- সূরার নাম: সূরা ফাতির
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা ফাতির
আয়াতঃ 035.001
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আসমান ও যমীনের স্রষ্টা এবং ফেরেশতাগণকে করেছেন বার্তাবাহক-তারা দুই দুই, তিন তিন ও চার চার পাখাবিশিষ্ট। তিনি সৃষ্টি মধ্যে যা ইচ্ছা যোগ করেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সক্ষম।
All the praises and thanks be to Allâh, the (only) Originator [or the (only) Creator] of the heavens and the earth, Who made the angels messengers with wings, – two or three or four. He increases in creation what He wills. Verily, Allâh is Able to do all things.
الْحَمْدُ لِلَّهِ فَاطِرِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ جَاعِلِ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا أُولِي أَجْنِحَةٍ مَّثْنَى وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ يَزِيدُ فِي الْخَلْقِ مَا يَشَاء إِنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
Alhamdu lillahi fatiri alssamawati waal-ardi jaAAili almala-ikati rusulan olee ajnihatin mathna wathulatha warubaAAa yazeedu fee alkhalqi ma yashao inna Allaha AAala kulli shay-in qadeerun
YUSUFALI: Praise be to Allah, Who created (out of nothing) the heavens and the earth, Who made the angels, messengers with wings,- two, or three, or four (pairs): He adds to Creation as He pleases: for Allah has power over all things.
PICKTHAL: Praise be to Allah, the Creator of the heavens and the earth, Who appointeth the angels messengers having wings two, three and four. He multiplieth in creation what He will. Lo! Allah is Able to do all things.
SHAKIR: All praise is due to Allah, the Originator of the heavens and the earth, the Maker of the angels, messengers flying on wings, two, and three, and four; He increases in creation what He pleases; surely Allah has power over all things.
KHALIFA: Praise be to GOD, Initiator of the heavens and the earth, and appointer of the angels to be messengers with wings – two, three, and four (wings). He increases the creation as He wills. GOD is Omnipotent.
০১। সকল প্রশংসা আল্লাহ্র ৩৮৬৯। যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন [ শূন্য থেকে ] ৩৮৭০। তিনি বাণীবাহক ফেরেশতাদের তৈরী করেছেন , যারা দুই অথবা তিন অথবা চার [ জোড়া ] পক্ষ বিশিষ্ট ৩৮৭১। সৃষ্টিতে তিনি যা খুশী সংযুক্ত করেন ৩৮৭২। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাবান।
৩৮৬৯। দেখুন টিকা ৩৭৮৫ এবং আয়াত [ ৩৪ : ১ ]। যখন আমরা আল্লাহ্র প্রশংসা করি; তখন আমাদের অন্তরে আল্লাহ্র মহিমা, গৌরব এবং ক্ষমতা সম্বন্ধে উপলব্ধি ঘটে। আমরা অনুভবে সক্ষম হই যে, কিভাবে তাঁর ক্ষমতা সৃষ্টির কল্যাণের জন্য নিবেদিত। এই-ই হচ্ছে সূরার বিষয় বস্তু।
৩৮৭০। এই আয়াতটি বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে “আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা ” এবং ইংরেজীতে অনুবাদ করা হয়েছে , “Originator of the heaven and the earth .” “Fatara”এই আরবী শব্দটির অর্থ বিশ্বের আদিযুগীয় সৃষ্টি অবস্থা ; যে সৃষ্টির সাথে ক্রমান্বয়ে বিবর্তনের মাধ্যমে নূতন জিনিষ সৃষ্টি হচ্ছে। আল্লাহ্ বিশ্বের সৃষ্টিকে প্রথম থেকে ক্রমান্বয়ে পরিবর্তন , পরিবর্ধন ও নূতন নূতন ভাবে সজ্জিত করে চলেছেন সেই আদি যুগ থেকে ; ” সৃষ্টিতে তিনি যা খুশি সংযুক্ত করেন।” এই সংযুক্তি শুধুমাত্র আয়তন বা সংখ্যা তত্বের ভিত্তিতে চিন্তা করলে ভুল করা হবে, এই সংযুক্তি গুণগত মান ,কার্যে , সম্পর্কে এবং বিভিন্ন পরিবর্তনে ঘটে থাকে। সৃষ্টি তত্ব সম্বন্ধে মানুষের জ্ঞান যত প্রসারিত হচ্ছে , তত মানুষ অনুধাবন করছে বিবর্তনের ধারায় সৃষ্টি প্রক্রিয়া কত জটিল। সৃষ্টি প্রক্রিয়া সর্ম্পকে মানুষ যত জ্ঞানই আহরণ করুক না কেন জীবনের উন্মেষ এবং এর রহস্য আজও তার অজানা রয়ে গেছে। জীবনের উন্মেষ এবং আধ্যাত্মিক জগত মানুষের সকল জ্ঞান ও বিজ্ঞানের উর্দ্ধে রয়ে গেছে আজও। বিজ্ঞানের জ্ঞানে সমৃদ্ধ হওয়ার ফলে মানুষ শুধু মাত্র কার্য ও কারণের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সম্পর্ক আবিষ্কারে আগ্রহী হয়ে পড়েছে। এর বাইরে যে অনুভূতির জগত তা অনুভবে সে হয় ব্যর্থ। সে ভুলে যায় ও উপলব্ধি করতে অক্ষম হয় যে, সকল কিছু সৃষ্টির মূলে রয়েছে আল্লাহ্র সৃষ্টি কৌশল ; যে কৌশল অত্যন্ত জটিল এবং সুক্ষ কৌশলে পূর্ণ। বিজ্ঞানের জ্ঞানের মাধ্যমে আল্লাহ্র জ্ঞান ও প্রজ্ঞাকে অনুধাবনের চেষ্টাই হচ্ছে প্রকৃত এবাদত।
৩৮৭১। ফেরেশতারা আল্লাহ্র ইচ্ছাকে বা প্রেরিত বার্তা বহন করার দূত বিশেষ, যাদের উপরে এই বিশেষ দায়িত্ব অর্পন করা হয়। আল্লাহ্র কার্যকরী আদেশ সম্পাদন করার বর্ণনা আছে [ ৭৯ : ১-৫ ] আয়াতে এবং প্রত্যাদেশ বহন করার বর্ণনা আছে [২৬ : ১৯৩ ] আয়াতে।
৩৮৭২। দেখুন টিকা ৩৮৭০; যেখানে বিবর্তনের ধারায় সৃষ্টি প্রক্রিয়ায় জটিলতার ধারা বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ্র সৃষ্টি প্রক্রিয়া কোন নির্দ্দিষ্ট সময়ে এসে থেমে যায় নাই। এর ধারাবাহিকতা সেই প্রাচীন যুগ থেকে চলছে, ভবিষ্যতেও চলবে। কারণ “তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।” তার করুণা ও দয়া সর্ব সৃষ্টির উপরে অবিরল ধারাতে বর্ষিত হয়।
আয়াতঃ 035.002
আল্লাহ মানুষের জন্য অনুগ্রহের মধ্য থেকে যা খুলে দেন, তা ফেরাবার কেউ নেই এবং তিনি যা বারণ করেন, তা কেউ প্রেরণ করতে পারে না তিনি ব্যতিত। তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।
Whatever of mercy (i.e.of good), Allâh may grant to mankind, none can withhold it, and whatever He may withhold, none can grant it thereafter. And He is the AllMighty, the AllWise.
مَا يَفْتَحِ اللَّهُ لِلنَّاسِ مِن رَّحْمَةٍ فَلَا مُمْسِكَ لَهَا وَمَا يُمْسِكْ فَلَا مُرْسِلَ لَهُ مِن بَعْدِهِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
Ma yaftahi Allahu lilnnasi min rahmatin fala mumsika laha wama yumsik fala mursila lahu min baAAdihi wahuwa alAAazeezu alhakeemu
YUSUFALI: What Allah out of his Mercy doth bestow on mankind there is none can withhold: what He doth withhold, there is none can grant, apart from Him: and He is the Exalted in Power, full of Wisdom.
PICKTHAL: That which Allah openeth unto mankind of mercy none can withhold it; and that which He withholdeth none can release thereafter. He is the Mighty, the Wise.
SHAKIR: Whatever Allah grants to men of (His) mercy, there is none to withhold it, and what He withholds there is none to send it forth after that, and He is the Mighty, the Wise
KHALIFA: When GOD showers the people with mercy, no force can stop it. And if He withholds it, no force, other than He, can send it. He is the Almighty, Most Wise.
০২। আল্লাহ্ মানব সম্প্রদায়কে কোন অনুগ্রহ দান করলে কেহ তা বন্ধ করতে পারে না। আবার যা তিনি বন্ধ করতে চান তিনি ব্যতীত কেহ তা প্রদান করতে পারে না ৩৮৭৩। ক্ষমতায় তিনি পরাক্রমশালী , প্রজ্ঞায় পরিপূর্ণ।
৩৮৭৩। আল্লাহ্ সকল জীবের সৃষ্টিকর্তা এবং পালনকর্তা। তাঁর করুণা ও দয়া সকল সৃষ্টিকে আপ্লুত করে থাকে। পৃথিবীতে এমন কেউ বা এমন কিছু নাই যা তার করুণা ধারাকে বাধাগ্রস্থ করতে পারে , বা বান্দার জন্য তাঁর অনুগ্রহে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে। আল্লাহ্র ইচ্ছা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবেই। যদি তিনি কাউকে তাঁর অনুগ্রহ বঞ্চিত করতে চান তবে, পৃথিবীর কোনও শক্তির ক্ষমতা নাই তা পুণরুজ্জীবিত করা। আল্লাহ্ পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়। তিনি বিধিবহির্ভূত কোনও ইচ্ছা করেন না। তিনি কল্যাণ এবং প্রজ্ঞার অধিকারী। তার অনুগ্রহ বিতরণ ও বঞ্চিত সবই তার সৃষ্টির কল্যাণের জন্য নিবেদিত।
আয়াতঃ 035.003
হে মানুষ, তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর। আল্লাহ ব্যতীত এমন কোন স্রষ্টা আছে কি, যে তোমাদেরকে আসমান ও যমীন থেকে রিযিক দান করে? তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব তোমরা কোথায় ফিরে যাচ্ছ?
O mankind! Remember the Grace of Allâh upon you! Is there any creator other than Allâh who provides for you from the sky (rain) and the earth? Lâ ilâha illa Huwa (none has the right to be worshipped but He). How then are you turning away (from Him)?
يَا أَيُّهَا النَّاسُ اذْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ هَلْ مِنْ خَالِقٍ غَيْرُ اللَّهِ يَرْزُقُكُم مِّنَ السَّمَاء وَالْأَرْضِ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ فَأَنَّى تُؤْفَكُونَ
Ya ayyuha alnnasu othkuroo niAAmata Allahi AAalaykum hal min khaliqin ghayru Allahi yarzuqukum mina alssama-i waal-ardi la ilaha illa huwa faanna tu/fakoona
YUSUFALI: O men! Call to mind the grace of Allah unto you! is there a creator, other than Allah, to give you sustenance from heaven or earth? There is no god but He: how then are ye deluded away from the Truth?
PICKTHAL: O mankind! Remember Allah’s grace toward you! Is there any creator other than Allah who provideth for you from the sky and the earth? There is no Allah save Him. Whither then are ye turned?
SHAKIR: O men! call to mind the favor of Allah on you; is there any creator besides Allah who gives you sustenance from the heaven and the earth? There is no god but He; whence are you then turned away?
KHALIFA: O people, remember GOD’s blessings upon you. Is there any creator other than GOD who provides for you from the heaven and the earth? There is no other god beside Him. How could you deviate?
০৩। হে মানব সম্প্রদায় ! তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহ স্মরণ কর। আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন সৃষ্টিকর্তা আছে কি যে তোমাকে আকাশ ও পৃথিবী থেকে জীবনোপকরণ সরবরাহ করতে পারবে ? ৩৮৭৪ তিনি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নাই। তাহলে কি ভাবে তোমরা সত্য থেকে ফিরে যাচ্ছ ?
৩৮৭৪। বিশ্ব ভূবন সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ্র এবাদত। মানুষের কাছে আবেদন করা হয়েছে মিথ্যা উপাস্যের প্রতি ধাবিত না হয়ে , আল্লাহ্র দিকে ধাবিত হতে। জীবনের সকল কর্ম-কান্ড , এক কথায় প্রতিটি জীবন আল্লাহ্কে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। সব কিছুই শেষ পর্যন্ত তাঁর নিকট প্রত্যার্পন করবে। আল্লাহ্র দূরদর্শিতা ও সদয় তত্ত্বাবধানে পৃথিবীর সকল জীবন ও মনুষ্যকূল প্রতিপালিত হয়। তিনি সকল কিছুকে জীবনোপকরণ দান করেন। কোরাণের ভাষাতে জীবনোপকরণ বলতে জীবনের পার্থিব ও আধ্যাত্মিক এবং জীবনের পূণার্ঙ্গ বিকাশের জন্য যা কিছু প্রয়োজন সবই জীবনোপকরণ যেমন : আহার , সাজ-সরঞ্জাম, সুখ-শান্তি, স্বাস্থ্য,ধন-সম্পদ,মান-সম্মান ইত্যাদি। সুতারাং যে জীবনের প্রতিটি মূহুর্ত আল্লাহ্র করুণার উপরে নির্ভরশীল তাঁর প্রত্যাদেশকে ইচ্ছাকৃত ভাবে অগ্রাহ্য করা কি চরম মূর্খতার কাজ নয় ?
আয়াতঃ 035.004
তারা যদি আপনাকে মিথ্যাবাদী বলে, তবে আপনার পূর্ববর্তী পয়গম্বরগণকেও তো মিথ্যাবাদী বলা হয়েছিল। আল্লাহর প্রতিই যাবতীয় বিষয় প্রত্যাবর্তিত হয়।
And if they belie you (O Muhammad SAW), so were Messengers belied before you. And to Allâh return all matters (for decision).
وَإِن يُكَذِّبُوكَ فَقَدْ كُذِّبَتْ رُسُلٌ مِّن قَبْلِكَ وَإِلَى اللَّهِ تُرْجَعُ الأمُورُ
Wa-in yukaththibooka faqad kuththibat rusulun min qablika wa-ila Allahi turjaAAu al-omooru
YUSUFALI: And if they reject thee, so were messengers rejected before thee: to Allah back for decision all affairs.
PICKTHAL: And if they deny thee, (O Muhammad), messengers (of Allah) were denied before thee. Unto Allah all things are brought back.
SHAKIR: And if they call you a liar, truly messengers before you were called liars, and to Allah are all affairs returned.
KHALIFA: If they disbelieve you, messengers before you have been disbelieved. GOD is in control of all things.
০৪। এবং যদি তারা তোমাকে প্রত্যাখান করে , যে ভাবে তোমার পূর্বে অন্য রাসুলরাও প্রত্যাখাত হয়েছিলো ৩৮৭৫। [ মনে রেখো ] সকল বিষয় সিদ্ধান্তের জন্য আল্লাহ্র নিকট প্রত্যানীত হবে।
৩৮৭৫। মানুষের সহজাত প্রবণতাকে উদাহরণের মাধ্যমে এই আয়াতে তুলে ধরা হয়েছে। মানুষের মানসিক বিকৃতি হচ্ছে সাধারণতঃ সে সত্যকে প্রত্যাখান করে মিথ্যাকে গ্রহণ করতে ভালোবাসে। আল্লাহ্র নবীদের বেলাতেও তার ব্যত্যয় ঘটে নাই। কিন্তু তাঁরা এই প্রতিবন্ধকতা সত্বেও নিরুৎসাহিত হন নাই। মানুষের জন্য এই উপদেশ যে, তারা সর্ব অবস্থায় নিরুৎসাহিত না হয়ে আল্লাহ্র উপরে নির্ভর করবে। সব কিছু আল্লাহ্র নিকট প্রত্যার্পন করবে।
আয়াতঃ 035.005
হে মানুষ, নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য। সুতরাং, পার্থিব জীবন যেন তোমাদেরকে প্রতারণা না করে। এবং সেই প্রবঞ্চক যেন কিছুতেই তোমাদেরকে আল্লাহ সম্পর্কে প্রবঞ্চিত না করে।
O mankind! Verily, the Promise of Allâh is true. So let not this present life deceive you, and let not the chief deceiver (Satan) deceive you about Allâh.
يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ فَلَا تَغُرَّنَّكُمُ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا وَلَا يَغُرَّنَّكُم بِاللَّهِ الْغَرُورُ
Ya ayyuha alnnasu inna waAAda Allahi haqqun fala taghurrannakumu alhayatu alddunya wala yaghurrannakum biAllahi algharooru
YUSUFALI: O men! Certainly the promise of Allah is true. Let not then this present life deceive you, nor let the Chief Deceiver deceive you about Allah.
PICKTHAL: O mankind! Lo! the promise of Allah is true. So let not the life of the world beguile you, and let not the (avowed) beguiler beguile you with regard to Allah.
SHAKIR: O men! surely the promise of Allah is true, therefore let not the life of this world deceive you, and let not the archdeceiver deceive you respecting Allah.
KHALIFA: O people, GOD’s promise is the truth; therefore, do not be distracted by this lowly life. Do not be diverted from GOD by mere illusions.
০৫। হে মানব সম্প্রদায় ! আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি অবশ্যই সত্য ৩৮৭৬। সুতারাং পার্থিব জীবন যেনো তোমাদের প্রতারিত না করে ৩৮৭৭। প্রধান প্রবঞ্চক যেনো তোমাদের আল্লাহ্র সম্পর্কে প্রবঞ্চনা করতে না পারে।
৩৮৭৬। আয়াত ৩ নং এ মানুষের প্রতি আবেদন করা হয়েছে অতীত ও বর্তমানকে স্মরণ করে। এই আয়াতে আবেদন করা হয়েছে ভবিষ্যতের প্রতি। আল্লাহ্ আমাদের বেহেশতের শান্তির অঙ্গীকার করেছেন আবার ন্যায়বিচারের শাস্তির ভয় প্রদর্শন করেছেন। আল্লাহ্র অঙ্গীকার পূর্ণ হবেই। আমরা কোন শ্রেণীতে নিজেদের অর্ন্তভূক্ত করবো ?
৩৮৭৭। দেখুন [ ৩১ : ৩৩ ] আয়াত এবং টিকা ৩৬২৪। পাপ মানুষের চোখে মায়া অঞ্জন পরিয়ে দেয়। মানুষ পাপের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দুভাবে প্রতারিত হয়।
১) মানুষ পৃথিবীর জীবনে এতটাই বিমোহিত হয়ে পড়ে যে, সে পরকালকে ভুলে যায়। ভুলে যায় এ জীবন ক্ষণস্থায়ী এবং এ জীবন পরলোকের জীবনের শিক্ষানবীশকাল মাত্র।
২) শয়তান মানুষের প্রধান শত্রু। মানুষের কামনা , বাসনা, রীপু প্রভৃতির মাধ্যমে শয়তান মানুষের সত্ত্বার সাথে মিশে থাকে এবং মানুষের চোখে এমনই মায়া অঞ্জন পরিয়ে দেয় যে, মানুষ অন্ধ হয়ে পাপ ও পূণ্যের মধ্যে পার্থক্য ভুলে যায়। সে বলে , “Evil ! be thou my good.” জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপেই শয়তানের ফাঁদ পাতা আছে। শয়তান যেনো মন্দ কর্মকে শোভনীয় করে আমাদের তাতে লিপ্ত না করে। আমরা কি সে সম্বন্ধে সচেতন ?
আয়াতঃ 035.006
শয়তান তোমাদের শত্রু; অতএব তাকে শত্রু রূপেই গ্রহণ কর। সে তার দলবলকে আহবান করে যেন তারা জাহান্নামী হয়।
Surely, Shaitân (Satan) is an enemy to you, so take (treat) him as an enemy. He only invites his Hizb (followers) that they may become the dwellers of the blazing Fire.
إِنَّ الشَّيْطَانَ لَكُمْ عَدُوٌّ فَاتَّخِذُوهُ عَدُوًّا إِنَّمَا يَدْعُو حِزْبَهُ لِيَكُونُوا مِنْ أَصْحَابِ السَّعِيرِ
Inna alshshaytana lakum AAaduwwun faittakhithoohu AAaduwwan innama yadAAoo hizbahu liyakoonoo min as-habi alssaAAeeri
YUSUFALI: Verily Satan is an enemy to you: so treat him as an enemy. He only invites his adherents, that they may become Companions of the Blazing Fire.
PICKTHAL: Lo! the devil is an enemy for you, so treat him as an enemy. He only summoneth his faction to be owners of the flaming Fire.
SHAKIR: Surely the Shaitan is your enemy, so take him for an enemy; he only invites his party that they may be inmates of the burning
KHALIFA: The devil is your enemy, so treat him as an enemy. He only invites his party to be the dwellers of Hell.
০৬। নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের শত্রু ; সুতারাং তাকে শত্রু হিসেবেই গণ্য করো ৩৮৭৮। সে কেবলমাত্র তার অনুগতদের আহ্বান করে, যেনো তারা জ্বলন্ত আগুনের সঙ্গী হতে পারে।
৩৮৭৮। পাপ ও মন্দ কাজ হচ্ছে শয়তানের প্রতিনিধি বা প্রতীক হিসেবে কল্পনা করা যায়। শয়তান আমাদের শত্রু। সৃষ্টির আদিতে স্রষ্টা আমাদের আত্মাকে পূত পবিত্ররূপে সৃষ্টি করেন। আমাদের পাপ কাজ আত্মার এই পবিত্রতা নষ্ট করে কলুষতায় ঢেকে দেয়। শয়তান বন্ধুর ছদ্মবেশে বা অথবা আমাদের ইচ্ছার নিবৃত্ত করার সুযোগে আমাদের প্রতারণা করে থাকে। শয়তান তার নরক যন্ত্রণার অংশীদার সৃষ্টির প্রয়াসে প্রতিনিয়ত আমাদের প্রতারণা করে চলেছে। আমরা কি শয়তানের ফাঁদের ব্যাপারে সর্তক হতে পারি না ?
আয়াতঃ 035.007
যারা কুফর করে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর আযাব। আর যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার।
Those who disbelieve, theirs will be a severe torment; and those who believe (in the Oneness of Allâh Islâmic Monotheism) and do righteous good deeds, theirs will be forgiveness and a great reward (i.e. Paradise).
الَّذِينَ كَفَرُوا لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيدٌ وَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ كَبِيرٌ
Allatheena kafaroo lahum AAathabun shadeedun waallatheena amanoo waAAamiloo alssalihati lahum maghfiratun waajrun kabeerun
YUSUFALI: For those who reject Allah, is a terrible Penalty: but for those who believe and work righteous deeds, is Forgiveness, and a magnificent Reward.
PICKTHAL: Those who disbelieve, theirs will be an awful doom; and those who believe and do good works, theirs will be forgiveness and a great reward.
SHAKIR: (As for) those who disbelieve, they shall have a severe punishment, and (as for) those who believe and do good, they shall have forgiveness and a great reward.
KHALIFA: Those who disbelieve have incurred a severe retribution, and those who believe and lead a righteous life have deserved forgiveness and a great recompense.
০৭। যারা আল্লাহকে অস্বীকার করে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি ৩৮৭৯। কিন্তু যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা এবং মহাপুরষ্কার।
৩৮৭৯। নশ্বর মাটির দেহের অভ্যন্তরে অবিনশ্বর আত্মার অবস্থান , যা পরমাত্মার অংশ। সকল কল্যাণ ও সত্য সুন্দরের প্রতীক এক আল্লাহ্। সৃষ্টির আদিতে আমাদের আত্মাকেও তারই প্রতিনিধি হিসেবে সৃষ্টি কর হয়েছে , যা সর্বদা আল্লাহ্র ধ্যানে নিমগ্ন থাকতে চায়। আল্লাহকে অস্বীকার করার অর্থ আত্মার এই মূল ধর্ম থেকে বিচ্যুত করা। আর স্বধর্মচ্যুত ও বিভ্রান্ত আত্মা যন্ত্রণা ভোগ করবে সেটাই তো স্বাভাবিক। “যারা আল্লাহ্কে অস্বীকার করে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।” অপরপক্ষে মানুষকে যে উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করা হয়েছে সে যদি সেই মহৎ উদ্দেশ্যের সাথে সমন্বিত ভাবে নিজেকে বিলিন করে দেয় তবে তাদের জন্য আছে উচ্চ মর্যদা “তাদের জন্য আছে ক্ষমা ও মহাপুরষ্কার। “
আয়াতঃ 035.008
যাকে মন্দকর্ম শোভনীয় করে দেখানো হয়, সে তাকে উত্তম মনে করে, সে কি সমান যে মন্দকে মন্দ মনে করে। নিশ্চয় আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচছা সৎপথ প্রদর্শন করেন। সুতরাং আপনি তাদের জন্যে অনুতাপ করে নিজেকে ধ্বংস করবেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ জানেন তারা যা করে।
Is he, then, to whom the evil of his deeds made fairseeming, so that he considers it as good (equal to one who is rightly guided)? Verily, Allâh sends astray whom He wills, and guides whom He wills. So destroy not yourself (O Muhammad SAW) in sorrow for them. Truly, Allâh is the AllKnower of what they do!
أَفَمَن زُيِّنَ لَهُ سُوءُ عَمَلِهِ فَرَآهُ حَسَنًا فَإِنَّ اللَّهَ يُضِلُّ مَن يَشَاء وَيَهْدِي مَن يَشَاء فَلَا تَذْهَبْ نَفْسُكَ عَلَيْهِمْ حَسَرَاتٍ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ بِمَا يَصْنَعُونَ
Afaman zuyyina lahu soo-o AAamalihi faraahu hasanan fa-inna Allaha yudillu man yashao wayahdee man yashao fala tathhab nafsuka AAalayhim hasaratin inna Allaha AAaleemun bima yasnaAAoona
YUSUFALI: Is he, then, to whom the evil of his conduct is made alluring, so that he looks upon it as good, (equal to one who is rightly guided)? For Allah leaves to stray whom He wills, and guides whom He wills. So let not thy soul go out in (vainly) sighing after them: for Allah knows well all that they do!
PICKTHAL: Is he, the evil of whose deeds is made fairseeming unto him so that he deemeth it good, (other than Satan’s dupe)? Allah verily sendeth whom He will astray, and guideth whom He will; so let not thy soul expire in sighings for them. Lo! Allah is Aware of what they do!
SHAKIR: What! is he whose evil deed is made fairseeming to him so much so that he considers it good? Now surely Allah makes err whom He pleases and guides aright whom He pleases, so let not your soul waste away in grief for them; surely Allah is Cognizant of what they do
KHALIFA: Note the one whose evil work is adorned in his eyes, until he thinks that it is righteous. GOD thus sends astray whoever wills (to go astray), and He guides whoever wills (to be guided). Therefore, do not grieve over them. GOD is fully aware of everything they do.
রুকু – ২
০৮। যে ব্যক্তিকে তাঁর মন্দ আচরণ সমূহ সুশোভন করা হয়েছে , যেনো সে তা উত্তম মনে করে [ সে ব্যক্তি কি তার সমান যে সৎকর্ম করে ] ? ৩৮৮০। আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা পথভ্রান্ত করেন এবং যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন। সুতারাং ওদের জন্য [ বৃথা ] আক্ষেপ করে তোমার আত্মা যেনো ধ্বংস না হয়। ওরা যা করে আল্লাহ্ তা ভালোভাবে জানেন।
৩৮৮০। দেখুন টিকা ৩৮৭৭। মন্দ ও পাপ কাজ করতে করতে এমন একটা অবস্থা উপনীত হয় যখন মন্দকে মন্দ মনে হবে না , পাপকে পাপ মনে হবে না। নিজের পাপ কাজের সুক্ষ কলা কৌশল অত্যন্ত মনোহর ও শোভনীয় রূপে তার চিত্তকে আনন্দে উদ্বেলিত করবে। কোনও পাপ বোধ বা বিবেকের দংশন তার আত্মার মাঝে অনুভূত হবে না। যখন কারও মানসিক অবস্থা এরূপ অবস্থায় উন্নীত হয়, তখনই সে সব মানুষ পাপ কাজকে তাদের জীবনে কল্যাণকর বলে ভ্রম করে। পাপের কলুষতা তাদের আত্মার স্বচ্ছতাকে ঢেকে দেয়। এদের সম্বন্ধে কোন ভালো আশা করা বৃথা। যে কোনও হেদায়েতই তাদের সৎপথে আনতে ব্যর্থ হবে। কারণ তারা ইচ্ছাকৃত ভাবেই হেদায়েতকে গ্রহণ করে নাই। আল্লাহ্র বাণীকে অস্বীকার করেছে , পথ নির্দ্দেশকে গ্রহণ করে নাই। এদেরকে ভ্রান্ত পথে-ই ছেড়ে দিতে হয়, কারণ এদের সৎপথে আনা কোনও মানুষের পক্ষেই সম্ভব নয়। তবে যদি আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন তবে বিদ্যুৎ চমকের মত এক মূহুর্তেই তাঁর সমগ্র সত্ত্বা আলোকিত হয়ে যেতে পারে। তবে তা সম্পূর্ণ আল্লাহ্র ইচ্ছা যা হয়তো বা তাঁর বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ যা তাঁর জ্ঞান ও প্রজ্ঞার স্বাক্ষর। এই আয়াতে আল্লাহ্ তাঁর নবীকে এই সব পাপীদের সৎপথে আনতে না পারার জন্য আক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন। নবী তাঁর কাজ করে যাবেন তাদের জন্য যারা গ্রহণে আগ্রহী। আল্লাহ্র পরিকল্পনা মানুষের অলক্ষে কাজ করে যায় অভাবিত ও অচিন্তিত ভাবে , পরবর্তী আয়াতে রূপক বর্ণনার মাধ্যমে তা তুলে ধরা হয়েছে।
আয়াতঃ 035.009
আল্লাহই বায়ু প্রেরণ করেন, অতঃপর সে বায়ু মেঘমালা সঞ্চারিত করে। অতঃপর আমি তা মৃত ভূ-খন্ডের দিকে পরিচালিত করি, অতঃপর তদ্বারা সে ভূ-খন্ডকে তার মৃত্যুর পর সঞ্জীবিত করে দেই। এমনিভাবে হবে পুনরুত্থান।
And it is Allâh Who sends the winds, so that they raise up the clouds, and We drive them to a dead land, and revive therewith the earth after its death. As such (will be) the Resurrection!
وَاللَّهُ الَّذِي أَرْسَلَ الرِّيَاحَ فَتُثِيرُ سَحَابًا فَسُقْنَاهُ إِلَى بَلَدٍ مَّيِّتٍ فَأَحْيَيْنَا بِهِ الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا كَذَلِكَ النُّشُورُ
WaAllahu allathee arsala alrriyaha fatutheeru sahaban fasuqnahu ila baladin mayyitin faahyayna bihi al-arda baAAda mawtiha kathalika alnnushooru
YUSUFALI: It is Allah Who sends forth the Winds, so that they raise up the Clouds, and We drive them to a land that is dead, and revive the earth therewith after its death: even so (will be) the Resurrection!
PICKTHAL: And Allah it is Who sendeth the winds and they raise a cloud; then We lead it unto a dead land and revive therewith the earth after its death. Such is the Resurrection.
SHAKIR: And Allah is He Who sends the winds so they raise a cloud, then We drive it on to a dead country, and therewith We give life to the earth after its death; even so is the quickening.
KHALIFA: GOD is the One who sends the winds to stir up clouds, then we drive them towards barren lands, and revive such lands after they were dead. Thus is the resurrection.
০৯। আল্লাহ্-ই পূর্বাহ্নে বায়ু প্রেরণ করেন মেঘমালাকে উত্থিত করার জন্য ৩৮৮১। আমি তা মৃত ভূখন্ডের দিকে পরিচালিত করি এবং তার দ্বারা ধরিত্রির মৃত্যুর পরে তাকে পুণঃর্জীবিত করি। এরূপই হবে পুণরুত্থান [ মৃত্যুর পর ]।
৩৮৮১। এই আয়াতের মাধ্যমে যে রূপকের অবতারণা করা হয়েছে তার অর্থ দ্বিবিধ।
১) বৃষ্টিহীন, শুষ্ক মরুভূমি সদৃশ্য মাটিতে কোনও জীবনের স্পর্শ থাকে না। তরুলতা, বৃক্ষ জন্মে না ,ফলে তা কীটপতঙ্গ ও পশু পাখী বাসের অযোগ্য। কারণ কোথাও পানির চিহ্ন থাকে না। পানি বিহীন জীবন ধারণ অসম্ভব। বহুদূরে অসীম সমুদ্র থেকে পানি সূর্যের তাপে বাস্পে পরিণত হয়ে মেঘে পরিণত হয়। বাতাস সেই মেঘকে বহন করে নেয় যেখানে বৃষ্টির প্রয়োজন। এখানে বাতাসের কোনও কৃতিত্ব নাই। সবই ঘটে আল্লাহ্র দূরদশির্তা ও বিচক্ষণ পরিকল্পনা অনুযায়ী। মৃত মরুভূমি সদৃশ্য মাটিতে বৃষ্টিপাত ঘটে। সাথে সাথে সেখানে শুরু হয়ে যায় জীবনের চাঞ্চল্য; প্রকৃতি জীবনের স্পর্শে অপরূপ রূপে সজ্জ্বিত হয়ে ওঠে। এই রূপক বর্ণনার সাহায্যে এ কথাই বুঝাতে চাওয়া হয়েছে যে আধ্যাত্মিক জগতে আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ বৃষ্টির ন্যায় যা আত্মার পুনঃজাগরণ ঘটায় [Nushur ], আত্মার বিকাশে সহায়ক হয়। যে আত্মা এতদিন আধ্যাত্মিক জগত সম্বন্ধে অজ্ঞ ও নিরুৎসাহিত ছিলো আল্লাহ্র প্রত্যাদেশে সে নূতন শক্তিলাভ করে সঞ্জিবীত হয়।
২) এই রূপক বর্ণনাকে সাধারণভাবে শেষ বিচারের দিনের পুণরুত্থানের বর্ণনা মনে করা যায়। পুরাতন পৃথিবীকে গুটিয়ে নেবার পরে, ধ্বংসপ্রাপ্ত পৃথিবীতে আল্লাহ্র রহমতের বৃষ্টি সঞ্জীবিত হওয়ার ফলে নূতন পৃথিবীর বিকাশ লাভ ঘটবে। [ ১৪ : ৪৮ ]।
আয়াতঃ 035.010
কেউ সম্মান চাইলে জেনে রাখুন, সমস্ত সম্মান আল্লাহরই জন্যে। তাঁরই দিকে আরোহণ করে সৎবাক্য এবং সৎকর্ম তাকে তুলে নেয়। যারা মন্দ কার্যের চক্রান্তে লেগে থাকে, তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি। তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ হবে।
Whosoever desires honour, power and glory then to Allâh belong all honour, power and glory [and one can get honour, power and glory only by obeying and worshipping Allâh (Alone)]. To Him ascend (all) the goodly words, and the righteous deeds exalt it (the goodly words i.e. the goodly words are not accepted by Allâh unless and until they are followed by good deeds), but those who plot evils, theirs will be severe torment. And the plotting of such will perish.
مَن كَانَ يُرِيدُ الْعِزَّةَ فَلِلَّهِ الْعِزَّةُ جَمِيعًا إِلَيْهِ يَصْعَدُ الْكَلِمُ الطَّيِّبُ وَالْعَمَلُ الصَّالِحُ يَرْفَعُهُ وَالَّذِينَ يَمْكُرُونَ السَّيِّئَاتِ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيدٌ وَمَكْرُ أُوْلَئِكَ هُوَ يَبُورُ
Man kana yureedu alAAizzata falillahi alAAizzatu jameeAAan ilayhi yasAAadu alkalimu alttayyibu waalAAamalu alssalihu yarfaAAuhu waallatheena yamkuroona alssayyi-ati lahum AAathabun shadeedun wamakru ola-ika huwa yabooru
YUSUFALI: If any do seek for glory and power,- to Allah belong all glory and power. To Him mount up (all) Words of Purity: It is He Who exalts each Deed of Righteousness. Those that lay Plots of Evil,- for them is a Penalty terrible; and the plotting of such will be void (of result).
PICKTHAL: Whoso desireth power (should know that) all power belongeth to Allah. Unto Him good words ascend, and the pious deed doth He exalt; but those who plot iniquities, theirs will be an awful doom; and the plotting of such (folk) will come to naught.
SHAKIR: Whoever desires honor, then to Allah belongs the honor wholly. To Him do ascend the good words; and the good deeds, lift them up, and (as for) those who plan evil deeds, they shall have a severe chastisement; and (as for) their plan, it shall perish.
KHALIFA: Anyone seeking dignity should know that to GOD belongs all dignity. To Him ascends the good words, and He exalts the righteous works. As for those who scheme evil works, they incur severe retribution; the scheming of such people is destined to fail.
১০। যদি কেউ সম্মান ও ক্ষমতার অনুসন্ধান করে ৩৮৮২ , [জেনে রাখ ] সকল সম্মান ও ক্ষমতা আল্লাহ্রই অধীনে। পবিত্র বাণীসমূহ তাঁর নিকট পৌঁছায়। প্রতিটি সৎকাজকে তিনিই প্রশংসা করেন। যারা মন্দ কাজের পরিকল্পনা করে ৩৮৮৩ – তাদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি। তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ হবে।
৩৮৮২। কেউ সম্মান ও ক্ষমতা কামনা করলে তার জেনে রাখা উচিত যে তা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারও তা দেওয়ার সাধ্য নাই। আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ্র নিকট থেকে সম্মান ও ক্ষমতা লাভের পন্থা বর্ণনা করা হয়েছে। এই পন্থার দুটি অংশের প্রথমটি হচ্ছে সৎ বা পবিত্র বাক্য, দ্বিতীয়টি হচ্ছে সৎকর্ম। ভালো ও মন্দের পার্থক্য অত্যন্ত তীক্ষ্ণ ও স্পষ্ট। কোনও ভালো জিনিষই পূর্ণ হারিয়ে যায় না – আল্লাহ্র সিংহাসনে তা নীত হয়। কথায় ও কাজে অত্যন্ত ক্ষুদ্র ও অবনমিত সৎবাক্য ও সৎকার্য আল্লাহ্র নিকট উচ্চ সম্মান লাভ করে থাকে। যদি কেউ ভালো কাজ ব্যতীত সম্মান ও ক্ষমতা কামনা করে থাকে তবে তা বাতুলতা। আল্লাহ্ ব্যতীত সম্মান ও ক্ষমতার মালিক কেহ নয়। আমরা যদি শুধুমাত্র আল্লাহ্কে খুশী করার জন্য ভালো কাজ করি তবেই আমরা আল্লাহ্র কাছে সম্মান লাভের যোগ্যতা অর্জন করবো।
৩৮৮৩। দুষ্ট ও অশুভ শক্তি সব সময়েই ভালো এবং শুভ শক্তির বিরুদ্ধে কাজ করে – তারা গোপনে , রাতের অন্ধকারে, পূণ্যাত্মাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে। আল্লাহ্ বলেছেন , মন্দের শেষ পরিণতি অবশ্যই মন্দ হবে। তাদের সকল চক্রান্ত ধূলিস্যাৎ হবে এবং শেষ পর্যন্ত অশুভ চক্রান্ত নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
আয়াতঃ 035.011
আল্লাহ তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে, অতঃপর বীর্য থেকে, তারপর করেছেন তোমাদেরকে যুগল। কোন নারী গর্ভধারণ করে না এবং সন্তান প্রসব করে না; কিন্তু তাঁর জ্ঞাতসারে। কোন বয়স্ক ব্যক্তি বয়স পায় না। এবং তার বয়স হ্রাস পায় না; কিন্তু তা লিখিত আছে কিতাবে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।
And Allâh did create you (Adam) from dust, then from Nutfah (male and female discharge semen drops i.e. Adam’s offspring), then He made you pairs (male and female). And no female conceives or gives birth, but with His Knowledge. And no aged man is granted a length of life, nor is a part cut off from his life (or another man’s life), but is in a Book (AlLauh AlMahfûz) Surely, that is easy for Allâh.
وَاللَّهُ خَلَقَكُم مِّن تُرَابٍ ثُمَّ مِن نُّطْفَةٍ ثُمَّ جَعَلَكُمْ أَزْوَاجًا وَمَا تَحْمِلُ مِنْ أُنثَى وَلَا تَضَعُ إِلَّا بِعِلْمِهِ وَمَا يُعَمَّرُ مِن مُّعَمَّرٍ وَلَا يُنقَصُ مِنْ عُمُرِهِ إِلَّا فِي كِتَابٍ إِنَّ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ
WaAllahu khalaqakum min turabin thumma min nutfatin thumma jaAAalakum azwajan wama tahmilu min ontha wala tadaAAu illa biAAilmihi wama yuAAammaru min muAAammarin wala yunqasu min AAumurihi illa fee kitabin inna thalika AAala Allahi yaseerun
YUSUFALI: And Allah did create you from dust; then from a sperm-drop; then He made you in pairs. And no female conceives, or lays down (her load), but with His knowledge. Nor is a man long-lived granted length of days, nor is a part cut off from his life, but is in a Decree (ordained). All this is easy to Allah.
PICKTHAL: Allah created you from dust, then from a little fluid, then He made you pairs (the male and female). No female beareth or bringeth forth save with His knowledge. And no-one groweth old who groweth old, nor is aught lessened of his life, but it is recorded in a Book, Lo! that is easy for Allah.
SHAKIR: And Allah created you of dust, then of the life-germ, then He made you pairs; and no female bears, nor does she bring forth, except with His knowledge; and no one whose life is lengthened has his life lengthened, nor is aught diminished of one’s life, but it is all in a book; surely this is easy to Allah.
KHALIFA: GOD created you from dust, then from a tiny drop, then He causes you to reproduce through your spouses. No female becomes pregnant, nor gives birth, without His knowledge. No one survives for a long life, and no one’s life is snapped short, except in accordance with a pre-existing record. This is easy for GOD.
১১। আল্লাহ্ তোমাদের ধূলি থেকে সৃষ্টি করেছেন ৩৮৮৪। অতঃপর শুক্রবিন্দু থেকে ,তারপর তিনি তোমাদের [ নারী-পুরুষের ] যুগল করেছেন ৩৮৮৫। তার অজ্ঞাতে কোন নারী গর্ভ ধারণ করে না অথবা প্রসবও করে না। সংরক্ষিত ফলকে [ লিপিবদ্ধ ] ব্যতীত কোন বৃদ্ধ ব্যক্তির আয়ু বৃদ্ধি করা হয় না , অথবা আয়ু হ্রাস করা হয় না ৩৮৮৬। এ সকলই আল্লাহ্র জন্য অতি সহজ ৩৮৮৭।
৩৮৮৪। দেখুন মানুষের সৃষ্টি সম্বন্ধে আয়াত [ ১৮ : ৩৭ ] ও টিকা ২৩৭৯; আয়াত [ ২২ : ৫ ] ও টিকা ২৭৭৩; এবং আয়াত [ ৩০ : ২০ ] ও টিকা ৩৫২৪। এখানে বলা হয়েছে মানুষের নশ্বর দেহ তৈরী হয়েছে অত্যন্ত মূল্যহীন এবং নগন্য বস্তু থেকে , তা শুধুমাত্র মাটি ; মৃত্যুর পরে যা মাটিতে মিশে যাবে। জন্ম প্রক্রিয়াতে পুরুষ যে শুক্র নির্গত করে তা অত্যন্ত গোপনীয় এবং লজ্জাজনক। মহিলাদের বেলাতেও সেই একই কথা প্রযোজ্য। যৌন রহস্যের সাথে প্রাণীর জন্মসুত্র গ্রথিত , তা এই সত্যকেই প্রমাণ করে যে, পৃথিবীতে পুরুষ বা নারী একক ভাবে কোন মহৎ কিছু সৃষ্টিতে অক্ষম। উভয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টার উপরেই মানুষের দ্বারা মহৎ কিছু সৃষ্টি সম্ভব , স্ত্রী ও পুরুষ কেহই একক ভাবে স্বয়ঃসম্পূর্ণ নয়। মানুষের সম্মান ,ক্ষমতা, জ্ঞান ,বুদ্ধি কোন কিছুই তার নিজস্ব নয়। সবই পরম করুণাময় আল্লাহ্র দান।
৩৮৮৫। “তারপর তোমাদের যুগল করেছেন।” এই “তারপর ” শব্দটি দ্বারা সময়কে বোঝানো হয় নাই,বরং যুক্তির ধারাবাহিকতাকে প্রকাশ করা হয়েছে। এই ” তারপর” শব্দটি দ্বারা “অধিকন্তু ” ‘আরও ‘ এবং ও ‘সংযোজন ‘ বোঝানো হয়েছে।
৩৮৮৬। যা কিছু অপ্রকাশিত , গুপ্ত,রহস্যজনক যার রহস্য মানুষ উদ্ধার করতে পারে না, তা সবই আল্লাহ্র কাছে প্রকাশ্য। ভূত, ভবিষ্যত ,বর্তমান সবই তিনি জানেন , সবই তাঁর প্রতিষ্ঠিত আইনের আওতাভুক্ত ,বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের সকল কিছুই তাঁর আইন অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলে এবং তিনি সর্বজ্ঞ। পৃথিবীতে অনেক কিছু আছে যার ব্যাখ্যা মানুষের জ্ঞান বুদ্ধির বাইরে।
মায়ের পেটে আমাদের জন্মলাভ আকস্মিক ঘটনা বই কিছু নয়। কেউ জন্মায় রাজার ঘরে কেউ জন্মায় দরিদ্রের হতভাগ্য সন্তান রূপে। এই জন্মের উপরে কারও হাত নাই। কিন্তু আল্লাহ্র অজ্ঞাতসারে কোনও নারী গর্ভ ধারণ করে না এবং প্রসবও করে না। জীবনের সৃষ্টি রহস্য আল্লাহ্র হাতে [ দেখুন আয়াত ৩১ : ৩৪ ও টিকা ৩৬২৫ ]। যৌন রহস্য মানুষের অজ্ঞাত। মানুষের সন্তান পৃথিবীতে সর্বাপেক্ষা অসহায় শিশু হিসেবে জন্মগ্রহণ করে এবং পূর্ণাঙ্গ যৌবন প্রাপ্ত হয়ে সংসারের উপযুক্ত হতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়। নারী পুরুষের যৌন আকাঙ্খা থেকে সংসারের সৃষ্টি। আর সংসার হচ্ছে মানব সন্তানের জন্য সর্বাপেক্ষা নিরাপদ আশ্রয়। যৌন রহস্যের প্রকৃত জ্ঞান আল্লাহ্র কাছে। জীবন মৃত্যুর জ্ঞান এবং এরূপ বহু কিছু আছে যার প্রকৃত কারণ মানুষের বোধগম্যতার বাইরে। কিন্তু এগুলির জ্ঞান আল্লাহ্র নিকট রক্ষিত। তিনি-ই এর প্রতিষ্ঠাতা ও বিন্যস্তকারী।
৩৮৮৭। আল্লাহ্র জ্ঞান বিশ্বপ্রকৃতির মাঝে ছড়িয়ে আছে। মানুষ এই জ্ঞান আহরণ করে অত্যন্ত পরিশ্রম,ধৈর্য্য ও অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে। কিন্তু আল্লাহ্র জ্ঞান সম্পূর্ণ আলাদা। এজন্য তাঁর কোন কষ্ট বা পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় না। ” আল্লাহ্র জন্য তা অত্যন্ত সহজ।”
আয়াতঃ 035.012
দু’টি সমুদ্র সমান হয় না-একটি মিঠা ও তৃষ্ণানিবারক এবং অপরটি লোনা। ঊভয়টি থেকেই তোমরা তাজা গোশত (মৎস) আহার কর এবং পরিধানে ব্যবহার্য গয়নাগাটি আহরণ কর। তুমি তাতে তার বুক চিরে জাহাজ চলতে দেখ, যাতে তোমরা তার অনুগ্রহ অন্বেষণ কর এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
And the two seas (kinds of water) are not alike, this fresh sweet, and pleasant to drink, and that saltish and bitter. And from them both you eat fresh tender meat (fish), and derive the ornaments that you wear. And you see the ships cleaving (the seawater as they sail through it), that you may seek of His Bounty, and that you may give thanks.
وَمَا يَسْتَوِي الْبَحْرَانِ هَذَا عَذْبٌ فُرَاتٌ سَائِغٌ شَرَابُهُ وَهَذَا مِلْحٌ أُجَاجٌ وَمِن كُلٍّ تَأْكُلُونَ لَحْمًا طَرِيًّا وَتَسْتَخْرِجُونَ حِلْيَةً تَلْبَسُونَهَا وَتَرَى الْفُلْكَ فِيهِ مَوَاخِرَ لِتَبْتَغُوا مِن فَضْلِهِ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
Wama yastawee albahrani hatha AAathbun furatun sa-ighun sharabuhu wahatha milhun ojajun wamin kullin ta/kuloona lahman tariyyan watastakhrijoona hilyatan talbasoonaha watara alfulka feehi mawakhira litabtaghoo min fadlihi walaAAallakum tashkuroona
YUSUFALI: Nor are the two bodies of flowing water alike,- the one palatable, sweet, and pleasant to drink, and the other, salt and bitter. Yet from each (kind of water) do ye eat flesh fresh and tender, and ye extract ornaments to wear; and thou seest the ships therein that plough the waves, that ye may seek (thus) of the Bounty of Allah that ye may be grateful.
PICKTHAL: And the two seas are not alike: this, fresh, sweet, good to drink, this (other) bitter, salt. And from them both ye eat fresh meat and derive the ornament that ye wear. And thou seest the ship cleaving them with its prow that ye may seek of His bounty, and that haply ye may give thanks.
SHAKIR: And the two seas are not alike: the one sweet, that subdues thirst by its excessive sweetness, pleasant to drink; and the other salt, that burns by its saltness; yet from each of them you eat fresh flesh and bring forth ornaments which you wear; and you see the ships cleave through it that you may seek of His bounty and that you may be grateful.
KHALIFA: The two seas are not the same; one is fresh and delicious, while the other is salty and undrinkable. From each of them you eat tender meat, and extract jewelry to wear. And you see the ships sailing through them, seeking His provisions, that you may be appreciative.
১২। প্রবাহমান দুইটি সাগর এক নয় ৩৮৮৮। একটি হচ্ছে পানের জন্য সুস্বাদু , মিষ্টি ও তৃপ্তিদায়ক , এবং অপরটি হচ্ছে লবণাক্ত ও তিক্ত। তথাপি প্রত্যেকটি থেকে তোমরা তাজা ও নরম মাংস আহার কর ৩৮৮৯ এবং পরিধানের জন্য অলংকার আহরণ কর। এবং তোমরা দেখ ঢেউয়ের বুক চিরে নৌযান চলাচল করে, যেনো এরূপে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করতে পার, এবং তোমরা কৃতজ্ঞ হতে পার ৩৮৯০।
৩৮৮৮। অনুরূপ আয়াত দেখুন আয়াত [ ২৫ : ৫৩ ] ও টিকা ৩১১১ এবং টিকা ৩১১২। দরিয়া অর্থ ভান্ডার। একটি লবণাক্ত দরিয়া অর্থাৎ সমুদ্র যার পানি লবণাক্ত, অন্যটি মিঠা পানির দরিয়া যার উৎস নদী ,হ্রদ, পুকুর,ঝরনা,কূপ , মাটির নীচের পানির স্তর ,প্রস্রবণ ইত্যাদি। এই লবণাক্ত ও মিঠা পানি উভয়েই পরস্পর সম্পর্ক যুক্ত কিন্তু কেহই মিলে মিশে একাকার হয়ে একরূপ হয়ে যায় না। সমুদ্রের পানি রৌদ্রের তাপে বাষ্প হয়ে উদ্ধ আকাশে উঠে মেঘের সৃষ্টি করে। মেঘ সেই পানি বৃষ্টি রূপে ভূভাগে বর্ষণ করে থাকে যা দ্বারা পুকুর , হ্রদ, মাটির নীচের পানির স্তর , প্রস্রবন ইত্যাদি ভর্তি হয়ে যায়। নদী এই পানি বহন কর পুণরায় সমুদ্রে ফিরিয়ে নিয়ে আসে।
৩৮৮৯। এই সম্পূর্ণ আয়াতটির জন্য দেখুন [ ১৬ : ১৪ ] আয়াত এবং টিকা ২০৩৪ ও ৩০৩৫। লোনা পানির উৎস ও মিঠা পানির উৎস উভয় স্থানই মাছের প্রাপ্তি স্থান। মাছের সুস্বাদু তাজা ও নরম মাংস কার না প্রিয় ? বিভিন্ন ধরণের মাছের বিভিন্ন স্বাদ ও গন্ধ।
৩৮৯০। মুক্তা ও কোরাল যা সমুদ্র থেকে আহরণ করা হয় এবং অলংকার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আবার কিছু কিছু পাথর যেমন আকিক , এ্যাজেট,গোল্ডস্টোন, ইত্যাদি পাথর গুলি নদী গর্ভের নূরীর মাঝে পাওয়া যায়, যেগুলিকে মূল্যবান রত্নরূপ পরিগণিত করা হয় এবং অলংকারে ব্যবহার করা হয়। বুন্দেলখন্ডের বান্দা প্রদেশের কেন নদীগর্ভে এরূপ মূল্যবান রত্নপাথর পাওয়া যায়। কোন কোন নদীগর্ভের বালিতে সামান্য পরিমাণে সোনা বিদ্যমান থাকে।
বড় বড় নদী , উত্তর আমেরিকার বৃহৎ হ্রদসমূহ , সমুদ্র এগুলি সবই ব্যবহার করা হয়ে থাকে এক স্থান থেকে অন্য স্থান বা এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার জলপথ হিসেবে।
আয়াতঃ 035.013
তিনি রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন। তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে কাজে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকটি আবর্তন করে এক নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত। ইনি আল্লাহ; তোমাদের পালনকর্তা, সাম্রাজ্য তাঁরই। তাঁর পরিবর্তে তোমরা যাদেরকে ডাক, তারা তুচ্ছ খেজুর আঁটিরও অধিকারী নয়।
He merges the night into the day (i.e. the decrease in the hours of the night are added to the hours of the day), and He merges the day into the night (i.e. the decrease in the hours of the day are added to the hours of the night). And He has subjected the sun and the moon, each runs its course for a term appointed. Such is Allâh your Lord; His is the kingdom. And those, whom you invoke or call upon instead of Him, own not even a Qitmîr (the thin membrane over the datestone).
يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِي لِأَجَلٍ مُّسَمًّى ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ لَهُ الْمُلْكُ وَالَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِهِ مَا يَمْلِكُونَ مِن قِطْمِيرٍ
Yooliju allayla fee alnnahari wayooliju alnnahara fee allayli wasakhkhara alshshamsa waalqamara kullun yajree li-ajalin musamman thalikumu Allahu rabbukum lahu almulku waallatheena tadAAoona min doonihi ma yamlikoona min qitmeerin
YUSUFALI: He merges Night into Day, and he merges Day into Night, and he has subjected the sun and the moon (to his Law): each one runs its course for a term appointed. Such is Allah your Lord: to Him belongs all Dominion. And those whom ye invoke besides Him have not the least power.
PICKTHAL: He maketh the night to pass into the day and He maketh the day to pass into the night. He hath subdued the sun and moon to service. Each runneth unto an appointed term. Such is Allah, your Lord; His is the Sovereignty; and those unto whom ye pray instead of Him own not so much as the white spot on a date-stone.
SHAKIR: He causes the night to enter in upon the day, and He causes the day to enter in upon the night, and He has made subservient (to you) the sun and the moon; each one follows its course to an appointed time; this is Allah, your Lord, His is the kingdom; and those whom you call upon besides Him do not control a straw.
KHALIFA: He merges the night into the day, and merges the day into the night. He has committed the sun and the moon to run for a predetermined period of time. Such is GOD your Lord; to Him belongs all kingship. Any idols you set up beside Him do not possess as much as a seed’s shell.
১৩। তিনি রাত্রিকে দিনের মাঝে বিলিন করেন ৩৮৯১, এবং দিনকে রাত্রির মাঝে বিলিন করেন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে তাঁর [ নিয়মের ] অধীন করেছেন ৩৮৯২। এরা প্রত্যেকেই পুর্ব নির্ধারিত সময়ে তাদের কক্ষপথ অতিক্রম করছে। তিনিই আল্লাহ্ তোমাদের প্রভু ৩৮৯৩। সকল শাসিত এলাকা তারই অধীনে। তার পরিবর্তে তোমরা যাদের আহ্বান কর তাদের তো সামান্যতম ক্ষমতাও নাই ৩৮৯৪।
৩৮৯১। দেখুন [ ২২ : ৬১ ] আয়াত। দিনের আলো ও রাত্রির অন্ধকার প্রকৃতিতে পর্যায়ক্রমে আসে। দিনের আলো কাজের জন্য , রাতের অন্ধকার বিশ্রামের জন্য নির্ধারিত। দিন ও রাত্রির এই পর্যায়ক্রমে আবর্তন মানুষের পার্থিব জীবন , নৈতিক জীবন ও আধ্যাত্মিক জীবনের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে থাকে।
৩৮৯২। দেখুন আয়াত [ ১৩ : ২ ]। সূর্য ও চন্দ্র পৃথিবীকে আলো বিতরণ করে থাকে। সূর্য পৃথিবীকে দিনে আলো দেয়, চন্দ্র রাতে। সূর্যের আলোর স্থায়িত্বের তারতম্য অনুযায়ী পৃথিবীতে ঋতুর পরিবর্তন ঘটে এবং সূর্যের আলো হচ্ছে পৃথিবীর প্রাণশক্তি। পৃথিবীর তাপ ও শক্তি সূর্য থেকে প্রাপ্ত হয়। পৃথিবীর সমস্ত প্রাণ সূর্যের আলোর উপরে নির্ভরশীল। সূর্য এবং চন্দ্র আল্লাহ্র নির্ধারিত নির্দ্দিষ্ট আইন অনুযায়ী অনাদি অনন্তকাল থেকে আবর্তিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও তারা সেভাবেই আবর্তিত হতে থাকবে। এই আয়াতে বলা হয়েছে যে এই আবর্তন অন্তহীন নয়। আল্লাহ্ তাদের জন্য এক নির্দ্দিষ্ট সময় নির্ধারিত করে দিয়েছেন তার পরে তাদের ধবংস হবে।
৩৮৯৩। উপরের আয়াতগুলি আল্লাহ্র শক্তি ,ক্ষমতা, মহত্ব ও মহিমা , আল্লাহ্র জ্ঞান ও প্রজ্ঞার সামান্য উদাহরণ মাত্র। কেউ যদি আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোনও শক্তির উপরে নির্ভর করে তবে সে শূন্যের উপরে নির্ভর করে। আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কিছুর এবাদত করা নিতান্ত বোকমী ও মূর্খের কাজ। আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কিছুর উপাসনা মানুষকে ভ্রান্ত পথে চালনা করে এবং তাঁকে প্রকৃত সত্য পথ থেকে বহু দূরে নিক্ষেপ করে।
৩৮৯৪। ‘Qitmir’ – খেজুরের আটির উপরে যে পাতলা আবরণ থাকে অর্থাৎ তুচ্ছাতিতুচ্ছ বস্তু। এই আবরণের না আছে মজবুত গাঁথুনী না আছে কোন খাদ্যমান। খেজুরের আঁটির আবরণের উপমা দ্বারা এই উপদেশই প্রদান করা হয়েছে যে, আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য শক্তির উপরে নির্ভর করার অর্থ হচ্ছে আঁটির আবরণের মত মূল্যহীন। অনির্ভরশীল বস্তু অপেক্ষাও খেজুরের আঁটির উপরে পাতলা আবরণ বা ‘কিতমির’ অধিক খারাপ বস্তু। দেখুন আয়াত [ ৪ : ৫৩ ] এবং আয়াত [ ৪ : ১২৪ ] ; যেখানে ‘Naqir’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। ‘নাকির’ অর্থ খেজুরের আঁটির খাঁজ। সেখানেও তুচ্ছাতিতুচ্ছ বস্তুকে বোঝানোর জন্য এই উপমাকে ব্যবহার করা হয়েছে।
মন্তব্য : মনে রাখতে হবে আরবে খেজুর জন্মে, এবং কোরাণ অবতীর্ণ হয় আরবে। সুতারাং ইসলামের প্রথম যুগে অজ্ঞ আরববাসীদের বোধগম্যতার মাত্রা অনুযায়ী উপমাগুলিকে ব্যবহার করা হয়েছে।
আয়াতঃ 035.014
তোমরা তাদেরকে ডাকলে তারা তোমাদের সে ডাক শুনে না। শুনলেও তোমাদের ডাকে সাড়া দেয় না। কেয়ামতের দিন তারা তোমাদের শেরক অস্বীকার করবে। বস্তুতঃ আল্লাহর ন্যায় তোমাকে কেউ অবহিত করতে পারবে না।
If you invoke (or call upon) them, they hear not your call, and if (in case) they were to hear, they could not grant it (your request) to you. And on the Day of Resurrection, they will disown your worshipping them. And none can inform you (O Muhammad SAW) like Him Who is the AllKnower (of each and everything).
إِن تَدْعُوهُمْ لَا يَسْمَعُوا دُعَاءكُمْ وَلَوْ سَمِعُوا مَا اسْتَجَابُوا لَكُمْ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يَكْفُرُونَ بِشِرْكِكُمْ وَلَا يُنَبِّئُكَ مِثْلُ خَبِيرٍ
In tadAAoohum la yasmaAAoo duAAaakum walaw samiAAoo ma istajaboo lakum wayawma alqiyamati yakfuroona bishirkikum wala yunabbi-oka mithlu khabeerin
YUSUFALI: If ye invoke them, they will not listen to your call, and if they were to listen, they cannot answer your (prayer). On the Day of Judgment they will reject your “Partnership”. and none, (O man!) can tell thee (the Truth) like the One Who is acquainted with all things.
PICKTHAL: If ye pray unto them they hear not your prayer, and if they heard they could not grant it you. On the Day of Resurrection they will disown association with you. None can inform you like Him Who is Aware.
SHAKIR: If you call on them they shall not hear your call, and even if they could hear they shall not answer you; and on the resurrection day they will deny your associating them (with Allah); and none can inform you like the One Who is Aware.
KHALIFA: If you call on them, they cannot hear you. Even if they hear you, they cannot respond to you. On the Day of Resurrection, they will disown you. None can inform you like the Most Cognizant.
১৪। যদি তোমরা তাদের আহ্বান কর তারা তোমার ডাক শুনবে না ৩৮৯৫, এবং তারা শুনলেও তোমাদের [প্রার্থনার ] উত্তর দিতে পারবে না। শেষ বিচারের দিনে তারা তোমাদের [আরোপিত ] অংশদারিত্বকে প্রত্যাখান করবে ৩৮৯৬। [হে মানুষ ] কেহই তোমাকে তাঁর মত [ সত্য ] অবহিত করতে পারে না , যিনি সর্বজ্ঞ ৩৮৯৭।
৩৮৯৫। মিথ্যা উপাস্যের উপাসনা মূল্যহীন , উদ্দেশ্যবিহীন।মিথ্যা উপাস্যেরা কিছু শুনতে অক্ষম , প্রার্থনা মঞ্জুর করার ক্ষমতা রাখে না। প্রকৃতপক্ষে তারাও সকলে আল্লাহ্র সৃষ্ট জীব যেমন : ফেরেশতারা , দেবতুল্য ব্যক্তিত্ব ইত্যাদি। কেয়ামতের দিনে এ সব মিথ্যা উপাস্যরা এ সব উপাসনাকে প্রত্যাখান করবে। তারা আল্লাহ্র সাথে প্রতিযোগীতার অংশীদারিত্বকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করবে।
৩৮৯৬। দেখুন আয়াত [ ১০ : ২৮ ] ও টিকা ১৪১৮ এবং আয়াত [ ৩৪ : ৪০ – ৪১ ]। যে ধ্যান ধারণা ও বিশ্বাস সত্যের উপরে প্রতিষ্ঠিত নয় – সে সব মিথ্যা কেয়ামতের দিনে পরিত্যক্ত হবে এবং প্রকৃত সত্যকে সেদিন প্রতিষ্ঠিত করা হবে। তবে সময় থাকতে পৃথিবীর জীবনে প্রকৃত সত্যকে গ্রহণের মাধ্যমে আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও করুণা লাভ থেকে তারা নিজেদের বঞ্চিত করে কেন ?
৩৮৯৭। ” যিনি সর্বজ্ঞ ” – অর্থাৎ আল্লাহ্র ন্যায়। একমাত্র আল্লাহ্-ই সর্বজ্ঞ। আল্লাহ্ ব্যতীত কেহই প্রকৃত সত্যের জ্ঞান আমাদের দিতে পারে না। কারণ আল্লাহ্ জ্ঞানে ,প্রজ্ঞায় তুলনাবিহীন এবং সর্বজ্ঞ। তবে কেন আমরা তাঁর প্রেরিত প্রত্যাদেশকে গ্রহণ করি না। তাঁর নির্দ্দেশিত পথকে অনুসরণ করি না ?
আয়াতঃ 035.015
হে মানুষ, তোমরা আল্লাহর গলগ্রহ। আর আল্লাহ; তিনি অভাবমুক্ত, প্রশংসিত।
O mankind! it is you who stand in need of Allâh, but Allâh is Rich (Free of all wants and needs), Worthy of all praise.
يَا أَيُّهَا النَّاسُ أَنتُمُ الْفُقَرَاء إِلَى اللَّهِ وَاللَّهُ هُوَ الْغَنِيُّ الْحَمِيدُ
Ya ayyuha alnnasu antumu alfuqarao ila Allahi waAllahu huwa alghaniyyu alhameedu
YUSUFALI: O ye men! It is ye that have need of Allah: but Allah is the One Free of all wants, worthy of all praise.
PICKTHAL: O mankind! Ye are the poor in your relation to Allah. And Allah! He is the Absolute, the Owner of Praise.
SHAKIR: O men! you are they who stand in need of Allah, and Allah is He Who is the Self-sufficient, the Praised One.
KHALIFA: O people, you are the ones who need GOD, while GOD is in no need for anyone, the Most Praiseworthy.
রুকু – ৩
১৫। হে মানব সম্প্রদায় ! তোমাদের আল্লাহ্কে প্রয়োজন ; কিন্তু আল্লাহ্ সকল অভাবমুক্ত , সকল প্রশংসার যোগ্য ৩৮৯৮।
৩৮৯৮। মানুষ আল্লাহ্র মুখাপেক্ষী। তিনি তাদের তত্বাবধান করেন, সৎ পথের নির্দ্দেশ দান করেন , পরলোকের বিপদ সম্পর্কে অবহিত করার জন্য বিশেষ নবী রসুলদের প্রেরণ করে থাকেন। মানুষ জীবনের প্রতিটি মূহুর্তের জন্য আল্লাহ্র উপরে নির্ভরশীল। আর এই কারণেই আল্লাহ্র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য আল্লাহ্র এবাদত করা মানুষের উচিত। এক আল্লাহ্র উপরে নির্ভরশীলতা ও তাঁর কাছে আত্মসমর্পনের মাধ্যমে মানুষ আত্মিক উন্নতির ধাপগুলি অতিক্রমে সমর্থ হয়। সুতারাং মানুষের আরাম আয়েশে, সুখ-সুবিধা ও আধ্যাত্মিক বিকাশের জন্য মানুষের আল্লাহ্র উপরে নির্ভর করা ব্যতীত গত্যন্তর নাই। আল্লাহ্ মানুষের এবাদতের উপরে নির্ভরশীল নন। তিনি অভাবমুক্ত। আল্লাহ্ তাঁর অসীম করুণার ভান্ডার থেকে অকৃপণভাবে তাঁর সৃষ্ট জীবের জন্য রহমত, করুণা , অনুগ্রহ ও ভালোবাসা বর্ষণ করে থাকেন। তিনি অসীম দয়ার আঁধার। যদি তিনি ইচ্ছা করতেন তবে মানুষের অকৃতজ্ঞতার দরুণ তাদের ধ্বংস করে সম্পূর্ণ নূতন পৃথিবী সৃষ্টি করতে পারতেন।
আয়াতঃ 035.016
তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে বিলুপ্ত করে এক নতুন সৃষ্টির উদ্ভব করবেন।
If He will, He could destroy you and bring about a new creation.
إِن يَشَأْ يُذْهِبْكُمْ وَيَأْتِ بِخَلْقٍ جَدِيدٍ
In yasha/ yuthhibkum waya/ti bikhalqin jadeedin
YUSUFALI: If He so pleased, He could blot you out and bring in a New Creation.
PICKTHAL: If He will, He can be rid of you and bring (instead of you) some new creation.
SHAKIR: If He please, He will take you off and bring a new generation.
KHALIFA: If He wills, He can get rid of you and substitute a new creation.
১৬। তিনি ইচ্ছা করলে , তোমাদের [ পৃথিবী থেকে ] অপসারিত করতে পারেন এবং নূতন সৃষ্টি আনায়ন করতে পারেন।
১৭।ইহা আল্লাহ্র পক্ষে [একেবারেই ] কষ্টসাধ্য নয় ৩৮৯৯।
৩৮৯৯। আল্লাহ্র সৃজনী ক্ষমতা অসীম। যা আমরা সাধারণ মানুষ ধারণাও করতে অক্ষম। তাঁর সৃজনী শক্তি তুলনাবিহীন এবং অসাধারণ। আল্লাহ্র এই অসীম ক্ষমতাকেই ‘Aziz’ শব্দটি দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে। আল্লাহ্র সৃষ্টি ক্ষমতা একবার সৃষ্টি করেই থেমে যায় না। অনুভূতিশীল মন থাকলেই অনুভব করা যায় যে, বিশ্ব প্রকৃতিতে সৃষ্টি প্রক্রিয়া থেমে নাই, তা অনবরত ক্রমাগতভাবে অনাদি অনন্তকাল ধরে চলছে। এ কথা পৃথিবীর জন্য যেমন সত্য, সূদূর নীহারিকা ও নভোমন্ডলের জন্যও সমভাবে সত্য।
আয়াতঃ 035.017
এটা আল্লাহর পক্ষে কঠিন নয়।
And that is not hard for Allâh.
وَمَا ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ بِعَزِيزٍ
Wama thalika AAala Allahi biAAazeezin
YUSUFALI: Nor is that (at all) difficult for Allah.
PICKTHAL: That is not a hard thing for Allah.
SHAKIR: And this is not hard to Allah.
KHALIFA: This is not too difficult for GOD.
১৬। তিনি ইচ্ছা করলে , তোমাদের [ পৃথিবী থেকে ] অপসারিত করতে পারেন এবং নূতন সৃষ্টি আনায়ন করতে পারেন।
১৭।ইহা আল্লাহ্র পক্ষে [একেবারেই ] কষ্টসাধ্য নয় ৩৮৯৯।
৩৮৯৯। আল্লাহ্র সৃজনী ক্ষমতা অসীম। যা আমরা সাধারণ মানুষ ধারণাও করতে অক্ষম। তাঁর সৃজনী শক্তি তুলনাবিহীন এবং অসাধারণ। আল্লাহ্র এই অসীম ক্ষমতাকেই ‘Aziz’ শব্দটি দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে। আল্লাহ্র সৃষ্টি ক্ষমতা একবার সৃষ্টি করেই থেমে যায় না। অনুভূতিশীল মন থাকলেই অনুভব করা যায় যে, বিশ্ব প্রকৃতিতে সৃষ্টি প্রক্রিয়া থেমে নাই, তা অনবরত ক্রমাগতভাবে অনাদি অনন্তকাল ধরে চলছে। এ কথা পৃথিবীর জন্য যেমন সত্য, সূদূর নীহারিকা ও নভোমন্ডলের জন্যও সমভাবে সত্য।
আয়াতঃ 035.018
কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্নীয়ও হয়। আপনি কেবল তাদেরকে সতর্ক করেন, যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখেও ভয় করে এবং নামায কায়েম করে। যে কেউ নিজের সংশোধন করে, সে সংশোধন করে, স্বীয় কল্যাণের জন্যেই আল্লাহর নিকটই সকলের প্রত্যাবর্তন।
And no bearer of burdens shall bear another’s burden, and if one heavily laden calls another to (bear) his load, nothing of it will be lifted even though he be near of kin. You (O Muhammad SAW) can warn only those who fear their Lord unseen, and perform As-Salât (IqâmatasSalât). And he who purifies himself (from all kinds of sins), then he purifies only for the benefit of his ownself. And to Allâh is the (final) Return (of all).
وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى وَإِن تَدْعُ مُثْقَلَةٌ إِلَى حِمْلِهَا لَا يُحْمَلْ مِنْهُ شَيْءٌ وَلَوْ كَانَ ذَا قُرْبَى إِنَّمَا تُنذِرُ الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُم بِالغَيْبِ وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَمَن تَزَكَّى فَإِنَّمَا يَتَزَكَّى لِنَفْسِهِ وَإِلَى اللَّهِ الْمَصِيرُ
Wala taziru waziratun wizra okhra wa-in tadAAu muthqalatun ila himliha la yuhmal minhu shay-on walaw kana tha qurba innama tunthiru allatheena yakhshawna rabbahum bialghaybi waaqamoo alssalata waman tazakka fa-innama yatazakka linafsihi wa-ila Allahi almaseeru
YUSUFALI: Nor can a bearer of burdens bear another’s burdens if one heavily laden should call another to (bear) his load. Not the least portion of it can be carried (by the other). Even though he be nearly related. Thou canst but admonish such as fear their Lord unseen and establish regular Prayer. And whoever purifies himself does so for the benefit of his own soul; and the destination (of all) is to Allah.
PICKTHAL: And no burdened soul can bear another’s burden, and if one heavy laden crieth for (help with) his load, naught of it will be lifted even though he (unto whom he crieth) be of kin. Thou warnest only those who fear their Lord in secret, and have established worship. He who groweth (in goodness), groweth only for himself, (he cannot by his merit redeem others). Unto Allah is the journeying.
SHAKIR: And a burdened soul cannot bear the burden of another and if one weighed down by burden should cry for (another to carry) its burden, not aught of it shall be carried, even though he be near of kin. You warn only those who fear their Lord in secret and keep up prayer; and whoever purifies himself, he purifies himself only for (the good of) his own soul; and to Allah is the eventual coming.
KHALIFA: No soul can carry the sins of another soul. If a soul that is loaded with sins implores another to bear part of its load, no other soul can carry any part of it, even if they were related. The only people to heed your warnings are those who reverence their Lord, even when alone in their privacy, and observe the Contact Prayers (Salat). Whoever purifies his soul, does so for his own good. To GOD is the final destiny.
১৮। কোন বোঝা বহনকারী ৩৯০০ অন্যের [ পাপের ] বোঝা বহন করবে না। কোন [ পাপ ] ভারাক্রান্ত ব্যক্তি যদি কাউকে তা বহন করার জন্য আহ্বান করে, তবে উহার সামান্যতম কিছুই বহন করা হবে না [ অন্যের দ্বারা ] যদিও সে তার নিকট আত্মীয় হয় ৩৯০১। তুমি তো শুধু তাদেরকেই সর্তক করতে পার যারা তাদের প্রভুকে না দেখেই ভয় করে ৩৯০২, এবং নিয়মিত নামাজকে প্রতিষ্ঠা করে ৩৯০৩। যে কেউ নিজেকে পরিশুদ্ধ করে , সে তো তা করে নিজের আত্মার কল্যাণের জন্য এবং [ সকলেরই শেষ ] গন্তব্যস্থল হচ্ছে আল্লাহ্।
৩৯০০। বহনকারী – এখানে আত্মাকে [Nafs] বোঝানো হয়েছে। দেখুন আয়াত [৬ : ১৬৪ ]।
৩৯০১। পৃথিবীতে আত্মীয় ,বন্ধু বান্ধব, একে অপরের দুঃখ কষ্ট ও বিপদ-আপদে অংশগ্রহণ করে থাকে। যেমন মাতা বা পিতা সন্তানের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করে থাকে ,এমন কি মৃত্যুও বরণ করতে পারে এবং এর বিপরীতও ঘটতে পারে। কিন্তু আধ্যাত্মিক জগতে এরূপ আইন প্রযোজ্য হবে না। পরলোকের জীবনের শেষ বিচারের দিনে প্রত্যেকের নিজ নিজ কর্মের দায়িত্ব চুলচেরা ভাবে গ্রহণ করতে হবে। সেখানে পিতা-মাতা , আত্মীয় পরিজন বলে কেউ থাকবে না , যার উপরে নিজস্ব কর্মের দায়িত্ব হস্তান্তরিত করা যাবে। পাপ কর্মও নয় পূণ্য কর্মও নয়। এই হবে পরলোকের জীবনের আইন। দেখুন আয়াত [ ২৯ : ১৩ ] তে উল্লেখ করা হয়েছে, ” উহারা নিজেদের বোঝা বহন করিবে এবং নিজদিগের বোঝার সহিত আরও কিছু বোঝা।” এই “আরও কিছু” হচ্ছে অন্যকে পথভ্রষ্ট করার পাপ। নিজের পথভ্রষ্টতার পাপের সাথে অন্যকে পথভ্রষ্ট করার পাপ যুক্ত হবে। এই দুধরণের পাপেই সে অভিযুক্ত। অর্থাৎ তাঁর নিজস্ব পাপ ও অন্যকে পাপের পথে আহ্বান করার পাপ। এখানে তার কর্মের দায়িত্ব দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
৩৯০২। ‘Bil-gaibi’ – অর্থাৎ অদৃশ্য বা না দেখে। বিশ্বাস বা ঈমানের প্রথম শর্তই হচ্ছে না দেখে আল্লাহ্র অস্তিত্বে বিশ্বাস স্থাপন করা। যে নিজের আত্মার মাঝে আল্লাহ্র উপস্থিতি অনুভব করতে পারে, আল্লাহ্ সান্নিধ্যে তাঁর আধ্যাত্মিক জীবন আলোকিত হয়, সেই হচ্ছে প্রকৃত বিশ্বাসী বা ঈমানদার। এ সব লোকের অন্তরে প্রত্যাদেশের জ্ঞান বিভিন্নভাবে প্রবেশ লাভ করে থাকে এবং তা অত্যন্ত মূল্যবান। আল্লাহ্ এদের আত্মাকে আলোকিত করেন ঐশি জ্ঞানের দ্বারা।
৩৯০৩। ‘সালাত’ বা প্রার্থনা হচ্ছে জীবনের মলিনতা থেকে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার একটি উপায়। কারণ সালাতের মাধ্যমে আমরা আমাদের আত্মার মাঝে আল্লাহ্র সান্নিধ্য ও উপস্থিতি কামনা করে থাকি। আল্লাহ্র প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর এবং আত্মিক পরিশুদ্ধির এও এক ভাষা বৈকি। আমরা পাপের মোচন দ্বারা যে আত্মিক পরিশুদ্ধির আকাঙ্খা করে থাকি তা আমাদের কল্যাণের জন্য আমাদের শান্তির জন্য। এতে আল্লাহ্র কোনও লাভ নাই। মনে রাখতে হবে সালাতের দ্বারা আমরা আল্লাহকে কোনও অনুগ্রহ করি না। যেমন অনেকে মানত করে থাকে নির্দ্দিষ্ট সংখ্যক সালাত কায়েম করবে কোনও বিপদ মুক্তির জন্য। আল্লাহ্ অভাব মুক্ত। আমাদের প্রার্থনায় তাঁর কোনও লাভ নাই। তবে বিপদে বিপর্যয়ে সালাতের মাধ্যমে তাঁর কাছে বিপদ মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা প্রয়োজন। কিন্তু বিপদ মুক্তির পরিবর্তে সালাত কাম্য নয়। প্রথমটির জন্য প্রয়োজন হয় সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পনের মানসিকতা। দ্বিতীয়টির জন্য ব্যবসায়িক মানসিকতা অবশ্য উভয় পক্ষেরই শেষ আশ্রয়স্থল সর্বশক্তিমান আল্লাহ্।
আয়াতঃ 035.019
দৃষ্টিমান ও দৃষ্টিহীন সমান নয়।
Not alike are the blind (disbelievers in Islâmic Monotheism) and the seeing (believers in Islâmic Monotheism).
وَمَا يَسْتَوِي الْأَعْمَى وَالْبَصِيرُ
Wama yastawee al-aAAma waalbaseeru
YUSUFALI: The blind and the seeing are not alike;
PICKTHAL: The blind man is not equal with the seer;
SHAKIR: And the blind and the seeing are not alike
KHALIFA: The blind and the seer are not equal.
১৯। অন্ধ ও চক্ষুষ্মান সমান নয় ; ৩৯০৪
৩৯০৪। এই ছোট্ট আয়াতটিতে রূপকের মাধ্যমে তুলনা করা হয়েছে মোমেন ব্যক্তি ও খোদাদ্রোহীদের মধ্যে। যারা আল্লাহ্র আইনসমূহ মেনে চলে , তারা আল্লাহ্র রাজত্বের সুনাগরিক আর যারা মানে না তারা হচ্ছে অপরাধী। সুতারাং সুনাগরিক ও অপরাধী কখনও এক সমান হতে পারে না। এখানে পূণ্যাত্মা ব্যক্তিদের চক্ষুষ্মান ও খোদাদ্রোহীদের অন্ধ হিসেবে তুলনা করা হয়েছে। কারণ মোমেন ব্যক্তিরা আল্লাহ্র প্রদর্শিত পথে জীবনকে পরিচালনা করেন, সুতারাং তাদের আত্মা আল্লাহ্র নূরে উদ্ভাসিত হয়। ফলে তারা ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে ; সত্য -মিথ্যার মধ্যে ; ভালো-মন্দের মধ্যে পার্থক্য করতে সক্ষম। তাদের মধ্যে জন্ম নেয় বিবেক ও অন্তর্দৃষ্টি [ Spiritual insight ]। ফলে তাদের কাজ ও কাজের নিয়ত হয় স্বচ্ছ পরিষ্কার, আলোর ন্যায় উজ্জ্বল যা আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে নিবেদিত। এদেরকে বলা হয়েছে চক্ষুষ্মান। অপর পক্ষে যারা খোদাদ্রোহী , অপরাধের ফলে , তারা তাদের আত্মার স্বচ্ছতা হারায়। তাদের মনোজগত ধীরে ধীরে অন্ধকারে ঢেকে যায়। সেখানে ন্যায় -অন্যায়,সত্য-মিথ্যা, ভালো -মন্দের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা বিনষ্ট হয়ে যায়। এদের কাজ ও কাজের নিয়ত হয় অন্যায় আচরণে পরিপূর্ণ – যা শুধুমাত্র ব্যক্তি স্বার্থ, লোভ, হিংসা , দ্বেষে পরিপূর্ণ থাকে। এদেরকে বলা হয়েছে অন্ধ। প্রথমদল যারা চক্ষুষ্মান এ চক্ষু শারীরিক নয়, এ চক্ষু আত্মিক। দ্বিতীয় দল যারা অন্ধ তাদের অন্ধত্ব শারীরিক না এ অন্ধত্ব আত্মিক। আত্মিক চক্ষু আত্মিক অন্ধত্ব বোঝানোর জন্য পরবর্তী আয়াতগুলিতে আরও দুটি উপমার ব্যবহার করা হয়েছে। আত্মিক চক্ষু হচ্ছে আলোর ন্যায় এবং আত্মিক অন্ধত্ব হচ্ছে অতল অন্ধকারের ন্যায়। আর একটি উপমা হচ্ছে রৌদ্র ও ছায়া। চক্ষুষ্মান ব্যক্তি হচ্ছে রৌদ্র কিরণের মত। সূর্যের কিরণ পৃথিবীকে উষ্ণতা দান করে এবং বৃক্ষ ,তরুলতা জন্মাতে সাহায্য করে। সারা পৃথিবী সূর্য কিরণের শক্তির সাহায্যে উপকৃত হয়। ঠিক সেভাবেই চক্ষুষ্মান ব্যক্তির সঙ্গ হবে আনন্দদায়ক , যারাই তাঁর সংস্পর্শে আসবে তারাই উপকৃত হবে। অপরপক্ষে অন্ধত্বকে তুলনা করা হয়েছে ছায়ার সাথে। ছায়া যেরূপ সূর্যকিরণকে প্রতিহত করে ; ফলে সেই স্থান উষ্ণতা হারায় ও ঠান্ডা হয়ে যায় ; এমনকি সেই স্থানে তরুলতা , বৃক্ষ কিছুই জন্মায় না।
আয়াতঃ 035.020
সমান নয় অন্ধকার ও আলো।
Nor are (alike) the darkness (disbelief) and the light (Belief in Islâmic Monotheism).
وَلَا الظُّلُمَاتُ وَلَا النُّورُ
Wala alththulumatu wala alnnooru
YUSUFALI: Nor are the depths of Darkness and the Light;
PICKTHAL: Nor is darkness (tantamount to) light;
SHAKIR: Nor the darkness and the light,
KHALIFA: Nor are the darkness and the light.
২০। আর নয় অতল অন্ধকার ও আলো ;
২১। [ কাপুনি ধরা ঠান্ডা ] ছায়া এবং সূর্যের [ আরামদায়ক ] উষ্ণতা ;
২২। এবং জীবিত ও মৃতও সমান নয়। আল্লাহ্ যাকে খুশী শোনাতে পারেন। কিন্তু যারা কবরে [ সমাহিত ] রয়েছে ,তুমি তাদের শোনাতে পারবে না ৩৯০৫।
৩৯০৫। পূণ্যাত্মা ও পাপীর মধ্যে আর একটি শেষ তুলনা করা হয়েছে এই আয়াতের মাধ্যমে। পূণ্যাত্মাদের জীবিত এবং পাপীদের মৃতরূপে তুলনা করা হয়েছে। পূণ্যাত্মাদের আত্মিক জীবন আল্লাহ্র নূরে উদ্ভাসিত। তার সত্যকে সনাক্ত করতে ও ধারণ করতে সর্বদা সক্ষম। সুতারাং প্রতিনিয়ত তাদের আত্মিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটে থাকে এবং তাদের জীবন পরিপূর্ণতা লাভ করে থাকে। কিন্তু যারা খোদাদ্রোহী পাপী, তারা মৃত ব্যক্তির তুল্য। মৃত ব্যক্তি যেমন ডাকলে উত্তর দেয় না তেমনি কাফেররাও সত্যের আহ্বান শুনতে পায় না ও জবাব দেয় না। কারণ এদের আত্মা আধ্যাত্মিক ভাবে মৃত [ Spiritually dead ]। একমাত্র অসীম ক্ষমতাধর আল্লাহ্ এসব মৃত আত্মাকে জীবন দান করার ক্ষমতা রাখেন। আল্লাহ্র পক্ষে সবই সম্ভব। রসুল, যাকে বিশ্বমানবের শিক্ষকরূপে প্রেরণ করা হয়েছে তিনি আশা করতে পারেন না যে, এ সব মৃত আত্মা [ Spiritually dead ] তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে সত্যকে গ্রহণ করবে
আয়াতঃ 035.021
সমান নয় ছায়া ও তপ্তরোদ।
Nor are (alike) the shade and the sun’s heat.
وَلَا الظِّلُّ وَلَا الْحَرُورُ
Wala alththillu wala alharooru
YUSUFALI: Nor are the (chilly) shade and the (genial) heat of the sun:
PICKTHAL: Nor is the shadow equal with the sun’s full heat;
SHAKIR: Nor the shade and the heat,
KHALIFA: Nor are the coolness of the shade and the heat of the sun.
২০। আর নয় অতল অন্ধকার ও আলো ;
২১। [ কাপুনি ধরা ঠান্ডা ] ছায়া এবং সূর্যের [ আরামদায়ক ] উষ্ণতা ;
২২। এবং জীবিত ও মৃতও সমান নয়। আল্লাহ্ যাকে খুশী শোনাতে পারেন। কিন্তু যারা কবরে [ সমাহিত ] রয়েছে ,তুমি তাদের শোনাতে পারবে না ৩৯০৫।
৩৯০৫। পূণ্যাত্মা ও পাপীর মধ্যে আর একটি শেষ তুলনা করা হয়েছে এই আয়াতের মাধ্যমে। পূণ্যাত্মাদের জীবিত এবং পাপীদের মৃতরূপে তুলনা করা হয়েছে। পূণ্যাত্মাদের আত্মিক জীবন আল্লাহ্র নূরে উদ্ভাসিত। তার সত্যকে সনাক্ত করতে ও ধারণ করতে সর্বদা সক্ষম। সুতারাং প্রতিনিয়ত তাদের আত্মিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটে থাকে এবং তাদের জীবন পরিপূর্ণতা লাভ করে থাকে। কিন্তু যারা খোদাদ্রোহী পাপী, তারা মৃত ব্যক্তির তুল্য। মৃত ব্যক্তি যেমন ডাকলে উত্তর দেয় না তেমনি কাফেররাও সত্যের আহ্বান শুনতে পায় না ও জবাব দেয় না। কারণ এদের আত্মা আধ্যাত্মিক ভাবে মৃত [ Spiritually dead ]। একমাত্র অসীম ক্ষমতাধর আল্লাহ্ এসব মৃত আত্মাকে জীবন দান করার ক্ষমতা রাখেন। আল্লাহ্র পক্ষে সবই সম্ভব। রসুল, যাকে বিশ্বমানবের শিক্ষকরূপে প্রেরণ করা হয়েছে তিনি আশা করতে পারেন না যে, এ সব মৃত আত্মা [ Spiritually dead ] তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে সত্যকে গ্রহণ করবে।
আয়াতঃ 035.022
আরও সমান নয় জীবিত ও মৃত। আল্লাহ শ্রবণ করান যাকে ইচ্ছা। আপনি কবরে শায়িতদেরকে শুনাতে সক্ষম নন।
Nor are (alike) the living (believers) and the dead (disbelievers). Verily, Allâh makes whom He will hear, but you cannot make hear those who are in graves.
وَمَا يَسْتَوِي الْأَحْيَاء وَلَا الْأَمْوَاتُ إِنَّ اللَّهَ يُسْمِعُ مَن يَشَاء وَمَا أَنتَ بِمُسْمِعٍ مَّن فِي الْقُبُورِ
Wama yastawee al-ahyao wala al-amwatu inna Allaha yusmiAAu man yashao wama anta bimusmiAAin man fee alquboori
YUSUFALI: Nor are alike those that are living and those that are dead. Allah can make any that He wills to hear; but thou canst not make those to hear who are (buried) in graves.
PICKTHAL: Nor are the living equal with the dead. Lo! Allah maketh whom He will to hear. Thou canst not reach those who are in the graves.
SHAKIR: Neither are the living and the dead alike. Surely Allah makes whom He pleases hear, and you cannot make those hear who are m the graves.
KHALIFA: Nor are the living and the dead; GOD causes whomever He wills to hear. You cannot make hearers out of those in the graves.
২০। আর নয় অতল অন্ধকার ও আলো ;
২১। [ কাপুনি ধরা ঠান্ডা ] ছায়া এবং সূর্যের [ আরামদায়ক ] উষ্ণতা ;
২২। এবং জীবিত ও মৃতও সমান নয়। আল্লাহ্ যাকে খুশী শোনাতে পারেন। কিন্তু যারা কবরে [ সমাহিত ] রয়েছে ,তুমি তাদের শোনাতে পারবে না ৩৯০৫।
৩৯০৫। পূণ্যাত্মা ও পাপীর মধ্যে আর একটি শেষ তুলনা করা হয়েছে এই আয়াতের মাধ্যমে। পূণ্যাত্মাদের জীবিত এবং পাপীদের মৃতরূপে তুলনা করা হয়েছে। পূণ্যাত্মাদের আত্মিক জীবন আল্লাহ্র নূরে উদ্ভাসিত। তার সত্যকে সনাক্ত করতে ও ধারণ করতে সর্বদা সক্ষম। সুতারাং প্রতিনিয়ত তাদের আত্মিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটে থাকে এবং তাদের জীবন পরিপূর্ণতা লাভ করে থাকে। কিন্তু যারা খোদাদ্রোহী পাপী, তারা মৃত ব্যক্তির তুল্য। মৃত ব্যক্তি যেমন ডাকলে উত্তর দেয় না তেমনি কাফেররাও সত্যের আহ্বান শুনতে পায় না ও জবাব দেয় না। কারণ এদের আত্মা আধ্যাত্মিক ভাবে মৃত [ Spiritually dead ]। একমাত্র অসীম ক্ষমতাধর আল্লাহ্ এসব মৃত আত্মাকে জীবন দান করার ক্ষমতা রাখেন। আল্লাহ্র পক্ষে সবই সম্ভব। রসুল, যাকে বিশ্বমানবের শিক্ষকরূপে প্রেরণ করা হয়েছে তিনি আশা করতে পারেন না যে, এ সব মৃত আত্মা [ Spiritually dead ] তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে সত্যকে গ্রহণ করবে।
আয়াতঃ 035.023
আপনি তো কেবল একজন সতর্ককারী।
You (O Muhammad SAW) are only a warner (i.e. your duty is to convey Allâh’s Message to mankind but the guidance is in Allâh’s Hand).
إِنْ أَنتَ إِلَّا نَذِيرٌ
In anta illa natheerun
YUSUFALI: Thou art no other than a warner.
PICKTHAL: Thou art but a warner.
SHAKIR: You are naught but a warner.
KHALIFA: You are no more than a warner.
২৩। তুমি তো একজন সর্তককারী মাত্র ৩৯০৬।
৩৯০৬। আল্লাহ্ এই আয়াতে রাসুলের [ সা ] কর্তব্যের সীমারেখা উল্লেখ করেছেন। রাসুলকে [ সা ] প্রেরণ করা হয়েছে সত্যসহ আল্লাহ্র বিধান প্রচারের জন্য। তিনি হবেন বিশ্ব মানবের জন্য সঠিক পথের প্রদর্শক। অনুতাপের মাধ্যমে পাপ থেকে বিরত থাকার প্রয়োজনীয়তা ,এবং পাপ পথের শেষ পরিণতি সম্বন্ধে সর্তক করাই হচেছ তার কর্তব্যের সীমারেখা। তিনি কাউকে জোর করে সত্যকে গ্রহণ করাতে পারবেন না বা আল্লাহ্র বাণীর প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করাতে পারবেন না।
আয়াতঃ 035.024
আমি আপনাকে সত্যধর্মসহ পাঠিয়েছি সংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। এমন কোন সম্প্রদায় নেই যাতে সতর্ককারী আসেনি।
Verily! We have sent you with the truth, a bearer of glad tidings, and a warner. And there never was a nation but a warner had passed among them.
إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ بِالْحَقِّ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَإِن مِّنْ أُمَّةٍ إِلَّا خلَا فِيهَا نَذِيرٌ
Inna arsalnaka bialhaqqi basheeran wanatheeran wa-in min ommatin illa khala feeha natheerun
YUSUFALI: Verily We have sent thee in truth, as a bearer of glad tidings, and as a warner: and there never was a people, without a warner having lived among them (in the past).
PICKTHAL: Lo! We have sent thee with the Truth, a bearer of glad tidings and a warner; and there is not a nation but a warner hath passed among them.
SHAKIR: Surely We have sent you with the truth as a bearer of good news and a warner; and there is not a people but a warner has gone among them.
KHALIFA: We have sent you with the truth, a bearer of good news, as well as a warner. Every community must receive a warner.
২৪। নিশ্চয়ই আমি তোমাকে সত্যসহ সুসংবাদদাতা ও সর্তককারী রূপে প্রেরণ করেছি ৩৯০৭। এবং এমন কোন সম্প্রদায় নাই, [অতীতে ] যাদের মাঝে কোন সর্তককারী বাস করে নাই।
৩৯০৭। প্রত্যাদেশ প্রেরণকারী একমাত্র আল্লাহ্। যারা মনোযোগী ও সত্যকে গ্রহণ করে থাকে, তাদের জন্য আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ সুসংবাদ। পাপের শেষ পরিণতি সম্বন্ধে বিপদের মহাসংকেত আল্লাহ্ পূর্বাহ্নেই সকল জাতির নিকট প্রেরণ করে থাকেন।
আয়াতঃ 035.025
তারা যদি আপনার প্রতি মিথ্যারোপ করে, তাদের পূর্ববর্তীরাও মিথ্যারোপ করেছিল। তাদের কাছে তাদের রসূলগণ স্পষ্ট নিদর্শন, সহীফা এবং উজ্জল কিতাবসহ এসেছিলেন।
And if they belie you, those before them also belied. Their Messengers came to them with clear signs, and with the Scriptures, and the book giving light.
وَإِن يُكَذِّبُوكَ فَقَدْ كَذَّبَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ جَاءتْهُمْ رُسُلُهُم بِالْبَيِّنَاتِ وَبِالزُّبُرِ وَبِالْكِتَابِ الْمُنِيرِ
Wa-in yukaththibooka faqad kaththaba allatheena min qablihim jaat-hum rusuluhum bialbayyinati wabialzzuburi wabialkitabi almuneeri
YUSUFALI: And if they reject thee, so did their predecessors, to whom came their messengers with Clear Signs, Books of dark prophecies, and the Book of Enlightenment.
PICKTHAL: And if they deny thee, those before them also denied. Their messengers came unto them with clear proofs (of Allah’s Sovereignty), and with the Psalms and the Scripture giving light.
SHAKIR: And if they call you a liar, so did those before them indeed call (their messengers) liars; their messengers had come to them with clear arguments, and with scriptures, and with the illuminating book.
KHALIFA: If they disbelieve you, those before them have also disbelieved. Their messengers went to them with clear proofs, and the Psalms, and the enlightening scriptures.
২৫। এবং যদি তারা তোমাকে প্রত্যাখান করে, তবে তাদের পূর্ববর্তীগণও তো করেছিলো , – তাদের নিকট তাদের রাসুলগণ এসেছিলো , সুস্পষ্ট নিদর্শন ,ছোট কিতাব ও দীপ্তিমান কিতাবসহ ৩৯০৮।
৩৯০৮। এই আয়াতে যে তিনটি বস্তুর কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার উল্লেখ আয়াতে [ ৩ : ১৮৪ ] করা হয়েছে। যার ব্যাখ্যা টিকা নং ৪৯০ তে করা হয়েছে। সকল আধ্যাত্মিক শিক্ষার মূল কেন্দ্রবিন্দু আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস কে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়, মহান রসুলদের [সা ] শিক্ষা এবং আল্লাহ্র আইন আমাদের সেই মহৎ জীবনের পথের নির্দ্দেশ দান করে থাকে।
আয়াতঃ 035.026
অতঃপর আমি কাফেরদেরকে ধৃত করেছিলাম। কেমন ছিল আমার আযাব!
Then I took hold of those who disbelieved, and how terrible was My denial (punishment)!
ثُمَّ أَخَذْتُ الَّذِينَ كَفَرُوا فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ
Thumma akhathtu allatheena kafaroo fakayfa kana nakeeri
YUSUFALI: In the end did I punish those who rejected Faith: and how (terrible) was My rejection (of them)!
PICKTHAL: Then seized I those who disbelieved, and how intense was My abhorrence!
SHAKIR: Then did I punish those who disbelieved, so how was the manifestation of My disapproval?
KHALIFA: Subsequently, I punished those who disbelieved; how terrible was My retribution!
২৬। যারা ঈমানকে প্রত্যাখান করেছিলো ,শেষ পর্যন্ত আমি তাদের শাস্তি দিয়েছিলাম। এবং কত ভয়ংকর ছিলো আমার [তাদেরকে] প্রত্যাখান ৩৯০৯।
৩৯০৯। দেখুন আয়াত [ ২২ : ৪৪ ] এবং আয়াত [৩৪ : ৪৫ ] যেখানে ভয়াবহ শাস্তির উল্লেখ আছে। কাফের যারা আল্লাহকে এবং আল্লাহ্র সত্যকে ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রত্যাখান করে , ব্যক্তিগত ভাবে বা সমষ্টিগত ভাবে তাদের জন্য ভয়াবহ শাস্তির উল্লেখ আছে। যদি তাদের উপর থেকে আল্লাহ্ তাঁর অনুগ্রহ ফিরিয়ে নেন তবে তাদের ধ্বংস অনিবার্য। তাদের পাপই হবে তাদের ধ্বংসের কারণ।
আয়াতঃ 035.027
তুমি কি দেখনি আল্লাহ আকাশ থেকে বৃষ্টিবর্ষণ করেন, অতঃপর তদ্দ্বারা আমি বিভিন্ন বর্ণের ফল-মূল উদগত করি। পর্বতসমূহের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন বর্ণের গিরিপথ-সাদা, লাল ও নিকষ কালো কৃষ্ণ।
See you not that Allâh sends down water (rain) from the sky, and We produce therewith fruits of varying colours, and among the mountains are streaks white and red, of varying colours and (others) very black.
أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ أَنزَلَ مِنَ السَّمَاء مَاء فَأَخْرَجْنَا بِهِ ثَمَرَاتٍ مُّخْتَلِفًا أَلْوَانُهَا وَمِنَ الْجِبَالِ جُدَدٌ بِيضٌ وَحُمْرٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوَانُهَا وَغَرَابِيبُ سُودٌ
Alam tara anna Allaha anzala mina alssama-i maan faakhrajna bihi thamaratin mukhtalifan alwanuha wamina aljibali judadun beedun wahumrun mukhtalifun alwanuha wagharabeebu soodun
YUSUFALI: Seest thou not that Allah sends down rain from the sky? With it We then bring out produce of various colours. And in the mountains are tracts white and red, of various shades of colour, and black intense in hue.
PICKTHAL: Hast thou not seen that Allah causeth water to fall from the sky, and We produce therewith fruit of divers hues; and among the hills are streaks white and red, of divers hues, and (others) raven-black;
SHAKIR: Do you not see that Allah sends down water from the cloud, then We bring forth therewith fruits of various colors; and in the mountains are streaks, white and red, of various hues and (others) intensely black?
KHALIFA: Do you not realize that GOD sends down from the sky water, whereby we produce fruits of various colors? Even the mountains have different colors; the peaks are white, or red, or some other color. And the ravens are black.
রুকু – ৪
২৭। তুমি কি দেখ না আল্লাহ্ আকাশ থেকে বৃষ্টি প্রেরণ করেন ? এর দ্বারা আমি কৃষিজাত দ্রব্যে নানা বর্ণের বিকাশ ঘটাই ৩৯১০ ; এবং পর্বতে রয়েছে বিভিন্ন স্তরে রংএর মাত্রা – শুভ্র, লাল,ও নিকষ কালো ৩৯১১।
৩৯১০। এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্ মানব সম্প্রদায়কে আহ্বান করেছেন প্রকৃতির সৌন্দর্যের মাঝে তাঁর শিল্পসত্ত্বাকে অনুভব করার জন্য। বৃষ্টি,মাটিকে সজীব করে দেয়, এবং পৃথিবীকে ফুল, ফল ও শষ্যে ভরিয়ে দেয়। রং এর বাহারে প্রকৃতি পৃথিবীর অঙ্গনকে ভরিয়ে তোলে। সোনালী , সবুজ , লাল , হলুদ প্রভৃতি বিভিন্ন রং বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষে , ফুলে , লতায় পাতায় বিরাজমান। তাদের গঠন প্রকৃতি সবই সেই বিশ্ব স্রষ্টার শিল্প সত্ত্বার প্রকাশ মাত্র। এ সব লতা পাতা প্রতিটি ঋতুতে, ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে বিভিন্ন রংএর সমারোহে ভরে যায়। পাতা ঝরার মেলায় বৃক্ষের এক রং, নূতন পাতায় আবার অন্য রং ; ফুলের সৌন্দর্য , রং গন্ধ এক কথায় বিশ্ব প্রকৃতির এই পরিবর্তন , আকাশে রং এর খেলা সৌন্দর্যের প্রকাশ সবই অনুভবের জিনিষ যে অনুভব পার্থিব থেকে অপার্থিব অনুভূতিতে ভরিয়ে দেবে।
৩৯১১। আল্লাহ্র শিল্প সত্ত্বার প্রকাশ যে শুধুমাত্র উদ্ভিদ জগতের মাঝে দেখা যায় তাই নয়। সারাটা পৃথিবীই তাঁর শিল্প সত্ত্বা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার প্রকাশ মাত্র। এই আয়াতে দুইটা উদাহরণের মাধ্যমে আল্লাহ্র শিল্প সত্ত্বাকে অনুভব করতে বলা হয়েছে। প্রথমটির কথা আলোচনা করা হয়েছে – তা হচ্ছে উদ্ভিদ জগত। দ্বিতীয়টি হচ্ছে উদ্ভিদের বিপরীত কঠিন প্রাণহীন শিলা। জীবন্ত , সজীব ,নরম ও রঙ্গীন উদ্ভিদ জগত এক মেরুতে , ঠিক তার বিপরীতে কঠিন, প্রাণহীন , বৃক্ষলতাহীন কঠিন শিলার স্তুপ। কিন্তু এই কঠিন প্রাণহীন শিলাস্তুপের আছে বিভিন্ন রং , শ্বেত মর্মর ,স্ফটিক অথবা খড়িমাটি ,লাল পাথরের পাহাড় , নীল ঘোর বর্ণের আগ্নেয় শিলা ,গাড় কালো রং এর চকমকি পাথরের পাহাড় ইত্যাদি বিভিন্ন বর্ণের পাহাড় প্রকৃতির মাঝে ছড়িয়ে আছে। নীল আকাশের পটভূমিতে কঠিন শিলার রংএর বাহার মানুষের মনকে মুগ্ধ না করে পারে না। যদি কেউ আমেরিকার এরিজোনার স্থানটি শেষ বিকালের আলোয় অতিক্রম করে থাকেন তবে আকাশের পটভূমিতে সূর্যাস্তে এই সব বিভিন্ন রংয়ের পাথরের পাহাড়ের রূপ বিশ্বস্রষ্টার শিল্প সত্ত্বাকে অনুভবের পর্যায়ে পৌছিয়ে দিতে সক্ষম। আকাশের পটভূমিতে দূর থেকে সুউচ্চ পর্বতে মেঘের আনাগোনা,সূর্যদয় , সূর্যাস্ত, প্রভৃতি দৃশ্য আমাদের চিন্তার জগতকে আরও সূদূরে প্রসারিত করে। লক্ষ্যণীয় যে দুই বিপরীত মেরুর দুইটি প্রাকৃতিক বস্তুর উদাহরণের মাধ্যমে আল্লাহ্ বিশ্ব প্রকৃতির অন্যান্য জিনিষের সৌন্দর্যকে অনুভব করতে বলেছেন।
আয়াতঃ 035.028
অনুরূপ ভাবে বিভিন্ন বর্ণের মানুষ, জন্তু, চতুস্পদ প্রাণী রয়েছে। আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে জ্ঞানীরাই কেবল তাঁকে ভয় করে। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী ক্ষমাময়।
And of men and AdDawâb (moving living creatures, beasts, etc.), and cattle, in like manner of various colours. It is only those who have knowledge among His slaves that fear Allâh. Verily, Allâh is AllMighty, OftForgiving.
وَمِنَ النَّاسِ وَالدَّوَابِّ وَالْأَنْعَامِ مُخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ كَذَلِكَ إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاء إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ غَفُورٌ
Wamina alnnasi waalddawabbi waal-anAAami mukhtalifun alwanuhu kathalika innama yakhsha Allaha min AAibadihi alAAulamao inna Allaha AAazeezun ghafoorun
YUSUFALI: And so amongst men and crawling creatures and cattle, are they of various colours. Those truly fear Allah, among His Servants, who have knowledge: for Allah is Exalted in Might, Oft-Forgiving.
PICKTHAL: And of men and beasts and cattle, in like manner, divers hues? The erudite among His bondmen fear Allah alone. Lo! Allah is Mighty, Forgiving.
SHAKIR: And of men and beasts and cattle are various species of it likewise; those of His servants only who are possessed of knowledge fear Allah; surely Allah is Mighty, Forgiving.
KHALIFA: Also, the people, the animals, and the livestock come in various colors. This is why the people who truly reverence GOD are those who are knowledgeable. GOD is Almighty, Forgiving.
২৮। এবং সে রকমই রং বেরং এর মানুষ জীবজন্তু ও গৃহপালিত পশু রয়েছে ৩৯১২। আল্লাহ্র বান্দাদের মধ্যে যাদের জ্ঞান রয়েছে , তারাই তাঁকে ভয় করে ৩৯১৩। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমতায় পরাক্রমশালী , বারে বারে ক্ষমাশীল।
৩৯১২। শুধু যে প্রকৃতির মাঝেই বিশ্বস্রষ্টার শিল্প সত্ত্বার প্রকাশ ঘটেছে তাই-ই নয় ; বিভিন্ন চেহারা ও রং এর মানুষ, পশু-পাখী , কীটপতঙ্গ, গৃহপালিত জন্তু সকল কিছুর মধ্যেই বৈচিত্র বিদ্যমান। এরা বিভিন্ন বর্ণের , বিভিন্ন আকৃতির হয়ে থাকে। প্রাণী জগতে বৈচিত্রের এই ক্রম বিন্যাস বা পার্থক্য বিদ্যমান অত্যাচার্য ও বিস্ময়কর সৃষ্টি সন্দেহ নাই, কিন্তু আধ্যাত্মিক জগতে মানুষের অন্তরের ক্রম বিন্যাস ও বৈচিত্রের তুলনায় তা অতি অকিঞ্চিতকর। দেখুন পরবর্তী টিকা।
৩৯১৩। প্রকৃতিতে আমরা গঠন, আকৃতি, ও রং এর প্রেক্ষাপটে চোখে দেখে সৌন্দর্যের বিচার করে থাকি। কিন্তু আধ্যাত্মিক জগতকে চর্ম চক্ষুতে দেখা সম্ভব নয়। সেখানের বৈচিত্র, সৌন্দর্য , পার্থক্য , ও ক্রম বিন্যাস সুক্ষ এবং উপলব্ধির মাধ্যমে তা অনুভব করতে হয়। সাধারণ চর্মচক্ষু বা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য কোন কিছু দ্বারাই তা অনুভব করা সম্ভব নয়। তবে কারা তা বুঝতে পারবে ? যারা আল্লাহ্র জ্ঞানী বান্দা অর্থাৎ যারা আল্লাহ্কে ভয় করে ফলে তারা আধ্যাত্মিক জ্ঞানের অধিকারী এবং অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন হয়। এ সব লোকেরাই আধ্যাত্মিক জগতকে অনুভব করতে সক্ষম এবং উপলব্ধির মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারে। এরাই তারা যারা ” আল্লাহ্কে ভয় করে ” এবং আল্লাহ্র কাছে আত্মসমর্পন করে। আর আধ্যাত্মিক জ্ঞানের শুরু হয় আল্লাহকে ভয় করার মাধ্যমে। “Fear of Allah is the begining of wisdom”। এই ভয় শাস্তির ভয়ে পশুর মত ভয় নয় , এই ভয় আল্লাহকে ভালোবাসারই নামান্তর। আল্লাহ্ অখুশী হবেন এই কষ্টে যখন প্রিয় বান্দার হৃদয়ে কষ্ট হয়, হৃদয় কাঁপে ; ভালোবাসা থেকে উৎপন্ন এই ভয়কেই এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ্র প্রতি ভালোবাসা থেকে এই ভয় উৎপন্ন – ফলে এ সব লোকেরা বিশ্ব প্রকৃতির মাঝে আল্লাহ্র সৃষ্টি নৈপুন্য , শিল্প সত্ত্বাকে খুঁজে পায় এবং সশ্রদ্ধ ভক্তি ও আবেগে আপ্লুত হয়ে তাঁর চরণে লুটিয়ে পড়ে। তাঁরা বিশ্ব প্রকৃতিতে এবং অন্তরের মাঝে আধ্যাত্মিক জগতে আল্লাহ্র শক্তিকে উপলব্ধিতে সমর্থ [ ” আল্লাহ্ পরাক্রমশালী “]। তাঁরা আল্লাহকে ভালোবাসেন কারণ তাঁর করুণা ও দয়ায় তারা বিধৌত [ ” আল্লাহ্ ক্ষমাশীল ” ]।
আয়াতঃ 035.029
যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, নামায কায়েম করে, এবং আমি যা দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসা আশা কর, যাতে কখনও লোকসান হবে না।
Verily, those who recite the Book of Allâh (this Qur’ân), and perform AsSalât (IqâmatasSalât), and spend (in charity) out of what We have provided for them, secretly and openly, hope for a (sure) tradegain that will never perish.
إِنَّ الَّذِينَ يَتْلُونَ كِتَابَ اللَّهِ وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَأَنفَقُوا مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَعَلَانِيَةً يَرْجُونَ تِجَارَةً لَّن تَبُورَ
Inna allatheena yatloona kitaba Allahi waaqamoo alssalata waanfaqoo mimma razaqnahum sirran waAAalaniyatan yarjoona tijaratan lan taboora
YUSUFALI: Those who rehearse the Book of Allah, establish regular Prayer, and spend (in Charity) out of what We have provided for them, secretly and openly, hope for a commerce that will never fail:
PICKTHAL: Lo! those who read the Scripture of Allah, and establish worship, and spend of that which We have bestowed on them secretly and openly, they look forward to imperishable gain,
SHAKIR: Surely they who recite the Book of Allah and keep up prayer and spend out of what We have given them secretly and openly, hope for a gain which will not perish.
KHALIFA: Surely, those who recite the book of GOD, observe the Contact Prayers (Salat), and from our provisions to them they spend – secretly and publicly – are engaged in an investment that never loses.
২৯। যারা আল্লাহ্র কিতাব আবৃত্তি করে, নিয়মিত নামাজ পড়ে এবং তাদের আমি যে জীবিকা দান করেছি তা থেকে গোপনে এবং প্রকাশ্যে [দানে ] ব্যয় করে ৩৯১৪ ; তারা আশা করে এমন এক ব্যবসার যার লোকসান নাই ৩৯১৫।
৩৯১৪। মোমেন বান্দাদের করণীয় কর্মের বর্ণনা এই আয়াতটিতে আছে।
১) তারা আল্লাহ্র প্রত্যাদেশকে হৃদয়ে ধারণ করে [ প্রতিদিন কিতাব বা কোরাণ পাঠের মাধ্যমে ]।
২) প্রার্থনা বা সালাতের মাধ্যমে প্রতিদিন তারা আল্লাহ্র সান্নিধ্য ও নৈকট্য কামনা করে [ সালাত কায়েম করে ]।
৩) এবং আল্লাহ্ তাদের যে জীবনোপকরণ দিয়েছেন তা থেকে দান করে। যত ক্ষুদ্রই হোক সে এই দানে কুণ্ঠিত বা লজ্জিত নয় [ প্রকাশ্যে ব্যয় ] এবং সে এই দান লোকের প্রশংসার জন্য লোক দেখানোর জন্য করে না [গোপনে ব্যয় করে ]। সে তার সগোত্রদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য ব্যয় বা দান করে – এ ব্যাপারে সে লোকলজ্জা বা লোকের নিন্দাকে ভয় করে না। তার শুধু একটাই উদ্দেশ্য যে তার “ব্যয় ” যেনো আল্লাহকে খুশী করতে পারে।
৩৯১৫। এখানে ব্যবসা বাণিজ্যকে উপমা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এখানে দানের প্রকৃতি সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে। মোমেন বান্দার “দান” উদ্বৃত্ত বস্তুকে দান করা নয়। তাঁর দান হবে আল্লাহ্ তাঁকে যে জীবনোপকরণ দিয়েছেন তার থেকে দান করা। সুতারাং তাঁর দানের সাথে তার দুরকমের মানসিক অবস্থা বিরাজ করে।
১) আল্লাহ্ তাঁকে যে সম্পদ [ আক্ষরিক ও প্রতীক অর্থে ] দান করেছেন সে সব তাঁর নিজস্ব নয়। সবই আল্লাহ্র এবং আল্লাহ্ তাকে দান করেছেন করুণার স্বাক্ষর হিসেবে। সুতারাং যারা বঞ্চিত এতে তাদেরও অধিকার বর্তমান। দান দ্বারা সে কাউকে ধন্য করছে না বরং সে তার সম্পদের আমানত রক্ষা করছে।
২) বড় বড় ব্যবসায়ীরা “মূলধন” ব্যবসার জন্য পৃথক ভাবে রেখে থাকে। মোমেন বান্দারা তাদের সকল সম্পদ নিজস্ব সুখ-স্বাচ্ছন্দের জন্য খরচ না করে পরলোকের ব্যবসার মূলধন হিসেবে দান করে থাকে। কারণ আল্লাহকে খুশী করার জন্য যে দান তার থেকে বড় মূলধন পরলোকের জন্য আর কিছু নাই। মোমেন বান্দার ব্যবসা কখনও দেউলিয়া বা তরঙ্গায়িত হবে না। কারণ তাদের ব্যবসার মূলধনের জামিনদার স্বয়ং আল্লাহ্। আল্লাহ্ তাদের মূলধনকে বহুগুণ করে ফেরত দেবেন – তার অনুগ্রহে ধন্য করবেন। আল্লাহ্ বহুস্থানে বলেছেন বান্দার সৎকর্মের পুরষ্কার প্রাপ্য থেকে বহুগুণ করে ফেরত দেবেন।
আয়াতঃ 035.030
পরিণামে তাদেরকে আল্লাহ তাদের সওয়াব পুরোপুরি দেবেন এবং নিজ অনুগ্রহে আরও বেশী দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।
That He may pay them their wages in full, and give them (even) more, out of His Grace. Verily! He is OftForgiving, Most Ready to appreciate (good deeds and to recompense).
لِيُوَفِّيَهُمْ أُجُورَهُمْ وَيَزِيدَهُم مِّن فَضْلِهِ إِنَّهُ غَفُورٌ شَكُورٌ
Liyuwaffiyahum ojoorahum wayazeedahum min fadlihi innahu ghafoorun shakoorun
YUSUFALI: For He will pay them their meed, nay, He will give them (even) more out of His Bounty: for He is Oft-Forgiving, Most Ready to appreciate (service).
PICKTHAL: That He will pay them their wages and increase them of His grace. Lo! He is Forgiving, Responsive.
SHAKIR: That He may pay them back fully their rewards and give them more out of His grace: surely He is Forgiving, Multiplier of rewards.
KHALIFA: He will recompense them generously, and will multiply His blessings upon them. He is Forgiving, Appreciative.
৩০। এ জন্য যে, আল্লাহ্ তাদের পারিতোষিক প্রদান করবেন। না ,তিনি তাঁর নিজ অনুগ্রহে তাদের আরও বেশী দেবেন। নিশ্চয়ই তিনি বারে বারে ক্ষমাশীল ও গুণগ্রাহী ৩৯১৬, ৩৯১৭।
৩৯১৬। মানুষ মাত্রই দোষত্রুটি থাকবেই। কেহই সম্পূর্ণ ত্রুটি মুক্ত নয়। সুতারাং পৃথিবীর জীবনে মানুষের ভুলত্রুটি হবেই। কিন্তু মানুষ যদি আন্তরিকভাবে সর্বশক্তি দিয়ে আল্লাহ্র রাস্তায় কাজ করে তবে আল্লাহ্ তাঁর দোষত্রুটি দূর করে দেবেন , এবং তার সকল গুণাহ্ মাপ করে দেবেন। ” আল্লাহ্ তো ক্ষমাশীল গুণগ্রাহী।”
৩৯১৭। ‘Shakur’ শব্দটির জন্য দেখুন আয়াত [১৪ : ৫ ] এবং টিকা ১৮৭৭। আল্লাহ্ মানুষের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সৎ কাজকেও সনাক্ত করেন, প্রশংসা করেন এবং পুরষ্কৃত করেন। তিনি তাদের দোষত্রুটি ও ছোট খাট ভুলভ্রান্তি ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখে থাকেন। তিনি তো মানুষকে ক্ষমা করার জন্য দুহাত বাড়িয়েই থাকেন। মানুষের সামান্য গুণাবলী জন্য তিনি পুরষ্কৃত করে থাকেন।
আয়াতঃ 035.031
আমি আপনার প্রতি যে কিতাব প্রত্যাদেশ করেছি, তা সত্য-পূর্ববর্তী কিতাবের সত্যায়ন কারী নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ব্যাপারে সব জানেন, দেখেন।
And what We have inspired in you (O Muhammad SAW), of the Book (the Qur’ân), it is the (very) truth [that you (Muhammad SAW) and your followers must act on its instructions], confirming that which was (revealed) before it. Verily! Allâh is indeed AllAware, and AllSeer of His slaves.
وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ هُوَ الْحَقُّ مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ إِنَّ اللَّهَ بِعِبَادِهِ لَخَبِيرٌ بَصِيرٌ
Waallathee awhayna ilayka mina alkitabi huwa alhaqqu musaddiqan lima bayna yadayhi inna Allaha biAAibadihi lakhabeerun baseerun
YUSUFALI: That which We have revealed to thee of the Book is the Truth,- confirming what was (revealed) before it: for Allah is assuredly- with respect to His Servants – well acquainted and Fully Observant.
PICKTHAL: As for that which We inspire in thee of the Scripture, it is the Truth confirming that which was (revealed) before it. Lo! Allah is indeed Observer, Seer of His slaves.
SHAKIR: And that which We have revealed to you of the Book, that is the truth verifying that which is before it; most surely with respect to His servants Allah is Aware, Seeing.
KHALIFA: What we revealed to you in this scripture is the truth, consummating all previous scriptures. GOD is fully Cognizant of His servants, Seer.
৩১। আমি তোমার নিকট যে কিতাব অবতীর্ণ করেছি তা সত্য -ইহা পূর্বে যা অবতীর্ণ করা হয়েছিলো তার সমর্থক। অবশ্যই আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের সম্বন্ধে সব কিছু জানেন ও পর্যবেক্ষণ করেন ৩৯১৮।
৩৯১৮। যুগে যুগে আল্লাহ্র প্রত্যাদেশের নৈতিক শিক্ষা এক ও অভিন্ন। সময়ের ব্যবধানে মানুষ সে শিক্ষা ভুলে যায় এবং আল্লাহ্র প্রত্যাদেশকে বিকৃত করে ফেলে। কোরাণ হচ্ছে সেই সব ধর্মগ্রন্থের অবিকৃত রূপ এবং পূর্বের প্রত্যাদেশসমূহের সত্যায়নকারী। যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের সামাজিক পরিবর্তন ঘটে থাকে, সেই সাথে সামাজিক প্রয়োজনও। কিন্তু মানুষের নৈতিক গুণাবলী সকল যুগে ; পৃথিবীর আদি থেকে আজ পর্যন্ত একই রয়ে গেছে। আল্লাহ্ প্রতিটি যুগের প্রয়োজন জানেন। সুতারাং বিভিন্ন নবী রসুলের দ্বারা প্রত্যাদেশের সামাজিক দিককে যুগোপযোগী করা হলেও নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শিক্ষার কোনও পরিবর্তন ঘটে নাই। কারণ মানুষের নৈতিক গুণাবলী সকল যুগেই এক এবং নৈতিক শিক্ষাও সকল যুগে অভিন্ন। কোরাণের শিক্ষা হচ্ছে সকল ধর্মগ্রন্থের মূল নির্যাস। যুগে যুগে আল্লাহ্ যে সব নবী রসুল প্রেরণ করেছেন তারা পরস্পর মিলিত হন নাই সত্য, কিন্তু আল্লাহ্র প্রত্যাদেশের মাধ্যমে তারা নিজেদের সমগোত্রীয় বলে চিনতে পারেন এবং জগদ্বাসীকে প্রচারিত তাদের সকলের শিক্ষা ছিলো এক ও অভিন্ন কোরাণ পূর্ববর্তী সমস্ত কিতাবের সমর্থক ও সংরক্ষক বিধায় সমস্ত ঐশিগ্রন্থের বিষয়বস্তুর সমষ্টি। কারণ তা এক আল্লাহ্র নিকট থেকে আগত। মানুষ অনেক সময়েই নিজ প্রয়োজন বুঝতে পারে না ; কিন্তু আল্লাহ্ মানুষের প্রয়োজন সম্বন্ধে সম্পূর্ণ জ্ঞাত।
আয়াতঃ 035.032
অতঃপর আমি কিতাবের অধিকারী করেছি তাদেরকে যাদেরকে আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে মনোনীত করেছি। তাদের কেউ কেউ নিজের প্রতি অত্যাচারী, কেউ মধ্যপন্থা অবলম্বনকারী এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহর নির্দেশক্রমে কল্যাণের পথে এগিয়ে গেছে। এটাই মহা অনুগ্রহ।
Then We gave the Book the Qur’ân) for inheritance to such of Our slaves whom We chose (the followers of Muhammad SAW). Then of them are some who wrong their ownselves, and of them are some who follow a middle course, and of them are some who are, by Allâh’s Leave, foremost in good deeds. That (inheritance of the Qur’ân), that is indeed a great grace.
ثُمَّ أَوْرَثْنَا الْكِتَابَ الَّذِينَ اصْطَفَيْنَا مِنْ عِبَادِنَا فَمِنْهُمْ ظَالِمٌ لِّنَفْسِهِ وَمِنْهُم مُّقْتَصِدٌ وَمِنْهُمْ سَابِقٌ بِالْخَيْرَاتِ بِإِذْنِ اللَّهِ ذَلِكَ هُوَ الْفَضْلُ الْكَبِيرُ
Thumma awrathna alkitaba allatheena istafayna min AAibadina faminhum thalimun linafsihi waminhum muqtasidun waminhum sabiqun bialkhayrati bi-ithni Allahi thalika huwa alfadlu alkabeeru
YUSUFALI: Then We have given the Book for inheritance to such of Our Servants as We have chosen: but there are among them some who wrong their own souls; some who follow a middle course; and some who are, by Allah’s leave, foremost in good deeds; that is the highest Grace.
PICKTHAL: Then We gave the Scripture as inheritance unto those whom We elected of Our bondmen. But of them are some who wrong themselves and of them are some who are lukewarm, and of them are some who outstrip (others) through good deeds, by Allah’s leave. That is the great favour!
SHAKIR: Then We gave the Book for an inheritance to those whom We chose from among Our servants; but of them is he who makes his soul to suffer a loss, and of them is he who takes a middle course, and of them is he who is foremost in deeds of goodness by Allah’s permission; this is the great excellence.
KHALIFA: We passed the scripture from generation to generation, and we allowed whomever we chose from among our servants to receive it. Subsequently, some of them wronged their souls, others upheld it only part of the time, while others were eager to work righteousness in accordance with GOD’s will; this is the greatest triumph.
৩২। অতঃপর, ৩৯১৯ আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে কিতাবের উত্তরাধিকারী মনোনীত করেছি। তবে তাদের মধ্যে কতক লোক নিজের আত্মার প্রতি অত্যাচার করে ,কতক মধ্যপথ অনুসরণ করে এবং কতক আল্লাহ্র অনুগ্রহে কল্যাণকর কাজে অগ্রগামী হয়। এটাই হলো মহা অনুগ্রহ।৩৯২০
৩৯১৯। “অতঃপর ” শব্দটি দ্বারা এখানে চূড়ান্ত পর্যায়কে বোঝানো হয়েছে। কোরাণ হচ্ছে সর্বশেষ প্রত্যাদেশ ও ধর্মগ্রন্থ অতঃপর দ্বারা এই কথাই বোঝানো হয়েছে। অথবা পূর্বের আয়াতে “তোমার প্রতি ” শব্দটির বৈষম্য প্রদর্শন করা হয়েছে। অর্থাৎ পূর্ববর্তী ঐশি কিতাবসমূহের সমর্থক কোরাণ প্রথমে আপনার [ রাসুলের ] কাছে প্রত্যাদেশ করেছি এরপর আমি আমার মনোনীত বান্দাদেরকেও এর অধিকারী করেছি। কোরাণ ওহীর মাধ্যমে রসুলুল্লাহ্র [সা ] এর কাছে প্রেরণ করা মর্যদা ও স্তরের দিক দিয়ে অগ্রে এবং উম্মতে মোহাম্মদীকে দান করা শেষে হয়েছে, এই বৈষম্যমূলক বৈশিষ্ট্যকে এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
৩৯২০। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদের [সা ] পরে কোরাণের তত্বাবধায়ক করা হয় ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের। মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের জিম্মাদার নিযুক্ত করা হয়। এই জিম্মাদারী বা তত্বাবধায়ক সঙ্কীর্ণ অর্থে নয়। যারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবেন তারা এর নির্দ্দেশসমূহ মেনে চলবে , সংরক্ষণ করবে , এবং প্রচার করবে যেনো বিশ্বমানব সম্প্রদায় আল্লাহ্র বাণীর শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ লাভ করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ইসলাম গ্রহণকারী সকলেই এ বিষয়ে সচেতন নয়। সকলেই তাদের দায়িত্ব সম্বন্ধে বিশ্বস্ত , সত্যবাদী এবং বিশ্বাসী নয়। বর্তমান পৃথিবীতে মুসলমান নামধারী বহু জাতি আছে কিন্তু তারা তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্বন্ধে সচেতন নয়। ঠিক এই একই ঘটনার পুণরাবৃত্তি ঘটে আদম সন্তানদের বেলায়। আল্লাহ্ তাদের পৃথিবীতে প্রেরণ করেন তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে , কিন্তু মানুষের এক অংশ শয়তানের প্ররোচনায় পাপের পঙ্কে নিমগ্ন হয়।
১) ঠিক সেরকমই ইসলামের অনুসারীদের একদল ইসলামের আলোকবর্তিকা অনুসরণে অক্ষমতা প্রকাশ করে এবং তাদের আত্মাকে কলুষিত করে “তাদের মাঝে কতক লোক নিজের আত্মার প্রতি অত্যাচার করে।”
২) ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে আর একদল আছে , যারা মধ্য পথ অবলম্বন করে থাকে। তারা ধর্মের প্রতিটি অনুশাসন একনিষ্ঠভাবে পালন করতে অক্ষম , কিন্তু ধর্মের প্রাণ বা মূল বা মর্মার্থ সম্বন্ধে তারা অত্যন্ত যত্নশীল। এদের সম্বন্ধে বলা চলে, “The spirit indeed is willing , but the flesh is weak”। তাদের উদ্দেশ্য মহৎ ; কিন্তু প্রকৃত মুসলমানের চরিত্র , জীবনব্যবস্থা ও গুণাবলী অর্জন করতে তারা সম্পূর্ণ কৃতাকার্য হয় না অসততার দরুণ।
৩) এরপরে বলা হয়েছে তৃতীয় শ্রেণীর কথা : তারা হয়তো পূর্ণাঙ্গ ও নিখুঁত নয়। কিন্তু , তাঁদের জীবনের উদ্দেশ্য, জীবন পদ্ধতি , চরিত্রগত গুণাবলী প্রকৃত ইসলামিক অনুশাসনের দ্বারা পরিচালিত করেন। এরা হচ্ছেন সিদ্দিক শ্রেণীর যারা পৃথিবীর জন্য অনুকরণীয় এবং আদর্শ মানব। এরাই পৃথিবীতে সকল ভালো কাজের পুরোধায় থাকেন। তারা মহৎ ব্যক্তিত্ব ও অনুকরণীয় চরিত্র অর্জন করতে পেরেছেন সেটা তাদের নিজেদের কোনও কৃতিত্ব নয়। তাঁরা চেষ্টা করেছেন সত্য, তবে তাদের সে চেষ্টার পুরষ্কার স্বরূপ আল্লাহ্ এই সব গুণাবলী তাঁদের চরিত্রে দান করেছেন। তাঁরা তাদের জীবনে সফলকাম ,তাঁরা তাদের জীবনে সর্বোচ্চ সিদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়েছেন – তাদের আত্মায় মোক্ষলাভ বা মুক্তি ঘটেছে। আল্লাহ্র অনুগ্রহেই এ সব সম্ভব হয়েছে , কারণ জীবনের সকল উত্তম জিনিষই আল্লাহ্র অনুগ্রহ বা দান। আর পাপের ফলশ্রুতি শয়তানের প্ররোচনা। তবে দুটোই ব্যক্তির নিজস্ব ইচ্ছার দ্বারা অর্জন করতে হয়।
আয়াতঃ 035.033
তারা প্রবেশ করবে বসবাসের জান্নাতে। তথায় তারা স্বর্ণনির্মিত, মোতি খচিত কংকন দ্বারা অলংকৃত হবে। সেখানে তাদের পোশাক হবে রেশমের।
’Adn (Eden) Paradise (everlasting Gardens) will they enter, therein will they be adorned with bracelets of gold and pearls, and their garments there will be of silk (i.e. in Paradise).
جَنَّاتُ عَدْنٍ يَدْخُلُونَهَا يُحَلَّوْنَ فِيهَا مِنْ أَسَاوِرَ مِن ذَهَبٍ وَلُؤْلُؤًا وَلِبَاسُهُمْ فِيهَا حَرِيرٌ
Jannatu AAadnin yadkhuloonaha yuhallawna feeha min asawira min thahabin walu/lu-an walibasuhum feeha hareerun
YUSUFALI: Gardens of Eternity will they enter: therein will they be adorned with bracelets of gold and pearls; and their garments there will be of silk.
PICKTHAL: Gardens of Eden! They enter them wearing armlets of gold and pearl and their raiment therein is silk.
SHAKIR: Gardens of perpetuity, they shall enter therein; they shad be made to wear therein bracelets of gold and pearls, and their dress therein shall be silk.
KHALIFA: They will enter the gardens of Eden, where they will be adorned with bracelets of gold and pearls, and their garments in it will be made of silk.
৩৩। এরা অনন্ত স্থায়ী [বেহেশতের ] উদ্যানে প্রবেশ করবে , ৩৯২১ সেখানে তাদের স্বর্ণ ও মুক্তার কঙ্কন দ্বারা সুসজ্জিত করা হবে ৩৯২২। এবং সেখানে তাদের পোষাক হবে রেশমের।
৩৯২১। ‘জান্নাত ‘ অর্থাৎ বেহেশতের বাগান। বেহেশত হচ্ছে পরলোকে পূণ্যাত্মাদের আবাসস্থল ; যেখানে পূণ্যাত্মারা পৃথিবীর দুঃখ কষ্টের উর্দ্ধে আরাম, আয়েশ ,বিশ্রাম ভোগ করবে চিত্তের মাঝে কোনও অতৃপ্তি থাকবে না , সম্মান ও সৌন্দর্য বোধ চিত্তের মাঝে প্রশান্তি এনে দেবে। বেহেশতের সুখ শান্তি, আরাম-আয়েশ,পৃথিবীতে কল্পনা করা সম্ভব নয়। বাস্তব যখন কল্পনাকে অতিক্রম করে যায়, তখনই রূপকের আশ্রয় গ্রহণ করা হয়। এখানে অলংকার, পরিচ্ছদ , মনিমুক্তার উপমা ব্যবহার করা হয়েছে – বাহ্যিক ব্যক্তিগত সুখ-স্বাচ্ছন্দকে রূপকের মাধ্যমে প্রকাশ করার জন্য। এ সব তাদের সম্মান,আরাম, বিশ্রামের মাঝে যে শান্তি ও সৌন্দর্য সেই অনুভূতি দান করবে। এই আয়াতে বাহ্যিক আরাম-আয়েশ সুখ-স্বাচ্ছন্দের অনুভূতি গুলিকে রূপকের সাহায্যে তুলে ধরা হয়েছে। আয়াত [৩৪ -৩৫ ] এ অন্তরের যে সুখের, শান্তির, তৃপ্তির, বিশ্রামের যে অনুভূতি তা তুলে ধরা হয়েছে ,রূপকের মাধ্যমে।
আয়াতঃ 035.034
আর তারা বলবে-সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের দূঃখ দূর করেছেন। নিশ্চয় আমাদের পালনকর্তা ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।
And they will say: ”All the praises and thanks be to Allâh, Who has removed from us (all) grief. Verily, our Lord is indeed OftForgiving, Most Ready to appreciate (good deeds and to recompense).
وَقَالُوا الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَذْهَبَ عَنَّا الْحَزَنَ إِنَّ رَبَّنَا لَغَفُورٌ شَكُورٌ
Waqaloo alhamdu lillahi allathee athhaba AAanna alhazana inna rabbana laghafoorun shakoorun
YUSUFALI: And they will say: “Praise be to Allah, Who has removed from us (all) sorrow: for our Lord is indeed Oft-Forgiving Ready to appreciate (service):
PICKTHAL: And they say: Praise be to Allah Who hath put grief away from us. Lo! Our Lord is Forgiving, Bountiful,
SHAKIR: And they shall say: (All) praise is due to Allah, Who has made grief to depart from us; most surely our Lord is Forgiving, Multiplier of rewards,
KHALIFA: They will say, “Praise GOD for removing all our worries. Our Lord is Forgiving, Appreciative.
৩৪। এবং তারা বলবে, ” প্রশংসা আল্লাহ্রই , যিনি আমাদের থেকে [সকল ] দুঃখ দূর করেছেন। অবশ্যই আমাদের প্রভু বারে বারে ক্ষমাশীল , গুণগ্রাহী ৩৯২৩।
৩৯২৩। দেখুন উপরের আয়াত [ ৩৫ : ৩ ০ ]। লক্ষ্য করুন কি অপূর্ব নিপুনভাবে সমস্ত যুক্তির শেষ করা হয়েছে। ৩০ নং আয়াতে বলা হয়েছে , ” আল্লাহ্ ক্ষমাশীল ও গুণগ্রাহী।” গুণগ্রাহী অর্থাৎ মানুষের প্রতিটি ভালো কাজকে প্রশংসা করতে আগ্রহী। যারা পার্থিব জীবনে সাফল্য অর্জন করেছে , পরলোকে তাঁরা তাঁদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবে। তাঁরা দেখবে যে আল্লাহ্ তাদের জন্য অপার শান্তির ব্যবস্থা করেছেন। আল্লাহ্ প্রতিটি সৎকর্মের পূর্ণ প্রতিফল দেবেন এবং প্রাপ্য অপেক্ষা আরও বেশী দান করবেন। তাদের মনের সকল আশা-আকাঙ্খা পূর্ণ হবে , দুঃখ-দুর্দ্দশা ; মানসিক উদ্বেগ অশান্তি দূরীভূত হবে।
আয়াতঃ 035.035
যিনি স্বীয় অনুগ্রহে আমাদেরকে বসবাসের গৃহে স্থান দিয়েছেন, তথায় কষ্ট আমাদেরকে স্পর্শ করে না এবং স্পর্শ করে না ক্লান্তি।
Who, out of His Grace, has lodged us in a home that will last forever; there, toil will touch us not, nor weariness will touch us.”
الَّذِي أَحَلَّنَا دَارَ الْمُقَامَةِ مِن فَضْلِهِ لَا يَمَسُّنَا فِيهَا نَصَبٌ وَلَا يَمَسُّنَا فِيهَا لُغُوبٌ
Allathee ahallana dara almuqamati min fadlihi la yamassuna feeha nasabun wala yamassuna feeha lughoobun
YUSUFALI: “Who has, out of His Bounty, settled us in a Home that will last: no toil nor sense of weariness shall touch us therein.”
PICKTHAL: Who, of His grace, hath installed us in the mansion of eternity, where toil toucheth us not nor can weariness affect us.
SHAKIR: Who has made us alight in a house abiding for ever out of . His grace; toil shall not touch us therein, nor shall fatigue therein afflict us.
KHALIFA: “He has admitted us into the abode of eternal bliss, out of His grace. Never do we get bored herein, never do we get tired.”
৩৫। “যিনি নিজ অনুগ্রহে আমাদের বসবাসের জন্য চিরস্থায়ী আবাস দিয়েছেন। সেখানে কোন কঠোর পরিশ্রমের অনুভূতি অথবা ক্লান্তির অনুভূতি আমাদের স্পর্শ করে না ৩৯২৪।
৩৯২৪। বেহেশতের অনন্ত সুখ-শান্তির অনুভব এই আয়াতের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। পৃথিবীর জীবনে কোনও জিনিষই স্থায়ী নয় এমন কি সুখ শান্তির অনুভূতিও নয়। প্রাচুর্য , সম্পদ , ক্ষমতা প্রভৃতি চিত্তে আনন্দ ও সুখের অনুভূতি সৃষ্টি করে সত্য, কিন্তু তা দীর্ঘ স্থায়ী হয় না। তাতে অভ্যস্ত হয়ে গেলে তা শেষে একঘেয়েমীতে পরিণত হয় এবং নূতন আনন্দের উপায় মানুষ খুঁজতে থাকে। কিন্তু বেহেশতের সুখ ও শান্তি চিরস্থায়ী – একঘেয়েমী বা বিতৃষ্ণার স্থান সেখানে নাই। যেখানে ক্লেশ বা ক্লান্তি কখনও আত্মাকে স্পর্শ করবে না; কারণ বেহেশত হবে নূতন পৃথিবী যার সাথে এই পৃথিবীর কোনও সামঞ্জস্যই খুঁজে পাওয়া যাবে না।
আয়াতঃ 035.036
আর যারা কাফের হয়েছে, তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের আগুন। তাদেরকে মৃত্যুর আদেশও দেয়া হবে না যে, তারা মরে যাবে এবং তাদের থেকে তার শাস্তিও লাঘব করা হবে না। আমি প্রত্যেক অকৃতজ্ঞকে এভাবেই শাস্তি দিয়ে থাকি।
But those who disbelieve, (in the Oneness of Allâh – Islâmic Monotheism) for them will be the Fire of Hell. Neither it will have a complete killing effect on them so that they die, nor shall its torment be lightened for them. Thus do We requite every disbeliever!
وَالَّذِينَ كَفَرُوا لَهُمْ نَارُ جَهَنَّمَ لَا يُقْضَى عَلَيْهِمْ فَيَمُوتُوا وَلَا يُخَفَّفُ عَنْهُم مِّنْ عَذَابِهَا كَذَلِكَ نَجْزِي كُلَّ كَفُورٍ
Waallatheena kafaroo lahum naru jahannama la yuqda AAalayhim fayamootoo wala yukhaffafu AAanhum min AAathabiha kathalika najzee kulla kafoorin
YUSUFALI: But those who reject (Allah) – for them will be the Fire of Hell: No term shall be determined for them, so they should die, nor shall its Penalty be lightened for them. Thus do We reward every ungrateful one!
PICKTHAL: But as for those who disbelieve, for them is fire of hell; it taketh not complete effect upon them so that they can die, nor is its torment lightened for them. Thus We punish every ingrate.
SHAKIR: And (as for) those who disbelieve, for them is the fire of hell; it shall not be finished with them entirely so that they should die, nor shall the chastisement thereof be lightened to them: even thus do We retribute every ungrateful one.
KHALIFA: As for those who disbelieve, they have incurred the fire of Hell, where they are never finished by death, nor is the retribution ever commuted for them. We thus requite the unappreciative.
৩৬। কিন্তু যারা [আল্লাহকে ] প্রত্যাখান করে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন ৩৯২৫। তাদের জন্য কোন নির্দ্দিষ্ট সময়কাল নির্ধারিত করা হবে না যে, তারা মরবে; অথবা তাদের শাস্তি লাঘব করা হবে না। এভাবেই প্রতিটি অকৃতজ্ঞকে শাস্তি দিয়ে থাকি।
৩৯২৫। ‘জাহান্নামের আগুন’ হচ্ছে বেহেশতের বাগানের প্রতীকের ঠিক বিপরীত অবস্থা। বেহেশতের সুখ-শান্তি, আরাম-আয়েশ, এবং পরিতৃপ্তির পরিবর্তে জাহান্নামে থাকবে যন্ত্রণা , কষ্ট , উদ্বেগ, দুঃশ্চিন্তা ইত্যাদি। সম্মানের পরিবর্তে থাকবে অপমান। বেহেশতের সুখ শান্তি যেমন অসীম ও চিরস্থায়ী হবে , দোযখের যন্ত্রনাও সেরূপ একই ভাবে চলবে, কখনও প্রশমিত করা হবে না পাপীকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলা হবে না। কারণ সম্পূর্ণ ধ্বংস হলে জাহান্নামের যন্ত্রনা ভোগ করবে কে ?
আয়াতঃ 035.037
সেখানে তারা আর্ত চিৎকার করে বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, বের করুন আমাদেরকে, আমরা সৎকাজ করব, পূর্বে যা করতাম, তা করব না। (আল্লাহ বলবেন) আমি কি তোমাদেরকে এতটা বয়স দেইনি, যাতে যা চিন্তা করার বিষয় চিন্তা করতে পারতে? উপরন্তু তোমাদের কাছে সতর্ককারীও আগমন করেছিল। অতএব আস্বাদন কর। জালেমদের জন্যে কোন সাহায্যকারী নেই।
Therein they will cry: ”Our Lord! Bring us out, we shall do righteous good deeds, not (the evil deeds) that we used to do.” (Allâh will reply): ”Did We not give you lives long enough, so that whosoever would receive admonition, – could receive it? And the warner came to you. So taste you (the evil of your deeds). For the Zâlimûn (polytheists and wrongdoers, etc.) there is no helper.”
وَهُمْ يَصْطَرِخُونَ فِيهَا رَبَّنَا أَخْرِجْنَا نَعْمَلْ صَالِحًا غَيْرَ الَّذِي كُنَّا نَعْمَلُ أَوَلَمْ نُعَمِّرْكُم مَّا يَتَذَكَّرُ فِيهِ مَن تَذَكَّرَ وَجَاءكُمُ النَّذِيرُ فَذُوقُوا فَمَا لِلظَّالِمِينَ مِن نَّصِيرٍ
Wahum yastarikhoona feeha rabbana akhrijna naAAmal salihan ghayra allathee kunna naAAmalu awa lam nuAAammirkum ma yatathakkaru feehi man tathakkara wajaakumu alnnatheeru fathooqoo fama lilththalimeena min naseerin
YUSUFALI: Therein will they cry aloud (for assistance): “Our Lord! Bring us out: we shall work righteousness, not the (deeds) we used to do!” – “Did We not give you long enough life so that he that would should receive admonition? and (moreover) the warner came to you. So taste ye (the fruits of your deeds): for the wrong-doers there is no helper.”
PICKTHAL: And they cry for help there, (saying): Our Lord! Release us; we will do right, not (the wrong) that we used to do. Did not We grant you a life long enough for him who reflected to reflect therein? And the warner came unto you. Now taste (the flavour of your deeds), for evil-doers have no helper.
SHAKIR: And they shall cry therein for succour: O our Lord ! take us out, we will do good deeds other than those which we used to do. Did We not preserve you alive long enough, so that he who would be mindful in it should mind? And there came to you the warner; therefore taste; because for the unjust, there is no helper.
KHALIFA: They will scream therein, “Our Lord, if you get us out of here, we will work righteousness, instead of the works we used to do.” Did we not give you a life-long chance, with continuous reminders for those who would take heed? Did you not receive the warner? Therefore, taste (the consequences). The transgressors will have no one to help them.
৩৭। [ সাহায্যের জন্য ] সেখানে তারা আর্তনাদ করে বলবে, ” হে আমাদের প্রভু! আমাদের [এখান থেকে ] বের করে নাও ৩৯২৬। আমরা সৎকাজ করবো ৩৯২৭ ; পূর্বে যে [ কাজ ] করতাম তা করবো না। ” [আল্লাহ্ বলবেন ] , ” আমি কি তোমাদের যথেষ্ট দীর্ঘ জীবন দান করি নাই , যেনো তোমরা উপদেশ গ্রহণ করতে পার ? [উপরন্তু ] তোমাদের নিকট একজন সর্তককারীও এসেছিলো। সুতারাং [ তোমাদের কৃতকর্মের ফল ] আস্বাদন কর ৩৯২৮। পাপীদের জন্য কোন সাহায্যকারী নাই।”
৩৯২৬। দেখুন আয়াত [ ৩৩ : ১০৭ ]। জাহান্নামে পাপীদের অবস্থা বর্ণনা প্রসঙ্গে এখানে পাপীদের মানসিক অবস্থাকে তুলে ধরা হয়েছে। তাদের যে শুধু বাহ্যিক যন্ত্রনা ভোগ করতে হবে তাই-ই নয়, তারা মানসিক দিক থেকেও প্রচন্ড যন্ত্রণার সম্মুখীন হবে। মানসিক ভাবে তারা হবে অপমানিত , করুণার পাত্র ; – তারা আল্লাহ্র করুণা ভিক্ষা করে বারে বারে আবেদন করবে যে, তারা পৃথিবীতে তাদের পূর্ব কৃত কর্মের জন্য অনুতপ্ত,তাদের নিষ্কৃতি দিয়ে আর একবার সুযোগ দান করা হোক। কিন্তু অতীতকে আর ফিরিয়ে আনা যাবে না, পরলোকের, ভবিষ্যত জীবনের সুখের রাস্তা তারা নিজ হাতে বন্ধ করে দিয়েছে। আয়াত [ ৬ : ২৮ ] এ আল্লাহ্ বলেছেন এ সব অপরাধীদের সুযোগ দান করা বৃথা , তারা আবার তাদের পাপের পুণরাবৃত্তি ঘটাবে। ” যদি তারা পুণঃ প্রেরিত হয়, তবুও তাই করবে , যা তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিলো। ”
৩৯২৭। দেখুন [ ৭ : ৫৩ ]। অপরাধী পাপীরা আল্লাহ্র কাছে করুণা ভিক্ষা করে বলবে যে, তাদের আর একবার সুযোগ দান করা হোক। কিন্তু পৃথিবীতে তাদের সাবধান করা সত্ত্বেও তারা পাপের পঙ্কে নিমজ্জিত ছিলো। সুতারাং তাদের এই আবেদন অর্থহীন।
৩৯২৮। পৃথিবীতে আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের দীর্ঘ সময় দান করেন, অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধনের দ্বারা পাপের পথ পরিত্যাগ পূর্বক আল্লাহ্র প্রদর্শিত পথে ফিরে আসার জন্য।
৩৯২৮। বিশ্ব প্রকৃতি আল্লাহ্র নির্ধারিত আইনে চলে। প্রকৃতির আইন অক্ষরে অক্ষরে মানা হয়। যে কেউ প্রকৃতির আইনের বাইরে যেতে চায় তার ধ্বংস অনিবার্য। ঠিক সেভাবেই ইতিহাস বলে যে, যে জাতি আল্লাহ্র প্রদত্ত নৈতিক আইনকে অস্বীকার করেছে, তার ধ্বংস অনিবার্য। এগুলি হচ্ছে বিশ্ব প্রকৃতির মাঝে আল্লাহ্র নিদর্শন আদম সন্তানদের জন্য। এ ব্যতীত প্রতিটি লোকই আত্মার মাঝে ন্যায় -অন্যায়কে বিচার করার সামর্থ রাখে , উপরন্তু আল্লাহ্ যুগে যুগে নবী রসুলদের প্রেরণ করেছেন মানুষকে ন্যায়-অন্যায় , পাপ-পূণ্য , ভালো-মন্দ,সত্য -অসত্য শিক্ষাদান করার জন্য। এত কিছুর পরেও যাদের জ্ঞান চক্ষুর উম্মীলন ঘটে না , তারা ‘জালিম’ বই আর কিছু নয়। এক্ষেত্রে দোযখের শাস্তি হচ্ছে তাদের কর্মের অবধারিত ফল যা তারা দুনিয়াতে অর্জন করেছে।
আয়াতঃ 035.038
আল্লাহ আসমান ও যমীনের অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে জ্ঞাত। তিনি অন্তরের বিষয় সম্পর্কেও সবিশেষ অবহিত।
Verily, Allâh is the AllKnower of the unseen of the heavens and the earth. Verily! He is the AllKnower of that is in the breasts.
إِنَّ اللَّهَ عَالِمُ غَيْبِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ
Inna Allaha AAalimu ghaybi alssamawati waal-ardi innahu AAaleemun bithati alssudoori
YUSUFALI: Verily Allah knows (all) the hidden things of the heavens and the earth: verily He has full knowledge of all that is in (men’s) hearts.
PICKTHAL: Lo! Allah is the Knower of the Unseen of the heavens and the earth. Lo! He is Aware of the secret of (men’s) breasts.
SHAKIR: Surely Allah is the Knower of what is unseen m the heavens and the earth; surely He is Cognizant of what IS m the hearts.
KHALIFA: GOD is the Knower of the future of the heavens and the earth. He is the Knower of all innermost thoughts.
রুকু – ৫
৩৮। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর [সকল ] লুক্কায়িত বিষয় অবশ্যই আল্লাহ্ জ্ঞাত ৩৯২৯। [মানুষের ] অন্তরে যা [লুকিয়ে ] আছে সে সম্বন্ধে তিনি সবিশেষ অবহিত।
৩৯২৯। মহাবিশ্ব ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে সকল বিষয়ে আল্লাহ্ অবগত। আল্লাহ্ শুধু যে , মূর্ত বা বাস্তব বিষয়েই অবগত তাই-ই নয় , তিনি বিমূর্ত জিনিষ , যেমন মানুষের অন্তরের অনুভূতি, উদ্দেশ্য ,গোপন পরিকল্পনা , ইচ্ছা ও কাজ সব বিষয়েই সবিশেষ অবগত আছেন।
অনুবাদকের মন্তব্য : আজকের ইন্টারনেটের যুগে ধারণাটি অতি প্রাঞ্জল। কারণ মানুষের মস্তিষ্ক একটি কম্পিউটারের ন্যায়। সকল চিন্তা , ভাবনা , নিয়ত বা ইচ্ছার উৎপত্তি সেখানেই। পরবর্তীতে তা মানুষ কার্যে পরিণত করে থাকে মাত্র। মানুষের মস্তিষ্ক রূপ কম্পিউটারের সাথে স্রষ্টার মূল কম্পিউটার যাকে ‘লওহে মাহ্ফুজ’ বলা হয় বা রক্ষিত ফলক বলা হয় তাতে সংযুক্ত হয়। সুতারাং মানুষের চিন্তা , ভাবনা , উদ্দেশ্য সবই মূহুর্তকালের মধ্যে রক্ষিত হয়ে যায় স্ব স্ব আমলনামায়।
আয়াতঃ 035.039
তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে স্বীয় প্রতিনিধি করেছেন। অতএব যে কুফরী করবে তার কুফরী তার উপরই বর্তাবে। কাফেরদের কুফর কেবল তাদের পালনকর্তার ক্রোধই বৃদ্ধি করে এবং কাফেরদের কুফর কেবল তাদের ক্ষতিই বৃদ্ধি করে।
He it is Who has made you successors generations after generations in the earth, so whosoever disbelieves (in Islâmic Monotheism) on him will be his disbelief. And the disbelief of the disbelievers adds nothing but hatred with their Lord. And the disbelief of the disbelievers adds nothing but loss.
هُوَ الَّذِي جَعَلَكُمْ خَلَائِفَ فِي الْأَرْضِ فَمَن كَفَرَ فَعَلَيْهِ كُفْرُهُ وَلَا يَزِيدُ الْكَافِرِينَ كُفْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ إِلَّا مَقْتًا وَلَا يَزِيدُ الْكَافِرِينَ كُفْرُهُمْ إِلَّا خَسَارًا
Huwa allathee jaAAalakum khala-ifa fee al-ardi faman kafara faAAalayhi kufruhu wala yazeedu alkafireena kufruhum AAinda rabbihim illa maqtan wala yazeedu alkafireena kufruhum illa khasaran
YUSUFALI: He it is That has made you inheritors in the earth: if, then, any do reject (Allah), their rejection (works) against themselves: their rejection but adds to the odium for the Unbelievers in the sight of their Lord: their rejection but adds to (their own) undoing.
PICKTHAL: He it is Who hath made you regents in the earth; so he who disbelieveth, his disbelief be on his own head. Their disbelief increaseth for the disbelievers, in their Lord’s sight, naught save abhorrence. Their disbelief increaseth for the disbelievers naught save loss.
SHAKIR: He it is Who made you rulers in the land; therefore whoever disbelieves, his unbelief is against himself; and their unbelief does not increase the disbelievers with their Lord in anything except hatred; and their unbelief does not increase the disbelievers m anything except loss.
KHALIFA: He is the One who made you inheritors of the earth. Subsequently, whoever chooses to disbelieve does so to his own detriment. The disbelief of the disbelievers only augments their Lord’s abhorrence towards them. The disbelief of the disbelievers plunges them deeper into loss.
৩৯। তিনিই তোমাদের পৃথিবীর উত্তরাধিকারী করেছেন ৩৯৩০। এর পরেও যদি কেউ আল্লাহ্কে প্রত্যাখান করে ,তবে তাদের প্রত্যাখান তাদের নিজের বিরুদ্ধেই [কাজ ] করবে। অবিশ্বাসীদের প্রত্যাখান শুধু তো তাদের প্রভুর ঘৃণাই বৃদ্ধি করে। তাদের প্রত্যাখান তো তাদের [ নিজেদেরই ] ধ্বংস ডেকে আনে ৩৯৩১।
৩৯৩০। ‘Khalaif’ – অর্থ প্রতিনিধি বা উত্তরাধিকারী। শব্দটি দুভাবে ব্যাখ্যা কর যায়।
১) পৃথিবীতে আল্লাহ্র প্রতিনিধি , এবং
২) পাপ কাজের দ্বারা যারা পৃথিবীতে নিজের অধিকার হারিয়েছে তাদের স্থলাভিষিক্ত হওয়া উত্তরাধিকারী।
আল্লাহ্র ১) প্রতিনিধিত্বের কর্তব্য বোধ , দায়িত্ব ও সম্মান সম্বন্ধে সজাগ থেকে এবং ২) অতীতের জাতিসমূহের উদাহরণ থেকে মানুষের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত এবং আল্লাহ্র প্রদর্শিত পথে থেকে স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত। দেখুন [৬ : ১৬৫ ] এবং টিকা ৯৮৮। আল্লাহ্র প্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা শুধুমাত্র তারই, যারা আল্লাহ্র নিদ্দের্শিত পথে থেকে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার অধিকারী। যারা পাপী ও কুফরী করে তারা নয়।
৩৯৩১। অস্ট্রেলিয়াতে আদিবাসীদের [ Aborigin ] এক প্রকার অস্ত্র আছে যার নাম বুমেরাং। এই অস্ত্রটির বিশেষত্ব হচ্ছে , অস্ত্রটি শত্রুকে ছুঁড়ে মারা হলে , যদি তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় তবে তা ফিরে এসে অস্ত্রের মালিককেই আঘাত হানে। ঠিক সেরকম হচ্ছে পৃথিবীতে কাফেরদের অবস্থা। তারা তাদের কুফরী ও পাপের দ্বারা আল্লাহ্র কোনও ক্ষতি করতে পারে না। তারা নিজেদের আত্মারই ক্ষতি করে থাকে। ফলে তাদের আত্মা আল্লাহ্র ঘৃণার পাত্র , তারা আল্লাহ্র চোখে সম্মান হারায় , তাদের কৃতকর্মের দরুণ এবং ক্রোধের বৃদ্ধি করে।
আয়াতঃ 035.040
বলুন, তোমরা কি তোমাদের সে শরীকদের কথা ভেবে দেখেছ, যাদেরকে আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা ডাক? তারা পৃথিবীতে কিছু সৃষ্টি করে থাকলে আমাকে দেখাও। না আসমান সৃষ্টিতে তাদের কোন অংশ আছে, না আমি তাদেরকে কোন কিতাব দিয়েছি যে, তারা তার দলীলের উপর কায়েম রয়েছে, বরং জালেমরা একে অপরকে কেবল প্রতারণামূলক ওয়াদা দিয়ে থাকে।
Say (O Muhammad SAW): ”Tell me or inform me (what) do you think about your (socalled) partnergods to whom you call upon besides Allâh, show me, what they have created of the earth? Or have they any share in the heavens? Or have We given them a Book, so that they act on clear proof therefrom? Nay, the Zâlimûn (polytheists and wrongdoers, etc.) promise one another nothing but delusions.”
قُلْ أَرَأَيْتُمْ شُرَكَاءكُمُ الَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ أَرُونِي مَاذَا خَلَقُوا مِنَ الْأَرْضِ أَمْ لَهُمْ شِرْكٌ فِي السَّمَاوَاتِ أَمْ آتَيْنَاهُمْ كِتَابًا فَهُمْ عَلَى بَيِّنَةٍ مِّنْهُ بَلْ إِن يَعِدُ الظَّالِمُونَ بَعْضُهُم بَعْضًا إِلَّا غُرُورًا
Qul araaytum shurakaakumu allatheena tadAAoona min dooni Allahi aroonee matha khalaqoo mina al-ardi am lahum shirkun fee alssamawati am ataynahum kitaban fahum AAala bayyinatin minhu bal in yaAAidu alththalimoona baAAduhum baAAdan illa ghurooran
YUSUFALI: Say: “Have ye seen (these) ‘Partners’ of yours whom ye call upon besides Allah? Show Me what it is they have created in the (wide) earth. Or have they a share in the heavens? Or have We given them a Book from which they (can derive) clear (evidence)?- Nay, the wrong-doers promise each other nothing but delusions.
PICKTHAL: Say: Have ye seen your partner-gods to whom ye pray beside Allah? Show me what they created of the earth! Or have they any portion in the heavens? Or have We given them a scripture so they act on clear proof therefrom? Nay, the evil-doers promise one another only to deceive.
SHAKIR: Say: Have you considered your associates which you call upon besides Allah? Show me what part of the earth they have created, or have they any share in the heavens; or, have We given them a book so that they follow a clear argument thereof? Nay, the unjust do not hold out promises one to another but only to deceive.
KHALIFA: Say, “Consider the idols you have set up beside GOD; show me what on earth have they created.” Do they own any partnership in the heavens? Have we given them a book wherein there is no doubt? Indeed, what the transgressors promise one another is no more than an illusion.
৪০। বল , ” তোমরা আল্লাহ্র পরিবর্তে যাদের ডাক , সেই শরীকদের কি তোমরা দেখেছ ? ৩৯৩২ তারা এই [বিশাল ] পৃথিবীতে কি সৃষ্টি করেছে আমাকে দেখাও। অথবা আকাশ মন্ডলী সৃষ্টিতে কোন অংশ আছে কি ? অথবা তাদের কি আমি কোন কিতাব দিয়েছি ,যা থেকে তারা সুষ্পষ্ট [ প্রমাণ ] লাভ করতে পারে ? না, বরং পাপীরা একজন অন্যজনকে প্রবঞ্চনা ব্যতীত প্রতিশ্রুতি দেয় না। ”
৩৯৩২। যারা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য উপাস্যের উপাসনা করে তাদের জন্য কয়েকটি প্রশ্ন এই আয়াতে উত্থাপন করা হয়েছে। প্রশ্নগুলি করা হয়েছে সংক্ষিপ্ত ও স্পষ্টভাবে :
১) তোমরা যাদের উপাসনা কর তাদের কথা চিন্তা করে দেখেছ কি ? এখানে চিন্তা করতে বলা হয়েছে তাদের বাস্তবতা সম্বন্ধে। পৃথিবীতে অনেক কিছুই চোখে দেখা যায় না কিন্তু বাস্তবে অনুভব করা যায় যেমন : বায়ু চোখে দেখা যায় না , কিন্তু অনুভব করা যায়। রঞ্জন রশ্মি বা X-ray, স্বাভাবিক শ্রুতিশক্তির সীমাবর্হিভূত শব্দ [ ultra sound ] ইত্যাদি বহু বস্তু আছে যা চর্ম চক্ষুতে দেখা যায় না কিন্তু বাস্তবে যার অস্তিত্ব বিদ্যমান। তোমাদের উপাস্য দেব-দেবীর কি সেরূপ কোন অস্তিত্ব বর্তমান , যার সাহায্যে তোমরা তার বাস্তবতা অনুভব কর ? যারা আল্লাহতে প্রকৃত বিশ্বাসী তারা আত্মার মাঝে আল্লাহকে চক্ষুতে না দেখেও তাঁর অস্তিত্ব অনুভব করে। মিথ্যা উপাস্যের উপাসকরা কি তা করে ?
২) তাদের দেবদেবীরা কি পৃথিবীতে কিছু সৃষ্টি করতে সক্ষম ? মানুষ ক্ষমতা ও সম্পদকে পৃথিবীতে সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী মনে করে তাকেই জীবনের উপাস্যের বিষয় মনে করতে পারে , কিন্তু তা তো শুধুমাত্র নিজের স্বার্থের জন্য প্রতিযোগীতা বই আর কিছু নয়। সম্পদ ও ক্ষমতা মানুষকে বা পৃথিবীকে কোনও কিছুই দেয়ার ক্ষমতা রাখে না।
৩) এসব মিথ্যা উপাস্যেরা কি আকাশমন্ডলী সৃষ্টিতে অংশ গ্রহণ করে ? অবশ্যই তারা তা করতে সক্ষম নয়।
৪) তারা কি কোন কিতাবের অধিকারী বা তারা আল্লাহ্র নিকট থেকে কিতাব লাভ করেছে ? যার সাহায্যে তারা মানুষকে শিক্ষা দান করবে ? আল্লাহ্ একমাত্র তাঁর নবী ও রসুলদের এ দায়িত্ব অর্পন করেছেন -অন্য কাউকে নয়। তাঁরাই হচেছন এক আল্লাহ্র কর্তৃত্বের প্রধান সাক্ষী। প্রকৃতপক্ষে মিথ্যা সব সময়েই মিথ্যা – এবং এক মিথ্যা অন্য মিথ্যার সাহায্যে বিভ্রান্তের সৃষ্টি করে থাকে।
আয়াতঃ 035.041
নিশ্চয় আল্লাহ আসমান ও যমীনকে স্থির রাখেন, যাতে টলে না যায়। যদি এগুলো টলে যায় তবে তিনি ব্যতীত কে এগুলোকে স্থির রাখবে? তিনি সহনশীল, ক্ষমাশীল।
Verily! Allâh grasps the heavens and the earth lest they move away from their places, and if they were to move away from their places, there is not one that could grasp them after Him. Truly, He is Ever Most Forbearing, OftForgiving.
إِنَّ اللَّهَ يُمْسِكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ أَن تَزُولَا وَلَئِن زَالَتَا إِنْ أَمْسَكَهُمَا مِنْ أَحَدٍ مِّن بَعْدِهِ إِنَّهُ كَانَ حَلِيمًا غَفُورًا
Inna Allaha yumsiku alssamawati waal-arda an tazoola wala-in zalata in amsakahuma min ahadin min baAAdihi innahu kana haleeman ghafooran
YUSUFALI: It is Allah Who sustains the heavens and the earth, lest they cease (to function): and if they should fail, there is none – not one – can sustain them thereafter: Verily He is Most Forbearing, Oft-Forgiving.
PICKTHAL: Lo! Allah graspeth the heavens and the earth that they deviate not, and if they were to deviate there is not one that could grasp them after Him. Lo! He is ever Clement, Forgiving.
SHAKIR: Surely Allah upholds the heavens and the earth lest they come to naught; and if they should come to naught, there Is none who can uphold them after Him; surely He is the Forbearing, the Forgiving.
KHALIFA: GOD is the One who holds the heavens and the earth, lest they vanish. If anyone else is to hold them, they will most certainly vanish. He is Clement, Forgiving.
৪১। আল্লাহই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীকে স্থির করে [ ধরে ] রেখেছেন , যাতে করে ওরা [ স্বীয় কক্ষ পথ ] বিচ্যুত না হতে পারে ৩৯৩৩। যদি [ কখনো ] ওরা কক্ষচ্যুত হয়েই পড়ে তাহলে তিনি ব্যতীত কে উহাদের সংরক্ষণ করবে ? তিনি তো অতি সহনশীল , বারে বারে ক্ষমাশীল ৩৯৩৪।
৩৯৩৩। আকাশ , পৃথিবী ও মহাবিশ্ব আল্লাহ্র অপার মহিমার প্রকাশ। চলমান এই মহাবিশ্ব অনন্তের দিকে প্রতি নিয়ত ধাবিত হচ্ছে। এর প্রতিমূহুর্তের রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকেন স্রষ্টা। যদি আল্লাহ্ এর রক্ষণাবেক্ষণ না করতেন তবে চলমান এই মহাবিশ্বের প্রতিমূহুর্তে স্থানচ্যুতি ঘটতো এবং বিপর্যয় ঘটে যেতো। আল্লাহ্র ক্ষমতার বিশালত্ব বুঝানোর জন্য এই উপমাকে তুলে ধরা হয়েছে।
৩৯৩৪। মহাবিশ্বে নক্ষত্রপুঞ্জ, সূর্য, চন্দ্র, পৃথিবী ,গ্রহ, নক্ষত্র , সকলেই আল্লাহ্র অমোঘ নিয়মের অধীন। কেউ একচুলও আল্লাহ্র আইন লঙ্ঘন করে না। পৃথিবীতেও তরু-লতা ,পশু-প্রাণী, সকলেই আল্লাহ্র আইন অনুযায়ী পরিচালিত হয়। কেউই তা লঙ্ঘন করে না। শুধু মানুষই আল্লাহ্র বিধান বা নিয়ম লঙ্ঘন করে থাকে। এই আয়াতে বলা হয়েছে মানুষের ছোট খাট দোষত্রুটি , ভুল-ভ্রান্তির জন্য পরম করুণাময় আল্লাহ্ শাস্তি দান করেন না। আল্লাহ্ তো সহনশীন ও ক্ষমাপরায়ণ।
আয়াতঃ 035.042
তারা জোর শপথ করে বলত, তাদের কাছে কোন সতর্ককারী আগমন করলে তারা অন্য যে কোন সম্প্রদায় অপেক্ষা অধিকতর সৎপথে চলবে। অতঃপর যখন তাদের কাছে সতর্ককারী আগমন করল, তখন তাদের ঘৃণাই কেবল বেড়ে গেল।
And they swore by Allâh their most binding oath, that if a warner came to them, they would be more guided than any of the nations (before them), yet when a warner (Muhammad SAW) came to them, it increased in them nothing but flight (from the truth),
وَأَقْسَمُوا بِاللَّهِ جَهْدَ أَيْمَانِهِمْ لَئِن جَاءهُمْ نَذِيرٌ لَّيَكُونُنَّ أَهْدَى مِنْ إِحْدَى الْأُمَمِ فَلَمَّا جَاءهُمْ نَذِيرٌ مَّا زَادَهُمْ إِلَّا نُفُورًا
Waaqsamoo biAllahi jahda aymanihim la-in jaahum natheerun layakoonunna ahda min ihda al-omami falamma jaahum natheerun ma zadahum illa nufooran
YUSUFALI: They swore their strongest oaths by Allah that if a warner came to them, they would follow his guidance better than any (other) of the Peoples: But when a warner came to them, it has only increased their flight (from righteousness),-
PICKTHAL: And they swore by Allah, their most binding oath, that if a warner came unto them they would be more tractable than any of the nations; yet, when a warner came unto them it aroused in them naught save repugnance,
SHAKIR: And they swore by Allah with the strongest of their oaths that if there came to them a warner they would be better guided than any of the nations; but when there came to them a warner it increased them in naught but aversion.
KHALIFA: They swore by GOD solemnly that if a warner went to them, they would be better guided than a certain congregation! However, now that the warner did come to them, this only plunged them deeper into aversion.
৪২। ওরা আল্লাহ্র নামে কঠিন শপথ করে বলে যে, যদি ওদের নিকট কোন সর্তককারী আসে তবে নিশ্চয় ওরা অন্য সকল জাতি অপেক্ষা , সুপথের অধিকতর অনুসরণ করবে ৩৯৩৫। কিন্তু যখন তাদের নিকট একজন সর্তককারীর আগমন হলো , তখন তা কেবল তাদের [ ধর্ম পথ থেকে ] বিমুখতাই বৃদ্ধি করলো, –
৩৯৩৫। দেখুন আয়াত [ ৬ : ১৫৭ ]। কোরাণের প্রতিটি আয়াত দ্ব্যর্থবোধক। ইসলাম প্রচারের সময়ে রসুলের জীবনের প্রেক্ষিতে সমসাময়িক অর্থ এবং ঐ প্রেক্ষাপটে সর্বসাধারণের জন্য যুগকাল অতিক্রান্ত উপদেশ বা বিবরণ যা সকল যুগের মানুষের জন্য প্রযোজ্য। এই আয়াতে কোরেশ সম্প্রদায়ের উল্লেখ করা হয়েছে , কিন্তু এখানে কোরেশদের যে মানসিকতা তা পৃথিবীর সকল পাপীদের জন্য প্রযোজ্য।
কিতাবধারী জাতিদের সম্পর্কে কোরেশদের ধারণা ছিলো অত্যন্ত নিম্নমানের। গর্বিত ও উন্নাসিক বক্তব্য দিয়ে নিজেদের সমর্থন করা ব্যতীত তা অন্য কিছু নয়। তারা হৈ চৈ করতো এই বলে যে, ইহুদী ও খৃষ্টানেরা নিজেদের ধর্মচ্যুত হয়েছে , কারণ তারা তাদের কাছে পাঠানো আল্লাহ্র প্রত্যাদেশকে অনুসরণ করে না। তারা বলতো যে আল্লাহ্ তাদের নিকট কোনও নবী বা রসুল পাঠান নাই। পাঠালে তারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিত যে তারা আল্লাহ্র অত্যন্ত বাধ্য এবং প্রত্যাদেশের প্রতি বিশ্বস্ত থাকতো এবং তারা আন্তরিক ভাবেই আল্লাহ্র বিধান বা আইনকে মেনে চলতো। একথা তারা রসুলের আগমনের পূর্বে সদর্পে ঘোষণা করতো। কিন্তু যখন প্রকৃতপক্ষে রসুল [ সা ] আল্লাহ্র নিকট থেকে নবুয়ত প্রাপ্ত হলেন এবং তিনি তা প্রচার আরম্ভ করলেন , তারাই সর্ব প্রথম তা থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিল এবং প্রত্যাখান করলো। তারা সত্যকে পরিহার করে ক্রমাগত দূরে সরে যেতে থাকলো। কোরেশদের এই মনোভাব সার্বজনীন। পৃথিবীতে সকল যুগে সকল পাপীদের এই একই মনোভাব – তারা অপরের ছিদ্রান্বেষী এবং নিজের পাপ কাজের জন্য সর্বদা কৈফিয়ত প্রস্তুত করে থাকে। কিন্তু যখন তাদের সম্মুখ থেকে সকল বাধা দূর করা হয় এবং সত্যকে গ্রহণ করার মত পরিবেশ সৃষ্টি করা হয় ; তারা সত্য এবং সৎকাজ থেকে বিরত থাকে এবং সত্য থেকে দূরে সরে যেতে থাকে।
আয়াতঃ 035.043
পৃথিবীতে ঔদ্ধত্যের কারণে এবং কুচক্রের কারণে। কুচক্র কুচক্রীদেরকেই ঘিরে ধরে। তারা কেবল পূর্ববর্তীদের দশারই অপেক্ষা করছে। অতএব আপনি আল্লাহর বিধানে পরিবর্তন পাবেন না এবং আল্লাহর রীতি-নীতিতে কোন রকম বিচ্যুতিও পাবেন না।
(They took to flight because of their) arrogance in the land and their plotting of evil. But the evil plot encompasses only him who makes it. Then, can they expect anything (else), but the Sunnah (way of dealing) of the peoples of old? So no change will you find in Allâh’s Sunnah (way of dealing), and no turning off will you find in Allâh’s Sunnah (way of dealing).
اسْتِكْبَارًا فِي الْأَرْضِ وَمَكْرَ السَّيِّئِ وَلَا يَحِيقُ الْمَكْرُ السَّيِّئُ إِلَّا بِأَهْلِهِ فَهَلْ يَنظُرُونَ إِلَّا سُنَّتَ الْأَوَّلِينَ فَلَن تَجِدَ لِسُنَّتِ اللَّهِ تَبْدِيلًا وَلَن تَجِدَ لِسُنَّتِ اللَّهِ تَحْوِيلًا
Istikbaran fee al-ardi wamakra alssayyi-i wala yaheequ almakru alssayyi-o illa bi-ahlihi fahal yanthuroona illa sunnata al-awwaleena falan tajida lisunnati Allahi tabdeelan walan tajida lisunnati Allahi tahweelan
YUSUFALI: On account of their arrogance in the land and their plotting of Evil, but the plotting of Evil will hem in only the authors thereof. Now are they but looking for the way the ancients were dealt with? But no change wilt thou find in Allah’s way (of dealing): no turning off wilt thou find in Allah’s way (of dealing).
PICKTHAL: (Shown in their) behaving arrogantly in the land and plotting evil; and the evil plot encloseth but the men who make it. Then, can they expect aught save the treatment of the folk of old? Thou wilt not find for Allah’s way of treatment any substitute, nor wilt thou find for Allah’s way of treatment aught of power to change.
SHAKIR: (In) behaving proudly in the land and in planning evil; and the evil plans shall not beset any save the authors of it. Then should they wait for aught except the way of the former people? For you shall not find any alteration in the course of Allah; and you shall not find any change in the course of Allah.
KHALIFA: They resorted to arrogance on earth, and evil scheming, and the evil schemes only backfire on those who scheme them. Should they then expect anything but the fate of those who did the same things in the past? You will find that GOD’s system is never changeable; you will find that GOD’s system is immutable.
৪৩। কারণ ছিলো তাদের ঔদ্ধত্য এবং কূট ষড়যন্ত্র ৩৯৩৬। কিন্তু কূট ষড়যন্ত্র উহার সূচনাকারীদেরকেই পরিবেষ্টন করবে। তবে কি এখন ওরা পূর্ববর্তীদের সময় থেকে যে [ শাস্তির ] রীতি চলে আসছে তারই জন্য অপেক্ষা করছে মাত্র ? ৩৯৩৭। কিন্তু তুমি কখনও আল্লাহ্র নিয়মের কোন পরিবর্তন পাবে না ৩৯৩৮। আল্লাহ্র নিয়মকে বন্ধ হতেও দেখবে না।
৩৯৩৬। কেন পাপীরা সত্যকে প্রত্যাখান করে সে সম্বন্ধে এখানে দুটো কারণ উত্থাপন করা হয়েছে :
১) আধ্যাত্মিক ভাবে যারা মৃত তারা সাধারণ ভাবে হয় উদ্ধত অহংকারী এবং সত্য ও ন্যায়পরায়নতা , তাদের একটা ভান বই আর কিছু নয়। সুতারাং প্রকৃত সত্যকে তারা প্রত্যাখান করে থাকে।
২) পাপীরা সর্বদা আশা করে যে কূট ষড়যন্ত্র দ্বারা তারা সত্যের অগ্রগতিকে প্রতিহত করতে পারবে এবং সমূলে ধ্বংস করতে পারবে ; কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তারা নিজের ফাঁদেই আটকা পড়ে যায় এবং সত্য অপ্রতিহত গতিতে নিজস্ব পথ করে নেয় ও অগ্রসর হয়।
৩৯৩৭। মানুষের ইতিহাস বলে , পাপীদের সাথে আল্লাহ্র আচরণ তিন ধাপে প্রকাশ পায় :
১) প্রথমতঃ প্রথমেই আল্লাহ্ পাপীদের শাস্তি দান করেন না, তিনি সহনশীল ও ক্ষমাশীল। তিনি তাদের সময় ও সুযোগ দান করে থাকেন সৎ পথে ফিরে আসার জন্য ।
২) দ্বিতীয়তঃ তিনি তাঁর রসুলদের মাধ্যমে অথবা নিদর্শনের মাধ্যমে অথবা প্রত্যাদেশের মাধ্যমে পাপীদের সাবধান করে থাকেন।
৩) যদিও এর পরেও পাপীরা একগুঁয়ে অবাধ্যভাবে সত্যকে প্রত্যাখান করতে থাকে, তবে আল্লাহ্র ন্যায় বিচার বজ্রের মত নেমে আসে এবং তারা শাস্তির সম্মুখীন হয়। যারা অন্যায়কারী তাদেরই জিজ্ঞাসা করা হয়েছে , ” তোমরা কি এই সকল ধাপের প্রতীক্ষা করছো ? নাকি অনুতাপের মাধ্যমে আল্লাহ্র ক্ষমা লাভ করে ন্যায় ও সত্যের রাস্তায় জীবনকে পরিচালনা করবে ? ”
৩৯৩৮। আল্লাহ্র আইন অপরিবর্তনীয়। পাপীদের জন্য তার বিধান সর্বযুগে এক। মানুষের মনমানসিকতা পরিবর্তন হতে পারে . সে তার পথ পরিবর্তন করতে পারে , কিন্তু আল্লাহ্র হুকুম বা ইচ্ছা বা বিধানের কোনও পরিবর্তন নাই। কোনও কারণেই তার পরিবর্তন ঘটা সম্ভব নয়।
আয়াতঃ 035.044
তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না? করলে দেখত তাদের পূর্ববর্তীদের কি পরিণাম হয়েছে। অথচ তারা তাদের অপেক্ষা অধিকতর শক্তিশালী ছিল। আকাশ ও পৃথিবীতে কোন কিছুই আল্লাহকে অপারগ করতে পারে না। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ সর্বশক্তিমান।
Have they not travelled in the land, and seen what was the end of those before them, and they were superior to them in power? Allâh is not such that anything in the heavens or in the earth escapes Him. Verily, He is AllKnowing, AllOmnipotent.
أَوَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَيَنظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ وَكَانُوا أَشَدَّ مِنْهُمْ قُوَّةً وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُعْجِزَهُ مِن شَيْءٍ فِي السَّمَاوَاتِ وَلَا فِي الْأَرْضِ إِنَّهُ كَانَ عَلِيمًا قَدِيرًا
Awa lam yaseeroo fee al-ardi fayanthuroo kayfa kana AAaqibatu allatheena min qablihim wakanoo ashadda minhum quwwatan wama kana Allahu liyuAAjizahu min shay-in fee alssamawati wala fee al-ardi innahu kana AAaleeman qadeeran
YUSUFALI: Do they not travel through the earth, and see what was the End of those before them,- though they were superior to them in strength? Nor is Allah to be frustrated by anything whatever in the heavens or on earth: for He is All-Knowing. All-Powerful.
PICKTHAL: Have they not travelled in the land and seen the nature of the consequence for those who were before them, and they were mightier than these in power? Allah is not such that aught in the heavens or in the earth escapeth Him. Lo! He is the Wise, the Mighty.
SHAKIR: Have they not travelled in the land and seen how was the end of those before them while they were stronger than these in power? And Allah is not such that any thing in the heavens or in the earth should escape Him; surely He is Knowing, Powerful.
KHALIFA: Have they not roamed the earth and noted the consequences for those who preceded them? They were even stronger than they. Nothing can be hidden from GOD in the heavens, nor on earth. He is Omniscient, Omnipotent.
৪৪। তারা কি পৃথিবী ভ্রমণ করে না এবং দেখে না যে তাদের পূর্বে যারা গত হয়েছে তাদের কি পরিণাম হয়েছিলো ৩৯৩৯ – যদিও তারা শক্তিতে ছিলো ওদের অপেক্ষা অধিকতর বলশালী ? আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে এমন কিছু নাই যা আল্লাহকে পরাভূত করতে পারে। তিনি সব জানেন , সর্বশক্তিমান।
৩৯৩৯। দেখুন [ ৩০ : ৯ ]। আল্লাহ্র নবী, রাসুল , নিদর্শন বা প্রত্যাদেশের কোনও যুক্তি তর্কই যদি পাপীদের তাদের পাপ পথ থেকে বিরত করতে না পারে , এই আয়াতে আল্লাহ্ তাদের বলেছেন দেশ ভ্রমণ করে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে। পাপের শেষ পরিণতি সব সময়েই মন্দ। আল্লাহ্ প্রকৃতির আইনের ন্যায় নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবনে এই আইন সৃষ্টি করেছেন যে মন্দ ও পাপ, সমাজ জীবনে ক্ষতের সৃষ্টি করবে। সঠিক সময়ে সে ক্ষতের চিকিৎসা না করলে সে ক্ষত ধীরে ধীরে সমগ্র সমাজ জীবনে প্রসার লাভ করে সামাজিক ব্যধিতে পরিণত হবে – তখন সে সমাজের ধ্বংস অনিবার্য। কারণ এই-ই হচ্ছে আল্লাহ্র আইন। কোন ব্যক্তি বা জাতি বা প্রজন্ম যেনো মনে না করে যে, সে বা তারা বিশেষ কৌশল দ্বারা আল্লাহ্র এই আইনকে প্রতিহত করতে বা নিষ্কৃতি পেতে পারবে , তবে তা হবে মস্ত ভুল। পৃথিবীর সর্বোচ্চ শক্তিধর ও জ্ঞানীকেও আল্লাহ্র বিচার থেকে রেহাই দেয়া হবে না। পূর্ববর্তীদের এই পরিণাম থেকে শিক্ষা নিতে বলা হয়েছে।
আয়াতঃ 035.045
যদি আল্লাহ মানুষকে তাদের কৃতকর্মের কারণে পাকড়াও করতেন, তবে ভুপৃষ্ঠে চলমানকাউকে ছেড়ে দিতেন না। কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দেন। অতঃপর যখন সে নির্দিষ্ট মেয়াদ এসে যাবে তখন আল্লাহর সব বান্দা তাঁর দৃষ্টিতে থাকবে।
And if Allâh were to punish men for that which they earned, He would not leave a moving (living) creature on the surface of the earth, but He gives them respite to an appointed term, and when their term comes, then verily, Allâh is Ever AllSeer of His slaves.
وَلَوْ يُؤَاخِذُ اللَّهُ النَّاسَ بِمَا كَسَبُوا مَا تَرَكَ عَلَى ظَهْرِهَا مِن دَابَّةٍ وَلَكِن يُؤَخِّرُهُمْ إِلَى أَجَلٍ مُّسَمًّى فَإِذَا جَاء أَجَلُهُمْ فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ بِعِبَادِهِ بَصِيرًا
Walaw yu-akhithu Allahu alnnasa bima kasaboo ma taraka AAala thahriha min dabbatin walakin yu-akhkhiruhum ila ajalin musamman fa-itha jaa ajaluhum fa-inna Allaha kana biAAibadihi baseeran
YUSUFALI: If Allah were to punish men according to what they deserve. He would not leave on the back of the (earth) a single living creature: but He gives them respite for a stated Term: when their Term expires, verily Allah has in His sight all His Servants.
PICKTHAL: If Allah took mankind to task by that which they deserve, He would not leave a living creature on the surface of the earth; but He reprieveth them unto an appointed term, and when their term cometh – then verily (they will know that) Allah is ever Seer of His slaves.
SHAKIR: And were Allah to punish men for what they earn, He would not leave on the back of it any creature, but He respites them till an appointed term; so when their doom shall come, then surely Allah is Seeing with respect to His servants.
KHALIFA: If GOD punished the people for their sins, He would not leave a single creature on earth. But He respites them for a predetermined interim. Once their interim is fulfilled, then GOD is Seer of His servants.
৪৫। যদি আল্লাহ্ মানুষকে তার প্রাপ্য অনুযায়ী শাস্তি ৩৯৪০ দিতেন , তাহলে তিনি [ ভূপৃষ্ঠের ] কোন জীব জন্তুকেই রেহাই দিতেন না ৩৯৪১। কিন্তু তিনি তাদের এক নির্ধারিত সময় পর্যন্ত অবকাশ দেন, যখন তাদের নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যায়, তখন আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের পরিদর্শন করবেন ৩৯৪২।
৩৯৪০। দেখুন [ ১৬ : ৬১ ]। মানুষ মাত্রেই পাপ করে থাকে। সম্পূর্ণ নিষ্পাপ বলে দাবী কোনও সাধারণ মানুষ করতে পারে না। আল্লাহ্র করুণা ও ক্ষমা না থাকলে আমাদের মত সাধারণ মানুষের জীবনে মুক্তি ঘটতো না। আল্লাহ্র দয়া ও করুণা আমাদের আত্মাকে ধীরে ধীরে মুক্তির পথে অগ্রসরমান করে এবং শেষ পরিণতি লাভে সাহায্য করে।
৩৯৪১। ” কোনও জীব -জন্তু ” – এই বাক্যটি সম্ভবতঃ মানুষের সম্পর্কে প্রযোজ্য করা হয়েছে। কারণ মানুষের মাঝে বহু সম্ভাবনা , বহু ধরণের দুর্বলতা বিদ্যমান। পৃথিবীতে বহু ধরণের মানুষ বিদ্যমান। আবার এর অর্থ এও হতে পারে যে, পৃথিবীর সকল জীব-জন্তু কে সৃষ্টি করা হয়েছে , মানুষের কল্যাণের জন্য। মানুষকে কেন্দ্র করেই তাদের সৃষ্টি। মানুষকে আল্লাহ্ পৃথিবীর কর্তৃত্ব দান করেছেন এবং মানুষকে আল্লাহ্ পৃথিবীতে তাঁর প্রতিনিধি নিযুক্ত করেছেন।
৩৯৪২। ” আল্লাহ্ তার বান্দাদের পরিদর্শন করবেন।” এই বাক্যটির অর্থ আল্লাহ্ মানুষের সাথে সহনশীলতা , ক্ষমা ও দয়া ন্যায়ের সাথে ব্যবহার করে থাকেন। দেখুন টিকা ৩৯৩৭। যেখানে মানুষের প্রতি আল্লাহ্র আইন সমূহ তিনটি ধাপে বর্ণনা করা হয়েছে। মানুষকে সময় ও সুযোগ দেয়ার অর্থ এই নয় যে, ধূর্ত ও চালাক লোকেরা আল্লাহকে তাদের কৃতকর্মের অপরাধ ফাঁকি দিতে পারবে। আল্লাহ্র সর্তক প্রহরা ফাঁকি দেওয়ার সাধ্য কারও নাই। প্রত্যেককেই প্রত্যেকের কর্মফল ভোগ করতে হবে। আল্লাহ্র ন্যায় বিচার , করুণা ও দয়ার সাথে মিশ্রিত।