এসো নূপুর বাজাইয়া যমুনা নাচাইয়া
পাহাড়ি মিশ্র কাহারবা
এসো নূপুর বাজাইয়া যমুনা নাচাইয়া
কৃষ্ণ কানাইয়া হরি।
মাখি গোখুর-ধূলিরেণু গোঠে চরাইয়া ধেনু
বাজায়ে বাঁশের বাঁশরি॥
গোপী-চন্দনচর্চিত অঙ্গে
প্রাণ মাতাইয়া প্রেম-তরঙ্গে,
বামে হেলায়ে ময়ূর-পাখা দুলায়ে তমাল-শাখা
নীপবনে দাঁড়ায়ে ত্রিভঙ্গে।
এসো লয়ে সেই শ্যামশোভা ব্রজবধূ মনোলোভা
সেই পীতবসন পরি॥
এসো গগনে ফেলি নীল ছায়া,
আনো পিপাসিত চোখে মেঘমায়া।
এসো মাধব, মাধবীতলে,
এসো বনমালী বনমালা গলে,
এসো ভক্তিতে প্রেমে আঁখি-জলে।
এসো তিলকলাঞ্ছিত সুরনরবাঞ্ছিত
বামে লয়ে রাইকিশোরী॥
এসো শারদ প্রাতের পথিক
সিন্ধু কাফি দাদরা
এসো শারদ প্রাতের পথিক
এসো শিউলি-বিছানো পথে।
এসো ধুইয়া চরণ শিশিরে
এসো অরুণ-কিরণ-রথে॥
দলি শাপলা শালুক শতদল
এসো রাঙায়ে তোমার পদতল,
নীল লাবণি ঝরায়ে ঢলঢল
এসো অরণ্য-পর্বতে॥
এসো ভাদরের ভরা নদীতে ভাসায়ে
কেতকী পাতার তরণি
এসো বলাকার রং পালক কুড়ায়ে
বাহি ছায়াপথ-সরণি।
শ্যাম শস্যে কুসুমে হাসিয়া
এসো হিমেল হাওয়ায় ভাসিয়া,
এসো ধরণিরে ভালোবাসিয়া
দূর নন্দন-তীর হতে॥
ও তুই যাসনে রাইকিশোরী কদমতলাতে
ঝুমুর খেমটা
ও তুই যাসনে রাইকিশোরী কদমতলাতে।
সেথা ধরবে বসন-চোরা ভূতে
পারবিনে আর পালাতে।
— কদমতলাতে॥
সে ধরলে কি আর রক্ষে আছে,
তোর বসন গিয়ে উঠবে গাছে,
ওলো গোবর্ধন-গিরিধারী সে
পারবিনে তায় টলাতে।
দেখতে পেলে ব্রজবালা,
ঘট কেড়ে সে ঘটায় জ্বালা,
ওলো নিজেই গলে জল হবি তুই
পারবিনে তায় গলাতে।
ঠেলে ফেলে অগাধ-নীরে
সে হাসে লো দাঁড়িয়ে তীরে,
শেষেভাসিয়ে নিয়ে প্রেম-সাগরে
ওলো দোলায় নাগরদোলাতে।
ওরে হুলোরে তুই রাতবিরেতে ঢুকিসনে হেঁশেল
পিলু-সাহানা কাহারবা
ওরে হুলোরে তুই রাতবিরেতে ঢুকিসনে হেঁশেল।
কবে বেঘোরে প্রাণ হারাবি বুঝিসনে রাসকেল॥
স্বীকার করি শিকারি তুই গোঁফ দেখেই চিনি,
গাছে কাঁঠাল ঝুলতে দেখে দিস গোঁফে তুই তেল॥
ওরে ছোঁচা ওরে ওঁছা বাড়ি বাড়ি তুই হাঁড়ি খাস,
নাদনার বাড়ি খেয়ে কোনদিন ধনে প্রাণে বা মারা যাস,
কেঁদে মিয়াঁও মিয়াঁও বলে বিবি বেড়ালি
করবে রে হার্টফেল॥
তানপুরারই সুরে যখন তখন গলা সাধিস,
শুনে ভুলো তোরে তেড়ে আসে, তুই ন্যাজ তুলে ছুটিস,
তোরে বস্তায় পুরে কবে কে চালান দিবে ধাপা-মেল॥
বউ ঝি যখন মাছ কোটে রে, তুমি খোঁজ দাঁও,
বিড়াল-তপস্বী, আড়নয়নে থালার পানে চাও,
তুই উত্তম-মধ্যম খাস এত তবু হল না আক্কেল॥
কত জনম যাবে তোমার বিরহে
ভৈরবী দাদরা
কত জনম যাবে তোমার বিরহে।
স্মৃতির জ্বালা পরান দহে॥
শূন্য গেহ মোর শূন্য জীবনে,
একা থাকারই ব্যথা আর কত সহে (ওগো)
স্মৃতির জ্বালা পরান দহে॥
দিয়াছে যে জ্বালা জীবন ভরি হায়
গলি নয়ন-ধারাতে ব্যথা বহে
স্মৃতির জ্বালা পরান দহে॥
কুল রাখ না-রাখ তুমি সে জান
পিলু খেমটা
কুল রাখ না-রাখ
তুমি সে জান,
গোকুলে তোমার কাজ
কুল ভোলানো॥
মহতের পিরিতি
বালির বাঁধসম,
কভু হাতে দাও দড়ি
কভু চাঁদ আন॥
কভু তুমি রাধার, চন্দ্রাবলীর কভু,
যখন যার তখন তার দিকে টান॥
রাজার অপরাধের নালিশ কোথায় করি,
তুমি জান শুধু বাঁশিতে মন-ভেজানো॥
গত রজনির কথা পড়ে মনে
পিলু – মিশ্র দাদরা
গত রজনির কথা পড়ে মনে
রজনিগন্ধার মদির গন্ধে।
এই সে ফুলেরই মোহন-মালিকা
জড়ায়েছিল সে কবরী-বন্ধে॥
বাহুর বল্লরি জড়ায়ে তার গলে
আধেক আঁচলে বসেছি তরুতলে,
দুলেছে হৃদয় ব্যাকুল ছন্দে॥
মুখরা ‘বউ কথা কও’ ডেকেছে বকুল-ডালে,
লাজে ফুটেছে লালি গোলাপকুঁড়ির গালে।
কপোলের কলঙ্ক মোর মেটেনি আজও যে সই
জাগিছে তারই স্মৃতি চাঁদের কপোলে ওই।
কাঁদিছে নন্দন আজি নিরানন্দে॥
গান গাহে মিসি বাবা শুনিয়া শুধায় হাবা
পেগ্যান সংগীত
গান গাহে মিসি বাবা শুনিয়া শুধায় হাবা
খুকি কাঁদে কেন বাবা, ফোড়া কি কাটিছে ওর?
হাসিয়া কহেন পিসি ও দেশেতে শীত বেশি
তাই কাঁদে বাবা মিসি হিহি হিহি হিহি হো –
কিবে গিলে-করা গলা ঢেউ-তোলা আট-পলা,
খায় রোজ এক তোলা স্ক্রু-ভেজানো জল।
সাথে গায়ে হেঁড়ে-গলা ধলীর সহিত ধলা,
কাঁপে বাড়ি তিন-তলা থরহরি টলমল॥
গিন্নির ভাই পালিয়ে গেছে গিন্নি চটে কাঁই
গিন্নির ভাই পালিয়ে গেছে গিন্নি চটে কাঁই।
আমার ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে কাঁদিছেন সদাই॥
কোথায় শালা, শালা কোথায়, কেবল ভদ্রলোক,
ডাকতে গিয়ে জিভ কেটে ভাই ফিরিয়ে নি চোখ!
ভ্যালা ফ্যাসাদ হল দাদা, শালায় কোথায় পাই॥
খুঁজতে খুঁজতে দেখতে পেলুম সম্মুখে আট-শালা,
আটশালাতে মোর শালা নাই বসেছে পাঠ-শালা,
গো-শালাতে গোরু বাঁধা, আমার শালা নাই॥
খুঁজতে গেলুম শহর, দেখি শালার ছড়াছড়ি;
পান-শালাতে পান করে যায় মাতাল গড়াগড়ি,
ধর্ম-শালা অতিথ-শালা শালার অন্ত নাই॥
হাতি-শালা ঘোড়া-শালা রাজার ডাইনে বাঁয়ে,
হঠাৎ দেখি যাচ্চে বাবু দো-শালা গায়ে,
দো-শালা তো চাইনে বাবা, এক শালাকে চাই॥
দশ-শালা ব্যবস্থা ঝুলে গরিব চাষার ভাগ্যে,
দিয়া-শালাই পেয়ে ভাবি, শালাই পেলাম, যাকগে!
চাইনু শালা, মুদি দিল গরম মশালাই॥
ঢেঁকি-শালায় ঢেঁকি শুয়ে পাক-শালাতে ছাই,
হায় শালায় কোথায় পাই॥
শালানুসন্ধিৎসু