- সূরার নাম: সূরা কাফ
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা কাফ
আয়াতঃ 050.001
ক্বাফ! সম্মানিত কোরআনের শপথ;
Qâf. [These letters (Qâf, etc.) are one of the miracles of the Qur’ân, and none but Allâh (Alone) knows their meanings]. By the Glorious Qur’ân.
ق وَالْقُرْآنِ الْمَجِيدِ
Qaf waalqur-ani almajeedi
YUSUFALI: Qaf: By the Glorious Qur’an (Thou art Allah’s Messenger).
PICKTHAL: Qaf. By the Glorious Qur’an,
SHAKIR: Qaf. I swear by the glorious Quran (that Muhammad is the Messenger of Allah)
KHALIFA: Q., and the glorious Quran.
০১। কাফ্, সম্মানিত কুর-আনের শপথ [ নিশ্চয়ই তুমি আল্লাহ্র রাসুল ] ৪৯৪০।
৪৯৪০। ‘Majid’ এই শব্দটি ইংরেজীতে অনুবাদ করা হয়েছে ‘Glorious’ এবং শব্দটি বাংলাতে অনুবাদ করা হয়েছে “সম্মানিত” শব্দটি দ্বারা। অবশ্য ‘মজিদ’ একটি অত্যন্ত সুন্দর শব্দ, যার সঠিক সৌন্দর্য্য অনুবাদের মাধ্যমে তুলে ধরা সম্ভব নয়। ; যার দ্বারা কোরাণকে ভূষিত করা হয়েছে। কোন ভাষার শব্দ দ্বারা কোরাণের দীপ্তিকে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। কোরাণের দীপ্তি উদিত সূর্যের ন্যায় ভাস্বর। সূর্য দিগন্তরেখা ত্যাগ করে যত উর্দ্ধে উদিত হতে থাকে ততই তার আলোর প্রখরতা ও দীপ্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে। কোরাণের বাণীও ঠিক তদ্রূপ ধীরে ধীরে মনের দিগন্তকে উদ্ভাসিত করে আধ্যাত্মিক তমসাকে দূর করে দেয়। কোরাণের বাণীর সৌন্দর্য্য যত হৃদয়ে ধারণ করা যায় তত এর প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধায় হৃদয় মন আপ্লুত হয়ে পড়ে। এর বাণীর অর্থ অত্যন্ত স্পষ্ট এবং চিরসত্য যা অক্ষয় এবং অবিনশ্বর। এই সত্যের সাথে যার একবার আধ্যাত্মিক যোগাযোগ ঘটা সম্ভব হয়েছে, সে জানে যে, সে অভিজ্ঞতা ভোলার নয়, যা প্রকাশের ভাষা পৃথিবীর কোনও সাহিত্যিকের নাই। যত এই অভিজ্ঞতা লাভ করা যায়, তত আধ্যাত্মিক চক্ষু উম্মীলিত হয় – হৃদয়ের অন্ধকার কোরাণের আলোর দীপ্তিতে ধীরে ধীরে বিদূরিত হতে থাকে। আত্মার মাঝে কোরাণের দীপ্তি ও সৌন্দর্যের বিরল অনুভূতি যার কখনও ঘটে নাই তার পক্ষে সে অনুভূতি উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। কারও পক্ষেও সে অনুভূতি প্রকাশ করাও সম্ভব নয়। কোরাণ হচ্ছে রাসুলের (সা ) নবুয়তের উজ্জ্বল স্বাক্ষর।
আয়াতঃ 050.002
বরং তারা তাদের মধ্য থেকেই একজন ভয় প্রদর্শনকারী আগমন করেছে দেখে বিস্ময় বোধ করে। অতঃপর কাফেররা বলেঃ এটা আশ্চর্যের ব্যাপার।
Nay, they wonder that there has come to them a warner (Muhammad SAW) from among themselves. So the disbelievers say: ”This is a strange thing!
بَلْ عَجِبُوا أَن جَاءهُمْ مُنذِرٌ مِّنْهُمْ فَقَالَ الْكَافِرُونَ هَذَا شَيْءٌ عَجِيبٌ
Bal AAajiboo an jaahum munthirun minhum faqala alkafiroona hatha shay-on AAajeebun
YUSUFALI: But they wonder that there has come to them a Warner from among themselves. So the Unbelievers say: “This is a wonderful thing!
PICKTHAL: Nay, but they marvel that a warner of their own hath come unto them; and the disbelievers say: This is a strange thing:
SHAKIR: Nay! they wonder that there has come to them a warner from among themselves, so the unbelievers say: This is a wonderful thing:
KHALIFA: They found it strange that a warner from among them came to them! The disbelievers said, “This is really strange.
০২। তারা আশ্চর্য হয় যে ৪৯৪১, তাদের মধ্যে থেকেই তাদের নিকট একজন সতর্ককারী এসেছে। সুতরাং অবিশ্বাসীরা বলে, ” এটা তো বড় আশ্চর্য ব্যাপার !
৪৯৪১। কাফেরদের এই বিস্ময়বোধ করা ছিলো স্বাভাবিক ব্যাপার তাদেরই স্বগোত্রের একজন উদিত সূর্যের ন্যায় ভাস্বর, জোতির্ময় -এ কথা বিশ্বাস করা তাদের জন্য সত্যিই কষ্টকর। সূর্যের অস্তিত্বকে যেরূপ দিবাভাগে অস্বীকার করার উপায় নাই। অন্ধ ব্যতীত, কোনও চক্ষুষ্মান ব্যক্তি দিবাভাগে সূর্যের দীপ্তিকে যেরূপ অস্বীকার করতে পারে না, ঠিক সেরূপ কাফেররাও রাসুলের (সা ) স্বর্গীয় বৈশিষ্ট্যাবলীকে অস্বীকার করতে পারছিলো না। ফলে তারা বিস্ময়ে ও অবিশ্বাসে বিমূঢ় হয়ে পড়েছিলো।
উপদেশ : এ ভাবেই পৃথিবীতে যুগে যুগে সত্যের প্রকাশকে প্রথমেই বাঁধাপ্রাপ্ত হতে হয় তার স্বগোত্রের লোকদের দ্বারা এ ক্ষেত্রে বাংলা প্রবাদ বাক্যটি স্মরণীয় ; ” গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না।”
আয়াতঃ 050.003
আমরা মরে গেলে এবং মৃত্তিকায় পরিণত হয়ে গেলেও কি পুনরুত্থিত হব? এ প্রত্যাবর্তন সুদূরপরাহত।
”When we are dead and have become dust (shall we be resurrected?) That is a far return.”
أَئِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا ذَلِكَ رَجْعٌ بَعِيدٌ
A-itha mitna wakunna turaban thalika rajAAun baAAeedun
YUSUFALI: “What! When we die and become dust, (shall we live again?) That is a (sort of) return far (from our understanding).”
PICKTHAL: When we are dead and have become dust (shall we be brought back again)? That would be a far return!
SHAKIR: What! when we are dead and have become dust? That is afar (from probable) return.
KHALIFA: “After we die and become dust; this is impossible.”
০৩। ” সে কি ! আমরা যখন মরে যাব এবং ধূলিতে পরিণত হব, [ তারপর আবার পুণরায় জীবিত হব ] ? [ এ ধরণের ] প্রত্যাবর্তন আমাদের [ ধারণার ] বাইরে ৪৯৪২। ”
৪৯৪২। দেখুন আয়াত [ ৩৭ : ১৬ ]।
আয়াতঃ 050.004
মৃত্তিকা তাদের কতটুকু গ্রাস করবে, তা আমার জানা আছে এবং আমার কাছে আছে সংরক্ষিত কিতাব।
We know that which the earth takes of them (their dead bodies), and with Us is a Book preserved (i.e. the Book of Decrees).
قَدْ عَلِمْنَا مَا تَنقُصُ الْأَرْضُ مِنْهُمْ وَعِندَنَا كِتَابٌ حَفِيظٌ
Qad AAalimna ma tanqusu al-ardu minhum waAAindana kitabun hafeethun
YUSUFALI: We already know how much of them the earth takes away: With Us is a record guarding (the full account).
PICKTHAL: We know that which the earth taketh of them, and with Us is a recording Book.
SHAKIR: We know indeed what the earth diminishes of them, and with Us is a writing that preserves.
KHALIFA: We are fully aware of anyone of them who gets consumed by the earth; we have an accurate record.
০৪। আমি তো জানি মৃত্তিকা উহাদের কতটুকু ক্ষয় করে ৪৯৪৩। আমার নিকট সুরক্ষিত রয়েছে [ পূর্ণ হিসেবের ] নথি।
৪৯৪৩। এই নশ্বর দেহের মাঝে অমর আত্মার বাস যা পরমাত্মার অংশ। মৃত্যু পরবর্তীতে নশ্বর দেহের শুধুমাত্র ধ্বংস বা ক্ষয় ঘটে; আত্মা অমর, অবিনশ্বর। মৃত্তিকা শুধুমাত্র নশ্বর দেহকেই ধ্বংস করতে পারে। আত্মার উপরে এর কোনও ক্ষমতা বা একে ধ্বংস করার কোনও অধিকার নাই। আত্মার পার্থিব জীবনের সকল হিসাব আল্লাহ্র নিকট লওহে মাহ্ফুজে আমলনামায় রক্ষিত আছে।
আয়াতঃ 050.005
বরং তাদের কাছে সত্য আগমন করার পর তারা তাকে মিথ্যা বলছে। ফলে তারা সংশয়ে পতিত রয়েছে।
Nay, but they have denied the truth (this Qur’ân) when it has come to them, so they are in a confused state (can not differentiate between right and wrong).
بَلْ كَذَّبُوا بِالْحَقِّ لَمَّا جَاءهُمْ فَهُمْ فِي أَمْرٍ مَّرِيجٍ
Bal kaththaboo bialhaqqi lamma jaahum fahum fee amrin mareejin
YUSUFALI: But they deny the Truth when it comes to them: so they are in a confused state.
PICKTHAL: Nay, but they have denied the truth when it came unto them, therefor they are now in troubled case.
SHAKIR: Nay, they rejected the truth when it came to them, so they are (now) in a state of confusion.
KHALIFA: They rejected the truth when it came to them; they are utterly confused.
০৫। তাদের নিকট সত্য আসার পরে তারা তা প্রত্যাখান করেছে। ফলে তারা রয়েছে সংশয়ে দোদুল্যমান ৪৯৪৪।
৪৯৪৪। প্রকৃত সত্যকে দেখার পরেও যদি কেউ তা অস্বীকার করে, তবে তাদের বুদ্ধি, বিবেক ও মন হয়ে পড়বে তমসাচ্ছন্ন ও বিভ্রান্ত। বিশ্বভূবনের সকল কিছুতেই আল্লাহ্র মহিমা ছড়ানো। আল্লাহ্র কল্যাণ হস্তের স্পর্শে সকল কিছু ধন্য। প্রত্যাদেশ বা আল্লাহ্র প্রেরিত বাণীর মাধ্যমে জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্যকে ব্যক্ত করা হয়েছে। ইহজীবনের ভেদাভেদ, পার্থক্য, পরলোকে পূনঃর্বিন্যাস করা হবে ইহজীবনের কৃতকর্মের ভিত্তিতে। যদি কেউ আত্মার অমরত্বে ও মৃত্যু পরবর্তী জীবনে বিশ্বাস স্থাপন না করে, তবে বুঝতে হবে সে মানব জীবন সৃষ্টির প্রকৃত উদ্দেশ্যকে অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছে। তার স্বাভাবিক ও যুক্তিসঙ্গত চিন্তাধারা বিভ্রান্তির বেড়াজালে আবদ্ধ। তারা চেনা জানা পার্থিব পৃথিবীর সাথে অচেনা ও অজানা পৃথিবীর সমন্বয় সাধনে অক্ষম। তাদের মন সর্বদা “সংশয়ে দোদুল্যমান ” থাকবে, এই-ই হচ্ছে আল্লাহ্র বিধান।
আয়াতঃ 050.006
তারা কি তাদের উপরস্থিত আকাশের পানে দৃষ্টিপাত করে না আমি কিভাবে তা নির্মাণ করেছি এবং সুশোভিত করেছি? তাতে কোন ছিদ্রও নেই।
Have they not looked at the heaven above them, how We have made it and adorned it, and there are no rifts in it?
أَفَلَمْ يَنظُرُوا إِلَى السَّمَاء فَوْقَهُمْ كَيْفَ بَنَيْنَاهَا وَزَيَّنَّاهَا وَمَا لَهَا مِن فُرُوجٍ
Afalam yanthuroo ila alssama-i fawqahum kayfa banaynaha wazayyannaha wama laha min furoojin
YUSUFALI: Do they not look at the sky above them?- How We have made it and adorned it, and there are no flaws in it?
PICKTHAL: Have they not then observed the sky above them, how We have constructed it and beautified it, and how there are no rifts therein?
SHAKIR: Do they not then look up to heaven above them how We have made it and adorned it and it has no gaps?
KHALIFA: Have they not looked at the sky above them, and how we constructed it and adorned it, without a flaw?
০৬। তারা কি তাদের উর্দ্ধে অবস্থিত আকাশকে দেখে না ? – কিভাবে আমি তা নির্মাণ করেছি ও তাকে সুশোভিত করেছি। অথচ তার মধ্যে কোন ত্রুটি নাই ৪৯৪৫।
৪৯৪৫। আল্লাহ্র অস্তিত্বকে অনুভব করতে হবে আত্মার মাঝে। বিশ্ব প্রকৃতি ও নভোমন্ডলে সর্বত্র তাঁর হাতের কল্যাণ স্পর্শ বিদ্যমান। আল্লাহ্র অস্তিত্বকে আত্মার মাঝে অনুভবের জন্য অবিশ্বাসীদের সম্মুখে একটি উদাহরণ স্থাপন করা হয়েছে। তাদের লক্ষ্য করতে বলা হয়েছে কোটি কোটি তারকারাজি, ও গ্রহ নক্ষত্র শোভিত আকাশমন্ডলীর দিকে। সূর্য, চন্দ্র, গ্রহ, নক্ষত্র ও কোটি কোটি তারকারাজি ও নীহারীকাপুঞ্জ সকলকেই বিন্যস্ত করা হয়েছে এক সুনির্দ্দিষ্ট নিয়ম ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে। যার ফলে তারা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের গতি, শৃঙ্খলা ও নিয়মের মাঝে নিজ নিজ শৃঙ্খলা রক্ষা করে অসীম মহাশূন্যে ছুটে চলেছে। বিজ্ঞান বলে যে, এই নিয়ম ও শৃঙ্খলার মাঝে গণিত বিদ্যার সর্বোচ্চ নির্যাস বিদ্যমান যার প্রকৃত অনুধাবনে হৃদয় হয় এ সবের স্রষ্টার প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধায় আপ্লুত। ” তার মধ্যে কোনও ত্রুটি নাই” – বাক্যটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে নভোমন্ডলের গাণিতিক বিন্যাসে আল্লাহ্র জ্ঞানের মাঝে কোনও রূপ বৈষম্য ও বিভাজন লক্ষ্য করা যায় না।
আয়াতঃ 050.007
আমি ভূমিকে বিস্তৃত করেছি, তাতে পর্বতমালার ভার স্থাপন করেছি এবং তাতে সর্বপ্রকার নয়নাভিরাম উদ্ভিদ উদগত করেছি।
And the earth! We have spread it out, and set thereon mountains standing firm, and have produced therein every kind of lovely growth (plants).
وَالْأَرْضَ مَدَدْنَاهَا وَأَلْقَيْنَا فِيهَا رَوَاسِيَ وَأَنبَتْنَا فِيهَا مِن كُلِّ زَوْجٍ بَهِيجٍ
Waal-arda madadnaha waalqayna feeha rawasiya waanbatna feeha min kulli zawjin baheejin
YUSUFALI: And the earth- We have spread it out, and set thereon mountains standing firm, and produced therein every kind of beautiful growth (in pairs)-
PICKTHAL: And the earth have We spread out, and have flung firm hills therein, and have caused of every lovely kind to grow thereon,
SHAKIR: And the earth, We have made it plain and cast in it mountains and We have made to grow therein of all beautiful kinds,
KHALIFA: And we created the earth, and scattered on it mountains, and grew in it all kinds of beautiful plants.
০৭। এবং পৃথিবী, আমি তাকে বিস্তৃত করেছি, এবং তাতে স্থাপন করেছি সুদৃঢ় পর্বতমালা ৪৯৪৬এবং তাতে সব রকমের সুন্দর সুন্দর জিনিষ উৎপন্ন করেছি [ জোড়ায় জোড়ায় ] ৪৯৪৭ –
৪৯৪৬। দেখুন [ ১৩ : ৩ ] আয়াত এবং [ ১৫ : ১৯ ] আয়াত ও টিকা ১৯৫৫। পৃথিবী যদিও গোল্ তবুও এর আয়তনের তুলনায় মানুষের অস্তিত্ব এত ক্ষুদ্র যে পৃথিবীর ভূমিকে মানুষের নিকট মনে হয় বিস্তৃত সমতল। কার্পেটকে যেরূপ পেরেকের মাধ্যমে স্বস্থানে সন্নিবেশিত করা হয়। পর্বতমালা ঠিক সেরূপ পৃথিবীর বিস্তৃত ভূমিকে স্বস্থানে রাখতে সাহায্য করে।
৪৯৪৭। দেখুন [ ২২ : ৫ ] ও টিকা ২৭৭৭। [ ১৩ : ৩ ] আয়াতের টিকা ১৮০৪ এ আভাষ দান করা হয়েছে উদ্ভিদ জগতের যৌনতা সম্বন্ধে।
আয়াতঃ 050.008
এটা জ্ঞান আহরণ ও স্মরণ করার মত ব্যাপার প্রত্যেক অনুরাগী বান্দার জন্যে।
An insight and a Reminder for every slave turning to Allâh (i.e. the one who believes in Allâh and performs deeds of His obedience, and always begs His pardon).
تَبْصِرَةً وَذِكْرَى لِكُلِّ عَبْدٍ مُّنِيبٍ
Tabsiratan wathikra likulli AAabdin muneebin
YUSUFALI: To be observed and commemorated by every devotee turning (to Allah).
PICKTHAL: A vision and a reminder for every penitent slave.
SHAKIR: To give sight and as a reminder to every servant who turns frequently (to Allah).
KHALIFA: This is an enlightenment, and a reminder for every pious worshiper.
০৮। আল্লাহ্র দিকে অভিমুখী প্রত্যেক ভক্ত বান্দার জন্য জ্ঞান ও উপদেশ স্বরূপ ৪৯৪৮।
৪৯৪৮। সৃষ্টির বিভিন্ন বস্তু ” আল্লাহ্র অনুরাগী ” দের আত্মার মাঝে; হৃদয়ের মাঝে গভীর ” আল্লাহ্ প্রেম” ও ব্যঞ্জনার সৃষ্টি করে থাকে। তাঁরা এসব সৃষ্ট বস্তুর সম্বন্ধে চিন্তা করতে ভালোবাসে। প্রকৃতির সৃষ্ট বস্তুর সম্বন্ধে চিন্তা করা এবং তাদের প্রকৃতি সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণ করাই হচ্ছে “বিজ্ঞানের” জ্ঞান। সুতারাং যারা বিজ্ঞানের সাধনা করে এবং এই সাধনা লব্ধ জ্ঞানকে আল্লাহ্র অসীম ক্ষমতার ক্ষুদ্র প্রকাশরূপে অনুধাবন করে তারাই প্রকৃতরূপে আল্লাহ্র বিমূর্ত ধারণাকে আত্মার মাঝে অনুধাবন করে। সে ক্ষেত্রেই বিজ্ঞানের জ্ঞান ব্যক্তির জন্য “উপদেশ স্বরূপ”।
মন্তব্য : অনেকেরই ধারণা বিজ্ঞানের সাথে ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরোধ বিদ্যমান। প্রকৃতপক্ষে স্রষ্টার বিমূর্ত ধারণাকে হৃদয়ের মাঝে মূর্তরূপে উপলব্ধি করতে হলে অবশ্যই বিজ্ঞানের জ্ঞানকে জানতে হবে। তবেই স্রষ্টার বিশালত্ব, ক্ষমতা, শিল্পসত্তা প্রতিদিনের জীবনে তাঁর কল্যাণকে অনুধাবন করা সম্ভব। এই আয়াতের মাধ্যমে এই সত্যকেই তুলে ধরা হয়েছে।
আয়াতঃ 050.009
আমি আকাশ থেকে কল্যাণময় বৃষ্টি বর্ষণ করি এবং তদ্বারা বাগান ও শস্য উদগত করি, যেগুলোর ফসল আহরণ করা হয়।
And We send down blessed water (rain) from the sky, then We produce therewith gardens and grain (every kind of harvests) that are reaped.
وَنَزَّلْنَا مِنَ السَّمَاء مَاء مُّبَارَكًا فَأَنبَتْنَا بِهِ جَنَّاتٍ وَحَبَّ الْحَصِيدِ
Wanazzalna mina alssama-i maan mubarakan faanbatna bihi jannatin wahabba alhaseedi
YUSUFALI: And We send down from the sky rain charted with blessing, and We produce therewith gardens and Grain for harvests;
PICKTHAL: And We send down from the sky blessed water whereby We give growth unto gardens and the grain of crops,
SHAKIR: And We send down from the cloud water abounding in good, then We cause to grow thereby gardens and the grain that is reaped,
KHALIFA: And we sent from the sky blessed water, to grow with it gardens and grains to be harvested.
০৯। এবং আমি আকাশ থেকে কল্যাণকর বৃষ্টি প্রেরণ করি, এবং তা দ্বারা আমি সৃষ্টি করি উদ্যান এবং পরিপক্ক শস্যরাজি ;
১০। এবং সুউচ্চ [ রাজকীয়] পাম বৃক্ষ, যাতে আছে গুচ্ছ গুচ্ছ ফলের বৃন্ত স্তরে স্তরে স্তুপিকৃত করা ; – ৪৯৪৯
১১। আল্লাহ্র বান্দাদের জন্য জীবিকা স্বরূপ। এই [ বৃষ্টি ] দ্বারা আমি মৃত ভূমিকে [ নূতন ] জীবন দান করি। এরূপই হবে [কেয়ামতের দিনের ] পুণরুত্থান।
৪৯৪৯। প্রাকৃতিক বর্ণনার কি অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছে এই আয়াতগুলিতে। যে কখনও আরবের মরুদ্যানের গ্রীষ্মের ও বসন্তের রূপ দর্শন করেছে – সেই একমাত্র অনুধাবন করতে পারবে এই আয়াতগুলির অবিস্মরণীয় চিত্র লেখাকে।
আয়াতঃ 050.010
এবং লম্বমান খর্জুর বৃক্ষ, যাতে আছে গুচ্ছ গুচ্ছ খর্জুর,
And tall date-palms, with ranged clusters;
وَالنَّخْلَ بَاسِقَاتٍ لَّهَا طَلْعٌ نَّضِيدٌ
Waalnnakhla basiqatin laha talAAun nadeedun
YUSUFALI: And tall (and stately) palm-trees, with shoots of fruit-stalks, piled one over another;-
PICKTHAL: And lofty date-palms with ranged clusters,
SHAKIR: And the tall palm-trees having spadices closely set one above another,
KHALIFA: Tall date palms, with clustered fruit.
০৯। এবং আমি আকাশ থেকে কল্যাণকর বৃষ্টি প্রেরণ করি, এবং তা দ্বারা আমি সৃষ্টি করি উদ্যান এবং পরিপক্ক শস্যরাজি ;
১০। এবং সুউচ্চ [ রাজকীয়] পাম বৃক্ষ, যাতে আছে গুচ্ছ গুচ্ছ ফলের বৃন্ত স্তরে স্তরে স্তুপিকৃত করা ; – ৪৯৪৯
১১। আল্লাহ্র বান্দাদের জন্য জীবিকা স্বরূপ। এই [ বৃষ্টি ] দ্বারা আমি মৃত ভূমিকে [ নূতন ] জীবন দান করি। এরূপই হবে [কেয়ামতের দিনের ] পুণরুত্থান।
৪৯৪৯। প্রাকৃতিক বর্ণনার কি অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছে এই আয়াতগুলিতে। যে কখনও আরবের মরুদ্যানের গ্রীষ্মের ও বসন্তের রূপ দর্শন করেছে – সেই একমাত্র অনুধাবন করতে পারবে এই আয়াতগুলির অবিস্মরণীয় চিত্র লেখাকে।
আয়াতঃ 050.011
বান্দাদের জীবিকাস্বরূপ এবং বৃষ্টি দ্বারা আমি মৃত জনপদকে সঞ্জীবিত করি। এমনিভাবে পুনরুত্থান ঘটবে।
A provision for (Allâh’s) slaves. And We give life therewith to a dead land. Thus will be the resurrection (of the dead).
رِزْقًا لِّلْعِبَادِ وَأَحْيَيْنَا بِهِ بَلْدَةً مَّيْتًا كَذَلِكَ الْخُرُوجُ
Rizqan lilAAibadi waahyayna bihi baldatan maytan kathalika alkhurooju
YUSUFALI: As sustenance for (Allah’s) Servants;- and We give (new) life therewith to land that is dead: Thus will be the Resurrection.
PICKTHAL: Provision (made) for men; and therewith We quicken a dead land. Even so will be the resurrection of the dead.
SHAKIR: A sustenance for the servants, and We give life thereby to a dead land; thus is the rising.
KHALIFA: Provisions for the people. And we revive with it dead lands; you are similarly resurrected.
০৯। এবং আমি আকাশ থেকে কল্যাণকর বৃষ্টি প্রেরণ করি, এবং তা দ্বারা আমি সৃষ্টি করি উদ্যান এবং পরিপক্ক শস্যরাজি ;
১০। এবং সুউচ্চ [ রাজকীয়] পাম বৃক্ষ, যাতে আছে গুচ্ছ গুচ্ছ ফলের বৃন্ত স্তরে স্তরে স্তুপিকৃত করা ; – ৪৯৪৯
১১। আল্লাহ্র বান্দাদের জন্য জীবিকা স্বরূপ। এই [ বৃষ্টি ] দ্বারা আমি মৃত ভূমিকে [ নূতন ] জীবন দান করি। এরূপই হবে [কেয়ামতের দিনের ] পুণরুত্থান।
৪৯৪৯। প্রাকৃতিক বর্ণনার কি অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছে এই আয়াতগুলিতে। যে কখনও আরবের মরুদ্যানের গ্রীষ্মের ও বসন্তের রূপ দর্শন করেছে – সেই একমাত্র অনুধাবন করতে পারবে এই আয়াতগুলির অবিস্মরণীয় চিত্র লেখাকে।
আয়াতঃ 050.012
তাদের পূর্বে মিথ্যাবাদী বলেছে নূহের সম্প্রদায়, কুপবাসীরা এবং সামুদ সম্প্রদায়।
Denied before them (i.e. these pagans of Makkah who denied you, O Muhammad SAW) the people of Nûh (Noah), and the dwellers of Rass, and the Thamûd,
كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ وَأَصْحَابُ الرَّسِّ وَثَمُودُ
Kaththabat qablahum qawmu noohin waas-habu alrrassi wathamoodu
YUSUFALI: Before them was denied (the Hereafter) by the People of Noah, the Companions of the Rass, the Thamud,
PICKTHAL: The folk of Noah denied (the truth) before them, and (so did) the dwellers at Ar-Rass and (the tribe of) Thamud,
SHAKIR: (Others) before them rejected (prophets): the people of Nuh and the dwellers of Ar-Rass and Samood,
KHALIFA: Disbelieving before them were the people of Noah, the dwellers of Russ, and Thamoud.
১২। তাদের পূর্বে নূহের জাতি, রাস্স ও সামুদ সম্প্রদায় [ পরলোককে ] অস্বীকার করেছিলো ৪৯৫০,
৪৯৫০। আরবের সম্প্রদায়কে যাদের আল্লাহ্ তাদের পাপের দরুণ শাস্তি প্রদান করেছিলেন – শুধুমাত্র তাদের নামের উল্লেখ করা হয়েছে এই আয়াতগুলিতে। তাদের কাহিনীর উল্লেখ আছে অন্যান্য সূরাতে। নিম্নোক্ত সূরাগুলির মধ্যে : নূহের সম্প্রদায়ের জন্য দেখুন [ ১১ : ২৫ – ৪৮ ] আয়াত এবং অন্যান্য আয়াত সমূহে। রাস্স সম্প্রদায়ের জন্য দেখুন [ ২৫ : ৩৮ ] আয়াত ও টিকা ৩০৯৪। আ’দ ও সামুদ সম্প্রদায়ের জন্য দেখুন [ ২৬ : ১২৩ – ১৫৮ ] আয়াত ও অন্যান্য আয়াত সমূহ। ফেরাউন ও তার সম্প্রদায়ের জন্য দেখুন [ ২ : ৪৯ – ৫০ ] আয়াত ও আয়াত সমূহ। লূতের সম্প্রদায়ের জন্য দেখুন [ ৭ : ৮০ – ৮৪ ] আয়াত ও অন্যান্য আয়াতসমূহ। আয়কার অধিবাসীদের জন্য দেখুন [ ১৫, ৭৮ – ৭৯ ] আয়াত ও টিকা ২০০০। এবং তুব্বা সম্প্রদায়ের জন্য দেখুন [ ৪৪ : ৩৭ ] আয়াত ও টিকা ৪৭১৫।
আয়াতঃ 050.013
আদ, ফেরাউন, ও লূতের সম্প্রদায়,
And ’Ad, and Fir’aun (Pharaoh), and the brethren of Lout (Lot),
وَعَادٌ وَفِرْعَوْنُ وَإِخْوَانُ لُوطٍ
WaAAadun wafirAAawnu wa-ikhwanu lootin
YUSUFALI: The ‘Ad, Pharaoh, the brethren of Lut,
PICKTHAL: And (the tribe of) A’ad, and Pharaoh, and the brethren of Lot,
SHAKIR: And Ad and Firon and Lut’s brethren,
KHALIFA: And `Aad, Pharaoh, and the brethren of Lot.
১৩। আ’দ,ফেরাউন এবং লূতের ভাইগণও [ সেরূপ করেছিলো ],
১৪। অরণ্যের অধিবাসীরা এবং তুব্বার লোকেরা, [ তাদের ] প্রত্যেকেই রসুলদের প্রত্যাখান করেছিলো, ফলে তাদের প্রতি আমার প্রতিশ্রুতিও পূর্ণ হয়েছিলো।
১৫। তবে কি আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেই [ এতটাই ] ক্লান্ত হয়ে পড়েছি যে তারা নূতন সৃষ্টি সম্বন্ধে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে পতিত হয় ? ৪৯৫১
৪৯৫১। দেখুন অনুরূপ আয়াত [ ৪৬ : ৩৬ ] ; ও টিকা ৪৯১২।
আয়াতঃ 050.014
বনবাসীরা এবং তোব্বা সম্প্রদায়। প্রত্যেকেই রসূলগণকে মিথ্যা বলেছে, অতঃপর আমার শাস্তির যোগ্য হয়েছে।
And the dwellers of the Wood, and the people of Tubba’; everyone of them denied (their) Messengers, so My Threat took effect.
وَأَصْحَابُ الْأَيْكَةِ وَقَوْمُ تُبَّعٍ كُلٌّ كَذَّبَ الرُّسُلَ فَحَقَّ وَعِيدِ
Waas-habu al-aykati waqawmu tubbaAAin kullun kaththaba alrrusula fahaqqa waAAeedi
YUSUFALI: The Companions of the Wood, and the People of Tubba’; each one (of them) rejected the messengers, and My warning was duly fulfilled (in them).
PICKTHAL: And the dwellers in the wood, and the folk of Tubb’a: every one denied their messengers, therefor My threat took effect.
SHAKIR: And the dwellers of the grove and the people of Tuba; all rejected the messengers, so My threat came to pass.
KHALIFA: And the dwellers of the woods, and the people of Tubba`. All of them disbelieved the messengers and, consequently, My retribution befell them.
১৩। আ’দ,ফেরাউন এবং লূতের ভাইগণও [ সেরূপ করেছিলো ],
১৪। অরণ্যের অধিবাসীরা এবং তুব্বার লোকেরা, [ তাদের ] প্রত্যেকেই রসুলদের প্রত্যাখান করেছিলো, ফলে তাদের প্রতি আমার প্রতিশ্রুতিও পূর্ণ হয়েছিলো।
১৫। তবে কি আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেই [ এতটাই ] ক্লান্ত হয়ে পড়েছি যে তারা নূতন সৃষ্টি সম্বন্ধে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে পতিত হয় ? ৪৯৫১
৪৯৫১। দেখুন অনুরূপ আয়াত [ ৪৬ : ৩৬ ] ; ও টিকা ৪৯১২।
আয়াতঃ 050.015
আমি কি প্রথমবার সৃষ্টি করেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি? বরং তারা নতুন সৃষ্টির ব্যাপারে সন্দেহ পোষন করেছে।
Were We then tired with the first creation? Nay, They are in confused doubt about a new creation (i.e. Resurrection)?
أَفَعَيِينَا بِالْخَلْقِ الْأَوَّلِ بَلْ هُمْ فِي لَبْسٍ مِّنْ خَلْقٍ جَدِيدٍ
AfaAAayeena bialkhalqi al-awwali bal hum fee labsin min khalqin jadeedin
YUSUFALI: Were We then weary with the first Creation, that they should be in confused doubt about a new Creation?
PICKTHAL: Were We then worn out by the first creation? Yet they are in doubt about a new creation.
SHAKIR: Were We then fatigued with the first creation? Yet are they in doubt with regard to a new creation.
KHALIFA: Were we too burdened by the first creation? Is this why they doubt resurrection?
১৩। আ’দ,ফেরাউন এবং লূতের ভাইগণও [ সেরূপ করেছিলো ],
১৪। অরণ্যের অধিবাসীরা এবং তুব্বার লোকেরা, [ তাদের ] প্রত্যেকেই রসুলদের প্রত্যাখান করেছিলো, ফলে তাদের প্রতি আমার প্রতিশ্রুতিও পূর্ণ হয়েছিলো।
১৫। তবে কি আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেই [ এতটাই ] ক্লান্ত হয়ে পড়েছি যে তারা নূতন সৃষ্টি সম্বন্ধে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে পতিত হয় ? ৪৯৫১
৪৯৫১। দেখুন অনুরূপ আয়াত [ ৪৬ : ৩৬ ] ; ও টিকা ৪৯১২।
আয়াতঃ 050.016
আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে কুচিন্তা করে, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী থেকেও অধিক নিকটবর্তী।
And indeed We have created man, and We know what his ownself whispers to him. And We are nearer to him than his jugular vein (by Our Knowledge).
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ وَنَعْلَمُ مَا تُوَسْوِسُ بِهِ نَفْسُهُ وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيدِ
Walaqad khalaqna al-insana wanaAAlamu ma tuwaswisu bihi nafsuhu wanahnu aqrabu ilayhi min habli alwareedi
YUSUFALI: It was We Who created man, and We know what dark suggestions his soul makes to him: for We are nearer to him than (his) jugular vein.
PICKTHAL: We verily created man and We know what his soul whispereth to him, and We are nearer to him than his jugular vein.
SHAKIR: And certainly We created man, and We know what his mind suggests to him, and We are nearer to him than his life-vein.
KHALIFA: We created the human, and we know what he whispers to himself. We are closer to him than his jugular vein.
রুকু – ২
১৬। আমিই মানুষকে সৃষ্টি করেছি, এবং তার প্রবৃত্তি তাকে যে কুমন্ত্রণা দেয় তা আমি জানি ৪৯৫২। কেন না আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী [ Jagular vein ] অপেক্ষাও নিকটতর।
৪৯৫২। শরীরবৃত্তির দিক থেকে মানুষ ও পশুর মধ্যে পার্থক্য খুব কম। পশুর সাথে মানুষের মূল পার্থক্য হচ্ছে, আল্লাহ্ মানুষকে বুদ্ধি দান করেছেন এবং সেই বুদ্ধিবৃত্তিকে ব্যবহারের জন্য সীমিত আকারে ” স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ” দান করেছেন। এই ইচ্ছাশক্তি ব্যবহারের সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তির মানসিক অবস্থা বিভিন্ন হয়ে থাকে। আল্লাহ্ মানুষের অন্তঃস্থলের অন্তরের খবর রাখেন। মানুষের চিন্তার জগতের কিছুই তাঁর নিকট অজ্ঞাত থাকে না। আল্লাহ্ মানুষের অন্তঃস্থলের অন্তরের খবর রাখেন। মানুষের মস্তিষ্ককে যদি এক বিরাট কম্পিউটারের সাথে তুলনা করা হয়, তবে কম্পিউটারের বিভিন্ন বোতামের মাধ্যমে যেমন বিশ্বব্যপী সংবাদের আদান প্রদান ও রক্ষণাবেক্ষণ ঘটে এক মূহুর্তের মধ্যে, ঠিক সেরূপ মানুষের মস্তিষ্করূপ কম্পিউটারের মাধ্যমে চিন্তা জগতের সকল তথ্য, তত্ব, উদ্দেশ্য সব কিছু মূহুর্তের মাধ্যমে লওহে মাহ্ফুজে রক্ষিত হয়ে চলেছে। সুন্দর উপমার সাহায্যে এই বিষয়কে তুলে ধরা হয়েছে। গ্রীবাস্থিত ধমণীকে বলা হয়, ” জাগুলার ধমনী” যা হৃদপিন্ড থেকে মস্তিষ্কে এবং মস্তিষ্ক থেকে হৃদপিন্ডে রক্ত বহনকারী প্রধান শিরা। রক্ত সঞ্চালন হচ্ছে জীবনের প্রধান শর্ত যা মানুষকে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের নিরাপত্তা দান করে। মস্তিষ্ক হচ্ছে বুদ্ধিমত্তার প্রধান কেন্দ্র, যা মানুষকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রাণীতে পরিণত করেছে। জাগুলার ধমনী হচ্ছে মানুষের প্রাণের অস্তিত্বের অত্যন্ত কাছাকাছি। এই আয়াতে বলা হয়েছে আল্লাহ্ মানুষের মনোজগতে গ্রীবাস্থিত ধমনী অপেক্ষাও নিকটবর্তী। “গ্রীবাস্থিত ধমনী অপেক্ষাও নিকটবর্তী ” এই বাক্যটি দ্বারা এ কথাই বোঝানো হয়েছে যে, মানুষের অন্তরের অন্তঃস্থিত সকল সংবাদ আল্লাহ্ সর্বদা অবহিত। আমাদের অনুভূতি, চিন্তা -ধারা, বিবেক, আত্ম-গরিমা, অহংকার, সুক্ষ অনুভূতি যা অনেক সময়েই আমাদের চেতন মনে ধরা পড়ে না যা আমাদের অবচেতন মনেরই বহিঃপ্রকাশ, তাও আল্লাহ্র নিকট গোপন থাকে না।
আয়াতঃ 050.017
যখন দুই ফেরেশতা ডানে ও বামে বসে তার আমল গ্রহণ করে।
(Remember!) that the two receivers (recording angels) receive (each human being after he or she has attained the age of puberty), one sitting on the right and one on the left (to note his or her actions) .
إِذْ يَتَلَقَّى الْمُتَلَقِّيَانِ عَنِ الْيَمِينِ وَعَنِ الشِّمَالِ قَعِيدٌ
Ith yatalaqqa almutalaqqiyani AAani alyameeni waAAani alshshimali qaAAeedun
YUSUFALI: Behold, two (guardian angels) appointed to learn (his doings) learn (and noted them), one sitting on the right and one on the left.
PICKTHAL: When the two Receivers receive (him), seated on the right hand and on the left,
SHAKIR: When the two receivers receive, sitting on the right and on the left.
KHALIFA: Two recording (angels), at right and at left, are constantly recording.
১৭। স্মরণ রেখো, দুজন [ অভিভাবক ফেরেশতা ] হিসাব গ্রহণ করে, মানুষের সমস্ত পাপ পূণ্য লিখে নেয়; একজন বসে ডানদিকে, অন্যজন বামদিকে ৪৯৫৩।
৪৯৫৩। এরা হচ্ছেন দুই ফেরেশতা, মানুষের সংগে সংগে থাকেন। ডানে যিনি আছেন তিনি পূণ্যের এবং বামে যিনি আছেন তিনি পাপের কর্ম লিপিবদ্ধ করেন। দেখুন [ ৫৬ : ২৭ ; ৪১ ] আয়াতে এদের উল্লেখ করা হয়েছে ” ডান দিকের দল” এবং ” বাম দিকের দল” হিসেবে। এদের আরও উল্লেখ আছে [৮২ : ১০ – ১২ ]।
আয়াতঃ 050.018
সে যে কথাই উচ্চারণ করে, তাই গ্রহণ করার জন্যে তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী রয়েছে।
Not a word does he (or she) utter, but there is a watcher by him ready (to record it).
مَا يَلْفِظُ مِن قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ
Ma yalfithu min qawlin illa ladayhi raqeebun AAateedun
YUSUFALI: Not a word does he utter but there is a sentinel by him, ready (to note it).
PICKTHAL: He uttereth no word but there is with him an observer ready.
SHAKIR: He utters not a word but there is by him a watcher at hand.
KHALIFA: Not an utterance does he utter without an alert witness.
১৮। মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে তা [ লিখার ] জন্য তৎপর প্রহরী তার নিকটেই রয়েছে ৪৯৫৪।
৪৯৫৪। মানুষ যাই উচ্চারণ করুক না কেন তা লিপিবদ্ধ করার জন্য আছে ” তৎপর প্রহরী” [Raqib]। এর থেকে এ কথাই প্রতীয়মান হয় যে এই প্রহরী শুধুমাত্র উচ্চারিত বাক্য সমূহই লিপিবদ্ধ করেন। গুপ্ত চিন্তা, বা যা ভাবা হয়েছে কিন্তু মুখে উচ্চারণ করা হয় নাই এরূপ চিন্তা ভাবনাকে তিনি লিপিবদ্ধ করেন না। যে চিন্তা ভাবনাকে প্রকাশ করা হয় নাই বা কার্যে পরিণত করা হয় নাই, তা হয়তো আল্লাহ্ ক্ষমা করে দেবেন। যখনই আমরা চিন্তাকে ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ করি তখনই তা কিছুটা হলেও কার্যে পরিণত করে থাকি। উপরে উল্লেখিত দুজন লিপিবদ্ধকারী এবং এই আয়াতের লিপিবদ্ধকারী এই তিনজনের নথি হচ্ছে মানুষের কর্মপদ্ধতির পূর্ণাঙ্গ দলিল। এর মাধ্যমে মানুষের কর্ম, চিন্তার জগত, কর্মের নিয়ত সব কিছু সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারণা লাভ করবে। পার্থিব জগতের সকল কর্মের প্রকৃত উদ্দেশ্য, চিন্তার ধারা, কৃত কর্মের সকল কিছুরও পূর্ণাঙ্গ বিবরণ থাকবে এই তিনজনের লিপিবদ্ধ বিবরণের মাঝে। এই বিবরণ পরলোকের বিচারের নথি বা দলিল হিসেবে উত্থাপিত হবে। এই তিনজনই হচ্ছেন মানুষের কর্মজীবনের সম্পূর্ণ বিবরণ প্রদানকারী বা “Kiraman Katibin”।
আয়াতঃ 050.019
মৃত্যুযন্ত্রণা নিশ্চিতই আসবে। এ থেকেই তুমি টালবাহানা করতে।
And the stupor of death will come in truth: ”This is what you have been avoiding!”
وَجَاءتْ سَكْرَةُ الْمَوْتِ بِالْحَقِّ ذَلِكَ مَا كُنتَ مِنْهُ تَحِيدُ
Wajaat sakratu almawti bialhaqqi thalika ma kunta minhu taheedu
YUSUFALI: And the stupor of death will bring Truth (before his eyes): “This was the thing which thou wast trying to escape!”
PICKTHAL: And the agony of death cometh in truth. (And it is said unto him): This is that which thou wast wont to shun.
SHAKIR: And the stupor of death will come in truth; that is what you were trying to escape.
KHALIFA: Finally, the inevitable coma of death comes; this is what you tried to evade.
১৯। এবং মৃত্যুর হতচেতন অবস্থা [তাদের চোখের সম্মুখে ] সত্যকে তুলে ধরে, ” এটাই তা যা থেকে তোমরা পলায়ন করতে।” ৪৯৫৫
৪৯৫৫। এই পৃথিবীর শিক্ষানবীশ কালে মানুষের মাঝে পরলোকের অনুভূতি থাকে অসাড় ও অচৈতন্য। মৃত্যুর মাধ্যমে তাদের সম্মুখে পরলোকের দ্বার উম্মুক্ত হয়ে যায়। পার্থিব জীবন থেকে পরলোকের জীবনে প্রবেশের দরজা হচ্ছে মৃত্যু। মৃত্যুর মাধ্যমেই একমাত্র ইহলোক থেকে পরলোকে প্রবেশের ক্ষমতা লাভ করা যায়। একবার এই দ্বার অতিক্রম করলে মানুষ বুঝতে পারবে যে পার্থিব জীবন কত তুচ্ছ ও মূল্যহীন। পৃথিবীতে অবস্থানকালে পরলোকের যে জীবনকে মনে হতো অবিশ্বাস্য ও যোজন দূরের কোন সংবাদ মুত্যুর সাথে সাথেই পরলোকের জীবনকেই প্রকৃত সত্য বলে অনুভূত হবে। পৃথিবীর যে জীবনকে মনে হতো গুরুত্বপূর্ণ তা হয়ে যাবে কায়াহীন ছায়ার ন্যায় এবং অস্তিত্ববিহীন ও তুচ্ছ। যে জীবন ও যে জীবনের অস্তিত্বের প্রতি কোন প্রকৃত বিশ্বাস ছিলো না, যে জীবনকে সে অস্বীকার করে এসেছে, মৃত্যুর সাথে সাথে সেই জীবনই হবে প্রকৃত জীবনের পরিধি। পার্থিব জীবনের ভালো ও মন্দ প্রকৃতরূপে ভাস্বর হবে; সত্যকে তীব্র ভাবে অনুভব করা সম্ভব হবে। পৃথিবীতে অবস্থান কালে মানুষ মৃত্যুর সত্য থেকেই অব্যাহতি চায়।
আয়াতঃ 050.020
এবং শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে এটা হবে ভয় প্রদর্শনের দিন।
And the Trumpet will be blown, that will be the Day whereof warning (had been given) (i.e. the Day of Resurrection).
وَنُفِخَ فِي الصُّورِ ذَلِكَ يَوْمُ الْوَعِيدِ
Wanufikha fee alssoori thalika yawmu alwaAAeedi
YUSUFALI: And the Trumpet shall be blown: that will be the Day whereof Warning (had been given).
PICKTHAL: And the trumpet is blown. This is the threatened Day.
SHAKIR: And the trumpet shall be blown; that is the day of the threatening.
KHALIFA: The horn is blown; this is the promised day.
২০। এবং শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে। উহাই হবে সেই সতর্কিত দিন ৪৯৫৬।
৪৯৫৬। জীবনের ধাপগুলি একের পরে এক প্রত্যেককে অতিক্রম করতে হয়। পৃথিবীর জীবনের পরে আসে মৃত্যু পরবর্তী জীবন। তার পর আসে শেষ বিচারের দিন। সেদিন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে তখন প্রতিটি আত্মা বিচারের জন্য উপস্থিত হবে।
আয়াতঃ 050.021
প্রত্যেক ব্যক্তি আগমন করবে। তার সাথে থাকবে চালক ও কর্মের সাক্ষী।
And every person will come forth along with an (angel) to drive (him), and an (angel) to bear witness.
وَجَاءتْ كُلُّ نَفْسٍ مَّعَهَا سَائِقٌ وَشَهِيدٌ
Wajaat kullu nafsin maAAaha sa-iqun washaheedun
YUSUFALI: And there will come forth every soul: with each will be an (angel) to drive, and an (angel) to bear witness.
PICKTHAL: And every soul cometh, along with it a driver and a witness.
SHAKIR: And every soul shall come, with it a driver and a witness.
KHALIFA: Every soul comes with a herder and a witness.
২১। আর প্রত্যেক আত্মাকে উপস্থিত হতে হবে [ কৈফিয়ত দেয়ার জন্য ] ; তার সাথে থাকবে একজন চালক [ ফেরেশতা ] ও একজন সাক্ষী [ ফেরেশতা ] ৪৯৫৭।
৪৯৫৭। এই আয়াতের কয়েক প্রকার তফসীর করা হয়েছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই শেষ বিচারের দিনের প্রতি নির্দ্দেশ দান করা হয়েছে। শেষ বিচারের দিনে পার্থিব জীবনের সকল প্রকার নথিপত্র উপস্থাপিত করা হবে। সৎ কাজ ও পাপ কাজ প্রত্যেকে সাক্ষ্য দান করবে। প্রত্যেকের প্রতি প্রকৃত ন্যায় বিচার করা হবে – প্রত্যেককে প্রত্যেকের কর্মফল দেয়া হবে।
১) “চালক ” ও ” সাক্ষী” এরা দুজন ফেরেশতা সম্ভবতঃ এর দ্বারা দক্ষিণে ও বামে বসে লিপিবদ্ধকারী ফেরেশতাদের বোঝানো হয়েছে [ দেখুন এই সূরার ১৭নং আয়াত ] একজন তাকে হাশরের ময়দানে পৌঁছাবে, অপরজন তার কর্মের ব্যাপারে সাক্ষ্য দেবে।
২) সম্ভবতঃ এর দ্বারা ফেরেশতা বোঝানো হয় নাই ; ভালো কাজ ও মন্দ কাজকে বোঝানো হয়েছে। মন্দ কাজ ‘চালকের ‘ ন্যায় আচরণ করবে এবং ভালো কাজ বিচারের সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত থাকবে। অথবা
৩) আল্লাহ্র দেয়া যে সব অঙ্গ ও মানসিক দক্ষতাকে সে খারাপ কাজে ব্যবহার করেছে তারা শেষ বিচারের দিনে তাকে তার ধ্বংসের দিকে বা শেষ পরিণতির দিকে চালিয়ে নিয়ে যাবে। এখানে এসব অঙ্গ ও মানসিক দক্ষতাকে “চালক” হিসেবে বলা হয়েছে। অপরপক্ষে সৎ কাজে ব্যবহৃত অঙ্গ ও মানসিক দক্ষতা সমূহ তার জন্য সৎকাজের সাক্ষী হবে।
আয়াতঃ 050.022
তুমি তো এই দিন সম্পর্কে উদাসীন ছিলে। এখন তোমার কাছ থেকে যবনিকা সরিয়ে দিয়েছি। ফলে আজ তোমার দৃষ্টি সুতীক্ষ্ন।
(It will be said to the sinners): ”Indeed you were heedless of this, now We have removed your covering, and sharp is your sight this Day!”
لَقَدْ كُنتَ فِي غَفْلَةٍ مِّنْ هَذَا فَكَشَفْنَا عَنكَ غِطَاءكَ فَبَصَرُكَ الْيَوْمَ حَدِيدٌ
Laqad kunta fee ghaflatin min hatha fakashafna AAanka ghitaaka fabasaruka alyawma hadeedun
YUSUFALI: (It will be said:) “Thou wast heedless of this; now have We removed thy veil, and sharp is thy sight this Day!”
PICKTHAL: (And unto the evil-doer it is said): Thou wast in heedlessness of this. Now We have removed from thee thy covering, and piercing is thy sight this day.
SHAKIR: Certainly you were heedless of it, but now We have removed from you your veil, so your sight today is sharp.
KHALIFA: You used to be oblivious to this. We now remove your veil; today, your vision is (as strong as) steel.
২২। [ বলা হবে : ] ” এ সম্বন্ধে তুমি অমনোযোগী ছিলে, এখন আমি তোমার থেকে আবরণ সরিয়ে নিয়েছি, সুতারাং এখন তোমার দৃষ্টি তীক্ষ্ণ হয়েছে ৪৯৫৮।”
৪৯৫৮। মানুষকে আল্লাহ্ সৃষ্টি করেছেন এক নির্দ্দিষ্ট উদ্দেশ্যের প্রতি নিবেদিত করে। এখানেই প্রাণী জগতের সাথে মানুষের পার্থক্য। মনুষ্য জীবনের জন্য পরলোকের জীবনই হচ্ছে প্রকৃত সত্য। ইহলোকের জীবন পরলোকের জীবনের জন্য প্রস্তুতি কাল মাত্র। কিন্তু পার্থিব জীবনে মানুষ এই সত্যকে অনুধাবন করে খুব কমই। পার্থিব জীবনের চাকচিক্য তার দৃষ্টিকে করে বিভ্রান্ত ফলে প্রকৃত সত্যকে সে দেখতে হয় অক্ষম। মনের চোখ বা উপলব্ধি ক্ষমতা হয়ে পড়ে অন্ধের ন্যায়। মৃত্যুর পরে, শেষ বিচারের দিনে তাদের সম্মুখ থেকে বিভ্রান্তির পর্দা উম্মোচন করা হবে, ফলে তারা প্রকৃত সত্যকে উপলব্ধিতে সক্ষম হবে। দেখুন উপরের টিকা নং ৪৯৫৫।
আয়াতঃ 050.023
তার সঙ্গী ফেরেশতা বলবেঃ আমার কাছে যে, আমলনামা ছিল, তা এই।
And his companion (angel) will say: ”Here is (this Record) ready with me!”
وَقَالَ قَرِينُهُ هَذَا مَا لَدَيَّ عَتِيدٌ
Waqala qareenuhu hatha ma ladayya AAateedun
YUSUFALI: And his Companion will say: “Here is (his Record) ready with me!”
PICKTHAL: And (unto the evil-doer) his comrade saith: This is that which I have ready (as testimony).
SHAKIR: And his companions shall say: This is what is ready with me.
KHALIFA: The companion said, “Here is my formidable testimony.”
২৩। এবং তার সঙ্গী [ ফেরেশতা ] বলবে ৪৯৫৯ : ” এই তো [ আমলনামা ] যা আমার নিকট প্রস্তুত রয়েছে। ”
৪৯৫৯। ‘Qarin’ অর্থাৎ সঙ্গী। যদি আমরা ৪৯৫৭ নং টিকার ১) নম্বর তফসীর গ্রহণ করি তবে এই আয়াতের “সঙ্গী” শব্দটি দ্বারা ২১ নং আয়াতে যে ফেরেশতাদের উল্লেখ আছে তাদের একজনকে বোঝানো হবে। সম্ভবতঃ যিনি তাদের হাশরের ময়দানে পরিচালিত করবেন তাকেই বোঝানো হয়েছে। অথবা এই সঙ্গী শব্দটি দ্বারা তৃতীয় আর একজন ফেরেশতা যার উল্লেখ আছে ১৮ নং আয়াতে, এবং যার কাছে ‘আমলনামা ‘ প্রস্তুত আছে তাঁকে বোঝানো হয়েছে। ৪৯৫৭ নং টিকার ১) নম্বর তফসীর বাদে যদি আমরা অন্য তফসীর গ্রহণ করি তবে ‘সঙ্গী’ শব্দটি দ্বারা মন্দ বা পাপ কাজকেই বোঝানো হবে অথবা বুদ্ধিমত্তা ও মানসিক দক্ষতা সমূহের অপব্যবহারকেই বোঝানো হবে। যে কোনও তফসীরকেই আমরা গ্রহণ করি না কেন এই ‘সঙ্গী ‘ -ই হবেন হাশরের ময়দানের বিচারের প্রামাণিক সাক্ষ্য।
আয়াতঃ 050.024
তোমরা উভয়েই নিক্ষেপ কর জাহান্নামে প্রত্যেক অকৃতজ্ঞ বিরুদ্ধবাদীকে,
(And it will be said): ”Both of you throw (Order from Allâh to the two angels) into Hell, every stubborn disbeliever (in the Oneness of Allâh, in His Messengers, etc.).
أَلْقِيَا فِي جَهَنَّمَ كُلَّ كَفَّارٍ عَنِيدٍ
Alqiya fee jahannama kulla kaffarin AAaneedin
YUSUFALI: (The sentence will be:) “Throw, throw into Hell every contumacious Rejecter (of Allah)!-
PICKTHAL: (And it is said): Do ye twain hurl to hell each rebel ingrate,
SHAKIR: Do cast into hell every ungrateful, rebellious one,
KHALIFA: Throw into Gehenna every stubborn disbeliever.
২৪। [ দণ্ডাদেশ হবে ] ” নিক্ষেপ কর, নিক্ষেপ কর জাহান্নামে, প্রতিটি অবাধ্য প্রত্যাখানকারীকে, – ৪৯৬০
২৫। ” যে ভালো কাজে বাঁধা দান করেছিলো,সকল সীমাকে লংঘন করেছিলো, [আল্লাহ্র সম্বন্ধে ] সন্দেহ ও অবিশ্বাস পোষণ করেছিলো ;-
২৬। ” যে আল্লাহ্র সাথে শরীক করেছিলো। এখন তাকে কঠিন শাস্তিতে নিক্ষেপ কর।”
৪৯৬০। “নিক্ষেপ কর ” শব্দটি দুবার ব্যবহার করা হয়েছে। অনেক তফসীরকারদের মতে এর দ্বারা বক্তব্যকে জোরালো ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আরবীতে ভাষার এরূপ ব্যবহার বিদ্যমান। অপরপক্ষে, অন্যভাবেও এর ব্যাখ্যা করা যায়। ১৭ নং ও ২১ নং আয়াতে যে দুজন ফেরেশতাদের উল্লেখ আছে তাদের যুগ্মভাবে সম্বোধন করার জন্য দুবার “নিক্ষেপ কর ” শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।
আয়াতঃ 050.025
যে বাধা দিত মঙ্গলজনক কাজে, সীমালঙ্ঘনকারী, সন্দেহ পোষণকারীকে।
”Hinderer of good, transgressor, doubter,
مَّنَّاعٍ لِّلْخَيْرِ مُعْتَدٍ مُّرِيبٍ
MannaAAin lilkhayri muAAtadin mureebin
YUSUFALI: “Who forbade what was good, transgressed all bounds, cast doubts and suspicions;
PICKTHAL: Hinderer of good, transgressor, doubter,
SHAKIR: Forbidder of good, exceeder of limits, doubter,
KHALIFA: Forbidder of charity, aggressor, full of doubt.
২৪। [ দণ্ডাদেশ হবে ] ” নিক্ষেপ কর, নিক্ষেপ কর জাহান্নামে, প্রতিটি অবাধ্য প্রত্যাখানকারীকে, – ৪৯৬০
২৫। ” যে ভালো কাজে বাঁধা দান করেছিলো,সকল সীমাকে লংঘন করেছিলো, [আল্লাহ্র সম্বন্ধে ] সন্দেহ ও অবিশ্বাস পোষণ করেছিলো ;-
২৬। ” যে আল্লাহ্র সাথে শরীক করেছিলো। এখন তাকে কঠিন শাস্তিতে নিক্ষেপ কর।”
৪৯৬০। “নিক্ষেপ কর ” শব্দটি দুবার ব্যবহার করা হয়েছে। অনেক তফসীরকারদের মতে এর দ্বারা বক্তব্যকে জোরালো ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আরবীতে ভাষার এরূপ ব্যবহার বিদ্যমান। অপরপক্ষে, অন্যভাবেও এর ব্যাখ্যা করা যায়। ১৭ নং ও ২১ নং আয়াতে যে দুজন ফেরেশতাদের উল্লেখ আছে তাদের যুগ্মভাবে সম্বোধন করার জন্য দুবার “নিক্ষেপ কর ” শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।
আয়াতঃ 050.026
যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্য গ্রহণ করত, তাকে তোমরা কঠিন শাস্তিতে নিক্ষেপ কর।
”Who set up another ilâh (god) with Allâh, then (both of you) cast him in the severe torment.”
الَّذِي جَعَلَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ فَأَلْقِيَاهُ فِي الْعَذَابِ الشَّدِيدِ
Allathee jaAAala maAAa Allahi ilahan akhara faalqiyahu fee alAAathabi alshshadeedi
YUSUFALI: “Who set up another god beside Allah: Throw him into a severe penalty.”
PICKTHAL: Who setteth up another god along with Allah. Do ye twain hurl him to the dreadful doom.
SHAKIR: Who sets up another god with Allah, so do cast him into severe chastisement.
KHALIFA: He set up beside GOD another god. Throw him into severe retribution.
২৪। [ দণ্ডাদেশ হবে ] ” নিক্ষেপ কর, নিক্ষেপ কর জাহান্নামে, প্রতিটি অবাধ্য প্রত্যাখানকারীকে, – ৪৯৬০
২৫। ” যে ভালো কাজে বাঁধা দান করেছিলো,সকল সীমাকে লংঘন করেছিলো, [আল্লাহ্র সম্বন্ধে ] সন্দেহ ও অবিশ্বাস পোষণ করেছিলো ;-
২৬। ” যে আল্লাহ্র সাথে শরীক করেছিলো। এখন তাকে কঠিন শাস্তিতে নিক্ষেপ কর।”
৪৯৬০। “নিক্ষেপ কর ” শব্দটি দুবার ব্যবহার করা হয়েছে। অনেক তফসীরকারদের মতে এর দ্বারা বক্তব্যকে জোরালো ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আরবীতে ভাষার এরূপ ব্যবহার বিদ্যমান। অপরপক্ষে, অন্যভাবেও এর ব্যাখ্যা করা যায়। ১৭ নং ও ২১ নং আয়াতে যে দুজন ফেরেশতাদের উল্লেখ আছে তাদের যুগ্মভাবে সম্বোধন করার জন্য দুবার “নিক্ষেপ কর ” শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।
আয়াতঃ 050.027
তার সঙ্গী শয়তান বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমি তাকে অবাধ্যতায় লিপ্ত করিনি। বস্তুতঃ সে নিজেই ছিল সুদূর পথভ্রান্তিতে লিপ্ত।
His companion (Satan devil)] will say: ”Our Lord! I did not push him to transgress, (in disbelief, oppression, and evil deeds) but he was himself in error far astray.”
قَالَ قَرِينُهُ رَبَّنَا مَا أَطْغَيْتُهُ وَلَكِن كَانَ فِي ضَلَالٍ بَعِيدٍ
Qala qareenuhu rabbana ma atghaytuhu walakin kana fee dalalin baAAeedin
YUSUFALI: His Companion will say: “Our Lord! I did not make him transgress, but he was (himself) far astray.”
PICKTHAL: His comrade saith: Our Lord! I did not cause him to rebel, but he was (himself) far gone in error.
SHAKIR: His companion will say: Our Lord! I did not lead him into inordinacy but he himself was in a great error.
KHALIFA: His companion said, “Our Lord, I did not mislead him; he was far astray.”
২৭। তার সঙ্গী [শয়তান ] বলবে ৪৯৬১ : ” হে আমাদের প্রভু ! ৪৯৬২ আমি তাকে সীমালংঘন করতে বলি নাই ৪৯৬৩। বরং সে নিজেই [নিজেকে ] বিপথে চালিত করেছে।”
৪৯৬১। “সঙ্গী শয়তান” দ্বারা পৃথিবীতে মন্দ সঙ্গীদের বোঝানো হয়েছে, যারা কাফির [ আয়াত নং ২৪ ]; কল্যাণকর কাজে বাধাদানকারী ; সীমালঙ্ঘনকারী; সন্দেহ পোষণকারী [ আয়াত নং ২৫ ] এবং আল্লাহ্র সাথে অন্য ইলাহ্ গ্রহণকারী [ আয়াত নং ২৬ ] এদেরই সহচর শয়তানরূপে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এক কথায় যা কিছু মন্দ যা মানুষকে কুপথে বা পাপের পথে প্ররোচিত করে তাই-ই হচ্ছে শয়তান।
৪৯৬২। শয়তান এখানে ” হে আমাদের প্রভু ” বাক্যটি দ্বারা আল্লাহ্কে সম্বোধন করেছে যার অর্থ এই দাঁড়ায় যে সে স্বীকার করে যে আল্লাহ্ বিচার প্রার্থী সকলের ও বিশ্বজগতের সকল কিছুর প্রতিপালক ও প্রভু এবং শয়তানেরও প্রভু।
৪৯৬৩। প্রতিটি মানুষ তার কৃতকর্মের ফলাফলের জন্য দায়ী। কারণ মানুষের “সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির ” ব্যবহার মানুষের ইচ্ছাধীন। সে ভালোকে গ্রহণ করবে ও মন্দকে প্রত্যাখ্যান করবে, না মন্দকে গ্রহণ করবে ও ভালোকে প্রত্যাখ্যান করবে এটা তার ব্যক্তিগত ইচ্ছা। এই স্বাধীনতা আল্লাহ্ তাঁকে দান করেছেন – যার হিসাব তাকে স্রষ্টার নিকট পেশ করতে হবে। কোনও লিপিবদ্ধকারী ফেরেশতা বা অপব্যবহারকারী অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বা বিবেক বা অন্য কিছু কাউকেই সে তার কর্মের জন্য দায়ী করতে পারবে না। প্রত্যেকের প্রতিটি কাজ তার ব্যক্তিগত দায় দায়িত্ব।
আয়াতঃ 050.028
আল্লাহ বলবেনঃ আমার সামনে বাকবিতন্ডা করো না আমি তো পূর্বেই তোমাদেরকে আযাব দ্বারা ভয় প্রদর্শন করেছিলাম।
Allâh will say: ”Dispute not in front of Me, I had already, in advance, sent you the threat.
قَالَ لَا تَخْتَصِمُوا لَدَيَّ وَقَدْ قَدَّمْتُ إِلَيْكُم بِالْوَعِيدِ
Qala la takhtasimoo ladayya waqad qaddamtu ilaykum bialwaAAeedi
YUSUFALI: He will say: “Dispute not with each other in My Presence: I had already in advance sent you Warning.
PICKTHAL: He saith: Contend not in My presence, when I had already proffered unto you the warning.
SHAKIR: He will say: Do not quarrel in My presence, and indeed I gave you the threatening beforehand:
KHALIFA: He said, “Do not feud in front of Me; I have sufficiently warned you.
২৮। আল্লাহ্ বলবেন, ” আমার উপস্থিতিতে তোমরা পরস্পর বাক্ -বিতন্ডা করো না ৪৯৬৪। আমি তো পূর্বেই তোমাদের সর্তক করেছি ৪৯৬৫।
৪৯৬৪। শেষ বিচারের দিনে, যাদের কর্মের রেকর্ড হবে অন্ধকার বা পাপে আচ্ছন্ন, তারা যথারীতি তাদের কর্মের জন্য জাগতিক বহু ব্যাপারকে ‘দায়ী করবে যেমন : লিপিবদ্ধকারী ফেরেশতা, তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও মানসিক দক্ষতা সমূহ অথবা সুযোগ সুবিধা সমূহ, পরিবেশ অথবা সঙ্গী-সাথী ইত্যাদি যা তাদের পার্থিব জগতে বিদ্যমান ছিলো। এরূপ পাল্টা অভিযোগ ও বাক্ -বিতন্ডা সেই বিচার সভায় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে দেয়া হবে।
৪৯৬৫। বাক্-বিতন্ডা নিষিদ্ধ করা ব্যতীত তাদের স্মরণ করিয়ে দেয়া হবে, তাদের ব্যক্তিগত দায় -দায়িত্বের কথা। প্রত্যেকে তাদের স্ব স্ব কর্ম ফলের জন্য দায়ী থাকবে।
আয়াতঃ 050.029
আমার কাছে কথা রদবদল হয় না এবং আমি বান্দাদের প্রতি জুলুমকারী নই।
The Sentence that comes from Me cannot be changed, and I am not unjust (to the least) to the slaves.”
مَا يُبَدَّلُ الْقَوْلُ لَدَيَّ وَمَا أَنَا بِظَلَّامٍ لِّلْعَبِيدِ
Ma yubaddalu alqawlu ladayya wama ana bithallamin lilAAabeedi
YUSUFALI: “The Word changes not before Me, and I do not the least injustice to My Servants.”
PICKTHAL: The sentence that cometh from Me cannot be changed, and I am in no wise a tyrant unto the slaves.
SHAKIR: My word shall not be changed, nor am I in the least unjust to the servants.
KHALIFA: “Nothing can be changed now. I am never unjust towards the people.”
২৯। ” আমার কথার রদবদল হয় না, এবং আমি আমার বান্দাদের প্রতি বিন্দু মাত্র অন্যায় করি না ৪৯৬৬।”
৪৯৬৬। হাশরের ময়দানে বিচারের রায় হবে সম্পূর্ণ ন্যায়ের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। কারও প্রতি কোনও অবিচার করা হবে না। এর কোনও রদবদল হবে না পাপের শেষ পরিণতি অবশ্য ঘটবে। কারণ আল্লাহ্র করুণা লাভের সময় তখন অতিক্রান্ত হয়ে যাবে।
আয়াতঃ 050.030
যেদিন আমি জাহান্নামকে জিজ্ঞাসা করব; তুমি কি পূর্ণ হয়ে গেছ? সে বলবেঃ আরও আছে কি?
On the Day when We will say to Hell: ”Are you filled?” It will say: ”Are there any more (to come)?”
يَوْمَ نَقُولُ لِجَهَنَّمَ هَلِ امْتَلَأْتِ وَتَقُولُ هَلْ مِن مَّزِيدٍ
Yawma naqoolu lijahannama hali imtala/ti wataqoolu hal min mazeedin
YUSUFALI: One Day We will ask Hell, “Art thou filled to the full?” It will say, “Are there any more (to come)?”
PICKTHAL: On the day when We say unto hell: Art thou filled? and it saith: Can there be more to come?
SHAKIR: On the day that We will say to hell: Are you filled up? And it will say: Are there any more?
KHALIFA: That is the day when we ask Hell, “Have you had enough?” It will say, “Give me more.”
রুকু – ৩
৩০। সেই দিন আমি জাহান্নামকে জিজ্ঞাসা করবো, ” তুমি কি পূর্ণ হয়ে গেছ ? ” জাহান্নাম বলবে, ” আরও বাকী আছে কি ? ” ৪৯৬৭
৪৯৬৭। আল্লাহ্র দয়া ও করুণা যেমন সীমাহীন, ঠিক তদ্রূপ হচ্ছে তাঁর শাস্তির পরিধি। শাস্তির প্রতীক হচ্ছে জাহান্নাম। জাহান্নামকে জিজ্ঞাসা করা হবে “তুমি কি পূর্ণ হয়ে গেছ ? ” জাহান্নাম বলবে, “আরও কি আছে, অর্থাৎ তা হলে তাদের আসতে দাও।” যেনো বলতে চায় যে “আমি এখনও পরিতৃপ্ত নই।”
আয়াতঃ 050.031
জান্নাতকে উপস্থিত করা হবে খোদাভীরুদের অদূরে।
And Paradise will be brought near to the Muttaqûn (pious – see V.2:2) not far off.
وَأُزْلِفَتِ الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِينَ غَيْرَ بَعِيدٍ
Waozlifati aljannatu lilmuttaqeena ghayra baAAeedin
YUSUFALI: And the Garden will be brought nigh to the Righteous,- no more a thing distant.
PICKTHAL: And the Garden is brought nigh for those who kept from evil, no longer distant.
SHAKIR: And the garden shall be brought near to those who guard (against evil), not far off:
KHALIFA: Paradise will be offered to the righteous, readily.
৩১। আর পূণ্যাত্মাদের জন্য জান্নাতকে নিকটস্ত করা হবে, – কোন দূরত্ব থাকবে না ৪৯৬৮।
৪৯৬৮। পার্থিব জীবনের সাথে পারলৌকিক জীবনের চাওয়া পাওয়ার পার্থক্যকে এই আয়াতের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। পার্থিব জীবনে আমাদের কাঙ্খিত বস্তু, আশা- আকাঙ্খার পরিপূর্ণতা লাভ করতে বহু উদ্যোগ, উদ্দীপনা, উৎসাহ, পরিশ্রমের প্রয়োজন হয়। তার পরেও তা সব সময়ে সফলতা লাভ করে না। কিন্তু পরলোকে মুত্তাকীদের জীবন হবে ভিন্নরূপ। তাদের ঈমান ও পূণ্যকাজের ফল তারা সেখানে খুবই নিকটস্থ দেখতে পাবে, জান্নাত হচ্ছে সুখ-শান্তি, আনন্দ, আশা আকাঙ্খা পরিপূর্ণতার প্রতীক। মুত্তাকী ও এগুলির মধ্যে কোনও দূরত্ব থাকবে না।
আয়াতঃ 050.032
তোমাদের প্রত্যেক অনুরাগী ও স্মরণকারীকে এরই প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল।
(It will be said): ”This is what you were promised, – (it is) for those oft-returning (to Allâh) in sincere repentance, and those who preserve their covenant with Allâh (by obeying Him in all what He has ordered, and worship none but Allâh Alone, i.e. follow Allâh’s Religion, Islâmic Monotheism).
هَذَا مَا تُوعَدُونَ لِكُلِّ أَوَّابٍ حَفِيظٍ
Hatha ma tooAAadoona likulli awwabin hafeethin
YUSUFALI: (A voice will say:) “This is what was promised for you,- for every one who turned (to Allah) in sincere repentance, who kept (His Law),
PICKTHAL: (And it is said): This is that which ye were promised. (It is) for every penitent and heedful one,
SHAKIR: This is what you were promised, (it is) for every one who turns frequently (to Allah), keeps (His limits);
KHALIFA: This is what was promised to every repenter, steadfast.
৩২। [বলা হবে ] : ” ইহারই প্রতিশ্রুতি তোমাদের প্রত্যেককে দেয়া হয়েছিলো, – যারা প্রকৃত অনুতাপের মাধ্যমে [আল্লাহ্র দিকে ] ফিরে আসে, তাঁর হুকুম পালন করে ৪৯৬৯ –
৪৯৬৯। পূণ্যাত্মা বা মুত্তাকী ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য চারটি দক্ষতাপূর্ণ উপবাক্য দ্বারা সুনিপুনভাবে প্রকাশ করা হয়েছে :
১) যারা পাপ ও মন্দ থেকে নিজেকে রক্ষা করে এবং আন্তরিক অনুতাপের মাধ্যমে আত্ম সংশোধন করে থাকে।
২) যারা তাদের নূতন জীবনকে আল্লাহ্ অভিমুখী অর্থাৎ সৎভাবে নির্বাহ করে।
৩) যারা না দেখেও আল্লাহকে ভয় পায়, অর্থাৎ যারা সর্বদা অন্তরের মাঝে আল্লাহ্র উপস্থিতি অনুভব করে। তাঁদের সকল কর্ম প্রেরণার উৎস আল্লাহ্ প্রেম। তাঁদের আল্লাহ্ – ভীতি, আল্লাহ্ প্রেমেরই সমতুল্য। তাঁরা সর্বদা আল্লাহ্কে স্মরণ করে করুণা ও দয়ার প্রতীকরূপে। আল্লাহ্র অনুগ্রহ স্মরণে তাঁদের হৃদয় মন আপ্লুত – আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তাঁরা থাকে সর্বদা সচেষ্ট। [ ৫০ : ৩৩ ]
৪) “ভক্তিপ্লুত হৃদয়কে উপস্থাপন করে” – অর্থাৎ যারা তাঁদের হৃদয়, মন, এক কথায় সর্বসত্তা আল্লাহ্র নিকট সমর্পন করবে অর্থাৎ সম্পূর্ণ আত্মসমর্পনের মাধ্যমে আল্লাহ্র নিকট ক্ষমাপ্রার্থী হবে। [ ৫০ : ৩৩ ]
আয়াতঃ 050.033
যে না দেখে দয়াময় আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করত এবং বিনীত অন্তরে উপস্থিত হত।
”Who feared the Most Beneficent (Allâh) in the Ghaib (unseen): (i.e. in this worldly life before seeing and meeting Him), and brought a heart turned in repentance (to Him – and absolutely free from each and every kind of polytheism),
مَنْ خَشِيَ الرَّحْمَن بِالْغَيْبِ وَجَاء بِقَلْبٍ مُّنِيبٍ
Man khashiya alrrahmana bialghaybi wajaa biqalbin muneebin
YUSUFALI: “Who feared (Allah) Most Gracious Unseen, and brought a heart turned in devotion (to Him):
PICKTHAL: Who feareth the Beneficent in secret and cometh with a contrite heart.
SHAKIR: Who fears the Beneficent Allah in secret and comes with a penitent heart:
KHALIFA: They reverenced the Most Gracious, in their privacy, and came wholeheartedly.
৩৩। ” যে পরম করুণাময় [আল্লাহ্কে ] না দেখে ভয় করে এবং [ তাঁর নিকট ] ভক্তিপ্লুত হৃদয়কে উপস্থাপন করে ; ৪৯৭০ –
৪৯৭০। দেখুন [ ৩৬ : ১১ ] আয়াত ও টিকা ৩৯৫২ ; এবং [ ৩৫ : ১৮ ] আয়াত ও টিকা ৩৯০২।
আয়াতঃ 050.034
তোমরা এতে শান্তিতে প্রবেশ কর। এটাই অনন্তকাল বসবাসের জন্য প্রবেশ করার দিন।
”Enter you therein in peace and security; this is a Day of eternal life!”
ادْخُلُوهَا بِسَلَامٍ ذَلِكَ يَوْمُ الْخُلُودِ
Odkhulooha bisalamin thalika yawmu alkhuloodi
YUSUFALI: “Enter ye therein in Peace and Security; this is a Day of Eternal Life!”
PICKTHAL: Enter it in peace. This is the day of immortality.
SHAKIR: Enter it in peace, that is the day of abiding.
KHALIFA: Enter it in peace; this is the Day of Eternity.
৩৪। ” তোমরা শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে উহাতে প্রবেশ কর ৪৯৭১ ; এটাই অনন্ত জীবনের দিন।”
৪৯৭১। ইসলামের অন্তর্নিহিত বক্তব্যকে এক কথায় এই আয়াতের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। ইসলামের প্রকৃত অর্থ হচ্ছে : শান্তি, নিরাপত্তা, প্রীতি সম্ভাষণ ও আল্লাহ্র ইচ্ছা বা পরিকল্পনার নিকট আত্মসমর্পন যা অনন্ত কাল ব্যপী বিরাজমান থাকবে।
আয়াতঃ 050.035
তারা তথায় যা চাইবে, তাই পাবে এবং আমার কাছে রয়েছে আরও অধিক।
There they will have all that they desire, and We have more (for them, i.e. a glance at the All-Mighty, All-Majestic Ìá ÌáÇáå ).
لَهُم مَّا يَشَاؤُونَ فِيهَا وَلَدَيْنَا مَزِيدٌ
Lahum ma yashaoona feeha waladayna mazeedun
YUSUFALI: There will be for them therein all that they wish,- and more besides in Our Presence.
PICKTHAL: There they have all that they desire, and there is more with Us.
SHAKIR: They have therein what they wish and with Us is more yet.
KHALIFA: They get anything they wish therein, and we have even more.
৩৫। সেখানে তারা যা কামনা করবে তাই-ই পাবে, এবং আমার নিকটে [ তাদের জন্য ] আরও বেশী আছে ৪৯৭২।
৪৯৭২। পার্থিব জীবনে চাওয়া ও পাওয়ার আকাঙ্খা মানুষকে সারাটা জীবন তাড়না করে ফেরে। না পাওয়ার বেদনা, আশাভঙ্গের হতাশা জীবনকে করে তোলে বিক্ষিপ্ত,সুখহীন, তৃপ্তিহীন। মুত্তাকীদের বলা হয়েছে, বেহেশতে তাদের পবিত্র সকল আশা আকাঙ্খাকে তৃপ্তি দান করা হবে। সেখানে সকল চাওয়া-পাওয়ার পরিসমাপ্তির শেষে অনন্ত শান্তি লাভ করবে। সকল চাওয়া পাওয়ার উর্দ্ধে হচ্ছে আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভ করা। আল্লাহ্র নূরের আলোকে তাদের জগত হবে আলোকিত ধন্য। ” আমার নিকট আরও বেশী আছে।”
আয়াতঃ 050.036
আমি তাদের পূর্বে বহু সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি, তারা এদের অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী ছিল এবং দেশে-বিদেশে বিচরণ করে ফিরত। তাদের কোন পলায়ন স্থান ছিল না।
And how many a generation We have destroyed before them, who were stronger in power than them, and (when Our Torment came) they ran for a refuge in the land! Could they find any place of refuge (for them to save themselves from destruction)?
وَكَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُم مِّن قَرْنٍ هُمْ أَشَدُّ مِنْهُم بَطْشًا فَنَقَّبُوا فِي الْبِلَادِ هَلْ مِن مَّحِيصٍ
Wakam ahlakna qablahum min qarnin hum ashaddu minhum batshan fanaqqaboo fee albiladi hal min maheesin
YUSUFALI: But how many generations before them did We destroy (for their sins),- stronger in power than they? Then did they wander through the land: was there any place of escape (for them)?
PICKTHAL: And how many a generation We destroyed before them, who were mightier than these in prowess so that they overran the lands! Had they any place of refuge (when the judgment came)?
SHAKIR: And how many a generation did We destroy before them who were mightier in prowess than they, so they went about and about in the lands. Is there a place of refuge?
KHALIFA: Many a generation before them, who were more powerful, we annihilated. They searched the land; did they find an escape?
৩৬। আমি তাদের পূর্বে আরও কত মানব গোষ্ঠিকে ধ্বংস করেছি [তাদের পাপের জন্য ], – যারা ছিলো তাদের অপেক্ষা অধিক ক্ষমতাবান ৪৯৭৩। তারা দেশে দেশে ঘুরে বেড়াত। তারা পালাবার কোন স্থান পেয়েছিলো কি ?
৪৯৭৩। মুত্তাকী বা পূণ্যাত্মাদের বা গুণসম্পন্ন যারা তাদের পুরষ্কারের ঘোষণা দেয়া হয়েছে, দেখুন [২৬ : ৮৯], [ ৩৭ : ৮৪ ], [ ৫০: ৩৩ ] আয়াত সমূহ। অপর পক্ষে যারা পাপী ও শুধুমাত্র পার্থিব জীবনকেই শ্রেষ্ঠ বলে মনে করে তাদের শেষ পরিণতি কি ? তাদের পরিণতি পৃথিবীর অতীত ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে বলা হয়েছে। কবির ভাষায়, ” হে অতীত তুমি কথা কও যুগে যুগে।” কত শক্তিশালী জাতি, জনপদ, সময়ের পরিক্রমায় বিলিন হয়ে যায় – শুধু রয়ে যায় তাদের গল্প কাহিনী। তাদের পতনের ইতিহাস একটাই – আর তা হচ্ছে তাদের পাপ কাজ। পাপের পরিণতিকে বাধা দিতে সক্ষম কেউ নয়। এ কথা পার্থিব জীবনের জন্য যেমন সত্য, ঠিক তদ্রূপ সত্য পারলৌকিক জীবনের জন্য। পরলোকের জীবনে পাপীদের পরিণতি ইহলোক অপেক্ষা আরও নিকৃষ্ট যার বর্ণনা করা হয়েছে ২৪ – ২৫ নং আয়াতে।
আয়াতঃ 050.037
এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্যে, যার অনুধাবন করার মত অন্তর রয়েছে। অথবা সে নিবিষ্ট মনে শ্রবণ করে।
Verily, therein is indeed a reminder for him who has a heart or gives ear while he is heedful.
إِنَّ فِي ذَلِكَ لَذِكْرَى لِمَن كَانَ لَهُ قَلْبٌ أَوْ أَلْقَى السَّمْعَ وَهُوَ شَهِيدٌ
Inna fee thalika lathikra liman kana lahu qalbun aw alqa alssamAAa wahuwa shaheedun
YUSUFALI: Verily in this is a Message for any that has a heart and understanding or who gives ear and earnestly witnesses (the truth).
PICKTHAL: Lo! therein verily is a reminder for him who hath a heart, or giveth ear with full intelligence.
SHAKIR: Most surely there is a reminder in this for him who has a heart or he gives ear and is a witness.
KHALIFA: This should be a lesson for everyone who possesses a mind, or is able to hear and witness.
৩৭। অবশ্যই এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্য যার [আন্তরিক ] হৃদয় এবং বোঝার ক্ষমতা আছে অথবা যে শ্রবণ করে নিবিষ্ট চিত্তে ৪৯৭৪।
৪৯৭৪। “যার আছে আন্তরিক হৃদয় এবং বোঝার ক্ষমতা” – এই বাক্যটি এক অত্যন্ত গূঢ় অর্থবোধক বাক্য, যা অত্যন্ত উচ্চ আধ্যাত্মিক অর্থ বহন করে। যে অন্তঃকরণ বিশুদ্ধ, বিনীত এবং বোধশক্তিসম্পন্ন, একমাত্র সেই অন্তঃকরণ পারে আল্লাহ্র নিদর্শন সমূহ বিশ্বচরাচরে প্রত্যক্ষ করতে; সেই অন্তঃকরণ পারে আল্লাহ্র বাণীর প্রকৃত মর্ম উপলব্ধি করে শিক্ষা গ্রহণ করতে। একমাত্র সেই পারে আল্লাহ্ তাঁর বাণীর মাধ্যমে যে শিক্ষা বা উপদেশ দিতে চান তা প্রকৃত ভাবে উপলব্ধি করতে ও চিন্তা করতে। এরা অত্যন্ত উচ্চ আধ্যাত্মিক ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তি। আল্লাহ্র দেয়া উপদেশ দ্বারা সাধারণ ব্যক্তিও উপকৃত হতে পারে যদি তারা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ্র বাণীর মর্মার্থ উপলব্ধি করার জন্য চেষ্টা করে; নিবিষ্ট চিত্তে তা শ্রবণ করে। শান্ত নির্জন পরিবেশে একা আয়াতসমূহ নিবিষ্ট মনে শ্রবণ করার মাধ্যমে আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভ করা যায়। এই শ্রবণ হতে হবে আন্তরিক – অর্থ বুঝে এবং বোঝার চেষ্টা করে। অন্তরকে অনুপস্থিত রেখে বা না বুঝে কোরাণ তেলওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্র বাণীর প্রকৃত মর্মার্থ আত্মার মাঝে ধারণ করা সম্ভব নয়।
উপদেশ : আরবীতে কোরাণ পড়ার সাথে সাথে মাতৃভাষাতে তার অর্থ বুঝতে চেষ্টা করা আল্লাহ্র হুকুম ও অনুগ্রহ লাভের উপায়। আধ্যাত্মিক জ্ঞানার্জনের এই একমাত্র পন্থা।
আয়াতঃ 050.038
আমি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয়দিনে সৃষ্টি করেছি এবং আমাকে কোনরূপ ক্লান্তি স্পর্শ করেনি।
And indeed We created the heavens and the earth and all between them in six Days and nothing of fatigue touched Us.
وَلَقَدْ خَلَقْنَا السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ وَمَا مَسَّنَا مِن لُّغُوبٍ
Walaqad khalaqna alssamawati waal-arda wama baynahuma fee sittati ayyamin wama massana min lughoobin
YUSUFALI: We created the heavens and the earth and all between them in Six Days, nor did any sense of weariness touch Us.
PICKTHAL: And verily We created the heavens and the earth, and all that is between them, in six Days, and naught of weariness touched Us.
SHAKIR: And certainly We created the heavens and the earth and what is between them in six periods and there touched Us not any fatigue.
KHALIFA: We have created the heavens and the earth, and everything between them in six days, and no fatigue touched us.
৩৮। আমি আকাশমন্ডলী ৪৯৭৫ ও পৃথিবী এবং উভয়ের মধ্যবর্তী সকল কিছু সৃষ্টি করেছি ছয় দিনে ৪৯৭৬। আমাকে কোন ক্লান্তি স্পর্শ করে নাই ৪৯৭৭।
৪৯৭৫। এ কথা সর্বদা মনে রাখতে হবে যে, পৃথিবীর দিন বা সূর্যদয় ও সূর্যাস্তই একমাত্র সময়ের মাপকাঠি নয়। এই বিশাল নভোমন্ডল, পৃথিবী ও এর অন্তর্বর্তী সকল কিছু ছয়টি ধাপে সম্পন্ন করা হয় যা আমাদের ধারণায় সুদীর্ঘ কাল। সময়ের সাথে সাথে সকল কিছুরই পরিবর্তন ঘটে। সুতারাং পরবর্তী আয়াতে রাসুলকে উপদেশের মাধ্যমে আল্লাহ্ বিশ্ব মানব শ্রেণীকে এই উপদেশ দান করেছেন যে, যদি কাঙ্খিত ‘ভালো’ কিছু আমাদের জীবনে না ঘটে, তবে আল্লাহ্র উপরে নির্ভর করে আমরা যেনো ধৈর্য ধারণ করি কারণ বিশ্ব প্রকৃতির ন্যায়, প্রকৃত কল্যাণও সময়ের দীর্ঘ পরিক্রমায় আগত হয়। সে সময়ে আমাদের সকল ইচ্ছাকে প্রতিপালকের ইচ্ছার সাথে সম্পৃক্ত করে তাঁরই সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করতে হবে। অন্তরে এ বিশ্বাস রাখতে হবে যে, সকল কল্যাণের উৎস সেই সর্বশক্তিমান আল্লাহ্।
৪৯৭৬। দেখুন [ ৭ : ৫৪ ] আয়াত ও টিকা ১০৩১ ; এবং [ ৪১ : ১২ ] আয়াত ও টিকা ৪৪৭৭।
৪৯৭৭। দেখুন [ ৩৫ : ৩৫ ] আয়াত।
আয়াতঃ 050.039
অতএব, তারা যা কিছু বলে, তজ্জন্যে আপনি ছবর করুন এবং, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে আপনার পালনকর্তার সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করুন।
So bear with patience (O Muhammad SAW) all that they say, and glorify the Praises of your Lord, before the rising of the sun and before (its) setting (i.e. the Fajr, Zuhr, and ’Asr prayers) .
فَاصْبِرْ عَلَى مَا يَقُولُونَ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ الْغُرُوبِ
Faisbir AAala ma yaqooloona wasabbih bihamdi rabbika qabla tulooAAi alshshamsi waqabla alghuroobi
YUSUFALI: Bear, then, with patience, all that they say, and celebrate the praises of thy Lord, before the rising of the sun and before (its) setting.
PICKTHAL: Therefor (O Muhammad) bear with what they say, and hymn the praise of thy Lord before the rising and before the setting of the sun;
SHAKIR: Therefore be patient of what they say, and sing the praise of your Lord before the rising of the sun and before the setting.
KHALIFA: Therefore, be patient in the face of their utterances, and praise and glorify your Lord before sunrise, and before sunset.
৩৯। অতএব, তারা যা কিছু বলে, তাতে তুমি ধৈর্য ধারণ কর এবং তোমার প্রভুর প্রশংসা কীর্তন কর, সূর্যদয়ের পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বে, ৪৯৭৮
৪৯৭৮। শয়নে স্বপনে সর্বদা আল্লাহ্র নাম স্মরণ করতে হবে। আল্লাহ্র নাম স্মরণে অন্তরের অন্ধকার বিদূরিত হয়ে আত্মা কলুষমুক্ত হয়। তবে র্সবাপেক্ষা উত্তম সময় হচ্ছে সূর্যদয়ের পূর্বে এবং সূর্যাস্তের পূর্বে বৈকাল বেলা এবং রাত্রির কিছু অংশ যখন বিশ্ব প্রকৃতি দিনের কোলাহল মুক্ত হয়ে নিঃশব্দ বিশ্রামের কোলে ঢলে পড়ে। এরূপ সময়ে আধ্যাত্মিক ভাবে আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভের উপযুক্ত সময়। পরবর্তীতে মদিনাতে এই সময়গুলিকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে রূপান্তরিত করা হয়। ফজর হচ্ছে সূর্যাস্তের পূর্বে, জোহর এবং আসর হচ্ছে সূর্য মধ্যাহ্ন অতিক্রম করার পরে সূর্যাস্তের পূর্বে ; মাগরিব ও এশা হচ্ছে রাত্রের এবাদত।
আয়াতঃ 050.040
রাত্রির কিছু অংশে তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করুন এবং নামাযের পশ্চাতেও।
And during a part of the night (also), glorify His praises (i.e. Maghrib and ’Isha prayers), and (so likewise) after the prayers [As-Sunnah, Nawâfil optional and additional prayers, and also glorify, praise and magnify Allâh – Subhân Allâh, Alhamdu lillâh, Allâhu-Akbar].
وَمِنَ اللَّيْلِ فَسَبِّحْهُ وَأَدْبَارَ السُّجُودِ
Wamina allayli fasabbihhu waadbara alssujoodi
YUSUFALI: And during part of the night, (also,) celebrate His praises, and (so likewise) after the postures of adoration.
PICKTHAL: And in the night-time hymn His praise, and after the (prescribed) prostrations.
SHAKIR: And glorify Him in the night and after the prayers.
KHALIFA: During the night you shall meditate on His name, and after prostrating.
৪০। এবং তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর রাত্রির একাংশে এবং সালাতের পরেও ৪৯৭৯।
৪৯৭৯। “সালাতের পরেও ” – বাক্যটির অর্থ ফরজ নামাজ বা সালাত আদায়ের পরেও আল্লাহ্র ধ্যানে নিমগ্ন হও। তফসীরকারগণ মনে করেন যে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ আদায়ের পর অতিরিক্ত নামাজ আদায়ের প্রয়োজন আছে যা নফল নামাজ নামে অভিহিত করা হয়।
আয়াতঃ 050.041
শুন, যে দিন এক আহবানকারী নিকটবর্তী স্থান থেকে আহবান করবে।
And listen on the Day when the caller will call from a near place,
وَاسْتَمِعْ يَوْمَ يُنَادِ الْمُنَادِ مِن مَّكَانٍ قَرِيبٍ
WaistamiAA yawma yunadi almunadi min makanin qareebin
YUSUFALI: And listen for the Day when the Caller will call out from a place quiet near,-
PICKTHAL: And listen on the day when the crier crieth from a near place,
SHAKIR: And listen on the day when the crier shall cry from a near place
KHALIFA: Prepare for the day when the caller calls from a place that is near.
৪১। এবং শোন,যেদিন এক ঘোষণাকারী নিকটবর্তী স্থান থেকে আহ্বান করবে৪৯৮০, ৪৯৮১, –
৪০৮০। পুণরুত্থানের দিনকে এখানে ” যেদিন ” নামে অভিহিত করা হয়েছে। সেদিন প্রতিটি আত্মাকে পুনরুত্থানের জন্য আহ্বান করা হবে এবং বিচার সভায় তৎক্ষণাত উপস্থিত হওয়ার জন্য আদেশ দেয়া হবে। তৎক্ষণাত প্রতিটি আত্মা সে আদেশ মান্য করতে বাধ্য থাকবে। দেখুন আয়াত [ ৩৬ : ৪৯- ৫৩ ] ও টিকা ৩৯৯৭ এবং ৩৯৯৯।
৪৯৮১। মানুষ পার্থিব জীবন নিয়ে এত ব্যস্ত থাকে যে পারলৌকিক জীবন সম্বন্ধে তার চিন্তা করারও অবসর নাই। পরলোকের জীবনকে তার কাছে মনে হয় সূদূর পরাহত। কিন্তু পুনরুত্থানের পর সে জীবনকে আর সূদূর পরাহত মনে হবে না। সে জীবনকে দূরে ভাবার মত স্থান বা সময় তারা আর পাবে না।
আয়াতঃ 050.042
যেদিন মানুষ নিশ্চিত সেই ভয়াবহ আওয়াজ শুনতে পাবে, সেদিনই পুনরত্থান দিবস।
The Day when they will hear As-Saihah (shout, etc.) in truth, that will be the Day of coming out (from the graves i.e. the Day of Resurrection).
يَوْمَ يَسْمَعُونَ الصَّيْحَةَ بِالْحَقِّ ذَلِكَ يَوْمُ الْخُرُوجِ
Yawma yasmaAAoona alssayhata bialhaqqi thalika yawmu alkhurooji
YUSUFALI: The Day when they will hear a (mighty) Blast in (very) truth: that will be the Day of Resurrection.
PICKTHAL: The day when they will hear the (Awful) Cry in truth. That is the day of coming forth (from the graves).
SHAKIR: The day when they shall hear the cry in truth; that is the day of coming forth.
KHALIFA: When they hear the inevitable cry; that is the day you come out.
৪২। যেদিন মানুষ অবশ্যই [ প্রচন্ড ] বিষ্ফোরণ শুনতে পাবে ; সেদিনই হবে পুনরুত্থানের দিন ৪৯৮২।
৪৩। অবশ্যই আমিই জীবন দান করি ও মৃত্যু ঘটাই ; এবং আমার নিকট হচ্ছে শেষ প্রত্যাবর্তন –
৪৯৮২। ‘Saihatun’ শব্দটির অনুবাদ করা হয়েছে বিস্ফোরণ। এই শব্দটি দ্বারা এখানে পুনরুত্থানের সময়কে বোঝানো হয়েছে। অথবা [ ১১ : ৬৭ ] আয়াতে এই শব্দটি দ্বারা পৃথিবীর বুকের হঠাৎ শস্তিকে বোঝানো হয়েছে।
আয়াতঃ 050.043
আমি জীবন দান করি, মৃত্যু ঘটাই এবং আমারই দিকে সকলের প্রত্যাবর্তন।
Verily, We it is Who give life and cause death; and to Us is the final return,
إِنَّا نَحْنُ نُحْيِي وَنُمِيتُ وَإِلَيْنَا الْمَصِيرُ
Inna nahnu nuhyee wanumeetu wa-ilayna almaseeru
YUSUFALI: Verily it is We Who give Life and Death; and to Us is the Final Goal-
PICKTHAL: Lo! We it is Who quicken and give death, and unto Us is the journeying.
SHAKIR: Surely We give life and cause to die, and to Us is the eventual coming;
KHALIFA: We are the ones who control life and death; to us is the final destiny.
৪২। যেদিন মানুষ অবশ্যই [ প্রচন্ড ] বিষ্ফোরণ শুনতে পাবে ; সেদিনই হবে পুনরুত্থানের দিন ৪৯৮২।
৪৩। অবশ্যই আমিই জীবন দান করি ও মৃত্যু ঘটাই ; এবং আমার নিকট হচ্ছে শেষ প্রত্যাবর্তন –
৪৯৮২। ‘Saihatun’ শব্দটির অনুবাদ করা হয়েছে বিস্ফোরণ। এই শব্দটি দ্বারা এখানে পুনরুত্থানের সময়কে বোঝানো হয়েছে। অথবা [ ১১ : ৬৭ ] আয়াতে এই শব্দটি দ্বারা পৃথিবীর বুকের হঠাৎ শস্তিকে বোঝানো হয়েছে।
আয়াতঃ 050.044
যেদিন ভূমন্ডল বিদীর্ণ হয়ে মানুষ ছুটাছুটি করে বের হয়ে আসবে। এটা এমন সমবেত করা, যা আমার জন্যে অতি সহজ।
On the Day when the earth shall be cleft, from off them, (they will come out) hastening forth. That will be a gathering, quite easy for Us.
يَوْمَ تَشَقَّقُ الْأَرْضُ عَنْهُمْ سِرَاعًا ذَلِكَ حَشْرٌ عَلَيْنَا يَسِيرٌ
Yawma tashaqqaqu al-ardu AAanhum siraAAan thalika hashrun AAalayna yaseerun
YUSUFALI: The Day when the Earth will be rent asunder, from (men) hurrying out: that will be a gathering together,- quite easy for Us.
PICKTHAL: On the day when the earth splitteth asunder from them, hastening forth (they come). That is a gathering easy for Us (to make).
SHAKIR: The day on which the earth shall cleave asunder under them, they will make haste; that is a gathering together easy to Us.
KHALIFA: The day will come when the earth cracks in a hurry, giving rise to them. Such summoning is easy for us to do.
৪৪। যেদিন পৃথিবী বিদীর্ণ হয়ে যাবে ৪৯৮৩, এবং মানুষ ত্রস্ত-ব্যস্ত হয়ে ছুটাছুটি করবে, এই সমবেত সমাবেশকরণ আমার জন্য সহজ ৪৯৮৪।
৪৯৮৩। পুনরুত্থান দিনের বর্ণনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যে, সেদিন প্রতিটি আত্মা পৃথিবীর সর্বপ্রান্ত থেকে দ্রুত বের হয়ে আসবে। পৃথিবী সেদিন চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে পড়বে। দেখুন আয়াত [ ২৫ : ২৫ ] আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে যে, আকাশ বিদির্ণ হয়ে যাবে; এবং ফেরেশতারা সারিবদ্ধভাবে অগ্রসর হবে। দেখুন [ ৮৪ : ১- ৪ ] আয়াতের টিকা ৩০৮২।
৪৯৮৪। পৃথিবীর ধ্যান ধারণাতে অভ্যস্ত থাকার ফলে সাধারণ মানুষের পক্ষে কল্পনা করাও দুঃসাধ্য যে কিভাবে এই সুবিশাল মানুষ জাতি – তাদের বিভিন্ন সময়ে মৃত্যু হওয়া এবং বিভিন্ন পরিবেশে ও সময়ে অবস্থান সত্বেও তাদের সকলকে মূহুর্তের মাঝে এক স্থানে, একই সময়ে সমবেত করা সম্ভব হবে। কিন্তু পরলোকের সে পৃথিবী হবে সম্পূর্ণ এক নূতন পৃথিবী, যার নিয়ম কানুন, সৃষ্টি, ধ্বংস সবই হবে সম্পূর্ণ নূতন আইনের বা নিয়মের অধীনে যার সম্বন্ধে আমাদের তিলমাত্র ধারণাও নাই, দেখুন আয়াত [১৪:৪৮]। আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান – তাঁর পক্ষে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত সহজ।
আয়াতঃ 050.045
তারা যা বলে, তা আমি সম্যক অবগত আছি। আপনি তাদের উপর জোরজবরকারী নন। অতএব, যে আমার শাস্তিকে ভয় করে, তাকে কোরআনের মাধ্যমে উপদেশ দান করুন।
We know of best what they say; and you (O Muhammad SAW) are not a tyrant over them (to force them to Belief). But warn by the Qur’ân, him who fears My Threat.
نَحْنُ أَعْلَمُ بِمَا يَقُولُونَ وَمَا أَنتَ عَلَيْهِم بِجَبَّارٍ فَذَكِّرْ بِالْقُرْآنِ مَن يَخَافُ وَعِيدِ
Nahnu aAAlamu bima yaqooloona wama anta AAalayhim bijabbarin fathakkir bialqur-ani man yakhafu waAAeedi
YUSUFALI: We know best what they say; and thou art not one to overawe them by force. So admonish with the Qur’an such as fear My Warning!
PICKTHAL: We are Best Aware of what they say, and thou (O Muhammad) art in no wise a compeller over them. But warn by the Qur’an him who feareth My threat.
SHAKIR: We know best what they say, and you are not one to compel them; therefore remind him by means of the Quran who fears My threat.
KHALIFA: We are fully aware of everything they utter, while you have no power over them. Therefore, remind with this Quran, those who reverence My warnings.
৪৫। ওরা যা বলে তা আমি ভালোভাবেই জানি ৪৯৮৫ ; তুমি ওদের উপরে জবরদস্তিকারী নও। সুতারাং যে আমার শাস্তিকে ভয় করে তাকে কুর-আনের সাহায্যে উপদেশ দান কর।
৪৯৮৫। পার্থিব জগত সম্বন্ধে যারা অত্যন্ত বাস্তববাদী তারা অনেক সময়েই পরলোকের জীবন সম্বন্ধে সন্দেহ পোষণ করে থাকে। তারা বিশ্বাস করতে চায় না যে পৃথিবীর সকল কাজের হিসাব নিকাশের সময় হবে পরলোকে শেষ বিচারে দিনে। ধর্মীয় বিশ্বাস হচ্ছে অন্তরের ধন। উপর থেকে চাপিয়ে দিয়ে সে বিশ্বাস অর্জন করা সম্ভব নয়। মহান আল্লাহ্ রাসুলকে ( সা ) সম্বোধন করে এই আয়াতে বলেছেন যে, ধর্মীয় ব্যাপারে কোন জবরদস্তি নাই। রাসুলের ( সা ) দায়িত্ব হচ্ছে আল্লাহ্র বাণী বা কোরাণের আয়াত সমূহ মানুষের নিকট পৌঁছে দেয়া। যারা আল্লাহ্র হুকুম সমূহ শুনতে চায়; বিশ্বাস করার মত উপযুক্ত আধ্যাত্মিক অবস্থা যাদের বিদ্যমান তাদের কোরাণের বাণীর সাহায্যে আধ্যাত্মিক উন্নতিতে সাহায্য করার জন্য রাসুলকে বলা হয়েছে। পৃথিবীর জীবনই শেষ কথা নয় – মানুষের জন্য আছে মহত্তর, উচ্চতর জীবনের সন্ধান – পরলোকে। কোরাণ আমাদের সেই জীবনের সন্ধান দান করে। কোরাণকে প্রকৃত অর্থে হৃদয়ঙ্গম করলেই ধর্মের পথ সহজ, মসৃণ ও সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে উপনীত হওয়া সম্ভব। সুতারাং কোরাণ শরীফকে অর্থ বুঝে আরবীর সাথে সাথে মাতৃভাষাতে পড়তে হবে ও গভীর ভাবে চিন্তার মাধ্যমে তার অর্থ হৃদয়ঙ্গম করতে হবে – তবেই ধর্মের প্রকৃত অর্থ হৃদয়ে হবে ভাস্বর। আল্লাহ্র বাণীর নূরে আত্মা হবে আলোকিত।