ফিরতি পথে এগোনোর সময় অন্য ট্র্যাকগুলো চোখে পড়ল-দুটো ঘোড়ার। হঠাৎ চোখে পড়েছে। তো, দেখা যাচ্ছে ঠিকই ট্যাপের দেখা পেয়েছে ও, এক সেট ছাপ দেখিয়ে মন্তব্য করল কার্ল। ওগুলো ট্যাপের ঘোড়ার…আর অন্যগুলো ইলেনের ছোটখাট গ্রুলাটার। অন্য কোথাও হলেও দুটো ঘোড়ার ট্র্যাকই চিনতে পারব আমি।
অ্যারোয়োর ভয়াবহ ঘটনার পর এদিকে এসেছে ওরা…সরাসরি পশ্চিমে চলে গেছে। হর্স হেড পর্যন্ত দীর্ঘ আশি মাইল রুক্ষ জমি পাড়ি দিতে হবে ওদেরইলেন কি সঙ্গে পানি নিয়েছে। পানি দরকার হবে ওদের।
সে-রাতে নদীর কিনারে ক্যাম্প করলাম আমরা-জানা মতে এটাই পানির শেষ উৎস।
৪. নদীর পানি প্রায় নিঃশেষ
নদীর পানি প্রায় নিঃশেষ হয়ে গেছে। এক রাতের ব্যবধানে তৃষ্ণার্ত গরুর পেটে চলে গেছে সব পানি। একটু আগেও যেখানে পানি ছিল, সেখানে এখন থকথকে কাদা, সকালের সূর্যের আলোয় ধীরে ধীরে শুকিয়ে আসছে।
বেশ, ড্যান, এবার তোমার পালা, গম্ভীর মুখে বললেন বাবা। আমি ক্যাটলম্যান নই, এটুকু বোঝার মত বুদ্ধি আছে আমার। এখন থেকে তুমি ড্রাইভ নিয়ে যাবে। তোমাকে নতুন করে বলার দরকার নিশ্চই হবে না, এই ড্রাইভের সাফল্যের ওপর কতটা নির্ভর করছি আমরা।
আশি মাইল পথ-কম-বেশি হতে পারে-পেরিয়ে হর্স হেড যেতে হবে, সবার উদ্দেশে বললাম আমি। পেকোসের কাছাকাছি অবশ্য কিছু ওঅটরহোল পাওয়া যাবে। আমি বা অন্য যে-কোন একজন আগে আগে রাইড করব, বিপজ্জনক ওঅটরহোলগুলো স্পট করতে হবে। গরুর দলকে ওসব উৎসে যেতে দেয়া যাবে না, যেভাবে হোক ঠেকিয়ে রাখতে হবে।
ওসব পানিতে ক্ষারের ঘন স্তর পড়ে আছে, পানি পান করা মানেই মৃত্যু। আমাদের পালে সব ধরনের গরুই রয়েছে, তবে কষ্টকর ড্রাইভের জন্যে অভ্যস্ত গরুগুলো। এখন থেকে যেটাই পিছিয়ে পড়বে; ওটাকে পেছনে ফেলে যাব আমরা। পথে কোন বাছুর জন্ম নিলে মেরে ফেলতে হবে।
সারাদিনে হয়তো পনেরো-ষোলো মাইল এগোতে পারব আমরা। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, এরচেয়ে বেশি যেতে হবে আমাদের এবং পানি ছাড়া।
প্রথম রাতে একটু দেরি করে ঘুমাব আমরা, সকালে আগে আগে রওনা দেব। কিন্তু তারপর থেকে পুরুষরা দিনে-রাতে প্রায় সারাক্ষণই রাইড করবে।
আমি রাইড করতে পারব, ভিড়ের শুরুতে দেখতে পেলাম জুয়ানিতাকে। বাচ্চা বয়স থেকে গরু নিয়ে কাজ করেছি আমি। এই ডাইভে কোন ভাবে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারলে খুশি হব আমি। জুয়ারেজ সুস্থ হলে সেও হাত লাগাতে পারবে।
তোমার সাহায্য কাজে লাগবে, ম্যাম, জবাব দিলাম আমি। ধন্যবাদ।
কয়েক মিনিট কেউই কিছু বলল না, শেষে মুখ খুলল টিম অটম্যান। আশি মাইলের মধ্যে কোন পানি নেই? তাহলে মাসট্যাঙ পুলের ব্যাপারটা কি গুজব?
হয়তো সত্যিই আছে, ওখানে যে পানি পাওয়া যাবে এ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার কোন উপায় নেই। তাই পানি পাওয়া যাবে না ধরে নেয়াই ভাল।
শ্রাগ করলেন বাবা। এমন কিছু হতে পারে ভেবেই এসেছি আমরা। কেউ বলতে পারবে না যে আগেই তাকে সতর্ক করা হয়নি। এখন, আসলে যা করা উচিত আমাদের-সব ব্যারেল, জার পানিতে পূর্ণ করে ফেলতে হবে, আর যতটা সম্ভব কম পানি ব্যবহার করতে হবে।
কার্ল নেতৃত্ব দিচ্ছে, আগে আগে চলল সে, বড় বড় বাদামী চুল উড়ছে বাতাসে। ওর পিছু নিল ডোরাকাটা বলদটা, এখনও যে ঠিক কোন দিকে যাচ্ছে ওটা খোদা মালুম; এবং ঠিক পেছনেই রয়েছে গরুর পাল।
দু’পাশে-পালের কিনারে-রয়েছে বেন টিল্টন আর মিলো ডজ। ওদের পেছনে রয়েছে ফ্রিম্যান স্কয়ার এবং স্যাম গার্ট।
ঘুরে টিম অটম্যানের দিকে এগোলাম আমি। ওয়্যাগনে উঠছে সে, এদিকে আগেই আসনে চেপে বসেছে মিসেস অটম্যান। বিষণ্ণ মুখ, দৃষ্টি দিগন্ত ছাড়িয়ে গেছে।
সব ঠিকঠাক আছে তো, টিম?
ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াল সে। না–তুমি ভাল করেই জানো। ইলেন চলে গেছে, অথচ ওকে আটকে রাখতে পারতে তুমি, ড্যান!
আমি? আর যাই হোক, এমন কোন মন্তব্য টিম অটম্যানের কাছ থেকে আশা করিনি আমি। টিম, আমার জন্যে থাকত না ও। আমার তো মনে হয় অন্য কারও জন্যেও থাকত না।
আমরা তো ভেবেছি বিয়ে করবে তোমরা। অন্তত আমার ধারণা ওরকমই ছিল। ছন্নছাড়া ওই ট্যাপ এডলেকে কখনোই পছন্দ হয়নি আমার।
মানুষ হিসেবে মন্দ নয় ও। আর…আমার এবং ইলেনের মধ্যে বিয়ে সম্পর্কে কোন কথা হয়নি। গল্পগুজব করেছি আমরা, এলাকায় সমবয়সী আর কোন ছেলে-মেয়ে ছিল না…স্রেফ আমরা দুজন। ইলেন কিন্তু সত্যিই ট্যাপকে পছন্দ করে।
মেয়েটাকে শেষ করে দেবে সে, যদি না পথে কোথাও মরে পড়ে থাকে।
ট্যাপের সঙ্গে আছে ও। ওদের ট্র্যাক দেখেছি। ট্যাপকে ধরে ফেলেছে ইলেন, পরে একসঙ্গে পশ্চিমে এগিয়েছে ওরা।
অ্যারোয়োর ভয়াবহ ওই ঘটনাটা মনে পড়লেও চেপে গেলাম, এদেরকে বলার কোন মানে হয় না। বাবাকে বলেছি আমি, অন্য বেশ কয়েকজনকেও বলেছি, কারণ আমি চাই সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুক ওরা। মেয়েরা শুনলে শুধু শুধু উদ্বিগ্ন হবে।
আমার যদি স্ত্রী থাকত, তো, অবশ্যই সবকিছু ওকে বলতাম আমি। বেশিরভাগ পুরুষ মেয়েদের অন্ধকারে রাখতে পছন্দ করে; অথচ পুরুষদের মতই বিপদ বা ঝামেলা উতরে যেতে জানে মেয়েরা। স্ত্রীকে ঝামেলা থেকে দূরে সরিয়ে রাখার কোন অধিকার নেই পুরুষের, কিন্তু মিসেস অটম্যান, মিসেস বুচার্ড বা রোজিটা জেপসন ভিন্ন ধাতে গড়া। ওদের উদ্বিগ্ন না করাই ভাল।