- সূরার নাম: সূরা আহকাফ
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা আহকাফ
আয়াতঃ 046.001
হা-মীম।
HâMîm. [These letters are one of the miracles of the Qur’ân and none but Allâh (Alone) knows their meanings].
حم
Ha-meem
YUSUFALI: Ha-Mim.
PICKTHAL: Ha. Mim.
SHAKIR: Ha Mim.
KHALIFA: H. M.
০১। হা – মীম।
০২। এই কিতাবের প্রত্যাদেশ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহ্র নিকট থেকে আগত ৪৭৭৫।
৪৭৭৫। এই আয়াতটি পূর্ববর্তী সূরার দ্বিতীয় আয়াতের অনুরূপ। কিন্তু দুইটি সূরার বিষয়বস্তুতে বিভিন্নতা আছে। ৪৫ নং সূরাতে বিবৃত করা হয়েছে যে, কিভাবে সত্য ও প্রত্যাদেশের প্রত্যাখানকারীরা শেষ পর্যন্ত নতজানু হয়ে বশ্যতা স্বীকার করে থাকে। শেষ পর্যন্ত তারা প্রত্যাদেশের সত্য ও ক্ষমতাকে অস্বীকার করতে পারে না। এই সূরাতে বিবৃত করা হয়েছে যে সত্য এবং প্রত্যাদেশ শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হবেই, তবে তার জন্য প্রয়োজন ধৈর্য্য এবং দৃঢ়তা। [ ৪৬ : ৩৫ ]।
আয়াতঃ 046.002
ই কিতাব পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।
The revelation of the Book (this Qur’ân) is from Allâh, the All-Mighty, the All-Wise.
تَنْزِيلُ الْكِتَابِ مِنَ اللَّهِ الْعَزِيزِ الْحَكِيمِ
Tanzeelu alkitabi mina Allahi alAAazeezi alhakeemi
YUSUFALI: The Revelation of the Book is from Allah the Exalted in Power, Full of Wisdom.
PICKTHAL: The revelation of the Scripture is from Allah the Mighty, the Wise.
SHAKIR: The revelation of the Book is from Allah, the Mighty, the Wise.
KHALIFA: The revelation of this scripture is from GOD, the Almighty, Most Wise.
০১। হা – মীম।
০২। এই কিতাবের প্রত্যাদেশ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহ্র নিকট থেকে আগত ৪৭৭৫।
৪৭৭৫। এই আয়াতটি পূর্ববর্তী সূরার দ্বিতীয় আয়াতের অনুরূপ। কিন্তু দুইটি সূরার বিষয়বস্তুতে বিভিন্নতা আছে। ৪৫ নং সূরাতে বিবৃত করা হয়েছে যে, কিভাবে সত্য ও প্রত্যাদেশের প্রত্যাখানকারীরা শেষ পর্যন্ত নতজানু হয়ে বশ্যতা স্বীকার করে থাকে। শেষ পর্যন্ত তারা প্রত্যাদেশের সত্য ও ক্ষমতাকে অস্বীকার করতে পারে না। এই সূরাতে বিবৃত করা হয়েছে যে সত্য এবং প্রত্যাদেশ শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হবেই, তবে তার জন্য প্রয়োজন ধৈর্য্য এবং দৃঢ়তা। [ ৪৬ : ৩৫ ]।
আয়াতঃ 046.003
নভোমন্ডল, ভূ-মন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু আমি যথাযথভাবেই এবং নির্দিষ্ট সময়ের জন্যেই সৃষ্টি করেছি। আর কাফেররা যে বিষয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে, তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
We created not the heavens and the earth and all that is between them except with truth, and for an appointed term. But those who disbelieve turn away from that whereof they are warned.
مَا خَلَقْنَا السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا إِلَّا بِالْحَقِّ وَأَجَلٍ مُّسَمًّى وَالَّذِينَ كَفَرُوا عَمَّا أُنذِرُوا مُعْرِضُونَ
Ma khalaqna alssamawati waal-arda wama baynahuma illa bialhaqqi waajalin musamman waallatheena kafaroo AAamma onthiroo muAAridoona
YUSUFALI: We created not the heavens and the earth and all between them but for just ends, and for a Term Appointed: But those who reject Faith turn away from that whereof they are warned.
PICKTHAL: We created not the heavens and the earth and all that is between them save with truth, and for a term appointed. But those who disbelieve turn away from that whereof they are warned.
SHAKIR: We did not create the heavens and the earth and what is between them two save with truth and (for) an appointed term; and those who disbelieve turn aside from what they are warned of.
KHALIFA: We did not create the heavens and the earth, and everything between them except for a specific purpose, and for a finite interim. Those who disbelieve are totally oblivious to the warnings given to them.
০৩। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং উহাদের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছুই আমি নির্দ্দিষ্ট লক্ষ্যে এবং নির্দ্দিষ্ট কালের জন্য সৃষ্টি করেছি ৪৭৭৬। কিন্তু যারা কাফের তারা, তাদের যে বিষয়ে সর্তক করা হয়েছে, তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
৪৭৭৬। দেখুন [ ৪৫ : ২২ ] আয়াত। মানুষের সীমাবদ্ধ জ্ঞানে সৃষ্টির বহু জিনিষকে মনে হয় অপ্রয়োজনীয়,অদ্ভুদ ও ব্যাখ্যার অতীত। কিন্তু এই বিশাল বিশ্ব ভূবনের প্রতিটি জিনিষই স্রষ্টা এক নির্দ্দিষ্ট উদ্দেশ্যের প্রতি নিবেদিত করে সৃষ্টি করেছেন। আমরা আমাদের সীমাবদ্ধ জ্ঞানে তা উপলব্ধি করতে পারি বা না পারি কিন্তু স্রষ্টার নির্দ্দিষ্ট উদ্দেশ্য পরিপূর্ণতা লাভ করবেই। কারণ স্রষ্টার প্রতিটি সৃষ্টিই ‘যথাযথ’ এবং তা এক নির্দ্দিষ্ট কালের মেয়াদে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই আয়াতে এই কথাই বলা হয়েছে যে, পৃথিবীর কিছুই চিরস্থায়ী নয়। প্রতিটি জিনিষকেই এক নির্দ্দিষ্ট উদ্দেশ্যে এবং নির্দ্দিষ্ট কালের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। নির্দ্দিষ্ট সময় অন্তে প্রতিটি জিনিষ ধ্বংস হয়ে যাবে। পৃথিবীর নাট্যমঞ্চে জাতির উত্থান পতনও সেরূপ। নির্দ্দিষ্ট সময় অন্তে প্রত্যেকে প্রত্যেকের ভূমিকা শেষ করে চলে যায়। কোনও কিছুই এই পৃথিবীতে স্থায়ী নয়। চিরস্থায়ী শুধুমাত্র আল্লাহ্র বাণী। জীবনের এই সত্যকে কাফেররা উপলব্ধি করতে অক্ষম হয়। ফলে তারা তাদের প্রতি প্রেরিত সর্তকবাণীকে উপেক্ষা করে।
আয়াতঃ 046.004
বলুন, তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদের পূজা কর, তাদের বিষয়ে ভেবে দেখেছ কি? দেখাও আমাকে তারা পৃথিবীতে কি সৃষ্টি করেছে? অথবা নভোমন্ডল সৃজনে তাদের কি কোন অংশ আছে? এর পূর্ববর্তী কোন কিতাব অথবা পরস্পরাগত কোন জ্ঞান আমার কাছে উপস্থিত কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।
Say (O Muhammad SAW to these pagans): ”Think! All that you invoke besides Allâh show me! What have they created of the earth? Or have they a share in (the creation of) the heavens? Bring me a Book (revealed before this), or some trace of knowledge (in support of your claims), if you are truthful!”
قُلْ أَرَأَيْتُم مَّا تَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ أَرُونِي مَاذَا خَلَقُوا مِنَ الْأَرْضِ أَمْ لَهُمْ شِرْكٌ فِي السَّمَاوَاتِ اِئْتُونِي بِكِتَابٍ مِّن قَبْلِ هَذَا أَوْ أَثَارَةٍ مِّنْ عِلْمٍ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
Qul araaytum ma tadAAoona min dooni Allahi aroonee matha khalaqoo mina al-ardi am lahum shirkun fee alssamawati eetoonee bikitabin min qabli hatha aw atharatin min AAilmin in kuntum sadiqeena
YUSUFALI: Say: “Do ye see what it is ye invoke besides Allah? Show me what it is they have created on earth, or have they a share in the heavens bring me a book (revealed) before this, or any remnant of knowledge (ye may have), if ye are telling the truth!
PICKTHAL: Say (unto them, O Muhammad): Have ye thought on all that ye invoke beside Allah? Show me what they have created of the earth. Or have they any portion in the heavens? Bring me a scripture before this (Scripture), or some vestige of knowledge (in support of what ye say), if ye are truthful.
SHAKIR: Say: Have you considered what you call upon besides Allah? Show me what they have created of the earth, or have they a share in the heavens? Bring me a book before this or traces of knowledge, if you are truthful.
KHALIFA: Say, “Consider the idols you have set up beside GOD. Show me what on earth did they create. Do they own part of the heavens? Show me any other scripture before this one, or any piece of established knowledge that supports your idolatry, if you are truthful.”
০৪। বল : ” আল্লাহ্র পরিবর্তে তোমরা যাদের আহ্বান কর তাদের কথা ভেবে দেখেছ কি ? ৪৭৭৭ পৃথিবীতে তারা কি সৃষ্টি করেছে আমাকে দেখাও অথবা আকাশমন্ডলীতে উহাদের কোন অংশীদারিত্ব আছে কি ? যদি তোমরা সত্যবাদী হও, তবে ইহার পূবর্তন কোন কিতাব কিংবা [ ঐশী ] জ্ঞানের অবশিষ্টাংশ আমার নিকট নিয়ে এসো ৪৭৭৮।
৪৭৭৭। মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতা হচ্ছে মিথ্যা উপাস্যের উপাসনা করা। এই মিথ্যা উপাস্য সর্বদা মূর্তি হতে হবে এমন কোনও কথা নাই। কখনও তা বীর পূঁজা, কখনও ব্যক্তিপূঁজা, কখনও পীর পূঁজা, কখনও তা কোন মতবাদের পূঁজা, কখনও পূর্বপুরুষদের সংস্কৃতির পূঁজা, কখনও বিজ্ঞানের জ্ঞানকে শ্রেষ্ঠ ধারণা করা, আবার কখনও নিজস্ব আত্মগরিমার লালন পালন ইত্যাদি বহুরূপে মানুষ আল্লাহ্র পরিবর্তে অন্য কিছুর উপাসনা করে থাকে। এই মানব সম্প্রদায়কেই এই আয়াতে সম্বোধন করে বলা হয়েছে যে, একবার স্থিরভাবে চিন্তা করে দেখ, এসব মিথ্যা উপাস্যেরা কি কোনও কিছু সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে ? অথবা আকাশমন্ডলী অথবা মানুষের আধ্যাত্মিক জগতে এসব মিথ্যা উপাস্যদের কোন অংশীদারিত্ব আছে কি ?
৪৭৭৮। আরও বলা হয়েছে যে এ সব লোকের কাছে কি পূর্ববর্তী কোনও প্রত্যাদেশ রয়েছে যার ফলে তারা বর্তমান প্রত্যাদেশকে অস্বীকার করছে ? তাদের আহ্বান করা হয়েছে তাদের জ্ঞানের সত্যতাকে প্রমাণিত করতে। অবশ্যই তারা তা পারবে না।
আয়াতঃ 046.005
যে ব্যক্তি আল্লাহর পরিবর্তে এমন বস্তুর পূজা করে, যে কেয়ামত পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দেবে না, তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে? তারা তো তাদের পুজা সম্পর্কেও বেখবর।
And who is more astray than one who calls (invokes) besides Allâh, such as will not answer him till the Day of Resurrection, and who are (even) unaware of their calls (invocations) to them?
وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّن يَدْعُو مِن دُونِ اللَّهِ مَن لَّا يَسْتَجِيبُ لَهُ إِلَى يَومِ الْقِيَامَةِ وَهُمْ عَن دُعَائِهِمْ غَافِلُونَ
Waman adallu mimman yadAAoo min dooni Allahi man la yastajeebu lahu ila yawmi alqiyamati wahum AAan duAAa-ihim ghafiloona
YUSUFALI: And who is more astray than one who invokes besides Allah, such as will not answer him to the Day of Judgment, and who (in fact) are unconscious of their call (to them)?
PICKTHAL: And who is further astray than those who, instead of Allah, pray unto such as hear not their prayer until the Day of Resurrection, and are unconscious of their prayer,
SHAKIR: And who is in greater error than he who calls besides Allah upon those that will not answer him till the day of resurrection and they are heedless of their call?
KHALIFA: Who is farther astray than those who idolize beside GOD idols that can never respond to them until the Day of Resurrection, and are totally unaware of their worship?
০৫। এবং তার থেকে বেশী বিভ্রান্ত আর কে আছে যে আল্লাহ্র পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে যা শেষ বিচারের দিন পর্যন্ত সাড়া দিবে না ৪৭৭৯। বস্তুতঃ তারা তাদের ডাক সম্বন্ধে কোন খবরই রাখে না।
৪৭৭৯। আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কিছুর উপাসনার প্রকৃত পক্ষে কোনও যৌক্তিকতা নাই। কোনও জ্ঞান ও প্রজ্ঞাশীল লোক তা করতে পারে না। মূর্তিরূপ মিথ্যা উপাস্যগুলি নিষ্প্রাণ পাথরের স্তুপ মাত্র। তাদের কোনও কিছুতেই সাড়া দেয়ার ক্ষমতা নাই – কারণ তাদের কোনও বোধশক্তি নাই। শেষ বিচারের দিনে এসব উপাস্যরা উপাসনাকারীদের অস্বীকার করবে। অথবা যারা নিজস্ব কৃতিত্বে অহংকারে স্ফীত হয়ে আত্মপূঁজাতে নিমগ্ন হয়, শেষ বিচারের দিনে তাদের নিজস্ব মন, মেধা, কর্মকুশলতা এক কথায় বিভিন্ন চারিত্রিক দক্ষতা তাদের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দান করবে [ ৪১ : ২০ – ২৩ ]। যদি পৃথিবীতে কেউ মহৎ ব্যক্তিত্বের পূঁজা করে এমন কি নবী রসুলদেরও যেমন খৃষ্টানেরা যীশু খৃষ্টের পূঁজা করে, সে ক্ষেত্রেও শেষ বিচারের দিনে তারা তাদের পূঁজারীদের অস্বীকার করবেন [ ৫ : ১১৬ ]। সেরূপ কেউ যদি ফেরেশতাদের উপাসনা করে, তারাও সেদিন তা অস্বীকার করবে [ ৩৪ : ৪০- ৪১ ]। অর্থাৎ আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কিছুর উপরে নির্ভরশীলতা মানব জীবনের শেষ সাফল্য আনতে ব্যর্থ।
আয়াতঃ 046.006
যখন মানুষকে হাশরে একত্রিত করা হবে, তখন তারা তাদের শত্রু হবে এবং তাদের এবাদত অস্বীকার করবে।
And when mankind are gathered (on the Day of Resurrection), they (false deities) will become enemies for them and will deny their worshipping.
وَإِذَا حُشِرَ النَّاسُ كَانُوا لَهُمْ أَعْدَاء وَكَانُوا بِعِبَادَتِهِمْ كَافِرِينَ
Wa-itha hushira alnnasu kanoo lahum aAAdaan wakanoo biAAibadatihim kafireena
YUSUFALI: And when mankind are gathered together (at the Resurrection), they will be hostile to them and reject their worship (altogether)!
PICKTHAL: And when mankind are gathered (to the Judgment) will become enemies for them, and will become deniers of having been worshipped.
SHAKIR: And when men are gathered together they shall be their enemies, and shall be deniers of their worshipping (them).
KHALIFA: And when the people are summoned (on the Day of Judgment), their idols will become their enemies, and will denounce their idolatry.
০৬। [ পুরুত্থানের দিনে ] যখন মানব জাতিকে একত্র করা হবে, তখন, উহারা [ দেব-দেবীরা ] তাদের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন হবে এবং তাদের পূঁজাকে [সম্পূর্ণ ] অস্বীকার করবে।
০৭। যখন আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ উহাদের নিকট আবৃত্তি করা হয়, সত্য তাদের নিকট উপস্থিত হলেও তারা বলে, ” ইহা তো স্পষ্ট যাদু।” ৪৭৮০
৪৭৮০। পৃথিবীতে এ সব নির্বোধ কাফেরদের সম্মুখে যখন প্রকৃত সত্যকে উপস্থিত করা হয়,তারা তাকে ‘যাদু’ বলে আখ্যায়িত করে থাকে। দেখুন [ ২৭ : ১২ – ৪৫ ] ও টিকা ৪০৪২।
আয়াতঃ 046.007
যখন তাদেরকে আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ পাঠ করে শুনানো হয়, তখন সত্য আগমন করার পর কাফেররা বলে, এ তো প্রকাশ্য জাদু।
And when Our Clear Verses are recited to them, the disbelievers say of the truth (this Qur’ân), when it reaches them: ”This is plain magic!”
وَإِذَا تُتْلَى عَلَيْهِمْ آيَاتُنَا بَيِّنَاتٍ قَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلْحَقِّ لَمَّا جَاءهُمْ هَذَا سِحْرٌ مُّبِينٌ
Wa-itha tutla AAalayhim ayatuna bayyinatin qala allatheena kafaroo lilhaqqi lamma jaahum hatha sihrun mubeenun
YUSUFALI: When Our Clear Signs are rehearsed to them, the Unbelievers say, of the Truth when it comes to them: “This is evident sorcery!”
PICKTHAL: And when Our clear revelations are recited unto them, those who disbelieve say of the Truth when it reacheth them: This is mere magic.
SHAKIR: And when Our clear communications are recited to them, those who disbelieve say with regard to the truth when it comes to them: This is clear magic.
KHALIFA: When our revelations were recited to them, perfectly clear, those whodisbelieved said of the truth that came to them, “This is obviously magic!”
০৬। [ পুরুত্থানের দিনে ] যখন মানব জাতিকে একত্র করা হবে, তখন, উহারা [ দেব-দেবীরা ] তাদের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন হবে এবং তাদের পূঁজাকে [সম্পূর্ণ ] অস্বীকার করবে।
০৭। যখন আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ উহাদের নিকট আবৃত্তি করা হয়, সত্য তাদের নিকট উপস্থিত হলেও তারা বলে, ” ইহা তো স্পষ্ট যাদু।” ৪৭৮০
৪৭৮০। পৃথিবীতে এ সব নির্বোধ কাফেরদের সম্মুখে যখন প্রকৃত সত্যকে উপস্থিত করা হয়,তারা তাকে ‘যাদু’ বলে আখ্যায়িত করে থাকে। দেখুন [ ২৭ : ১২ – ৪৫ ] ও টিকা ৪০৪২।
আয়াতঃ 046.008
তারা কি বলে যে, রসূল একে রচনা করেছে? বলুন, যদি আমি রচনা করে থাকি, তবে তোমরা আল্লাহর শাস্তি থেকে আমাকে রক্ষা করার অধিকারী নও। তোমরা এ সম্পর্কে যা আলোচনা কর, সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবগত। আমার ও তোমাদের মধ্যে তিনি সাক্ষী হিসাবে যথেষ্ট। তিনি ক্ষমাশীল, দয়াময়।
Or say they: ”He (Muhammad SAW) has fabricated it.” Say: ”If I have fabricated it, still you have no power to support me against Allâh. He knows best of what you say among yourselves concerning it (i.e. this Qur’ân)! Sufficient is He for a witness between me and you! And He is the Oft-Forgiving, the Most Merciful.”
أَمْ يَقُولُونَ افْتَرَاهُ قُلْ إِنِ افْتَرَيْتُهُ فَلَا تَمْلِكُونَ لِي مِنَ اللَّهِ شَيْئًا هُوَ أَعْلَمُ بِمَا تُفِيضُونَ فِيهِ كَفَى بِهِ شَهِيدًا بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ وَهُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
Am yaqooloona iftarahu qul ini iftaraytuhu fala tamlikoona lee mina Allahi shay-an huwa aAAlamu bima tufeedoona feehi kafa bihi shaheedan baynee wabaynakum wahuwa alghafooru alrraheemu
YUSUFALI: Or do they say, “He has forged it”? Say: “Had I forged it, then can ye obtain no single (blessing) for me from Allah. He knows best of that whereof ye talk (so glibly)! Enough is He for a witness between me and you! And he is Oft-Forgiving, Most Merciful.”
PICKTHAL: Or say they: He hath invented it? Say (O Muhammad): If I have invented it, still ye have no power to support me against Allah. He is Best Aware of what ye say among yourselves concerning it. He sufficeth for a witness between me and you. And He is the Forgiving, the Merciful.
SHAKIR: Nay! they say: He has forged it. Say: If I have forged it, you do not control anything for me from Allah; He knows best what you utter concerning it; He is enough as a witness between me and you, and He is the Forgiving, the Merciful.
KHALIFA: When they say, “He fabricated this,” say, “If I fabricated this, then you cannot protect me from GOD. He is fully aware of everything you scheme. He suffices as a witness between me and you. He is the Forgiver, Most Merciful.”
০৮। অথবা তারা কি বলে, ” সে ইহা নকল করেছে ? ” বল : ” যদি আমি ইহা নিজে রচনা করে থাকি,তাহলে তোমরা তো আল্লাহ্র শাস্তি থেকে আমাকে কিছুতেই রক্ষা করতে পারবে না ৪৭৮১। তোমরা যে বিষয়ে আলোচনায় লিপ্ত আছ, সে সম্বন্ধে আল্লাহ্ সবিশেষ অবহিত। আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসেবে তিনিই যথেষ্ট। এবং তিনি বারে বারে ক্ষমাশীল এবং পরম করুণাময়। ”
৪৭৮১। ইবনে কাসীরের মতে এই আয়াতটির অর্থ হচ্ছে, যদি রসুলুল্লাহ্র [ সা ] নবুয়তের দাবী তাঁর নিজস্ব উদ্ভাবন হতো; তিনি যদি প্রকৃত আল্লাহ্র প্রেরিত রাসুল না হতেন ; তবে তাঁর এই মিথ্যা দাবীর জন্য চরম শাস্তি ভোগ করতে হতো। সেক্ষেত্রে আল্লাহ্র শাস্তি থেকে তাঁকে কেউই রক্ষা করতে পারতো না। এই আয়াতে ‘সে’ শব্দটি দ্বারা রাসুলুল্লাহকে [ সা ] বোঝানো হয়েছে।
আয়াতঃ 046.009
বলুন, আমি তো কোন নতুন রসূল নই। আমি জানি না, আমার ও তোমাদের সাথে কি ব্যবহার করা হবে। আমি কেবল তারই অনুসরণ করি, যা আমার প্রতি ওহী করা হয়। আমি স্পষ্ট সতর্ক কারী বৈ নই।
Say (O Muhammad SAW):”I am not a new thing among the Messengers (of Allâh) (i.e. I am not the first Messenger) nor do I know what will be done with me or with you. I only follow that which is revealed to me, and I am but a plain warner.”
قُلْ مَا كُنتُ بِدْعًا مِّنْ الرُّسُلِ وَمَا أَدْرِي مَا يُفْعَلُ بِي وَلَا بِكُمْ إِنْ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَى إِلَيَّ وَمَا أَنَا إِلَّا نَذِيرٌ مُّبِينٌ
Qul ma kuntu bidAAan mina alrrusuli wama adree ma yufAAalu bee wala bikum in attabiAAu illa ma yooha ilayya wama ana illa natheerun mubeenun
YUSUFALI: Say: “I am no bringer of new-fangled doctrine among the messengers, nor do I know what will be done with me or with you. I follow but that which is revealed to me by inspiration; I am but a Warner open and clear.”
PICKTHAL: Say: I am no new thing among the messengers (of Allah), nor know I what will be done with me or with you. I do but follow that which is inspired in me, and I am but a plain warner.
SHAKIR: Say: I am not the first of the messengers, and I do not know what will be done with me or with you: I do not follow anything but that which is revealed to me, and I am nothing but a plain warner.
KHALIFA: Say, “I am not different from other messengers. I have no idea what will happen to me or to you. I only follow what is revealed to me. I am no more than a profound warner.”
০৯। বল : ” আমি তো কোন অভিনব রসুল হয়ে আসি নাই ৪৭৮২। আমি তো জানি না যে, আমার সম্বন্ধে ও তোমাদের সম্বন্ধে কি করা হবে ? আমার প্রতি যে ওহী প্রেরণ করা হয়েছে, আমি শুধু তার-ই অনুসরণ করি। আমি তো একজন প্রকাশ্য এবং সুস্পষ্ট সর্তককারী মাত্র।
৪৭৮২। প্রকৃত পক্ষে রাসুলের [ সা ] শিক্ষাকে পর্যালোচনা করলে এই সত্যের সন্ধান মেলে যে প্রতিটি নবী রসুলের প্রচারিত সত্য এক ও অভিন্ন। তাঁরা সকলেই আল্লাহ্র একত্বের শিক্ষা দান করেছেন এবং সেই সাথে মানুষের প্রতি মানুষের কর্তব্য। এই আয়াতটির মাধ্যমে আল্লাহ্ রাসুলকে নির্দ্দেশ দান করেছেন বলতে যে, তাঁর প্রতি প্রেরিত প্রত্যাদেশ কোন মিথ্যা উদ্ভাবন নয়। তিনি কোন নূতন বার্তা বহন করে আনেন নাই। তাঁর নিকট প্রেরিত বার্তা হচ্ছে শ্বাসত সত্য যা যুগে যুগে প্রেরিত হয়েছে। যারা তা অস্বীকার করে তাদের শেষ পরিণতি আল্লাহ্র হাতে। রাসুলের দায়িত্ব হচ্ছে আল্লাহ্র প্রেরিত সত্যকে সঠিক ভাবে প্রচার করা।
আয়াতঃ 046.010
বলুন, তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয় এবং তোমরা একে অমান্য কর এবং বনী ইসরাঈলের একজন সাক্ষী এর পক্ষে সাক্ষ্য দিয়ে এতে বিশ্বাস স্থাপন করে; আর তোমরা অহংকার কর, তবে তোমাদের চেয়ে অবিবেচক আর কে হবে? নিশ্চয় আল্লাহ অবিবেচকদেরকে পথ দেখান না।
Say: ”Tell me! If this (Qur’ân) is from Allâh, and you deny it, and a witness from among the Children of Israel (’Abdullâh bin Salâm ÑÖì ) testifies that this Qur’ân is from Allâh [like the Taurât (Torah)], so he believed (embraced Islâm) while you are too proud (to believe).” Verily! Allâh guides not the people who are Zâlimûn (polytheists, disbelievers and wrong-doing).
قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِن كَانَ مِنْ عِندِ اللَّهِ وَكَفَرْتُم بِهِ وَشَهِدَ شَاهِدٌ مِّن بَنِي إِسْرَائِيلَ عَلَى مِثْلِهِ فَآمَنَ وَاسْتَكْبَرْتُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
Qul araaytum in kana min AAindi Allahi wakafartum bihi washahida shahidun min banee isra-eela AAala mithlihi faamana waistakbartum inna Allaha la yahdee alqawma alththalimeena
YUSUFALI: Say: “See ye? If (this teaching) be from Allah, and ye reject it, and a witness from among the Children of Israel testifies to its similarity (with earlier scripture), and has believed while ye are arrogant, (how unjust ye are!) truly, Allah guides not a people unjust.”
PICKTHAL: Bethink you: If it is from Allah and ye disbelieve therein, and a witness of the Children of Israel hath already testified to the like thereof and hath believed, and ye are too proud (what plight is yours)? Lo! Allah guideth not wrong-doing folk.
SHAKIR: Say: Have you considered if it is from Allah, and you disbelieve in it, and a witness from among the children of Israel has borne witness of one like it, so he believed, while you are big with pride; surely Allah does not guide the unjust people.
KHALIFA: Say, “What if it is from GOD and you disbelieved in it? A witness from the Children of Israel has borne witness to a similar phenomenon, and he has believed, while you have turned arrogant. Surely, GOD does not guide the wicked people.”
১০। বল : ” আচ্ছা,তোমরা কি ভেবে দেখেছ ? ৪৭৮৩ যদি ইহা [ কুর-আন ] আল্লাহ্র নিকট থেকে হয় ও তোমরা ইহাকে অমান্য কর, আর বনী ইসরাঈলের মধ্য থেকে একজন ইহার, [ পূর্ববর্তী কিতাবের ] সাথে সাদৃশ্য সম্বন্ধে সাক্ষ্য দেয়, এবং বিশ্বাস স্থাপন করে ৪৭৮৪, সেখানে তোমরা ঔদ্ধত্য প্রকাশ করলে ; [তাহলে কতটা অন্যায়কারী তোমরা !]। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ অন্যায়কারীদের সুপথ প্রদর্শন করেন না।”
৪৭৮৩। এই আয়াতের মাধ্যমে মোশরেক আরবদের সাবধান করা হয়েছে, ” হে মোশরেক আরব ! যদিও তোমরা অজ্ঞ জাতি, তবুও তোমরা মিথ্যা গর্বে স্ফীত হয়ে থাক। ইসরাঈলীদের মধ্যে অনেক লোক আছে যারা পূর্ববর্তী কিতাব সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল ; যারা জানে যে কোরাণ পূর্ববর্তী ধর্মগ্রন্থকে সত্যায়িত করে মাত্র। তারা ইসলামকে হযরত মুসার নিকট প্রেরিত প্রত্যাদেশের ধারাবাহিকতার ও পরিপূর্ণতা বলে বিশ্বাস করে [দেখুন Deut. xviii . 18- 19 ]। তোমাদের বুঝার সুবিধার্থে কোরাণ আরবী ভাষাতে অবতীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তোমরা তা অস্বীকার কর। কি অন্যায় ও লজ্জ্বাজনক তোমাদের আচরণ। সেক্ষেত্রে কিভাবে তোমরা আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও পথ নির্দ্দেশ পেতে পার ? ”
৪৭৮৪। সে সময়ে জ্ঞানী ইহুদী ও খৃষ্টান ব্যক্তিরা বুঝতে পেরেছিলেন যে, হযরত মুহম্মদ [ সা ] আল্লাহ্র প্রেরিত নবী এবং তাঁর প্রচারিত প্রত্যাদেশ পূর্ববর্তী ধর্মগ্রন্থকে সত্যায়ন করে থাকে। সুতারাং তারা সানন্দে ইসলাম গ্রহণ করে থাকেন। অনেকে মনে করেন আয়াতটিতে বিশিষ্ট ইহুদী আলেম আবদুল্লা-ইবনে সালাম সর্ম্পকে বলা হয়েছে। ইবনে সালাম ইসলাম গ্রহণ করেন মদীনায় রসুলের মৃত্যুর দুবছর পূর্বে। কিন্তু আয়াতটি অবতীর্ণ হয় মক্কায়। ইবনে সালামের ইসলাম গ্রহণের সাথে আয়াতটিকে সর্ম্পকিত করতে হলে আয়াতটিকে ভবিষ্যত বাণী হিসেবে ধরতে হয়। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, জ্ঞানী ও প্রকৃত ধর্মে বিশ্বাসী ইহুদীরা হৃদয়ঙ্গম করতে পেরেছিলেন যে, রাসুলের নিকট প্রেরিত প্রত্যাদেশ তাদের ধর্মগ্রন্থের ধারাবাহিকতা মাত্র।
আয়াতঃ 046.011
আর কাফেররা মুমিনদের বলতে লাগল যে, যদি এ দ্বীন ভাল হত তবে এরা আমাদেরকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারত না। তারা যখন এর মাধ্যমে সুপথ পায়নি, তখন শীঘ্রই বলবে, এ তো এক পুরাতন মিথ্যা।
And those who disbelieve (strong and wealthy) say of those who believe (weak and poor): ”Had it (Islâmic Monotheism to which Muhammad SAW is inviting mankind) been a good thing, they (weak and poor) would not have preceded us thereto!” And when they have not let themselves be guided by it (this Qur’ân), they say: ”This is an ancient lie!”
وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلَّذِينَ آمَنُوا لَوْ كَانَ خَيْرًا مَّا سَبَقُونَا إِلَيْهِ وَإِذْ لَمْ يَهْتَدُوا بِهِ فَسَيَقُولُونَ هَذَا إِفْكٌ قَدِيمٌ
Waqala allatheena kafaroo lillatheena amanoo law kana khayran ma sabaqoona ilayhi wa-ith lam yahtadoo bihi fasayaqooloona hatha ifkun qadeemun
YUSUFALI: The Unbelievers say of those who believe: “If (this Message) were a good thing, (such men) would not have gone to it first, before us!” And seeing that they guide not themselves thereby, they will say, “this is an (old,) falsehood!”
PICKTHAL: And those who disbelieve say of those who believe: If it had been (any) good, they would not have been before us in attaining it. And since they will not be guided by it, they say: This is an ancient lie;
SHAKIR: And those who disbelieve say concerning those who believe: If it had been a good, they would not have gone ahead of us therein. And as they do not seek to be rightly directed thereby, they say: It is an old lie.
KHALIFA: Those who disbelieved said about those who believed, “If it were anything good, they would not have accepted it before us.” Because they were not guided to it, they said, “This is an old fabrication!”
রুকু – ২
১১। অবিশ্বাসীরা বিশ্বাসীদের বলে, ” যদি [ এই ধর্ম ] ভালো হতো, তবে নিশ্চয় [ এই সকল সাধারণ লোকের] বহু পূর্বেই আমরা ইহার দিকে যেতাম ৪৭৮৫। ” এবং যখন তারা ইহা [ কুর-আন ] দ্বারা সৎপথে পরিচালিত হয় নাই, তখন তারা অবশ্য বলবে, ” ইহা তো এক পুরাতন মিথ্যা।”
৪৭৮৫। ইসলাম প্রচারের প্রথম দিকে যারা মক্কায় ইসলাম গ্রহণ করেছিলো তাদের অধিকাংশ ছিলেন গরীব, সুতারাং গর্বিত কোরাইশ নেতাগণ তাদের অসম্মানের সাথে ব্যবহার করতো। তাদের বক্তব্য ছিলো, যে যদি ইসলাম ধর্মে কোনও শ্রেষ্ঠত্বই থাকতো তবে তাদের মত নেতারাই সর্বাগ্রে তা দেখতে পেতো, ঐ গরীব সম্প্রদায় নয়। এবং তারাই সর্বাগ্রে তা গ্রহণ করতো, কারণ তারা জনসাধারণের নেতা। প্রকৃত সত্য হচ্ছে তারা ইসলামের মাঝে কোনও সৌন্দর্য বা শ্রেষ্ঠত্ব খুঁজে পাবে না, কারণ আধ্যাত্মিক অন্ধত্ব তাদের সমগ্র চেতনাকে গ্রাস করে ফেলেছে। অন্ধ অহংকার ও একগুয়েমি তাদের বিবেক ও বুদ্ধিকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। সুতারাং তাদের পক্ষে প্রকৃত সত্যের আলোকে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। অন্ধজনে যেরূপ আলোর সত্ত্বাকে উপলব্ধিতে অক্ষম, তারাও সেরূপ আধ্যাত্মিক অন্ধত্বের শীকার। যেহেতু ইসলাম, পূর্ববর্তী ধর্মগ্রন্থকে সত্যায়িত করে, সুতারাং এর ঐতিহাসিক ভিত্তি বর্তমান। কোরাইশরা যখন তা অস্বীকার করতে পারে না, তখন তারা একগুয়ে ভাবে বলে, ” ইহা তো এক পুরাতন মিথ্যা। “
আয়াতঃ 046.012
এর আগে মূসার কিতাব ছিল পথপ্রদর্শক ও রহমতস্বরূপ। আর এই কিতাব তার সমর্থক আরবী ভাষায়, যাতে যালেমদেরকে সতর্ক করে এবং সৎকর্মপরায়ণদেরকে সুসংবাদ দেয়।
And before this was the Scripture of Mûsa (Moses) as a guide and a mercy. And this is a confirming Book (the Qur’ân) in the Arabic language, to warn those who do wrong, and as glad tidings to the Muhsinûn (good-doers – see V.2:112).
وَمِن قَبْلِهِ كِتَابُ مُوسَى إِمَامًا وَرَحْمَةً وَهَذَا كِتَابٌ مُّصَدِّقٌ لِّسَانًا عَرَبِيًّا لِّيُنذِرَ الَّذِينَ ظَلَمُوا وَبُشْرَى لِلْمُحْسِنِينَ
Wamin qablihi kitabu moosa imaman warahmatan wahatha kitabun musaddiqun lisanan AAarabiyyan liyunthira allatheena thalamoo wabushra lilmuhsineena
YUSUFALI: And before this, was the Book of Moses as a guide and a mercy: And this Book confirms (it) in the Arabic tongue; to admonish the unjust, and as Glad Tidings to those who do right.
PICKTHAL: When before it there was the Scripture of Moses, an example and a mercy; and this is a confirming Scripture in the Arabic language, that it may warn those who do wrong and bring good tidings for the righteous.
SHAKIR: And before it the Book of Musa was a guide and a mercy: and this is a Book verifying (it) in the Arabic language that it may warn those who are unjust and as good news for the doers of good.
KHALIFA: Before this, the book of Moses provided guidance and mercy. This too is a scripture that confirms, in Arabic, to warn those who transgressed, and to give good news to the righteous.
১২। এর পূর্বে মুসার কিতাব ছিলো [ মানুষের জন্য ] পথপ্রদর্শক ও করুণা স্বরূপ। এবং এই কিতাব [কুর-আন ] ইহাকে সত্যায়িত করে, আরবী ভাষাতে ৪৭৮৬ ; অন্যায়কারীকে সাবধান করার জন্য ও ন্যায় কর্মশীলকে সুসংবাদ দান করার জন্য।
৪৭৮৬। পূর্ববর্তী ধর্মগ্রন্থ যা আল্লাহ্র নিকট থেকে প্রেরিত জীবন বিধান স্বরূপ [ Shariat] তা প্রেরিত হয়েছিলো হযরত মুসার নিকট থেকে। হযরত ঈসার নিকট প্রেরিত এরূপ কোন ধর্মগ্রন্থ নাই, ফলে তাঁর প্রচারিত নৈতিক ধর্মানুশাসনে দুর্নীতির অনুপ্রবেশ ঘটে। প্রকৃত পক্ষে হযরত ঈসার, পূর্ববর্তী প্রত্যাদেশ সম্পর্কে যে মনোভাব ছিলো কোরাণও ঠিক সেই একই মনোভাবের প্রচার করে। হযরত ঈসার বক্তব্য ছিলো, [ Matt. v. 17 ] : “Think not that I am come to destroy the law or the Prophets : I am not come to destroy , but to fulfill”. কিন্তু হযরত ঈসার তিরোধানের পরে সময়ের আবর্তনে খৃষ্টান ধর্মে দুর্নীতির অনুপ্রবেশ ঘটে, ফলে পৃথিবীতে জীবন বিধানের পুনঃসংস্কারের প্রয়োজন হয়ে পরে। ইসলামের আবির্ভাব সেই অভাব পূরণে সক্ষম হয়, যা হচ্ছে হযরত মুসার কিতাবের সমর্থক।
আয়াতঃ 046.013
নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ অতঃপর অবিচল থাকে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিত হবে না।
Verily, those who say: ”Our Lord is (only) Allâh,” and thereafter Istaqâmû (i.e. stood firm and straight on the Islâmic Faith of Monotheism by abstaining from all kinds of sins and evil deeds which Allâh has forbidden and by performing all kinds of good deeds which He has ordained), on them shall be no fear, nor shall they grieve.
إِنَّ الَّذِينَ قَالُوا رَبُّنَا اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوا فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ
Inna allatheena qaloo rabbuna Allahu thumma istaqamoo fala khawfun AAalayhim wala hum yahzanoona
YUSUFALI: Verily those who say, “Our Lord is Allah,” and remain firm (on that Path),- on them shall be no fear, nor shall they grieve.
PICKTHAL: Lo! those who say: Our Lord is Allah, and thereafter walk aright, there shall no fear come upon them neither shall they grieve.
SHAKIR: Surely those who say, Our Lord is Allah, then they continue on the right way, they shall have no fear nor shall they grieve.
KHALIFA: Surely, those who say, “Our Lord is GOD,” then lead a righteous life, will have no fear, nor will they grieve.
১৩। নিশ্চয় যারা বলে, ” আল্লাহ্ আমাদের প্রভু ” এবং [ তাতেই ] অটল থাকে ; তাদের কোন ভয় নাই, তারা দুঃখিতও হবে না ৪৭৮৭, ৪৭৮৮।
৪৭৮৭। ” আল্লাহ্ আমাদের প্রভু ” – এই বাক্যটি গভীর ব্যঞ্জনাময় ভাবের প্রকাশ ঘটায়। এর অর্থ আমরা অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে বিশ্বাস করি যে আমাদের সকল কর্ম শুধুমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য নিবেদিত। ” এই বিশ্বাসে অবিচলিত থাকার ” প্রধান শর্ত হচ্ছে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে, প্রতিটি আচরণে এই বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটানো। কর্মের মাধ্যমে, চরিত্রের মাধ্যমে, আমাদের প্রমাণ করতে হবে যে,আমরা আল্লাহ্র প্রতি কর্তব্য ও ভালোবাসায় অটল।
৪৭৮৮। দেখুন আয়াত [ ২ : ৩৮]। “তাদের কোন ভয় নাই, এবং তারা দুঃখিতও হবে না।” এই লাইনটি কোরাণ শরীফের বহু সূরার আয়াতে বিদ্যমান, অবশ্য প্রতিটি স্থানে প্রয়োগ ঘটেছে নূতন নূতন ঘটনার পটভূমিতে। এখানের প্রয়োগের পটভূমি হচ্ছে যে, যদি আমরা সর্বান্তকরণে বিশ্বাস করি যে, “আমাদের প্রতিপালক একমাত্র আল্লাহ্ ” – তাহলে আমাদের আর ভয় কিসের ? কোনও দুর্যোগই আমাদের আর দুঃখিত বা ভীত করতে পারবে না। কারণ এই বিশ্বাস যে একমাত্র আল্লাহ্ আমাদের প্রতিপালক, রক্ষাকর্তা, সাহায্যকারী। আমাদের আশা ও আকাঙ্খা, যদি অন্তরে দৃঢ়ভাবে থাকে, তবে সে অন্তর জীবনের কোন ক্ষেত্রেই বা মৃত্যুর পরেও কোনও হতাশা বা ভয় বা দুঃখে আক্রান্ত হবে না।
আয়াতঃ 046.014
তারাই জান্নাতের অধিকারী! তারা তথায় চিরকাল থাকবে। তারা যে কর্ম করত, এটা তারই প্রতিফল।
Such shall be the dwellers of Paradise, abiding therein (forever), a reward for what they used to do.
أُوْلَئِكَ أَصْحَابُ الْجَنَّةِ خَالِدِينَ فِيهَا جَزَاء بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
Ola-ika as-habu aljannati khalideena feeha jazaan bima kanoo yaAAmaloona
YUSUFALI: Such shall be Companions of the Gardens, dwelling therein (for aye): a recompense for their (good) deeds.
PICKTHAL: Such are rightful owners of the Garden, immortal therein, as a reward for what they used to do.
SHAKIR: These are the dwellers of the garden, abiding therein: a reward for what they did.
KHALIFA: They have deserved Paradise, where they abide forever; a reward for their works.
১৪। এরাই হবে বেহেশতের অধিবাসী ; সেখানে তারা স্থায়ী হবে ; তাদের [ ভালো ] কাজের পুরষ্কার স্বরূপ।
১৫। আমি মানুষকে তার পিতা -মাতার সাথে সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি ৪৭৮৯। তার মা দৈহিক যন্ত্রণার মাধ্যমে তাকে গর্ভে ধারণ করে, দৈহিক যন্ত্রণার সাথে তাকে প্রসব করে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে এবং তার দুধ ছাড়ানোতে ত্রিশ মাস [ সময় ] লাগে ৪৭৯০। অবশেষে, সে যখন পূর্ণ যৌবনে পৌঁছে, ৪৭৯১, এবং চল্লিশ বৎসরে উপণীত হয়, তখন সে বলে, ” হে আমার প্রভু ! তুমি আমাকে এই ক্ষমতা দান কর যেনো আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, আমার প্রতি ও আমার পিতা-মাতার প্রতি যে অনুগ্রহ দান করেছ, তার জন্য, এবং যেনো আমি সৎকাজ করতে পারি যা তুমি অনুমোদন কর। সন্তান সন্তানাদিদের ব্যাপারে আমার প্রতি অনুগ্রহশীল হও। নিশ্চয়ই আমি তোমার অভিমুখী হলাম এবং নিশ্চয়ই আমি আত্মসমর্পনকারীদের অন্তর্গত। ”
৪৭৮৯। দেখুন অনুরূপ আয়াত [ ২৯ : ৮ ] এবং [ ৩১ : ১৪ ]।
৪৭৯০। সূরা [ ৩১ : ১৪ ] আয়াতে স্তন্যদানের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে দুবৎসর অর্থাৎ ২৪ মাস। সূরা [ ২ : ২৩ ] আয়াতেও দু বৎসর সময়ের উল্লেখ আছে। এই আয়াতে গর্ভধারণ ও স্তন্যদান উভয়ের সময়কাল বর্ণিত হয়েছে ত্রিশ মাস। অতএব স্তন্যদানের দুবছর অর্থাৎ চব্বিশ মাস বাদ দিলে গর্ভধারণের জন্য ছয় মাস অবশিষ্ট থাকে। সুতারাং এটাই হবে গর্ভধারণের সর্বনিম্ন সময়কাল, যে সময় অতিক্রম করলে ভূমিষ্ট শিশু জীবিত থাকতে পারে। বর্তমানে বিজ্ঞান এ কথা স্বীকার করে যে গর্ভধারণের সর্বনিম্ন সময়কাল ছয় মাস হওয়া সম্ভবপর। এর কম সময়ে সন্তান সুস্থ ও পূর্ণাঙ্গ জন্মগ্রহণ করতে পারে না। গর্ভধারণের সর্বোচ্চ সময়সীমা ২৮০ দিন। অবশ্য সে ক্ষেত্রে স্তন্যদানের সময়সীমা দুবছরের কম হয়ে যাবে। দুবছর নির্ধারিত হয়েছে শিশুর ‘দুধ দাঁত’ ওঠা সম্পূর্ণ হয়ে যায়। ছয় থেকে নয় মাসের মধ্যে নীচের দুটো দাঁত ওঠে তারপরে ধীরে ধীরে অন্যান্য দাঁত উঠতে শুরু করে যতদিন না সমস্ত ওঠা শেষ হয়। মাড়ির দাঁত ওঠতে শুরু করে দুবছর বয়েসে। এভাবেই দুধ দাঁতের সারি পরিপূর্ণ হয় এবং শিশু মাতৃদুগ্ধ ব্যতীত অন্যন্য খাদ্যে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, কারণ এখন সে চিবুতে সক্ষম। ছয় বৎসর বয়েসে দুধ দাঁত পড়ে যেয়ে স্থায়ী দাঁত ওঠে এবং ১৮- ২০ বৎসর বয়েসে আক্কেল দাঁত ওঠে।
৪৭৯১। “পূর্ণ শক্তি প্রাপ্ত হয় [ ashudd ] ” – এই বয়েস হচ্ছে কৈশর শেষে যৌবনে প্রাপ্ত হওয়ার বয়েস। অর্থাৎ ১৮ থেকে ৩০/৩২ বৎসরের মধ্যে। ৩০ থেকে ৪০ বৎসরের মধ্যে মানুষ পূর্ণ যৌবন প্রাপ্ত হয় – জীবনের সকল ক্ষেত্রে সে পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়। এর পরে তার ক্ষয় শুরু হয়। ইতিমধ্যে পরবর্তী বংশধরগণ দায়িত্ব নেবার যোগ্যতা অর্জন করে। অপরপক্ষে ৪০ বৎসর পরেই মানুষের আধ্যাত্মিক জগতের দিগন্ত উম্মোচিত হতে শুরু করে।
আয়াতঃ 046.015
আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার জননী তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস। অবশেষে সে যখন শক্তি-সামর্থেøর বয়সে ও চল্লিশ বছরে পৌছেছে, তখন বলতে লাগল, হে আমার পালনকর্তা, আমাকে এরূপ ভাগ্য দান কর, যাতে আমি তোমার নেয়ামতের শোকর করি, যা তুমি দান করেছ আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং যাতে আমি তোমার পছন্দনীয় সৎকাজ করি। আমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ কর, আমি তোমার প্রতি তওবা করলাম এবং আমি আজ্ঞাবহদের অন্যতম।
And We have enjoined on man to be dutiful and kind to his parents. His mother bears him with hardship and she brings him forth with hardship, and the bearing of him, and the weaning of him is thirty (30) months, till when he attains full strength and reaches forty years, he says: ”My Lord! Grant me the power and ability that I may be grateful for Your Favour which You have bestowed upon me and upon my parents, and that I may do righteous good deeds, such as please You, and make my off-spring good. Truly, I have turned to You in repentance, and truly, I am one of the Muslims (submitting to Your Will).”
وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا حَتَّى إِذَا بَلَغَ أَشُدَّهُ وَبَلَغَ أَرْبَعِينَ سَنَةً قَالَ رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَى وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضَاهُ وَأَصْلِحْ لِي فِي ذُرِّيَّتِي إِنِّي تُبْتُ إِلَيْكَ وَإِنِّي مِنَ الْمُسْلِمِينَ
Wawassayna al-insana biwalidayhi ihsanan hamalat-hu ommuhu kurhan wawadaAAat-hu kurhan wahamluhu wafisaluhu thalathoona shahran hatta itha balagha ashuddahu wabalagha arbaAAeena sanatan qala rabbi awziAAnee an ashkura niAAmataka allatee anAAamta AAalayya waAAala walidayya waan aAAmala salihan tardahu waaslih lee fee thurriyyatee innee tubtu ilayka wa-innee mina almuslimeena
YUSUFALI: We have enjoined on man kindness to his parents: In pain did his mother bear him, and in pain did she give him birth. The carrying of the (child) to his weaning is (a period of) thirty months. At length, when he reaches the age of full strength and attains forty years, he says, “O my Lord! Grant me that I may be grateful for Thy favour which Thou has bestowed upon me, and upon both my parents, and that I may work righteousness such as Thou mayest approve; and be gracious to me in my issue. Truly have I turned to Thee and truly do I bow (to Thee) in Islam.”
PICKTHAL: And We have commended unto man kindness toward parents. His mother beareth him with reluctance, and bringeth him forth with reluctance, and the bearing of him and the weaning of him is thirty months, till, when he attaineth full strength and reacheth forty years, he saith: My Lord! Arouse me that I may give thanks for the favour wherewith Thou hast favoured me and my parents, and that I may do right acceptable unto Thee. And be gracious unto me in the matter of my seed. Lo! I have turned unto Thee repentant, and lo! I am of those who surrender (unto Thee).
SHAKIR: And We have enjoined on man doing of good to his parents; with trouble did his mother bear him and with trouble did she bring him forth; and the bearing of him and the weaning of him was thirty months; until when he attains his maturity and reaches forty years, he says: My Lord! grant me that I may give thanks for Thy favor which Thou hast bestowed on me and on my parents, and that I may do good which pleases Thee and do good to me in respect of my offspring; surely I turn to Thee, and surely I am of those who submit.
KHALIFA: We enjoined the human being to honor his parents. His mother bore him arduously, gave birth to him arduously, and took intimate care of him for thirty months. When he reaches maturity, and reaches the age of forty, he should say, “My Lord, direct me to appreciate the blessings You have bestowed upon me and upon my parents, and to do the righteous works that please You. Let my children be righteous as well. I have repented to You; I am a submitter.”
১৪। এরাই হবে বেহেশতের অধিবাসী ; সেখানে তারা স্থায়ী হবে ; তাদের [ ভালো ] কাজের পুরষ্কার স্বরূপ।
১৫। আমি মানুষকে তার পিতা -মাতার সাথে সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি ৪৭৮৯। তার মা দৈহিক যন্ত্রণার মাধ্যমে তাকে গর্ভে ধারণ করে, দৈহিক যন্ত্রণার সাথে তাকে প্রসব করে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে এবং তার দুধ ছাড়ানোতে ত্রিশ মাস [ সময় ] লাগে ৪৭৯০। অবশেষে, সে যখন পূর্ণ যৌবনে পৌঁছে, ৪৭৯১, এবং চল্লিশ বৎসরে উপণীত হয়, তখন সে বলে, ” হে আমার প্রভু ! তুমি আমাকে এই ক্ষমতা দান কর যেনো আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, আমার প্রতি ও আমার পিতা-মাতার প্রতি যে অনুগ্রহ দান করেছ, তার জন্য, এবং যেনো আমি সৎকাজ করতে পারি যা তুমি অনুমোদন কর। সন্তান সন্তানাদিদের ব্যাপারে আমার প্রতি অনুগ্রহশীল হও। নিশ্চয়ই আমি তোমার অভিমুখী হলাম এবং নিশ্চয়ই আমি আত্মসমর্পনকারীদের অন্তর্গত। ”
৪৭৮৯। দেখুন অনুরূপ আয়াত [ ২৯ : ৮ ] এবং [ ৩১ : ১৪ ]।
৪৭৯০। সূরা [ ৩১ : ১৪ ] আয়াতে স্তন্যদানের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে দুবৎসর অর্থাৎ ২৪ মাস। সূরা [ ২ : ২৩ ] আয়াতেও দু বৎসর সময়ের উল্লেখ আছে। এই আয়াতে গর্ভধারণ ও স্তন্যদান উভয়ের সময়কাল বর্ণিত হয়েছে ত্রিশ মাস। অতএব স্তন্যদানের দুবছর অর্থাৎ চব্বিশ মাস বাদ দিলে গর্ভধারণের জন্য ছয় মাস অবশিষ্ট থাকে। সুতারাং এটাই হবে গর্ভধারণের সর্বনিম্ন সময়কাল, যে সময় অতিক্রম করলে ভূমিষ্ট শিশু জীবিত থাকতে পারে। বর্তমানে বিজ্ঞান এ কথা স্বীকার করে যে গর্ভধারণের সর্বনিম্ন সময়কাল ছয় মাস হওয়া সম্ভবপর। এর কম সময়ে সন্তান সুস্থ ও পূর্ণাঙ্গ জন্মগ্রহণ করতে পারে না। গর্ভধারণের সর্বোচ্চ সময়সীমা ২৮০ দিন। অবশ্য সে ক্ষেত্রে স্তন্যদানের সময়সীমা দুবছরের কম হয়ে যাবে। দুবছর নির্ধারিত হয়েছে শিশুর ‘দুধ দাঁত’ ওঠা সম্পূর্ণ হয়ে যায়। ছয় থেকে নয় মাসের মধ্যে নীচের দুটো দাঁত ওঠে তারপরে ধীরে ধীরে অন্যান্য দাঁত উঠতে শুরু করে যতদিন না সমস্ত ওঠা শেষ হয়। মাড়ির দাঁত ওঠতে শুরু করে দুবছর বয়েসে। এভাবেই দুধ দাঁতের সারি পরিপূর্ণ হয় এবং শিশু মাতৃদুগ্ধ ব্যতীত অন্যন্য খাদ্যে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, কারণ এখন সে চিবুতে সক্ষম। ছয় বৎসর বয়েসে দুধ দাঁত পড়ে যেয়ে স্থায়ী দাঁত ওঠে এবং ১৮- ২০ বৎসর বয়েসে আক্কেল দাঁত ওঠে।
৪৭৯১। “পূর্ণ শক্তি প্রাপ্ত হয় [ ashudd ] ” – এই বয়েস হচ্ছে কৈশর শেষে যৌবনে প্রাপ্ত হওয়ার বয়েস। অর্থাৎ ১৮ থেকে ৩০/৩২ বৎসরের মধ্যে। ৩০ থেকে ৪০ বৎসরের মধ্যে মানুষ পূর্ণ যৌবন প্রাপ্ত হয় – জীবনের সকল ক্ষেত্রে সে পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়। এর পরে তার ক্ষয় শুরু হয়। ইতিমধ্যে পরবর্তী বংশধরগণ দায়িত্ব নেবার যোগ্যতা অর্জন করে। অপরপক্ষে ৪০ বৎসর পরেই মানুষের আধ্যাত্মিক জগতের দিগন্ত উম্মোচিত হতে শুরু করে।
আয়াতঃ 046.016
আমি এমন লোকদের সুকর্মগুলো কবুল করি এবং মন্দকর্মগুলো মার্জনা করি। তারা জান্নাতীদের তালিকাভুক্ত সেই সত্য ওয়াদার কারণে যা তাদেরকে দেওয়া হত।
They are those from whom We shall accept the best of their deeds and overlook their evil deeds. (They shall be) among the dwellers of Paradise, a promise of truth, which they have been promised.
أُوْلَئِكَ الَّذِينَ نَتَقَبَّلُ عَنْهُمْ أَحْسَنَ مَا عَمِلُوا وَنَتَجاوَزُ عَن سَيِّئَاتِهِمْ فِي أَصْحَابِ الْجَنَّةِ وَعْدَ الصِّدْقِ الَّذِي كَانُوا يُوعَدُونَ
Ola-ika allatheena nataqabbalu AAanhum ahsana ma AAamiloo wanatajawazu AAan sayyi-atihim fee as-habi aljannati waAAda alssidqi allathee kanoo yooAAadoona
YUSUFALI: Such are they from whom We shall accept the best of their deeds and pass by their ill deeds: (They shall be) among the Companions of the Garden: a promise! of truth, which was made to them (in this life).
PICKTHAL: Those are they from whom We accept the best of what they do, and overlook their evil deeds. (They are) among the owners of the Garden. This is the true promise which they were promised (in the world).
SHAKIR: These are they from whom We accept the best of what they have done and pass over their evil deeds, among the dwellers of the garden; the promise of truth which they were promised.
KHALIFA: It is from these that we accept the righteous works, and overlook their sins. They have deserved Paradise. This is the truthful promise that is promised to them.
১৬। আমি ইহাদেরই সৎ কর্মগুলি গ্রহণ করে থাকি ৪৭৯২ এবং মন্দ কর্মগুলি ক্ষমা করি ; তারা হবে বেহেশতবাসীদের অন্তর্ভূক্ত ; [ এই জীবনে ] তাদের যে সত্য প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তার খাতিরে।
৪৭৯২। দেখুন [ ২৯ : ৭ ] আয়াত ও টিকা ৩৪২৯।
আয়াতঃ 046.017
আর যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে বলে, ধিক তোমাদেরকে, তোমরা কি আমাকে খবর দাও যে, আমি পুনরুত্থিত হব, অথচ আমার পূর্বে বহু লোক গত হয়ে গেছে? আর পিতা-মাতা আল্লাহর কাছে ফরিযাদ করে বলে, দুর্ভোগ তোমার তুমি বিশ্বাস স্থাপন কর। নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য। তখন সে বলে, এটা তো পূর্ববর্তীদের উপকথা বৈ নয়।
But he who says to his parents: ”Fie upon you both! Do you hold out the promise to me that I shall be raised up (again) when generations before me have passed away (without rising)?” While they (father and mother) invoke Allâh for help (and rebuke their son): ”Woe to you! Believe! Verily, the Promise of Allâh is true.” But he says: ”This is nothing but the tales of the ancient.”
وَالَّذِي قَالَ لِوَالِدَيْهِ أُفٍّ لَّكُمَا أَتَعِدَانِنِي أَنْ أُخْرَجَ وَقَدْ خَلَتْ الْقُرُونُ مِن قَبْلِي وَهُمَا يَسْتَغِيثَانِ اللَّهَ وَيْلَكَ آمِنْ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ فَيَقُولُ مَا هَذَا إِلَّا أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ
Waallathee qala liwalidayhi offin lakuma ataAAidaninee an okhraja waqad khalati alquroonu min qablee wahuma yastagheethani Allaha waylaka amin inna waAAda Allahi haqqun fayaqoolu ma hatha illa asateeru al-awwaleena
YUSUFALI: But (there is one) who says to his parents, “Fie on you! Do ye hold out the promise to me that I shall be raised up, even though generations have passed before me (without rising again)?” And they two seek Allah’s aid, (and rebuke the son): “Woe to thee! Have faith! for the promise of Allah is true.” But he says, “This is nothing but tales of the ancients!”
PICKTHAL: And whoso saith unto his parents: Fie upon you both! Do ye threaten me that I shall be brought forth (again) when generations before me have passed away? And they twain cry unto Allah for help (and say): Woe unto thee! Believe! Lo! the promise of Allah is true. But he saith: This is naught save fables of the men of old:
SHAKIR: And he who says to his parents: Fie on you! do you threaten me that I shall be brought forth when generations have already passed away before me? And they both call for Allah’s aid: Woe to you! believe, surely the promise of Allah is true. But he says: This is nothing but stories of the ancients.
KHALIFA: Then there is the one who says to his parents, “Woe to you; are you telling me that (after death) I will come back to life? How come those who died before us never come back?” The parents would cry for GOD’s help and say, “Woe to you; please believe! GOD’s promise is the truth.” He would say, “Tales from the past!”
১৭। আর, যে ব্যক্তি আপন মাতা-পিতাকে বলে, ৪৭৯৩ ” ধিক্কার তোমাদের ! তোমরা কি আমাকে এই ভয় দেখাতে চাও যে, আমি পুনরুত্থিত হব, যদিও আমার পূর্বে বহু পুরুষ গত হয়েছে [ পুনরুত্থান ব্যতীত ]? ” তখন তারা দুজনে আল্লাহ্র সাহায্য কামনা করে [ এবং পুত্রকে ভর্ৎসনা করে ] ; ” দুর্ভাগ্য তোমার! ঈমান আন ! আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি সত্য।” কিন্তু সে বলে, ” এগুলি প্রাচীন কালের গল্প কাহিনী ব্যতীত অন্য কিছু নয়।”
৪৭৯৩। আমাদের চারিপার্শ্বের এরূপ ঘটনা অহরহই ঘটে যে পূণ্যাত্মা ব্যক্তির সন্তান হয়ে পড়ে মন্দ প্রকৃতির। উপরের আয়াতে [ ১৫ নং ] বর্ণিত আছে সৎ সন্তানের বৈশিষ্ট্য। তারা নিজের জন্য ও পিতামাতার মঙ্গলের জন্য সর্বদা স্রষ্টার দরবারে প্রার্থনা করে থাকে। তারই বিপরীতে তুলে ধরা হয়েছে অসৎ সন্তানের বা মন্দ ব্যক্তির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। এ সব ব্যক্তি পূণ্যাত্মা পিতা মাতাকে শ্রদ্ধার পরিবর্তে অবজ্ঞা করে এবং পিতা মাতার পূণ্য কর্মকে তারা প্রাচীনপন্থী ক্রিয়াকর্ম ও শ্রদ্ধার অযোগ্য বলে পরিগণিত করে। প্রগতিশীলতার নামে এরা শ্বাসত সত্যকে অনুধাবনে অক্ষম হয় ও মন্দের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। এ সত্য পরিবারের জন্য যেমন প্রযোজ্য পৃথিবীতে মানুষের সভ্যতার বিবর্তনে, জাতির জন্যও সমভাবে প্রযোজ্য। জাতির উত্থান পতনের ইতিহাস এই ‘সত্যের ‘ মাঝে নিহিত। আমাদের যা করণীয় তা হচ্ছে এই যে, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে সঠিক ও সত্যপথে পরিচালিত করা এবং নূতন প্রজন্মের উপলব্ধি করা উচিত যে পূর্বপুরুষদের বয়স ও অভিজ্ঞতা এক মূল্যবান সম্পদ ; বিশেষভাবে আধ্যাত্মিক জগতের জ্ঞান।
আয়াতঃ 046.018
তাদের পূর্বে যে সব জ্বিন ও মানুষ গত হয়েছে, তাদের মধ্যে এ ধরনের লোকদের প্রতিও শাস্তিবানী অবধারিত হয়ে গেছে। নিশ্চয় তারা ছিল ক্ষতিগ্রস্থ।
They are those against whom the Word (of torment) is justified among the previous generations of jinns and mankind that have passed away. Verily! They are ever the losers.
أُوْلَئِكَ الَّذِينَ حَقَّ عَلَيْهِمُ الْقَوْلُ فِي أُمَمٍ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهِم مِّنَ الْجِنِّ وَالْإِنسِ إِنَّهُمْ كَانُوا خَاسِرِينَ
Ola-ika allatheena haqqa AAalayhimu alqawlu fee umamin qad khalat min qablihim mina aljinni waal-insi innahum kanoo khasireena
YUSUFALI: Such are they against whom is proved the sentence among the previous generations of Jinns and men, that have passed away; for they will be (utterly) lost.
PICKTHAL: Such are those on whom the Word concerning nations of the jinn and mankind which have passed away before them hath effect. Lo! they are the losers.
SHAKIR: These are they against whom the word has proved true among nations of the jinn and the men that have already passed away before them; surely they are losers.
KHALIFA: Such are the ones stamped as disbelievers among every generation of jinns and humans; they are losers.
১৮। এদের পূর্বে যে জ্বিন ও মানব সম্প্রদায় গত হয়েছে তাদের মত এদের প্রতিও আল্লাহ্র শাস্তি সাব্যস্ত হয়ে গেছে। অবশ্যই তারা হবে [ সম্পূর্ণরূপে ] বিনাশ প্রাপ্ত ৪৭৯৪।
৪৭৯৪। দেখুন [ ৪১ : ২৫ ] আয়াত ও টিকা ৪৪৯৪। প্রতিটি লোক ব্যক্তিগত ভাবে এবং প্রত্যেক প্রজন্ম তাদের কাজের জন্য আল্লাহ্র সম্মুখে কৃতকর্মের জবাবদিহিতার জন্য দায়ী থাকবে। ভালো কাজের জন্য যেমন পুরষ্কার,মন্দ কাজের জন্য থাকবে শাস্তি। প্রত্যেকেই স্ব স্ব কার্যের জন্য দায়ী থাকবে। প্রতিটি কাজের প্রতিফল বিদ্যমান। কারও কাজের জন্য অন্য কেহ দায়ী থাকবে না ; কেউ কাউকে দোষারোপ করতে পারবে না। এর থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হচ্ছে আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও করুণা ভিক্ষা করা। শুধু নিজের জন্যই নয় অন্যের জন্যও।
এই আয়াতটি উপরের ১৬ নং আয়াতের বিপরীত। যার ফলে প্রকৃত ভারসাম্য রক্ষিত হয়।
আয়াতঃ 046.019
প্রত্যেকের জন্যে তাদের কৃতকর্ম অনুযায়ী বিভিন্ন স্তর রয়েছে, যাতে আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দেন। বস্তুতঃ তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না।
And for all, there will be degrees according to that which they did, that He (Allâh) may recompense them in full for their deeds. And they will not be wronged.
وَلِكُلٍّ دَرَجَاتٌ مِّمَّا عَمِلُوا وَلِيُوَفِّيَهُمْ أَعْمَالَهُمْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ
Walikullin darajatun mimma AAamiloo waliyuwaffiyahum aAAmalahum wahum la yuthlamoona
YUSUFALI: And to all are (assigned) degrees according to the deeds which they (have done), and in order that (Allah) may recompense their deeds, and no injustice be done to them.
PICKTHAL: And for all there will be ranks from what they do, that He may pay them for their deeds; and they will not be wronged.
SHAKIR: And for all are degrees according to what they did, and that He may pay them back fully their deeds and they shall not be wronged.
KHALIFA: They all attain the ranks they have deserved, in accordance with their works. He will pay them for their works, without the least injustice.
১৯। প্রত্যেকের মর্যদা তাদের কর্মফল অনুযায়ী [দেয়া হয় ], ইহা এ জন্য যে, আল্লাহ্ প্রত্যেকের কর্মের পূর্ণ পুরষ্কার পুরোপুরি দিতে পারেন। এবং তাদের প্রতি কোন অন্যায় করা হবে না ৪৭৯৫।
৪৭৯৫। পরলোকে প্রত্যেককে বিন্যাস করা হবে তাদের কৃতকার্যের পরিণাম অনুযায়ী। এই বিন্যাস হবে অতি সুক্ষ বিশ্লেষণের ভিত্তিতে। প্রতিটি ভালো ও মন্দ কাজকে বিচার করা হবে সুক্ষভাবে। কাজের উদ্দেশ্য, অভিপ্রায়, প্রেরণা, সাফল্য,ব্যর্থতা, পরিবেশ ও পরিপ্রেক্ষিত সমস্ত কিছু চুলচেরা বিশ্লেষণের ভিত্তিতে প্রতিটি মন্দ বা ভালো কাজকে মূল্যায়ন করা হবে। আপতঃ ভালো বা আপাতঃ মন্দ শেষ কথা নয়। ভালো ও মন্দের এই শ্রেণী বিভাগ মোটামুটি বা স্থূল নয়। তা হবে অত্যন্ত চুলচেরা সুক্ষদর্শী – বিচার বিশ্লেষণের ভিত্তিতে। মন্দ কাজের পরিণাম ততটুকুই হবে যতটুকু মন্দ সে করে। কিন্তু অন্যান্য আয়াতে [ ২৮ : ৮৪ ] উল্লেখ আছে যে, ভালো কাজের পুরষ্কার যা প্রাপ্য, সেই প্রাপ্যতাকে অতিক্রম করে যাবে। কারণ আল্লাহ্ অসীম করুণাময়।
আয়াতঃ 046.020
যেদিন কাফেরদেরকে জাহান্নামের কাছে উপস্থিত করা হবে সেদিন বলা হবে, তোমরা তোমাদের সুখ পার্থিব জীবনেই নিঃশেষ করেছ এবং সেগুলো ভোগ করেছ সুতরাং আজ তোমাদেরকে অপমানকর আযাবের শাস্তি দেয়া হবে; কারণ, তোমরা পৃথিবীতে অন্যায় ভাবে অহংকার করতে এবং তোমরা পাপাচার করতে।
On the Day when those who disbelieve (in the Oneness of Allâh Islâmic Monotheism) will be exposed to the Fire (it will be said): ”You received your good things in the life of the world, and you took your pleasure therein. Now this Day you shall be recompensed with a torment of humiliation, because you were arrogant in the land without a right, and because you used to rebel and disobey (Allâh).
وَيَوْمَ يُعْرَضُ الَّذِينَ كَفَرُوا عَلَى النَّارِ أَذْهَبْتُمْ طَيِّبَاتِكُمْ فِي حَيَاتِكُمُ الدُّنْيَا وَاسْتَمْتَعْتُم بِهَا فَالْيَوْمَ تُجْزَوْنَ عَذَابَ الْهُونِ بِمَا كُنتُمْ تَسْتَكْبِرُونَ فِي الْأَرْضِ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَبِمَا كُنتُمْ تَفْسُقُونَ
Wayawma yuAAradu allatheena kafaroo AAala alnnari athhabtum tayyibatikum fee hayatikumu alddunya waistamtaAAtum biha faalyawma tujzawna AAathaba alhooni bima kuntum tastakbiroona fee al-ardi bighayri alhaqqi wabima kuntum tafsuqoona
YUSUFALI: And on the Day that the Unbelievers will be placed before the Fire, (It will be said to them): “Ye received your good things in the life of the world, and ye took your pleasure out of them: but today shall ye be recompensed with a Penalty of humiliation: for that ye were arrogant on earth without just cause, and that ye (ever) transgressed.”
PICKTHAL: And on the day when those who disbelieve are exposed to the Fire (it will be said): Ye squandered your good things in the life of the world and sought comfort therein. Now this day ye are rewarded with the doom of ignominy because ye were disdainful in the land without a right, and because ye used to transgress.
SHAKIR: And on the day when those who disbelieve shall be brought before the fire: You did away with your good things in your life of the world and you enjoyed them for a while, so today you shall be rewarded with the punishment of abasement because you were unjustly proud in the land and because you transgressed.
KHALIFA: The day will come when those who disbelieved will be introduced to the hellfire: “You have wasted the good chances given to you during your worldly life, and you rejoiced in them. Consequently, today you incur a shameful retribution as a requital for the arrogance you committed on earth without any basis, and for your evil works.”
২০। এবং যেদিন অবিশ্বাসীদের [ জাহান্নামের ] আগুনের সন্নিকটে উপস্থিত করা হবে [ তখন তাদের বলা হবে ] : ” পার্থিব জীবনে তোমরা ভালো ভালো জিনিষ পেয়েছ এবং তা থেকে আনন্দ উপভোগ করেছ ৪৭৯৬। কিন্তু আজ তোমাদের লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি পুরষ্কার হিসেবে দেয়া হবে। কারণ পৃথিবীতে তোমরা অন্যায়ভাবে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছিলে এবং তোমরা [ সর্বদা ] সীমালংঘন করে চলতে “৪৭৯৭।
৪৭৯৬। ” পার্থিব জীবনে তোমরা ভালো ভালো জিনিষ পেয়েছ এবং আনন্দ উপভোগ করেছ।” অর্থাৎ তোমরা লোভী ছিলে, সস্তা আনন্দের স্রোতে নিজেকে ভাসিয়ে দিয়েছিলে ; জীবনের শেষ পরিণতি সম্পর্কে বিশ্বাস না করে। আধ্যাত্মিক জীবনকে পার্থিব আনন্দের জন্য পরিত্যাগ করেছিলে।
৪৭৯৭। যারা পার্থিব জীবনের পরিবর্তে আধ্যাত্মিক জীবনকে উৎসর্গ করেছিলো তাদের বলা হবে, ” তোমরা তোমাদের পছন্দ অনুযায়ী কাজ করেছ ; এখন তোমরা তোমাদের কাজের মূল্য গ্রহণ কর, তোমরা অন্যায় করেছ, পাপ করেছ এবং সত্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছ ; এবং নিজেদের পাপ কাজের দরুণ অন্যায়ভাবে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছিলে। সত্যের বিরুদ্ধে এই বিদ্রোহ পৃথিবীর জীবনে তোমরা সর্বদা করেছ এবং তা করেছ উদ্দেশ্যমূলক ভাবে। এখন তোমাদের দেয়া হবে অবমাননাকর শাস্তি।”
আয়াতঃ 046.021
আ’দ সম্প্রদায়ের ভাইয়ের কথা স্মরণ করুন, তার পূর্বে ও পরে অনেক সতর্ককারী গত হয়েছিল সে তার সম্প্রদায়কে বালুকাময় উচ্চ উপত্যকায় এ মর্মে সতর্ক করেছিল যে, তোমরা আল্লাহ ব্যতীত কারও এবাদত করো না। আমি তোমাদের জন্যে এক মহাদিবসের শাস্তির আশংকা করি।
And remember (Hûd) the brother of ’Ad, when he warned his people in Al-Ahqâf (the curved sand-hills in the southern part of Arabian Peninsula). And surely, there have passed away warners before him and after him (saying): ”Worship none but Allâh; truly, I fear for you the torment of a mighty Day.”
وَاذْكُرْ أَخَا عَادٍ إِذْ أَنذَرَ قَوْمَهُ بِالْأَحْقَافِ وَقَدْ خَلَتْ النُّذُرُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا اللَّهَ إِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ
Waothkur akha AAadin ith anthara qawmahu bial-ahqafi waqad khalati alnnuthuru min bayni yadayhi wamin khalfihi alla taAAbudoo illa Allaha innee akhafu AAalaykum AAathaba yawmin AAatheemin
YUSUFALI: Mention (Hud) one of ‘Ad’s (own) brethren: Behold, he warned his people about the winding Sand-tracts: but there have been warners before him and after him: “Worship ye none other than Allah: Truly I fear for you the Penalty of a Mighty Day.”
PICKTHAL: And make mention (O Muhammad) of the brother of A’ad when he warned his folk among the wind-curved sandhills – and verily warners came and went before and after him – saying: Serve none but Allah. Lo! I fear for you the doom of a tremendous Day.
SHAKIR: And mention the brother of Ad; when he warned his people in the sandy plains,– and indeed warners came before him and after him– saying Serve none but Allah; surely I fear for you the punishment of a grievous day.
KHALIFA: Recall that the brother of `Aad warned his people at the dunes – numerous warnings were also delivered before him and after him: “You shall not worship except GOD. I fear for you the retribution of a great day.”
রুকু – ৩
২১। আ’দ সম্প্রদায়ের ভ্রাতা [ হুদের ] উল্লেখ স্মরণ কর, ৪৭৯৮ যখন সে তাঁর সম্প্রদায়কে ঘুর্ণায়মান বালুকাময় প্রান্তর [ আহকাফ ] সম্বন্ধে সর্তক করেছিলো ৪৭৯৯। যদিও তাঁর পূর্বে এবং পরেও সর্তককারীরা এসেছিলো। [ সে বলেছিলো ] : ” তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত আর কারও ইবাদত করো না। নিশ্চয় আমি তোমাদের উপরে এক ভয়ংকর মহাদিনের আজাবের ভয় করছি।”
৪৭৯৮। দেখুন আয়াত [ ৭ : ৬৫ ] ও টিকা ১০৪০। ” আ’দ সম্প্রদায়ের ভ্রাতা ” অর্থাৎ হুদ্ নবীর কথা বলা হয়েছে। এখানে উল্লেখযোগ্য যে, হুদ নবী আদ্ সম্প্রদায়েরই লোক ছিলেন এবং তাদের মাঝেই প্রতিপালিত হন, তিনি বহিরাগত কোনও আগন্তুক ছিলেন না। তিনি ছিলেন তাদেরই জ্ঞাতি ভাই। ঠিক যেরূপ হচ্ছে রাসুলের অবস্থান কোরাইশদের মাঝে।
৪৭৯৯। “আহকাফ ” বাসীদের অবস্থান বর্ণনা করা হয়েছে এই সূরার ভূমিকাতে। আল্লাহ্র করুণায় তারা উন্নত সেচ প্রণালী উদ্ভাবনে সক্ষম হয়েছিলো। ফলে তারা পরিণত হয়েছিলো এক উন্নত সমৃদ্ধশালী জাতিতে। তাদের সমৃদ্ধি ও ক্ষমতা তাদের আল্লাহ্র রাস্তা থেকে বিচ্যুত করে দেয় – তারা আল্লাহ্র বিধানের বিরোধিতা করে। ফলে তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ বঞ্চিত হয়। দেখুন নীচের [ ২৪ – ২৬ ] আয়াত সমূহ।
আয়াতঃ 046.022
তারা বলল, তুমি কি আমাদেরকে আমাদের উপাস্য দেব-দেবী থেকে নিবৃত্ত করতে আগমন করেছ? তুমি সত্যবাদী হলে আমাদেরকে যে বিষয়ের ওয়াদা দাও, তা নিয়ে আস।
They said: ”Have you come to turn us away from our âliha (gods)? Then bring us that with which you threaten us, if you are one of the truthful!”
قَالُوا أَجِئْتَنَا لِتَأْفِكَنَا عَنْ آلِهَتِنَا فَأْتِنَا بِمَا تَعِدُنَا إِن كُنتَ مِنَ الصَّادِقِينَ
Qaloo aji/tana lita/fikana AAan alihatina fa/tina bima taAAiduna in kunta mina alssadiqeena
YUSUFALI: They said: “Hast thou come in order to turn us aside from our gods? Then bring upon us the (calamity) with which thou dost threaten us, if thou art telling the truth?”
PICKTHAL: They said: Hast come to turn us away from our gods? Then bring upon us that wherewith thou threatenest us, if thou art of the truthful.
SHAKIR: They said: Have you come to us to turn us away from our gods; then bring us what you threaten us with, if you are of the truthful ones.
KHALIFA: They said, “Did you come to divert us from our gods? We challenge you to bring (the retribution) you threaten, if you are truthful.”
২২। তারা বলেছিলো,” তুমি কি আমাদেরকে আমাদের দেব-দেবীগুলির পূঁজা থেকে নিবৃত্ত করতে এসেছ ? যদি তুমি সত্যবাদী হও তবে আমাদের যে [ শাস্তির ] ভয় দেখাচ্ছ তা আনায়ন কর ৪৮০০।
৪৮০০। পাপের পথ সত্যের আলো প্রবেশের পথকে অবরুদ্ধ করে দেয়। আদ্ জাতিও এর ব্যতিক্রম ছিলো না, আল্লাহ্র বিধানকে অস্বীকার করে তারা তাদের সৃষ্ট বিধানে এতটাই নিমগ্ন হয়ে পড়ে যে, তারা আল্লাহ্ প্রেরিত রাসুলকে সনাক্ত করতে অক্ষম হয় এবং তার প্রচারিত আল্লাহ্র বাণী গ্রহণে অস্বীকার করে। তারা আল্লাহকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আহ্বান করে এবং আল্লাহ্র শাস্তিকে আহ্বান করে। এই আহ্বানের মাধ্যমে আল্লাহ্র প্রতি অবিশ্বাসই প্রকাশ করা হয়।
আয়াতঃ 046.023
সে বলল, এ জ্ঞান তো আল্লাহর কাছেই রয়েছে। আমি যে বিষয়সহ প্রেরিত হয়েছি, তা তোমাদের কাছে পৌঁছাই। কিন্তু আমি দেখছি তোমরা এক মুর্খ সম্প্রদায়।
He said: ”The knowledge (of the time of its coming) is with Allâh only, and I convey to you that wherewith I have been sent, but I see that you are a people given to ignorance!”
قَالَ إِنَّمَا الْعِلْمُ عِندَ اللَّهِ وَأُبَلِّغُكُم مَّا أُرْسِلْتُ بِهِ وَلَكِنِّي أَرَاكُمْ قَوْمًا تَجْهَلُونَ
Qala innama alAAilmu AAinda Allahi waoballighukum ma orsiltu bihi walakinnee arakum qawman tajhaloona
YUSUFALI: He said: “The Knowledge (of when it will come) is only with Allah: I proclaim to you the mission on which I have been sent: But I see that ye are a people in ignorance!”..
PICKTHAL: He said: The knowledge is with Allah only. I convey unto you that wherewith I have been sent, but I see you are a folk that know not.
SHAKIR: He said: The knowledge is only with Allah, and I deliver to you the message with which I am sent, but I see you are a people who are ignorant.
KHALIFA: He said, “The knowledge about this is with GOD; I only deliver to you what I was sent to deliver. However, I see that you people are ignorant.”
২৩। সে বলেছিলো : “[ কখন আজাব আসবে ] সে জ্ঞান তো কেবল আল্লাহ্রই নিকট আছে ৪৮০১। আমাকে যে দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করা হয়েছে, কেবল তাই-ই আমি তোমাদের নিকট প্রচার করি। কিন্তু আমি দেখছি তোমরা এক মূঢ় সম্প্রদায়। ”
৪৮০১। পাপের শেষ পরিণতি কখনও শুভ হতে পারে না। পাপের শাস্তি অবশ্যই পতিত হবে। সে শাস্তি ঠিক কখন প্রেরিত হবে তা কেউ জানে না। এমন কি আল্লাহ্র প্রেরিত রসুলদের নিকটও তা দৃশ্যমান নয়। কারণ শাস্তিদাতা কোনও রসুল নয় ; শাস্তিদাতা স্বয়ং আল্লাহ্। পাপে আকণ্ঠ নিমজ্জিত ব্যক্তির নিকট সত্যের আবেদন কোনও প্রতিক্রিয়া জাগাতে অক্ষম – এই চিরন্তন সত্যকে এই আয়াত সমূহের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।
আয়াতঃ 046.024
(অতঃপর) তারা যখন শাস্তিকে মেঘরূপে তাদের উপত্যকা অভিমুখী দেখল, তখন বলল, এ তো মেঘ, আমাদেরকে বৃষ্টি দেবে। বরং এটা সেই বস্তু, যা তোমরা তাড়াতাড়ি চেয়েছিলে। এটা বায়ু এতে রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।
Then, when they saw it as a dense cloud coming towards their valleys, they said: ”This is a cloud bringing us rain!” Nay, but it is that (torment) which you were asking to be hastened! a wind wherein is a painful torment!
فَلَمَّا رَأَوْهُ عَارِضًا مُّسْتَقْبِلَ أَوْدِيَتِهِمْ قَالُوا هَذَا عَارِضٌ مُّمْطِرُنَا بَلْ هُوَ مَا اسْتَعْجَلْتُم بِهِ رِيحٌ فِيهَا عَذَابٌ أَلِيمٌ
Falamma raawhu AAaridan mustaqbila awdiyatihim qaloo hatha AAaridun mumtiruna bal huwa ma istaAAjaltum bihi reehun feeha AAathabun aleemun
YUSUFALI: Then, when they saw the (Penalty in the shape of) a cloud traversing the sky, coming to meet their valleys, they said, “This cloud will give us rain!” “Nay, it is the (Calamity) ye were asking to be hastened!- A wind wherein is a Grievous Penalty!
PICKTHAL: Then, when they beheld it as a dense cloud coming toward their valleys, they said: Here is a cloud bringing us rain. Nay, but it is that which ye did seek to hasten, a wind wherein is painful torment,
SHAKIR: So when they saw it as a cloud appearing in the sky advancing towards their valleys, they said: This is a cloud which will give us rain. Nay! it is what you sought to hasten on, a blast of wind in which is a painful punishment,
KHALIFA: When they saw the storm heading their way, they said, “This storm will bring to us much needed rain.” Instead, this is what you challenged (Hood) to bring; violent wind wherein there is painful retribution.
২৪। অতঃপর, যখন তারা [ শাস্তিকে ] মেঘের [ আকারে ] আকাশকে অতিক্রম করে তাদের উপত্যকার দিকে আসতে দেখলো ৪৮০২। তারা বলেছিলো, ” এই মেঘ আমাদের বৃষ্টি দেবে।” ” না ; এই সেই [শাস্তি ], যা তোমরা ত্বরান্বিত করতে চাইছিলে। – একটি বাতাস, যাতে রয়েছে দুঃখদায়ক শাস্তি।
৪৮০২। আদ জাতির শাস্তির বর্ণনা এখানে করা হয়েছে। তাদের শাস্তি এসেছিলো অকস্মাৎ – যখন তাদের মনে শাস্তি সম্বন্ধে ক্ষীণমাত্র শঙ্কা ছিলো না। তারা বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছিলো। সুতারাং মেঘের দর্শনে তারা উৎফুল্ল হয়ে উঠলো। ঘন কালো মেঘ যখন তাদের দিকে অগ্রসর হতে থাকলো তারা উৎফুল্ল হয়ে উঠলো এই ভেবে যে বৃষ্টির পানি তাদের সেচ প্রণালীকে পরিপূর্ণ করে তুলবে। উপযুক্ত সেচের ফলে তাদের শষ্য ক্ষেত্র শষ্যের দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। কিন্তু না, এটা কোনও সাধারণ মেঘ ছিলো না, এটা ছিলো টর্নেডো এর পূর্বাভাষ। প্রচন্ড বাতাস, ঘুর্ণিঝড়, ধূলা, বালি তাদের সৃষ্ট সকল কিছুকে এক লহমায় ধ্বংস স্তুপে পরিণত করে দেয়। জীবন ধবংস হয়, শষ্য ক্ষেত্র পাথর ও বালিতে পরিপূর্ণ হয়ে পড়ে। একদা সমৃদ্ধ নগরী, জনশূন্য, ঊষর স্থানে পরিণত হয়ে পড়ে। যারা একদিন নিজেদের উৎকর্ষতায় অহংকারে মত্ত ছিলো। যে সভ্যতাকে তারা দীর্ঘদিন তিলে তিলে গড়ে তুলেছিলো তা একমূহুর্তের মধ্যে ধূলিস্যাৎ হয়ে যায়। তাদের সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ অতীতের সাক্ষর হয়ে পড়ে মাত্র।
আয়াতঃ 046.025
তার পালনকর্তার আদেশে সে সব কিছুকে ধ্বংস করে দেবে। অতঃপর তারা ভোর বেলায় এমন হয়ে গেল যে, তাদের বসতিগুলো ছাড়া কিছুই দৃষ্টিগোচর হল না। আমি অপরাধী সম্প্রদায়কে এমনিভাবে শাস্তি দিয়ে থাকি।
Destroying everything by the Command of its Lord! So they became such that nothing could be seen except their dwellings! Thus do We recompense the people who are Mujrimûn (polytheists, disbelievers, sinners, etc.)!
تُدَمِّرُ كُلَّ شَيْءٍ بِأَمْرِ رَبِّهَا فَأَصْبَحُوا لَا يُرَى إِلَّا مَسَاكِنُهُمْ كَذَلِكَ نَجْزِي الْقَوْمَ الْمُجْرِمِينَ
Tudammiru kulla shay-in bi-amri rabbiha faasbahoo la yura illa masakinuhum kathalika najzee alqawma almujrimeena
YUSUFALI: “Everything will it destroy by the command of its Lord!” Then by the morning they – nothing was to be seen but (the ruins of) their houses! thus do We recompense those given to sin!
PICKTHAL: Destroying all things by commandment of its Lord. And morning found them so that naught could be seen save their dwellings. Thus do We reward the guilty folk.
SHAKIR: Destroying everything by the command of its Lord, so they became such that naught could be seen except their dwellings. Thus do We reward the guilty people.
KHALIFA: It destroyed everything, as commanded by its Lord. By morning, nothing was standing except their homes. We thus requite the guilty people.
২৫। ” ইহার প্রভুর নির্দেশে ইহা সব কিছুকে ধ্বংস করে দেবে।” তারপর সকালে তাদের পরিণাম এরূপ হলো যে, তাদের বসতির [ ধবংসাবশেষ ] ব্যতীত আর কিছুই দৃষ্টিগোচর হলো না। এরূপেই আমি পাপীদের প্রতিফল দিয়ে থাকি ৪৮০৩।
৪৮০৩। এই আয়াতটির মাধ্যমে আল্লাহ্র শাস্তির ক্ষীপ্রতা ও সম্পূর্ণতাকে তুলে ধরা হয়েছে। আদ্ জাতি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। তাদের মধ্যে স্বল্প কিছু সংখ্যক বেঁচে থাকে তারা সে স্থান ত্যাগ করে [ দেখুন আয়াত ৭:৬৫ ও টিকা ১০৪০ ]। তাদের গৌরবজ্জ্বল সভ্যতার আর কিছুই অবশিষ্ট ছিলো না।
আয়াতঃ 046.026
আমি তাদেরকে এমন বিষয়ে ক্ষমতা দিয়েছিলাম, যে বিষয়ে তোমাদেরকে ক্ষমতা দেইনি। আমি তাদের দিয়েছিলাম, কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয়, কিন্তু তাদের কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় তাদের কোন কাজে আসল না, যখন তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করল এবং তাদেরকে সেই শাস্তি গ্রাস করে নিল, যা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করত।
And indeed We had firmly established them with that wherewith We have not established you (O Quraish)! And We had assigned them the (faculties of) hearing (ears), seeing (eyes), and hearts, but their hearing (ears), seeing (eyes), and their hearts availed them nothing since they used to deny the Ayât (Allâh’s Prophets and their Prophethood, proofs, evidences, verses, signs, revelations, etc.) of Allâh, and they were completely encircled by that which they used to mock at!
وَلَقَدْ مَكَّنَّاهُمْ فِيمَا إِن مَّكَّنَّاكُمْ فِيهِ وَجَعَلْنَا لَهُمْ سَمْعًا وَأَبْصَارًا وَأَفْئِدَةً فَمَا أَغْنَى عَنْهُمْ سَمْعُهُمْ وَلَا أَبْصَارُهُمْ وَلَا أَفْئِدَتُهُم مِّن شَيْءٍ إِذْ كَانُوا يَجْحَدُونَ بِآيَاتِ اللَّهِ وَحَاقَ بِهِم مَّا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِؤُون
Walaqad makkannahum feema in makkannakum feehi wajaAAalna lahum samAAan waabsaran waaf-idatan fama aghna AAanhum samAAuhum wala absaruhum wala af-idatuhum min shay-in ith kanoo yajhadoona bi-ayati Allahi wahaqa bihim ma kanoo bihi yastahzi-oona
YUSUFALI: And We had firmly established them in a (prosperity and) power which We have not given to you (ye Quraish!) and We had endowed them with (faculties of) hearing, seeing, heart and intellect: but of no profit to them were their (faculties of) hearing, sight, and heart and intellect, when they went on rejecting the Signs of Allah; and they were (completely) encircled by that which they used to mock at!
PICKTHAL: And verily We had empowered them with that wherewith We have not empowered you, and had assigned them ears and eyes and hearts; but their ears and eyes and hearts availed them naught since they denied the revelations of Allah; and what they used to mock befell them.
SHAKIR: And certainly We had established them in what We have not established you in, and We had given– them ears and eyes and hearts, but neither their ears, nor their eyes, nor their hearts availed them aught, since they denied the communications of Allah, and that which they mocked encompassed them.
KHALIFA: We had established them in the same way as we established you, and provided them with hearing, eyes, and minds. But their hearing, eyes, and minds did not help them at all. This is because they decided to disregard GOD’s revelations. Thus, the prophecies and warnings that they ridiculed have caused their doom.
২৬। [ হে কুরাইশরা ] নিশ্চয়ই আমি তাদের এমন দৃঢ়ভাবে [ সাফল্য এবং ] ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম যা আমি তোমাদের করি নাই। এবং শোনার ক্ষমতা, দেখার ক্ষমতা, হৃদয় বৃত্তি এবং বুদ্ধি বৃত্তি দ্বারা আমি তাদের বিভূষিত করেছিলাম ৪৮০৪। কিন্তু তাদের শোনার ও দেখার ক্ষমতা এবং হৃদয়বৃত্তি ও বুদ্ধি বৃত্তি তাদের কোন উপকারেই এলো না, যখন তারা আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করে যেতে লাগলো ৪৮০৫। এবং তারা [ সম্পূর্ণভাবে ] [ সেই শাস্তি ] দ্বারা পরিবৃত হয়ে পড়লো, যা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রূপ করতো ৪৮০৬।
৪৮০৪। আদ্ জাতি ও তাদের পরবর্তী বংশধর যারা সেই প্রচন্ড ঘুর্ণিঝড় থেকে রক্ষা পায়, সেই সামুদ জাতি – এদেরকে আল্লাহ্ বিশেষ নেয়ামতে ধন্য করেছিলেন। বিজ্ঞান, শিল্প, সংস্কৃতি প্রভৃতি বিষয়ে তাদের উন্নতি ইসলাম পূর্বে কোরাইশদের অপেক্ষা ছিলো বহুগুণ। এই উন্নতির মূলে ছিলো তাদের মানসিক দক্ষতা সমূহ, যা, শুধুমাত্র আল্লাহ্ প্রদত্ত ক্ষমতা। ” শোনার ক্ষমতা ও দেখার ক্ষমতা ” দ্বারা বুঝানো হয়েছে পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার মাধ্যমে শোনা ও দেখা বা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সত্যকে আবিষ্কার করার ক্ষমতা। ‘হৃদয়’ শব্দটি আরবীতে ‘বুদ্ধি’, যুক্তিসংক্রান্ত বিচার ক্ষমতা এবং আবেগ, অনুভূতি, ও সৌন্দর্য বোধ এবং শিল্পী মনকে বোঝানো হয়। অর্থাৎ মানসিক বিভিন্ন দক্ষতাকে “কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয়” শব্দটি দ্বারা বুঝানো হয়েছে।
৪৮০৫। আল্লাহ্ প্রদত্ত বিভিন্ন মানসিক দক্ষতা সমূহ সকলকে সমভাবে দান করা হয় না। পৃথিবীর সর্বোচ্চ প্রতিভাধর ব্যক্তিও যদি আল্লাহ্র বিধান সমূহ বা আল্লাহকে অস্বীকার করে তবে তার জন্যও পরলোকের শাস্তি অবধারিত। তার প্রতিভার স্বীকৃতি সে ইহলোকেই লাভ করবে পরলোকে তার জন্য কোনও স্বীকৃতি নাই। আল্লাহকে অস্বীকারের দরুণ সে আল্লাহ্র নিকট হবে অপরাধী।
৪৮০৬। দেখুন [ ৪৫ : ৩৩ ] আয়াত ও টিকা ৪৭৭০। যারা আল্লাহ্ ও আল্লাহ্র বিধান সমূহের প্রতি ঠাট্টা প্রদর্শন করে থাকে, তাতে আল্লাহ্র কোনও ক্ষতি বৃদ্ধি ঘটে না। তাদের কৃতকর্ম তাদের সুস্থ বুদ্ধিকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। ফলে তারা আল্লাহ্র শ্রেষ্ঠত্ব ; ক্ষমতা, মহানুভবতা, দয়া, ক্ষমাকে তাদের অন্তরের মাঝে অনুভবে ব্যর্থ হয়। তারা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বে ক্ষমতায়, বিমোহিত হয়ে পড়ে। এ ভাবেই তাদের কৃতকর্ম তাদের পরিবেষ্টন করে থাকে।
আয়াতঃ 046.027
আমি তোমাদের আশপাশের জনপদ সমূহ ধ্বংস করে দিয়েছি এবং বার বার আয়াতসমূহ শুনিয়েছি, যাতে তারা ফিরে আসে।
And indeed We have destroyed towns (populations) round about you, and We have (repeatedly) shown (them) the Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.) in various ways that they might return (to the truth and believe in the Oneness of Allâh – Islâmic Monotheism).
وَلَقَدْ أَهْلَكْنَا مَا حَوْلَكُم مِّنَ الْقُرَى وَصَرَّفْنَا الْآيَاتِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
Walaqad ahlakna ma hawlakum mina alqura wasarrafna al-ayati laAAallahum yarjiAAoona
YUSUFALI: We destroyed aforetime populations round about you; and We have shown the Signs in various ways, that they may turn (to Us).
PICKTHAL: And verily We have destroyed townships round about you, and displayed (for them) Our revelation, that haply they might return.
SHAKIR: And certainly We destroyed the towns which are around you, and We repeat the communications that they might turn.
KHALIFA: We have annihilated many communities around you, after we had explained the proofs, that they might repent.
রুকু – ৪
২৭। আমি তো তোমাদের চারিপার্শ্বের জনপদসমূহ ধ্বংস করেছিলাম ; আমি তাদের বিভিন্নভাবে নিদর্শনসমূহ দেখিয়েছিলাম যেনো তারা [ আমার দিকে ] ফিরে আসে ৪৮০৭।
৪৮০৭। আরবের ইতিহাস ও পৌরাণিক কাহিনী সাক্ষ্য দেয় যে, যুগে যুগে যারাই আল্লাহ্র বিধানকে অস্বীকার করে পাপে লিপ্ত হয়েছে তাদের জন্য শাস্তি ছিলো অবধারিত। পরবর্তী প্রজন্ম কি এর থেকেও শিক্ষা গ্রহণ করবে না ?
আয়াতঃ 046.028
অতঃপর আল্লাহর পরিবর্তে তারা যাদেরকে সান্নিধ্য লাভের জন্যে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিল, তারা তাদেরকে সাহায্য করল না কেন? বরং তারা তাদের কাছ থেকে উধাও হয়ে গেল। এটা ছিল তাদের মিথ্যা ও মনগড়া বিষয়।
Then why did those whom they had taken for âliha (gods) besides Allâh, as a way of approach (to Allâh) not help them? Nay, but they vanished completely from them (when there came the torment). And that was their lie, and their inventions which they had been inventing (before their destruction).
فَلَوْلَا نَصَرَهُمُ الَّذِينَ اتَّخَذُوا مِن دُونِ اللَّهِ قُرْبَانًا آلِهَةً بَلْ ضَلُّوا عَنْهُمْ وَذَلِكَ إِفْكُهُمْ وَمَا كَانُوا يَفْتَرُونَ
Falawla nasarahumu allatheena ittakhathoo min dooni Allahi qurbanan alihatan bal dalloo AAanhum wathalika ifkuhum wama kanoo yaftaroona
YUSUFALI: Why then was no help forthcoming to them from those whom they worshipped as gods, besides Allah, as a means of access (to Allah)? Nay, they left them in the lurch: but that was their falsehood and their invention.
PICKTHAL: Then why did those whom they had chosen for gods as a way of approach (unto Allah) not help them? Nay, but they did fail them utterly. And (all) that was their lie, and what they used to invent.
SHAKIR: Why did not then those help them whom they took for gods besides Allah to draw (them) nigh (to Him)? Nay! they were lost to them; and this was their lie and what they forged.
KHALIFA: Why then did the idols they set up to bring them closer to GOD fail to help them? Instead, they abandoned them. Such were the false gods they idolized; such were the innovations they fabricated.
২৮। [আল্লাহ্র ] নিকটবর্তী হওয়ার উদ্দেশ্যে আল্লাহ্র পরিবর্তে তারা যাদের উপাস্যরূপে পূঁজা করতো, তবে তারা কেন পূর্বেই তাদের সাহায্য করলো না? বরং তারা [ উপাস্যরা ] তাদের হতাশার মাঝে ত্যাগ করে গিয়েছিলো। এটা ছিলো তাদের মিথ্যা এবং [ অলীক ] উদ্ভাবন ৪৮০৮।
৪৮০৮। যারা আল্লাহ্র পরিবর্তে মিথ্যা উপাস্যের উপাসনা করে তারা অলীক বস্তুরই উপাসনা করে। যেমনঃ আজকের যুগে অনেকেই ‘বিজ্ঞান’ কে আল্লাহ্র নেয়ামত ভাবার পরিবর্তে মনে করে বিজ্ঞান তাদের রক্ষাকর্তা। এরূপ বহু উদাহরণ বিদ্যমান যারা প্রকৃতির বিভিন্ন শক্তিকে তাদের রক্ষাকর্তারূপে কল্পনা করে। এ সমস্তই তাদের কল্পনা থেকে উদ্ভাবিত। প্রকৃত সত্য হচ্ছে যে আল্লাহ্ -ই একমাত্র রক্ষাকর্তা ও সর্বশক্তিমান।
আয়াতঃ 046.029
যখন আমি একদল জিনকে আপনার প্রতি আকৃষ্ট করেছিলাম, তারা কোরআন পাঠ শুনছিল,। তারা যখন কোরআন পাঠের জায়গায় উপস্থিত হল, তখন পরস্পর বলল, চুপ থাক। অতঃপর যখন পাঠ সমাপ্ত হল, তখন তারা তাদের সম্প্রদায়ের কাছে সতর্ককারীরূপে ফিরে গেল।
And (remember) when We sent towards you (Muhammad SAW) Nafran (three to ten persons) of the jinns, (quietly) listening to the Qur’ân, when they stood in the presence thereof, they said: ”Listen in silence!” And when it was finished, they returned to their people, as warners.
وَإِذْ صَرَفْنَا إِلَيْكَ نَفَرًا مِّنَ الْجِنِّ يَسْتَمِعُونَ الْقُرْآنَ فَلَمَّا حَضَرُوهُ قَالُوا أَنصِتُوا فَلَمَّا قُضِيَ وَلَّوْا إِلَى قَوْمِهِم مُّنذِرِينَ
Wa-ith sarafna ilayka nafaran mina aljinni yastamiAAoona alqur-ana falamma hadaroohu qaloo ansitoo falamma qudiya wallaw ila qawmihim munthireena
YUSUFALI: Behold, We turned towards thee a company of Jinns (quietly) listening to the Qur’an: when they stood in the presence thereof, they said, “Listen in silence!” When the (reading) was finished, they returned to their people, to warn (them of their sins).
PICKTHAL: And when We inclined toward thee (Muhammad) certain of the jinn, who wished to hear the Qur’an and, when they were in its presence, said: Give ear! and, when it was finished, turned back to their people, warning.
SHAKIR: And when We turned towards you a party of the jinn who listened to the Quran; so when they came to it, they said: Be silent; then when it was finished, they turned back to their people warning (them).
KHALIFA: Recall that we directed a number of jinns to you, in order to let them hear the Quran. When they got there, they said, “Listen.” As soon as it was over, they rushed to their people, warning.
২৯। স্মরণ কর, আমি তোমার প্রতি আকৃষ্ট করেছিলাম একদল জ্বিনকে, যারা [ নিঃশব্দে ] কুর -আন পাঠ শুনছিলো ৪৮০৯। যখন তারা উহার [ পাঠের ] নিকটে উপস্থিত হলো, তারা [ একে অন্যকে ] বলল, ” চুপ করে শোন।” যখন [ পাঠ ] সমাপ্ত হলো তারা তাদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে গেলো, সর্তক করার জন্য [তাদের পাপ থেকে ]।
৪৮০৯। ‘Nafar’ শব্দটি দ্বারা তিন থেকে দশজনের সমষ্টির একটি দলকে বোঝানো হয়েছে। জ্বিন শব্দটির অর্থের জন্য দেখুন [ ৬ : ১০০ ] আয়াত ও টিকা ৯২৯। জ্বিনের এই দলটি মনোযোগ ও ভক্তি সহকারে কোরাণ পাঠ শ্রবণ করে। পরবর্তী আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তারা হযরত মুসার কিতাব সম্বন্ধেও সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল ছিলো। তারা ইহুদীদের ধর্ম সম্বন্ধে পূর্বেই জ্ঞাত হলেও তারা ইসলাম ধর্মের রূপরেখাতে গভীরভাবে প্রভাবিত হয়ে পড়ে। তারা তাদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে যায় এবং সকলকে ইসলামের দিকে আহ্বান করে।
আয়াতঃ 046.030
তারা বলল, হে আমাদের সম্প্রদায়, আমরা এমন এক কিতাব শুনেছি, যা মূসার পর অবর্তীণ হয়েছে। এ কিতাব পূর্ববর্তী সব কিতাবের প্রত্যায়ন করে, সত্যধর্ম ও সরলপথের দিকে পরিচালিত করে।
They said: ”O our people! Verily! We have heard a Book (this Qur’ân) sent down after Mûsa (Moses), confirming what came before it, it guides to the truth and to a Straight Path (i.e. Islâm).
قَالُوا يَا قَوْمَنَا إِنَّا سَمِعْنَا كِتَابًا أُنزِلَ مِن بَعْدِ مُوسَى مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ يَهْدِي إِلَى الْحَقِّ وَإِلَى طَرِيقٍ مُّسْتَقِيمٍ
Qaloo ya qawmana inna samiAAna kitaban onzila min baAAdi moosa musaddiqan lima bayna yadayhi yahdee ila alhaqqi wa-ila tareeqin mustaqeemin
YUSUFALI: They said, “O our people! We have heard a Book revealed after Moses, confirming what came before it: it guides (men) to the Truth and to a Straight Path.
PICKTHAL: They said: O our people! Lo! we have heard a scripture which hath been revealed after Moses, confirming that which was before it, guiding unto the truth and a right road.
SHAKIR: They said: O our people! we have listened to a Book revealed after Musa verifying that which is before it, guiding to the truth and to a right path:
KHALIFA: They said, “O our people, we have heard a book that was revealed after Moses, and confirms the previous scriptures. It guides to the truth; to the right path.
৩০। তারা বলেছিলো, ” হে আমাদের সম্প্রদায় ! আমরা এক কিতাবের পাঠ শ্রবণ করেছি যা অবতীর্ণ হয়েছে মুসার পরে, যা সত্যায়িত করে উহার পূর্ববর্তী কিতাবকে। ইহা [ মানুষকে ] পরিচালিত করে সত্য এবং সরল পথের দিকে।
৩১। ” হে আমার সম্প্রদায়, আল্লাহ্র দিকে আহ্বানকারীর দিকে মনোযোগ দাও এবং তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। আল্লাহ্ তোমাদের দোষত্রুটি ক্ষমা করবেন এবং ভয়াবহ শাস্তি থেকে তোমাদের উদ্ধার করবেন ৪৮১০।
৪৮১০। যিনি আল্লাহ্র একত্বের প্রতি বিশ্বমানবকে আহ্বান করেন তিনি আমাদের মহানবী [ সা ]। যদি আমরা আল্লাহ্র একত্বে ও মহানবীর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করি, তবে আল্লাহ্ আমাদের গুণাহ্ সমূহ ক্ষমা করে দেবেন। কারণ সাধারণ মানুষ কেহই পাপের উর্দ্ধে নয়। অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধন দ্বারাই একমাত্র আল্লাহ্র ক্ষমা লাভের যোগ্যতা অর্জন করা সম্ভব। আল্লাহ্র ক্ষমাই পরলোকের মর্মন্তুদ শাস্তি থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায়।
আয়াতঃ 046.031
হে আমাদের সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর দিকে আহবানকারীর কথা মান্য কর এবং তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। তিনি তোমাদের গোনাহ মার্জনা করবেন।
O our people! Respond (with obedience) to Allâh’s Caller (i.e. Allâh’s Messenger Muhammad SAW), and believe in him (i.e. believe in that which Muhammad SAW has brought from Allâh and follow him). He (Allâh) will forgive you of your sins, and will save you from a painful torment (i.e. Hell-fire) .
يَا قَوْمَنَا أَجِيبُوا دَاعِيَ اللَّهِ وَآمِنُوا بِهِ يَغْفِرْ لَكُم مِّن ذُنُوبِكُمْ وَيُجِرْكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ
Ya qawmana ajeeboo daAAiya Allahi waaminoo bihi yaghfir lakum min thunoobikum wayujirkum min AAathabin aleemin
YUSUFALI: “O our people, hearken to the one who invites (you) to Allah, and believe in him: He will forgive you your faults, and deliver you from a Penalty Grievous.
PICKTHAL: O our people! respond to Allah’s summoner and believe in Him. He will forgive you some of your sins and guard you from a painful doom.
SHAKIR: O our people! accept the Divine caller and believe in Him, He will forgive you of your faults and protect you from a painful punishment.
KHALIFA: “O our people, respond to the call of GOD, and believe in Him. He will then forgive your sins, and spare you a painful retribution.”
৩০। তারা বলেছিলো, ” হে আমাদের সম্প্রদায় ! আমরা এক কিতাবের পাঠ শ্রবণ করেছি যা অবতীর্ণ হয়েছে মুসার পরে, যা সত্যায়িত করে উহার পূর্ববর্তী কিতাবকে। ইহা [ মানুষকে ] পরিচালিত করে সত্য এবং সরল পথের দিকে।
৩১। ” হে আমার সম্প্রদায়, আল্লাহ্র দিকে আহ্বানকারীর দিকে মনোযোগ দাও এবং তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। আল্লাহ্ তোমাদের দোষত্রুটি ক্ষমা করবেন এবং ভয়াবহ শাস্তি থেকে তোমাদের উদ্ধার করবেন ৪৮১০।
৪৮১০। যিনি আল্লাহ্র একত্বের প্রতি বিশ্বমানবকে আহ্বান করেন তিনি আমাদের মহানবী [ সা ]। যদি আমরা আল্লাহ্র একত্বে ও মহানবীর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করি, তবে আল্লাহ্ আমাদের গুণাহ্ সমূহ ক্ষমা করে দেবেন। কারণ সাধারণ মানুষ কেহই পাপের উর্দ্ধে নয়। অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধন দ্বারাই একমাত্র আল্লাহ্র ক্ষমা লাভের যোগ্যতা অর্জন করা সম্ভব। আল্লাহ্র ক্ষমাই পরলোকের মর্মন্তুদ শাস্তি থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায়।
আয়াতঃ 046.032
আর যে ব্যক্তি আল্লাহর দিকে আহবানকারীর কথা মানবে না, সে পৃথিবীতে আল্লাহকে অপারক করতে পারবে না এবং আল্লাহ ব্যতীত তার কোন সাহায্যকারী থাকবে না। এ ধরনের লোকই প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।
And whosoever does not respond to Allâh’s Caller, he cannot escape on earth, and there will be no Auliyâ’ (protectors) for him besides Allâh (from Allâh’s Punishment). Those are in manifest error.
وَمَن لَّا يُجِبْ دَاعِيَ اللَّهِ فَلَيْسَ بِمُعْجِزٍ فِي الْأَرْضِ وَلَيْسَ لَهُ مِن دُونِهِ أَولِيَاء أُوْلَئِكَ فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ
Waman la yujib daAAiya Allahi falaysa bimuAAjizin fee al-ardi walaysa lahu min doonihi awliyaa ola-ika fee dalalin mubeenin
YUSUFALI: “If any does not hearken to the one who invites (us) to Allah, he cannot frustrate (Allah’s Plan) on earth, and no protectors can he have besides Allah: such men (wander) in manifest error.”
PICKTHAL: And whoso respondeth not to Allah’s summoner he can nowise escape in the earth, and he hath no protecting friends instead of Him. Such are in error manifest.
SHAKIR: And whoever does not accept the-Divine caller, he shall not escape in the earth and he shall not have guardians besides Him, these are in manifest error.
KHALIFA: Those who fail to respond to GOD’s call cannot escape, and will have no Lord other than Him; they have gone far astray.
৩২। ” যদি কেউ আল্লাহ্র দিকে আহ্বানকারীর প্রতি সাড়া না দেয়, সে পৃথিবীতে [আল্লাহ্র পরিকল্পনাকে ] ব্যর্থ করতে পারবে না ৪৮১১। এবং আল্লাহ্ ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না। এরূপ লোকেরাই সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে [ ঘুরে বেড়ায় ]। ” ৪৮১১
৪৮১১। যদি কেউ প্রকৃত সত্যকে অর্থাৎ আল্লাহ্র অস্তিত্বতে অস্বীকার করে, অথবা সত্য প্রচারে বাঁধার সৃষ্টি করে তার দ্বারা সে আল্লাহ্র পরিকল্পনাকে ব্যর্থ করতে অক্ষম। কারণ আল্লাহ্র পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবেই। পার্থিব কোন বাধাই তা অবরুদ্ধ করতে পারবে না। তবে অবিশ্বাসী ও বাধানদানকারীরা আল্লাহ্র করুণা ও অনুগ্রহ বঞ্চিত হবে। ফলে আল্লাহ্র দেয়া নিরাপত্তা বন্ধনী তাদের বেষ্টন করে থাকবে না। যার ফলে তাদের আত্মা কোনও নিরাপদ আশ্রয় লাভে অক্ষম হবে। এরা হবে বিভ্রান্ত, উদ্দেশ্যবিহীন অসহায় -যেনো হাল ভাঙ্গা তরণী [ A ship without rader ], এরাই সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে। পৃথিবীতে যারা আল্লাহ্র অনুগ্রহে ধন্য হয় তাদের জীবন বিশ্বাসের নিরাপত্তায় পরিপূর্ণতা লাভ করে। তারা হয় ধীর স্থির,সংযমী, ধৈর্য্যশীল, প্রভৃতি বিভিন্ন গুণে গুণান্বিত। অপরপক্ষে যারা অবিশ্বাসী তাদের চিত্ত হয় উদ্ভ্রান্ত, অস্থিরতা তাদের সর্বসত্ত্বাকে গ্রাস করে মানসিক শান্তিকে বিঘ্নিত করে। এদের কথাই বলা হয়েছে যে, এরা সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে।
আয়াতঃ 046.033
তারা কি জানে না যে, আল্লাহ যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন এবং এগুলোর সৃষ্টিতে কোন ক্লান্তিবোধ করেননি, তিনি মৃতকে জীবিত করতে সক্ষম? কেন নয়, নিশ্চয় তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
Do they not see that Allâh, Who created the heavens and the earth, and was not wearied by their creation, is Able to give life to the dead? Yes, He surely is Able to do all things.
أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّ اللَّهَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَلَمْ يَعْيَ بِخَلْقِهِنَّ بِقَادِرٍ عَلَى أَنْ يُحْيِيَ الْمَوْتَى بَلَى إِنَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
Awa lam yaraw anna Allaha allathee khalaqa alssamawati waal-arda walam yaAAya bikhalqihinna biqadirin AAala an yuhyiya almawta bala innahu AAala kulli shay-in qadeerun
YUSUFALI: See they not that Allah, Who created the heavens and the earth, and never wearied with their creation, is able to give life to the dead? Yea, verily He has power over all things.
PICKTHAL: Have they not seen that Allah, Who created the heavens and the earth and was not wearied by their creation, is Able to give life to the dead? Aye, He verily is Able to do all things.
SHAKIR: Have they not considered that Allah, Who created the heavens and the earth and was not tired by their creation, is able to give life to the dead? Aye! He has surely power over all things.
KHALIFA: Do they not realize that GOD, who created the heavens and the earth without the least effort, is able to revive the dead? Yes indeed; He is Omnipotent.
৩৩। তারা কি অনুধাবন করে না যে, আল্লাহ্, যিনি আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এ সকল সৃষ্টিতে কোনরূপ ক্লান্তিবোধ করেন না, এবং তিনি মৃতকে জীবন দান করতেও সক্ষম ? হ্যাঁ অবশ্যই তিনি সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাবান ৪৮১২।
৪৮১২। দেখুন [ ২ : ২৫৫ ] আয়াত [ আয়তাল কুরশী ] ; যেখানে বলা হয়েছে, ” তাঁর আসন আকাশ ও পৃথিবীময় পরিব্যপ্ত ; ইহাদের রক্ষণাবেক্ষণ তাঁকে ক্লান্ত করে না।” এই আয়াতে পূর্বোক্ত আয়াতেরই প্রতিধ্বনি করা হয়েছে। এই বিশাল বিশ্বভূবন সৃষ্টি ও রক্ষণাবেণে স্রষ্টার কোনও ক্লান্তি নাই। যিনি এই বিশাল বিশ্ব ভূবনের সৃষ্টি ও রক্ষনাবেক্ষণে সক্ষম, তিনি অবশ্যই মৃতের জীবন দান করতেও সক্ষম। তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। বিশ্বাসের এই ভিত্তি-ই হচ্ছে ঈমান।
আয়াতঃ 046.034
যেদিন কাফেরদেরকে জাহান্নামের সামনে পেশ করা হবে, সেদিন বলা হবে, এটা কি সত্য নয়? তারা বলবে, হঁ্যা আমাদের পালনকর্তার শপথ। আল্লাহ বলবেন, আযাব আস্বাদন কর। কারণ, তোমরা কুফরী করতে।
And on the Day when those who disbelieve will be exposed to the Fire (it will be said to them): ”Is this not the truth?” They will say: ”Yes, By our Lord!” He will say: ”Then taste the torment, because you used to disbelieve!”
وَيَوْمَ يُعْرَضُ الَّذِينَ كَفَرُوا عَلَى النَّارِ أَلَيْسَ هَذَا بِالْحَقِّ قَالُوا بَلَى وَرَبِّنَا قَالَ فَذُوقُوا الْعَذَابَ بِمَا كُنتُمْ تَكْفُرُونَ
Wayawma yuAAradu allatheena kafaroo AAala alnnari alaysa hatha bialhaqqi qaloo bala warabbina qala fathooqoo alAAathaba bima kuntum takfuroona
YUSUFALI: And on the Day that the Unbelievers will be placed before the Fire, (they will be asked,) “Is this not the Truth?” they will say, “Yea, by our Lord!” (One will say:) “Then taste ye the Penalty, for that ye were wont to deny (Truth)!”
PICKTHAL: And on the day when those who disbelieve are exposed to the Fire (they will be asked): Is not this real? They will say: Yea, by our Lord. He will say: Then taste the doom for that ye disbelieved.
SHAKIR: And on the day when those who disbelieve shall be brought before the fire: Is it not true? They shall say: Aye! by our Lord! He will say: Then taste the punishment, because you disbelieved.
KHALIFA: The day the disbelievers are introduced to the Hellfire, they will be asked, “Is this not the truth?” They will answer, “Yes indeed, by our Lord.” He will say, “Then suffer the retribution for your disbelief.”
৩৪। যেদিন অবিশ্বাসীদের [ জাহান্নামের ] আগুনের সম্মুখে উপস্থিত করা হবে ৪৮১৩ ; ও [ তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে ], ” এটা কি সত্য নয় ? ” তারা বলবে, ” হ্যাঁ, আমাদের প্রভুর শপথ !” [ তখন বলা হবেঃ ] ” তাহলে শাস্তি আস্বাদন কর, কারণ তোমরা ছিলে [ সত্য ] প্রত্যাখানে অভ্যস্ত।” ৪৮১৪
৪৮১৩।। দেখুন আয়াত [ ৪৬ : ২০ ] যেখানে ঈমানদার পিতামাতার পাপিষ্ঠ সন্তানের উদাহরণ দ্বারা অবিশ্বাসীদের শেষ পরিণতি সম্বন্ধে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। এই আয়াতেও আদ্ জাতি ও ঈমানদার জ্বিন্ সম্প্রদায়ের উদাহরণের মাধ্যমে একই ভাবে কাফিরদের শেষ পরিণতির পরিসমাপ্তি টানা হয়েছে।
৪৮১৪। যারা অবিশ্বাসী তাদের নিকট পরলোকের জীবনের প্রকৃত চিত্ররূপ থাকে অবগুণ্ঠিত। তারা চেষ্টা করেও এই পৃথিবীতে তা অনুধাবনে অক্ষম। বস্তুগত জগত তাদের এমন ভাবে আচ্ছন্ন করে রাখে যে, তার বাইরে তারা কিছুই উপলব্ধি করে না। তাদের আধ্যাত্মিক জগত থাকে অন্ধকারে সমাচ্ছন্ন। মৃত্যুর পরপারে তাদের এই আচ্ছন্নতা বিদূরীত হয়। তারা তখন প্রকৃত সত্যের রূপ দেখতে সক্ষম হয়। কিন্তু তারা তখন সত্যের আলো ও আল্লাহ্র সান্নিধ্য বঞ্চিত হয়। পরলোকের জীবন হচ্ছে আধ্যাত্মিক জীবন। সে জীবনের সর্বোচ্চ কল্যাণ ও পাওয়া হচ্ছে আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভ করা ও তাঁর নূরে আত্মাকে আলোকিত করা। যে তা বঞ্চিত হয় সে হয় দোযখের অধিবাসী।
আয়াতঃ 046.035
অতএব, আপনি সবর করুন, যেমন উচ্চ সাহসী পয়গম্বরগণ সবর করেছেন এবং ওদের বিষয়ে তড়িঘড়ি করবেন না। ওদেরকে যে বিষয়ে ওয়াদা দেয়া হত, তা যেদিন তারা প্রত্যক্ষ করবে, সেদিন তাদের মনে হবে যেন তারা দিনের এক মুহুর্তের বেশী পৃথিবীতে অবস্থান করেনি। এটা সুস্পষ্ট অবগতি। এখন তারাই ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে, যারা পাপাচারী সম্প্রদায়।
Therefore be patient (O Muhammad SAW) as did the Messengers of strong will and be in no haste about them (disbelievers). On the Day when they will see that (torment) with which they are promised (i.e. threatened, it will be) as if they had not stayed more than an hour in a single day. (O mankind! This Qur’ân is sufficient as) a clear Message (or proclamation to save yourself from destruction). But shall any be destroyed except the people who are Al-Fâsiqûn (the rebellious, disobedient to Allâh).
فَاصْبِرْ كَمَا صَبَرَ أُوْلُوا الْعَزْمِ مِنَ الرُّسُلِ وَلَا تَسْتَعْجِل لَّهُمْ كَأَنَّهُمْ يَوْمَ يَرَوْنَ مَا يُوعَدُونَ لَمْ يَلْبَثُوا إِلَّا سَاعَةً مِّن نَّهَارٍ بَلَاغٌ فَهَلْ يُهْلَكُ إِلَّا الْقَوْمُ الْفَاسِقُونَ
Faisbir kama sabara oloo alAAazmi mina alrrusuli wala tastaAAjil lahum kaannahum yawma yarawna ma yooAAadoona lam yalbathoo illa saAAatan min naharin balaghun fahal yuhlaku illa alqawmu alfasiqoona
YUSUFALI: Therefore patiently persevere, as did (all) messengers of inflexible purpose; and be in no haste about the (Unbelievers). On the Day that they see the (Punishment) promised them, (it will be) as if they had not tarried more than an hour in a single day. (Thine but) to proclaim the Message: but shall any be destroyed except those who transgress?
PICKTHAL: Then have patience (O Muhammad) even as the stout of heart among the messengers (of old) had patience, and seek not to hasten on (the doom) for them. On the day when they see that which they are promised (it will seem to them) as though they had tarried but an hour of daylight. A clear message. Shall any be destroyed save evil-living folk?
SHAKIR: Therefore bear up patiently as did the messengers endowed with constancy bear up with patience and do not seek to hasten for them (their doom). On the day that they shall see what they are promised they shall be as if they had not tarried save an hour of the day. A sufficient exposition! Shall then any be destroyed save the transgressing people?
KHALIFA: Therefore, be patient like the messengers before you who possessed strength and resorted to patience. Do not be in a hurry to see the retribution that will inevitably come to them. The day they see it, it will seem as if they lasted one hour of the day. This is a proclamation: Is it not the wicked who are consistently annihilated?
৩৫। সুতারাং তুমি ধৈর্য্যের সাথে অধ্যাবসায়ী হও, যেরূপ [ অন্যসব ] রাসুলেরা উদ্দেশ্যের প্রতি ছিলেন অনমনীয়; এবং [ অবিশ্বাসীদের ] ব্যাপারে তাড়াহুড়া করো না। সেদিন যখন তারা প্রতিশ্রুত [ শাস্তিকে ] প্রত্যক্ষ করবে, [ তাদের মনে হবে ], ওরা যেনো দিনের একদন্ডের বেশী পৃথিবীতে অবস্থান করে নাই ৪৮১৫। আল্লাহ্র বাণী ঘোষণাই [ তোমার কাজ ] ৪৮১৬। সীমালংঘণকারী ব্যতীত আর কেহ কি ধ্বংস প্রাপ্ত হবে?
৪৮১৫। এ কথা বারে বারে বলা হয়েছে যে, পৃথিবীতে কোনও সৎকাজই হারিয়ে যাবে না। তবে অনেক সময়ে তা বহু বাঁধার সম্মুখীন হয় এবং প্রতিষ্ঠিত হতে সময়ের প্রয়োজন হয়। রসুলকে [ সা ] সম্বোধনের মাধ্যমে এই সত্যকেই বিশ্বজনীন করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে প্রকৃত সত্য প্রতিষ্ঠিত হতে সময়ের প্রয়োজন হতে পারে। সুতারাং মোমেন বান্দারা যেনো অধৈর্য না হয়ে ধৈর্য ধারণ করে। সৎ কাজের সাফল্য অবশ্যাম্ভাবী এবং যারা সৎকাজে বাধা দান করে তাদের শাস্তিও সেরূপ অবশ্যাম্ভবী। এই অবশ্যাম্ভবী শাস্তিকে “প্রতিশ্রুত শাস্তি”- বাক্যটি দ্বারা উপস্থাপন করা হয়েছে। এই শাস্তি তাদের উপরে এমন হঠাৎ আসবে যে, তাদের মনে হবে যেন,তারা পৃথিবীতে একদিন বা একদন্ডের বেশী অবস্থান করে নাই। এখানে সময়ের আপেক্ষিক তত্বকে তুলে ধরা হয়েছে। পৃথিবীতে জীবনের সময়ের পরিক্রমা এক বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সময়ের গুরুত্বপূর্ণ এই ধারণা পরলোকের অনন্ত সময়ের ধারণার প্রেক্ষিতে বলবৎ থাকবে না। এখানে সময়ের ধারণার আপেক্ষিক তত্বকেই তুলে ধরা হয়েছে।
৪৮১৬। আল্লাহ্ রাসুলের [ সা ] মাধ্যমে যে বিশ্বজনীন ঘোষণা করেছেন, তা সর্বকালে, সর্বযুগের মানুষের জন্য প্রযোজ্য। আল্লাহ্ প্রেরিত সত্য জীবন বিধানই হচ্ছে আল্লাহ্ প্রেরিত সত্য। যদি কেউ এই সত্যকে বাধা দান করে তাদেরই বলা হয়েছে সত্যত্যাগী সম্প্রদায়। এরাই হচ্ছে আল্লাহ্র সত্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী বা সীমালঙ্ঘনকারী। এদের ধ্বংস অনিবার্য। এখানে উল্লেখযোগ্য যে, আল্লাহ্ প্রেরিত জীবন বিধান বা সত্য, সর্বদা ন্যায় ও সত্যের উপরে প্রতিষ্ঠিত। মানুষের কল্যাণের জন্য প্রতিষ্ঠিত। সুতারাং এই ন্যায় ও সত্যকে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার সাথে এক করে দেখার অবকাশ নাই। আনুষ্ঠানিকতা ধর্ম নয় – প্রকৃত ধর্ম হচ্ছে সত্য ও ন্যায়। সীমালঙ্ঘনকারীরা তাদের কৃতকর্মের দরুণই ধ্বংস হয়ে যাবে।