YUSUFALI: Who will inherit Paradise: they will dwell therein (for ever).
PICKTHAL: Who will inherit paradise. There they will abide.
SHAKIR: Who shall inherit the Paradise; they shall abide therein.
KHALIFA: They will inherit Paradise, wherein they abide forever.
১০। তারাই হবে উত্তরাধীকারী , ২৮৭১
১১। তারাই উত্তরাধীকার সুত্রে জান্নাত লাভ করবে। সেখানে তারা [ চিরদিন ] বাস করবে।
২৮৭১। দেখুন আয়াত [ ২১ : ১০৫ ] যেখানে বলা হয়েছে ” আমার সৎ কর্মপরায়ন বান্দাগণ পৃথিবীর অধিকারী হবে।” এই সূরার প্রথম আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে তাদের কথা যারা সাফল্য অর্জন করবে। এরা হলেন মুমিন বান্দা – ইহলৌকিক ও পারলৌকিক সকল সাফল্য তাদের জন্যই। কারণ পৃথিবীতে সত্যের জয় শেষ পর্যন্ত হবেই। অসত্য ও অন্যায়ের স্থায়ীত্ব ক্ষণস্থায়ী। তবে এই বিজয় দর্শন ব্যক্তিগত ভাবে কোনও ব্যক্তির জীবনে নাও ঘটতে পারে। অনেক সময়েই অন্যায় ও অসত্যের ধুম্রজাল কিছুকালের জন্যে সত্যের আলোকে ডেকে ফেলতে পারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মিথ্যা ও অন্যায়ের কালো মেঘ অপসারিত হবেই হয়তো ব্যক্তিগত ভাবে কেউ এর প্রভাব প্রত্যক্ষ নাও করতে পারেন কিন্তু এ কথা সত্য যে পরবর্তী বংশধরেরা পূর্ববর্তীদের সত্যের জন্য ত্যাগ তিতিক্ষার সুফল অবশ্যই ভোগ করবে। শেষ পর্যন্ত সত্যের জয় হবেই। এই পৃথিবীতে সকলেই তাদের সত্যের জন্য ত্যাগ স্বীকারে ফলাফল স্বচক্ষে দেখে যেতে নাও পারেন এ কথা সত্য , কিন্তু পরলোকে তারা তাদের কর্মফল স্বচক্ষে দেখতে সক্ষম হবেন। আল্লাহ্ বেহেশতের সৃষ্টি করেছেন পূণ্যাত্মা বা মোমেন বান্দাদের জন্য। মৃত্যুর পরে সকল মোমেন বান্দারা তাদের সুকর্মের ফল ভোগ করবেন।
আয়াতঃ 023.012
আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি।
And indeed We created man (Adam) out of an extract of clay (water and earth).
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ مِن سُلَالَةٍ مِّن طِينٍ
Walaqad khalaqna al-insana min sulalatin min teenin
YUSUFALI: Man We did create from a quintessence (of clay);
PICKTHAL: Verily We created man from a product of wet earth;
SHAKIR: And certainly We created man of an extract of clay,
KHALIFA: We created the human being from a certain kind of mud.
১২। আমি মানুষকে [ কাদার ] সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি ২৮৭২;
২৮৭২। আলোচ্য আয়াত সমূহে মানব সৃষ্টির সাতটি স্তরের উল্লেখ করা হয়েছে। সর্ব প্রথম স্তর মৃত্তিকার উপাদান, দ্বিতীয় স্তর বীর্য, তৃতীয় স্তর জমাট রক্ত , চতুর্থ স্তর মাংসপিন্ড, পঞ্চম অস্থি-পিঞ্জর, ষষ্ঠ অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃতকরণ সপ্তম সৃষ্টির পূর্ণত্ব অর্থাৎ রূহ সঞ্চারকরণ। এই আয়াতগুলির মাধ্যমে মহান স্রষ্টার নিপুন শিল্পকর্মকে তুলে ধরা হয়েছে এবং মানবকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে তার শেষ পরিণতি ও ভবিষ্যত , যার উল্লেখ আছে আয়াত [ ১০ – ১১ ] তে। আয়াত [ ২ : ১১৭ ] উল্লেখ আছে আল্লাহ্ শূন্য থেকে পৃথিবীর সৃষ্টি করেন তাঁর আদেশের মাধ্যমে। এখানে এই আয়াতগুলিতে সৃষ্টির প্রাথমিক অবস্থার বর্ণনা করা হয় নাই। বর্ণনা করা হয়েছে সৃষ্টি প্রক্রিয়ার একটি ধাপ আর সে ধাপটি হচ্ছে মানুষ সৃষ্টির বিভিন্ন স্তর। সৃষ্টি প্রক্রিয়ায় পৃথিবীর মূল কণিকা প্রাণহীন অজৈব পদার্থ জীবন লাভে সক্ষম হয়। মাটির অজৈব পদার্থ তরুলতার মাধ্যমে জৈব পদার্থে রূপ লাভ করে এবং খাদ্যের মাধ্যমে তা দেহভ্যন্তরে স্থান পায়। প্রাণীদেহ তা শুক্রে রূপান্তরিত করে। এই শুক্র স্ত্রীকোষের ডিম্ব দ্বারা নিষিক্ত হয়ে মায়ের জরায়ুতে নিরাপদে স্থান লাভ করে। নিষিক্ত ডিম্বটি এখানে সৃষ্টি প্রক্রিয়াতে বিভিন্ন স্তর অতিক্রম করে। প্রথম স্তরে নিষিক্ত ডিম্বটি জমাট রক্ত পিন্ডে পরিণত হয় , যা জীববিজ্ঞানে “জাইগট” নামে পরিচিত পরবর্তী স্তরে “জাইগটের” বিভক্তিকরণ শুরু এবং ভ্রূণের সৃষ্টি হয় , পরবর্তীতে ভ্রূণ একটি নির্দ্দিষ্ট পরিণতির দিকে অগ্রসর হয়। ফলে ভ্রূণ থেকে হাড়, মাংস, এবং বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গের সৃষ্টি হয়। এ পর্যন্ত মানব শিশুর সৃষ্টি ও প্রাণীকূলের সৃষ্টির মধ্যে পার্থক্য নাই। কিন্তু পার্থক্য আছে শেষ স্তরে। শেষ স্তরকে আল্লাহ্ এ ভাবে বর্ণনা করেছেন , ” অবশেষে উহাকে গড়ে তুলি অন্য এক সৃষ্টিরূপে [ ২৩ : ১৪]।” যার ফলে মানব শিশু প্রাণী শিশু থেকে আলাদা হয়ে পড়ে। আর এই ভিন্নতার কারণ, মানব শিশুর মাঝে আল্লাহ্র রূহকে প্রবেশ করানো হয়, দেখুন আয়াত [ ১৫ : ২৯ ]। রূহ বা আত্মার এই অনুপ্রবেশ হতে পারে ধারাবাহিক। দেহের বৃদ্ধির সাথে সাথে আত্মারও পরিবর্ধন ও পরিবর্তন ঘটে। শিশু জন্মলাভ করে, বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় ও যৌবনে পদর্পন করে , আবার বার্দ্ধক্যে ক্ষয় প্রাপ্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। শারীরিক পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের আত্মিক পরিবর্তনও সাধিত হয়। মানব জীবনে মৃত্যুই শেষ কথা নয়। মৃত্যুর মাধ্যমে সে প্রবেশ করে অন্য ভূবনে, যে ভূবনে সে এই পৃথিবীর সকল স্মৃতি ও কর্মকান্ডের হিসাব বহন করে নিয়ে যায়।