১৬। তারা বলে, ” হে আমাদের প্রভু ! শেষ বিচারের দিন আসার পূর্বেই তুমি আমাদের দণ্ডাদেশ শীঘ্র দিয়ে দাও। ” ৪১৬৬
৪১৬৬। দেখুন [ ২৬ : ২০৪ ] এবং টিকা ৩২৩০। যারা মৃত্যুর পরের জীবনে বিশ্বাসী নয়, তারা ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করে থাকে এই বলে যে, ” আমাদের শাস্তির জন্য পরকালের জন্য অপেক্ষা না করে এখনই সাথে সাথে দিয়ে দেয়া হোক। অর্থাৎ যদি আল্লাহ্র সে ক্ষমতা থাকে, দেরীর কোনও কারণ নাই। ” এসব লোক সম্বন্ধেই পূর্বের আয়াতে বলা হয়েছে যে, তারা শীঘ্রই প্রকৃত সত্যকে অনুধাবন করতে পারবে , কিন্তু তখন আর সময় থাকবে না , অনুতাপ করার বা আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও করুণা লাভ করার। এরা আল্লাহ্র নবীদের ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করে থাকে এখানে আল্লাহ্ তাদের ধৈর্য্য ধারণ করতে উপদেশ দিয়েছেন কারণ আল্লাহ্র পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবেই। এমন কি দাউদ নবীর মতো মহাপরাক্রমশালী নৃপতিকে তাঁর সমসাময়িক লোকদের ব্যঙ্গ বিদ্রূপের পরিবর্তে প্রচন্ড ধৈর্য ধারণ করতে হয়েছিলো।
আয়াতঃ 038.017
তারা যা বলে তাতে আপনি সবর করুন এবং আমার শক্তিশালী বান্দা দাউদকে স্মরণ করুন। সে ছিল আমার প্রতি প্রত্যাবর্তনশীল।
Have patience at what they say, and remember our servant David, the man of strength: for he ever turned (to Allah..
اصْبِرْ عَلَى مَا يَقُولُونَ وَاذْكُرْ عَبْدَنَا دَاوُودَ ذَا الْأَيْدِ إِنَّهُ أَوَّابٌ
Isbir AAala ma yaqooloona waothkur AAabdana dawooda tha al-aydi innahu awwabun
YUSUFALI: Have patience at what they say, and remember our servant David, the man of strength: for he ever turned (to Allah).
PICKTHAL: Bear with what they say, and remember Our bondman David, lord of might, Lo! he was ever turning in repentance (toward Allah).
SHAKIR: Bear patiently what they say, and remember Our servant Dawood, the possessor of power; surely he was frequent m returning (to Allah).
KHALIFA: Be patient in the face of their utterances, and remember our servant David, the resourceful; he was obedient.
১৭। তারা যা বলে তুমি তাতে ধৈর্য ধর , এবং স্মরণ কর আমার বান্দা দাউদের কথা যে ছিলো শক্তিশালী এবং সর্বদা [আল্লাহ্র ] অভিমুখী ৪১৬৭।
৪১৬৭। দাউদ নবী ছিলেন স্বাভাবিক মানুষের থেকেও বিরল শক্তির অধিকারী। তিনি যখন ছিলেন অনভিজ্ঞ যুবক মাত্র তখনই তিনি গোলিয়াথ নামক দৈত্যকে হত্যা করেন। দেখুন [ ২ : ২৪৯ – ২৫২ ] এবং টিকা ২৮৬ – ৮৭। গোলিয়াথের সাথে যুদ্ধের পূর্বে তাঁর শক্তি সম্বন্ধে তাঁর শত্রুরা হাসাহাসি করেছিলো ; এমনকি তাঁর বড় ভাই তাকে যুদ্ধের ইচ্ছা প্রকাশের জন্য ভৎর্সনা করেছিলো। কিন্তু কোনও কিছুই দাউদ নবীকে আল্লাহ্র উপরে একান্ত নির্ভরশীলতা ও বিশ্বাস থেকে টলাতে পারে নাই। তিনি আল্লাহ্র উপরে গভীর বিশ্বাসের সাথে গোলিয়াথের সাথে যুদ্ধ করে জয়লাভ করেন এবং পরবর্তীতে দেশের রাজা হন।
আয়াতঃ 038.018
আমি পর্বতমালাকে তার অনুগামী করে দিয়েছিলাম, তারা সকাল-সন্ধ্যায় তার সাথে পবিত্রতা ঘোষণা করত;
It was We that made the hills declare, in unison with him, Our Praises, at eventide and at break of day,
إِنَّا سَخَّرْنَا الْجِبَالَ مَعَهُ يُسَبِّحْنَ بِالْعَشِيِّ وَالْإِشْرَاقِ
Inna sakhkharna aljibala maAAahu yusabbihna bialAAashiyyi waal-ishraqi
YUSUFALI: It was We that made the hills declare, in unison with him, Our Praises, at eventide and at break of day,
PICKTHAL: Lo! We subdued the hills to hymn the praises (of their Lord) with him at nightfall and sunrise,
SHAKIR: Surely We made the mountains to sing the glory (of Allah) in unison with him at the evening and the sunrise,
KHALIFA: We committed the mountains in his service, glorifying with him night and day.
১৮। আমি পর্বতমালাকে তার সাথে সন্ধ্যায় ও ঊষালগ্নে আমার মহিমা ঘোষণা করতে বাধ্য করেছিলাম ৪১৬৮।
৪১৬৮। দেখুন আয়াত [২১ : ৭৯ ] ও টিকা ২৭৩৩। মানুষের অনুভুতিকে উপলব্ধির মাধ্যমে তীক্ষ্ণ করলে মানুষ দেখতে পেতো বিশ্বপ্রকৃতি সকল কিছুই আল্লাহ্র প্রশংসা কীর্তন করে চলেছে , আল্লাহ্র একত্ব ঘোষণা করছে। বিশ্ব প্রকৃতির সকল কিছুই এক প্রাকৃতিক আইনের অধীনে নিয়ন্ত্রিত , যেমন আলোর কথাই ধরা যাক, বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের সকল স্থানেই আলোর ধর্ম এক। মঙ্গলে এক ধর্ম , নিহারিকাতে আর এক ধর্ম , পৃথিবীতে আলোর জন্য অন্য ধর্ম , এ ব্যবস্থা বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের কোথাও নাই। বিভিন্ন স্রষ্টা হলে তাই-ই ঘটতো। এভাবেই জড় ও জীব প্রত্যেকেই একই সুত্রে গাঁথা এবং একই সুত্র মানার মাধ্যমে তারা আল্লাহ্র প্রতি আনুগত্যের প্রকাশ ঘটায় ও প্রশংসা গীত গায়। দাউদ নবীকে আল্লাহ্র সঙ্গীতে বিশেষ প্রতিভা দান করেন। তিনি যখন আল্লাহ্র প্রশংসা গীত গাইতেন তখন তাঁর সাথে আকাশ-বাতাস, পাহাড়-পর্বত, বিশ্ব প্রকৃতি যোগদান করতো। প্রভাতে পাখীরা যখন তাদের সারাদিনের যাত্রার জন্য প্রস্তুত হয় , সন্ধ্যায় পাখীরা যখন দিন শেষে তাদের সারা রাতের ঘুমের জন্য নীড়ে ফিরে আসে, তখন পাখীরা সমস্বরে ডাকাডাকি করে। দাউদ নবীর সাথে এই সময়ে পাখীরা একসাথে আল্লাহ্র গুণগানে নিমগ্ন হয়ে পড়তো।