- সূরার নাম: সূরা জুমআ
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা জুমআ
আয়াতঃ 062.001
রাজ্যাধিপতি, পবিত্র, পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে, যা কিছু আছে নভোমন্ডলে ও যা কিছু আছে ভূমন্ডলে।
Whatsoever is in the heavens and whatsoever is on the earth glorifies Allâh, the King (of everything), the Holy, the All-Mighty, the All-Wise.
يُسَبِّحُ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ الْمَلِكِ الْقُدُّوسِ الْعَزِيزِ الْحَكِيمِ
Yusabbihu lillahi ma fee alssamawati wama fee al-ardi almaliki alquddoosi alAAazeezi alhakeemi
YUSUFALI: Whatever is in the heavens and on earth, doth declare the Praises and Glory of Allah,- the Sovereign, the Holy One, the Exalted in Might, the Wise.
PICKTHAL: All that is in the heavens and all that is in the earth glorifieth Allah, the Sovereign Lord, the Holy One, the Mighty, the Wise.
SHAKIR: Whatever is in the heavens and whatever is in the earth declares the glory of Allah, the King, the Holy, the Mighty, the Wise.
KHALIFA: Glorifying GOD is everything in the heavens and everything on earth; the King, the Most Sacred, the Almighty, the Most Wise.
===============
সূরা জুম’আ অথবা [ শুক্রবারের ] সমবেত প্রার্থনা – ৬২
১১ আয়াত, ২ রুকু, মাদানী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা : দশটি ছোট ছোট সূরার শ্রেণীর এটি হলো ষষ্ঠ সূরা; যে দশটি সূরার শ্রেণী শুরু হয়েছে ৫৭ নং সূরা থেকে।
এই সূরার বিশেষ বিষয়বস্তু হচ্ছে, আল্লাহ্র এবাদত ও আল্লাহকে হৃদয়ের মাঝে উপলব্ধি করার জন্য সামাজিক সংসর্গ ও সম্পর্ক প্রয়োজন। আল্লাহ্র বাণী ধনী -গরীব ; জ্ঞানী অজ্ঞ সকলের জন্য, যেনো তারা আত্মশুদ্ধির দ্বারা প্রজ্ঞা সম্পন্ন হতে পারে।
এই সূরার অবতীর্ণ কাল কোন বিশেষ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘটে নাই। সুতারাং এর অবতীর্ণ কালের কোন বিশেষত্ব নাই। সম্ভবতঃ এই সূরাটির অবতীর্ণ কাল হচ্ছে মদিনাতে রাসুলের (সা) অবস্থানের প্রথম দিকে যথা : ২য় থেকে ৫ম হিজরীর মধ্যে।
সার সংক্ষেপ : অজ্ঞ জনগণের মাঝে প্রত্যাদেশ প্রেরণ করা হয়েছে, তাদের পবিত্রতা ও জ্ঞান শিক্ষা দানের জন্য। এই প্রত্যাদেশ শুধু তাদের জন্যই নয়, অন্যান্য কিতাবধারীদের জন্যও প্রযোজ্য, যারা তাদের কিতাবের বাণীকে হৃদয়ঙ্গম করতে পারে না। ভক্তি সহকারে সমবেত [ শুক্রবারে ] প্রার্থনায় যোগদান কর। পার্থিব বিষয়বস্তু যেনো এ থেকে তোমাদের বিচ্যুত না করে। [ ৬২ : ১ – ১১ ]
সূরা জুম’আ অথবা [ শুক্রবারের ] সমবেত প্রার্থনা – ৬২
১১ আয়াত, ২ রুকু, মাদানী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই আল্লাহ্র পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে ৫৪৪৯; যিনি সার্বভৌম, মহাপবিত্র, শক্তিতে পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় ৫৪৫০।
৫৪৪৯। দেখুন [ ৫৯ : ২৪ ] আয়াতের টিকা ৫৪০৮। সেখানে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ‘Sabbaha’ এবং ‘yusabbihu’ এর মধ্যে। এখানে দ্বিতীয় ক্রিয়াপদটির প্রকাশকে প্রয়োগ করা হয়েছে, প্রকৃত অবস্থাকে বুঝানোর জন্য। ” পৃথিবীর সকল কিছুই আল্লাহ্র মহিমা ও প্রশংসা ঘোষণা করে।” কারণ আল্লাহ্র করুণা ও দয়া তার সকল সৃষ্ট জীবকে পরিবৃত্ত করে রেখেছে। আল্লাহ্ তাঁর প্রত্যাদেশ অশিক্ষিত, অজ্ঞ ও জ্ঞানী সকলের জন্য সমভাবে প্রেরণ করেছেন। জ্ঞানীরা যখন প্রকৃত জ্ঞান যা আল্লাহকে অনুধাবনে শিক্ষা দেয়, তা থেকে বিচ্যুত হয়ে [ অর্থকরী ] জ্ঞানের ভারে নুব্জ হয়ে পড়ে তাদের জন্য আল্লাহ্র প্রত্যাদেশের জ্ঞান বিশেষ ভাবে প্রয়োজন।
৫৪৫০। দেখুন সূরা [ ৫৯: ২৩ ] আয়াত ও টিকা ৫৪০২। এই আয়াতে পূর্বের [ ৫৯ : ২৩ ] আয়াতে বর্ণিত আল্লাহ্র দুটি গুণবাচক উপাধির পুণরাবৃত্তি করা হয়েছে এবং [ ৫৯ : ২৪ ] আয়াত থেকে দুটি গুণবাচক উপাধির পুণরাবৃত্তি করা হয়েছে। এর দ্বারা আল্লাহ্র স্বর্গীয় গুণাবলীর স্মৃতিচারণ করা হয়েছে মাত্র।
আয়াতঃ 062.002
তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।
He it is Who sent among the unlettered ones a Messenger (Muhammad SAW) from among themselves, reciting to them His Verses, purifying them (from the filth of disbelief and polytheism), and teaching them the Book (this Qur’ân, Islâmic laws and Islâmic jurisprudence) and Al-Hikmah (As-Sunnah: legal ways, orders, acts of worship, etc. of Prophet Muhammad SAW). And verily, they had been before in mainfest error;
هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ
Huwa allathee baAAatha fee al-ommiyyeena rasoolan minhum yatloo AAalayhim ayatihi wayuzakkeehim wayuAAallimuhumu alkitaba waalhikmata wa-in kanoo min qablu lafee dalalin mubeenin
YUSUFALI: It is He Who has sent amongst the Unlettered a messenger from among themselves, to rehearse to them His Signs, to sanctify them, and to instruct them in Scripture and Wisdom,- although they had been, before, in manifest error;-
PICKTHAL: He it is Who hath sent among the unlettered ones a messenger of their own, to recite unto them His revelations and to make them grow, and to teach them the Scripture and wisdom, though heretofore they were indeed in error manifest,
SHAKIR: He it is Who raised among the inhabitants of Mecca an Messenger from among themselves, who recites to them His communications and purifies them, and teaches them the Book and the Wisdom, although they were before certainly in clear error,
KHALIFA: He is the One who sent to the gentiles a messenger from among them, to recite to them His revelations, purify them, and teach them the scripture and wisdom. Before this, they had gone far astray.
২। তিনিই নিরক্ষর ৫৪৫১ মানুষের জন্য তাদেরই মধ্য থেকে একজন রসুল পাঠিয়েছেন, যে তাদের নিকট আয়াত সমূহ ৫৪৫২ আবৃত্তি করে, তাদের পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ৫৪৫৩ ও প্রজ্ঞা। যদিও ইতিপূর্বে তারা ছিলো সুস্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে ৫৪৫৪।
৫৪৫১। “উম্মীদের ” – এই শব্দটি দ্বারা রাসুলের (সা ) সমসাময়িক অজ্ঞ আরব এবং কিতাবধারী জাতিদের বোঝানো হয়েছে, যাদের মাঝে শিক্ষার প্রসার সত্বেও প্রকৃত সত্যকে অনুধাবনে যারা ছিলো অক্ষম। এদের কথা বলা হয়েছে ৫ নং আয়াতে। সমষ্টিগত ভাবে না নিয়ে যদি ব্যক্তিগত ভাবেও ধরা হয় তবুও এই আয়াতটির মমার্থ হচেছ আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ সকল মানুষের কল্যাণের জন্য। জ্ঞানী [ অর্থকরী বিদ্যায় ] বা মূর্খতার মাঝে কোনও ভেদাভেদ নাই।
৫৪৫২। “তাহার আয়াত সমূহ ” – ইংরেজীতে আয়াত সমূহের অনুবাদ করা হয়েছে ‘Sign’ বা নিদর্শন হিসেবে। সৃষ্টির মাঝেই স্রষ্টার জ্ঞান, প্রজ্ঞা, শিল্পীসত্তার নিদর্শন বিদ্যমান। সৃষ্টির বিশ্ব ভূবনের মাঝে যে নিয়ম, শৃঙ্খলা বিদ্যমান তা স্রষ্টার প্রজ্ঞারই সাক্ষর। কোরাণের আয়াত সমূহ আল্লাহ্র প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের বর্ণনায় সমৃদ্ধ। এখানে বিশেষ ভাবে বলা হয়েছে আল্লাহ্র ‘কিতাব ‘ সমূহের কথা।
৫৪৫৩। দেখুন [ ২ : ১২৯ ] আয়াত ও টিকা নং ১২৯। পূর্বের আয়াতে [ আয়াত – ১ ] আল্লাহ্র গুণবাচক নাম সমূহের বর্ণনা আছে। সেখানে বলা হয়েছে, আল্লাহ্ সার্বভৌম ক্ষমতার অধিপতি। সুতারাং পৃথিবীর সকল প্রাণ এবং বস্তু তারই সদয় তত্বাবধানের অর্ন্তগত। ধনী-গরীব,ছোট বড়, জ্ঞানী – মূর্খ সকলের কল্যাণের জন্য তিনি নবী ও রসুলদের প্রেরণ করে থাকেন। আল্লাহ্ মহাপবিত্র – সুতারাং তিনি পাপী ও কুসংস্কারে নিমজ্জিত ব্যক্তিদের পাপ ও কুসংস্কার মুক্ত করে পবিত্র করেন। আল্লাহ্ পরাক্রমশালী – সুতারাং যাকে খুশী তিনি তাঁর অনুগ্রহ দানে ধন্য করতে সক্ষম [ আয়াত ৩]। আল্লাহ্ প্রজ্ঞাময়, সুতারাং তিনি কিতাবের দ্বারা লিখিত ভাবে বা অন্যান্য মাধ্যমের দ্বারা মানুষকে জ্ঞান ও প্রজ্ঞা শিক্ষা দান করেন। অন্যান্য মাধ্যম : অর্থাৎ মানব জীবনের মাধ্যমে বা জীবন বিধানের বিভিন্ন আইনের মাধ্যমে বা বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের সৃষ্টির অনুধাবনের মাধ্যমে ইত্যাদি। এ ভাবেই বিশ্বস্রষ্টা মানুষকে পবিত্র করে তাকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেন।
৫৪৫৪। অজ্ঞতা, ব্যক্তি বা জাতির জন্য আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ ও অনুগ্রহ লাভের পক্ষে বাধা নয়। আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভের পূর্বশর্ত হচ্ছে ব্যক্তি বা জাতি তা লাভ করার জন্য আগ্রহান্বিত হবে এবং নিজেকে সে ভাবে প্রস্তুত করবে। সৎ জীবন যাপনের মাধ্যমে আত্মাকে প্রত্যাদেশ লাভের উপযুক্ত করতে হয় এবং অবাধ্যতা ত্যাগ করে বিনয়ের মাধ্যমে, প্রার্থনার মাধ্যমে আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভ করা যায়।
আয়াতঃ 062.003
এই রসূল প্রেরিত হয়েছেন অন্য আরও লোকদের জন্যে, যারা এখনও তাদের সাথে মিলিত হয়নি। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
And He has sent him (Prophet Muhammad SAW) also to others among them (Muslims) who have not yet joined them (but they will come). And He (Allâh) is the All-Mighty, the All-Wise.
وَآخَرِينَ مِنْهُمْ لَمَّا يَلْحَقُوا بِهِمْ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
Waakhareena minhum lamma yalhaqoo bihim wahuwa alAAazeezu alhakeemu
YUSUFALI: As well as (to confer all these benefits upon) others of them, who have not already joined them: And He is exalted in Might, Wise.
PICKTHAL: Along with others of them who have not yet joined them. He is the Mighty, the Wise.
SHAKIR: And others from among them who have not yet joined them; and He is the Mighty, the Wise.
KHALIFA: And to many generations subsequent to them. He is the Almighty, Most Wise.
৩। তাদের মধ্যে অপর লোকদেরও [ শিক্ষা দেয় ] যারা এখনও তাদের সাথে যোগ দেয় নাই ৫৪৫৫। আল্লাহ্ শক্তিতে পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
৫৪৫৫। ” তাদের মধ্যে অপর লোকদেরও [শিক্ষা দেয়)। ” – এই বাক্যটি দ্বারা বুঝানো হয়েছে তাদেরই যারা সত্য সম্বন্ধে অজ্ঞ। অর্থাৎ রাসুলের (সা ) মাধ্যমে যে সত্যকে আল্লাহ্ প্রেরণ করেছেন, তা রাসুলের (সা) সমসাময়িক চতুপার্শ্বের আরব, আরব ব্যতীত অন্য দেশীয় এবং যারা রাসুলের (সা) পরবর্তী যুগে বাস করবেন যাদের সাথে রাসুলের ব্যক্তিগত কোন সম্পর্ক নাই, তাদের সকলের জন্য এই আয়াত সমূহের সত্য প্রেরণ করা হয়েছে।
আয়াতঃ 062.004
এটা আল্লাহর কৃপা, যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করেন। আল্লাহ মহাকৃপাশীল।
That is the Grace of Allâh, which He bestows on whom He wills. And Allâh is the Owner of Mighty Grace.
ذَلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاء وَاللَّهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيمِ
Thalika fadlu Allahi yu/teehi man yashao waAllahu thoo alfadli alAAatheemi
YUSUFALI: Such is the Bounty of Allah, which He bestows on whom He will: and Allah is the Lord of the highest bounty.
PICKTHAL: That is the bounty of Allah; which He giveth unto whom He will. Allah is of Infinite Bounty.
SHAKIR: That is Allah’s grace; He grants it to whom He pleases, and Allah is the Lord of mighty grace.
KHALIFA: Such is GOD’s grace that He bestows upon whomever He wills. GOD is Possessor of Infinite Grace.
৪। ইহা আল্লাহ্রই অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করেন ৫৪৫৬। আল্লাহ্ তো সর্বোচ্চ অনুগ্রহের মালিক।
৫৪৫৬। আল্লাহ্র বিচক্ষণ পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি পৃথিবীতে বিভিন্ন ব্যক্তিকে বিভিন্ন নেয়ামত দান করে থাকেন। আল্লাহ্ অফুরন্ত নেয়ামতের অধিকারী।
আয়াতঃ 062.005
যাদেরকে তওরাত দেয়া হয়েছিল, অতঃপর তারা তার অনুসরণ করেনি, তাদের দৃষ্টান্ত সেই গাধা, যে পুস্তক বহন করে, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে, তাদের দৃষ্টান্ত কত নিকৃষ্ট। আল্লাহ জালেম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না।
The likeness of those who were entrusted with the (obligation of the) Taurât (Torah) (i.e. to obey its commandments and to practise its legal laws), but who subsequently failed in those (obligations), is as the likeness of a donkey who carries huge burdens of books (but understands nothing from them). How bad is the example (or the likeness) of people who deny the Ayât (proofs, evidences, verses, signs, revelations, etc.) of Allâh. And Allâh guides not the people who are Zâlimûn (polytheists, wrong-doers, disbelievers, etc.).
مَثَلُ الَّذِينَ حُمِّلُوا التَّوْرَاةَ ثُمَّ لَمْ يَحْمِلُوهَا كَمَثَلِ الْحِمَارِ يَحْمِلُ أَسْفَارًا بِئْسَ مَثَلُ الْقَوْمِ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِ اللَّهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
Mathalu allatheena hummiloo alttawrata thumma lam yahmilooha kamathali alhimari yahmilu asfaran bi/sa mathalu alqawmi allatheena kaththaboo bi-ayati Allahi waAllahu la yahdee alqawma alththalimeena
YUSUFALI: The similitude of those who were charged with the (obligations of the) Mosaic Law, but who subsequently failed in those (obligations), is that of a donkey which carries huge tomes (but understands them not). Evil is the similitude of people who falsify the Signs of Allah: and Allah guides not people who do wrong.
PICKTHAL: The likeness of those who are entrusted with the Law of Moses, yet apply it not, is as the likeness of the ass carrying books. Wretched is the likeness of folk who deny the revelations of Allah. And Allah guideth not wrongdoing folk.
SHAKIR: The likeness of those who were charged with the Taurat, then they did not observe it, is as the likeness of the ass bearing books, evil is the likeness of the people who reject the communications of Allah; and Allah does not guide the unjust people.
KHALIFA: The example of those who were given the Torah, then failed to uphold it, is like the donkey carrying great works of literature. Miserable indeed is the example of people who rejected GOD’s revelations. GOD does not guide the wicked people.
৫। যাদের উপরে তাওরাতের দায়িত্বভার দেয়া হয়েছিলো, কিন্তু পরবর্তীতে যারা সে দায়িত্ব বহনে অকৃতকার্য হয়েছিলো, তাদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে বৃহৎ গ্রন্থখন্ড বহনকারী গাধার ন্যায়, [ যে গ্রন্থের কিছু বুঝে না ] ৫৪৫৭। যে সম্প্রদায় আল্লাহ্র আয়াত সমূহ মিথ্যা গণ্য করেছে কত নিকৃষ্ট তাদের উপমা। যারা পাপ করে আল্লাহ্ তাদের সৎপথ প্রদর্শন করেন না।
৫৪৫৭। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ্ তাঁর বাণী পৃথিবীময় প্রচারের জন্য ইহুদীদের বিশেষ ভাবে নির্বাচিত করেছিলেন কিন্তু সময়ের বিবর্তনে তারা প্রকৃত সত্যকে ভুলে যায় এবং দূর্নীতিপরায়ণ হয়ে পড়ে। ‘তাওরাত’ ছিল তাদের ধর্মগ্রন্থ যার মাধ্যমে আল্লাহ্র বাণী বিশ্ব মানবের জন্য প্রেরণ করা হয়। কিন্তু তারা সে বাণীর মর্মার্থ ভুলে যায় এবং আনুষ্ঠানিকতাকে তাদের ধর্মরূপে পরিগণিত করে। ইহুদীদের জাতিগত আভিজাত্য যা তারা দাবী করে তা তাদের কাজের দ্বারা প্রমাণিত হয় না। ইহুদীরা তাদের নিজ গোষ্ঠিভূত বহু পয়গম্বরকে হত্যা করেছে। যখনই তাদের নিজেদের মতের সাথে সত্যের বিরোধ ঘটেছে তখনই তারা তাদের হত্যা করেছে। এভাবে তারা তওরাতের শিক্ষাকে অস্বীকার করেছে। এদেরই উপমা হচ্ছে ভারবাহী গাধার ন্যায়। গাধা যেরূপ পিঠে কি বহন করে সে সম্বন্ধে অজ্ঞ এবং বাহিত বোঝা দ্বারা সে কোন উপকৃত হয় না সেরূপ হচ্ছে ইহুদীদের দৃষ্টান্ত। তাওরাতের সত্য দ্বারা তারা উপকৃত হয় নাই।
মন্তব্য : আজকের বাংলাদেশের মুসলিমরা যারা শুধুমাত্র আরবীতে কোরাণ পড়ে কোরাণের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য শেষ করেন কিন্তু এ শিক্ষাকে হৃদয়ঙ্গম করে জীবনে প্রতিফলিত করেন না তাদের অবস্থাও ঐ ভারবাহী গাধার ন্যায় – পিঠে কি বহন করে জানে না। কোরাণে আল্লাহ্ কি হুকুম দিয়েছেন তা সম্বন্ধে তারা অজ্ঞ। দেখুন [ ২ : ৯১ ও টিকা ৯৬ ]।
আয়াতঃ 062.006
বলুন হে ইহুদীগণ, যদি তোমরা দাবী কর যে, তোমরাই আল্লাহর বন্ধু-অন্য কোন মানব নয়, তবে তোমরা মৃত্যু কামনা কর যদি তোমরা সত্যবাদী হও।
Say (O Muhammad SAW): ”O you Jews! If you pretend that you are friends of Allâh, to the exclusion of (all) other mankind, then long for death if you are truthful.”
قُلْ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ هَادُوا إِن زَعَمْتُمْ أَنَّكُمْ أَوْلِيَاء لِلَّهِ مِن دُونِ النَّاسِ فَتَمَنَّوُا الْمَوْتَ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
Qul ya ayyuha allatheena hadoo in zaAAamtum annakum awliyao lillahi min dooni alnnasi fatamannawoo almawta in kuntum sadiqeena
YUSUFALI: Say: “O ye that stand on Judaism! If ye think that ye are friends to Allah, to the exclusion of (other) men, then express your desire for Death, if ye are truthful!”
PICKTHAL: Say (O Muhammad): O ye who are Jews! If ye claim that ye are favoured of Allah apart from (all) mankind, then long for death if ye are truthful.
SHAKIR: Say: O you who are Jews, if you think that you are the favorites of Allah to the exclusion of other people, then invoke death If you are truthful.
KHALIFA: Say, “O you who are Jewish, if you claim that you are GOD’s chosen, to the exclusion of all other people, then you should long for death if you are truthful!”
৬। বল : ” ওহে ইহুদীগণ ! ৫৪৫৮। যদি তোমরা মনে কর যে, সমস্ত মানব গোষ্ঠির মধ্য তোমরাই [ শুধুমাত্র ] আল্লাহ্র বন্ধু, তবে তোমরা মৃত্যু কামনা কর – যদি তোমরা সত্যবাদী হও।” ৫৪৫৯
৫৪৫৮। আল্লাহ্ এই আয়াতে ইহুদীদের সম্বোধন করে দেন এই বলে যারা দাবী করে তারাই একমাত্র সত্যের ধারক, বাহক ও রক্ষক। তারা অবাধ্যভাবে আল্লাহ্র হুকুমকে অস্বীকার করে, কিন্তু কল্পনা করে যে তারাই স্বর্গীয় হুকুম সমূহের তত্বাবধায়ক এবং তাদের দাবী অন্যায় যে তারা কল্পনা তারা আল্লাহ্ কর্তৃক বিশেষ ভাবে নির্বাচিত হওয়ার ফলে শেষ বিচারের দিনে তারা শাস্তি থেকে অব্যহতি লাভ করবে [ ২ : ৮৮ ]। এতো আল্লাহ্র নিন্দা ব্যতীত, অন্য কিছু নয়। বর্তমানের ইহুদীদের যে ধর্ম তা আল্লাহ্র সত্যের বিরোধিতা বই অন্য কিছু নয়, যে ধর্ম তাদের রাসুল হযরত মুসা প্রচারিত ধর্মের বিকৃত রূপ।
৫৪৫৯। দেখুন সূরা [ ২ : ৯৪ – ৯৬ ] আয়াত। যদি ইহুদীরা প্রকৃতই বিশ্বাস করে যে, তারা আল্লাহ্র বন্ধু তবে তারা কেন মৃত্যু কামনা করে না ? কারণ মৃত্যু তাদের খুব শীঘ্রই আল্লাহ্র সাথে মিলিত হওয়ার সুযোগ দান করবে। কিন্তু দেখা যায় ইহুদীরাই সকল জাতির মধ্যে পার্থিব জীবন ও সম্পদের জন্য তীব্র আকাঙ্খা পোষণ করে ও জাগতিক আরাম আয়েশের মাঝে জীবন অতিবাহিত করতে আগ্রহী। তারা ভালোভাবেই জানে যে, স্বার্থপরতা, সম্পদের আকাঙ্খা তাদের পাপের পথে ঠেলে দেবে এবং যা হবে আল্লাহ্র বাণীকে অস্বীকার করার শেষ পরিণতি। সুতারাং তারা মৃত্যুকে কখনও কামনা করবে না।
আয়াতঃ 062.007
তারা নিজেদের কৃতকর্মের কারণে কখনও মৃত্যু কামনা করবে না। আল্লাহ জালেমদের সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন।
But they will never long for it (death), because of what (deeds) their hands have sent before them! And Allâh knows well the Zâlimûn (polytheists, wrong-doers, disbelievers, etc.).
وَلَا يَتَمَنَّوْنَهُ أَبَدًا بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيهِمْ وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِالظَّالِمِينَ
Wala yatamannawnahu abadan bima qaddamat aydeehim waAllahu AAaleemun bialththalimeena
YUSUFALI: But never will they express their desire (for Death), because of the (deeds) their hands have sent on before them! and Allah knows well those that do wrong!
PICKTHAL: But they will never long for it because of all that their own hands have sent before, and Allah is Aware of evil-doers.
SHAKIR: And they will never invoke it because of what their hands have sent before; and Allah is Cognizant of the unjust.
KHALIFA: They will never long for it, because of what they have committed. GOD is fully aware of the wicked.
৭। কিন্তু তারা কখনও [মৃত্যু ] কামনা করবে না, কারণ তাদের হাত যে [ কাজ ] তাদের পূর্বে প্রেরণ করেছে [ তার জন্য ]। যারা পাপ করে আল্লাহ্ তাদের সম্বন্ধে ভালোভাবে অবগত আছেন।
৮। বল : ” যে মৃত্যু থেকে তোমরা পলায়ন কর, সেই মৃত্যু তোমাদের অবশ্যই ধরবে। অতঃপর তোমাদের ফেরত পাঠানো হবে গোপন ও প্রকাশ্যের পরিজ্ঞাতা আল্লাহ্র নিকট। এবং [ পৃথিবীতে ] তোমরা যা করতে তার [ সত্যতা ] সম্বন্ধে তোমাদের জানিয়ে দেয়া হবে। ৫৪৬০
৫৪৬০। পরলোকের জীবনে আমাদের ভুলে যাওয়া জীবনের সকল কর্ম টেলিভিশনের ছবির ন্যায় আমাদের দৃষ্টিপথে ভাস্বর হবে। আমরা দেখতে চাই বা না চাই আমাদের ‘হস্ত যা অগ্রে প্রেরণ করেছে” – আমাদের সে সকল কৃতকর্ম আমাদের জানিয়ে দেয়া হবে। আমাদের চোখের সম্মুখ থেকে বিভ্রান্তির মায়াজাল ছিন্ন হয়ে যাবে। প্রকৃত সত্যকে করা হবে ভাস্বর। আমাদের প্রতিটি কর্মের উদ্দেশ্য বা নিয়ত, গোপনীয়তা সব কিছু সেদিন হবে সর্ব সমক্ষে প্রকাশিত। আমাদের মনের গহনের ছোট ছোট পাপ যা পৃথিবীতে প্রকাশ লাভ করে নাই সেদিন আল্লাহ্ আমাদের দেখাবেন তার পরিণতি। দেখাবেন পাপ কি ভাবে ধীরে ধীরে আধ্যাত্মিক জগতের উজ্জ্বলতাকে মলিন করে দেয় যার প্রভাব ইহকালকে অতিক্রম করে পরলোকের অনন্ত জীবন পর্যন্ত প্রসারিত হয়। মানুষের নিজস্ব কাল্পনিক ধ্যান ধারণা সেদিন অন্তর্হিত হবে মরিচিকার ন্যায়।
আয়াতঃ 062.008
বলুন, তোমরা যে মৃত্যু থেকে পলায়নপর, সেই মৃত্যু অবশ্যই তোমাদের মুখামুখি হবে, অতঃপর তোমরা অদৃশ্য, দৃশ্যের জ্ঞানী আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবেন সেসব কর্ম, যা তোমরা করতে।
Say (to them): ”Verily, the death from which you flee will surely meet you, then you will be sent back to (Allâh), the All-Knower of the unseen and the seen, and He will tell you what you used to do.”
قُلْ إِنَّ الْمَوْتَ الَّذِي تَفِرُّونَ مِنْهُ فَإِنَّهُ مُلَاقِيكُمْ ثُمَّ تُرَدُّونَ إِلَى عَالِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَيُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
Qul inna almawta allathee tafirroona minhu fa-innahu mulaqeekum thumma turaddoona ila AAalimi alghaybi waalshshahadati fayunabbi-okum bima kuntum taAAmaloona
YUSUFALI: Say: “The Death from which ye flee will truly overtake you: then will ye be sent back to the Knower of things secret and open: and He will tell you (the truth of) the things that ye did!”
PICKTHAL: Say (unto them, O Muhammad): Lo! the death from which ye shrink will surely meet you, and afterward ye will be returned unto the Knower of the Invisible and the Visible, and He will tell you what ye used to do.
SHAKIR: Say: (As for) the death from which you flee, that will surely overtake you, then you shall be sent back to the Knower of the unseen and the seen, and He will inform you of that which you did.
KHALIFA: Say, “The death that you are trying to evade will catch up with you sooner or later. Then you will be returned to the Knower of all secrets and declarations, then He will inform you of everything you had done.”
৭। কিন্তু তারা কখনও [মৃত্যু ] কামনা করবে না, কারণ তাদের হাত যে [ কাজ ] তাদের পূর্বে প্রেরণ করেছে [ তার জন্য ]। যারা পাপ করে আল্লাহ্ তাদের সম্বন্ধে ভালোভাবে অবগত আছেন।
৮। বল : ” যে মৃত্যু থেকে তোমরা পলায়ন কর, সেই মৃত্যু তোমাদের অবশ্যই ধরবে। অতঃপর তোমাদের ফেরত পাঠানো হবে গোপন ও প্রকাশ্যের পরিজ্ঞাতা আল্লাহ্র নিকট। এবং [ পৃথিবীতে ] তোমরা যা করতে তার [ সত্যতা ] সম্বন্ধে তোমাদের জানিয়ে দেয়া হবে। ৫৪৬০
৫৪৬০। পরলোকের জীবনে আমাদের ভুলে যাওয়া জীবনের সকল কর্ম টেলিভিশনের ছবির ন্যায় আমাদের দৃষ্টিপথে ভাস্বর হবে। আমরা দেখতে চাই বা না চাই আমাদের ‘হস্ত যা অগ্রে প্রেরণ করেছে” – আমাদের সে সকল কৃতকর্ম আমাদের জানিয়ে দেয়া হবে। আমাদের চোখের সম্মুখ থেকে বিভ্রান্তির মায়াজাল ছিন্ন হয়ে যাবে। প্রকৃত সত্যকে করা হবে ভাস্বর। আমাদের প্রতিটি কর্মের উদ্দেশ্য বা নিয়ত, গোপনীয়তা সব কিছু সেদিন হবে সর্ব সমক্ষে প্রকাশিত। আমাদের মনের গহনের ছোট ছোট পাপ যা পৃথিবীতে প্রকাশ লাভ করে নাই সেদিন আল্লাহ্ আমাদের দেখাবেন তার পরিণতি। দেখাবেন পাপ কি ভাবে ধীরে ধীরে আধ্যাত্মিক জগতের উজ্জ্বলতাকে মলিন করে দেয় যার প্রভাব ইহকালকে অতিক্রম করে পরলোকের অনন্ত জীবন পর্যন্ত প্রসারিত হয়। মানুষের নিজস্ব কাল্পনিক ধ্যান ধারণা সেদিন অন্তর্হিত হবে মরিচিকার ন্যায়।
আয়াতঃ 062.009
মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।
O you who believe (Muslims)! When the call is proclaimed for the Salât (prayer) on the day of Friday (Jumu’ah prayer), come to the remembrance of Allâh [Jumu’ah religious talk (Khutbah) and Salât (prayer)] and leave off business (and every other thing), that is better for you if you did but know!
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِي لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
Ya ayyuha allatheena amanoo itha noodiya lilssalati min yawmi aljumuAAati faisAAaw ila thikri Allahi watharoo albayAAa thalikum khayrun lakum in kuntum taAAlamoona
YUSUFALI: O ye who believe! When the call is proclaimed to prayer on Friday (the Day of Assembly), hasten earnestly to the Remembrance of Allah, and leave off business (and traffic): That is best for you if ye but knew!
PICKTHAL: O ye who believe! When the call is heard for the prayer of the day of congregation, haste unto remembrance of Allah and leave your trading. That is better for you if ye did but know.
SHAKIR: O you who believe! when the call is made for prayer on Friday, then hasten to the remembrance of Allah and leave off trading; that is better for you, if you know.
KHALIFA: O you who believe, when the Congregational Prayer (Salat Al-Jumu`ah) is announced on Friday, you shall hasten to the commemoration of GOD, and drop all business. This is better for you, if you only knew.
রুকু – ২
৯। হে বিশ্বাসীগণ ! যখন শুক্রবারের প্রার্থনার জন্য আহ্বান করা হবে ৫৪৬১, তখন ব্যবসা -বাণিজ্য বন্ধ রেখে আল্লাহকে আন্তরিক ভাবে স্মরণের জন্য দ্রুত অগ্রসর হও ৫৪৬২। ইহা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে ৫৪৬৩।
৫৪৬১। ‘শুক্রবার ‘ হচ্ছে মুসলিম বিশ্বের সমবেত প্রার্থনার দিন। এই সাপ্তাহিক দিনটিতে মুসলমানেরা সমবেত প্রার্থনার মাধ্যমে তাদের একতাকে উপলব্ধি করে। এই প্রার্থনার পূর্বে খুতবা পাঠ করা হয় যার মাধ্যমে ইমাম সাহেব সামাজিক জীবনের নৈতিক সমস্যাবলী, আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ নির্দ্দেশ দান করে থাকেন। ধর্ম সম্বন্ধে আলোচনা দ্বারা পবিত্র জীবনযাপনের নির্দ্দেশ দান করা হয়। শুক্রবারে জুমার নামাজ মুসলমানদের জন্য সামাজিক সম্মেলনের এক বিশেষ আদর্শ। মুসলমানদের এবাদতকে নিম্নলিখিত ক্রম অনুযায়ী সাজানো যায় :
১) প্রত্যেক মুসলমান পাঁচ ওয়াক্ত ব্যক্তিগত ভাবে নামাজের মাধ্যমে আল্লাহকে স্মরণ করে থাকে। তার এই এবাদত স্থান হতে পারে নিজের বাড়ী বা কর্মক্ষেত্র বা স্থানীয় মসজিদ বা উম্মুক্ত প্রান্তর ইত্যাদি।
২) গ্রাম, শহর বা স্থানীয় মসজিদে শুক্রবারে সমবেত ভাবে প্রার্থনার মাধ্যমে।
৩) দুইটি ঈদে স্থানীয় ঈদগাহে সমবেত ভাবে প্রার্থনার মাধ্যমে।
৪) জীবনে অন্ততঃ একবার ‘হজ্ব’ নামক আন্তর্জাতিক সমাবেশে উপস্থিত থেকে আল্লাহ্র এবাদত করা। হজ্ব পালন করা হয় মক্কাতে ইসলামের কেব্লা কাবা শরীফে। এভাবেই ইসলামে ব্যক্তিগত এবাদত ও সমষ্টিগত এবাদতকে জীবনের সাথে সুন্দর ভাবে সমন্বিত করা হয়েছে। সমষ্টিগত এবাদতের আনুষ্ঠানিক দিকটি কার্যে পরিণত করা সহজ কিন্তু এর যে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দিক রয়ে গেছে তা কি জীবনে প্রতিফলিত করা এত সহজ ? সমষ্টিগত এবাদতের মূল কেন্দ্র বিন্দু হচ্ছে একতা, মুসলিম ভাতৃত্ব, আলোচনার মাধ্যমে পরস্পর সমঝোতা এবং বৃহত্তর মঙ্গলের জন্য সমবেত উপলব্ধি।
৫৪৬২। এই আয়াতের মাধ্যমে মুসলমানদের জুমার দিনের বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরা হয়েছে। ইহুদীরা শনিবারে সাবাথ দিবস পালন করে থাকে, সপ্তাহের এই একটি দিনে তারা সকল কর্ম বিরতি পালন করে। কারণ তারা বিশ্বাস করে আল্লাহ্ ছয়দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করে সপ্তম দিনে বা শনিবারে বিশ্রাম গ্রহণ করেন। সুতারাং তারাও সেদিন বিশ্রাম নেয় এমন কি কোনও এবাদতেও তারা অংশগ্রহণ করে না। কিন্তু আল্লাহ্ স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন যে, তিনি কখনও ক্লান্তিবোধ করেন না [ ২ : ২২৫ ]। মুসলমানেরা শুক্রবারকে সমবেত প্রার্থনা দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। খৃষ্টানরা শনিবারকে পরিবর্তন করে তাদের সাবাত দিবস হিসেবে রবিবার পালন করে থাকে। কিন্তু তারা মূলত : ইহুদীদেরই অনুসরণ করে থাকে। মুসলিমদের উপরে আল্লাহ্র নির্দ্দেশ হচ্ছে – কোনও কর্মবিরতি নয়, যখন জুমার নামাজের সময় হবে, তোমাদের কাজকর্ম বন্ধ রাখ এবং সমবেত প্রার্থনায় যোগদান কর – আন্তরিকভাবে প্রার্থনার জন্য, আলোচনার জন্য এবং সামাজিক সম্পৃক্ততার জন্য। যখন জুমার নামাজ শেষ হবে, যে যার কর্মস্থলে ফিরে যাও। এই হচ্ছে মুসলিম দর্শন যা একতা সামাজিক সম্পৃক্ততা ও মুসলিম ভাতৃত্বের উপরে প্রতিষ্ঠিত।
৫৪৬৩। কিছুক্ষণ কর্মবিরতিতে হয়তো বা তোমাদের জন্য কিছু আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা বয়ে আনবে। কিন্তু জুমার নামাজ ত্যাগ করে সামান্য আর্থিক লাভ পরলোকের অনন্ত জীবনের জন্য হবে বিরাট ক্ষতি।
আয়াতঃ 062.010
অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
Then when the (Jumu’ah) Salât (prayer) is finished, you may disperse through the land, and seek the Bounty of Allâh (by working, etc.), and remember Allâh much, that you may be successful.
فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
Fa-itha qudiyati alssalatu faintashiroo fee al-ardi waibtaghoo min fadli Allahi waothkuroo Allaha katheeran laAAallakum tuflihoona
YUSUFALI: And when the Prayer is finished, then may ye disperse through the land, and seek of the Bounty of Allah: and celebrate the Praises of Allah often (and without stint): that ye may prosper.
PICKTHAL: And when the prayer is ended, then disperse in the land and seek of Allah’s bounty, and remember Allah much, that ye may be successful.
SHAKIR: But when the prayer is ended, then disperse abroad in the land and seek of Allah’s grace, and remember Allah much, that you may be successful.
KHALIFA: Once the prayer is completed, you may spread through the land to seek GOD’s bounties, and continue to remember GOD frequently, that you may succeed.
১০। এবং যখন প্রার্থনা শেষ হয়ে যাবে, তখন আল্লাহ্র অনুগ্রহ সন্ধানের জন্য পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়তে পার। এবং সর্বদা আল্লাহকে স্মরণ করবে, যেনো তোমরা সফলতা লাভ করতে পার। ৫৪৬৪
৫৪৬৪। এখানে ‘সফলকাম ‘ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। পার্থিব জীবনে আমরা সফলতার মাপকাঠি ধরে থাকি অর্থ ও সম্পদের প্রাচুর্য। কিন্তু যে সফলতার উল্লেখ এখানে করা হয়েছে, তা পার্থিব জীবনকে অতিক্রম করে পরলোকের অনন্ত জীবন পর্যন্ত সম্প্রসারিত। সে সফলতা হচ্ছে আধ্যাত্মিক জীবনের সফলতা বা উন্নতি।
আয়াতঃ 062.011
তারা যখন কোন ব্যবসায়ের সুযোগ অথবা ক্রীড়াকৌতুক দেখে তখন আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা সেদিকে ছুটে যায়। বলুনঃ আল্লাহর কাছে যা আছে, তা ক্রীড়াকৌতুক ও ব্যবসায় অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। আল্লাহ সর্বোত্তম রিযিকদাতা।
And when they see some merchandise or some amusement [beating of Tambur (drum) etc.] they disperse headlong to it, and leave you (Muhammad SAW) standing [while delivering Jumu’ah’s religious talk (Khutbah)]. Say ”That which Allâh has is better than any amusement or merchandise! And Allâh is the Best of providers.”
وَإِذَا رَأَوْا تِجَارَةً أَوْ لَهْوًا انفَضُّوا إِلَيْهَا وَتَرَكُوكَ قَائِمًا قُلْ مَا عِندَ اللَّهِ خَيْرٌ مِّنَ اللَّهْوِ وَمِنَ التِّجَارَةِ وَاللَّهُ خَيْرُ الرَّازِقِينَ
Wa-itha raaw tijaratan aw lahwan infaddoo ilayha watarakooka qa-iman qul ma AAinda Allahi khayrun mina allahwi wamina alttijarati waAllahu khayru alrraziqeena
YUSUFALI: But when they see some bargain or some amusement, they disperse headlong to it, and leave thee standing. Say: “The (blessing) from the Presence of Allah is better than any amusement or bargain! and Allah is the Best to provide (for all needs).”
PICKTHAL: But when they spy some merchandise or pastime they break away to it and leave thee standing. Say: That which Allah hath is better than pastime and than merchandise, and Allah is the Best of providers.
SHAKIR: And when they see merchandise or sport they break up for It, and leave you standing. Say: What is with Allah is better than sport and (better) than merchandise, and Allah is the best of Sustainers.
KHALIFA: When some of them come across a business deal, or some entertainment, they rush to it and leave you standing! Say, “What GOD possesses is far better than the entertainment or the business. GOD is the best Provider.”
১১। কিন্তু যখন তারা লাভজনক ক্রয়-বিক্রয় ও কৌতুক দেখে, তখন তারা তোমাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে সেদিকে ধাবিত হয়। বল : ” আল্লাহ্র নিকট থেকে প্রাপ্ত [ আর্শীবাদ ] যে কোন কৌতুক ও লাভজনক ক্রয়-বিক্রয় অপেক্ষা উত্তম। আল্লাহ্ সর্বশ্রেষ্ঠ রুজীদাতা ৫৪৬৫।
৫৪৬৫। একবার মদিনায় খাদ্য শস্যেরর ভীষণ অভাব দেখা দেয়। সেই সময়ে এক জুমার সালাতে যখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) খুতবা দিতেছিলেন, তখন খাদ্যশষ্য আমদানীকারক একটি ব্যবসায়ী দল সেখানে আগমন করলে মুসল্লীগণের মধ্যে অনেকে খাদ্যশস্য ক্রয় করার উদ্দেশ্যে নামাজ শেষের পূর্বেই মসজিদ থেকে বাইরে যান। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। ক্ষণস্থায়ী লাভ বা আনন্দের জন্য অধীর হওয়া উচিত নয়। যদি কেউ আল্লাহ্র উপরে ভরসা রেখে সৎ জীবন যাপন করে আল্লাহ্ তাদের সকল অভাব পূর্ণ করে দেন।