- সূরার নাম: সূরা মুনাফিকুন
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা মুনাফিকুন
আয়াতঃ 063.001
মুনাফিকরা আপনার কাছে এসে বলেঃ আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আপনি নিশ্চয়ই আল্লাহর রসূল। আল্লাহ জানেন যে, আপনি অবশ্যই আল্লাহর রসূল এবং আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।
When the hypocrites come to you (O Muhammad SAW), they say: ”We bear witness that you are indeed the Messenger of Allâh.” Allâh knows that you are indeed His Messenger and Allâh bears witness that the hypocrites are liars indeed.
إِذَا جَاءكَ الْمُنَافِقُونَ قَالُوا نَشْهَدُ إِنَّكَ لَرَسُولُ اللَّهِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ إِنَّكَ لَرَسُولُهُ وَاللَّهُ يَشْهَدُ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَكَاذِبُونَ
Itha jaaka almunafiqoona qaloo nashhadu innaka larasoolu Allahi waAllahu yaAAlamu innaka larasooluhu waAllahu yashhadu inna almunafiqeena lakathiboona
YUSUFALI: When the Hypocrites come to thee, they say, “We bear witness that thou art indeed the Messenger of Allah.” Yea, Allah knoweth that thou art indeed His Messenger, and Allah beareth witness that the Hypocrites are indeed liars.
PICKTHAL: When the hypocrites come unto thee (O Muhammad), they say: We bear witness that thou art indeed Allah’s messenger. And Allah knoweth that thou art indeed His messenger, and Allah beareth witness that the hypocrites indeed are speaking falsely.
SHAKIR: When the hypocrites come to you, they say: We bear witness that you are most surely Allah’s Messenger; and Allah knows that you are most surely His Messenger, and Allah bears witness that the hypocrites are surely liars.
KHALIFA: When the hypocrites come to you they say, “We bear witness that you are the messenger of GOD.” GOD knows that you are His messenger, and GOD bears witness that the hypocrites are liars.
==============
সূরা মুনাফিকুন্ অথবা মোনাফেক – ৬৩
১১ আয়াত, ২ রুকু, মাদানী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা : মদিনায় অবতীর্ণ দশটি সংক্ষিপ্ত সূরার মধ্যে এই সূরাটি ৭ম সূরা। এই সূরার বিষয়বস্তু হচ্ছে মুসলিম ভাতৃত্বের সামাজিক বিকাশের বিশেষ বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য সমূহের মধ্যে আছে সমাজে মোনাফেকদের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপের বিবরণ যার মাধ্যমে তারা সমাজে অনৈক্য ও বিবাদ -বিসংবাদ ঘটানোর কৌশলের অবতারণা করে থাকে। বিশ্বাসীদের সামনে তারা যে প্রলোভনের জাল বিস্তার করে তা থেকে বিশ্বাসী বা মোমেন বান্দাদের আত্মরক্ষা করতে বলা হয়েছে।
ওহদের যুদ্ধ [ ৩য় হিজরী শাওয়াল মাস ] মদিনার মোনাফেকদের মুখোশ উম্মোচন করে ; দেখুন আয়াত [ ৩ : ১৬৭ ] ও টিকা ৪৭৬। এই সূরা ওহদের যুদ্ধের কিছু পরে অবতীর্ণ হয় ; সম্ভবতঃ ৪র্থ বা ৫ম হিজরীতে বানু মুসতালিক গোত্রের বিরুদ্ধে অভিযানের সময়ে অবতীর্ণ [ দেখুন টিকা ৫৪৭৫ ]।
সার সংক্ষেপ : মোনাফেকদের প্রতিজ্ঞা মূল্যহীন। তারা শুধুমাত্র নিজস্ব স্বার্থের সন্ধানে ব্যস্ত। বিশ্বাসী বা মোমেন বান্দারা তাদের কৌশল সম্বন্ধে সাবধান হবে এবং আন্তরিকভাবে আল্লাহ্র রাস্তায় কাজ করবে। [ ৬৩ : ১ – ১১ ]।
সূরা মুনাফিকন্ অথবা মোনাফেক – ৬৩
১১ আয়াত, ২ রুকু, মাদানী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। যখন মোনাফেকেরা ৫৪৬৬, তোমার নিকট আসে, তারা বলে, “আমরা সাক্ষ্য দিতেছি যে, আপনি নিশ্চয়ই আল্লাহ্র রসুল।” হ্যাঁ, অবশ্যই আল্লাহ্ জানেন যে, তুমি অবশ্যই আল্লাহ্র রসুল, এবং আল্লাহ্ সাক্ষ্য দিতেছেন যে, মোনাফেকেরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।
৫৪৬৬। যে কোন সমাজের জন্য মোনাফেকেরা হচ্ছে সমাজের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার জন্য দুর্বলতা ও বিপদজনক ও হুমকি স্বরূপ। যখন মহানবী হিজরত করে মক্কা থেকে মদিনাতে আগমন করেন, মদিনার সকল দেশপ্রেমিক নাগরিক তাঁকে স্বাগত সম্ভাষণ জানান। মহানবীর আগমন শুধু যে তাদের একতাবদ্ধ করতেই সক্ষম হয়েছিলো তাই-ই নয়। এর ফলে তাদের বিভিন্ন গোত্রের মাঝে যে পার্থক্য ও শ্রেণী বিভক্তি বিরাজ করতো তা মুছে দিতে সক্ষম হয়েছিলো। তাদের মাঝে মহানবী বা জগতের শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের উপস্থিতি তাদের সম্মান ও আধ্যাত্মিক জগতের উন্নতি বিধান করেছিলো যা ছিলো তাদের জন্য অমূল্য সম্পদ। ফুলের গাছেও যেরূপ কাঁটার অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকে ঠিক সেরূপ মদিনার পূণ্যাত্মা ব্যক্তিদের মাঝেও কিছু নিম্ন মানসিকতা সম্পন্ন মোনাফেক ব্যক্তি বিরাজ করতো যারা মহানবীর আগমনে আনন্দিত না হয়ে ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ে। কারণ তাদের মনে ছিলো ক্ষমতা ও নেতৃত্বের লোভ। তারা বুঝতে পারলো যে, মহানবীর উপস্থিতিতে তাদের আজন্ম লালিত সেই নেতৃত্বের ও ক্ষমতা লাভের স্বপ্ন কোনও দিনও বাস্তবায়িত হওয়া সম্ভব নয়। সুতারাং তারা গোপনে রাসুলুল্লাহ্র (সা) বিরুদ্ধে কাজ শুরু করে। গোপনে এই কারণে যে নূতন মুসলিম সম্প্রদায় ছিলো সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং হযরতের একান্ত অনুগত। সুতারাং প্রকাশ্যে কিছু করার সাহস তাদের ছিলো না। তারা গোপনে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নূতন মুসলিম সমাজকে ধ্বংস করতে অগ্রসর হলো কিন্তু তারা হযরতের (সা) নিকট আনুগত্যের প্রতিজ্ঞা করলো। এই সব মোনাফেকদের আল্লাহ্ ওহদের যুদ্ধে তাদের পরিচয় প্রকাশ করে দেন। দেখুন [ ৩ : ১৬৭ ] ও টিকা ৪৭৬।
আয়াতঃ 063.002
তারা তাদের শপথসমূহকে ঢালরূপে ব্যবহার করে। অতঃপর তারা আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে। তারা যা করছে, তা খুবই মন্দ।
They have made their oaths a screen (for their hypocrisy). Thus they hinder (men) from the Path of Allâh. Verily, evil is what they used to do.
اتَّخَذُوا أَيْمَانَهُمْ جُنَّةً فَصَدُّوا عَن سَبِيلِ اللَّهِ إِنَّهُمْ سَاء مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
Ittakhathoo aymanahum junnatan fasaddoo AAan sabeeli Allahi innahum saa ma kanoo yaAAmaloona
YUSUFALI: They have made their oaths a screen (for their misdeeds): thus they obstruct (men) from the Path of Allah: truly evil are their deeds.
PICKTHAL: They make their faith a pretext so that they may turn (men) from the way of Allah. Verily evil is that which they are wont to do,
SHAKIR: They make their oaths a shelter, and thus turn away from Allah’s way; surely evil is that which they do.
KHALIFA: Under the guise of their apparent faith, they repel the people from the path of GOD. Miserable indeed is what they do.
২। তারা তাদের শপথগুলিকে ৫৪৬৭, [ তাদের মন্দ কাজের ] পর্দারূপে ব্যবহার করে। এভাবেই তারা [ মানুষকে ] আল্লাহ্র পথে নিবৃত্ত করে। সত্যিই তাদের কাজগুলি মন্দ।
৫৪৬৭। এ সব মোনাফেকরা প্রকাশ্যে হযরতকে আল্লাহ্র রাসুল (সা) রূপে স্বীকার করে। এই স্বীকারোক্তি এই জন্য যে কেউ যেনো তাদের মনের দুরভিসন্ধি বুঝতে না পারে। এই স্বীকারোক্তি তাদের অন্তরের অভিব্যক্তির ঢাল স্বরূপ। কেউ যেনো তা বুঝতে না পারে। এই স্বীকারোক্তি মিথ্যা বই আর কিছু নয়।
মন্তব্য : মোনাফেকদের এই বৈশিষ্ট্য সর্বকালের ও সর্বযুগের জন্য প্রযোজ্য।
আয়াতঃ 063.003
এটা এজন্য যে, তারা বিশ্বাস করার পর পুনরায় কাফের হয়েছে। ফলে তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেয়া হয়েছে। অতএব তারা বুঝে না।
That is because they believed, then disbelieved, therefore their hearts are sealed, so they understand not.
ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ آمَنُوا ثُمَّ كَفَرُوا فَطُبِعَ عَلَى قُلُوبِهِمْ فَهُمْ لَا يَفْقَهُونَ
Thalika bi-annahum amanoo thumma kafaroo fatubiAAa AAala quloobihim fahum la yafqahoona
YUSUFALI: That is because they believed, then they rejected Faith: So a seal was set on their hearts: therefore they understand not.
PICKTHAL: That is because they believed, then disbelieved, therefore their hearts are sealed so that they understand not.
SHAKIR: That is because they believe, then disbelieve, so a seal is set upon their hearts so that they do not understand.
KHALIFA: This is because they believed, then disbelieved. Hence, their minds are blocked; they do not understand.
৩। তার কারণ তারা ঈমান আনে, তারপরে তারা ঈমানকে প্রত্যাখান করে। সুতারাং তাদের হৃদয়ের উপরে মোহর করে দেয়া হয়েছে ৫৪৬৮। ফলে তারা [ কিছুই ] বুঝতে পারবে না।
৫৪৬৮। দেখুন [ ২ : ৭ ]। দুনৌকায় পা দিয়ে যেরূপ চলা যায় না। এরূপ ব্যক্তির নিরাপত্তা যেরূপ হুমকির মুখে; আধ্যাত্মিক জগতে ঠিক সেরূপ অবস্থা হচ্ছে মোনাফেকদের। তাদের দ্বিবিধ নীতির ফলে তাদের অন্তর সর্বদা থাকে দোদুল্যমান। এই দোদুল্যমান হৃদয় তাদের সত্য অনুধাবনে বাঁধা স্বরূপ। কুয়াশা যেরূপ চেনা পৃথিবীর অস্তিত্বকে মুছে দেয়, মোনাফেকীর ফলে এসব ব্যক্তির হৃদয়েও সেরূপ সত্যের প্রকৃত রূপ আড়াল হয়ে যায়। আরবীতে, ‘হৃদয় ‘ শব্দটি দ্বারা অনুভূতি ও উপলব্ধির ক্ষমতাকে বোঝানো হয়। মোনাফেকরা সত্যকে বোঝার ও উপলব্ধির করার ক্ষমতা হৃদয়ের মাঝে হারিয়ে ফেলবে এই হচ্ছে আল্লাহ্র অমোঘ নীতি।
আয়াতঃ 063.004
আপনি যখন তাদেরকে দেখেন, তখন তাদের দেহাবয়ব আপনার কাছে প্রীতিকর মনে হয়। আর যদি তারা কথা বলে, তবে আপনি তাদের কথা শুনেন। তারা প্রাচীরে ঠেকানো কাঠসদৃশ্য। প্রত্যেক শোরগোলকে তারা নিজেদের বিরুদ্ধে মনে করে। তারাই শত্রু, অতএব তাদের সম্পর্কে সতর্ক হোন। ধ্বংস করুন আল্লাহ তাদেরকে। তারা কোথায় বিভ্রান্ত হচ্ছে ?
And when you look at them, their bodies please you; and when they speak, you listen to their words. They are as blocks of wood propped up. They think that every cry is against them. They are the enemies, so beware of them. May Allâh curse them! How are they denying (or deviating from) the Right Path.
وَإِذَا رَأَيْتَهُمْ تُعْجِبُكَ أَجْسَامُهُمْ وَإِن يَقُولُوا تَسْمَعْ لِقَوْلِهِمْ كَأَنَّهُمْ خُشُبٌ مُّسَنَّدَةٌ يَحْسَبُونَ كُلَّ صَيْحَةٍ عَلَيْهِمْ هُمُ الْعَدُوُّ فَاحْذَرْهُمْ قَاتَلَهُمُ اللَّهُ أَنَّى يُؤْفَكُونَ
Wa-itha raaytahum tuAAjibuka ajsamuhum wa-in yaqooloo tasmaAA liqawlihim kaannahum khushubun musannadatun yahsaboona kulla sayhatin AAalayhim humu alAAaduwwu faihtharhum qatalahumu Allahu anna yu/fakoona
YUSUFALI: When thou lookest at them, their exteriors please thee; and when they speak, thou listenest to their words. They are as (worthless as hollow) pieces of timber propped up, (unable to stand on their own). They think that every cry is against them. They are the enemies; so beware of them. The curse of Allah be on them! How are they deluded (away from the Truth)!
PICKTHAL: And when thou seest them their figures please thee; and if they speak thou givest ear unto their speech. (They are) as though they were blocks of wood in striped cloaks. They deem every shout to be against them. They are the enemy, so beware of them. Allah confound them! How they are perverted!
SHAKIR: And when you see them, their persons will please you, and If they speak, you will listen to their speech; (they are) as if they were big pieces of wood clad with garments; they think every cry to be against them. They are the enemy, therefore beware of them; may Allah destroy them, whence are they turned back?
KHALIFA: When you see them, you may be impressed by their looks. And when they speak, you may listen to their eloquence. They are like standing logs. They think that every call is intended against them. These are the real enemies; beware of them. GOD condemns them; they have deviated
৪। যখন তুমি তাদের দিকে তাকাও, তাদের বাহিরে [ দেহ ] সৌষ্ঠব তোমাদের প্রীতিকর মনে হয় ৫৪৬৯, এবং তারা যখন কথা বলে, তুমি তাদের কথা [ মনোযোগ দিয়ে ] শোন। তারা [ ঘুনে ধরা ] দেয়ালে হেলানো কাঠের খুটির ন্যায় [ মূল্যহীন ] ৫৪৭০। যে কোন শোরগোলকে তারা মনে করে তাদের বিরুদ্ধে ৫৪৭১। এরাই শত্রু, অতএব তাদের সম্বন্ধে সর্তক হও। আল্লাহ্র অভিশাপ তাদের উপরে পতিত হোক। কিভাবে তারা [ সত্য থেকে ] বিভ্রান্ত হয়ে চলেছে।
৫৪৬৯। মোনাফেকদের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য সমূহ এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। ১) এদের সাজ-সজ্জা এবং দেহাকৃতি মনে হবে সুসভ্য সংস্কৃতি সম্পন্ন যা মানুষকে আকর্ষণ করবে। ২) এদের বাক্চাতুর্য মানুষের নিকট মনোহর মনে হবে। মদিনার মোনাফেকরাও ছিলো এসব বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। তাদের বাইরের চাকচিক্য, পোষাক পরিচ্ছদ, সাজসজ্জা ও অনুচরবৃন্দ পরিবৃত্ত অবস্থা সাধারণ মানুষকে আকর্ষিত করতো ও মনে সম্ভ্রম জাগাতো। তারা তাদের বক্তব্যকে মনোহররূপে উপস্থাপন করতো যাতে তা সাধারণ মানুষের নিকট হৃদয় গ্রাহী হয়। যেহেতু মিথ্যাভাষণ তাদের মনোজগতে কোনও রূপ বৈকল্য সৃষ্টি করতো না সুতারাং তারা সত্যকে বিকৃত করে সকলের সাথে একত্বতা প্রকাশ করতে দ্বিধা বোধ করতো না। তাদের বক্তব্য ছিলো মনোহর ও আকর্ষণীয় কারণ সত্য ভাষণ তাদের বক্তব্য বা জিহ্বাকে সংযত করতে সক্ষম ছিলো না। মিথ্যা ও অতিভাষণ মানুষকে সহজেই আকর্ষণ করে কারণ তা সর্বদা সাধারণ মানুষের তাৎক্ষণিক লাভের দিকেই আকর্ষণ করে। তাদের তোষামোদ ও প্রতারণা ছিলো অসীম যা অনুমান করাও অসাধ্য। তবে এসবই আল্লাহ্র নিকট অর্থহীন। কারণ এসবই ছিলো মিথ্যার উপরে প্রতিষ্ঠিত সুতারাং তারা যা বলে বা করে সবই মুল্যহীন।
৫৪৭০। ভালো ও উন্নতমানের কাঠ হয় মজবুত ও শক্ত যা বাসস্থান তৈরীর প্রাক্কালে ঘরের কাঠামো তৈরীতে ব্যবহার করা হয়, যা ঘরকে মজবুত ও শক্তভাবে ধারণ করে ও উন্নত ও ঋজুভাবে দাড়িয়ে থাকতে সাহায্য করে। কিন্তু যে কাঠ ঘুণদ্বারা আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে সেসব কাঠ হয়ে পড়ে ব্যবহারের অযোগ্য। কারণ পচা কাঠ তখন কোনও কিছুর ভার বহনে অক্ষম। তখন এসব কাঠ নিজ কাঠিন্যে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না – এসব কাঠের কাঠামো দাঁড়িয়ে থাকার জন্য ঠেকার প্রয়োজন হয়। এই উপমার সাহায্যে আল্লাহ্ মোনাফেকদের আধ্যাত্মিক ও মানসিক অবস্থাকে তুলে ধরেছেন যাতে সাধারণ মানুষ তা উপলব্ধি করতে পারে। মোনাফেকরা ঐ পচা কাঠের ন্যায়। তাদের চরিত্রে কোন নীতিবোধ নাই ফলে তাদের চরিত্রের কোনও রূপ দৃঢ়তা থাকে না। এ সব দুর্বল চরিত্রের লোকেরা অন্যের ভার বহনে অক্ষম এবং পচা কাঠের মতনই তাদের পরে নির্ভর করা নিরাপদ নয়।
৫৪৭১। মিথ্যার বিষবাস্পে মোনাফেকদের বিবেক আচ্ছাদিত হওয়ার ফলে মোনাফেকরা প্রকৃত সত্যকে দেখতে পায় না। মিথ্যা ভাষণ মিথ্যা কর্ম তাদের বিবেককে করে অবরুদ্ধ যা তাদের মধ্যে দ্বন্দের সৃষ্টি করে থাকে। যে কোনও নূতন পদক্ষেপ তাদের উৎকণ্ঠিত করে এবং তাদের ধারণা হয় যে তা তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করবে। কারণ মোনাফেকরা সর্বদা নিজস্ব স্বার্থের বিপরীতে কোনও ধ্যান ধারণা অনুধাবনে অক্ষম। এরূপ লোকেরা প্রকাশ্য শত্রু থেকেও নিকৃষ্ট।
আয়াতঃ 063.005
যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ তোমরা এস, আল্লাহর রসূল তোমাদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করবেন, তখন তারা মাথা ঘুরিয়ে নেয় এবং আপনি তাদেরকে দেখেন যে, তারা অহংকার করে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
And when it is said to them: ”Come, so that the Messenger of Allâh may ask forgiveness from Allâh for you”, they turn aside their heads, and you would see them turning away their faces in pride.
وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ تَعَالَوْا يَسْتَغْفِرْ لَكُمْ رَسُولُ اللَّهِ لَوَّوْا رُؤُوسَهُمْ وَرَأَيْتَهُمْ يَصُدُّونَ وَهُم مُّسْتَكْبِرُونَ
Wa-itha qeela lahum taAAalaw yastaghfir lakum rasoolu Allahi lawwaw ruoosahum waraaytahum yasuddoona wahum mustakbiroona
YUSUFALI: And when it is said to them, “Come, the Messenger of Allah will pray for your forgiveness”, they turn aside their heads, and thou wouldst see them turning away their faces in arrogance.
PICKTHAL: And when it is said unto them: Come! The messenger of Allah will ask forgiveness for you! they avert their faces and thou seest them turning away, disdainful.
SHAKIR: And when it is said to them: Come, the Messenger of Allah will ask forgiveness for you, they turn back their heads and you may see them turning away while they are big with pride.
KHALIFA: When they are told, “Come let the messenger of GOD pray for your forgiveness,” they mockingly turn their heads, and you see them repel others and act arrogantly.
৫। এবং যখন তাদের বলা হয়, ” এসো, আল্লাহ্র রসুল তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবেন ৫৪৭২”, তখন তারা তাদের মাথা ঘুরিয়ে নেয়, এবং তুমি দেখতে পাবে তারা উদ্ধত অহংকারে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
৫৪৭২। “তারা তাদের মাথা ঘুরিয়ে নেয়” এটা একটা আরবী বাগ্ধারা যার অর্থ “মুখ ফিরিয়ে নেয়”। মোনাফেকী যদিও একটি জঘন্য পাপ কিন্তু ক্ষমার অযোগ্য নয়। যদি প্রকৃত অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধনের দ্বারা কেউ ক্ষমা প্রার্থনা করে তবে সে অবশ্যই ঐশ্বরিক ক্ষমা ও করুণা লাভে সক্ষম। তবে এর জন্য প্রয়োজন ঐকান্তিক আন্তরিকতা এবং পাপ থেকে বিরত থাকার একান্ত ইচ্ছা ও আল্লাহ্র ক্ষমা লাভের আকাঙ্খা। এই আয়াতে দেখা যায় মদিনার মোনাফেকদের তা ছিলো না। ঔদ্ধত্য ও এতগুয়েমী হচ্ছে মোনাফেকদের বিশ্বজনীন আর একটি বৈশিষ্ট্য যা সর্বযুগে সর্বকালে বিদ্যমান।
আয়াতঃ 063.006
আপনি তাদের জন্যে ক্ষমাপ্রার্থনা করুন অথবা না করুন, উভয়ই সমান। আল্লাহ কখনও তাদেরকে ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না।
It is equal to them whether you (Muhammad SAW) ask forgiveness or ask not forgiveness for them. Verily, Allâh guides not the people who are the Fâsiqîn (rebellious, disobedient to Allâh) .
سَوَاء عَلَيْهِمْ أَسْتَغْفَرْتَ لَهُمْ أَمْ لَمْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ لَن يَغْفِرَ اللَّهُ لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ
Sawaon AAalayhim astaghfarta lahum am lam tastaghfir lahum lan yaghfira Allahu lahum inna Allaha la yahdee alqawma alfasiqeena
YUSUFALI: It is equal to them whether thou pray for their forgiveness or not. Allah will not forgive them. Truly Allah guides not rebellious transgressors.
PICKTHAL: Whether thou ask forgiveness for them or ask not forgiveness for them is all one for them; Allah will not forgive them. Lo! Allah guideth not the evil-living folk.
SHAKIR: It is alike to them whether you beg forgiveness for them or do not beg forgiveness for them; Allah will never forgive them; surely Allah does not guide the transgressing people.
KHALIFA: It is the same for them, whether you pray for their forgiveness, or not pray for their forgiveness; GOD will not forgive them. For GOD does not guide the wicked people.
৬। তাদের জন্য তুমি ক্ষমা প্রার্থনা কর অথবা না কর উভয়ই তাদের জন্য সমান ৫৪৭৩। আল্লাহ্ তাদের ক্ষমা করবেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বিদ্রোহী সীমালংঘনকারীকে সৎপথ প্রদর্শন করেন না।
৫৪৭৩। যারা অবাধ্য একগুঁয়েভাবে আল্লাহ্র সত্যকে প্রত্যাখান করে তাদের আধ্যাত্মিক জগত ঐশ্বরিক করুণা থেকে বহুদূরে সরে যায়। আল্লাহ্র রহমত ও তাদের মাঝে সৃষ্টি হয় দুস্তর ব্যবধান। মোনাফেকদের অন্তর ক্রমান্বয়ে মিথ্যা ভাষণে বিকৃতরূপ ধারণ করে যার উপমা হচ্ছে পচা কাঠ – যা পুনরুদ্ধার অসম্ভব। এই আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন, কোনও প্রার্থনাই এমনকি রাসুলের (সা) প্রার্থনাও তাদের সাহায্য করতে অক্ষম। তাদের অবাধ্যতা ও সীমালংঘনের জন্য তারা আল্লাহ্র করুণা লাভে অক্ষম।
মন্তব্য : মিথ্যাভাষণ ও মিথ্যা বলার প্রবণতা যে কতটা ক্ষতিকর তা এই আয়াতের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। মহানবীর প্রার্থনাও তাদের এই দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্ত করতে অক্ষম, সুতারাং প্রতিটি পিতামাতা নিজেরা সত্য বলবেন ও সন্তানকে সত্য ভাষণে অভ্যস্ত করবেন। কারণ ” আল্লাহ্ পাপাচারী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।”
আয়াতঃ 063.007
তারাই বলেঃ আল্লাহর রাসূলের সাহচর্যে যারা আছে তাদের জন্যে ব্যয় করো না। পরিণামে তারা আপনা-আপনি সরে যাবে। ভূ ও নভোমন্ডলের ধন-ভান্ডার আল্লাহরই কিন্তু মুনাফিকরা তা বোঝে না।
They are the ones who say: ”Spend not on those who are with Allâh’s Messenger, until they desert him.” And to Allâh belong the treasures of the heavens and the earth, but the hypocrites comprehend not.
هُمُ الَّذِينَ يَقُولُونَ لَا تُنفِقُوا عَلَى مَنْ عِندَ رَسُولِ اللَّهِ حَتَّى يَنفَضُّوا وَلِلَّهِ خَزَائِنُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَلَكِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَا يَفْقَهُونَ
Humu allatheena yaqooloona la tunfiqoo AAala man AAinda rasooli Allahi hatta yanfaddoo walillahi khaza-inu alssamawati waal-ardi walakinna almunafiqeena la yafqahoona
YUSUFALI: They are the ones who say, “Spend nothing on those who are with Allah’s Messenger, to the end that they may disperse (and quit Medina).” But to Allah belong the treasures of the heavens and the earth; but the Hypocrites understand not.
PICKTHAL: They it is who say: Spend not on behalf of those (who dwell) with Allah’s messenger that they may disperse (and go away from you); when Allah’s are the treasures of the heavens and the earth; but the hypocrites comprehend not.
SHAKIR: They it is who say: Do not spend upon those who are with the Messenger of Allah until they break up. And Allah’s are the treasures of the heavens and the earth, but the hypocrites do not understand.
KHALIFA: They are the ones who say, “Do not give any money to those who followed the messenger of GOD, perhaps they abandon him!” However, GOD possesses the treasures of the heavens and the earth, but the hypocrites do not comprehend.
৭। এরাই তারা যারা বলে, ” আল্লাহ্র রসুলের সাথে যারা রয়েছে তাদের জন্য ব্যয় করো না ৫৪৭৪। তাহলে, শেষ পর্যন্ত তারা সব সরে পড়বে [ এবং মদিনা ত্যাগ করবে ]।” কিন্তু আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর ধন-ভান্ডার আল্লাহ্র অধিকারভূক্ত। কিন্তু মোনাফেকরা তা বুঝতে পারে না।
৫৪৭৪। ‘Muhajirin’ যারা মহানবীর সাথে মক্কা থেকে মদিনাতে হিজরত করেন। এদের মদিনাতে যারা সাদর সম্ভাষণ করেন তাদের বলা হয় ‘আনসার’ বা সাহায্যকারী। হিজরতকারীদের জন্য মদিনাবাসীদের এই সাহায্যকারীর ভূমিকা মোনাফেকদের পছন্দ ছিলো না। ‘মুরাইসী ‘ যুদ্ধ জয় করে মদিনাতে ফেরার পথে একজন মুহাজির ও একজন আনসারের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয় পরবর্তীতে যা মোহাজের ও আনসারের মধ্যে গোষ্ঠিগত সংঘর্ষে ব্যপ্তি লাভ করে এবং মহানবীর হস্তক্ষেপে তা শান্ত হয়। এরই পটভূমিতে মোনাফেক সর্দার আবদুল্লাহ্ ইবনে উবাই, আনসারদের মোহাজেরদের বিরুদ্ধে উত্তোজিত করতে চেষ্টা করে। তার ভাষ্য ছিলো যে, “হিজরতকারীদের জন্য বৃথা ধন সম্পদ ব্যয় করো না, কারণ তারা তোমাদের মঙ্গল কামনা করে না। যদি তোমরা ব্যয় না কর তবে তারা আপনা আপনি ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়বে।” কিন্তু তাদের এই হীন অপকৌশল কার্যকরী হলো না। মদিনার ক্ষুদ্র মুসলিম সম্প্রদায় প্রতি দিন ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়ে শক্তিশালী এক বৃহৎ সম্প্রদায়ে পরিণত হয়, যারা সম্পদেই শুধু স্বনির্ভর হলো না, তারা তাদের সাহায্যকারী বন্ধু আনসারদেরও সহায় সম্পদ বাড়াতে সাহায্য করেন। এই আয়াতের উপদেশ হচ্ছে সমাজে ভালো ও পূণ্যকাজই সমাজের শক্তিকে সুসংহত করে এবং সমাজকে সমৃদ্ধির পথে অগ্রসর হতে সাহায্য করে – এই হচ্ছে আল্লাহ্র বিধান। এবং মানুষের সর্বকল্যাণ তো আল্লাহ্রই হাতে। আল্লাহ্র শত্রুদের হাতে তো আল্লাহ্র ধনভান্ডার বিতরণের বা আটকিয়ে রাখার অধিকার দান করা হয় নাই।
আয়াতঃ 063.008
তারাই বলেঃ আমরা যদি মদীনায় প্রত্যাবর্তন করি তবে সেখান থেকে সবল অবশ্যই দুর্বলকে বহিস্কৃত করবে। শক্তি তো আল্লাহ তাঁর রসূল ও মুমিনদেরই কিন্তু মুনাফিকরা তা জানে না।
They (hyprocrites) say: ”If we return to Al-Madinah, indeed the more honourable (’Abdûllah bin Ubai bin Salul, the chief of hyprocrites at AlMadinah) will expel therefrom the meaner (i.e. Allâh’s Messenger SAW).” But honour, power and glory belong to Allâh, His Messenger (Muhammad SAW), and to the believers, but the hypocrites know not.
يَقُولُونَ لَئِن رَّجَعْنَا إِلَى الْمَدِينَةِ لَيُخْرِجَنَّ الْأَعَزُّ مِنْهَا الْأَذَلَّ وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَلَكِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَا يَعْلَمُونَ
Yaqooloona la-in rajaAAna ila almadeenati layukhrijanna al-aAAazzu minha al-athalla walillahi alAAizzatu walirasoolihi walilmu/mineena walakinna almunafiqeena la yaAAlamoona
YUSUFALI: They say, “If we return to Medina, surely the more honourable (element) will expel therefrom the meaner.” But honour belongs to Allah and His Messenger, and to the Believers; but the Hypocrites know not.
PICKTHAL: They say: Surely, if we return to Al-Madinah the mightier will soon drive out the weaker; when might belongeth to Allah and to His messenger and to the believers; but the hypocrites know not.
SHAKIR: They say: If we return to Medina, the mighty will surely drive out the meaner therefrom; and to Allah belongs the might and to His Messenger and to the believers, but the hypocrites do not know.
KHALIFA: They say, “If we go back to the city, the powerful therein will evict the weak (and we will be victimized).” (They should know that) all dignity belongs to GOD and His messenger, and the believers. However, the hypocrites do not know.
৮। তারা বলে, “যদি আমরা মদিনায় প্রত্যাবর্তন করি ৫৪৭৫, তবে অবশ্য সম্মানীয় লোকেরা সেখান থেকে অধমদের [ মুসলমানদের ] বিতাড়িত করবে।” কিন্তু সম্মান তো আল্লাহ্, তাঁর রসুল, এবং মোমেনদের অধিকারভূক্ত। কিন্তু মোনাফেকরা তা বুঝতে পারে না।
৫৪৭৫। এই বাক্যটি মদিনার মোনাফেক সর্দার আবদুল্লাহ্ ইবনে উবাইএর মুখনিঃসৃত। চতুর্থ অথবা পঞ্চম হিজরীতে বানু মুসতালিকের বিরুদ্ধে অভিযানে মুসলমানেরা যখন মদিনার বাহিরে যায় তখন সে মুসলমানদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এ সব কথা বলে, এ স্থলে ‘সম্মানীয়’ শব্দটি দ্বারা মুনাফিক এবং অধম দ্বারা ‘মুমিনকে’ বুঝানো হয়েছে। তার বক্তব্য ছিলো, এই যে, মদিনায় ফিরে যেয়ে সম্মানীরা [ আনসাররেরা ] বহিরাগত [ অর্থাৎ মোহাজের ] সব বাজে লোকদের বহিষ্কার করে দেবে। এ সব কথা বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে তার মনে ছিলো নেতৃত্বের লোভ। সে রাসুলুল্লাহ্র (সা) নেতৃত্বে মনের মাঝে হিংসা অনুভব করতো এবং মুসলমানদের মদিনাতে আগমন এবং মহানবীর নেতৃত্বের সাংগঠনিক ক্ষমতাকে স্বীকার করা তার পক্ষে কিছুতেই সম্ভব হচ্ছিল না। সে কারণে সে অপকৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করে যেনো মদিনাবাসীদের বিভ্রান্ত করতে পারে।
আয়াতঃ 063.009
মুমিনগণ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।
O you who believe! Let not your properties or your children divert you from the remembrance of Allâh. And whosoever does that, then they are the losers.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُلْهِكُمْ أَمْوَالُكُمْ وَلَا أَوْلَادُكُمْ عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَمَن يَفْعَلْ ذَلِكَ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ
Ya ayyuha allatheena amanoo la tulhikum amwalukum wala awladukum AAan thikri Allahi waman yafAAal thalika faola-ika humu alkhasiroona
YUSUFALI: O ye who believe! Let not your riches or your children divert you from the remembrance of Allah. If any act thus, the loss is their own.
PICKTHAL: O ye who believe! Let not your wealth nor your children distract you from remembrance of Allah. Those who do so, they are the losers.
SHAKIR: O you who believe! let not your wealth, or your children, divert you from the remembrance of Allah; and whoever does that, these are the losers.
KHALIFA: O you who believe, do not be distracted by your money and your children from remembering GOD. Those who do this are the losers.
রুকু – ২
৯। হে মুমিনগণ! তোমাদের ঐশ্বর্য তোমাদের সন্তান -সন্ততি যেনো তোমাদের আল্লাহ্র স্মরণ থেকে উদাসীন না করে। যদি কেউ এরূপ করে, তবে ক্ষতি তার নিজেদের ৫৪৭৬।
৫৪৭৬। ঐশ্বর্য -সম্পদ, সুযোগ-সুবিধা সব কিছুই অস্থায়ী – কোনও কিছুই চির জীবনের জন্য স্থায়ী নয়। মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতা হচ্ছে বিপদ বিপর্যয়ে আল্লাহকে স্মরণ করা এবং সুসময়ে, প্রাচুর্যে, সুখে আল্লাহকে ভুলে যাওয়া। এই আয়াতে আল্লাহ্ মোমেন বান্দাদের সম্বোধন করেছেন যে, সুখের দিনে, প্রাচুর্যের দিনে, আনন্দের দিনে তারা যেনো আল্লাহকে স্মরণ করতে ভুলে না যায়। আল্লাহকে স্মরণ শুধুমাত্র কথার কথা নয় – জীবনের প্রতিটি কাজ, সব কল্যাণ, মঙ্গল, কাজের নিয়ত, মনের সকল চিন্তা বা অনুভূতি, সব কিছু হবে আল্লাহ্ উদ্দেশ্য উৎসর্গীকৃত। সকল চিন্তা, কার্য, এক কথায় জীবনের সকল প্রকাশ হবে আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে নিবেদিত। আল্লাহ্ বান্দার নিকট এই পরিপূর্ণ আত্মসর্মপন যাঞা করেন। যদি পার্থিব জীবনের চাকচিক্যে আমাদের আল্লাহ্র নিকটে আত্মসমর্পনে, তাঁর রাস্তায় আত্মনিবেদনে বাঁধার সৃষ্টি করে এবং আমরা পার্থিব জীবনে নিমগ্ন হয়ে পড়ি, তাহলে আধ্যাত্মিক জীবনে আমাদের যে ক্ষতি হবে তা হবে শুধু আমদেরই। কেউই তার অংশ গ্রহণ করবে না। কারণ পার্থিব জীবনের চাকচিক্যের কাছে আত্মসমর্পনের অর্থ আধ্যাত্মিক জগতের উন্নতির পথকে রুদ্ধ করে দেয়া।
আয়াতঃ 063.010
আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।
And spend (in charity) of that with which We have provided you, before death comes to one of you and he says: ”My Lord! If only You would give me respite for a little while (i.e. return to the worldly life), then I should give Sadaqah (i.e. Zakât) of my wealth , and be among the righteous [i.e. perform Hajj (pilgrimage to Makkah)].
وَأَنفِقُوا مِن مَّا رَزَقْنَاكُم مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِيَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ فَيَقُولَ رَبِّ لَوْلَا أَخَّرْتَنِي إِلَى أَجَلٍ قَرِيبٍ فَأَصَّدَّقَ وَأَكُن مِّنَ الصَّالِحِينَ
Waanfiqoo min ma razaqnakum min qabli an ya/tiya ahadakumu almawtu fayaqoola rabbi lawla akhkhartanee ila ajalin qareebin faassaddaqa waakun mina alssaliheena
YUSUFALI: and spend something (in charity) out of the substance which We have bestowed on you, before Death should come to any of you and he should say, “O my Lord! why didst Thou not give me respite for a little while? I should then have given (largely) in charity, and I should have been one of the doers of good”.
PICKTHAL: And spend of that wherewith We have provided you before death cometh unto one of you and he saith: My Lord! If only thou wouldst reprieve me for a little while, then I would give alms and be among the righteous.
SHAKIR: And spend out of what We have given you before death comes to one of you, so that he should say: My Lord! why didst Thou not respite me to a near term, so that I should have given alms and been of the doers of good deeds?
KHALIFA: You shall give from our provisions to you before death comes to you, then you say, “My Lord, if only You could delay this for a short while! I would then be charitable and join the righteous!”
১০। তোমাদের কারও মৃত্যু আসার পূর্বে আমি তোমাদের যে অনুগ্রহ দান করেছি, তা থেকে [ দানে ] ব্যয় কর ৫৪৭৭। [ অন্যথায় ] সে তখন বলবে, ” হে আমার প্রভু ! কেন তুমি আমাকে আর কিছুকালের জন্য অবকাশ দাও না ? তাহলে আমি দানে [ প্রচুর ] ব্যয় করবো, এবং আমি সৎ কর্মশীলদের অন্তর্গত হব।”
৫৪৭৭। ‘রিযক’ বা জীবনোপকরণ। অর্থাৎ জীবনকে ধারণ করার জন্য যা প্রয়োজন। এই জীবনোপকরণ শুধু মাত্র অর্থ ও বিত্তের নিক্তিতে পরিমাপ্য নয়। মানুষকে আল্লাহ্ যে সব নেয়ামত বা মানসিক দক্ষতা দান করেছেন সবই তার জীবনোপকরণ। বস্তুগত দান যথা, অর্থ, সম্পদ, ইত্যাদি, স্পর্শাতীত দান যথা মেধা, মননশক্তি, সৃজন ক্ষমতা ইত্যাদি। যাকে আল্লাহ্ যে নেয়ামতই দান করুন না কেন তিনি তা জনগণের সেবায় আল্লাহকে খুশী করার জন্য ব্যয় করবেন। এই ব্যয় ‘যাকাত’ নয়। যাকাতের পরিমাণ নির্দ্দিষ্ট এবং তা অর্থের মাপকাঠিতে গ্রহণযোগ্য। আর ‘ব্যয়’ করা বা দান করা শুধুমাত্র অর্থের মাপকাঠিতে তা পরিশোধ যোগ্য নয়। এ হচ্ছে সেই দান যা পৃথিবীকে এবং পৃথিবীর সভ্যতাকে বৃহত্তর কল্যাণের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। দেখুন টিকা নং ২৭।
আয়াতঃ 063.011
প্রত্যেক ব্যক্তির নির্ধারিত সময় যখন উপস্থিত হবে, তখন আল্লাহ কাউকে অবকাশ দেবেন না। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে খবর রাখেন।
And Allâh grants respite to none when his appointed time (death) comes. And Allâh is All-Aware of what you do.
وَلَن يُؤَخِّرَ اللَّهُ نَفْسًا إِذَا جَاء أَجَلُهَا وَاللَّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ
Walan yu-akhkhira Allahu nafsan itha jaa ajaluha waAllahu khabeerun bima taAAmaloona
YUSUFALI: But to no soul will Allah grant respite when the time appointed (for it) has come; and Allah is well acquainted with (all) that ye do.
PICKTHAL: But Allah reprieveth no soul when its term cometh, and Allah is Informed of what ye do.
SHAKIR: And Allah does not respite a soul when its appointed term has come, and Allah is Aware of what you do.
KHALIFA: GOD never delays the appointed time of death for any soul. GOD is fully Cognizant of everything you do.
১১। কিন্তু যখন কারও নির্ধারিত কাল উপস্থিত হবে, আল্লাহ্ কোনও আত্মার জন্য অবকাশ মঞ্জুর করবেন না ৫৪৭৮। তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে [ সব ] সম্বন্ধে ভালোভাবেই জানেন।
৫৪৭৮। যখন পৃথিবীর “শিক্ষানবীশকাল ” শেষ হয়ে যাবে আমাদের জন্য আর এক মূহুর্ত সময়ও মঞ্জুর করা হবে না। জীবনের এই স্বল্প সময়কে বৃথা ব্যয় না করে সঠিক ভাবে ব্যয় করা প্রত্যেকের কর্তব্য। মানুষের চিন্তার জগত বা মনোজগত আল্লাহ্র নখদর্পনে। আল্লাহ্ মানুষের গোপন চিন্তা ভাবনা, প্রতিটি কাজের অন্তর্নিহিত নিয়ত সব সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞাত।