আমার নতুন বন্ধুটি আমাকে এই গল্পটি শোনানোর সময় যে ঘরে আমরা দাঁড়িয়েছিলাম সেটিকে উজ্জ্বল করে তোলার মতো জ্বলজ্বল করছিলেন– এটা ছিল আমার পেশাজীবনের উজ্জ্বল মুহূর্ত। মেল, ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি ছাড়া এটা কখনোই সম্ভব হত না। জানিনা কি করে আপনাকে ধন্যবাদ জানাব।
এবং তারপর যোগ করলেন– ওহ গড, বলতে প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম যে আমি এখন চাকরির জন্য এক ব্যক্তির নিকট সাক্ষাৎকার দিচ্ছি যাকে চ্যাম্বার্স আমার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।
তিনি কি চাকরিটি পেয়েছেন?
সত্যিই আমার কোনো ধারণা নেই। চাকরিটি এই গল্পের মূল বিষয় নয়। এটি হলো প্রাত্যহিক মনোবল এবং কিভাবে তা আত্মবিশ্বাস তৈরি করে সেই সংক্রান্ত গল্প। এই একক অভিজ্ঞতাটির মধ্যে একটি চাকরির চাইতে অনেক বেশি পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। যদি তিনি তার প্রবৃত্তির কথা শুনতে এবং অনুসরণ করতে রুলটি ক্রমাগতভাবে ব্যবহার করেন, এটি তার জীবনের জন্য সম্ভাব্য একটি ভালো অভিগমন পরিবর্তন হতে পারে।
প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে সাক্ষাতের উচ্ছ্বাস তার ভেতরে ছিল না, যদিও এটা ছিল অসাধারণ। কিন্তু আরো অনেক বেশি ছিল নিজের ইচ্ছাকে সম্মান প্রদর্শন, সেই মুহূর্তের ভালোলাগা এবং জীবনের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের অনুভূতি সংক্রান্ত বিষয়।
মনে রাখবেন, নিজের উপর আত্মবিশ্বাস তৈরি হয় প্রাত্যহিক মনোবল দ্বারা। তিনি এই অভিজ্ঞতাই অর্জন করছিলেন– নিজের উপর নির্ভরতাকে জানার দীপ্তি। আমার প্রকৌশলী বন্ধুটি যতবেশি এই প্রাত্যহিক মনোবল কর্মটি অনুশীলন করবেন, ততবেশি নিজের উপর আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবেন।
মনে রাখতে হবে, প্রতিটি একক দিনে আপনি যে ছোট ছোট কাজগুলো করেন, তার মাধ্যমেই নিজের উপর বিশ্বাস তৈরি হয়।
বিল নামক এক ব্যক্তির কাছ থেকে আমি একটি বার্তা পেয়েছিলাম যা এই পর্যায়ে নিজের উপর বিশ্বাস করতে শেখার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করবে। বিল তার একটি সংগ্রামের বর্ণনা দিয়েছেন যা আমরা অনেকেই সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবেলা করে থাকি এবং যা খুবই প্রেরণাদায়ক।
সত্যিকারের আমি হয়ে ওঠার ব্যাপারে আমার একটি সমস্যা আছে
বাইরে থেকে বিল-এর জীবন দেখতে ছিল অসাধারণ। তিনি বিবাহিত, চার সন্তানের বাবা, একটি সফল কর্মজীবন এবং একটি পেশাদারী সংস্থার সভাপতি। চমৎকার জীবন, কি বলেন? তাইতো মনে হচ্ছে। কিন্তু এখানে কিছু একটা অনুপস্থিত আছে, এবং তার সঙ্গে এর একটি অর্থপূর্ণ সংযোগ রয়েছে।
বিল এটা স্বীকার করার মতো যথেষ্ট সাহসী যে, তিনি যথেষ্ট দৃঢ়তার সঙ্গে বসবাস করছেন না। আর এটা (আমাদের অনেকের মতো) দ্বিধা, অতি চিন্তা, যা করা বা বলা উচিত তা কখনোই না করা বা বলার একটি অভ্যাস গড়ে তুলেছে। বিল অনুভব করছেন– মানুষের সঙ্গে বাস্তব সংযোগ স্থাপনের ক্ষমতা তিনি হারিয়ে ফেলেছেন।
তিনি ভুলে যাচ্ছেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন তিনি হারিয়ে ফেলেছেন সে হলো তিনি নিজে। আপনি যখন প্রকৃত আপনার সঙ্গে সংযোগ হারিয়ে ফেলবেন, আপনার আত্মবিশ্বাস হারিয়ে যাবে এবং আপনার জীবন থেকে পরিপূর্ণতার স্বাদ চলে যাবে।
ফাইভ সেকেন্ড রুল-টির সাহায্যে আপনি এটি ফিরে পাবেন। বিল তার নিজের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কাজ করার জন্য রুলটির ব্যবহার শুরু করেন। সম্পর্কের গভীর যেতে একটু একটু করে হাজারো ধাপ পেরোনোর যাত্রাপথে হাঁটা শুরু করেন। ছোট ছোট কাজগুলো করতে নিজেকে ধাক্কা দিতে থাকেন যা নীরবে নিজেকে বিশ্বাস করতে শেখায়।
একটি সুন্দর জীবন ছোট ছোট পদক্ষেপ দ্বারা তৈরী হয়– কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ, না বলতে সক্ষম হওয়া, এমনকি বিছানা ছেড়ে উঠে পোষা কুকুরগুলোকে বাইরে নিয়ে যাওয়া। এগুলো হয়তো নিজেকে বিশ্বাস করতে শেখার ছোট পদক্ষেপ মাত্র, কিন্তু খুবই আনন্দদায়ক যা আপনার আত্মবিশ্বাস তৈরিতে সাহায্য করবে।
ট্রেসি, একজন ৪৮ বৎসর বয়সী গৃহিণী মা। যার মনে হয়েছিল তিনি একটি কঠিন অভ্যাসের মধ্যে আটকে পড়েছেন এবং যখন ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি তিনি আবিষ্কার করলেন, একটি আলো যেন তার জন্য জ্বলে উঠল। তিনি এমন কিছু করার জন্য রুলটি ব্যবহার করলেন যা বড় একটি প্রকল্পের ছোট কোনো অংশ কিন্তু এর অনুভূতি এবং উত্থান খুবই ব্যাপক– যেমন গির্জায় বক্তৃতা দেওয়া কিংবা অনলাইনে নিজের ছবি পোস্ট করা।
আমরা বিল-এর কাছ থেকে যা শিখেছি তা হলো– ছোট ব্যাপারগুলো মোটেই ছোট নয়। তারাই সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। এবং তারা যোগ করে থাকে। ছোট বিষয়গুলোতে আপনার নিজেকে ধাক্কা দেওয়ার মাধ্যমে বড় কিছু করার আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়।
বড় পরিকল্পনার বেশির ভাগ প্রয়োগ হয় ছোট কিন্তু এর অনুভূতি এবং উত্থান হয় ব্যাপক।
ট্রেসির লেখা চিঠি :
এখানে একটি তালিকা দেওয়া হলো যা আমি ফাইভ সেকেন্ড রুল-টির সাহায্যে সম্পন্ন করেছি, অন্যথায় যা করা আমার পক্ষে সম্ভব হতো না–
আমি উঠে দাঁড়িয়েছিলাম এবং একটি গানের অনুষ্ঠানে নেচেছিলাম, আমি আমার পছন্দের একজন লেখকের সাথে ছবি তুলে অন্তুর্জালে পোস্ট করেছিলাম (যদিও আমি আমার নিজের ছবি তোলা পছন্দ করি না), গির্জার ধর্মসভায় আমি বক্তৃতা করেছিলাম, আমি আমার স্বামীর সঙ্গে কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেছিলাম যা আমাকে বিরক্ত করছিল, নিজেকে আমি এমন সব মানুষের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম যাদের সঙ্গে আমি সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলাম, এবং আমি আমার বাড়িতে আরো অনেক কিছুই করেছি (জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দেওয়া নয়)।