আয়াতঃ 073.014
যেদিন পৃথিবী পর্বতমালা প্রকম্পিত হবে এবং পর্বতসমূহ হয়ে যাবে বহমান বালুকাস্তুপ।
On the Day when the earth and the mountains will be in violent shake, and the mountains will be a heap of sand poured out and flowing down.
يَوْمَ تَرْجُفُ الْأَرْضُ وَالْجِبَالُ وَكَانَتِ الْجِبَالُ كَثِيبًا مَّهِيلًا
Yawma tarjufu al-ardu waaljibalu wakanati aljibalu katheeban maheelan
YUSUFALI: One Day the earth and the mountains will be in violent commotion. And the mountains will be as a heap of sand poured out and flowing down.
PICKTHAL: On the day when the earth and the hills rock, and the hills become a heap of running sand.
SHAKIR: On the day when the earth and the mountains shall quake and the mountains shall become (as) heaps of sand let loose.
KHALIFA: The day will come when the earth and the mountains will quake, and the mountains will turn into a weightless pile.
১৪। যে দিন পৃথিবী ও পর্বতমালা ভীষণ ভাবে প্রকম্পিত হবে এবং পর্বত সমূহ বহমান বালুকাস্তুপে পরিণত হবে ৫৭৬৬
৫৭৬৬। কেয়ামত দিবসের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা এখানে করা হয়েছে। সেদিন সমগ্র বিশ্বজগত প্রকম্পিত হতে থাকবে, যার ফলে সারা বিশ্বের রূপ সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়ে যাবে। আমাদের এই চেনা পৃথিবী সম্পূর্ণ অচেনা পৃথিবীতে রূপান্তরিত হয়ে পড়বে। এই রূপান্তর সংক্ষিপ্ত একটি উপমার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। সুউচ্চ পর্বত হচ্ছে কাঠিন্য ও স্থায়ীত্বের প্রতীক। কঠিন শিলার স্তুপ, পর্বতকে করে তোলে দুর্গম ও চিরস্থায়ী। কেয়ামত দিবসে এসব সুউচ্চ, দুর্ভেদ্য,চিরস্থায়ী,কঠিন শিলাস্তুপের সম্পূর্ণ পরিবর্তন ঘটে যাবে। তারা পরিবর্তিত হয়ে যাবে বহমান বালুকারাশির ন্যায় – আকৃতিহীন, কাঠিন্যহীন বস্তুতে।
আয়াতঃ 073.015
আমি তোমাদের কাছে একজন রসূলকে তোমাদের জন্যে সাক্ষী করে প্রেরণ করেছি, যেমন প্রেরণ করেছিলাম ফেরাউনের কাছে একজন রসূল।
Verily, We have sent to you (O men) a Messenger (Muhammad SAW) to be a witness over you, as We did send a Messenger [Mûsa (Moses)] to Fir’aun (Pharaoh) .
إِنَّا أَرْسَلْنَا إِلَيْكُمْ رَسُولًا شَاهِدًا عَلَيْكُمْ كَمَا أَرْسَلْنَا إِلَى فِرْعَوْنَ رَسُولًا
Inna arsalna ilaykum rasoolan shahidan AAalaykum kama arsalna ila firAAawna rasoolan
YUSUFALI: We have sent to you, (O men!) a messenger, to be a witness concerning you, even as We sent a messenger to Pharaoh.
PICKTHAL: Lo! We have sent unto you a messenger as witness against you, even as We sent unto Pharaoh a messenger.
SHAKIR: Surely We have sent to you a Messenger, a witness against you, as We sent a messenger to Firon.
KHALIFA: We have sent to you a messenger, just as we sent to Pharaoh a messenger.
১৫। [ হে মানব কুল ] আমি তোমাদের নিকটে একজন রসুল প্রেরণ করেছি, যে তোমদের জন্য সাক্ষী স্বরূপ, ৫৭৬৭, যে রূপ রসুল পাঠিয়েছিলাম ফেরাউনের নিকট।
৫৭৬৭। আমাদের রাসুলকে (সা) প্রেরণ করা হয়েছিলো তাঁর যুগ অর্থাৎ বর্তমান যুগের মানব সম্প্রদায়কে সাবধান করার জন্য। কারণ তিনি হচ্ছেন সর্বশেষ নবী পৃথিবীর জন্য। তাঁকে প্রেরণ করা হয়েছিলো মানুষকে পাপ থেকে সাবধান করার জন্য সাক্ষীস্বরূপ। এই আয়াতে রাসুলের (সা) দায়িত্বকে তুলনা করা হয়েছে হযরত মুসার সাথে। ফেরাউনের উদ্ধতপনার শাস্তির বর্ণনা আছে সূরা [ ১০: ৭৫- ৯২ ] আয়াতে।
আয়াতঃ 073.016
অতঃপর ফেরাউন সেই রসূলকে অমান্য করল, ফলে আমি তাকে কঠিন শাস্তি দিয়েছি।
But Fir’aun (Pharaoh) disobeyed the Messenger [Mûsa (Moses)], so We seized him with a severe punishment.
فَعَصَى فِرْعَوْنُ الرَّسُولَ فَأَخَذْنَاهُ أَخْذًا وَبِيلًا
FaAAasa firAAawnu alrrasoola faakhathnahu akhthan wabeelan
YUSUFALI: But Pharaoh disobeyed the messenger; so We seized him with a heavy Punishment.
PICKTHAL: But Pharaoh rebelled against the messenger, whereupon We seized him with no gentle grip.
SHAKIR: But Firon disobeyed the messenger, so We laid on him a violent hold.
KHALIFA: Pharaoh disobeyed the messenger and, consequently, we punished him severely.
১৬। কিন্তু ফেরাউন রসুলকে অমান্য করেছিলো ৫৭৬৮; সুতারাং আমি তাকে কঠিন শাস্তি দ্বারা আক্রান্ত করেছিলাম।
৫৭৬৮। পৃথিবীর ক্ষমতাশালী নৃপতি ফেরাউন হযরত মুসাকে কিভাবে গ্রহণ করেছিলেন তারই বর্ণনা দেয়া হয়েছে এখানে। একই ঘটনা দৃষ্টিভঙ্গীর পার্থক্যের দরুন ঘটনার নৈতিক শিক্ষার পার্থক্য ঘটে থাকে। যেমন এখানে হযরত মুসার সাথে ফেরাউনের সাক্ষাৎকারের সময়ে ফেরাউনের ধারণা হলো যে, হযরত মুসা তার অবাধ্য হয়েছেন। কারণ পার্থিব সম্পদ ও ক্ষমতা তাঁকে গর্বিত ও অহংকারী করে তুলেছিলো। আবার সেই একই সাক্ষাৎকারকে আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে আল্লাহ্ বর্ণনা করেছেন যে ফেরাউন হযরত মুসাকে অমান্য করেছেন। পৃথিবীর প্রাচীন সভ্যতায় ফেরাউনের রাজত্বকাল এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। তাদের শক্তিশালী রাজত্ব ছিলো জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য, সংগঠন, ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু যা গর্ব ও অহংকার করার অধিকার রাখে। কিন্তু মুসার ফেরাউন ভুলে গিয়েছিলো যে, এ সকলের পিছনে রয়েছে একজন সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র অবদান। অপরপক্ষে হযরত মুসা যাদের পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন, তারা ছিলো অত্যাচারিত, অবদমিত, ক্রীতদাস শ্রেণীর লোক, যারা ফেরাউনের অত্যন্ত শ্রমসাধ্য এবং দাসোচিত কাজ করতো। যদিও এসব লোকের কোনও সম্পদ ও ক্ষমতা ছিলো না, কিন্তু এদের পিছনে ছিলো আল্লাহ্র বিশেষ অনুগ্রহ। ফেরাউনের জ্ঞান, ক্ষমতা, বিশাল সেনাদল যা ক্ষমতার প্রতীক, যা পৃথিবীকে ভয়ে ও শ্রদ্ধায় প্রকম্পিত করে তুলতো তা তুচ্ছ হয়ে গেলো আল্লাহ্র ক্ষমতার নিকট। আল্লাহ্র ক্ষমতা দর্শনে মানুষের মনে যে, বিষ্ময়, শ্রদ্ধা ভয়, উৎপাদন করবে তা তুলে ধরা হয়েছে একটি উপমার মাধ্যমে। সে ভয়ের তীব্রতা হবে এতটাই ভয়ংকর যে কিশোরের মাথার সকল চুল বৃদ্ধ ব্যক্তির ন্যায় সাদা হয়ে যাবে। অপরপক্ষে অন্য ভাবে বিষয়টিকে উপস্থাপন করা যায়, যে জাতি আল্লাহ্র বিধান সমূহ অমান্য করে থাকে শিশুর ন্যায় আচরণ করে সেই জাতি আল্লাহ্র রোষে পতিত হয়ে ধ্বংসের পূর্ব মূহুর্তে নিজ অবস্থান উপলব্ধিতে সক্ষম হয়ে পক্ককেশ জ্ঞানীর ন্যায় আচরণ করবে। আল্লাহ্র বিধান সমূহ চিরস্থায়ী এবং পরিপূর্ণতা লাভ করবে এবং অন্য সকল কিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে। ” আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।”