যেসব ব্যাপারে নির্ভর করতে সাধারণতঃ আমি কুণ্ঠবোধ করে থাকি, রুটি ব্যবহার করার মাধ্যমে আমি আমার জীবনের কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেইসব ব্যাপারে বিশাল অগ্রগতি সাধন করেছি। এটা যখন আমি লিখছি, সে সময় হাসছিলাম। আমি আমার স্ত্রীর কাছাকাছি হতে পেরেছি এবং আমার চাহিদাগুলো পূরণ হতে শুরু করেছে। আমার কোনো ধারণা ছিল না যে, নীরবতাই ছিল আমার প্রধান সমস্যা।
– এন্থনি।
এন্থনি যেমনটি বলেছেন– আমার কোনো ধারণা ছিল না যে নীরবতাই ছিল আমার বড় সমস্যা। নীরবতা সবসময়ই একটি সমস্যা। আপনি নিজে যা অনুভব করেন তা না বলার সিদ্ধান্ত দ্বারা তৈরি হয়, গবেষকরা যাকে বলেন– জ্ঞানীয় অসঙ্গতি, আপনি হৃদয় থেকে যা সত্যি বিশ্বাস করেন এবং যা আসলে এই মুহূর্তে আপনি করছেন– এই দুইয়ের মধ্যকার পার্থক্য। এই সমস্যাগুলো জমা হতে থাকে এবং একটা সময় এগুলো আপনার সম্পর্কের মাঝে ভাঙন ধরায়।
এস্টেলার ক্ষেত্রে ঠিক এটাই ঘটেছিল, যাকে তিনি বর্ণনা করেছেন– একটি সাধারণ মুহূর্ত হিসেবে। তার স্বামীর সঙ্গে একটি আপাতঃ অর্থহীন যুক্তিতর্ক এবং ফলশ্রুতিতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে– চূড়ান্ত বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য বলা। ঘটনাটি তিনি যেভাবে বর্ণনা করেছেন :
আমার মস্তিষ্ক হঠাৎ পানির মতো পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল এবং এটা বলার জন্য আমি ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি ব্যবহার করেছিলাম। এটা ছিল কাজটি করার ব্যাপারে আমার পছন্দ অথবা জরুরি ব্রেক টানার ব্যাপারে আমার মস্তিষ্ককে অনুমতি দান। ঐ মুহূর্তটিতে আমি কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমি বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য বলেছিলাম। অতীতের দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখতে পাই ঐ সিদ্ধান্তটি আমার জীবনকে সেই পথে ছুঁড়ে দিয়েছিল, আমি যেইদিকে যেতে চেয়েছি, কিন্তু নিজেকে আমি সবসময় ধরে রেখেছিলাম।
এটা সহজ ছিল বলা যাবে না। এটা একেবারেই সহজ ছিল না, কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আমার এক মুহূর্তের জন্যও সন্দেহ হয়নি। কাজটি করার ঐ খাঁটি মুহূর্তটিতে, যা সঠিক বলে আমি জানতাম এবং যা সত্যিকারের আমি, নিজেকে আমি খুঁজে পেয়েছিলাম। এখানে কিছু অন্ধকার ও নিঃসঙ্গ মুহূর্ত ছিল, কিন্তু যা আমাকে বিস্মিত করেছিল তা হলো– ঐ মুহূর্তগুলোতে বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আমার কখনোই আফসোস হয়নি।
কাজ অথবা পছন্দ করার দিনটি জুড়ে আমাদের সকলেরই মুহূর্ত রয়েছে। কখনো কখনো আমরা নিজেদেরকে পেছনে টেনে ধরে রাখি। আমরা সাবধানী হতে পছন্দ করি এবং ঝুঁকি নিতে চাই না। আমি কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এবং ঐ মুহূর্তগুলোতে আমি সবচেয়ে প্রাণবন্ত অনুভব করি, নিজের আদর্শ জীবন খুঁজে পাই এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ– সত্যিকারের নিজেকে খুঁজে পাই।
– এস্টেলা।
শুরু থেকেই আমি বলে আসছি যে রুলটি খুব সহজ। কিন্তু কখনোই বলিনি যে এটা বলা খুব সহজ। সত্য হলো দুটি মানুষের মধ্যকার সংক্ষিপ্ততম দূরত্ব এবং এটা খুব ভালোভাবে আপনার সম্পর্ককে রক্ষা করে। নীরবতা দূরত্ব সৃষ্টি করে, সত্য বাস্তব সংযোগ তৈরি করে। নাতাশা যেমনটি আবিষ্কার করেছিলেন।
হঠাৎ করে মা মারা যাওয়ার পর নাতাশা তার জীবন নিয়ে খুব বিহ্বল হয়ে পড়েছিলেন। তার আশাবাদ উবে গিয়েছিল এবং নিকট ভবিষ্যতে তিনি আরো নেতিবাচকতা দেখতে পাচ্ছিলেন। তিনি তার প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন এবং নিজের অনুভূতি সম্পর্কে হৃদয় থেকে কথা বলার জন্য রুলটি ৫-৪-৩-২-১ ব্যবহার করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তাদের সম্পর্ক ছিল নড়বড়ে। তিনি তার সত্যিকারের অনুভূতি নিয়ে কথা বলেছিলেন এবং এর ফলাফল ছিল আশ্চর্যজনক। তাদের সম্পর্ক শেষ করে দেওয়ার পরিবর্তে সত্য তাদেরকে কাছাকাছি নিয়ে এসেছিল। তারা এখন গভীর সম্পর্কে জড়িত।
সময়ের সাথে সাথে আমরা আমাদের সম্পর্কের ক্ষুদ্রতম মুহূর্তগুলোর অন্তর্গত গভীর শক্তির প্রশংসা করতে প্রায়শঃই ব্যর্থ হই। সম্প্রতি আমার সাথে এমন কিছু একটা ঘটেছিল যা মনে করিয়ে দিয়েছে– মন্থর হয়ে পড়া, উপস্থিত থাকা এবং হৃদয় যখন সাড়া দেয় তখন তার সঙ্গে সুর মেলানো কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
আমার একটি বক্তৃতা শোনার পর এক ব্যক্তি ফেসবুক-এ আমাকে একটি বার্তা পাঠিয়ে বলেছিল জশ উডরাফ নামক তার এক পারিবারিক বন্ধুর স্মারক পৃষ্ঠাটি দেখার জন্য। তার মতে জশ ছিলেন এমন এক ব্যক্তির উদাহরণ যিনি তার জীবনকে পুরোপুরি যাপন করেছিলেন এবং ফাইভ সেকেন্ড রুল-টির সঙ্গেও সম্পর্কিত ছিলেন।
আমার প্রবৃত্তিকে অনুসরণ করে স্মারক পৃষ্ঠার লিঙ্কটির উপর আমি ক্লিক করলাম। প্রথম যে জিনিসটি আমি দেখতে পেলাম তা হলো মেরী নামক একজন মহিলার একটি পোস্ট। এটি ছিল ঘনিষ্ঠতা ও সম্পর্কযুক্ততা, যা আমরা আমাদের সকলের জীবনে চাই এবং কেমন করে অযৌক্তিক কারণে আমরা তা থেকে নিজেদেরকে টেনে ধরে রাখি তার উপর চমৎকার একটি পোস্ট। নিউ অর্লিপ্স-এ একটি গাড়ির ধাক্কায় মারা যাওয়ার এক সপ্তাহ পূর্বে মেরী একটি মুদি দোকানে তাকে দেখেছিলেন কিন্তু এগিয়ে গিয়ে কোনো কথা বলেননি। আসুন, তার কাছে থেকে গল্পটি শুনিঃ
২য় শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে জশ এবং আমার ছেলে জার্ড ভালো বন্ধু। মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগে আমি জশকে মুদির দোকানে দুবার দেখেছিলাম। প্রথমবার যখন তাকে আমি দেখি, সে ছিল অনেকটা দূরে আর আমি ভেবেছিলাম সে নিশ্চয়ই বড়দিন উপলক্ষে বাড়ি এসেছে। আমি তার সাথে কথা বলিনি কারণ সেখানে চিৎকার করে তাকে আমি ডাকতে চাইনি। ঐ একই সপ্তাহে তাকে আমি আবারো দেখেছিলাম, উলের টুপি মাথায় কারো সঙ্গে কথা বলা অবস্থায়। এবারে সে আরো কাছাকাছি ছিল কিন্তু তারপরও আমি তার সাথে কথা বলিনি কারণ আমি ব্যস্ত ছিলাম, মেকাপ ছাড়া, উদ্ভট কাপড় পরিহিত এবং আশা করছিলাম জানাশোনা কারো সঙ্গে যেন দেখা না হয়। একই সপ্তাহে দুবার তাকে দেখতে পাওয়াটা আমার কাছে অদ্ভুত মনে হয়েছিল, সুতরাং আমি তার পরিবার ও তাদের বড়দিনের ছুটির জন্য মনে মনে প্রার্থনা করলাম।