৫০। এবং আমি [ ঐ পানি ] তাদের মধ্যে বিতরণ করে থাকি যেনো তারা [ আমার ] প্রশংসা কীর্তন করতে পারে ৩১০৭। কিন্তু অধিকাংশ লোক কেবল অকৃতজ্ঞতাই প্রকাশ করে থাকে ৩১০৮।
৩১০৭। আল্লাহ্র করুণা আল্লাহ্র প্রজ্ঞারই স্বাক্ষর। পৃথিবীর বুকে পানির সুসম বন্টন সেই প্রজ্ঞারই স্বাক্ষর বহন করে। প্রকৃতিতে জীবনের জন্য যেখানে যতুটুকু বৃষ্টির প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই বন্টিত হয়েছে। আয়াত [২৫:৪৮-৫০] এর বর্ণনা ভিন্ন আঙ্গিকে তুলনা করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে পানিই জীবন। পানি ব্যতীত জীবন ধারণ কল্পনাও করা যায় না। এই হচ্ছে সাধারণ সত্য। এই সত্যের মাধ্যমে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে জীবনের মহত্তর ও বৃহত্তর সত্যের প্রতি। পানিকে আধ্যাত্মিক জীবনের প্রতীক হিসেবে তুলনা করা হয়েছে। পানির উপমার মাধ্যমে এই সত্যকে তুলে ধরা হয়েছে যে পানির অভাবে যেমন জীব মৃত্যুবরণ করে ঠিক সেরূপ আল্লাহ্র প্রত্যাদেশের করুণা ও নীতিমালার সঠিক প্রয়োগ ও অনুশীলন ব্যতীত আত্মার মৃত্যু [Spiritual death] ঘটে। এখানে বৃষ্টিকে আল্লাহ্র প্রত্যাদেশের সাথে প্রতীক হিসেবে তুলনা করা হয়েছে। আমাদের আত্মিক জীবন সমৃদ্ধকারী আল্লাহ্র করুণা বিভিন্নভাবে আমাদের মাঝে আত্মপ্রকাশ করে। কখনও তা প্রত্যাদেশের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়, কখনও তা আমরা বিপদ বিপর্যয়ের মাধ্যমে আত্মার মাঝে অনুভব করি। আত্মার প্রচন্ড অস্থিরতা ও বিপর্যয় , দুঃখ-ব্যথা অনেক সময়েই আমাদের মনোজগতের পরিবর্তন ঘটায়, যে পরিবর্তন আত্মার মাঝে প্রকৃত অনুভব ক্ষমতা এবং অনুধাবন ক্ষমতার জন্ম দেয়। আল্লাহ্র করুণাকে অনুভব করতে পারা এবং তাঁর মঙ্গলময় ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পনের মাধ্যমে ব্যক্তির আধ্যাত্মিক জগতে বিরাট পরিবর্তন ঘটে যায়। মেঘ যেরূপ বৃষ্টির বার্তা বহন করে , জাগতিক বিপদ বিপর্যয়ও সেরূপ আল্লাহ্র রহমত ও করুণার সুখবর দান করে। বৃষ্টি যেরূপ পৃথিবীর উপরিভাগের বর্জ্য দূর করে। আল্লাহ্র করুণা ধারা আত্মাকে কর পরিশুদ্ধ , পাপমুক্ত। বৃষ্টি যেরূপ মরুভূমিকে শষ্য শ্যামল ভূমিতে পরিণত করে, আল্লাহ্র করুণাও সেরূপ ঘুমন্ত বা মৃত আত্মাকে জাগরিত করে। বৃষ্টির পানি যেরূপ ভূপৃষ্ঠের সুপেয় পানির উৎসকে স্থির রাখে , আল্লাহ্র করুণার ধারাও সেরূপ আধ্যাত্মিক জগতের সকল প্রয়োজনের সঠিক ধারাটি বজায় রাখে। বৃষ্টি যেরূপ সকল পৃথিবীব্যপী ঘটে থাকে, আল্লাহ্র করুণা ধারাও সেরূপ সকল বিশ্বব্যপী পরিব্যপ্ত। তা স্থান ও কালের উর্দ্ধে। পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ্র বিশ্বব্যপী করুণার সম্বন্ধে বলা হয়েছে।
৩১০৮। আল্লাহ্র সীমাহীন করুণার প্রেক্ষাপটে মানুষের অকৃতজ্ঞতাকে তুলনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 025.051
আমি ইচ্ছা করলে প্রত্যেক জনপদে একজন ভয় প্রদর্শনকারী প্রেরণ করতে পারতাম।
And had We willed, We would have raised a warner in every town.
وَلَوْ شِئْنَا لَبَعَثْنَا فِي كُلِّ قَرْيَةٍ نَذِيرًا
Walaw shi/na labaAAathna fee kulli qaryatin natheeran
YUSUFALI: Had it been Our Will, We could have sent a warner to every centre of population.
PICKTHAL: If We willed, We could raise up a warner in every village.
SHAKIR: And if We had pleased We would certainly have raised a warner in every town.
KHALIFA: If we willed, we could have sent to every community a warner.
৫১। এবং যদি আমি ইচ্ছা করতাম তবে প্রতিটি জনপদে একজন সর্তককারী প্রেরণ করতে পারতাম ৩১০৯।
৩১০৯। আল্লাহ্র বাণী বা প্রত্যাদেশ বিশ্ব জগতের সকল মানুষের জন্য। তা জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলের জন্য সমভাবে বিতরণ করা হয়েছে। যেখানে আল্লাহ্ প্রয়োজন মনে করেছেন , তিনি সেখানে নবী ও রসুলদের প্রেরণ করে থাকেন। ইচ্ছা করলে তিনি প্রতি শহরে প্রতি গ্রামে তার নবীদের প্রেরণ করতে পারতেন। কিন্তু আল্লাহ্ তা করেন নাই কারণ তাঁর পরিকল্পনা সে ভাবে নাই। আল্লাহ্ প্রতিটি মানুষের অন্তরে তার বিবেক রূপ আলো প্রেরণ করেছেন। জাগ্রত বিবেকই হচ্ছে আল্লাহ্র নূর [Spiritual insight]। যে বিবেককে জাগ্রত রাখে সে আল্লাহ্র নূরকে আত্মার মাঝে ধারণ করে। তাঁর আত্মা কখনও পাপের পঙ্কিলতায় পথ হারায় না। আল্লাহ্র স্বাক্ষর বিদ্যমান সমস্ত বিশ্ব প্রকৃতিতে , তাঁর প্রত্যাদেশে। বিবেকের নূরে সমস্ত বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের মাঝে আল্লাহ্র স্বাক্ষরকে অনুভবের ক্ষমতা সে লাভ করে।
আয়াতঃ 025.052
অতএব আপনি কাফেরদের আনুগত্য করবেন না এবং তাদের সাথে এর সাহায্যে কঠোর সংগ্রাম করুন।
So obey not the disbelievers, but strive against them (by preaching) with the utmost endeavour, with it (the Qur’ân).
فَلَا تُطِعِ الْكَافِرِينَ وَجَاهِدْهُم بِهِ جِهَادًا كَبِيرًا
Fala tutiAAi alkafireena wajahidhum bihi jihadan kabeeran
YUSUFALI: Therefore listen not to the Unbelievers, but strive against them with the utmost strenuousness, with the (Qur’an).
PICKTHAL: So obey not the disbelievers, but strive against them herewith with a great endeavour.
SHAKIR: So do not follow the unbelievers, and strive against them a mighty striving with it.
KHALIFA: Therefore, do not obey the disbelievers, and strive against them with this, a great striving.