- সূরার নাম: সূরা আ’লা
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা আ’লা
আয়াতঃ 087.001
আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামের পবিত্রতা বর্ণনা করুন
Glorify the Name of your Lord, the Most High,
سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلَى
Sabbihi isma rabbika al-aAAla
YUSUFALI: Glorify the name of thy Guardian-Lord Most High,
PICKTHAL: Praise the name of thy Lord the Most High,
SHAKIR: Glorify the name of your Lord, the Most High,
KHALIFA: Glorify the name of your Lord, the Most High.
===============
সূরা আ’লা বা সুউচ্চ -৮৭
১৯ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা ও সার সংক্ষেপ : প্রাথমিক মক্কী সূরাগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। সম্ভবতঃ অবতরণের ক্রমপঞ্জি অনুযায়ী এটি অষ্টম। ৮১ নং সূরার পরেই এটা অবতীর্ণ হয়।
এই সূরার বিষয়বস্তু হচ্ছে, আল্লাহ্ মানুষকে ধীরে ধীরে আধ্যাত্মিক জগতে অগ্রসর হওয়ার ক্ষমতা দান করেছেন। আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ ক্রমান্বয়ে তাকে পবিত্র থেকে পবিত্রতর ও নৈতিক দিকে উৎকৃষ্ট থেকে উৎকৃষ্টতর পরিণতির দিকে অগ্রসর করাবে।
সূরা আ’লা বা সুউচ্চ -৮৭
১৯ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। তুমি তোমার অভিভাবক প্রভুর নামের মহিমা ঘোষণা কর, ৬০৮০
৬০৮০। ‘Rabb’ শব্দটির অর্থ এখানে করা হয়েছে অভিভাবক যার অর্থ হবে আরও ব্যপক। শব্দটি দ্বারা মানুষের অস্তিত্বের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কিছু যিনি দান করেন তাঁকেই বুঝানো হয়। যেমন : তিনি স্বস্নেহে পালনকর্তা, অনিষ্ঠ থেকে রক্ষাকারী অভিভাবক, শক্তিদানকারী সাহায্যকারী এক কথায় জীবন যুদ্ধে জয়লাভ করে আত্মিক ও পার্থিব সমৃদ্ধির সকল সফলতার মুল শক্তিকে ‘রব’ শব্দটি দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে।
আয়াতঃ 087.002
যিনি সৃষ্টি করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন।
Who has created (everything), and then proportioned it;
الَّذِي خَلَقَ فَسَوَّى
Allathee khalaqa fasawwa
YUSUFALI: Who hath created, and further, given order and proportion;
PICKTHAL: Who createth, then disposeth;
SHAKIR: Who creates, then makes complete,
KHALIFA: He creates and shapes.
২। যিনি সৃষ্টি করেছেন এবং উপরন্তু সুঠাম করেছেন। ৬০৮১
৬০৮১। এই আয়াতে সৃষ্টির রহস্যকে উম্মুক্ত করা হয়েছে। সৃষ্টি প্রক্রিয়া হচ্ছে ধারাবাহিক। প্রথমতঃ স্রষ্টা আমাদের ” মাতৃ জঠরে সৃষ্টি করেন রক্ত পিন্ড আকারে ” অর্থৎ আমাদের নাস্তি থেকে অস্তিত্ব দান করেন। দ্বিতীয়তঃ তারপরে ধীরে ধীরে তিনি আমাদের মাতৃ জঠরে এবং শৈশবে, কৈশরে ও যৌবনে “সুঠাম” করেন অর্থাৎ শারীরিক ভাবে দৈহিক গঠন, আকার, আকৃতি ও অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সংগে মিল রেখে তাকে অস্তিত্ব দান করেছেন এবং বিভিন্ন মানসিক দক্ষতা দ্বারা সমৃদ্ধ করেন। এই মানসিক দক্ষতা সমূহ এই পৃথিবীর উপযোগী করে সৃষ্টি করা হয়েছে যেনো আমরা পরিবেশকে জয় করে দেহ থেকে দেহাতীত আধ্যাত্মিক জগতের উপযোগী হতে পারি।
আয়াতঃ 087.003
এবং যিনি সুপরিমিত করেছেন ও পথ প্রদর্শন করেছেন
And Who has measured (preordainments for each and everything even to be blessed or wretched); then guided (i.e. showed mankind the right as well as wrong paths, and guided the animals to pasture);
وَالَّذِي قَدَّرَ فَهَدَى
Waallathee qaddara fahada
YUSUFALI: Who hath ordained laws. And granted guidance;
PICKTHAL: Who measureth, then guideth;
SHAKIR: And Who makes (things) according to a measure, then guides (them to their goal),
KHALIFA: He designs and guides.
৩। যিনি আইন প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং পথ নির্দ্দেশ দান করেছেন। ৬০৮২
৬০৮২। তৃতীয়তঃ আল্লাহ্ বিভিন্ন বিধানের মাধ্যমে আমাদের মানসিক ও আধ্যাত্মিক জগতের সম্প্রসারণ ঘটান, যেনো আমরা তাঁর পৃথিবী সৃষ্টির বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সম্পৃক্ত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারি। প্রত্যেক বস্তুকে আল্লাহ্ বিশেষ কাজের জন্য সৃষ্টি করে সে কাজের উপযুক্ত সম্পদ দিয়ে তাকে সে কাজে নিয়োজিত করেছেন। একেই বলা হয়েছে আইনের প্রতিষ্ঠা সাধন করেন। এটা কোন বিশেষ শ্রেণীর সৃষ্টির মধ্যে সীমিত নয়, সমগ্র সৃষ্ট জগত ও সৃষ্টিকেই আল্লাহ্ তায়ালা বিশেষ বিশেষ কাজের জন্য সৃষ্টি করেছেন ; বিকাশ সাধন করেছেন এবং সে কাজেই নিয়োজিত করে দিয়েছেন। প্রত্যেক বস্তু তার পালনকর্তার নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। মানুষের জন্যও এই নিয়ম প্রযোজ্য। মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি ও শারীরিক ও মানসিক দক্ষতা সমূহকে আল্লাহ্ তাঁর বিধানের উপযোগী করে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ্ যে কাজের জন্য যাকে সৃষ্টি করেছেন তাকে সে কাজের পথ-নির্দ্দেশও দিয়েছেন। সত্যিকার ভাবে এ পথ নির্দ্দেশে আকাশ ও পৃথিবীর যাবতীয় সৃষ্টিই অন্তর্ভূক্ত আছে। এই পথ নির্দ্দেশের প্রভাবে আকাশ, পৃথিবী, গ্রহ,নক্ষত্র, পাহাড় -পবর্ত, নদ-নদী, সৃষ্টির আদি থেকে যে কাজের জন্য আদিষ্ট হয়েছে, সে কাজ হুবহু তেমনি ভাবে করে চলেছে।
চতুর্থতঃ আধ্যাত্মিক জগতের সমৃদ্ধির জন্যও পথের নির্দ্দেশ আল্লাহ্ মানুষকে দান করেছেন। আমরা যেনো আমাদের বিচার শক্তি, যুক্তিবোধ, প্রয়োগ করে আল্লাহ্ নির্দ্দেশিত পথের দিশা ও সীমানা বুঝতে পারি। আমরা যেনো শুধুমাত্র কোন যান্ত্রিক আইনের বাধ্যবাধকতা দ্বারা আত্মার স্বাধীনতাকে খর্ব না করি।