আপনার গল্পের প্লটটি যদ্যপি উপনিষদ থেকে নেওয়া তথাপি ইটিকে সম্পূর্ণ অভিনব না বললে পাপ হবে। Very dexterously managed.
আপনার গল্প বলার ধরনটি চমৎকার। আপনি excellent racounteur.
তবে এ পুস্তকে romantic রাজবাড়ির রোমাঞ্চকর ঘটনায় হঠাৎ ছেদ টেনে স্মার্ত নৈয়ায়িক পরিবারের দীর্ঘ কাহিনী সাধারণ পাঠককে খুশি করবে না। সে ওটা skip করবে। আম্মো করেছিলুম। তবে অন্তত আমার কাছে স্মার্ত যে কী করে নৈয়ায়িক হয়– Contradiction মনে হয় সেটা দেখবার জন্য ফিরে এসে সেটি পড়ি। মন দিয়ে। কারণ এতে আমার personal interest আছে।
আমার যদ্দুর জানা, বৈদেশিক বৌদ্ধ জৈন চার্বাকপন্থীদের বাদ দিন; এক বেদান্ত ছাড়া আমাদের সাংখ্য, যোগ, ন্যায়, মীমাংসা সবটাই ঈশ্বরকে ignore করে (ন্যায়), প্রমাণাভাবে অসিদ্ধ (সাংখ্য), বা God-কে special position দেয় না। ন্যায়ের ভিত সাংখ্য ও বৈশেষিকের উপর। আর স্মৃতি তো দর্শন নয়– নিছক theology (মাকড় মারলে ধোকড় হয়। প্রকৃত নৈয়ায়িক স্মৃতিকে বিলকুল উপেক্ষা করে। কারণ স্মৃতি নির্ভর করে entirely on আপ্তবাক্য authority-র ডাণ্ডা। ন্যায়ের প্রথম starting point (১) প্রত্যক্ষ (২) অনুমান (inference e. ৪. ক) দেবদত্ত মোটা খ) দেবদত্ত দিনের বেলা খায়– গ) অতএবঅনুমান (I infer) দেবদত্ত রাত্রেও খায়, (৩) উপমানশব্দ (credible testimony, যেটাকে শাস্ত্রআপ্তবাক্য সংহিতা বলতে পারেন, এবং সেটা স্মৃতির the starting point. (কস্যচিৎ ভাইপোস্য বেনামিতে বিদ্যেসাগরের একটি humorous লেখাতে এর একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ পাবেন। সেখানে বড় ভাই নৈয়ায়িক, ছোট ভাই স্মার্ত। দু জনাকে নিয়ে রগড়।)। হ্যাঁ, আলবৎ, হিন্দুসমাজে বাস করতে হলে লোকাঁচার মানতে হয় তাই পাড় নৈয়ায়িকও অসবর্ণে বিয়ে দেয় না, সগোত্র বিয়ে করে না, ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু পট্টন্তরী তথা লোকাঁচারের অন্যান্য গোঁড়ামির Care করে না, অর্থাৎ সমাজপতি স্মার্তরা যতক্ষণ না খড়গহস্ত হয়ে তার হুঁকো জল বন্ধ করার ভয় না দেখান। এঁরাই হচ্ছে typical নৈয়ায়িক। আপনি বলবেন, আপনি স্বচক্ষে দেখেছেন, নৈয়ায়িক পাড় স্মার্তের মতো পট্টন্তরী নিয়ে মাথা ফাটাফাটি করছে। আমি বলব, আমম্মা দেখেছি, মেড়ো লন্ডনের খানদানি Dorchester হোটেলে হাত দিয়ে খানা খেয়ে টেবিলক্লথে হাত মুচছে। কিন্তু Dorchester হোটেলের বর্ণনাতে সেটা typical নয়, সেটা accidental– যেমন, প্রেমের trangle সৃষ্টি করে, সমস্যা সমাধান করতে না পেরে লেখক একজনকে মোটর অ্যাকসিডেন্টে মেরে ফেললেন। ব্যস, সমস্যার সমাধান ভেল! আমি বললুম, এটা আবার কী? লেখক গম্ভীর কণ্ঠে বললেন, কেন, মানুষ মোটর দুর্ঘটনায় মরে না? তুলনাটা টায়টায় মিলল না; মোদ্দা– reality is no criterion for artistic achievement (রসোত্তীর্ণ হওয়া)।
আচার্য গোষ্ঠীকে নবন্যায়ের পণ্ডিত না করে খাঁটি স্মার্ত করলে এ ঝামেলা হত না। আচার্য গৌতম তো নৈয়ায়িক ছিলেন না অবশ্য ন্যায়শাস্ত্রের তখন জন্মই হয়নি।
তা সে থাক! এটা অত্যন্ত বাহ্য। কেন যে আমি উল্লেখ করলুম জানিনে, বোধহয়বিদ্যে ফলাবার জন্য। কিংবা আপন নৈয়ায়িক গুরুর স্মরণে। পথ দিয়ে যেতে যতে সরস্বতী পুজোর বড়ম্বর তথা বাহ্যাড়ম্বর দেখে তিনি মুখ ফিরিয়ে আমাকে বলেন, বর্বর, অনার্য, দ্রাবিড়সস্তৃত। আমি বললুম, স্বয়ং শঙ্করও তো সাকারকে দ্বিতীয়স্থান দিয়েছেন। তিনি বললেন, তাঁর গুরু ছিল বৌদ্ধ আর সে প্রচ্ছন্ন বৌদ্ধ। আমি বললুম, তাতে তো আপনার খুশি হওয়ার কথা। ভগবন! আপনিও ভগবানের থোড়াই পরোয়া করেন– বৌদ্ধদের মতো। তিনি বললেন, ওরে মূর্খ! তোর কিছু হবে না। তোের শাস্ত্রচর্চা বন্ধ্যা-গমন, ন দেবায় ন ধর্মায়। সেই দিনই প্রথম শিখি, এস্থলেন ধর্মায় বৌদ্ধধর্মকে refer করে, অর্থাৎ আমার শাস্ত্রচর্চা (হিন্দু)দেবায় কাজে লাগবে না, (বৌদ্ধ ধর্মায়ও না।
আবার বলি এটা অত্যন্ত বাহ্য।
—আলী
নীচু পট্টি,
বোলপুর
.
শ্রীযুক্ত বোপদেব শর্মাকে (জিতেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী) লিখিত পত্র
(১)
৭।৯।৬২
শ্রদ্ধাস্পদেষু,
যে কোন নিঃশ্বাসে সম্বন্ধে আলোচনা করতে গিয়ে আপনি লিখেছেন, যদি অর্থের সন্ধান কর, রসের সন্ধান কর, আওয়াজের অন্তরালে কোনও ধ্বনি-ব্যঞ্জনার সন্ধান কর, তা হলেই তুমি প্রতিক্রিয়াশীল ফিলিস্টাইন প্রমাণিত হয়ে যাবে।
অতিশয় খাঁটি কথা।
কিছুকাল পূর্বে আমি একখানা বিদেশি জনলে একটি সুচিন্তিত প্রবন্ধ পড়ি। নাম ছিল, বোধহয়, Lady Chatterlys Lovers. Lady Chatterly অশ্লীল কি না সেই সম্পর্কে যে মোকদ্দমা হয় এবং তার পটভূমি নিয়ে তথ্যবহুল, ধীর, সংযত প্রবন্ধটি।
তাতে আছে, আদালত উকিল মক্কেল তাবৎ সজ্জন যখন শ্লীল-অশ্লীলে পার্থক্য করার মতো সংজ্ঞা পেলেন না তখন তারা বলেন, শুধোও সাহিত্যিকদের, তারা কী বলে।
তার পর লেখক বলেছেন, সাহিত্যিকদের বেশিরভাগই সরল চিত্তে স্বীকার করলেন সেরকম কোনও dividing line-এর সংজ্ঞা তারা দিতে অক্ষম।
তার পর লেখক বলেছেন, কিন্তু একদল ঝানু সাহিত্যিক আছেন তারা জানেন, অশ্লীলতম রচনাকেও (যেটা নিয়ে কারও মনে কোনও দ্বিধা থাকার কথা নয়) যদি তারা ঘুণাক্ষরে অশ্লীল বলেন, তবে সঙ্গে সঙ্গে একদল লোক চেঁচিয়ে উঠবে– (এবারে আপনার ভাষাতেই বলি, তুমিপ্রতিক্রিয়াশীল ফিলিস্টাইন– এটা কিন্তু মিনিমামেস্ট!) এরা ফাঁসিস্ট, হিটলেরাইট, ইমপেরিয়ালিস্ট, এবং (হালের বুলি) কলনিয়ালিস্ট। এই দলের পিছনে আছেন কিছু কম্যুনিস্ট এবং কিছু অন্তত আমেরিকার পুস্তক প্রকাশক (এবং বিশেষ করে পর্নাগ্রাফির) সম্প্রদায়।