এগুলো হয়তো পৃথিবীকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা নয় কিন্তু মেল, ফাইভ সেকেন্ড রুল-টির শক্তি পেছনে থাকায় আমি এসব করতে পেরেছি।
আমি এখন এই হাতিয়ারটি আমার বিবেচনায় আরো বড় এক যুদ্ধে ব্যবহার করতে চলেছি, যেমন ২৫ বৎসর যাবত আমি যে অতিরিক্ত শারীরিক ওজন বয়ে চলেছি তা কমানো এবং আমার হাইস্কুলের ৩০তম পুনর্মিলনীতে অংশগ্রহণ করার মনোবল অর্জন।
আমি এমনকি আমার গল্প লিখতে এবং উপস্থাপন করতে রুলটি ব্যবহার করেছি। আমি ফাইফ সেকেন্ড রুল সংক্রান্ত বার্তাটি অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করার চেষ্টা করেছি এবং কিছু মানুষকে তাদের নিজেদের জন্য এটির অনুশীলন করতে শুনেছি ও দেখেছি। আমি জানি, আমি এই ক্ষমতায়নের ব্যবহার চালিয়ে যাব যা এখন পর্যন্ত জীবন বদলে দেয়ার একটি সহজ সূত্র।
দীর্ঘসময় পর প্রথমবারের মতো মনে হচ্ছে আমি অচলায়তন ভাঙতে এবং কঠিন অভ্যাস ছেড়ে উঠতে শুরু করেছি। এরপর কি ঘটে তা দেখার জন্য আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না।
ধন্যবাদ মেল,
– ট্রেসি।
আপনি যখন নিজস্ব ধারণা নিশ্চিত করার কাজগুলো করেন, তখন আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে। বিশেষতঃ এমন কিছু যা হয়তো আপনি সাধারণত করেন না, যেমন– সঠিক সময়ে ঘুম থেকে ওঠা, ধর্মীয় বক্তৃতা করা অথবা সাইকেল চালানোর পথে সিসকোর প্রধান নির্বাহীর পিছু নেওয়া। এগুলো প্রাত্যহিক মনোবল সংক্রান্ত কাজ এবং এরাই আত্মবিশ্বাস তৈরি করে।
ক্রিস্টাল, প্রকৌশলী হিসেবে ২০০৫ সালে সিসকোর সরাসরি (লাইভ) অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং ফাইভ সেকেন্ড রুলটি সম্পর্কে আমাকে লিখেছিলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন গত ৮ বৎসর যাবত প্রতিটি পদক্ষেপে তিনি দ্বিতীয় ধারণাটি গ্রহণ করেছেন।
আমার মনে হয়েছে কেউ না কেউ আকর্ষণীয় ছিল কিন্তু এক মুহূর্ত বাদে আমার মস্তিষ্ক তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা না করার দশ লক্ষ কারণ আমাকে দেখিয়েছে।
তিনি পাশে বসা মানুষদের সঙ্গে তৎক্ষণাৎ রুলটির প্রয়োগ শুরু করেছিলেন। পরদিন যখন প্রশিক্ষক সবাইকে জিজ্ঞেস করলেন কারো কোনো প্রশ্ন আছে কিনা, তিনি ভাবলেন তার প্রশ্ন আছে কিন্তু জিজ্ঞেস করতে বিব্রতবোধ করছিলেন। তারপর ভাবলেন এটা নিয়ে চিন্তা করা বন্ধ করলেই তিনি দাঁড়াতে পারেন।
ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি ব্যবহার করে তিনি উঠে দাঁড়িয়েছিলেন এবং তার প্রশ্নটি জিজ্ঞেস করেছিলেন। তিনি আরো দুজন ভদ্রমহিলাকেও পুরুষ প্রকৌশলী দ্বারা পরিপূর্ণ ঘরটিতে উঠে দাঁড়াতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। পরবর্তীতে, তিনি ক্ষণ গণনা ৫-৪-৩২-১ করে একটি বাস্কেটবল খেলা দেখতে গিয়েছিলেন যখন এর জন্য তিনি অনুভব করছিলেন না এবং একটি বিজনেস কার্ড-এর জন্য জিজ্ঞেস করার মনোবল খুঁজে পেয়েছিলেন। প্রাত্যহিক মনোবল সংক্রান্ত এই কাজগুলো করার কারণে তার মনোবল বেড়েছিল এবং তার জীবন সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছিল– একটি নতুন চাকরি, একটি নতুন পদবি এবং একটি নতুন বাড়ি।
নবুও, নির্বাহী পরিচালকের একটি ভূমিকা থেকে অব্যাহতি লাভ করার পর ফাইভ সেকেন্ড রুল-টির ব্যবহার শুরু করেছিলেন। তিনি তার প্রেরণা হারিয়ে ফেলেছিলেন এবং নিজেকে অসমর্থ মনে করছিলেন। রুলটি ব্যবহার করে প্রাত্যহিক মনোবল প্রক্রিয়াটি অল্প অল্প অনুশীলন করার মাধ্যমে নবুও ক্রিস্টাল এর মতোই খুঁজে পেয়েছিলেন, তার ভাষায়– আমার হৃদয়, মন ও শরীরে শক্তি ও উদ্যম ফিরে এসেছে। এটা ফিরে আসার কারণ তিনি নিজের কাছে প্রমাণ করতে পেরেছিলেন– জীবনে পরিবর্তনের জন্য কিছু করার শক্তি তার মধ্যে রয়েছে।
ব্যক্তিত্ব এবং আত্মবিশ্বাস সম্পর্কে আর একটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করতে চাই। মনে আছে প্রকৌশলী ভদ্রলোক কি বলেছিলেন যখন তিনি প্রথমবার মি. চ্যাম্বার্সকে হলওয়ে ধরে হেঁটে আসতে দেখে অসাড় হয়ে গিয়েছিলেন? তিনি তার ধরন সম্পর্কে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন– আমি একজন অন্তর্মুখী ধরনের মানুষ এবং এই ধরনের ব্যাপারগুলো আমার খুব স্বাভাবিকভাবে আসে না।
কি হবে যদি আমি বলি আপনার জীবন অথবা ব্যক্তিত্ব সম্পর্কিত কোনোকিছুই স্থায়ী নয় বা স্বাভাবিকভাবে আসে না? আপনি অনুশীলন না করা পর্যন্ত কোনোকিছুই স্বাভাবিকভাবে আসবে না। আর তাই আমি সবসময় বলি– আপনাকে অবশ্যই প্রাত্যহিক মনোবল অনুশীলন করতে হবে।
আপনার জীবনের প্রতিটি একক দৃষ্টিভঙ্গি উন্নত, পরিবর্তন অথবা সমৃদ্ধ করার সক্ষমতা আপনার রয়েছে– কাজের মাধ্যমে। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যলয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক ব্রায়ান লিট একটি অসাধারণ টেড টক উপস্থাপন করেছিলেন, যার শিরোনাম ছিল– সত্যিই আপনি কে? ব্যক্তিত্বের ধাঁধা। এতে তিনি অন্তর্মুখিতা ও বহির্মুখিতা নিয়ে কথা বলেন এবং যে বিষয়গুলো আমাদের আত্মপরিচয় তৈরি করে তা নিয়ে আলোচনা করেন। প্রফেসর লিটল-এর মতে– এটা আমাদের কাজ, এটা ব্যক্তিগত প্রকল্প। তিনি বর্ণনা করেন কিভাবে আমাদের কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য স্থায়ী ও স্বয়ংক্রিয় কিন্তু বেশীর ভাগই মুক্ত যা আমরা আমাদের জীবনের মৌলিক প্রকল্পটিকে এগিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে সমন্বয় করতে পারি।
লিটল্ ব্যাখ্যা করেছেন সিসকোর প্রকৌশলীদের মতো তিনিও অন্তর্মুখী স্বভাবের। যাই হোক, তার মৌলিক ব্যক্তিগত প্রকল্প হলো– অধ্যাপনা করা। তিনি শেখাতে ভালোবাসেন। সুতরাং, এমনকি অন্তর্মুখী হিসেবে তিনি যখন ক্লাসে ছাত্রদের সামনে সংযোগ স্থাপন করার জন্য দাঁড়ান, তাকে তার চরিত্রের বাইরে অভিনয় করতে হয়। এটা তিনি কেমন করে করেন? ইচ্ছাকৃত ও উদ্দেশ্যমূলক কাজের মাধ্যমে। এটা করতে তার নিজেকে ধাক্কা দিতে হয়।