৪৮৬৪। সাধারণ মানুষ ও প্রকৃত মোমেন বান্দার যে পার্থক্য তা এই আয়াতের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। সাধারণ মানুষ প্রকৃতিগতভাবেই দুর্বলচিত্ত। ফলে সে বিশ্বাস থাকা সত্ত্বেও আল্লাহ্র রাস্তায় অর্থাৎ মহৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ানের জন্য মুক্তহস্তে ব্যয় করতে অপারগ। তাঁর এই ব্যয়কুণ্ঠ স্বভাব তার মানবিক দুর্বলতা। এটা কোনও গুণ নয়। কারণ কৃপণতা ব্যক্তির সুক্ষ মানবিক অনুভূতিকে নষ্ট করে দেয়। এ ক্ষতি কৃপণের ; আল্লাহ্ অভাবমুক্ত, স্বাধীন – কারও দানের উপরে তিনি নির্ভরশীল নন। তবে আল্লাহ্র পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয় মানুষের মাধ্যমেই। যে বা যারা তা বাস্তবায়িত করেন তারা হন চারিত্রিক গুণে গুণান্বিত। এই অর্জিত গুণই হচ্ছে পার্থিব জগতে আল্লাহ্র বিশেষ দান। আল্লাহ্র রাস্তায় কাজ করা, মানুষের নিজস্ব কল্যাণের জন্য প্রয়োজন। আল্লাহ্র সেবার মাধ্যমেই আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভ করা সম্ভব। আমরা তাঁর করুণাপ্রার্থী।
৪৮৬৫। এই পৃথিবীর জীবন মঞ্চে মানুষ অভিনয় করে চলে কোন অদৃশ্য সূতার করাঙ্গুলে। মানব সভ্যতার সুনির্দ্দিষ্ট অগ্রগতি সেই অদৃশ্য অঙ্গুলির সংকেত মাত্র। এ অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করার ক্ষমতা কারও নাই। মানুষ এই অগ্রযাত্রার নিমিত্ত মাত্র। যে এই অগ্রযাত্রায় আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে সমর্পিত হয়ে আল্লাহ্র রাস্তায় নিজস্ব মেধা, মননশক্তি, অর্থ-সম্পদ, প্রভাব-ক্ষমতা ব্যয় করে সেই ধন্য। যদি কেউ না করে তবে তার দরুণ আল্লাহ্র পরিকল্পনা ব্যর্থ হবার নয়। অন্য আর এক দল আল্লাহ্র বিজয় পতাকা উর্দ্ধে উত্তোলিত করে ধরবে। পৃথিবীর অগ্রযাত্রা থেমে থাকবে না। থেমে যাবে সেই পথিক বা জাতি যে আল্লাহ্র রাস্তায় ব্যয়কুণ্ঠ। সে যাবে পিছনে পড়ে,অন্য আর এক দল তার স্থান দখল করে নেবে – যারা ভীরু নয়, যারা আল্লাহ্র কাজে অবিশ্বস্ত নয়। কবি ‘Wordsworth’ এর ভাষায় ‘High Heaven rejects the lore of nicely calculated less or more’.