(৩) আমি দাঁত ব্রাশ করি এবং সামনের দিনটির উপর ফোকাস করি
আমি মুখ ধোয়া এবং দাঁত ব্রাশ ও ফ্লস করার জন্য ৩ থেকে ৫ মিনিট সময় ব্যয় করি, অতঃপর নিজের জন্য সত্যি আমি কি চাই ও তার জন্য কি করতে হবে এবং বড় মাপের লক্ষ্যগুলোর ব্যাপারে আমার চিন্তা-ভাবনার উপর ফোকাস করি। এটা কার্যতালিকা নয়। এটা হলো অবশ্য করণীয় তালিকা। এটা সেই মুহূর্ত যখন আমি সচেতনভাবে আমার চিন্তা-ভাবনাগুলো জড়ো করি, এক বা দুটি বিষয় নিয়ে ভাবি যা করার ব্যাপারে আমি হয়তো কিছু বোধ করি না কিন্তু যা আজই আমাকে করতে হবে– আমার লক্ষ্য, স্বপ্ন এবং ব্যবসায়িক উন্নতির জন্য। গবেষকরা যাকে বুদ্ধিদীপ্ত/স্মার্ট লক্ষ্য নামে ডাকেন (নির্দিষ্ট, পরিমাপযোগ্য, অর্জনযোগ্য, বাস্তব এবং সময়োপযোগী)। আমি শুধু বলতে পারি, যা কিছু আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ সেই ব্যাপারে এগুলো আগামী অগ্রগতির নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। সাধারণতঃ এটা অনেকটা জঘন্য কিছু যা আমি করার ব্যাপারে অনুভব করি না, মরফিন যেমনটি বর্ণনা করেছেন :
আপনার টেড টক দেখেছি। আজকে ১ ঘণ্টা আগেই উঠে পড়েছি এবং শেষ পর্যন্ত করার ব্যাপারে অনুভব করি না এমন কিছু জঘন্য কাজ করতে নিজের উপর জোর খাটাতে পেরেছি, যা খুব মূল্যবান। ধন্যবাদ মেল।
(৪) আমি কাপড় পড়ি, বিছানা গুছাই, রান্নাঘরে যাই এবং এককাপ কফি ঢালি
আপনি কি খেয়াল করেছেন যে আমার এখনো শেষ হয়নি? আমি আমার ফোনটির দিকে তাকাইনি অথবা ই-মেইল পরীক্ষা করার জন্য অন্তর্জালে প্রবেশ করিনি। কারণ আমি জানি, যে মুহূর্তে এটি করব, আমি আমার ফোকাস হারাব। যে মুহূর্তে আপনি ই-মেইল পরীক্ষা করতে যাবেন, সংবাদপত্র পাঠ কিংবা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়বেন– আপনার সামনে অন্য কারো অগ্রাধিকারসমূহ লাফ দিয়ে পড়বে। আপনার কি মনে হয়– বিল গেটস কিংবা অপরাহ উইনফ্রে বিছানায় শুয়ে শুয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলোর ভেতর হামাগুড়ি দিয়ে বেড়ান? না, এবং আপনারও করা উচিত নয়। আপনার নিজেকে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং সারাদিনের পরিকল্পনা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত ই-মেইল চেক করা বন্ধ রাখুন।
(৫) ১ থেকে ৩ পর্যন্ত কাজগুলো যা অবশ্য করণীয় এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ তা লিখে ফেলি
১ থেকে ৩ পর্যন্ত কাজগুলো যা আজ আমাকে অবশ্যই করতে হবে বলে অনুভব করি সেগুলো অফিস স্টোর থেকে কেনা সস্তা ডেইলি প্ল্যানার-এ আমি নিজের জন্য লিখে ফেলি। এটি কেন এত গুরুত্বপূর্ণ তার দুটি কারণ রয়েছে : (১) আমি একজন চাক্ষুষ ব্যক্তিত্ব এবং (২) ক্যালিফোর্নিয়ার ডমিনিকান বিশ্ববিদ্যলয়-এর মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক প্রফেসর ড. গেইল ম্যাথিউস-এর গবেষণা অনুযায়ী– আপনার লক্ষ্যগুলো লিখে রাখার কারণে ৪২% অধিক সম্ভাবনা থাকে সেগুলো অর্জন করার।
আমার ডেইলি প্ল্যানার-এ এগুলো লিখে রাখার অর্থ হলো– দিনভর আমি তাদের দেখব এবং কাজ করার জন্য নিজেকে মনে করিয়ে দেব। কেন গুরুত্বপূর্ণ লেখা থাকার কারণে এটি আমাকে একটি অতিরিক্ত ধাক্কা দেবে।
আমি যদি এগুলো যান্ত্রিক ক্যালেন্ডারে লিপিবদ্ধ রাখি, তবে হয়তো ভুলে যেতে পারি। একটি ঘরে প্রবেশ করে হয়তো মনে করতে পারব না যে কেন এই ঘরে এসেছি– সুতরাং আমি আমার অবশ্য করণীয় তালিকা সাথে করে সদর্পে হেঁটে যেতে পছন্দ করি। আপনি এটি কোনো ছোট নোটবই কিংবা ক্যালেন্ডার, যে কোনো জায়গায় লিখতে পারেন– শুধু লিখে রাখুন এবং তা আপনার সাথেই রাখুন। শ্যারন যেমনটি করেছে– আমার কাজের তালিকা এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। ধন্যবাদ দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল।
(৬) আমি সকাল ৭টা ৩০ মিনিটের আগে ৩০ মিনিট সময় ব্যয় করি দিনের পরিকল্পনা করার জন্য
আমার ফোন বা ই-মেইল চেক করে দেখার আগেই আমি আমার অবশ্য করণীয় সম্পর্কে পরিকল্পনা করি এবং প্রায়শঃই তা কার্যকর করে থাকি। এটা করার জন্য আমি একটি হাতিয়ার ব্যবহার করি যাকে আমি ৭টা ৩০ মিনিট এর আগে ৩০ মিনিট নামে ডাকি।
আমি সকাল ৭টা ৩০ মিনিট এর আগে ৩০ মিনিট সময় ব্যয় করি দিনের পরিকল্পনা করার জন্য। এই সময়ের মধ্যে, আমি দিনের পরবর্তী সময়ের জন্য অবশ্য করণীয় হিসেবে নির্ধারিত দুতিনটি কাজ শুরু করে দেই। আমি বাড়িতে থাকলে সকাল ৭টায় এই পরিকল্পনার কাজটি শুরু করি যখন আমাদের শেষ বাচ্চাটি তার স্কুল বাস ধরতে বেড়িয়ে যায়। এই ৩০ মিনিট সময় আমার সফলতার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
দিনের পরিকল্পনা নির্ধারণ করার মাধ্যমে আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে, আপনি ঠিক জিনিসগুলোর উপর ফোকাস করেছেন। জেরেমি যেমন করে থাকে। অনেক বেশি উৎপাদনশীল ও দিনের লক্ষ্য পূরণে সফল হওয়ার জন্য আপনার নিজেকে প্রাধান্য দিতে হবে।
একবার আপনি যদি অফিসে ঢুকে পড়েন, তাহলে আর ৭টা ৩০ মিনিট এর আগে ৩০ মিনিট ধারণাটি সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। এটা অবশ্যই আপনাকে ঘরে অথবা প্রিয় কোনো কফি সপ-এ অথবা ট্রেন বা পার্কিং এলাকায় আপনার গাড়িতে বসে করতে হবে। আমি মজা করছি না। যে মুহূর্তে আপনি অফিসে ঢুকে প্রথম ই-মেইলটির জবাব দেবেন অথবা প্রথম ফোন কলটি গ্রহণ করবেন, ধরে নিতে হবে আপনার দিনটি চলে গেছে।
প্রফেসর সান ক্লারসন গবেষণা করে দেখেছেন কি করে সি.ই.ওরা এত বেশি পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করে থাকেন। এই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের গোপন রহস্য কি? তারা বাড়িতে ৯০ মিনিটের মতো কাজ করে থাকেন কারণ সেখানে মনযোগী হওয়ার কিছু সুযোগ থাকে। কর্মস্থলে তারা প্রতি ২০ মিনিট অন্তর একবার বাধাপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন। আর বাধা সম্পর্কে আমি কি বলেছিলাম নিশ্চয় মনে আছে? এটা উৎপাদনশীলতার জন্য মৃত্যুচুম্বনস্বরূপ।