- সূরার নাম: সূরা মুযযাম্মিল
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা মুযযাম্মিল
আয়াতঃ 073.001
হে বস্ত্রাবৃত!
O you wrapped in garments (i.e. Prophet Muhammad SAW)!
يَا أَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ
Ya ayyuha almuzzammilu
YUSUFALI: O thou folded in garments!
PICKTHAL: O thou wrapped up in thy raiment!
SHAKIR: O you who have wrapped up in your garments!
KHALIFA: O you cloaked one.
১। হে বস্ত্রাবৃত ৫৭৫৪
৫৭৫৪। কোন কোন তফসীরকারের মতে ‘মুজাম্মিল ‘ শব্দটি দ্বারা “প্রার্থনার সময়ে সঠিক ভাবে পরিচ্ছদ পরিধানকে ” বুঝানো হয়েছে। অথবা বুঝানো হয়েছে পৃথিবীর অস্থায়ী গর্ব অহংকারকে দূরে সরানোর জন্য যার উপমা হচ্ছে নিজেকে আড়াল করা চাদর বিশেষ দ্বারা। আমাদের নবীর অন্যতম উপাধি হচ্ছে মোজাম্মেল। কিন্তু এই সূরা ও পরবর্তী সূরাতে রাসুলকে “মোজাম্মেল ” সম্বোধন এক সুগভীর ভাবধারা বহন করে থাকে। পার্থিব জীবনে সাধারণ মানুষ পরিচ্ছদ পরিধান করে শরীরকে শীতের ঠান্ডা, গ্রীষ্মের তাপদাহ বা বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা করার জন্য। কিন্তু পার্থিব জীবনের এই আরাম আয়েস আধ্যাত্মিক জীবনের জন্য অপ্রয়োজনীয়।
প্রতিটি আত্মা প্রতিপালকের সম্মুখে দাঁড়াবে পার্থিব সকল অলংকার ত্যাগ করে পরিশুদ্ধ রূপে। নবীকে সম্বোধনের মাধ্যমে সকল বিশ্বমানবকে সম্বোধন করা হয়েছে যে পার্থিব সকল ভুষণ ত্যাগ করে পরিশুদ্ধ আত্মা নিয়ে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র সম্মুখে দাঁড়াতে নিস্তব্ধ নিশিত রাত্রির নিরবতার মাঝে। তবে এ ব্যাপারে খুব বেশী কঠোরতা অবলম্বন করতে নিষেধ করা হয়েছে, যার উল্লেখ করা হয়েছে পরবর্তী আয়াতে।
আয়াতঃ 073.002
রাত্রিতে দন্ডায়মান হোন কিছু অংশ বাদ দিয়ে;
Stand (to pray) all night, except a little.
قُمِ اللَّيْلَ إِلَّا قَلِيلًا
Qumi allayla illa qaleelan
YUSUFALI: Stand (to prayer) by night, but not all night,-
PICKTHAL: Keep vigil the night long, save a little –
SHAKIR: Rise to pray in the night except a little,
KHALIFA: Meditate during the night, except rarely.
২। রাত্রিতে [ নামাজে] দাড়াও, কিন্তু সমস্ত রাত্রি নয়, ৫৭৫৫
৫৭৫৫। রাসুল (সা) তার নবুয়ত লাভের পূর্বে এবং পরে হেরা পর্বতের গুহায় কঠোর আধ্যাত্মিক ধ্যানে নিমগ্ন থাকতেন। তিনি দিবা রাত্র গভীর ধ্যানে নিমগ্ন থাকতেন। এভাবেই মধ্যরাত্রি ও মধ্য রাত্রির পরবর্তী প্রার্থনা ” তাহাজ্জুতের নামাজ ” নামে পরিচিত হয়। দেখুন নীচের ২০ নং আয়াত ও [ ১৭: ৭৯ ] নং আয়াত।
আয়াতঃ 073.003
অর্ধরাত্রি অথবা তদপেক্ষা কিছু কম
Half of it, or a little less than that,
نِصْفَهُ أَوِ انقُصْ مِنْهُ قَلِيلًا
Nisfahu awi onqus minhu qaleelan
YUSUFALI: Half of it,- or a little less,
PICKTHAL: A half thereof, or abate a little thereof
SHAKIR: Half of it, or lessen it a little,
KHALIFA: Half of it, or a little less.
৩। অর্ধরাত্রি অথবা তদপেক্ষা কম,
৪। অথবা, তদপেক্ষা বেশী, এবং কুর-আন আবৃত্তি কর ধীরে ধীরে, সুরেলা কন্ঠে। ৫৭৫৬
৫৭৫৬। যে সময়ে এই সূরাটি অবতীর্ণ হয়, সম্ভবতঃ সে সময়ে শুধুমাত্র ৯৬ নং সূরা ৬৮ নং সূরা সম্ভবতঃ ৭৪ নং সূরা এবং সূরা আল্- হামদ্ সূরা বিদ্যমান ছিলো। বর্তমানে আমাদের সম্মুখে সম্পূর্ণ কোরাণ মহাগ্রন্থ উপস্থাপন করা হয়েছে। লক্ষ্য করুন সামান্য কয়েকটি সূরা যখন বিদ্যমান তখনই সাবধান করা হয়েছে যে, কোরাণ যেনো কেউ তাড়াহুড়ো করে না পড়ে – যেমন আমাদের অনেকে গর্বের সাথে বলে থাকেন যে, সে রমজানে ৩-৪ বার কোরাণ খতম করেছে। না বুঝে, না অনুধাবন করে, শুধুমাত্র দ্রুত পড়ে যাওয়ার মাঝে কোনও পূণ্য নাই। কোরাণ আবৃত্তি করতে হবে, ধীরে ধীরে,স্পষ্ট ও সুন্দর সুরেলাভাবে যেনো এই বাণীর উপদেশ ও মর্মবাণী আত্মার অন্তঃস্থলে প্রবেশের সুযোগ লাভ করে। দ্রুত ও তাড়াহুড়ো করে অর্থ না বুঝে পড়লে তার কোন প্রতিক্রিয়াই চরিত্রে প্রতিফলিত হয় না। অর্থ না বুঝে কোরাণ তেলাওয়াত মূল্যহীন। কোরাণের আয়াতগুলি ভাষা ও ছন্দে এতই সুন্দর যে তা আবেগের সাথে সুরেলা ধ্বনিতে পড়তে হবে। এতে রয়েছে এক অপূর্ব মাধুর্য এবং বিন্যাসে রয়েছে বিশেষ ধরণের বর্ণাঢ্যতা যা আত্মাকে করে সমৃদ্ধ। এর অভ্যন্তরভাগে সেরূপ রয়েছে আত্মার জন্য সীমাহীন স্নিগ্ধ ফল্গুধারা।
মন্তব্য : সঙ্গীতের সুর মানুষের মনোজগতে বিশেষ প্রভাব ফেলতে সক্ষম। সে কারণেই সঙ্গীতের সুরে কুর-আন পড়তে বলা হয়েছে, আজান হবে সুরেলা ভাবে। সে কারণেই আল্লাহ দাউদ নবীকে বিশেষ সঙ্গীত প্রতিভা দান করেছিলেন। তাঁর সঙ্গীতে পাহাড় প্রতিধ্বনি করতো, পাখীরা গান করতো, সঙ্গীত প্রতিভা আল্লাহ্র বিশেষ দান। মানুষের মনোজগতকে সমৃদ্ধ করার জন্য- তবে সে সঙ্গীত হতে হবে রুচীসমৃদ্ধ আত্মার জন্য স্নিগ্ধ সীমাহীন স্নিগ্ধ ফাল্গুধারার মত।
অতএব আরবীর সাথে সাথে মাতৃভাষাতে কোরাণ পাঠ করতে হবে যেনো এর উপদেশ স্ব জীবনে প্রতিফলিত করার সুযোগ ঘটে। [২১:৭৯] [৩৪:১০] [৩৮:১৮] [৩৮:১৯]
আয়াতঃ 073.004
অথবা তদপেক্ষা বেশী এবং কোরআন আবৃত্তি করুন সুবিন্যস্ত ভাবে ও স্পষ্টভাবে।
Or a little more; and recite the Qur’ân (aloud) in a slow, (pleasant tone and) style .
أَوْ زِدْ عَلَيْهِ وَرَتِّلِ الْقُرْآنَ تَرْتِيلًا
Aw zid AAalayhi warattili alqur-ana tarteelan
YUSUFALI: Or a little more; and recite the Qur’an in slow, measured rhythmic tones.
PICKTHAL: Or add (a little) thereto – and chant the Qur’an in measure,
SHAKIR: Or add to it, and recite the Quran as it ought to be recited.
KHALIFA: Or a little more. And read the Quran from cover to cover.
৩। অর্ধরাত্রি অথবা তদপেক্ষা কম,
৪। অথবা, তদপেক্ষা বেশী, এবং কুর-আন আবৃত্তি কর ধীরে ধীরে, সুরেলা কন্ঠে। ৫৭৫৬
৫৭৫৬। যে সময়ে এই সূরাটি অবতীর্ণ হয়, সম্ভবতঃ সে সময়ে শুধুমাত্র ৯৬ নং সূরা ৬৮ নং সূরা সম্ভবতঃ ৭৪ নং সূরা এবং সূরা আল্- হামদ্ সূরা বিদ্যমান ছিলো। বর্তমানে আমাদের সম্মুখে সম্পূর্ণ কোরাণ মহাগ্রন্থ উপস্থাপন করা হয়েছে। লক্ষ্য করুন সামান্য কয়েকটি সূরা যখন বিদ্যমান তখনই সাবধান করা হয়েছে যে, কোরাণ যেনো কেউ তাড়াহুড়ো করে না পড়ে – যেমন আমাদের অনেকে গর্বের সাথে বলে থাকেন যে, সে রমজানে ৩-৪ বার কোরাণ খতম করেছে। না বুঝে, না অনুধাবন করে, শুধুমাত্র দ্রুত পড়ে যাওয়ার মাঝে কোনও পূণ্য নাই। কোরাণ আবৃত্তি করতে হবে, ধীরে ধীরে,স্পষ্ট ও সুন্দর সুরেলাভাবে যেনো এই বাণীর উপদেশ ও মর্মবাণী আত্মার অন্তঃস্থলে প্রবেশের সুযোগ লাভ করে। দ্রুত ও তাড়াহুড়ো করে অর্থ না বুঝে পড়লে তার কোন প্রতিক্রিয়াই চরিত্রে প্রতিফলিত হয় না। অর্থ না বুঝে কোরাণ তেলাওয়াত মূল্যহীন। কোরাণের আয়াতগুলি ভাষা ও ছন্দে এতই সুন্দর যে তা আবেগের সাথে সুরেলা ধ্বনিতে পড়তে হবে। এতে রয়েছে এক অপূর্ব মাধুর্য এবং বিন্যাসে রয়েছে বিশেষ ধরণের বর্ণাঢ্যতা যা আত্মাকে করে সমৃদ্ধ। এর অভ্যন্তরভাগে সেরূপ রয়েছে আত্মার জন্য সীমাহীন স্নিগ্ধ ফল্গুধারা।
মন্তব্য : সঙ্গীতের সুর মানুষের মনোজগতে বিশেষ প্রভাব ফেলতে সক্ষম। সে কারণেই সঙ্গীতের সুরে কুর-আন পড়তে বলা হয়েছে, আজান হবে সুরেলা ভাবে। সে কারণেই আল্লাহ দাউদ নবীকে বিশেষ সঙ্গীত প্রতিভা দান করেছিলেন। তাঁর সঙ্গীতে পাহাড় প্রতিধ্বনি করতো, পাখীরা গান করতো, সঙ্গীত প্রতিভা আল্লাহ্র বিশেষ দান। মানুষের মনোজগতকে সমৃদ্ধ করার জন্য- তবে সে সঙ্গীত হতে হবে রুচীসমৃদ্ধ আত্মার জন্য স্নিগ্ধ সীমাহীন স্নিগ্ধ ফাল্গুধারার মত।
অতএব আরবীর সাথে সাথে মাতৃভাষাতে কোরাণ পাঠ করতে হবে যেনো এর উপদেশ স্ব জীবনে প্রতিফলিত করার সুযোগ ঘটে। [২১:৭৯] [৩৪:১০] [৩৮:১৮] [৩৮:১৯]
আয়াতঃ 073.005
আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি গুরুত্বপূর্ণ বাণী।
Verily, We shall send down to you a weighty Word (i.e. obligations, legal laws, etc.).
إِنَّا سَنُلْقِي عَلَيْكَ قَوْلًا ثَقِيلًا
Inna sanulqee AAalayka qawlan thaqeelan
YUSUFALI: Soon shall We send down to thee a weighty Message.
PICKTHAL: For we shall charge thee with a word of weight.
SHAKIR: Surely We will make to light upon you a weighty Word.
KHALIFA: We will give you a heavy message.
৫। শীঘ্রই আমি তোমাকে প্রেরণ করবো গুরুভার বাণী [ ওহী ]। ৫৭৫৭
৫৭৫৭। ”প্রেরণ করবো ” – অর্থাৎ ধীরে ধীরে কোরাণকে সম্পূর্ণরূপে প্রেরণ করা হবে Fatra বা বিরতির কালের পর।
আয়াতঃ 073.006
নিশ্চয় এবাদতের জন্যে রাত্রিতে উঠা প্রবৃত্তি দলনে সহায়ক এবং স্পষ্ট উচ্চারণের অনুকূল।
Verily, the rising by night (for Tahajjud prayer) is very hard and most potent and good for governing (the soul), and most suitable for (understanding) the Word (of Allâh).
إِنَّ نَاشِئَةَ اللَّيْلِ هِيَ أَشَدُّ وَطْءًا وَأَقْوَمُ قِيلًا
Inna nashi-ata allayli hiya ashaddu wat-an waaqwamu qeelan
YUSUFALI: Truly the rising by night is most potent for governing (the soul), and most suitable for (framing) the Word (of Prayer and Praise).
PICKTHAL: Lo! the vigil of the night is (a time) when impression is more keen and speech more certain.
SHAKIR: Surely the rising by night is the firmest way to tread and the best corrective of speech.
KHALIFA: The meditation at night is more effective, and more righteous.
৬। প্রকৃত পক্ষে, [ ঘুম থেকে ] রাত্রিতে উত্থান [ আত্মার ] শাসনের জন্য অত্যন্ত ক্ষমতা সম্পন্ন, এবং [ প্রার্থনার ] শব্দ চয়নের জন্য উপযুক্ত [ সময় ]। ৫৭৫৮
৫৭৫৮। আল্লাহ্র নিকট প্রার্থনা ও আল্লাহ্র নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য নিশিত রাত্রির নিরবতা অপেক্ষা অধিক ভালো আর কোন সময় ? নিশিত রাত্রিতে বিরাজ করে স্তব্ধতা যা মনের উপরে প্রশান্তির প্রলেপ প্রদান করে। সমগ্র বিশ্ব সুপ্তির কোলে ঢলে পড়ে, নগরের কোলাহল হয় স্তব্ধ, শুধু সীমাহীন আকাশের নক্ষত্ররাজি জেগে থাকে মানব আত্মাকে অনন্ত বিশ্বলোকের সীমাহীনতাকে উপলব্ধিতে সাহায্য করার জন্য। কিন্তু রাত্রির নিদ্রা থেকে এবাদতের উদ্দেশ্যে জাগ্রত হওয়া কঠিন। প্রবৃত্তিকে প্রদমিত করেই তা সম্ভব হয়, তখন যা কিছু বলা হয় বা আবৃত্তি করা হয় তা হৃদয় থেকে উৎসারিত হয়। আর সে সময় পূর্ণ মনোযোগের সাথে এবাদত করা যায়
আয়াতঃ 073.007
নিশ্চয় দিবাভাগে রয়েছে আপনার দীর্ঘ কর্মব্যস্ততা।
Verily, there is for you by day prolonged occupation with ordinary duties,
إِنَّ لَكَ فِي اَلنَّهَارِ سَبْحًا طَوِيلًا
Inna laka fee alnnahari sabhan taweelan
YUSUFALI: True, there is for thee by day prolonged occupation with ordinary duties:
PICKTHAL: Lo! thou hast by day a chain of business.
SHAKIR: Surely you have in the day time a long occupation.
KHALIFA: You have a lot of time during the day for other matters.
৭। প্রকৃত পক্ষে, দিবাভাগে তোমার জন্য রয়েছে কর্তব্য এবং দীর্ঘ কর্মব্যস্ততা। ৫৭৫৯
৫৭৫৯। বিশ্ব নবীকেও (সা) সাধারণ মানুষের মতন সকল কর্তব্য ও দায়িত্ব সমাধা করতে হতো। একাধারে তিনি ছিলেন সাধক, প্রচারক, গৃহী, সংগঠক,সামাজিক কর্তব্যজ্ঞান সম্পন্ন নাগরিক, ইত্যাদি ফলে বহুবিধ দায়িত্ব প্রতিদিন তাঁকে সমাধা করতে হতো। সর্বাপেক্ষা কঠিন দায়িত্ব ছিলো তাঁর অনুসারীদের প্রতি যারা তাঁর ধর্মের বাণী অন্তরে গ্রহণ করেছিলেন। তাদের বিধর্মীদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করার কর্তব্য। দিবাভাগের এই দীর্ঘ কর্মব্যস্ততার পরে, রাতের নীরবতা হবে আল্লাহর সম্মুখে দাঁড়ানোর জন্য সুরক্ষিত। তবে এ কথা সর্বদা স্মরণ রাখতে হবে যে, দিন রাত্রির কোনও সময়েই যেনো আত্মা আল্লাহ্র স্মরণ বিমুখ না হয়। দিবসের সকল কর্তব্যের অবসানের পরে রাত্রির নিস্তব্ধতার মাঝে আল্লাহ্কে স্মরণ করতে হবে, একনিষ্ঠভাবে ও একান্ত নিমগ্ন ভাবে। এই আদেশ মহাপ্রভুর নিকট থেকে বিশ্ব মানবের জন্য। তা রাসুলের (সা) জন্য যেরূপ প্রযোজ্য, বিশ্ব মানবের জন্য তা সমভাবে প্রযোজ্য।
আয়াতঃ 073.008
আপনি আপনার পালনকর্তার নাম স্মরণ করুন এবং একাগ্রচিত্তে তাতে মগ্ন হোন।
And remember the Name of your Lord and devote yourself to Him with a complete devotion.
وَاذْكُرِ اسْمَ رَبِّكَ وَتَبَتَّلْ إِلَيْهِ تَبْتِيلًا
Waothkuri isma rabbika watabattal ilayhi tabteelan
YUSUFALI: But keep in remembrance the name of thy Lord and devote thyself to Him whole-heartedly.
PICKTHAL: So remember the name of thy Lord and devote thyself with a complete devotion –
SHAKIR: And remember the name of your Lord and devote yourself to Him with (exclusive) devotion.
KHALIFA: You shall commemorate the name of your Lord, to come ever closer and closer to Him.
৮। সুতারাং তুমি তোমার প্রভুর নাম স্মরণ কর এবং তাঁর প্রতি সর্বান্তঃকরণে নিজেকে উৎসর্গ কর।
৯। [ তিনিই ] পূর্ব ও পশ্চিমের প্রভু ; তিনি ব্যতীত অন্য উপাস্য নাই। সুতারাং তাঁকেই গ্রহণ কর, [ তোমার ] কর্মবিধায়ক হিসেবে। ৫৭৬০।
১০। লোকে যা বলে, তাতে তুমি ধৈর্যধারণ কর, এবং সৌজন্য সহকারে তাদের পরিহার কর।
৫৭৬০। এই বিশাল বিশ্বভূবনের মালিক একমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহ্। তিনি এই মহাবিশ্বের শাসনকর্তা। তাঁর হুকুমেই সকল কিছু নিয়ন্ত্রিত হয়। সুতারাং দুষ্ট লোকদের চক্রান্তে কেউ যেনো, বিভ্রান্ত না হয়। আল্লাহ্র উপরে নির্ভর কর, তাঁর ক্ষমতাতে বিশ্বাস স্থাপন কর। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ন্যায় বিচারক। অন্যায় অবিচার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, আর তা হবে ধৈর্য্য ও সৌজন্য সহকারে। অর্থাৎ অন্যায়কারীকে বুঝতে দেবে যে, তুমি তাদের কর্মে ভীত নও, কারণ তোমার সকল নির্ভরশীলতা সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র উপরে। এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, পূর্ব ও পশ্চিমের অধিকর্তা আল্লাহ্। বাক্যটিকে সঙ্কীনার্থে চিন্তা করার সুযোগ নাই। এখানে পূর্ব পশ্চিম দ্বারা সমগ্র পৃথিবীকে বুঝানো হয়েছে। যদি আমরা উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু থেকে রেখা টেনে পৃথিবীটাকে পূর্ব ও পশ্চিম গোলার্ধ রূপে দু অংশে বিভক্ত করি তবে এই দুই অংশে সম্পূর্ণ পৃথিবী এসে যায়। দেখুন আয়াত [ ২ : ১১৫ ]।
আয়াতঃ 073.009
তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের অধিকর্তা। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব, তাঁকেই গ্রহণ করুন কর্মবিধায়করূপে।
(He Alone is) the Lord of the east and the west, Lâ ilâha illa Huwa (none has the right to be worshipped but He). So take Him Alone as Wakîl (Disposer of your affairs) .
رَبُّ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ فَاتَّخِذْهُ وَكِيلًا
Rabbu almashriqi waalmaghribi la ilaha illa huwa faittakhithhu wakeelan
YUSUFALI: (He is) Lord of the East and the West: there is no god but He: take Him therefore for (thy) Disposer of Affairs.
PICKTHAL: Lord of the East and the West; there is no Allah save Him; so choose thou Him alone for thy defender –
SHAKIR: The Lord of the East and the West– there is no god but He– therefore take Him for a protector.
KHALIFA: Lord of the east and the west; there is no other god beside Him. You should choose Him as your advocate.
৮। সুতারাং তুমি তোমার প্রভুর নাম স্মরণ কর এবং তাঁর প্রতি সর্বান্তঃকরণে নিজেকে উৎসর্গ কর।
৯। [ তিনিই ] পূর্ব ও পশ্চিমের প্রভু ; তিনি ব্যতীত অন্য উপাস্য নাই। সুতারাং তাঁকেই গ্রহণ কর, [ তোমার ] কর্মবিধায়ক হিসেবে। ৫৭৬০।
১০। লোকে যা বলে, তাতে তুমি ধৈর্যধারণ কর, এবং সৌজন্য সহকারে তাদের পরিহার কর।
৫৭৬০। এই বিশাল বিশ্বভূবনের মালিক একমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহ্। তিনি এই মহাবিশ্বের শাসনকর্তা। তাঁর হুকুমেই সকল কিছু নিয়ন্ত্রিত হয়। সুতারাং দুষ্ট লোকদের চক্রান্তে কেউ যেনো, বিভ্রান্ত না হয়। আল্লাহ্র উপরে নির্ভর কর, তাঁর ক্ষমতাতে বিশ্বাস স্থাপন কর। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ন্যায় বিচারক। অন্যায় অবিচার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, আর তা হবে ধৈর্য্য ও সৌজন্য সহকারে। অর্থাৎ অন্যায়কারীকে বুঝতে দেবে যে, তুমি তাদের কর্মে ভীত নও, কারণ তোমার সকল নির্ভরশীলতা সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র উপরে। এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, পূর্ব ও পশ্চিমের অধিকর্তা আল্লাহ্। বাক্যটিকে সঙ্কীনার্থে চিন্তা করার সুযোগ নাই। এখানে পূর্ব পশ্চিম দ্বারা সমগ্র পৃথিবীকে বুঝানো হয়েছে। যদি আমরা উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু থেকে রেখা টেনে পৃথিবীটাকে পূর্ব ও পশ্চিম গোলার্ধ রূপে দু অংশে বিভক্ত করি তবে এই দুই অংশে সম্পূর্ণ পৃথিবী এসে যায়। দেখুন আয়াত [ ২ : ১১৫ ]।
আয়াতঃ 073.010
কাফেররা যা বলে, তজ্জন্যে আপনি সবর করুন এবং সুন্দরভাবে তাদেরকে পরিহার করে চলুন।
And be patient (O Muhammad SAW) with what they say, and keep away from them in a good way.
وَاصْبِرْ عَلَى مَا يَقُولُونَ وَاهْجُرْهُمْ هَجْرًا جَمِيلًا
Waisbir AAala ma yaqooloona waohjurhum hajran jameelan
YUSUFALI: And have patience with what they say, and leave them with noble (dignity).
PICKTHAL: And bear with patience what they utter, and part from them with a fair leave-taking.
SHAKIR: And bear patiently what they say and avoid them with a becoming avoidance.
KHALIFA: And remain steadfast in the face of their utterances, and disregard them in a nice manner.
৮। সুতারাং তুমি তোমার প্রভুর নাম স্মরণ কর এবং তাঁর প্রতি সর্বান্তঃকরণে নিজেকে উৎসর্গ কর।
৯। [ তিনিই ] পূর্ব ও পশ্চিমের প্রভু ; তিনি ব্যতীত অন্য উপাস্য নাই। সুতারাং তাঁকেই গ্রহণ কর, [ তোমার ] কর্মবিধায়ক হিসেবে। ৫৭৬০।
১০। লোকে যা বলে, তাতে তুমি ধৈর্যধারণ কর, এবং সৌজন্য সহকারে তাদের পরিহার কর।
৫৭৬০। এই বিশাল বিশ্বভূবনের মালিক একমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহ্। তিনি এই মহাবিশ্বের শাসনকর্তা। তাঁর হুকুমেই সকল কিছু নিয়ন্ত্রিত হয়। সুতারাং দুষ্ট লোকদের চক্রান্তে কেউ যেনো, বিভ্রান্ত না হয়। আল্লাহ্র উপরে নির্ভর কর, তাঁর ক্ষমতাতে বিশ্বাস স্থাপন কর। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ন্যায় বিচারক। অন্যায় অবিচার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, আর তা হবে ধৈর্য্য ও সৌজন্য সহকারে। অর্থাৎ অন্যায়কারীকে বুঝতে দেবে যে, তুমি তাদের কর্মে ভীত নও, কারণ তোমার সকল নির্ভরশীলতা সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র উপরে। এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, পূর্ব ও পশ্চিমের অধিকর্তা আল্লাহ্। বাক্যটিকে সঙ্কীনার্থে চিন্তা করার সুযোগ নাই। এখানে পূর্ব পশ্চিম দ্বারা সমগ্র পৃথিবীকে বুঝানো হয়েছে। যদি আমরা উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু থেকে রেখা টেনে পৃথিবীটাকে পূর্ব ও পশ্চিম গোলার্ধ রূপে দু অংশে বিভক্ত করি তবে এই দুই অংশে সম্পূর্ণ পৃথিবী এসে যায়। দেখুন আয়াত [ ২ : ১১৫ ]।
আয়াতঃ 073.011
বিত্ত-বৈভবের অধিকারী মিথ্যারোপকারীদেরকে আমার হাতে ছেড়ে দিন এবং তাদেরকে কিছু অবকাশ দিন।
And leave Me Alone to deal with the beliers (those who deny My Verses, etc.), and those who are in possession of good things of life. And give them respite for a little while.
وَذَرْنِي وَالْمُكَذِّبِينَ أُولِي النَّعْمَةِ وَمَهِّلْهُمْ قَلِيلًا
Watharnee waalmukaththibeena olee alnnaAAmati wamahhilhum qaleelan
YUSUFALI: And leave Me (alone to deal with) those in possession of the good things of life, who (yet) deny the Truth; and bear with them for a little while.
PICKTHAL: Leave Me to deal with the deniers, lords of ease and comfort (in this life); and do thou respite them awhile.
SHAKIR: And leave Me and the rejecters, the possessors of ease and plenty, and respite them a little.
KHALIFA: And let Me deal with the rejectors, who have been generously blessed; just give them a little time.
১১। যারা বিলাস সামগ্রীর অধিকারী কিন্তু [ তবুও ] সত্য প্রত্যাখানকারী [ তাদের সাথে বোঝা পড়ার] ব্যাপারটি তুমি আমার উপরেই ছেড়ে দাও ৫৭৬১। কিছুকালের জন্য তাদের সাথে ধৈর্য ধারণ কর।
৫৭৬১। পৃথিবীতে সকলে সমান ভাগ্য নিয়ে জন্মগ্রহণ করে না। কেউ জন্মসূত্রে ভাগ্যবান, কেউ কর্মসূত্রে ভাগ্যবান। এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, পার্থিব জীবনে, সম্পদ, ক্ষমতা, মেধা, প্রতিভা ইত্যাদি যে যাই-ই ভোগ করুক না কেন, সকল সময়ে স্মরণ রাখতে হবে যে, এ সকলই পরম করুণাময় আল্লাহ্র দান। এ জন্য সর্বদা আল্লাহ্র নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে। যদি কেউ অকৃতজ্ঞ হয় এবং আল্লাহ্র শত্রুরূপে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে, তবে তার মোকাবিলা করবেন স্বয়ং আল্লাহ্।
আয়াতঃ 073.012
নিশ্চয় আমার কাছে আছে শিকল ও অগ্নিকুন্ড।
Verily, with Us are fetters (to bind them), and a raging Fire.
إِنَّ لَدَيْنَا أَنكَالًا وَجَحِيمًا
Inna ladayna ankalan wajaheeman
YUSUFALI: With Us are Fetters (to bind them), and a Fire (to burn them),
PICKTHAL: Lo! with Us are heavy fetters and a raging fire,
SHAKIR: Surely with Us are heavy fetters and a flaming fire,
KHALIFA: We have severe punishments, and Hell.
১২। আমার নিকট আছে শৃঙ্খল ৫৭৬২ [ বাঁধার জন্য ] এবং আগুন [ পোড়ানোর জন্য ] ৫৭৬৩।
৫৭৬২। শৃঙ্খল হচ্ছে বন্দীত্বের প্রতীক। কারারুদ্ধ বন্দীদের যখন কারাগারের বাইরে আনা হয়, তখন তারা যাতে পালিয়ে যেতে না পারে, সে কারণে শৃঙ্খল দ্বারা তাদের হস্ত ও পদযুগল বেধে তাদের চলাচলের স্বাধীনতা হরণ করা হয়। এই উপমার সাহায্যে পাপীদের আত্মিক অবস্থানকে প্রকাশ করা হয়েছে। পাপ কাজ ক্রমান্বয়ে ধীরে ধীরে পাপীদের বিবেককে আচ্ছন্ন করে ফেলে। ফলে তারা বিবেকের স্বাধীনতা হারায় ও এক সময়ে তাদের বিবেক অসাড় হয়ে পড়ে। শৃঙ্খলের জন্য দেখুন নিম্নলিখিত আয়াত সমূহ [ ১৩ : ৫ ] ; [ ৩৪ : ৩৩ ] ; [ ৪০ : ৭১ ] ; এবং [ ৬৯: ৩০-৩২ ] ও এদের টিকা সমূহ।
৫৭৬৩। পাপের আর একটি উপমা দান করা হয়েছে প্রজ্জ্বলিত অগ্নি। যে আগুন তাদের আত্মার অন্তঃস্থল পর্যন্ত দহন করে ফেলবে। পাপের বিকৃতি তাদের চোখে মনে হবে মনোহর। ফলে পাপ কাজের প্রতি তাদের গভীর আসক্তি জন্মাবে। কিন্তু এ কাজ তার মনে শান্তির পরিবর্তে অশান্তি নিয়ে আসবে। যার ফলে তার মনের সকল সুক্ষ অনুভূতি ও কোমল প্রবৃত্তি লোপ পেতে থাকবে। তার সকল মানসিক দক্ষতা সমূহ, সৃজনশীল ক্ষমতা সমূহ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে পড়বে। কাঠ যেরূপ আগুনে পুড়ে ছাইতে পরিণত হয়। পাপ কাজও সেরূপ আত্মার সকল গুণাবলী ধ্বংস করে বিকৃত করে ফেলে। আত্মার এই পরিণতিকেই আগুনের উপমার সাহায্যে উপস্থাপন করা হয়েছে। দেখুন [ ৪৪ : ৪৭ ] এবং [ ৫৬ : ৯৪ ] আয়াত সমূহ।
আয়াতঃ 073.013
গলগ্রহ হয়ে যায় এমন খাদ্য এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
And a food that chokes, and a painful torment.
وَطَعَامًا ذَا غُصَّةٍ وَعَذَابًا أَلِيمًا
WataAAaman tha ghussatin waAAathaban aleeman
YUSUFALI: And a Food that chokes, and a Penalty Grievous.
PICKTHAL: And food which choketh (the partaker), and a painful doom
SHAKIR: And food that chokes and a painful punishment,
KHALIFA: Food that can hardly be swallowed, and painful retribution.
১৩। আর আছে এমন খাদ্য, যা গলায় আটকিয়ে যায় ৫৭৬৪, এবং ভয়াবহ শাস্তি। ৫৭৬৫।
৫৭৬৪। পাপ কাজের ক্ষুধা অগ্নির ন্যায়। তা বাধাগ্রস্থ না হলে অগ্নির ন্যায় তার উত্তোরোতর বৃদ্ধি ঘটতে থাকে। পুষ্টিকর খাfদ্য একজন সাধারণ মানুষের শারীরিক বৃদ্ধি সাধন করে থাকে। সুখাদ্য,খাদ্যনালী দিয়ে খুব সহজেই নেমে যায় পরিপাক যন্ত্রের দ্বারা হজম হয়ে শরীরকে সতেজ করে। ঠিক সেরূপ হচ্ছে পূণ্যাত্মাদের কর্ম যা আত্মাকে করে সতেজ ও সবল। অপরপক্ষে পাপীদের কর্মকে তুলনা করা যায় অখাদ্য ও কুখাদ্যের সাথে। তাদের কর্মের পরিণাম তাদের অবস্থা হবে শ্বাসরুদ্ধকর। আত্মাকে সজীব, সতেজ করার পরিবর্তে তাদের শ্বাসরূদ্ধকর পরিস্থিতিতে ফেলবে। পরিতৃপ্তির পরিবর্তে তাদের মাঝে পাপের ক্ষুধা উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। দেখুন সূরা [ ৪৪ : ৪৩ ] ; [ ৫৬ : ৫২ ] ; [ ৬৯ : ৩৬ – ৩৭] এবং [ ৮৮ : ৫ ] আয়াত সমূহ।
৫৭৬৫। “ভয়াবহ শাস্তি ” শব্দটি দ্বারা সাধারণভাবে সকল শাস্তিকে বুঝানো হয়েছে। পাপের শাস্তি হবে ভয়াবহ – সেই নিদারুন যন্ত্রণা হবে তুলনাহীন। এই যন্ত্রণা অনেক সময়েই এই পৃথিবীতেই শুরু হয়ে যায়। যদি তা নাও হয়, তবে পরলোকের শাস্তি হবে অবশ্যাম্ভবী।
আয়াত ১২ এবং ১৩ তে শাস্তির বর্ণনা করা হয়েছে। শাস্তি শব্দটিকে ব্যপক অর্থে চিন্তা করলে বোঝা যায় যে, শৃঙ্খল শব্দটি দ্বারা শুধুমাত্র লৌহ শৃঙ্খল কল্পনা করা নিবুর্দ্ধিতা। এই শৃঙ্খল হচ্ছে আত্মার শৃঙ্খল যা পাপে ও কুসংস্কারে অভ্যস্থ হওয়ার দরুণ আত্মা তার বিশ্বাসের ও বিবেকের স্বাধীনতা হারায়। এ হচ্ছে আত্মার এক ধরণের যন্ত্রনা। দেখুন ৫৭৬২ টিকাতে উল্লেখিত টিকাসমূহ। একই ভাবে ভিন্ন আঙ্গিকে অগ্নিকে ব্যাখ্যা করা যায়। এখানে শাস্তির প্রথম ধাপে অত্যাচারিতকে রক্ষা করতে হবে অত্যাচারীর হাত থেকে। পৃথিবীর জীবনে আমরা অপরাধীকে বন্দী করে রাখি জেলখানাতে পরলোকের জীবনেও অপরাধীরা পাপ কাজ করার ক্ষমতা হারাবে। পরবর্তী ধাপে অপরাধীর মনে তার অপরাধ সম্বন্ধে অনুতাপের আগুন প্রজ্জ্বলিত করা হবে, যেনো তার হৃদয় থেকে অপরাধ করার স্বাভাবিক প্রবণতা অনুতাপের আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায় এবং অপরাধীর সুস্থ বিবেক জাগরিত হয়। যে বিবেক এতদিন পাপের শৃঙ্খলে আবদ্ধ থেকে মৃতপ্রায় হয়ে পড়েছিলো। আর একটি শাস্তির উল্লেখ করা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে যে, খাদ্য গলায় আটকে যাবে। সাধারণভাবে খাদ্য ও পানীয় মানুষের মনে তৃপ্তি ও সুখের অনুভূতির সৃষ্টি করে থাকে এবং শারীরিক প্রয়োজন মিটিয়ে শরীরকে শান্তি দান করে। সুতারাং খাদ্য ও খাদ্য গ্রহণের অনুভূতি সাধারণ মানুষের মনে সুখের অনুভূতির সৃষ্টি করে থাকে। পাপীদের শাস্তিকে অনুধাবন যোগ্য করার জন্য বলা হয়েছে যে, সুখাদ্য গ্রহণের তৃপ্তিকর ও সুখময় অনুভূতিকেও ভীতিজনক করে তোলা হবে। অর্থাৎ যে পাপ ও পাপের পরিণাম অপরাধীর নিকট সুখময় স্মৃতি ছিলো পার্থিব জীবনে সেই কার্য ও কার্যের পরিণাম তার নিকট হবে ভীতিজনক। গলাতে খাদ্য আটকে শ্বাসরুদ্ধ হওয়ার উপমার মাধ্যমে এই শাস্তিকে প্রকাশ করা হয়েছে। যাদের আধ্যাত্মিক জীবন অন্ধকারময়, আত্মা মৃতবৎ, তাদের মৃত আত্মাকে উজ্জ্বীবিত করার জন্য পার্থিব জীবনের উপমা সমূহ ব্যবহার করা হয়েছে। সম্ভবতঃ অভিজ্ঞতার আলোকে এই উপমা তাদের অন্ধকারময়, মৃতবৎ আত্মিক জগতে হঠাৎ আলোড়ন সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে। যদি এই বর্ণনার কিছুই তাদের চিন্তা ও চেতনাকে জাগাতে সক্ষম না হয়, তবে তাদের জন্য আছে ভয়াবহ শাস্তি ” যে শাস্তির ভয়াবহতা কল্পনা করা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়, যার বর্ণনা করা কোন লেখনীর পক্ষেও অসাধ্য।
আয়াতঃ 073.014
যেদিন পৃথিবী পর্বতমালা প্রকম্পিত হবে এবং পর্বতসমূহ হয়ে যাবে বহমান বালুকাস্তুপ।
On the Day when the earth and the mountains will be in violent shake, and the mountains will be a heap of sand poured out and flowing down.
يَوْمَ تَرْجُفُ الْأَرْضُ وَالْجِبَالُ وَكَانَتِ الْجِبَالُ كَثِيبًا مَّهِيلًا
Yawma tarjufu al-ardu waaljibalu wakanati aljibalu katheeban maheelan
YUSUFALI: One Day the earth and the mountains will be in violent commotion. And the mountains will be as a heap of sand poured out and flowing down.
PICKTHAL: On the day when the earth and the hills rock, and the hills become a heap of running sand.
SHAKIR: On the day when the earth and the mountains shall quake and the mountains shall become (as) heaps of sand let loose.
KHALIFA: The day will come when the earth and the mountains will quake, and the mountains will turn into a weightless pile.
১৪। যে দিন পৃথিবী ও পর্বতমালা ভীষণ ভাবে প্রকম্পিত হবে এবং পর্বত সমূহ বহমান বালুকাস্তুপে পরিণত হবে ৫৭৬৬
৫৭৬৬। কেয়ামত দিবসের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা এখানে করা হয়েছে। সেদিন সমগ্র বিশ্বজগত প্রকম্পিত হতে থাকবে, যার ফলে সারা বিশ্বের রূপ সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়ে যাবে। আমাদের এই চেনা পৃথিবী সম্পূর্ণ অচেনা পৃথিবীতে রূপান্তরিত হয়ে পড়বে। এই রূপান্তর সংক্ষিপ্ত একটি উপমার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। সুউচ্চ পর্বত হচ্ছে কাঠিন্য ও স্থায়ীত্বের প্রতীক। কঠিন শিলার স্তুপ, পর্বতকে করে তোলে দুর্গম ও চিরস্থায়ী। কেয়ামত দিবসে এসব সুউচ্চ, দুর্ভেদ্য,চিরস্থায়ী,কঠিন শিলাস্তুপের সম্পূর্ণ পরিবর্তন ঘটে যাবে। তারা পরিবর্তিত হয়ে যাবে বহমান বালুকারাশির ন্যায় – আকৃতিহীন, কাঠিন্যহীন বস্তুতে।
আয়াতঃ 073.015
আমি তোমাদের কাছে একজন রসূলকে তোমাদের জন্যে সাক্ষী করে প্রেরণ করেছি, যেমন প্রেরণ করেছিলাম ফেরাউনের কাছে একজন রসূল।
Verily, We have sent to you (O men) a Messenger (Muhammad SAW) to be a witness over you, as We did send a Messenger [Mûsa (Moses)] to Fir’aun (Pharaoh) .
إِنَّا أَرْسَلْنَا إِلَيْكُمْ رَسُولًا شَاهِدًا عَلَيْكُمْ كَمَا أَرْسَلْنَا إِلَى فِرْعَوْنَ رَسُولًا
Inna arsalna ilaykum rasoolan shahidan AAalaykum kama arsalna ila firAAawna rasoolan
YUSUFALI: We have sent to you, (O men!) a messenger, to be a witness concerning you, even as We sent a messenger to Pharaoh.
PICKTHAL: Lo! We have sent unto you a messenger as witness against you, even as We sent unto Pharaoh a messenger.
SHAKIR: Surely We have sent to you a Messenger, a witness against you, as We sent a messenger to Firon.
KHALIFA: We have sent to you a messenger, just as we sent to Pharaoh a messenger.
১৫। [ হে মানব কুল ] আমি তোমাদের নিকটে একজন রসুল প্রেরণ করেছি, যে তোমদের জন্য সাক্ষী স্বরূপ, ৫৭৬৭, যে রূপ রসুল পাঠিয়েছিলাম ফেরাউনের নিকট।
৫৭৬৭। আমাদের রাসুলকে (সা) প্রেরণ করা হয়েছিলো তাঁর যুগ অর্থাৎ বর্তমান যুগের মানব সম্প্রদায়কে সাবধান করার জন্য। কারণ তিনি হচ্ছেন সর্বশেষ নবী পৃথিবীর জন্য। তাঁকে প্রেরণ করা হয়েছিলো মানুষকে পাপ থেকে সাবধান করার জন্য সাক্ষীস্বরূপ। এই আয়াতে রাসুলের (সা) দায়িত্বকে তুলনা করা হয়েছে হযরত মুসার সাথে। ফেরাউনের উদ্ধতপনার শাস্তির বর্ণনা আছে সূরা [ ১০: ৭৫- ৯২ ] আয়াতে।
আয়াতঃ 073.016
অতঃপর ফেরাউন সেই রসূলকে অমান্য করল, ফলে আমি তাকে কঠিন শাস্তি দিয়েছি।
But Fir’aun (Pharaoh) disobeyed the Messenger [Mûsa (Moses)], so We seized him with a severe punishment.
فَعَصَى فِرْعَوْنُ الرَّسُولَ فَأَخَذْنَاهُ أَخْذًا وَبِيلًا
FaAAasa firAAawnu alrrasoola faakhathnahu akhthan wabeelan
YUSUFALI: But Pharaoh disobeyed the messenger; so We seized him with a heavy Punishment.
PICKTHAL: But Pharaoh rebelled against the messenger, whereupon We seized him with no gentle grip.
SHAKIR: But Firon disobeyed the messenger, so We laid on him a violent hold.
KHALIFA: Pharaoh disobeyed the messenger and, consequently, we punished him severely.
১৬। কিন্তু ফেরাউন রসুলকে অমান্য করেছিলো ৫৭৬৮; সুতারাং আমি তাকে কঠিন শাস্তি দ্বারা আক্রান্ত করেছিলাম।
৫৭৬৮। পৃথিবীর ক্ষমতাশালী নৃপতি ফেরাউন হযরত মুসাকে কিভাবে গ্রহণ করেছিলেন তারই বর্ণনা দেয়া হয়েছে এখানে। একই ঘটনা দৃষ্টিভঙ্গীর পার্থক্যের দরুন ঘটনার নৈতিক শিক্ষার পার্থক্য ঘটে থাকে। যেমন এখানে হযরত মুসার সাথে ফেরাউনের সাক্ষাৎকারের সময়ে ফেরাউনের ধারণা হলো যে, হযরত মুসা তার অবাধ্য হয়েছেন। কারণ পার্থিব সম্পদ ও ক্ষমতা তাঁকে গর্বিত ও অহংকারী করে তুলেছিলো। আবার সেই একই সাক্ষাৎকারকে আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে আল্লাহ্ বর্ণনা করেছেন যে ফেরাউন হযরত মুসাকে অমান্য করেছেন। পৃথিবীর প্রাচীন সভ্যতায় ফেরাউনের রাজত্বকাল এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। তাদের শক্তিশালী রাজত্ব ছিলো জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য, সংগঠন, ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু যা গর্ব ও অহংকার করার অধিকার রাখে। কিন্তু মুসার ফেরাউন ভুলে গিয়েছিলো যে, এ সকলের পিছনে রয়েছে একজন সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র অবদান। অপরপক্ষে হযরত মুসা যাদের পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন, তারা ছিলো অত্যাচারিত, অবদমিত, ক্রীতদাস শ্রেণীর লোক, যারা ফেরাউনের অত্যন্ত শ্রমসাধ্য এবং দাসোচিত কাজ করতো। যদিও এসব লোকের কোনও সম্পদ ও ক্ষমতা ছিলো না, কিন্তু এদের পিছনে ছিলো আল্লাহ্র বিশেষ অনুগ্রহ। ফেরাউনের জ্ঞান, ক্ষমতা, বিশাল সেনাদল যা ক্ষমতার প্রতীক, যা পৃথিবীকে ভয়ে ও শ্রদ্ধায় প্রকম্পিত করে তুলতো তা তুচ্ছ হয়ে গেলো আল্লাহ্র ক্ষমতার নিকট। আল্লাহ্র ক্ষমতা দর্শনে মানুষের মনে যে, বিষ্ময়, শ্রদ্ধা ভয়, উৎপাদন করবে তা তুলে ধরা হয়েছে একটি উপমার মাধ্যমে। সে ভয়ের তীব্রতা হবে এতটাই ভয়ংকর যে কিশোরের মাথার সকল চুল বৃদ্ধ ব্যক্তির ন্যায় সাদা হয়ে যাবে। অপরপক্ষে অন্য ভাবে বিষয়টিকে উপস্থাপন করা যায়, যে জাতি আল্লাহ্র বিধান সমূহ অমান্য করে থাকে শিশুর ন্যায় আচরণ করে সেই জাতি আল্লাহ্র রোষে পতিত হয়ে ধ্বংসের পূর্ব মূহুর্তে নিজ অবস্থান উপলব্ধিতে সক্ষম হয়ে পক্ককেশ জ্ঞানীর ন্যায় আচরণ করবে। আল্লাহ্র বিধান সমূহ চিরস্থায়ী এবং পরিপূর্ণতা লাভ করবে এবং অন্য সকল কিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে। ” আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।”
আয়াতঃ 073.017
অতএব, তোমরা কিরূপে আত্নরক্ষা করবে যদি তোমরা সেদিনকে অস্বীকার কর, যেদিন বালককে করে দিব বৃদ্ধ?
Then how can you avoid the punishment, if you disbelieve, on a Day that will make the children grey-headed (i.e. the Day of Resurrection)?
فَكَيْفَ تَتَّقُونَ إِن كَفَرْتُمْ يَوْمًا يَجْعَلُ الْوِلْدَانَ شِيبًا
Fakayfa tattaqoona in kafartum yawman yajAAalu alwildana sheeban
YUSUFALI: Then how shall ye, if ye deny (Allah), guard yourselves against a Day that will make children hoary-headed?-
PICKTHAL: Then how, if ye disbelieve, will ye protect yourselves upon the day which will turn children grey,
SHAKIR: How, then, will you guard yourselves, if you disbelieve, on the day which shall make children grey-headed?
KHALIFA: If you disbelieve, how can you evade a day so terrible that it makes the infants gray-haired?
১৭। যদি তুমি [আল্লাহ্কে ] অস্বীকার কর, তবে তুমি কিভাবে নিজেকে রক্ষা করবে সেদিন, যেদিন কিশোরকে পরিণত করবে বৃদ্ধে ? ৫৭৬৯
১৮। যে দিন আকাশ বিদীর্ণ হবে ? তাঁর [ সেদিনের ] প্রতিশ্রুতি অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।
৫৭৬৯। যদি তোমরা এই পৃথিবীর সংক্ষিপ্ত শিক্ষানবীশকালে আল্লাহ্র হুকুমকে অমান্য কর,তবে কিভাবে পরলোকের জীবনের শাস্তিকে মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে ? শেষ বিচারের দিনের ভয়াবহ শাস্তিকে দুইটি উপমার সাহায্যে প্রকাশ করা হয়েছে : ১) সেদিনের শাস্তির ভয়াবহতা এতটাই তীব্র ও সুতীক্ষ্ণ হবে যে, তা দর্শনে আতঙ্কিত কিশোরদেরও সকল চুল বৃদ্ধদের মত সাদাতে রূপান্তরিত হয়ে যাবে। ২) যে নিঃসীম নীল আকাশকে আমরা চিরদিন উদার ও মুক্তরূপে দেখে থাকি, সেদিন এই নীল আকাশও চৌচির হয়ে ফেটে যাবে। দেখুন সূরা [ ৮২: ১ ] আয়াত। সম্পূর্ণ বর্ণনাটিকে সংক্ষেপে এভাবে প্রকাশ করা যায় যে, মানুষের ভিতরের প্রকৃতি এবং বাইরের চেহারা বা রূপ সেদিন সম্পূর্ণরূপে বদলে যাবে, রূপান্তরিত হয়ে পড়বে। সেদিন জীবনের প্রকৃত মুল্যবোধকে সে অনুধাবনে সক্ষম হবে। “আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।”
আয়াতঃ 073.018
সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে। তার প্রতিশ্রুতি অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।
Whereon the heaven will be cleft asunder? His Promise is certainly to be accomplished.
السَّمَاء مُنفَطِرٌ بِهِ كَانَ وَعْدُهُ مَفْعُولًا
Alssamao munfatirun bihi kana waAAduhu mafAAoolan
YUSUFALI: Whereon the sky will be cleft asunder? His Promise needs must be accomplished.
PICKTHAL: The very heaven being then rent asunder. His promise is to be fulfilled.
SHAKIR: The heaven shall rend asunder thereby; His promise is ever brought to fulfillment.
KHALIFA: The heaven will shatter therefrom. His promise is true.
১৭। যদি তুমি [আল্লাহ্কে ] অস্বীকার কর, তবে তুমি কিভাবে নিজেকে রক্ষা করবে সেদিন, যেদিন কিশোরকে পরিণত করবে বৃদ্ধে ? ৫৭৬৯
১৮। যে দিন আকাশ বিদীর্ণ হবে ? তাঁর [ সেদিনের ] প্রতিশ্রুতি অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।
৫৭৬৯। যদি তোমরা এই পৃথিবীর সংক্ষিপ্ত শিক্ষানবীশকালে আল্লাহ্র হুকুমকে অমান্য কর,তবে কিভাবে পরলোকের জীবনের শাস্তিকে মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে ? শেষ বিচারের দিনের ভয়াবহ শাস্তিকে দুইটি উপমার সাহায্যে প্রকাশ করা হয়েছে : ১) সেদিনের শাস্তির ভয়াবহতা এতটাই তীব্র ও সুতীক্ষ্ণ হবে যে, তা দর্শনে আতঙ্কিত কিশোরদেরও সকল চুল বৃদ্ধদের মত সাদাতে রূপান্তরিত হয়ে যাবে। ২) যে নিঃসীম নীল আকাশকে আমরা চিরদিন উদার ও মুক্তরূপে দেখে থাকি, সেদিন এই নীল আকাশও চৌচির হয়ে ফেটে যাবে। দেখুন সূরা [ ৮২: ১ ] আয়াত। সম্পূর্ণ বর্ণনাটিকে সংক্ষেপে এভাবে প্রকাশ করা যায় যে, মানুষের ভিতরের প্রকৃতি এবং বাইরের চেহারা বা রূপ সেদিন সম্পূর্ণরূপে বদলে যাবে, রূপান্তরিত হয়ে পড়বে। সেদিন জীবনের প্রকৃত মুল্যবোধকে সে অনুধাবনে সক্ষম হবে। “আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।”
আয়াতঃ 073.019
এটা উপদেশ। অতএব, যার ইচ্ছা, সে তার পালনকর্তার দিকে পথ অবলম্বন করুক।
Verily, this is an admonition, therefore whosoever will, let him take a Path to His Lord!
إِنَّ هَذِهِ تَذْكِرَةٌ فَمَن شَاء اتَّخَذَ إِلَى رَبِّهِ سَبِيلًا
Inna hathihi tathkiratun faman shaa ittakhatha ila rabbihi sabeelan
YUSUFALI: Verily this is an Admonition: therefore, whoso will, let him take a (straight) path to his Lord!
PICKTHAL: Lo! This is a Reminder. Let him who will, then, choose a way unto his Lord.
SHAKIR: Surely this is a reminder, then let him, who will take the way to his Lord.
KHALIFA: This is a reminder; whoever wills, let him choose the path to his Lord.
১৯। অবশ্যই ইহা এক সতর্কবাণী ৫৭৭০; অতএব,যার ইচ্ছা, সে তার প্রভুর দিকের [ সরল ] পথ অবলম্বন করুক।
৫৭৭০। যে বর্ণনা এতক্ষণ করা হলো তা কোন মিথ্যা বা অসাড় বাগাড়ম্বর নয়। এই বর্ণনা হচ্ছে সতর্কবাণী – মানুষের কল্যাণের জন্য। যদি কেউ আল্লাহ্র নিকট প্রকৃত ক্ষমাপ্রার্থী হয় এবং আল্লাহ্র হেদায়েতের সুশীতল ছায়াতে আশ্রয় গ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করে, তবে সে তৎক্ষণাত আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভে সক্ষম হবে। এই হচ্ছে আল্লাহ্র বিধান বা আইন। অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধনের দ্বারা “সরল পথের” সন্ধান লাভ করা যায়, যা খুব দ্রুত আদম সন্তানকে আল্লাহ্র সান্নিধ্যে উপনীত করতে সক্ষম।
আয়াতঃ 073.020
আপনার পালনকর্তা জানেন, আপনি এবাদতের জন্যে দন্ডায়মান হন রাত্রির প্রায় দু’তৃতীয়াংশ, অর্ধাংশ ও তৃতীয়াংশ এবং আপনার সঙ্গীদের একটি দলও দন্ডায়মান হয়। আল্লাহ দিবা ও রাত্রি পরিমাপ করেন। তিনি জানেন, তোমরা এর পূর্ণ হিসাব রাখতে পার না। অতএব তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমা পরায়ন হয়েছেন। কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ, ততটুকু আবৃত্তি কর। তিনি জানেন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হবে, কেউ কেউ আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে দেশে-বিদেশে যাবে এবং কেউ কেউ আল্লাহর পথে জেহাদে লিপ্ত হবে। কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ ততটুকু আবৃত্তি কর। তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও। তোমরা নিজেদের জন্যে যা কিছু অগ্রে পাঠাবে, তা আল্লাহর কাছে উত্তম আকারে এবং পুরস্কার হিসেবে বর্ধিতরূপে পাবে। তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
Verily, your Lord knows that you do stand (to pray at night) a little less than two-thirds of the night, or half the night, or a third of the night, and so do a party of those with you, And Allâh measures the night and the day. He knows that you are unable to pray the whole night, so He has turned to you (in mercy). So, recite you of the Qur’ân as much as may be easy for you. He knows that there will be some among you sick, others travelling through the land, seeking of Allâh’s Bounty; yet others fighting in Allâh’s Cause. So recite as much of the Qur’ân as may be easy (for you), and perform As-Salât (Iqâmat-as-Salât) and give Zakât, and lend to Allâh a goodly loan, and whatever good you send before you for yourselves, (i.e. Nawâfil non-obligatory acts of worship: prayers, charity, fasting, Hajj and ’Umrah, etc.), you will certainly find it with Allâh, better and greater in reward. And seek Forgiveness of Allâh. Verily, Allâh is Oft-Forgiving, Most-Merciful.
إِنَّ رَبَّكَ يَعْلَمُ أَنَّكَ تَقُومُ أَدْنَى مِن ثُلُثَيِ اللَّيْلِ وَنِصْفَهُ وَثُلُثَهُ وَطَائِفَةٌ مِّنَ الَّذِينَ مَعَكَ وَاللَّهُ يُقَدِّرُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ عَلِمَ أَن لَّن تُحْصُوهُ فَتَابَ عَلَيْكُمْ فَاقْرَؤُوا مَا تَيَسَّرَ مِنَ الْقُرْآنِ عَلِمَ أَن سَيَكُونُ مِنكُم مَّرْضَى وَآخَرُونَ يَضْرِبُونَ فِي الْأَرْضِ يَبْتَغُونَ مِن فَضْلِ اللَّهِ وَآخَرُونَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَاقْرَؤُوا مَا تَيَسَّرَ مِنْهُ وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَأَقْرِضُوا اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا وَمَا تُقَدِّمُوا لِأَنفُسِكُم مِّنْ خَيْرٍ تَجِدُوهُ عِندَ اللَّهِ هُوَ خَيْرًا وَأَعْظَمَ أَجْرًا وَاسْتَغْفِرُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
Inna rabbaka yaAAlamu annaka taqoomu adna min thuluthayi allayli wanisfahu wathuluthahu wata-ifatun mina allatheena maAAaka waAllahu yuqaddiru allayla waalnnahara AAalima an lan tuhsoohu fataba AAalaykum faiqraoo ma tayassara mina alqur-ani AAalima an sayakoonu minkum marda waakharoona yadriboona fee al-ardi yabtaghoona min fadli Allahi waakharoona yuqatiloona fee sabeeli Allahi faiqraoo ma tayassara minhu waaqeemoo alssalata waatoo alzzakata waaqridoo Allaha qardan hasanan wama tuqaddimoo li-anfusikum min khayrin tajidoohu AAinda Allahi huwa khayran waaAAthama ajran waistaghfiroo Allaha inna Allaha ghafoorun raheemun
YUSUFALI: Thy Lord doth know that thou standest forth (to prayer) nigh two-thirds of the night, or half the night, or a third of the night, and so doth a party of those with thee. But Allah doth appoint night and day in due measure He knoweth that ye are unable to keep count thereof. So He hath turned to you (in mercy): read ye, therefore, of the Qur’an as much as may be easy for you. He knoweth that there may be (some) among you in ill-health; others travelling through the land, seeking of Allah’s bounty; yet others fighting in Allah’s Cause, read ye, therefore, as much of the Qur’an as may be easy (for you); and establish regular Prayer and give regular Charity; and loan to Allah a Beautiful Loan. And whatever good ye send forth for your souls ye shall find it in Allah’s Presence,- yea, better and greater, in Reward and seek ye the Grace of Allah: for Allah is Oft-Forgiving, Most Merciful.
PICKTHAL: Lo! thy Lord knoweth how thou keepest vigil sometimes nearly two-thirds of the night, or (sometimes) half or a third thereof, as do a party of those with thee. Allah measureth the night and the day. He knoweth that ye count it not, and turneth unto you in mercy. Recite, then, of the Qur’an that which is easy for you. He knoweth that there are sick folk among you, while others travel in the land in search of Allah’s bounty, and others (still) are fighting for the cause of Allah. So recite of it that which is easy (for you), and establish worship and pay the poor-due, and (so) lend unto Allah a goodly loan. Whatsoever good ye send before you for your souls, ye will find it with Allah, better and greater in the recompense. And seek forgiveness of Allah. Lo! Allah is Forgiving, Merciful.
SHAKIR: Surely your Lord knows that you pass in prayer nearly two-thirds of the night, and (sometimes) half of it, and (sometimes) a third of it, and (also) a party of those with you; and Allah measures the night and the day. He knows that you are not able to do it, so He has turned to you (mercifully), therefore read what is easy of the Quran. He knows that there must be among you sick, and others who travel in the land seeking of the bounty of Allah, and others who fight in Allah’s way, therefore read as much of it as is easy (to you), and keep up prayer and pay the poor-rate and offer to Allah a goodly gift, and whatever of good you send on beforehand for yourselves, you will find it with Allah; that is best and greatest in reward; and ask forgiveness of Allah; surely Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: Your Lord knows that you meditate during two-thirds of the night, or half of it, or one-third of it, and so do some of those who believed with you. GOD has designed the night and the day, and He knows that you cannot always do this. He has pardoned you. Instead, you shall read what you can of the Quran. He knows that some of you may be ill, others may be traveling in pursuit of GOD’s provisions, and others may be striving in the cause of GOD. You shall read what you can of it, and observe the contact prayers (Salat), give the obligatory charity (Zakat), and lend GOD a loan of righteousness. Whatever good you send ahead on behalf of your souls, you will find it at GOD far better and generously rewarded. And implore GOD for forgiveness. GOD is Forgiver, Most Merciful.
রুকু – ২
২০। তোমার প্রভু জানেন, যে তুমি কখনও রাতের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ, কখনও অর্দ্ধেক এবং কখনও রাতের এক তৃতীয়াংশ নামাজে দাঁড়িয়ে থাক ৫৭৭১, এবং যারা তোমার সাথে আছে তাদের একদলও [ দাঁড়িয়ে থাকে ]। কিন্তু আল্লাহ্-ই রাত্রি ও দিনকে উপযুক্ত পরিমাণে করেছেন। তিনি জানেন যে, তোমরা ইহা পুরোপুরি পালন করতে পারবে না ৫৭৭২। সুতারাং তিনি তোমাদের প্রতি দয়াপরবশ হয়েছেন কাজেই কুর-আনের যতটুকু আবৃত্তি করা সহজ, ততটুকু আবৃত্তি কর ৫৭৭৩। তিনি জানেন যে, তোমাদের মধ্যে কেহ কেহ অসুস্থ থাকবে, কেহ কেহ আল্লাহ্র অনুগ্রহ সন্ধানে দেশ ভ্রমণ করবে এবং কেহ কেহ আল্লাহ্র পথে সংগ্রামে লিপ্ত থাকবে ৫৭৭৪। কাজেই তোমরা কুর-আন থেকে যতটুকু সহজবোধ্য ততটুকু আবৃত্তি কর। এবং নিয়মিত নামাজ প্রতিষ্ঠা কর, এবং যাকাত প্রদান কর। এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ প্রদান কর ৫৭৭৫। তোমাদের আত্মার [ কল্যাণের ] জন্য ৫৭৭৬ যা কিছু ভালো কাজ অগ্রে প্রেরণ করবে, তোমরা তা আল্লাহ্র নিকটে পাবে। হ্যাঁ, তা হবে উৎকৃষ্টতর এবং পুরষ্কার হিসেবে মহত্তর। আল্লাহ্র করুণা ভিক্ষা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়। ৫৭৭৭
৫৭৭১। দেখুন পূর্বের আয়াত [ ৭৩ : ২ – ৪ ]। রাসুল (সা) ও তাঁর একান্ত অনুগত অনুসারীবৃন্দ অনেক সময়েই রাত্রির ঘুম ত্যাগ করে রাত্রির দুই তৃতীয়াংশ, অথবা অর্ধাংশ বা এক তৃতীয়াংশ প্রার্থনা এবং কোরাণ তেলাওয়াতে ব্যয় করতেন। অধিকাংশ রাত্রি তাহাজ্জুতের নামাজে ব্যয় করার দরুণ তাদের পদদ্বয় ফুলে যেতো এবং আদেশটি কষ্টসাধ্য প্রতীয়মান হয়। পূর্ণ এক বছর পর এই সূরার শেষাংশ অবতীর্ণ হলে দীর্ঘক্ষণ নামাজে দন্ডায়মান থাকার বাধ্যবাধকতা রহিত হয়ে যায়। যতক্ষণ নামাজ পড়া সহজ মনে হয়, ততক্ষণ নামাজ পড়াই তাহাজ্জুদের জন্য যথেষ্ট। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, যারা অসুস্থ, বা কেহ কার্য উপলক্ষে বিদেশে অবস্থান করলে বা কেহ আল্লাহ্র রাস্তায় সংগ্রামে ব্যস্ত থাকলে তাদের জন্য দীর্ঘক্ষণ তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার। সুতারাং তাহাজ্জুদের নামাজকে ‘ফরজ’ নামাজ না করে ব্যক্তির ইচ্ছার উপরে ন্যস্ত করা হয়।
৫৭৭২। ” তিনি জানেন যে তোমরা ইহা পুরোপুরি পালন করতে পারবে না।” আক্ষরিক অর্থে বলা যায় যে সাধারণ মানুষের পক্ষে রাত্রির বিভিন্ন অংশের সঠিক হিসাব রাখা সম্ভব নয়। কারণ দিন ও রাত্রির দৈর্ঘ্য বৎসরের বিভিন্ন সময়ে দিন ও রাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। এই হ্রাস-বৃদ্ধির সঠিক হিসাব রাখা শুধুমাত্র জ্যোতির্বিদদের পক্ষেই সম্ভব, যা সাধারণ মানুষের পক্ষে অসম্ভব ব্যাপার। সুতারাং আল্লাহ্ তা রহিত করে দেন। কিন্তু মওলানা ইউসুফ আলী মনে করেন আয়াতটির অর্থ অত্যন্ত ব্যপক ও গভীর। আল্লাহ্ দিন ও রাত্রিকে সৃষ্টি করেছেন, কাজ ও বিশ্রামের জন্য, যদিও ঋতু চক্রের বিভিন্ন সময়ে দিন ও রাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে থাকে। নামাজ ও প্রার্থনার জন্য রাত্রির ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পরিবর্তন লক্ষ্য করার প্রয়োজন নাই বা তা করা সম্ভবও নয়। আল্লাহ্র এবাদত বহুভাবেই করা সম্ভব যার বর্ণনা নিম্নে করা হয়েছে। কিন্তু শর্ত হচ্ছে আল্লাহ্র এবাদতের জন্য আমরা কিছুটা সময় ব্যয় করবো যা হবে আন্তরিক এবং আল্লাহ্র প্রতি একান্তভাবে অনুগত এবং সে সময়টি ব্যয় করা আমাদের জন্য হবে সহজ,সুবিধাজনক এবং বিভিন্ন পরিবেশগত সময়ে যেমন স্বাস্থ্যগত কারণে, দেশভ্রমণের সময়ে, বা বিভিন্ন কর্তব্য কর্মে লিপ্ত থাকার সময়ে সে সময় ব্যয় করা মানুষের পক্ষে দুঃসহ বলে মনে না হয়।
৫৭৭৩। ততটুকু আবৃত্তি কর।” কোরাণ পাঠ ধর্মীয় এবাদতের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই পাঠ যেনো হয় আনন্দদায়ক, সহজ এবং আনুগত্যের মাধ্যমে। দেখুন সূরা [ ২০ : ২ ] আয়াত যেখানে বলা হয়েছে, ” আপনাকে ক্লেশ দেবার জন্য আমি আপনার প্রতি কোরাণ অবতীর্ণ করি নাই।” সুতারাং কোরাণ পাঠ করতে হবে অর্থ বুঝে, আন্তরিক ভাবে,গভীর আবেগে, একাগ্রভাবে যেনো কোরাণের বাণীর উপদেশ বা হেদায়েত গ্রহণের ক্ষমতা আত্মার মাঝে জন্ম গ্রহণ করে এবং এই বাণীর পরশে হৃদয় হয় আপ্লুত, আলোকিত ও পুলকিত। অর্থ না বুঝে যান্ত্রিক ভাবে শুধুমাত্র আরবী ভাষাতে কোরাণ পাঠে আত্মার মাঝে এই অনুভব লাভ সম্ভব নয়।
৫৭৭৪। ” জিহাদ বা আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম ” অধিকাংশের মতামত হচ্ছে যে সূরাটির এই অংশ মুল সূরা অবতীর্ণ হওয়ার বহু পরে মদিনাতে অবতীর্ণ হয়। এই অংশে আনুশাসনিকভাবে সালাত কায়েম করা, যাকাত প্রদান করা এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ প্রদান করার কথা বলা হয়েছে যার থেকে দৃঢ় প্রত্যয় জন্মে সূরাটির এই অংশ মূল সূরার বহু পরে অবতীর্ণ হয়।
৫৭৭৫। দেখুন অনুরূপ আয়াত [ ২ : ২৪৫ ] ও টিকা ২৭৬ যেখানে উত্তম ঋণের অংশটির ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে। আরও দেখুন সূরা [ ৫৭ : ১৮ ] আয়াত। ” উত্তম ঋণ ” একটি প্রতীক ধর্মী বাক্য। এই বাক্যটি দ্বারা বুঝানো হয়েছে আল্লাহ্র রাস্তায় কাজ বা আল্লাহ্র সন্তুষ্টিলাভের জন্য কাজ করা। আল্লাহকে উত্তম ঋণ দিতে হবে আমাদেরই আত্মিক কল্যাণের জন্য। আল্লাহ্র তাতে কোনও লাভ নাই। এই ঋণের পরিবর্তে আমরা আল্লাহ্র নিকট থেকে পার্থিব বস্তু পুরষ্কার হিসেবে কামনা করতে পারি না। আল্লাহ্ আমাদের যা পুরষ্কার দিবেন তা হবে পার্থিব বস্তু থেকে বহুগুণে শ্রেষ্ঠ ও উন্নত। বাইবেলের ভাষ্য অনুযায়ী, “Hay up for yourselves treasures in heaven.” [ Matt vi 20]।
৫৭৭৬। পৃথিবীতে আমরা ভালো কাজ যাই-ই করি না কেন সে কাজের ধারাবাহিকতা, আমাদের আল্লাহ্র সম্মুখে জবাবদিহিতার জন্য দাড়াবার পূর্বেই আল্লাহ্র নিকট পৌঁছে যায়। আমরা যা কিছু ভালো কাজ করি তা আমাদের আধ্যাত্মিক মঙ্গল ও সম্মানকে বৃদ্ধি করে থাকে আল্লাহ্র কাছে। এ কথা সর্বদা মনে রাখতে হবে যে, আল্লাহ্র রাস্তায় ব্যয়কৃত আমাদের পরিশ্রম, প্রতিভা, মেধা, মননশক্তি, সৃজন ক্ষমতা,সম্পদ, ক্ষমতা, অর্থাৎ এক কথায় আমরা যাই ব্যয় করি না কেন তার জন্য আল্লাহ্ আমাদের মুখাপেক্ষী নন। কারণ আল্লাহ্ অভাব মুক্ত। আমরা সৎ কাজ বা আল্লাহ্র রাস্তায় কাজ করবো আমাদের আত্মিক উন্নতির জন্য, আধ্যাত্মিক কল্যাণের জন্য যা আমাদের অন্তরকে হৃদয়কে বেহেশতি শান্তিতে ভরিয়ে দেবে।
৫৭৭৭। এই আয়াতটি শেষ করা হয়েছে আল্লাহ্র ক্ষমা ও করুণার উপরে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে। আমরা যে সৎ কাজই করি না কেন তাতে আমাদের যোগ্যতা খুব কমই থাকে। আল্লাহ্র অনুগ্রহই আমাদের ক্ষুদ্রতা ও অযোগ্যতা অতিক্রম করে আমাদের কাজকে সার্থকতার পথে পরিচালিত করে থাকে। ফলে আমাদের হৃদয়ের গুণরাজি ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করে যা শুধুমাত্র পরম করুণাময়েরই অনুগ্রহ ব্যতীত অন্য কিছু নয়। তিনি আমাদের দোষত্রুটি অপসারণ করে আমাদের সকল কর্মকে বৃহত্তর সাফল্যের দিকে অগ্রসর করিয়ে দেন। এমন কি যখন কোনও মুত্তাকী ব্যক্তি তার খোদাভক্তি সম্বন্ধে গর্বিত হয় সে সেই মূহুর্তে আল্লাহ্র উপরে নির্ভরশীলতা হারিয়ে আত্মপূঁজায় নিমগ্ন হয় যা গর্হিত পাপ। জীবনের সকল অবস্থায়, সুখে, দুঃখে, বিপদে, বিপর্যয়ে, সম্মান, অসম্মানে সেই সর্বশক্তিমানের চরণ তলে বিনয়ের সাথে আত্মনিবেদনই হচ্ছে প্রকৃত ঈমানদারের লক্ষণ।