কী সমস্যা?
প্রথমে… ন্যাশনাল কাউন্সিল অব অ্যাস্ট্রোনটিক্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে কেন তোমাকে রিজাইন করতে হলো?
অমি ঠিক ইস্তফা দেইনি, হাওয়াই ইউনিভার্সিটি অনেক ভাল বেতন দেয়।
ঠিক আছে-তুমি রিজাইন দাওনি-তাদের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে ছিলে। উডি, এত বছর পর আমাকে কি বোকা বানাতে পারবে? মনে হয় তোমার সে চেষ্টা বাদ দেয়া উচিত। ঠিক এ মুহূর্তে তারা যদি এন সি এ-তে ফের নেয়ার প্রস্তাব দেয়, তুমি কি যাবে না?
ঠিক আছে, বুড়ো কসাক, কী জানতে চাও?
প্রথমে, অনেক খোঁচাখুঁচির পর তুমি যে প্রতিবেদনই পাঠিয়েছ তা প্রচুর লাগামহীন কথাবার্তা দিয়ে শেষ হয়। তোমাদের লোকজনের সেই অদ্ভুত আর সত্যি বলতে গেলে অবৈধ কাজটার কথা বাদ দিলাম নাহয়, তারা অবৈধভাবে গোপন করেছে টাইকো মনোলিথ খুঁড়ে বের করার কথা–
আমি এ আইডিয়া দেইনি।
শুনে খুশি হলাম; বিশ্বাস করি তোমাকে। তোমরা সবাইকে জিনিসটা পরীক্ষা করতে দিচ্ছ, ভাল কথা কিন্তু অবশ্যই প্রথমে করতে দেয়া উচিত ছিল। মনে হয় না কাজটা ঠিক হল…।
দুজন চাঁদের সেই কালো, অসাধারণ জিনিসটা নিয়ে আলোচনা করছে গভীরভাবে আর তাদের চারপাশটায় জেঁকে বসেছে বিষণ্ণ নিরবতা। যেন প্রকাশ্যে বিরোধিতা করছে সব অস্ত্র। সাধারণ সরলতা দিয়ে এত বিরাট ব্যাপার হয়ে যেতে পারে না। দেশ দুটো একে অন্যকে সাহায্য করতে পারে না। রাশিয়ান বিজ্ঞানী বলতে থাকে।
টাইকো মনোলিথ যাই হোক না কেন, বৃহস্পতির এলাকায় আরো ভয়াল কিছু বসে আছে। মনোলিথ সংকেত পাঠিয়েছিল বৃহস্পতিতেই। বাস্তব হল, সেখানটায় তোমার লোক ঝামেলায় পড়েছিল। সে ব্যাপারে…আই অ্যাম স্যরি। ডিসকভারির ক্রুদের মধ্যে একমাত্র ফ্র্যাঙ্ক পোলকেই আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম। ৯৮র আই এ এফ কংগ্রেসে তার সাথে দেখা হয়- বেচারা ভাল মানুষ ছিল।
ধন্যবাদ তোমাকে; তারা সবাই ছিল ভাল। আশা করি আমরা জানি তাদের কী হয়েছে…মানে যা জানি তা ঠিক হবার আশা করতে পারি।
যা-ই হয়ে থাক না কেন, নিশ্চয়ই তুমি স্বীকার করবে যে ব্যপারটা এখন পুরো মানবজাতিকে পেঁচিয়ে ধরেছে, শুধু ইউনাইটেড স্টেটসকে নয়। আজ আর তোমরা জ্ঞানকে শুধু জাতীয় কাজে লাগাতে পার না।
দিমিত্রি-তুমি ভালো করেই জানো। তোমরা যদি চাঁদের ঐ পিশাচটাকে আবিষ্কার করতে, তারপর তোমাকে যদি টু শব্দ করতে মানা করা হতো তাহলে তুমিও সেসব কথা বেমালুম চেপে যেতে। তারপর বিজ্ঞানকে শুধুই দেশের স্বার্থে ব্যবহার করতে।
কথাটা ঠিক। কিন্তু এ তো প্রাচীন ইতিহাস-তোমাদের এবার বিদায় নেয়া সরকারওতো শুধু সেসব কথা ভেবে মরত। তারাও ভণ্ডুল করে দিয়েছে পুরো ব্যাপারটাকে। নতুন প্রেসিডেন্টের সাথে সাথে বোধহয় আরেকটু জ্ঞানী কাউন্সিলররা জিতবে।
মনে হয়। আচ্ছা, আসলে তুমি কিছু একটা বলবে আমাকে। আমিওতো তোমাকে চিনি, না? কথাগুলো অফিসিয়াল, নাকি ব্যক্তিগত ইচ্ছা?
এ মুহূর্তে সম্পূর্ণ আনঅফিসিয়াল। হতভাগা ঐ রাজনীতিবিদরা যাকে বলে অভিযান নিয়ে কথা। আমার বিশ্বাস, তারা এ ধরনের কথা কখনোই বলে না।
ঠিক, ঠিক চালিয়ে যাও।
খেই ধরছে রাশান বিজ্ঞানী, এই হল পরিস্থিতি। তোমরা যত দ্রুত সম্ভব ডিসকভারি-টু কে পার্কিং কক্ষপথে পাঠাচ্ছ, এটাই তোমাদের চাওয়া। কিন্তু সময় লাগবে তিন বছর। যার অর্থ তোমরা পরবর্তী লঞ্চ উইন্ডোর সুযোগ হারাবে।
স্বীকার-অস্বীকার কোনোটাই করছি না। মনে রেখ, আমি আর কাউন্সিলের প্রধান নই, বরং ন্যাশনাল কাউন্সিল অব অ্যাস্ট্রোনটিক্স থেকে যোজন যোজন দূরে, পৃথিবীর অন্য পাশে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্রেফ একজন বিনয়ী চ্যান্সেলর, সম্মানিত আচার্য।
এবং আমার মনে হয়, ওয়াশিংটনে এন সি এ তে পুরনো অফিসে তোমার গত ভ্রমণ ছিল পুরনো বন্ধুদের দেখার জন্য একটা ছুটির দিন। কথা চালিয়ে যাই। আমাদের নিজস্ব অ্যালেক্সি লিওনভ-
আমি ভেবেছিলাম তুমি একে হেরম্যান টিটভ বলে ডাকছিলে।
ভুল, চ্যান্সেলর। প্রিয় পুরনো সি আই এ তোমাদের আবার পুরনো তথ্য দিল। গত জানুয়ারির হিসেবে ওটা লিওনভ। কাউকে জানতে দিও না যে আমি তোমাকে এসব বললাম, শিপটা কমপক্ষে এক বছর আগে বৃহস্পতিতে পৌঁছোবে।
তাহলে আমিও তোমাকে আমাদের একটা সিক্রেট বলে দিই…কাউকে জানতে দিওনা, আমরা এ ভয়ই পাচ্ছিলাম এতদিন ধরে। চালিয়ে যাও।
কারণ আমার সব বস ঠিক তোমার বসদের মতোই বোকা এবং অদূরদর্শী। তারাও ডিসকভারির কাছে একা যেতে চায়। অর্থাৎ শুধু দেশের স্বার্থে কাজ। মানে হল তোমরা যে ভুল করেছ আমরাও তেমন কিছু করে বসতে পারি, কারণ আগের অভিজ্ঞতা আছে শুধু তোমাদের। আরে ভাই, যাই হোক আমরা সবাই হয় একের বর্গ করব-ফল হবে একই, নয়তো আরো খারাপ, এর বেশি আর কী? মনে হচ্ছে লাভ-লোকসানের হিসাবে রাশিয়ান বিজ্ঞানী খুব একটা ধার ধারে না।
আমাদের কী ভুল ছিল মনে হয়? তোমাদের মতো আমরাও পড়ে আছি গোলক ধাঁধায়। ডেভ বোম্যানের পাঠানো সব খবর তোমরা পাওনি তা আমাকে বিশ্বাস করতে বলো না।
অবশ্যই আমরা পেয়েছি। ঠিক, শুনেছি মাই গড! আমার সামনেটা তারায় তারায় ভরা! কথাটুকু পর্যন্ত। গুরুত্ব দিয়ে বিশ্লেষণ করেছি তার কণ্ঠস্বরের প্যাটার্ন। আমরা মনে করি না সে কল্পনা করে বা এমি এম্নি বলেছে সেই ভয়াল শেষ বাক্যটা। বাস্তবে যা দেখেছিল তা বর্ণনা করার চেষ্টা করছিল কথা দিয়ে।