- সূরার নাম: সূরা তারিক
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা তারিক
আয়াতঃ 086.001
শপথ আকাশের এবং রাত্রিতে আগমনকারীর।
By the heaven, and At-Târiq (the night-comer, i.e. the bright star);
وَالسَّمَاء وَالطَّارِقِ
Waalssama-i waalttariqi
YUSUFALI: By the Sky and the Night-Visitant (therein);-
PICKTHAL: By the heaven and the Morning Star
SHAKIR: I swear by the heaven and the comer by night;
KHALIFA: By the sky and Al-Taareq.
===============
সূরা তারিক বা রাতের আগুন্তক – ৮৬
১৭ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভুমিকা ও সারসংক্ষেপ : এই সূরাটিও প্রাথমিক মক্কী সূরার অর্ন্তগত। সম্ভবতঃ পূর্বের সূরা থেকে এর সময়ের পার্থক্য খুব বেশী নয়।
এর বিষয়বস্তু হচ্ছে প্রতিটি আত্মার নিরাপত্তা রক্ষা করা হয়। মানুষের নশ্বর দেহের মূল্য খুব বেশী নয়, কিন্তু আল্লাহ্ প্রদত্ত আত্মা হচ্ছে অক্ষয় ও অমর এবং তার জন্য আছে উজ্জ্বল ভবিষ্যত -পরলোকের জীবনে।
সূরা তারিক বা রাতের আগুন্তক – ৮৬
১৭ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। শপথ আকাশের ৬০৬৭ ও রাতের [ আকাশে ] আগমনকারীর ; ৬০৬৮
৬০৬৭। এখানে আকাশের শপথের মাধ্যমে রাত্রির আকাশের নক্ষত্রের উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ্ আকাশ ও রাতের আকাশের নক্ষত্রের শপথের মাধ্যমে যে বক্তব্যের উপস্থাপন করেছেন তা উল্লেখ করা হয়েছে ৪ নং আয়াতে। ” এমন কোন প্রাণ নাই যার উপরে তত্বাবধায়ক নিযুক্ত করা হয় নাই।” পূর্বের সূরাতে উল্লেখ করা হয়েছে মোমেন বান্দাদের উপরে নির্যাতনের কথা এবং বলা হয়েছে আল্লাহ্ তাদের রক্ষা করেন। এই সূরাতেও সেই একই বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে। রাতের আকাশের নক্ষত্র মন্ডলী উজ্জ্বল ভাবে অন্ধকার আচ্ছন্ন পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে থাকে। রাতের অন্ধকারের পটভূমিতে কোটি কোটি যোজন দূর থেকে বিচ্ছুরিত নক্ষত্রের আলো মানুষের মনকে কোন সূদুরের পানে নিয়ে যায়। এটি একটি রূপক বর্ণনা। ঠিক সেরূপ হচ্ছে আধ্যাত্মিক জগত। মানুষের অজ্ঞতা অথবা বিপদ বিপর্যয়ে অথবা পার্থিব আকর্ষণের হেতু যখন তাদের আধ্যাত্মিক জগত অন্ধকারে ডুবে যায় তখন নক্ষত্রের আলোর ন্যায় আল্লাহ্র প্রত্যাদেশের আলো সেই অন্ধকারকে বিদীর্ণ করে আমাদের পথ দেখায়। সুতারাং মোমেন বান্দারা,যারা আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাসে দৃঢ় ও অকুতভয়, তাদের পথ হারানোর কোন ভয় নাই। আল্লাহ্ তাদের রক্ষা করবেন।
৬০৬৮। এই আয়াতের উত্তর ৩নং আয়াতে দেয়া হয়েছে ‘উহা উজ্জ্বল নক্ষত্র।” কোন কোন তফসীরকারের মতে এটা হবে প্রভাতের শুকতারা যা রাতের শেষ প্রহরে উজ্জ্বলরূপে প্রতিভাত হয়। আবার অন্য দল মনে করেন এটা হবে শনিগ্রহ, আবার অনেকে মনে করেন এটা লুব্ধক নক্ষত্র বা সপ্তর্ষিমন্ডল বা উল্কাপিন্ড হবে। মওলানা ইউসুফ আলী সাহেবের মতে কোন বিশেষ নক্ষত্র হিসেবে বর্ণনা না করে সাধারণভাবে নেয়া যেতে পারে যা সমগ্র নক্ষত্র মন্ডলীর জন্য প্রযোজ্য হবে। কারণ বছরের প্রতিটি রাত্রেই নক্ষত্র মন্ডলী আকাশে দ্যূতি বিকিরণ করে এবং রাতের আকাশকে আলোকিত করে।
আয়াতঃ 086.002
আপনি জানেন, যে রাত্রিতে আসে সেটা কি?
And what will make you to know what At-Târiq (night-comer) is?
وَمَا أَدْرَاكَ مَا الطَّارِقُ
Wama adraka ma alttariqu
YUSUFALI: And what will explain to thee what the Night-Visitant is?-
PICKTHAL: – Ah, what will tell thee what the Morning Star is!
SHAKIR: And what will make you know what the comer by night is?
KHALIFA: Do you know what Al-Taareq is?
২। তোমাকে কি ভাবে ব্যাখ্যা করা যাবে যে রাত্রের [ আকাশে ] আগমনকারী কি ?
৩। উহা উজ্জ্বল নক্ষত্র !
৪। এমন কোন প্রাণ [ আত্মা ] নাই যার উপরে তত্বাবধায়ক নিযুক্ত করা হয় নাই। ৬০৬৯
৬০৬৯। যদি মানুষ শুধুমাত্র বস্তু জগত সম্বন্ধে তার সমস্ত চিন্তা -ভাবনা ও সত্ত্বা ব্যপৃত না রেখে মনোজগতকে বা আধ্যাত্মিক জগতকে প্রাণিধান করার জন্য কিছুটা সময় ব্যয় করে, তবে তাঁর কোনও ভয় নাই। আল্লাহ্ এদের অগোচরে সকল বিপদ বিপর্যয় থেকে রক্ষা করবেন। হয়তো পার্থিব দৃষ্টিকোণ থেকে, সামাজিক অবস্থানে তাঁর স্থান অতি নগণ্য ; কিন্তু তাঁর আত্মা আধ্যাত্মিক জগতের দুর্গম পথকে অতিক্রম করে আল্লাহ্র নিকট সম্মানের অধিকারী হয়ে যায়। আধ্যাত্মিক জগতে আল্লাহ্ তাঁকে সমগ্র সৃষ্টির উপরে সম্মান দান করেন। ঐশ্বরিক শক্তি তাঁদের সকল বিপদ বিপর্যয় থেকে রক্ষা করেন এই পার্থিব জীবনে।
আয়াতঃ 086.003
সেটা এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।
(It is) the star of piercing brightness;
النَّجْمُ الثَّاقِبُ
Alnnajmu alththaqibu
YUSUFALI: (It is) the Star of piercing brightness;-
PICKTHAL: – The piercing Star!
SHAKIR: The star of piercing brightness;
KHALIFA: The bright star.
২। তোমাকে কি ভাবে ব্যাখ্যা করা যাবে যে রাত্রের [ আকাশে ] আগমনকারী কি ?
৩। উহা উজ্জ্বল নক্ষত্র !
৪। এমন কোন প্রাণ [ আত্মা ] নাই যার উপরে তত্বাবধায়ক নিযুক্ত করা হয় নাই। ৬০৬৯
৬০৬৯। যদি মানুষ শুধুমাত্র বস্তু জগত সম্বন্ধে তার সমস্ত চিন্তা -ভাবনা ও সত্ত্বা ব্যপৃত না রেখে মনোজগতকে বা আধ্যাত্মিক জগতকে প্রাণিধান করার জন্য কিছুটা সময় ব্যয় করে, তবে তাঁর কোনও ভয় নাই। আল্লাহ্ এদের অগোচরে সকল বিপদ বিপর্যয় থেকে রক্ষা করবেন। হয়তো পার্থিব দৃষ্টিকোণ থেকে, সামাজিক অবস্থানে তাঁর স্থান অতি নগণ্য ; কিন্তু তাঁর আত্মা আধ্যাত্মিক জগতের দুর্গম পথকে অতিক্রম করে আল্লাহ্র নিকট সম্মানের অধিকারী হয়ে যায়। আধ্যাত্মিক জগতে আল্লাহ্ তাঁকে সমগ্র সৃষ্টির উপরে সম্মান দান করেন। ঐশ্বরিক শক্তি তাঁদের সকল বিপদ বিপর্যয় থেকে রক্ষা করেন এই পার্থিব জীবনে।
আয়াতঃ 086.004
প্রত্যেকের উপর একজন তত্ত্বাবধায়ক রয়েছে।
There is no human being but has a protector over him (or her) (i.e. angels incharge of each human being guarding him, writing his good and bad deeds, etc.)
إِن كُلُّ نَفْسٍ لَّمَّا عَلَيْهَا حَافِظٌ
In kullu nafsin lamma AAalayha hafithun
YUSUFALI: There is no soul but has a protector over it.
PICKTHAL: No human soul but hath a guardian over it.
SHAKIR: There is not a soul but over it is a keeper.
KHALIFA: Absolutely, everyone is well guarded.
২। তোমাকে কি ভাবে ব্যাখ্যা করা যাবে যে রাত্রের [ আকাশে ] আগমনকারী কি ?
৩। উহা উজ্জ্বল নক্ষত্র !
৪। এমন কোন প্রাণ [ আত্মা ] নাই যার উপরে তত্বাবধায়ক নিযুক্ত করা হয় নাই। ৬০৬৯
৬০৬৯। যদি মানুষ শুধুমাত্র বস্তু জগত সম্বন্ধে তার সমস্ত চিন্তা -ভাবনা ও সত্ত্বা ব্যপৃত না রেখে মনোজগতকে বা আধ্যাত্মিক জগতকে প্রাণিধান করার জন্য কিছুটা সময় ব্যয় করে, তবে তাঁর কোনও ভয় নাই। আল্লাহ্ এদের অগোচরে সকল বিপদ বিপর্যয় থেকে রক্ষা করবেন। হয়তো পার্থিব দৃষ্টিকোণ থেকে, সামাজিক অবস্থানে তাঁর স্থান অতি নগণ্য ; কিন্তু তাঁর আত্মা আধ্যাত্মিক জগতের দুর্গম পথকে অতিক্রম করে আল্লাহ্র নিকট সম্মানের অধিকারী হয়ে যায়। আধ্যাত্মিক জগতে আল্লাহ্ তাঁকে সমগ্র সৃষ্টির উপরে সম্মান দান করেন। ঐশ্বরিক শক্তি তাঁদের সকল বিপদ বিপর্যয় থেকে রক্ষা করেন এই পার্থিব জীবনে।
আয়াতঃ 086.005
অতএব, মানুষের দেখা উচিত কি বস্তু থেকে সে সৃজিত হয়েছে।
So let man see from what he is created!
فَلْيَنظُرِ الْإِنسَانُ مِمَّ خُلِقَ
Falyanthuri al-insanu mimma khuliqa
YUSUFALI: Now let man but think from what he is created!
PICKTHAL: So let man consider from what he is created.
SHAKIR: So let man consider of what he is created:
KHALIFA: Let the human reflect on his creation.
৫। সুতারাং মানুষ প্রাণীধান করুক কি থেকে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
৬। তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে সবেগে স্খলিত এক বিন্দু পানি থেকে ৬০৭০
৬০৭০। দেখুন সূরা [ ৭৬ : ২ ] আয়াতের টিকা ৫৮৩২।
আয়াতঃ 086.006
সে সৃজিত হয়েছে সবেগে স্খলিত পানি থেকে।
He is created from a water gushing forth
خُلِقَ مِن مَّاء دَافِقٍ
Khuliqa min ma-in dafiqin
YUSUFALI: He is created from a drop emitted-
PICKTHAL: He is created from a gushing fluid
SHAKIR: He is created of water pouring forth,
KHALIFA: He was created from ejected liquid.
৫। সুতারাং মানুষ প্রাণীধান করুক কি থেকে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
৬। তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে সবেগে স্খলিত এক বিন্দু পানি থেকে ৬০৭০
৬০৭০। দেখুন সূরা [ ৭৬ : ২ ] আয়াতের টিকা ৫৮৩২।
আয়াতঃ 086.007
এটা নির্গত হয় মেরুদন্ড ও বক্ষপাজরের মধ্য থেকে।
Proceeding from between the back-bone and the ribs,
يَخْرُجُ مِن بَيْنِ الصُّلْبِ وَالتَّرَائِبِ
Yakhruju min bayni alssulbi waalttara-ibi
YUSUFALI: Proceeding from between the backbone and the ribs:
PICKTHAL: That issued from between the loins and ribs.
SHAKIR: Coming from between the back and the ribs.
KHALIFA: From between the spine and the viscera.
৭। ইহা নির্গত হয় মেরুদন্ড ও পঞ্জরাস্থির মধ্য থেকে, ৬০৭১
৬০৭১। পুরুষের বীর্য হচ্ছে দেহের কেন্দ্রীভূত বিশুদ্ধ সারাংশ। বীর্য দেহের কটিদেশে উৎপন্ন হয়; অর্থাৎ নিতম্বের হাড় ও পঞ্জরাস্থির মধ্যবর্তী অঞ্চলে। মানুষের মেরুদন্ড হচ্ছে শক্তি ও ব্যক্তিত্বের প্রতীক। মেরুদন্ডের মধ্যে দিয়ে স্নায়ু মন্ডলীর মূল কান্ড পরিচালিত হয়েছে, যার মস্তিষ্কের সাথে সংযুক্তি ঘটেছে। আর এই স্নায়ু মন্ডলীর মাধ্যমে মস্তিষ্ক তার সকল নির্দ্দেশনা দেহের সর্বত্র পরিচালনা করে।
আয়াতঃ 086.008
নিশ্চয় তিনি তাকে ফিরিয়ে নিতে সক্ষম।
Verily, (Allâh) is Able to bring him back (to life)!
إِنَّهُ عَلَى رَجْعِهِ لَقَادِرٌ
Innahu AAala rajAAihi laqadirun
YUSUFALI: Surely (Allah) is able to bring him back (to life)!
PICKTHAL: Lo! He verily is Able to return him (unto life)
SHAKIR: Most surely He is able to return him (to life).
KHALIFA: He is certainly able to resurrect him.
৮। নিশ্চয়ই [আল্লাহ্ ] তাকে পুণরায় [জীবিত ] করে আনতে সক্ষম ৬০৭২
৬০৭২। সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ মানুষের মাঝে আধ্যাত্মিক ও পার্থিব জগতের অপূর্ব সমণ্বয় ঘটিয়েছেন। যিনি এত বড় স্রষ্টা, তিনি অবশ্যই মৃত্যুর পরে মানুষের পুণরুত্থান ঘটাতে সক্ষম। কেয়ামতের পরে নূতন পৃথিবীতে মানুষকে আবার তিনি ফিরিয়ে আনবেন।
আয়াতঃ 086.009
যেদিন গোপন বিষয়াদি পরীক্ষিত হবে,
The Day when all the secrets (deeds, prayers, fasting, etc.) will be examined (as to their truth).
يَوْمَ تُبْلَى السَّرَائِرُ
Yawma tubla alssara-iru
YUSUFALI: The Day that (all) things secret will be tested,
PICKTHAL: On the day when hidden thoughts shall be searched out.
SHAKIR: On the day when hidden things shall be made manifest,
KHALIFA: The day all secrets become known.
৯। সেদিন [ সকল ] গোপন বিষয় পরীক্ষা করা হবে।
১০। [ মানুষের ] কোন ক্ষমতা থাকবে না, এবং কোন সাহায্যকারীও থাকবে না ৬০৭৩।
৬০৭৩। কেয়ামতের পরে যে নূতন পৃথিবীর সৃষ্টি হবে, সে পৃথিবীর সব নিয়ম কানুন আমাদের এই চেনা পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হবে। এই পার্থিব জীবনের সকল কাজ, কাজের নিয়ত বা উদ্দেশ্য, সকল চিন্তা ভাবনা বা কল্পনা, তা যত গোপনই রাখা হোক না কেন, তা প্রকাশিত করা হবে নূতন পৃথিবীতে এবং তা প্রকৃত সত্যের কষ্টি পাথরে ন্যায়ের আলোকে যাচাই করা হবে। কোন প্রতারণা বা সংস্কার বা রীতিনীতি বা পক্ষপাতিত্ব সেদিন কোনও কাজে আসবে না। সেই কঠিন পরীক্ষাতে পৃথিবীর মত অন্যায় সুযোগ সুবিধা লাভের ক্ষমতা বা সুযোগ থাকবে না বা কোন সাহায্য লাভেরও সুযোগ থাকবে না।
আয়াতঃ 086.010
সেদিন তার কোন শক্তি থাকবে না এবং সাহায্যকারীও থাকবে না।
Then will (man) have no power, nor any helper.
فَمَا لَهُ مِن قُوَّةٍ وَلَا نَاصِرٍ
Fama lahu min quwwatin wala nasirin
YUSUFALI: (Man) will have no power, and no helper.
PICKTHAL: Then will he have no might nor any helper.
SHAKIR: He shall have neither strength nor helper.
KHALIFA: He will have no power, nor a helper.
৯। সেদিন [ সকল ] গোপন বিষয় পরীক্ষা করা হবে।
১০। [ মানুষের ] কোন ক্ষমতা থাকবে না, এবং কোন সাহায্যকারীও থাকবে না ৬০৭৩।
৬০৭৩। কেয়ামতের পরে যে নূতন পৃথিবীর সৃষ্টি হবে, সে পৃথিবীর সব নিয়ম কানুন আমাদের এই চেনা পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হবে। এই পার্থিব জীবনের সকল কাজ, কাজের নিয়ত বা উদ্দেশ্য, সকল চিন্তা ভাবনা বা কল্পনা, তা যত গোপনই রাখা হোক না কেন, তা প্রকাশিত করা হবে নূতন পৃথিবীতে এবং তা প্রকৃত সত্যের কষ্টি পাথরে ন্যায়ের আলোকে যাচাই করা হবে। কোন প্রতারণা বা সংস্কার বা রীতিনীতি বা পক্ষপাতিত্ব সেদিন কোনও কাজে আসবে না। সেই কঠিন পরীক্ষাতে পৃথিবীর মত অন্যায় সুযোগ সুবিধা লাভের ক্ষমতা বা সুযোগ থাকবে না বা কোন সাহায্য লাভেরও সুযোগ থাকবে না।
আয়াতঃ 086.011
শপথ চক্রশীল আকাশের
By the sky (having rain clouds) which gives rain, again and again.
وَالسَّمَاء ذَاتِ الرَّجْعِ
Waalssama-i thati alrrajAAi
YUSUFALI: By the Firmament which returns (in its round),
PICKTHAL: By the heaven which giveth the returning rain,
SHAKIR: I swear by the raingiving heavens,
KHALIFA: By the sky that returns (the water).
১১। শপথ [ সেই ] আকাশের [ যা ] বার বার আসে ৬০৭৪,
৬০৭৪। ঋতু ভেদে আকাশের রূপ যায় বদলে। বর্ষায় একরূপ শরতে অন্য। শীতে, গ্রীষ্মে ইত্যাদি বিভিন্ন ঋতুতে আকাশ বিভিন্নভাবে রং বদলায়। এই আয়াতে শপথ করা হয়েছে সেই আকাশের যা বৃষ্টির মেঘকে ধারণ করে। আকাশের বিভিন্ন রূপ সত্ত্বেও সপ্ত আকাশের কোনও পরিবর্তন ঘটে না। এই শপথের মাধমে সেই চির সত্যের প্রতি ইঙ্গিত দান করা হয়েছে যা চিরকাল অপরিবর্তনীয় থেকে যায়। সেই সত্য হচ্ছে আল্লাহ্র প্রত্যাদেশের সত্য। বৃত্তের যেরূপ আবর্তন ঘটে শুধুমাত্র একটি বিন্দুকে কেন্দ্র করে, ঠিক সেরূপ হচ্ছে প্রত্যাদেশের সত্য। যদিও যুগে যুগে পরিবেশের সাথে জীবনের সমন্বয় সাধনের জন্য এই সত্যের রুপকে বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু সত্যের প্রকৃত রূপ একই থেকে যায়। যেরূপ মেঘের আনাগোনা সত্ত্বেও আকাশের রূপ একই থেকে যায়।
আয়াতঃ 086.012
এবং বিদারনশীল পৃথিবীর
And the earth which splits (with the growth of trees and plants),
وَالْأَرْضِ ذَاتِ الصَّدْعِ
Waal-ardi thati alssadAAi
YUSUFALI: And by the Earth which opens out (for the gushing of springs or the sprouting of vegetation),-
PICKTHAL: And the earth which splitteth (with the growth of trees and plants)
SHAKIR: And the earth splitting (with plants);
KHALIFA: By the earth that cracks (to grow plants).
১২। পৃথিবীর শপথ, যা মুক্ত করে [ সবেগে নির্গত প্রস্রবণ ও অঙ্কুরিত উদ্ভিদ ] ৬০৭৫,
৬০৭৫। গ্রীষ্মের দাবদাহে মাটিকে মনে হয় পাথরের ন্যায় কঠিন। সেই মাটি যখন বৃষ্টির পানিতে সিক্ত হয়, তখন তা ভেদ করে উদ্ভিদের চারাগাছ মাথা তোলে এবং কঠিন ধরণীকে সবুজ করে তোলে। এই রূপক বর্ণনার মাধ্যমে সত্যের রূপকে তুলে ধরা হয়েছে। আধ্যাত্মিক জ্ঞান পৃথিবীর মানুষের নিকট ঐ দাবদাহে শুষ্ক মাটির ন্যায় কঠিন মনে হয়। কিন্তু বৃষ্টির ন্যায় প্রত্যাদেশের সত্য মানুষের আধ্যাত্মিক জগতের মাটিকে সিক্ত উর্বর করে তোলে। যার ফলে আমাদের অন্তর্নিহিত আত্মিক শক্তির উন্মেষ ঘটে এবং ” ফুলে ফলে” ভরে ওঠে।
আয়াতঃ 086.013
নিশ্চয় কোরআন সত্য-মিথ্যার ফয়সালা।
Verily! This (the Qur’ân) is the Word that separates (the truth from falsehood, and commands strict legal laws for mankind to cut the roots of evil).
إِنَّهُ لَقَوْلٌ فَصْلٌ
Innahu laqawlun faslun
YUSUFALI: Behold this is the Word that distinguishes (Good from Evil):
PICKTHAL: Lo! this (Qur’an) is a conclusive word,
SHAKIR: Most surely it is a decisive word,
KHALIFA: This is a serious narration.
১৩। দেখো, এই সেই বাণী [ কুর-আন ] যা পৃথক করে [ ভালোকে মন্দ থেকে ]। ৬০৭৬
১৪। এটা কোন তামাশার বিষয় নয়।
৬০৭৬। দেখুন উপরের দুটি টিকা। প্রত্যাদেশের সত্য হচ্ছে আধ্যাত্মিক জগতের জন্য আলো, যা আত্মিক অন্ধকারের কঠিন আবরণকে ভেদ করে বিচ্ছুরিত হতে সক্ষম এবং যা আমাদের জীবনের মূল উদ্দেশ্যের প্রতি বা কেন্দ্র বিন্দুর প্রতি পরিচালিত করতে সক্ষম। আল্ -কুরাণ হচ্ছে সেই প্রত্যাদেশের সত্য বা আলো, যা ভালো ও মন্দের মধ্যে মীমাংসাকারী বা পার্থক্যকারী। এটা কোনও হাসি-খেলার বস্তু নয়, কোরাণ আমাদের জীবনের সমস্যা সমাধানের সর্বোচ্চ ও সঠিক পথ বাতলে দেয়।
আয়াতঃ 086.014
এবং এটা উপহাস নয়।
And it is not a thing for amusement.
وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ
Wama huwa bialhazli
YUSUFALI: It is not a thing for amusement.
PICKTHAL: It is no pleasantry.
SHAKIR: And it is no joke.
KHALIFA: Not to be taken lightly.
১৩। দেখো, এই সেই বাণী [ কুর-আন ] যা পৃথক করে [ ভালোকে মন্দ থেকে ]। ৬০৭৬
১৪। এটা কোন তামাশার বিষয় নয়।
৬০৭৬। দেখুন উপরের দুটি টিকা। প্রত্যাদেশের সত্য হচ্ছে আধ্যাত্মিক জগতের জন্য আলো, যা আত্মিক অন্ধকারের কঠিন আবরণকে ভেদ করে বিচ্ছুরিত হতে সক্ষম এবং যা আমাদের জীবনের মূল উদ্দেশ্যের প্রতি বা কেন্দ্র বিন্দুর প্রতি পরিচালিত করতে সক্ষম। আল্ -কুরাণ হচ্ছে সেই প্রত্যাদেশের সত্য বা আলো, যা ভালো ও মন্দের মধ্যে মীমাংসাকারী বা পার্থক্যকারী। এটা কোনও হাসি-খেলার বস্তু নয়, কোরাণ আমাদের জীবনের সমস্যা সমাধানের সর্বোচ্চ ও সঠিক পথ বাতলে দেয়।
আয়াতঃ 086.015
তারা ভীষণ চক্রান্ত করে,
Verily, they are but plotting a plot (against you O Muhammad (Peace be upon him)).
إِنَّهُمْ يَكِيدُونَ كَيْدًا
Innahum yakeedoona kaydan
YUSUFALI: As for them, they are but plotting a scheme,
PICKTHAL: Lo! they plot a plot (against thee, O Muhammad)
SHAKIR: Surely they will make a scheme,
KHALIFA: They plot and scheme.
১৫। তারা তো ষড়যন্ত্রের দুরভিসন্ধি করছে, ৬০৭৭
৬০৭৭। আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও করুণা আধ্যাত্মিক জগতের সূচীভেদ্য অন্ধকারকে ভেদ করে আমাদের আধ্যাত্মিক জগতকে সত্যের আলো উপলব্ধিতে সাহায্য করে থাকে; ঠিক সেই ভাবে যে ভাবে কঠিন মাটির অন্ধকারকে ভেদ করে ক্ষুদ্র বীজ মুক্ত আলোতে মাথা তোলে। আল্লাহ্র এই করুণা ধারা সত্বেও পৃথিবীতে অনেক অকৃতজ্ঞ ব্যক্তি আছে যারা অশুভ শক্তি দ্বারা চালিত হওয়ার ফলে, আল্লাহ্র মঙ্গলময় করুণাধারাকে ধ্বংস করতে প্রয়াসী। কিন্তু তাদের এই অশুভ পরিকল্পনা সফলতা লাভ করবে না,বরং আল্লাহ্র কল্যাণময় পরিকল্পনা সফলতা লাভ করবে। এরূপ ঘটনার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে মক্কার কোরাইশগণ যারা সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করেছিলো ইসলামকে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন করতে।
আয়াতঃ 086.016
আর আমিও কৌশল করি।
And I (too) am planning a plan.
وَأَكِيدُ كَيْدًا
Waakeedu kaydan
YUSUFALI: And I am planning a scheme.
PICKTHAL: And I plot a plot (against them).
SHAKIR: And I (too) will make a scheme.
KHALIFA: But so do I.
১৬। আমিও পরিকল্পনা করছি ৬০৭৮।
৬০৭৮। দেখুন সূরা [ ৩ : ৫৪ ] আয়াত।
আয়াতঃ 086.017
অতএব, কাফেরদেরকে অবকাশ দিন, তাদেরকে অবকাশ দিন, কিছু দিনের জন্যে।
So give a respite to the disbelievers. Deal you gently with them for a while.
فَمَهِّلِ الْكَافِرِينَ أَمْهِلْهُمْ رُوَيْدًا
Famahhili alkafireena amhilhum ruwaydan
YUSUFALI: Therefore grant a delay to the Unbelievers: Give respite to them gently (for awhile).
PICKTHAL: So give a respite to the disbelievers. Deal thou gently with them for a while.
SHAKIR: So grant the unbelievers a respite: let them alone for a
KHALIFA: Just respite the disbelievers a short respite.
১৭। অতএব, অবিশ্বাসীদের জন্য বিলম্ব কর, এবং অবকাশ দাও [ কিছু কালের জন্য ]। ৬০৭৯
৬০৭৯। দুষ্কৃতিকারী ও কাফেরদের অবকাশ দিতে বলা হয়েছে। তাদের ‘অবকাশ’ দেওয়া হচ্ছে আল্লাহ্রই পরিকল্পনার অংশ। এর দ্বারা আল্লাহ্র পরিকল্পনা অকার্যকর হবে না। মনে রাখতে হবে কাফের ও মন্দদের সাহায্য সহযোগীতা করার অর্থ ‘অবকাশ’ দেওয়া নয়, অথবা ক্ষমতা থাকা সত্বেও দুষ্টের দমন না করাও অবকাশ দেওয়া নয়। তা হলে অবকাশ দেওয়ার বিকৃত অর্থ করা হবে। এই অবকাশ দেওয়ার অর্থ হবে যখন দুষ্ট ও মন্দের অত্যাচার নির্যাতন বন্ধ করার দৃশ্যতঃ কোনও উপায় থাকবে না তখন ধৈর্য্য ও বিনয় অবলম্বনের মাধ্যমে তাদের অবকাশ দান করতে হবে। কোনও অবস্থাতেই ধৈর্যহারা হলে চলবে না। যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ রাসুলের (সা) জীবনী।