- সূরার নাম: সূরা ফাতহ
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা ফাতহ
আয়াতঃ 048.001
اِنَّا فَتَحۡنَا لَکَ فَتۡحًا مُّبِیۡنًا
নিশ্চয় আমি তোমাকে সুস্পষ্ট বিজয় দিয়েছি; (আল-বায়ান)
আমি তোমাকে দিয়েছি স্পষ্ট বিজয়। (তাইসিরুল)
নিশ্চয়ই আমি তোমাকে দিয়েছি সুস্পষ্ট বিজয়। (মুজিবুর রহমান)
আয়াতঃ 048.002
যাতে আল্লাহ আপনার অতীত ও ভবিষ্যত ত্রুটিসমূহ মার্জনা করে দেন এবং আপনার প্রতি তাঁর নেয়ামত পূর্ণ করেন ও আপনাকে সরল পথে পরিচালিত করেন।
That Allâh may forgive you your sins of the past and the future, and complete His Favour on you, and guide you on the Straight Path;
لِيَغْفِرَ لَكَ اللَّهُ مَا تَقَدَّمَ مِن ذَنبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ وَيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكَ وَيَهْدِيَكَ صِرَاطًا مُّسْتَقِيمًا
Liyaghfira laka Allahu ma taqaddama min thanbika wama taakhkhara wayutimma niAAmatahu AAalayka wayahdiyaka siratan mustaqeeman
YUSUFALI: That Allah may forgive thee thy faults of the past and those to follow; fulfil His favour to thee; and guide thee on the Straight Way;
PICKTHAL: That Allah may forgive thee of thy sin that which is past and that which is to come, and may perfect His favour unto thee, and may guide thee on a right path,
SHAKIR: That Allah may forgive your community their past faults and those to follow and complete His favor to you and keep you on a right way,
KHALIFA: Whereby GOD forgives your past sins, as well as future sins, and perfects His blessings upon you, and guides you in a straight path.
০২। যেনো আল্লাহ্ তোমার অতীত ও ভবিষ্যত ত্রুটিসমূহ ক্ষমা করতে পারেন ৪৮৬৭। তোমার প্রতি তাঁর অনুগ্রহ পূর্ণ করবেন এবং তোমাকে সরল পথে পরিচালিত করবেন।
৪৮৬৭। দেখুন [ ৪০ : ৫৫ ] আয়াতের টিকা নং ৪৪২৮ এবং [ ৪৭ : ১৯ ] আয়াত। এই আয়াতটিতে রাসুলকে (সা ) সম্বোধন করা হয়েছে। এখানে রাসুলকে ( সা ) সরলপথে পরিচালনা অর্থাৎ হেদায়েতের কথা বলা হয়েছে। হেদায়েত একটি ব্যাপক শব্দ। এর অসংখ্য স্তর বিদ্যমান। পৃথিবীর, জীবনের সর্বোচ্চ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ্র নৈকট্য ও সন্তুষ্টি অর্জন করা। এই নৈকট্য ও সন্তুষ্টির অসংখ্য স্তর বিদ্যমান। এক স্তর অর্জিত হওয়ার পরে দ্বিতীয় বা তৃতীয় এরূপ বহু স্তর অর্জনের আবশ্যকতা থাকে। কোন সর্বোত্তম ওলী এমন কি নবী রসুলও এই আবশ্যকতা থেকে মুক্ত হতে পারেন না। সরল পথের দোয়া করার শিক্ষা যেমন উম্মতকে দেয়া হয়েছে, তেমনি স্বয়ং রাসুলুল্লাহ্ কেও ( সা ) দেয়া হয়েছে। এর সারমর্ম হচ্ছে ‘সিরাতে মুস্তাকীমের হেদায়েত তথা আল্লাহ্ তায়ালার নৈকট্য ও সন্তুষ্টির স্তরসমূহে উন্নতি লাভ। এই প্রকাশ্য বিজয়ের কারণে আল্লাহ্ তায়ালা এই নৈকট্য ও সন্তুষ্টির একটি অত্যুচ্চ স্তর রসুলুল্লাহ্ কে ( সা ) দান করেছেন।
আয়াতঃ 048.003
এবং আপনাকে দান করেন বলিষ্ঠ সাহায্য।
And that Allâh may help you with strong help.
وَيَنصُرَكَ اللَّهُ نَصْرًا عَزِيزًا
Wayansuraka Allahu nasran AAazeezan
YUSUFALI: And that Allah may help thee with powerful help.
PICKTHAL: And that Allah may help thee with strong help –
SHAKIR: And that Allah might help you with a mighty help.
KHALIFA: Additionally, GOD will support you with an unwavering support.
০৩। এবং আল্লাহ্ যেনো শক্তিশালী সাহায্য দ্বারা সাহায্য করতে পারেন ৪৮৬৮।
৪৮৬৮। আল্লাহ্র সন্তুষ্টির তিনটি বিষয়কে এখানে উল্লেখ করা হয়েছে :
১) “অতীত ও ভবিষ্যৎ ত্রুটি সমূহ মার্জনা করেন” -অর্থাৎ আল্লাহ্র করুণা, অনুগ্রহ ও ক্ষমা লাভ করা
২) আরবে রসুলের অবস্থানকে সম্মান ও দৃঢ় অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে নবুয়তের সম্মান বৃদ্ধি করন। এভাবেই আল্লাহ্ নবীর প্রতি তাঁর “অনুগ্রহ পূর্ণ করেন।”
৩) নবীর জন্য ইসলাম প্রসারের পথ সরল ও সহজ করে দেন। পরবর্তীতে মক্কা তথা কাবা হচ্ছে ইসলামের প্রতীক স্বরূপ। আল্লাহ্র এই তিনটি অনুগ্রহকে সংক্ষিপ্ত আকারে এভাবে প্রকাশ করা হয়েছে : ” আল্লাহ্ তোমাকে শক্তিশালী সাহায্য দান করেন।
আয়াতঃ 048.004
তিনি মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি নাযিল করেন, যাতে তাদের ঈমানের সাথে আরও ঈমান বেড়ে যায়। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের বাহিনীসমূহ আল্লাহরই এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
He it is Who sent down As-Sakinah (calmness and tranquillity) into the hearts of the believers, that they may grow more in Faith along with their (present) Faith. And to Allâh belong the hosts of the heavens and the earth, and Allâh is Ever All-Knower, All-Wise.
هُوَ الَّذِي أَنزَلَ السَّكِينَةَ فِي قُلُوبِ الْمُؤْمِنِينَ لِيَزْدَادُوا إِيمَانًا مَّعَ إِيمَانِهِمْ وَلِلَّهِ جُنُودُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا
Huwa allathee anzala alssakeenata fee quloobi almu/mineena liyazdadoo eemanan maAAa eemanihim walillahi junoodu alssamawati waal-ardi wakana Allahu AAaleeman hakeeman
YUSUFALI: It is He Who sent down tranquillity into the hearts of the Believers, that they may add faith to their faith;- for to Allah belong the Forces of the heavens and the earth; and Allah is Full of Knowledge and Wisdom;-
PICKTHAL: He it is Who sent down peace of reassurance into the hearts of the believers that they might add faith unto their faith. Allah’s are the hosts of the heavens and the earth, and Allah is ever Knower, Wise –
SHAKIR: He it is Who sent down tranquillity into the hearts of the believers that they might have more of faith added to their faith– and Allah’s are the hosts of the heavens and the earth, and Allah is Knowing, Wise–
KHALIFA: He is the One who places contentment into the hearts of believers to augment more faith, in addition to their faith. To GOD belongs all forces of the heavens and the earth. GOD is Omniscient, Most Wise.
০৪। তিনিই বিশ্বাসীদের অন্তরে প্রশান্তি দান করেন ৪৮৬৯, যেনো তারা তাদের ঈমানের উপরে ঈমান যোগ করতে পারে ৪৮৭০; – নিশ্চয়ই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর বাহিনী সমূহ আল্লাহ্রই ৪৮৭১। এবং জ্ঞান ও প্রজ্ঞাতে আল্লাহ্ পরিপূর্ণ।
৪৮৬৯। আল্লাহ্র অনুগ্রহের বহিঃপ্রকাশ ঘটে হুদায়বিয়া প্রান্তরে রাসুলের সহযোগী ১৪০০-১৫০০ তীর্থযাত্রীর মাঝে। তাঁরা তাদের অন্তরের মাঝে প্রগাঢ় শান্তি, ধীর-স্থির মনোভাব, নিরাপত্তা এবং দুর্জয় সাহসের অনুভূতি উপলব্ধি করেন যদিও তাঁরা ছিলেন নিরস্ত্র এবং বহিঃশত্রুর দ্বারা তাদের আক্রান্ত হওয়া কিছুমাত্র অসম্ভব ছিলো না। এই প্রশান্তি প্রদানের ফলেই প্রবল উস্কানি সত্ত্বেও মুসলিমগণ শান্ত ছিলেন এবং এমন সংকটময় মূহুর্তে ধীরস্থির ভাবে দৃঢ়তার সাথে জিহাদের বায়’আত [ ৪৮ : ১৮ ] গ্রহণ করেছিলেন। তা ছিলো তাদের সুদৃঢ় ঈমানের প্রতিদানে আল্লাহ্র অনুগ্রহ।
মন্তব্য : মানসিক প্রশান্তি ও আত্মতৃপ্তি আল্লাহ্র অসীম অনুগ্রহের দান।
৪৮৭০। বিশ্বাস বা ঈমানের কি স্তর ভেদ আছে ? এরূপ প্রশ্ন শুধুমাত্র কূটতার্কিকরাই করতে পারে। বিশ্বাস বা ঈমান হচ্ছে অন্তরের ধন, বাইরে তা জনসমক্ষে প্রকাশ্য নয়। সুতারাং তর্কের মাধ্যমে এর সমাধান সম্ভব নয়। যারা বিশ্বাসী তারা বিশ্বচরাচরে সর্বক্ষেত্রে সর্ববিষয়ে আল্লাহ্র নিদর্শন প্রত্যক্ষ করে থাকে।এসব নিদর্শন সমূহ তাদের বিশ্বাস বা ঈমানকে প্রতিনিয়ত দৃঢ় থেকে দৃঢ়তার পথে, স্তর থেকে স্তরে উন্নত করতে সাহায্য করে। ইসলামের প্রাথমিক যুগে ইসলামের অনুসারীর হত্যা, নির্যাতন, সংঘর্ষের শীকার হন। ইসলামের শত্রুরা যখন হুদায়বিয়া নামক স্থানে সন্ধির শর্তসমূহ আলোচনার জন্য অগ্রসর হয় তখন বিশ্বাসীদের অন্তর আল্লাহ্র অনুগ্রহ উপলব্ধিতে আপ্লুত হয়ে পড়ে। তাদের বিশ্বাস বা ঈমান সোনায় মোড়ানো হীরার ন্যায় উজ্জ্বল ভাস্বর হয়ে ওঠে। তাদের ‘ বিশ্বাস ‘ বা ঈমান হয় দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর, পরিপূর্ণ, নিশ্চিত – তা ন্যায্যতা প্রতিপাদিত হয়। অন্তরের এই উপলব্ধি, এই পাওয়া তাদের হৃদয়কে আল্লাহ্র প্রতি কৃতজ্ঞতায় পরিপূর্ণ করে তোলে।
৪৮৭১। পৃথিবীতে যুদ্ধ সংঘটিত হয় বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে। পার্থিব জগতে সমরাস্ত্র, যোদ্ধা বাহিনী সবই দৃশ্যমান। সশস্ত্র বাহিনী যুদ্ধ করে ঠিকই, কিন্তু অন্তরীক্ষে সর্বশক্তি আল্লাহ্র হাতে হয় তা নিয়ন্ত্রিত। যুদ্ধে সুশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনী ও সমরাস্ত্রই শেষ কথা নয়। তাই যদি হতো তবে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময়ে জার্মান বাহিনীর নিদারূণ পরাজয় ঘটতো না। আল্লাহ্র সহায়তাই হচ্ছে সর্বোচ্চ সহায়তা। মুসলমান যোদ্ধারা সর্বদা সেই সর্বশক্তিমান, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর বাহিনী সমূহের অধিপতি ; তারই সাহায্যপ্রার্থী হয়ে যুদ্ধ করে থাকে। আল্লাহ্র প্রতি নির্ভরতার এ এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্রকৃত মোমেন বান্দারা জীবনের সকল ক্ষেত্রেই আল্লাহ্র প্রতি পরিপূর্ণ নির্ভরশীল হন।
আয়াতঃ 048.005
ঈমান এজন্যে বেড়ে যায়, যাতে তিনি ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করান, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। সেথায় তারা চিরকাল বসবাস করবে এবং যাতে তিনি তাদের পাপ মোচন করেন। এটাই আল্লাহর কাছে মহাসাফল্য।
That He may admit the believing men and the believing women to Gardens under which rivers flow (i.e. Paradise), to abide therein forever, and to expiate from them their sins, and that is with Allâh, a supreme success,
لِيُدْخِلَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَيُكَفِّرَ عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ وَكَانَ ذَلِكَ عِندَ اللَّهِ فَوْزًا عَظِيمًا
Liyudkhila almu/mineena waalmu/minati jannatin tajree min tahtiha al-anharu khalideena feeha wayukaffira AAanhum sayyi-atihim wakana thalika AAinda Allahi fawzan AAatheeman
YUSUFALI: That He may admit the men and women who believe, to Gardens beneath which rivers flow, to dwell therein for aye, and remove their ills from them;- and that is, in the sight of Allah, the highest achievement (for man),-
PICKTHAL: That He may bring the believing men and the believing women into Gardens underneath which rivers flow, wherein they will abide, and may remit from them their evil deeds – That, in the sight of Allah, is the supreme triumph –
SHAKIR: That He may cause the believing men and the believing women to enter gardens beneath which rivers flow to abide therein and remove from them their evil; and that is a grand achievement with Allah
KHALIFA: He will certainly admit the believing men and women into gardens with flowing streams, wherein they abide forever. He will remit their sins. This is, in the sight of GOD, a great triumph.
০৫। যেনো তিনি মুমিন পুরুষ ও নারীদের অধিষ্ঠিত করতে পারেন বেহেশ্তে ৪৮৭২, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত সেখানে তারা স্থায়ীভাবে বসবাস করবে এবং তাদের থেকে [ সকল ] পাপ মোচন করবেন। আল্লাহ্র দৃষ্টিতে [ মানুষের জন্য ] ইহাই সর্বোচ্চ সাফল্য।
৪৮৭২। কর্মের মাধ্যমে ঈমানের দৃঢ়তার পরিচয় যারা দান করেন পরলোকে তাদের জন্য কি পুরস্কার রয়েছে তা এই আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 048.006
এবং যাতে তিনি কপট বিশ্বাসী পুরুষ ও কপট বিশ্বাসিনী নারী এবং অংশীবাদী পুরুষ ও অংশীবাদিনী নারীদেরকে শাস্তি দেন, যারা আল্লাহ সম্পর্কে মন্দ ধারণা পোষন করে। তাদের জন্য মন্দ পরিনাম। আল্লাহ তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাদেরকে অভিশপ্ত করেছেন। এবং তাহাদের জন্যে জাহান্নাম প্রস্তুত রেখেছেন। তাদের প্রত্যাবর্তন স্থল অত্যন্ত মন্দ।
And that He may punish the Munâfiqûn (hypocrites), men and women, and also the Mushrikûn men and women, who think evil thoughts about Allâh, for them is a disgraceful torment, and the Anger of Allâh is upon them, and He has cursed them and prepared Hell for them, and worst indeed is that destination.
وَيُعَذِّبَ الْمُنَافِقِينَ وَالْمُنَافِقَاتِ وَالْمُشْرِكِينَ وَالْمُشْرِكَاتِ الظَّانِّينَ بِاللَّهِ ظَنَّ السَّوْءِ عَلَيْهِمْ دَائِرَةُ السَّوْءِ وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ وَلَعَنَهُمْ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَهَنَّمَ وَسَاءتْ مَصِيرًا
WayuAAaththiba almunafiqeena waalmunafiqati waalmushrikeena waalmushrikati alththanneena biAllahi thanna alssaw-i AAalayhim da-iratu alssaw-i waghadiba Allahu AAalayhim walaAAanahum waaAAadda lahum jahannama wasaat maseeran
YUSUFALI: And that He may punish the Hypocrites, men and women, and the Polytheists men and women, who imagine an evil opinion of Allah. On them is a round of Evil: the Wrath of Allah is on them: He has cursed them and got Hell ready for them: and evil is it for a destination.
PICKTHAL: And may punish the hypocritical men and the hypocritical women, and the idolatrous men and the idolatrous women, who think an evil thought concerning Allah. For them is the evil turn of fortune, and Allah is wroth against them and hath cursed them, and hath made ready for them hell, a hapless journey’s end.
SHAKIR: And (that) He may punish the hypocritical men and the hypocritical women, and the polytheistic men and the polytheistic women, the entertainers of evil thoughts about Allah. On them is the evil turn, and Allah is wroth with them and has cursed them and prepared hell for them, and evil is the resort.
KHALIFA: And He will requite the hypocrite men and women and the idol worshiping men and women, for they have harbored evil thoughts about GOD. Their evil will backfire against them. For GOD is angry with them, condemns them, and has prepared for them Gehenna. What a miserable destiny!
০৬। যেনো তিনি মুনাফিক পুরুষ ও নারী এবং মুশরিক [ মূর্তিপূজক ] পুরুষ ও নারী যারা আল্লাহ্ সম্বন্ধে মন্দ ধারণা পোষণ করে, তাদের শাস্তি দিতে পারেন। তাদের উপরে রয়েছে পাপের চক্র ৪৮৭৩, আল্লাহ্র ক্রোধ রয়েছে তাদের প্রতি। তিনি তাদের অভিশাপ দেন ৪৮৭৪ ; এবং তাদের জন্য জাহান্নাম প্রস্তুত রাখেন। উহা কত নিকৃষ্ট গন্তব্যস্থল।
৪৮৭৩। ‘পাপের চক্র’ অর্থাৎ তারা পাপের দ্বারা বেষ্টিত হয়ে পড়বে। এই আয়াতে মোনাফেক ও মোশরেক নর-নারীকে একই কাতারে সম্বোধন করা হয়েছে। সুতারাং যারা পার্থিব জীবনে অবিশ্বস্ততা ও মিথ্যার বেসাতী করে থাকে তারা মুখে যতই ধর্মের কথা আলোচনা করুক তা আল্লাহ্র নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। পাপ তাদের সর্বসত্তাকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে।
৪৮৭৪। এসব মোনাফেক ও মোশরেকদের প্রতি আল্লাহ্ রুষ্ট হয়েছেন এবং ” আল্লাহ্ তাদের অভিশপ্ত করেন।” অর্থাৎ তারা আল্লাহ্র সকল অনুগ্রহ বঞ্চিত হবে। আল্লাহ্র অনুগ্রহ বঞ্চিত আত্মায় আল্লাহ্র হেদায়েতের নূর বা আলো অপ্রবেশ্য। কি ভয়াবহ সে অবস্থা। তারা এ অবস্থা প্রাপ্ত হবে কারণ তারা ” আল্লাহ্ সম্বন্ধে মন্দ ধারণা পো
আয়াতঃ 048.007
নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের বাহিনীসমূহ আল্লাহরই। আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
And to Allâh belong the hosts of the heavens and the earth. And Allâh is Ever All-Knower, All-Wise.
وَلِلَّهِ جُنُودُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَكَانَ اللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًا
Walillahi junoodu alssamawati waal-ardi wakana Allahu AAazeezan hakeeman
YUSUFALI: For to Allah belong the Forces of the heavens and the earth; and Allah is Exalted in Power, Full of Wisdom.
PICKTHAL: Allah’s are the hosts of the heavens and the earth, and Allah is ever Mighty, Wise.
SHAKIR: And Allah’s are the hosts of the heavens and the earth; and Allah is Mighty, Wise.
KHALIFA: To GOD belongs all the forces in the heavens and the earth. GOD is Almighty, Most Wise.
০৭। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সকল বাহিনী আল্লাহ্র অধীনে ৪৮৭৫। এবং আল্লাহ্ ক্ষমতায় পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাতে পরিপূর্ণ।
৪৮৭৫। আপতঃদৃষ্টিতে এই আয়াতটি ৪নং আয়াতের পুণঃরাবৃত্তি বলে ভ্রম হয়। পুণঃরাবৃত্তি অবশ্যই তবে সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে মূল বক্তব্যকে জোরালোরূপে উপস্থাপন করা হয়েছে। পৃথিবীতে সুদক্ষ যোদ্ধাবাহিনী, সমরাস্ত্র প্রভৃতির প্রয়োজন সমরক্ষেত্রে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে এটাই শেষ কথা নয়। এসব দৃশ্যমান সমরশক্তি ব্যতীতও আল্লাহ্র অদৃশ্য শক্তি সর্বত্র কর্তৃত্বশালী। শুধুমাত্র দৃশ্যমান শক্তির উপরে নির্ভর করেই আল্লাহ্র পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয় না। আল্লাহ্র শক্তি জলে স্থলে, অন্তরীক্ষে, দ্যুলোকে, ভূলোকে, সর্বত্র অদৃশ্য থেকে পৃথিবীর প্রতিটি কার্য্যকে নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে এবং আল্লাহ্র পরিকল্পনাকে তার নির্দ্দিষ্ট উদ্দেশ্যের প্রতি এগিয়ে নিয়ে চলে। ঠিক যেরূপটা ঘটেছিলো হুদায়বিয়ার প্রান্তরে। ৪নং আয়াতে বলা হয়েছে আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। এই আয়াতে বলা হয়েছে আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। পূর্বের আয়াতে আল্লাহ্র জ্ঞানের উপরে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিলো, এই আয়াতে আল্লাহ্র ক্ষমতার উপরে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। জ্ঞান ও বিচক্ষণতা পরিকল্পনা প্রণয়নে সাহায্য করে এবং ক্ষমতা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সাহায্য করে।
আয়াতঃ 048.008
আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি অবস্থা ব্যক্তকারীরূপে, সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারীরূপে।
Verily, We have sent you (O Muhammad SAW) as a witness, as a bearer of glad tidings, and as a warner.
إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا
Inna arsalnaka shahidan wamubashshiran wanatheeran
YUSUFALI: We have truly sent thee as a witness, as a bringer of Glad Tidings, and as a Warner:
PICKTHAL: Lo! We have sent thee (O Muhammad) as a witness and a bearer of good tidings and a warner,
SHAKIR: Surely We have sent you as a witness and as a bearer of good news and as a warner,
KHALIFA: We have sent you as a witness, a bearer of good news, and a warner.
০৮। আমি তোমাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষী দাতা ৪৮৭৬, সুসংবাদদাতা এবং সর্তককারীরূপে।
৪৮৭৬। রাসুলের (সা ) আগমন পৃথিবীতে আল্লাহ্র একত্বের উপাসনা শিক্ষা দানের জন্য। মানুষকে ঈমানের রাস্তায় আহ্বানের জন্য। এই আয়াতে রাসুলের তিনটি বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরা হয়েছে :
১) সাক্ষীরূপে তাঁকে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছে দুর্বল, ও নির্যাতিতের সাহায্যকারী ও শক্তিশালীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাধাদানকারী হিসেবে। তিনি ঘোষণাকারী বা সাক্ষ্যদাতা।
২) যারা অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধন করে এবং আল্লাহ্ নির্দ্দেশিত পবিত্র জীবন যাপন করে থাকে, রাসুল (সা) তাদের জন্য আল্লাহ্র ক্ষমা, দয়া ও করুণার সুসংবাদ প্রদানকারী।
পাপীদের পাপের শেষ পরিণতি সম্বন্ধে সর্তককারী হিসেবে তাঁর আগমন।
আয়াতঃ 048.009
যাতে তোমরা আল্লাহ ও রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর এবং তাঁকে সাহায্য ও সম্মান কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা কর।
In order that you (O mankind) may believe in Allâh and His Messenger (SAW), and that you assist and honour him (SAW), and (that you) glorify (Allâh’s) praises morning and afternoon.
لِتُؤْمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُعَزِّرُوهُ وَتُوَقِّرُوهُ وَتُسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلًا
Litu/minoo biAllahi warasoolihi watuAAazziroohu watuwaqqiroohu watusabbihoohu bukratan waaseelan
YUSUFALI: In order that ye (O men) may believe in Allah and His Messenger, that ye may assist and honour Him, and celebrate His praise morning and evening.
PICKTHAL: That ye (mankind) may believe in Allah and His messenger, and may honour Him, and may revere Him, and may glorify Him at early dawn and at the close of day.
SHAKIR: That you may believe in Allah and His Messenger and may aid him and revere him; and (that) you may declare His glory, morning and evening.
KHALIFA: That you people may believe in GOD and His messenger, and reverence Him, and observe Him, and glorify Him, day and night.
০৯। যেনো [ হে মানব ! ] তোমরা আল্লাহ্ এবং তাঁর রসুলে ঈমান আন। যেনো তোমরা তাঁকে সাহায্য কর ও সম্মান কর, এবং সকাল ও সন্ধ্যায় আল্লাহ্র প্রশংসা কীর্তন কর।
১০। যারা তোমার হাতে বায়’আত করে তারা তো আল্লাহ্রই হাতে বায়’আত করে, ৪৮৭৭। এরপরে যে তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে, সে তা করে নিজেরই আত্মার অকল্যাণের জন্য এবং যে আল্লাহ্র সাথে অঙ্গীকার পূর্ণ করে ; শীঘ্রই আল্লাহ্ তাকে মহাপুরষ্কার দান করবেন।
৪৮৭৭। হুদায়বিয়ার প্রান্তর থেকে মক্কার কোরাইশদের সাথে আলাপ আলোচনার জন্য মুসলমান শিবির থেকে দূত প্রেরণ করা হয়। কোরাইশরা মুসলমানদের দুতকে সম্মানের সাথে গ্রহণ করবে না, অসম্মানিত করবে এ ব্যাপারে সকলেই ছিলো অনিশ্চিত। মুসলমান শিবিরে চরম উৎকণ্ঠা ও অনিশ্চিত অবস্থা বিরাজ করছিলো – সে সময়ে ১৪০০-১৫০০ মুসলিম তীর্থযাত্রীর মাঝে আল্লাহ্র প্রতি ভক্তি ভালোবাসা ও আত্মত্যাগের তীব্র আবেগ বিরাজ করছিলো। তাঁরা আরবের প্রথা অনুযায়ী, রাসুলের হাতের উপরে হস্ত স্থাপন পূর্বক সকল বিপদ বিপর্যয়ে রাসুলের (সা ) প্রতি আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করে। [ দেখুন এই সূরার ভূমিকা ৩নং অনুচ্ছেদ ]। এই আনুগত্য ছিলো সকল নৈতিক সাহস ও পার্থিব শক্তির মূল ভিত্তি। এই আনুগত্যই হচ্ছে সকল বিজয়ের অদৃশ্য শক্তির উৎস। প্রকৃত বিজয় এই আনুগত্য প্রদর্শন ইসলামের ইতিহাসে “Bai’at ur Ridhwan” নামে বিখ্যাত। [Fealty of Allah’s Good Pleasure ]। সাহাবীরা রাসুলের (সা) হাতের উপরে হস্ত স্থাপন পূর্বক আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করেন। এই আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন যে, প্রকৃত পক্ষে তারা আল্লাহ্রই আনুগত্য গ্রহণ করেছে।
আয়াতঃ 048.010
যারা আপনার কাছে আনুগত্যের শপথ করে, তারা তো আল্লাহর কাছে আনুগত্যের শপথ করে। আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর রয়েছে। অতএব, যে শপথ ভঙ্গ করে; অতি অবশ্যই সে তা নিজের ক্ষতির জন্যেই করে এবং যে আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করে; আল্লাহ সত্ত্বরই তাকে মহাপুরস্কার দান করবেন।
Verily, those who give Bai’â (pledge) to you (O Muhammad SAW) they are giving Bai’â (pledge) to Allâh. The Hand of Allâh is over their hands. Then whosoever breaks his pledge, breaks only to his own harm, and whosoever fulfills what he has covenanted with Allâh, He will bestow on him a great reward.
إِنَّ الَّذِينَ يُبَايِعُونَكَ إِنَّمَا يُبَايِعُونَ اللَّهَ يَدُ اللَّهِ فَوْقَ أَيْدِيهِمْ فَمَن نَّكَثَ فَإِنَّمَا يَنكُثُ عَلَى نَفْسِهِ وَمَنْ أَوْفَى بِمَا عَاهَدَ عَلَيْهُ اللَّهَ فَسَيُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا
Inna allatheena yubayiAAoonaka innama yubayiAAoona Allaha yadu Allahi fawqa aydeehim faman nakatha fa-innama yankuthu AAala nafsihi waman awfa bima AAahada AAalayhu Allaha fasayu/teehi ajran AAatheeman
YUSUFALI: Verily those who plight their fealty to thee do no less than plight their fealty to Allah: the Hand of Allah is over their hands: then any one who violates his oath, does so to the harm of his own soul, and any one who fulfils what he has covenanted with Allah,- Allah will soon grant him a great Reward.
PICKTHAL: Lo! those who swear allegiance unto thee (Muhammad), swear allegiance only unto Allah. The Hand of Allah is above their hands. So whosoever breaketh his oath, breaketh it only to his soul’s hurt; while whosoever keepeth his covenant with Allah, on him will He bestow immense reward.
SHAKIR: Surely those who swear allegiance to you do but swear allegiance to Allah; the hand of Allah is above their hands. Therefore whoever breaks (his faith), he breaks it only to the injury of his own soul, and whoever fulfills what he has covenanted with Allah, He will grant him a mighty reward.
KHALIFA: Surely, those who pledge allegiance to you, are pledging allegiance to GOD. GOD approves their pledge; He places His hand above their hands. Those who violate such a pledge, commit the violation to their own detriment. As for those who fulfill their pledge with GOD, He will grant them a great recompense.
০৯। যেনো [ হে মানব ! ] তোমরা আল্লাহ্ এবং তাঁর রসুলে ঈমান আন। যেনো তোমরা তাঁকে সাহায্য কর ও সম্মান কর, এবং সকাল ও সন্ধ্যায় আল্লাহ্র প্রশংসা কীর্তন কর।
১০। যারা তোমার হাতে বায়’আত করে তারা তো আল্লাহ্রই হাতে বায়’আত করে, ৪৮৭৭। এরপরে যে তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে, সে তা করে নিজেরই আত্মার অকল্যাণের জন্য এবং যে আল্লাহ্র সাথে অঙ্গীকার পূর্ণ করে ; শীঘ্রই আল্লাহ্ তাকে মহাপুরষ্কার দান করবেন।
৪৮৭৭। হুদায়বিয়ার প্রান্তর থেকে মক্কার কোরাইশদের সাথে আলাপ আলোচনার জন্য মুসলমান শিবির থেকে দূত প্রেরণ করা হয়। কোরাইশরা মুসলমানদের দুতকে সম্মানের সাথে গ্রহণ করবে না, অসম্মানিত করবে এ ব্যাপারে সকলেই ছিলো অনিশ্চিত। মুসলমান শিবিরে চরম উৎকণ্ঠা ও অনিশ্চিত অবস্থা বিরাজ করছিলো – সে সময়ে ১৪০০-১৫০০ মুসলিম তীর্থযাত্রীর মাঝে আল্লাহ্র প্রতি ভক্তি ভালোবাসা ও আত্মত্যাগের তীব্র আবেগ বিরাজ করছিলো। তাঁরা আরবের প্রথা অনুযায়ী, রাসুলের হাতের উপরে হস্ত স্থাপন পূর্বক সকল বিপদ বিপর্যয়ে রাসুলের (সা ) প্রতি আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করে। [ দেখুন এই সূরার ভূমিকা ৩নং অনুচ্ছেদ ]। এই আনুগত্য ছিলো সকল নৈতিক সাহস ও পার্থিব শক্তির মূল ভিত্তি। এই আনুগত্যই হচ্ছে সকল বিজয়ের অদৃশ্য শক্তির উৎস। প্রকৃত বিজয় এই আনুগত্য প্রদর্শন ইসলামের ইতিহাসে “Bai’at ur Ridhwan” নামে বিখ্যাত। [Fealty of Allah’s Good Pleasure ]। সাহাবীরা রাসুলের (সা) হাতের উপরে হস্ত স্থাপন পূর্বক আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করেন। এই আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন যে, প্রকৃত পক্ষে তারা আল্লাহ্রই আনুগত্য গ্রহণ করেছে।
আয়াতঃ 048.011
মরুবাসীদের মধ্যে যারা গৃহে বসে রয়েছে, তারা আপনাকে বলবেঃ আমরা আমাদের ধন-সম্পদ ও পরিবার-পরিজনের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। অতএব, আমাদের পাপ মার্জনা করান। তারা মুখে এমন কথা বলবে, যা তাদের অন্তরে নেই। বলুনঃ আল্লাহ তোমাদের ক্ষতি অথবা উপকার সাধনের ইচ্ছা করলে কে তাকে বিরত রাখতে পারে? বরং তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয় পরিপূর্ণ জ্ঞাত।
Those of the bedouins who lagged behind will say to you: ”Our possessions and our families occupied us, so ask forgiveness for us.” They say with their tongues what is not in their hearts. Say: ”Who then has any power at all (to intervene) on your behalf with Allâh, if He intends you hurt or intends you benefit? Nay, but Allâh is Ever All-Aware of what you do.
سَيَقُولُ لَكَ الْمُخَلَّفُونَ مِنَ الْأَعْرَابِ شَغَلَتْنَا أَمْوَالُنَا وَأَهْلُونَا فَاسْتَغْفِرْ لَنَا يَقُولُونَ بِأَلْسِنَتِهِم مَّا لَيْسَ فِي قُلُوبِهِمْ قُلْ فَمَن يَمْلِكُ لَكُم مِّنَ اللَّهِ شَيْئًا إِنْ أَرَادَ بِكُمْ ضَرًّا أَوْ أَرَادَ بِكُمْ نَفْعًا بَلْ كَانَ اللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا
Sayaqoolu laka almukhallafoona mina al-aAArabi shaghalatna amwaluna waahloona faistaghfir lana yaqooloona bi-alsinatihim ma laysa fee quloobihim qul faman yamliku lakum mina Allahi shay-an in arada bikum darran aw arada bikum nafAAan bal kana Allahu bima taAAmaloona khabeeran
YUSUFALI: The desert Arabs who lagged behind will say to thee: “We were engaged in (looking after) our flocks and herds, and our families: do thou then ask forgiveness for us.” They say with their tongues what is not in their hearts. Say: “Who then has any power at all (to intervene) on your behalf with Allah, if His Will is to give you some loss or to give you some profit? But Allah is well acquainted with all that ye do.
PICKTHAL: Those of the wandering Arabs who were left behind will tell thee: Our possessions and our households occupied us, so ask forgiveness for us! They speak with their tongues that which is not in their hearts. Say: Who can avail you aught against Allah, if He intend you hurt or intend you profit? Nay, but Allah is ever Aware of what ye do.
SHAKIR: Those of the dwellers of the desert who were left behind will say to you: Our property and our families kept us busy, so ask forgiveness for us. They say with their tongues what is not in their hearts. Say: Then who can control anything for you from Allah if He intends to do you harm or if He intends to do you good; nay, Allah is Aware of what you do:
KHALIFA: The sedentary Arabs who stay behind will say, “We have been preoccupied with our money and our families, so ask forgiveness for us!” They utter with their tongues what is not in their hearts. Say, “Who can protect you from GOD, if He willed any adversity for you, or if He willed any blessing for you?” GOD is fully Cognizant of everything you do.
রুকু – ২
১১। মরুবাসী আরব, যারা পিছনে রয়ে গেছে ৪৮৭৮, তারা তোমাকে বলবে, ” আমরা ব্যস্ত ছিলাম মেষপাল, পশুপাল এবং আমাদের পরিবারের [ দেখা-শুনার ] কাজে। অতএব, আমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন” ৪৮৭৯। তারা তাদের জিহ্বাতে তাই-ই বলে যা তাদের অন্তরে নাই। বল, ” আল্লাহ্ তোমাদের কারও কোন ক্ষতি বা মঙ্গল সাধনের ইচ্ছা করলে, কে তাঁকে নিবৃত্ত করতে পারে ৪৮৮০ ? বস্তুতঃ তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আল্লাহ্ সম্যক অবগত।
৪৮৭৮। নবীর মদিনা থেকে মক্কা যাত্রার প্রাক্কালে [যে যাত্রা হুদায়বিয়া নামক স্থানে স্থগিত হয়ে যায় ] প্রতিটি মুসলমানকে পবিত্র যাত্রা সম্পন্ন করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করেন। এ ব্যাপারে মুসলমানদের প্রতিক্রিয়া ছিলো স্বতঃস্ফুর্ত ও উজ্জ্বল দীপ্তিমান ও আবেগপূর্ণ। কিন্তু কোনও কোনও মরুবাসী আরব গোষ্ঠি এ ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ না করে পিছনে থেকে যায়। তারা তীর্থযাত্রীদের সহযোগী না হওয়ার বিশেষ অজূহাত খাড়া করে। কারণ তাদের বিশ্বাস বা ঈমানের ভিত্তি ছিলো দুর্বল। সে কারণেই তারা সম্ভাব্য কোনওরূপ বিপদ বা বিপর্যয়ের মাঝে যেতে অনিচ্ছুক ছিলো। মক্কীগামী নিরস্ত্র মুসলিম তীর্থযাত্রীরা বিপদ বা অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারে এই চিন্তা তাদের দুর্বল বিশ্বাসের ভিত্তিকে প্রকম্পিত করে। আল্লাহ্র উপরে নির্ভরশীলতা হারায়। সে কারণে তারা মিথ্যা অজুহাতের উপস্থাপন করে। এই আয়াতে তারা ধন সম্পদ ও পরিবার পরিজনের রক্ষণাবেক্ষণের যে অজুহাত উত্থাপন করে তা ছিলো মদিনাবাসীদের হুদায়বিয়া থেকে প্রত্যাবর্তনের পরে। হুদায়বিয়ার সন্ধির মাধ্যমে মদিনাবাসী মুসলমানদের সম্মান বৃদ্ধি ঘটে। সুতারাং তারা সেই সম্মানের অংশীদার হওয়ার জন্য এই মিথ্যা অজুহাতের আশ্রয় গ্রহণ করে। এই আয়াতের মাধ্যমে সুযোগ সন্ধানীদের চরিত্রের বৈশিষ্ট্য যা সর্বযুগে বিদ্যমান ছিলো এবং ভবিষ্যতেও থাকবে তা তুলে ধরা হয়েছে।
৪৮৭৯। ক্ষমা প্রার্থনার কথা ছিলো শুধুমাত্র কথার কথা। তা তাদের হৃদয়ের কথা ছিলো না। কারণ তাদের অন্তরে বা চিন্তায় কোনওরূপ ধর্মানুরাগ স্থান লাভ করে নাই।
৪৮৮০। তাদের মিথ্যা অজুহাতের একমাত্র কারণ হচ্ছে পার্থিব লাভ-লোকসানের হিসাব। এ সব লোকের নিকট আধ্যাত্মিক জগতের কোনও অস্তিত্ব নাই। বৃহত্তর ও মহত্তর কারণে আত্মত্যাগ আধ্যাত্মিক জগতকে করে সমুন্নত, উন্নত, আল্লাহ্র রহমত পাওয়ার যোগ্য। নিতান্ত পার্থিব, আত্ম স্বার্থ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য যারা শুধু কাজ করে তাদের জন্য আধ্যাত্মিক উন্নতির এই পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। বিপদের আশংকাকে উপেক্ষা করে, যারা রাসুলের (সা ) সাথে মদিনা থেকে মক্কা অভিমুখে যাত্রা করেন এবং হুদায়বিয়ার প্রান্তরে যারা নিজ জীবনকে আল্লাহ্র রাস্তায় উৎসর্গ করার জন্য রাসুলের হাতে হাত রেখে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন তাদের ত্যাগ ও আত্মোৎসর্গ আল্লাহ্ বৃথা যেতে দেন না। আল্লাহ্র সন্তুষ্টি তাদের আধ্যাত্মিক জগতকে স্বর্গীয় অনুভূতিতে ভরিয়ে দেয়। কল্যাণজনক কাজের এই স্বর্গীয় অনুভূতি সর্বকালের মানুষের জন্য প্রযোজ্য। যারা শুধুমাত্র বৈষয়িক ব্যাপারে পার্থিব লাভলোকসানের হিসাবে জীবন অতিবাহিত করে থাকে, তারা অত্যন্ত নির্বোধ। কারণ তারা মনে করে থাকে যে, তাদের বৈষয়িক স্বার্থ বুদ্ধির খবর কেউ জানতে পারবে না। তারা নিতান্তই নির্বোধ কারণ আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ।
আয়াতঃ 048.012
বরং তোমরা ধারণ করেছিলে যে, রসূল ও মুমিনগণ তাদের বাড়ী-ঘরে কিছুতেই ফিরে আসতে পারবে না এবং এই ধারণা তোমাদের জন্যে খুবই সুখকর ছিল। তোমরা মন্দ ধারণার বশবর্তী হয়েছিলে। তোমরা ছিলে ধ্বংসমুখী এক সম্প্রদায়।
”Nay, but you thought that the Messenger (SAW) and the believers would never return to their families; and that was made fair-seeming in their hearts, and you did think an evil thought and you became a useless people going for destruction.”
بَلْ ظَنَنتُمْ أَن لَّن يَنقَلِبَ الرَّسُولُ وَالْمُؤْمِنُونَ إِلَى أَهْلِيهِمْ أَبَدًا وَزُيِّنَ ذَلِكَ فِي قُلُوبِكُمْ وَظَنَنتُمْ ظَنَّ السَّوْءِ وَكُنتُمْ قَوْمًا بُورًا
Bal thanantum an lan yanqaliba alrrasoolu waalmu/minoona ila ahleehim abadan wazuyyina thalika fee quloobikum wathanantum thanna alssaw-i wakuntum qawman booran
YUSUFALI: “Nay, ye thought that the Messenger and the Believers would never return to their families; this seemed pleasing in your hearts, and ye conceived an evil thought, for ye are a people lost (in wickedness).”
PICKTHAL: Nay, but ye deemed that the messenger and the believers would never return to their own folk, and that was made fairseeming in your hearts, and ye did think an evil thought, and ye were worthless folk.
SHAKIR: Nay! you rather thought that the Messenger and the believers would not return to their families ever, and that was made fairseeming to your hearts and you thought an evil thought and you were a people doomed to perish.
KHALIFA: You secretly believed that the messenger and the believers will be defeated and never come back to their families, and this was firmly established in your hearts. You harbored evil thoughts and turned into wicked people.
১২। ” না তোমরা ভেবেছিলে রসুল ও মোমেনগণ আর কখনও তাদের পরিবারের কাছে ফিরে আসবে না। এই ধারণা তোমাদের অন্তরে প্রীতিকর মনে হয়েছিলো ৪৮৮১। এবং তোমরা অন্তরে এক মন্দ ধারণা করেছিলে। নিশ্চয়ই তোমরা ছিলে [ মন্দ দ্বারা ] বিনাশ যোগ্য জাতি। ”
৪৮৮১। স্বার্থপর ও বিয়ষবুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তির চিন্তাধারা এই আয়াতের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। যা সর্বকালের সর্বযুগের মানব সম্প্রদায়ের জন্য প্রযোজ্য। যাদের অন্তরে ঈমানের ভিত্তি দুর্বল, যারা সর্ব অবস্থায় আল্লাহ্র উপরে নির্ভরশীল নয়, যারা শুধুমাত্র পার্থিব লাভ-লোকসানের দ্বারা পরিচালিত হয় তারাই শুধুমাত্র মহৎ কাজের পরিণতি সম্বন্ধে আশংকা প্রকাশ করে থাকে। এই আয়াতের মাধ্যমে মদিনার মোনাফেক সম্প্রদায়ের মনঃস্তাত্বিক বিশ্লেষণের দ্বারা পৃথিবীর সর্বকালের সর্বযুগের মোনাফেক ও সুযোগ সন্ধানীদের চরিত্র অঙ্কিত করা হয়েছে। মদিনার সুযোগ সন্ধানী মোনাফেকদের ধারণা হয়েছিলো যে, মক্কার কোরাইশরা রাসুল (সা ) ও তাঁর নিরস্ত্র সহযোগীদের ধ্বংস করে ফেলবে। প্রকৃতপক্ষে এ ধারণা তাদের মনে দুঃখের পরিবর্তে প্রীতিরই সঞ্চার করে থাকে। কারণ তারা ছিলো একগুঁয়ে, অবাধ্য, দুষ্ট সম্প্রদায় যারা অপরের দুঃখ কষ্টে আনন্দ লাভ করে থাকে। এ সব লোক বা সম্প্রদায় শেষ পর্যন্ত ধ্বংসপ্রাপ্ত সম্প্রদায়রূপে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। পরলোকে তাদের জন্য আছে জলন্ত অগ্নি।
আয়াতঃ 048.013
যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলে বিশ্বাস করে না, আমি সেসব কাফেরের জন্যে জ্বলন্ত অগ্নি প্রস্তুত রেখেছি।
And whosoever does not believe in Allâh and His Messenger (Muhammad SAW), then verily, We have prepared for the disbelievers a blazing Fire .
وَمَن لَّمْ يُؤْمِن بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ فَإِنَّا أَعْتَدْنَا لِلْكَافِرِينَ سَعِيرًا
Waman lam yu/min biAllahi warasoolihi fa-inna aAAtadna lilkafireena saAAeeran
YUSUFALI: And if any believe not in Allah and His Messenger, We have prepared, for those who reject Allah, a Blazing Fire!
PICKTHAL: And so for him who believeth not in Allah and His messenger – Lo! We have prepared a flame for disbelievers.
SHAKIR: And whoever does not believe in Allah and His Messenger, then surely We have prepared burning fire for the unbelievers.
KHALIFA: Anyone who refuses to believe in GOD and His messenger, we have prepared for the disbelievers a hellfire.
১৩। কেহ যদি আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলে বিশ্বাস না করে, তবে যারা আল্লাহকে প্রত্যাখান করে তাদের জন্য এক জ্বলন্ত আগুন প্রস্তুত রেখেছি।
১৪। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী আল্লাহ্রই অধীনে। তিনি যাকে খুশী ক্ষমা করেন ৪৮৮২, এবং যাকে খুশী শাস্তি দান করেন। আল্লাহ্ তো বারে বারে ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
৪৮৮২। পাপী তার পাপ কাজের জন্য অবশ্যই শাস্তি ভোগ করবে। এর থেকে তার নিস্তার নাই। এই হচ্ছে স্বর্গীয় আইন। তবে এর থেকে নিষ্কৃতি লাভ করার উপায় আছে। অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধনের দ্বারা আল্লাহ্র ক্ষমা ও করুণা লাভ করা যায়। আল্লাহ্ করুণা ও দয়ার আঁধার। এরূপ ক্ষেত্রে আল্লাহ্র পাপীদের পূর্বের সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেন। সৃষ্টির মাঝে আল্লাহ্র ক্ষমা ও করুণা প্রতিটি পরমাণুতে ভাস্বর। “তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” এই-ই হচ্ছে আল্লাহর ইচ্ছা বা বিধান।
আয়াতঃ 048.014
নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান।
And to Allâh belongs the sovereignty of the heavens and the earth, He forgives whom He wills, and punishes whom He wills. And Allâh is Ever Oft-Forgiving, Most Merciful.
وَلِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَغْفِرُ لِمَن يَشَاء وَيُعَذِّبُ مَن يَشَاء وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا
Walillahi mulku alssamawati waal-ardi yaghfiru liman yashao wayuAAaththibu man yashao wakana Allahu ghafooran raheeman
YUSUFALI: To Allah belongs the dominion of the heavens and the earth: He forgives whom He wills, and He punishes whom He wills: but Allah is Oft-Forgiving, Most Merciful.
PICKTHAL: And Allah’s is the Sovereignty of the heavens and the earth. He forgiveth whom He will, and punisheth whom He will. And Allah is ever Forgiving, Merciful.
SHAKIR: And Allah’s is the kingdom. of the heavens and the earth; He forgives whom He pleases and punishes whom He pleases, and Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: To GOD belongs the sovereignty of the heavens and the earth. He forgives whomever He wills, and punishes whomever He wills. GOD is Forgiver, Most Merciful.
১৩। কেহ যদি আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলে বিশ্বাস না করে, তবে যারা আল্লাহকে প্রত্যাখান করে তাদের জন্য এক জ্বলন্ত আগুন প্রস্তুত রেখেছি।
১৪। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী আল্লাহ্রই অধীনে। তিনি যাকে খুশী ক্ষমা করেন ৪৮৮২, এবং যাকে খুশী শাস্তি দান করেন। আল্লাহ্ তো বারে বারে ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
৪৮৮২। পাপী তার পাপ কাজের জন্য অবশ্যই শাস্তি ভোগ করবে। এর থেকে তার নিস্তার নাই। এই হচ্ছে স্বর্গীয় আইন। তবে এর থেকে নিষ্কৃতি লাভ করার উপায় আছে। অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধনের দ্বারা আল্লাহ্র ক্ষমা ও করুণা লাভ করা যায়। আল্লাহ্ করুণা ও দয়ার আঁধার। এরূপ ক্ষেত্রে আল্লাহ্র পাপীদের পূর্বের সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেন। সৃষ্টির মাঝে আল্লাহ্র ক্ষমা ও করুণা প্রতিটি পরমাণুতে ভাস্বর। “তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” এই-ই হচ্ছে আল্লাহর ইচ্ছা বা বিধান।
আয়াতঃ 048.015
তোমরা যখন যুদ্ধলব্ধ ধন-সম্পদ সংগ্রহের জন্য যাবে, তখন যারা পশ্চাতে থেকে গিয়েছিল, তারা বলবেঃ আমাদেরকেও তোমাদের সঙ্গে যেতে দাও। তারা আল্লাহর কালাম পরিবর্তন করতে চায়। বলুনঃ তোমরা কখনও আমাদের সঙ্গে যেতে পারবে না। আল্লাহ পূর্ব থেকেই এরূপ বলে দিয়েছেন। তারা বলবেঃ বরং তোমরা আমাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করছ। পরন্তু তারা সামান্যই বোঝে।
Those who lagged behind will say, when you set forth to take the spoils, ”Allow us to follow you,” They want to change Allâh’s Words. Say: ”You shall not follow us; thus Allâh has said beforehand.” Then they will say: ”Nay, you envy us.” Nay, but they understand not except a little.
سَيَقُولُ الْمُخَلَّفُونَ إِذَا انطَلَقْتُمْ إِلَى مَغَانِمَ لِتَأْخُذُوهَا ذَرُونَا نَتَّبِعْكُمْ يُرِيدُونَ أَن يُبَدِّلُوا كَلَامَ اللَّهِ قُل لَّن تَتَّبِعُونَا كَذَلِكُمْ قَالَ اللَّهُ مِن قَبْلُ فَسَيَقُولُونَ بَلْ تَحْسُدُونَنَا بَلْ كَانُوا لَا يَفْقَهُونَ إِلَّا قَلِيلًا
Sayaqoolu almukhallafoona itha intalaqtum ila maghanima lita/khuthooha tharoona nattabiAAkum yureedoona an yubaddiloo kalama Allahi qul lan tattabiAAoona kathalikum qala Allahu min qablu fasayaqooloona bal tahsudoonana bal kanoo la yafqahoona illa qaleelan
YUSUFALI: Those who lagged behind (will say), when ye (are free to) march and take booty (in war): “Permit us to follow you.” They wish to change Allah’s decree: Say: “Not thus will ye follow us: Allah has already declared (this) beforehand”: then they will say, “But ye are jealous of us.” Nay, but little do they understand (such things).
PICKTHAL: Those who were left behind will say, when ye set forth to capture booty: Let us go with you. They fain would change the verdict of Allah. Say (unto them, O Muhammad): Ye shall not go with us. Thus hath Allah said beforehand. Then they will say: Ye are envious of us. Nay, but they understand not, save a little.
SHAKIR: Those who are left behind will say when you set forth for the gaining of acquisitions: Allow us (that) we may follow you. They desire to change the world of Allah. Say: By no means shall you follow us; thus did Allah say before. But they will say: Nay! you are jealous of us. Nay! they do not understand but a little.
KHALIFA: The sedentary who stay behind will say, when you are expected to collect spoils of war, “Let us follow you to share in this!” They thus wish to alter GOD’s words. Say, “You will not follow us. This is GOD’s decision.” They will then say, “You must be envious of us (for staying behind).” Indeed, they rarely understood anything.
১৫। তোমরা যখন যুদ্ধলব্ধ সম্পদ সংগ্রহের জন্য যাবে তখন যারা পশ্চাতে থেকে গিয়েছিলো,তারা বলবে, ৪৮৮৩ ” আমাদের তোমাদের সাথে যেতে দাও।” তারা আল্লাহ্র আদেশকে পরিবর্তন করতে চায়। বল : ” তোমরা কিছুতেই আমাদের অনুসরণ করতে পারবে না ৪৮৮৪। আল্লাহ্ পূর্বেই এরূপ আদেশ দিয়েছেন ৪৮৮৫। ” তখন তারা বলবে, ” তোমরা আমাদের প্রতি হিংসাভাবাপন্ন।” ৪৮৮৬ আসলে তারা অতি অল্পই বুঝতে পারে [ সঠিক ঘটনা ]।
৪৮৮৩। যারা মোনাফেক, সুযোগ সন্ধানী, যারা মহৎ কাজে অংশ গ্রহণে অনিচ্ছুক, বিশ্লেষণে তাদের মনের আর এক ধরণের ‘উদ্দেশ্যকে এই আয়াতের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। তীর্থযাত্রা প্রাক্কালে কোনরূপ যুদ্ধলব্ধ সম্পদ লাভের সুযোগ নাই। সুতারাং সে যাত্রাতে তাদের প্রচুর অনীহা লক্ষ্য করা যাবে। কিন্তু ভবিষ্যতে যদি তাদের যুদ্ধলব্ধ সম্পদের প্রলোভন দান করা হয়, তবে তারা তৎক্ষণাত সহযাত্রী হতে সম্মত হবে। কিন্তু তাদের এই মানসিক অবস্থা জেহাদের প্রতি নিবেদিত ব্যক্তির মানসিক অবস্থা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির। ‘জেহাদ’ কোন ব্যক্তিগত লাভের জন্য নয়। আল্লাহ্র সন্তুষ্টির লাভের জন্য, সমাজ ও জাতির বৃহত্তর কল্যাণের জন্য যে সংগ্রাম তাই-ই জেহাদ। সেখানে ব্যক্তিগত লাভ লোকসান ও স্বার্থ সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। এই-ই হচ্ছে স্বর্গীয় আইন বা হুকুম। এই দৃষ্টি কোণ থেকে ‘জিহাদ’ অর্থ শুধুমাত্র অস্ত্রে সজ্জিত যুদ্ধক্ষেত্র নয়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম, মানুষের কল্যাণের জন্য চেষ্টা সবই ‘জেহাদ’। সুতারাং যুদ্ধ এবং শান্তি অবস্থায় সর্বদাই সমাজ জীবনে ‘জেহাদ’ হতে পারে। [ দেখুন ৮ নং সূরার ভূমিকার ২নং অনুচ্ছেদ ]।
৪৮৮৪। ‘কিছুতেই ‘ অর্থাৎ তোমাদের মানসিক অবস্থা যদি জেহাদের উপযুক্ত না হয়ে শুধুমাত্র যুদ্ধলব্ধ ধন-সম্পদ লাভের উপযুক্ত হয় তবে তোমরা ‘কিছুতেই ‘ সঙ্গী হতে পারবে না।
৪৮৮৫। দেখুন আয়াত [ ৮ : ১ ] ও টিকা ১১৭৯।
৪৮৮৬। মরুবাসী আরবরা লুঠতরাজ করার জন্য যুদ্ধ করতে ভালোবাসতো। বৃহত্তর ও মহত্তর কারণের জন্য যুদ্ধ করা সম্বন্ধে তাদের কোন ধারণাই ছিলো না। তারা ছিলো ব্যক্তি স্বার্থে অন্ধ ব্যক্তির ন্যায়। তাদের সকল চিন্তা চেতনা আবর্তিত হতো ক্ষুদ্র স্বার্থ উদ্ধারের চিন্তায়; ফলে লুট-তরাজের জন্য যুদ্ধ করাই ছিলো তাদের জন্য স্বাভাবিক কেউ যদি তাদের এরূপ যুদ্ধে অংশগ্রহণে বঞ্চিত করতো, তবে তারা হিংসা ও বিদ্বেষে উম্মত্ত হয়ে পড়তো। পরবর্তী আয়াতে এসব মরুবাসী আরবদের আত্মসংযম, আত্মোৎসর্গ ও মহৎ উদ্দেশ্যের প্রতি সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করার অভ্যাস গঠনের শিক্ষা দান করা হয়েছে।
আয়াতঃ 048.016
গৃহে অবস্থানকারী মরুবাসীদেরকে বলে দিনঃ আগামীতে তোমরা এক প্রবল পরাক্রান্ত জাতির সাথে যুদ্ধ করতে আহুত হবে। তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে, যতক্ষণ না তারা মুসলমান হয়ে যায়। তখন যদি তোমরা নির্দেশ পালন কর, তবে আল্লাহ তোমাদেরকে উত্তম পুরস্কার দিবেন। আর যদি পৃষ্ঠপ্রদর্শন কর যেমন ইতিপূর্বে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করেছ, তবে তিনি তোমাদেরকে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি দিবেন।
Say (O Muhammad SAW) to the bedouins who lagged behind: ”You shall be called to fight against a people given to great warfare, then you shall fight them, or they shall surrender. Then if you obey, Allâh will give you a fair reward, but if you turn away as you did turn away before, He will punish you with a painful torment.”
قُل لِّلْمُخَلَّفِينَ مِنَ الْأَعْرَابِ سَتُدْعَوْنَ إِلَى قَوْمٍ أُوْلِي بَأْسٍ شَدِيدٍ تُقَاتِلُونَهُمْ أَوْ يُسْلِمُونَ فَإِن تُطِيعُوا يُؤْتِكُمُ اللَّهُ أَجْرًا حَسَنًا وَإِن تَتَوَلَّوْا كَمَا تَوَلَّيْتُم مِّن قَبْلُ يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا
Qul lilmukhallafeena mina al-aAArabi satudAAawna ila qawmin olee ba/sin shadeedin tuqatiloonahum aw yuslimoona fa-in tuteeAAoo yu/tikumu Allahu ajran hasanan wa-in tatawallaw kama tawallaytum min qablu yuAAaththibkum AAathaban aleeman
YUSUFALI: Say to the desert Arabs who lagged behind: “Ye shall be summoned (to fight) against a people given to vehement war: then shall ye fight, or they shall submit. Then if ye show obedience, Allah will grant you a goodly reward, but if ye turn back as ye did before, He will punish you with a grievous Penalty.”
PICKTHAL: Say unto those of the wandering Arabs who were left behind: Ye will be called against a folk of mighty prowess, to fight them until they surrender; and if ye obey, Allah will give you a fair reward; but if ye turn away as ye did turn away before, He will punish you with a painful doom.
SHAKIR: Say to those of the dwellers of the desert who were left behind: You shall soon be invited (to fight) against a people possessing mighty prowess; you will fight against them until they submit; then if you obey, Allah will grant you a good reward; and if you turn back as you turned back before, He will punish you with a painful punishment.
KHALIFA: Say to the sedentary Arabs who stay behind, “You will be invited to face powerful people and to fight them, unless they submit. If you obey, GOD will reward you with a generous recompense. But if you turn away again, as you did in the past, He will requite you with a painful retribution.”
১৬। যে সব মরুবাসী পশ্চাতে রয়ে গিয়েছিলো ৪৮৮৭, তাদের বল, ” তোমাদের আহ্বান করা হবে এক প্রবল পরাক্রান্ত জাতির বিরুদ্ধে [ যুদ্ধ করতে ] ৪৮৮৮। তোমরা ওদের সাথে যুদ্ধ করবে, যতক্ষণ না ওরা আত্মসমর্পন করে ৪৮৮৯। এখন তোমরা যদি অনুগত হও, আল্লাহ্ তোমাদের উত্তম পুরষ্কার দান করবেন ; কিন্তু তোমরা যদি পূর্বের ন্যায় পৃষ্ঠ প্রদর্শন কর, তিনি তোমাদের ভয়াবহ শাস্তি দেবেন।
৪৮৮৭। নিরস্ত্র অবস্থায় হুদায়বিয়াতে গমন ছিলো বিপদসংকুল এবং সেখানে কোনওরূপ লুটের মাল অর্জনের সম্ভাবনা ছিলো না। সুতারাং যারা এই মিছিলে শরীক হতে অস্বীকার করেছিলো তাদের প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়, এবং সেই সাথে তাদের জন্য শুভসংবাদও জ্ঞাপন করা হয়। যদি তারা ইসলামের ঝান্ডা উত্তোলন করার জন্য আত্মসংযম ও আত্মোৎসর্গ করতে প্রস্তুত থাকে এবং এ কারণে প্রকৃত জেহাদে অংশ গ্রহণে আগ্রহী হয়, তবে তাদের জন্য আছে ” উত্তম পুরষ্কার “। পরবর্তীতে পারস্য এবং বাইজানটাইনের যুদ্ধে ঠিক তাই সংঘটিত হয়।
৪৮৮৮। দেখুন [ ২৭ : ৩৩ ] আয়াত।
৪৮৮৯। ধর্ম যুদ্ধ বা জেহাদ হবে আত্মসংযম ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে ধর্ম ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ। শুধুমাত্র যুদ্ধলব্ধ সম্পদ সংগ্রহের জন্য নয়। যদি শত্রু সেনা আত্মসমর্পন করে তবে সেখানে আর কোনও যুদ্ধ নয় ; আর কোন লুণ্ঠন নয়। এই হলো ইসলামের দৃষ্টিতে জেহাদ বা ধর্মযুদ্ধ।
আয়াতঃ 048.017
অন্ধের জন্যে, খঞ্জের জন্যে ও রুগ্নের জন্যে কোন অপরাধ নাই এবং যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুগত্য করবে তাকে তিনি জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত হয়। পক্ষান্তরে যে, ব্যক্তি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে, তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দিবেন।
No blame or sin is there upon the blind, nor is there blame or sin upon the lame, nor is there blame or sin upon the sick (that they go not forth to war). And whosoever obeys Allâh and His Messenger (Muhammad SAW), He will admit him to Gardens beneath which rivers flow (Paradise); and whosoever turns back, He will punish him with a painful torment.
لَيْسَ عَلَى الْأَعْمَى حَرَجٌ وَلَا عَلَى الْأَعْرَجِ حَرَجٌ وَلَا عَلَى الْمَرِيضِ حَرَجٌ وَمَن يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَن يَتَوَلَّ يُعَذِّبْهُ عَذَابًا أَلِيمًا
Laysa AAala al-aAAma harajun wala AAala al-aAAraji harajun wala AAala almareedi harajun waman yutiAAi Allaha warasoolahu yudkhilhu jannatin tajree min tahtiha al-anharu waman yatawalla yuAAaththibhu AAathaban aleeman
YUSUFALI: No blame is there on the blind, nor is there blame on the lame, nor on one ill (if he joins not the war): But he that obeys Allah and his Messenger,- (Allah) will admit him to Gardens beneath which rivers flow; and he who turns back, (Allah) will punish him with a grievous Penalty.
PICKTHAL: There is no blame for the blind, nor is there blame for the lame, nor is there blame for the sick (that they go not forth to war). And whoso obeyeth Allah and His messenger, He will make him enter Gardens underneath which rivers flow; and whoso turneth back, him will He punish with a painful doom.
SHAKIR: There is no harm in the blind, nor is there any harm in the lame, nor is there any harm in the sick (if they do not go forth); and whoever obeys Allah and His Messenger, He will cause him to enter gardens beneath which rivers flow, and whoever turns back, He will punish him with a painful punishment.
KHALIFA: The blind is not to be blamed, the crippled is not to be blamed, and the sick is not to be blamed. Those who obey GOD and His messenger, He will admit them into gardens with flowing streams. As for those who turn away, He will requite them with a painful retribution.
১৭। অন্ধকে দোষারোপ করা হবে না, পঙ্গুর জন্যও অপরাধ নাই, এবং রুগ্নের জন্যও কোন গুণাহ্ নাই [যদি সে যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করতে পারে ]। বস্তুতঃ যে কেহ আল্লাহ্ ও তার রসুলকে মান্য করে – আল্লাহ্ তাকে বেহেশতে অধিষ্ঠিত করবেন যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত ৪৮৯০। এবং যে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে [ আল্লাহ্ ] তাকে ভয়াবহ শাস্তি দান করবেন।
৪৮৯০। শুধুমাত্র যুদ্ধলব্ধ সম্পদের জন্য যুদ্ধ করা ইসলামে নিষিদ্ধ। ন্যায় ও সত্যের প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ হচ্ছে জেহাদ যা আত্মসংযম ও শৃঙ্খলার সর্বোচ্চ প্রকাশ। জেহাদের আহ্বানে সাড়া দেওয়া প্রতিটি সক্ষম মুসলমানের জন্য অবশ্য কর্তব্য। তবে অন্ধ, খঞ্জ ও রুগ্নের জন্য তা অবশ্য করণীয় নয়। তবে তারা দেশের অভ্যন্তরে থেকে নিজ নিজ সামর্থ অনুযায়ী দেশ ও জাতির সেবা করতে সক্ষম। এই আয়াতে এ সব ব্যক্তির নিয়ত ও উদ্দেশ্যের প্রতিও পরম করুণাময় আল্লাহ্ উদাসীন নন তাই ব্যক্ত করা হয়েছে। তারাও জেহাদের অংশগ্রহণকারীদের সমতুল্য ও পুরষ্কারের যোগ্য। পরলোকে তাদের সকলের জন্য আছে বেহেশতের সুখ ও শান্তি।
আয়াতঃ 048.018
আল্লাহ মুমিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা বৃক্ষের নীচে আপনার কাছে শপথ করল। আল্লাহ অবগত ছিলেন যা তাদের অন্তরে ছিল। অতঃপর তিনি তাদের প্রতি প্রশান্তি নাযিল করলেন এবং তাদেরকে আসন্ন বিজয় পুরস্কার দিলেন।
Indeed, Allâh was pleased with the believers when they gave their Bai’â (pledge) to you (O Muhammad SAW) under the tree, He knew what was in their hearts, and He sent down As-Sakinah (calmness and tranquillity) upon them, and He rewarded them with a near victory,
لَقَدْ رَضِيَ اللَّهُ عَنِ الْمُؤْمِنِينَ إِذْ يُبَايِعُونَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِي قُلُوبِهِمْ فَأَنزَلَ السَّكِينَةَ عَلَيْهِمْ وَأَثَابَهُمْ فَتْحًا قَرِيبًا
Laqad radiya Allahu AAani almu/mineena ith yubayiAAoonaka tahta alshshajarati faAAalima ma fee quloobihim faanzala alsakeenata AAalayhim waathabahum fathan qareeban
YUSUFALI: Allah’s Good Pleasure was on the Believers when they swore Fealty to thee under the Tree: He knew what was in their hearts, and He sent down Tranquillity to them; and He rewarded them with a speedy Victory;
PICKTHAL: Allah was well pleased with the believers when they swore allegiance unto thee beneath the tree, and He knew what was in their hearts, and He sent down peace of reassurance on them, and hath rewarded them with a near victory;
SHAKIR: Certainly Allah was well pleased with the believers when they swore allegiance to you under the tree, and He knew what was in their hearts, so He sent down tranquillity on them and rewarded them with a near victory,
KHALIFA: GOD is pleased with the believers who pledged allegiance to you under the tree. He knew what was in their hearts and, consequently, He blessed them with contentment, and rewarded them with an immediate victory.
রুকু – ৩
১৮। মোমেনদের উপরে আল্লাহ্ সন্তুষ্ট হয়েছিলেন ৪৮৯১, যখন তারা [ হুদায়বিয়ার প্রান্তরে ], এক গাছের নীচে তোমার নিকট বা’য়াত গ্রহণ করেছিলো ৪৮৯২। তাদের অন্তরে যা ছিলে তা তিনি জানতেন ৪৮৯৩ ; এবং তিনি তাদের দান করেন প্রশান্তি ৪৮৯৪। এবং তিনি তাদের পুরষ্কৃত করেছেন দ্রুত বিজয় দ্বারা ৪৮৯৫।
৪৮৯১। হুদায়বিয়ায় যখন মুসলিমগণ অবস্থান করছিলেন, তখন মক্কার মোশরেকদের সাথে আলোচনার জন্য হযরত ওসমান (রা) কে মক্কায় প্রেরণ করা হয়। তাঁকে মক্কায় মুশরিকরা আটক করে রাখলে গুজব রটে যে, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এ বার্তা শুনে মুসলমানগণ রাসুলুল্লাহ্ ( সা ) এর আহ্বানে জিহাদের বাইয়াত গ্রহণ করেন। এই বাইয়াত ইতিহাসে বায়আতে রিদওয়ান নামে খ্যাত। এই আয়াতে উক্ত বায়াতের উল্লেখ করা হয়েছে।
৪৮৯২। বাইয়াত গ্রহণকালে মহানবী হুদায়বিয়ার প্রান্তরে একটি বৃক্ষতলে উপবেশন করেছিলেন – এই আয়াতে তারই উল্লেখ করা হয়েছে।
৪৮৯৩। “তা তিনি জানতেন” যা পরীক্ষা করারই নামান্তর। দেখুন [ ৪৭ : ৩১ ] আয়াতের টিকা ৪৮৫৫।
৪৮৯৪। ‘Sakina’ – শান্তি, স্থিতি, স্থির, প্রশান্তি, নিরাপত্তা বোধ, স্নায়ু উত্তেজনা প্রশমনকারী ইত্যাদি। দেখুন উপরের আয়াত [ ৪৮ : ৪ ] ও টিকা নং ৪৮৬৯। এই একই শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে হুনাইনের যুদ্ধের বর্ণনার সময়ে আয়াত নং [ ৯ : ২৬ ] এবং হিজরতের প্রাথমিক স্তরে ‘Cave of Thaur’ [ ৯ : ৪০ ]।
৪৮৯৫। ‘হুদায়বিয়ার সন্ধি’ ছিলো “আসন্ন বিজয়”। বাইয়াত গ্রহণের পর পরই এই সন্ধির চুক্তিপত্র সাক্ষরিত হয়।
আয়াতঃ 048.019
এবং বিপুল পরিমাণে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ, যা তারা লাভ করবে। আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
And abundant spoils that they will capture. And Allâh is Ever All-Mighty, All-Wise.
وَمَغَانِمَ كَثِيرَةً يَأْخُذُونَهَا وَكَانَ اللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًا
Wamaghanima katheeratan ya/khuthoonaha wakana Allahu AAazeezan hakeeman
YUSUFALI: And many gains will they acquire (besides): and Allah is Exalted in Power, Full of Wisdom.
PICKTHAL: And much booty that they will capture. Allah is ever Mighty, Wise.
SHAKIR: And many acquisitions which they will take; and Allah is Mighty, Wise.
KHALIFA: Additionally, they gained many spoils. GOD is Almighty, Most Wise.
১৯। [ এছাড়াও ] যুদ্ধে প্রাপ্ত বিপুল সম্পদ হস্তগত করবে। এবং আল্লাহ্ ক্ষমতায় পরাক্রমশালী,প্রজ্ঞায় পরিপূর্ণ।
২০। আল্লাহ্ তোমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুদ্ধে লভ্য বিপুল সম্পদের, যার অধিকারী হবে তোমরা ৪৮৯৬। তিনি পূর্বেও তোমাদের তা দিয়েছেন ৪৮৯৭ ; এবং মানুষের হাতকে তোমাদের থেকে নিবৃত্ত করেছেন; যেনো মোমেনদের জন্য তা হয় এক নিদর্শন ৪৮৯৮ ; এবং তিনি যেনো তোমাদের সরল পথে পরিচালিত করতে পারেন।
৪৮৯৬। বাইয়াত গ্রহণের পরে আল্লাহ্ মুসলমানদের যে সম্পদ দান করেন তা “বিপুল সম্পদ” নামে অভিহিত করা হয়। যা পার্থিব সম্পদের পরিমাণে ধার্য করার নয়। তাদের মানসিক প্রশান্তি, স্নায়ুর উত্তেজনা প্রশমন, অগাধ নিরাপত্তাবোধ প্রভৃতি নৈতিক সাহসের চেতনা তাদের সর্বসত্তাকে আপ্লুত করে। এই পাওয়া পার্থিব ধন সম্পদ পাওয়া থেকে বহুগুণ শ্রেষ্ঠ। এর ফলে ইসলামের প্রচার ও প্রসার বিস্তৃতিলাভ করে এবং মক্কা বিজয়ের পথ সুগম হয় এবং পরিণামে পবিত্র কাবা ঘর পৌত্তলিক মুক্ত হয়। মক্কা বিজয়ের পরেই ধীরে ধীরে ইসলামের প্রসার সমস্ত আরব ভূখন্ডে ব্যপ্তি লাভ করে। “বিপুল সম্পদ” এখানে শুধুমাত্র পার্থিব সম্পদ নয়, তা ছিলো আধ্যাত্মিক, নৈতিক, মানসিক।
৪৮৯৭। বাইয়াতের প্রথম “ফসল ” হচ্ছে ‘হুদায়বিয়ার সন্ধি’ যার ফলে কিছুদিনের জন্য মুসলমানেরা মক্কার কোরাইশদের আক্রমণ ও নির্যাতন থেকে মুক্তি লাভ করে। এই মুক্তির বারতাকেই এভাবে এ ভাবে উত্থাপন করা হয়েছে ” এবং মানুষের হাতকে তোমাদের থেকে নিবৃত্ত করেছেন।”
৪৮৯৮। হুদায়বিয়ার ‘বাইয়াত’ ও ‘সন্ধি’ এই উভয়ই ছিলো মুসলমানদের জন্য মাইলফলক স্বরূপ। মুসলমানদের একত্ব, অভিন্নতা ও সংহতি দর্শনে সমগ্র আরব বিশ্ব অভিভূত হয়ে পড়ে।
আয়াতঃ 048.020
আল্লাহ তোমাদেরকে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধলব্ধ সম্পদের ওয়াদা দিয়েছেন, যা তোমরা লাভ করবে। তিনি তা তোমাদের জন্যে ত্বরান্বিত করবেন। তিনি তোমাদের থেকে শত্রুদের স্তব্দ করে দিয়েছেন-যাতে এটা মুমিনদের জন্যে এক নিদর্শন হয় এবং তোমাদেরকে সরল পথে পরিচালিত করেন।
Allâh has promised you abundant spoils that you will capture, and He has hastened for you this, and He has restrained the hands of men from you, that it may be a sign for the believers, and that He may guide you to a Straight Path.
وَعَدَكُمُ اللَّهُ مَغَانِمَ كَثِيرَةً تَأْخُذُونَهَا فَعَجَّلَ لَكُمْ هَذِهِ وَكَفَّ أَيْدِيَ النَّاسِ عَنكُمْ وَلِتَكُونَ آيَةً لِّلْمُؤْمِنِينَ وَيَهْدِيَكُمْ صِرَاطًا مُّسْتَقِيمًا
WaAAadakumu Allahu maghanima katheeratan ta/khuthoonaha faAAajjala lakum hathihi wakaffa aydiya alnnasi AAankum walitakoona ayatan lilmu/mineena wayahdiyakum siratan mustaqeeman
YUSUFALI: Allah has promised you many gains that ye shall acquire, and He has given you these beforehand; and He has restrained the hands of men from you; that it may be a Sign for the Believers, and that He may guide you to a Straight Path;
PICKTHAL: Allah promiseth you much booty that ye will capture, and hath given you this in advance, and hath withheld men’s hands from you, that it may be a token for the believers, and that He may guide you on a right path.
SHAKIR: Allah promised you many acquisitions which you will take, then He hastened on this one for you and held back the hands of men from you, and that it may be a sign for the believers and that He may guide you on a right path.
KHALIFA: GOD has promised you many spoils that you will gain. He thus advanced some benefits for you in this life, and He has withheld the people’s hands of aggression against you, and has rendered this a sign for the believers. He thus guides you in a straight path.
১৯। [ এছাড়াও ] যুদ্ধে প্রাপ্ত বিপুল সম্পদ হস্তগত করবে। এবং আল্লাহ্ ক্ষমতায় পরাক্রমশালী,প্রজ্ঞায় পরিপূর্ণ।
২০। আল্লাহ্ তোমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুদ্ধে লভ্য বিপুল সম্পদের, যার অধিকারী হবে তোমরা ৪৮৯৬। তিনি পূর্বেও তোমাদের তা দিয়েছেন ৪৮৯৭ ; এবং মানুষের হাতকে তোমাদের থেকে নিবৃত্ত করেছেন; যেনো মোমেনদের জন্য তা হয় এক নিদর্শন ৪৮৯৮ ; এবং তিনি যেনো তোমাদের সরল পথে পরিচালিত করতে পারেন।
৪৮৯৬। বাইয়াত গ্রহণের পরে আল্লাহ্ মুসলমানদের যে সম্পদ দান করেন তা “বিপুল সম্পদ” নামে অভিহিত করা হয়। যা পার্থিব সম্পদের পরিমাণে ধার্য করার নয়। তাদের মানসিক প্রশান্তি, স্নায়ুর উত্তেজনা প্রশমন, অগাধ নিরাপত্তাবোধ প্রভৃতি নৈতিক সাহসের চেতনা তাদের সর্বসত্তাকে আপ্লুত করে। এই পাওয়া পার্থিব ধন সম্পদ পাওয়া থেকে বহুগুণ শ্রেষ্ঠ। এর ফলে ইসলামের প্রচার ও প্রসার বিস্তৃতিলাভ করে এবং মক্কা বিজয়ের পথ সুগম হয় এবং পরিণামে পবিত্র কাবা ঘর পৌত্তলিক মুক্ত হয়। মক্কা বিজয়ের পরেই ধীরে ধীরে ইসলামের প্রসার সমস্ত আরব ভূখন্ডে ব্যপ্তি লাভ করে। “বিপুল সম্পদ” এখানে শুধুমাত্র পার্থিব সম্পদ নয়, তা ছিলো আধ্যাত্মিক, নৈতিক, মানসিক।
৪৮৯৭। বাইয়াতের প্রথম “ফসল ” হচ্ছে ‘হুদায়বিয়ার সন্ধি’ যার ফলে কিছুদিনের জন্য মুসলমানেরা মক্কার কোরাইশদের আক্রমণ ও নির্যাতন থেকে মুক্তি লাভ করে। এই মুক্তির বারতাকেই এভাবে এ ভাবে উত্থাপন করা হয়েছে ” এবং মানুষের হাতকে তোমাদের থেকে নিবৃত্ত করেছেন।”
৪৮৯৮। হুদায়বিয়ার ‘বাইয়াত’ ও ‘সন্ধি’ এই উভয়ই ছিলো মুসলমানদের জন্য মাইলফলক স্বরূপ। মুসলমানদের একত্ব, অভিন্নতা ও সংহতি দর্শনে সমগ্র আরব বিশ্ব অভিভূত হয়ে পড়ে।
আয়াতঃ 048.021
আর ও একটি বিজয় রয়েছে যা এখনও তোমাদের অধিকারে আসেনি, আল্লাহ তা বেষ্টন করে আছেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান।
And other (victories and much booty there are, He promises you) which are not yet within your power, indeed Allâh compasses them, And Allâh is Ever Able to do all things.
وَأُخْرَى لَمْ تَقْدِرُوا عَلَيْهَا قَدْ أَحَاطَ اللَّهُ بِهَا وَكَانَ اللَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرًا
Waokhra lam taqdiroo AAalayha qad ahata Allahu biha wakana Allahu AAala kulli shay-in qadeeran
YUSUFALI: And other gains (there are), which are not within your power, but which Allah has compassed: and Allah has power over all things.
PICKTHAL: And other (gain), which ye have not been able to achieve, Allah will compass it, Allah is Able to do all things.
SHAKIR: And others which you have not yet been able to achieve Allah has surely encompassed them, and Allah has power over all things.
KHALIFA: As for the group that you could not possibly defeat, GOD took care of them; GOD is Omnipotent.
২১। আরও রয়েছে, যা এখনও তোমাদের অধিকারে আসে নাই ৪৮৯৯। কিন্তু আল্লাহ্ তা ঘিরে আছেন। সকল কিছুর উপরে আল্লাহ্ ক্ষমতাবান।
৪৮৯৯। মুসলমানদের জন্য ভবিষ্যতে আরও বহু বিজয়ের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। এই বিজয়কে শুধুমাত্র রাজনৈতিক ও সমরাস্ত্রের বিজয়, ও পার্থিব সম্পদ ও ক্ষমতা লাভের বিজয় রূপে মনে করার অবকাশ নাই। নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দিক থেকে ইসলাম পৃথিবীতে অজেয় শক্তিরূপে আর্বিভূত হবে ভবিষ্যতের বিজয়ের মাধ্যমে সেই সুসংবাদই দান করা হয়েছে।
আয়াতঃ 048.022
যদি কাফেররা তোমাদের মোকাবেলা করত, তবে অবশ্যই তারা পৃষ্ঠপ্রদর্শন করত। তখন তারা কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পেত না।
And if those who disbelieve fight against you, they certainly would have turned their backs, then they would have found neither a Walî (protector) nor a helper.
وَلَوْ قَاتَلَكُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوَلَّوُا الْأَدْبَارَ ثُمَّ لَا يَجِدُونَ وَلِيًّا وَلَا نَصِيرًا
Walaw qatalakumu allatheena kafaroo lawallawoo al-adbara thumma la yajidoona waliyyan wala naseeran
YUSUFALI: If the Unbelievers should fight you, they would certainly turn their backs; then would they find neither protector nor helper.
PICKTHAL: And if those who disbelieve join battle with you they will take to flight, and afterward they will find no protecting friend nor helper.
SHAKIR: And if those who disbelieve fight with you, they would certainly turn (their) backs, then they would not find any protector or a helper.
KHALIFA: If the disbelievers ever fought you, they would turn around and flee. They have no Lord and Master; they have no helper.
২২। যদি অবিশ্বাসীরা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতো তবে তারা অবশ্যই পৃষ্ঠ প্রদর্শন করতো ৪৯০০। এরপরে তারা কোন রক্ষাকর্তা বা সাহায্যকারী পেতো না।
৪৯০০। মোশরেক কাফিরদের কোনও প্রকৃত নৈতিক মূল্যবোধ ছিলো না, ফলে তারা যুদ্ধের প্রকৃত মানসিক ও নৈতিক সাহস প্রদর্শনে অক্ষম হয়।
আয়াতঃ 048.023
এটাই আল্লাহর রীতি, যা পূর্ব থেকে চালু আছে। তুমি আল্লাহর রীতিতে কোন পরিবর্তন পাবে না।
That has been the Way of Allâh already with those who passed away before. And you will not find any change in the Way of Allâh.
سُنَّةَ اللَّهِ الَّتِي قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلُ وَلَن تَجِدَ لِسُنَّةِ اللَّهِ تَبْدِيلًا
Sunnata Allahi allatee qad khalat min qablu walan tajida lisunnati Allahi tabdeelan
YUSUFALI: (Such has been) the practice (approved) of Allah already in the past: no change wilt thou find in the practice (approved) of Allah.
PICKTHAL: It is the law of Allah which hath taken course aforetime. Thou wilt not find for the law of Allah aught of power to change.
SHAKIR: Such has been the course of Allah that has indeed run before, and you shall not find a change in Allah’s course.
KHALIFA: Such is GOD’s system throughout history, and you will find that GOD’s system is unchangeable.
২৩। [ এটাই ] আল্লাহ্র [ মনোনীত] বিধান যা প্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে ৪৯০১। তুমি আল্লাহ্র [মনোনীত ] বিধানে কোন পরিবর্তন পাবে না।
৪৯০১। দেখুন অনুরূপ আয়াত [ ৩৩ : ৬২ ]। প্রকৃতিতে প্রাণী, বস্তু ও পরিবেশের জন্য আছে বিশ্বজনীন আইন যা স্রষ্টা করে দিয়েছেন। সেগুলিকে বলা হয় প্রাকৃতিক আইন। সমগ্র বিশ্ব জগৎ নভোমন্ডল প্রাকৃতিক আইনের অর্ন্তগত। ঠিক সেরূপ মানুষের আধ্যাত্মিক জগতের জন্যও কতকগুলি নৈতিক আইন বর্তমান, যা যুগ যুগ ধরে বর্তমান আছে ভবিষ্যতেও থাকবে। উপরের আয়াতগুলির মাধ্যমে ও হুদায়বিয়ার ঘটনার প্রেক্ষাপটে যুদ্ধকালীন প্রতিটি সৈনিকের নৈতিক গুণাবলী যা আল্লাহ্ কর্তৃক মনোনীত তারই বর্ণনা করা হয়েছে। এই সব গুণাবলী যেমন : বিশ্বস্ততা, একতা, সংহতি, শৃঙ্খলা, নেতার প্রতি একনিষ্ঠ আনুগত্য প্রভৃতি যে সব গুণাবলী হুদায়বিয়ার প্রান্তরে মুসলমানেরা আল্লাহ্র রাসুলের প্রতি প্রদর্শন করেছিলেন – তাই-ই হচ্ছে আল্লাহ্ কর্তৃক সর্বকালের সর্বযুগের জন্য সমরক্ষেত্রে মনোনীত গুণাবলী। এ সব গুণাবলী হচ্ছে সার্বজনীন।
আয়াতঃ 048.024
তিনি মক্কা শহরে তাদের হাত তোমাদের থেকে এবং তোমাদের হাত তাদের থেকে নিবারিত করেছেন তাদের উপর তোমাদেরকে বিজয়ী করার পর। তোমরা যা কিছু কর, আল্লাহ তা দেখেন।
And He it is Who has withheld their hands from you and your hands from them in the midst of Makkah, after He had made you victors over them. And Allâh is Ever the All-Seer of what you do.
وَهُوَ الَّذِي كَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ عَنْهُم بِبَطْنِ مَكَّةَ مِن بَعْدِ أَنْ أَظْفَرَكُمْ عَلَيْهِمْ وَكَانَ اللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرًا
Wahuwa allathee kaffa aydiyahum AAankum waaydiyakum AAanhum bibatni makkata min baAAdi an athfarakum AAalayhim wakana Allahu bima taAAmaloona baseeran
YUSUFALI: And it is He Who has restrained their hands from you and your hands from them in the midst of Makka, after that He gave you the victory over them. And Allah sees well all that ye do.
PICKTHAL: And He it is Who hath withheld men’s hands from you, and hath withheld your hands from them, in the valley of Mecca, after He had made you victors over them. Allah is Seer of what ye do.
SHAKIR: And He it is Who held back their hands from you and your hands from them in the valley of Mecca after He had given you victory over them; and Allah is Seeing what you do.
KHALIFA: He is the One who withheld their hands of aggression against you, and withheld your hands of aggression against them in the valley of Mecca, after He had granted you victory over them. GOD is Seer of everything you do.
২৪। এবং মক্কার উপত্যকায় উহাদের উপরে বিজয় দান করার পরে উহাদের হস্ত তোমাদের থেকে এবং তোমাদের হস্ত তাদের থেকে সংযত করেছি ৪৯০২। এবং তোমরা যা কর আল্লাহ্ তা ভালোভাবেই দেখেন।
৪৯০২। মোশরেকদের কয়েকটি দল হুদায়বিয়াতে এসে মুসলমানদের উত্যক্ত করে। এমনকি একজন মুসলিমকে শহীদও করে। সাহাবীগণ তাদের বন্দী করে রাসুলুল্লাহ্ (সা) সম্মুখে নীত করে। এই দুঘর্টনা মদিনার মুসলমান ও কোরাইশদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত করতে পারতো। কারণ একপক্ষে কোরাইশরা যে কোনও মূল্যে মুসলমানাদের মক্কা থেকে বিতাড়িত করতে বদ্ধ পরিকর – যদিও তাদের সে অধিকার নাই। কারণ কাবা ঘর বিশ্ব মানবের মহামিলন স্থান রূপে প্রাচীন কাল থেকেই নির্ধারিত হয়ে আছে। অপরপক্ষে মুসলমানরা নিরস্ত্র থাকা সত্ত্বেও প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হয়ে একতাবদ্ধ হয় যে, যদি তারা আক্রান্ত হন তবে তাঁরা কাবা ঘরে জোর করেই প্রবেশ করবেন। কিন্তু রাসুল দুর্বৃত্ত কোরাইশদের ক্ষমা করে দেন। এ ভাবেই আল্লাহ্ পবিত্র মক্কা ভূমিকে রক্তপাত থেকে রক্ষা করেন। এই আয়াতে এই ধরণের ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। হুদায়বিয়ার সন্ধি চুক্তি সাক্ষরিত হওয়ার পর দুপক্ষের মাঝে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং যুদ্ধাবস্থার অবসান ঘটে। এ সবই হচ্ছে আল্লাহ্র অদৃশ্য হস্তের ইঙ্গিত। আল্লাহ্র ইচ্ছা মানুষের মনের উপরে কার্যকর হয়।
আয়াতঃ 048.025
তারাই তো কুফরী করেছে এবং বাধা দিয়েছে তোমাদেরকে মসজিদে হারাম থেকে এবং অবস্থানরত কোরবানীর জন্তুদেরকে যথাস্থানে পৌছতে। যদি মক্কায় কিছুসংখ্যক ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী না থাকত, যাদেরকে তোমরা জানতে না। অর্থাৎ তাদের পিষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা না থাকত, অতঃপর তাদের কারণে তোমরা অজ্ঞাতসারে ক্ষতিগ্রস্ত হতে, তবে সব কিছু চুকিয়ে দেয়া হত; কিন্তু এ কারণে চুকানো হয়নি, যাতে আল্লাহ তা’আলা যাকে ইচ্ছা স্বীয় রহমতে দাখিল করে নেন। যদি তারা সরে যেত, তবে আমি অবশ্যই তাদের মধ্যে যারা কাফের তাদেরকে যন্ত্রনাদায়ক শস্তি দিতাম।
They are the ones who disbelieved (in the Oneness of Allâh Islâmic Monotheism), and hindered you from AlMasjidalHarâm (the sacred mosque of Makkah) and the sacrificial animals, detained from reaching their place of sacrifice. Had there not been believing men and believing women whom you did not know, that you may kill them, and on whose account a sin would have been committed by you without (your) knowledge, that Allâh might bring into His Mercy whom He will, if they (the believers and the disbelievers) should have been apart, We verily had punished those of them who disbelieved, with painful torment.
هُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا وَصَدُّوكُمْ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَالْهَدْيَ مَعْكُوفًا أَن يَبْلُغَ مَحِلَّهُ وَلَوْلَا رِجَالٌ مُّؤْمِنُونَ وَنِسَاء مُّؤْمِنَاتٌ لَّمْ تَعْلَمُوهُمْ أَن تَطَؤُوهُمْ فَتُصِيبَكُم مِّنْهُم مَّعَرَّةٌ بِغَيْرِ عِلْمٍ لِيُدْخِلَ اللَّهُ فِي رَحْمَتِهِ مَن يَشَاء لَوْ تَزَيَّلُوا لَعَذَّبْنَا الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا
Humu allatheena kafaroo wasaddookum AAani almasjidi alharami waalhadya maAAkoofan an yablugha mahillahu walawla rijalun mu/minoona wanisaon mu/minatun lam taAAlamoohum an tataoohum fatuseebakum minhum maAAarratun bighayri AAilmin liyudkhila Allahu fee rahmatihi man yashao law tazayyaloo laAAaththabna allatheena kafaroo minhum AAathaban aleeman
YUSUFALI: They are the ones who denied Revelation and hindered you from the Sacred Mosque and the sacrificial animals, detained from reaching their place of sacrifice. Had there not been believing men and believing women whom ye did not know that ye were trampling down and on whose account a crime would have accrued to you without (your) knowledge, (Allah would have allowed you to force your way, but He held back your hands) that He may admit to His Mercy whom He will. If they had been apart, We should certainly have punished the Unbelievers among them with a grievous Punishment.
PICKTHAL: These it was who disbelieved and debarred you from the Inviolable Place of Worship, and debarred the offering from reaching its goal. And if it had not been for believing men and believing women, whom ye know not – lest ye should tread them under foot and thus incur guilt for them unknowingly; that Allah might bring into His mercy whom He will – If (the believers and the disbelievers) had been clearly separated We verily had punished those of them who disbelieved with painful punishment.
SHAKIR: It is they who disbelieved and turned you away from the Sacred Mosque and (turned off) the offering withheld from arriving at its destined place; and were it not for the believing men and the believing women, whom, not having known, you might have trodden down, and thus something hateful might have afflicted you on their account without knowledge– so that Allah may cause to enter into His mercy whomsoever He pleases; had they been widely separated one from another, We would surely have punished those who disbelieved from among them with a painful punishment.
KHALIFA: It is they who disbelieved and barred you from the Sacred Masjid, and even prevented your offerings from reaching their destination. There were believing men and women (within the enemy camp) whom you did not know, and you were about to hurt them, unknowingly. GOD thus admits into His mercy whomever He wills. If they persist, He will requite those among them who disbelieve with a painful retribution.
২৫। এরাই তারা যারা প্রত্যাদেশকে অস্বীকার করেছে ও মসজিদুল হারাম থেকে তোমাদের নিবৃত্ত করেছে এবং বাঁধা দিয়েছিলো কুরবাণীর জন্য আরদ্ধ পশুগুলিকে উৎসর্গের স্থানে পৌঁছাতে ৪৯০৩। যদি সেখানে এমন কতক মুমিন নর ও নারী না থাকতো যাদের তোমরা [ যুদ্ধের ফলে ] না জেনে ৪৯০৪ পদদলিত করে ফেলতে, ফলে তার দরুণ অজ্ঞাতসারে তোমাদের হিসেবের খাতাতে অপরাধ জমা হতো। [ তাহলে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া হতো। কিন্তু তা করা হয় নাই ] এই হেতু যে, আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা আপন রহমতের মধ্যে অধিষ্ঠিত করেন ৪৯০৫। যদি তারা [ মুসলমানেরা ] পৃথক হতো ৪৯০৬, আমি তাদের মধ্যে যারা অবিশ্বাসী হয়েছে তাদের নিশ্চয়ই কঠিন শাস্তি দিতাম।
৪৯০৩। মুসলমানেরা কোরবানীর উদ্দেশ্যে মদিনা থেকে মক্কাতে পশু আনায়ন করেন। তাদের পরনে ছিলো এহরামের পোষাক [ দেখুন ২ : ১৯৭ ] আয়াতের টিকা ২১৭ ]। কোরাইশরা মুসলমানদের শুধুমাত্র যে, মক্কাতে প্রবেশে বাঁধা দান করে তাই-ই নয়, তারা কোরবানীর উদ্দেশ্যে আনীত পশুগুলিকেও মক্কার কোরবানী স্থলে প্রেরণে বাঁধা দান করে। সে কারণে হুদায়বিয়ার প্রান্তরে পশুগুলিকে আল্লাহ্র ওয়াস্তে কোরবানী করা হয়।
৪৯০৪। সে সময়ে মক্কা নগরীতে কিছু সংখ্যক মোমেন পুরুষ ও নারী ছিলেন যারা বাইরে নিজেদের মুসলিম বলে প্রকাশ করতেন না। ফলে তাদের পরিচয় মদিনার মুসলমানদের নিকটও অপ্রকাশ্য ছিলো। যদি মুসলমানেরা মক্কা নগরীতে প্রবেশ লাভ করতেন তবে সংঘর্ষ ছিলো অনিবার্য, যার ফলে এ সব মোমেন মুসলিম পুরুষ ও নারীর জীবন হানির আশঙ্কা ছিলো। মুসলমানেরা এই সংঘর্ষে বিজয়ী হলেও তাদের অজান্তেই মোমেন পুরুষ ও নারীর প্রাণহানি ঘটতো – যার পাপ মদিনার মুসলমানদের উপরে নিপতিত হতো। হুদায়বিয়ার সন্ধির মাধ্যমে মোমেন মুসলিম পুরুষ ও নারীর রক্তপাত থেকে আল্লাহ্ মুসলমানদের রক্ষা করেন।
৪৯০৫। সমগ্র বিশ্ব জগত আল্লাহ্র পরিকল্পনার অংশ বিশেষ। পৃথিবী ও সমগ্র বিশ্ব জগৎ সেই পরিকল্পনার সুনির্দ্দিষ্ট লক্ষ্যে অগ্রসরমান। আমাদের ক্ষুদ্র ও সীমাবদ্ধ জ্ঞান, বুদ্ধিতে যা আজকে মনে হবে অসংলগ্ন, অকিঞ্চিতকর ও অপ্রয়োজনীয়, সময়ের বৃহত্তর পরিসরে তাই একদিন সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। এ অভিজ্ঞতা আমাদের প্রতিদিনের জীবনের। হুদায়বিয়ার প্রান্তরে যুদ্ধ প্রতিরোধ দ্বারা আল্লাহ্ শুধুমাত্র মোমেন মুসলিমদের অমূল্য জীবনই রক্ষা করলেন না ; কোরাইশদের মধ্যে অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন যারা পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করে ইসলামের সেবায় জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আল্লাহ্ জানতেন যে, ভবিষ্যতে মক্কার কোরাইশদের অনেকেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবেন। তাদের প্রতি এবং মক্কায় আটক অনেক মুসলমানদের প্রতি রহমত করার জন্য এসব আয়োজন করা হয়েছে। আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও দয়া মানুষের সীমাবদ্ধ জ্ঞান অপেক্ষা বহুগুণ বিস্তৃত ও অসীম – সময়ের বৃহত্তর পরিসরেই যা শুধুমাত্র পরিমাপ করা সম্ভব। আল্লাহ্র অনুগ্রহ তার বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে “আল্লাহ যাকে ইচ্ছা আপন রহমতের মধ্যে অধিষ্ঠিত করেন।”
৪৯০৬। মক্কাতে সেই সময়ে বহু মোমেন মুসলিম অবস্থান করছিলেন। যদি তাঁদের কাফেরদের থেকে পার্থক্য করা সম্ভব হতো, তবে আল্লাহ্ মদিনার মুসলিমদের মক্কাতে প্রবশে করাতেন এবং কোরাইশদের গর্ব, অহংকার ও মক্কাতে সকলের প্রবেশের অধিকারের অলিখিত চুক্তি ভঙ্গ করার জন্য মদিনার মুসলমানদের দ্বারা শাস্তি দান করতেন। এরূপ ক্ষেত্রে সে সময়ে হুদায়বিয়ার সন্ধি-ই ছিলো সর্বাপেক্ষা প্রকৃষ্ট পন্থা। যা সে সময়ে উপলব্ধি না করতে পারলেও সময়ের বৃহত্তর পরিসরে প্রমাণিত হয়েছে।
আয়াতঃ 048.026
কেননা, কাফেররা তাদের অন্তরে মূর্খতাযুগের জেদ পোষণ করত। অতঃপর আল্লাহ তাঁর রসূল ও মুমিনদের উপর স্বীয় প্রশান্তি নাযিল করলেন এবং তাদের জন্যে সংযমের দায়িত্ব অপরিহার্য করে দিলেন। বস্তুতঃ তারাই ছিল এর অধিকতর যোগ্য ও উপযুক্ত। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।
When those who disbelieve had put in their hearts pride and haughtiness the pride and haughtiness of the time of ignorance, then Allâh sent down His Sakinah (calmness and tranquillity) upon His Messenger ( SAW) and upon the believers, and made them stick to the word of piety (i.e. none has the right to be worshipped but Allâh), and they were well entitled to it and worthy of it. And Allâh is the All-Knower of everything.
إِذْ جَعَلَ الَّذِينَ كَفَرُوا فِي قُلُوبِهِمُ الْحَمِيَّةَ حَمِيَّةَ الْجَاهِلِيَّةِ فَأَنزَلَ اللَّهُ سَكِينَتَهُ عَلَى رَسُولِهِ وَعَلَى الْمُؤْمِنِينَ وَأَلْزَمَهُمْ كَلِمَةَ التَّقْوَى وَكَانُوا أَحَقَّ بِهَا وَأَهْلَهَا وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا
Ith jaAAala allatheena kafaroo fee quloobihimu alhamiyyata hamiyyata aljahiliyyati faanzala Allahu sakeenatahu AAala rasoolihi waAAala almu/mineena waalzamahum kalimata alttaqwa wakanoo ahaqqa biha waahlaha wakana Allahu bikulli shay-in AAaleeman
YUSUFALI: While the Unbelievers got up in their hearts heat and cant – the heat and cant of ignorance,- Allah sent down His Tranquillity to his Messenger and to the Believers, and made them stick close to the command of self-restraint; and well were they entitled to it and worthy of it. And Allah has full knowledge of all things.
PICKTHAL: When those who disbelieve had set up in their hearts zealotry, the zealotry of the Age of Ignorance, then Allah sent down His peace of reassurance upon His messenger and upon the believers and imposed on them the word of self-restraint, for they were worthy of it and meet for it. And Allah is Aware of all things.
SHAKIR: When those who disbelieved harbored in their hearts (feelings of) disdain, the disdain of (the days of) ignorance, but Allah sent down His tranquillity on His Messenger and on the believers, and made them keep the word of guarding (against evil), and they were entitled to it and worthy of it; and Allah is Cognizant of all things.
KHALIFA: While those who disbelieved were enraged, and their hearts were filled with the pride of the days of ignorance, GOD blessed His messenger and the believers with peaceful contentment, and directed them to uphold the word of righteousness. This is what they well deserved. GOD is fully aware of all things.
২৬। যখন অবিশ্বাসীরা তাদের অন্তরে গোত্রীয় অহমিকা পোষণ করতো ৪৯০৭ -[ যা ] অজ্ঞতার যুগের অহমিকা – তখন আল্লাহ্ আপন রসুলের উপরে এবং বিশ্বাসীদের [ চিত্তে ] স্বীয় প্রশান্তি দান করলেন ৪৯০৮, এবং তাদের আত্মসংযমের আদেশে সুদৃঢ় করলেন ; এবং তারা এর উপযুক্ত গুণান্বিত ও যোগ্য ছিলো। আল্লাহ্ সমস্ত বিষয়ে সম্যক জ্ঞান রাখেন। ৪৯০৯
৪৯০৭। হুদায়বিয়ার সন্ধির প্রাক্কালে কোরাইশদের আচরণ ছিলো উদ্ধত, অহংকারী, একগুঁয়ে। তারা চুক্তিপত্রের খুঁটিনাটি ব্যাপারেও হৈ-চৈ শুরু করেছিলো। তারা যখন চুক্তিপত্রের প্রারম্ভে “বিসমিল্লাহের রাহ্মানের রহিম” শব্দটি প্রয়োগে আপত্তি উত্থাপন করলো তখনও আল্লাহ্র রাসুল ছিলেন স্থির, আত্মসংযমী। আল্লাহ্র নামে প্রারম্ভের বাক্যটির জন্য উদ্বেগ প্রকাশ না করে তিনি ধীর-স্থির ও ধৈর্য্য সহকারে চুক্তিপত্রের মূল বিষয়গুলির প্রতি মনোনিবেশ করেন, কারণ সে সময়ের প্রেক্ষাপটে এর থেকে শ্রেষ্ঠ উপায় আর কিছু ছিলো না। এই সূরার ভূমিকাতে চুক্তি পত্রের সার-সংক্ষেপ বর্ণনা করা হয়েছে যা মুসলমানদের সে সময়ে অনেকেরই মনঃপূত ছিলো না। কিন্তু হযরতের (সা ) অনুসারীরা তাঁদের নেতার প্রতি আনুগত্যে ও বিশ্বাসে ছিলেন অটল। তাঁরা তাঁদের নেতার বিচার বিবেচনার প্রতি সম্পূর্ণরূপে ছিলেন আস্থাশীল। পরবর্তীতে তাঁদের এই আস্থা যথার্থ প্রমাণিত হয়।
উপদেশ : এই আয়াত সমূহের মাধ্যমে নেতার প্রকৃত গুণাবলী ও অনুসারীদের করণীয় কর্তব্য সমূহের প্রকৃত চিত্ররূপকে তুলে ধরা হয়েছে।
৪৯০৮। দেখুন উপরের [ ৪৮ : ১৮ ] আয়াতের টিকা ৪৮৯৪।
৪৯০৯। হুদায়বিয়ার প্রান্তরের সম্পূর্ণ ঘটনাপঞ্জী ছিলো মুসলমানদের জন্য উত্তেজনাপূর্ণ, ক্রোধাদ্দীপক ও প্ররোচনাপূর্ণ। কিন্তু এরূপ পরিবেশেও তাঁরা তাঁদের নেতার প্রতি যে আনুগত্য ও শৃঙ্খলা প্রদর্শন করেন, তার পুরষ্কার স্বরূপ আল্লাহ্ তাঁদের মনে প্রশান্তি দান করেন। ফলে এরূপ উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশেও তারা ছিলেন শান্ত ও ধীর-স্থির। আল্লাহ্র এই পুরষ্কার তাঁরা তাঁদের যোগ্যতার দ্বারা অর্জন করেন। তাঁরা ছিলেন এই পুরষ্কারের যোগ্য। আল্লাহ্র ক্ষমতা মানুষের অন্তরের উপরে কার্যকর।
আয়াতঃ 048.027
আল্লাহ তাঁর রসূলকে সত্য স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আল্লাহ চাহেন তো তোমরা অবশ্যই মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে নিরাপদে মস্তকমুন্ডিত অবস্থায় এবং কেশ কর্তিত অবস্থায়। তোমরা কাউকে ভয় করবে না। অতঃপর তিনি জানেন যা তোমরা জান না। এছাড়াও তিনি দিয়েছেন তোমাদেরকে একটি আসন্ন বিজয়।
Indeed Allâh shall fulfil the true vision which He showed to His Messenger (SAW) [i.e. the Prophet SAW saw a dream that he has entered Makkah along with his companions, having their (head) hair shaved and cut short] in very truth. Certainly, you shall enter AlMasjidalHarâm; if Allâh wills, secure, (some) having your heads shaved, and (some) having your head hair cut short, having no fear. He knew what you knew not, and He granted besides that a near victory.
لَقَدْ صَدَقَ اللَّهُ رَسُولَهُ الرُّؤْيَا بِالْحَقِّ لَتَدْخُلُنَّ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ إِن شَاء اللَّهُ آمِنِينَ مُحَلِّقِينَ رُؤُوسَكُمْ وَمُقَصِّرِينَ لَا تَخَافُونَ فَعَلِمَ مَا لَمْ تَعْلَمُوا فَجَعَلَ مِن دُونِ ذَلِكَ فَتْحًا قَرِيبًا
Laqad sadaqa Allahu rasoolahu alrru/ya bialhaqqi latadkhulunna almasjida alharama in shaa Allahu amineena muhalliqeena ruoosakum wamuqassireena la takhafoona faAAalima ma lam taAAlamoo fajaAAala min dooni thalika fathan qareeban
YUSUFALI: Truly did Allah fulfil the vision for His Messenger: ye shall enter the Sacred Mosque, if Allah wills, with minds secure, heads shaved, hair cut short, and without fear. For He knew what ye knew not, and He granted, besides this, a speedy victory.
PICKTHAL: Allah hath fulfilled the vision for His messenger in very truth. Ye shall indeed enter the Inviolable Place of Worship, if Allah will, secure, (having your hair) shaven and cut, not fearing. But He knoweth that which ye know not, and hath given you a near victory beforehand.
SHAKIR: Certainly Allah had shown to His Messenger the vision with truth: you shall most certainly enter the Sacred Mosque, if Allah pleases, in security, (some) having their heads shaved and (others) having their hair cut, you shall not fear, but He knows what you do not know, so He brought about a near victory before that.
KHALIFA: GOD has fulfilled His messenger’s truthful vision: “You will enter the Sacred Masjid, GOD willing, perfectly secure, and you will cut your hair or shorten it (as you fulfill the pilgrimage rituals) there. You will not have any fear. Since He knew what you did not know, He has coupled this with an immediate victory.”
রুকু – ৪
২৭। সত্যই আল্লাহ্ তাঁর রসুলের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেছেন ৪৯১০। তোমরা আল্লাহ্র ইচ্ছায় মসুজিদুল হারামে প্রবেশ করবে, নিরাপত্তার সাথে, মন্ডিত মস্তকে, চুল ছোট করে কেটে এবং নির্ভয়ে। আল্লাহ্ জানেন তোমরা যা জান না এবং এ ছাড়াও তিনি তোমাদের জন্য এক দ্রুত বিজয় দান করেছেন ৪৯১১।
৪৯১০। মদিনা থেকে মক্কা যাত্রার প্রাক্কালে [ যে যাত্রা হুদায়বিয়ার সন্ধির মাধ্যমে শেষ হয় ] রাসুল (সা ) স্বপ্ন দেখেন যে, তিনি পবিত্র কাবা ঘরে প্রবেশ করছেন। সে বছর রাসুল ও তাঁর সাহাবীগণ মক্কাতে প্রবেশ লাভ করতে পারেন নাই সত্য, তবে পরের বছর তাঁর এই স্বপ্ন সফল হয়। তিনি ও তাঁর সাহাবীরা পরের বৎসর মক্কায় প্রবেশ লাভ করেন কোনওরূপ প্রতিরোধ ব্যতীত। সেবারেই তিনি ও তাঁর সাহাবীরা আনুষ্ঠানিকভাবে এহ্রাম পরিধান করে মস্তকমুন্ডিত করে আনুষ্ঠানিকভাবে হজ্বব্রত পালন করেন।
আয়াতঃ 048.028
তিনিই তাঁর রসূলকে হেদায়েত ও সত্য ধর্মসহ প্রেরণ করেছেন, যাতে একে অন্য সমস্ত ধর্মের উপর জয়যুক্ত করেন। সত্য প্রতিষ্ঠাতারূপে আল্লাহ যথেষ্ট।
He it is Who has sent His Messenger (Muhammad SAW) with guidance and the religion of truth (Islâm), that He may make it (Islâm) superior over all religions. And All-Sufficient is Allâh as a Witness.
هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَكَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا
Huwa allathee arsala rasoolahu bialhuda wadeeni alhaqqi liyuthhirahu AAala alddeeni kullihi wakafa biAllahi shaheedan
YUSUFALI: It is He Who has sent His Messenger with Guidance and the Religion of Truth, to proclaim it over all religion: and enough is Allah for a Witness.
PICKTHAL: He it is Who hath sent His messenger with the guidance and the religion of truth, that He may cause it to prevail over all religion. And Allah sufficeth as a Witness.
SHAKIR: He it is Who sent His Messenger with the guidance and the true religion that He may make it prevail over all the religions; and Allah is enough for a witness.
KHALIFA: He is the One who sent His messenger with the guidance and the religion of truth, to make it prevail over all other religions. GOD suffices as a witness.
২৮। তিনিই তাঁর রসুলকে পথনির্দ্দেশ এবং সত্য ধর্মসহ প্রেরণ করেছেন, সকল দ্বীনের উপরে একে জয়যুক্ত করার জন্য। আর সাক্ষী হিসেবে আল্লাহ্-ই যথেষ্ট ৪৯১২।
৪৯১২। আল্লাহ্র রাসুল (সা ) ও ইসলামের ধরাতলে আগমন হচ্ছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সত্যের আগমন। জীবনের এমন কোনও ক্ষেত্র নাই যার বিধান ইসলাম প্রচার করে নাই। দেখুন [ ৬১ : ৯ ] আয়াত ও টিকা ৫৪৪২।
আয়াতঃ 048.029
মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল এবং তাঁর সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল। আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় আপনি তাদেরকে রুকু ও সেজদারত দেখবেন। তাদের মুখমন্ডলে রয়েছে সেজদার চিহ্ন । তওরাতে তাদের অবস্থা এরূপ এবং ইঞ্জিলে তাদের অবস্থা যেমন একটি চারা গাছ যা থেকে নির্গত হয় কিশলয়, অতঃপর তা শক্ত ও মজবুত হয় এবং কান্ডের উপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে-চাষীকে আনন্দে অভিভুত করে-যাতে আল্লাহ তাদের দ্বারা কাফেরদের অন্তর্জালা সৃষ্টি করেন। তাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা ও মহাপুরস্কারের ওয়াদা দিয়েছেন।
Muhammad (SAW) is the Messenger of Allâh, and those who are with him are severe against disbelievers, and merciful among themselves. You see them bowing and falling down prostrate (in prayer), seeking Bounty from Allâh and (His) Good Pleasure. The mark of them (i.e. of their Faith) is on their faces (foreheads) from the traces of (their) prostration (during prayers). This is their description in the Taurât (Torah). But their description in the Injeel (Gospel) is like a (sown) seed which sends forth its shoot, then makes it strong, it then becomes thick, and it stands straight on its stem, delighting the sowers that He may enrage the disbelievers with them. Allâh has promised those among them who believe (i.e. all those who follow Islâmic Monotheism, the religion of Prophet Muhammad SAW till the Day of Resurrection) and do righteous good deeds, forgiveness and a mighty reward (i.e. Paradise).
مُّحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاء عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاء بَيْنَهُمْ تَرَاهُمْ رُكَّعًا سُجَّدًا يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِّنَ اللَّهِ وَرِضْوَانًا سِيمَاهُمْ فِي وُجُوهِهِم مِّنْ أَثَرِ السُّجُودِ ذَلِكَ مَثَلُهُمْ فِي التَّوْرَاةِ وَمَثَلُهُمْ فِي الْإِنجِيلِ كَزَرْعٍ أَخْرَجَ شَطْأَهُ فَآزَرَهُ فَاسْتَغْلَظَ فَاسْتَوَى عَلَى سُوقِهِ يُعْجِبُ الزُّرَّاعَ لِيَغِيظَ بِهِمُ الْكُفَّارَ وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ مِنْهُم مَّغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا
Muhammadun rasoolu Allahi waallatheena maAAahu ashiddao AAala alkuffari ruhamao baynahum tarahum rukkaAAan sujjadan yabtaghoona fadlan mina Allahi waridwanan seemahum fee wujoohihim min athari alssujoodi thalika mathaluhum fee alttawrati wamathaluhum fee al-injeeli kazarAAin akhraja shat-ahu faazarahu faistaghlatha faistawa AAala sooqihi yuAAjibu alzzurraAAa liyagheetha bihimu alkuffara waAAada Allahu allatheena amanoo waAAamiloo alssalihati minhum maghfiratan waajran AAatheeman
YUSUFALI: Muhammad is the messenger of Allah; and those who are with him are strong against Unbelievers, (but) compassionate amongst each other. Thou wilt see them bow and prostrate themselves (in prayer), seeking Grace from Allah and (His) Good Pleasure. On their faces are their marks, (being) the traces of their prostration. This is their similitude in the Taurat; and their similitude in the Gospel is: like a seed which sends forth its blade, then makes it strong; it then becomes thick, and it stands on its own stem, (filling) the sowers with wonder and delight. As a result, it fills the Unbelievers with rage at them. Allah has promised those among them who believe and do righteous deeds forgiveness, and a great Reward.
PICKTHAL: Muhammad is the messenger of Allah. And those with him are hard against the disbelievers and merciful among themselves. Thou (O Muhammad) seest them bowing and falling prostrate (in worship), seeking bounty from Allah and (His) acceptance. The mark of them is on their foreheads from the traces of prostration. Such is their likeness in the Torah and their likeness in the Gospel – like as sown corn that sendeth forth its shoot and strengtheneth it and riseth firm upon its stalk, delighting the sowers – that He may enrage the disbelievers with (the sight of) them. Allah hath promised, unto such of them as believe and do good works, forgiveness and immense reward.
SHAKIR: Muhammad is the Messenger of Allah, and those with him are firm of heart against the unbelievers, compassionate among themselves; you will see them bowing down, prostrating themselves, seeking grace from Allah and pleasure; their marks are in their faces because of the effect of prostration; that is their description in the Taurat and their description in the Injeel; like as seed-produce that puts forth its sprout, then strengthens it, so it becomes stout and stands firmly on its stem, delighting the sowers that He may enrage the unbelievers on account of them; Allah has promised those among them who believe and do good, forgiveness and a great reward.
KHALIFA: Muhammad – the messenger of GOD – and those with him are harsh and stern against the disbelievers, but kind and compassionate amongst themselves. You see them bowing and prostrating, as they seek GOD’s blessings and approval. Their marks are on their faces, because of prostrating. This is the same example as in the Torah. Their example in the Gospel is like plants that grow taller and stronger, and please the farmers. He thus enrages the disbelievers. GOD promises those among them who believe, and lead a righteous life, forgiveness and a great recompense.
২৯। মুহম্মদ আল্লাহ্র রাসুল ; তাঁর সাথে যারা আছে তারা অবিশ্বাসীদের প্রতি কঠোর, [ কিন্তু ] পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি সম্পন্ন ৪৯১৩। আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদের রুকু ও সেজদায় অবনত হতে দেখবে ৪৯১৪। তাদের মুখমন্ডলে সিজ্দার প্রভাব পরিস্ফুট থাকবে ৪৯১৫। তাওরাতে এদের উপমা এরূপ ৪৯১৬ এবং ইঞ্জিলেও এদের উপমা হচ্ছে এরূপ ৪৯১৭: যেনো [ ছোট্ট ] বীজ যা দুটি পত্রফলক বের করে ; তার পরে তা শক্ত হয়, এর পরে তা মজবুত হয় ও কান্ডের উপরে দাঁড়ায়, যা [ চাষীকে ] বিস্ময় ও আনন্দ বর্ষণ করে। এভাবেই আল্লাহ্ [ মুমিনদের সমৃদ্ধি দ্বারা ] অবিশ্বাসীদের হৃদয় আক্রোশে পূর্ণ করেন। যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে আল্লাহ্ তাদের ক্ষমার ও মহাপুরষ্কারের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
৪৯১৩। দেখুন অনুরূপ আয়াত [ ৯ : ১২৮ ]। রাসুলের সহচরগণ হচ্ছেন আল্লাহ্র প্রতি একান্ত নিবেদিত মোমেন বান্দা। তাঁরা কাফেরদের প্রতি বা যারা আল্লাহ্র আইন অমান্যকারীদের প্রতি কঠোর, অপরপক্ষে নিজ সম্প্রদায় যারা মোমেন বা আল্লাহ্র অনুসারী, তাদের প্রতি ভ্রাতৃসম এবং দুর্বল ও অত্যাচারীতদের প্রতি ভাতৃসম সৌহার্দ্যপূর্ণ। তাঁদের সাহায্য ও সহযোগীতার জন্য এ সব আল্লাহ্ ভক্তদের হস্ত সর্বদা সম্প্রসারিত হয়। আল্লাহ্ ভক্তদের গুণাবলী সংক্ষেপে এই আয়াতের মাধ্যমে বর্ণনা করা হয়েছে।
৪৯১৪। আল্লাহ্ ভক্তদের আরও গুণাবলী বর্ণনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যে এরা হবেন বিনয়ী – আল্লাহ্ ও রাসুলের আনুগত্যে তারা সর্বদা বিনয়াবনত। তারা পার্থিব ক্ষমতা, জাঁকজমক, অথবা চাকচিক্যের নিকট অবনত হন না। তাদের আনুগত্য ও বিনয় হবে শুধুমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের জন্য। জাগতিক কোনও সুযোগ, সুবিধা বা পার্থিব সম্মান তাঁদের কাম্য নয়। ”আল্লাহ্র সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদের রুকু সেজদায় অবনত হতে দেখবে।”
৪৯১৫। আল্লাহ্র প্রতি তাঁদের এই ভালোবাসা তারা বাইরের পৃথিবীতে প্রদর্শন করতে না চাইলেও তাদের সমস্ত অবয়বে তা পরিষ্ফুট হয়ে পড়ে। কারণ আল্লাহ্র প্রতি এই ভালোবাসাতে তাদের হৃদয় মন হয়ে পড়ে আপ্লুত, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে তাদের মুখমন্ডলে। মুখমন্ডল হচ্ছে প্রতিটি ব্যক্তির অন্তরের বহিঃপ্রকাশের অঙ্গ। “মুখমন্ডলে সিজ্দার চিহ্ন দেখিবে” এই বাক্যটিকে যদি আক্ষরিক অর্থে গ্রহণ করা হয় তবে এর অর্থ দাঁড়ায় পুণঃপুণঃ সেজ্দা করার ফলে তাঁদের কপালে সেজদার চিহ্ন অঙ্কিত হয়ে পড়ে। প্রকৃতপক্ষে সেটাই শেষ কথা নয়। একজন ভালো, সৎ ও পূণ্যবান ব্যক্তির চেহারা, আচার-আচরণ, কথা-বার্তা, ইত্যাদির মাধ্যমে তার অন্তরের যে দীপ্তি, যা আল্লাহ্ কর্তৃক প্রদত্ত তা প্রস্ফুটিত হয়ে পড়ে। তিনি হবেন ভদ্র, দয়ালু, ক্ষমাশীল, সাহায্যকারী, সৎ ও সর্বপরি সর্ববিষয়ে আল্লাহ্র প্রতি নির্ভরশীল। এদের অন্তরে আল্লাহ্ প্রশান্তি প্রদান করেন। [ Sakina ৪৮ : ২৬ আয়াত ] যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে তাদের মুখমন্ডলে ও সর্ব অবয়বে। এই মানসিক প্রশান্তি একমাত্র আল্লাহ্ ব্যতীত পৃথিবীর অন্য কোন শক্তি দান করার ক্ষমতা রাখে না।
৪৯১৬। ‘তওরাত’ হচ্ছে হযরত মুসার দেয় আল্লাহ্র কিতাব – যা বর্তমানে অবিকৃত অবস্থায় নাই। বর্তমান গ্রন্থ ‘Pentatench’ হচ্ছে হযরত মুসার কিতাবের বিকৃত অংশ বিশেষ। তওরাতে সিজ্দাকে বর্ণনা করা হয়েছে বিনয় প্রকাশের সর্বোচ্চ মাধ্যম হিসেবে। সেখানে বলা হয়েছে, “Moses and Aron fell upon their faces ” [ Num xvi 22 ]।
৪৯১৭। “ইঞ্জিল ” – খৃষ্টানদের ধর্মগ্রন্থ। এই গ্রন্থে বীজের উপমাকে ব্যবহার করা হয়েছে। কি ভাবে ভালো বীজ থেকে ভালো ফসল উৎপন্ন হয় যা বপনকারীর ধারণারও বাইরে। বর্ণনাটি এরূপ,”The seed should spring and grow up, he knoweth not how; for the earth bringeth forth fruit of herself : first the blade, then the ear , after that the full corn in the ear .” [ Mark iv 27 -28 ] । রাসুল ( সা ) কর্তৃক ইসলামের প্রচার ও প্রসার ছিলো ঠিক উপরের ঐ বর্ণনার ন্যায়। ক্ষুদ্র বীজ যখন বপন করা হয়; মনে হয় তা মাটির অভ্যন্তরে হারিয়ে গেছে। দৃষ্টিতে তা আর ভাস্বর হয় না। কিন্তু মাটির অভ্যন্তরে বীজ হয়ে ওঠে সজীব – একদিন তা অঙ্কুরিত হয়, ধীরে ধীরে বড় হয় ; শক্ত মজবুত হয়ে নিজ কান্ডের উপরে দৃঢ় ভিত্তিতে দাড়িয়ে পড়ে এবং একদিন মহীরূহুতে পরিণত হয়। তখন একজন অন্ধ ব্যক্তিও তার অস্তিত্বকে অস্বীকার করতে পারে না। ইসলামের প্রচার ও প্রসার এবং মুমিনদের উপমা হচ্ছে মহীরূহু এর বীজের ন্যায়। কোরাণের বর্ণনায় উপমাটির খুঁটিনাটি জীবন্তভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বীজ বপনকারী চাষীর মানসিক আনন্দকে তুলে ধরা হয়েছে নিম্নের বাক্যটি দ্বারা : “তার পরে তা শক্ত হয়, এর পরে তা মজবুত হয় ও কান্ডের উপরে দাঁড়ায়, যা চাষীকে বিস্ময় ও আনন্দ বর্ষণ করে” সেরূপ সৎ কাজ বা ভালো কাজ সর্বদা আল্লাহ্র সাহায্যপুষ্ট হয় এবং খুব ক্ষুদ্র পরিসরে তার প্রথম প্রকাশ ঘটে ঐ বীজের অঙ্কুরোদগমের ন্যায় – অনেক সময়ে যা দৃষ্টিগোচর হয় না। যদি সৎ কাজের নিয়ত বা উদ্দেশ্য হয় আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের জন্য তবে তা আল্লাহ্র রহমতে ধন্য হয়ে বিস্তার লাভ করবে এবং বীজ থেকে উদ্গত ছোট চারা গাছের মহীরূহুতে পরিণত হওয়ার ন্যায় একদিন তা বিশাল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে বাধ্য।
৪৯১৮। ইসলামের অপূর্ব প্রসার ও প্রচার এবং শক্তিশালী জাতি হিসেবে পৃথিবীতে অভ্যুত্থান কাফেরদের বিভ্রান্ত করে ফেলে এবং তাদের অন্তরে অন্তর্জালার সৃষ্টি করে। তারা দুর্দ্দান্ত ক্রোধে অন্ধ হয়ে পড়ে। অপরপক্ষে, রাসুল ( সা ) ও তাঁর সহযোগীরা তাঁদের এই সাফল্যে ছিলেন পরিতৃপ্ত, আনন্দিত এবং বিস্মিত। এই আয়াতটির শেষ উপদেশটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে : যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ্ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন “ক্ষমা ও মহাপুরষ্কার।” আল্লাহ্র এই প্রতিশ্রুতি সর্বকালের সর্বমানুষের জন্য প্রযোজ্য।