Mary, পর্তুগিজ থেকে, এটা পাবেন মাইরি শব্দের under-এ।
চ্যাটার্জী, ব্যানার্জী আপনার অভিধানে না থাকতে পারে কিন্তু চট্টোপাধ্যায় ইত্যাদি পঞ্চকুলীন ব্রাহ্মণ ঘোষ, বসু ইত্যাদি পাঁচ কায়েত, শেখ সৈয়দ মোগল পাঠান, কৈবর্ত, নমশূদ্র, হাড়ি ঢোম ইত্যাদি থাকবে না এ-ও কি বিশ্বাস্য? এদের নিয়েই তো আপনার বাঙালি জাত। মোহাম্মদীকে লিখে কোনও উত্তর পাবেন না। পেলে পাবেন কলকাতার-ই সাহিত্য পরিষদ কিংবা অন্য কোনও লাইব্রেরিতে।
অবদান তো চলে গেল। তা যাক্। উপায় নেই। আমি একটু মস্করা করে শব্দটা ব্যবহার করে থাকি।
এযাত্রা এই পর্যন্ত। আপনি যে লিখেছেন ৮ পাতা চিঠি শিগগির কারও কাছ থেকে পেয়েছি বলে ইত্যাদি, এতশিগগির কথাটার ব্যবহার আমার কাছে সম্পূর্ণ নতুন মনে হল। আমি শিগগিরের ব্যবহার শুধু ভবিষ্যতের জন্যই দেখেছি। অতীত হলে দেখেছি, হালে, ইদানীং, এদানির, কিছুদিনের মধ্যে ইত্যাদি দেখেছি। এদের কোনওটাই আপনি যে অর্থ দিতে চেয়েছেন সেটি প্রকাশ করে না, কিন্তু তার জন্যশিগগিরের প্রয়োগও দেখিনি। বিবেচনা করে জানাবেন।
বিজয়ার আলিঙ্গন জানবেন।
ভবদীয়
মুজতবা আলী
কটক
পুনশ্চ-১৭।১০।৫৪
আমাদের জিলিপি শব্দটা কোথা থেকে এসেছে জানেন কি? আমি জানিনে। পেটের অসুখের সময় দিল্লিতে গরম জিলিপি ঔষধার্থে খেতে বলা হয়।
.
(৫)
৭।৩।৫৮
প্রিয়বরেষু,
হরিচরণবাবুর অভিধানে স্বরবর্ণের শেষে আছে। এবং তাতে এক পৃষ্ঠাব্যাপী চন্দ্রবিন্দু সম্বন্ধে আলোচনা আছে। আপনি সেটি পড়েছেন কি? তাতে পাণিনি থেকে কেচ্ছা শুরু।
আমি ১২৩ ৫৮ কলকাতা যাব। তার পর ঢাকা। ২০৪৫৮-এ কলকাতা ফিরে আসব। কলকাতায় কোথায় উঠব জানিনে। ঢাকার ঠিকানা, C/o, Mrs. Ali, Qamrunnesa Hostel, 10 Segun Bagicha, P.O. Ramna, Dacca.
আপনাকে দিয়ে আমার একটা কাজ করিয়ে নেবার বাসনা ছিল অনেক দিন ধরে। ভরসা পেলে বলি।
—সৈ. মু. আ.
Santiniketan
.
শ্রীমতী অর্চনা মিত্রকে (২৯১ বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড, কলিকাতা-১৯) লিখিত পত্র
(১)
২।৩।৭২
মেহের অর্চনা,
প্রথমে দুটি বড় প্যাকেট, পরে ছোট্ট একটি, সর্বশেষে যে-পত্রিকায় তোমার বনফুল আছে এ-সব পেয়েছি। এ পর্যন্ত মাত্র একটা ভুইফোড় প্রকাশক ভিন্ন এখানে কলেজ স্ট্রিটের কোনও প্রকাশকই পশ্চিম বাংলার কোনও বই বিক্রির ব্যবস্থা করেনি। তুমি একবার ঘুরে যাও না। Permit পেতে তোমার অসুবিধা হবে বলে মনে হয় না। তবে পশুপতি খান পায়নি। অন্তত কেউ একজন নিখোঁজ বা/এবং মারা গেছে না বললে নাকি পারমিট মেলে না। তোমার সেই ঠাকুরমা, যে তোমাকে হামেশা দিক করত, তাকে ঢাকাতে এনে গঙ্গাপ্রাপ্তি করাতে পার না?
এখানকার খাদ্যাদি আক্রা নয়। তবে ওষুধের দাম, বেবিফুড গয়রহ অগ্নিমূল্য। আশু ভবিষ্যতে চালের অভাব হবে কি না বলতে পারিনে। … এখানে যা-সব হয়ে গিয়েছে তার গোর নিত্যি নিত্যি খোঁড়া হচ্ছে। একটা জিনিস আমাকে বড় বিচলিত করেছে। ধর্ষণের ফলে হাজার হাজার কুমারী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে। এদের অনেকের চতুর্দশ কুলে কেউ নেই। সমাজেও এরা স্থান পাবে না, অনেকেই আমাদের শত চেষ্টা সত্ত্বেও। এই যে তার সন্তানটি হতে যাচ্ছে তার প্রতি এর অনুভূতিটা মিত্র। একদিকে কোন পশুর চেয়ে অধম বর্বর পাঠানের সন্তান এটা, অন্যদিকে ত্রিসংসারে ওই তার একমাত্র সম্বল। এবং অনেক ক্ষেত্রে কি আমরা দেখিনি যে বিবাহিত রমণীর আইনত জাত সন্তান বর্বর পশুর মতো সমাজের বিষ হয়ে দাঁড়িয়েছে– তবু মা তাকে ছাড়তে পারে না!
আশা করি তুমি/তোমরা কুশলে আছ। গণ্ডা দুই সাহিত্যিক এখানে নিমন্ত্রিত হয়ে এল, কিন্তু কোনও লেখিকা স্থান পেল না। তাজ্জব! ১৩৯ F ধানমণ্ডী,
আনকল– আ
১৩৯ F ধানমন্দী
রাস্তা-১, ঢাকা-২ বাংলাদেশ।
.
(২)
খবরদার–!
কলকাতা
৩ আগস্ট ৭০
আম্মো ছেলেবেলায় একটি হাতের লেখা কাগজ চালাই। অবশ্য দাদার উপদেশ-আদেশের ওপর ভরসা করে। কাগজটার নাম ছিল কুইনিন–ম্যালেরিয়ার সে আমলের দাপট থেকে আজকের দিনের মস্তানরা বিস্তর বহু শিখতে পারবে। আমার বয়স ১৫, দাদার সতেরো। ওই বয়সে সর্ব বালক হয় সবজান্তা (all knowing age, কুকুরছানার যে-রকম ছ মাস বয়সে হয় all growing age, চটিজুতো থেকে সোফার মখমল তাবৎ জিনিস চিবিয়ে কুটি কুটি করে), তদুপরি বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে আগাপাশতলা রিফর্ম করার দুর্বার কামনা জাগল আমাদের চিত্তে। তাই কাগজের নাম করা হল কুইনিন–সুন্দুমাত্র তেতো কথাই শোনাব।
বলা বাহুল্য, আমরা অত্যল্পকালের মধ্যেই ঝাঁকে ঝাঁকে দুশমন বানিয়ে ফেললুম। কিন্তু কাগজ বন্ধ হওয়ার আরও একটি কারণ ছিল। আজ না হয় আমার হাতের লেখা বগের ঠ্যাঙ কাগের বাসার মতো চিত্তির-বিত্তির। তখন ছিল রীতিমতো খুশখৎ, বিলকুল বখৎ বাবখদ (বখদ আর বখৎ একই কথা) নয়। অতএব, আমারই ওপর পড়ল তাবৎ পত্রিকার আদ্যন্ত লেখার ভার। লাও ঠ্যালা!
এই দুই কারণে কাগজটি অচিরাৎ তাঁর সাধনোচিত ধামে প্রস্থান করলেন।
আশীর্বাদ না জানিয়ে হুশিয়ারি জানালুম। সম্পাদকমণ্ডলী অপরাধ নেবেন না। কিমধিকমিতি।
— সৈয়দ মুজতবা আলী
.
॥ শ্ৰীসবিতেন্দ্রনাথ রায়কে (ভানু রায়) লিখিত পত্র ॥
(১)
৯।১।৬৬
ভাই ভানু রায়,
As usual শনির সন্ধ্যায় প্রুফ পেয়েছি। আমার শরীর আরও খারাপ। ম্যাপে একটা অতি নচ্ছার আতসি কাঁচ দিয়ে হিটলারের Russian অভিযানের অজানা-অচেনা জায়গাগুলো Pen down — ঘণ্টা দুই নাগাড়ে– করার দরুন কাল থেকে double image দেখছি তাই একটু সময় লাগবে। তবে স্থির করেছি, যেমন যেমন হবে পাঠিয়ে দেব। ধ্বনি যুদ্ধের তাবৎ material যোগাড় করার পর এই হাল– লিখতে গেলে বেশিক্ষণ একসঙ্গে, হঠাৎ সব blotted out হয়ে যায়। খুব সম্ভব এই সপ্তাহেই কলকাতা গিয়ে nursing home-এ ঢুকব– অবশ্য আমার main trouble-এর জন্য। তখন ডাক্তার যদি outside world-এর সঙ্গে contact না রাখতে দেয়, কিংবা কাজ করতে না দেয় তবে, ভাই তোমাকেই সব করতে হবে– বড়বাবু বাবদে। আমার ছোকরাটির অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আরও দু-একটি প্রাচীন দিনের লেখা– of course after 1949 –পাওয়া গেছে। তোমার যদি মনে হয়, তোমার বইয়ের size যথেষ্ট বড় হচ্ছে না, তবে আমাকে পত্রপাঠ জানিয়ো। কবে কলকাতা যাব জানিনে বলে এ কয়েকটা দিন জরুরি চিঠি বা প্রুফ Regd, পাঠিয়ে। এমনিতেই চিঠি হারায়– redirection-এ risk-টা greater. ধ্বনির উত্তর কবে লিখতে পারব? কে জানে! একটু wait করো please.