- সূরার নাম: সূরা সাদ
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা সাদ
আয়াতঃ 038.001
ছোয়াদ। শপথ উপদেশপূর্ণ কোরআনের,
Sad: By the Qur’an, Full of Admonition: (This is the Truth).
ص وَالْقُرْآنِ ذِي الذِّكْرِ
Sad waalqur-ani thee alththikri
YUSUFALI: Sad: By the Qur’an, Full of Admonition: (This is the Truth).
PICKTHAL: Sad. By the renowned Qur’an,
SHAKIR: Suad, I swear by the Quran, full of admonition.
KHALIFA: S. (Saad), and the Quran that contains the proof.
০১। সাদ, ৪১৪৬ শপথ কুর-আনের যা উপদেশে পরিপূর্ণ [ এটাই প্রকৃত সত্য ] ৪১৪৭।
৪১৪৬। ‘Sad’ একটি আরবী অক্ষর। এখানে অক্ষরটি ব্যবহৃত হয়েছে ভাবধারাকে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশের জন্য।
৪১৪৭। “শপথ উপদেশপূর্ণ কুর-আনের।” এখানে ‘Zikr’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। জিক্র শব্দটি দ্বারা এক বিশাল ভাবধারাকে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। এর দ্বারা প্রকাশ করা হয় ; ১) ভক্তি সহকারে আল্লাহ্কে স্মরণ করা ; ২) আল্লাহ্র আয়াত সমূহ আবৃত্তি করা এবং আল্লাহ্র প্রশংসা জ্ঞাপন করা ; ৩) আল্লাহ্র সম্বন্ধে শিক্ষাদান করা , সাবধান করা , সর্তক করা ; ৪) আয়াত [ ১৬ :৪৩ ] ‘Ah-luz-Zikr’ অর্থ করা হয়েছে বাণী , প্রত্যাদেশ।
আয়াতঃ 038.002
বরং যারা কাফের, তারা অহংকার ও বিরোধিতায় লিপ্ত।
But the Unbelievers (are steeped) in self-glory and Separatism.
بَلِ الَّذِينَ كَفَرُوا فِي عِزَّةٍ وَشِقَاقٍ
Bali allatheena kafaroo fee AAizzatin washiqaqin
YUSUFALI: But the Unbelievers (are steeped) in self-glory and Separatism.
PICKTHAL: Nay, but those who disbelieve are in false pride and schism.
SHAKIR: Nay! those who disbelieve are in self-exaltation and opposition.
KHALIFA: Those who disbelieve have plunged into arrogance and defiance.
০২। কিন্তু অবিশ্বাসীরা আত্মগরিমায় [ মত্ত ] এবং বিরোধিতায় ডুবে আছে ৪১৪৮।
৪১৪৮। এই আয়াতটির মাধ্যমে মনুষ্য চরিত্রের এক বিশেষ দিককে তুলে ধরা হয়েছে। সত্যকে অবিশ্বাস করার এবং পাপে নিমগ্ন হওয়ার প্রবণতার মূল নিহিত থাকে মানুষের অহংকার ,গর্ব ও ঔদ্ধত্যের মাঝে। অহংকার , গর্ব ও ঔদ্ধত্যের ফলেই শয়তানের পতন ঘটে বেহেশত থেকে। শয়তানের এই বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে [ ৩৮ : ৭৪ – ৭৬ ] আয়াতে। অহংকার একটি খারাপ রিপু যা থেকে হিংসা ও বিদ্বেষের উৎপত্তি ঘটে, – আর হিংসা-দ্বেষ থেকে সৃষ্টি হয় নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার প্রবণতা, প্রকৃত সত্যকে অস্বীকার করে নিজস্ব অধিকারভুক্ত মতামতের সৃষ্টি করার চেষ্টা। যার ফলে তার আত্মার মাঝে প্রকৃত সত্যের আলো অনুপ্রবেশে বাঁধা পায় এবং আল্লাহ্র একত্বের ধারণা থেকে সে অনেক দূরে সরে যায়। একত্ববাদ হচ্ছে ধর্মীয় বিশ্বাসের মূল ভিত্তি। যার উপরে প্রতিষ্ঠিত হয় জীবন বিকাশের সকল শাখা-প্রশাখা। আরব মোশরেকরা রাসুলের [সা ] প্রচারিত এই একত্ববাদকেই প্রতিহত করে। দেখুন আয়াত [ ৩৮ :৫ ] পৃথিবীতে মানুষের অধঃপতনের কারণও হচ্ছে অহংকার, হিংসা ও ঔদ্ধত্য প্রকাশের ফল।
আয়াতঃ 038.003
তাদের আগে আমি কত জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি, অতঃপর তারা আর্তনাদ করতে শুরু করেছে কিন্তু তাদের নিষ্কৃতি লাভের সময় ছিল না।
How many generations before them did We destroy? In the end they cried (for mercy)- when there was no longer time for being saved!
كَمْ أَهْلَكْنَا مِن قَبْلِهِم مِّن قَرْنٍ فَنَادَوْا وَلَاتَ حِينَ مَنَاصٍ
Kam ahlakna min qablihim min qarnin fanadaw walata heena manasin
YUSUFALI: How many generations before them did We destroy? In the end they cried (for mercy)- when there was no longer time for being saved!
PICKTHAL: How many a generation We destroyed before them, and they cried out when it was no longer the time for escape!
SHAKIR: How many did We destroy before them of the generations, then they cried while the time of escaping had passed away.
KHALIFA: Many a generation before them we annihilated. They called for help, in vain.
০৩। কত জনগোষ্ঠিকে এদের পূর্বে আমি ধ্বংস করেছি ? শেষ পর্যন্ত তারা [ করুণা লাভের জন্য] আর্তচীৎকার করেছিলো – কিন্তু তখন উদ্ধার পাওয়ার কোন উপায় ছিলো না ৪১৪৯।
৪১৪৯। পৃথিবীতে সর্বকালে সর্বযুগে আল্লাহ্ মানুষকে নৈতিক শিক্ষা দান করেছেন, সাবধান করেছেন এবং তার নিদর্শন প্রদর্শন করেছেন, যেনো প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি জাতি সময়মত সাবধান হতে পারে। তা সত্বেও পৃতিবীতে বিভিন্ন জাতির অধঃপতনের ইতিহাস হচ্ছে আল্লাহ্ প্রদত্ত পথ নির্দ্দেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা এবং তা থেকে দূরে সরে যাওয়া। এই ইতিহাস থেকে পরবর্তী জাতির জন্য আছে শিক্ষণীয় বিষয় যে , প্রতিটি জাতিই আত্ম ধ্বংসের জন্য দায়ী। প্রাকৃতিক আইনের ন্যায় পৃথিবীতে আল্লাহ্ নৈতিক আইনও স্থাপন করে দিয়েছেন। আর এই আইন হচ্ছে অলঙ্ঘনীয়। যারা আল্লাহ্ প্রদত্ত নৈতিক আইন লঙ্ঘন করবে তাদের ধবংস অনিবার্য। এই-ই হচ্ছে আল্লাহ্র ন্যায়নীতি। অন্যায়কারীদের ধ্বংস তাদেরই কর্মফল। তবে পৃথিবীতে তাদের স্বল্পকালীন অবস্থান কালে তারা যদি অনুতাপের মাধ্যমে নিজেদের চরিত্র ও কর্মধারার সংশোধন করে, তবে আল্লাহ্ পরম করুণময় ও ক্ষমাশীল। কিন্তু তাদের আত্ম অহংকার এবং নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধারণার ঔদ্ধত্য ; তাদের আল্লাহ্র করুণা লাভে ব্যর্থ করে। তাদের কর্মফল তাদের আত্মায় আল্লাহ্র নূর প্রবেশে বাঁধা দান করে, ফলে তারা আল্লাহ্র হেদায়েত থেকে বঞ্চিত হয়। এ যেনো এক দুর্ভেদ্দ্য পর্দ্দা যা আলোর সামান্য রশ্মীকেও প্রবেশে বাঁধা দান করে। কিন্তু যখন তারা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপণীত হয়, তখন তারা নিজেদের ভুল উপলব্ধি করতে পারে এবং আর্ত চীৎকার করে। কিন্তু তখন অনেক দেরী হয়ে যাবে। ভুল সংশোধনের আর কোনও সুযোগ পাওয়া যাবে না।
আয়াতঃ 038.004
তারা বিস্ময়বোধ করে যে, তাদেরই কাছে তাদের মধ্যে থেকে একজন সতর্ককারী আগমন করেছেন। আর কাফেররা বলে এ-তো এক মিথ্যাচারী যাদুকর।
So they wonder that a Warner has come to them from among themselves! and the Unbelievers say, “This is a sorcerer telling lies!
وَعَجِبُوا أَن جَاءهُم مُّنذِرٌ مِّنْهُمْ وَقَالَ الْكَافِرُونَ هَذَا سَاحِرٌ كَذَّابٌ
WaAAajiboo an jaahum munthirun minhum waqala alkafiroona hatha sahirun kaththabun
YUSUFALI: So they wonder that a Warner has come to them from among themselves! and the Unbelievers say, “This is a sorcerer telling lies!
PICKTHAL: And they marvel that a warner from among themselves hath come unto them, and the disbelievers say: This is a wizard, a charlatan.
SHAKIR: And they wonder that there has come to them a warner from among themselves, and the disbelievers say: This IS an enchanter, a liar.
KHALIFA: They wondered that a warner should come to them, from among them. The disbelievers said, “A magician, a liar.
০৪। এরা আশ্চর্য হচ্ছে এই ভেবে যে, তাদের মধ্য থেকেই তাদের জন্য একজন সর্তককারী এসেছে এবং অবিশ্বাসীরা বলে যে, ” এ তো একজন যাদুকর , মিথ্যা বলছে ৪১৫০।
৪১৫০। রাসুলের [সা ] আগমনে আরব মোশরেকরা আশ্চর্য্য বোধ করে এ জন্য যে, তাদেরই একজনকে আল্লাহ্ কেন বিশেষ ভাবে রাসুল রূপে নির্বাচিত করলেন। হিংসার আগুন তাদের সমস্ত সত্ত্বাকে বিদ্বেষে পরিপূর্ণ করে তোলে। ফলে তারা রাসুলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এবং কুরুচিপূর্ণ বাক্য প্রয়োগ করতে থাকে। যাকে আল্লাহ্ পৃথিবীর রহমতরূপে প্রেরণ করেছেন তাঁকে তারা “যাদুকর” ও ” মিথ্যাবাদী” রূপে অভিহিত করার প্রয়াস পায়। তাদের এই প্রয়াস তাদের বিবেক বুদ্ধির স্বল্পতারই প্রকাশ করে।
আয়াতঃ 038.005
সে কি বহু উপাস্যের পরিবর্তে এক উপাস্যের উপাসনা সাব্যস্ত করে দিয়েছে। নিশ্চয় এটা এক বিস্ময়কর ব্যাপার।
“Has he made the gods (all) into one Allah. Truly this is a wonderful thing!”
أَجَعَلَ الْآلِهَةَ إِلَهًا وَاحِدًا إِنَّ هَذَا لَشَيْءٌ عُجَابٌ
AjaAAala al-alihata ilahan wahidan inna hatha lashay-on AAujabun
YUSUFALI: “Has he made the gods (all) into one Allah? Truly this is a wonderful thing!”
PICKTHAL: Maketh he the gods One Allah? Lo! that is an astounding thing.
SHAKIR: What! makes he the gods a single Allah? A strange thing is this, to be sure!
KHALIFA: “Did he make the gods into one god? This is really strange.”
০৫। ” সে কি বহু দেব-দেবীদের [ সকলকে ] এক আল্লাহ্ বানিয়েছে ? সত্যিই এটা একটা অত্যাশ্চর্য ব্যাপার!” ৪১৫১
৪১৫১। আল্লাহ্র একত্ব ঘোষণায় রসুলের [সা ] ত্রুটি কোথায় ? তিনি তো কাল্পনিক উপাস্যদের বিদূরিত করে উপসনার ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আনায়ন করেছেন। ফলে বিভিন্ন উপাস্যের উপাসকরা পরস্পর সংঘর্ষ থেকে রেহাই পায় এবং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। যদিও নৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে রাসুলের শিক্ষা এক অপূর্ব শান্তি, শৃঙ্খলা ও সমন্বয়ের সমাবেশ, তবুও অবিশ্বাসীদের চোখে তা বিদ্রূপের সামিল। এই আয়াতে অবিশ্বাসীদের ব্যঙ্গক্তিকেই প্রকাশ করা হয়েছে।
আয়াতঃ 038.006
তাদের কতিপয় বিশিষ্ট ব্যক্তি একথা বলে প্রস্থান করে যে, তোমরা চলে যাও এবং তোমাদের উপাস্যদের পূজায় দৃঢ় থাক। নিশ্চয়ই এ বক্তব্য কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে প্রণোদিত।
And the leader among them go away (impatiently), (saying), “Walk ye away, and remain constant to your gods! For this is truly a thing designed (against you)!
وَانطَلَقَ الْمَلَأُ مِنْهُمْ أَنِ امْشُوا وَاصْبِرُوا عَلَى آلِهَتِكُمْ إِنَّ هَذَا لَشَيْءٌ يُرَادُ
Waintalaqa almalao minhum ani imshoo waisbiroo AAala alihatikum inna hatha lashay-on yuradu
YUSUFALI: And the leader among them go away (impatiently), (saying), “Walk ye away, and remain constant to your gods! For this is truly a thing designed (against you)!
PICKTHAL: The chiefs among them go about, exhorting: Go and be staunch to your gods! Lo! this is a thing designed.
SHAKIR: And the chief persons of them break forth, saying: Go and steadily adhere to your gods; this is most surely a thing sought after.
KHALIFA: The leaders announced, “Go and steadfastly persevere in worshiping your gods. This is what is desired.
০৬। তাদের মধ্যে যারা প্রধান তারা অসহিষ্ণু ভাবে চলে গেলো [ এই বলে ] ৪১৫২। “তোমরা চলে যাও, এবং তোমাদের দেবতাদের প্রতি অবিচলিত থাক। নিশ্চয়ই এটা [ তোমাদের বিরুদ্ধে ] এক অভিসন্ধি।
৪১৫২। ইসলামের প্রথম যুগে যখন ইসলামের প্রচারক হযরত মুহম্মদের [ সা ] উপরে পৌত্তলিক কোরেশদের নির্মম নির্যাতন চলছিলো , সে সময়ে তারা রাসুলের [সা ] নির্যাতনের জন্য বিভিন্ন পথ অবলম্বন করতো, এর মধ্যে অন্যতম পন্থা ছিলো , তারা হযরতের [সা ] চাচা আবু তালিবের উপরে চাপ সৃষ্টি করা যেনো তিনি প্রকাশ্যে তাঁর প্রিয় ভ্রাতুষ্পুত্রকে পরিত্যাগ করেন। এ ব্যাপারে তারা আবু তালেবের সাথে মন্ত্রণাসভারও আয়োজন করে। এ ব্যাপারে তাদের উদ্দোগ অকৃতকার্যতায় পর্যবসিত হয। ফলে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়ে পড়ে। তারা প্রচার করে যে, ইসলাম প্রচারের মাধ্যমে হযরত মুহম্মদ [ সা ] তাঁর নিজের হাতে সমস্ত ক্ষমতাকে কেন্দ্রীভূত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন। হযরত ওমর [রা] ইসলাম প্রচারের ষষ্ঠ বছরে ইসলাম গ্রহণ করেন যা ছিলো হিজরতের সাত বছর পূর্বে। হযরত ওমরের ইসলাম গ্রহণ কোরেশ প্রধানদের আতঙ্কিত করে তোলে। কারণ তারা ছিলো স্বেচ্ছাচারী ,লোভী , সুতারাং ইসলামের সমতার বিধান তাদের ক্ষমতার ভিত্তিকে আঘাত হানে। সুতারাং ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের মাধ্যমে তারা পূণ্যাত্মা রাসুলের [সা ] ভূমিকাকে বিকৃত করে দেখানোর প্রয়াস পায়। রাসুলুল্লাহ্র [সা] ধর্ম প্রচার রোধ করার উদ্দেশ্যে কোরেশদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা ইসলাম থেকে লোকদের ফিরিয়ে রাখতে এই ধরণের অপপ্রচার করতো।
আয়াতঃ 038.007
আমরা সাবেক ধর্মে এ ধরনের কথা শুনিনি। এটা মনগড়া ব্যাপার বৈ নয়।
“We never heard (the like) of this among the people of these latter days: this is nothing but a made-up tale!”
مَا سَمِعْنَا بِهَذَا فِي الْمِلَّةِ الْآخِرَةِ إِنْ هَذَا إِلَّا اخْتِلَاقٌ
Ma samiAAna bihatha fee almillati al-akhirati in hatha illa ikhtilaqun
YUSUFALI: “We never heard (the like) of this among the people of these latter days: this is nothing but a made-up tale!”
PICKTHAL: We have not heard of this in later religion. This is naught but an invention.
SHAKIR: We never heard of this in the former faith; this is nothing but a forgery:
KHALIFA: “We never heard of this from the religion of our fathers. This is a lie.
০৭। “ইদানিং কালের জন সাধারণের মধ্যে [এরূপ ] কথা কখনও শুনি নাই। এটা কিছু নয় , মনগড়া কাহিনী মাত্র।” ৪১৫৩
৪১৫৩। এখানে পৌত্তলিক কোরেশদের উক্তিকে তুলে ধরা হয়েছে। তাদের বক্তব্য ছিলো যে,অন্য ধর্মে; ইসলামে প্রচারিত দর্শন নাই সুতারাং তা গ্রহণ করার কোনও যৌক্তিকতা নাই। আমাদের পূর্বপুরুষেরা এ সব প্রতিমারই পূঁজা করে গেছেন ; সুতারাং তাদের ত্যাগ করার প্রশ্নই আসে না। তারা নিজেদের মনগড়া ধারণাতে এতটাই আত্মতৃপ্ত ছিলো যে, প্রকৃত সত্যের ধারণা তাদের নিকট অরুচিকর বোধ হলো। সুতারাং তারা প্রচারিত সত্যকে “মনগড়া উক্তিমাত্র ” – আখ্যা দান করেছিলো। কোনও কোনও তফসীর কারের মতে “Millat akhirat” শব্দটি দ্বারা ইসলামের আগমনের পূর্বে শেষ যে ধর্ম পৃথিবীতে প্রচারিত হয় তাকেই বোঝানো হয়েছে , অর্থাৎ খৃষ্টীন ধর্ম যা আল্লাহ্র একত্বের ধারণা বিচ্যুত হয়ে তা পিতা পুত্র পবিত্র আত্মা এই ত্রিতত্বে পর্যবসিত হয়।
আয়াতঃ 038.008
আমাদের মধ্য থেকে শুধু কি তারই প্রতি উপদেশ বানী অবতীর্ণ হল? বস্তুতঃ ওরা আমার উপদেশ সম্পর্কে সন্দিহান; বরং ওরা এখনও আমার মার আস্বাদন করেনি।
“What! has the Message been sent to him – (Of all persons) among us?”…but they are in doubt concerning My (Own) Message! Nay, they have not yet tasted My Punishment!
أَأُنزِلَ عَلَيْهِ الذِّكْرُ مِن بَيْنِنَا بَلْ هُمْ فِي شَكٍّ مِّن ذِكْرِي بَلْ لَمَّا يَذُوقُوا عَذَابِ
Aonzila AAalayhi alththikru min baynina bal hum fee shakkin min thikree bal lamma yathooqoo AAathabi
YUSUFALI: “What! has the Message been sent to him – (Of all persons) among us?”…but they are in doubt concerning My (Own) Message! Nay, they have not yet tasted My Punishment!
PICKTHAL: Hath the reminder been unto him (alone) among us? Nay, but they are in doubt concerning My reminder; nay but they have not yet tasted My doom.
SHAKIR: Has the reminder been revealed to him from among us? Nay! they are in doubt as to My reminder. Nay! they have not yet tasted My chastisement!
KHALIFA: “Why did the proof come down to him, instead of us?” Indeed, they are doubtful of My proof. Indeed, they have not yet tasted My retribution.
০৮। “কি! আমাদের সকলের মধ্যে বুঝি তার নিকটেই ওহী প্রেরণ করা হয়েছে ? ” ৪১৫৪। তারা আমার ওহী সম্বন্ধে সন্দেহ পোষণ করে [ কারণ ] তারা এখনও আমার শাস্তি আস্বাদন করে নাই ৪১৫৫।
৪১৫৪। এই আয়াতটির মাধ্যমে কোরেশদের হিংসা ও দ্বেষের চিত্রকে তুলে ধরা হয়েছে। তাদের বক্তব্য ছিলো , ” যদি আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ পৃথিবীতে প্রেরণ করতেই হয়, তবে তা আসা উচিত প্রভাবশালী কোরেশ নেতাদের নিকট। তা না হয়ে তার আগমন কেন আব্দুল্লাহ্র এতিম পুত্রের নিকট হবে?”
৪১৫৫। আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ সম্পর্কে কোরেশ নেতাদের কোনওরূপ ধারণা ছিলো না। পার্থিব জিনিষ – ক্ষমতা সম্পদ প্রভাব প্রতিপত্তির চারিপাশে আবর্তিত হয়। কিন্তু যা স্বর্গীয় তা লাভ করার জন্য প্রয়োজন আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি। যদি তারা ইচ্ছাকৃতভাবে আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে তবে তাদের জন্য আল্লাহ্র শাস্তি অবধারিত।
এই আয়াতগুলির মাধ্যমে মানুষের সত্য বিমুখতার প্রবণতাকে তুলে ধরা হয়েছে। তারাই সত্য বিমুখ ও সত্য -বিদ্বেষী যারা সমাজে সম্পদ ও প্রভাব প্রতিপত্তি লাভ করে থাকে। এ কথা সর্ব যুগের মানুষের জন্য প্রযোজ্য। ভবিষ্যতেও প্রযোজ্য হবে।
আয়াতঃ 038.009
না কি তাদের কাছে আপনার পরাক্রান্ত দয়াবান পালনকর্তার রহমতের কোন ভান্ডার রয়েছে?
Or have they the treasures of the mercy of thy Lord,- the Exalted in Power, the Grantor of Bounties without measure?
أَمْ عِندَهُمْ خَزَائِنُ رَحْمَةِ رَبِّكَ الْعَزِيزِ الْوَهَّابِ
Am AAindahum khaza-inu rahmati rabbika alAAazeezi alwahhabi
YUSUFALI: Or have they the treasures of the mercy of thy Lord,- the Exalted in Power, the Grantor of Bounties without measure?
PICKTHAL: Or are theirs the treasures of the mercy of thy Lord, the Mighty, the Bestower?
SHAKIR: Or is it that they have the treasures of the mercy of your Lord, the Mighty, the great Giver?
KHALIFA: Do they own the treasures of mercy of your Lord, the Almighty, the Grantor.
০৯। তোমার প্রভুর অনুগ্রহের ভান্ডার কি ওদের নিকট আছে ৪১৫৬ – [ যিনি ] ক্ষমতায় পরাক্রমশালী এবং অফুরন্ত অনুগ্রহ বণ্টনকারী ?
৪১৫৬। অবিশ্বাসীরা আল্লাহ্র জ্ঞান বিবেচনাকে বিচার করে, প্রশ্ন করে। কিন্তু আল্লাহ্র ক্ষমতা ও দয়াকে অনুধাবন করার ক্ষমতা কি তাদের আছে? আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান ,তিনি অসীম ক্ষমতা ও করুণার আঁধার। আল্লাহ্ কাকে তাঁর করুণায় ধন্য করবেন আর কাকে করবেন না , সে সম্বন্ধে প্রশ্ন করার অধিকার তাদের কে দিয়েছে ? তিনি যাকে ইচ্ছা তাঁর অনুগ্রহের জন্য নির্বাচিত করেন।
আয়াতঃ 038.010
নাকি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর উপর তাদের সাম্রাজ্য রয়েছে? থাকলে তাদের আকাশে আরোহণ করা উচিত রশি ঝুলিয়ে।
Or have they the dominion of the heavens and the earth and all between? If so, let them mount up with the ropes and means (to reach that end)!
أَمْ لَهُم مُّلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا فَلْيَرْتَقُوا فِي الْأَسْبَابِ
Am lahum mulku alssamawati waal-ardi wama baynahuma falyartaqoo fee al-asbabi
YUSUFALI: Or have they the dominion of the heavens and the earth and all between? If so, let them mount up with the ropes and means (to reach that end)!
PICKTHAL: Or is the kingdom of the heavens and the earth and all that is between them theirs? Then let them ascend by ropes!
SHAKIR: Or is it that theirs is the kingdom of the heavens and the earth and what is between them? Then let them ascend by any
KHALIFA: Do they possess the sovereignty of the heavens and the earth, and everything between them? Let them help themselves.
১০। অথবা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ও উহার মধ্যবর্তী সকল কিছুর রাজত্ব কি তাদের ? যদি তাই হয় , তবে [ শেষ সীমানাতে ] তারা দড়ি ও [অন্য ] উপায়ে আরোহণ করুক ৪১৫৭।
৪১৫৭। বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের তুলনায় মানুষ অতি ক্ষুদ্র প্রাণী। তার এই ক্ষুদ্রত্ব সত্বেও কি ভাবে সে সর্বশক্তিমান বিশ্বস্রষ্টার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস করে ? তাদের ব্যবহারে মনে হয় সকল সৃষ্টির প্রভু তারাই , আল্লাহ্ নন। এখানে আল্লাহ্ এসব অবিশ্বাসীদের চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছেন যে, যদি ক্ষমতা থাকে তবে তারা আকাশে আরোহণ করে তার শেষ দেখে নিক। চেষ্টা করে দেখুক, তবুও তারা এভাবে আল্লাহ্র পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে পারে কি না।
আয়াতঃ 038.011
এক্ষেত্রে বহু বাহিনীর মধ্যে ওদেরও এক বাহিনী আছে, যা পরাজিত হবে।
But there – will be put to flight even a host of confederates.
جُندٌ مَّا هُنَالِكَ مَهْزُومٌ مِّنَ الْأَحْزَابِ
Jundun ma hunalika mahzoomun mina al-ahzabi
YUSUFALI: But there – will be put to flight even a host of confederates.
PICKTHAL: A defeated host are (all) the factions that are there.
SHAKIR: A host of deserters of the allies shall be here put to flight.
KHALIFA: Instead, whatever forces they can muster – even if all their parties banded together – will be defeated.
১১। বহুদলের এই বাহিনীও সেক্ষেত্রে অবশ্যই পরাজিত হবে ৪১৫৮।
৪১৫৮। কোনও ভাবেই কাফেররা আল্লাহ্র উদ্দেশ্য নস্যাৎ করতে পারবে না। যদিও তারা সমবেত ভাবে সত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে তবুও তাদের সাফল্য লাভ ঘটবে না , তাদের হবে অপমানজনক পরাজয়। আয়াত ১৩ এর শেষাংশ দেখুন বহু বাহিনী বা দলের সম্বন্ধে।
আয়াতঃ 038.012
তাদের পূর্বেও মিথ্যারোপ করেছিল নূহের সম্প্রদায়, আদ, কীলক বিশিষ্ট ফেরাউন,
Before them (were many who) rejected apostles,- the people of Noah, and ‘Ad, and Pharaoh, the Lord of Stakes,
كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ وَعَادٌ وَفِرْعَوْنُ ذُو الْأَوْتَادِ
Kaththabat qablahum qawmu noohin waAAadun wafirAAawnu thoo al-awtadi
YUSUFALI: Before them (were many who) rejected messengers,- the people of Noah, and ‘Ad, and Pharaoh, the Lord of Stakes,
PICKTHAL: The folk of Noah before them denied (their messenger) and (so did the tribe of) A’ad, and Pharaoh firmly planted,
SHAKIR: The people of Nuh and Ad, and Firon, the lord of spikes, rejected (messengers) before them.
KHALIFA: Disbelieving before them were the people of Noah, `Aad, and the mighty Pharaoh.
১২। ওদের পূর্বেও [ অনেকেই ] রাসুলদিগকে অস্বীকার করেছিলো ৪১৫৯, – নূহের সম্প্রদায়, আ’দ এবং কীলকের অধিপতি ফেরাউন ৪১৬০,
৪১৫৯। সত্যকে প্রতিরোধ করার এই প্রবণতা রাসুলের [ সা ] সময়ে যেমন ছিলো ঠিক সেরূপই ছিলো নূহ্ নবীর সম্প্রদায়ের বা আ’দ ও সামুদ জাতির। এ সঙ্গে আরও উল্লেখ করা হয় মিশরের মহাশক্তিধর নৃপতি ফেরাউনের এবং লূতের সম্প্রদায়ের [ দেখুন ৩৭ : ৭৫-৮২ ; ৭ : ৬৫ -৭৩ ; ৭ : ১০৩ – ১৩৭ ; ৭ : ৮০-৮৪ ]। এদের কথা আল্লাহ্ বারে বারে উল্লেখ করেছেন ঔদ্ধত্য এবং বিদ্রোহীদের উদাহরণ হিসেবে। এরা সকলেই উদ্ধত অহংকারে আল্লাহ্র শিক্ষাকে গ্রহণে অস্বীকার করে যার পরিণতি হয়েছিলো অত্যন্ত মন্দ। পরবর্তী প্রজন্মও কি তাদের উদাহরণের মাধ্যমে শিক্ষালাভ করবে না ?
৪১৬০। ফেরাউনের উপাধি বলা হয়েছে ,” বহু কীলকের অধিপতি” ইংরেজী অনুবাদ হয়েছে ,” Lord of the stakes.” । এই বাক্যটি দ্বারা ফেরাউনের ক্ষমতা ও দম্ভকে প্রকাশ করা হয়েছে নিম্নোক্ত ভাবে : ১) stakes বা কীলক যার অর্থ সৈনিকদের শিবির যা বড় বড় কীলক দ্বারা ভূমিতে স্থাপন করা হয়। কীলক তাঁবুকে শক্ত ও মজবুত করে। এখানে কীলককে দৃঢ়তা ও অটলভাবে প্রতিষ্ঠার প্রতীক স্বরূপ ব্যবহার করা হয়েছে। ২) বহু শিবির বা কীলকের অর্থ হচ্ছে বিশাল সৈন্য শিবির বা সেনাদল। ৩) ফেরাউন তার দম্ভ , ক্ষমতা ও অহংকারকে প্রকাশের জন্য বহু লোককে শুলে বা কীলকের চড়িয়ে হত্যা করতো।
আয়াতঃ 038.013
সামুদ, লূতের সম্প্রদায় ও আইকার লোকেরা। এরাই ছিল বহু বাহিনী।
And Thamud, and the people of Lut, and the Companions of the Wood; – such were the Confederates.
وَثَمُودُ وَقَوْمُ لُوطٍ وَأَصْحَابُ الأَيْكَةِ أُوْلَئِكَ الْأَحْزَابُ
Wathamoodu waqawmu lootin waas-habu al-aykati ola-ika al-ahzabu
YUSUFALI: And Thamud, and the people of Lut, and the Companions of the Wood; – such were the Confederates.
PICKTHAL: And (the tribe of) Thamud, and the folk of Lot, and the dwellers in the wood: these were the factions.
SHAKIR: And Samood and the people of Lut and the dwellers of the thicket; these were the parties.
KHALIFA: Also, Thamoud, the people of Lot, the dwellers of the Woods (of Midyan); those were the opponents.
১৩। এবং সামুদ , এবং লূতের সম্প্রদায়, এবং অরণ্যের অধিবাসীরা ৪১৬১ – এরা ছিলো [সকলে বিশাল ] বাহিনী ৪১৬২।
৪১৬১। ” আয়কাবাসীর ” বা “অরণ্যের অধিবাসীর” জন্য দেখুন [১৫ : ৭৮ ] এবং টিকা ২০০০।
৪১৬২। দেখুন উপরের আয়াত [ ৩৮ : ১১ ] এবং টিকা ৪১৫৮।
আয়াতঃ 038.014
এদের প্রত্যেকেই পয়গম্বরগণের প্রতি মিথ্যারোপ করেছে। ফলে আমার আযাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
Not one (of them) but rejected the apostles, but My punishment came justly and inevitably (on them).
إِن كُلٌّ إِلَّا كَذَّبَ الرُّسُلَ فَحَقَّ عِقَابِ
In kullun illa kaththaba alrrusula fahaqqa AAiqabi
YUSUFALI: Not one (of them) but rejected the messengers, but My punishment came justly and inevitably (on them).
PICKTHAL: Not one of them but did deny the messengers, therefor My doom was justified,
SHAKIR: There was none of them but called the messengers liars, so just was My retribution.
KHALIFA: Each of them disbelieved the messengers and thus, My retribution was inevitable.
১৪। এরা প্রত্যেকেই রাসুলগণকে প্রত্যাখান করেছিলো ফলে আমার শাস্তি অবশ্যম্ভাবীভাবে [ তাদের উপরে ] পতিত হয়েছে ৪১৬৩।
৪১৬৩। দেখুন [ ১৫ : ৬৪ ] আয়াত ও টিকা ১৯৯০ এবং আয়াত [ ২২ : ১৮ ]।
আয়াতঃ 038.015
কেবল একটি মহানাদের অপেক্ষা করছে, যাতে দম ফেলার অবকাশ থাকবে না।
These (today) only wait for a single mighty Blast, which (when it comes) will brook no delay.
وَمَا يَنظُرُ هَؤُلَاء إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً مَّا لَهَا مِن فَوَاقٍ
Wama yanthuru haola-i illa sayhatan wahidatan ma laha min fawaqin
YUSUFALI: These (today) only wait for a single mighty Blast, which (when it comes) will brook no delay.
PICKTHAL: These wait for but one Shout, there will be no second thereto.
SHAKIR: Nor do these await aught but a single cry, there being no delay in it.
KHALIFA: These people can expect a single blow, from which they never recover.
রুকু – ২
১৫। [ আজকে ] তারা শুধু অপেক্ষা করছে একটি মাত্র বিস্ফোরণের ৪১৬৪ -। [ তা যখন আসবে ] তখন কোন বিরাম থাকবে না ৪১৬৫।
৪১৬৪। দেখুন আয়াত [ ৩৬ : ২৯ ] ও টিকা ৩৯৭৩।
৪১৬৫। ‘Fawaq’ – দেরী , গরুর দুধ দুইতে বোঁটা থেকে হাত আলগা হলে পুণরায় হাত ফিরে আসতে যে সময় লাগে ততটুকু বা তদপেক্ষা কম সময়। সময়টি খুবই স্বল্পক্ষণ, বাক্যটির অর্থ যখন আল্লাহ্র শাস্তি নিপতিত হবে তখন আর একমূহুর্ত সময় থাকবে না – তা সংগে সংগে সংঘটিত হবে বিরামহীনভাবে।
আয়াতঃ 038.016
তারা বলে, হে আমাদের পরওয়ারদেগার, আমাদের প্রাপ্য অংশ হিসাব দিবসের আগেই দিয়ে দাও।
They say: “Our Lord! hasten to us our sentence (even) before the Day of Account!”
وَقَالُوا رَبَّنَا عَجِّل لَّنَا قِطَّنَا قَبْلَ يَوْمِ الْحِسَابِ
Waqaloo rabbana AAajjil lana qittana qabla yawmi alhisabi
YUSUFALI: They say: “Our Lord! hasten to us our sentence (even) before the Day of Account!”
PICKTHAL: They say: Our Lord! Hasten on for us our fate before the Day of Reckoning.
SHAKIR: And they say: O our Lord! hasten on to us our portion before the day of reckoning.
KHALIFA: They challenged: “Our Lord, why do you not rush the retribution for us, before the Day of Reckoning.”
১৬। তারা বলে, ” হে আমাদের প্রভু ! শেষ বিচারের দিন আসার পূর্বেই তুমি আমাদের দণ্ডাদেশ শীঘ্র দিয়ে দাও। ” ৪১৬৬
৪১৬৬। দেখুন [ ২৬ : ২০৪ ] এবং টিকা ৩২৩০। যারা মৃত্যুর পরের জীবনে বিশ্বাসী নয়, তারা ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করে থাকে এই বলে যে, ” আমাদের শাস্তির জন্য পরকালের জন্য অপেক্ষা না করে এখনই সাথে সাথে দিয়ে দেয়া হোক। অর্থাৎ যদি আল্লাহ্র সে ক্ষমতা থাকে, দেরীর কোনও কারণ নাই। ” এসব লোক সম্বন্ধেই পূর্বের আয়াতে বলা হয়েছে যে, তারা শীঘ্রই প্রকৃত সত্যকে অনুধাবন করতে পারবে , কিন্তু তখন আর সময় থাকবে না , অনুতাপ করার বা আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও করুণা লাভ করার। এরা আল্লাহ্র নবীদের ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করে থাকে এখানে আল্লাহ্ তাদের ধৈর্য্য ধারণ করতে উপদেশ দিয়েছেন কারণ আল্লাহ্র পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবেই। এমন কি দাউদ নবীর মতো মহাপরাক্রমশালী নৃপতিকে তাঁর সমসাময়িক লোকদের ব্যঙ্গ বিদ্রূপের পরিবর্তে প্রচন্ড ধৈর্য ধারণ করতে হয়েছিলো।
আয়াতঃ 038.017
তারা যা বলে তাতে আপনি সবর করুন এবং আমার শক্তিশালী বান্দা দাউদকে স্মরণ করুন। সে ছিল আমার প্রতি প্রত্যাবর্তনশীল।
Have patience at what they say, and remember our servant David, the man of strength: for he ever turned (to Allah..
اصْبِرْ عَلَى مَا يَقُولُونَ وَاذْكُرْ عَبْدَنَا دَاوُودَ ذَا الْأَيْدِ إِنَّهُ أَوَّابٌ
Isbir AAala ma yaqooloona waothkur AAabdana dawooda tha al-aydi innahu awwabun
YUSUFALI: Have patience at what they say, and remember our servant David, the man of strength: for he ever turned (to Allah).
PICKTHAL: Bear with what they say, and remember Our bondman David, lord of might, Lo! he was ever turning in repentance (toward Allah).
SHAKIR: Bear patiently what they say, and remember Our servant Dawood, the possessor of power; surely he was frequent m returning (to Allah).
KHALIFA: Be patient in the face of their utterances, and remember our servant David, the resourceful; he was obedient.
১৭। তারা যা বলে তুমি তাতে ধৈর্য ধর , এবং স্মরণ কর আমার বান্দা দাউদের কথা যে ছিলো শক্তিশালী এবং সর্বদা [আল্লাহ্র ] অভিমুখী ৪১৬৭।
৪১৬৭। দাউদ নবী ছিলেন স্বাভাবিক মানুষের থেকেও বিরল শক্তির অধিকারী। তিনি যখন ছিলেন অনভিজ্ঞ যুবক মাত্র তখনই তিনি গোলিয়াথ নামক দৈত্যকে হত্যা করেন। দেখুন [ ২ : ২৪৯ – ২৫২ ] এবং টিকা ২৮৬ – ৮৭। গোলিয়াথের সাথে যুদ্ধের পূর্বে তাঁর শক্তি সম্বন্ধে তাঁর শত্রুরা হাসাহাসি করেছিলো ; এমনকি তাঁর বড় ভাই তাকে যুদ্ধের ইচ্ছা প্রকাশের জন্য ভৎর্সনা করেছিলো। কিন্তু কোনও কিছুই দাউদ নবীকে আল্লাহ্র উপরে একান্ত নির্ভরশীলতা ও বিশ্বাস থেকে টলাতে পারে নাই। তিনি আল্লাহ্র উপরে গভীর বিশ্বাসের সাথে গোলিয়াথের সাথে যুদ্ধ করে জয়লাভ করেন এবং পরবর্তীতে দেশের রাজা হন।
আয়াতঃ 038.018
আমি পর্বতমালাকে তার অনুগামী করে দিয়েছিলাম, তারা সকাল-সন্ধ্যায় তার সাথে পবিত্রতা ঘোষণা করত;
It was We that made the hills declare, in unison with him, Our Praises, at eventide and at break of day,
إِنَّا سَخَّرْنَا الْجِبَالَ مَعَهُ يُسَبِّحْنَ بِالْعَشِيِّ وَالْإِشْرَاقِ
Inna sakhkharna aljibala maAAahu yusabbihna bialAAashiyyi waal-ishraqi
YUSUFALI: It was We that made the hills declare, in unison with him, Our Praises, at eventide and at break of day,
PICKTHAL: Lo! We subdued the hills to hymn the praises (of their Lord) with him at nightfall and sunrise,
SHAKIR: Surely We made the mountains to sing the glory (of Allah) in unison with him at the evening and the sunrise,
KHALIFA: We committed the mountains in his service, glorifying with him night and day.
১৮। আমি পর্বতমালাকে তার সাথে সন্ধ্যায় ও ঊষালগ্নে আমার মহিমা ঘোষণা করতে বাধ্য করেছিলাম ৪১৬৮।
৪১৬৮। দেখুন আয়াত [২১ : ৭৯ ] ও টিকা ২৭৩৩। মানুষের অনুভুতিকে উপলব্ধির মাধ্যমে তীক্ষ্ণ করলে মানুষ দেখতে পেতো বিশ্বপ্রকৃতি সকল কিছুই আল্লাহ্র প্রশংসা কীর্তন করে চলেছে , আল্লাহ্র একত্ব ঘোষণা করছে। বিশ্ব প্রকৃতির সকল কিছুই এক প্রাকৃতিক আইনের অধীনে নিয়ন্ত্রিত , যেমন আলোর কথাই ধরা যাক, বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের সকল স্থানেই আলোর ধর্ম এক। মঙ্গলে এক ধর্ম , নিহারিকাতে আর এক ধর্ম , পৃথিবীতে আলোর জন্য অন্য ধর্ম , এ ব্যবস্থা বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের কোথাও নাই। বিভিন্ন স্রষ্টা হলে তাই-ই ঘটতো। এভাবেই জড় ও জীব প্রত্যেকেই একই সুত্রে গাঁথা এবং একই সুত্র মানার মাধ্যমে তারা আল্লাহ্র প্রতি আনুগত্যের প্রকাশ ঘটায় ও প্রশংসা গীত গায়। দাউদ নবীকে আল্লাহ্র সঙ্গীতে বিশেষ প্রতিভা দান করেন। তিনি যখন আল্লাহ্র প্রশংসা গীত গাইতেন তখন তাঁর সাথে আকাশ-বাতাস, পাহাড়-পর্বত, বিশ্ব প্রকৃতি যোগদান করতো। প্রভাতে পাখীরা যখন তাদের সারাদিনের যাত্রার জন্য প্রস্তুত হয় , সন্ধ্যায় পাখীরা যখন দিন শেষে তাদের সারা রাতের ঘুমের জন্য নীড়ে ফিরে আসে, তখন পাখীরা সমস্বরে ডাকাডাকি করে। দাউদ নবীর সাথে এই সময়ে পাখীরা একসাথে আল্লাহ্র গুণগানে নিমগ্ন হয়ে পড়তো।
আয়াতঃ 038.019
আর পক্ষীকুলকেও, যারা তার কাছে সমবেত হত। সবাই ছিল তাঁর প্রতি প্রত্যাবর্তনশীল।
And the birds gathered (in assemblies): all with him did turn (to Allah..
وَالطَّيْرَ مَحْشُورَةً كُلٌّ لَّهُ أَوَّابٌ
Waalttayra mahshooratan kullun lahu awwabun
YUSUFALI: And the birds gathered (in assemblies): all with him did turn (to Allah).
PICKTHAL: And the birds assembled; all were turning unto Him.
SHAKIR: And the birds gathered together; all joined in singing with him.
KHALIFA: Also the birds were committed to serve him; all were obedient to him.
১৯। এবং পাখীদের [ সভায় ] সমবেত করতাম , যারা প্রত্যেকে [আল্লাহ্র ] অভিমুখী হতো ৪১৬৯।
৪১৬৯। এই আয়াতটি পূর্বের [ ১৭ নং ] আয়াতেরই প্রতিধ্বনি বা ধারাবাহিকতা। আরবী শব্দ ‘Awwab’ এই উভয় আয়াতেই লক্ষ্য করা যায় যার বাংলা অনুবাদ হয়েছে অভিমুখী। এই শব্দটির দ্বারা সূরাটির সারাংশ বা মূল স্পন্দনকে প্রকাশ করা হয়েছে। সূরাটির মূল বক্তব্য হচ্ছে আল্লাহ্র প্রশংসা ও প্রার্থনায় নিমগ্ন হও। কারণ তা হচ্ছে সকল পার্থিব জ্ঞান ও ক্ষমতার থেকে বহু উর্দ্ধে।
আয়াতঃ 038.020
আমি তাঁর সাম্রাজ্যকে সুদৃঢ় করেছিলাম এবং তাঁকে দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা ও ফয়সালাকারী বাগ্নীতা।
We strengthened his kingdom, and gave him wisdom and sound judgment in speech and decision.
وَشَدَدْنَا مُلْكَهُ وَآتَيْنَاهُ الْحِكْمَةَ وَفَصْلَ الْخِطَابِ
Washadadna mulkahu waataynahu alhikmata wafasla alkhitabi
YUSUFALI: We strengthened his kingdom, and gave him wisdom and sound judgment in speech and decision.
PICKTHAL: We made his kingdom strong and gave him wisdom and decisive speech.
SHAKIR: And We strengthened his kingdom and We gave him wisdom and a clear judgment.
KHALIFA: We strengthened his kingship, and endowed him with wisdom and good logic.
২০। আমি তাঁর রাজত্বকে সুদৃঢ় করেছিলাম এবং তাকে দান করেছিলাম প্রজ্ঞা এবং অভ্রান্ত বিচারের জন্য দিয়েছিলাম বাগ্মিতা এবং সিদ্ধান্তের ক্ষমতা ৪১৭০।
৪১৭০। এই রূপক কাহিনী বাইবেলে বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে। কুর-আনে শুধুমাত্র অন্তর্নিহিত বক্তব্যকে উত্থাপন করা হয়েছে। দাউদ নবীর ন্যায় বিচারের জন্য দেখুন [ ২১ : ৭৯ ] আয়াত ও টিকা ২৭৩২। তিনি উপযুক্ত ভাষার মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করতে পারেন যার উদাহরণ হচ্ছে তার রচিত ধর্ম-সংগীত সমূহ।
আয়াতঃ 038.021
আপনার কাছে দাবীদারদের বৃত্তান্ত পৌছেছে, যখন তারা প্রাচীর ডিঙ্গীয়ে এবাদত খানায় প্রবেশ করেছিল।
Has the Story of the Disputants reached thee? Behold, they climbed over the wall of the private chamber;
وَهَلْ أَتَاكَ نَبَأُ الْخَصْمِ إِذْ تَسَوَّرُوا الْمِحْرَابَ
Wahal ataka nabao alkhasmi ith tasawwaroo almihraba
YUSUFALI: Has the Story of the Disputants reached thee? Behold, they climbed over the wall of the private chamber;
PICKTHAL: And hath the story of the litigants come unto thee? How they climbed the wall into the royal chamber;
SHAKIR: And has there come to you the story of the litigants, when they made an entry into the private chamber by ascending over the walls?
KHALIFA: Have you received news of the feuding men who sneaked into his sanctuary?
২১। তোমার নিকট কি বিবাদমান লোকদের বৃত্তান্ত পৌঁছেছে ? ৪১৭১ যখন তারা ব্যক্তিগত এবাদত খানাতে প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে নেমেছিলো ?
৪১৭১। দাউদ নবী ছিলেন এক অতি পূণ্যবান মানুষ। আল্লাহ্র এবাদতের জন্য তাঁর ছিলো এক অতি সুরক্ষিত স্থান [Mirhab] বা এবাদত খানা।
আয়াতঃ 038.022
যখন তারা দাউদের কাছে অনুপ্রবেশ করল, তখন সে সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ল। তারা বললঃ ভয় করবেন না; আমরা বিবদমান দুটি পক্ষ, একে অপরের প্রতি বাড়াবাড়ি করেছি। অতএব, আমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করুন, অবিচার করবেন না। আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন করুন।
When they entered the presence of David, and he was terrified of them, they said: “Fear not: we are two disputants, one of whom has wronged the other: Decide now between us with truth, and treat us not with injustice, but guide us to the even Path..
إِذْ دَخَلُوا عَلَى دَاوُودَ فَفَزِعَ مِنْهُمْ قَالُوا لَا تَخَفْ خَصْمَانِ بَغَى بَعْضُنَا عَلَى بَعْضٍ فَاحْكُم بَيْنَنَا بِالْحَقِّ وَلَا تُشْطِطْ وَاهْدِنَا إِلَى سَوَاء الصِّرَاطِ
Ith dakhaloo AAala dawooda fafaziAAa minhum qaloo la takhaf khasmani bagha baAAduna AAala baAAdin faohkum baynana bialhaqqi wala tushtit waihdina ila sawa-i alssirati
YUSUFALI: When they entered the presence of David, and he was terrified of them, they said: “Fear not: we are two disputants, one of whom has wronged the other: Decide now between us with truth, and treat us not with injustice, but guide us to the even Path..
PICKTHAL: How they burst in upon David, and he was afraid of them. They said: Be not afraid! (We are) two litigants, one of whom hath wronged the other, therefor judge aright between us; be not unjust; and show us the fair way.
SHAKIR: When they entered in upon Dawood and he was frightened at them, they said: Fear not; two litigants, of whom one has acted wrongfully towards the other, therefore decide between us with justice, and do not act unjustly, and guide us to the right way.
KHALIFA: When they entered his room, he was startled. They said, “Have no fear. We are feuding with one another, and we are seeking your fair judgment. Do not wrong us, and guide us in the right path.
২২। যখন তারা দাউদের নিকট উপস্থিত হলো ৪১৭২, এবং সে তাদের দেখে আতঙ্কগ্রস্থ হলো , [ তখন] তারা বলেছিলো , ” ভয় পাবেন না; আমরা দুই বিবাদমান পক্ষ, আমাদের একজন অন্যজনের প্রতি অত্যাচার করেছে। অতএব আমাদের মাঝে ন্যায় বিচার করুন , অন্যায় বিচার করবেন না এবং আমাদের সঠিক পথ নির্দ্দেশ করুন।
৪১৭২। রাজা হিসেবে সকল কাজ সমাপান্তে দাউদ নবী নির্দ্দিষ্ট সময়ে তার ব্যক্তিগত প্রকোষ্ঠে প্রবেশ করতেন আল্লাহ্র এবাদত ও প্রশংসা করার জন্য। একদিন তিনি যখন তাঁর ইবাদতখানাতে এবাদতে মশগুল , তখন হঠাৎ করে দুজন লোক প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে তার ইবাদতখানাতে প্রবেশ লাভ করে। দাউদ নবী তাদের অপচ্ছায়া দেখে ভয় পেয়ে যান। কিন্তু তারা বলে যে, ” আমরা দুই ভাই , দেশের রাজা হিসেবে আপনার নিকট ন্যায়বিচার লাভের জন্য আমাদের আগমন। আমাদের মধ্যে বিবাদের মীমাসংসার জন্য আপনার নিকট আমরা এসেছি। “
আয়াতঃ 038.023
সে আমার ভাই, সে নিরানব্বই দুম্বার মালিক আর আমি মালিক একটি মাদী দুম্বার। এরপরও সে বলেঃ এটিও আমাকে দিয়ে দাও। সে কথাবার্তায় আমার উপর বল প্রয়োগ করে।
“This man is my brother: He has nine and ninety ewes, and I have (but) one: Yet he says, ‘commit her to my care,’ and is (moreover) harsh to me in speech.”
إِنَّ هَذَا أَخِي لَهُ تِسْعٌ وَتِسْعُونَ نَعْجَةً وَلِيَ نَعْجَةٌ وَاحِدَةٌ فَقَالَ أَكْفِلْنِيهَا وَعَزَّنِي فِي الْخِطَابِ
Inna hatha akhee lahu tisAAun watisAAoona naAAjatan waliya naAAjatun wahidatun faqala akfilneeha waAAazzanee fee alkhitabi
YUSUFALI: “This man is my brother: He has nine and ninety ewes, and I have (but) one: Yet he says, ‘commit her to my care,’ and is (moreover) harsh to me in speech.”
PICKTHAL: Lo! this my brother hath ninety and nine ewes while I had one ewe; and he said: Entrust it to me, and he conquered me in speech.
SHAKIR: Surely this is my brother; he has ninety-nine ewes and I have a single ewe; but he said: Make it over to me, and he has prevailed against me in discourse.
KHALIFA: “This brother of mine owns ninety nine sheep, while I own one sheep. He wants to mix my sheep with his, and continues to pressure me.”
২৩। “এই লোকটি আমার ভাই ৪১৭৩। ওর আছে নিরানব্বইটি দুম্বা এবং আমার আছে [ মাত্র ] একটি। তবুও সে বলে এটাকে আমার অধীনে দিয়ে দাও। অধিকন্তু সে আমার প্রতি কর্কশ ভাষী।”
৪১৭৩। দুই ভাই এর মধ্যে যে বেশী অত্যাচারিত সে বক্তব্য শুরু করলো এভাবে, ” আমার এই ভাই এর নিরানব্বইটি ভেড়ার একটি পাল আছে। আমার আছে মাত্র একটা। সে আমার এই একটি মাত্র দুম্বাকেও দখল করে নিতে চায়। উপরন্তু আমার সাথে তাঁর ব্যবহার অত্যন্ত খারাপ। তার কথাবার্তা দুরভিসন্ধিমুলক। সে এই ভেড়াটি অংশীদারী ভিত্তিতে গ্রহণ করার কথা বলে না। এবারে আমি কি করবো?”
আয়াতঃ 038.024
দাউদ বললঃ সে তোমার দুম্বাটিকে নিজের দুম্বাগুলোর সাথে সংযুক্ত করার দাবী করে তোমার প্রতি অবিচার করেছে। শরীকদের অনেকেই একে অপরের প্রতি জুলুম করে থাকে। তবে তারা করে না, যারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ও সৎকর্ম সম্পাদনকারী। অবশ্য এমন লোকের সংখ্যা অল্প। দাউদের খেয়াল হল যে, আমি তাকে পরীক্ষা করছি। অতঃপর সে তার পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল, সেজদায় লুটিয়ে পড়ল এবং তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন করল।
(David) said: “He has undoubtedly wronged thee in demanding thy (single) ewe to be added to his (flock of) ewes: truly many are the partners (in business) who wrong each other: Not so do those who believe and work deeds of righteousness, and how few are they?”…and David gathered that We had tried him: he asked forgiveness of his Lord, fell down, bowing (in prostration), and turned (to Allah in repentance).
قَالَ لَقَدْ ظَلَمَكَ بِسُؤَالِ نَعْجَتِكَ إِلَى نِعَاجِهِ وَإِنَّ كَثِيرًا مِّنْ الْخُلَطَاء لَيَبْغِي بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَقَلِيلٌ مَّا هُمْ وَظَنَّ دَاوُودُ أَنَّمَا فَتَنَّاهُ فَاسْتَغْفَرَ رَبَّهُ وَخَرَّ رَاكِعًا وَأَنَابَ
Qala laqad thalamaka bisu-ali naAAjatika ila niAAajihi wa-inna katheeran mina alkhulata-i layabghee baAAduhum AAala baAAdin illa allatheena amanoo waAAamiloo alssalihati waqaleelun ma hum wathanna dawoodu annama fatannahu faistaghfara rabbahu wakharra rakiAAan waanaba
YUSUFALI: (David) said: “He has undoubtedly wronged thee in demanding thy (single) ewe to be added to his (flock of) ewes: truly many are the partners (in business) who wrong each other: Not so do those who believe and work deeds of righteousness, and how few are they?”…and David gathered that We had tried him: he asked forgiveness of his Lord, fell down, bowing (in prostration), and turned (to Allah in repentance).
PICKTHAL: (David) said: He hath wronged thee in demanding thine ewe in addition to his ewes, and lo! many partners oppress one another, save such as believe and do good works, and they are few. And David guessed that We had tried him, and he sought forgiveness of his Lord, and he bowed himself and fell down prostrate and repented.
SHAKIR: He said: Surely he has been unjust to you in demanding your ewe (to add) to his own ewes; and most surely most of the partners act wrongfully towards one another, save those who believe and do good, and very few are they; and Dawood was sure that We had tried him, so he sought the protection of his Lord and he fell down bowing and turned time after time (to Him).
KHALIFA: He said, “He is being unfair to you by asking to combine your sheep with his. Most people who combine their properties treat each other unfairly, except those who believe and work righteousness, and these are so few.” Afterwards, David wondered if he made the right judgment. He thought that we were testing him. He then implored his Lord for forgiveness, bowed down, and repented.
২৪। [ দাউদ ] বলেছিলো , ” সে তোমার [ একটি মাত্র ] দুম্বাকে তার দুম্বা [ দলের ] সাথে যোগ করতে চেয়ে নিঃসন্দেহে সে তোমার প্রতি অন্যায় করেছে ৪১৭৪। প্রকৃত পক্ষে [ব্যবসাতে ] অনেক অংশীদারই একে অন্যের উপরে অন্যায় করে থাকে ৪১৭৫। তারাই করে না যারা ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে এবং তারা সংখ্যায় কত অল্প ? ” – দাউদ বুঝতে পারলো যে আমি তাঁকে পরীক্ষা করলাম। সে তাঁর প্রভুর ক্ষমা ভিক্ষা করলো ৪১৭৬ এবং [ সিজ্দায় ] নত হয়ে লুটিয়ে পড়লো এবং [অনুতাপে আল্লাহ্র ] অভিমুখী হলো ৪১৭৬ক।
৪১৭৪। সম্পূর্ণ পরিবেশই ছিলো রহস্যজনক কারণ যে ভাই অন্যায়কারী সে ভাইও অত্যাচারিত ভাইএর সাথে দাউদ নবীর নিকট আগমন করেছিলেন। রাজার প্রাসাদের সুউচ্চ দেয়াল, প্রহরীদের চক্ষু ফাঁকি দিয়ে অতিক্রম করা ছিলো এক দুঃসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু জীবন বাজি রেখে অন্যায়কারীর তা করার কোনও প্রয়োজন ছিলো না এবং সে অভিযোগ খন্ডন করার জন্য কোনও যুক্তিও উত্থাপন করে নাই। দাউদ নবী তাদের অভিযোগ শ্রবণ করেন এবং মিথ্যা ও প্রতারণার বিরুদ্ধে প্রচার করেন। লোভ ত্যাগ করে যার যা প্রাপ্য তাই নিয়ে সকলের সন্তুষ্ট থাকা উচিত।
৪১৭৫। দাউদ নবী তাঁর প্রচারণার সময়ে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব আরোপ করেন ব্যবসায়ে সক্রিয় অংশীদের মধ্যে ন্যায় বিচারের প্রতি। অংশীদারিত্বের প্রধান শর্ত-ই হচ্ছে কেউ কারও প্রতি প্রতারণা না করা , কেউ কারও সুযোগ গ্রহণ না করা। কিন্তু কত সামান্য সংখ্যক লোক আছে পৃথিবীতে যারা এই শর্ত মেনে চলে। যারা তা মেনে চলে তারাই পৃথিবীতে পূণ্যাত্মা। এই বিচার করার সময়ে দাউদ নবীর অন্তরে নিজের ন্যায় বিচার করার ক্ষমতা ও আল্লাহ্র প্রতি আত্মসমর্পনকারী রূপে মনে মনে গর্বের সূচনা ঘটে, কিন্তু হঠাৎ করেই লোকদ্বয় অন্তর্ধান করে যায়। ঘটনার আকস্মিকতায় তাঁর বোধদয় ঘটে। তিনি বুঝতে পারেন যে, সম্পূর্ণ ঘটনাটি ছিলো তার জন্য এক পরীক্ষা স্বরূপ। আল্লাহ্ তার নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিক ভাবে তিনি কতটুকু আল্লাহ্র প্রতি নিবেদিত তাই পরীক্ষা করতে চেয়েছেন। যদিও রাজা হিসেবে তিনি ছিলেন দক্ষ প্রশাসক ও মহান , বিচারক হিসেবে ছিলেন ন্যায়বিচারক , কিন্তু এক মূহুর্তের জন্য তিনি ভুলে গিয়েছিলেন যে, এসব ক্ষমতা তাঁর নিজস্ব নয়, মহান আল্লাহ্ তাঁকে এসব ক্ষমতা দান করেছেন মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত করার জন্য। এক মূহুর্তের জন্য তাঁর অন্তরে তাঁর নিজস্ব ক্ষমতার জন্য গর্ববোধ হয়েছিলো। “অবিচার করে না কেবল মুমিন ও সৎকর্মপরায়ণ এবং তারা সংখ্যায় অল্প।” এই বাক্যটি তাঁর আত্মগর্বেরই প্রকাশ মাত্র। কিন্তু যে মূহুর্তে লোকদ্বয় অন্তর্ধান করে সাথে সাথে তাঁর চৈতন্যদয় ঘঠে। তিনি বুঝতে পারেন যে, গর্ব ও অহংকার রূপ শয়তান তার আধ্যাত্মিক জগতকে ক্ষণকালের জন্য হলেও গ্রাস করেছে। সাধারণ লোকের মত তিনি ভুলে গিয়েছিলেন যে, আল্লাহ্র অনুগ্রহে তাঁর মধ্যে জ্ঞান , প্রজ্ঞা ও ন্যায়বোধ জন্মলাভ করেছে ; তিনি শুধু এসবের ধারক , বাহক ও রক্ষকমাত্র। এতে তার নিজস্ব কৃতিত্ব খুব বেশী নাই। এ সব লাভ করার জন্য তার উচিত বিনয়ের সাথে আল্লাহ্র নিকট ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা ও আত্মসমর্পন করা।
উপদেশ : সাধারণ মানুষ কত সামান্য কারণেই আত্মগর্ব , আত্মগরিমা ও অহংকারে মেতে উঠে তা আশ্চর্য্যজনক , যা ব্যক্তি নিজেও অনুধাবনে অক্ষম। যেরূপ অক্ষম হয়েছিলেন দাউদ নবী ; যদিও তা ক্ষণকালের জন্য । আত্মগর্ব , আত্মগরিমা ও অহংকার মানুষকে শয়তানের রাস্তায় পরিচালিত করে , কারণ মানুষ ভুলে যায় পার্থিব ও আধ্যাত্মিক সকল কিছুই আল্লাহ্র অনুগ্রহ।
৪১৭৬। দাউদ নবীর এই আত্মগরিমা ও আত্মগর্ব সাধারণের জন্য কোনও গুরুত্বই বয়ে আনে না। কারণ সাধারণ লোকের ধারণা যে, তিনি তো কোনও অন্যায়ের আশ্রয় গ্রহণ করেন নাই। তিনি একজন ভালো এবং ন্যায়বান নৃপতি। তাঁর কোনও কার্যক্রমে বাহ্যিক অন্যায় ঘটে নাই। কিন্তু আধ্যাত্মিক জগতে তিনি ছিলেন এক উচ্চমার্গের ব্যক্তি। আল্লাহ্র নিকটতম সান্নিধ্যে তাঁর অবস্থান [Muqarrabun ৫৬ : ১১ ]। সুতারাং এ সব পবিত্র আত্মাতে আত্মগর্বের স্থান নাই। দাউদ নবী যখনই আত্মোপলব্ধি করতে পারলেন , সঙ্গে সঙ্গে তিনি অনুতাপ ও আত্মসংশোধনের মাধ্যমে আল্লাহ্র ক্ষমা লাভের চেষ্টা করেন। পরবর্তী আয়াতে দেখুন আল্লাহ্ তাঁকে ক্ষমা করে দেন।
উপদেশ : মানুষের অবচেতন মনে সর্বদা শয়তান তাঁর জাল বিস্তার করে যার প্রধান অস্ত্র হচ্ছে অহংকার , আত্মগর্ব ও আত্মগরিমা। দাউদ নবীর মত, মানুষ অনেক সময়ে নিজে বুঝতেই পারে না যে, সে আত্মগরিমার দ্বারা আক্রান্ত।
৪১৭৬-ক। অনেক তফসীরকারের মতে এখানে দাউদ নবীর অপরাধ ছিলো যে তিনি অন্য পক্ষের কোন যুক্তি না শুনেই তাড়াতাড়ি বিচারের রায় প্রদান করেন। যখন তিনি তাঁর অপরাধ বুঝতে পারলেন তিনি অনুতাপে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
আয়াতঃ 038.025
আমি তার সে অপরাধ ক্ষমা করলাম। নিশ্চয় আমার কাছে তার জন্যে রয়েছে উচ্চ মর্তবা ও সুন্দর আবাসস্থল।
So We forgave him this (lapse): he enjoyed, indeed, a Near Approach to Us, and a beautiful place of (Final) Return.
فَغَفَرْنَا لَهُ ذَلِكَ وَإِنَّ لَهُ عِندَنَا لَزُلْفَى وَحُسْنَ مَآبٍ
Faghafarna lahu thalika wa-inna lahu AAindana lazulfa wahusna maabin
YUSUFALI: So We forgave him this (lapse): he enjoyed, indeed, a Near Approach to Us, and a beautiful place of (Final) Return.
PICKTHAL: So We forgave him that; and lo! he had access to Our presence and a happy journey’s end.
SHAKIR: Therefore We rectified for him this, and most surely he had a nearness to Us and an excellent resort.
KHALIFA: We forgave him in this matter. We have granted him a position of honor with us, and a beautiful abode.
২৫। সুতারাং তাঁর এই [ ত্রুটি ] আমি ক্ষমা করলাম। সে উপভোগ করেছে আমার নৈকট্য এবং তার [শেষ ] প্রত্যাবর্তন স্থান হবে উত্তম।
২৬। হে দাউদ ! আমি অবশ্যই তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি ৪১৭৭। সুতারাং মানুষের মধ্যে সত্য ও [ ন্যায়ের ] ভিত্তিতে বিচার -মীমাংসা কর। তোমার [ হৃদয়ের ] কামনা বাসনার অনুসরণ করো না। কারণ তারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ থেকে ভ্রষ্ট করবে ৪১৭৮। যারা আল্লাহ্র পথ থেকে ভ্রষ্ট হয় তাদের জন্য আছে ভয়াবহ শাস্তি। কারণ তারা হিসাবের দিবসকে বিস্মৃত হয়েছিলো।
৪১৭৭। দেখুন আয়াত [২ : ৩০ ] এবং টিকা ৪৭। এই আয়াতে আল্লাহ্ দাউদ নবীকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে প্রেরণ করেছেন। দাউদ নবীর রাজা হিসেবে প্রশাসনিক ক্ষমতা, জ্ঞান ,প্রজ্ঞা , ন্যায়বিচারের ক্ষমতা, সঙ্গীতের প্রতিভা , নবুয়ত্ব সবই আল্লাহ্র অনুগ্রহ ; এবং আল্লাহ্ তাঁকে অনুগ্রহ করেছেন সেটাতে তার নিজস্ব কোন কৃতিত্ব নাই। আত্মগরিমার কোনও অবকাশ নাই। দাউদ নবীর এই উদাহরণ থেকে সাধারণ মানুষের শিক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে সাধারণ মানুষ তাদের মেধা, মননশীলতা, প্রতিভা,সৃজনশীলতা ; সাফল্য কৃতিত্ব সব কিছুর জন্য আল্লাহ্র পরিবর্তে আত্মগরিমায় লিপ্ত হয়। এ কথা সত্যি যে আল্লাহ্র অনুগ্রহকে নিজস্ব চেষ্টার মাধ্যমে আয়ত্ব করতে হয়। কিন্তু যদি মেধা বা সৃজনশীলতা বা প্রতিভা জন্মগত ভাবে লাভ না করে ,তবে চেষ্টা দ্বারা এসব করায়ত্ব করা সম্ভব নয়। সুতারাং জীবনের সকল , সাফল্যের মূল হচ্ছে আল্লাহ্র অনুগ্রহ এবং তার জন্য মানুষ অবশ্যই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করবে।
৪১৭৮। মুসলিম দর্শন অনুযায়ী দাউদ নবী বিভিন্ন গুণে গুণান্বিত ছিলেন এবং তিনি ছিলেন ন্যায় বিচারক। এই আয়াত গুলির মাধ্যমে দাউদ নবীর চরিত্রের নির্মলতা প্রকাশ করা হয়েছে এভাবে যে সামান্য পরিমাণ আত্ম অহংকার আত্মার মাঝে উদয় হওয়ার সাথে সাথে তিনি তা অনুতাপের বারিধারাতে ধুয়ে মুছে ফেলে সদ্যস্নাতরূপে প্রস্ফুটিত হন। দাউদ নবী সম্বন্ধে বাইবেলের ধারণার সাথে মুসলিমদের ধারণার বিস্তর পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
আয়াতঃ 038.026
হে দাউদ! আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি, অতএব, তুমি মানুষের মাঝে ন্যায়সঙ্গতভাবে রাজত্ব কর এবং খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না। তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে দেবে। নিশ্চয় যারা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হয়, তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি, এ কারণে যে, তারা হিসাবদিবসকে ভূলে যায়।
O David! We did indeed make thee a vicegerent on earth: so judge thou between men in truth (and justice): Nor follow thou the lusts (of thy heart), for they will mislead thee from the Path of Allah. for those who wander astray from the Path of Allah, is a Penalty Grievous, for that they forget the Day of Account.
يَا دَاوُودُ إِنَّا جَعَلْنَاكَ خَلِيفَةً فِي الْأَرْضِ فَاحْكُم بَيْنَ النَّاسِ بِالْحَقِّ وَلَا تَتَّبِعِ الْهَوَى فَيُضِلَّكَ عَن سَبِيلِ اللَّهِ إِنَّ الَّذِينَ يَضِلُّونَ عَن سَبِيلِ اللَّهِ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيدٌ بِمَا نَسُوا يَوْمَ الْحِسَابِ
Ya dawoodu inna jaAAalnaka khaleefatan fee al-ardi faohkum bayna alnnasi bialhaqqi wala tattabiAAi alhawa fayudillaka AAan sabeeli Allahi inna allatheena yadilloona AAan sabeeli Allahi lahum AAathabun shadeedun bima nasoo yawma alhisabi
YUSUFALI: O David! We did indeed make thee a vicegerent on earth: so judge thou between men in truth (and justice): Nor follow thou the lusts (of thy heart), for they will mislead thee from the Path of Allah: for those who wander astray from the Path of Allah, is a Penalty Grievous, for that they forget the Day of Account.
PICKTHAL: (And it was said unto him): O David! Lo! We have set thee as a viceroy in the earth; therefor judge aright between mankind, and follow not desire that it beguile thee from the way of Allah. Lo! those who wander from the way of Allah have an awful doom, forasmuch as they forgot the Day of Reckoning.
SHAKIR: o Dawood ! surely We have made you a ruler in the land; so judge between men with justice and do not follow desire, lest it should lead you astray from the path of Allah; (as for) those who go astray from the path of Allah, they shall surely have a severe punishment because they forgot the day of reckoning.
KHALIFA: O David, we have made you a ruler on earth. Therefore, you shall judge among the people equitably, and do not follow your personal opinion, lest it diverts you from the way of GOD. Surely, those who stray off the way of GOD incur severe retribution for forgetting the Day of Reckoning.
২৫। সুতারাং তাঁর এই [ ত্রুটি ] আমি ক্ষমা করলাম। সে উপভোগ করেছে আমার নৈকট্য এবং তার [শেষ ] প্রত্যাবর্তন স্থান হবে উত্তম।
২৬। হে দাউদ ! আমি অবশ্যই তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি ৪১৭৭। সুতারাং মানুষের মধ্যে সত্য ও [ ন্যায়ের ] ভিত্তিতে বিচার -মীমাংসা কর। তোমার [ হৃদয়ের ] কামনা বাসনার অনুসরণ করো না। কারণ তারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ থেকে ভ্রষ্ট করবে ৪১৭৮। যারা আল্লাহ্র পথ থেকে ভ্রষ্ট হয় তাদের জন্য আছে ভয়াবহ শাস্তি। কারণ তারা হিসাবের দিবসকে বিস্মৃত হয়েছিলো।
৪১৭৭। দেখুন আয়াত [২ : ৩০ ] এবং টিকা ৪৭। এই আয়াতে আল্লাহ্ দাউদ নবীকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে প্রেরণ করেছেন। দাউদ নবীর রাজা হিসেবে প্রশাসনিক ক্ষমতা, জ্ঞান ,প্রজ্ঞা , ন্যায়বিচারের ক্ষমতা, সঙ্গীতের প্রতিভা , নবুয়ত্ব সবই আল্লাহ্র অনুগ্রহ ; এবং আল্লাহ্ তাঁকে অনুগ্রহ করেছেন সেটাতে তার নিজস্ব কোন কৃতিত্ব নাই। আত্মগরিমার কোনও অবকাশ নাই। দাউদ নবীর এই উদাহরণ থেকে সাধারণ মানুষের শিক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে সাধারণ মানুষ তাদের মেধা, মননশীলতা, প্রতিভা,সৃজনশীলতা ; সাফল্য কৃতিত্ব সব কিছুর জন্য আল্লাহ্র পরিবর্তে আত্মগরিমায় লিপ্ত হয়। এ কথা সত্যি যে আল্লাহ্র অনুগ্রহকে নিজস্ব চেষ্টার মাধ্যমে আয়ত্ব করতে হয়। কিন্তু যদি মেধা বা সৃজনশীলতা বা প্রতিভা জন্মগত ভাবে লাভ না করে ,তবে চেষ্টা দ্বারা এসব করায়ত্ব করা সম্ভব নয়। সুতারাং জীবনের সকল , সাফল্যের মূল হচ্ছে আল্লাহ্র অনুগ্রহ এবং তার জন্য মানুষ অবশ্যই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করবে।
৪১৭৮। মুসলিম দর্শন অনুযায়ী দাউদ নবী বিভিন্ন গুণে গুণান্বিত ছিলেন এবং তিনি ছিলেন ন্যায় বিচারক। এই আয়াত গুলির মাধ্যমে দাউদ নবীর চরিত্রের নির্মলতা প্রকাশ করা হয়েছে এভাবে যে সামান্য পরিমাণ আত্ম অহংকার আত্মার মাঝে উদয় হওয়ার সাথে সাথে তিনি তা অনুতাপের বারিধারাতে ধুয়ে মুছে ফেলে সদ্যস্নাতরূপে প্রস্ফুটিত হন। দাউদ নবী সম্বন্ধে বাইবেলের ধারণার সাথে মুসলিমদের ধারণার বিস্তর পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
আয়াতঃ 038.027
আমি আসমান-যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী কোন কিছু অযথা সৃষ্টি করিনি। এটা কাফেরদের ধারণা। অতএব, কাফেরদের জন্যে রয়েছে দূর্ভোগ অর্থাৎ জাহান্নাম।
Not without purpose did We create heaven and earth and all between! that were the thought of Unbelievers! but woe to the Unbelievers because of the Fire (of Hell)!
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاء وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا بَاطِلًا ذَلِكَ ظَنُّ الَّذِينَ كَفَرُوا فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ كَفَرُوا مِنَ النَّارِ
Wama khalaqna alssamaa waal-arda wama baynahuma batilan thalika thannu allatheena kafaroo fawaylun lillatheena kafaroo mina alnnari
YUSUFALI: Not without purpose did We create heaven and earth and all between! that were the thought of Unbelievers! but woe to the Unbelievers because of the Fire (of Hell)!
PICKTHAL: And We created not the heaven and the earth and all that is between them in vain. That is the opinion of those who disbelieve. And woe unto those who disbelieve, from the Fire!
SHAKIR: And We did not create the heaven and the earth and what is between them in vain; that is the opinion of those who disbelieve then woe to those who disbelieve on account of the fire.
KHALIFA: We did not create the heaven and the earth, and everything between them, in vain. Such is the thinking of those who disbelieve. Therefore, woe to those who disbelieve; they will suffer in Hell.
রুকু – ৩
২৭। আমি আকাশ ও পৃথিবী এবং এ দুই এর মধ্যবর্তী সকল কিছু উদ্দেশ্য বিহীন ভাবে সৃষ্টি করি নাই। যারা অবিশ্বাসী শুধু তারাই [ ভুল ] ধারণা করে ! কিন্তু আফসোস অবিশ্বাসীদের জন্য , কারণ [তাদের জন্য রয়েছে ] জাহান্নামের আগুন! ৪১৭৯
৪১৭৯। দেখুন আয়াত [ ৩ : ১৯১ ]। আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস হচ্ছে আত্মার এক বিশেষ অবস্থা , চুম্বক যেরূপ যেকোনও অবস্থাতেই পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর দিকে মুখ করে থাকবে, বিশ্বাসী আত্মার অবস্থান হবে সেরূপ সকল অবস্থায় থাকবে আল্লাহ্র অস্তিত্বে নিমগ্ন। ফলে পরলোকের জীবন তাঁর নিকট হবে বাস্তব সত্য যার পটভূমিতে পার্থিব এই জীবন হবে সৌন্দর্য ও শৃঙ্খলাতে পরিপূর্ণ। অপরপক্ষে আল্লাহ্র অস্তিত্বে অবিশ্বাসী যে আত্মা সে আত্মায় পরলোকের জীবনে বিশ্বাসহীনতার জন্য , ইহলোকের পার্থিব জীবন হবে উদ্দেশ্য বিহীন। নোঙ্গর ছেড়া নৌকার ন্যায় – উদ্ভ্রান্ত ,লক্ষ্যহীন , দিগভ্রান্ত। অবিশ্বাসের ধারণা হচ্ছে প্রকৃত বিশ্বাসের বিপরীত ঠিক যেরূপ নিখিল বিশ্বে বিশৃঙ্খলা শৃঙ্খলার বিপরীত, দোযখের আগুনের বিপরীত হচ্ছে বেহেশতের শান্তি।
আয়াতঃ 038.028
আমি কি বিশ্বাসী ও সৎকর্মীদেরকে পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী কাফেরদের সমতুল্য করে দেব? না খোদাভীরুদেরকে পাপাচারীদের সম্মান করে দেব।
Shall We treat those who believe and work deeds of righteousness, the same as those who do mischief on earth? Shall We treat those who guard against evil, the same as those who turn aside from the right?
أَمْ نَجْعَلُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ كَالْمُفْسِدِينَ فِي الْأَرْضِ أَمْ نَجْعَلُ الْمُتَّقِينَ كَالْفُجَّارِ
Am najAAalu allatheena amanoo waAAamiloo alssalihati kaalmufsideena fee al-ardi am najAAalu almuttaqeena kaalfujjari
YUSUFALI: Shall We treat those who believe and work deeds of righteousness, the same as those who do mischief on earth? Shall We treat those who guard against evil, the same as those who turn aside from the right?
PICKTHAL: Shall We treat those who believe and do good works as those who spread corruption in the earth; or shall We treat the pious as the wicked?
SHAKIR: Shall We treat those who believe and do good like the mischief-makers in the earth? Or shall We make those who guard (against evil) like the wicked?
KHALIFA: Shall we treat those who believe and lead a righteous life as we treat those who commit evil on earth? Shall we treat the righteous as we treat the wicked?
২৮। যারা ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে আমি কি তাদের সমপর্যায়ভুক্ত করবো তাদের সাথে যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়ায়? যারা নিজেকে পাপ থেকে রক্ষা করে তাদের কি সমপর্যায়ভুক্ত করবো তাদের সাথে যারা ন্যায় [ ও সত্যকে ] দূরে সরিয়ে রাখে ? ৪১৮০
৪১৮০। এই সূরার ২৬ নং আয়াতের শেষে ” হিসাব দিবসের ” উল্লেখ আছে। এই “হিসাব দিবস” হচ্ছে শেষ বিচারের দিন, পরকালে যেদিন ইহকালের হিসাব গ্রহণের মাধ্যমে কর্মফল দান করা হবে। অবিশ্বাসীরা বিশ্বাস করে যে, মৃত্যুর সাথে সাথে জীবনের সব শেষ হয়ে যাবে। আত্মার অস্তিত্বে তারা বিশ্বাসী নয়। আত্মার অস্তিত্বে বিশ্বাস মানুষকে আধ্যাত্মিক জগতের শ্রেষ্ঠত্ব ও পতনের ধারণা দান করে। পৃথিবীতে আল্লাহ্র নেয়ামত সকলে সমভাবে ভোগ করে না। যদি ইহকালের কর্মফলের ভিত্তিতে পরকালের বিচার নাই হবে , তবে কি ভাবে পৃথিবীতে পাপী ও পূণ্যাত্মা , ভালো ও মন্দের যে বৈষম্য তা মেনে নেয়া যায় ? ধর্মের গোড়ার কথাই হচ্ছে আত্মার অস্তিত্বে বিশ্বাস করা। আত্মা অমর এবং অবিনশ্বর। প্রতিটি আত্মাকে ইহাকালের কর্মের হিসাব দাখিল করতে হবে পরকালে। সেদিন সকল বৈষম্যের সমতা বিধান করা হবে। আল্লাহ্ ভালো-মন্দ ,পাপী-পূণ্যাত্মা সকলকে একভাবে বিচার করবেন না। যদি আত্মার অস্তিত্ব না থাকতো যদি মৃত্যুর মাধ্যমেই জীবনের শেষ হয়ে যেতো, তাহলে মনুষ্য জন্ম বৃথা হয়ে যেতো।
আয়াতঃ 038.029
এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে।
(Here is) a Book which We have sent down unto thee, full of blessings, that they may mediate on its Signs, and that men of understanding may receive admonition.
كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ إِلَيْكَ مُبَارَكٌ لِّيَدَّبَّرُوا آيَاتِهِ وَلِيَتَذَكَّرَ أُوْلُوا الْأَلْبَابِ
Kitabun anzalnahu ilayka mubarakun liyaddabbaroo ayatihi waliyatathakkara oloo al-albabi
YUSUFALI: (Here is) a Book which We have sent down unto thee, full of blessings, that they may mediate on its Signs, and that men of understanding may receive admonition.
PICKTHAL: (This is) a Scripture that We have revealed unto thee, full of blessing, that they may ponder its revelations, and that men of understanding may reflect.
SHAKIR: (It is) a Book We have revealed to you abounding in good that they may ponder over its verses, and that those endowed with understanding may be mindful.
KHALIFA: This is a scripture that we sent down to you, that is sacred – perhaps they reflect on its verses. Those who possess intelligence will take heed.
২৯। এই কিতাব [ কুর-আন্ ] তোমার নিকট প্রেরণ করেছি যা কল্যাণে পরিপূর্ণ; মানুষ যেনো এর আয়াতসমূহ সম্বন্ধে চিন্তা করতে পারে এবং বোধশক্তি সম্পন্ন মানুষেরা যেনো তা থেকে উপদেশ গ্রহণ করতে পারে ৪১৮১।
৪১৮১। আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ বা কোরাণের অবতীর্ণ কোনও আকস্মিক ঘটনা নয়। কোরাণের মাধ্যমে আল্লাহ্র আশীর্বাদ ও মঙ্গল মানুষের নিকট পৌঁছায়। আল্লাহ্ আমাদের স্রষ্টা। মানুষের প্রকৃত কল্যাণের উপায় তাঁর থেকে বেশী আর কেউই জানে না। আত্মিক উন্নতির বিভিন্ন ধাপ এই কিতাবে [ কোরাণে ] বর্ণিত আছে। মানুষের মাঝে যে আত্মার বাস তা পরমাত্মার অংশ [ রুহু ]। আত্মার প্রশান্তি পৃথিবীতে বেহেশতের শান্তি আনায়ন করে। আত্মার অশান্তি পৃথিবীকে দোযখে পরিণত করে। আধ্যাত্মিক উন্নতির পথ বা শান্তির পথ প্রদর্শন করে এই কিতাব [কোরাণ ]। কোরাণকে যদি কেউ প্রকৃত অর্থে গ্রহণ করে ,এর আয়াতসমূহ চিন্তার মাধ্যমে অনুধাবনের চেষ্টা করে , তবে সে বিশ্ব প্রকৃতির মাঝে তাঁর অবস্থান ও মানুষের সাথে প্রকৃতির ও আল্লাহ্র সর্ম্পককে অনুধাবনে সক্ষম হবে। চিন্তাশীল ও বোধশক্তিসম্পন্ন মানুষের জন্য কোরাণ হচ্ছে এক মহাগ্রন্থ – যা তাদের মনের সকল সন্দেহের অবসান ঘটায়, এবং সকল প্রশ্নের সমাধান করে। এভাবেই কোরাণের মাধ্যমে প্রকৃত জ্ঞানী ব্যক্তিরা আধ্যাত্মিক জগতের শিক্ষালাভ করে থাকেন। উদভ্রান্ত আত্মা সঠিক পথ খুঁজে পায়, বুঝতে সক্ষম হয় বিশ্বজগতে মানুষের সৃষ্টির রহস্য।
আয়াতঃ 038.030
আমি দাউদকে সোলায়মান দান করেছি। সে একজন উত্তম বান্দা। সে ছিল প্রত্যাবর্তনশীল।
To David We gave Solomon (for a son),- How excellent in Our service! Ever did he turn (to Us)!
وَوَهَبْنَا لِدَاوُودَ سُلَيْمَانَ نِعْمَ الْعَبْدُ إِنَّهُ أَوَّابٌ
Wawahabna lidawooda sulaymana niAAma alAAabdu innahu awwabun
YUSUFALI: To David We gave Solomon (for a son),- How excellent in Our service! Ever did he turn (to Us)!
PICKTHAL: And We bestowed on David, Solomon. How excellent a slave! Lo! he was ever turning in repentance (toward Allah).
SHAKIR: And We gave to Dawood Sulaiman, most excellent the servant! Surely he was frequent in returning (to Allah).
KHALIFA: To David we granted Solomon; a good and obedient servant.
৩০। আমি দাউদকে [ পুত্র হিসেবে ] দান করেছিলাম সুলাইমানকে ৪১৮২। কত চমৎকার সে ছিলো আমার সেবায় ! সে সর্বদা [ আমার ] অভিমুখী ছিলো।
৪১৮২। মানুষের মাঝে পরমাত্মার বাস যা অমর এবং অবিনশ্বর। পৃথিবীর সকল কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে, কিন্তু আত্মার ধ্বংস নাই। আধ্যাত্মিক উন্নতিই হচ্ছে পৃথিবীতে মানুষের অবস্থানের প্রধান কারণ। আত্মিক উন্নতি ব্যতীত পার্থিব জীবন এবং জাগতিক বিষয়বস্তু অর্থহীন । এই বিষয়টির গুরুত্ব বোঝানোর জন্য পুণরায় দাউদ নবী ও তার পুত্র সুলাইমানের উল্লেখ করা হয়েছে। সুলাইমান ছিলেন এক শক্তিশালী ও মহান নৃপতি। কিন্তু তাঁর মহত্ব ও শক্তির প্রকৃত উৎস হচ্ছেন সর্বশক্তিমান আল্লাহ্। সুলাইমান সম্বন্ধে কোরাণে বলা হয়েছে ,” সে ছিলো অতিশয় আল্লাহ্ অভিমুখী” যা ওল্ড টেস্টামেন্ট বা তাওরাতের বক্তব্য থেকে পৃথক। ওল্ড টেস্টামেন্টে সুলাইমানকে পৌত্তলিক এবং আল্লাহ্র চোখে পাপিষ্ঠ রূপে উপস্থাপন করা হয়েছে এভাবে “Doing evil in the sight of the lord” যেখানে কোরাণে তাঁকে আল্লাহ্র একান্ত অনুগত ও পূণ্যাত্মারূপে বর্ণনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 038.031
যখন তার সামনে অপরাহ্নে উৎকৃষ্ট অশ্বরাজি পেশ করা হল,
Behold, there were brought before him, at eventide coursers of the highest breeding, and swift of foot;
إِذْ عُرِضَ عَلَيْهِ بِالْعَشِيِّ الصَّافِنَاتُ الْجِيَادُ
Ith AAurida AAalayhi bialAAashiyyi alssafinatu aljiyadu
YUSUFALI: Behold, there were brought before him, at eventide coursers of the highest breeding, and swift of foot;
PICKTHAL: When there were shown to him at eventide lightfooted coursers
SHAKIR: When there were brought to him in the evening (horses) still when standing, swift when running–
KHALIFA: One day he became preoccupied with beautiful horses, until the night fell.
৩১। স্মরণ কর! যখন এক অপরাহ্নে তাঁর সামনে ,দ্রুতগামী উন্নত জাতের অশ্বসমূহ নিয়ে আসা হলো ৪১৮৩, ৪১৮৪;
৪১৮৩। এই আয়াতটি সম্বন্ধে ব্যাখ্যাকারীরা একমত নন। বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে এর ব্যাখ্যা করেছেন। ইউসুফ আলী সাহেব তাদের মতামতের সাথে নিজস্ব সিদ্ধান্ত যোগ করেছেন।
৪১৮৪। Safinal – আক্ষরিক ভাবে সেই ঘোড়াকে বোঝানো হয়েছে, যে ঘোড়া নিদ্রিত অবস্থায় তার তিনটি পা শক্তভাবে মাটিতে প্রোথিত করে থাকে এবং চর্তুথ পাটি বিশ্রামের জন্য আলগা করে থাকে অর্থাৎ অশ্বের ঘুমন্ত অবস্থাকে বোঝানো হয়েছে। আলংকারিক অর্থে শব্দটি দ্বারা অশ্বের বিভিন্ন গুণাবলীকে প্রকাশ করা হয়েছে। যেমন : উন্নত গুণসম্পন্ন জাতি যথা দ্রুত চলার গতি শিষ্টাচার ইত্যাদি।
আয়াতঃ 038.032
তখন সে বললঃ আমি তো আমার পরওয়ারদেগারের স্মরণে বিস্মৃত হয়ে সম্পদের মহব্বতে মুগ্ধ হয়ে পড়েছি-এমনকি সূর্য ডুবে গেছে।
And he said, “Truly do I love the love of good, with a view to the glory of my Lord,”- until (the sun) was hidden in the veil (of night):
فَقَالَ إِنِّي أَحْبَبْتُ حُبَّ الْخَيْرِ عَن ذِكْرِ رَبِّي حَتَّى تَوَارَتْ بِالْحِجَابِ
Faqala innee ahbabtu hubba alkhayri AAan thikri rabbee hatta tawarat bialhijabi
YUSUFALI: And he said, “Truly do I love the love of good, with a view to the glory of my Lord,”- until (the sun) was hidden in the veil (of night):
PICKTHAL: And he said: Lo! I have preferred the good things (of the world) to the remembrance of my Lord; till they were taken out of sight behind the curtain.
SHAKIR: Then he said: Surely I preferred the good things to the remembrance of my Lord– until the sun set and time for Asr prayer was over, (he said):
KHALIFA: He then said, “I enjoyed the material things more than I enjoyed worshiping my Lord, until the sun was gone.
৩২। তখন সে বলেছিলো ,” আমি তো আমার প্রভুর স্মরণ থেকে বিমুখ হয়ে , ঐশ্বর্য প্রীতিতে মগ্ন হয়ে পড়েছিলাম ৪১৮৫, যতক্ষণ না সূর্য রাত্রির অবগুন্ঠনে আড়াল হয়ে পড়লো ৪১৮৬।
৪১৮৫। সুলাইমানের [আ ] এই উক্তিটির উল্লেখ ওল্ড টেস্টামেন্টে নাই। মওলানা ইউসুফ আলীর ব্যাখ্যা হচ্ছে হযরত সুলাইমানও তাঁর পিতার ন্যায় আধ্যাত্মিক জগতে অত্যন্ত সাবধান ছিলেন। উক্তিটি থেকে প্রতীয়মান হয় যে, হযরত সুলাইমান ক্ষণকালের জন্য অশ্বরাজির মোহে পড়ে আল্লাহ্কে স্মরণ করতে বিস্মৃত হন। পিতা হযরত দাউদের ন্যায় তিনিও আত্মসুখের জন্য পার্থিব জিনিষের মোহে ক্ষণকালের বিস্মৃতিকে অত্যন্ত ঘৃণার চোখে দেখেছিলেন। আত্ম সুখের দ্বারা আত্মিক গুণাবলী নষ্ট করতে চান নাই। তিনি অশ্ব ভালোবাসতেন ; তাঁর ছিলো বিরাট সেনাবাহিনী , অশ্বারোহীদল এবং ঐশ্বর্য,সম্পদ। তিনি তাঁর সকল সম্পদ আল্লাহ্র সেবায় নিবেদন করতেন। দেখুন আয়াত [২৭ : ১৯ ] ও টিকা ৩২৫৯ এবং [ ২৭ : ৪০ ] আয়াত ও টিকা ৩২৭৬। রাজ্যের প্রসার ও ক্ষমতা লাভের জন্য তিনি কখনও যুদ্ধ করেন নাই। রক্তের তৃষ্ণা তাঁর ছিলো না। তিনি যুদ্ধ করেছেন জেহাদের কারণে – আল্লাহ্র সত্য ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠার জন্য। তাই তাঁর অশ্বপ্রীতিকে যোদ্ধাদের অশ্বপ্রীতির সাথে বা যারা ঘোড়দৌড় করে , তাদের অশ্বপ্রীতির সাথে তুলনীয় নয়। তাঁর অশ্বপ্রীতিও ছিলো আল্লাহ্র বাণী প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের বা জেহাদের অংশ বিশেষ। তাঁর অশ্বের প্রতি এই ভালোবাসা এভাবে ব্যাখ্যা করা যায় : তা হচ্ছে সর্বোচ্চ মঙ্গলের প্রতীক – আধ্যাত্মিক ভালোবাসা। কারণ অশ্বরাজি প্রস্তুত করা হয়েছিলো জেহাদের জন্য। এই অশ্বের প্রতি আকর্ষণ পার্থিব কারণে নয়, পালনকর্তার স্মরণের কারণেই। কারণ জেহাদ একটি উচ্চস্তরের এবাদত।
কোন কোন তফসীরকারের মতে হযরত সুলাইমান অশ্বের পরিদর্শনে এতটাই নিমগ্ন ছিলেন যে তিনি আসর নামাজের ওয়াক্ত বিগত প্রায় তা লক্ষ্যও করেন নাই।
৪১৮৬। এই আয়াতটির শেষাংশ ইংরেজী ও বাংলাতে দুভাবে অনুবাদ করা হয়েছে। ইংরেজী অনুবাদ হচ্ছে ; “Until [The sun] was hidden in the veil [ of night ].” অর্থাৎ মাগরিবের সময় গত না হওয়া পর্যন্ত তিনি এবাদতে মশগুল হয়ে পড়েন।
বাংলা অনুবাদ হয়েছে , ” যতক্ষণ না সূর্য রাত্রির অবগুণ্ঠনে আড়াল হয়ে পড়লো।” অর্থাৎ অশ্ব পরিদর্শনে নিমগ্ন থাকার ফলে সূর্য অস্তমিত হয়ে গেছে এবং সঠিক সময়ে আল্লাহ্কে স্মরণ করতে পারেন নাই।
আয়াতঃ 038.033
এগুলোকে আমার কাছে ফিরিয়ে আন। অতঃপর সে তাদের পা ও গলদেশ ছেদন করতে শুরু করল।
“Bring them back to me.” then began he to pass his hand over (their) legs and their necks.
رُدُّوهَا عَلَيَّ فَطَفِقَ مَسْحًا بِالسُّوقِ وَالْأَعْنَاقِ
Ruddooha AAalayya fatafiqa mashan bialssooqi waal-aAAnaqi
YUSUFALI: “Bring them back to me.” then began he to pass his hand over (their) legs and their necks.
PICKTHAL: (Then he said): Bring them back to me, and fell to slashing (with his sword their) legs and necks.
SHAKIR: Bring them back to me; so he began to slash (their) legs and necks.
KHALIFA: “Bring them back.” (To bid farewell,) he rubbed their legs and necks.
৩৩। “এগুলিকে আমার সামনে পুণরায় নিয়ে এসো ” অতঃপর সেগুলির পদদেশে এবং ঘাড়ে হাত বুলাতে লাগলো ৪১৮৭।
৪১৮৭। এই আয়াতটিও দুভাবে অনুবাদ করা হয়েছে। ইংরেজী অনুবাদ হয়েছে , “Bring them back to me.” Then began he pass his hand over [ Their ] legs, and their neck. অর্থাৎ এবাদত শেষে তিনি পুণঃরায় অশ্বরাজিকে তাঁর নিকট উপস্থিত করার হুকুম দান করেন এবং অশ্ব প্রেমিকদের ন্যায় অশ্বের গলা এবং সামনের পায়ে হাত বুলাতে লাগলেন।তিনি এরূপ উত্তম অশ্বরাজি প্রাপ্তির জন্য তৃপ্ত ছিলেন কারণ তিনি সৃষ্টির মাঝে আল্লাহ্র শ্রেষ্ঠত্বকে উপলব্ধি করতে পারতেন।
বিভিন্ন বাংলা অনুবাদ হয়েছে, ” এই গুলিকে পুণরায় আমার সম্মুখে আনয়ন কর। অতঃপর সে উহাদিগের পদ ও গলদেশ ছেদন করিতে লাগিল।” অর্থাৎ নির্ধারিত নফল এবাদত বাদ পড়ার কারণে তিনি অনুতপ্ত হন এবং স্বাভাবিক ভাবেই অশ্বগুলির প্রতি তাঁর মন রুষ্ট হয়। তিনি সেগুলির পুনরায় আনাইয়া উহাদের কিছু সংখ্যককে কুরবানী করেন।
আয়াতঃ 038.034
আমি সোলায়মানকে পরীক্ষা করলাম এবং রেখে দিলাম তার সিংহাসনের উপর একটি নিস্প্রাণ দেহ। অতঃপর সে রুজু হল।
And We did try Solomon: We placed on his throne a body (without life); but he did turn (to Us in true devotion):
وَلَقَدْ فَتَنَّا سُلَيْمَانَ وَأَلْقَيْنَا عَلَى كُرْسِيِّهِ جَسَدًا ثُمَّ أَنَابَ
Walaqad fatanna sulaymana waalqayna AAala kursiyyihi jasadan thumma anaba
YUSUFALI: And We did try Solomon: We placed on his throne a body (without life); but he did turn (to Us in true devotion):
PICKTHAL: And verily We tried Solomon, and set upon his throne a (mere) body. Then did he repent.
SHAKIR: And certainly We tried Sulaiman, and We put on his throne a (mere) body, so he turned (to Allah).
KHALIFA: We thus put Solomon to the test; we blessed him with vast material wealth, but he steadfastly submitted.
৩৪। এবং আমি সুলাইমানকে পরীক্ষা করেছিলাম ৪১৮৮, আমি তাঁর সিংহাসনের উপরে মস্তকহীন একটি শবদেহ স্থাপন করেছিলাম ৪১৮৯। কিন্তু সে আমার দিকে ফিরে এলো [ প্রকৃত আনুগত্যের সাথে ] ৪১৮৯।
৪১৮৮। ” পরীক্ষা করেছিলাম ” – হযরত সুলাইমানের পরীক্ষাটি কি ছিলো ? ঐশ্বর্য, খ্যাতি-যশ যা কিছু পার্থিব সম্পদ আল্লাহ্ তাঁকে দান করেছিলেন তা ছিলো তাঁর জন্য এক আধ্যাত্মিক পরীক্ষা। জাগতিক এত সম্পদ, ঐশ্বর্য, ক্ষমতা সুখ যে কোনও মানুষের মাথা ঘুড়িয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু সুলাইমান ছিলেন আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বস্ত ও সমর্থনে একনিষ্ঠ। যখন তিনি তার এই প্রভুত সম্পদ , ক্ষমতা [ যে ক্ষমতা শুধু মানুষ নয় , জ্বিন ও প্রাকৃতিক শক্তির উপরেও কার্যকর ছিলো ] ভোগ করছেন, তখনও তিনি জাগতিক প্রলোভনে বিভ্রান্ত হন নাই। তিনি তাঁর মন বা আত্মাকে সর্বদা আল্লাহ্র কাজে ও আল্লাহ্র সেবায় একনিষ্ঠ ভাবে নিয়োজিত রাখতেন। দেখুন আয়াত [ ৮ : ২৮ ] যেখানে বলা হয়েছে ,” জেনে রাখ তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পরীক্ষা স্বরূপ।” আল্লাহ্ সুলাইমানকে পৃথিবীর সকল সম্পদ দানের মাধ্যমে আল্লাহ্র প্রতি একনিষ্ঠতার পরীক্ষা করেন।
৪১৮৯। ” আমি তাঁর সিংহাসনের উপরে মস্তকহীন একটি শবদেহ স্থাপন করেছিলাম।” – এই লাইনটি সম্বন্ধে বহুবিধ তফসীর বিদ্যমান। তবে সর্বাপেক্ষা যে তফসীরটি যুক্তিগ্রাহ্য এবং মনে আবেদন সৃষ্টি করে তা নিম্নরূপ :
সুলাইমান ছিলেন এ পর্যন্ত পৃথিবীতে যত নৃপতি রাজত্ব করেছেন, তাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা ক্ষমতাশালী। মানুষ, জ্বিন ও প্রকৃতি, পশু ও পাখী , সকলেই তাঁর অধীনে ছিলো। একবার তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন যার ফলে তিনি চলৎশক্তিবিহীন হয়ে পড়েন। এ সময়ে তাঁকে মনে হতো শবদেহ বা লাশের মত। তখন মনে হতো, একটি নিষ্প্রাণ দেহকে সিংহাসনে রেখে দেয়া হয়েছে। এতে তাঁর আত্মার মাঝে উপলব্ধি ঘটলো যে, আল্লাহ্র চোখে তিনি কত ক্ষুদ্র ,কত অসহায় , এই বিপর্যস্ত অবস্থায় তিনি নিজের ক্ষুদ্রতা উপলব্ধির মাধ্যমে স্রষ্টার চরণে নিজেকে নিবেদন করেন।
আয়াতঃ 038.035
সোলায়মান বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে মাফ করুন এবং আমাকে এমন সাম্রাজ্য দান করুন যা আমার পরে আর কেউ পেতে পারবে না। নিশ্চয় আপনি মহাদাতা।
He said, “O my Lord! Forgive me, and grant me a kingdom which, (it may be), suits not another after me: for Thou art the Grantor of Bounties (without measure).
قَالَ رَبِّ اغْفِرْ لِي وَهَبْ لِي مُلْكًا لَّا يَنبَغِي لِأَحَدٍ مِّنْ بَعْدِي إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ
Qala rabbi ighfir lee wahab lee mulkan la yanbaghee li-ahadin min baAAdee innaka anta alwahhabu
YUSUFALI: He said, “O my Lord! Forgive me, and grant me a kingdom which, (it may be), suits not another after me: for Thou art the Grantor of Bounties (without measure).
PICKTHAL: He said: My Lord! Forgive me and bestow on me sovereignty such as shall not belong to any after me. Lo! Thou art the Bestower.
SHAKIR: He said: My Lord! do Thou forgive me and grant me a kingdom which is not fit for (being inherited by) anyone after me;
KHALIFA: He said, “My Lord, forgive me, and grant me a kingship never attained by anyone else. You are the Grantor.”
৩৫। সে বলেছিলো , ” হে আমার প্রভু ! আমাকে ক্ষমা কর ৪১৯০ ; এবং আমাকে এমন রাজত্ব দান কর যা আমার পরে কাহারও জন্য [যেনো ] উপযুক্ত না হয়। তুমিই তো সীমাহীন অনুগ্রহ দান করার মালিক ৪১৯১।
৪১৯০। পার্থিব ক্ষমতা আল্লাহ্র কাছে যাঞা করা পয়গম্বরদের প্রকৃতি বিরুদ্ধ। যদিও তা যাঞা করা হয় আল্লাহ্র জন্য, আল্লাহ্র কাজের জন্য , তবুও তাঁর মাঝে কোথায় যেনো আত্মতৃপ্তির বা আত্ম সুখের সন্ধান পাওয়া যায়। সাধারণ মানুষের জন্য জাগতিক বিষয়বস্তু প্রার্থনার মাঝে বিশেষ কোনও অপরাধ নাই। কিন্তু পয়গম্বরদের জন্য আত্মসন্তুষ্টির চিন্তাও অপরাধযোগ্য যা আমরা লক্ষ্য করি সুলাইমানের পিতা হযরত দাউদের ক্ষেত্রে যার উল্লেখ আছে [ ৩৮ : ২৪ ]আয়াতে ও টিকা ৪১৭৬। হযরত সুলাইমান এ কারণেই আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
৪১৯১। হযরত সুলাইমান আল্লাহ্র কাছে আরও ক্ষমতা যাঞা করেন – যা তিনি কখনও অপব্যবহার করবেন না। যদিও এত প্রভূত ক্ষমতা সাধারণ লোকদের পক্ষে অপব্যবহার ব্যতীত ভোগ করা অসম্ভব ব্যাপার।
আয়াতঃ 038.036
তখন আমি বাতাসকে তার অনুগত করে দিলাম, যা তার হুকুমে অবাধে প্রবাহিত হত যেখানে সে পৌছাতে চাইত।
Then We subjected the wind to his power, to flow gently to his order, Whithersoever he willed,-
فَسَخَّرْنَا لَهُ الرِّيحَ تَجْرِي بِأَمْرِهِ رُخَاء حَيْثُ أَصَابَ
Fasakhkharna lahu alrreeha tajree bi-amrihi rukhaan haythu asaba
YUSUFALI: Then We subjected the wind to his power, to flow gently to his order, Whithersoever he willed,-
PICKTHAL: So We made the wind subservient unto him, setting fair by his command whithersoever he intended.
SHAKIR: Then We made the wind subservient to him; it made his command to run gently wherever he desired,
KHALIFA: We (answered his prayer and) committed the wind at his disposal, pouring rain wherever he wanted.
৩৬। তখন আমি বায়ুকে তার অধীন করে দিলাম ৪১৯২। যেনো তা তার আদেশে যেখানে সে ইচ্ছা করতো সেখানে মৃদুমন্দভাবে বয়ে যায় ; ৪১৯৩ –
৪১৯২। দেখুন [ ৩৮ : ৯ ] আয়াত।
৪১৯৩। দেখুন [ ২১ : ৮১] আয়াত ও টিকা ২৭৩৬।
আয়াতঃ 038.037
আর সকল শয়তানকে তার অধীন করে দিলাম অর্থৎ, যারা ছিল প্রাসাদ নির্মাণকারী ও ডুবুরী।
As also the evil ones, (including) every kind of builder and diver,-
وَالشَّيَاطِينَ كُلَّ بَنَّاء وَغَوَّاصٍ
Waalshshayateena kulla banna-in waghawwasin
YUSUFALI: As also the evil ones, (including) every kind of builder and diver,-
PICKTHAL: And the unruly, every builder and diver (made We subservient),
SHAKIR: And the shaitans, every builder and diver,
KHALIFA: And the devils, building and diving.
৩৭। এবং শয়তানদের [জ্বিনদের ]। যার মধ্য অর্ন্তগত ছিলো সব রকম রাজমিস্ত্রি ও ডুবুরী ; ৪১৯৪
৪১৯৪। দেখুন আয়াত [ ২১ : ৮২ ] ও টিকা ২৭৩৮ এবং আয়াত [ ৩৪ : ১২-১৩ ] ও টিকা সমূহ। শেষের আয়াতে জ্বিনের উল্লেখ আছে। সম্ভবতঃ এদেরই এক শ্রেণীকে সমুদ্রে মুক্তা আহরণের জন্য নিযুক্ত করা হতো।
আয়াতঃ 038.038
এবং অন্য আরও অনেককে অধীন করে দিলাম, যারা আবদ্ধ থাকত শৃঙ্খলে।
As also others bound together in fetters.
وَآخَرِينَ مُقَرَّنِينَ فِي الْأَصْفَادِ
Waakhareena muqarraneena fee al-asfadi
YUSUFALI: As also others bound together in fetters.
PICKTHAL: And others linked together in chains,
SHAKIR: And others fettered in chains.
KHALIFA: Others were placed at his disposal.
৩৮। এবং শৃঙ্খলে আবদ্ধ আরও অনেককে ৪১৯৫।
৪১৯৫। দেখুন আয়াত [ ১৪ : ৪৯ ] যেখানে “শৃঙ্খলাবদ্ধ ” শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে পাপীদের শেষ বিচারের দিনে শৃঙ্খলাবদ্ধ করার জন্য।
আয়াতঃ 038.039
এগুলো আমার অনুগ্রহ, অতএব, এগুলো কাউকে দাও অথবা নিজে রেখে দাও-এর কোন হিসেব দিতে হবে না।
“Such are Our Bounties: whether thou bestow them (on others) or withhold them, no account will be asked.”
هَذَا عَطَاؤُنَا فَامْنُنْ أَوْ أَمْسِكْ بِغَيْرِ حِسَابٍ
Hatha AAataona faomnun aw amsik bighayri hisabin
YUSUFALI: “Such are Our Bounties: whether thou bestow them (on others) or withhold them, no account will be asked.”
PICKTHAL: (Saying): This is Our gift, so bestow thou, or withhold, without reckoning.
SHAKIR: This is Our free gift, therefore give freely or withhold, without reckoning.
KHALIFA: “This is our provision to you; you may give generously, or withhold, without limits.”
৩৯। ” এই সব আমার অনুগ্রহ ,এ থেকে তুমি অন্যকে দিতে অথবা নিজে রাখতে পার। এর জন্য তোমাকে হিসাব দিতে হবে না ৪১৯৬। ”
৪১৯৬। আল্লাহ্ সুলাইমানকে অশেষ নেয়ামত দানে ধন্য করেছিলেন। সুলাইমানের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহ গুণে শেষ করা যাবে না। উপরন্তু আল্লাহ্ তাঁকে এই নেয়ামত তাঁর ইচ্ছামত কাউকে দান করা বা নিজের জন্য রাখার ক্ষমতা দান করেন। যে কোনও লোকের জন্য আল্লাহ্র এত অনুগ্রহ মাথা খারাপ করার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু সুলাইমান পয়গম্বর সুলভ মানসিকতায় পার্থিব সম্পদের কদর্য দিকও অনুধাবনে সক্ষম ছিলেন সুতারাং তিনি আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা প্রার্থী ছিলেন, এত ক্ষমতা পরবর্তী কেউ হয়তো সঠিক ব্যবহার না করে অপব্যবহার করতে পারে যাতে পৃথিবীর সমূহ ক্ষতির সম্ভাবনা – সে কারণেই তিনি তাঁর পরে অন্য আর কেউ যেনো এত – ক্ষমতা লাভ না করে সে জন্য আবেদন করেন এবং আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর বিশাল সাম্রাজ্য ভেঙ্গে টুকরা টুকরা হয়ে যায়। কিন্তু আল্লাহ্ তাঁর নাম ও খ্যাতি চিরদিনের জন্য পৃথিবীতে অমর করে রাখেন। শুধু তাই-ই নয়,তিনি আল্লাহ্র অনুগ্রহ ধন্য বান্দাদের মাঝে স্থান লাভ করেন। দেখুন পরবর্তী আয়াত।
আয়াতঃ 038.040
নিশ্চয় তার জন্যে আমার কাছে রয়েছে মর্যাদা ও শুভ পরিণতি।
And he enjoyed, indeed, a Near Approach to Us, and a beautiful Place of (Final) Return.
وَإِنَّ لَهُ عِندَنَا لَزُلْفَى وَحُسْنَ مَآبٍ
Wa-inna lahu AAindana lazulfa wahusna maabin
YUSUFALI: And he enjoyed, indeed, a Near Approach to Us, and a beautiful Place of (Final) Return.
PICKTHAL: And lo! he hath favour with Us, and a happy journey’s end.
SHAKIR: And most surely he had a nearness to Us and an excellent resort.
KHALIFA: He has deserved an honorable position with us, and a wonderful abode.
৪০। অবশ্যই সে আমার নৈকট্য উপভোগ করেছে ৪১৯৭। তার [শেষ ] প্রত্যাবর্তন স্থান হবে উত্তম।
৪১৯৭। এই বাক্যটি ব্যবহার করা হয়েছে দাউদ নবীর সম্বন্ধে [ ৩৮ : ২৫ ] আয়াতে। এ ভাবেই ইসরাঈলীদের দুজন মহান নৃপতির কাহিনী সমভাবে শেষ করা হয়েছে।
আয়াতঃ 038.041
স্মরণ করুণ, আমার বান্দা আইয়্যুবের কথা, যখন সে তার পালনকর্তাকে আহবান করে বললঃ শয়তান আমাকে যন্ত্রণা ও কষ্ট পৌছিয়েছে।
Commemorate Our Servant Job. Behold he cried to his Lord: “The Evil One has afflicted me with distress and suffering!”
وَاذْكُرْ عَبْدَنَا أَيُّوبَ إِذْ نَادَى رَبَّهُ أَنِّي مَسَّنِيَ الشَّيْطَانُ بِنُصْبٍ وَعَذَابٍ
Waothkur AAabdana ayyooba ith nada rabbahu annee massaniya alshshaytanu binusbin waAAathabin
YUSUFALI: Commemorate Our Servant Job. Behold he cried to his Lord: “The Evil One has afflicted me with distress and suffering!”
PICKTHAL: And make mention (O Muhammad) of Our bondman Job, when he cried unto his Lord (saying): Lo! the devil doth afflict me with distress and torment.
SHAKIR: And remember Our servant Ayyub, when he called upon his Lord: The Shaitan has afflicted me with toil and torment.
KHALIFA: Remember our servant Job: he called upon his Lord, “The devil has afflicted me with hardship and pain.”
রুকু – ৪
৪১। আমার বান্দা আইয়ুবকে স্মরণ কর ৪১৯৮। দেখো, সে তাঁর প্রভুকে আকুল ভাবে ডেকে বললো, “শয়তান তো আমাকে দুঃখ দুর্দ্দশা ভোগ করাচ্ছে।” ৪১৯৯
৪১৯৮। এই আয়াতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ আয়াতের জন্য দেখুন আয়াত [ ২১ : ৮৩ – ৮৪ ]।
৪১৯৯। আইয়ুব নবীর বিপদ বিপর্যয় ছিলো নানাবিধ। দেখুন [ ২১ : ৮৩ ] আয়াতের টিকা ২৭৩৯। তাঁর সর্বাঙ্গে ছিলো ঘা, তিনি তাঁর ঘরবাড়ী , বিষয় সম্পত্তি হারান। তাঁর পরিবার হারান, এমনকি তিনি তাঁর মানসিক ভারসাম্যও হারানোর পথে ছিলেন। কিন্তু এত কিছুর পরেও তিনি আল্লাহ্র প্রতি অটুট বিশ্বাস থেকে একচুলও চ্যুত হন নাই [ দেখুন নীচের ৪৪ নং আয়াত ]। সুতারাং তাঁর আকুল আবেদনের প্রেক্ষিতে পুণরুদ্ধার কাজ শুরু হয়ে যায়।
আয়াতঃ 038.042
তুমি তোমার পা দিয়ে ভূমিতে আঘাত কর। ঝরণা নির্গত হল গোসল করার জন্যে শীতল ও পান করার জন্যে।
(The command was given:) “Strike with thy foot: here is (water) wherein to wash, cool and refreshing, and (water) to drink.”
ارْكُضْ بِرِجْلِكَ هَذَا مُغْتَسَلٌ بَارِدٌ وَشَرَابٌ
Orkud birijlika hatha mughtasalun baridun washarabun
YUSUFALI: (The command was given:) “Strike with thy foot: here is (water) wherein to wash, cool and refreshing, and (water) to drink.”
PICKTHAL: (And it was said unto him): Strike the ground with thy foot. This (spring) is a cool bath and a refreshing drink.
SHAKIR: Urge with your foot; here is a cool washing-place and a drink.
KHALIFA: “Strike the ground with your foot. A spring will give you healing and a drink.”
৪২। [ আদেশ হলো ] : ” তোমার পা দ্বারা আঘাত কর ৪২০০ এই হচ্ছে সতেজ হওয়ার জন্য গোসলের সুশীতল পানি এবং পান করার জন্য পানীয়।
৪২০০। আল্লাহ্ আইয়ুব নবীর প্রার্থনা অনুমোদন করলেন এবং তাঁর জীবনের দুঃখ কষ্টের অবসান শুরু হলো, তাঁর প্রতি আদেশ হলো পা দ্বারা ভূমিতে আঘাত করার ফলে সেখানে একটি ঝরণার সৃষ্টি হলো – যার পানিতে অবগাহনের ফলে তিনি সুস্থতা লাভ করেন , দেহে ও মনে পরিচ্ছন্নতা অনুভব করেন, আত্মার মাঝে সতেজ ভাব উপলব্ধি করেন। এর পানি পানে তিনি তৃপ্তি লাভ করেন। এবং নিশ্চিন্তে বিশ্রাম করতে পারেন। আইয়ুব নবীর ঘটনা পূর্বেও বর্ণনা করা হয়েছে , কিন্তু তাঁর জীবনের পুনরাম্ভের ঘটনা সেখানে বর্ণনা করা হয় নাই , অথবা আইয়ুব নবীর কিতাবেও এর বর্ণনা নাই। এই সূরাতেই নূতনভাবে বর্ণনা করা হয়েছে – আল্লাহ্র রহমত ও অনুগ্রহের বিকাশের ধারা আমাদের আত্মার মাঝে উপলব্ধির জন্য।
আয়াতঃ 038.043
আমি তাকে দিলাম তার পরিজনবর্গ ও তাদের মত আরও অনেক আমার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ এবং বুদ্ধিমানদের জন্যে উপদেশস্বরূপ।
And We gave him (back) his people, and doubled their number,- as a Grace from Ourselves, and a thing for commemoration, for all who have Understanding.
وَوَهَبْنَا لَهُ أَهْلَهُ وَمِثْلَهُم مَّعَهُمْ رَحْمَةً مِّنَّا وَذِكْرَى لِأُوْلِي الْأَلْبَابِ
Wawahabna lahu ahlahu wamithlahum maAAahum rahmatan minna wathikra li-olee al-albabi
YUSUFALI: And We gave him (back) his people, and doubled their number,- as a Grace from Ourselves, and a thing for commemoration, for all who have Understanding.
PICKTHAL: And We bestowed on him (again) his household and therewith the like thereof, a mercy from Us, and a memorial for men of understanding.
SHAKIR: And We gave him his family and the like of them with them, as a mercy from Us, and as a reminder to those possessed of understanding.
KHALIFA: We restored his family for him; twice as many. Such is our mercy; a reminder for those who possess intelligence.
৪৩। এবং আমি তাকে তার পরিজনবর্গ [ফেরত ] দিলাম এবং আমার অনুগ্রহ স্বরূপ সেই সংখ্যাকে দ্বিগুণ করলাম ৪২০১। যাদের বোঝার ক্ষমতা আছে এটা তাদের সকলের জন্য স্মরণীয় স্মৃতি।
৪২০১। দেখুন আয়াত [ ২১ : ৮৪ ] ও টিকা ২৭৩৯ – ২৭৪০।
আয়াতঃ 038.044
তুমি তোমার হাতে এক মুঠো তৃণশলা নাও, তদ্বারা আঘাত কর এবং শপথ ভঙ্গ করো না। আমি তাকে পেলাম সবরকারী। চমৎকার বান্দা সে। নিশ্চয় সে ছিল প্রত্যাবর্তনশীল।
“And take in thy hand a little grass, and strike therewith: and break not (thy oath).” Truly We found him full of patience and constancy. How excellent in Our service! ever did he turn (to Us)!
وَخُذْ بِيَدِكَ ضِغْثًا فَاضْرِب بِّهِ وَلَا تَحْنَثْ إِنَّا وَجَدْنَاهُ صَابِرًا نِعْمَ الْعَبْدُ إِنَّهُ أَوَّابٌ
Wakhuth biyadika dighthan faidrib bihi wala tahnath inna wajadnahu sabiran niAAma alAAabdu innahu awwabun
YUSUFALI: “And take in thy hand a little grass, and strike therewith: and break not (thy oath).” Truly We found him full of patience and constancy. How excellent in Our service! ever did he turn (to Us)!
PICKTHAL: And (it was said unto him): Take in thine hand a branch and smite therewith, and break not thine oath. Lo! We found him steadfast, how excellent a slave! Lo! he was ever turning in repentance (to his Lord).
SHAKIR: And take in your hand a green branch and beat her with It and do not break your oath; surely We found him patient; most excellent the servant! Surely he was frequent m returning (to Allah).
KHALIFA: “Now, you shall travel the land and preach the message, to fulfill your pledge.” We found him steadfast. What a good servant! He was a submitter.
৪৪। ” তোমার হাতে একগুচ্ছ ঘাস নাও এবং তা দ্বারা আঘাত কর; এবং [তোমার প্রতিজ্ঞা ] ভঙ্গ করো না ৪২০২।” সত্যিই আমি তাঁকে ধৈর্য্যশীল ও দৃঢ় রূপে পেয়েছিলাম। আমার সেবায় [ সে ] কত উত্তম ৪২০৩। সে ছিলো সর্বদা আমার অভিমুখী।
৪২০২। ভয়াবহ বিপর্যয়ের এবং দুঃখ কষ্টের মধ্যেও আইয়ুব নবী ধৈর্য্য হারান নাই ; তিনি আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাসে ছিলেন দৃঢ়। বাহ্যত তাঁর স্ত্রী সেরূপ ছিলো না। আইয়ুব নবীর কিতাব অনুযায়ী [ ২ : ৯ – ১০ ] তার বর্ণনা নিম্নরূপ :
“Then said his wife unto him,dost thou still retain thine integritz ? Curse God, and die. But he said unto her, thou speaks as one of the foolish women speaketh , what ? Shall we receive good at the hand of God , and shall we not receive evil? In all this did not Job sin with his lips.” সম্ভবতঃ তিনি রাগের বশে তাঁর স্ত্রীকে মারার কথা বলেছিলেন। এই আয়াতে তাঁকে উপদেশ দেয়া হয়েছে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ না করার জন্য এবং একগোছা ঘাস নিয়ে তা দ্বারা আঘাত করতে বলা হয়েছে। এর দ্বারাই প্রকাশিত হয় তার চরিত্রের কমনীয়তা , ধৈর্য্যশীলতা ও দৃঢ়তা।
৪২০৩। একই বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে সুলাইমান সম্বন্ধে [ ৩৮ :৩০ ] আয়াতে। পৃথিবীতে মানব সন্তানের আগমন পরকালের প্রস্তুতির জন্য। আর এই প্রস্তুতির সর্বোচ্চ ধাপ হচ্ছে আত্মার উন্নতি লাভ। আত্মপোলব্ধি ও আত্মোন্নতির জন্য প্রয়োজন ধৈর্য্য ও দৃঢ়তা গুণ দুটি অর্জন করা আত্মার মাঝে। ধৈর্য্য ও দৃঢ়তা অর্জন করাও আল্লাহ্র এবাদত করা। দৃঢ়তা ব্যতীত ধৈর্য্য হবে জীবন বিমুখতা ও নিষ্কৃয়। সুতারাং যে বিশ্বাস দৃঢ়তার সাথে ধৈর্য্যের সমন্বয় ঘটায় – সেই মানসিকতা আত্মিক বিকাশের সহায়ক। এ কারণেই কোরাণে আল্লাহ্ মানুষের এই দুটি গুণ যা সব্র নামে অভিহিত ; তা বহু স্থানে উল্লেখ করেছেন। [দেখুন সবরের জন্য টিকা ৬১ ]। কবি মিলটনের ভাষায় ; “They also serve who only stand and wait.”
আয়াতঃ 038.045
স্মরণ করুন, হাত ও চোখের অধিকারী আমার বান্দা ইব্রাহীম, ইসহাক ও ইয়াকুবের কথা।
And commemorate Our Servants Abraham, Isaac, and Jacob, possessors of Power and Vision.
وَاذْكُرْ عِبَادَنَا إبْرَاهِيمَ وَإِسْحَقَ وَيَعْقُوبَ أُوْلِي الْأَيْدِي وَالْأَبْصَارِ
Waothkur AAibadana ibraheema wa-ishaqa wayaAAqooba olee al-aydee waal-absari
YUSUFALI: And commemorate Our Servants Abraham, Isaac, and Jacob, possessors of Power and Vision.
PICKTHAL: And make mention of Our bondmen, Abraham, Isaac and Jacob, men of parts and vision.
SHAKIR: And remember Our servants Ibrahim and Ishaq and Yaqoub, men of power and insight.
KHALIFA: Remember also our servants Abraham, Isaac, and Jacob. They were resourceful, and possessed vision.
৪৫। আমার বান্দা ইব্রাহীম , ইসাহাক্ এবং ইয়াকুবকে স্মরণ কর, যারা ছিলো ক্ষমতা ও দূরদৃষ্টির অধিকারী ৪২০৪।
৪২০৪। পূর্বের সূরাতে [ ৩৭ : ৮৩-১১৩ ] ইব্রাহীম এবং ইসাহাকের [ এবং নিহিতার্থে ইয়াকুব ] উল্লেখ আছে যেখানে তাঁদের বর্ণনা করা হয়েছে পাপের বিরুদ্ধ শক্তি হিসেবে এবং পাপের বিরুদ্ধে বিজয়ী হিসেবে। এই আয়াতে তাদের উল্লেখ করা হয়েছে আধ্যাত্মিক শক্তিতে শক্তিশালী এবং অর্ন্তদৃষ্টি সম্পন্ন মানব হিসেবে। তাঁরা ছিলেন ইসরাঈলী সম্প্রদায়ের পূর্বপুরুষ যারা তাদের পরকালের সংবাদ দান করেন। সুতারাং তারা ছিলেন ইসরাঈলীদের জন্য আর্শীবাদ স্বরূপ। কারণ তারা প্রকৃত সত্যকে শিক্ষা দেন।
আয়াতঃ 038.046
আমি তাদের এক বিশেষ গুণ তথা পরকালের স্মরণ দ্বারা স্বাতন্ত্র্য দান করেছিলাম।
Verily We did choose them for a special (purpose)- proclaiming the Message of the Hereafter.
إِنَّا أَخْلَصْنَاهُم بِخَالِصَةٍ ذِكْرَى الدَّارِ
Inna akhlasnahum bikhalisatin thikra alddari
YUSUFALI: Verily We did choose them for a special (purpose)- proclaiming the Message of the Hereafter.
PICKTHAL: Lo! We purified them with a pure thought, remembrance of the Home (of the Hereafter).
SHAKIR: Surely We purified them by a pure quality, the keeping m mind of the (final) abode.
KHALIFA: We bestowed upon them a great blessing: awareness of the Hereafter.
৪৬। আমি অবশ্য তাদের মনোনীত করেছিলাম বিশেষ [ উদ্দেশ্যে ] পরলোকের কথা প্রচারের জন্য।
৪৭। তারা ছিলো আমার দৃষ্টিতে সুনিবার্চিত , উত্তম বান্দাদের অর্ন্তভূক্ত।
৪৮। এবং স্মরণ কর , ইসমাঈল , আল্-ইয়াসা এবং জুলকিফলের কথা। এরা প্রত্যেকে উত্তম বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত ছিলো ৪২০৫।
৪২০৫। হযরত ইসমাঈল আরবদের পূর্বপুরুষ যার উল্লেখ আছে সূরা [ ৩৭ : ১০০১- ১০৭ ] আয়াতে আত্মোৎসর্গের সর্বোচ্চ উদাহরণ হিসেবে। এখানে উল্লেখ করা হয়েছে সজ্জন বান্দাদের একজন হিসেবে অর্থাৎ যারা তার সম্প্রদায়ের জন্য রহমত স্বরূপ। হযরত ইসমাঈলের সাথে হযরত আল্ ইয়াসা [ যার উল্লেখ আছে আয়াত ৬ : ৮৬ ] ও টিকা ৯০৬, এবং যুল-কিফলের [ যার উল্লেখ আছে আয়াত ২১ : ৮৫ ও টিকা ২৭৪৩ ] উল্লেখ একই সাথে করা হয়েছে। এই তিনজন একই গুণসম্পন্ন মানব। তারা দুঃখ ও কষ্টে ধৈর্য্য ও দৃঢ়তার উদাহরণ স্থাপন করেছিলেন।
আয়াতঃ 038.047
আর তারা আমার কাছে মনোনীত ও সৎলোকদের অন্তর্ভুক্ত।
They were, in Our sight, truly, of the company of the Elect and the Good.
وَإِنَّهُمْ عِندَنَا لَمِنَ الْمُصْطَفَيْنَ الْأَخْيَارِ
Wa-innahum AAindana lamina almustafayna al-akhyari
YUSUFALI: They were, in Our sight, truly, of the company of the Elect and the Good.
PICKTHAL: Lo! in Our sight they are verily of the elect, the excellent.
SHAKIR: And most surely they were with Us, of the elect, the best.
KHALIFA: They were chosen, for they were among the most righteous.
৪৬। আমি অবশ্য তাদের মনোনীত করেছিলাম বিশেষ [ উদ্দেশ্যে ] পরলোকের কথা প্রচারের জন্য।
৪৭। তারা ছিলো আমার দৃষ্টিতে সুনিবার্চিত , উত্তম বান্দাদের অর্ন্তভূক্ত।
৪৮। এবং স্মরণ কর , ইসমাঈল , আল্-ইয়াসা এবং জুলকিফলের কথা। এরা প্রত্যেকে উত্তম বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত ছিলো ৪২০৫।
৪২০৫। হযরত ইসমাঈল আরবদের পূর্বপুরুষ যার উল্লেখ আছে সূরা [ ৩৭ : ১০০১- ১০৭ ] আয়াতে আত্মোৎসর্গের সর্বোচ্চ উদাহরণ হিসেবে। এখানে উল্লেখ করা হয়েছে সজ্জন বান্দাদের একজন হিসেবে অর্থাৎ যারা তার সম্প্রদায়ের জন্য রহমত স্বরূপ। হযরত ইসমাঈলের সাথে হযরত আল্ ইয়াসা [ যার উল্লেখ আছে আয়াত ৬ : ৮৬ ] ও টিকা ৯০৬, এবং যুল-কিফলের [ যার উল্লেখ আছে আয়াত ২১ : ৮৫ ও টিকা ২৭৪৩ ] উল্লেখ একই সাথে করা হয়েছে। এই তিনজন একই গুণসম্পন্ন মানব। তারা দুঃখ ও কষ্টে ধৈর্য্য ও দৃঢ়তার উদাহরণ স্থাপন করেছিলেন।
আয়াতঃ 038.048
স্মরণ করুণ, ইসমাঈল, আল ইয়াসা ও যুলকিফলের কথা। তারা প্রত্যেকেই গুনীজন।
And commemorate Isma’il, Elisha, and Zul-Kifl: Each of them was of the Company of the Good.
وَاذْكُرْ إِسْمَاعِيلَ وَالْيَسَعَ وَذَا الْكِفْلِ وَكُلٌّ مِّنْ الْأَخْيَارِ
Waothkur ismaAAeela wa-ilyasaAAa watha alkifli wakullun mina al-akhyari
YUSUFALI: And commemorate Isma’il, Elisha, and Zul-Kifl: Each of them was of the Company of the Good.
PICKTHAL: And make mention of Ishmael and Elisha and Dhu’l-Kifl. All are of the chosen.
SHAKIR: And remember Ismail and Al-Yasha and Zulkifl; and they were all of the best.
KHALIFA: Remember Ismail, Elisha, and Zal-Kifl; among the most righteous.
৪৬। আমি অবশ্য তাদের মনোনীত করেছিলাম বিশেষ [ উদ্দেশ্যে ] পরলোকের কথা প্রচারের জন্য।
৪৭। তারা ছিলো আমার দৃষ্টিতে সুনিবার্চিত , উত্তম বান্দাদের অর্ন্তভূক্ত।
৪৮। এবং স্মরণ কর , ইসমাঈল , আল্-ইয়াসা এবং জুলকিফলের কথা। এরা প্রত্যেকে উত্তম বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত ছিলো ৪২০৫।
৪২০৫। হযরত ইসমাঈল আরবদের পূর্বপুরুষ যার উল্লেখ আছে সূরা [ ৩৭ : ১০০১- ১০৭ ] আয়াতে আত্মোৎসর্গের সর্বোচ্চ উদাহরণ হিসেবে। এখানে উল্লেখ করা হয়েছে সজ্জন বান্দাদের একজন হিসেবে অর্থাৎ যারা তার সম্প্রদায়ের জন্য রহমত স্বরূপ। হযরত ইসমাঈলের সাথে হযরত আল্ ইয়াসা [ যার উল্লেখ আছে আয়াত ৬ : ৮৬ ] ও টিকা ৯০৬, এবং যুল-কিফলের [ যার উল্লেখ আছে আয়াত ২১ : ৮৫ ও টিকা ২৭৪৩ ] উল্লেখ একই সাথে করা হয়েছে। এই তিনজন একই গুণসম্পন্ন মানব। তারা দুঃখ ও কষ্টে ধৈর্য্য ও দৃঢ়তার উদাহরণ স্থাপন করেছিলেন।
আয়াতঃ 038.049
এ এক মহৎ আলোচনা। খোদাভীরুদের জন্যে রয়েছে উত্তম ঠিকানা-
This is a Message (of admonition): and verily, for the righteous, is a beautiful Place of (Final) Return,-
هَذَا ذِكْرٌ وَإِنَّ لِلْمُتَّقِينَ لَحُسْنَ مَآبٍ
Hatha thikrun wa-inna lilmuttaqeena lahusna maabin
YUSUFALI: This is a Message (of admonition): and verily, for the righteous, is a beautiful Place of (Final) Return,-
PICKTHAL: This is a reminder. And lo! for those who ward off (evil) is a happy journey’s end,
SHAKIR: This is a reminder; and most surely there is an excellent resort for those who guard (against evil),
KHALIFA: This is a reminder: the righteous have deserved a wonderful destiny.
৪৯। ইহা [ কুর-আন ] এক [ সর্তককারী ] উপদেশ। পূণ্যাত্মাদের [ শেষ ] প্রত্যাবর্তন স্থান হবে অপরূপ সুন্দর – ৪২০৬
৪২০৬। পূর্বে যারা ভালো এবং মহৎ ব্যক্তিত্বরূপে পৃথিবীকে সমৃদ্ধ করেছেন তাদের উদাহরণ দেওয়ার পরে মুত্তাকীদের সমবেত ভাবে সম্বোধন করা হয়েছে তাদের ভবিষ্যত হবে অত্যন্ত শান্তিদায়ক। পরলোকে তাদের জন্য আছে মন্দের উপরে বিজয় এবং উত্তম আবাসস্থল।
আয়াতঃ 038.050
তথা স্থায়ী বসবাসের জান্নাত; তাদের জন্যে তার দ্বার উম্মুক্ত রয়েছে।
Gardens of Eternity, whose doors will (ever) be open to them;
جَنَّاتِ عَدْنٍ مُّفَتَّحَةً لَّهُمُ الْأَبْوَابُ
Jannati AAadnin mufattahatan lahumu al-abwabu
YUSUFALI: Gardens of Eternity, whose doors will (ever) be open to them;
PICKTHAL: Gardens of Eden, whereof the gates are opened for them,
SHAKIR: The gardens of perpetuity, the doors are opened for them.
KHALIFA: The gardens of Eden will open up their gates for them.
৫০। অনন্তকাল স্থায়ী উদ্যান, যার প্রবেশ পথ [ সর্বদা ] তাদের জন্য খোলা থাকবে ৪২০৭।
৪২০৭। জান্নাত হবে চিরশান্তি স্থান ; এখানে জান্নাতের বর্ণনায় বলা হয়েছে যে জান্নাত কোন গুপ্ত স্থান বা প্রতিচ্ছায়া বা নির্জন স্থান হবে না। এ কোনও রহস্যময় স্থান হবে না, যা বদ্ধ দরজার ওপারে রহস্যের রাজত্ব বিরাজ করবে। মুত্তাকীদের জন্য বেহেশত্ হবে উন্মুক্ত দরজা – যার মাঝে তাদের যাতায়াত হবে অবারিত। কারণ তাদের পবিত্র আত্মাসমূহ বিশ্ব প্রকৃতির সমন্বিত শৃঙ্খলার সাথে একসুত্রে গ্রথিত।
আয়াতঃ 038.051
সেখানে তারা হেলান দিয়ে বসবে। তারা সেখানে চাইবে অনেক ফল-মূল ও পানীয়।
Therein will they recline (at ease): Therein can they call (at pleasure) for fruit in abundance, and (delicious) drink;
مُتَّكِئِينَ فِيهَا يَدْعُونَ فِيهَا بِفَاكِهَةٍ كَثِيرَةٍ وَشَرَابٍ
Muttaki-eena feeha yadAAoona feeha bifakihatin katheeratin washarabin
YUSUFALI: Therein will they recline (at ease): Therein can they call (at pleasure) for fruit in abundance, and (delicious) drink;
PICKTHAL: Wherein, reclining, they call for plenteous fruit and cool drink (that is) therein.
SHAKIR: Reclining therein, calling therein for many fruits and drink.
KHALIFA: Relaxing therein, they will be given many kinds of fruits and drinks.
৫১। সেখানে তারা [ আরামে ] হেলান দিয়ে বসবে। সেখানে তারা [ ইচ্ছামত ] প্রচুর ফলমূল এবং [ উপাদেয় ] পানীয় চাইবে ৪২০৮।
৪২০৮। দেখুন সূরা [ ৩৬ : ৫৭ ] আয়াত ও টিকা ৪০০৩।
আয়াতঃ 038.052
তাদের কাছে থাকবে আনতনয়না সমবয়স্কা রমণীগণ।
And beside them will be chaste women restraining their glances, (companions) of equal age.
وَعِندَهُمْ قَاصِرَاتُ الطَّرْفِ أَتْرَابٌ
WaAAindahum qasiratu alttarfi atrabun
YUSUFALI: And beside them will be chaste women restraining their glances, (companions) of equal age.
PICKTHAL: And with them are those of modest gaze, companions.
SHAKIR: And with them shall be those restraining their eyes, equals in age.
KHALIFA: They will have wonderful spouses.
৫২। এবং তাদের পার্শ্বে থাকবে আনতনয়না পবিত্র সমবয়স্ক যুবতী [সঙ্গীগণ ] ৪২০৯, ৪২১০।
৪২০৯। দেখুন সূরা [ ৩৭ : ৪৮ ] ও টিকা ৪০৬০ এবং সূরা [ ৩৬ : ৫৬] ও টিকা ৪০০২। পৃথিবীতে আমাদের সুখ ও তৃপ্তির সাথে মিশে থাকে সঙ্গ। যত ভোগের বস্তুই থাকুক না কেন সঙ্গী না থাকলে সুখ নাই ; নিঃসঙ্গতা সুখের বা তৃপ্তির পরিপূর্ণতা আনতে পারে না। যে বস্তু আমাদের আনন্দ দেয়, সেই আনন্দকে নিকটজনের সাথে ভোগ করার মাঝেই পরিপূর্ণ তৃপ্তি নিহিত। নিঃসঙ্গ একাকীত্বে কোনও সুখ নাই , আনন্দ নাই। পরিপূর্ণ সুখ ও আনন্দ ভোগ করা যায় পার্শ্বে কেউ থাকলে। এই অনুভূতিকেই এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
৪২১০। পৃথিবীতে মানুষ বাস করে সামাজিক ভাবে। সামাজিক জীবনে সুখ ও শান্তিকে পরিপূর্ণ করার জন্য প্রয়োজন সমবয়স্ক সঙ্গী। বৃদ্ধ ও যুবতী কখনও পরস্পর পরস্পরের সঙ্গ উপভোগ করতে পারে না। পরলোকে সময়ের কোনও সীমা থাকবে না পৃথিবীর ন্যায়। সেই সীমাহীন সময়ের পরিমন্ডলে বৃদ্ধ বয়স থাকবে কি না তার কোনও উল্লেখ এখানে নাই। যদি সেখানে বৃদ্ধ বয়েস নাও থাকে,তবুও যদি শরীর বা মনের গঠনগত প্রকৃতির পার্থক্য থাকে তবে সঙ্গী এমনভাবে নির্বাচিত করা হবে যাতে তারা সমমনোভাব সম্পন্ন হয়
আয়াতঃ 038.053
তোমাদেরকে এরই প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে বিচার দিবসের জন্যে।
Such is the Promise made, to you for the Day of Account!
هَذَا مَا تُوعَدُونَ لِيَوْمِ الْحِسَابِ
Hatha ma tooAAadoona liyawmi alhisabi
YUSUFALI: Such is the Promise made, to you for the Day of Account!
PICKTHAL: This it is that ye are promised for the Day of Reckoning.
SHAKIR: This is what you are promised for the day of reckoning.
KHALIFA: This is what you have deserved on the Day of Reckoning.
৫৩। শেষ বিচারের দিনের জন্য তোমাদের এই প্রতিশ্রুতি দেয়া হলো।
৫৪। [ তোমাদের জন্য ] এই হবে আমার অনুগ্রহ যা কখনও শেষ হবে না।
৫৫। হ্যাঁ, ইহাই [ মুত্তাকীদের পরিণাম ] ! পাপীদের [ শেষ ] গন্তব্যস্থল হবে অতি মন্দ স্থান ৪২১১।
৪২১১। ইহাই ! অর্থাৎ এরকমই হবে মুত্তাকীদের পরিণাম। মুত্তাকীদের সুখ ও শান্তির চিত্রের সাথে সমান্তরালভাবে পাপীদের চিত্র অংকন করা হয়েছে
আয়াতঃ 038.054
এটা আমার দেয়া রিযিক যা শেষ হবে না।
Truly such will be Our Bounty (to you); it will never fail;-
إِنَّ هَذَا لَرِزْقُنَا مَا لَهُ مِن نَّفَادٍ
Inna hatha larizquna ma lahu min nafadin
YUSUFALI: Truly such will be Our Bounty (to you); it will never fail;-
PICKTHAL: Lo! this in truth is Our provision, which will never waste away.
SHAKIR: Most surely this is Our sustenance; it shall never come to an end;
KHALIFA: Our provisions are inexhaustible.
৫৩। শেষ বিচারের দিনের জন্য তোমাদের এই প্রতিশ্রুতি দেয়া হলো।
৫৪। [ তোমাদের জন্য ] এই হবে আমার অনুগ্রহ যা কখনও শেষ হবে না।
৫৫। হ্যাঁ, ইহাই [ মুত্তাকীদের পরিণাম ] ! পাপীদের [ শেষ ] গন্তব্যস্থল হবে অতি মন্দ স্থান ৪২১১।
৪২১১। ইহাই ! অর্থাৎ এরকমই হবে মুত্তাকীদের পরিণাম। মুত্তাকীদের সুখ ও শান্তির চিত্রের সাথে সমান্তরালভাবে পাপীদের চিত্র অংকন করা হয়েছে
আয়াতঃ 038.055
এটাতো শুনলে, এখন দুষ্টদের জন্যে রয়েছে নিকৃষ্ট ঠিকানা
Yea, such! but – for the wrong-doers will be an evil place of (Final) Return!-
هَذَا وَإِنَّ لِلطَّاغِينَ لَشَرَّ مَآبٍ
Hatha wa-inna lilttagheena lasharra maabin
YUSUFALI: Yea, such! but – for the wrong-doers will be an evil place of (Final) Return!-
PICKTHAL: This (is for the righteous). And lo! for the transgressors there with be an evil journey’s end,
SHAKIR: This (shall be so); and most surely there is an evil resort for the inordinate ones;
KHALIFA: As for the transgressors, they have incurred a miserable destiny.
৫৩। শেষ বিচারের দিনের জন্য তোমাদের এই প্রতিশ্রুতি দেয়া হলো।
৫৪। [ তোমাদের জন্য ] এই হবে আমার অনুগ্রহ যা কখনও শেষ হবে না।
৫৫। হ্যাঁ, ইহাই [ মুত্তাকীদের পরিণাম ] ! পাপীদের [ শেষ ] গন্তব্যস্থল হবে অতি মন্দ স্থান ৪২১১।
৪২১১। ইহাই ! অর্থাৎ এরকমই হবে মুত্তাকীদের পরিণাম। মুত্তাকীদের সুখ ও শান্তির চিত্রের সাথে সমান্তরালভাবে পাপীদের চিত্র অংকন করা হয়েছে
আয়াতঃ 038.056
তথা জাহান্নাম। তারা সেখানে প্রবেশ করবে। অতএব, কত নিকৃষ্ট সেই আবাস স্থল।
Hell!- they will burn therein, – an evil bed (indeed, to lie on)!-
جَهَنَّمَ يَصْلَوْنَهَا فَبِئْسَ الْمِهَادُ
Jahannama yaslawnaha fabi/sa almihadu
YUSUFALI: Hell!- they will burn therein, – an evil bed (indeed, to lie on)!-
PICKTHAL: Hell, where they will burn, an evil resting-place.
SHAKIR: Hell; they shall enter it, so evil is the resting-place.
KHALIFA: Hell is where they burn; what a miserable abode!
৫৬। জাহান্নাম ! সেখানে তারা দগ্ধ হতে থাকবে, কত মন্দ সে বিছানা [ শোবার জন্য ] ৪২১২।
৪২১২। দেখুন সূরা [ ১৪ : ২৯ ] আয়াত। এই আয়াতেও মুত্তাকীদের সুখ শান্তির চিত্রের সমান্তরাল পাপীদের অবস্থার ছবি আঁকা হয়েছে।
আয়াতঃ 038.056
তথা জাহান্নাম। তারা সেখানে প্রবেশ করবে। অতএব, কত নিকৃষ্ট সেই আবাস স্থল।
Hell!- they will burn therein, – an evil bed (indeed, to lie on)!-
جَهَنَّمَ يَصْلَوْنَهَا فَبِئْسَ الْمِهَادُ
Jahannama yaslawnaha fabi/sa almihadu
YUSUFALI: Hell!- they will burn therein, – an evil bed (indeed, to lie on)!-
PICKTHAL: Hell, where they will burn, an evil resting-place.
SHAKIR: Hell; they shall enter it, so evil is the resting-place.
KHALIFA: Hell is where they burn; what a miserable abode!
৫৬। জাহান্নাম ! সেখানে তারা দগ্ধ হতে থাকবে, কত মন্দ সে বিছানা [ শোবার জন্য ] ৪২১২।
৪২১২। দেখুন সূরা [ ১৪ : ২৯ ] আয়াত। এই আয়াতেও মুত্তাকীদের সুখ শান্তির চিত্রের সমান্তরাল পাপীদের অবস্থার ছবি আঁকা হয়েছে।
আয়াতঃ 038.057
এটা উত্তপ্ত পানি ও পঁূজ; অতএব তারা একে আস্বাদন করুক।
Yea, such! – then shall they taste it,- a boiling fluid, and a fluid dark, murky, intensely cold!-
هَذَا فَلْيَذُوقُوهُ حَمِيمٌ وَغَسَّاقٌ
Hatha falyathooqoohu hameemun waghassaqun
YUSUFALI: Yea, such! – then shall they taste it,- a boiling fluid, and a fluid dark, murky, intensely cold!-
PICKTHAL: Here is a boiling and an ice-cold draught, so let them taste it,
SHAKIR: This (shall be so); so let them taste it, boiling and intensely cold (drink).
KHALIFA: What they taste therein will be hellish drinks and bitter food.
৫৭। হ্যাঁ এরূপই হবে ! অতঃপর তারা আস্বাদন করবে ফুটন্ত তরল পদার্থ এবং কৃষ্ণবর্ণ, অন্ধকারময় তীব্র ঠান্ডা [ তরল পদার্থ ] ৪২১৩-
৪২১৩। দেখুন [ ১০ : ৪ ] আয়াত ও টিকা ১৩৯০। ইংরেজীতে অনুবাদ করা হয়েছে “and a fluid dark marky, intensely cold.” ফুটন্ত পানির সাথে পূঁজ অথবা উপরের বর্ণিত তরল পদার্থ যাই-ই যোগ করা হোক না কেন , তা শাস্তির তীব্রতাকেই বোঝানো হয়েছে। বেহেশতের মনোরম পরিবেশের সাথে সুখ ও শান্তির যে উপস্থাপনা করা হয়েছে তার সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র হচ্ছে দোযখের বর্ণনা।
আয়াতঃ 038.058
এ ধরনের আরও কিছু শাস্তি আছে।
And other Penalties of a similar kind, to match them!
وَآخَرُ مِن شَكْلِهِ أَزْوَاجٌ
Waakharu min shaklihi azwajun
YUSUFALI: And other Penalties of a similar kind, to match them!
PICKTHAL: And other (torment) of the kind in pairs (the two extremes)!
SHAKIR: And other (punishment) of the same kind– of various sorts.
KHALIFA: And much more of the same kind.
৫৮। এবং আরও আছে অনুরূপ সমকক্ষ শাস্তিসমূহ।
৫৯। এই আর এক দল আছে যারা তোমাদের সাথে দ্রুতবেগে তাড়াহুড়া করছে [ দোযখে প্রবেশের জন্য ] ৪২১৪। তাদের জন্য কোন স্বাগত সম্বর্ধনা নাই ! অবশ্যই তারা আগুনে দগ্ধ হবে।
৪২১৪। ” দল” – অর্থাৎ বিশাল দল। এ এক অতি আশ্চর্য্য ব্যাপার যে সীমালংঘনকারীদের দল হবে বিশাল। তারা পাপকে খুব আগ্রহের সাথে গ্রহণ করে থাকে। পৃথিবীতে তারা পাপাসক্তদের অধিপতি দ্বারা অভিনন্দিত হতে পারে সত্য, কিন্তু পরলোকের অবস্থান হবে ঠিক এর বিপরীত। তারা সেখানে অভিনন্দনের পরিবর্তে লাভ করবে ভৎর্সনা ও অভিশাপ।
আয়াতঃ 038.059
এই তো একদল তোমাদের সাথে প্রবেশ করছে। তাদের জন্যে অভিনন্দন নেই তারা তো জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
Here is a troop rushing headlong with you! No welcome for them! truly, they shall burn in the Fire!
هَذَا فَوْجٌ مُّقْتَحِمٌ مَّعَكُمْ لَا مَرْحَبًا بِهِمْ إِنَّهُمْ صَالُوا النَّارِ
Hatha fawjun muqtahimun maAAakum la marhaban bihim innahum saloo alnnari
YUSUFALI: Here is a troop rushing headlong with you! No welcome for them! truly, they shall burn in the Fire!
PICKTHAL: Here is an army rushing blindly with you. (Those who are already in the Fire say): No word of welcome for them. Lo! they will roast at the Fire.
SHAKIR: This is an army plunging in without consideration along with you; no welcome for them, surely they shall enter fire.
KHALIFA: “This is a group to be thrown into Hell with you.” They will not be welcomed (by the residents of Hell). They have deserved to burn in the hellfire.
৫৮। এবং আরও আছে অনুরূপ সমকক্ষ শাস্তিসমূহ।
৫৯। এই আর এক দল আছে যারা তোমাদের সাথে দ্রুতবেগে তাড়াহুড়া করছে [ দোযখে প্রবেশের জন্য ] ৪২১৪। তাদের জন্য কোন স্বাগত সম্বর্ধনা নাই ! অবশ্যই তারা আগুনে দগ্ধ হবে।
৪২১৪। ” দল” – অর্থাৎ বিশাল দল। এ এক অতি আশ্চর্য্য ব্যাপার যে সীমালংঘনকারীদের দল হবে বিশাল। তারা পাপকে খুব আগ্রহের সাথে গ্রহণ করে থাকে। পৃথিবীতে তারা পাপাসক্তদের অধিপতি দ্বারা অভিনন্দিত হতে পারে সত্য, কিন্তু পরলোকের অবস্থান হবে ঠিক এর বিপরীত। তারা সেখানে অভিনন্দনের পরিবর্তে লাভ করবে ভৎর্সনা ও অভিশাপ।
আয়াতঃ 038.060
তারা বলবে, তোমাদের জন্যে ও তো অভিনন্দন নেই। তোমরাই আমাদেরকে এ বিপদের সম্মুখীন করেছ। অতএব, এটি কতই না ঘৃণ্য আবাসস্থল।
(The followers shall cry to the misleaders:) “Nay, ye (too)! No welcome for you! It is ye who have brought this upon us! Now evil is (this) place to stay in!”
قَالُوا بَلْ أَنتُمْ لَا مَرْحَبًا بِكُمْ أَنتُمْ قَدَّمْتُمُوهُ لَنَا فَبِئْسَ الْقَرَارُ
Qaloo bal antum la marhaban bikum antum qaddamtumoohu lana fabi/sa alqararu
YUSUFALI: (The followers shall cry to the misleaders:) “Nay, ye (too)! No welcome for you! It is ye who have brought this upon us! Now evil is (this) place to stay in!”
PICKTHAL: They say: Nay, but you (misleaders), for you there is no word of welcome. Ye prepared this for us (by your misleading). Now hapless is the plight.
SHAKIR: They shall say: Nay! you– no welcome to you: you did proffer it to us, so evil is the resting-place.
KHALIFA: The newcomers will respond, “Nor are you welcomed. You are the ones who preceded us and misled us. Therefore, suffer this miserable end.”
৬০। [ অনুসারীগণ তাদের নেতাকে বলবে ] : বরং তোমরাও ! তোমাদের জন্যও কোনও স্বাগত -সম্বর্ধনা নাই। কেননা তোমরাই [ এই শাস্তি ] আমাদের জন্য এনেছ ৪২১৫। এখন বাসের জন্য এই স্থান কত মন্দ।
৪২১৫। পাপীদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে , বিপদে পড়লেই তারা তাদের দায়-দায়িত্ব অন্যের ঘাড়ে চাপাতে চাইবে। পাপের অনুসারীরাও পরকালে তাদের নেতাদের দোষারোপ করতে চাইবে। কিন্তু সেদিন ব্যক্তিগত দায়-দায়িত্বই হবে প্রধান। কারও পাপের জন্য অন্য কেউ দায়ী হবে না।
আয়াতঃ 038.061
তারা বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, যে আমাদেরকে এর সম্মুখীন করেছে, আপনি জাহান্নামে তার শাস্তি দ্বিগুণ করে দিন।
They will say: “Our Lord! whoever brought this upon us,- Add to him a double Penalty in the Fire!”
قَالُوا رَبَّنَا مَن قَدَّمَ لَنَا هَذَا فَزِدْهُ عَذَابًا ضِعْفًا فِي النَّارِ
Qaloo rabbana man qaddama lana hatha fazidhu AAathaban diAAfan fee alnnari
YUSUFALI: They will say: “Our Lord! whoever brought this upon us,- Add to him a double Penalty in the Fire!”
PICKTHAL: They say: Our Lord! Whoever did prepare this for us, oh, give him double portion of the Fire!
SHAKIR: They shall say: Our Lord! whoever prepared it first for us, add Thou to him a double chastisement in the fire.
KHALIFA: They will also say, “Our Lord, these are the ones who led us into this; double the retribution of hellfire for them.”
৬১। তারা বলবে, ” হে আমাদের প্রভু ! যে আমাদের উপরে এই [ শাস্তি ] এনেছে , আগুনের শাস্তি তাদের জন্য দ্বিগুণ বর্ধিত কর।” ৪২১৬
৪২১৬। দেখুন আয়াত [ ৭ : ৩৮ ] ও টিকা ১০১৯ এবং আয়াত [ ১১ : ২০ ]। পরকালের অবস্থা দর্শনে পাপীরা হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়বে। তারা তাদের আক্রোশ অন্যের উপরে মিটাতে চেষ্টা করবে। তারা যখন নিজেদের শাস্তি কোনও উপায়েই লাঘব করতে পারবে না, তখন তারা যারা তাদের পাপের পথে প্ররোচিত এবং প্রভাবিত করেছে , তাদের দ্বিগুণ শাস্তির জন্য আবেদন করবে। এই আয়াত এই সত্যের দিকে নির্দ্দেশ করে যে পাপীদের অন্তর সর্বদা হিংসা দ্বেষ ইত্যাদিতে পরিপূর্ণ থাকে যা থেকে মৃত্যুর পরেও তারা রেহাই পায় না। পরের আয়াতে দেখুন তাদের বিস্ময় যে, অন্যান্য ব্যক্তিরা কি ভাবে শাস্তিকে এড়াতে সক্ষম হলো – যা এড়াতে তারা সক্ষম হয় নাই।
আয়াতঃ 038.062
তারা আরও বলবে, আমাদের কি হল যে, আমরা যাদেরকে মন্দ লোক বলে গণ্য করতাম, তাদেরকে এখানে দেখছি না।
And they will say: “What has happened to us that we see not men whom we used to number among the bad ones?
وَقَالُوا مَا لَنَا لَا نَرَى رِجَالًا كُنَّا نَعُدُّهُم مِّنَ الْأَشْرَارِ
Waqaloo ma lana la nara rijalan kunna naAAudduhum mina al-ashrari
YUSUFALI: And they will say: “What has happened to us that we see not men whom we used to number among the bad ones?
PICKTHAL: And they say: What aileth us that we behold not men whom we were wont to count among the wicked?
SHAKIR: And they shall say: What is the matter with us that we do not see men whom we used to count among the vicious?
KHALIFA: They will say, “How come we do not see (in Hell) people we used to count among the wicked?
৬২। এবং তারা বলবে , ” আমাদের কি হলো যে, আমরা যাদের মন্দদের মধ্যে অর্ন্তভূক্ত করতাম তাদের দেখতে পাচ্ছি না কেন ৪২১৭।
৪২১৭। ” মন্দদের মধ্যে অর্ন্তভূক্ত করতাম” – অথাৎ পৃথিবীতে যারা মন্দ ও পাপী তারা নিজেদের পার্থিব সাফল্যের জন্য গর্বিত থাকে এবং নিজেদের অত্যন্ত বুদ্ধিমান ভেবে আত্মতৃপ্তি লাভ করে থাকে। তারা মোমেন বান্দাদের ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করে থাকে, এজন্য যে, মোমেন বান্দারা পাপ কাজ দ্বারা জাগতিক উন্নতি বিধানে অক্ষম, সুতারাং তারা বুদ্ধিহীন ও তাদের শেষ পরিণতি জাগতিক বিপর্যয়ের মাধ্যমে শেষ হতে বাধ্য। কিন্তু পার্থিব জীবন শেষে পরলোকের জীবনে মূল্যবোধের সম্পূর্ণ পরিবর্তন ঘটে যাবে। সে জগতে মোমেন বান্দারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভে ধন্য হবে ফলে পাপীদের ব্যঙ্গ বিদ্রূপ বুমেরাং এর মত তাদেরই আবার আঘাত হানে।
আয়াতঃ 038.063
আমরা কি অহেতুক তাদেরকে ঠাট্টার পাত্র করে নিয়েছিলাম, না আমাদের দৃষ্টি ভুল করছে?
“Did we treat them (as such) in ridicule, or have (our) eyes failed to perceive them?”
أَتَّخَذْنَاهُمْ سِخْرِيًّا أَمْ زَاغَتْ عَنْهُمُ الْأَبْصَارُ
Attakhathnahum sikhriyyan am zaghat AAanhumu al-absaru
YUSUFALI: “Did we treat them (as such) in ridicule, or have (our) eyes failed to perceive them?”
PICKTHAL: Did we take them (wrongly) for a laughing-stock, or have our eyes missed them?
SHAKIR: Was it that we (only) took them in scorn, or have our eyes (now) turned aside from them?
KHALIFA: “We used to ridicule them; we used to turn our eyes away from them.”
৬৩। ” তবে কি আমরা [অহেতুক ] ঠাট্টা বিদ্রূপ করতাম অথবা তাদের ব্যাপার [ আমাদের ] দৃষ্টি বিভ্রম ঘটেছে?”
৬৪। দোযখ -বাসীদের জন্য এরূপ বাদ প্রতিবাদই হবে নেয্য এবং উপযুক্ত ৪২১৮।
৪২১৮। জাহান্নামীরা পরস্পর পরস্পরের প্রতি ঘৃণা বিদ্বেষ প্রদর্শন করবে। তাদের আত্মার এই বিশেষ অবস্থা তাদের প্রতি শাস্তির অংশবিশেষ। কারণ অন্তরের এই অসুখী অবস্থা আত্মার মাঝে অশান্তির সৃষ্টি করে।
আয়াতঃ 038.064
এটা অর্থাৎ জাহান্নামীদের পারস্পরিক বাক-বিতন্ডা অবশ্যম্ভাবী।
Truly that is just and fitting,- the mutual recriminations of the People of the Fire!
إِنَّ ذَلِكَ لَحَقٌّ تَخَاصُمُ أَهْلِ النَّارِ
Inna thalika lahaqqun takhasumu ahli alnnari
YUSUFALI: Truly that is just and fitting,- the mutual recriminations of the People of the Fire!
PICKTHAL: Lo! that is very truth: the wrangling of the dwellers in the Fire.
SHAKIR: That most surely is the truth: the contending one with another of the inmates of the fire.
KHALIFA: This is a predetermined fact: the people of Hell will feud with one another.
৬৩। ” তবে কি আমরা [অহেতুক ] ঠাট্টা বিদ্রূপ করতাম অথবা তাদের ব্যাপার [ আমাদের ] দৃষ্টি বিভ্রম ঘটেছে?”
৬৪। দোযখ -বাসীদের জন্য এরূপ বাদ প্রতিবাদই হবে নেয্য এবং উপযুক্ত ৪২১৮।
৪২১৮। জাহান্নামীরা পরস্পর পরস্পরের প্রতি ঘৃণা বিদ্বেষ প্রদর্শন করবে। তাদের আত্মার এই বিশেষ অবস্থা তাদের প্রতি শাস্তির অংশবিশেষ। কারণ অন্তরের এই অসুখী অবস্থা আত্মার মাঝে অশান্তির সৃষ্টি করে।
আয়াতঃ 038.065
বলুন, আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র এবং এক পরাক্রমশালী আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই।
Say: “Truly am I a Warner: no god is there but the one Allah, Supreme and Irresistible,-
قُلْ إِنَّمَا أَنَا مُنذِرٌ وَمَا مِنْ إِلَهٍ إِلَّا اللَّهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ
Qul innama ana munthirun wama min ilahin illa Allahu alwahidu alqahharu
YUSUFALI: Say: “Truly am I a Warner: no god is there but the one Allah, Supreme and Irresistible,-
PICKTHAL: Say (unto them, O Muhammad): I am only a warner, and there is no Allah save Allah, the One, the Absolute,
SHAKIR: Say: I am only a warner, and there is no god but Allah, the One, the Subduer (of all):
KHALIFA: Say, “I warn you; there is no other god beside GOD, the One, the Supreme.
রুকু -৫
৬৫। বল, ” আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র এবং এক আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নাই, [যিনি ] সর্বোৎকৃষ্ট , অপ্রতিরোধ্য ৪২১৯।
৪২১৯। সূরা [ ১২ : ৩৯ ] আয়াতে হযরত ইউসুফ বন্দীদের মাঝে আল্লাহ্র একত্ব প্রচার করেছেন। পৃথিবীতে মানুষের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ বাণী যা অনুধাবন করা উচিত এই পার্থিব জীবনেই , তা হচ্ছে আল্লাহ্র একত্বের ধারণা। আল্লাহ্ এই বিশ্বভূবনের স্রষ্টা ,সকলের প্রতিপালক। আল্লাহ্র ইচ্ছাই শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হবে। পৃথিবীর কোনও শক্তিই তা খর্ব করতে পারবে না। আল্লাহ্ তাঁর করুণায় পাপীদের বারে বারে ক্ষমা করে থাকেন। এই বাণী পূণ্যাত্মা রাসুলের [ সা ] নিকট প্রচারের জন্য প্রেরণ করা হয়, এবং রাসুল [ সা ] তা প্রচার করেন। ‘বল’ শব্দটি দ্বারা ‘রাসুলকে’ বোঝানো হয়েছে। আল্লাহ্র এই একত্বের ধারণাই হচ্ছে ঈমান।
আয়াতঃ 038.066
তিনি আসমান-যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর পালনকর্তা, পরাক্রমশালী, মার্জনাকারী।
“The Lord of the heavens and the earth, and all between,- Exalted in Might, able to enforce His Will, forgiving again and again.”
رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا الْعَزِيزُ الْغَفَّارُ
Rabbu alssamawati waal-ardi wama baynahuma alAAazeezu alghaffaru
YUSUFALI: “The Lord of the heavens and the earth, and all between,- Exalted in Might, able to enforce His Will, forgiving again and again.”
PICKTHAL: Lord of the heavens and the earth and all that is between them, the Mighty, the Pardoning.
SHAKIR: The Lord of the heavens and the earth and what is between them, the Mighty, the most Forgiving.
KHALIFA: “The Lord of the heavens and the earth, and everything between them; the Almighty, the Forgiving.”
৬৬। “আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এই দুইএর মধ্যবর্তী সকল কিছুর প্রভু – ক্ষমতায় পরাক্রমশালী , স্ব-ইচ্ছাকে কার্যকরী করতে সক্ষম ৪২২০। বারে বারে ক্ষমাশীল ৪২২১। ”
৪২২০। সূরা [ ২২ : ৪০ ] আয়াতের টিকা ২৮১৮ এ ব্যাখ্যা করা হয়েছে ‘আজিজ’ শব্দটির অর্থ। ‘আজিজ’ হচ্ছে আল্লাহ্র একটি উপাধি। এই আয়াতের মাধ্যমে পার্থিব ক্ষমতা ও ঐশ্বরিক ক্ষমতার মধ্যে তুলনা করা হয়েছে। পার্থিব ক্ষমতা ঐশ্বরিক ক্ষমতার উপরে নির্ভরশীল, কিন্তু ঐশ্বরিক ক্ষমতা সব কিছুর উপরে কর্তৃত্বশীল। আল্লাহ্ মহাপরাক্রমশালী।
উপদেশ : আল্লাহ্র একত্বের ধারণাকে আত্মার মাঝে অনুধাবন করতে হলে আল্লাহ্র ক্ষমতাকে উপলব্ধি করতে হবে আত্মার মাঝে।
৪২২১। ‘Gaffar’ বা মহাক্ষমাশীল। ক্ষমার সর্বোচ্চ প্রকাশ করা হয়েছে এই শব্দটি দ্বারা। যার ইংরেজী অনুবাদ করা হয়েছে , “Forgiving again and again.” এবং বাংলা অনুবাদ করা হয়েছে বারে বারে ক্ষমাশীল। আল্লাহ্র ক্ষমতার এও এক রূপ।
আয়াতঃ 038.067
বলুন, এটি এক মহাসংবাদ,
Say: “That is a Message Supreme (above all),-
قُلْ هُوَ نَبَأٌ عَظِيمٌ
Qul huwa nabaon AAatheemun
YUSUFALI: Say: “That is a Message Supreme (above all),-
PICKTHAL: Say: It is tremendous tidings
SHAKIR: Say: It is a message of importance,
KHALIFA: Say, “Here is awesome news.
৬৭। বল : ” ইহা এক মহাসংবাদ –
৬৮। “যা থেকে তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও। ৪২২২
৪২২২। আল্লাহ্র একত্বের এই ধারণা মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। কারণ এই নিখিল বিশ্ব -ব্রহ্মান্ডের সৃষ্টি মানুষের জন্য – এবং মানুষের সৃষ্টি আল্লাহ্র একত্বে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য। এখানেই মানুষের সর্বোচ্চ কল্যাণ নিহিত। কিন্তু মানুষ এই গুরুত্বপূর্ণ বাণী থেকে ইচ্ছাকৃত ভাবে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং যা অপ্রয়োজনীয় ও গুরুত্বহীন তাতে মনোনিবেশ করে থাকে। তারা বাদানুবাদ করে কখন শেষ বিচারের দিন আসবে ; পাপ কি, পূণ্য কি ইত্যাদি।
আয়াতঃ 038.068
যা থেকে তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছ।
“From which ye do turn away!
أَنتُمْ عَنْهُ مُعْرِضُونَ
Antum AAanhu muAAridoona
YUSUFALI: “From which ye do turn away!
PICKTHAL: Whence ye turn away!
SHAKIR: (And) you are turning aside from it:
KHALIFA: “That you are totally oblivious to.
৬৭। বল : ” ইহা এক মহাসংবাদ –
৬৮। “যা থেকে তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও। ৪২২২
৪২২২। আল্লাহ্র একত্বের এই ধারণা মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। কারণ এই নিখিল বিশ্ব -ব্রহ্মান্ডের সৃষ্টি মানুষের জন্য – এবং মানুষের সৃষ্টি আল্লাহ্র একত্বে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য। এখানেই মানুষের সর্বোচ্চ কল্যাণ নিহিত। কিন্তু মানুষ এই গুরুত্বপূর্ণ বাণী থেকে ইচ্ছাকৃত ভাবে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং যা অপ্রয়োজনীয় ও গুরুত্বহীন তাতে মনোনিবেশ করে থাকে। তারা বাদানুবাদ করে কখন শেষ বিচারের দিন আসবে ; পাপ কি, পূণ্য কি ইত্যাদি।
আয়াতঃ 038.069
ঊর্ধ্ব জগৎ সম্পর্কে আমার কোন জ্ঞান ছিল না যখন ফেরেশতারা কথাবার্তা বলছিল।
“No knowledge have I of the Chiefs on high, when they discuss (matters) among themselves.
مَا كَانَ لِي مِنْ عِلْمٍ بِالْمَلَإِ الْأَعْلَى إِذْ يَخْتَصِمُونَ
Ma kana liya min AAilmin bialmala-i al-aAAla ith yakhtasimoona
YUSUFALI: “No knowledge have I of the Chiefs on high, when they discuss (matters) among themselves.
PICKTHAL: I had no knowledge of the Highest Chiefs when they disputed;
SHAKIR: I had no knowledge of the exalted chiefs when they contended:
KHALIFA: “I had no knowledge previously, about the feud in the High Society.
৬৯। [হে নবী তুমি বল ] , ” উর্দ্ধলোকের সর্দাররা যখন নিজেদের মধ্যে [ কোন বিষয়ে ] আলোচনা করে সে সম্বন্ধে আমার তো কোন জ্ঞান নাই ৪২২৩।
৪২২৩। ‘উর্দ্ধলোকের সর্দাররা ‘ এই বাক্যটি দ্বারা ফেরেশতাদের বোঝানো হয়েছে ; মানুষ সৃষ্টির প্রাক্কালে ফেরেশতাদের বাদানুবাদ মানুষের জানার কথা নয়; কিন্তু তা নীচের আয়াতগুলির মাধ্যমে আয়াত [ ৭১ – ৮৫] প্রকাশ করা হয়েছে। মানুষের জন্য যে বিষয়টি জানা গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে আল্লাহ্ পরম করুণাময় এবং মানুষের পাপকে বারে বারে মার্জনা করে দেন। যারা আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে তাদের উপরে মন্দের কোনও ক্ষমতাই কার্যকর হয় না।
আয়াতঃ 038.070
আমার কাছে এ ওহীই আসে যে, আমি একজন স্পষ্ট সতর্ককারী।
‘Only this has been revealed to me: that I am to give warning plainly and publicly.”
إِن يُوحَى إِلَيَّ إِلَّا أَنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُّبِينٌ
In yooha ilayya illa annama ana natheerun mubeenun
YUSUFALI: ‘Only this has been revealed to me: that I am to give warning plainly and publicly.”
PICKTHAL: It is revealed unto me only that I may be a plain warner.
SHAKIR: Naught is revealed to me save that I am a plain warner.
KHALIFA: “I am inspired that my sole mission is to deliver the warnings to you.”
৭০। ” আমার নিকট শুধু মাত্র প্রকাশ করা হয়েছে যে, আমি সুস্পষ্ট ও প্রকাশ্য সর্তককারী।” ৪২২৪।
৪২২৪। ‘Mubin’ এই শব্দটি দুটি ভাবধারার প্রকাশ ঘটিয়েছে :
১) সর্তকবাণীটির ভাষা হবে পরিষ্কার প্রাঞ্জল সেখানে কোন অস্পষ্টতা বা বিষয়বস্তুর মারপ্যাচ নাই, মন্দের বা পাপের সাথে কোনও রূপ সমঝোতা নাই। যেরূপ বর্ণনা করা হয়েছে সূরা [ ৭ : ১৮৪ ] আয়াত।
২) সর্তকবাণী প্রকাশ্যে প্রচার করতে হবে সকল বাধা বিপত্তি ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে। সূরা [ ২৬ : ১১৫] আয়াতের বর্ণনা অনুযায়ী স্পষ্ট সর্তককারী। বাক্যটি দ্বারা এই দ্বিবিধ ভাবধারাকে বোঝাতে চাওয়া হয়েছে।
আয়াতঃ 038.071
যখন আপনার পালনকর্তা ফেরেশতাগণকে বললেন, আমি মাটির মানুষ সৃষ্টি করব।
Behold, thy Lord said to the angels: “I am about to create man from clay:
إِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَائِكَةِ إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِن طِينٍ
Ith qala rabbuka lilmala-ikati innee khaliqun basharan min teenin
YUSUFALI: Behold, thy Lord said to the angels: “I am about to create man from clay:
PICKTHAL: When thy Lord said unto the angels: Lo! I am about to create a mortal out of mire,
SHAKIR: When your Lord said to the angels; Surely I am going to create a mortal from dust:
KHALIFA: Your Lord said to the angels, “I am creating a human being from clay.
৭১। তোমার প্রভু ফেরেশতাদের বললেন, ৪২২৫ ” আমি কাদামাটি থেকে মানুষ সৃষ্টি করতে যাচ্ছি : ৪২২৬
৪২২৫। এই আয়াতটি নিম্নোক্ত দুটি সূরার আয়াতের সাথে তুলনা যোগ্য :
১) সূরা [ ২ : ৩০ – ৩৯ ] আয়াতগুলির মাধ্যমে শয়তানের বিদ্রোহকে তুলে ধরা হয়েছে এবং প্রথম মানুষের উপরে তার ফলাফলকে বর্ণনা করা হয়েছে।
২) সূরা [ ১৫ : ২৯ – ৪০ ] আয়াতসমূহে জাগতিক জীবনে শয়তানের প্রভাব এবং যারা তা প্রতিরোধ করতে পারবে তাদের আশ্বাস দেয়া হয়েছে শয়তান বা মন্দ তাদের কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। এই [৭১-৮৫] আয়াতসমূহে বর্ণনা করা হয়েছে মানুষের আধ্যাত্মিক ক্ষমতাকে যা শয়তানের ক্ষমতাকে প্রতিহত করবে।
৪২২৬। এই আয়াত থেকে এ সত্যই প্রতীয়মান হয় যে মানুষ সৃষ্টির বহু পূর্বেই পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিলো। কারণ আল্লাহ্ বলছেন যে, মানুষকে তিনি কর্দ্দম থেকে সৃষ্টি করবেন। পৃথিবীর অবস্থান মানুষ সৃষ্টির বহু পূর্ব থেকেই ছিলো , বিজ্ঞানও একথা স্বীকার করে যে, পৃথিবী নামক গ্রহে মানুষের আগমন সবার শেষে সংঘটিত হয়। পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণী থেকে মানুষ স্বকীয় এজন্য যে মানুষই একমাত্র প্রাণী যার নশ্বর দেহের মাঝে পরমাত্মার বাস। এখানেই মানুষের স্বাতন্ত্র এখানেই তাঁর বৈশিষ্ট্য। ফলে একমাত্র মানুষের মাঝেই দেখা যায় নৈতিক মূল্যবোধের স্ফুরণ। Theory of evolution এর কোন ব্যাখ্যা দিতে অক্ষম, যে হঠাৎ করে শুধু মানুষের মাঝে কেমন করে নৈতিক মূল্যবোধের স্ফুরণ ঘটেছে।
আয়াতঃ 038.072
যখন আমি তাকে সুষম করব এবং তাতে আমার রূহ ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার সম্মুখে সেজদায় নত হয়ে যেয়ো।
“When I have fashioned him (in due proportion) and breathed into him of My spirit, fall ye down in obeisance unto him.”
فَإِذَا سَوَّيْتُهُ وَنَفَخْتُ فِيهِ مِن رُّوحِي فَقَعُوا لَهُ سَاجِدِينَ
Fa-itha sawwaytuhu wanafakhtu feehi min roohee faqaAAoo lahu sajideena
YUSUFALI: “When I have fashioned him (in due proportion) and breathed into him of My spirit, fall ye down in obeisance unto him.”
PICKTHAL: And when I have fashioned him and breathed into him of My Spirit, then fall down before him prostrate,
SHAKIR: So when I have made him complete and breathed into him of My spirit, then fall down making obeisance to him.
KHALIFA: “Once I design him, and blow into him from My spirit, you shall fall prostrate before him.”
৭২। “যখন আমি তাকে [ সুষম ] গঠন করবো এবং তার মাঝে আমার রুহু ফুঁকে দেবো ,৪২২৭ , তখন তোমরা উহার প্রতি সিজ্দাবনত হবে।”
৪২২৭। দেখুন সূরা [ ১৫ : ২৯] আয়াতের টিকা ১৯৬৮। যেখানে “রুহুর” আধ্যাত্মিক বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 038.073
অতঃপর সমস্ত ফেরেশতাই একযোগে সেজদায় নত হল,
So the angels prostrated themselves, all of them together:
فَسَجَدَ الْمَلَائِكَةُ كُلُّهُمْ أَجْمَعُونَ
Fasajada almala-ikatu kulluhum ajmaAAoona
YUSUFALI: So the angels prostrated themselves, all of them together:
PICKTHAL: The angels fell down prostrate, every one,
SHAKIR: And the angels did obeisance, all of them,
KHALIFA: The angels fell prostrate, all of them,
৭৩। সুতারাং ফেরেশতারা সকলে একসাথে সেজদাবনত হলো।
৭৪। কেবল ইব্লীস ব্যতীত। সে উদ্ধত হয়েছিলো এবং যারা ঈমানকে প্রত্যাখান করে তাদের অন্তর্ভূক্ত হলো ৪২২৮।
৪২২৮। আল্লাহ্র প্রতি অবিশ্বাস এবং সকল পাপ প্রসূত হয় অহংকার থেকে। অহংকার সকল পাপের জন্ম দেয়। অহংকার থেকে চরিত্রে ঔদ্ধত্যের জন্ম হয় ,বিনয় দূরীভূত হয় এবং নিজেকে শ্রেষ্ঠ ভাবার প্রবণতা জন্মে। শ্রেষ্ঠ ভাবার প্রবণতা মানুষকে অন্যের শ্রেষ্ঠত্ব উপলব্ধিতে বাধা দান করে এবং মনের মাঝে হিংসা ও দ্বেষের জন্ম দানকরে। হিংসা ও দ্বেষ রীপু মানুষের চরিত্রের সকল গুণাবলী ধ্বংস করে দেয় ঠিক যেরূপ আগুন সব সুন্দর জিনিষ পুড়িয়ে শুধু ছাইকে অবশিষ্ট রাখে। হিংসাকে সেই কারণে আগুনের সাথে তুলনা করা হয়।
আয়াতঃ 038.074
কিন্তু ইবলীস; সে অহংকার করল এবং অস্বীকারকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।
Not so Iblis: he was haughty, and became one of those who reject Faith.
إِلَّا إِبْلِيسَ اسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنْ الْكَافِرِينَ
Illa ibleesa istakbara wakana mina alkafireena
YUSUFALI: Not so Iblis: he was haughty, and became one of those who reject Faith.
PICKTHAL: Saving Iblis; he was scornful and became one of the disbelievers.
SHAKIR: But not Iblis: he was proud and he was one of the unbelievers.
KHALIFA: except Satan; he refused, and was too arrogant, unappreciative.
৭৩। সুতারাং ফেরেশতারা সকলে একসাথে সেজদাবনত হলো।
৭৪। কেবল ইব্লীস ব্যতীত। সে উদ্ধত হয়েছিলো এবং যারা ঈমানকে প্রত্যাখান করে তাদের অন্তর্ভূক্ত হলো ৪২২৮।
৪২২৮। আল্লাহ্র প্রতি অবিশ্বাস এবং সকল পাপ প্রসূত হয় অহংকার থেকে। অহংকার সকল পাপের জন্ম দেয়। অহংকার থেকে চরিত্রে ঔদ্ধত্যের জন্ম হয় ,বিনয় দূরীভূত হয় এবং নিজেকে শ্রেষ্ঠ ভাবার প্রবণতা জন্মে। শ্রেষ্ঠ ভাবার প্রবণতা মানুষকে অন্যের শ্রেষ্ঠত্ব উপলব্ধিতে বাধা দান করে এবং মনের মাঝে হিংসা ও দ্বেষের জন্ম দানকরে। হিংসা ও দ্বেষ রীপু মানুষের চরিত্রের সকল গুণাবলী ধ্বংস করে দেয় ঠিক যেরূপ আগুন সব সুন্দর জিনিষ পুড়িয়ে শুধু ছাইকে অবশিষ্ট রাখে। হিংসাকে সেই কারণে আগুনের সাথে তুলনা করা হয়।
আয়াতঃ 038.075
আল্লাহ বললেন, হে ইবলীস, আমি স্বহস্তে যাকে সৃষ্টি করেছি, তার সম্মুখে সেজদা করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? তুমি অহংকার করলে, না তুমি তার চেয়ে উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন?
((Allah)) said: “O Iblis! What prevents thee from prostrating thyself to one whom I have created with my hands? Art thou haughty? Or art thou one of the high (and mighty) ones?”
قَالَ يَا إِبْلِيسُ مَا مَنَعَكَ أَن تَسْجُدَ لِمَا خَلَقْتُ بِيَدَيَّ أَسْتَكْبَرْتَ أَمْ كُنتَ مِنَ الْعَالِينَ
Qala ya ibleesu ma manaAAaka an tasjuda lima khalaqtu biyadayya astakbarta am kunta mina alAAaleena
YUSUFALI: (Allah) said: “O Iblis! What prevents thee from prostrating thyself to one whom I have created with my hands? Art thou haughty? Or art thou one of the high (and mighty) ones?”
PICKTHAL: He said: O Iblis! What hindereth thee from falling prostrate before that which I have created with both My hands? Art thou too proud or art thou of the high exalted?
SHAKIR: He said: O Iblis! what prevented you that you should do obeisance to him whom I created with My two hands? Are you proud or are you of the exalted ones?
KHALIFA: He said, “O Satan, what prevented you from prostrating before what I created with My hands? Are you too arrogant? Have you rebelled?”
৭৫। আল্লাহ্ বলেছিলেন, ” ওহে ইবলিস ! আমি যাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছি তার প্রতি সিজ্দাবনত হতে তোমাকে কিসে বাঁধা দিল ? ৪২২৯। তুমি কি উদ্ধত না কি উচ্চ্ মর্যাদাসম্পন্নদের [ এবং শক্তিশালীদের ] মধ্যে একজন ? ” ৪২৩০
৪২২৯। আদম হচ্ছেন সকল মানুষের প্রতীক স্বরূপ। আদমের সৃষ্টির বর্ণনার মাধ্যমে মানুষ জাতির সৃষ্টির প্রক্রিয়া বর্ণনা করা হয়েছে। মানুষের দেহ একতাল কাদা ব্যতীত আর কিছুই নয়। কিন্তু এই মাটিতে তৈরী দেহের মাঝে আল্লাহ্ তাঁর রূহুর অংশ দান করেছেন। এরই ফলে তাকে করেছে অনন্য বৈশিষ্ট্য মন্ডিত। এরই জন্য মানুষ স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ জীব। এরই কারণে মানুষের জন্য সম্মানের আসন পাতা , মানুষ মর্যদা সম্পন্ন।
৪২৩০। শয়তান আল্লাহ্র হুকুমকে অমান্য করলো।তাঁর এই ঔদ্ধত্যের উৎপত্তি হচ্ছে তার নিজের সম্বন্ধে উচ্চ ধারণা , যার উৎপত্তি অহংকার থেকে। এই আয়াতে আল্লাহ্ শয়তানকে জিজ্ঞাসা করছেন যে, সে কি নিজেকে এতটাই উচ্চ মর্যদাসম্পন্ন মনে করে যে ,সে আল্লাহ্র হুকুমকে অমান্য করার সাহস রাখে ? অবশ্যই শয়তান উচ্চ মর্যদাসম্পন্ন ছিলো না। কিন্তু অহংকার তার দৃষ্টি বিভ্রম ঘটায় ,প্রকৃত অনুধাবন ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এ ভাবেই অহংকার মানুষকে বিপথে চালিত করে।
আয়াতঃ 038.076
সে বললঃ আমি তার চেয়ে উত্তম আপনি আমাকে আগুনের দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, আর তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা।
(Iblis) said: “I am better than he: thou createdst me from fire, and him thou createdst from clay.”
قَالَ أَنَا خَيْرٌ مِّنْهُ خَلَقْتَنِي مِن نَّارٍ وَخَلَقْتَهُ مِن طِينٍ
Qala ana khayrun minhu khalaqtanee min narin wakhalaqtahu min teenin
YUSUFALI: (Iblis) said: “I am better than he: thou createdst me from fire, and him thou createdst from clay.”
PICKTHAL: He said: I am better than him. Thou createdst me of fire, whilst him Thou didst create of clay.
SHAKIR: He said: I am better than he; Thou hast created me of fire, and him Thou didst create of dust.
KHALIFA: He said, “I am better than he; You created me from fire, and created him from clay.”
৭৬। [ ইবলিস ] বলেছিলো , ” আমি তার থেকে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং ওকে কাঁদা থেকে সৃষ্টি করেছেন। ”
৭৭। [আল্লাহ্ ] বলেছিলেন : ” তবে এখান থেকে দূর হয়ে যাও। নিশ্চয়ই তুমি বিতাড়িত অভিশপ্ত ;
৭৮। “এবং তোমার উপরে আমার অভিশাপ শেষ বিচারের দিন পর্যন্ত থাকবে। ” ৪২৩১
৪২৩১। দেখুন সূরা [ ১৫ : ৩৫ ] আয়াতের টিকা ১৯৭২ যেখানে ব্যাখ্যা করা হয়েছে কেন শয়তানকে তৎক্ষণাত শাস্তি দান না করে শেষ বিচারের দিন পর্যন্ত অবসর দান করা হয়েছে। সূরা ৩৫ নং এ সম্বন্ধে বিশদ বর্ণনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 038.077
আল্লাহ বললেনঃ বের হয়ে যা, এখান থেকে। কারণ, তুই অভিশপ্ত।
((Allah)) said: “Then get thee out from here: for thou art rejected, accursed.
قَالَ فَاخْرُجْ مِنْهَا فَإِنَّكَ رَجِيمٌ
Qala faokhruj minha fa-innaka rajeemun
YUSUFALI: (Allah) said: “Then get thee out from here: for thou art rejected, accursed.
PICKTHAL: He said: Go forth from hence, for lo! thou art outcast,
SHAKIR: He said: Then get out of it, for surely you are driven away:
KHALIFA: He said, “Therefore, you must be exiled, you will be banished.
৭৬। [ ইবলিস ] বলেছিলো , ” আমি তার থেকে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং ওকে কাঁদা থেকে সৃষ্টি করেছেন। ”
৭৭। [আল্লাহ্ ] বলেছিলেন : ” তবে এখান থেকে দূর হয়ে যাও। নিশ্চয়ই তুমি বিতাড়িত অভিশপ্ত ;
৭৮। “এবং তোমার উপরে আমার অভিশাপ শেষ বিচারের দিন পর্যন্ত থাকবে। ” ৪২৩১
৪২৩১। দেখুন সূরা [ ১৫ : ৩৫ ] আয়াতের টিকা ১৯৭২ যেখানে ব্যাখ্যা করা হয়েছে কেন শয়তানকে তৎক্ষণাত শাস্তি দান না করে শেষ বিচারের দিন পর্যন্ত অবসর দান করা হয়েছে। সূরা ৩৫ নং এ সম্বন্ধে বিশদ বর্ণনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 038.078
তোর প্রতি আমার এ অভিশাপ বিচার দিবস পর্যন্ত স্থায়ী হবে।
“And My curse shall be on thee till the Day of Judgment.”
وَإِنَّ عَلَيْكَ لَعْنَتِي إِلَى يَوْمِ الدِّينِ
Wa-inna AAalayka laAAnatee ila yawmi alddeeni
YUSUFALI: “And My curse shall be on thee till the Day of Judgment.”
PICKTHAL: And lo! My curse is on thee till the Day of Judgment.
SHAKIR: And surely My curse is on you to the day of judgment.
KHALIFA: “You have incurred My condemnation until the Day of Judgment.”
৭৬। [ ইবলিস ] বলেছিলো , ” আমি তার থেকে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং ওকে কাঁদা থেকে সৃষ্টি করেছেন। ”
৭৭। [আল্লাহ্ ] বলেছিলেন : ” তবে এখান থেকে দূর হয়ে যাও। নিশ্চয়ই তুমি বিতাড়িত অভিশপ্ত ;
৭৮। “এবং তোমার উপরে আমার অভিশাপ শেষ বিচারের দিন পর্যন্ত থাকবে। ” ৪২৩১
৪২৩১। দেখুন সূরা [ ১৫ : ৩৫ ] আয়াতের টিকা ১৯৭২ যেখানে ব্যাখ্যা করা হয়েছে কেন শয়তানকে তৎক্ষণাত শাস্তি দান না করে শেষ বিচারের দিন পর্যন্ত অবসর দান করা হয়েছে। সূরা ৩৫ নং এ সম্বন্ধে বিশদ বর্ণনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 038.079
সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আপনি আমাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন।
(Iblis) said: “O my Lord! Give me then respite till the Day the (dead) are raised.”
قَالَ رَبِّ فَأَنظِرْنِي إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ
Qala rabbi faanthirnee ila yawmi yubAAathoona
YUSUFALI: (Iblis) said: “O my Lord! Give me then respite till the Day the (dead) are raised.”
PICKTHAL: He said: My Lord! Reprieve me till the day when they are raised.
SHAKIR: He said: My Lord! then respite me to the day that they are raised.
KHALIFA: He said, “My Lord, respite me till the Day of Resurrection.”
৭৯। [ ইবলিস ] বলেছিলো হে আমার প্রভু ! আপনি আমাকে অবকাশ দিন [ মৃতদের ] উত্থান দিবস পর্যন্ত ৪২৩২।
৪২৩২। “অবকাশ প্রাপ্তদের ” সম্বন্ধে দেখুন সূরা [১৫ : ৩ ] আয়াতের টিকা ১৯৭৩।
আয়াতঃ 038.080
আল্লঅহ বললেনঃ তোকে অবকাশ দেয়া হল।
((Allah)) said: “Respite then is granted thee-
قَالَ فَإِنَّكَ مِنَ الْمُنظَرِينَ
Qala fa-innaka mina almunthareena
YUSUFALI: (Allah) said: “Respite then is granted thee-
PICKTHAL: He said: Lo! thou art of those reprieved
SHAKIR: He said: Surely you are of the respited ones,
KHALIFA: He said, “You are respited.
৮০। [আল্লাহ্ ] বলেছিলেন , ” তবে অবকাশ তোমাকে মঞ্জুর করা হলো, –
৮১। “নির্ধারিত সময়ের দিন পর্যন্ত।” ৪২৩৩।
৪২৩৩। এই অবকাশ হবে এক নির্দ্দিষ্ট সময় পর্যন্ত – তা অসীম বা অনির্ধারিত নয়। পৃথিবীতে মানুষের অবস্থান হচ্ছে সীমিত সময়ের জন্য , যাকে বলা হয়েছে “শিক্ষানবীশ কাল “। এই শিক্ষানবীশ কাল মানুষের জন্য এক মহাপরীক্ষার সময়। মানুষকে আল্লাহ্ সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দান করেছেন – ভালোকে গ্রহণ বা বর্জন করার জন্য। মানুষের এই স্বাধীন ইচ্ছাশক্তিকে সে কিভাবে ব্যবহার করেছে তারই হিসাব দাখিল করতে হবে শেষ বিচারের দিনে। রোজ কেয়ামতের সাথে সাথে এই পৃথিবীর সময়কাল শেষ হয়ে যাবে। সমস্ত সৃষ্টিকে নূতন মাত্রাতে ধারণ করা হবে, নূতন পৃথিবীর সৃষ্টি হবে [ ১৪ : ৪৮ ]। যার মূল্যবোধ , আইন , সবই হবে এই পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সেখানে পূণ্যাত্মা ও পাপীদের সম্পূর্ণভাবে আলাদা করা হবে – বর্তমান পৃথিবীর সকল ধারাকে অবলুপ্ত করে নূতন ধারাতে বিন্যস্ত করা হবে। [ ৫৬ : ৬০- ৬২ ]
আয়াতঃ 038.081
সে সময়ের দিন পর্যন্ত যা জানা।
“Till the Day of the Time Appointed.”
إِلَى يَوْمِ الْوَقْتِ الْمَعْلُومِ
Ila yawmi alwaqti almaAAloomi
YUSUFALI: “Till the Day of the Time Appointed.”
PICKTHAL: Until the day of the time appointed.
SHAKIR: Till the period of the time made known.
KHALIFA: “Until the appointed day.”
৮০। [আল্লাহ্ ] বলেছিলেন , ” তবে অবকাশ তোমাকে মঞ্জুর করা হলো, –
৮১। “নির্ধারিত সময়ের দিন পর্যন্ত।” ৪২৩৩।
৪২৩৩। এই অবকাশ হবে এক নির্দ্দিষ্ট সময় পর্যন্ত – তা অসীম বা অনির্ধারিত নয়। পৃথিবীতে মানুষের অবস্থান হচ্ছে সীমিত সময়ের জন্য , যাকে বলা হয়েছে “শিক্ষানবীশ কাল “। এই শিক্ষানবীশ কাল মানুষের জন্য এক মহাপরীক্ষার সময়। মানুষকে আল্লাহ্ সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দান করেছেন – ভালোকে গ্রহণ বা বর্জন করার জন্য। মানুষের এই স্বাধীন ইচ্ছাশক্তিকে সে কিভাবে ব্যবহার করেছে তারই হিসাব দাখিল করতে হবে শেষ বিচারের দিনে। রোজ কেয়ামতের সাথে সাথে এই পৃথিবীর সময়কাল শেষ হয়ে যাবে। সমস্ত সৃষ্টিকে নূতন মাত্রাতে ধারণ করা হবে, নূতন পৃথিবীর সৃষ্টি হবে [ ১৪ : ৪৮ ]। যার মূল্যবোধ , আইন , সবই হবে এই পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সেখানে পূণ্যাত্মা ও পাপীদের সম্পূর্ণভাবে আলাদা করা হবে – বর্তমান পৃথিবীর সকল ধারাকে অবলুপ্ত করে নূতন ধারাতে বিন্যস্ত করা হবে। [ ৫৬ : ৬০- ৬২ ]
আয়াতঃ 038.082
সে বলল, আপনার ইযযতের কসম, আমি অবশ্যই তাদের সবাইকে বিপথগামী করে দেব।
(Iblis) said: “Then, by Thy power, I will put them all in the wrong,-
قَالَ فَبِعِزَّتِكَ لَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ
Qala fabiAAizzatika laoghwiyannahum ajmaAAeena
YUSUFALI: (Iblis) said: “Then, by Thy power, I will put them all in the wrong,-
PICKTHAL: He said: Then, by Thy might, I surely will beguile them every one,
SHAKIR: He said: Then by Thy Might I will surely make them live an evil life, all,
KHALIFA: He said, “I swear by Your majesty, that I will send them all astray.
৮২। [ ইবলিস ] বলেছিলো , ” তাহলে আপনার ক্ষমতার শপথ , ৪২৩৪, আমি অবশ্যই তাদের সকলকেই বিপথগামী করবো ৪২৩৫।
৪২৩৪। শয়তানের এই শপথ নূতন বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করে। যা পূর্বে উল্লেখ করা হয় নাই। শয়তান শপথ করে ক্ষমতার । পৃথিবীতে ভালো ও মন্দ , পূণ্য ও পাপ পাশাপাশি বিরাজ করে ; ভালোর ক্ষমতা হচ্ছে আল্লাহ্র ক্ষমতা , অপরপক্ষে মন্দের ক্ষমতা বা পাপের ক্ষমতা হচ্ছে শয়তানের ক্ষমতা। শয়তান এই ক্ষমতারই শপথ গ্রহণ করে, তবে সে এ কথাও হৃদয়ঙ্গম করে যে, তার ক্ষমতাও সীমিত। আল্লাহ্র বান্দাদের উপরে তার কোনও প্রভাব থাকবে না। শেষ পর্যন্ত পৃথিবীতে আল্লাহ্র পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবেই।
৪২৩৫। দেখুন সূরা [ ১৫ : ৩৯ ] এর টিকা ১৯৭৪।
আয়াতঃ 038.083
তবে তাদের মধ্যে যারা আপনার খাঁটি বান্দা, তাদেরকে ছাড়া।
“Except Thy Servants amongst them, sincere and purified (by Thy Grace).”
إِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ
Illa AAibadaka minhumu almukhlaseena
YUSUFALI: “Except Thy Servants amongst them, sincere and purified (by Thy Grace).”
PICKTHAL: Save Thy single-minded slaves among them.
SHAKIR: Except Thy servants from among them, the purified ones.
KHALIFA: “Except Your worshipers who are devoted absolutely to You alone.”
৮৩। ” ব্যতিক্রম হবে তোমার বান্দাদের মধ্যে যারা তোমার অনুগত ও তোমার অনুগ্রহে পরিশুদ্ধ।”
৮৪। [আল্লাহ্ ] বলেছিলেনঃ ” তবে এটাই ন্যায়সঙ্গত এবং উপযুক্ত ৪২৩৬ – এবং যা ন্যায়সঙ্গত ও উপযুক্ত আমি তাই বলি –
৪২৩৬। দেখুন সূরা [ ১৫ : ৬৪ ] এর টিকা ১৯৯০।
আয়াতঃ 038.084
আল্লাহ বললেনঃ তাই ঠিক, আর আমি সত্য বলছি-
((Allah)) said: “Then it is just and fitting- and I say what is just and fitting-
قَالَ فَالْحَقُّ وَالْحَقَّ أَقُولُ
Qala faalhaqqu waalhaqqa aqoolu
YUSUFALI: (Allah) said: “Then it is just and fitting- and I say what is just and fitting-
PICKTHAL: He said: The Truth is, and the Truth I speak,
SHAKIR: He said: The truth then is and the truth do I speak:
KHALIFA: He said, “This is the truth, and the truth is all that I utter.
৮৩। ” ব্যতিক্রম হবে তোমার বান্দাদের মধ্যে যারা তোমার অনুগত ও তোমার অনুগ্রহে পরিশুদ্ধ।”
৮৪। [আল্লাহ্ ] বলেছিলেনঃ ” তবে এটাই ন্যায়সঙ্গত এবং উপযুক্ত ৪২৩৬ – এবং যা ন্যায়সঙ্গত ও উপযুক্ত আমি তাই বলি –
৪২৩৬। দেখুন সূরা [ ১৫ : ৬৪ ] এর টিকা ১৯৯০।
আয়াতঃ 038.085
তোর দ্বারা আর তাদের মধ্যে যারা তোর অনুসরণ করবে তাদের দ্বারা আমি জাহান্নাম পূর্ণ করব।
“That I will certainly fill Hell with thee and those that follow thee,- every one.”
لَأَمْلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنكَ وَمِمَّن تَبِعَكَ مِنْهُمْ أَجْمَعِينَ
Laamlaanna jahannama minka wamimman tabiAAaka minhum ajmaAAeena
YUSUFALI: “That I will certainly fill Hell with thee and those that follow thee,- every one.”
PICKTHAL: That I shall fill hell with thee and with such of them as follow thee, together.
SHAKIR: That I will most certainly fill hell with you and with those among them who follow you, all.
KHALIFA: “I will fill Hell with you and all those who follow you.”
৮৫। ” নিশ্চয়ই আমি তোমার দ্বারা এবং যারা তোমাকে অনুসরণ করছে , তাদের প্রত্যেকের দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করবো।” ৪২৩৭
৪২৩৭। দেখুন সূরা [ ৭ : ১৮ ] ; [ ৭: ১৭৯] এবং [ ১১ : ১১৯] ও টিকা ১৬২৩। আল্লাহ্র অবাধ্যতা ও বিদ্রোহের শাস্তি অবশ্যাম্ভাবী। যারা শয়তানের অনুসরণ করে আল্লাহ্র আইনের বা হুকুমের প্রতি অবাধ্যতা প্রকাশ করে তারা তাদের নেতা শয়তানের শাস্তির অনুরূপ শাস্তি ভোগ করবে।
উপদেশ : শয়তানের অবাধ্যতা প্রতীক ধর্মী যা মানুষের নৈতিক কর্মকান্ডে আল্লাহ্র আইন অমান্য করার প্রতীক স্বরূপ।
আয়াতঃ 038.086
বলুন, আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না আর আমি লৌকিকতাকারীও নই।
Say: “No reward do I ask of you for this (Qur’an), nor am I a pretender.
قُلْ مَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُتَكَلِّفِينَ
Qul ma as-alukum AAalayhi min ajrin wama ana mina almutakallifeena
YUSUFALI: Say: “No reward do I ask of you for this (Qur’an), nor am I a pretender.
PICKTHAL: Say (O Muhammad, unto mankind): I ask of you no fee for this, and I am no simulating.
SHAKIR: Say: I do not ask you for any reward for it; nor am I of those who affect:
KHALIFA: Say, “I do not ask you for any wage, and I am not an imposter.
৮৬। [ মুহম্মদ ] বল, ” ইহার [ কুর-আনের ] পরিবর্তে আমি তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাই না ৪২৩৮ এবং আমি মিথ্যা দাবীদার নই ৪২৩৯।
৪২৩৮। দেখুন সূরা [ ২৫ : ৫৭ ] ; [২৬ : ১০৯ ] ও অন্যান্য আয়াতসমূহ। আল্লাহ্র রাসূল [ সা ] মানুষকে হেদায়েতের পরিবর্তে কোনও পুরষ্কার বা প্রতিদান আশা করেন না। বরং অকৃতজ্ঞ মানুষ তাঁকে অত্যাচার ও নির্যাতনে জর্জরিত করে। তিনি নিঃস্বার্থ ভাবে মানুষের মঙ্গলের জন্য আল্লাহ্র বাণী মানুষের মাঝে প্রচার করেছেন। তাঁর একমাত্র আশা মানুষ আল্লাহ্র পথে ফিরে আসবে। এবং আখেরাতে মুক্তি লাভ করবে এটাই তার একমাত্র পার্থিব পুরষ্কার। মানুষের জন্য এই নিঃস্বার্থ কাজের জন্য তিনি শুধুমাত্র আল্লাহ্র নিকট পুরষ্কার আশা করেন।
৪২৩৯। “Mutakallif” – আক্ষরিক অর্থ যারা মিথ্যা ভান করে অথবা যা সত্য নয় তাই ঘোষণা করে,অথবা যে যোগ্যতা নাই তাই মিথ্যা দাবী করা। প্রকৃত পয়গম্বররা এ সবের উর্দ্ধে।
আয়াতঃ 038.087
এটা তো বিশ্ববাসীর জন্যে এক উপদেশ মাত্র।
“This is no less than a Message to (all) the Worlds.
إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعَالَمِينَ
In huwa illa thikrun lilAAalameena
YUSUFALI: “This is no less than a Message to (all) the Worlds.
PICKTHAL: Lo! it is naught else than a reminder for all peoples
SHAKIR: It is nothing but a reminder to the nations;
KHALIFA: “This is a reminder for the world.
৮৭। ” ইহা তো [সারা ] বিশ্ব জগতের জন্য উপদেশ মাত্র ৪২৪০।
৪২৪০। আল্লাহ্র বাণী প্রচারের মাধ্যমে রাসুলের [সা ] কোন ব্যক্তিগত লাভ নাই। মানুষের মুক্তির জন্য , মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি তা প্রচার করেন। সত্যকে প্রচারের জন্য অমানুষিক কষ্ট ও যন্ত্রণা ভোগ করেন। এ সকলই সৃষ্টির মঙ্গলের জন্য আল্লাহ্র করুণা ও দয়া। এই উপলব্ধি আমাদের বিশ্ব স্রষ্টার একত্ব , কল্যাণ স্পর্শ উপলব্ধিতে সাহায্য করে।
আয়াতঃ 038.088
তোমরা কিছু কাল পরে এর সংবাদ অবশ্যই জানতে পারবে।
“And ye shall certainly know the truth of it (all) after a while.”
وَلَتَعْلَمُنَّ نَبَأَهُ بَعْدَ حِينٍ
WalataAAlamunna nabaahu baAAda heenin
YUSUFALI: “And ye shall certainly know the truth of it (all) after a while.”
PICKTHAL: And ye will come in time to know the truth thereof.
SHAKIR: And most certainly you will come to know about it after a time.
KHALIFA: “And you will certainly find out in awhile.”
৮৮। ” এবং কিছুদিন পর তোমরা অবশ্যই ইহার [সকল ] সত্যতা সম্বন্ধে জানতে পারবে।” ৪২৪১
৪২৪১। পৃথিবীর জীবনে পরকালের জীবনকে মনে হয় অস্পষ্ট এবং থাকে বিস্মৃতির অতলে। জীবনের প্রতিটি পল ও ক্ষণ আমাদের জাগতিক চিন্তায় ব্যস্ত রাখে – ফলে আমরা ভুলে যাই স্রষ্টার অস্তিত্ব , অনুভবে অক্ষম হই তার উপস্থিতি – যা আমাদের সমস্ত সত্তা জুড়ে বিরাজমান। কিন্তু যদি আমরা আল্লাহ্ প্রদত্ত সঠিক জীবন ব্যবস্থার মাধ্যমে নিজের জীবনকে পরিচালিত করি , তবেই শুধু পরকাল সম্বন্ধে আমাদের মনে অস্বচ্ছ ধারণা জন্মাতে সক্ষম। তবে জাগতিক জীবন শেষে পরলোকে আমাদের নিকট জীবনের প্রকৃত অর্থ, পার্থিব জীবনের সকল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য , প্রকৃত মূল্যমান স্পষ্ট হবে।