আমরা দুধরনের ফোকাসই বিশ্লেষণ করতে যাচ্ছি। বিষয়টির উপর সর্বশেষ গবেষণার দিকে তাকাব এবং প্রয়োজনের সময় আপনার কাছে যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তার উপর ফোকাস করা ও বিভ্রান্তি নিয়ন্ত্রণ করার দক্ষতা অর্জন করার জন্য ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি কেমন করে ব্যবহার করতে হবে তা শিখব।
বিভ্রান্তি/বিচ্যুতি নিয়ন্ত্রণ করতে ঐকান্তিক হওয়া প্রয়োজন।
বিভ্রান্তি নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাপনা অনেকটা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত লক্ষ্য অনুসরণ করার মতো। আপনি এটা কখনোই অনুভব করতে পারবেন না। আপনার শুধু কাজটি করার জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে। আপনি ইতিমধ্যে জেনে গেছেন যে আপনার ফোনের প্রতি আসক্তি, মুঠোফোনে বার্তা পাঠানো, কিংবা ই-মেইল-এর উত্তর দেওয়া এক ধরনের বিভ্রান্তি…. এবং একে থামানো আপনার কাছে অসম্ভব মনে হয়।
যদিও আপনি জানেন এসব বন্ধ করা উচিত। আপনার ফোনটিকে নীরব করুন এবং প্রতি ৫ মিনিট অন্তর ই-মেইল চেক করা বন্ধ করুন। এসব জ্ঞান আপনার আচরণ পরিবর্তন করবে না। এটা কতটা খারাপ সেই সংক্রান্ত গবেষণার দ্বারা আমি আপনাকে কবর দিয়ে দিতে পারি কিন্তু তাতে করে আপনার আচরণ পরিবর্তীত হবে না। এখানেই ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি চলে আসে। আপনাকে এটা চাইতে হবে না, আপনাকে শুধু এটা করার জন্য নিজেকে ধাক্কা দিতে হবে।
প্রথমত, আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে বিভ্রান্তি কোনো ভালো জিনিস নয়। যে কোনো ধরনের বাধা আপনার উৎপাদনশীলতার জন্য মৃত্যুচুম্বন স্বরূপ। গবেষণায় দেখা গেছে অফিসের খোলা স্থানসমূহ ফোকাস করার জন্য সহায়ক নয়। ই-মেইল চেক করা একটি আসক্তিতে পরিণত হতে পারে কারণ আচরণগত গবেষকরা একে এলোমেলো প্রতিদান নাম দিয়েছেন। আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আপনার লক্ষ্যসমূহ প্রজ্ঞাপণ দিয়ে নাড়াচাড়া করার চাইতে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণভাবে।
অতঃপর আপনি তাদের মুছে ফেলুন। আমি দাবি করছি না যে এটাই একমাত্র উপায়। আমি আপনাকে এটাও বলব না যে এটি করা খুব সহজ। কিন্তু আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি আপনি যদি ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি ব্যবহার করেন, কাজটি আপনি সত্যি করতে পারবেন। আপনি যখন বিভ্রান্তিসমূহ মুছে ফেলতে শুরু করবেন এবং আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর উপর প্রতিমুহূর্তে ফোকাস করতে সক্ষম হবেন, আপনার কোনো ধারণা নেই এটা আপনাকে কি পরিমাণ সাহায্য করবে। কারেন আমাকে যেমন লিখেছিলেন :
আপনি জানেন না, প্রতিটি দিন আপনি আমাকে কি পরিমাণ সাহায্য করেছেন। অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ।
সম্প্রতি আমি আমার হাইস্কুল বয়সী কন্যা কেন্ডাল-এর সাথে এ ব্যাপারে কথা বলছিলাম। সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো পছন্দ করে তবে মুঠোফোন নিয়ে এত বেশি সময় কাটায় যে এতে করে তার পড়াশোনায় গুরুতর বিচ্যুতি ঘটছে। তাছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া নামকরা ব্যক্তি ও সুপারমডেলদের পোস্ট-এর সাথে সবসময় নিজেকে তুলনা করতে গিয়ে অনিরাপদ বোধ করে।
আপনার আমার মতো সেও জানত যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো তার উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দিচ্ছে বিশেষ করে যখন হোমওয়ার্কের উপর তার অনেক বেশি ফোকাস করা দরকার। কেন্ডাল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সামাজিক মাধ্যমগুলোর বিভ্রান্তি নিয়ন্ত্রণ করার সর্বোত্তম উপায় হলো এর প্রলোভন থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা আর তাই সে তার ফোন থেকে ইনস্টাগ্রাম-এর ফটো শেয়ারিং অ্যাপ্লিকেশন-এর মতো জিনিসগুলো মুছে ফেলেছিল। তার ভাষায় :
এগুলো মুছে ফেলার পর পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল যে আমার জীবনে এসব কতটা গুরুত্বহীন ব্যাপার ছিল। এই অ্যাপগুলো যতক্ষণ আমার ফোনে ছিল, ততক্ষণ একধরনের অনিচ্ছাকৃত কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছিল এগুলোর উপর ক্লিক করা এবং তাকিয়ে থাকা। এখন যখন অ্যাপগুলো আর নেই, এগুলোর দিকে তাকানোর আগ্রহও আমার আর নেই।
বিভ্রান্তি শুধুমাত্র প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই হয় না। সারাহ দেখতে পেলেন বিশৃঙ্খলা তার জীবনে একটি অন্যতম প্রধান বিচ্যুতি এবং তিনি এ ব্যাপারে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি গোপনে জমে থাকা আবেগগুলোকে পরাস্ত করার জন্য ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি ব্যবহার করেছিলেন এবং প্রচুর অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দান, পুনর্ব্যবহার, বিক্রয় এমনকি ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। তার মতে– অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ভেতর ডুবে যাওয়া থেকে মুক্তি পাওয়ার অনুভূতি– অসাধারণ।
সুতরাং আপনি যদি কেন্ডাল-এর মতো সামাজিক মাধ্যম দ্বারা কিংবা সারাহর মতো অপ্রয়োজনীয় জিনিস দ্বারা বিভ্রান্তির ভেতর নিজেকে খুঁজে পান, তবে সেটি হবে একটি বিশাল মুহূর্ত। জেগে উঠুন এবং এটাই সময়, আপনার পরিবেশটিকে ৫-৪-৩-২-১ একটি ঝাঁকুনি দিন। বিভ্রান্তি দূর করুন। এটা সত্যি খুব সহজ কাজ এবং এর পুরস্কারগুলো শক্তিশালী।
দ্বিতীয় ধরনের ফোকাস টিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আরো কঠিন ও শক্তিশালী কাজ করতে হবে– বড় মাপের ফোকাস। এখানে একটি জিনিস আছে, যা আমি ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছি এবং এটি আমার বড় মাপের ফোকাসটিকে অন্য যে কোনো কিছুর চাইতে প্রসারিত করেছে, আর তা হলো– আমার সকালগুলোর নিয়ন্ত্রক হওয়া।