- সূরার নাম: সূরা সাদ
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা সাদ
আয়াতঃ 038.001
ছোয়াদ। শপথ উপদেশপূর্ণ কোরআনের,
Sad: By the Qur’an, Full of Admonition: (This is the Truth).
ص وَالْقُرْآنِ ذِي الذِّكْرِ
Sad waalqur-ani thee alththikri
YUSUFALI: Sad: By the Qur’an, Full of Admonition: (This is the Truth).
PICKTHAL: Sad. By the renowned Qur’an,
SHAKIR: Suad, I swear by the Quran, full of admonition.
KHALIFA: S. (Saad), and the Quran that contains the proof.
০১। সাদ, ৪১৪৬ শপথ কুর-আনের যা উপদেশে পরিপূর্ণ [ এটাই প্রকৃত সত্য ] ৪১৪৭।
৪১৪৬। ‘Sad’ একটি আরবী অক্ষর। এখানে অক্ষরটি ব্যবহৃত হয়েছে ভাবধারাকে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশের জন্য।
৪১৪৭। “শপথ উপদেশপূর্ণ কুর-আনের।” এখানে ‘Zikr’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। জিক্র শব্দটি দ্বারা এক বিশাল ভাবধারাকে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। এর দ্বারা প্রকাশ করা হয় ; ১) ভক্তি সহকারে আল্লাহ্কে স্মরণ করা ; ২) আল্লাহ্র আয়াত সমূহ আবৃত্তি করা এবং আল্লাহ্র প্রশংসা জ্ঞাপন করা ; ৩) আল্লাহ্র সম্বন্ধে শিক্ষাদান করা , সাবধান করা , সর্তক করা ; ৪) আয়াত [ ১৬ :৪৩ ] ‘Ah-luz-Zikr’ অর্থ করা হয়েছে বাণী , প্রত্যাদেশ।
আয়াতঃ 038.002
বরং যারা কাফের, তারা অহংকার ও বিরোধিতায় লিপ্ত।
But the Unbelievers (are steeped) in self-glory and Separatism.
بَلِ الَّذِينَ كَفَرُوا فِي عِزَّةٍ وَشِقَاقٍ
Bali allatheena kafaroo fee AAizzatin washiqaqin
YUSUFALI: But the Unbelievers (are steeped) in self-glory and Separatism.
PICKTHAL: Nay, but those who disbelieve are in false pride and schism.
SHAKIR: Nay! those who disbelieve are in self-exaltation and opposition.
KHALIFA: Those who disbelieve have plunged into arrogance and defiance.
০২। কিন্তু অবিশ্বাসীরা আত্মগরিমায় [ মত্ত ] এবং বিরোধিতায় ডুবে আছে ৪১৪৮।
৪১৪৮। এই আয়াতটির মাধ্যমে মনুষ্য চরিত্রের এক বিশেষ দিককে তুলে ধরা হয়েছে। সত্যকে অবিশ্বাস করার এবং পাপে নিমগ্ন হওয়ার প্রবণতার মূল নিহিত থাকে মানুষের অহংকার ,গর্ব ও ঔদ্ধত্যের মাঝে। অহংকার , গর্ব ও ঔদ্ধত্যের ফলেই শয়তানের পতন ঘটে বেহেশত থেকে। শয়তানের এই বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে [ ৩৮ : ৭৪ – ৭৬ ] আয়াতে। অহংকার একটি খারাপ রিপু যা থেকে হিংসা ও বিদ্বেষের উৎপত্তি ঘটে, – আর হিংসা-দ্বেষ থেকে সৃষ্টি হয় নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার প্রবণতা, প্রকৃত সত্যকে অস্বীকার করে নিজস্ব অধিকারভুক্ত মতামতের সৃষ্টি করার চেষ্টা। যার ফলে তার আত্মার মাঝে প্রকৃত সত্যের আলো অনুপ্রবেশে বাঁধা পায় এবং আল্লাহ্র একত্বের ধারণা থেকে সে অনেক দূরে সরে যায়। একত্ববাদ হচ্ছে ধর্মীয় বিশ্বাসের মূল ভিত্তি। যার উপরে প্রতিষ্ঠিত হয় জীবন বিকাশের সকল শাখা-প্রশাখা। আরব মোশরেকরা রাসুলের [সা ] প্রচারিত এই একত্ববাদকেই প্রতিহত করে। দেখুন আয়াত [ ৩৮ :৫ ] পৃথিবীতে মানুষের অধঃপতনের কারণও হচ্ছে অহংকার, হিংসা ও ঔদ্ধত্য প্রকাশের ফল।
আয়াতঃ 038.003
তাদের আগে আমি কত জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি, অতঃপর তারা আর্তনাদ করতে শুরু করেছে কিন্তু তাদের নিষ্কৃতি লাভের সময় ছিল না।
How many generations before them did We destroy? In the end they cried (for mercy)- when there was no longer time for being saved!
كَمْ أَهْلَكْنَا مِن قَبْلِهِم مِّن قَرْنٍ فَنَادَوْا وَلَاتَ حِينَ مَنَاصٍ
Kam ahlakna min qablihim min qarnin fanadaw walata heena manasin
YUSUFALI: How many generations before them did We destroy? In the end they cried (for mercy)- when there was no longer time for being saved!
PICKTHAL: How many a generation We destroyed before them, and they cried out when it was no longer the time for escape!
SHAKIR: How many did We destroy before them of the generations, then they cried while the time of escaping had passed away.
KHALIFA: Many a generation before them we annihilated. They called for help, in vain.
০৩। কত জনগোষ্ঠিকে এদের পূর্বে আমি ধ্বংস করেছি ? শেষ পর্যন্ত তারা [ করুণা লাভের জন্য] আর্তচীৎকার করেছিলো – কিন্তু তখন উদ্ধার পাওয়ার কোন উপায় ছিলো না ৪১৪৯।
৪১৪৯। পৃথিবীতে সর্বকালে সর্বযুগে আল্লাহ্ মানুষকে নৈতিক শিক্ষা দান করেছেন, সাবধান করেছেন এবং তার নিদর্শন প্রদর্শন করেছেন, যেনো প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি জাতি সময়মত সাবধান হতে পারে। তা সত্বেও পৃতিবীতে বিভিন্ন জাতির অধঃপতনের ইতিহাস হচ্ছে আল্লাহ্ প্রদত্ত পথ নির্দ্দেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা এবং তা থেকে দূরে সরে যাওয়া। এই ইতিহাস থেকে পরবর্তী জাতির জন্য আছে শিক্ষণীয় বিষয় যে , প্রতিটি জাতিই আত্ম ধ্বংসের জন্য দায়ী। প্রাকৃতিক আইনের ন্যায় পৃথিবীতে আল্লাহ্ নৈতিক আইনও স্থাপন করে দিয়েছেন। আর এই আইন হচ্ছে অলঙ্ঘনীয়। যারা আল্লাহ্ প্রদত্ত নৈতিক আইন লঙ্ঘন করবে তাদের ধবংস অনিবার্য। এই-ই হচ্ছে আল্লাহ্র ন্যায়নীতি। অন্যায়কারীদের ধ্বংস তাদেরই কর্মফল। তবে পৃথিবীতে তাদের স্বল্পকালীন অবস্থান কালে তারা যদি অনুতাপের মাধ্যমে নিজেদের চরিত্র ও কর্মধারার সংশোধন করে, তবে আল্লাহ্ পরম করুণময় ও ক্ষমাশীল। কিন্তু তাদের আত্ম অহংকার এবং নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধারণার ঔদ্ধত্য ; তাদের আল্লাহ্র করুণা লাভে ব্যর্থ করে। তাদের কর্মফল তাদের আত্মায় আল্লাহ্র নূর প্রবেশে বাঁধা দান করে, ফলে তারা আল্লাহ্র হেদায়েত থেকে বঞ্চিত হয়। এ যেনো এক দুর্ভেদ্দ্য পর্দ্দা যা আলোর সামান্য রশ্মীকেও প্রবেশে বাঁধা দান করে। কিন্তু যখন তারা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপণীত হয়, তখন তারা নিজেদের ভুল উপলব্ধি করতে পারে এবং আর্ত চীৎকার করে। কিন্তু তখন অনেক দেরী হয়ে যাবে। ভুল সংশোধনের আর কোনও সুযোগ পাওয়া যাবে না।