১২। অবশ্যই আমি মৃতকে জীবন দান করবো ৩৯৫৪ , এবং লোকে যা [ যে কাজ ] অগ্রে প্রেরণ করে ও যা [যে কাজের প্রভাবগুলি ] পিছনে রেখে যায় সব নথিভুক্ত করি ৩৯৫৫। এবং আমি তো প্রতিটি জিনিষ সুস্পষ্ট কিতাবে সংরক্ষিত রেখেছি ৩৯৫৬।
৩৯৫৪। পাপীকে শাস্তি ও পূণ্যাত্মাকে পুরষ্কার দান করা সম্ভব হবে এই কারণে যে, মৃত্যুর পরেও সকলকেই পুণরুজ্জীবিত করা হবে। পরলোকে কারও কোনও ক্ষমতা থাকবে না। সেখানে সকল ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু হবেন সর্বশক্তিমান আল্লাহ্। সেদিন পাপীরা চাইলেও আল্লাহ্র শাস্তিকে প্রতিহত করতে পারবে না ,কারণ তাদের পৃথিবীতে যে সময় , অবসর , ও শক্তি দান করা হয়েছিলো তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।
৩৯৫৫। ভালো বা মন্দ আমাদের সকল কাজ মহান আল্লাহ্র দরবারে তৎক্ষণাত নীত হয় – আমাদের তার সমীপে পৌঁছানোর বহু পূর্বে। দেখুন টিকা নং ৩৯২৯। প্রতিটি মানুষের প্রতিটি কর্মের বিবরণ আল্লাহ্র নিকট সংরক্ষিত থাকে। ভালো বা মন্দ কর্ম দুনিয়াতেই শেষ হয়ে যায় না , সৎকর্ম বেহেশতের কুসুমাস্তীর্ণ উদ্যানে পরিণত হবে, এবং অসৎকর্ম জাহান্নামের অঙ্গারে পরিণত হবে। তাদের সম্পাদিত কর্মের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়াও সংরক্ষিত হবে। অর্থাৎ মৃত্যুর পরেও কোনও ব্যক্তির সৎকর্মের ক্রিয়া -প্রতিক্রিয়া যতদূর পৌঁছাবে এবং যতদিন পর্যন্ত পৌঁছাতে থাকবে , সবই তার আমলনামায় লিখিত হতে থাকবে। যেমন কেউ যদি হাসপাতাল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে যায়, তবে যতদিন এই সব প্রতিষ্ঠান থেকে মানুষ সেবা লাভ করবে, ততদিন ঐ ব্যক্তির আমলনামায় তা লিপিবদ্ধ হতে থাকবে। অনুরূপ ভাবে কোন রকম মন্দ কর্ম যার মন্দ ফলাফল ও প্রতিক্রিয়া তার মৃত্যুর পরও পৃথিবীতে থেকে যায়, এবং যে পর্যন্ত থাকবে , ততদিন তার আমলনামায় সে সব লিখিত হতে থাকবে। এভাবেই “যা তারা পিছনে রেখে যায় ” সবই ব্যক্তির আমলনামায় সংরক্ষিত হতে থাকে। সুতারাং আমাদের আধ্যাত্মিক দায়িত্ব শুধুমাত্র পৃথিবীর জীবনের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়- তা পার্থিব জীবনকে অতিক্রম করে পারলৌকিক জীবন পর্যন্ত প্রবাহমান।
৩৯৫৬। দেখুন আয়াত [ ২ : ১২৪ ] এবং টিকা ১২৪। আমাদের কর্মের প্রতিটি হিসাব সুস্পষ্ট ও নির্ভুলভাবে আমাদের আমলনামায় সংরক্ষিত হবে।
আয়াতঃ 036.013
আপনি তাদের কাছে সে জনপদের অধিবাসীদের দৃষ্টান্ত বর্ণনা করুন, যখন সেখানে রসূল আগমন করেছিলেন।
Set forth to them, by way of a parable, the (story of) the Companions of the City. Behold!, there came apostles to it.
وَاضْرِبْ لَهُم مَّثَلاً أَصْحَابَ الْقَرْيَةِ إِذْ جَاءهَا الْمُرْسَلُونَ
Waidrib lahum mathalan as-haba alqaryati ith jaaha almursaloona
YUSUFALI: Set forth to them, by way of a parable, the (story of) the Companions of the City. Behold!, there came messengers to it.
PICKTHAL: Coin for them a similitude: The people of the city when those sent (from Allah) came unto them;
SHAKIR: And set out to them an example of the people of the town, when the messengers came to it.
KHALIFA: Cite for them the example of people in a community that received the messengers.
রুকু – ২
১৩। ওদের নিকট জনপদের অধিবাসীদের দৃষ্টান্ত বর্ণনা কর ৩৯৫৭। দেখো ,তাদের নিকট রাসুলগণ এসেছিলো।
৩৯৫৭। অনেক প্রধান তফসীরকারগণ মনে করেন যে, এখানে যে জনপদের উল্লেখ আছে, সে শহরটির নাম আন্টিওক [Antioch]। সিরিয়ার উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি খৃষ্টীয় প্রথম শতাব্দীতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। এটি একটি গ্রীক নগরী ছিলো যার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সেলুকাস নিকাটর [Seleucus Nicator] যাকে সম্রাট আলেকজান্ডারের উত্তরাধিকারী রূপে বর্ণনা করা হয়। তিনি তাঁর পিতা এন্টিওকাস [Antiichus] এর স্মৃতি হিসেবে খৃষ্টপূর্ব ৩০০ শতাব্দীতে শহরটি স্থাপন করেন। শহরটি সমুদ্রের নিকটে অবস্থিত এবং এর একটি সামুদ্রিক বন্দর আছে যার নাম সেলুসিয়া [Seleucia]।এখানে খৃষ্টের শিষ্যরা খৃষ্টান ধর্ম প্রচার করেন। পরবর্তীতে এই স্থানটি খৃষ্টান বিশপদের গুরুত্বপূর্ণ গীর্জা হিসেবে পরিগণিত হয়। এই আয়াতে রূপক বর্ণনার মাধ্যমে যে শহরের কথা বলা হয়েছে , সে শহরটির অধিবাসীরা আল্লাহ্র নবীকে প্রত্যাখান করে এবং নগরীটি ধ্বংস হয়ে যায় [ ৩৬ : ২৯ ]। তবে ইবনে খাতিরকে অনুসরণ করে মাওলানা ইউসুফ আলীও শহরটিকে নিশ্চিতভাবে Antioch বলে সিদ্ধান্ত নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
কোরাণের আয়াতে কোনও নাম বা সময় বা স্থানের উল্লেখ করা হয় নাই। এই জনপদের অবস্থান কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এর নৈতিক শিক্ষা। এই কাহিনীর উপদেশ রূপকের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে যা বর্ণনা করা হয়েছে পরবর্তী টিকাতে। কাহিনীর শিক্ষণীয় বিষয় নাম, সময় ও স্থানের উর্দ্ধে।
আয়াতঃ 036.014
আমি তাদের নিকট দুজন রসূল প্রেরণ করেছিলাম, অতঃপর ওরা তাদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। তখন আমি তাদেরকে শক্তিশালী করলাম তৃতীয় একজনের মাধ্যমে। তারা সবাই বলল, আমরা তোমাদের প্রতি প্রেরিত হয়েছি।
When We (first) sent to them two apostles, they rejected them: But We strengthened them with a third: they said, “Truly, we have been sent on a mission to you.”