রুকু – ২
২৬। আকাশে কত ফেরেশতা রয়েছে ৫১০০, তাদের সুপারিশ কিছুমাত্র ফলপ্রসু হবে না। তবে আল্লাহ্ অনুমতি দান করেন যাকে ইচ্ছা, ও যার প্রতি তিনি সন্তুষ্ট সে ব্যতীত ৫১০১।
৫১০০। সাধারণ মানুষ ফেরেশতাদের ধারণা করে প্রভু ও ক্ষমতা ধর হিসেবে। তাঁরা ঐশ্বরিক শক্তির অধিকারী সন্দেহ নাই ; কিন্তু এই আয়াতে আল্লাহ্ পরিষ্কার ভাষাতে ঘোষণা করেছেন যে, ফেরেশতাদের সকল ক্ষমতা আল্লাহ্ প্রদত্ত এবং সীমিত। মানুষ আধ্যাত্মিক জগতের উন্নতির মাধ্যমে আল্লাহ্র ফেরেশতাদের থেকেও সম্মানিত হতে পারেন। হযরত আদমকে ফেরেশতাদের সেজদার মাধ্যমে [ ২ : ৩৪ ] এই চিরন্তন সত্যকে তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে এই বিশ্বজগতে সকল ক্ষমতা ও শক্তির মূল কেন্দ্র সর্ব শক্তিমান আল্লাহ্। তাঁর অনুমতি ব্যতীত কোনও কিছুই হতে পারে না। আল্লাহ্র একত্বের প্রতি এই আয়াতের দ্বারা দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে ; এবং কোরেশরা আল্লাহ্ ও মানুষের মধ্যে যে মধ্যস্তকারী শক্তি কল্পনা করতো তার নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে। কোরাণের এই শক্তিশালী আয়াতে বলা হয়েছে, মানুষ বিভিন্ন পীরের দরগা, বা মাজারের স্মরণাপন্ন হয়ে থাকে, আল্লাহ্র নিকট সুপারিশ করার জন্য, তা আল্লাহ্ অনুমোদন করেন না।
৫১০১। দেখুন সূরা [ ২০ : ১০৯] আয়াত এবং [ ২১ : ২৮ ] আয়াত। আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান, দ্যুলোকে, ভূলোকে সর্বত্র তারই হুকুম বা আইন বর্তমান। তাঁর বিনা অনুমতিতে কারও পক্ষে মধ্যস্তকারী বা সুপারিশ করা সম্ভব হবে না। শুধুমাত্র যিনি আল্লাহ্র নিকট গ্রহণযোগ্য হবেন, তিনিই সুপারিশ বা মধ্যস্ততা করার অনুমতি লাভ করবেন। বিভিন্ন অর্থবোধক তফসীরের জন্য দেখুন [ ২০ : ১০৯ ] আয়াতের টিকা ২৬৪৩।
আয়াতঃ 053.027
যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তারাই ফেরেশতাকে নারীবাচক নাম দিয়ে থাকে।
Verily, those who believe not in the Hereafter, name the angels with female names.
إِنَّ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ لَيُسَمُّونَ الْمَلَائِكَةَ تَسْمِيَةَ الْأُنثَى
Inna allatheena la yu/minoona bial-akhirati layusammoona almala-ikata tasmiyata al-ontha
YUSUFALI: Those who believe not in the Hereafter, name the angels with female names.
PICKTHAL: Lo! it is those who disbelieve in the Hereafter who name the angels with the names of females.
SHAKIR: Most surely they who do not believe in the hereafter name the angels with female names.
KHALIFA: Those who disbelieve in the Hereafter have given the angels feminine names.
২৭। যারা পরলোকে বিশ্বাস করে না, তারাই ফেরেশতাদের নারীবাচক নামে অভিহিত করে থাকে ৫১০২।
৫১০২। দেখুন [ ৫৩ : ২১ ] আয়াত এবং টিকা ৫০৯৬। মোশরেক আরবদের পরলোকে বিশ্বাস ছিলো না। তাদের জীবন-ধর্ম,সকল চাওয়া, পাওয়া আবর্তিত ছিলো পার্থিব জীবনকে ঘিরে। পার্থিব জীবনে তাদের চোখে নারীকে মনে হতো মোহনীয় রূপে, সুতারাং ফেরেশতাদেরও তারা সেইরূপই কল্পনা করতে ভালোবাসতো। পৃথিবীতে যারাই আল্লাহ্র একত্বে বিশ্বাসী নয়, তারাই তাদের উপাস্যদের নারীমূর্তিতে কল্পনা করতে ভালোবাসে। তাদের অন্য আর একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তাদের সকল চাওয়া পাওয়া আবর্তিত হয় শুধুমাত্র পার্থিব জীবনকে ঘিরে।
মন্তব্য : বাংলাদেশে মানুষ পীরের দরগায় এবং মাজারে গমন করে শুধুমাত্র পার্থিব বিপদ থেকে মুক্তি ও জাগতিক উন্নতির আশায়। এটা প্রকৃত ধর্মের ভিত্তি হতে পারে না।
আয়াতঃ 053.028
অথচ এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই। তারা কেবল অনুমানের উপর চলে। অথচ সত্যের ব্যাপারে অনুমান মোটেই ফলপ্রসূ নয়।
While they have no knowledge thereof. They follow but a guess, and verily, guess is no substitute for the truth.
وَمَا لَهُم بِهِ مِنْ عِلْمٍ إِن يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَإِنَّ الظَّنَّ لَا يُغْنِي مِنَ الْحَقِّ شَيْئًا
Wama lahum bihi min AAilmin in yattabiAAoona illa alththanna wa-inna alththanna la yughnee mina alhaqqi shay-an
YUSUFALI: But they have no knowledge therein. They follow nothing but conjecture; and conjecture avails nothing against Truth.
PICKTHAL: And they have no knowledge thereof. They follow but a guess, and lo! a guess can never take the place of the truth.
SHAKIR: And they have no knowledge of it; they do not follow anything but conjecture, and surely conjecture does not avail against the truth at all.
KHALIFA: They had no knowledge about this; they only conjectured. Conjecture is no substitute for the truth.
২৮। কিন্তু সে সম্বন্ধে তাদের কোন জ্ঞান নাই। অনুমান ব্যতীত তারা অন্য কিছুর অনুসরণ করে না ; আর সত্যের বিরুদ্ধে অনুমান কোন কাজেই আসবে না ৫১০৩।
৫১০৩। দেখুন [ ৫৩ : ২৩ ] আয়াত ও টিকা ৫০৯৮। ” সত্যের বিরুদ্ধে অনুমান কোন কাজেই আসবে না।” এই অবিস্মরণীয় উপদেশ যুগ কাল অতিক্রান্ত। শুধু ধর্মীয় ব্যাপারে নয় কোরাণে এই উপদেশ দান করা হয়েছে জীবনের সর্বক্ষেত্রের জন্য। সত্যকে তার প্রকৃতরূপে উদ্ঘাটিত করতে হবে। সত্যকে উদ্ঘাটিত করার অপর নামই হচ্ছে “বিজ্ঞান ” যা আল্লাহ্র সৃষ্টি তত্বের প্রকৃত সত্যকে উদ্ঘাটিত করে থাকে। মানুষের সামাজিক জীবনে যেমন : বিচার বিভাগ, প্রশাসন, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদি জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রকৃত সত্যকে উদ্ঘাটিত করতে বলা হয়েছে। বলা হয়েছে ” সত্যের মুকাবিলাতে অনুমানের কোনও মূল্য নাই।”