি যা আল্লাহ্ তাঁকে দান করেছেন। এরই কষ্টিপাথরে আল্লাহ্র রাসুল আল্লাহ্র প্রেরিত সম্পদের হেফাজত করে থাকেন বাইরের পৃথিবীর বিকৃত ধ্যান ধারণা এবং স্বার্থপর ও পাপীদের প্ররোচনা থেকে। আল্লাহ্ তাঁর রাসুলদের দিব্য জ্ঞানে ধন্য করেন যার আলোতে তাঁরা অন্ধকার পৃথিবীর বুক চিরে পথ চলতে পারেন। আল্লাহ্র দেয়া সম্পদের আলোয় পৃথিবীকে আলোকিত করেন।
আয়াতঃ 072.028
যাতে আল্লাহ তা’আলা জেনে নেন যে, রসূলগণ তাঁদের পালনকর্তার পয়গাম পৌছিয়েছেন কি না। রসূলগণের কাছে যা আছে, তা তাঁর জ্ঞান-গোচর। তিনি সবকিছুর সংখ্যার হিসাব রাখেন।
[He (Allâh) protects them (the Messengers)], till He sees that they (the Messengers) have conveyed the Messages of their Lord (Allâh). And He (Allâh) surrounds all that which is with them, and He (Allâh) keeps count of all things (i.e. He knows the exact number of everything).
لِيَعْلَمَ أَن قَدْ أَبْلَغُوا رِسَالَاتِ رَبِّهِمْ وَأَحَاطَ بِمَا لَدَيْهِمْ وَأَحْصَى كُلَّ شَيْءٍ عَدَدًا
LiyaAAlama an qad ablaghoo risalati rabbihim waahata bima ladayhim waahsa kulla shay-in AAadadan
YUSUFALI: “That He may know that they have (truly) brought and delivered the Messages of their Lord: and He surrounds (all the mysteries) that are with them, and takes account of every single thing.”
PICKTHAL: That He may know that they have indeed conveyed the messages of their Lord. He surroundeth all their doings, and He keepeth count of all things.
SHAKIR: So that He may know that they have truly delivered the messages of their Lord, and He encompasses what is with them and He records the number of all things.
KHALIFA: This is to ascertain that they have delivered their Lord’s messages. He is fully aware of what they have. He has counted the numbers of all things.
২৮। ” যেনো তিনি জানতে পারেন রাসুলগণ তাদের প্রভুর বাণী [ সত্যিই ] ঠিকমত প্রচার করেছে। এবং [সকল রহস্য ] যা কিছু তাদের সাথে থাকে, তিনি তা ঘিরে আছেন ৫৭৫২, আর তিনি প্রত্যেক জিনিষের হিসাব নিয়ে থাকেন ৫৭৫৩।”
৫৭৫২। আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ বা বাণী সঠিক ভাবে পৌঁছানো হয়েছে কি না ; তাদের কর্তব্য কর্ম সঠিক ভাবে পালন করেছেন কিনা সে হিসাব আল্লাহ্ রাখেন তার নিযুক্ত প্রহরীদের মাধ্যমে। সাধারণভাবে বলা যায়, মানুষের জাগ্রত বিবেকই হচ্ছে প্রহরী যা সর্বদা মানুষের দৃষ্টির অগোচরে থেকে মানুষকে পাপ ও অন্যায় থেকে সাবধান করে দিচ্ছে আর যে সংবাদ তৎক্ষণাত বিশ্বস্রষ্টার নিকট পৌঁছে যাচ্ছে।
৫৭৫৩। অদৃশ্য জগত বা আধ্যাত্মিক জগত এবং দৃশ্যমান জগত বা এই পৃথিবীর সকল কিছুর সুক্ষাতিসুক্ষ জ্ঞান রাখেন বিশ্বস্রষ্টা আল্লাহ্। আল্লাহ্র জ্ঞান, প্রজ্ঞা, পরিকল্পনা তাঁর সৃষ্ট সকল বস্তুকে ঘিরে থাকে। আমরা যাই করি না কেন, যাই -ই ভাবি না কেন মূহুর্তের মাঝে তার সকল সংবাদ আল্লাহ্র সমীপে নীত হয়। বিশ্ব প্রকৃতি সম্বন্ধে আল্লাহ্র এই পরিকল্পনা যা মানুষের নিকট দৃশ্যমান নয়। তিনি সকল কিছুর হিসাব রাখেন।”