বইতে আমার বিরাগ নেই, বললাম আমি। বই বরং আমার ভালো বন্ধু।
কিন্তু এ বইগুলোর চেহারাসুরত তেমন বন্ধুসুলভ মনে হচ্ছে না। আমি হাতের কাছে যা পেলাম তা-ই একখানা তুলে নিলাম। নাকি নিয়তিই আমাকে ওই বইটি তুলে নিতে বাধ্য করেছে?
কফিতে চুমুক দিতে দিতে আর সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে আমি জীর্ণ চেহারার পাতলা বইটি পড়তে লাগলাম। এটির প্রকাশনাকাল ১৮৫২ সালের বসন্ত। মূলত কবিতার বই-কাঁচা হাতের লেখা তবে পরিচ্ছন্ন। তারপর দেখি ডায়েরির ঢঙে কিছু লেখাও রয়েছে। কৌতূহল নিয়ে ওতে চোখ বুলালাম। শুরুতেই লেখা ক্রিসমাস, ১৮৫১। আমি পড়তে লাগলাম :
আমার প্রথম ক্রিসমাস দিনটি কাটল একাকী। তবে আমার একটি অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছে। হাঁটাহাঁটি শেষে আমি যখন আমার লজিং হাউজে ফিরেছি, এক মধ্যবয়স্ক মহিলাকে দেখতে পেলাম। প্রথমে ভেবেছি বোধহয় ভুল করে ভুল কামরায় প্রবেশ করেছি। কিন্তু তা নয়। ভদ্রমহিলার সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলার পরে হঠাৎ তিনি অদৃশ্য হয়ে গেলেন। আমার মনে হয় উনি ভূত ছিলেন। তবে আমি ভয় পাইনি। ওনাকে আমার বেশ পছন্দ হয়েছিল। তবে আজ রাতে আমার শরীরটা কেন জানি ভালো লাগছে না। একদমই ভালো লাগছে না। এর আগে কোনো দিন ক্রিসমাসের সময় আমি অসুস্থ হইনি।
বইয়ের শেষ পাতায় প্রকাশকের একটি নোট রয়েছে :
ফ্রান্সিস র্যান্ডেল ১৮৫১ খ্রিষ্টাব্দের ক্রিসমাসের রাতে আকস্মিক হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেন। এ বইতে যে ভদ্রমহিলার কথা বলা হয়েছে তিনিই ওকে সর্বশেষ জীবিত দেখেন। তাঁকে সামনে আসার আহ্বান জানালেও তিনি কোনো দিনই তা করেননি। তার পরিচয় রহস্যই রয়ে গেছে।