- বইয়ের নামঃ ২০০১ : আ স্পেস ওডিসি
- লেখকের নামঃ আর্থার সি ক্লার্ক
- প্রকাশনাঃ বুক ক্লাব
- বিভাগসমূহঃ অনুবাদ বই, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
২০০১ : আ স্পেস ওডিসি
০. প্রারম্ভ কথন
২০০১ : আ স্পেস ওডিসি – আর্থার সি ক্লার্ক
ভাষান্তর : মাকসুদুজ্জামান খান
[ষাটের দশকে ব্যতিক্রমী চিত্র পরিচালক স্ট্যানলি কুবরিক হঠাৎ ভাবলেন, প্রকৃত সায়েন্স ফিকশন চাই। সর্বব্যাপী, সর্বদৃষ্টির এক সায়েন্স ফিকশন বানাতে চাইলেন যাতে বিজ্ঞান আসবে পুরোপুরি যুক্তির কাঁধে ভর করে। স্নায়ুক্ষয়ী কাহিনী আসবে বিজ্ঞানের সাথে পায়ে পা মিলিয়ে। স্যাটেলাইটের জনক, মহাকাশ অভিযানের ধারাভাষ্যকার কল্পবিজ্ঞানী আর্থার সি ক্লার্ক তাঁকে যে কাহিনী দিলেন তা দিয়ে সৃষ্টি হল ‘২০০১: আ স্পেস ওডিসি’।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সায়েন্স ফিকশন চলচ্চিত্র। কিন্তু ক্লার্কের মনে হল, কাহিনী পূর্ণ হয়নি। তিনি একই নামে আরো পরিস্কার করে গুছিয়ে লিখলেন এই উপন্যাস। উনিশশ আটষট্টিতে। মহাকাশ অভিযান নিয়ে সারা পৃথিবীর সব সায়েন্স ফিকশনের আদর্শ।
এল অনেক তত্ত্ব। তারপর এর প্রভাব যে কোথায় পড়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। পৃথিবীর প্রতিটি মহাকাশ অভিযানের সায়েন্স ফিকশনে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে ক্লার্কের মহাকাশ মহাকাব্য। ইসরায়েল তার মানবীয় কম্পিউটারের নাম দেয় তার দেয়া ‘হাল’ নামানুসারে, আমেরিকার নাসা আজো ‘ওডিসি’ নামে মিশন চালায়! ‘ওডিসি’ অনুবাদ হয় আটত্রিশটি ভাষায়, এ সিরিজের শেষ বইয়ের জন্য ক্লার্ক পান সায়েন্স ফিকশনে রেকর্ড সম্মানী। চল্লিশ বছরে ক্লার্ক আরো চারটি উপন্যাস লিখলেন। সৃষ্টি হল পৃথিবীর দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ সায়েন্স ফিকশন সিরিজ। মহাকাশ অভিযানের সর্বশ্রেষ্ঠ মহাকাব্য।
ত্রিশ লাখ বছর আগে প্রাচীন ক্ষুধা-তৃষ্ণার জান্তবতা থেকে বন মানুষের দল চলা শুরু করে, শুরু হয় ওডিসি, এর শেষ দু হাজার এক সালে, পৃথিবী থেকে বিশ হাজার আলোক বর্ষ দূরের এক বিশাল, দানবাকার নক্ষত্রের গর্ভে। এ ক্লাসিক উপন্যাস না পড়লে যে কোনো বিজ্ঞান সচেতন পাঠকের সায়েন্স ফিকশনের স্বাদ অপূর্ণ থেকে যাবে। আর্থার সি. ক্লার্ক ১৯ মার্চ ২০০৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন।]
.
অনুবাদক মাকসুদুজ্জামান খান বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ালেখা করছেন। তিনি আর্থার সি ক্লার্ক ও আইজাক আসিমভের বেশ কিছু লেখা ভাষান্তর করেছেন।
.
বর্তমান পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সায়েন্স ফিকশন লেখক আর্থার চালর্স ক্লার্ক। তিনিই স্যাটেলাইট বিজ্ঞানের জনক। ক্লার্কের অমর কীর্তি ‘২০০১ আ স্পেস ওডিসি’র কথা সায়েন্স ফিকশন পাঠকদের বলাটা এক ধরনের বাহুল্য। সেই চিরায়ত গ্রন্থের অমীমাংসিত রহস্য-পর্দা উন্মোচিত হয়েছে ‘২০১০ ওডিসি টু’তে কিন্তু সেটা শুধুই আগের পর্বের মানুষের শেষ পরিণতি নিয়ে টানা হেঁচড়া নয়। বরং এ খন্ডে তিনি সম্পূর্ণ নতুন, অনন্যসাধারণ আরো একটি পরিণতি রেখেছেন। এটা ২০০১ এর নক্ষত্র শিশুর চেয়ে কোনো অংশে কম ধাক্কা দেয় না পাঠকের মনে।
২০০০ সালের দিকে বিজ্ঞান প্রবেশ করে মহাকাশ যুগে। মানুষ প্রথমবারের মতো পৃথিবীর বাইরে ঘাটি করে। চাঁদের দেশে। আমেরিকান ঘাঁটির নাম ক্ল্যাভিয়াস বেস। সেখানে এক এলাকায় চুম্বক রেখা বারবার এলোমেলো হয়ে যায়।
বিজ্ঞানীরা চল্লিশ ফুট পাথুরে জমির নিচে খুঁড়ে বের করে কালো একটা বস্তু। ত্রিশ লাখ বছরের পুরনো। যত অনুবীক্ষণিক যন্ত্র দিয়েই দেখা হোক, দেখতে একই রকম। সূর্য ওঠার সাথে সাথে সেটা থেকে একটি রেডিও তরঙ্গ ভেসে যায় সৌর জগতের প্রান্তসীমায়। যেন চিৎকার করে বলছে, মানুষ যোগ্য হয়েছে, সে পৃথিবী থেকে চাদে এসে আমাকে খুঁড়ে বের করে আমার গায়ে সূর্যের আলো ফেলেছে… বৃহস্পতি-শনির দিকে পাঠানো হল ডিসকভারি স্পেসশিপ, সাথে মানবীয় কম্পিউটার-হাল। তারপরের সবটুকুই ইতিহাস। অবাক করা ইতিহাস।
ডিসকভারির অধিনায়ক ডেভিড বোম্যান এক অপার্থিব সত্যের মুখোমুখি হয়… এমন কালো বস্তু পৃথিবীতেও ছিল লক্ষ বছর আগে…দু দল বানর পানি নিয়ে ঝগড়া করে ফেরার সময় এর সামনে দাঁড়াত, দেখত ছুঁয়ে… আরাধ্য সত্যের সন্ধান পায় ডেভ বোম্যান। কিন্তু মানুষ তা জানতে পারে না।
মানুষ হারও মানে না। মানতে জানে না। তাই ২০১০ সালে তারা ডিসকভারির সেই ব্যর্থতার কথা মনে রেখেও লিওনভকে প্রস্তুত করার সাহস পায়। কিন্তু এবারের পরিণতিটা অন্যরকম।
.
পঁয়ত্রিশটি ভাষায় অনূদিত মহাকাশ উপন্যাস ওডিসি সিরিজ
২০০১: আ স্পেস ওডিসি
আর্থার সি ক্লাক
অনুবাদ : মাকসুদুজ্জামান খান
.
2001
A SPACE ODYSSEY
ARTHUR C. CLARKE
.
উৎসর্গ
সাত বছরের বন্ধুত্ব শেষে নাফিস আমাকে বলেছিল,
‘দোস, বন্ধু বললে মানুষ আমাদের বন্ধুত্বটা ঠিক বোঝে না।
এখন থেকে আমরা কাজিন।
কিন্তু অবাক হয়ে লক্ষ্য করি,
ভাই হিসেবে পরিচয় দিয়েও গভীরতাটা বোঝানো দুষ্কর
আহমেদ নাফিস শাহরিয়ারকে
.
যঅনুষ্ঠানে আমার উপস্থিতির সময় তার পাঠানো চিঠিতে
২২ আগস্ট, ১৯৯৪
প্রিয় আর্থার,
সরি, ফিল্মের কাজের চাপ আমাকে আপনার এই বিশেষ সম্মান পাওয়া দেখা থেকে বঞ্চিত করল। নয়তো আজ রাতে আমি অবশ্যই এখানে থাকতাম।