০৯। মুমিনদের দুই দল বিবাদে লিপ্ত হলে; তোমরা তাদের মাঝে শান্তি স্থাপন কর ৪৯২৭। কিন্তু যদি তাদের একদল অপরদলের বিরুদ্ধে সীমা লংঘন করে, তবে যে অন্যায় করছে তার বিরুদ্ধে [ সকলে ] যুদ্ধ কর, যতক্ষণ না সে আল্লাহ্র হুকুমের দিকে ফিরে আসে। অতঃপর যদি সেই দল আল্লাহ্র [ নির্দ্দেশের ] দিকে ফিরে আসে, তবে উহাদের মাঝে ন্যায় বিচারের মাধ্যমে শান্তি স্থাপন করে দাও, এবং [ এ ব্যাপারে ] নিরপেক্ষ হবে। কারণ যারা নিরপেক্ষ [ ও ন্যায় বিচারক ] আল্লাহ্র তাদের ভালোবাসেন।
৪৯২৭। ব্যক্তিগত ঝগড়া -বিবাদ মেটানো সহজ। কিন্তু বিবাদ যখন ব্যপকতা লাভ করে দলে দলে লিপ্ত হয় বা বর্তমান বিশ্বে যেরূপ জাতিতে জাতিতে লিপ্ত হয়, সেরূপ ক্ষেত্রে বিবাদ মেটানো খুব সহজ কাজ নয়। এরূপ ক্ষেত্রে মুসলিমদের করণীয় কর্তব্য সম্বন্ধে এই আয়াতে নির্দ্দেশ দান করা হয়েছে। মুসলিমদের মাঝে যখন বিভিন্ন দল বা গোষ্ঠির মধ্যে এরূপ দ্বন্দ বিবাদের সুত্রপাত ঘটে – মনে রাখতে হবে ইসলামের ঝান্ডা হচ্ছে সর্বোচ্চ পরিচয়। কোনও অবস্থাতেই মুসলিম ভাতৃত্বের বিভাজন কাম্য নয়। মীমাংসা হতে হবে ন্যায়ের ভিত্তিতে – মনে রাখতে হবে যুদ্ধ অপেক্ষা শান্তি অধিক কাম্য। কিন্তু কোনও পক্ষের যদি ন্যায় বিচার পছন্দ না হয় এবং তারা যুদ্ধ করার জন্য বদ্ধপরিকর হয়, এরূপ ক্ষেত্রে মুসলিম ভাতৃত্বের সকল শক্তি সংঘবদ্ধভাবে, তাদের আক্রমণ করবে – শর্ত হবে যতক্ষণ না তারা আল্লাহ্র নির্দ্দেশের দিকে ফিরে আসে। সর্বক্ষেত্রেই শর্ত হবে ন্যায় ও কল্যাণ এবং সর্বোচ্চ নীতিবোধের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ। কারণ ইসলাম ধর্ম সর্বদা সকলের ন্যায্য এবং আইনগত অধিকারকে স্বীকার করে থাকে। আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে সকলের প্রতি ন্যায় ও সুবিচার। পার্থিব জগতের ন্যায় ও সুবিচার হচ্ছে আধ্যাত্মিক জগতের সমৃদ্ধির ভিত্তি। “কারণ যারা নিরপেক্ষ (ন্যায় বিচারক) আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন।” আয়াতের এই বাক্যটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আল্লাহ্র অনুগ্রহের পূর্বশর্ত হচ্ছে ন্যায় ও সুবিচার। যেখানেই অন্যায় হয় অবদমিত, এবং ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা লাভ ঘটে তাই-ই আল্লাহ্র অনুগ্রহ প্রাপ্ত হয়। এ সত্য পার্থিব ও আধ্যাত্মিক জগত উভয় জগতের জন্য সত্য। এর প্রচুর উদাহরণ ব্যক্তিগত ও জাতীয় জীবনে লক্ষ্য করা যায়। এই ন্যায় নীতির অভাবে অতীতে “লীগ অব নেশন ” ভেঙ্গে যায়। বর্তমানেও জাতিসংঘ সঠিকভাবে কার্যকর হতে পারছে না – তার কারণ ন্যায়নীতির অভাব। ন্যায়নীতি ও সুবিচার হচ্ছে ধর্মীয় আর্দশের মূল ভিত্তি।
আয়াতঃ 049.010
মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই। অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে-যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও।
The believers are nothing else than brothers (in Islâmic religion). So make reconciliation between your brothers, and fear Allâh, that you may receive mercy.
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
Innama almu/minoona ikhwatun faaslihoo bayna akhawaykum waittaqoo Allaha laAAallakum turhamoona
YUSUFALI: The Believers are but a single Brotherhood: So make peace and reconciliation between your two (contending) brothers; and fear Allah, that ye may receive Mercy.
PICKTHAL: The believers are naught else than brothers. Therefore make peace between your brethren and observe your duty to Allah that haply ye may obtain mercy.
SHAKIR: The believers are but brethren, therefore make peace between your brethren and be careful of (your duty to) Allah that mercy may be had on you.
KHALIFA: The believers are members of one family; you shall keep the peace within your family and reverence GOD, that you may attain mercy.
১০। বিশ্বাসীগণ তো পরস্পর ভাই ভাই ৪৯২৮। সুতারাং তোমার দুই [ বিবাদমান ] ভাইএর মাঝে শান্তি স্থাপন দ্বারা পুনর্মিলন করে দাও। আর আল্লাহকে ভয় কর, যেনো তোমরা তাঁর অনুগ্রহ প্রাপ্ত হতে পার।
৪৯২৮। ইসলাম ধর্মে মুসলিম ভাতৃত্বের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। বিদায় হজ্বে রাসুলুল্লাহ্র (সা) ভাষণের প্রধান বক্তব্যই ছিলো মুসলিম ভাতৃত্বের সংহতি। মুসলিম ভাতৃত্বের প্রতি আত্ম নিবেদন ব্যতীত ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য অনুধাবন করা সম্ভব নয়।
আয়াতঃ 049.011
মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম।
O you who believe! Let not a group scoff at another group, it may be that the latter are better than the former; nor let (some) women scoff at other women, it may be that the latter are better than the former, nor defame one another, nor insult one another by nicknames. How bad is it, to insult one’s brother after having Faith [i.e. to call your Muslim brother (a faithful believer) as: ”O sinner”, or ”O wicked”, etc.]. And whosoever does not repent, then such are indeed Zâlimûn (wrong-doers, etc.).