হিরে পাথরটার সত্যিই বোধহয় একটা অদৃশ্য প্রভাব আছে। মেপে আর ওজন করে কথা বলার পারিপাট্যে যাকে জহুরি বিশেষ বলা যায়, সেই রবি’র সেদিনকার আচ্ছন্ন অবস্থা দেখে আমি আব বাগড়া দিইনি।
হিরে-জ্বর বড় ভয়ানক জিনিস। নইলে বাক্য-বিশারদ রবি এত কথা সেদিন বলবে কেন? বলেছিল বলেই অবশ্য এই রহস্য উপাখ্যানের মূল সূত্রটা ধরে ফেলেছিলাম।
হিরের গলিতে সেদিন কত রকমের আর চেহারার হিরে ঝলসে উঠেছিল রবির চোখের সামনে, সে সব কাহিনী রোমাঞ্চকর নিঃসন্দেহে, কিন্তু বিস্তারিত বিবরণ দিতে চাই না। পাতলা কাগজের মতো কালো হিরেও নাকি ও দেখেছিল—অবিশ্বাস্য কাটিং দেখে ওর চোখ ঠিকরে গেছিল। দেখেছিল ক্যানারি হলুদ হিরে। গুঞ্জন শুনেছিল পিছনে গুজরাতি ভাষায়—হুঁশিয়ার! এ যে ঝেটিয়ে হিরে কিনতে এসেছে!
রবি তখন গুজরাতিতেই বলেছিল, ঝেটিয়ে কিনতে আসিনি। হলুদ হিরে, কালো হিরে, কমলা হিরে, লাল-বেগুনি-সবুজ হিরেতে আমার দরকার নেই।
তবে কি দরকার?
ছোট হিরে! খুব ছোট সাদা হিরে!
বালুকা-সদৃশ আশ্চর্য হীরক কণিকাদের দর্শন পেয়েছিল রবি তখনই। জহরি দণ্ডপথের দৌলতে!