- সূরার নাম: সূরা ফুরকান
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা ফুরকান
আয়াতঃ 025.001
পরম কল্যাণময় তিনি যিনি তাঁর বান্দার প্রতি ফয়সালার গ্রন্থ অবর্তীণ করেছেন, যাতে সে বিশ্বজগতের জন্যে সতর্ককারী হয়।
Blessed be He Who sent down the criterion (of right and wrong, i.e. this Qur’ân) to His slave (Muhammad SAW) that he may be a warner to the ’Alamîn (mankind and jinns).
تَبَارَكَ الَّذِي نَزَّلَ الْفُرْقَانَ عَلَى عَبْدِهِ لِيَكُونَ لِلْعَالَمِينَ نَذِيرًا
Tabaraka allathee nazzala alfurqana AAala AAabdihi liyakoona lilAAalameena natheeran
YUSUFALI: Blessed is He who sent down the criterion to His servant, that it may be an admonition to all creatures;-
PICKTHAL: Blessed is He Who hath revealed unto His slave the Criterion (of right and wrong), that he may be a warner to the peoples.
SHAKIR: Blessed is He Who sent down the Furqan upon His servant that he may be a warner to the nations;
KHALIFA: Most blessed is the One who revealed the Statute Book to His servant, so he can serve as a warner to the whole world.
০১। অশেষ মঙ্গলময় ৩০৫২ তিনি, যিনি তাঁর বান্দার জন্য ন্যায় অন্যায়ের পার্থক্যকারী মানদণ্ড প্রেরণ করেছেন, ৩০৫৩ যেনো তা সমস্ত সৃষ্টির জন্য সতর্ককারী হতে পারে ; ৩০৫৪
৩০৫৩। ”ফুরকান” অর্থাৎ যার মাধ্যমে আমরা পাপ পূণ্যের পার্থক্য করতে পারি। এই আয়াতে ফুরকান দ্বারা কোরাণকে বোঝানো হয়েছে যা পূর্বেই আলোর প্রতীক দ্বারা উপস্থাপন করা হয়েছে। এই প্রতীককে এখানে আরও দীর্ঘায়িত করা হয়েছে এবং বৈষম্যগুলিকে তুলনা করা হয়েছে। এই তুলনার মাধ্যমেই আমরা পাপ ও পূণ্যের মধ্যে, সত্য ও মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য করতে পারি। ফুরকান আমাদের সেই আলোর পথে পরিচালিত করে।
৩০৫৪। ‘Yakuna’ সর্বনামটি দ্বারা ফুরকান কে বোঝানো হয়েছে অথবা Abd বা রসুলকে বোঝানো হয়েছে। উভয়ক্ষেত্রে অর্থের কোনও তারতম্য ঘটে না। কোরাণ হচ্ছে পাপ ও পূণ্যের মধ্যে পার্থক্যের প্রতিষ্ঠিত মানদণ্ড।
আয়াতঃ 025.002
তিনি হলেন যাঁর রয়েছে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব। তিনি কোন সন্তান গ্রহণ করেননি। রাজত্বে তাঁর কোন অংশীদার নেই। তিনি প্রত্যেক বস্তু সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তাকে শোধিত করেছেন পরিমিতভাবে।
He to Whom belongs the dominion of the heavens and the earth, and Who has begotten no son (children or offspring) and for Whom there is no partner in the dominion. He has created everything, and has measured it exactly according to its due measurements.
الَّذِي لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَلَمْ يَتَّخِذْ وَلَدًا وَلَمْ يَكُن لَّهُ شَرِيكٌ فِي الْمُلْكِ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ فَقَدَّرَهُ تَقْدِيرًا
Allathee lahu mulku alssamawati waal-ardi walam yattakhith waladan walam yakun lahu shareekun fee almulki wakhalaqa kulla shay-in faqaddarahu taqdeeran
YUSUFALI: He to whom belongs the dominion of the heavens and the earth: no son has He begotten, nor has He a partner in His dominion: it is He who created all things, and ordered them in due proportions.
PICKTHAL: He unto Whom belongeth the Sovereignty of the heavens and the earth, He hath chosen no son nor hath He any partner in the Sovereignty. He hath created everything and hath meted out for it a measure.
SHAKIR: He, Whose is the kingdom of the heavens and the earth, and Who did not take to Himself a son, and Who has no associate in the kingdom, and Who created everything, then ordained for it a measure.
KHALIFA: The One to whom belongs all sovereignty of the heavens and the earth. He never had a son, nor does He have any partners in sovereignty. He created everything in exact measure; He precisely designed everything.
০২। তিনিই , যার অধিকারে রয়েছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী। তিনি কোন পুত্র সন্তান গ্রহণ করেন নাই। সার্বভৌমত্বে তাঁর কোন অংশীদার নাই। তিনিই সব কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং সেগুলিকে সুবিন্যস্ত করেছেন যথাযথ অনুপাতে ৩০৫৫।
৩০৫৫। মহান আল্লাহ্র সার্বভৌমত্বের বর্ণনা এখানে করা হয়েছে। তিনি সকল অভাবমুক্ত , তিনি কারও সাহায্যপ্রার্থী নন। তাঁর দয়া ও করুণার প্রকাশ সমস্ত সৃষ্টির মাঝে বিদ্যমান।
আয়াতঃ 025.003
তারা তাঁর পরিবর্তে কত উপাস্য গ্রহণ করেছে, যারা কিছুই সৃষ্টি করে না এবং তারা নিজেরাই সৃষ্ট এবং নিজেদের ভালও করতে পারে না, মন্দও করতে পারে না এবং জীবন, মরণ ও পুনরুজ্জীবনের ও তারা মালিক নয়।
Yet they have taken besides Him other âlihâ (gods) that created nothing but are themselves created, and possess neither hurt nor benefit for themselves, and possess no power (of causing) death, nor (of giving) life, nor of raising the dead.
وَاتَّخَذُوا مِن دُونِهِ آلِهَةً لَّا يَخْلُقُونَ شَيْئًا وَهُمْ يُخْلَقُونَ وَلَا يَمْلِكُونَ لِأَنفُسِهِمْ ضَرًّا وَلَا نَفْعًا وَلَا يَمْلِكُونَ مَوْتًا وَلَا حَيَاةً وَلَا نُشُورًا
Waittakhathoo min doonihi alihatan la yakhluqoona shay-an wahum yukhlaqoona wala yamlikoona li-anfusihim darran wala nafAAan wala yamlikoona mawtan wala hayatan wala nushooran
YUSUFALI: Yet have they taken, besides him, gods that can create nothing but are themselves created; that have no control of hurt or good to themselves; nor can they control death nor life nor resurrection.
PICKTHAL: Yet they choose beside Him other gods who create naught but are themselves created, and possess not hurt nor profit for themselves, and possess not death nor life, nor power to raise the dead.
SHAKIR: And they have taken besides Him gods, who do not create anything while they are themselves created, and they control not for themselves any harm or profit, and they control not death nor life, nor raising (the dead) to life.
KHALIFA: Yet, they set up beside Him gods who do not create anything – they themselves are created – and who possess no power to even harm or benefit themselves, nor do they possess any power to control life, or death, or resurrection.
০৩। তবুও তারা তাঁকে ছেড়ে অন্য উপাস্য গ্রহণ করেছে যারা কিছুই সৃষ্টি করতে পারে না বরং ওরা নিজেরাই সৃষ্ট হয়েছে ৩০৫৬। ওরা নিজেদের অপকার বা উপকার করার ক্ষমতা রাখে না। মৃত্যু , জীবন ও পুনরুত্থানের উপরে তাদের কোন ক্ষমতা নাই।
৩০৫৬। পাপ ও পূণ্যের মানদন্ডের প্রথম এবং প্রধান পাপকে এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ্র একত্বের পরিবর্তে অন্য কিছুকে তাঁর সমকক্ষ কল্পনা করাই হচ্ছে পৃথিবীতে সর্বাপেক্ষা জঘন্য পাপ।
আয়াতঃ 025.004
কাফেররা বলে, এটা মিথ্যা বৈ নয়, যা তিনি উদ্ভাবন করেছেন এবং অন্য লোকেরা তাঁকে সাহায্য করেছে। অবশ্যই তারা অবিচার ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে।
Those who disbelieve say: ”This (the Qur’ân) is nothing but a lie that he (Muhammad SAW) has invented, and others have helped him at it, so that they have produced an unjust wrong (thing) and a lie.”
وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا إِنْ هَذَا إِلَّا إِفْكٌ افْتَرَاهُ وَأَعَانَهُ عَلَيْهِ قَوْمٌ آخَرُونَ فَقَدْ جَاؤُوا ظُلْمًا وَزُورًا
Waqala allatheena kafaroo in hatha illa ifkun iftarahu waaAAanahu AAalayhi qawmun akharoona faqad jaoo thulman wazooran
YUSUFALI: But the misbelievers say: “Naught is this but a lie which he has forged, and others have helped him at it.” In truth it is they who have put forward an iniquity and a falsehood.
PICKTHAL: Those who disbelieve say: This is naught but a lie that he hath invented, and other folk have helped him with it, so that they have produced a slander and a lie.
SHAKIR: And those who disbelieve say: This is nothing but a lie which he has forged, and other people have helped him at it; so indeed they have done injustice and (uttered) a falsehood.
KHALIFA: Those who disbelieved said, “This is a fabrication that he produced, with the help of some other people.” They have uttered a blasphemy and a falsehood.
০৪। আর অবিশ্বাসীরা বলে, “ইহা মিথ্যা ব্যতীত অন্য কিছুই নয়, ৩০৫৭ যা তার বানানো রচনা এবং এ ব্যাপারে অন্য লোকে তাঁকে সাহায্য করেছে।” প্রকৃতপক্ষে ওরা সম্মুখে অন্যায় ও মিথ্যাকে স্থাপন করেছে।
৩০৫৭। ‘Ifk’এবং আয়াতের শেষে ‘zur’ শব্দ দুটির বাংলা অনুবাদ করা হয়েছে ‘মিথ্যা’ শব্দ। ‘Ifk’ শব্দটি তখনই প্রযোজ্য হয় যখন কোনও ঘটনার অস্তিত্বই থাকে না। এখানে রসুলের [ সা ] শত্রুরা তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে যে, আল্লাহ্র নবীর দাবী হচ্ছে বানোয়াট যা তাঁর অনুগত লোকেরা [ ভিন্ন সম্প্রদায় ] তা প্রচারে সাহায্য করে থাকে মাত্র। তাদের রটনার মূল ভাবার্থ ছিলো এই যে; ১) আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ সমূহ হচ্ছে মিথ্যা রচনা এবং প্রতারণা। ২) প্রত্যাদেশে যা বলা হয়েছে যেমন শেষ বিচারের দিন, পুনরুত্থান, পরলোক, পূণ্যাত্মার শান্তিলাভ এবং পাপীর শাস্তি ও যন্ত্রণা এসবই হচ্ছে অলীক কল্পনা যার কোনও প্রকৃত ভিত্তি নাই। এ তো স্পষ্ট বিভ্রান্তি। এর উত্তরে বলা হয়েছে আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ সত্য এবং রসুলের প্রতি আরোপিত অভিযোগ সবৈব মিথ্যা [‘Zur’] তাদের এই মিথ্যাতে উপণীত হওয়ার কারণ তাদের চরিত্রের অন্যায় প্রবণতা মধ্যে নিহিত। অবিশ্বাসীদের আত্মিক ও মানসিক অবস্থা তাদের অন্যায় প্রবণতা বা ‘জুলুম’ থেকে জন্মলাভ করে। এই মানসিক অবস্থায় তারা প্রকৃত সত্যকে অনুধাবনে অক্ষম হয় এবং বিভ্রান্ত মানসিক অবস্থায় মিথ্যায় [‘Zur’] উপণীত হয়।
আয়াতঃ 025.005
তারা বলে, এগুলো তো পুরাকালের রূপকথা, যা তিনি লিখে রেখেছেন। এগুলো সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর কাছে শেখানো হয়।
And they say: ”Tales of the ancients, which he has written down, and they are dictated to him morning and afternoon.”
وَقَالُوا أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ اكْتَتَبَهَا فَهِيَ تُمْلَى عَلَيْهِ بُكْرَةً وَأَصِيلًا
Waqaloo asateeru al-awwaleena iktatabaha fahiya tumla AAalayhi bukratan waaseelan
YUSUFALI: And they say: “Tales of the ancients, which he has caused to be written: and they are dictated before him morning and evening.”
PICKTHAL: And they say: Fables of the men of old which he hath had written down so that they are dictated to him morn and evening.
SHAKIR: And they say: The stories of the ancients– he has got them written– so these are read out to him morning and evening.
KHALIFA: They also said, “Tales from the past that he wrote down; they were dictated to him day and night.”
০৫। এবং তারা বলে, ” এগুলি তো প্রাচীনকালের কাহিনী যা সে লিখিয়ে নিয়েছে। এবং এগুলি সকাল ও সন্ধ্যায় তাঁর নিকট পাঠ করা হয়।” ৩০৫৮
৩০৫৮। অবিশ্বাসীরা উদ্ধত অহংকারে বলে আমরা এ সব কথা পূর্বেও শুনেছি। এগুলি সবই প্রাচীন যুগের উপকথা। এগুলি আনন্দ লাভের জন্য শোনা যায় কিন্তু ঈমান লাভের জন্য এগুলোর কোন গুরুত্ব নাই। সুতারাং কে এগুলি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে ? যখন কোরাণের আয়াতের সৌন্দর্য্য ও আধ্যাত্মিক জগতের বিকাশের উপরে এর অপরিসীম প্রভাবের প্রতি তাদের মনোযোগ আকর্ষণ কর হয়, এবং বলা হয় যে এরূপ একটি অপূর্ব গ্রন্থের আবির্ভাব ঘটেছে একজন ‘উম্মী’ বা নিরক্ষর নবীর মাধ্যমে , এটা কি স্রষ্টার এক অলৌকিক ঘটনার নিদর্শন নয় ? তখন তারা বলে যে “সে [ হযরত মুহম্মদ [সা ] ] লিখিয়ে নিয়েছে।” অর্থাৎ অন্য লোকে তা রসুলকে [ সা ] লিখে দিয়েছে। যদিও বহু চেষ্টা সত্বেও তারা অনুরূপ একটি আয়াত লিখতে অক্ষম।
আয়াতঃ 025.006
বলুন, একে তিনিই অবতীর্ণ করেছেন, যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের গোপন রহস্য অবগত আছেন। তিনি ক্ষমাশীল, মেহেরবান।
Say: ”It (this Qur’ân) has been sent down by Him (Allâh) (the Real Lord of the heavens and earth) Who knows the secret of the heavens and the earth. Truly, He is Oft-Forgiving, Most Merciful.”
قُلْ أَنزَلَهُ الَّذِي يَعْلَمُ السِّرَّ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ إِنَّهُ كَانَ غَفُورًا رَّحِيمًا
Qul anzalahu allathee yaAAlamu alssirra fee alssamawati waal-ardi innahu kana ghafooran raheeman
YUSUFALI: Say: “The (Qur’an) was sent down by Him who knows the mystery (that is) in the heavens and the earth: verily He is Oft-Forgiving, Most Merciful.”
PICKTHAL: Say (unto them, O Muhammad): He who knoweth the secret of the heavens and the earth hath revealed it. Lo! He ever is Forgiving, Merciful.
SHAKIR: Say: He has revealed it Who knows the secret in the heavens and the earth; surely He is ever Forgiving, Merciful.
KHALIFA: Say, “This was revealed by the One who knows the Secret in the heavens and the earth. He is Forgiving, Most Merciful.”
০৬। বল, ” [ কোর-আন ] প্রেরিত হয়েছে তাঁর দ্বারা যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর রহস্য অবগত ৩০৫৯। অবশ্যই তিনি বার বার ক্ষমাশীল, অসীম করুণাময়।”
৩০৫৯। কোনও মানুষই অনুরূপ আয়াত লিখতে অক্ষম কারণ কোরাণ অবতরণ হয়েছে মহাশক্তিশালী পরাক্রমশালী আল্লাহ্র নিকট থেকে। কোরাণ মানুষকে আধ্যাত্মিক জ্ঞান শিক্ষা দান করে যে জ্ঞানের দীপ্তি সাধারণ মানুষের চোখে ভাস্বর নয়। এই জ্ঞান সাধারণ মানুষের হৃদয়ে আসে শুধুমাত্র আল্লাহ্র হেদায়েতের মাধ্যমে। এই জ্ঞান শুধুমাত্র আল্লাহ্র নিকট থেকে আগত, যিনি তাঁর সৃষ্টির সকল রহস্য অবগত। মানুষ পাপ ও দোষত্রুটি সত্বেও তিনি বারে বারে ক্ষমা করেন এবং তাঁর নেয়ামতে ধন্য করেন। প্রত্যাদেশের মাধ্যমে তাদের সুপথের সন্ধান দান করেন।
আয়াতঃ 025.007
তারা বলে, এ কেমন রসূল যে, খাদ্য আহার করে এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করে? তাঁর কাছে কেন কোন ফেরেশতা নাযিল করা হল না যে, তাঁর সাথে সতর্ককারী হয়ে থাকত?
And they say: ”Why does this Messenger (Muhammad SAW) eat food, and walk about in the markets (like ourselves). Why is not an angel sent down to him to be a warner with him?
وَقَالُوا مَالِ هَذَا الرَّسُولِ يَأْكُلُ الطَّعَامَ وَيَمْشِي فِي الْأَسْوَاقِ لَوْلَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مَلَكٌ فَيَكُونَ مَعَهُ نَذِيرًا
Waqaloo mali hatha alrrasooli ya/kulu alttaAAama wayamshee fee al-aswaqi lawla onzila ilayhi malakun fayakoona maAAahu natheeran
YUSUFALI: And they say: “What sort of a messenger is this, who eats food, and walks through the streets? Why has not an angel been sent down to him to give admonition with him?
PICKTHAL: And they say: What aileth this messenger (of Allah) that he eateth food and walketh in the markets? Why is not an angel sent down unto him, to be a warner with him.
SHAKIR: And they say: What is the matter with this Messenger that he eats food and goes about in the markets; why has not an angel been sent down to him, so that he should have been a warner with him?
KHALIFA: And they said, “How come this messenger eats the food and walks in the markets? If only an angel could come down with him, to serve with him as a preacher!”
০৭। এবং তারা বলে, ” এ কি রকম রসুল, যে [সাধারণ মানুষের মত ] আহার করে এবং রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করে ? তার নিকট কোন ফেরেশতা কেন অবতীর্ণ করা হলো না , যে তাঁর সাথে থাকতো সতর্ককারীরূপে ? ৩০৬০
৩০৬০। অবিশ্বাসী হৃদয় প্রকৃত সত্যকে অনুধাবনে সব সময়েই ব্যর্থ হবে। এই ব্যর্থতা সর্বকালের সর্বযুগের জন্য প্রযোজ্য। হযরত মুহাম্মদ [ সা ] এর বেলাতেও তার ব্যতিক্রম ঘটে নাই। কাফেররা রসুলের [সা ] মাঝে নবী সুলভ কোন গুণের সন্ধান পায় নাই। সাধারণ মানুষ সর্বদা অলৌকিক ক্রিয়াকর্মের সাথে নবী রসুল এবং আল্লাহ্র বান্দাদের সম্পৃক্ত করতে ভালোবাসে। হযরত মুহম্মদ [ সা ] কোন অলৌকিক ক্ষমতার দাবীদার ছিলেন না সত্য , তবে যিনি বাল্য বয়সে অন্ধকারচ্ছন্ন আরব সমাজে ‘ আল-আমীন’ উপাধিতে ভূষিত তিনিই তো মনুষ্যদেহধারী মহামানব এই সাধারণ সত্যকে কাফেররা অনুধাবনে ব্যর্থ হয়। তারা আল্লাহ্র রসুলকে [ সা ] দৈনন্দিন জীবন যাপন করাকে ঠাট্টা বিদ্রূপ করে। তারা ঠাট্টা করে বলে ” তিনি যদি আল্লাহ্র নবী হবেন তবে কেন তার সাথে ফেরেশতারা নাই।” এর উত্তর হচ্ছে মানুষের মানসিক অবস্থা অনুধাবনের ক্ষমতা ফেরেশতাদের নাই। কারণ মানুষ হচ্ছে রীপুর দাস। কাম-ক্রোধ,লোভ-লালসা, হিংসা-দ্বেষ প্রভৃতি রীপু সমূহের আক্রমনে মানুষ সর্বদা পর্যুদস্ত থাকে। ফেরেশতারা এ সব থেকে মুক্ত। সুতারাং তাদের পক্ষে মানুষের মানসিক অবস্থা বা এ সব থেকে মুক্তির পথ অনুধাবন করা বা উপদেশ দেয়া অসম্ভব। ফেরেশতাদের কার্যালয় আলাদা, যিনি বিশ্ব মানবের শিক্ষক হবেন তাকে অবশ্যই মানুষের দুঃখ-ব্যাথা , হাসি-কান্না , ভালোবাসা-ঘৃণা,লোভ-লালসা , ইত্যাদি সকল মানসিক অভিব্যক্তি অন্তর দিয়ে অনুভব করতে হবে। তবেই না তিনি মানুষের সকল দোষত্রুটি দূর করার উদ্দেশ্যে নিজেকে এসব থেকে মুক্ত করে এ সবের উর্দ্ধে থেকে নির্দ্দিষ্ট মহৎ কর্তব্য সম্পাদনে সক্ষম হবেন। যিনি সাধারণ মানুষ হয়েও মানুষের উর্দ্ধলোকে ফেরেশতাদের সমতূল্য চরিত্রের অধিকারী হতে পারেন তিনিই তো আল্লাহ্র প্রেরিত দেবদূত চরিত্রের অধিকারী। সত্যের এই প্রকৃত রহস্য অবিশ্বাসী হৃদয়ে ধরা পড়ে না। দেখুন [ ২১ : ৭ -৮ ]।
আয়াতঃ 025.008
অথবা তিনি ধন-ভান্ডার প্রাপ্ত হলেন না কেন, অথবা তাঁর একটি বাগান হল না কেন, যা থেকে তিনি আহার করতেন? জালেমরা বলে, তোমরা তো একজন জাদুগ্রস্ত ব্যক্তিরই অনুসরণ করছ।
”Or (why) has not a treasure been granted to him, or why has he not a garden whereof he may eat?” And the Zâlimûn (polytheists and wrong-doers, etc.) say: ”You follow none but a man bewitched.”
أَوْ يُلْقَى إِلَيْهِ كَنزٌ أَوْ تَكُونُ لَهُ جَنَّةٌ يَأْكُلُ مِنْهَا وَقَالَ الظَّالِمُونَ إِن تَتَّبِعُونَ إِلَّا رَجُلًا مَّسْحُورًا
Aw yulqa ilayhi kanzun aw takoonu lahu jannatun ya/kulu minha waqala alththalimoona in tattabiAAoona illa rajulan mashooran
YUSUFALI: “Or (Why) has not a treasure been bestowed on him, or why has he (not) a garden for enjoyment?” The wicked say: “Ye follow none other than a man bewitched.”
PICKTHAL: Or (why is not) treasure thrown down unto him, or why hath he not a paradise from whence to eat? And the evil-doers say: Ye are but following a man bewitched.
SHAKIR: Or (why is not) a treasure sent down to him, or he is made to have a garden from which he should eat? And the unjust say: You do not follow any but a man deprived of reason.
KHALIFA: Or, “If only a treasure could be given to him!” Or, “If only he could possess an orchard from which he eats!” The transgressors also said, “You are following a bewitched man.”
০৮। ” অথবা তাকে ধন ভান্ডার দেয়া হয় নাই কেন অথবা উপভোগের জন্য তার কোন বাগান নাই কেন ? ” ৩০৬১ দুষ্ট লোকেরা বলে, ” তোমরা তো এক যাদুগ্রস্থ লোকেরই অনুসরণ করছো। ” ৩০৬২
৩০৬১। ” ……………… উপভোগের জন্য “। পূর্বোক্ত আয়াতের ধারাবাহিকতায় এই আয়াত। এখানে “বাগান” শব্দটি প্রতীক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ জীবনকে উপভোগ করতে যে সব আরাম আয়েশের প্রয়োজন ‘বাগান’ দ্বারা তাই বোঝানো হয়েছে। বাগানের ফলকে আহার করে তৃপ্তি লাভ করা যায়, ফোয়ারা ও প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী মনের সৌন্দর্য বোধকে পরিতৃপ্ত করে, এর মাঝে বিশ্রাম দেহ মন জুড়িয়ে যায় ও সতেজ হয়। অর্থাৎ সুন্দর বাগান শারীরিক ও মানসিক সকল প্রয়োজনই মিটিয়ে থাকে।
৩০৬২। দেখুন আয়াত [১৭ : ৪৭ ]। এই বাক্যগুলি পাপিষ্ঠ সীমালংঘনকারী যারা কাফেরদের থেকেও ঘৃণ্য। এরা রসুলকে [সা] উম্মাদ রূপে প্রতিপন্ন করতে চেয়েছিলো।
উপদেশ : কালের পটভূমিতে আঁকা রসুলের [সা ] উজ্জ্বল চরিত্র যুগে যুগে সত্যের দিশারীদের এভাবেই সাহস ও অনুপ্রেরণা যোগায় যে, সীমালংঘনকারীরা সর্বদা সত্যকে প্রতিহত করবেই , এবং তাদের এই প্রতিরোধ অনেক সময়েই জঘন্যতম রূপে প্রকাশ পায়।
আয়াতঃ 025.009
দেখুন, তারা আপনার কেমন দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে! অতএব তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে, এখন তারা পথ পেতে পারে না।
See how they coin similitudes for you, so they have gone astray, and they cannot find a (Right) Path.
انظُرْ كَيْفَ ضَرَبُوا لَكَ الْأَمْثَالَ فَضَلُّوا فَلَا يَسْتَطِيعُونَ سَبِيلًا
Onthur kayfa daraboo laka al-amthala fadalloo fala yastateeAAoona sabeelan
YUSUFALI: See what kinds of comparisons they make for thee! But they have gone astray, and never a way will they be able to find!
PICKTHAL: See how they coin similitudes for thee, so that they are all astray and cannot find a road!
SHAKIR: See what likenesses do they apply to you, so they have gone astray, therefore they shall not be able to find a way.
KHALIFA: Note how they called you all kinds of names, and how this led them astray, never to find their way back.
০৯। দেখ, তোমার জন্য তারা কিরূপ তুলনা করে থাকে। কিন্তু তারা পথভ্রান্ত হয়েছে এবং তারা কখনও কোন পথ খুঁজে পেতে সক্ষম হবে না। ৩০৬৩
৩০৬৩। ” কখনও কোন পথ খুঁজে পেতে সক্ষম হবে না।” – এ এক ভীষণ সাবধান বাণী , আল্লাহ্র তরফ থেকে। আয়াতটি অবতীর্ণ হয় রসুলের [ সা ] জীবনীর পরিপ্রেক্ষিতে। রসুলুল্লাহ্র [সা ] নামে মিথ্যা অভিযোগ, সত্যের অপ্রতিহত যাত্রাকে স্তব্ধ করে দিতে পারে নাই। শেষ পর্যন্ত সত্যের জয় হবেই। পৃথিবীতে ইসলামের প্রচার অপ্রতিহত গতিতে চলতে থাকে। কিন্তু যে সব ব্যক্তি সত্যকে ত্যাগ করে থাকে, তা তাদের বিকৃত চিন্তাধারার ফসল। সত্যকে ত্যাগ করার ফলে, তাদের চরিত্র থেকে ন্যায়,সত্য ও বিশ্বস্ততাই যে শুধু হারিয়ে যায় তাই নয় , তাদের বিকৃত মানসিকতার জন্য তাদের জন্য স্বর্গীয় শাস্তিও অবধারিত হয়ে যায়। তাদের জন্য সত্য পথের নিশানা বা ঠিকানা অবরুদ্ধ হয়ে যায়, আল্লাহ্র এই সাবধান বাণী সে যুগের জন্যও যেমন প্রযোজ্য ছিলো আজও সমভাবে প্রযোজ্য আছে। যারা ইচ্ছাকৃত ভাবে ন্যায় ও সত্যের পথে বাঁধার সৃষ্টি করে, তাদের সত্যকে বোঝার ক্ষমতা , ন্যায়কে সনাক্ত করার ক্ষমতা অন্তর্হিত হবে। এই -ই হচ্ছে আল্লাহ্র তরফ থেকে শাস্তি।
আয়াতঃ 025.010
কল্যানময় তিনি, যিনি ইচ্ছা করলে আপনাকে তদপেক্ষা উত্তম বস্তু দিতে পারেন-বাগ-বাগিচা, যার তলদেশে নহর প্রবাহিত হয় এবং দিতে পারেন আপনাকে প্রাসাদসমূহ।
Blessed be He Who, if He will, will assign you better than (all) that, – Gardens under which rivers flow (Paradise) and will assign you palaces (i.e. in Paradise).
تَبَارَكَ الَّذِي إِن شَاء جَعَلَ لَكَ خَيْرًا مِّن ذَلِكَ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَيَجْعَل لَّكَ قُصُورًا
Tabaraka allathee in shaa jaAAala laka khayran min thalika jannatin tajree min tahtiha al-anharu wayajAAal laka qusooran
YUSUFALI: Blessed is He who, if that were His will, could give thee better (things) than those,- Gardens beneath which rivers flow; and He could give thee palaces (secure to dwell in).
PICKTHAL: Blessed is He Who, if He will, will assign thee better than (all) that – Gardens underneath which rivers flow – and will assign thee mansions.
SHAKIR: Blessed is He Who, if He please, will give you what is better than this, gardens beneath which rivers flow, and He will give you palaces.
KHALIFA: Most blessed is the One who can, if He wills, give you much better than their demands – gardens with flowing streams, and many mansions.
রুকু – ২
১০। মঙ্গলময় তিনি ৩০৬৪, যদি তার ইচ্ছা হতো তিনি তোমাকে ইহা অপেক্ষা উত্তম জিনিষ দিতে পারতেন, – বাগানসমূহ যার পাদদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত ৩০৬৫। এবং [ বাস করার জন্য ] প্রাসাদ সমূহ।
৩০৬৪। “মঙ্গলময় তিনি ” – এই বাক্যটি সূরার প্রথমে [ ২৫ : ১ ] আয়াতেও বলা হয়েছে। সেখানে থেকে শুরু হয়েছে আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ , তাঁর প্রেরিত রসুলের কাহিনী। এরপরে এখান থেকে আবার শুরু হচ্ছে নূতন যুক্তি যা পূর্বের সম্পূর্ণ বিপরীত ভাব বহন করে। এর পরে আছে সত্য প্রত্যাখানকারীদের ভাগ্যের আলোচনা।
৩০৬৫। বেহেশতের বর্ণনা প্রতীক ধর্মী। বাস্তব যখন কল্পনাকে অতিক্রম করে যায় তখন তা প্রকাশের ভাষা হয়ে থাকে প্রতীক। বেহেশতের সুখ ও শান্তি এই পৃথিবীতে বসে কল্পনাও করা যায় না। এখানে ‘বাগানসমূহ’ শব্দটি বেহেশতের শান্তির প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। কাফেররা ঠাট্টা করতো যে আল্লাহ্র নবীর [সা ] জন্য পার্থিব আরাম আয়েশের বন্দোবস্ত আল্লাহ্ কেন করেন না ? আল্লাহ্ এই আয়াতে বলছেন যে যদি পার্থিব আরাম আয়েশ আল্লাহ্র পরিকল্পনার অর্ন্তভুক্ত থাকতো তবে, আল্লাহ্ তার রসুলদের পৃথিবীতেই সুখ-শান্তি , ক্ষমতা , অর্থ-বিত্ত অর্থাৎ পার্থিব সকল জিনিষই দান করতেন। [ যেমন করেছিলেন দাউদ নবী , সুলায়মান নবীকে ] পৃথিবীতে যারা আল্লাহ্র বাণীকে প্রতিষ্ঠিত করতে আসেন পরিবর্তে তাদের প্রতি নেমে আসে অবর্ণনীয় অত্যাচার, নির্যাতন ,ঠাট্টা , বিদ্রূপ , স্বদেশ থেকে বিতারণ ইত্যাদি। সত্যকে বা আল্লাহ্র বাণীকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আল্লাহ্র রসুলদের যুগে যুগে এ সব অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হয়েছে। যদি তাদের জাগতিক আরাম আয়েশ ও ক্ষমতা প্রতিপত্তি থাকতো, তবে শত অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে , কঠোর সংগ্রামের মাধ্যমে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করে তারা পৃথিবীর সামনে যে জ্বলন্ত উদাহরণ স্থাপন করে গেছেন , তা থেকে পৃথিবী বঞ্চিত হতো। তাদের পৃথিবীতে প্রেরণ করাই হয়েছে সংগ্রামী মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্বরূপ।
আয়াতঃ 025.011
বরং তারা কেয়ামতকে অস্বীকার করে এবং যে কেয়ামতকে অস্বীকার করে, আমি তার জন্যে অগ্নি প্রস্তুত করেছি।
Nay, they deny the Hour (the Day of Resurrection), and for those who deny the Hour, We have prepared a flaming Fire (i.e. Hell).
بَلْ كَذَّبُوا بِالسَّاعَةِ وَأَعْتَدْنَا لِمَن كَذَّبَ بِالسَّاعَةِ سَعِيرًا
Bal kaththaboo bialssaAAati waaAAtadna liman kaththaba bialssaAAati saAAeeran
YUSUFALI: Nay they deny the hour (of the judgment to come): but We have prepared a blazing fire for such as deny the hour:
PICKTHAL: Nay, but they deny (the coming of) the Hour, and for those who deny (the coming of) the Hour We have prepared a flame.
SHAKIR: But they reject the hour, and We have prepared a burning fire for him who rejects the hour.
KHALIFA: In fact, they have disbelieved in the Hour (Day of Resurrection), and we have prepared for those who disbelieve in the Hour a flaming Hell.
১১। না তারা [ শেষ বিচারের দিনকে ] অস্বীকার করে থাকে ৩০৬৬। কিন্তু যারা [ শেষ বিচারের দিনকে ] অস্বীকার করে তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত আগুন।
৩০৬৬। কেয়ামত বা শেষ বিচারের দিনকে অস্বীকার করার অর্থ এ কথাকে অবিশ্বাস করা যে, শেষ পর্যন্ত ন্যায় ও সত্য জয়লাভ করবেই। পৃথিবীতে যদিও বা দুষ্কৃতিকারী রেহাই পেয়ে যায়। কিন্তু পরকালে তাদের জন্য থাকবে কঠোর শাস্তি। শেষ পর্যন্ত ন্যায় ও সত্যের প্রতিষ্ঠা হবেই। শেষ পর্যন্ত সত্য ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা হবেই এই বিশ্বাস যার অন্তরে নাই , সে অসত্য ও অন্যায়ের কাছে, পাপের কাছে খুব সহজেই আত্মসমর্পন করে। এদের মানসিক চিন্তা ভাবনা অসুস্থ। এদের শাস্তি সম্বন্ধে পরবর্তী আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 025.012
অগ্নি যখন দূর থেকে তাদেরকে দেখবে, তখন তারা শুনতে পাবে তার গর্জন ও হুঙ্কার।
When it (Hell) sees them from a far place, they will hear its raging and its roaring.
إِذَا رَأَتْهُم مِّن مَّكَانٍ بَعِيدٍ سَمِعُوا لَهَا تَغَيُّظًا وَزَفِيرًا
Itha raat-hum min makanin baAAeedin samiAAoo laha taghayyuthan wazafeeran
YUSUFALI: When it sees them from a place fAr off, they will hear its fury and its ranging sigh.
PICKTHAL: When it seeth them from afar, they hear the crackling and the roar thereof.
SHAKIR: When it shall come into their sight from a distant place, they shall hear its vehement raging and roaring.
KHALIFA: When it sees them from afar, they will hear its rage and fuming.
১২। দূর থেকে অগ্নি যখন ওদের দেখবে তখন তারা এর ক্রুদ্ধ গর্জন ও চীৎকার শুনতে পাবে ৩০৬৭।
৩০৬৭। ‘Zafir’ অর্থ গভীর নিঃশ্বাস , বা দীর্ঘশ্বাস : দেখুন [ ১১ : ১০৬ ] আয়াতের টিকা ১৬০৭। এখানে শব্দটি আগুনের লেলিহান শিখার প্রতি প্রয়োগ করা হয়েছে। সুতারাং শব্দটি দ্বারা আগুনের প্রচন্ড শব্দকে বোঝানো হয়েছে। যা মনে হয় দাহ্য শক্তির প্রচন্ড ক্ষুধায় আগুন প্রচন্ড গর্জন ও চীৎকার করছে। পাপীরা তাদের পৃথিবীর বিশ্বাস ও ধারণাকে পরলোকে বহন করে নেবে। তারা পূর্বের বিশ্বাসকেই আঁকড়ে ধরে থাকবে যতক্ষণ না তারা আগুনের প্রচন্ড গর্জন ও লেলিহান শিখা দেখতে পাবে। প্রকৃত শাস্তির পরিমাণ বুঝতে পেরে এবারে তাদের আত্মা ভয়ে কাঁপতে থাকবে। তাদের শৃঙ্খলিত করে আগুনে নিক্ষেপ করা হবে।
আয়াতঃ 025.013
যখন এক শিকলে কয়েকজন বাঁধা অবস্থায় জাহান্নামের কোন সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন সেখানে তারা মৃত্যুকে ডাকবে।
And when they shall be thrown into a narrow place thereof, chained together, they will exclaim therein for destruction.
وَإِذَا أُلْقُوا مِنْهَا مَكَانًا ضَيِّقًا مُقَرَّنِينَ دَعَوْا هُنَالِكَ ثُبُورًا
Wa-itha olqoo minha makanan dayyiqan muqarraneena daAAaw hunalika thubooran
YUSUFALI: And when they are cast, bound together into a constricted place therein, they will pLead for destruction there and then!
PICKTHAL: And when they are flung into a narrow place thereof, chained together, they pray for destruction there.
SHAKIR: And when they are cast into a narrow place in it, bound, they shall there call out for destruction.
KHALIFA: And when they are thrown into it, through a narrow place, all shackled, they will declare their remorse.
১৩। এবং যখন তাদের বাঁধা অবস্থায় কোন সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা [ যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে ] তৎক্ষণাত ধ্বংসের জন্য আকুতি করবে। ৩০৬৮
৩০৬৮। যন্ত্রনাতে অস্থির হয়ে পাপীদের মনে হবে মৃত্যুও এর থেকে শ্রেষ্ঠ। মৃত্যু অর্থ এখানে সম্পূর্ণ ধ্বংস। কারণ তখনকার অবস্থা হচ্ছে মৃত্যুর পরের অবস্থা। তারা তাদের অস্তিত্বের সম্পূর্ণ ধ্বংস কামনা করবে। কিন্তু তা কখনও মঞ্জুর করা হবে না। একেবারে ধবংস তাদের কখনও করা হবে না কারণ তবে তো তাদের যন্ত্রনা অনন্তকাল স্থায়ী হবার নয়। তারা বারে বারে তাদের ধ্বংস কামনা করবে যেনো তারা সেই প্রচন্ড যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতে পারে।
আয়াতঃ 025.014
বলা হবে, আজ তোমরা এক মৃত্যুকে ডেকো না অনেক মৃত্যুকে ডাক।
Exclaim not today for one destruction, but exclaim for many destructions.
لَا تَدْعُوا الْيَوْمَ ثُبُورًا وَاحِدًا وَادْعُوا ثُبُورًا كَثِيرًا
La tadAAoo alyawma thubooran wahidan waodAAoo thubooran katheeran
YUSUFALI: “This day plead not for a single destruction: plead for destruction oft-repeated!”
PICKTHAL: Pray not that day for one destruction, but pray for many destructions!
SHAKIR: Call not this day for one destruction, but call for destructions many.
KHALIFA: You will not declare just a single remorse, on that day; you will suffer through a great number of remorses.
১৪। “আজকে [শুধু ] একবার ধ্বংসের আবেদন করো না, [বরং ] বারে বারে ধ্বংসের জন্য আবেদন কর।”
১৫। বল, ” এটাই কি উত্তম , না স্থায়ী বেহেশ্ত , যার প্রতিশ্রুতি পূণ্যাত্মাদের দেয়া হয়েছে তা ? ৩০৬৯ তাদের জন্য এটা হচ্ছে পুরষ্কার এবং [ সকল চাওয়া পাওয়ার ] শেষ গন্তব্য স্থল ৩০৭০।
৩০৬৯। এখানে বক্তব্যের ধারাকে পরিবর্তন করা হয়েছে। পরকালের দোযখের আগুন ও বেহেশতের শান্তির বর্ণনার পরে মর্তের মানুষদের সম্বোধন করে বলা হয়েছে , ” পাপের ও পূণ্যের ফলাফল এখানে বর্ণনা করা হয়েছে, এখন বল তোমরা কোনটা পছন্দ করবে ? ”
৩০৭০। এই আয়াতটি গভীর তত্বজ্ঞান পূর্ণ। পাপ ও পূণ্যের বিচার এবং শাস্তি ও পুরষ্কার। শুধু সাদামাটা এই বক্তব্যের দ্বারা আয়াতটির পূর্ণ অর্থ বোধগম্য নয়। পুরষ্কার শব্দটি দ্বারা সঠিক ভাবকে প্রকাশ করা যায় না কারণ ১) পূণ্যাত্মারা বেহেশতে যে শান্তি লাভ করবেন তা তাদের কৃত কর্মের পুরষ্কারের বহুগুণ হবে এবং ২) পূণ্যাত্মা নিজেই নিজের পুরষ্কার। পূণ্যাত্মাদের প্রকাশ এ ভাবে করা যায় যে, তাদের সকল ইচ্ছা এমন কি সর্বোচ্চ ইচ্ছাকেও সম্মান করা হবে। পার্থিব জীবনে তাদের একান্ত এবং সর্বোচ্চ কাম্য ছিলো আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভ করা, পরলোকে স্রষ্টা তাদের সেই ইচ্ছা পূরণ করবেন। আল্লাহ্র সান্নিধ্যে পূণ্যাত্মারা হবে ধন্য। মানব জীবনের সর্বোচ্চ পাওয়ায় তারা হবেন পরিতৃপ্ত তাদের আত্মার মোক্ষলাভ ঘটবে।
আয়াতঃ 025.015
বলুন এটা উত্তম, না চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার সুসংবাদ দেয়া হয়েছে মুত্তাকীদেরকে? সেটা হবে তাদের প্রতিদান ও প্রত্যাবর্তন স্থান।
Say: (O Muhammad SAW) ”Is that (torment) better or the Paradise of Eternity promised to the Muttaqûn (pious and righteous persons – see V.2:2)?” It will be theirs as a reward and as a final destination.
قُلْ أَذَلِكَ خَيْرٌ أَمْ جَنَّةُ الْخُلْدِ الَّتِي وُعِدَ الْمُتَّقُونَ كَانَتْ لَهُمْ جَزَاء وَمَصِيرًا
Qul athalika khayrun am jannatu alkhuldi allatee wuAAida almuttaqoona kanat lahum jazaan wamaseeran
YUSUFALI: Say: “Is that best, or the eternal garden, promised to the righteous? for them, that is a reward as well as a goal (of attainment).
PICKTHAL: Say: Is that (doom) better or the Garden of Immortality which is promised unto those who ward off (evil)? It will be their reward and journey’s end.
SHAKIR: Say: Is this better or the abiding garden which those who guard (against evil) are promised? That shall be a reward and a resort for them.
KHALIFA: Say, “Is this better or the eternal Paradise that is promised for the righteous? It is their well deserved reward; a well deserved destiny.”
১৪। “আজকে [শুধু ] একবার ধ্বংসের আবেদন করো না, [বরং ] বারে বারে ধ্বংসের জন্য আবেদন কর।”
১৫। বল, ” এটাই কি উত্তম , না স্থায়ী বেহেশ্ত , যার প্রতিশ্রুতি পূণ্যাত্মাদের দেয়া হয়েছে তা ? ৩০৬৯ তাদের জন্য এটা হচ্ছে পুরষ্কার এবং [ সকল চাওয়া পাওয়ার ] শেষ গন্তব্য স্থল ৩০৭০।
৩০৬৯। এখানে বক্তব্যের ধারাকে পরিবর্তন করা হয়েছে। পরকালের দোযখের আগুন ও বেহেশতের শান্তির বর্ণনার পরে মর্তের মানুষদের সম্বোধন করে বলা হয়েছে , ” পাপের ও পূণ্যের ফলাফল এখানে বর্ণনা করা হয়েছে, এখন বল তোমরা কোনটা পছন্দ করবে ? ”
৩০৭০। এই আয়াতটি গভীর তত্বজ্ঞান পূর্ণ। পাপ ও পূণ্যের বিচার এবং শাস্তি ও পুরষ্কার। শুধু সাদামাটা এই বক্তব্যের দ্বারা আয়াতটির পূর্ণ অর্থ বোধগম্য নয়। পুরষ্কার শব্দটি দ্বারা সঠিক ভাবকে প্রকাশ করা যায় না কারণ ১) পূণ্যাত্মারা বেহেশতে যে শান্তি লাভ করবেন তা তাদের কৃত কর্মের পুরষ্কারের বহুগুণ হবে এবং ২) পূণ্যাত্মা নিজেই নিজের পুরষ্কার। পূণ্যাত্মাদের প্রকাশ এ ভাবে করা যায় যে, তাদের সকল ইচ্ছা এমন কি সর্বোচ্চ ইচ্ছাকেও সম্মান করা হবে। পার্থিব জীবনে তাদের একান্ত এবং সর্বোচ্চ কাম্য ছিলো আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভ করা, পরলোকে স্রষ্টা তাদের সেই ইচ্ছা পূরণ করবেন। আল্লাহ্র সান্নিধ্যে পূণ্যাত্মারা হবে ধন্য। মানব জীবনের সর্বোচ্চ পাওয়ায় তারা হবেন পরিতৃপ্ত তাদের আত্মার মোক্ষলাভ ঘটবে।
আয়াতঃ 025.016
তারা চিরকাল বসবাসরত অবস্থায় সেখানে যা চাইবে, তাই পাবে। এই প্রার্থিত ওয়াদা পূরণ আপনার পালনকর্তার দায়িত্ব।
For them there will be therein all that they desire, and they will abide (there forever). It is a promise binding upon your Lord that must be fulfilled.
لَهُمْ فِيهَا مَا يَشَاؤُونَ خَالِدِينَ كَانَ عَلَى رَبِّكَ وَعْدًا مَسْؤُولًا
Lahum feeha ma yashaoona khalideena kana AAala rabbika waAAdan mas-oolan
YUSUFALI: “For them there will be therein all that they wish for: they will dwell (there) for aye: A promise to be prayed for from thy Lord.”
PICKTHAL: Therein abiding, they have all that they desire. It is for thy Lord a promise that must be fulfilled.
SHAKIR: They shall have therein what they desire abiding (in it); it is a promise which it is proper to be prayed for from your Lord.
KHALIFA: They get anything they wish therein, forever. This is your Lord’s irrevocable promise.
১৬। সেখানে তারা যা কামনা করবে তাদের জন্য তাই-ই থাকবে। হ্যাঁ, সেথায় তারা বাস করবে। এটা তোমার প্রভুর পক্ষ থেকে অবশ্য পালনীয় প্রতিশ্রুতি। ৩০৭১।
৩০৭১। পূণ্যাত্মাদের জন্য পরলোকে যে বেহেশতের আশ্বাস দেয়া হয়েছে, তার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে বান্দা যা চাইবে আল্লাহ্ তাঁকে তাই-ই দেবেন বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আর এই পাওয়া ক্ষণস্থায়ী হবে না। তা হবে স্থায়ী। “আর এটা তোমার প্রভুর পক্ষ থেকে অবশ্য পালনীয় প্রতিশ্রুতি।”
আয়াতঃ 025.017
সেদিন আল্লাহ একত্রিত করবেন তাদেরকে এবং তারা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের এবাদত করত তাদেরকে, সেদিন তিনি উপাস্যদেরকে বলবেন, তোমরাই কি আমার এই বান্দাদেরকে পথভ্রান্ত করেছিলে, না তারা নিজেরাই পথভ্রান্ত হয়েছিল?
And on the Day when He will gather them together and that which they worship besides Allâh [idols, angels, pious men, saints, ’Iesa (Jesus) son of Maryam (Mary), etc.]. He will say: ”Was it you who misled these My slaves or did they (themselves) stray from the (Right) Path?”
وَيَوْمَ يَحْشُرُهُمْ وَمَا يَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ فَيَقُولُ أَأَنتُمْ أَضْلَلْتُمْ عِبَادِي هَؤُلَاء أَمْ هُمْ ضَلُّوا السَّبِيلَ
Wayawma yahshuruhum wama yaAAbudoona min dooni Allahi fayaqoolu aantum adlaltum AAibadee haola-i am hum dalloo alssabeela
YUSUFALI: The day He will gather them together as well as those whom they worship besides Allah, He will ask: “Was it ye who let these My servants astray, or did they stray from the Path themselves?”
PICKTHAL: And on the day when He will assemble them and that which they worship instead of Allah and will say: Was it ye who misled these my slaves or did they (themselves) wander from the way?
SHAKIR: And on the day when He shall gather them, and whatever they served besides Allah, He shall say: Was it you who led astray these My servants, or did they themselves go astray from the path?
KHALIFA: On the day when He summons them, together with the idols they had set up beside GOD, He will say, “Have you misled these servants of Mine, or did they go astray on their own?”
১৭। সেদিন তিনি তাদের সকলকে একত্রে জমা করবেন এবং তারা আল্লাহ্র পরিবর্তে যাদের পূঁজা করতো তাদেরও একত্র করবেন এবং জিজ্ঞাসা করবেন ৩০৭২ , “তোমরাই কি আমার বান্দাদের পথভ্রষ্ট করেছিলে ? নাকি তারা নিজেরাই বিপথে গিয়েছিলো ? ”
৩০৭২। আদালতের প্রশ্নোত্তর পর্বের ন্যায় এখানেও আল্লাহ্র বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে শেরেককারীদের।
আয়াতঃ 025.018
তারা বলবে-আপনি পবিত্র, আমরা আপনার পরিবর্তে অন্যকে মুরুব্বীরূপে গ্রহণ করতে পারতাম না; কিন্তু আপনিই তো তাদেরকে এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরকে ভোগসম্ভার দিয়েছিলেন, ফলে তারা আপনার স্মৃতি বিস্মৃত হয়েছিল এবং তারা ছিল ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতি।
They will say: ”Glorified be You! It was not for us to take any Auliyâ’ (Protectors, Helpers, etc.) besides You, but You gave them and their fathers comfort till they forgot the warning, and became a lost people (doomed to total loss).
قَالُوا سُبْحَانَكَ مَا كَانَ يَنبَغِي لَنَا أَن نَّتَّخِذَ مِن دُونِكَ مِنْ أَوْلِيَاء وَلَكِن مَّتَّعْتَهُمْ وَآبَاءهُمْ حَتَّى نَسُوا الذِّكْرَ وَكَانُوا قَوْمًا بُورًا
Qaloo subhanaka ma kana yanbaghee lana an nattakhitha min doonika min awliyaa walakin mattaAAtahum waabaahum hatta nasoo alththikra wakanoo qawman booran
YUSUFALI: They will say: “Glory to Thee! not meet was it for us that we should take for protectors others besides Thee: But Thou didst bestow, on them and their fathers, good things (in life), until they forgot the Message: for they were a people (worthless and) lost.”
PICKTHAL: They will say: Be Thou Glorified! it was not for us to choose any protecting friends beside thee; but Thou didst give them and their fathers ease till they forgot the warning and became lost folk.
SHAKIR: They shall say: Glory be to Thee; it was not beseeming for us that we should take any guardians besides Thee, but Thou didst make them and their fathers to enjoy until they forsook the reminder, and they were a people in perdition,
KHALIFA: They will say, “Be You glorified, it was not right for us to set up any lords beside You. But You allowed them to enjoy, together with their parents. Consequently, they disregarded the message and thus became wicked people.”
১৮। তারা বলবে, ” সব মহিমা তোমার ! আমাদের কি অধিকার ছিলো যে, তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে রক্ষাকর্তা হিসেবে গ্রহণ করবো ৩০৭৩ ? কিন্তু তুমি তাদের ও তাদের পিতৃপুরুষদের [ জীবনে ] সুখ উপভোগের নানা জিনিষ দান করেছিলে। সুতারাং তারা তোমার উপদেশ ভুলে গিয়েছিলো। নিশ্চয়ই তারা পরিণত হয়েছে এক ধ্বংস প্রাপ্ত জাতিতে।”
৩০৭৩। আল্লাহ্র সাথে অংশীদার করে মোশরেকরা যাদের উপাস্য রূপে এবাদত করতো সেই উপাস্যদের শেষ বিচারের দিনে জিজ্ঞাসা করা হবে যার উল্লেখ করা হয়েছে পূর্বের আয়াতে। এই আয়াতে মিথ্যা উপাস্যরা যে উত্তর দান করবে তার বর্ণনা আছে। আল্লাহ্র সৃষ্ট পদার্থ , যাদের উপাস্যরূপে পূঁজা করা হতো তারা প্রমাণ করবে যে, তারা এই পূঁজা দাবী করে নাই। অপরপক্ষে তারাই বরং আল্লাহ্র এবাদত করেছে আল্লাহ্ মনোনীত পন্থায়। কারণ আল্লাহ্-ই একমাত্র রক্ষাকর্তা ও অভিভাবক। দেখুন আয়াত [ ৪৬ : ৫-৬ ] সেই দিন মিথ্যা উপাস্যেরা শুধু যে অভিভাবকত্ব অস্বীকার করবে তাই নয়, তারা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেবে মোশরেকদের অকৃতজ্ঞতাকে। আল্লাহ্ তাদের প্রাচুর্য দেওয়া সত্বেও তারা আল্লাহ্র বিরুদ্ধে বিষোদগার করে। এরা সত্যিই “মূল্যহীন ” এবং ধ্বংসের যোগ্য। “Bur” শব্দটির দ্বারা এই ভাবকেই প্রকাশ করা হয়েছে।
আয়াতঃ 025.019
আল্লাহ মুশরিকদেরকে বলবেন, তোমাদের কথা তো তারা মিথ্যা সাব্যস্ত করল, এখন তোমরা শাস্তি প্রতিরোধ করতে পারবে না এবং সাহায্যও করতে পারবে না। তোমাদের মধ্যে যে গোনাহগার আমি তাকে গুরুতর শাস্তি আস্বাদন করাব।
Thus they (false gods all deities other than Allâh) will give you (polytheists) the lie regarding what you say (that they are gods besides Allâh), then you can neither avert (the punishment), nor get help. And whoever among you does wrong (i.e. sets up rivals to Allâh), We shall make him taste a great torment.
فَقَدْ كَذَّبُوكُم بِمَا تَقُولُونَ فَمَا تَسْتَطِيعُونَ صَرْفًا وَلَا نَصْرًا وَمَن يَظْلِم مِّنكُمْ نُذِقْهُ عَذَابًا كَبِيرًا
Faqad kaththabookum bima taqooloona fama tastateeAAoona sarfan wala nasran waman yathlim minkum nuthiqhu AAathaban kabeeran
YUSUFALI: (Allah will say): “Now have they proved you liars in what ye say: so ye cannot avert (your penalty) nor (get) help.” And whoever among you does wrong, him shall We cause to taste of a grievous Penalty.
PICKTHAL: Thus they will give you the lie regarding what ye say, then ye can neither avert (the doom) nor obtain help. And whoso among you doeth wrong, We shall make him taste great torment.
SHAKIR: So they shall indeed give you the lie in what you say, then you shall not be able to ward off or help, and whoever among you is unjust, We will make him taste a great chastisement.
KHALIFA: They have disbelieved in the message you have given them, and, consequently, you can neither protect them from the retribution they have incurred, nor can you help them in any way. Anyone among you who commits evil, we will commit him to severe retribution.
১৯। [আল্লাহ্ মুশরিকদের বলবেন ] : ” এখন তোমরা যা বল সে সম্বন্ধে তারা তোমাদের মিথ্যাবাদী প্রমাণ করেছে। অতএব তোমরা [ তোমাদের শস্তি থেকে ] রেহাই পেতে পারবে না। কোন রকম সাহায্যও পাবে না ৩০৭৪। এবং তোমাদের মধ্যে যে পাপ করে থাকে, তাকে আমি ভয়াবহ শাস্তি আস্বাদন করাবো। ”
৩০৭৪। “তারা” অর্থাৎ উপাস্যগুলি। সমস্ত দৃশ্যপটটি হবে আল্লাহ্র ন্যায় বিচারের আদালতে সওয়াল জবাবের মত। যদি মোশরেকরা বলতো যে তারা মিথ্যা উপাস্যদের দ্বারা বিভ্রান্ত হয়েছে, সে ক্ষেত্রে মিথ্যা উপাস্যরা তাদের বিরুদ্ধে আণীত অভিযোগকে এ ভাবেই খন্ডন করবে যে ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এ ভাবেই মোশরেকদের আবেদন নিবেদন, অজুহাতকে মিথ্যা প্রমাণিত করে ধূলিস্যাৎ করা হবে। মোশরেকরা তাদের উপাস্যের নিকট থেকে কোনও সাহায্যই পাবে না এবং তাদের শাস্তি থেকেও অব্যহতি লাভ করবে না। মিথ্যা উপাস্যের উপসনাকে এখানে পাপের প্রতীক হিসেবে বলা যায়। শুধু মাত্র মূর্তি পূঁজা মানেই মিথ্যা উপাস্যের উপাসনা নয়। আল্লাহ্র হুকুমকে অমান্য করে আত্মা যখন পাপে আকণ্ঠ নিমগ্ন হয় তখন পাপীর সর্ব সত্ত্বা ঘিরে রাখে পাপের করাল গ্রাস , শয়নে , স্বপনে, জাগরণে সে সেই পাপ চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকে। সেখানে আল্লাহ্র স্মরণ স্থান পায় না। এও এক ধরণের মিথ্যা উপাস্যের উপাসনা বৈকি। মিথ্যা উপাসনা হচ্ছে পাপ; যার উৎপত্তি আল্লাহ্র হুকুম বা বিধানকে অস্বীকারে মাধ্যমে শুরু হয়। তখন এসব পাপীরা আল্লাহ্র মহত্ব ও গুণাবলীর প্রতি মিথ্যা বিশেষণ প্রয়োগে ইতঃস্ততত করে না। তারা আল্লাহ্র করুণা , দয়া ও ক্ষমাকে অস্বীকার করে। পাপিষ্ঠ লোকেরা এ ভাবেই পাপকে ত্যাগ করতে অস্বীকার করে, আল্লাহ্র হুকুম মানতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে। তারা আল্লাহ্র সেবা বা আল্লাহ্র জন্য কাজ ব্যতীত অন্য কাজে নিয়োজিত হতে ভালোবাসে।
আয়াতঃ 025.020
আপনার পূর্বে যত রসূল প্রেরণ করেছি, তারা সবাই খাদ্য গ্রহণ করত এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করত। আমি তোমাদের এককে অপরের জন্যে পরীক্ষাস্বরূপ করেছি। দেখি, তোমরা সবর কর কিনা। আপনার পালনকর্তা সব কিছু দেখেন।
And We never sent before you (O Muhammad SAW) any of the Messengers but verily, they ate food and walked in the markets. And We have made some of you as a trial for others: will you have patience? And your Lord is Ever All-Seer (of everything).
وَما أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنَ الْمُرْسَلِينَ إِلَّا إِنَّهُمْ لَيَأْكُلُونَ الطَّعَامَ وَيَمْشُونَ فِي الْأَسْوَاقِ وَجَعَلْنَا بَعْضَكُمْ لِبَعْضٍ فِتْنَةً أَتَصْبِرُونَ وَكَانَ رَبُّكَ بَصِيرًا
Wama arsalna qablaka mina almursaleena illa innahum laya/kuloona alttaAAama wayamshoona fee al-aswaqi wajaAAalna baAAdakum libaAAdin fitnatan atasbiroona wakana rabbuka baseeran
YUSUFALI: And the messengers whom We sent before thee were all (men) who ate food and walked through the streets: We have made some of you as a trial for others: will ye have patience? for Allah is One Who sees (all things).
PICKTHAL: We never sent before thee any messengers but lo! they verily ate food and walked in the markets. And We have appointed some of you a test for others: Will ye be steadfast? And thy Lord is ever Seer.
SHAKIR: And We have not sent before you any messengers but they most surely ate food and went about in the markets; and We have made some of you a trial for others; will you bear patiently? And your Lord is ever Seeing.
KHALIFA: We did not send any messengers before you who did not eat food and walk in the markets. We thus test you by each other; will you steadfastly persevere? Your Lord is Seer.
২০। তোমাদের পূর্বে আমি যত রাসুল প্রেরণ করেছি তারা সকলেই ছিলো [ সাধারণ ] মানুষ যারা খাদ্য গ্রহণ করতো, এবং রাস্তায় চলাফেরা করতো ৩০৭৫। বস্তুতঃ আমি তোমাদের একজনকে অন্যজনের জন্য পরীক্ষা স্বরূপ করেছি ৩০৭৬। [ হে মোমেনগণ ] তোমরা কি ধৈর্য্য ধারণ করবে ? নিশ্চয়ই আল্লাহ্ [ সব কিছু ] দেখেন।
৩০৭৫। দেখুন উপরের আয়াত [ ২৫ : ৭ ]।
৩০৭৬। এই বিশাল বিশ্ব ভূবনের সকল কিছুই সৃষ্টি করা হয়েছে এক মহা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে। কোনও কিছুই বৃথা সৃষ্টি করা হয় নাই। সমাজে ধনী, গরীব, প্রতিভাবান, সাধারণ, বুদ্ধিমান-বোকা, স্বাস্থ্যবান-রুগ্ন, উচ্চ ও নীচ শ্রেণী , ইত্যাদি বিভিন্ন বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়। এই বৈষম্য অনেককে বিক্ষুব্ধ করে তোলে। তারা এর কারণ খুঁজে পায় না। এই বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়, মানুষে-মানুষে, শ্রেণীতে, জাতিতে ও পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশেও। এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্ এই বৈষম্যের ব্যাখা দান করেছেন। পৃথিবীতে মানব সন্তানের আগমন উদ্দেশ্যমূলক। পৃথিবীর জীবনযাপন প্রণালীর মাধ্যমে আত্মিক উন্নতি লাভ করাই হচ্ছে এই পৃথিবীতে আমাদের আগমনের উদ্দেশ্য। পরকালের বাণিজ্যে [ ২১ : ১৬ ] যে লাভ করতে পারবে সেই তো বিজয়ী। ধনীকে দেখে দরিদ্র হিংসা করবে না, কারণ ধনীর উপরে আছে সম্পদের দায়িত্ব। সম্পদ শুধু নিজের ভোগ-বিলাসের জন্য খরচ করা পরকালের বাণিজ্যে লোকসান দেয়া। তাকে আল্লাহ্ যে সম্পদ দান করেছেন তা আল্লাহ্র রাস্তায় সুষ্ঠু ব্যবহারের নিমিত্তে। এখানেই তাঁর দায় দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে অপারগ হলে তাঁর জন্য পরলোকে আছে কঠোর শাস্তি। আবার গরীবের জন্য সম্পদের দায়িত্ব না থাকলেও আছে অন্যান্য দায়িত্ব। দুঃখে বিপর্যয়ে আল্লাহ্র উপরে নির্ভর করে সবর ধারণ করা, তার কর্তব্য। অন্যকে হিংসা করার প্রয়োজন নাই। কারণ আল্লাহ্র আদেশ পালনের মাধ্যমে যে ইহজীবনকে অতিবাহিত করতে পারে সেই তো প্রকৃত মোমেন বান্দা। এ ভাবেই মেধা, মননশক্তি , সম্পদ , ক্ষমতা, প্রতিভা যে নেয়ামতেই বান্দা ধন্য হোক না কেন তা জনহিতকর কাজে নিয়োজিত করা হচ্ছে প্রতিটি বান্দার অবশ্য কর্তব্য। আবার কোনও কিছু না পেলে হিংসায় বিপর্যয় ঘটানোও উচিত নয়। মনে রাখতে হবে পৃথিবীতে আমরা একে অপরের জন্য পরীক্ষা স্বরূপ। এ কারণেই রসুলুল্লাহ্র [ সা ] শিক্ষা এই যে, যখন তোমার দৃষ্টি এমন ব্যক্তির উপরে পতিত হয় যে, ধন-সম্পদ কিংবা স্বাস্থ্য , শক্তি অথবা প্রতিপত্তিতে তোমা অপেক্ষা বেশী তখন তুমি কাল বিলম্ব না করে এমন লোকদের প্রতি দৃষ্টিপাত কর , যারা এ সব বিষয়ে নিম্নস্তরের – যাতে হিংসার গুণাহ্ থেকে বেঁচে যাও। এই হাদীসকেই কবি সত্যেন্দ্র নাথ দত্ত এ ভাবে প্রকাশ করেছেন,
” একদা ছিলো না যুতা চরণ যুগলে
দহিল হৃদয় মন সেই ক্ষোভানলে –
………………………………..
………………………………..
দেখি সেথা একজন পদ নাই তার
অমনি যুতার ক্ষোভ ঘুচিল আমার। ”
প্রকৃত সত্য হচ্ছে মানুষের সমাজ পরিচালনার জন্য বিভিন্ন শ্রেণীর লোকবলের প্রয়োজন হয়। আল্লাহ্র দুনিয়ায় গরীব বা নিম্ন বলে কিছু নাই। সমাজ গড়ার জন্য সকলের প্রয়োজন আছে। প্রত্যেকেই প্রত্যেকের কর্মক্ষেত্রকে স্ব-স্ব আধ্যাত্মিক উন্নতির ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করবে।
আয়াতঃ 025.021
যারা আমার সাক্ষাৎ আশা করে না, তারা বলে, আমাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ করা হল না কেন? অথবা আমরা আমাদের পালনকর্তাকে দেখি না কেন? তারা নিজেদের অন্তরে অহংকার পোষণ করে এবং গুরুতর অবাধ্যতায় মেতে উঠেছে।
And those who expect not for a Meeting with Us (i.e. those who deny the Day of Resurrection and the life of the Hereafter), say: ”Why are not the angels sent down to us, or why do we not see our Lord?” Indeed they think too highly of themselves, and are scornful with great pride.
وَقَالَ الَّذِينَ لَا يَرْجُونَ لِقَاءنَا لَوْلَا أُنزِلَ عَلَيْنَا الْمَلَائِكَةُ أَوْ نَرَى رَبَّنَا لَقَدِ اسْتَكْبَرُوا فِي أَنفُسِهِمْ وَعَتَوْ عُتُوًّا كَبِيرًا
Waqala allatheena la yarjoona liqaana lawla onzila AAalayna almala-ikatu aw nara rabbana laqadi istakbaroo fee anfusihim waAAataw AAutuwwan kabeeran
YUSUFALI: Such as fear not the meeting with Us (for Judgment) say: “Why are not the angels sent down to us, or (why) do we not see our Lord?” Indeed they have an arrogant conceit of themselves, and mighty is the insolence of their impiety!
PICKTHAL: And those who look not for a meeting with Us say: Why are angels not sent down unto us and (Why) do we not see our Lord! Assuredly they think too highly of themselves and are scornful with great pride.
SHAKIR: And those who do not hope for Our meeting, say: Why have not angels been sent down upon us, or (why) do we not see our Lord? Now certainly they are too proud of themselves and have revolted in great revolt.
KHALIFA: Those who do not expect to meet us said, “If only the angels could come down to us, or we could see our Lord (we would then believe)!” Indeed, they have committed a gross arrogance, and have produced a gross blasphemy.
উনবিংশ পারা
রুকু – ৩
২১। আর যারা আমার [ বিচারের ] সম্মুখীন হওয়ার ভয় রাখে না তারা বলে, ৩০৭৭ ” আমাদের নিকট কোন ফেরেশতা পাঠানো হয় নাই কেন, অথবা আমাদের প্রভুকে দেখি না কেন ? ” ৩০৭৮ সত্যই তারা নিজেদের সম্বন্ধে উদ্ধত অহংকারী এবং তাদের অবাধ্যতা সীমাহীন।
৩০৭৭। কাফেরদের প্রকৃতিকে এই আয়াতের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। তারা আল্লাহ্র অস্তিত্বে বা পরলোকে বিশ্বাসী নয়। তারা ধর্মকে ঠাট্টার বিষয়বস্তু মনে করে থাকে , ফলে তারা অদ্ভুদ সব কথাবার্তা বলে থাকে যা হটকারীতা বই আর কিছু নয়। তাদের এই হঠকারী কথাবার্তার উৎপত্তিত হচ্ছে তাদের ঔদ্ধত্য ও অহংকার এবং নিজেকে শ্রেষ্ঠ ভাবার প্রবণতা। তাদের ঔদ্ধত্য এতটাই সীমালংঘন করে যে তারা বলতে সাহস পায় যে, ” আমরা আমাদের প্রতিপালককে প্রত্যক্ষ করি না কেন ? ”
৩০৭৮। দেখুন আয়াত [ ২ : ৫৫ ] ; যেখানে ইসরাঈলীরা অন্ধ অহংকারে হযরত মুসার নিকট আল্লাহ্র সাক্ষাতকার দাবী করেছিলো। পরিণতিতে তাদের উপরে বজ্রপাত ঘটে এবং তাদের মৃত্যু ঘটে। তবে আল্লাহ্র করুণায় তারা আবার জীবন ফিরে পায়।
আয়াতঃ 025.022
যেদিন তারা ফেরেশতাদেরকে দেখবে, সেদিন অপরাধীদের জন্যে কোন সুসংবাদ থাকবে না এবং তারা বলবে, কোন বাধা যদি তা আটকে রাখত।
On the Day they will see the angels, no glad tidings will there be for the Mujrimûn (criminals, disbelievers, polytheists, sinners, etc.) that day. And they (angels) will say: ”All kinds of glad tidings are forbidden for you,” [None will be allowed to enter Paradise except the one who said: Lâ ilâha ill-Allâh, ”(none has the right to be worshipped but Allâh) and acted practically on its legal orders and obligations].
يَوْمَ يَرَوْنَ الْمَلَائِكَةَ لَا بُشْرَى يَوْمَئِذٍ لِّلْمُجْرِمِينَ وَيَقُولُونَ حِجْرًا مَّحْجُورًا
Yawma yarawna almala-ikata la bushra yawma-ithin lilmujrimeena wayaqooloona hijran mahjooran
YUSUFALI: The Day they see the angels,- no joy will there be to the sinners that Day: The (angels) will say: “There is a barrier forbidden (to you) altogether!”
PICKTHAL: On the day when they behold the angels, on that day there will be no good tidings for the guilty; and they will cry: A forbidding ban!
SHAKIR: On the day when they shall see the angels, there shall be no joy on that day for the guilty, and they shall say: It is a forbidden thing totally prohibited.
KHALIFA: The day they see the angels, it will not be good news for the guilty; they will say, “Now, we are irreversibly confined.”
২২। যেদিন তারা ফেরেশতাদের দেখবে , সেদিন পাপীদের জন্য কোন আনন্দ থাকবে না। [ফেরেশতারা ] বলবে, “[সকল প্রকার আনন্দ ] তোমাদের জন্য সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।” ৩০৭৯
৩০৭৯। যে ফেরেশতাদের দেখার জন্য কাফেররা দুনিয়াতে বায়না ধরতো মৃত্যুর পরে সেই ফেরেশতাদের দর্শন তাদের জন্য খুব একটা সুখের অনুভূতি বহন করবে না। অবিশ্বাসীদের জন্য পরকালের জীবনে ইহকালের জীবনের ন্যায় কোনও সুখ ও শান্তির আশ্বাস থাকবে না। পৃথিবীর জীবনের অতীত কুকর্ম তাদের পরলোকের জীবনের শান্তির পথে দুলর্ঘ্য বাঁধার প্রাচীর সৃষ্টি করবে।
আয়াতঃ 025.023
আমি তাদের কৃতকর্মের প্রতি মনোনিবেশ করব, অতঃপর সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধুলিকণারূপে করে দেব।
And We shall turn to whatever deeds they (disbelievers, polytheists, sinners, etc.) did, and We shall make such deeds as scattered floating particles of dust.
وَقَدِمْنَا إِلَى مَا عَمِلُوا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنَاهُ هَبَاء مَّنثُورًا
Waqadimna ila ma AAamiloo min AAamalin fajaAAalnahu habaan manthooran
YUSUFALI: And We shall turn to whatever deeds they did (in this life), and We shall make such deeds as floating dust scattered about.
PICKTHAL: And We shall turn unto the work they did and make it scattered motes.
SHAKIR: And We will proceed to what they have done of deeds, so We shall render them as scattered floating dust.
KHALIFA: We will look at all the works they have done, and render them null and void.
২৩। অতঃপর তারা [ পৃথিবীর জীবনে ] যে কাজ করতো আমি তার প্রতি খেয়াল করবো এবং অবশেষে তাকে বিক্ষিপ্ত ভাসমান ধূলিকণার ন্যায় পরিণত করবো ৩০৮০।
৩০৮০। কাফেরদের কাজ আল্লাহ্র দরবারে মূল্যহীন। তাদের সকল কাজ হবে যেনো বাতাসে নিক্ষিপ্ত ধূলিকণার মত নিষ্ফল ও মূল্যহীন।
আয়াতঃ 025.024
সেদিন জান্নাতীদের বাসস্থান হবে উত্তম এবং বিশ্রামস্থল হবে মনোরম।
The dwellers of Paradise (i.e. those who deserved it through their Faith and righteousness) will, on that Day, have the best abode, and have the fairest of places for repose.
أَصْحَابُ الْجَنَّةِ يَوْمَئِذٍ خَيْرٌ مُّسْتَقَرًّا وَأَحْسَنُ مَقِيلًا
As-habu aljannati yawma-ithin khayrun mustaqarran waahsanu maqeelan
YUSUFALI: The Companions of the Garden will be well, that Day, in their abode, and have the fairest of places for repose.
PICKTHAL: Those who have earned the Garden on that day will be better in their home and happier in their place of noonday rest;
SHAKIR: The dwellers of the garden shall on that day be in a better abiding-place and a better resting-place.
KHALIFA: The dwellers of Paradise are far better on that day; they will hear better news.
২৪। বেহেশত বাসীগণ সেদিন উত্তম বাসস্থানে ও সুন্দর আরামের স্থানে থাকবে ৩০৮১।
৩০৮১। পাপীদের পাপ কার্য পরকালে পাপীদের বেহেশ্ত লাভের পথে দুর্লঘ্য প্রাচীরের সৃষ্টি করবে। অপরপক্ষে , পূণ্যাত্মাদের জন্য এরূপ কোন বাঁধার প্রাচীর থাকবে না। তাঁদের জন্য থাকবে উৎকৃষ্ট বাসস্থান এবং মনোরম বিশ্রাম আলয়।
আয়াতঃ 025.025
সেদিন আকাশ মেঘমালাসহ বিদীর্ণ হবে এবং সেদিন ফেরেশতাদের নামিয়ে দেয়া হবে,
And (remember) the Day when the heaven shall be rent asunder with clouds, and the angels will be sent down, with a grand descending.
وَيَوْمَ تَشَقَّقُ السَّمَاء بِالْغَمَامِ وَنُزِّلَ الْمَلَائِكَةُ تَنزِيلًا
Wayawma tashaqqaqu alssamao bialghamami wanuzzila almala-ikatu tanzeelan
YUSUFALI: The Day the heaven shall be rent asunder with clouds, and angels shall be sent down, descending (in ranks),-
PICKTHAL: A day when the heaven with the clouds will be rent asunder and the angels will be sent down, a grand descent. SHAKIR: And on the day when the heaven shall burst asunder with the clouds, and the angels shall be sent down descending (in ranks).
KHALIFA: The heaven will break apart, into masses of clouds, and the angels will descend in multitudes.
২৫। আর সেদিন মেঘপুঞ্জসহ আকাশ বিদীর্ণ হবে ৩০৮২ এবং ফেরেশতাদের [ সারিবদ্ধ ভাবে ] নামিয়ে দেয়া হবে,-
৩০৮২। কেয়ামতের দিনকে এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। এই হচ্ছে সেই দিন যেদিন আমাদের চেনা জানা পৃথিবী আমাদের চোখের সামনে থেকে মুছে যাবে – নূতন পৃথিবীর সৃষ্টি হবে [ ২১: ১০৪ ]। নূতন পৃথিবীর বর্ণনায় মানুষের পৃথিবীর অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে বর্ণনা করা হয়েছে। দূরের আকাশ দীর্ণ-বিদির্ণ হয়ে যাবে। জ্যোর্তিময় ফেরেশতাদের নামিয়ে দেয়া হবে মেঘের চাদরে। সকল আধ্যাত্মিক আলো দৃষ্টিগোচর হবে। আল্লাহ্র কর্তৃত্ব সকল বিশ্বচরাচর ব্যপী বিরাজ করবে।
আয়াতঃ 025.026
সেদিন সত্যিকার রাজত্ব হবে দয়াময় আল্লাহর এবং কাফেরদের পক্ষে দিনটি হবে কঠিন।
The sovereignty on that Day will be the true (sovereignty), belonging to the Most Beneficent (Allâh), and it will be a hard Day for the disbelievers (those who disbelieve in the Oneness of Allâh Islâmic Monotheism).
الْمُلْكُ يَوْمَئِذٍ الْحَقُّ لِلرَّحْمَنِ وَكَانَ يَوْمًا عَلَى الْكَافِرِينَ عَسِيرًا
Almulku yawma-ithin alhaqqu lilrrahmani wakana yawman AAala alkafireena AAaseeran
YUSUFALI: That Day, the dominion as of right and truth, shall be (wholly) for (Allah) Most Merciful: it will be a Day of dire difficulty for the Misbelievers.
PICKTHAL: The Sovereignty on that day will be the True (Sovereignty) belonging to the Beneficent One, and it will be a hard day for disbelievers.
SHAKIR: The kingdom on that day shall rightly belong to the Beneficent Allah, and a hard day shall it be for the unbelievers.
KHALIFA: All sovereignty on that day belongs to the Most Gracious. For the disbelievers, it will be a difficult day.
২৬। সেদিন দয়াময় আল্লাহ্র ন্যায় ও সত্যের শাসন কায়েম হবে ৩০৮৩। এবং অবিশ্বাসীদের জন্য তা হবে এক অত্যন্ত কঠিন দিন।
৩০৮৩। দেখুন উপরে আয়াত।
আয়াতঃ 025.027
জালেম সেদিন আপন হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি রসূলের সাথে পথ অবলম্বন করতাম।
And (remember) the Day when the Zâlim (wrong-doer, oppressor, polytheist, etc.) will bite at his hands, he will say: ”Oh! Would that I had taken a path with the Messenger ( Muhammad SAW).
وَيَوْمَ يَعَضُّ الظَّالِمُ عَلَى يَدَيْهِ يَقُولُ يَا لَيْتَنِي اتَّخَذْتُ مَعَ الرَّسُولِ سَبِيلًا
Wayawma yaAAaddu alththalimu AAala yadayhi yaqoolu ya laytanee ittakhathtu maAAa alrrasooli sabeelan
YUSUFALI: The Day that the wrong-doer will bite at his hands, he will say, “Oh! would that I had taken a (straight) path with the Messenger!
PICKTHAL: On the day when the wrong-doer gnaweth his hands, he will say: Ah, would that I had chosen a way together with the messenger (of Allah)!
SHAKIR: And the day when the unjust one shall bite his hands saying: O! would that I had taken a way with the Messenger
KHALIFA: The day will come when the transgressor will bite his hands (in anguish) and say, “Alas, I wish I had followed the path with the messenger.
২৭। সেদিন অবিশ্বাসীরা তাদের হস্তদ্বয় কামড়াতে থাকবে এবং বলবে, ” হায়! যদি আমি রাসুলের সাথে সৎপথ ধরতাম ৩০৮৪।
৩০৮৪। এই আয়াতটি মক্কার অন্যতম মোশরেক সর্দ্দার ওকবা ইবনে আবী মুয়ীতের ঘটনার প্রেক্ষিতে অবতীর্ণ হয়েছে, কিন্তু এর বিধান ব্যাপক এবং সার্বজনীন। একজন লোক যদি সত্য ধর্ম গ্রহণের পরে জাগতিক বন্ধুর চক্রান্তে সত্য পথ ত্যাগ করে তবে তা অধিক নিন্দনীয়। ওকবা ইসলাম গ্রহণ করেন কিন্তু পরবর্তীতে তার বন্ধুর পরামর্শে সে স্বধর্ম ত্যাগ করে এবং আল্লাহ্ বিদ্রোহীতে পরিণত হয় । ফলে তার শেষ পরিণতি হয় অত্যন্ত ভয়াবহ।
আয়াতঃ 025.028
হায় আমার দূর্ভাগ্য, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম।
”Ah! Woe to me! Would that I had never taken so-and-so as a friend!
يَا وَيْلَتَى لَيْتَنِي لَمْ أَتَّخِذْ فُلَانًا خَلِيلًا
Ya waylata laytanee lam attakhith fulanan khaleelan
YUSUFALI: “Ah! woe is me! Would that I had never taken such a one for a friend!
PICKTHAL: Alas for me! Ah, would that I had never taken such an one for friend!
SHAKIR: O woe is me! would that I had not taken such a one for a friend !
KHALIFA: “Alas, woe to me, I wish I did not take that person as a friend.
২৮। “হায় ! আমার দুর্ভাগ্য যদি আমি ঐ লোককে বন্ধু বলে না গ্রহণ করতাম।
২৯। ” আমার নিকট [আল্লাহ্র ] উপদেশ পৌঁছানোর পরে সে আমাকে পথভ্রষ্ট করেছে। হায় ! শয়তান তো মানুষের জন্য মহাপ্রতারক ৩০৮৫। ”
৩০৮৫। শয়তানের প্রতারণার ফাঁদ মনোমুগ্ধকর। আর এই মনোমুগ্ধকর ফাঁদে মানুষ খুব সহজেই ধরা পড়ে। এ ফাঁদ হচ্ছে প্রতারণা ও বিশ্বাস ঘাতকতায় ভরা। অনেকেই লোভের বশবর্তী হয়ে ক্ষণস্থায়ী লাভকে বিশাল পাওয়া মনে করে। কিন্তু শেষ পরিণতিতে হতভাগ্যের জন্য থাকে হতাশা ও বিপর্যয়। শয়তানের প্রতারণা কখনও স্থায়ী ফল আনতে সক্ষম নয়। শয়তানের প্রতারণার অর্থ আমাদের জীবনে আমরা অনেক সময়েই পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের পরিবর্তে প্রতারণার মাধ্যম সহজেই কর্ম সম্পাদন করে সাফল্য অর্জন করতে চাই। কিন্তু প্রতারণার মাধ্যমে যে সাফল্য তা কখনও স্থায়ী হতে পারে না। তার শেষ পরিণতি এই পৃথিবীতেই ভয়াবহ, পরকালের শাস্তি তো রইলই। যেমন উদাহরণ : কোন ছাত্র যদি তার পরীক্ষার ফলাফলকে ভালো করার জন্য পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের পরিবর্তে নকল ও পরীক্ষকদের প্রভাবিত করার মত প্রতারণার সাহায্য গ্রহণ করে, তবে সে হয়তো অস্থায়ীভাবে সাফল্য লাভ করতে পারে , কিন্তু শেষ পরিণতিতে তার ব্যর্থতা অপরিহার্য।
মন্তব্য : নির্দ্দিষ্ট ঘটনার মাধ্যমে যুগকাল অতিক্রান্ত এই উপদেশ সকল মানুষকে দেয়া হয়েছে।
আয়াতঃ 025.029
আমার কাছে উপদেশ আসার পর সে আমাকে তা থেকে বিভ্রান্ত করেছিল। শয়তান মানুষকে বিপদকালে ধোঁকা দেয়।
”He indeed led me astray from the Reminder (this Qur’ân) after it had come to me. And Shaitân (Satan) is ever a deserter to man in the hour of need.”
لَقَدْ أَضَلَّنِي عَنِ الذِّكْرِ بَعْدَ إِذْ جَاءنِي وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِلْإِنسَانِ خَذُولًا
Laqad adallanee AAani alththikri baAAda ith jaanee wakana alshshaytanu lil-insani khathoolan
YUSUFALI: “He did lead me astray from the Message (of Allah) after it had come to me! Ah! the Evil One is but a traitor to man!”
PICKTHAL: He verily led me astray from the Reminder after it had reached me. Satan was ever man’s deserter in the hour of need.
SHAKIR: Certainly he led me astray from the reminder after it had come to me; and the Shaitan fails to aid man.
KHALIFA: “He has led me away from the message after it came to me. Indeed, the devil lets down his human victims.”
২৮। “হায় ! আমার দুর্ভাগ্য যদি আমি ঐ লোককে বন্ধু বলে না গ্রহণ করতাম।
২৯। ” আমার নিকট [আল্লাহ্র ] উপদেশ পৌঁছানোর পরে সে আমাকে পথভ্রষ্ট করেছে। হায় ! শয়তান তো মানুষের জন্য মহাপ্রতারক ৩০৮৫। ”
৩০৮৫। শয়তানের প্রতারণার ফাঁদ মনোমুগ্ধকর। আর এই মনোমুগ্ধকর ফাঁদে মানুষ খুব সহজেই ধরা পড়ে। এ ফাঁদ হচ্ছে প্রতারণা ও বিশ্বাস ঘাতকতায় ভরা। অনেকেই লোভের বশবর্তী হয়ে ক্ষণস্থায়ী লাভকে বিশাল পাওয়া মনে করে। কিন্তু শেষ পরিণতিতে হতভাগ্যের জন্য থাকে হতাশা ও বিপর্যয়। শয়তানের প্রতারণা কখনও স্থায়ী ফল আনতে সক্ষম নয়। শয়তানের প্রতারণার অর্থ আমাদের জীবনে আমরা অনেক সময়েই পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের পরিবর্তে প্রতারণার মাধ্যম সহজেই কর্ম সম্পাদন করে সাফল্য অর্জন করতে চাই। কিন্তু প্রতারণার মাধ্যমে যে সাফল্য তা কখনও স্থায়ী হতে পারে না। তার শেষ পরিণতি এই পৃথিবীতেই ভয়াবহ, পরকালের শাস্তি তো রইলই। যেমন উদাহরণ : কোন ছাত্র যদি তার পরীক্ষার ফলাফলকে ভালো করার জন্য পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের পরিবর্তে নকল ও পরীক্ষকদের প্রভাবিত করার মত প্রতারণার সাহায্য গ্রহণ করে, তবে সে হয়তো অস্থায়ীভাবে সাফল্য লাভ করতে পারে , কিন্তু শেষ পরিণতিতে তার ব্যর্থতা অপরিহার্য।
মন্তব্য : নির্দ্দিষ্ট ঘটনার মাধ্যমে যুগকাল অতিক্রান্ত এই উপদেশ সকল মানুষকে দেয়া হয়েছে।
আয়াতঃ 025.030
রসূল বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা, আমার সম্প্রদায় এই কোরআনকে প্রলাপ সাব্যস্ত করেছে।
And the Messenger (Muhammad SAW) will say: ”O my Lord! Verily, my people deserted this Qur’ân (neither listened to it, nor acted on its laws and orders).
وَقَالَ الرَّسُولُ يَا رَبِّ إِنَّ قَوْمِي اتَّخَذُوا هَذَا الْقُرْآنَ مَهْجُورًا
Waqala alrrasoolu ya rabbi inna qawmee ittakhathoo hatha alqur-ana mahjooran
YUSUFALI: Then the Messenger will say: “O my Lord! Truly my people took this Qur’an for just foolish nonsense.”
PICKTHAL: And the messenger saith: O my Lord! Lo! mine own folk make this Qur’an of no account.
SHAKIR: And the Messenger cried out: O my Lord! surely my people have treated this Quran as a forsaken thing.
KHALIFA: The messenger said, “My Lord, my people have deserted this Quran.”
৩০। তখন রসুল বলবেন, ” হে আমার প্রভু ! আমার সম্প্রদায় তো এই কোর-আনকে নির্বোধের অর্থহীন ভাষা হিসেবে গণ্য করেছে ৩০৮৬।”
৩০৮৬। ” আমার সম্প্রদায় ” অর্থাৎ অবিশ্বাসী কোরেশ সম্প্রদায়। কোরেশদের মধ্যে যারা অবিশ্বাসী তারা কোরাণকে অশ্রদ্ধার সাথে ব্যবহার করতো, যেনো তা পরিতাজ্য। তবে কোরেশ সম্প্রদায়ের মধ্যে এদের সংখ্যা খুব বেশী না হলেও এরা ছিলেন সমাজে প্রভাবশালী ব্যক্তি যাদের স্বার্থে আঘাত লেগেছিলো ইসলামের বিধানাবলীর দ্বারা। তবে সময়ের ব্যবধানে ইসলামের এই সব শত্রুরা ধরাধাম ত্যাগ করে এবং শেষ পর্যন্ত ইসলাম সমগ্র আরবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। কোরাণ হচ্ছে মানব সমাজের নিকট সেই গ্রন্থ যার মধ্যে নিহিত আছে মানুষের জীবন বিধানের নির্দেশনার অমূল্য রত্নরাজি – যার ভাষার প্রকাশ গভীর এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানে সমৃদ্ধ।
আয়াতঃ 025.031
এমনিভাবে প্রত্যেক নবীর জন্যে আমি অপরাধীদের মধ্য থেকে শত্রু করেছি। আপনার জন্যে আপনার পালনকর্তা পথপ্রদর্শক ও সাহায্যকারীরূপে যথেষ্ট।
Thus have We made for every Prophet an enemy among the Mujrimûn (disbelievers, polytheists, criminals, etc.). But Sufficient is your Lord as a Guide and Helper.
وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا مِّنَ الْمُجْرِمِينَ وَكَفَى بِرَبِّكَ هَادِيًا وَنَصِيرًا
Wakathalika jaAAalna likulli nabiyyin AAaduwwan mina almujrimeena wakafa birabbika hadiyan wanaseeran
YUSUFALI: Thus have We made for every prophet an enemy among the sinners: but enough is thy Lord to guide and to help.
PICKTHAL: Even so have We appointed unto every prophet an opponent from among the guilty; but Allah sufficeth for a Guide and Helper.
SHAKIR: And thus have We made for every prophet an enemy from among the sinners and sufficient is your Lord as a Guide and a Helper.
KHALIFA: We also set up against every prophet enemies from among the guilty. Your Lord suffices as a guide, a master.
৩১। আর এভাবেই আমি প্রত্যেক রাসুলের জন্য পাপীদের মধ্য থেকে শত্রু করে রেখেছি। কিন্তু তোমার প্রভুই শ্রেষ্ঠ পথ প্রদর্শক ও সাহায্যকারী ৩০৮৭।
৩০৮৭। রসুলের [সা ] জীবনের মাধ্যমে সর্বকালের মানব সম্প্রদায়ের প্রতি আল্লাহ্ এই উপদেশ দিয়েছেন যে, পাপীরা সর্বদা সত্য ও পূণ্যের বিরোধিতা করবেই। কিন্তু তাদের এই বিরোধিতা যেনো পূণ্যাত্মাদের মনে কোনও সংশয় উৎপন্ন না করে যেহেতু, পূণ্যাত্মাদের ক্ষতি করার ক্ষমতা পাপীদের নাই। কারণ পূণ্যাত্মাদের রক্ষাকর্তা স্বয়ং আল্লাহ্। যারা আল্লাহ্র রাস্তায় সংগ্রাম করে, আল্লাহ্ তাদের পথ প্রদর্শন করেন এবং সাহায্য করেন। আল্লাহ্র সাহায্য হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ সাহায্য।
উপদেশ : মোমেন ব্যক্তিদের অন্তরে অন্তর্দৃষ্টির জন্মলাভ করে যা তাদের মধ্যে বিচক্ষণতা ও যে কোনও কাজে সঠিক সিদ্ধান্ত লাভের ক্ষমতা দান করে। সঠিক সিদ্ধান্ত ও আল্লাহ্র উপরে নির্ভরশীলতা, মোমেন ব্যক্তির জন্য সফলতা ও শান্তির দুয়ার উন্মুক্ত করে দেয়। এই আয়াতের এই-ই হচ্ছে উপদেশ।
আয়াতঃ 025.032
সত্য প্রত্যাখানকারীরা বলে, তাঁর প্রতি সমগ্র কোরআন একদফায় অবতীর্ণ হল না কেন? আমি এমনিভাবে অবতীর্ণ করেছি এবং ক্রমে ক্রমে আবৃত্তি করেছি আপনার অন্তকরণকে মজবুত করার জন্যে।
And those who disbelieve say: ”Why is not the Qur’ân revealed to him all at once?” Thus (it is sent down in parts), that We may strengthen your heart thereby. And We have revealed it to you gradually, in stages. (It was revealed to the Prophet SAW in 23 years.).
وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْلَا نُزِّلَ عَلَيْهِ الْقُرْآنُ جُمْلَةً وَاحِدَةً كَذَلِكَ لِنُثَبِّتَ بِهِ فُؤَادَكَ وَرَتَّلْنَاهُ تَرْتِيلًا
Waqala allatheena kafaroo lawla nuzzila AAalayhi alqur-anu jumlatan wahidatan kathalika linuthabbita bihi fu-adaka warattalnahu tarteelan
YUSUFALI: Those who reject Faith say: “Why is not the Qur’an revealed to him all at once? Thus (is it revealed), that We may strengthen thy heart thereby, and We have rehearsed it to thee in slow, well-arranged stages, gradually.
PICKTHAL: And those who disbelieve say: Why is the Qur’an not revealed unto him all at once? (It is revealed) thus that We may strengthen thy heart therewith; and We have arranged it in right order.
SHAKIR: And those who disbelieve say: Why has not the Quran been revealed to him all at once? Thus, that We may strengthen your heart by it and We have arranged it well in arranging.
KHALIFA: Those who disbelieved said, “Why did not the Quran come through him all at once?” We have released it to you gradually, in order to fix it in your memory. We have recited it in a specific sequence.
৩২। যারা ঈমানকে প্রত্যাখান করে তারা বলে, ” তাঁর নিকট সমগ্র কুর-আন এক সাথে অবতীর্ণ হয় নাই কেন ?” এ ভাবেই [ আমি ইহাকে অবতীর্ণ ] করেছি যেন এর দ্বারা আমি তোমার হৃদয়কে শক্তিশালী করতে পারি ৩০৮৮। এবং আমি তোমার নিকট ইহা ধীরে ধীরে ধাপে ধাপে সুসজ্জিত ভাবে ক্রমান্বয়ে আবৃত্তি করেছি।
৩০৮৮। কোরাণকে ধারাবাহিকভাবে অবতীর্ণ করার পক্ষে তিনটি যুক্তির অবতারণা করা হয়েছে। ১) “তোমার হৃদয়কে উহা দ্বারা শক্তিশালী করতে পারি। ” আরব বাসীদের মত শক্ত হৃদয়ের মানব সম্প্রদায়ের হৃদয়ে আল্লাহ্র বাণীকে প্রতিষ্ঠিত করা ছিলো এক অমানুষিক দুঃসাধ্য কর্মপ্রচেষ্টা – যা নবীকে আল্লাহ্ দায়িত্ব দান করেছিলেন। ইসলাম আরববাসীর মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবীতে বিস্তার লাভ করবে। এই হচ্ছে রাব্বুল -আলামীনের ইচ্ছা। এই দুঃসাধ্য কাজকে সাফল্যে পরিণত করতে যে ধৈর্য্য, একাগ্রতা, অধ্যবসায়, এবং দৃঢ়তার প্রয়োজন নবীর চরিত্রে সে সব ধীরে ধীরে সৃষ্টির জন্য আল্লাহ্ তাঁর বাণীকে বিভিন্ন সমস্যার পটভূমিতে ধীরে ধীরে অবতীর্ণ করেছেন – যেনো নবীর [ সা ] চরিত্র উপরোক্ত গুণাবলী ধারণ করে সমস্যাকে দৃঢ় ও কঠোরভাবে মোকাবিলা করতে পারেন। ২) “ধীরে ধীরে ধাপে ধাপে ” – সুদীর্ঘ তেইশ বছর ব্যপী ,সমাজ, রাষ্ট্র ও জীবনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে আত্মিক উন্নতির সোপান অতিক্রমের ধারাবাহিকতায় কোরাণ নাজেল হয়েছে ক্রমে ক্রমে ধাপে ধাপে। কোরাণ যদিও অবতীর্ণ হয়েছে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে , কিন্তু সম্পূর্ণ কোরাণ অবতীর্ণ হওয়ার পরে তাকে ধাপে ধাপে বিন্যস্ত করা হয়েছে আধ্যাত্মিক নির্দ্দেশনার সোপান রূপে। ৩) পরবর্তী আয়াতে আছে যে, কোরাণ ধীরে ধীরে অবতীর্ণ করা হয়েছে প্রতিটি সমস্যার ব্যাখ্যাদান করার জন্য এবং ধীরে ধীরে অবতীর্ণের ফলে মানব হৃদয়ে কোরাণের উপদেশাবলী অনুশীলনের মাধ্যমে ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এজন্য।
উপদেশ : বিশ্ব মানবের জন্য কোর-আনকে আত্মার মাঝে ধারণ করার উপায় এ ভাবেই বর্ণনা করা হয়েছে। সে কারণেই কোরাণকে প্রতিদিন পাঠ করতে হবে।
আয়াতঃ 025.033
তারা আপনার কাছে কোন সমস্যা উপস্থাপিত করলেই আমি আপনাকে তার সঠিক জওয়াব ও সুন্দর ব্যাখ্যা দান করি।
And no example or similitude do they bring (to oppose or to find fault in you or in this Qur’ân), but We reveal to you the truth (against that similitude or example), and the better explanation thereof.
وَلَا يَأْتُونَكَ بِمَثَلٍ إِلَّا جِئْنَاكَ بِالْحَقِّ وَأَحْسَنَ تَفْسِيرًا
Wala ya/toonaka bimathalin illa ji/naka bialhaqqi waahsana tafseeran
YUSUFALI: And no question do they bring to thee but We reveal to thee the truth and the best explanation (thereof).
PICKTHAL: And they bring thee no similitude but We bring thee the Truth (as against it), and better (than their similitude) as argument.
SHAKIR: And they shall not bring to you any argument, but We have brought to you (one) with truth and best in significance.
KHALIFA: Whatever argument they come up with, we provide you with the truth, and a better understanding.
৩৩। তারা তোমার নিকট এমন কোন প্রশ্ন উপস্থিত করে না কেন , যার প্রকৃত সত্য এবং সর্বোত্তম ব্যাখ্যা আমি তোমার নিকট অবতীর্ণ করি নাই ৩০৮৯।
৩০৮৯। কোরাণ হচ্ছে স্বর্গীয় জ্ঞানের মানুষের ভাষায় প্রকাশ মাত্র। স্বর্গীয় জ্ঞানের কোন সীমানা নেই – তা হচ্ছে আদিগন্ত, অসীম সমুদ্রের ন্যায়। যদি কেউ আন্তরিক ভাবে আল্লাহ্র জ্ঞানের সন্ধান লাভ করতে চায় তবে প্রথমে সত্যের সামান্য ঝলক মাত্র তার মনের পর্দ্দাকে উদ্ভাসিত করে। তবে আন্তরিক প্রচেষ্টা, তাদের মনোদিগন্তে ধীরে ধীরে সত্যের আলোর বা জ্যোতির প্রসারতা ঘটায়। আর এই প্রসরণ ঘটে ধাপে ধাপে। অন্তরের সত্যের বিকাশ এ ভাবেই বিশেষতঃ ঘটে থাকে। দৈনন্দিন সমস্যার উপরে আল্লাহ্র নির্দ্দেশিত পথের সমাধান অনুসন্ধানের মাধ্যমে শুরু হয় তার আত্মান্বেষণের যাত্রা এবং সত্যকে অনুধাবনের ক্ষমতার। আর এই অনুধাবন ক্ষমতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। যদি তারা সমস্যার সম্মুখীন হয় এবং সঠিক সমাধানের জন্য স্বর্গীয় সমাধানের সাহায্য প্রার্থনা করে , তবে তাদের জন্য সত্যের দুয়ার উম্মুক্ত হয়ে যায়। নবাগত মুসলিম উম্মার বিভিন্ন সমস্যার সমাধান ও পথের নির্দ্দেশনা আল্লাহ্ প্রত্যাদেশের মাধ্যমে অবতীর্ণ করেছেন , এ ভাবেই যখন কোনও সমস্যা সম্পর্কে নির্দ্দিষ্ট প্রশ্ন করা হয় তা শুধু সে যুগের বা নির্দ্দিষ্ট সেই ঘটনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। তা হয়ে যায় সার্বজনীন ও যুগ কাল অতিক্রান্ত। কারণ কোরাণের শিক্ষার আলো, মানুষের অনুভবের চেতনাকে সমৃদ্ধ করে তার চরিত্রকে সমুন্নত ও সঠিক পথে পরিচালিত করে। এ ভাবেই আল্লাহ্ কোরাণের মাধ্যমে মানুষের জন্য যে সমাধান বা পথ নির্দ্দেশ দান করেছেন তা নির্দ্দিষ্ট ঘটনার প্রেক্ষিতে অবতীর্ণ হলেও তার আবেদন সার্বজনীন।
আয়াতঃ 025.034
যাদেরকে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা অবস্থায় জাহান্নামের দিকে একত্রিত করা হবে, তাদেরই স্থান হবে নিকৃষ্ট এবং তারাই পথভ্রষ্ট।
Those who will be gathered to Hell (prone) on their faces, such will be in an evil state, and most astray from the (Straight) Path.
الَّذِينَ يُحْشَرُونَ عَلَى وُجُوهِهِمْ إِلَى جَهَنَّمَ أُوْلَئِكَ شَرٌّ مَّكَانًا وَأَضَلُّ سَبِيلًا
Allatheena yuhsharoona AAala wujoohihim ila jahannama ola-ika sharrun makanan waadallu sabeelan
YUSUFALI: Those who will be gathered to Hell (prone) on their faces,- they will be in an evil plight, and, as to Path, most astray.
PICKTHAL: Those who will be gathered on their faces unto hell: such are worse in plight and further from the right road.
SHAKIR: (As for) those who shall be gathered upon their faces to hell, they are in a worse plight and straying farther away from the path.
KHALIFA: Those who are forcibly summoned to Hell are in the worst position; they are the farthest from the right path.
৩৪। জাহান্নামে যাদের মুখ উপুর করা অবস্থায় সমবেত করা হবে ৩০৯০, তারা হবে দুর্দ্দশাগ্রস্থ এবং সবচেয়ে পথভ্রান্ত ৩০৯১।
৩০৯০। “মুখে ভর ” অর্থাৎ অত্যন্ত অসম্মানজনক অবস্থা।
৩০৯১। এই আয়াতটি [ ২৫ : ২৪ ] আয়াতের সাথে বিপরীতে তুলনা করা যায়। পূর্বের আয়াত ও এই আয়াতে পূণ্যাত্মা ও পাপীর মধ্যে তুলনা করা হয়েছে। পূর্বের আয়াতে [ ২৫ : ২৪ ] বলা হয়েছে , “জান্নাতবাসীদের বাসস্থান ………………. মনোরম, এবং এই আয়াতে বলা হয়েছ , ” জাহান্নামবাসীরা হবে দুর্দ্দশাগ্রস্থ এবং সবচেয়ে পথভ্রান্ত।” এভাবেই আয়াতটিকে শেষ করা হয়েছে।
আয়াতঃ 025.035
আমি তো মূসাকে কিতাব দিয়েছি এবং তাঁর সাথে তাঁর ভ্রাতা হারুনকে সাহায্যকারী করেছি।
And indeed We gave Mûsa (Moses) the Scripture [the Taurât (Torah)], and placed his brother Hârûn (Aaron) with him as a helper;
وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ وَجَعَلْنَا مَعَهُ أَخَاهُ هَارُونَ وَزِيرًا
Walaqad atayna moosa alkitaba wajaAAalna maAAahu akhahu haroona wazeeran
YUSUFALI: (Before this,) We sent Moses The Book, and appointed his brother Aaron with him as minister;
PICKTHAL: We verily gave Moses the Scripture and placed with him his brother Aaron as henchman.
SHAKIR: And certainly We gave Musa the Book and We appointed with him his brother Haroun an aider.
KHALIFA: We have given Moses the scripture, and appointed his brother Aaron to be his assistant.
রুকু – ৪
৩৫। [ এর পূর্বে ] আমি মুসাকে কিতাব দিয়েছিলাম এবং তাঁর সাথে তার ভাই হারুনকে সাহায্যকারী করেছিলাম ৩০৯২।
৩০৯২। দেখুন আয়াত [ ২০ : ২৯ ] , যেখানে হযরত মুসার আবেদনকে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই আয়াতকে [ ২৫ : ৩৫ ] বলা চলে পূর্বের আয়াতের ধারাবাহিকতা যেখানে আল্লাহ্ মুসার আবেদনকে মঞ্জুর করেছেন। এই আয়াতগুলোর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে যে, কিভাবে প্রাচীন যুগের লোকেরা আল্লাহ্র প্রেরিত দূতদের সাথে দুর্ব্যবহার করেছিলো , কিন্তু আল্লাহ্র প্রেরিত দূতেরা আল্লাহ্র প্রেরিত ন্যায় -অন্যায় , সত্য- অসত্যের মানদন্ডের উপরে ছিলেন অবিচলিত।
আয়াতঃ 025.036
অতঃপর আমি বলেছি, তোমরা সেই সম্প্রদায়ের কাছে যাও, যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা অভিহিত করেছে। অতঃপর আমি তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছি।
And We said: ”Go you both to the people who have denied Our Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.).” Then We destroyed them with utter destruction.
فَقُلْنَا اذْهَبَا إِلَى الْقَوْمِ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا فَدَمَّرْنَاهُمْ تَدْمِيرًا
Faqulna ithhaba ila alqawmi allatheena kaththaboo bi-ayatina fadammarnahum tadmeeran
YUSUFALI: And We command: “Go ye both, to the people who have rejected our Signs:” And those (people) We destroyed with utter destruction.
PICKTHAL: Then We said: Go together unto the folk who have denied Our revelations. Then We destroyed them, a complete destruction.
SHAKIR: Then We said: Go you both to the people who rejected Our communications; so We destroyed them with utter destruction.
KHALIFA: We said, “Go, both of you, to the people who rejected our revelations,” and subsequently, we utterly annihilated the rejectors.
৩৬। তারপরে আদেশ করেছিলাম , ” সেই সব লোকের কাছে যাও যারা আমার নিদর্শনসমূহ প্রত্যাখান করেছে।” অতঃপর আমি তাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছি।
৩৭। এবং নূহ্ এর সম্প্রদায় , যখন তারা রসুলকে প্রত্যাখান করলো – মানুষের নিকট দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য আমি তাদের [ পানিতে ] নিমজ্জিত করেছিলাম ৩০৯৩। এবং আমি [ সকল ] পাপীদের জন্য ভয়াবহ শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছি; –
৩০৯৩। নূহ্ নবী আ’দ জাতি এবং সামুদ জাতির [ এবং আর অন্যান্য ] বর্ণনা আছে পরবর্তী সূরার [ ২৬ : ১০৫ – ১৫৯ ] আয়াতে। এ সব সম্প্রদায় আল্লাহ্র প্রেরিত দূতদের শিক্ষাকে গ্রহণ করার পরিবর্তে তাঁদের অসম্মান করে। এই আয়াতে পরবর্তী আয়াতের ঘটনার সামান্যমাত্র উল্লেখ করা হয়েছে কি ভাবে সত্যের শিক্ষাকে যুগে যুগে অবমাননা করা হয়েছে। কিন্তু তাই বলে সত্য কখনও স্তব্ধ হয়ে যায় নাই। বরং সত্য প্রত্যাখানকারীরা পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায় যুগে যুগে।।
আয়াতঃ 025.037
নূহের সম্প্রদায় যখন রসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপ করল, তখন আমি তাদেরকে নিমজ্জত করলাম এবং তাদেরকে মানবমন্ডলীর জন্যে নিদর্শন করে দিলাম। জালেমদের জন্যে আমি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।
And Nûh’s (Noah) people, when they denied the Messengers We drowned them, and We made them as a sign for mankind. And We have prepared a painful torment for the Zâlimûn (polytheists and wrong-doers, etc).
وَقَوْمَ نُوحٍ لَّمَّا كَذَّبُوا الرُّسُلَ أَغْرَقْنَاهُمْ وَجَعَلْنَاهُمْ لِلنَّاسِ آيَةً وَأَعْتَدْنَا لِلظَّالِمِينَ عَذَابًا أَلِيمًا
Waqawma noohin lamma kaththaboo alrrusula aghraqnahum wajaAAalnahum lilnnasi ayatan waaAAtadna lilththalimeena AAathaban aleeman
YUSUFALI: And the people of Noah,- when they rejected the messengers, We drowned them, and We made them as a Sign for mankind; and We have prepared for (all) wrong-doers a grievous Penalty;-
PICKTHAL: And Noah’s folk, when they denied the messengers, We drowned them and made of them a portent for mankind. We have prepared a painful doom for evil-doers.
SHAKIR: And the people of Nuh, when they rejected the messengers, We drowned them, and made them a sign for men, and We have prepared a painful punishment for the unjust;
KHALIFA: Similarly, when the people of Noah disbelieved the messengers, we drowned them, and we set them up as a sign for the people. We have prepared for the transgressors a painful retribution.
৩৬। তারপরে আদেশ করেছিলাম , ” সেই সব লোকের কাছে যাও যারা আমার নিদর্শনসমূহ প্রত্যাখান করেছে।” অতঃপর আমি তাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছি।
৩৭। এবং নূহ্ এর সম্প্রদায় , যখন তারা রসুলকে প্রত্যাখান করলো – মানুষের নিকট দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য আমি তাদের [ পানিতে ] নিমজ্জিত করেছিলাম ৩০৯৩। এবং আমি [ সকল ] পাপীদের জন্য ভয়াবহ শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছি; –
৩০৯৩। নূহ্ নবী আ’দ জাতি এবং সামুদ জাতির [ এবং আর অন্যান্য ] বর্ণনা আছে পরবর্তী সূরার [ ২৬ : ১০৫ – ১৫৯ ] আয়াতে। এ সব সম্প্রদায় আল্লাহ্র প্রেরিত দূতদের শিক্ষাকে গ্রহণ করার পরিবর্তে তাঁদের অসম্মান করে। এই আয়াতে পরবর্তী আয়াতের ঘটনার সামান্যমাত্র উল্লেখ করা হয়েছে কি ভাবে সত্যের শিক্ষাকে যুগে যুগে অবমাননা করা হয়েছে। কিন্তু তাই বলে সত্য কখনও স্তব্ধ হয়ে যায় নাই। বরং সত্য প্রত্যাখানকারীরা পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায় যুগে যুগে।।
আয়াতঃ 025.038
আমি ধ্বংস করেছি আদ, সামুদ, কপবাসী এবং তাদের মধ্যবর্তী অনেক সম্প্রদায়কে।
And (also) ’Ad and Thamûd, and the dwellers of Ar-Rass, and many generations in between.
وَعَادًا وَثَمُودَ وَأَصْحَابَ الرَّسِّ وَقُرُونًا بَيْنَ ذَلِكَ كَثِيرًا
WaAAadan wathamooda waas-haba alrrassi waquroonan bayna thalika katheeran
YUSUFALI: As also ‘Ad and Thamud, and the Companions of the Rass, and many a generation between them.
PICKTHAL: And (the tribes of) A’ad and Thamud, and the dwellers in Ar-Rass, and many generations in between.
SHAKIR: And Ad and Samood and the dwellers of the Rass and many generations between them.
KHALIFA: Also `Aad, Thamoud, the inhabitants of Al-Russ, and many generations between them.
৩৮। যেরূপ করেছিলাম আ’দ এবং সামুদ এবং রাস জাতিদের সম্বন্ধে এবং ওদের মধ্যবর্তী বহু জাতির সম্বন্ধে ৩০৯৪।
৩০৯৪। “রাস্সের অধিবাসী ” বলতে সঠিক ভাবে কাদের বোঝানো হয়েছে , তফসীরকারগণ এ ব্যাপারে নিশ্চিন্ত নন। “Rass” মূল শব্দটির অর্থ কূপ বা পানির অগভীর উৎস। এর অন্য আর একটি অর্থ মৃতের কবর দেয়ার সাথে সংযুক্ত। কিন্তু সম্ভবতঃ ‘রাসসের’ অধিবাসীরা সুয়েব নবীর সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলো, কারণ এখানে আদ, সামুদ জাতির সাথে তাদের উল্লেখ করা হয়েছে। আরবের উত্তর পশ্চিমে ছিলো ‘মাদিয়ান’ সম্প্রদায়ের আবাসস্থল – যেখানে বহু পূরানো কূপের সন্ধান পাওয়া যায়। নাজদ [Najd] মধ্যবর্তী স্থানে কাশিম [Qasim] জেলাতে মরুদ্যান বেষ্টিত শহর আল-রাস [Al- Rass] আছে যার সঠিক অবস্থান হচ্ছে নিম্নরূপ : আরব উপদ্বীপের কেন্দ্রবিন্দুতে, মক্কা ও বসরার মধ্যবর্তী স্থানে ” উনাইজা ” [Unaiza] শহরের পয়ত্রিশ মাইল দক্ষিণ -পশ্চিমে, এই ছোট্ট শহর আল রাসের অবস্থান। দেখুন Doughty’s Arabia Deserta বই। পাতলা কাগজে বাঁধানো একখন্ডে লন্ডন থেকে ১৯২৬ সনে প্রকাশিত edition, London 1926, এর II 435 পৃঃ এবং ম্যাপে যার অবস্থান বর্ণনা করা হয়েছে , অক্ষাংশ ২৬° উত্তর এবং দ্রাঘিমাংশ ৪৩° পূর্ব। ]
আয়াতঃ 025.039
আমি প্রত্যেকের জন্যেই দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছি এবং প্রত্যেককেই সম্পুর্ণরূপে ধ্বংস করেছি।
And for each of them We put forward examples (as proofs and lessons, etc.), and each (of them) We brought to utter ruin (because of their disbelief and evil deeds).
وَكُلًّا ضَرَبْنَا لَهُ الْأَمْثَالَ وَكُلًّا تَبَّرْنَا تَتْبِيرًا
Wakullan darabna lahu al-amthala wakullan tabbarna tatbeeran
YUSUFALI: To each one We set forth Parables and examples; and each one We broke to utter annihilation (for their sins).
PICKTHAL: Each (of them) We warned by examples, and each (of them) We brought to utter ruin.
SHAKIR: And to every one We gave examples and every one did We destroy with utter destruction.
KHALIFA: To each of these groups, we delivered sufficient examples, before we annihilated them.
৩৯। তাদের প্রত্যেকের জন্য আমি উপমা এবং উদাহরণ উপস্থিত করেছি এবং [ তাদের পাপের জন্য ] প্রত্যেককেই আমি সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছি।
৪০। এবং যে জনপদের উপরে বর্ষিত হয়েছিলো অকল্যাণের বৃষ্টি, (অবিশ্বাসীরা) তো সেই জনপদ দিয়েই যাতায়াত করে ৩০৯৫। তারা কি তা প্রত্যক্ষ করে না? কিন্তু তবুও তারা পুনরুত্থানের ভয় করে না।
৩০৯৫। ‘সেই জনপদ’ দ্বারা লূতের সম্প্রদায়ের বাসস্থানকে বোঝানো হয়েছে। মরু সাগরের [Dead Sea] তীরে অবস্থিত ‘সদম’ ও ‘ গোমরাহ্ ‘ শহরের ধ্বংসের উল্লেখ এখানে করা হয়েছে , যা প্রস্তর খন্ড বর্ষণ দ্বারা ধ্বংস করা হয়। স্থানটির অবস্থান সম্পর্কে বলা হয় , তা আরব ও সিরিয়ার বানিজ্য পথের ধারে মরু সাগরের উপকণ্ঠে অবস্থিত ছিলো। দেখুন [ ১৫ : ৭৪, ৭৬ ] আয়াত এবং টিকা ১৯৯৮।
আয়াতঃ 025.040
তারা তো সেই জনপদের উপর দিয়েই যাতায়াত করে, যার ওপর বর্ষিত হয়েছে মন্দ বৃষ্টি। তবে কি তারা তা প্রত্যক্ষ করে না? বরং তারা পুনরুজ্জীবনের আশঙ্কা করে না।
And indeed they have passed by the town [of Prophet Lout (Lot)] on which was rained the evil rain. Did they (disbelievers) not then see it (with their own eyes)? Nay ! But they used not to expect for any resurrection.
وَلَقَدْ أَتَوْا عَلَى الْقَرْيَةِ الَّتِي أُمْطِرَتْ مَطَرَ السَّوْءِ أَفَلَمْ يَكُونُوا يَرَوْنَهَا بَلْ كَانُوا لَا يَرْجُونَ نُشُورًا
Walaqad ataw AAala alqaryati allatee omtirat matara alssaw-i afalam yakoonoo yarawnaha bal kanoo la yarjoona nushooran
YUSUFALI: And the (Unbelievers) must indeed have passed by the town on which was rained a shower of evil: did they not then see it (with their own eyes)? But they fear not the Resurrection.
PICKTHAL: And indeed they have passed by the township whereon was rained the fatal rain. Can it be that they have not seen it? Nay, but they hope for no resurrection.
SHAKIR: And certainly they have (often) passed by the town on which was rained an evil rain; did they not then see it? Nay! they did not hope to be raised again.
KHALIFA: They have passed by the community that was showered with a miserable shower (Sodom). Did they not see it? The fact is, they never believed in resurrection.
৩৯। তাদের প্রত্যেকের জন্য আমি উপমা এবং উদাহরণ উপস্থিত করেছি এবং [ তাদের পাপের জন্য ] প্রত্যেককেই আমি সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছি।
৪০। এবং যে জনপদের উপরে বর্ষিত হয়েছিলো অকল্যাণের বৃষ্টি, (অবিশ্বাসীরা) তো সেই জনপদ দিয়েই যাতায়াত করে ৩০৯৫। তারা কি তা প্রত্যক্ষ করে না? কিন্তু তবুও তারা পুনরুত্থানের ভয় করে না।
৩০৯৫। ‘সেই জনপদ’ দ্বারা লূতের সম্প্রদায়ের বাসস্থানকে বোঝানো হয়েছে। মরু সাগরের [Dead Sea] তীরে অবস্থিত ‘সদম’ ও ‘ গোমরাহ্ ‘ শহরের ধ্বংসের উল্লেখ এখানে করা হয়েছে , যা প্রস্তর খন্ড বর্ষণ দ্বারা ধ্বংস করা হয়। স্থানটির অবস্থান সম্পর্কে বলা হয় , তা আরব ও সিরিয়ার বানিজ্য পথের ধারে মরু সাগরের উপকণ্ঠে অবস্থিত ছিলো। দেখুন [ ১৫ : ৭৪, ৭৬ ] আয়াত এবং টিকা ১৯৯৮।
আয়াতঃ 025.041
তারা যখন আপনাকে দেখে, তখন আপনাকে কেবল বিদ্রুপের পাত্ররূপে গ্রহণ করে, বলে, এ-ই কি সে যাকে আল্লাহ ‘রসূল’ করে প্রেরণ করেছেন?
And when they see you (O Muhammad SAW), they treat you only as a mockery (saying):”Is this the one whom Allâh has sent as a Messenger?
وَإِذَا رَأَوْكَ إِن يَتَّخِذُونَكَ إِلَّا هُزُوًا أَهَذَا الَّذِي بَعَثَ اللَّهُ رَسُولًا (
Wa-itha raawka in yattakhithoonaka illa huzuwan ahatha allathee baAAatha Allahu rasoolan
YUSUFALI: When they see thee, they treat thee no otherwise than in mockery: “Is this the one whom Allah has sent as a messenger?”
PICKTHAL: And when they see thee (O Muhammad) they treat thee only as a jest (saying): Is this he whom Allah sendeth as a messenger?
SHAKIR: And when they see you, they do not take you for aught but a mockery: Is this he whom Allah has raised to be an messenger?
KHALIFA: When they saw you, they always ridiculed you: “Is this the one chosen by GOD to be a messenger?
৪১। যখনই তারা তোমাকে দেখে, তারা তোমাকে উপহাস না করে ছাড়ে না : ” এই কি সেই ব্যক্তি যাকে আল্লাহ্ রসুল করে পাঠিয়েছেন?
৪২। ” সে তো আমাদের আমাদিগের উপাস্য থেকে পথভ্রষ্ট করে ফেলার উপক্রম করেছিলো, যদি না আমরা তাদের প্রতি অবিচলিত থাকতাম।”- শীঘ্রই তারা জানতে পারবে, যখন তারা শাস্তিকে প্রত্যক্ষ করবে- যে কোন্ ব্যক্তি পথ থেকে অধিক ভ্রষ্ট। ৩০৯৬
৩০৯৬। “Sabil” শব্দটির অর্থ পথ। এখানে পথভ্রষ্ট শব্দটির দ্বারা চরিত্রের নৈতিক মূল্যবোধ বিচ্যুতিকে বোঝানো হয়েছে। জীবন যাপনে নৈতিকতা বর্জিত ব্যক্তি।
আয়াতঃ 025.042
সে তো আমাদেরকে আমাদের উপাস্যগণের কাছ থেকে সরিয়েই দিত, যদি আমরা তাদেরকে আঁকড়ে ধরে না থাকতাম। তারা যখন শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে, তখন জানতে পারবে কে অধিক পথভ্রষ্ট।
”He would have nearly misled us from our âliha (gods), had it not been that we were patient and constant in their worship!” And they will know when they see the torment, who it is that is most astray from the (Right) Path!
إِن كَادَ لَيُضِلُّنَا عَنْ آلِهَتِنَا لَوْلَا أَن صَبَرْنَا عَلَيْهَا وَسَوْفَ يَعْلَمُونَ حِينَ يَرَوْنَ الْعَذَابَ مَنْ أَضَلُّ سَبِيلًا
In kada layudilluna AAan alihatina lawla an sabarna AAalayha wasawfa yaAAlamoona heena yarawna alAAathaba man adallu sabeelan
YUSUFALI: “He indeed would well-nigh have misled us from our gods, had it not been that we were constant to them!” – Soon will they know, when they see the Penalty, who it is that is most misled in Path!
PICKTHAL: He would have led us far away from our gods if we had not been staunch to them. They will know, when they behold the doom, who is more astray as to the road.
SHAKIR: He had well-nigh led us astray from our gods had we not adhered to them patiently! And they will know, when they see the punishment, who is straying farther off from the path.
KHALIFA: “He almost diverted us from our gods, if it were not that we steadfastly persevered with them.” They will certainly find out, when they see the retribution, who are the real strayers from the path.
৪১। যখনই তারা তোমাকে দেখে, তারা তোমাকে উপহাস না করে ছাড়ে না : ” এই কি সেই ব্যক্তি যাকে আল্লাহ্ রসুল করে পাঠিয়েছেন?
৪২। ” সে তো আমাদের আমাদিগের উপাস্য থেকে পথভ্রষ্ট করে ফেলার উপক্রম করেছিলো, যদি না আমরা তাদের প্রতি অবিচলিত থাকতাম।”- শীঘ্রই তারা জানতে পারবে, যখন তারা শাস্তিকে প্রত্যক্ষ করবে- যে কোন্ ব্যক্তি পথ থেকে অধিক ভ্রষ্ট। ৩০৯৬
৩০৯৬। “Sabil” শব্দটির অর্থ পথ। এখানে পথভ্রষ্ট শব্দটির দ্বারা চরিত্রের নৈতিক মূল্যবোধ বিচ্যুতিকে বোঝানো হয়েছে। জীবন যাপনে নৈতিকতা বর্জিত ব্যক্তি।
আয়াতঃ 025.043
আপনি কি তাকে দেখেন না, যে তারা প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে? তবুও কি আপনি তার যিম্মাদার হবেন?
Have you (O Muhammad SAW) seen him who has taken as his ilâh (god) his own desire? Would you then be a Wakîl (a disposer of his affairs or a watcher) over him?
أَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَهَهُ هَوَاهُ أَفَأَنتَ تَكُونُ عَلَيْهِ وَكِيلًا
Araayta mani ittakhatha ilahahu hawahu afaanta takoonu AAalayhi wakeelan
YUSUFALI: Seest thou such a one as taketh for his god his own passion (or impulse)? Couldst thou be a disposer of affairs for him?
PICKTHAL: Hast thou seen him who chooseth for his god his own lust? Wouldst thou then be guardian over him?
SHAKIR: Have you seen him who takes his low desires for his god? Will you then be a protector over him?
KHALIFA: Have you seen the one whose god is his own ego? Will you be his advocate?
৪৩। তুমি কি এরূপ ব্যক্তিকে দেখ না যে তার আপন ভাবাবেগকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছে ? [এরপরেও] তুমি কি তার কর্মবিধায়ক হতে পার ? ৩০৯৭
৪৪। তুমি কি মনে কর তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বুঝতে পারে ? তারা তো গৃহপালিত পশুর মতই ; বরং পথভ্রষ্টতায় নিকৃষ্টতম।
৩০৯৭। যে লোক প্রবৃত্তির অধীনে , যে শুধুমাত্র নিজ প্রবৃত্তির পরিতৃপ্তিতে নিয়োজিত তার পক্ষে আল্লাহ্র হেদায়েত গ্রহণ করা দুঃসাধ্য ব্যাপার। প্রবৃত্তির বশীভূত ব্যক্তিকে সঠিক পথে পরিচালিত করা বা হেদায়েত করা সম্ভব নয়। সে কথাকেই এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্ আমাদের বলেছেন। মানুষের দেহে একই সাথে প্রবৃত্তিরূপ শয়তান বিদ্যমান আবার মহৎ গুণাবলী যা আল্লাহ্র নামের সাথে সম্পৃক্ত তাও বিদ্যমান। মানুষের বিভিন্ন রীপু সমূহ যথা , কাম, ক্রোধ, লোভ, অহংকার, আত্মগরিমা, হিংসা -দ্বেষ , প্রভৃতি রীপু এবং এ সব রীপু থেকে উৎপন্ন খারাপ ও কদর্য অভ্যাস সমূহ যেমন মিথ্যাচারীতা, প্রতারাণার প্রবণতা, অন্যের জিনিষ অন্যায় ভাবে গ্রাসের প্রবণতা, অহেতুক বিলাসীতার আকাঙ্খা ইত্যাদি একজনকে প্রবৃত্তির দাসে পরিণত করে। সুতারাং যারা প্রবৃত্তির দাস , তাদের কথা আল্লাহ্ পরবর্তী আয়াতে বলেছেন যে তারা পশুর সমকক্ষ বা তারও অধম। কারণ কোনও হেদায়েতই এদের সঠিক পথে আনতে পারবে না। এমনকি নবী করিমের [ সা ] আবেদনও এদের কাছে তুচ্ছ মনে হবে। কারণ পাপাচারীরা প্রবৃত্তির তারণায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়ে যাওয়ার ফলে তাদের স্বাভাবিক বিচার বুদ্ধি লোপ পেয়ে যায়। কোন যুক্তিই তাদের অন্ধ কামনা-বাসনার উপরে স্থান লাভ করে না। তারা তাদের অন্ধ কামনা-বাসনার আকাঙ্খা ত্যাগ না করা পর্যন্ত তাদের জন্য সঠিক পথের অন্বেষণ করা বাতুলতা মাত্র। তার হেদায়েতের দায়িত্ব গ্রহণ করা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়, কারণ সে কোনও নৈতিক আইন বা উপদেশ মানতে ইচ্ছুক নয়। নৈতিকতা অর্জন ব্যতীত কিভাবে হেদায়েতের পথ পাওয়া সম্ভব ? সে তো পশুরও অধম। পশু হয়তো সদুপদেশ বুঝতে পারে না , একথা সত্য , কিন্তু আল্লাহ্ পশুর চরিত্রে যে সহজাত স্বাভাবিক প্রেরণা প্রেথিত করে দিয়েছেন তার সৃষ্টিলগ্নে , তা পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণী অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলে। এই প্রেরণা বা প্রবণতাকে অস্বীকার করার ক্ষমতা কোনও প্রাণীর নাই। “সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ” লাভের ফলে মানুষ বারে বারে আল্লাহ্র আইনকে লঙ্ঘন করে ফলে সে প্রবৃত্তির অনুগত হয়ে পড়ে এবং আল্লাহ্র হেদায়েত গ্রহণে হয় অপারগ।
আয়াতঃ 025.044
আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে ? তারা তো চতুস্পদ জন্তুর মত; বরং আরও পথভ্রান্ত
Or do you think that most of them hear or understand? They are only like cattle; nay, they are even farther astray from the Path. (i.e. even worst than cattle).
أَمْ تَحْسَبُ أَنَّ أَكْثَرَهُمْ يَسْمَعُونَ أَوْ يَعْقِلُونَ إِنْ هُمْ إِلَّا كَالْأَنْعَامِ بَلْ هُمْ أَضَلُّ سَبِيلًا
Am tahsabu anna aktharahum yasmaAAoona aw yaAAqiloona in hum illa kaal-anAAami bal hum adallu sabeelan
YUSUFALI: Or thinkest thou that most of them listen or understand? They are only like cattle;- nay, they are worse astray in Path.
PICKTHAL: Or deemest thou that most of them hear or understand? They are but as the cattle – nay, but they are farther astray?
SHAKIR: Or do you think that most of them do hear or understand? They are nothing but as cattle; nay, they are straying farther off from the path.
KHALIFA: Do you think that most of them hear, or understand? They are just like animals; no, they are far worse.
৪৩। তুমি কি এরূপ ব্যক্তিকে দেখ না যে তার আপন ভাবাবেগকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছে ? [এরপরেও] তুমি কি তার কর্মবিধায়ক হতে পার ? ৩০৯৭
৪৪। তুমি কি মনে কর তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বুঝতে পারে ? তারা তো গৃহপালিত পশুর মতই ; বরং পথভ্রষ্টতায় নিকৃষ্টতম।
৩০৯৭। যে লোক প্রবৃত্তির অধীনে , যে শুধুমাত্র নিজ প্রবৃত্তির পরিতৃপ্তিতে নিয়োজিত তার পক্ষে আল্লাহ্র হেদায়েত গ্রহণ করা দুঃসাধ্য ব্যাপার। প্রবৃত্তির বশীভূত ব্যক্তিকে সঠিক পথে পরিচালিত করা বা হেদায়েত করা সম্ভব নয়। সে কথাকেই এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্ আমাদের বলেছেন। মানুষের দেহে একই সাথে প্রবৃত্তিরূপ শয়তান বিদ্যমান আবার মহৎ গুণাবলী যা আল্লাহ্র নামের সাথে সম্পৃক্ত তাও বিদ্যমান। মানুষের বিভিন্ন রীপু সমূহ যথা , কাম, ক্রোধ, লোভ, অহংকার, আত্মগরিমা, হিংসা -দ্বেষ , প্রভৃতি রীপু এবং এ সব রীপু থেকে উৎপন্ন খারাপ ও কদর্য অভ্যাস সমূহ যেমন মিথ্যাচারীতা, প্রতারাণার প্রবণতা, অন্যের জিনিষ অন্যায় ভাবে গ্রাসের প্রবণতা, অহেতুক বিলাসীতার আকাঙ্খা ইত্যাদি একজনকে প্রবৃত্তির দাসে পরিণত করে। সুতারাং যারা প্রবৃত্তির দাস , তাদের কথা আল্লাহ্ পরবর্তী আয়াতে বলেছেন যে তারা পশুর সমকক্ষ বা তারও অধম। কারণ কোনও হেদায়েতই এদের সঠিক পথে আনতে পারবে না। এমনকি নবী করিমের [ সা ] আবেদনও এদের কাছে তুচ্ছ মনে হবে। কারণ পাপাচারীরা প্রবৃত্তির তারণায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়ে যাওয়ার ফলে তাদের স্বাভাবিক বিচার বুদ্ধি লোপ পেয়ে যায়। কোন যুক্তিই তাদের অন্ধ কামনা-বাসনার উপরে স্থান লাভ করে না। তারা তাদের অন্ধ কামনা-বাসনার আকাঙ্খা ত্যাগ না করা পর্যন্ত তাদের জন্য সঠিক পথের অন্বেষণ করা বাতুলতা মাত্র। তার হেদায়েতের দায়িত্ব গ্রহণ করা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়, কারণ সে কোনও নৈতিক আইন বা উপদেশ মানতে ইচ্ছুক নয়। নৈতিকতা অর্জন ব্যতীত কিভাবে হেদায়েতের পথ পাওয়া সম্ভব ? সে তো পশুরও অধম। পশু হয়তো সদুপদেশ বুঝতে পারে না , একথা সত্য , কিন্তু আল্লাহ্ পশুর চরিত্রে যে সহজাত স্বাভাবিক প্রেরণা প্রেথিত করে দিয়েছেন তার সৃষ্টিলগ্নে , তা পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণী অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলে। এই প্রেরণা বা প্রবণতাকে অস্বীকার করার ক্ষমতা কোনও প্রাণীর নাই। “সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ” লাভের ফলে মানুষ বারে বারে আল্লাহ্র আইনকে লঙ্ঘন করে ফলে সে প্রবৃত্তির অনুগত হয়ে পড়ে এবং আল্লাহ্র হেদায়েত গ্রহণে হয় অপারগ।
আয়াতঃ 025.045
তুমি কি তোমার পালনকর্তাকে দেখ না, তিনি কিভাবে ছায়াকে বিলম্বিত করেন? তিনি ইচ্ছা করলে একে স্থির রাখতে পারতেন। এরপর আমি সূর্যকে করেছি এর নির্দেশক।
Have you not seen how your Lord spread the shadow. If He willed, He could have made it still then We have made the sun its guide [i.e. after the sunrise, it (the shadow) squeezes and vanishes at midnoon and then again appears in the afternoon with the decline of the sun, and had there been no sun light, there would have been no shadow].
أَلَمْ تَرَ إِلَى رَبِّكَ كَيْفَ مَدَّ الظِّلَّ وَلَوْ شَاء لَجَعَلَهُ سَاكِنًا ثُمَّ جَعَلْنَا الشَّمْسَ عَلَيْهِ دَلِيلًا
Alam tara ila rabbika kayfa madda alththilla walaw shaa lajaAAalahu sakinan thumma jaAAalna alshshamsa AAalayhi daleelan
YUSUFALI: Hast thou not turned thy vision to thy Lord?- How He doth prolong the shadow! If He willed, He could make it stationary! then do We make the sun its guide;
PICKTHAL: Hast thou not seen how thy Lord hath spread the shade – And if He willed He could have made it still – then We have made the sun its pilot;
SHAKIR: Have you not considered (the work of) your Lord, how He extends the shade? And if He had pleased He would certainly have made it stationary; then We have made the sun an indication of it
KHALIFA: Have you not seen how your Lord designed the shadow? If He willed, He could have made it fixed, then we would have designed the sun accordingly.
রুকু-৫
৪৫। তুমি কি তোমার প্রভুর দিকে লক্ষ্য কর নাই ? ৩০৯৮- কি ভাবে তিনি ছায়াকে দীর্ঘায়িত করেন ৩০৯৯ ? তিনি ইচ্ছা করলে একে নিশ্চল রাখতে পারতেন। অতঃপর আমি সূর্যকে করেছি এর নির্দেশক ৩১০০ !
৩০৯৮। লক্ষ্য করুণ আয়াত [ ২৪ : ৩৫ ] এ আল্লাহ্কে বলা হয়েছে আকাশ ও পৃথিবীর আলো স্বরূপ। এই আর একটি আয়াত যেখানে আল্লাহ্র মহিমান্বিত রূপকে অনুধাবন করতে বলা হয়েছে তাঁর সৃষ্ট আলো ও ছায়ার ধারণা সম্বন্ধে চিন্তার মাধ্যমে।
৩০৯৯। নগর কেন্দ্রীক জীবনে আমরা , আলো ও ছায়ার যে অপূর্ব লীলা খেলা বিশ্ব ভূবন জুড়ে প্রতি নিয়ত প্রতি পলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে , তার খোঁজ আমরা রাখি না। আমরা সূর্যাস্তের রং এর খেলা দেখে মুগ্ধ হই। গোধূলীর আবীরে মাখা পশ্চিম আকাশের সৌন্দর্য আমাদের পৃথিবীর মালিন্যের উর্দ্ধে নিয়ে যায়। কিন্তু শহর ভিত্তিক অধিকাংশ লোকই প্রত্যুষের সূর্যদয়ের লগ্নে আলো ছায়ার স্বর্গীয় দৃশ্য জীবনে কখনও অবলোকনের সুযোগ পায় নাই। সূর্য দিক্চক্রবালের অতিক্রমের পূর্বে শুরু হয় আলো আঁধারির খেলা। সূর্যের সমস্ত দিনের যাত্রা পথে প্রত্যুষ হচ্ছে সর্বাপেক্ষা পবিত্র সময়। কারণ এ সময়ে দিনের কর্ম কোলাহল থাকে না। কর্মচঞ্চলতামুক্ত প্রকৃতি থাকে কলুষতা মুক্ত। সারারাত্রি বিশ্রামের পরে বিশ্ব প্রকৃতি থাকে নূতন সূর্যদয়ের জন্য উন্মুখ – পূত পবিত্র ভাব সমস্ত প্রকৃতিকে পরিব্যপ্ত করে থাকে। এর মাঝে দিক্চক্রবালে চলে আলো আঁধারির খেলা। প্রত্যুষের ও গোধূলির যে আলো তা সূর্যের সরাসরি আলো নয়, তা প্রকৃত সূর্যের আলোর প্রতিফলন মাত্র। গোধূলি বিলিন হয় রাত্রির অন্ধকারে, প্রত্যুষের অর্ন্তধান ঘটে দিনের আগমনে। দিনের সূর্য , প্রকৃত ছায়ার সাথে সম্পৃক্ত।
৩১০০। সকালের সূর্যের যে ছায়া তা স্পষ্ট ও দীর্ঘায়িত। এই ছায়ার আকৃতি ও দিক্ সূর্যের গতিপথের সাথে সম্পৃক্ত। এই ছায়ার অস্তিত্ব প্রতি মূহুর্তে সূর্যের সাথে পরিবর্তনশীল।
আয়াতঃ 025.046
অতঃপর আমি একে নিজের দিকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে আনি।
Then We withdraw it to Us a gradual concealed withdrawal.
ثُمَّ قَبَضْنَاهُ إِلَيْنَا قَبْضًا يَسِيرًا
Thumma qabadnahu ilayna qabdan yaseeran
YUSUFALI: Then We draw it in towards Ourselves,- a contraction by easy stages.
PICKTHAL: Then We withdraw it unto Us, a gradual withdrawal?
SHAKIR: Then We take it to Ourselves, taking little by little.
KHALIFA: But we designed it to move slowly.
৪৬। অতঃপর আমি একে আস্তে আস্তে নিজের দিকে টেনে ছোট করে ফেলি ৩১০১, ৩১০২।
৩১০১। ‘একে’ অর্থাৎ ছায়াকে। সূর্য যত উপরে উঠতে থাকে, ছায়ার দৈর্ঘ তত ছোট হতে থাকে। সূর্য যখন দুপুরে ঠিক মাথার উপরে থাকে তখন ছায়া অত্যন্ত খর্বাকৃতি হয়, প্রায় থাকে না বললেই চলে। ছায়া তখন কোথায় যায়। ছায়া বস্তুর দ্বারা সূর্যরশ্মী বাধা প্রাপ্ত হওয়ার ফলে সৃষ্টি হয় , আবার এই ছায়া বস্তু দ্বারাই খর্বাকৃতি হয় এও এক প্রকৃতির নিয়ম।
৩১০২। পরিবর্তনশীল ছায়ার মাধ্যমে এই সত্যকে তুলে ধরা হয়েছে যে, পৃথিবীর সকল কিছুই , জীবনের সকল কিছুই সর্বদা পরিবর্তনশীল। যদি আল্লাহ্ ইচ্ছা করতেন, তবে প্রকৃতির আইনকে অন্যভাবে সৃষ্টি করতে পারতেন, যাতে সকল বস্তু স্থায়ী রূপ লাভ করতো।
আয়াতঃ 025.047
তিনিই তো তোমাদের জন্যে রাত্রিকে করেছেন আবরণ, নিদ্রাকে বিশ্রাম এবং দিনকে করেছেন বাইরে গমনের জন্যে।
And it is He Who makes the night a covering for you, and the sleep (as) repose, and makes the day Nushûr (i.e. getting up and going about here and there for daily work, etc. after one’s sleep at night or like resurrection after one’s death).
وَهُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ اللَّيْلَ لِبَاسًا وَالنَّوْمَ سُبَاتًا وَجَعَلَ النَّهَارَ نُشُورًا
Wahuwa allathee jaAAala lakumu allayla libasan waalnnawma subatan wajaAAala alnnahara nushooran
YUSUFALI: And He it is Who makes the Night as a Robe for you, and Sleep as Repose, and makes the Day (as it were) a Resurrection.
PICKTHAL: And He it is Who maketh night a covering for you, and sleep repose, and maketh day a resurrection.
SHAKIR: And He it is Who made the night a covering for you, and the sleep a rest, and He made the day to rise up again.
KHALIFA: He is the One who designed the night to be a cover, and for you to sleep and rest. And He made the day a resurrection.
৪৭। তিনিই রাত্রিকে তোমাদের জন্য করেছেন আভরণ স্বরূপ , এবং বিশ্রামের জন্য দিয়েছেন নিদ্রা, এবং পুণরায় জাগ্রত হওয়ার সময় করেছেন দিনকে ৩১০৩।
৩১০৩। আলো ও অন্ধকারের তুলনা এই আয়াতেও করা হয়েছে। আলো হচ্ছে দিনের প্রতীক;অন্ধকার রাত্রির প্রতীক। রাত্রির অন্ধকারকে পোষাকের সাথে তুলনা করা হয়েছে, পোষাক যেরূপ শরীরকে আবৃত করে , লজ্জা নিবারণ করে এবং শীত ও গ্রীষ্মের প্রকোপ থেকে শরীরকে রক্ষা করে আরাম প্রদান করে , রাত্রিও সেরূপ বিশ্রামের সুষুপ্তি দ্বারা দিবসের কর্মের ক্লান্তি থেকে শরীরকে রক্ষা করে। রাত্রির অন্ধকার আমাদের বিরত রাখে দিবসের ব্যস্ত কর্মময় জীবন, থেকে ঠিক পোষাকের মত। অপর পক্ষে , দিনের আলো হচ্ছে উদ্যম, কর্ম ও জীবন সংগ্রামের প্রতীক। আবার রাত্রির ঘুমের উপমা হচ্ছে মৃত্যুসম। প্রকৃত মৃত্যুর পূর্বে অস্থায়ী মৃত্যু। কারণ ঘুমের মাঝে আমাদের চেতনা লোপ পায়। দিনের আলোতে আমরা জেগে উঠি, আমাদের জীবনে আবার কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসে। সে ভাবে দিন হচ্ছে জীবনের এবং জীবনের সংগ্রামের প্রতীক।
আয়াতঃ 025.048
তিনিই স্বীয় রহমতের প্রাক্কালে বাতাসকে সুসংবাদবাহীরূপে প্রেরণ করেন। এবং আমি আকাশ থেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্যে পানি বর্ষণ করি।
And it is He Who sends the winds as heralds of glad tidings, going before His Mercy (rain), and We send down pure water from the sky,
وَهُوَ الَّذِي أَرْسَلَ الرِّيَاحَ بُشْرًا بَيْنَ يَدَيْ رَحْمَتِهِ وَأَنزَلْنَا مِنَ السَّمَاء مَاء طَهُورًا
Wahuwa allathee arsala alrriyaha bushran bayna yaday rahmatihi waanzalna mina alssama-i maan tahooran
YUSUFALI: And He it is Who sends the winds as heralds of glad tidings, going before His mercy, and We send down pure water from the sky,-
PICKTHAL: And He it is Who sendeth the winds, glad tidings heralding His mercy, and We send down purifying water from the sky,
SHAKIR: And He it is Who sends the winds as good news before His mercy; and We send down pure water from the cloud,
KHALIFA: He is the One who sends the winds with good omens of His mercy, and we send down from the sky pure water.
৪৮। এবং তিনিই স্বীয় অনুগ্রহের পূর্বে সুসংবাদ বাহীরূপে বায়ু প্রেরণ করেন ৩১০৪ এবং আমি আকাশে থেকে বিশুদ্ধ পানি বর্ষণ করি ৩১০৫।
৩১০৪। দেখুন আয়াত [ ৭ : ৫৭ ]। মেঘভারাক্রান্ত বায়ু আল্লাহ্র রহমত স্বরূপ। আল্লাহ্র রহমত ও করুণাকে মেঘভারাক্রান্ত বায়ুর উপমার সাহায্যে তুলে ধরা হয়েছে। এই আয়াতের মাধ্যমে আলোর প্রতীককে নূতন ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। দিনের আলোর সাথে সূর্যের তাপের সম্পর্ক বিদ্যমান। সূর্যের তাপ বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি করে পৃথিবীতে এবং সমুদ্র থেকে জলীয় বাস্প উত্থিত করে মেঘে পরিণত করে। এই মেঘ বায়ুপ্রবাহের দ্বারা তাড়িত হয়ে স্থলভাগে বৃষ্টিপাত ঘটায়। জীবনের বিকাশের জন্য ‘তাপের’ প্রয়োজনীয়তার কথা আমরা সকলেই জানি। আবার গ্রীষ্মের দাব্দাহে প্রাণ যখন ওষ্ঠাগত হয়ে পড়ে, মেঘভারাক্রান্ত বায়ু তখন বৃষ্টির সুসংবাদ বহন করে আনে।
৩১০৫। “বিশুদ্ধ পানি” – বৃষ্টির পানি হচ্ছে প্রকৃতিতে প্রাপ্ত সর্বাপেক্ষা বিশুদ্ধ পানি। আল্লাহ্র বিশাল রসায়নাগারে প্রাকৃতিক উপায়ে পানি পাতিত [Distilled] হয়ে মেঘরূপে জমা হচ্ছে। বৃষ্টির পানি হচ্ছে বিশুদ্ধ পাতিত পানি [Distilled]।
আয়াতঃ 025.049
তদ্দ্বারা মৃত ভূভাগকে সঞ্জীবিত করার জন্যে এবং আমার সৃষ্ট জীবজন্তু ও অনেক মানুষের তৃষ্ণা নিবারণের জন্যে।
That We may give life thereby to a dead land, and We give to drink thereof many of the cattle and men that We had created.
لِنُحْيِيَ بِهِ بَلْدَةً مَّيْتًا وَنُسْقِيَهُ مِمَّا خَلَقْنَا أَنْعَامًا وَأَنَاسِيَّ كَثِيرًا
Linuhyiya bihi baldatan maytan wanusqiyahu mimma khalaqna anAAaman waanasiyya katheeran
YUSUFALI: That with it We may give life to a dead land, and slake the thirst of things We have created,- cattle and men in great numbers.
PICKTHAL: That We may give life thereby to a dead land, and We give many beasts and men that We have created to drink thereof.
SHAKIR: That We may give life thereby to a dead land and give it for drink, out of what We have created, to cattle and many people.
KHALIFA: With it, we revive dead lands and provide drink for our creations – multitudes of animals and humans.
৪৯। যেনো এর দ্বারা আমি মৃত ভূখন্ডকে জীবন দান করতে পারি এবং আমার সৃষ্ট সকলের তৃষ্ণা নিরারণ করতে পারি ৩১০৬, [ যার মধ্যে আছে ] বহু গৃহপালিত প্রাণী ও মানুষ।
৩১০৬। এই আয়াতের মাধ্যমে প্রকৃতির ‘পানি চক্রের’ উপস্থাপন করা হয়েছে। পানি চক্র হচ্ছে : সমুদ্রের পানির বাষ্প হয়ে মেঘে বা শিলা বা তুষারে পরিণত হওয়া আবার মেঘ বা তুষার স্থলভাগে ঝরে পড়া এবং নদীবাহিত হয়ে এই পানির পুণরায় সাগর বক্ষে প্রত্যাবর্তন। সমুদ্রের লবনাক্ততা নদীবাহিত পানির বর্জ্য দ্রব্য সমূহ পরিশোধিত করে যাচ্ছে অবিরত ধারাতে। এ ভাবেই পৃথিবী পৃষ্ঠ প্রতিমূহুর্তের বর্জ্য পদার্থ মুক্ত হয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে। আবার বৃষ্টি , তুষার, হিমাবহ, নদী , হ্রদ ইত্যাদি পানির বিভিন্ন অবস্থান পৃথিবী পৃষ্ঠে বিরাজমান। ভূপৃষ্ঠের পানির এই বিভিন্ন অবস্থানের জন্য পৃথিবীতে প্রাকৃতিক ভূগোলের জন্ম দেয়। বৃষ্টির অভাবে শষ্য শ্যামল ভূমি মরুভূমিতে পরিণত হয়, আবার উষর মরুভূমি বৃষ্টির স্পর্শে শষ্যশ্যামল ভূমিতে পরিণত হয়। সমস্ত সুপেয় পানির উৎস যথাঃ নদী, খাল-বিল, হ্রদ, জলাধার , ঝরণা , কূপ, অথবা যে কোনও প্রকার সূপেয় পানির উৎস হচ্ছে বৃষ্টি। পানির সাথে জীবনের সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। পানির অপর নাম জীবন। কারণ জীবনের যে মূল কণিকা প্রোটোপ্লাজমের অধিকাংশ পানি দ্বারা গঠিত। দেখুন নীচের আয়াত [ ২৫ : ৫৪ ]।
আয়াতঃ 025.050
এবং আমি তা তাদের মধ্যে বিভিন্নভাবে বিতরণ করি, যাতে তারা স্মরণ করে। কিন্তু অধিকাংশ লোক অকৃতজ্ঞতা ছাড়া কিছুই করে না।
And indeed We have distributed it (rain or water) amongst them in order that they may remember the Grace of Allâh, but most men refuse (or deny the Truth or Faith) and accept nothing but disbelief or ingratitude.
وَلَقَدْ صَرَّفْنَاهُ بَيْنَهُمْ لِيَذَّكَّرُوا فَأَبَى أَكْثَرُ النَّاسِ إِلَّا كُفُورًا
Walaqad sarrafnahu baynahum liyaththakkaroo faaba aktharu alnnasi illa kufooran
YUSUFALI: And We have distributed the (water) amongst them, in order that they may celebrate (our) praises, but most men are averse (to aught) but (rank) ingratitude.
PICKTHAL: And verily We have repeated it among them that they may remember, but most of mankind begrudge aught save ingratitude.
SHAKIR: And certainly We have repeated this to them that they may be mindful, but the greater number of men do not consent to aught except denying.
KHALIFA: We have distributed it among them in exact measure, that they may take heed. But most people insist upon disbelieving.
৫০। এবং আমি [ ঐ পানি ] তাদের মধ্যে বিতরণ করে থাকি যেনো তারা [ আমার ] প্রশংসা কীর্তন করতে পারে ৩১০৭। কিন্তু অধিকাংশ লোক কেবল অকৃতজ্ঞতাই প্রকাশ করে থাকে ৩১০৮।
৩১০৭। আল্লাহ্র করুণা আল্লাহ্র প্রজ্ঞারই স্বাক্ষর। পৃথিবীর বুকে পানির সুসম বন্টন সেই প্রজ্ঞারই স্বাক্ষর বহন করে। প্রকৃতিতে জীবনের জন্য যেখানে যতুটুকু বৃষ্টির প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই বন্টিত হয়েছে। আয়াত [২৫:৪৮-৫০] এর বর্ণনা ভিন্ন আঙ্গিকে তুলনা করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে পানিই জীবন। পানি ব্যতীত জীবন ধারণ কল্পনাও করা যায় না। এই হচ্ছে সাধারণ সত্য। এই সত্যের মাধ্যমে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে জীবনের মহত্তর ও বৃহত্তর সত্যের প্রতি। পানিকে আধ্যাত্মিক জীবনের প্রতীক হিসেবে তুলনা করা হয়েছে। পানির উপমার মাধ্যমে এই সত্যকে তুলে ধরা হয়েছে যে পানির অভাবে যেমন জীব মৃত্যুবরণ করে ঠিক সেরূপ আল্লাহ্র প্রত্যাদেশের করুণা ও নীতিমালার সঠিক প্রয়োগ ও অনুশীলন ব্যতীত আত্মার মৃত্যু [Spiritual death] ঘটে। এখানে বৃষ্টিকে আল্লাহ্র প্রত্যাদেশের সাথে প্রতীক হিসেবে তুলনা করা হয়েছে। আমাদের আত্মিক জীবন সমৃদ্ধকারী আল্লাহ্র করুণা বিভিন্নভাবে আমাদের মাঝে আত্মপ্রকাশ করে। কখনও তা প্রত্যাদেশের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়, কখনও তা আমরা বিপদ বিপর্যয়ের মাধ্যমে আত্মার মাঝে অনুভব করি। আত্মার প্রচন্ড অস্থিরতা ও বিপর্যয় , দুঃখ-ব্যথা অনেক সময়েই আমাদের মনোজগতের পরিবর্তন ঘটায়, যে পরিবর্তন আত্মার মাঝে প্রকৃত অনুভব ক্ষমতা এবং অনুধাবন ক্ষমতার জন্ম দেয়। আল্লাহ্র করুণাকে অনুভব করতে পারা এবং তাঁর মঙ্গলময় ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পনের মাধ্যমে ব্যক্তির আধ্যাত্মিক জগতে বিরাট পরিবর্তন ঘটে যায়। মেঘ যেরূপ বৃষ্টির বার্তা বহন করে , জাগতিক বিপদ বিপর্যয়ও সেরূপ আল্লাহ্র রহমত ও করুণার সুখবর দান করে। বৃষ্টি যেরূপ পৃথিবীর উপরিভাগের বর্জ্য দূর করে। আল্লাহ্র করুণা ধারা আত্মাকে কর পরিশুদ্ধ , পাপমুক্ত। বৃষ্টি যেরূপ মরুভূমিকে শষ্য শ্যামল ভূমিতে পরিণত করে, আল্লাহ্র করুণাও সেরূপ ঘুমন্ত বা মৃত আত্মাকে জাগরিত করে। বৃষ্টির পানি যেরূপ ভূপৃষ্ঠের সুপেয় পানির উৎসকে স্থির রাখে , আল্লাহ্র করুণার ধারাও সেরূপ আধ্যাত্মিক জগতের সকল প্রয়োজনের সঠিক ধারাটি বজায় রাখে। বৃষ্টি যেরূপ সকল পৃথিবীব্যপী ঘটে থাকে, আল্লাহ্র করুণা ধারাও সেরূপ সকল বিশ্বব্যপী পরিব্যপ্ত। তা স্থান ও কালের উর্দ্ধে। পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ্র বিশ্বব্যপী করুণার সম্বন্ধে বলা হয়েছে।
৩১০৮। আল্লাহ্র সীমাহীন করুণার প্রেক্ষাপটে মানুষের অকৃতজ্ঞতাকে তুলনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 025.051
আমি ইচ্ছা করলে প্রত্যেক জনপদে একজন ভয় প্রদর্শনকারী প্রেরণ করতে পারতাম।
And had We willed, We would have raised a warner in every town.
وَلَوْ شِئْنَا لَبَعَثْنَا فِي كُلِّ قَرْيَةٍ نَذِيرًا
Walaw shi/na labaAAathna fee kulli qaryatin natheeran
YUSUFALI: Had it been Our Will, We could have sent a warner to every centre of population.
PICKTHAL: If We willed, We could raise up a warner in every village.
SHAKIR: And if We had pleased We would certainly have raised a warner in every town.
KHALIFA: If we willed, we could have sent to every community a warner.
৫১। এবং যদি আমি ইচ্ছা করতাম তবে প্রতিটি জনপদে একজন সর্তককারী প্রেরণ করতে পারতাম ৩১০৯।
৩১০৯। আল্লাহ্র বাণী বা প্রত্যাদেশ বিশ্ব জগতের সকল মানুষের জন্য। তা জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলের জন্য সমভাবে বিতরণ করা হয়েছে। যেখানে আল্লাহ্ প্রয়োজন মনে করেছেন , তিনি সেখানে নবী ও রসুলদের প্রেরণ করে থাকেন। ইচ্ছা করলে তিনি প্রতি শহরে প্রতি গ্রামে তার নবীদের প্রেরণ করতে পারতেন। কিন্তু আল্লাহ্ তা করেন নাই কারণ তাঁর পরিকল্পনা সে ভাবে নাই। আল্লাহ্ প্রতিটি মানুষের অন্তরে তার বিবেক রূপ আলো প্রেরণ করেছেন। জাগ্রত বিবেকই হচ্ছে আল্লাহ্র নূর [Spiritual insight]। যে বিবেককে জাগ্রত রাখে সে আল্লাহ্র নূরকে আত্মার মাঝে ধারণ করে। তাঁর আত্মা কখনও পাপের পঙ্কিলতায় পথ হারায় না। আল্লাহ্র স্বাক্ষর বিদ্যমান সমস্ত বিশ্ব প্রকৃতিতে , তাঁর প্রত্যাদেশে। বিবেকের নূরে সমস্ত বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের মাঝে আল্লাহ্র স্বাক্ষরকে অনুভবের ক্ষমতা সে লাভ করে।
আয়াতঃ 025.052
অতএব আপনি কাফেরদের আনুগত্য করবেন না এবং তাদের সাথে এর সাহায্যে কঠোর সংগ্রাম করুন।
So obey not the disbelievers, but strive against them (by preaching) with the utmost endeavour, with it (the Qur’ân).
فَلَا تُطِعِ الْكَافِرِينَ وَجَاهِدْهُم بِهِ جِهَادًا كَبِيرًا
Fala tutiAAi alkafireena wajahidhum bihi jihadan kabeeran
YUSUFALI: Therefore listen not to the Unbelievers, but strive against them with the utmost strenuousness, with the (Qur’an).
PICKTHAL: So obey not the disbelievers, but strive against them herewith with a great endeavour.
SHAKIR: So do not follow the unbelievers, and strive against them a mighty striving with it.
KHALIFA: Therefore, do not obey the disbelievers, and strive against them with this, a great striving.
৫২। সুতারাং তুমি অবিশ্বাসীদের মান্য করো না বরং কুর-আনের সাহায্যে তাদের বিরুদ্ধে অত্যন্ত অধ্যাবসায়ের সাথে সংগ্র্রামে লিপ্ত হও ৩১১০।
৩১১০। আল্লাহ্র নিদর্শন বিশ্ব ব্রহ্মান্ডব্যপী পরিব্যপ্ত। আল্লাহ্ তাঁর নবীকে কাফেরদের সমালোচনাতেও ভ্রক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ্র রাস্তায় জেহাদ করতে বলা হয়েছে আল্লাহ্র বিধান অনুযায়ী যে বিধান প্রত্যাদেশের মাধ্যমে অবতীর্ণ।
আয়াতঃ 025.053
তিনিই সমান্তরালে দুই সমুদ্র প্রবাহিত করেছেন, এটি মিষ্ট, তৃষ্ণা নিবারক ও এটি লোনা, বিস্বাদ; উভয়ের মাঝখানে রেখেছেন একটি অন্তরায়, একটি দুর্ভেদ্য আড়াল।
And it is He Who has let free the two seas (kinds of water), one palatable and sweet, and the other salt and bitter, and He has set a barrier and a complete partition between them.
وَهُوَ الَّذِي مَرَجَ الْبَحْرَيْنِ هَذَا عَذْبٌ فُرَاتٌ وَهَذَا مِلْحٌ أُجَاجٌ وَجَعَلَ بَيْنَهُمَا بَرْزَخًا وَحِجْرًا مَّحْجُورًا
Wahuwa allathee maraja albahrayni hatha AAathbun furatun wahatha milhun ojajun wajaAAala baynahuma barzakhan wahijran mahjooran
YUSUFALI: It is He Who has let free the two bodies of flowing water: One palatable and sweet, and the other salt and bitter; yet has He made a barrier between them, a partition that is forbidden to be passed.
PICKTHAL: And He it is Who hath given independence to the two seas (though they meet); one palatable, sweet, and the other saltish, bitter; and hath set a bar and a forbidding ban between them.
SHAKIR: And He it is Who has made two seas to flow freely, the one sweet that subdues thirst by its sweetness, and the other salt that burns by its saltness; and between the two He has made a barrier and inviolable obstruction.
KHALIFA: He is the One who merges the two seas; one is fresh and palatable, while the other is salty and undrinkable. And He separated them with a formidable, inviolable barrier (evaporation).
৫৩। তিনিই প্রবাহমান দুই জলরাশিকে মুক্ত করে রেখেছেন ৩১১১। একটি সুপেয় মিষ্টি এবং অন্যটা লবণাক্ত তিক্ত। তথাপি উভয়ের মধ্য রেখেছেন অন্তরায় , এক অনতিক্রম ব্যবধান ৩১১২।
৩১১১। ‘Maraja’ আক্ষরিক অর্থ চারণভূমিতে বাঁধা পশুকে মুক্ত করা বা বন্ধনকে আলগা করা। Bahrain অর্থ দুটি সমুদ্র বা দুটি প্রবাহমান পানির ধারা। ‘Bahr’ শব্দটি লোনা এবং মিঠা পানি উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। ভূপৃষ্ঠের সকল পানিকে দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায় : ১) বিশাল সমুদ্রের পানি যা লবণাক্ত এবং ২) মিঠা পানি যার উৎস বৃষ্টির পানি যথা : নদী, হ্রদ, খাল-বিল, কূপ , ভূগর্ভস্থ পানি, ঝরণা ইত্যাদি। এই আয়াতে বিজ্ঞানের দুটি সুত্রকে উত্থাপন করা হয়েছে। মিঠা পানি ও লোনা পানি এই দ্বিবিধ পানি ভূপৃষ্ঠের চার ভাগের তিন ভাগ অধিকার করে আছে – দুটোই দুই সমুদ্রের মত বিশাল। এই দুই পানির ধারা মিলিতভাবে প্রবাহিত হলেও কখনও লোনা পানি ও মিঠা পানি মিশে যায় না। “প্রবাহমান দুই জলরাশিকে মুক্ত করে রেখেছেন” – এবং ” উভয়ের মধ্যে রেখে দিয়েছেন এক অন্তরায় ” – এই বাক্যদুটি বিজ্ঞানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ তত্বকে ব্যাখ্যা করছে, যা চৌদ্দশ বছর পূর্বে মানুষের পক্ষে ধারণা করা সম্ভব ছিলো না। প্রথমতঃ ভূপৃষ্ঠ ” পানিচক্র ” দ্বারা মিঠা পানির অবিরত ধারাটি সর্বদা বজায় রাখতে পারে। আমরা জানি সুমিষ্ট পানির সকল উৎস হচ্ছে বৃষ্টির পানি। নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর -হ্রদ, কূপ, ঝরণা , তুষার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর , সকল কিছুর উৎস হচ্ছে বৃষ্টির পানি। আবার মেঘের উৎস হচ্ছে সমুদ্রের লোনা পানি। সূর্যের তাপে সমুদ্রের পানি মেঘরূপে সুমিষ্ট পানিতে পরিণত হয় এবং বৃষ্টিরূপে ভূপৃষ্ঠে ঝরে পড়ে। আবার বৃষ্টির এই পানি ভূপৃষ্ঠের সকল আবর্জনা ধৌত করে নদীতে নিক্ষিপ্ত করে এবং নদী দ্বারা বাহিত হয়ে মিঠা পানির এই স্রোত সমুদ্রে পতিত হয় এবং মিশে যায়। বিজ্ঞানের ভাষাতে একে বলা হয় পানিচক্র যার রেখচিত্র নিম্নরূপ :
সমুদ্রের লোনা পানি-> মেঘ-> বৃষ্টি-> ভূপৃষ্টের নদী-নালা দ্বারা প্রবাহিত-> সমুদ্রের লোনা পানি।
মেঘ যদিও সমুদ্রের লোনা পানি থেকে সৃষ্টি , কিন্তু তা হচ্ছে মিষ্টি পানির উৎস এবং কোনও অবস্থাতেই মেঘের পানিতে সমুদ্রের লোনা পানি মিশে যাবে না। সেখানে থাকবে অনতিক্রম্য ব্যবধান। আবার ভূপৃষ্ঠের দিকে দৃষ্টি ফেরালে দেখতে পাই মিঠা পানির বিশাল আঁধার রয়েছে ভূগর্ভে। যদিও স্থল ভাগ সমুদ্রের লোনা পানি দ্বারা বেষ্টিত তবুও এই ভূগর্ভস্থ পানি কখনও সমুদ্রের লোনা পানি দ্বারা মিশে যায় না। এমন কি সমুদ্রের মাঝে ছোট ছোট দ্বীপ যেমন আমাদের মহেশখালী ইত্যাদি , যেগুলি সমুদ্রের লোনা পানি দ্বারা বেষ্টিত, তা সত্বেও এসব দ্বীপের অভ্যন্তরে স্রষ্টা প্রাণীর বসবাসের জন্য ও তরুলতার বৃদ্ধির জন্য ভূগর্ভস্থ মিষ্টি পানির ধারাটি অক্ষুন্ন রাখেন। তা কি করে সম্ভব হয় ? কেন সমুদ্র উপকূলের দেশ সমূহের এবং দ্বীপ এলাকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর সমুদ্রের লোনা পানি মিশে তিক্ত হয় না ? কি সে অনতিক্রম্য ব্যবধান যা স্রষ্টা এই আয়াতে উল্লেখ করেছেন ? বিজ্ঞানের এই তত্বটি হচ্ছে Osmosis প্রক্রিয়া। যে প্রক্রিয়ায় গাছেরা শিকড় দ্বারা মাটি থেকে সুমিষ্ট পানি নিজ দেহভ্যন্তরে টেনে নেয় এবং শিকড় থেকে গাছের শীর্ষে পর্যন্ত পানির সরবরাহ অক্ষুন্ন রাখে। সমুদ্র উপকূলের মাটি ও দ্বীপের মাটি এই প্রক্রিয়াতে Semi permeable বা অর্ধভেদ্য পর্দ্দারূপে কাজ করে যা মিঠা পানিকে সমুদ্রে প্রবেশে বাঁধা দেবে না কিন্তু সমুদ্রের লোনা পানিকে মিঠা পানিতে ঢুকতে “অনতিক্রম্য বাঁধার” সৃষ্টি করবে। এই প্রক্রিয়াকে বিজ্ঞানের ভাষাতে বলে Osmosis প্রক্রিয়া। এ ভাবেই স্রষ্টা জীবনের প্রয়োজনে লোনা ও মিঠে পানিকে মিশ্রিত হওয়া থেকে বিরত রাখেন। আল্লাহ্ যদি Osmosis প্রক্রিয়ার সৃষ্টি না করতেন তবে বাংলাদেশের মত বদ্বীপ এলাকা ও সাগর বক্ষে দ্বীপ এলাকা জীবনশূন্য হয়ে যেতো। কারণ এ ঘটনার এই অটুট ব্যবস্থাপনা আল্লাহর সর্বময় ক্ষমতার অভাবনীয় দৃষ্টান্ত এবং তাঁর অপার রহস্যের অকাট্য প্রমাণ।
৩১১২। “অনতিক্রম্য ব্যবধানের ” ব্যাপারটি উপরের আয়াতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। স্রষ্টা এ ভাবেই লোনা পানি ও মিঠা পানিকে সংযুক্ত রাখলেও আলাদা রেখে দেন। এ তো স্রষ্টারই জ্ঞান ও প্রজ্ঞারই স্বাক্ষর।
আয়াতঃ 025.054
তিনিই পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন মানবকে, অতঃপর তাকে রক্তগত, বংশ ও বৈবাহিক সম্পর্কশীল করেছেন। তোমার পালনকর্তা সবকিছু করতে সক্ষম।
And it is He Who has created man from water, and has appointed for him kindred by blood, and kindred by marriage. And your Lord is Ever All-Powerful to do what He will.
وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ مِنَ الْمَاء بَشَرًا فَجَعَلَهُ نَسَبًا وَصِهْرًا وَكَانَ رَبُّكَ قَدِيرًا
Wahuwa allathee khalaqa mina alma-i basharan fajaAAalahu nasaban wasihran wakana rabbuka qadeeran
YUSUFALI: It is He Who has created man from water: then has He established relationships of lineage and marriage: for thy Lord has power (over all things).
PICKTHAL: And He it is Who hath created man from water, and hath appointed for him kindred by blood and kindred by marriage; for thy Lord is ever Powerful.
SHAKIR: And He it is Who has created man from the water, then He has made for him blood relationship and marriage relationship, and your Lord is powerful.
KHALIFA: He is the One who created from water a human being, then made him reproduce through marriage and mating. Your Lord is Omnipotent.
৫৪। তিনিই পানি থেকে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন ৩১১৩। অতঃপর তিনি তার বংশগত ও বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপন করেছেন ৩১১৪। নিশ্চয়ই তোমার প্রভু [ সকল কিছুর উপরে ] ক্ষমতাবান।
৩১১৩। সমস্ত জীবিত জীবকোষের মূল পদার্থ হচ্ছে প্রোটপ্লাজম। যার মূল পদার্থ পানি। দেখুন আয়াত [ ২৪ : ৪৫] এবং [ ২১ : ৩০ ] এবং টিকা সমূহ।
৩১১৪। পানি খুব সহজেই তরল থেকে বাষ্পে পরিণত হয়। সে ভাবে বিচার করলে পানি একটি অস্থায়ী ও সুলভ তরল পদার্থ। তবুও এই সুলভ তরল পদার্থ থেকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ জীবনের প্রকাশ ঘটেছে। মানুষ যার নাম। মানুষ সর্বোচ্চ শুধুমাত্র তার বৈশিষ্ট্য ও কর্মক্ষমতার গুণে হয়; পৃথিবীতে মানুষই একমাত্র প্রাণী যে তার বংশগতির ধারাকে রক্ষা ও স্মরণ করে ; পূর্ব পুরুষদের স্মরণ করে এবং তাদের সাথে আত্মিক সম্পৃক্ততা অনুভব করে। সম্পর্ককে মানুষ এভাবেই আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ করে, রক্তের সম্পর্ক স্থাপন করে, যে সম্পর্ক সম্পূর্ণ বিমূর্ত ধারণার উপর প্রতিষ্ঠিত। পৃথিবীর আর কোনও প্রাণী এরূপ সম্পর্ক স্থাপনে সক্ষম নয়। আবার বিবাহের মাধ্যমে রক্তের সম্পর্কশূন্য দুজনের মাঝে গভীর প্রেম প্রীতির সম্পর্ক স্থাপিত হয়। প্রাণী জগতেও যৌন জীবন আছে কিন্তু তা কোনও স্থায়ী সম্পর্কের সৃষ্টি করতে পারে না। এসব সামাজিক ও প্রাকৃতিক প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করলে মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব অনুধাবন করা যায়।
আয়াতঃ 025.055
তারা এবাদত করে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর, যা তাদের উপকার করতে পারে না এবং ক্ষতিও করতে পারে না। কাফের তো তার পালনকর্তার প্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শনকারী।
And they (disbelievers, polytheists, etc.) worship besides Allâh, that which can neither profit them nor harm them, and the disbeliever is ever a helper (of the Satan) against his Lord.
وَيَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنفَعُهُمْ وَلَا يَضُرُّهُمْ وَكَانَ الْكَافِرُ عَلَى رَبِّهِ ظَهِيرًا
WayaAAbudoona min dooni Allahi ma la yanfaAAuhum wala yadurruhum wakana alkafiru AAala rabbihi thaheeran
YUSUFALI: Yet do they worship, besides Allah, things that can neither profit them nor harm them: and the Misbeliever is a helper (of Evil), against his own Lord!
PICKTHAL: Yet they worship instead of Allah that which can neither benefit them nor hurt them. The disbeliever was ever a partisan against his Lord.
SHAKIR: And they serve besides Allah that which neither profits them nor causes them harm; and the unbeliever is a partisan against his Lord.
KHALIFA: Yet, they still set up beside GOD idols that cannot benefit them, nor harm them. Indeed, the disbeliever is an enemy of his Lord.
৫৫। তথাপি তারা আল্লাহ্র পরিবর্তে এমন কিছুর এবাদত করে যারা তার উপকারও করতে পারে না, অপকারও করতে পারে না। অবিশ্বাসীরা স্বীয় প্রভুর বিরুদ্ধে [ শয়তানের ] সাহায্যকারী ৩১১৫।
৩১১৫। এই আয়াতের মাধ্যমে উপাস্য হিসেবে জড় ও আল্লাহ্র ক্ষমতার মধ্যে তুলনা করা হয়েছে। এসব জড় উপাস্যের কোনও ক্ষমতাই নাই, অপরপক্ষে আল্লাহ্ মহাক্ষমতাধর , মহাশক্তিশালী। তুলনা করা হয়েছে বিশ্বাসী ও কাফেরদের। কাফেরদের জন্য আছে সর্তকবাণী।
আয়াতঃ 025.056
আমি আপনাকে সুসংবাদ ও সতর্ককারীরূপেই প্রেরণ করেছি।
And We have sent you (O Muhammad SAW ) only as a bearer of glad tidings and a warner.
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا مُبَشِّرًا وَنَذِيرًا
Wama arsalnaka illa mubashshiran wanatheeran
YUSUFALI: But thee We only sent to give glad tidings and admonition.
PICKTHAL: And We have sent thee (O Muhammad) only as a bearer of good tidings and a warner.
SHAKIR: And We have not sent you but as a giver of good news and as a warner.
KHALIFA: We have sent you (Rashad) as a deliverer of good news, as well as a warner.
৫৬। কিন্তু তোমাকে তো শুধু সুসংবাদ দাতা ও সাবধানকারী হিসাবেই পাঠিয়েছি।
৫৭। বল; ” এর জন্য আমি তো কোন পুরষ্কার চাই না এ ব্যতীত যে, প্রত্যেকে যেনো তার প্রভুর দিকের [ সরল ] পথ গ্রহণ করে।”
৫৮। তুমি তার উপরে বিশ্বাস স্থাপন কর যিনি চিরঞ্জীব , যিনি মরবেন না , এবং তাঁর প্রশংসা কীর্তন কর; বস্তুতঃ স্বীয় বান্দাদের পাপ সম্বন্ধে সংবাদ রাখার জন্য তিনিই যথেষ্ট ৩১১৬।
৩১১৬। আল্লাহ্ আমাদের স্রষ্টা। তিনি আমাদের পাপ ও দোষত্রুটি সম্বন্ধে আমাদের অপেক্ষাও বেশী ওয়াকিবহাল। তাঁর নিকট কিছু গোপন করার চেষ্টা বাতুলতা মাত্র। সুতারাং আমাদের উচিত সর্বাবস্থায় শুধু তাঁরই উপরে আমাদের বিশ্বাস স্থাপন করা ও নির্ভর করা। তিনি সকলের মঙ্গলময় প্রভু।
আয়াতঃ 025.057
বলুন, আমি তোমাদের কাছে এর কোন বিনিময় চাই না, কিন্তু যে ইচ্ছা করে, সে তার পালনকর্তার পথ অবলম্বন করুক।
Say: ”No reward do I ask of you for this (that which I have brought from my Lord and its preaching, etc.), save that whosoever wills, may take a Path to his Lord.
قُلْ مَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ إِلَّا مَن شَاء أَن يَتَّخِذَ إِلَى رَبِّهِ سَبِيلًا
Qul ma as-alukum AAalayhi min ajrin illa man shaa an yattakhitha ila rabbihi sabeelan
YUSUFALI: Say: “No reward do I ask of you for it but this: that each one who will may take a (straight) Path to his Lord.”
PICKTHAL: Say: I ask of you no reward for this, save that whoso will may choose a way unto his Lord.
SHAKIR: Say: I do not ask you aught in return except that he who will, may take the way to his Lord.
KHALIFA: Say, “I do not ask you for any money. All I seek is to help you find the right path to your Lord, if this is what you choose.”
৫৬। কিন্তু তোমাকে তো শুধু সুসংবাদ দাতা ও সাবধানকারী হিসাবেই পাঠিয়েছি।
৫৭। বল; ” এর জন্য আমি তো কোন পুরষ্কার চাই না এ ব্যতীত যে, প্রত্যেকে যেনো তার প্রভুর দিকের [ সরল ] পথ গ্রহণ করে।”
৫৮। তুমি তার উপরে বিশ্বাস স্থাপন কর যিনি চিরঞ্জীব , যিনি মরবেন না , এবং তাঁর প্রশংসা কীর্তন কর; বস্তুতঃ স্বীয় বান্দাদের পাপ সম্বন্ধে সংবাদ রাখার জন্য তিনিই যথেষ্ট ৩১১৬।
৩১১৬। আল্লাহ্ আমাদের স্রষ্টা। তিনি আমাদের পাপ ও দোষত্রুটি সম্বন্ধে আমাদের অপেক্ষাও বেশী ওয়াকিবহাল। তাঁর নিকট কিছু গোপন করার চেষ্টা বাতুলতা মাত্র। সুতারাং আমাদের উচিত সর্বাবস্থায় শুধু তাঁরই উপরে আমাদের বিশ্বাস স্থাপন করা ও নির্ভর করা। তিনি সকলের মঙ্গলময় প্রভু।
আয়াতঃ 025.058
আপনি সেই চিরঞ্জীবের উপর ভরসা করুন, যার মৃত্যু নেই এবং তাঁর প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করুন। তিনি বান্দার গোনাহ সম্পর্কে যথেষ্ট খবরদার।
And put your trust (O Muhammad SAW) in the Ever Living One Who dies not, and glorify His Praises, and Sufficient is He as the All-Knower of the sins of His slaves;
وَتَوَكَّلْ عَلَى الْحَيِّ الَّذِي لَا يَمُوتُ وَسَبِّحْ بِحَمْدِهِ وَكَفَى بِهِ بِذُنُوبِ عِبَادِهِ خَبِيرًا
Watawakkal AAala alhayyi allathee la yamootu wasabbih bihamdihi wakafa bihi bithunoobi AAibadihi khabeeran
YUSUFALI: And put thy trust in Him Who lives and dies not; and celebrate his praise; and enough is He to be acquainted with the faults of His servants;-
PICKTHAL: And trust thou in the Living One Who dieth not, and hymn His praise. He sufficeth as the Knower of His bondmen’s sins,
SHAKIR: And rely on the Ever-living Who dies not, and celebrate His praise; and Sufficient is He as being aware of the faults of His servants,
KHALIFA: You shall put your trust in the One who is Alive – the One who never dies – and praise Him and glorify Him. He is fully Cognizant of His creatures’ sins.
৫৬। কিন্তু তোমাকে তো শুধু সুসংবাদ দাতা ও সাবধানকারী হিসাবেই পাঠিয়েছি।
৫৭। বল; ” এর জন্য আমি তো কোন পুরষ্কার চাই না এ ব্যতীত যে, প্রত্যেকে যেনো তার প্রভুর দিকের [ সরল ] পথ গ্রহণ করে।”
৫৮। তুমি তার উপরে বিশ্বাস স্থাপন কর যিনি চিরঞ্জীব , যিনি মরবেন না , এবং তাঁর প্রশংসা কীর্তন কর; বস্তুতঃ স্বীয় বান্দাদের পাপ সম্বন্ধে সংবাদ রাখার জন্য তিনিই যথেষ্ট ৩১১৬।
৩১১৬। আল্লাহ্ আমাদের স্রষ্টা। তিনি আমাদের পাপ ও দোষত্রুটি সম্বন্ধে আমাদের অপেক্ষাও বেশী ওয়াকিবহাল। তাঁর নিকট কিছু গোপন করার চেষ্টা বাতুলতা মাত্র। সুতারাং আমাদের উচিত সর্বাবস্থায় শুধু তাঁরই উপরে আমাদের বিশ্বাস স্থাপন করা ও নির্ভর করা। তিনি সকলের মঙ্গলময় প্রভু।
আয়াতঃ 025.059
তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের অন্তর্বর্তী সবকিছু ছয়দিনে সৃস্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমাসীন হয়েছেন। তিনি পরম দয়াময়। তাঁর সম্পর্কে যিনি অবগত, তাকে জিজ্ঞেস কর।
Who created the heavens and the earth and all that is between them in six Days. Then He Istawâ (rose over) the Throne (in a manner that suits His Majesty). The Most Beneficent (Allâh)! Ask Him (O Prophet Muhammad SAW), (concerning His Qualities, His rising over His Throne, His creations, etc.), as He is Al-Khabîr (The All-Knower of everything i.e. Allâh).
الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ الرَّحْمَنُ فَاسْأَلْ بِهِ خَبِيرًا
Allathee khalaqa alssamawati waal-arda wama baynahuma fee sittati ayyamin thumma istawa AAala alAAarshi alrrahmanu fais-al bihi khabeeran
YUSUFALI: He Who created the heavens and the earth and all that is between, in six days, and is firmly established on the Throne (of Authority): Allah Most Gracious: ask thou, then, about Him of any acquainted (with such things).
PICKTHAL: Who created the heavens and the earth and all that is between them in six Days, then He mounted the Throne. The Beneficent! Ask anyone informed concerning Him!
SHAKIR: Who created the heavens and the earth and what is between them in six periods, and He is firmly established on the throne of authority; the Beneficent Allah, so ask respecting it one aware.
KHALIFA: He is the One who created the heavens and the earth, and everything between them, in six days, then assumed all authority. The Most Gracious; ask about Him those who are well founded in knowledge.
৫৯। তিনিই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এর মধ্যবর্তী সকল কিছু ছয়দিনে সৃষ্টি করেছেন ৩১১৭, অতঃপর দৃঢ়ভাবে [ কর্তৃত্বের ] সিংহাসন প্রতিষ্ঠিত করেছেন ৩১১৮। আল্লাহ্ পরম করুণাময়, তাঁর সম্বন্ধে যে খবর রাখে তাকে জিজ্ঞাসা করে দেখো ৩১১৯।
৩১১৭। দেখুন আয়াত [ ৭ : ৫৪ ] এবং টিকা ১০৩১।
৩১১৮। দেখুন আয়াত [ ১০ : ৩ ] এবং টিকা ১৩৮৬।
৩১১৯। এখানে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়েছে যে, কার প্রতি আমরা আমাদের বিশ্বাস স্থাপন করবো ? যারা শুধুমাত্র জাগতিক বিষয়বুদ্ধি সম্পন্ন , তারা সর্বদা জাগতিক শক্তি সামর্থের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু যারা আধ্যাত্মিক জ্ঞানে সমৃদ্ধ তারা তাদের হৃদয়ে স্বর্গীয় জ্ঞানের সন্ধান লাভ করেন – যার ফলে তারা জাগতিক কোনও কিছুর উপরেই বিশ্বাস স্থাপন করেন না। তাদের একমাত্র নির্ভরতা সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ যিনি সর্বশক্তির উৎস। যদি কেউ তা অনুধাবনে অক্ষম হয় তাদেরকেই এই আয়াতে জিজ্ঞাসা করতে বলা হয়েছে সেই সব পূণ্যাত্মাদের যারা স্বর্গীয় জ্ঞানের অধিকারী ; যাদের আত্মা স্বর্গীয় আলোতে আলোকিত।
আয়াতঃ 025.060
তাদেরকে যখন বলা হয়, দয়াময়কে সেজদা কর, তখন তারা বলে, দয়াময় আবার কে? তুমি কাউকে সেজদা করার আদেশ করলেই কি আমরা সেজদা করব? এতে তাদের পলায়নপরতাই বৃদ্ধি পায়।
And when it is said to them: ”Prostrate to the Most Beneficent (Allâh)! They say: ”And what is the Most Beneficent? Shall we fall down in prostration to that which you (O Muhammad SAW) command us?” And it increases in them only aversion.
وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اسْجُدُوا لِلرَّحْمَنِ قَالُوا وَمَا الرَّحْمَنُ أَنَسْجُدُ لِمَا تَأْمُرُنَا وَزَادَهُمْ نُفُورًا
Wa-itha qeela lahumu osjudoo lilrrahmani qaloo wama alrrahmanu anasjudu lima ta/muruna wazadahum nufooran
YUSUFALI: When it is said to them, “Prostrate to (Allah) Most Gracious!”, they say, “And what is (Allah) Most Gracious? Shall we prostrate to that which thou commandest us?” And it increases their flight (from the Truth).
PICKTHAL: And when it is said unto them: Prostrate to the Beneficent! they say: And what is the Beneficent? Are we to prostrate to whatever thou (Muhammad) biddest us? And it increaseth aversion in them.
SHAKIR: And when it is said to them: Prostrate to the Beneficent Allah, they say: And what is the Allah of beneficence? Shall we prostrate to what you bid us? And it adds to their aversion.
KHALIFA: When they are told, “Fall prostrate before the Most Gracious,” they say, “What is the Most Gracious? Shall we prostrate before what you advocate?” Thus, it only augments their aversion.
৬০। যখন তাদের বলা হয়, ” পরম করুণাময় [আল্লাহ্কে ] তোমরা সিজ্দা কর।” তারা বলে, ” পরম করুণাময় [আল্লাহ্] কে ? তুমি যাকে আদেশ কর আমরা কি তাকেই সিজ্দা করবো ? ” এবং ইহাতে তাদের [সত্যের প্রতি ] অবিশ্বাসই বেড়ে যায় মাত্র ৩১২০।
৩১২০। যাদের হৃদয়ে স্বর্গীয় আলো বা নূর প্রবেশ করে নাই, তারা আল্লাহ্র উপরে সর্ব নির্ভরশীলতা বা আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পন করার প্রকৃত ভাবার্থ বুঝতে অক্ষম। কারণ তাদের সকল চিন্তা ভাবনা জাগতিক ও স্বার্থ বুদ্ধি সম্পন্ন। সুতারাং যেখানে ব্যক্তিস্বার্থ ব্যহত হয় সেখানে তারা কোনও রূপ নৈতিকতা বা নীতিজ্ঞানের পরোয়া করে না। এ সব বিষয়বুদ্ধি সম্পন্ন লোকেরা জাগতিক বিষয়ের উর্দ্ধে আর কোন কিছুই তারা বুঝতে বা অনুধাবনে অক্ষম। নীতি বা নৈতিকতার জন্য পার্থিব ক্ষতি তাদের নিকট বোকামীর সামিল। এর কারণ তাদের মাঝে প্রকৃত ধর্ম বিশ্বাসের অভাব। যদিও সে সমাজে ধার্মিক বলে বিবেচিত হয় এবং ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা সে নির্ভুলভাবে পালন করে থাকে, তবুও সে প্রকৃত ধার্মিক নয়। তার বিশ্বাস শুধুমাত্র মৌখিক , কারণ জীবনের পরীক্ষার ক্ষেত্রে সে আল্লাহ্র রহমত অনুধাবনে হয় ব্যর্থ। এ সব মৌখিক ভাবে ধর্ম পালনকারীদের সম্পর্কেই বলা হয়েছে যে, তারা আল্লাহ্র গুণবাচক নাম রাহমান [ পরম করুণাময় ] কথাটির প্রকৃত অর্থ কখনই অনুধাবন করতে পারবে না। সম্ভবতঃ তাদের পাপ কার্য তাদের অনুধাবন ক্ষমতাকে অন্ধকারের পর্দ্দায় ঢেকে ফেলে। যার ফলে তারা তাদের অন্তরে আল্লাহ্র নূরকে প্রত্যক্ষ করতে পারে না। চর্ম চক্ষু থাকতেও তারা অর্ন্তদৃষ্টি বিহীন ফলে তাদের চারিদিকে ছড়ানো আল্লাহ্র রহমতকে তারা প্রত্যক্ষ করতে পারে না। হৃদয় থাকতেও হৃদয় আল্লাহ্র নূরে উদ্ভাসিত না হয়ে অন্ধকারচ্ছন্ন হয়ে পড়ে [ ২৪ : ৪০ ]।
এভাবেই ধার্মিকতার নামধারীদের সাথে আল্লাহ্র প্রকৃত বান্দার তুলনা করা হয়েছে। মোমেন ব্যক্তিদের সম্বন্ধে নীচের আয়াতে [ ২৫ : ৬৩ – ৭৫ ] বলা হয়েছে।
আয়াতঃ 025.061
কল্যাণময় তিনি, যিনি নভোমন্ডলে রাশিচক্র সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে রেখেছেন সূর্য ও দীপ্তিময় চন্দ্র।
Blessed be He Who has placed in the heaven big stars, and has placed therein a great lamp (sun), and a moon giving light.
تَبَارَكَ الَّذِي جَعَلَ فِي السَّمَاء بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَاجًا وَقَمَرًا مُّنِيرًا
Tabaraka allathee jaAAala fee alssama-i buroojan wajaAAala feeha sirajan waqamaran muneeran
YUSUFALI: Blessed is He Who made constellations in the skies, and placed therein a Lamp and a Moon giving light;
PICKTHAL: Blessed be He Who hath placed in the heaven mansions of the stars, and hath placed therein a great lamp and a moon giving light!
SHAKIR: Blessed is He Who made the constellations in the heavens and made therein a lamp and a shining moon.
KHALIFA: Most blessed is the One who placed constellations in the sky, and placed in it a lamp, and a shining moon.
রুকু – ৬
৬১। তিনিই কল্যাণময় , যিনি আকাশে রাশিচক্রের সৃষ্টি করেছেন এবং সেখানে প্রদীপ [ সূর্য ] ও জ্যোর্তিময় চন্দ্র স্থাপন করেছেন ৩১২১।
৩১২১। ‘প্রদীপ’ অর্থাৎ যা নিজে আলো বিতরণ করে এখানে সূর্যকে বোঝানো হয়েছে। আবার চন্দ্রের পূর্বে জ্যোতির্ময় বিশেষণটি প্রয়োগ করা হয়েছে যার অর্থ হবে উজ্জ্বল আলো বিশিষ্ট কিন্তু নিজস্ব আলো বিকিরণের ক্ষমতা নাই , অন্যের ধার করা আলো যে প্রতিফলিত করে। রাশিচক্র হচ্ছে তারাকামন্ডলীর গতিপথ।
আয়াতঃ 025.062
যারা অনুসন্ধানপ্রিয় অথবা যারা কৃতজ্ঞতাপ্রিয় তাদের জন্যে তিনি রাত্রি ও দিবস সৃষ্টি করেছেন পরিবর্তনশীলরূপে।
And He it is Who has put the night and the day in succession, for such who desires to remember or desires to show his gratitude.
وَهُوَ الَّذِي جَعَلَ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ خِلْفَةً لِّمَنْ أَرَادَ أَن يَذَّكَّرَ أَوْ أَرَادَ شُكُورًا
Wahuwa allathee jaAAala allayla waalnnahara khilfatan liman arada an yaththakkara aw arada shukooran
YUSUFALI: And it is He Who made the Night and the Day to follow each other: for such as have the will to celebrate His praises or to show their gratitude.
PICKTHAL: And He it is Who hath appointed night and day in succession, for him who desireth to remember, or desireth thankfulness.
SHAKIR: And He it is Who made the night and the day to follow each other for him who desires to be mindful or desires to be thankful.
KHALIFA: He is the One who designed the night and the day to alternate: a sufficient proof for those who wish to take heed, or to be appreciative.
৬২। তিনিই পরস্পর অনুসরণকারী রাত্রি ও দিনের সৃষ্টি করেছেন; তাদের জন্য যারা তাঁর প্রশংসা করতে চায় অথবা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চায় ৩১২২।
৩১২২। সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র জ্ঞান , প্রজ্ঞা, শিল্পী সত্তা, করুণাময় রূপ প্রকাশ পেয়েছে তার সৃষ্টির মাঝে। মহান আল্লাহ্ তাঁর সৃষ্টির মাঝেই নিজের গুণাবলীর আত্মপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। আল্লাহ্র হাতের নিদর্শন তার সব সৃষ্টির মাঝে বিদ্যমান। তিনি নিজেকে প্রকাশ করেছেন তাঁর সৃষ্ট কর্মের মাধ্যমে। যে তা বুঝতে পারে সেই তো সেই বিশ্বস্রষ্টার ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পন করে। এই আত্মসমর্পনের পন্থা হিসেবে দুইটি উপায়ের উল্লেখ এখানে করা হয়েছে : ১) ‘রাত্রি ও দিবস’ দ্বারা বুঝতে চাওয়া হয়েছে তার সৃষ্টিতত্বকে। নিরাকার স্রষ্টাকে হৃদয়ে অনুভবের অন্যতম উপায় হচ্ছে তাঁর সৃষ্টিতত্বের জ্ঞান লাভ করা। তিনি যে কতবড় জ্ঞানী, বিচক্ষণ, শিল্পী, এই বোধ আমাদের সমস্ত সত্ত্বাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে, যখন আমরা তার সৃষ্টিকে সঠিকভাবে অনুধাবন করতে চেষ্টা করি। শুধু তখনই আমাদের তাঁর প্রতি প্রশংসা বাণী উত্থিত হবে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ফলে স্রষ্টার প্রশংসার মাধ্যমে স্রষ্টার নিকট আত্মসমর্পন করার ইচ্ছা হবে। ২) কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের মাধ্যমেও স্রষ্টার নিকট আত্মসমর্পন করা যায়। কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা মৌখিক নয়, তার প্রকাশ ঘটাতে হবে কৃত কর্মের মাধ্যমে। কৃতকর্ম অর্থাৎ আল্লাহ্র ইচ্ছা অনুযায়ী পার্থিব জীবনের কার্যাবলী পরিচালনা করতে হবে, তাঁর সৃষ্টির সেবার জন্য আত্মোৎসর্গ করতে হবে যেনো আল্লাহ্ সন্তুষ্ট হন। স্রষ্টার প্রতি প্রশংসা করার ইচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন এই দুই মনোভাব যখন আত্মার মাঝে সৃষ্টি হয় , তখন ব্যক্তির চরিত্রে আমূল পরিবর্তন ঘটে। যার বর্ণনা আছে পরবর্তী আয়াতসমূহে।
মন্তব্য : এ কারণেই ইসলাম নারী পুরুষ সকলের জন্য জ্ঞান শিক্ষাকে ফরজ করেছে। কারণ জ্ঞান ব্যতীত বিশ্ব কর্মার কর্ম অনুধাবন সম্ভব নয়। অজ্ঞ লোক হয় কুসংস্কারচ্ছন্ন যা আল্লাহ্র প্রকৃতরূপ অনুধাবনে বাঁধার সৃষ্টি করে।
আয়াতঃ 025.063
রহমান-এর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন মুর্খরা কথা বলতে থাকে, তখন তারা বলে, সালাম।
And the slaves of the Most Beneficent (Allâh) are those who walk on the earth in humility and sedateness, and when the foolish address them (with bad words) they reply back with mild words of gentleness.
وَعِبَادُ الرَّحْمَنِ الَّذِينَ يَمْشُونَ عَلَى الْأَرْضِ هَوْنًا وَإِذَا خَاطَبَهُمُ الْجَاهِلُونَ قَالُوا سَلَامًا
WaAAibadu alrrahmani allatheena yamshoona AAala al-ardi hawnan wa-itha khatabahumu aljahiloona qaloo salaman
YUSUFALI: And the servants of (Allah) Most Gracious are those who walk on the earth in humility, and when the ignorant address them, they say, “Peace!”;
PICKTHAL: The (faithful) slaves of the Beneficent are they who walk upon the earth modestly, and when the foolish ones address them answer: Peace;
SHAKIR: And the servants of the Beneficent Allah are they who walk on the earth in humbleness, and when the ignorant address them, they say: Peace.
KHALIFA: The worshipers of the Most Gracious are those who tread the earth gently, and when the ignorant speak to them, they only utter peace.
৬৩। পরম করুণাময় [আল্লাহ্র ] বান্দা তারাই , যারা পৃথিবীতে নম্র ভাবে চলাফেরা করে , এবং অজ্ঞ ব্যক্তিরা যখন তাদের সম্বোধন করে , তখন তারা বলে “সালাম” [ শান্তি ] ৩১২৩;
৩১২৩। ‘অজ্ঞ’ – এই আয়াতে অজ্ঞ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে তাদের সম্বন্ধে যারা আধ্যাত্মিক জ্ঞানে বঞ্চিত। “সম্বোধন ” শব্দটি এখানে আক্রমণাত্মক ভাব প্রকাশের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। মোমেন বান্দারা বিনয়কে দুভাবে প্রকাশ করে থাকেন : ১) মোমেন বান্দা , যারা সত্যিকার ভাবে জ্ঞানের অনুসন্ধানে ব্যপৃত তারা তাদের সেই জ্ঞান দান করেন সকলকে, অবশ্য যোগ্যতা অনুযায়ী , যতটুকু তারা ধারণ করতে পারবে। এ ব্যাপারে তাঁদের কোনও অহমিকা নেই। ২) আর যারা অজ্ঞ, যারা শুধু কূটতর্কে ব্যপৃত থাকে, তাদের প্রতিও কোনও কর্কশ বাক্য প্রয়োগ নয়। তাদের জন্যও থাকবে শান্তির সম্ভাষণ। বাক্যগুলি এরূপ হতে পারে যথা : সম্ভবতঃ এই তোমাদের জন্য ভালো, ভবিষ্যতে তোমাদের অনুতাপ তোমাদের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে।” অথবা ” তোমাদের এই সব বাহাস ও কূটর্তক থেকে আল্লাহ্ আমাকে শান্তি দিন” , অথবা ” শান্তি এবং বিদায় ” ইত্যাদি।
আয়াতঃ 025.064
এবং যারা রাত্রি যাপন করে পালনকর্তার উদ্দেশ্যে সেজদাবনত হয়ে ও দন্ডায়মান হয়ে;
And those who spend the night before their Lord, prostrate and standing.
وَالَّذِينَ يَبِيتُونَ لِرَبِّهِمْ سُجَّدًا وَقِيَامًا
Waallatheena yabeetoona lirabbihim sujjadan waqiyaman
YUSUFALI: Those who spend the night in adoration of their Lord prostrate and standing; PICKTHAL: And who spend the night before their Lord, prostrate and standing,
SHAKIR: And they who pass the night prostrating themselves before their Lord and standing.
KHALIFA: In the privacy of the night, they meditate on their Lord, and fall prostrate.
৬৪। যারা রাত্রি অতিবাহিতত করে সিজ্দা অবনত হয়ে এবং দাড়িয়ে থেকে প্রভুর প্রশংসা করে ৩১২৪।
৩১২৪। এই আয়াতটিতে মোমেন বান্দার মানসিক অবস্থাকে তুলে ধরা হয়েছে বিনয়ে অবনত প্রার্থনাই বান্দাকে আল্লাহ্র সান্নিধ্যের উপযোগী করে।
আয়াতঃ 025.065
এবং যারা বলে, হে আমার পালনকর্তা, আমাদের কাছথেকে জাহান্নামের শাস্তি হটিয়ে দাও। নিশ্চয় এর শাস্তি নিশ্চিত বিনাশ;
And those who say: ”Our Lord! Avert from us the torment of Hell. Verily! Its torment is ever an inseparable, permanent punishment.”
وَالَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا اصْرِفْ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَ إِنَّ عَذَابَهَا كَانَ غَرَامًا
Waallatheena yaqooloona rabbana isrif AAanna AAathaba jahannama inna AAathabaha kana gharaman
YUSUFALI: Those who say, “Our Lord! avert from us the Wrath of Hell, for its Wrath is indeed an affliction grievous,-
PICKTHAL: And who say: Our Lord! Avert from us the doom of hell; lo! the doom thereof is anguish;
SHAKIR: And they who say: O our Lord! turn away from us the punishment of hell, surely the punishment thereof is a lasting
KHALIFA: And they say, “Our Lord, spare us the agony of Hell; its retribution is horrendous.
৬৫। যারা বলে, ” হে আমাদের প্রভু ! আমাদের উপর থেকে জাহান্নামের শাস্তিকে নিবারণ কর। নিশ্চয়ই এর শাস্তি হচ্ছে ভয়াবহ যন্ত্রণা, – ৩১২৫
৩১২৫। এই আয়াতের প্রার্থনার মাধ্যমে পূণ্যাত্মাদের বিনয়কে তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রার্থনার ভাষা তাদেরই যারা পরকালের শান্তির জন্য ইহকালের সৎ কাজের উপরে নির্ভরশীল নয়। তারা সৎ কাজ করেন শুধুমাত্র আল্লাহ্র হুকুমকে বাধ্যভাবে মানার জন্য, আল্লাহ্কে খুশী করার জন্য। কিন্তু পরলোকে দোযখের আগুন থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য তারা শুধুমাত্র আল্লাহ্র করুণার প্রত্যাশী। আল্লাহ্র করুণার প্রত্যাশী মনোভাব তাদের করে তোলে বিনয়ী।
আয়াতঃ 025.066
বসবাস ও অবস্থানস্থল হিসেবে তা কত নিকৃষ্ট জায়গা।
Evil indeed it (Hell) is as an abode and as a place to dwell.
إِنَّهَا سَاءتْ مُسْتَقَرًّا وَمُقَامًا
Innaha saat mustaqarran wamuqaman
YUSUFALI: “Evil indeed is it as an abode, and as a place to rest in”;
PICKTHAL: Lo! it is wretched as abode and station;
SHAKIR: Surely it is an evil abode and (evil) place to stay.
KHALIFA: “It is the worst abode; the worst destiny.”
৬৬। ” নিশ্চয়ই [ জাহান্নাম ] বাসের জন্য ও বিশ্রামের জন্য অত্যন্ত মন্দ স্থান।” ৩১২৬
৩১২৬। পাপের ফলে যে দুঃখ ও দুর্দ্দশার উদ্ভব ঘটে তা তাদের গৃহ ও পরিবেশের শান্তি নষ্ট করে দেয়। ‘বাসের জন্য ‘ ও ‘ বিশ্রামের জন্য ‘ দ্বারা এই গৃহ ও পরিবেশকে বোঝানো হয়েছে।
আয়াতঃ 025.067
এবং তারা যখন ব্যয় করে, তখন অযথা ব্যয় করে না কৃপণতাও করে না এবং তাদের পন্থা হয় এতদুভয়ের মধ্যবর্তী।
And those, who, when they spend, are neither extravagant nor niggardly, but hold a medium (way) between those (extremes).
وَالَّذِينَ إِذَا أَنفَقُوا لَمْ يُسْرِفُوا وَلَمْ يَقْتُرُوا وَكَانَ بَيْنَ ذَلِكَ قَوَامًا
Waallatheena itha anfaqoo lam yusrifoo walam yaqturoo wakana bayna thalika qawaman
YUSUFALI: Those who, when they spend, are not extravagant and not niggardly, but hold a just (balance) between those (extremes);
PICKTHAL: And those who, when they spend, are neither prodigal nor grudging; and there is ever a firm station between the two;
SHAKIR: And they who when they spend, are neither extravagant nor parsimonious, and (keep) between these the just mean.
KHALIFA: When they give, they are neither extravagant nor stingy; they give in moderation.
৬৭। যারা [ টাকা ] খরচের সময়ে অপব্যয় করে না এবং কৃপনতাও করে না, বরং এ দুই [ চরম অবস্থার ] মধ্যবর্তী অবস্থায় থাকে ;৩১২৭
৩১২৭। এই আয়াতে পুণ্যাত্মাদের কর্মপ্রণালী বর্ণনা করা হয়েছে। যারা অর্থাৎ পূণ্যাত্মারা অর্থ-সম্পদ ব্যয়ের সময়ে জ্ঞানী লোকদের পন্থা অবলম্বন করে। খরচের ব্যাপারেও তারা মিতব্যয়ী। এমন খরচ সে করে না যা তাকে দরিদ্রে পরিণত করবে বা এমন মিত্যবয়ী নয় যা তাকে কৃপণের পর্যায়ে নিয়ে যাবে। অর্থ সম্পদ ব্যয়ের মানদণ্ড এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। বিশেষতঃ লোকে অপব্যয়ী হয় অন্যকে দেখানোর মনোভাব থেকে, অথবা অন্যকে প্রভাবিত করার জন্য। উপরের যে কোন মনোভাবে এরূপ ব্যয় হবে অপব্যয়ের সামিল। আবার ব্যয়ে এমন কার্পন্য হবে না যাতে অপরে তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। ব্যয়ের ব্যাপারে ন্যায়ের মানদন্ড বজায় রাখতে হবে, প্রত্যেকে যেনো তার নিজস্ব অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়। এমন কি নিজের যা প্রাপ্য তাও ভোগ করার প্রয়োজন আছে।
আয়াতঃ 025.068
এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের এবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে।
And those who invoke not any other ilâh (god) along with Allâh, nor kill such life as Allâh has forbidden, except for just cause, nor commit illegal sexual intercourse and whoever does this shall receive the punishment.
وَالَّذِينَ لَا يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ وَلَا يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا يَزْنُونَ وَمَن يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا
Waallatheena la yadAAoona maAAa Allahi ilahan akhara wala yaqtuloona alnnafsa allatee harrama Allahu illa bialhaqqi wala yaznoona waman yafAAal thalika yalqa athaman
YUSUFALI: Those who invoke not, with Allah, any other god, nor slay such life as Allah has made sacred except for just cause, nor commit fornication; – and any that does this (not only) meets punishment.
PICKTHAL: And those who cry not unto any other god along with Allah, nor take the life which Allah hath forbidden save in (course of) justice, nor commit adultery – and whoso doeth this shall pay the penalty;
SHAKIR: And they who do not call upon another god with Allah and do not slay the soul, which Allah has forbidden except in the requirements of justice, and (who) do not commit fornication and he who does this shall find a requital of sin;
KHALIFA: They never implore beside GOD any other god, nor do they kill anyone – for GOD has made life sacred – except in the course of justice. Nor do they commit adultery. Those who commit these offenses will have to pay.
৬৮। যারা আল্লাহ্র সাথে অন্য উপাস্যকে আহ্বান করে না; আল্লাহ্ যার হত্যা নিষেধ করেছেন , যথার্থ কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না, এবং ব্যভিচার করে না; কিন্তু যে ব্যক্তি এগুলি করে সে [শুধু ] শাস্তিই ভোগ করবে না , ৩১২৮-
৩১২৮। তিনটি জিনিষকে ইসলামে নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে; ১) আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কাউকে উপাসনা করা; ২) হত্যা করা। বিনা প্রয়োজনে হত্যা জঘন্য পাপ যা তার পরিবেশকে কলুষিত করে। ৩) ব্যভিচার। যে পাপ নিজ আত্মাকে কলুষিত করে, আত্মসম্মানবোধকে বিনষ্ট করে। এই তিন ধরণের পাপ কাজের মধ্যে প্রথমটি আল্লাহ্র বিরুদ্ধে , দ্বিতীয়টি আল্লাহ্র সৃষ্ট জীবের বিরুদ্ধে , এবং তৃতীয়টি নিজের আত্মার বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়। হত্যাকে অনুমতি দান করা হয়েছে সুনির্দ্দিষ্ট কারণে এবং ন্যায়ের ভিত্তিতে , যেমনঃ মানুষ খুনের শাস্তি আইনের চোখে ফাঁসি। আবার আত্মরক্ষার্থে, আহার্যের জন্য পশু হত্যা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণ যা সমাজ জীবনের শৃঙ্খলা রক্ষা ও ন্যায় বিচারের সহায়ক।
আয়াতঃ 025.069
কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায় লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে।
The torment will be doubled to him on the Day of Resurrection, and he will abide therein in disgrace;
يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيهِ مُهَانًا
YudaAAaf lahu alAAathabu yawma alqiyamati wayakhlud feehi muhanan
YUSUFALI: (But) the Penalty on the Day of Judgment will be doubled to him, and he will dwell therein in ignominy,-
PICKTHAL: The doom will be doubled for him on the Day of Resurrection, and he will abide therein disdained for ever;
SHAKIR: The punishment shall be doubled to him on the day of resurrection, and he shall abide therein in abasement;
KHALIFA: Retribution is doubled for them on the Day of Resurrection, and they abide therein humiliated.
৬৯। [ অধিকন্তু ] শেষ বিচারের দিনে তার শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে এবং সেখানে সে অসম্মানের সাথে বাস করবে ৩১২৯।
৩১২৯। উপরে যে তিনটি পাপের বর্ণনা করা হলো , এগুলির শাস্তি অন্য পাপের শাস্তির দ্বিগুণ হবে।
আয়াতঃ 025.070
কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
Except those who repent and believe (in Islâmic Monotheism), and do righteous deeds, for those, Allâh will change their sins into good deeds, and Allâh is Oft-Forgiving, Most Merciful.
إِلَّا مَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُوْلَئِكَ يُبَدِّلُ اللَّهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا
Illa man taba waamana waAAamila AAamalan salihan faola-ika yubaddilu Allahu sayyi-atihim hasanatin wakana Allahu ghafooran raheeman
YUSUFALI: Unless he repents, believes, and works righteous deeds, for Allah will change the evil of such persons into good, and Allah is Oft-Forgiving, Most Merciful,
PICKTHAL: Save him who repenteth and believeth and doth righteous work; as for such, Allah will change their evil deeds to good deeds. Allah is ever Forgiving, Merciful.
SHAKIR: Except him who repents and believes and does a good deed; so these are they of whom Allah changes the evil deeds to good ones; and Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: Exempted are those who repent, believe, and lead a righteous life. GOD transforms their sins into credits. GOD is Forgiver, Most Merciful.
৭০। যদি না সে অনুতপ্ত হয়; ঈমান আনে এবং সৎ কাজ করে। [ সেক্ষেত্রে ] আল্লাহ্ উহাদের মন্দকে পরিবর্তন করে দেবেন ভালো দ্বারা। এবং আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল , পরম দয়ালু ৩১৩০।
৩১৩০। উপরে যে তিনটি পাপের বর্ণনা করা হয়েছে , সেই সব পাপীদের জন্য এই আয়াতে আছে আশ্বাস। যদিও এই পাপগুলি জঘন্য এবং এর শাস্তি সাধারণ পাপের দ্বিগুণ , তবুও পাপী যদি তার পাপ কর্মের জন্য সত্যিকার ভাবে অনুতপ্ত হয় এবং নিজের চরিত্রকে সংশোধন করে তবে আল্লাহ্র করুণাধারা তার জন্যও অবারিত। পাপীর কলুষিত আত্মা পাপ মুক্ত হয়ে পূণ্যের আলোয় ঝলমলে হয়ে উঠবে।
আয়াতঃ 025.071
যে তওবা করে ও সৎকর্ম করে, সে ফিরে আসার স্থান আল্লাহর দিকে ফিরে আসে।
And whosoever repents and does righteous good deeds, then verily, he repents towards Allâh with true repentance.
وَمَن تَابَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَإِنَّهُ يَتُوبُ إِلَى اللَّهِ مَتَابًا
Waman taba waAAamila salihan fa-innahu yatoobu ila Allahi mataban
YUSUFALI: And whoever repents and does good has truly turned to Allah with an (acceptable) conversion;-
PICKTHAL: And whosoever repenteth and doeth good, he verily repenteth toward Allah with true repentance –
SHAKIR: And whoever repents and does good, he surely turns to Allah a (goodly) turning.
KHALIFA: Those who repent and lead a righteous life, GOD redeems them; a complete redemption.
৭১। এবং যে কেহ অনুতাপ করে এবং সৎ কাজ করে প্রকৃত পক্ষেই তারা আল্লাহ্র অনুগামী হয় [ গ্রহণযোগ্য ] পরিবর্তনের মাধ্যমে।
৭২। এবং যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না [ বা মিথ্যা বলে না ] ৩১৩১; এবং অসার ক্রিয়াকলাপের সম্মুখীন হলে স্বীয় মর্যদার সাথে তা পরিহার করে চলে। ৩১৩২
৩১৩১। মিথ্যা সাক্ষ্যের দুটি তাৎপর্য বিদ্যমান। ১) মিথ্যাভাষণ ২) প্রতারণা জোচ্চুরী ইত্যাদি কাজ যা মিথ্যার সাথে জড়িত।
৩১৩২। মিথ্যার সাথে জড়িত যে সব ক্রিয়া কর্ম সেগুলিকে বলা হয়েছে অসার ক্রিয়া কর্ম। এই আয়াতের মাধ্যমে মিথ্যা ভাষণকেই শুধু নিন্দা জ্ঞাপন করা হয় নাই, নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে সত্যের সাথে মিথ্যাকে জড়িত করা কথা; বাজে বা নিরর্থক গল্প গুজব; কুৎসিত ঠাট্টা তামাশা, প্রদর্শনীর মনোভাব থেকে বড়াই করা ইত্যাদি সকল কিছুই নিন্দনীয়। যদি কোন ভালো মানুষ নিজেকে এই কুৎসিত পরিবেশে আবিষ্কার করে , তবে সে অবশ্যই সেই পরিবেশ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করবে। তবে তাঁর এই প্রত্যাহার হবে সম্মানজনক ভাবে, বৃথা হৈচৈ এর মাধ্যমে নয়।
আয়াতঃ 025.072
এবং যারা মিথ্যা কাজে যোগদান করে না এবং যখন অসার ক্রিয়াকর্মের সম্মুখীন হয়, তখন মান রক্ষার্থে ভদ্রভাবে চলে যায়।
And those who do not witness falsehood, and if they pass by some evil play or evil talk, they pass by it with dignity.
وَالَّذِينَ لَا يَشْهَدُونَ الزُّورَ وَإِذَا مَرُّوا بِاللَّغْوِ مَرُّوا كِرَامًا
Waallatheena la yashhadoona alzzoora wa-itha marroo biallaghwi marroo kiraman
YUSUFALI: Those who witness no falsehood, and, if they pass by futility, they pass by it with honourable (avoidance);
PICKTHAL: And those who will not witness vanity, but when they pass near senseless play, pass by with dignity.
SHAKIR: And they who do not bear witness to what is false, and when they pass by what is vain, they pass by nobly.
KHALIFA: They do not bear false witness. When they encounter vain talk, they ignore it.
৭১। এবং যে কেহ অনুতাপ করে এবং সৎ কাজ করে প্রকৃত পক্ষেই তারা আল্লাহ্র অনুগামী হয় [ গ্রহণযোগ্য ] পরিবর্তনের মাধ্যমে।
৭২। এবং যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না [ বা মিথ্যা বলে না ] ৩১৩১; এবং অসার ক্রিয়াকলাপের সম্মুখীন হলে স্বীয় মর্যদার সাথে তা পরিহার করে চলে। ৩১৩২
৩১৩১। মিথ্যা সাক্ষ্যের দুটি তাৎপর্য বিদ্যমান। ১) মিথ্যাভাষণ ২) প্রতারণা জোচ্চুরী ইত্যাদি কাজ যা মিথ্যার সাথে জড়িত।
৩১৩২। মিথ্যার সাথে জড়িত যে সব ক্রিয়া কর্ম সেগুলিকে বলা হয়েছে অসার ক্রিয়া কর্ম। এই আয়াতের মাধ্যমে মিথ্যা ভাষণকেই শুধু নিন্দা জ্ঞাপন করা হয় নাই, নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে সত্যের সাথে মিথ্যাকে জড়িত করা কথা; বাজে বা নিরর্থক গল্প গুজব; কুৎসিত ঠাট্টা তামাশা, প্রদর্শনীর মনোভাব থেকে বড়াই করা ইত্যাদি সকল কিছুই নিন্দনীয়। যদি কোন ভালো মানুষ নিজেকে এই কুৎসিত পরিবেশে আবিষ্কার করে , তবে সে অবশ্যই সেই পরিবেশ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করবে। তবে তাঁর এই প্রত্যাহার হবে সম্মানজনক ভাবে, বৃথা হৈচৈ এর মাধ্যমে নয়।
আয়াতঃ 025.073
এবং যাদেরকে তাদের পালনকর্তার আয়াতসমূহ বোঝানো হলে তাতে অন্ধ ও বধির সদৃশ আচরণ করে না।
And those who, when they are reminded of the Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.) of their Lord, fall not deaf and blind thereat.
وَالَّذِينَ إِذَا ذُكِّرُوا بِآيَاتِ رَبِّهِمْ لَمْ يَخِرُّوا عَلَيْهَا صُمًّا وَعُمْيَانًا
Waallatheena itha thukkiroo bi-ayati rabbihim lam yakhirroo AAalayha summan waAAumyanan
YUSUFALI: Those who, when they are admonished with the Signs of their Lord, droop not down at them as if they were deaf or blind;
PICKTHAL: And those who, when they are reminded of the revelations of their Lord, fall not deaf and blind thereat.
SHAKIR: And they who, when reminded of the communications of their Lord, do not fall down thereat deaf and blind.
KHALIFA: When reminded of their Lord’s revelations, they never react to them as if they were deaf and blind.
৭৩। যারা তাদের প্রভুর আয়াত সমূহের [ উপদেশ ] স্মরণ করিয়ে দিলে, উহার প্রতি অন্ধ ও বধিরের ন্যায় আচরণ করে না ৩১৩৩,
৩১৩৩। ‘Kharra’ অর্থ পিছনে পড়া বা নাক ডাকা, অচেতন হওয়া, অমনোযোগী হওয়া ,বিরক্ত হওয়া বা কোন কিছু শুনতে বা দেখতে অস্বীকার করা।
আয়াতঃ 025.074
এবং যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর।
And those who say: ”Our Lord! Bestow on us from our wives and our offspring who will be the comfort of our eyes, and make us leaders for the Muttaqûn” (pious – see V.2:2 and the footnote of V.3:164).”
وَالَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
Waallatheena yaqooloona rabbana hab lana min azwajina wathurriyyatina qurrata aAAyunin waijAAalna lilmuttaqeena imaman
YUSUFALI: And those who pray, “Our Lord! Grant unto us wives and offspring who will be the comfort of our eyes, and give us (the grace) to lead the righteous.”
PICKTHAL: And who say: Our Lord! Vouchsafe us comfort of our wives and of our offspring, and make us patterns for (all) those who ward off (evil).
SHAKIR: And they who say: O our Lord! grant us in our wives and our offspring the joy of our eyes, and make us guides to those who guard (against evil).
KHALIFA: And they say, “Our Lord, let our spouses and children be a source of joy for us, and keep us in the forefront of the righteous.”
৭৪। এবং সেই সকল লোক যারা প্রার্থনা করে, “হে আমাদের প্রভু! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান সন্ততি দান কর, যারা হবে আমাদের জন্য চক্ষু শীতল কারী ৩১৩৪। এবং আমাদের কর মুত্তাকীদের জন্য অনুসরণ যোগ্য।”৩১৩৫।
৭৫। এরাই তারা যাদের পুরষ্কৃত করা হবে বেহেশতের সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান দ্বারা কারণ তাদের ধৈর্য্য এবং দৃঢ়তা। সেখানে তাদের অভ্যর্থনা করা হবে অভিবাদন ও শান্তির বাণী দ্বারা ; –
৩১৩৪। মুত্তাকীদের প্রার্থনা হবে আল্লাহ্র বিধান বা আইনের সহায়তা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রার্থনা করা। এই প্রার্থনা হবে স্ত্রী-পুত্রদের মুত্তাকী অর্জনের জন্য, যেনো তাদের মাধ্যমে আল্লাহ্র বিধান প্রতিষ্ঠিত হয়। স্ত্রী-পুত্র পরিজন যেনো শুধুমাত্র সামাজিক সম্মান ও অন্যের উপরে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের বিষয়বস্তু না হয়। তা হলে তারা জীবনের স্থায়ী সুখের কারণ হবে না। যদি তারা অঙ্গীকার পূরণের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক উন্নতিতে সাহায্য করে তবেই তারা হবে মুত্তাকীদের জন্য ‘নয়নপ্রীতির ‘ কারণ। হয়তো তাদের কৃতকর্মের দরুণ আমরা আল্লাহ্র করুণা ও রহমতের সন্ধান লাভে সক্ষম হব। হয়তো তাদের যোগ্যতার গুণে মানুষ ধর্ম ও আমলে তাদের অনুসরণ করবে। আমাদের জ্ঞান ও আমল দ্বারা মানুষ উপকৃত হবে। ফলে আমরা এর সওয়াব পাব। পরিবার ও সন্তান সন্ততিদের জন্য মুত্তাকীদের প্রার্থনার কল্যাণকর দিকটি এই আয়াতে তুলে ধরা হয়েছে।
৩১৩৫। আল্লাহ্র প্রকৃত বান্দাদের গুণাবলীকে এভাবে সংক্ষেপে প্রকাশ করা হয়েছে “রহমানের” বান্দা তারাই যারা : ১) বিনয়ী ভাবে পৃথিবীতে চলাফেরা করে এবং আধ্যাত্মিক অজ্ঞ ব্যক্তিদের ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে বিবেচনা করে [ ২৫ : ৬৩ ]। ২) তারা সর্বদা আল্লাহ্র প্রশংসায় নিয়োজিত থাকে [ ২৫ : ৬৪ ]। ৩) তারা সর্বদা শেষ বিচারের দিনকে স্মরণ করে [ ২৫ : ৬৫ ]। ৪) তারা জীবনের সর্ব ব্যাপারে হবে মিতাচারী [২৫ : ৬৭ ]। ৫) তারা আল্লাহ্র বিরুদ্ধে বা তাঁর সৃষ্ট জীবের বিরুদ্ধে বা নিজের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা করে না [ ২৫ : ৬৮ ]। ৬) তাঁরা শুধু যে মিথ্যাকে পরিহার করে চলেন তাই-ই নয়, তাঁরা অসার ক্রিয়া কলাপকে এড়িয়ে চলেন [ ২৫ : ৭২ ]। ৭) তাঁরা তাদের প্রতিপালকের নিদর্শনের প্রতি অত্যন্ত মনোযোগী [ ২৫ : ৭৩ ]। ৮) তাদের জীবনের উদ্দেশ্য হবে তাদের পরিবার ও সন্তান সন্ততিদের পূণাত্মারূপে গড়ে তোলা। সামাজিক মূল্যবোধের বিকাশের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক চেতনার সমৃদ্ধি লাভের সুন্দর নিয়মাবলী হচ্ছে উপরের আয়াত সমূহ [২৫:৭৪]। ৯) সেই সাথে তারা হবে ধৈর্য্যশীল ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ [ ২৫ : ৭৫ ]।
আয়াতঃ 025.075
তাদেরকে তাদের সবরের প্রতিদানে জান্নাতে কক্ষ দেয়া হবে এবং তাদেরকে তথায় দোয়া ও সালাম সহকারে অভ্যর্থনা করা হবে।
Those will be rewarded with the highest place (in Paradise) because of their patience. Therein they shall be met with greetings and the word of peace and respect.
أُوْلَئِكَ يُجْزَوْنَ الْغُرْفَةَ بِمَا صَبَرُوا وَيُلَقَّوْنَ فِيهَا تَحِيَّةً وَسَلَامًا
Ola-ika yujzawna alghurfata bima sabaroo wayulaqqawna feeha tahiyyatan wasalaman
YUSUFALI: Those are the ones who will be rewarded with the highest place in heaven, because of their patient constancy: therein shall they be met with salutations and peace,
PICKTHAL: They will be awarded the high place forasmuch as they were steadfast, and they will meet therein with welcome and the ward of peace,
SHAKIR: These shall be rewarded with high places because they were patient, and shall be met therein with greetings and salutations.
KHALIFA: These are the ones who attain Paradise in return for their steadfastness; they are received therein with joyous greetings and peace.
৭৪। এবং সেই সকল লোক যারা প্রার্থনা করে, “হে আমাদের প্রভু! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান সন্ততি দান কর, যারা হবে আমাদের জন্য চক্ষু শীতল কারী ৩১৩৪। এবং আমাদের কর মুত্তাকীদের জন্য অনুসরণ যোগ্য।”৩১৩৫।
৭৫। এরাই তারা যাদের পুরষ্কৃত করা হবে বেহেশতের সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান দ্বারা কারণ তাদের ধৈর্য্য এবং দৃঢ়তা। সেখানে তাদের অভ্যর্থনা করা হবে অভিবাদন ও শান্তির বাণী দ্বারা ; –
৩১৩৪। মুত্তাকীদের প্রার্থনা হবে আল্লাহ্র বিধান বা আইনের সহায়তা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রার্থনা করা। এই প্রার্থনা হবে স্ত্রী-পুত্রদের মুত্তাকী অর্জনের জন্য, যেনো তাদের মাধ্যমে আল্লাহ্র বিধান প্রতিষ্ঠিত হয়। স্ত্রী-পুত্র পরিজন যেনো শুধুমাত্র সামাজিক সম্মান ও অন্যের উপরে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের বিষয়বস্তু না হয়। তা হলে তারা জীবনের স্থায়ী সুখের কারণ হবে না। যদি তারা অঙ্গীকার পূরণের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক উন্নতিতে সাহায্য করে তবেই তারা হবে মুত্তাকীদের জন্য ‘নয়নপ্রীতির ‘ কারণ। হয়তো তাদের কৃতকর্মের দরুণ আমরা আল্লাহ্র করুণা ও রহমতের সন্ধান লাভে সক্ষম হব। হয়তো তাদের যোগ্যতার গুণে মানুষ ধর্ম ও আমলে তাদের অনুসরণ করবে। আমাদের জ্ঞান ও আমল দ্বারা মানুষ উপকৃত হবে। ফলে আমরা এর সওয়াব পাব। পরিবার ও সন্তান সন্ততিদের জন্য মুত্তাকীদের প্রার্থনার কল্যাণকর দিকটি এই আয়াতে তুলে ধরা হয়েছে।
৩১৩৫। আল্লাহ্র প্রকৃত বান্দাদের গুণাবলীকে এভাবে সংক্ষেপে প্রকাশ করা হয়েছে “রহমানের” বান্দা তারাই যারা : ১) বিনয়ী ভাবে পৃথিবীতে চলাফেরা করে এবং আধ্যাত্মিক অজ্ঞ ব্যক্তিদের ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে বিবেচনা করে [ ২৫ : ৬৩ ]। ২) তারা সর্বদা আল্লাহ্র প্রশংসায় নিয়োজিত থাকে [ ২৫ : ৬৪ ]। ৩) তারা সর্বদা শেষ বিচারের দিনকে স্মরণ করে [ ২৫ : ৬৫ ]। ৪) তারা জীবনের সর্ব ব্যাপারে হবে মিতাচারী [২৫ : ৬৭ ]। ৫) তারা আল্লাহ্র বিরুদ্ধে বা তাঁর সৃষ্ট জীবের বিরুদ্ধে বা নিজের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা করে না [ ২৫ : ৬৮ ]। ৬) তাঁরা শুধু যে মিথ্যাকে পরিহার করে চলেন তাই-ই নয়, তাঁরা অসার ক্রিয়া কলাপকে এড়িয়ে চলেন [ ২৫ : ৭২ ]। ৭) তাঁরা তাদের প্রতিপালকের নিদর্শনের প্রতি অত্যন্ত মনোযোগী [ ২৫ : ৭৩ ]। ৮) তাদের জীবনের উদ্দেশ্য হবে তাদের পরিবার ও সন্তান সন্ততিদের পূণাত্মারূপে গড়ে তোলা। সামাজিক মূল্যবোধের বিকাশের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক চেতনার সমৃদ্ধি লাভের সুন্দর নিয়মাবলী হচ্ছে উপরের আয়াত সমূহ [২৫:৭৪]। ৯) সেই সাথে তারা হবে ধৈর্য্যশীল ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ [ ২৫ : ৭৫ ]।
আয়াতঃ 025.076
তথায় তারা চিরকাল বসবাস করবে। অবস্থানস্থল ও বাসস্থান হিসেবে তা কত উত্তম।
Abiding therein; excellent it is as an abode, and as a place to dwell.
خَالِدِينَ فِيهَا حَسُنَتْ مُسْتَقَرًّا وَمُقَامًا
Khalideena feeha hasunat mustaqarran wamuqaman
YUSUFALI: Dwelling therein;- how beautiful an abode and place of rest!
PICKTHAL: Abiding there for ever. Happy is it as abode and station!
SHAKIR: Abiding therein; goodly the abode and the resting-place.
KHALIFA: Eternally they abide therein; what a beautiful destiny; what a beautiful abode.
৭৬। সেখানে তারা বাস করবে, বাসস্থান ও বিশ্রাম স্থল হিসেবে তা কত চমৎকার।
৭৭। [ প্রত্যাখানকারীদের ] বল, ” তোমরা আমার প্রভুকে না ডাকলে তার কিছুই আসে যায় না ৩১৩৬। যেহেতু তোমরা [ তাঁকে ] প্রত্যাখান করেছ, ফলে অচিরেই নেমে আসবে অপরিহার্য [ শাস্তি ]।”
৩১৩৬। কোনও অবিমৃষ্যকারী যেনো মনে না করে যে মানুষের এবাদতের দ্বারা আল্লাহ্ উপকৃত হন। আমরা তাঁর উপাসনা করি আমাদের নিজের আত্মিক সমৃদ্ধির জন্য। আল্লাহ্ অভাবমুক্ত। মানুষের নিকট তাঁর কিছুই চাওয়া পাওয়ার নাই। বরং তাঁর করুণা ব্যতীত তাঁর সৃষ্টি অস্তিত্ব রাখতে অক্ষম। যারা একগুঁয়ে ও অবাধ্য ভাবে বিশ্ব স্রষ্টাকে অস্বীকার করে তারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করে। মহাক্ষতি তাদের দ্বারপ্রান্তে। শাস্তি তাদের অপরিহার্য।
আয়াতঃ 025.077
বলুন, আমার পালনকর্তা পরওয়া করেন না যদি তোমরা তাঁকে না ডাক। তোমরা মিথ্যা বলেছ। অতএব সত্বর নেমে আসবে অনিবার্য শাস্তি।
Say (O Muhammad SAW to the disbelievers): ”My Lord pays attention to you only because of your invocation to Him. But now you have indeed denied (Him). So the torment will be yours for ever (inseparable permanent punishment).”
قُلْ مَا يَعْبَأُ بِكُمْ رَبِّي لَوْلَا دُعَاؤُكُمْ فَقَدْ كَذَّبْتُمْ فَسَوْفَ يَكُونُ لِزَامًا
Qul ma yaAAbao bikum rabbee lawla duAAaokum faqad kaththabtum fasawfa yakoonu lizaman
YUSUFALI: Say (to the Rejecters): “My Lord is not uneasy because of you if ye call not on Him: But ye have indeed rejected (Him), and soon will come the inevitable (punishment)!”
PICKTHAL: Say (O Muhammad, unto the disbelievers): My Lord would not concern Himself with you but for your prayer. But now ye have denied (the Truth), therefor there will be judgment.
SHAKIR: Say: My Lord would not care for you were it not for your prayer; but you have indeed rejected (the truth), so that which shall cleave shall come.
KHALIFA: Say, “You attain value at my Lord only through your worship. But if you disbelieve, you incur the inevitable consequences.”
৭৬। সেখানে তারা বাস করবে, বাসস্থান ও বিশ্রাম স্থল হিসেবে তা কত চমৎকার।
৭৭। [ প্রত্যাখানকারীদের ] বল, ” তোমরা আমার প্রভুকে না ডাকলে তার কিছুই আসে যায় না ৩১৩৬। যেহেতু তোমরা [ তাঁকে ] প্রত্যাখান করেছ, ফলে অচিরেই নেমে আসবে অপরিহার্য [ শাস্তি ]।”
৩১৩৬। কোনও অবিমৃষ্যকারী যেনো মনে না করে যে মানুষের এবাদতের দ্বারা আল্লাহ্ উপকৃত হন। আমরা তাঁর উপাসনা করি আমাদের নিজের আত্মিক সমৃদ্ধির জন্য। আল্লাহ্ অভাবমুক্ত। মানুষের নিকট তাঁর কিছুই চাওয়া পাওয়ার নাই। বরং তাঁর করুণা ব্যতীত তাঁর সৃষ্টি অস্তিত্ব রাখতে অক্ষম। যারা একগুঁয়ে ও অবাধ্য ভাবে বিশ্ব স্রষ্টাকে অস্বীকার করে তারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করে। মহাক্ষতি তাদের দ্বারপ্রান্তে। শাস্তি তাদের অপরিহার্য।