তারা দুজনে তাকটা পরীক্ষা করে দেখল। বাদামি রঙের পাউরুটি পড়ে আছে, থালায় বাসি কেক, পাত্রে কমলালেবুর আচার যেমন রাখা হয়েছিল, তেমনি পড়ে রয়েছে, কেউ স্পর্শও করেনি। এমনকি ম্যারিয়টের গেলাসভর্তি মদও আগের মতোই রয়েছে।
গ্রিন বলল, তুমি কাউকে খাওয়াওনি, ফিল্ড কোনো খাবারও খায়নি, কিছু পানও করেনি। সে এখানে মোটেই ছিল না।
কিন্তু নিশ্বাস? চাপাগলায় ম্যারিয়ট জানতে চাইল।
গ্রিন উত্তর দিল না। সে ছোট শোবার ঘরের দিকে এগিয়ে গেল। ম্যারিয়টের দৃষ্টি তাকে অনুসরণ করল। সে দরজা খুলে কান পেতে কী যেন শুনল। কথা বলার দরকার হলো না। গভীর নিশ্বাসের শব্দ অবিরাম ভেসে আসছে। ম্যারিয়ট যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল সামনের পড়বার ঘরে-সেখানেও শুনতে পাচ্ছিল শব্দটা।
গ্রিন দরজা বন্ধ করে ফিরে এল। সে এই বলে ব্যাপারটার উপসংহার টানল, একটা কাজই করার আছে। বাড়িতে চিঠি লিখে ফিল্ড সম্বন্ধে তুমি জেনে নাও। আর এ কদিন আমার ঘরে থেকে তোমার পড়াশোনা চালিয়ে যাও। আমার আলাদা বিছানা আছে, তোমার কোনো অসুবিধা হবে না।
বেশ রাজি আমি। এবার আমাকে পাশ করতেই হবে।
এ ঘটনার এক সপ্তাহ পরে ম্যারিয়ট তার বোনের কাছ থেকে চিঠির উত্তর পেয়েছিল। চিঠির কিছু অংশ সে গ্রিনকে পড়ে শুনিয়েছিল, তার বোন লিখেছিল
…তুমি ফিল্ডের ব্যাপারে জানতে চেয়েছ। কিছুদিন আগে কপর্দকশূন্য অবস্থায় তাকে তার বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সে কোথাও না গিয়ে বাড়ির বেসমেন্টে আশ্রয় নেয়। ধীরে ধীরে অনশন করে প্রাণত্যাগ করে। …ওর বাড়ির লোকেরা ব্যাপারটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। আমাদের বাড়ির পরিচারিকার কাছে একথা শুনেছি, সে আবার তাদের দারোয়ানের মুখে শুনেছে। ১৪ তারিখে ফিল্ডের মৃতদেহ দেখতে পায় তারা। ডাক্তার তাকে পরীক্ষা করে বলেছে বারো ঘণ্টা আগে তার মৃত্যু ঘটেছে।… ভয়ংকর দেখাচ্ছিল ফিল্ডকে…।
গ্রিন ঢোক গিলে বলল, তাহলে সে ১৩ তারিখেই মারা গেছে?
ম্যারিয়ট বলল, হুঁ।
ঠিক ওই রাতে সে তোমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল! ম্যারিয়ট আবার মাথা ঝাঁকাল।