- সূরার নাম: সূরা হুজরাত
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা হুজরাত বাংলা
আয়াতঃ 049.001
মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও রসূলের সামনে অগ্রণী হয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু শুনেন ও জানেন।
O you who believe! Do not put (yourselves) forward before Allâh and His Messenger (SAW), and fear Allâh. Verily! Allâh is All-Hearing, All-Knowing.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُقَدِّمُوا بَيْنَ يَدَيِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
Ya ayyuha allatheena amanoo la tuqaddimoo bayna yadayi Allahi warasoolihi waittaqoo Allaha inna Allaha sameeAAun AAaleemun
YUSUFALI: O Ye who believe! Put not yourselves forward before Allah and His Messenger; but fear Allah: for Allah is He Who hears and knows all things.
PICKTHAL: O ye who believe! Be not forward in the presence of Allah and His messenger, and keep your duty to Allah. Lo! Allah is Hearer, Knower.
SHAKIR: O you who believe! be not forward in the presence of Allah and His Messenger, and be careful of (your duty to) Allah; surely Allah is Hearing, Knowing.
KHALIFA: O you who believe, do not place your opinion above that of GOD and His messenger. You shall reverence GOD. GOD is Hearer, Omniscient.
০১। হে বিশ্বাসীগণ ! আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের পূর্বে [ কোন কথায় বা কাজে ] অগ্রবর্তী হয়ো না ৪৯১৯। আল্লাহকে ভয় কর। আল্লাহ্ই সব শোনেন ও জানেন।
৪৯১৯। এই আয়াতটিকে বিভিন্নভাবে তফসীর করা হয়েছে :
১) আল্লাহ্র সম্মুখে নিজেকে জাহির করার চেষ্টা করা উচিত নয়। আল্লাহ্র সম্মুখে অর্থাৎ মসজিদ অথবা নামাজের সময়ে অথবা ধর্মীয় অনুষ্ঠান ইত্যাদি।
২) কথা এবং কাজে নেতার অগ্রবর্তী না হওয়া। এক্ষেত্রে রাসুলের (সা ) প্রতি আনুগত্যের মাধ্যমে এই উপদেশ দেয়া হয়েছে।
৩) প্রতিটি কাজে তাড়াহুড়া না করে ধৈর্য্য ধারণ করা। কারণ সবকিছুর সঠিক মূল্যায়ন আল্লাহ্র হাতে। আল্লাহ্ তাঁর রাসুলের (সা) মাধ্যমে কথা বলেন। সুতারাং তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হও। অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে যেনো তোমরা সকল কর্মে আল্লাহ্র উপস্থিতি অনুভব কর। কারণ আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।
৪) কোরাণ ও রাসুলের (সা) সুন্নার মাধ্যমে হেদায়েতকে অন্বেষণ কর। আর কিছুই কোরাণ ও সুন্নার উপরে স্থান পেতে পারে না।
আয়াতঃ 049.002
মুমিনগণ! তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের উপর তোমাদের কন্ঠস্বর উঁচু করো না এবং তোমরা একে অপরের সাথে যেরূপ উঁচুস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরূপ উঁচুস্বরে কথা বলো না। এতে তোমাদের কর্ম নিস্ফল হয়ে যাবে এবং তোমরা টেরও পাবে না।
O you who believe! Raise not your voices above the voice of the Prophet (SAW), nor speak aloud to him in talk as you speak aloud to one another, lest your deeds may be rendered fruitless while you perceive not.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ وَلَا تَجْهَرُوا لَهُ بِالْقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ أَن تَحْبَطَ أَعْمَالُكُمْ وَأَنتُمْ لَا تَشْعُرُونَ
Ya ayyuha allatheena amanoo la tarfaAAoo aswatakum fawqa sawti alnnabiyyi wala tajharoo lahu bialqawli kajahri baAAdikum libaAAdin an tahbata aAAmalukum waantum la tashAAuroona
YUSUFALI: O ye who believe! Raise not your voices above the voice of the Prophet, nor speak aloud to him in talk, as ye may speak aloud to one another, lest your deeds become vain and ye perceive not.
PICKTHAL: O ye who believe! Lift not up your voices above the voice of the Prophet, nor shout when speaking to him as ye shout one to another, lest your works be rendered vain while ye perceive not.
SHAKIR: O you who believe! do not raise your voices above the voice of the Prophet, and do not speak loud to him as you speak loud to one another, lest your deeds became null while you do not perceive.
KHALIFA: O you who believe, do not raise your voices above the voice of the prophet, nor shall you shout at him as you shout at each other, lest your works become nullified while you do not perceive.
০২। হে মুমিনগণ ! তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের উপরে তোমাদের কণ্ঠস্বর উচ্চ করো না ৪৯২০। তোমরা নিজেদের মধ্যে যেরূপ উচ্চস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরূপ উচ্চস্বরে কথা বলো না ; এই আশঙ্কায় যে, তোমাদের সকল কর্ম বিফল হয়ে যাবে ৪৯২১ আর তোমরা হয়তো তা টেরই পাবে না।
৪৯২০। রাসুলের (সা) প্রতি আচরণের মাধ্যমে মুসলমানদের সামাজিক শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়া হয়েছে। নেতার সম্মুখে বা শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বের সম্মুখে উচ্চস্বরে কথা বলা অশিষ্টাচার। যারা অভদ্র ও শিষ্টাচার বিহীন শুধু তারাই নেতা ও শ্রদ্ধেয়ভাজনদের সাথে উচ্চস্বরে কথা বলে থাকে।
৪৯২১। নম্রতা, ভদ্রতা ও বিনয় এমন একটি গুণ যা সমাজকে করে সুন্দর ও সামাজিক ক্রিয়াকর্মকে করে অনেক সহজ। অভদ্র ও রুক্ষ ব্যবহার যে কোন ভালো কাজকে মূল্যহীন করে দেয়। যেমন : দান করে রুক্ষ ব্যবহার দানের মর্যদা হানি করে, অপরপক্ষে দান না করেও মিষ্ট ব্যবহার গ্রহীতার অন্তরে শান্তি আনায়ন করে। এ ভাবেই দুর্ব্যবহার ও অশিষ্ট ব্যবহার কর্মফলকে নিষ্ফল করে দেয়। এমনকি দুর্ব্যবহারকারী নিজেও জানতে পারে না যে তার কর্মফল নিষ্ফল হয়ে যায়।
আয়াতঃ 049.003
যারা আল্লাহর রসূলের সামনে নিজেদের কন্ঠস্বর নীচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে শিষ্টাচারের জন্যে শোধিত করেছেন। তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।
Verily! Those who lower their voices in the presence of Allâh’s Messenger (SAW), they are the ones whose hearts Allâh has tested for piety. For them is forgiveness and a great reward.
إِنَّ الَّذِينَ يَغُضُّونَ أَصْوَاتَهُمْ عِندَ رَسُولِ اللَّهِ أُوْلَئِكَ الَّذِينَ امْتَحَنَ اللَّهُ قُلُوبَهُمْ لِلتَّقْوَى لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ عَظِيمٌ
Inna allatheena yaghuddoona aswatahum AAinda rasooli Allahi ola-ika allatheena imtahana Allahu quloobahum lilttaqwa lahum maghfiratun waajrun AAatheemun
YUSUFALI: Those that lower their voices in the presence of Allah’s Messenger,- their hearts has Allah tested for piety: for them is Forgiveness and a great Reward.
PICKTHAL: Lo! they who subdue their voices in the presence of the messenger of Allah, those are they whose hearts Allah hath proven unto righteousness. Theirs will be forgiveness and immense reward.
SHAKIR: Surely those who lower their voices before Allah’s Messenger are they whose hearts Allah has proved for guarding (against evil); they shall have forgiveness and a great reward.
KHALIFA: Surely, those who lower their voices at the messenger of GOD are the ones whose hearts are prepared by GOD to become righteous. They have deserved forgiveness and a great recompense.
০৩। যারা আল্লাহ্র রসুলের উপস্থিতিতে তাদের কণ্ঠস্বরকে নীচু করে, – আল্লাহ্ তাদের হৃদয়কে তাকওয়ার জন্য পরীক্ষা করে নিয়েছেন ৪৯২২। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরষ্কার।
৪৯২২। শিষ্টাচার ও ভালো ব্যবহার উৎসরিত হয় হৃদয় থেকে। আল্লাহ্র রাসুলের মাধ্যমে আল্লাহ্ আমাদের এই শিক্ষা দিয়েছেন যে, – যে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধাভাজন নেতাকে মেনে চলে আল্লাহ্ তার হৃদয়ে ধর্মভাব জাগ্রত করেন। অপরপক্ষে যে তার শ্রদ্ধেয় নেতার প্রতি শিষ্টাচার সম্পন্ন না হয়; তার কর্মফল বৃথা হয়ে যায়। কারণ এরূপ ক্ষেত্রে নেতার কর্তৃত্ব শিথিল হয়ে পড়ে ফলে সমগ্র কর্মপ্রচেষ্টাতে শিথিলতা দেখা যায়।
আয়াতঃ 049.004
যারা প্রাচীরের আড়াল থেকে আপনাকে উচুস্বরে ডাকে, তাদের অধিকাংশই অবুঝ।
Verily! Those who call you from behind the dwellings, most of them have no sense.
إِنَّ الَّذِينَ يُنَادُونَكَ مِن وَرَاء الْحُجُرَاتِ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ
Inna allatheena yunadoonaka min wara-i alhujurati aktharuhum la yaAAqiloona
YUSUFALI: Those who shout out to thee from without the inner apartments – most of them lack understanding.
PICKTHAL: Lo! those who call thee from behind the private apartments, most of them have no sense.
SHAKIR: (As for) those who call out to you from behind the private chambers, surely most of them do not understand.
KHALIFA: As for those who call on you from outside the walls, most of them do not understand.
০৪। যারা ঘরের বাহির থেকে তোমাকে চিৎকার করে ডাকে, তাদের অধিকাংশের বোধ শক্তির অভাব আছে। ৪৯২৩
৪৯২৩। বান্তামীমের একটি প্রতিনিধিদল রাসুলের (সা ) সাথে সাক্ষাৎ করতে আসে। তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) নিজ প্রকোষ্ঠে অবস্থান করছিলেন। তারা কক্ষের পিছন থেকে তাঁকে চীৎকার করে ডাকতে থাকে। আয়াতটি এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অবতীর্ণ হয়। এই আয়াতগুলির আবেদন সার্বজনীন – যুগ কাল অতিক্রান্ত। নেতাকে ঘরের বাইরে থেকে চীৎকার করে ডাকা অভদ্রতারই পরিচায়ক। এর দ্বারা নেতার কর্ম, সময়, ও তাঁর প্রতি অশ্রদ্ধাই জ্ঞাপন করা হয়। একমাত্র উদ্ধত, হঠকারী ও নির্বোধ ব্যক্তিরাই তা করতে পারে। এরূপ ক্ষেত্রে বিনয়ী ও শিষ্টাচার সম্পন্ন যে কোনও ব্যক্তি নেতার আগমন পর্যন্ত ধৈর্য্য সহকারে অপেক্ষা করবে। আল্লাহ্র নবী ছিলেন ক্ষমা ও দয়ার প্রতীক। এসব অজ্ঞ ও নির্বোধদের দোষত্রুটি তিনি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখেছেন। কিন্তু আমাদের দৈনন্দিক জীবনে এরূপ অজ্ঞতাকে ক্ষমা করা হয় না। যেমন : কোন সাধারণ সৈনিক যদি সামরিক বাহিনীর জেনারেলের সাথে এরূপ ব্যবহার করে অথবা রাজা বা রাষ্ট্রপতি বা উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মচারীর সাথে অভদ্র ও শিষ্টাচার বর্হিভূত ব্যবহার করে তবে দেশের আইনের চোখে সে অপরাধী হয়। তাকে দন্ডনীয় আইনে সোপর্দ করা হয়। এই আয়াতগুলির মাধ্যমে সামাজিক শিষ্টাচারের সাধারণ নিয়মগুলি শিক্ষা দান করা হয়েছে।
আয়াতঃ 049.005
যদি তারা আপনার বের হয়ে তাদের কাছে আসা পর্যন্ত সবর করত, তবে তা-ই তাদের জন্যে মঙ্গলজনক হত। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
And if they had patience till you could come out to them, it would have been better for them. And Allâh is Oft-Forgiving, Most Merciful.
وَلَوْ أَنَّهُمْ صَبَرُوا حَتَّى تَخْرُجَ إِلَيْهِمْ لَكَانَ خَيْرًا لَّهُمْ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
Walaw annahum sabaroo hatta takhruja ilayhim lakana khayran lahum waAllahu ghafoorun raheemun
YUSUFALI: If only they had patience until thou couldst come out to them, it would be best for them: but Allah is Oft-Forgiving, Most Merciful.
PICKTHAL: And if they had had patience till thou camest forth unto them, it had been better for them. And Allah is Forgiving, Merciful.
SHAKIR: And if they wait patiently until you come out to them, it would certainly be better for them, and Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: Had they been patient until you came out to them, it would have been better for them. GOD is Forgiver, Most Merciful.
০৫। তুমি বাইর হয়ে তাদের নিকট আসা পর্যন্ত যদি তারা ধৈর্য ধারণ করতো, তবে তা হতো তাদের জন্য উত্তম। আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল,পরম করুণাময়।
০৬। হে মুমিনগণ ! কোন দুষ্ট লোক যদি কোন বার্তা সহ তোমাদের নিকট আসে ৪৯২৪; তবে তার সত্যতা ভালোভাবে যাচাই করে নেবে, এই আশঙ্কায় যে, পাছে অজ্ঞাতসারে কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতি করে ফেলো ; এবং যার ফলে তোমাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হতে হয়।
৪৯২৪। এই আয়াতের মাধ্যমে এক অমূল্য সার্বজনীন উপদেশ দান করা হয়েছে। মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতা হচ্ছে কানকথা ও অন্যের কথা বিশ্বাস করা। বলা হয়েছে কোন কথা বিশ্বাস করার পূর্বে পরীক্ষা করে নাও বক্তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। সে কি সত্যবাদী, ন্যায়বান, মোমেন বান্দা ? না কি সে মিথ্যাবাদী, মোনাফেক, অন্যায়কারী, পাপাচারী। যদি সে মোমেন না হয়ে পাপাচারী হয়, তবে তার কথা বিশ্বাস করার পূর্বে পরীক্ষা করে নাও। নতুবা পরবর্তীতে অনুতাপ করেও ভুলের সংশোধন করা সম্ভব হবে না। মিথ্যা অপবাদ, কলঙ্ক ও দুর্নাম সব কিছু থেকেই এই আয়াতে সাবধান থাকতে বলা হয়েছে।
আয়াতঃ 049.006
মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও।
O you who believe! If a rebellious evil person comes to you with a news, verify it, lest you harm people in ignorance, and afterwards you become regretful to what you have done.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن جَاءكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَأٍ فَتَبَيَّنُوا أَن تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَى مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ
Ya ayyuha allatheena amanoo in jaakum fasiqun binaba-in fatabayyanoo an tuseeboo qawman bijahalatin fatusbihoo AAala ma faAAaltum nadimeena
YUSUFALI: O ye who believe! If a wicked person comes to you with any news, ascertain the truth, lest ye harm people unwittingly, and afterwards become full of repentance for what ye have done.
PICKTHAL: O ye who believe! If an evil-liver bring you tidings, verify it, lest ye smite some folk in ignorance and afterward repent of what ye did.
SHAKIR: O you who believe! if an evil-doer comes to you with a report, look carefully into it, lest you harm a people in ignorance, then be sorry for what you have done.
KHALIFA: O you who believe, if a wicked person brings any news to you, you shall first investigate, lest you commit injustice towards some people, out of ignorance, then become sorry and remorseful for what you have done.
০৫। তুমি বাইর হয়ে তাদের নিকট আসা পর্যন্ত যদি তারা ধৈর্য ধারণ করতো, তবে তা হতো তাদের জন্য উত্তম। আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল,পরম করুণাময়।
০৬। হে মুমিনগণ ! কোন দুষ্ট লোক যদি কোন বার্তা সহ তোমাদের নিকট আসে ৪৯২৪; তবে তার সত্যতা ভালোভাবে যাচাই করে নেবে, এই আশঙ্কায় যে, পাছে অজ্ঞাতসারে কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতি করে ফেলো ; এবং যার ফলে তোমাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হতে হয়।
৪৯২৪। এই আয়াতের মাধ্যমে এক অমূল্য সার্বজনীন উপদেশ দান করা হয়েছে। মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতা হচ্ছে কানকথা ও অন্যের কথা বিশ্বাস করা। বলা হয়েছে কোন কথা বিশ্বাস করার পূর্বে পরীক্ষা করে নাও বক্তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। সে কি সত্যবাদী, ন্যায়বান, মোমেন বান্দা ? না কি সে মিথ্যাবাদী, মোনাফেক, অন্যায়কারী, পাপাচারী। যদি সে মোমেন না হয়ে পাপাচারী হয়, তবে তার কথা বিশ্বাস করার পূর্বে পরীক্ষা করে নাও। নতুবা পরবর্তীতে অনুতাপ করেও ভুলের সংশোধন করা সম্ভব হবে না। মিথ্যা অপবাদ, কলঙ্ক ও দুর্নাম সব কিছু থেকেই এই আয়াতে সাবধান থাকতে বলা হয়েছে।
আয়াতঃ 049.007
তোমরা জেনে রাখ তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রসূল রয়েছেন। তিনি যদি অনেক বিষয়ে তোমাদের আবদার মেনে নেন, তবে তোমরাই কষ্ট পাবে। কিন্তু আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ঈমানের মহব্বত সৃষ্টি করে দিয়েছেন এবং তা হৃদয়গ্রাহী করে দিয়েছেন। পক্ষান্তরে কুফর, পাপাচার ও নাফরমানীর প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে দিয়েছেন। তারাই সৎপথ অবলম্বনকারী।
And know that, among you there is the Messenger of Allâh (SAW). If he were to obey you (i.e. follow your opinions and desires) in much of the matter, you would surely be in trouble, but Allâh has endeared the Faith to you and has beautified it in your hearts, and has made disbelief, wickedness and disobedience (to Allâh and His Messenger SAW) hateful to you. These! They are the rightly guided ones,
وَاعْلَمُوا أَنَّ فِيكُمْ رَسُولَ اللَّهِ لَوْ يُطِيعُكُمْ فِي كَثِيرٍ مِّنَ الْأَمْرِ لَعَنِتُّمْ وَلَكِنَّ اللَّهَ حَبَّبَ إِلَيْكُمُ الْإِيمَانَ وَزَيَّنَهُ فِي قُلُوبِكُمْ وَكَرَّهَ إِلَيْكُمُ الْكُفْرَ وَالْفُسُوقَ وَالْعِصْيَانَ أُوْلَئِكَ هُمُ الرَّاشِدُونَ
WaiAAlamoo anna feekum rasoola Allahi law yuteeAAukum fee katheerin mina al-amri laAAanittum walakinna Allaha habbaba ilaykumu al-eemana wazayyanahu fee quloobikum wakarraha ilaykumu alkufra waalfusooqa waalAAisyana ola-ika humu alrrashidoona
YUSUFALI: And know that among you is Allah’s Messenger: were he, in many matters, to follow your (wishes), ye would certainly fall into misfortune: But Allah has endeared the Faith to you, and has made it beautiful in your hearts, and He has made hateful to you Unbelief, wickedness, and rebellion: such indeed are those who walk in righteousness;-
PICKTHAL: And know that the messenger of Allah is among you. If he were to obey you in much of the government, ye would surely be in trouble; but Allah hath endeared the faith to you and hath beautified it in your hearts, and hath made disbelief and lewdness and rebellion hateful unto you. Such are they who are the rightly guided.
SHAKIR: And know that among you is Allah’s Messenger; should he obey you in many a matter, you would surely fall into distress, but Allah has endeared the faith to you and has made it seemly in your hearts, and He has made hateful to you unbelief and transgression and disobedience; these it is that are the followers of a right way.
KHALIFA: And know that GOD’s messenger has come in your midst. Had he listened to you in many things, you would have made things difficult for yourselves. But GOD made you love faith and adorned it in your hearts, and He made you abhor disbelief, wickedness, and disobedience. These are the guided ones.
০৭। তোমরা মনে রেখো যে, তোমাদের মাঝে আল্লাহ্র রাসুল রয়েছে ৪৯২৫। এমন অনেক ব্যাপার আছে যে, সে যদি তোমাদের কথা মেনে নেয়, তবে অবশ্যই তোমরা বিপদে পড়বে। কিন্তু আল্লাহ্ ঈমানকে তোমাদের নিকট প্রিয় করেছেন এবং তোমাদের হৃদয়ের মাঝে তা মনোরম করেছেন ৪৯২৬। এবং তিনি অবিশ্বাস, কুকর্ম এবং অবাধ্যতাকে করেছেন তোমাদের নিকট ঘৃণিত। এরাই তারা যারা পূণ্য পথের পথিক ; –
০৮। আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও দয়াতে। বস্তুতঃ আল্লাহ্ জ্ঞান ও প্রজ্ঞাতে পরিপূর্ণ।
৪৯২৫। আল্লাহ্র রাসুল ( সা ) যদি সকল ব্যাপারেই তাঁর অনুসরীদের পরামর্শ ও প্রস্তাব গ্রহণ করতেন তবে তা তাঁদের জন্য কল্যাণকর হতো না। নেতা হিসেবে যে কোন কাজের সঠিক কর্মপন্থা গ্রহণের দায়িত্ব তাঁরই। তিনি সাধারণ মানুষ অপেক্ষা অনেক বেশী বিচক্ষণ, জ্ঞানী এবং প্রজ্ঞাসম্পন্ন। তিনি কখনও ব্যক্তিগত আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনও কাজ করতেন না। তাঁর প্রতিটি কাজই ছিলো জ্ঞান ও প্রজ্ঞার স্বাক্ষর। পৃথিবীর সর্বযুগে সর্বকালের নেতাদের তিনি হচ্ছেন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব।
৪৯২৬। “কিন্তু আল্লাহ্ ঈমানকে তোমাদের নিকট প্রিয় করেছেন এবং তোমাদের হৃদয়ের মাঝে তা মনোরম করেছেন।” রাসুলের সময়কালে যারা তাঁর চারিপার্শ্বে ছিলেন তাঁরা সত্যিই সৌভাগ্যবান। ধন্য তাঁরা রাসুলের সহচার্যে। রাসুলের (সা ) জীবনযাত্রা, তাঁর উদাহরণ তাদের বিশ্বাসের ভিত্তিকে করেছিলো দৃঢ় ও মজবুত। ঈমান তাদের নিকট ছিলো প্রাণাধিক প্রিয়। আত্মার মাঝে ঈমানের আলোর ঔজ্বল্যে তাঁরা ছিলেন মুগ্ধ, বিমোহিত ও গর্বিত। তাঁরা শৃঙ্খলা, আনুগত্য এবং ন্যায়পরাণতাকে ভালোবাসতেন। এ সব গুণাবলী ধীরে ধীরে তাঁদের চরিত্র থেকে তাঁদের দোষত্রুটি দূর করে দেয়। ফলে দিনে দিনে তাদের ঈমানের ভিত্তি দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর রূপ ধারণ করে। তাদের অন্তরের এই পরিবর্তন এ সব হচ্ছে আল্লাহ্র রহমতের স্বাক্ষর – তাঁর অপার করুণার দান ও অনুগ্রহ। আল্লাহ্র অনুগ্রহ ব্যতীত প্রকৃত ঈমানের বোধ, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার জন্ম অন্তরের মাঝে ঘটে না। প্রকৃত ঈমানদার ব্যক্তির নিকট কুফরী, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে ঘৃণ্য বলে বোধ হবে।
আয়াতঃ 049.008
এটা আল্লাহর কৃপা ও নিয়ামতঃ আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।
(This is) a Grace from Allâh and His Favour. And Allâh is All-Knowing, All-Wise.
فَضْلًا مِّنَ اللَّهِ وَنِعْمَةً وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
Fadlan mina Allahi waniAAmatan waAllahu AAaleemun hakeemun
YUSUFALI: A Grace and Favour from Allah; and Allah is full of Knowledge and Wisdom. PICKTHAL: (It is) a bounty and a grace from Allah; and Allah is Knower, Wise.
SHAKIR: By grace from Allah and as a favor; and Allah is Knowing, Wise.
KHALIFA: Such is grace from GOD and His blessings. GOD is Omniscient, Most Wise.
০৭। তোমরা মনে রেখো যে, তোমাদের মাঝে আল্লাহ্র রাসুল রয়েছে ৪৯২৫। এমন অনেক ব্যাপার আছে যে, সে যদি তোমাদের কথা মেনে নেয়, তবে অবশ্যই তোমরা বিপদে পড়বে। কিন্তু আল্লাহ্ ঈমানকে তোমাদের নিকট প্রিয় করেছেন এবং তোমাদের হৃদয়ের মাঝে তা মনোরম করেছেন ৪৯২৬। এবং তিনি অবিশ্বাস, কুকর্ম এবং অবাধ্যতাকে করেছেন তোমাদের নিকট ঘৃণিত। এরাই তারা যারা পূণ্য পথের পথিক ; –
০৮। আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও দয়াতে। বস্তুতঃ আল্লাহ্ জ্ঞান ও প্রজ্ঞাতে পরিপূর্ণ।
৪৯২৫। আল্লাহ্র রাসুল ( সা ) যদি সকল ব্যাপারেই তাঁর অনুসরীদের পরামর্শ ও প্রস্তাব গ্রহণ করতেন তবে তা তাঁদের জন্য কল্যাণকর হতো না। নেতা হিসেবে যে কোন কাজের সঠিক কর্মপন্থা গ্রহণের দায়িত্ব তাঁরই। তিনি সাধারণ মানুষ অপেক্ষা অনেক বেশী বিচক্ষণ, জ্ঞানী এবং প্রজ্ঞাসম্পন্ন। তিনি কখনও ব্যক্তিগত আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনও কাজ করতেন না। তাঁর প্রতিটি কাজই ছিলো জ্ঞান ও প্রজ্ঞার স্বাক্ষর। পৃথিবীর সর্বযুগে সর্বকালের নেতাদের তিনি হচ্ছেন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব।
৪৯২৬। “কিন্তু আল্লাহ্ ঈমানকে তোমাদের নিকট প্রিয় করেছেন এবং তোমাদের হৃদয়ের মাঝে তা মনোরম করেছেন।” রাসুলের সময়কালে যারা তাঁর চারিপার্শ্বে ছিলেন তাঁরা সত্যিই সৌভাগ্যবান। ধন্য তাঁরা রাসুলের সহচার্যে। রাসুলের (সা ) জীবনযাত্রা, তাঁর উদাহরণ তাদের বিশ্বাসের ভিত্তিকে করেছিলো দৃঢ় ও মজবুত। ঈমান তাদের নিকট ছিলো প্রাণাধিক প্রিয়। আত্মার মাঝে ঈমানের আলোর ঔজ্বল্যে তাঁরা ছিলেন মুগ্ধ, বিমোহিত ও গর্বিত। তাঁরা শৃঙ্খলা, আনুগত্য এবং ন্যায়পরাণতাকে ভালোবাসতেন। এ সব গুণাবলী ধীরে ধীরে তাঁদের চরিত্র থেকে তাঁদের দোষত্রুটি দূর করে দেয়। ফলে দিনে দিনে তাদের ঈমানের ভিত্তি দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর রূপ ধারণ করে। তাদের অন্তরের এই পরিবর্তন এ সব হচ্ছে আল্লাহ্র রহমতের স্বাক্ষর – তাঁর অপার করুণার দান ও অনুগ্রহ। আল্লাহ্র অনুগ্রহ ব্যতীত প্রকৃত ঈমানের বোধ, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার জন্ম অন্তরের মাঝে ঘটে না। প্রকৃত ঈমানদার ব্যক্তির নিকট কুফরী, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে ঘৃণ্য বলে বোধ হবে।
আয়াতঃ 049.009
যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে। অতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের উপর চড়াও হয়, তবে তোমরা আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে; যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। যদি ফিরে আসে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়ানুগ পন্থায় মীমাংসা করে দিবে এবং ইনছাফ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে পছন্দ করেন।
And if two parties or groups among the believers fall to fighting, then make peace between them both, but if one of them rebels against the other, then fight you (all) against the one that which rebels till it complies with the Command of Allâh; then if it complies, then make reconciliation between them justly, and be equitable. Verily! Allâh loves those who are equitable.
وَإِن طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا فَإِن بَغَتْ إِحْدَاهُمَا عَلَى الْأُخْرَى فَقَاتِلُوا الَّتِي تَبْغِي حَتَّى تَفِيءَ إِلَى أَمْرِ اللَّهِ فَإِن فَاءتْ فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا بِالْعَدْلِ وَأَقْسِطُوا إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ
Wa-in ta-ifatani mina almu/mineena iqtataloo faaslihoo baynahuma fa-in baghat ihdahuma AAala al-okhra faqatiloo allatee tabghee hatta tafee-a ila amri Allahi fa-in faat faaslihoo baynahuma bialAAadli waaqsitoo inna Allaha yuhibbu almuqsiteena
YUSUFALI: If two parties among the Believers fall into a quarrel, make ye peace between them: but if one of them transgresses beyond bounds against the other, then fight ye (all) against the one that transgresses until it complies with the command of Allah; but if it complies, then make peace between them with justice, and be fair: for Allah loves those who are fair (and just).
PICKTHAL: And if two parties of believers fall to fighting, then make peace between them. And if one party of them doeth wrong to the other, fight ye that which doeth wrong till it return unto the ordinance of Allah; then, if it return, make peace between them justly, and act equitably. Lo! Allah loveth the equitable.
SHAKIR: And if two parties of the believers quarrel, make peace between them; but if one of them acts wrongfully towards the other, fight that which acts wrongfully until it returns to Allah’s command; then if it returns, make peace between them with justice and act equitably; surely Allah loves those who act equitably.
KHALIFA: If two groups of believers fought with each other, you shall reconcile them. If one group aggresses against the other, you shall fight the aggressing group until they submit to GOD’s command. Once they submit, you shall reconcile the two groups equitably. You shall maintain justice; GOD loves those who are just.
০৯। মুমিনদের দুই দল বিবাদে লিপ্ত হলে; তোমরা তাদের মাঝে শান্তি স্থাপন কর ৪৯২৭। কিন্তু যদি তাদের একদল অপরদলের বিরুদ্ধে সীমা লংঘন করে, তবে যে অন্যায় করছে তার বিরুদ্ধে [ সকলে ] যুদ্ধ কর, যতক্ষণ না সে আল্লাহ্র হুকুমের দিকে ফিরে আসে। অতঃপর যদি সেই দল আল্লাহ্র [ নির্দ্দেশের ] দিকে ফিরে আসে, তবে উহাদের মাঝে ন্যায় বিচারের মাধ্যমে শান্তি স্থাপন করে দাও, এবং [ এ ব্যাপারে ] নিরপেক্ষ হবে। কারণ যারা নিরপেক্ষ [ ও ন্যায় বিচারক ] আল্লাহ্র তাদের ভালোবাসেন।
৪৯২৭। ব্যক্তিগত ঝগড়া -বিবাদ মেটানো সহজ। কিন্তু বিবাদ যখন ব্যপকতা লাভ করে দলে দলে লিপ্ত হয় বা বর্তমান বিশ্বে যেরূপ জাতিতে জাতিতে লিপ্ত হয়, সেরূপ ক্ষেত্রে বিবাদ মেটানো খুব সহজ কাজ নয়। এরূপ ক্ষেত্রে মুসলিমদের করণীয় কর্তব্য সম্বন্ধে এই আয়াতে নির্দ্দেশ দান করা হয়েছে। মুসলিমদের মাঝে যখন বিভিন্ন দল বা গোষ্ঠির মধ্যে এরূপ দ্বন্দ বিবাদের সুত্রপাত ঘটে – মনে রাখতে হবে ইসলামের ঝান্ডা হচ্ছে সর্বোচ্চ পরিচয়। কোনও অবস্থাতেই মুসলিম ভাতৃত্বের বিভাজন কাম্য নয়। মীমাংসা হতে হবে ন্যায়ের ভিত্তিতে – মনে রাখতে হবে যুদ্ধ অপেক্ষা শান্তি অধিক কাম্য। কিন্তু কোনও পক্ষের যদি ন্যায় বিচার পছন্দ না হয় এবং তারা যুদ্ধ করার জন্য বদ্ধপরিকর হয়, এরূপ ক্ষেত্রে মুসলিম ভাতৃত্বের সকল শক্তি সংঘবদ্ধভাবে, তাদের আক্রমণ করবে – শর্ত হবে যতক্ষণ না তারা আল্লাহ্র নির্দ্দেশের দিকে ফিরে আসে। সর্বক্ষেত্রেই শর্ত হবে ন্যায় ও কল্যাণ এবং সর্বোচ্চ নীতিবোধের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ। কারণ ইসলাম ধর্ম সর্বদা সকলের ন্যায্য এবং আইনগত অধিকারকে স্বীকার করে থাকে। আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে সকলের প্রতি ন্যায় ও সুবিচার। পার্থিব জগতের ন্যায় ও সুবিচার হচ্ছে আধ্যাত্মিক জগতের সমৃদ্ধির ভিত্তি। “কারণ যারা নিরপেক্ষ (ন্যায় বিচারক) আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন।” আয়াতের এই বাক্যটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আল্লাহ্র অনুগ্রহের পূর্বশর্ত হচ্ছে ন্যায় ও সুবিচার। যেখানেই অন্যায় হয় অবদমিত, এবং ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা লাভ ঘটে তাই-ই আল্লাহ্র অনুগ্রহ প্রাপ্ত হয়। এ সত্য পার্থিব ও আধ্যাত্মিক জগত উভয় জগতের জন্য সত্য। এর প্রচুর উদাহরণ ব্যক্তিগত ও জাতীয় জীবনে লক্ষ্য করা যায়। এই ন্যায় নীতির অভাবে অতীতে “লীগ অব নেশন ” ভেঙ্গে যায়। বর্তমানেও জাতিসংঘ সঠিকভাবে কার্যকর হতে পারছে না – তার কারণ ন্যায়নীতির অভাব। ন্যায়নীতি ও সুবিচার হচ্ছে ধর্মীয় আর্দশের মূল ভিত্তি।
আয়াতঃ 049.010
মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই। অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে-যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও।
The believers are nothing else than brothers (in Islâmic religion). So make reconciliation between your brothers, and fear Allâh, that you may receive mercy.
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
Innama almu/minoona ikhwatun faaslihoo bayna akhawaykum waittaqoo Allaha laAAallakum turhamoona
YUSUFALI: The Believers are but a single Brotherhood: So make peace and reconciliation between your two (contending) brothers; and fear Allah, that ye may receive Mercy.
PICKTHAL: The believers are naught else than brothers. Therefore make peace between your brethren and observe your duty to Allah that haply ye may obtain mercy.
SHAKIR: The believers are but brethren, therefore make peace between your brethren and be careful of (your duty to) Allah that mercy may be had on you.
KHALIFA: The believers are members of one family; you shall keep the peace within your family and reverence GOD, that you may attain mercy.
১০। বিশ্বাসীগণ তো পরস্পর ভাই ভাই ৪৯২৮। সুতারাং তোমার দুই [ বিবাদমান ] ভাইএর মাঝে শান্তি স্থাপন দ্বারা পুনর্মিলন করে দাও। আর আল্লাহকে ভয় কর, যেনো তোমরা তাঁর অনুগ্রহ প্রাপ্ত হতে পার।
৪৯২৮। ইসলাম ধর্মে মুসলিম ভাতৃত্বের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। বিদায় হজ্বে রাসুলুল্লাহ্র (সা) ভাষণের প্রধান বক্তব্যই ছিলো মুসলিম ভাতৃত্বের সংহতি। মুসলিম ভাতৃত্বের প্রতি আত্ম নিবেদন ব্যতীত ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য অনুধাবন করা সম্ভব নয়।
আয়াতঃ 049.011
মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম।
O you who believe! Let not a group scoff at another group, it may be that the latter are better than the former; nor let (some) women scoff at other women, it may be that the latter are better than the former, nor defame one another, nor insult one another by nicknames. How bad is it, to insult one’s brother after having Faith [i.e. to call your Muslim brother (a faithful believer) as: ”O sinner”, or ”O wicked”, etc.]. And whosoever does not repent, then such are indeed Zâlimûn (wrong-doers, etc.).
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَومٌ مِّن قَوْمٍ عَسَى أَن يَكُونُوا خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَاء مِّن نِّسَاء عَسَى أَن يَكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّ وَلَا تَلْمِزُوا أَنفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ بِئْسَ الاِسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ وَمَن لَّمْ يَتُبْ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ
Ya ayyuha allatheena amanoo la yaskhar qawmun min qawmin AAasa an yakoonoo khayran minhum wala nisaon min nisa-in AAasa an yakunna khayran minhunna wala talmizoo anfusakum wala tanabazoo bial-alqabi bi/sa al-ismu alfusooqu baAAda al-eemani waman lam yatub faola-ika humu alththalimoona
YUSUFALI: O ye who believe! Let not some men among you laugh at others: It may be that the (latter) are better than the (former): Nor let some women laugh at others: It may be that the (latter are better than the (former): Nor defame nor be sarcastic to each other, nor call each other by (offensive) nicknames: Ill-seeming is a name connoting wickedness, (to be used of one) after he has believed: And those who do not desist are (indeed) doing wrong.
PICKTHAL: O ye who believe! Let not a folk deride a folk who may be better than they (are), not let women (deride) women who may be better than they are; neither defame one another, nor insult one another by nicknames. Bad is the name of lewdness after faith. And whoso turneth not in repentance, such are evil-doers.
SHAKIR: O you who believe! let not (one) people laugh at (another) people perchance they may be better than they, nor let women (laugh) at (other) women, perchance they may be better than they; and do not find fault with your own people nor call one another by nicknames; evil is a bad name after faith, and whoever does not turn, these it is that are the unjust.
KHALIFA: O you who believe, no people shall ridicule other people, for they may be better than they. Nor shall any women ridicule other women, for they may be better than they. Nor shall you mock one another, or make fun of your names. Evil indeed is the reversion to wickedness after attaining faith. Anyone who does not repent after this, these are the transgressors.
রুকু – ২
১১। হে বিশ্বাসীগণ ! তোমাদের মধ্যে কিছু লোক যেনো অন্যদের উপহাস না করে ৪৯২৯। কারণ, হতে পারে, যে [শেষোক্ত দল ] তাদের থেকে উত্তম। আর কিছু সংখ্যক স্ত্রীলোক যেনো অন্যদের উপহাস না করে। কারণ, হতে পারে যে [ শেষোক্ত দল ] তাদের থেকে উত্তম। তোমরা পরস্পরের প্রতি নিন্দা বাক্য বলো না ব্যঙ্গোক্তি করো না ; পরস্পরকে [ অপমানজনক ] ডাক নামে ডেকো না ৪৯৩০। কেননা ঈমান আনার পরে যারা [ কোন ব্যক্তিকে ] মন্দ তাৎপর্যসহ খারাপ নামে ডাকে এবং যারা তা থেকে বিরত না হয়, তারা [ সত্যিই ] পাপ কাজ করে।
৪৯২৯। এই আয়াতগুলির মাধ্যমে নৈতিক চরিত্রের বিশেষ দিকগুলি শিক্ষাদান করা হয়েছে। পুরুষ ও নারী উভয়কে বলা হয়েছে অপরকে উপহাস না করতে। উপহাসের প্রধান উপজীব্য হচ্ছে স্বার্থপরতা ও উদ্ধত একগুঁয়েমী এবং অন্যকে হেয় করার প্রবণতা। অন্যের সাথে হাসি ঠাট্টাতে অংশগ্রহণ করা ভালো, তবে তা হতে হবে নির্মল আনন্দ উপভোগের উপকরণ। অন্যকে হেয় করে বা অন্যকে বিদ্রূপ করে, অপমানিত করে যে আনন্দ লাভ তা নিন্দনীয়। হয়তো প্রকৃতপক্ষে তারা উপহাসকারী অপেক্ষা প্রশংসনীয় ব্যক্তি।
৪৯৩০। সাধারণ মানুষ সমাজ জীবনে যে সব দোষত্রুটিতে অভ্যস্ত যা তাদের দৃষ্টিগোচর হয় না এবং খুব স্বাভাবিক বলে অনুমিত হয়, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যা অত্যন্ত গর্হিত। এই আয়াতের মাধ্যমে সেগুলিকে তুলে ধরা হয়েছে। অপরের প্রতি খারাপ বলা, বা লেখা অথবা অন্যের সম্বন্ধে এমন ইঙ্গিত করা যাতে বোঝা যায় সেই ব্যক্তি দোষী এরূপ অভিব্যক্তি ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ অন্যের দোষ বিচার করার ক্ষমতা আমাদের নাই ; সে ভার আমাদের দেয়া হয় নাই। তৃতীয় বিষয় হচ্ছে অপরকে মন্দ নামে ডাকা যার দরুণ সে অসন্তুষ্ট হয়। হয়তো নামটি তার জন্য প্রযোজ্য হতে পারে, কিন্তু সে নামে ডাকলে সে মনে কষ্ট পায় সেরূপ ক্ষেত্রেও সেই মন্দ নামে তাঁকে ডাকা উচিত নয়। যেমন প্রকৃত অন্ধকে ‘কানা ‘ নামে ডাকা বা ‘খঞ্জকে’ ‘খোড়া’ নামে ডাকা ইত্যাদি উচিত নয়। তা শুধু অন্ধ বা খঞ্জের জন্য মনোবেদনার কারণই ঘটে। প্রকৃত ঈমানদার ব্যক্তিরা কখনও অন্যের মনোবেদনার কারণ হন না। সুতারাং এই সুক্ষ শিষ্টাচার ইসলাম ধর্মের অংগ বিশেষ।
আয়াতঃ 049.012
মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।
O you who believe! Avoid much suspicions, indeed some suspicions are sins. And spy not, neither backbite one another. Would one of you like to eat the flesh of his dead brother? You would hate it (so hate backbiting) . And fear Allâh. Verily, Allâh is the One Who accepts repentance, Most Merciful.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ
Ya ayyuha allatheena amanoo ijtaniboo katheeran mina alththanni inna baAAda alththanni ithmun wala tajassasoo wala yaghtab baAAdukum baAAdan ayuhibbu ahadukum an ya/kula lahma akheehi maytan fakarihtumoohu waittaqoo Allaha inna Allaha tawwabun raheemun
YUSUFALI: O ye who believe! Avoid suspicion as much (as possible): for suspicion in some cases is a sin: And spy not on each other behind their backs. Would any of you like to eat the flesh of his dead brother? Nay, ye would abhor it…But fear Allah: For Allah is Oft-Returning, Most Merciful.
PICKTHAL: O ye who believe! Shun much suspicion; for lo! some suspicion is a crime. And spy not, neither backbite one another. Would one of you love to eat the flesh of his dead brother? Ye abhor that (so abhor the other)! And keep your duty (to Allah). Lo! Allah is Relenting, Merciful.
SHAKIR: O you who believe! avoid most of suspicion, for surely suspicion in some cases is a sin, and do not spy nor let some of you backbite others. Does one of you like to eat the flesh of his dead brother? But you abhor it; and be careful of (your duty to) Allah, surely Allah is Oft-returning (to mercy), Merciful.
KHALIFA: O you who believe, you shall avoid any suspicion, for even a little bit of suspicion is sinful. You shall not spy on one another, nor shall you backbite one another; this is as abominable as eating the flesh of your dead brother. You certainly abhor this. You shall observe GOD. GOD is Redeemer, Most Merciful.
১২। হে বিশ্বাসীগণ ! [ যতদূর সম্ভব ] সন্দেহ সংশয় থেকে দূরে থাক ৪৯৩১। কারণ কোন কোন ক্ষেত্রে সন্দেহ পাপের কারণ হয়। এবং একে অপরের উপরে গোয়েন্দাগিরি করো না, একে অপরের অসাক্ষাতে নিন্দা করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেহ তার মৃত ভাইএর গোশ্ত খেতে চাইবে ৪৯৩২? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণ্যই মনে কর। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বারে বারে তাওবা কবুলকারী, পরম করুণাময়।
৪৯৩১। এই আয়াতেও পারস্পরিক হক্ ও সামাজিক রীতিনীতি ও শিষ্টাচার শিক্ষাদান করা হয়েছে। এই আয়াতে তিনটি বিষয়কে হারাম করা হয়েছে। ১) সন্দেহ, অনুমান বা ধারণা করা; ২) কারও গোপন দোষ সন্ধান করা ও ৩) গীবত বা কোন অনুপস্থিত ব্যক্তি সম্বন্ধে এমন কথা বলা যা শুনলে সে অসহনীয় মনে করতো।
সন্দেহ, অনুমান বা ধারণাকে এস্থলে অপবাদ বোঝানো হয়েছে। কোন ব্যক্তির প্রতি শক্তিশালী প্রমাণ ব্যতিরেকে কোনও দোষ অথবা গোনাহ্ আরোপ করা হারাম। ভিত্তিহীন অনুমান পাপ ও অনেক ক্ষেত্রে তা দন্ডনীয় অপরাধ। কারণ অনেক সময়ে তা নিরাপরাধ পুরুষ ও বিশেষতঃ নারীর জন্য অবর্ণনীয় দুঃখ দুর্দ্দশার কারণ ঘটে যা অন্যায়।
দ্বিতীয়তঃ গোপনীয় বিষয় সন্ধান করা বা কারও বিরুদ্ধে স্পাই করা বা অপরের সম্বন্ধে অহেতুক কৌতুহল ও ঔৎসুক্য প্রকাশ করা নিন্দনীয় অপরাধ। কারণ এরূপ কৌতুহলের ভিত্তিই হচ্ছে অলস মস্তিষ্কের কাজ যা সমাজ বা সংসারের কোনও উপকারেই লাগে না। উপরন্তু এ সব কৌতুহল অনেক সময়েই ব্যক্তিকে পাপের পথে আকর্ষণ করে থাকে। অর্থাৎ অনুমান মিথ্যা কথারই নামান্তর।
তৃতীয়তঃ ‘গীবত’ বা পরনিন্দা মহাপাপ। কারও অনুপস্থিতিতে তার সম্পর্কে কষ্টকর কথাবার্তা বলা, যদিও তা সত্য কথা হয় তা হচ্ছে গীবত। এই আয়াতে তিনটি বিষয় নিষিদ্ধ করতে গিয়ে গীবতের নিষিদ্ধতাকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এবং একে মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণের সমতুল্য বলে প্রকাশ করে এর নিষিদ্ধতা ও নীচুতা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। গীবতের মধ্যে কোন প্রতিরোধকারী থাকে না। প্রতিরোধ না থাকার কারণে এর ধারা সাধারণতঃ দীর্ঘ হয়ে থাকে এবং এতে মানুষ লিপ্তও হয় বেশী এ সব কারণে গীবতের নিষিদ্ধতার উপরে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
মন্তব্য : বাংলাদেশীদের জাতীয় অধঃপতনের অন্যতম মূল কারণ হচ্ছে গীবত।
৪৯৩২। ভাইয়ের মাংস ভক্ষণের মত ঘৃণ্য ও জঘন্য কাজ চিন্তাও করা যায় না। তারপরে যদি হয় সেই ভাই মৃত ও গলিত শব; সেই মাংস ভক্ষণ কি নিদারুণ ঘৃণ্য ও জঘন্য বিষয়বস্তু। এই উপমার সাহায্যে তুলে ধরা হয়েছে গীবতের জঘন্য চিত্রকে। যেখানে একজনের উপস্থিতিতে তার অনুভূতিতে আঘাত করতে নিষেধ করা হয়েছে, সেখানে কারও অনুপস্থিতিতে তার সম্বন্ধে সত্য বা মিথ্যা যাই-ই বলা হোক না কেন যা তার অনুভূতি বা সম্মানের জন্য ক্ষতিকর তা কতটা জঘন্য তা সহজেই অনুমেয়।
আয়াতঃ 049.013
হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন।
O mankind! We have created you from a male and a female, and made you into nations and tribes, that you may know one another. Verily, the most honourable of you with Allâh is that (believer) who has At-Taqwa [i.e. one of the Muttaqûn (pious – see V.2:2). Verily, Allâh is All-Knowing, All-Aware.
يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ
Ya ayyuha alnnasu inna khalaqnakum min thakarin waontha wajaAAalnakum shuAAooban waqaba-ila litaAAarafoo inna akramakum AAinda Allahi atqakum inna Allaha AAaleemun khabeerun
YUSUFALI: O mankind! We created you from a single (pair) of a male and a female, and made you into nations and tribes, that ye may know each other (not that ye may despise (each other). Verily the most honoured of you in the sight of Allah is (he who is) the most righteous of you. And Allah has full knowledge and is well acquainted (with all things).
PICKTHAL: O mankind! Lo! We have created you male and female, and have made you nations and tribes that ye may know one another. Lo! the noblest of you, in the sight of Allah, is the best in conduct. Lo! Allah is Knower, Aware.
SHAKIR: O you men! surely We have created you of a male and a female, and made you tribes and families that you may know each other; surely the most honorable of you with Allah is the one among you most careful (of his duty); surely Allah is Knowing, Aware.
KHALIFA: O people, we created you from the same male and female, and rendered you distinct peoples and tribes, that you may recognize one another. The best among you in the sight of GOD is the most righteous. GOD is Omniscient, Cognizant.
১৩। হে মানব সম্প্রদায় ! আমি তোমাদের [একজোড়া ] পুরুষ ও নারী থেকে সৃষ্টি করেছি ৪৯৩৩ ; এবং তোমাদের বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যেনো তোমরা একে অপরকে [ ঘৃণা না করে ] পরিচিত হতে পার। আল্লাহ্র দৃষ্টিতে সেই ব্যক্তি সর্বোচ্চ সম্মানিত যে সবচেয়ে বেশী পূণ্যাত্মা। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সব কিছু জানেন, সমস্ত খবর রাখেন।
৪৯৩৩। এই আয়াতটির মাধ্যমে আল্লাহ্ সকল মানুষ বা বিশ্ব মানব সম্প্রদায়কে সম্বোধন করেছেন। আয়াতটি শুধুমাত্র মুসলিম ভাতৃত্বের জন্য প্রযোজ্য নহে। প্রকৃতপক্ষে কোরাণ শরীফে মুসলমানদের জন্য আল্লাহ্ যে জীবন বিধান দান করেছেন তা বিশ্বমানবের জন্যও সমভাবে প্রযোজ্য। এখানে বলা হয়েছে মানুষ জাতির সৃষ্টি শুধুমাত্র একজোড়া নর ও নারী থেকে। সমস্ত মনুষ্য কূলের একজন নর ও একজন নারীই পূর্বপুরুষ। আজ দেশে দেশে যত গোত্র, সম্প্রদায় ও জাতি রয়েছে তাদের যত পার্থক্য ও বৈশিষ্ট্য বর্তমান থাকুক না কেন আসলে তারা সকলেই একই পিতা-মাতার সন্তান। আল্লাহ্র সম্মুখে সকল মানুষ সমান এই সত্যকে এভাবে তুলে ধরা হয়েছে। কালো, সাদা, ধনী, দরিদ্র, রাজা-প্রজা,এসবের কোনও মূল্যই আল্লাহ্র নিকট নাই। সেই আল্লাহ্র নিকট অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে অধিক মুত্তাকী। মানুষের প্রকৃত পরিচয়কে এই আয়াতের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। যে ব্যক্তি চরিত্রগত গুণে গুণান্বিত একমাত্র সেই আসল মর্যদার অধিকারী। এই হচ্ছে আল্লাহ্র বিধান।
আয়াতঃ 049.014
মরুবাসীরা বলেঃ আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। বলুনঃ তোমরা বিশ্বাস স্থাপন করনি; বরং বল, আমরা বশ্যতা স্বীকার করেছি। এখনও তোমাদের অন্তরে বিশ্বাস জন্মেনি। যদি তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য কর, তবে তোমাদের কর্ম বিন্দুমাত্রও নিস্ফল করা হবে না। নিশ্চয়, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান।
The bedouins say: ”We believe.” Say: ”You believe not but you only say, ’We have surrendered (in Islâm),’ for Faith has not yet entered your hearts. But if you obey Allâh and His Messenger (SAW), He will not decrease anything in reward for your deeds. Verily, Allâh is Oft-Forgiving, Most Merciful.”
قَالَتِ الْأَعْرَابُ آمَنَّا قُل لَّمْ تُؤْمِنُوا وَلَكِن قُولُوا أَسْلَمْنَا وَلَمَّا يَدْخُلِ الْإِيمَانُ فِي قُلُوبِكُمْ وَإِن تُطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَا يَلِتْكُم مِّنْ أَعْمَالِكُمْ شَيْئًا إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
Qalati al-aAArabu amanna qul lam tu/minoo walakin qooloo aslamna walamma yadkhuli al-eemanu fee quloobikum wa-in tuteeAAoo Allaha warasoolahu la yalitkum min aAAmalikum shay-an inna Allaha ghafoorun raheemun
YUSUFALI: The desert Arabs say, “We believe.” Say, “Ye have no faith; but ye (only)say, ‘We have submitted our wills to Allah,’ For not yet has Faith entered your hearts. But if ye obey Allah and His Messenger, He will not belittle aught of your deeds: for Allah is Oft-Forgiving, Most Merciful.”
PICKTHAL: The wandering Arabs say: We believe. Say (unto them, O Muhammad): Ye believe not, but rather say “We submit,” for the faith hath not yet entered into your hearts. Yet, if ye obey Allah and His messenger, He will not withhold from you aught of (the reward of) your deeds. Lo! Allah is Forgiving, Merciful.
SHAKIR: The dwellers of the desert say: We believe. Say: You do not believe but say, We submit; and faith has not yet entered into your hearts; and if you obey Allah and His Messenger, He will not diminish aught of your deeds; surely Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: The Arabs said, “We are Mu’mens (believers).” Say, “You have not believed; what you should say is, `We are Muslims (submitters),’ until belief is established in your hearts.” If you obey GOD and His messenger, He will not put any of your works to waste. GOD is Forgiver, Most Merciful.
১৪। মরুবাসী আরবেরা বলে ৪৯৩৪, ” আমরা বিশ্বাস করলাম।” বল, ” তোমরা ঈমান আন নাই ; বরং তোমরা [ শুধুমাত্র মুখে ] বল, ‘আমরা আল্লাহ্র কাছে আত্মসমর্পন করেছি ৪৯৩৫।’ কারণ বিশ্বাস এখনও তোমাদের অন্তরে প্রবেশ করে নাই। কিন্তু তোমরা যদি আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলকে মান্য কর,তবে তোমাদের কর্মফল সামান্য পরিমাণও লাঘব করা হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়। ”
১৫। শুধুমাত্র তারাই [ প্রকৃত ] মোমেন যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তারপরে কোন সন্দেহ করে না। অপরপক্ষে তারা তাদের জীবন ও সম্পদ দ্বারা আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম করে। এসব লোকেরাই হচ্ছে সত্যনিষ্ঠ।
৪৯৩৪। মরুবাসী আরবেরা ইসলামের বিজয় দর্শনে প্রভাবিত হয়ে আনুগত্য স্বীকার করে। কিন্তু তাদের হৃদয় ও মন ছিলো ভীত, ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুর চিন্তায় তাদের মন হতো আবর্তিত, বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের মাঝে তাদের আত্মা হতো সর্বদা দোদুল্যমান। কিন্তু প্রকৃত ঈমান হচ্ছে আল্লাহ্র বিধানের কাছে নিঃশর্ত আত্মনিবেদন। মরুবাসী আরব যারা ঈমান অর্জনে পিছিয়ে পড়েছিলো তাদের কথা সাধারণ ভাবে বলা হয়েছে [ ৪৮ : ১১ – ১৫ ] আয়াতে। যাদের পটভূমিতে এই আয়াতটি নাজেল হয় তারা ছিলো ‘বানু আসাদ’ গোত্র। এরা ইসলাম কবুল করে, দুর্ভিক্ষের সময় সাহায্য লাভের আশায়। ইসলামের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তারা ইসলাম কবুল করে নাই।
৪৯৩৫। অর্থাৎ মরুবাসী আরবরা শুধুমাত্র মৌখিকভাবে বলে যে তারা আত্মসমর্পন করেছে। এটা একটা বাহ্যিক কথা মাত্র। এর কোন আন্তরিক ভিত্তি নাই। যদি তাদের প্রকৃত ঈমান থেকে থাকে তবে এ কথার সত্যতা প্রমাণ করতে হবে।
আয়াতঃ 049.015
তারাই মুমিন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনার পর সন্দেহ পোষণ করে না এবং আল্লাহর পথে প্রাণ ও ধন-সম্পদ দ্বারা জেহাদ করে। তারাই সত্যনিষ্ঠ।
Only those are the believers who have believed in Allâh and His Messenger, and afterward doubt not but strive with their wealth and their lives for the Cause of Allâh. Those! They are the truthful.
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أُوْلَئِكَ هُمُ الصَّادِقُونَ
Innama almu/minoona allatheena amanoo biAllahi warasoolihi thumma lam yartaboo wajahadoo bi-amwalihim waanfusihim fee sabeeli Allahi ola-ika humu alssadiqoona
YUSUFALI: Only those are Believers who have believed in Allah and His Messenger, and have never since doubted, but have striven with their belongings and their persons in the Cause of Allah: Such are the sincere ones.
PICKTHAL: The (true) believers are those only who believe in Allah and His messenger and afterward doubt not, but strive with their wealth and their lives for the cause of Allah. Such are the sincere.
SHAKIR: The believers are only those who believe in Allah and His Messenger then they doubt not and struggle hard with their wealth and their lives in the way of Allah; they are the truthful ones.
KHALIFA: Mu’mens (believers) are those who believe in GOD and His messenger, then attain the status of having no doubt whatsoever, and strive with their money and their lives in the cause of GOD. These are the truthful ones.
১৪। মরুবাসী আরবেরা বলে ৪৯৩৪, ” আমরা বিশ্বাস করলাম।” বল, ” তোমরা ঈমান আন নাই ; বরং তোমরা [ শুধুমাত্র মুখে ] বল, ‘আমরা আল্লাহ্র কাছে আত্মসমর্পন করেছি ৪৯৩৫।’ কারণ বিশ্বাস এখনও তোমাদের অন্তরে প্রবেশ করে নাই। কিন্তু তোমরা যদি আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলকে মান্য কর,তবে তোমাদের কর্মফল সামান্য পরিমাণও লাঘব করা হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়। ”
১৫। শুধুমাত্র তারাই [ প্রকৃত ] মোমেন যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তারপরে কোন সন্দেহ করে না। অপরপক্ষে তারা তাদের জীবন ও সম্পদ দ্বারা আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম করে। এসব লোকেরাই হচ্ছে সত্যনিষ্ঠ।
৪৯৩৪। মরুবাসী আরবেরা ইসলামের বিজয় দর্শনে প্রভাবিত হয়ে আনুগত্য স্বীকার করে। কিন্তু তাদের হৃদয় ও মন ছিলো ভীত, ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুর চিন্তায় তাদের মন হতো আবর্তিত, বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের মাঝে তাদের আত্মা হতো সর্বদা দোদুল্যমান। কিন্তু প্রকৃত ঈমান হচ্ছে আল্লাহ্র বিধানের কাছে নিঃশর্ত আত্মনিবেদন। মরুবাসী আরব যারা ঈমান অর্জনে পিছিয়ে পড়েছিলো তাদের কথা সাধারণ ভাবে বলা হয়েছে [ ৪৮ : ১১ – ১৫ ] আয়াতে। যাদের পটভূমিতে এই আয়াতটি নাজেল হয় তারা ছিলো ‘বানু আসাদ’ গোত্র। এরা ইসলাম কবুল করে, দুর্ভিক্ষের সময় সাহায্য লাভের আশায়। ইসলামের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তারা ইসলাম কবুল করে নাই।
৪৯৩৫। অর্থাৎ মরুবাসী আরবরা শুধুমাত্র মৌখিকভাবে বলে যে তারা আত্মসমর্পন করেছে। এটা একটা বাহ্যিক কথা মাত্র। এর কোন আন্তরিক ভিত্তি নাই। যদি তাদের প্রকৃত ঈমান থেকে থাকে তবে এ কথার সত্যতা প্রমাণ করতে হবে।
আয়াতঃ 049.016
বলুনঃ তোমরা কি তোমাদের ধর্ম পরায়ণতা সম্পর্কে আল্লাহকে অবহিত করছ? অথচ আল্লাহ জানেন যা কিছু আছে ভূমন্ডলে এবং যা কিছু আছে নভোমন্ডলে। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।
Say: ”Will you inform Allâh about your religion? While Allâh knows all that is in the heavens and all that is in the earth, and Allâh is All-Aware of everything.
قُلْ أَتُعَلِّمُونَ اللَّهَ بِدِينِكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
Qul atuAAallimoona Allaha bideenikum waAllahu yaAAlamu ma fee alssamawati wama fee al-ardi waAllahu bikulli shay-in AAaleemun
YUSUFALI: Say: “What! Will ye instruct Allah about your religion? But Allah knows all that is in the heavens and on earth: He has full knowledge of all things.
PICKTHAL: Say (unto them, O Muhammad): Would ye teach Allah your religion, when Allah knoweth all that is in the heavens and all that is in the earth, and Allah is Aware of all things?
SHAKIR: Say: Do you apprise Allah of your religion, and Allah knows what is in the heavens and what is in the earth; and Allah is Cognizant of all things.
KHALIFA: Say, “Are you informing GOD about your religion? GOD knows everything in the heavens and the earth. GOD is Omniscient.”
১৬। বল, ” কি ! তোমরা কি তোমাদের দ্বীন সম্বন্ধে আল্লাহ্কে শিক্ষা দিতেছ ৪৯৩৬ ? অথচ আল্লাহ্ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব সম্বন্ধে অবহিত। সকল বিষয় সম্বন্ধে আল্লাহ্র পরিপূর্ণ জ্ঞান রয়েছে। ”
৪৯৩৬। এই আয়াতটির আবেদন বিশ্বজনীন, যুগ কাল অতিক্রান্ত। মরুবাসী আরবেরা মৌখিকভাবে ঈমান এনে সম্ভবতঃ নিজেদের প্রকৃত মুসলিম বলে মনে করতো। তাদের বলা হয়েছে যে, মৌখিক ঈমানের কোনও মূল্য আল্লাহ্র কাছে নাই। বাস্তব জীবনে কর্মের মাধ্যমে ঈমানের পরীক্ষা দিতে হয়। কার অন্তরের ঈমান খাঁটি আর কার ঈমান শুধুমাত্র মৌখিক, আল্লাহ্ তা সম্যক অবগত। কারণ আল্লাহ্ মানুষের অন্তরের অন্তঃস্থলের সকল উদ্দেশ্য গোপন চিন্তা, ভাবনা, সব কিছু খোলা বইএর ন্যায় পাঠ করতে পারেন। আল্লাহকে প্রতারিত করার ক্ষমতা পৃথিবীতে কারও নাই। বাহ্যিকভাবে ধার্মিকতার লেবেলে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করা গেলেও আল্লাহকে প্রতারিত করা সম্ভব নয়। এত যুগ আগে মরুবাসী আরবদের জন্য যে সর্তকবাণী আল্লাহ্ প্রেরণ করেছিলেন, আজও মুসলিম নামধারী, ধার্মিকতার লেবেল আঁটা বহু মুসলমানের জন্য তা সমভাবে প্রযোজ্য।
আয়াতঃ 049.017
তারা মুসলমান হয়ে আপনাকে ধন্য করেছে মনে করে। বলুন, তোমরা মুসলমান হয়ে আমাকে ধন্য করেছ মনে করো না। বরং আল্লাহ ঈমানের পথে পরিচালিত করে তোমাদেরকে ধন্য করেছেন, যদি তোমরা সত্যনিষ্ঠ হয়ে থাক।
They regard as favour upon you (O Muhammad SAW) that they have embraced Islâm. Say: ”Count not your Islâm as a favour upon me. Nay, but Allâh has conferred a favour upon you, that He has guided you to the Faith, if you indeed are true.
يَمُنُّونَ عَلَيْكَ أَنْ أَسْلَمُوا قُل لَّا تَمُنُّوا عَلَيَّ إِسْلَامَكُم بَلِ اللَّهُ يَمُنُّ عَلَيْكُمْ أَنْ هَدَاكُمْ لِلْإِيمَانِ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
Yamunnoona AAalayka an aslamoo qul la tamunnoo AAalayya islamakum bali Allahu yamunnu AAalaykum an hadakum lil-eemani in kuntum sadiqeena
YUSUFALI: They impress on thee as a favour that they have embraced Islam. Say, “Count not your Islam as a favour upon me: Nay, Allah has conferred a favour upon you that He has guided you to the faith, if ye be true and sincere.
PICKTHAL: They make it a favour unto thee (Muhammad) that they have surrendered (unto Him). Say: Deem not your Surrender a favour unto me; but Allah doth confer a favour on you, inasmuch as He hath led you to the Faith, if ye are earnest.
SHAKIR: They think that they lay you under an obligation by becoming Muslims. Say: Lay me not under obligation by your Islam: rather Allah lays you under an obligation by guiding you to the faith if you are truthful.
KHALIFA: They act as if they are doing you a favor by embracing Submission! Say, “You are not doing me any favors by embracing Submission. GOD is the One who is doing you a great favor by guiding you to the faith, if you are sincere.”
১৭। তারা দাবী করে যে, তারা ইসলাম গ্রহণ করে তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছে ৪৯৩৭। তুমি বল, “তোমাদের ইসলাম কবুল দ্বারা আমার প্রতি কোন প্রকার অনুগ্রহ করেছ এমন দাবী করো না। যদি তোমাদের কথা সত্য হয়, তবে আল্লাহ্-ই বরং তোমাদের ঈমানের দিকে হেদায়েত করে অনুগ্রহ করেছেন।
৪৯৩৭। যে আল্লাহ্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করে সে ধন্য। এ কথা কেউ যেনো মনে না করে যে ইসলাম গ্রহণ দ্বারা সে কোনও প্রচারক বা সম্প্রদায়ের জন্য গৌরব বহন করে এনেছে। বরং ইসলাম গ্রহণের মাধ্যমে সে আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভের যোগ্যতা অর্জন করেছে। যে আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভ করে সেই তো ধন্য। আল্লাহ্র হেদায়েতের আলো যখন আত্মাকে আলোকিত করে, সে সুখ শান্তি ও অনুভূতি পার্থিব সকল অনুভূতির উর্দ্ধে – তা অমূল্য সম্পদ।
আয়াতঃ 049.018
আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের অদৃশ্য বিষয় জানেন, তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখেন।
Verily, Allâh knows the unseen of the heavens and the earth. And Allâh is the All-Seer of what you do.
إِنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ غَيْبَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاللَّهُ بَصِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ
Inna Allaha yaAAlamu ghayba alssamawati waal-ardi waAllahu baseerun bima taAAmaloona
YUSUFALI: “Verily Allah knows the secrets of the heavens and the earth: and Allah Sees well all that ye do.”
PICKTHAL: Lo! Allah knoweth the Unseen of the heavens and the earth. And Allah is Seer of what ye do.
SHAKIR: Surely Allah knows the unseen things of the heavens and the earth; and Allah sees what you do.
KHALIFA: GOD knows all the secrets in the heavens and the earth; GOD is Seer of everything you do.
১৮। ” নিশ্চয় আল্লাহ্ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সমস্ত গুপ্ত বিষয় জানেন। এবং তোমরা যা কর আল্লাহ্ তা অবশ্য দেখেন।” ৪৯৩৮
৪৯৩৮। এর অর্থ এই নয় যে, আমরা নবাগত মুসলিম বা অন্যদের ধার্মিকতা সম্বন্ধে সন্দেহ পোষণ করে তাদের ধার্মিকতার উদ্দেশ্য অনুসন্ধান করবো। এ ধরণের কাজ হবে পরছিদ্রান্বেষীদের সমতুল্য যা ইসলামে নিষিদ্ধ [ দেখুন আয়াত ৪৯ : ১২ ]। আমরা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের ঈমানের ব্যাপারে হব সত্যবাদী, বিশ্বস্ত, আন্তরিক, নিজেকে আল্লাহ্র নিকট গ্রহণযোগ্য করার জন্য হব নিবেদিত প্রাণ। অন্য সকলের ব্যাপারে আমাদের করণীয় কিছু নাই – আল্লাহ্ সকল বিষয়ে সম্যক অবগত। ” তোমরা যা কর আল্লাহ্ তা অবশ্য দেখেন।”